M’Cheyne Bible Reading Plan
সীনয় পর্বতে এলিয়
19 রাজা আহাব রাণী ঈষেবলকে এলিয় যা যা করেছেন, যে ভাবে সমস্ত ভাববাদীদের তরবারি দিয়ে হত্যা করেছেন সবই বললেন। 2 ঈষেবল তখন এলিয়র কাছে দূত মারফৎ খবর পাঠালেন, “আমি প্রতিজ্ঞা করছি আগামীকাল এই সময়ের আগে তুমি যে ভাবে ঐ ভাববাদীদের হত্যা করেছ ঠিক সে ভাবেই তোমাকে হত্যা করব। আর যদি তা না পারি তাহলে যেন দেবতারা আমায় হত্যা করেন।”
3 এলিয় যখন একথা শুনলেন তখন ভয়ে তিনি তাঁর প্রাণ বাঁচাতে ভৃত্যকে সঙ্গে নিয়ে যিহূদার বেরশেবাতে পালিয়ে গেলেন। তাঁর ভৃত্যকে বেরশেবাতে রেখে 4 এলিয় সারাদিন হেঁটে হেঁটে অবশেষে মরুভূমিতে গিয়ে পৌঁছলেন। সেখানে একটা কাঁটা ঝোপের তলায় বসে তিনি মৃত্যু প্রার্থনা করে বললেন, “প্রভু যথেষ্ট হয়েছে। এবার আমাকে মরতে দাও। আমি আমার পূর্বপুরুষদের অপেক্ষা কোনো অংশেই ভালো নই।”
5 এরপর এলিয় সেই ঝোপের তলায় শুয়ে ঘুমিয়ে পড়লেন। এসময় এক দেবদূত এসে এলিয়কে স্পর্শ করে বলল, “ওঠো এলিয়, খেয়ে নাও!” 6 এলিয় দেখতে পেলেন তাঁর পাশেই কয়লার ওপরে এক খানা কেক বানানো আছে আর এক ঘড়া জল রাখা আছে। এলিয় তা খেয়ে জল পান করে আবার ঘুমিয়ে পড়লেন।
7 পরে আবার প্রভুর দূত ফিরে এসে তাঁকে বলল, “ওঠো এলিয়! কিছু খাও! সামনে লম্বা সফর, যদি তুমি খেয়ে গায়ে জোর না বাড়াও পাড়ি দিতে পারবে না।” 8 এলিয় তখন উঠে পানাহার করলেন। সেই খাবার এলিয়কে একটানা 40 দিন 40 রাত্রি হাঁটার মতো শক্তি জোগালো। হাঁটতে হাঁটতে তিনি ঈশ্বরের পর্বত নামে পরিচিত হোরেব পর্বতে গিয়ে পৌঁছলেন। 9 সেখানে একটি গুহার ভেতরে এলিয় রাত্রি বাস করলেন।
সে সময় প্রভু এলিয়র সঙ্গে কথা বললেন, “এলিয় তুমি এখানে কেন?”
10 এলিয় উত্তর দিলেন, “প্রভু ঈশ্বর সর্বশক্তিমান, আমি সব সময় সাধ্য মতো তোমার সেবা করেছি। কিন্তু ইস্রায়েলের লোকরা তোমার সঙ্গে চুক্তিভঙ্গ করে তোমার বেদী ধ্বংস করে ভাববাদীদের হত্যা করেছে। এখন আমিই একমাত্র জীবিত ভাববাদী আর তাই ওরা আমাকেও হত্যার চেষ্টা করছে।”
11 প্রভু তখন এলিয়কে বললেন, “যাও পর্বতে গিয়ে আমার সামনে দাঁড়াও। আমি ঐ জায়গা দিয়ে যাব।” তখন ঝোড়ো হাওয়া এসে পর্বতটাকে ভেঙ্গে দ্বিখণ্ডিত করল, বড় বড় পাথরের চাঁই খসে পড়ল, কিন্তু সেই ঝড়ের মধ্যে প্রভু ছিলেন না। ঝড়ের পর হল ভূমিকম্প। কিন্তু সেই ভূমিকম্পও প্রভু স্বয়ং নন। 12 ভূমিকম্পের আগুন জ্বলে উঠল। কিন্তু আগুনের মধ্যেও প্রভু ছিলেন না। আগুন নিভিয়ে দেওয়া হল। একটি শান্ত, কোমল স্বর শোনা গেল।
13 এলিয় যখন স্বরটা শুনতে পেলেন তখন তিনি তাঁর শাল দিয়ে তাঁর মুখ ঢেকে দিলেন। তারপর তিনি গিয়ে গুহার প্রবেশ মুখে দাঁড়ালেন। একটি স্বর তাঁকে জিজ্ঞাসা করল, “এলিয়, তুমি এখানে কেন?”
14 এলিয় বললেন, “প্রভু, ঈশ্বর সর্বশক্তিমান, আমি সব সময়ই আমার সাধ্য মতো তোমার সেবা করে এসেছি কিন্তু ইস্রায়েলের লোকরা তোমার সঙ্গে তাদের চুক্তিভঙ্গ করেছে। তারা তোমার পূজোর বেদী ধ্বংস করে সমস্ত ভাববাদীদের হত্যা করেছে। এখন আমিই একমাত্র জীবিত আছি। আর ওরা আমাকে হত্যার চেষ্টা করছে।”
15 প্রভু বললেন, “যাও দম্মেশকের পাশের মরুভূমির দিকে যে রাস্তা যাচ্ছে সেটা ধরে দম্মেশকে গিয়ে হসায়েলকে অরামের রাজপদে অভিষিক্ত করো। 16 তারপর নিম্শির পুত্র যেহূকে ইস্রায়েলের রাজপদে অভিষেক করো। আর আবেলমহোলার শাফটের পুত্র ইলীশায়কেও অভিষেক করো। সে ভাববাদী হিসেবে তোমার জায়গা নেবে। 17 হসায়েল বহু খারাপ লোককে হত্যা করবে। হসায়েলের হাত থেকে যারা বেঁচে যাবে তাদের যেহূ হত্যা করবে। আর যেহূর তরবারি থেকেও যদি কেউ নিস্তার পেয়ে যায় তাকে ইলীশায় হত্যা করবে। 18 এলিয় ইস্রায়েলে তুমিই একমাত্র একনিষ্ঠ ভাবে আমার সেবা করো নি। সেখানে আরো 7000 লোক আছে যারা কখনও বাল মূর্ত্তির কাছে মাথা নত করে নি এবং এরা কখনও বাল মূর্ত্তি চুম্বন করে নি।”
ইলীশায় একজন ভাববাদী হলেন
19 এলিয় তখন শাফটের পুত্র ইলীশায়কে খুঁজতে বেরোলেন। ইলীশায় তখন 12 বিঘা জমিতে হাল দিচ্ছিলেন। এলিয় যখন এলেন তখন ইলীশায় শেষ এক বিঘা জমিতে হাল দিচ্ছিলেন। এলিয় গিয়ে ইলীশায়ের গায়ে নিজের আনুষ্ঠানিক পোশাক পরিয়ে দিলেন। 20 ইলীশায় ষাঁড়কে ছেড়ে রেখে এলিয়র পেছনে ছুটে এসে বললেন, “আমাকে অনুমতি দিন, আমি একবার গিয়ে আমার মাকে আদর করে আসি এবং পিতার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে আসি। তারপর আমি আপনার সঙ্গে যাবো।”
এলিয় উত্তর দিল, “বেশ, যাও! আমি তোমাকে বাধা দেব না।”
21 ইলীশায় তখন বাড়িতে গিয়ে আত্মীয় স্বজনের সঙ্গে দারুণ খাওয়া-দাওয়া করলেন। তাঁর গরুগুলোকে মেরে যোয়ালের কাঠ জ্বালিয়ে মাংস সেদ্ধ করে লোকদের খাওয়ালেন এবং নিজেও খেলেন। তারপর ইলীশায় এলিয়কে অনুসরণ করলেন এবং তাঁর পরিচর্য্যা করতে লাগলেন।
থিষলনীকায় পৌলের কাজ
2 প্রিয় ভাই ও বোনেরা, তোমরা নিজেরাই জান, তোমাদের কাছে আমাদের যাওয়া ব্যর্থ হয় নি। 2 তোমরা একথাও জান যে, তোমাদের ওখানে যাবার পূর্বে ফিলীপিতে আমাদের দুঃখভোগ করতে হয়েছিল, কারণ সেখানকার লোকরা আমাদের চরম অপমান করেছিল; কিন্তু সেখানে চরম বিরোধিতার মধ্যেও আমাদের ঈশ্বর সাহসে বুক বাঁধতে এবং খ্রীষ্টের সুসমাচার তোমাদের কাছে ঘোষণা করতে সাহায্য করেছিলেন। 3 আমরা আমাদের বার্তা গ্রহণ করতে লোকেদের কাছে যে আবেদন রেখেছিলাম, তার মধ্যে কোন ফাঁকি বা ছলনা ছিল না। আমরা লোকেদের ঠকাতে চাই নি এবং তার পেছনে কোন রকম অপবিত্র উদ্দেশ্যও আমাদের ছিল না। 4 বরং আমরা সুসমাচার প্রচার করি কারণ ঈশ্বর এই বার্তা প্রচার করার জন্য আমাদের পরীক্ষা করে প্রমাণসিদ্ধ বলে মনে করেছেন। তাই আমরা যখন প্রচার করি তখন মানুষকে সন্তষ্ট করতে নয়, বরং ঈশ্বরকে সন্তুষ্ট করতেই চেষ্টা করি, যিনি আমাদের কাজের উদ্দেশ্য পরীক্ষা করেন।
5 তোমরা ভাল করে জান যে আমরা তোমাদের কাছে তোষামোদজনক কোন বাক্য বলি নি, আর লোভকে ঢেকে রাখবার ছলনা যে আমরা করেছি তাও নয়; ঈশ্বরই এবিষয়ে সাক্ষী আছেন। 6 আমরা লোকদের কাছ থেকে কোন প্রশংসা পেতে চাই নি। তোমাদের বা অন্য কারোর কাছ থেকেও আমরা প্রশংসা পেতে চাই নি।
7 আমরা খ্রীষ্টের প্রেরিত, তাই আমরা যখন তোমাদের ওখানে ছিলাম তখন কর্ত্তৃত্ব খাটিয়ে তোমাদের কাছে অনেক বড় কিছু চাইতে পারতাম; কিন্তু আমরা তোমাদের কাছে বিনয়ী ছিলাম। আমরা তোমাদের কাছে সেই সেবিকার মতো ছিলাম যে তার শিশুদের যত্ন নেয়। 8 তোমাদের ওপর গভীর মায়া মমতা থাকাতে তোমাদের কেবল যে ঈশ্বরের সুসমাচারের অংশীদার করতে চেয়েছিলাম তা নয়, আমরা নিজেদের জীবনও তোমাদের জন্য উৎসর্গ করতে চেয়েছিলাম, কারণ তোমরা আমাদের খুব প্রিয় ছিলে। 9 প্রিয় ভাই ও বোনেরা, তোমাদের নিশ্চয় মনে আছে যে আমরা কতো কঠোর পরিশ্রম করেছি। আমরা দিনরাত কাজ করে চলেছিলাম যেন তোমাদের কাছে ঈশ্বরের সুসমাচার প্রচারের সময় আমরা অর্থের ব্যাপারে তোমাদের কাছে বোঝাস্বরূপ না হই।
10 তোমাদের মত বিশ্বাসীদের মধ্যে আমাদের জীবন কত পবিত্র, ন্যায়পরায়ণ ও নির্দোষ ছিল তা তোমরা জান; আর ঈশ্বরও জানেন তা সত্য। 11 তোমরা জান, পিতা যেমন তাঁর সন্তানদের সঙ্গে ব্যবহার করেন, আমরাও তোমাদের সঙ্গে তেমনি ব্যবহার করেছি। 12 আমরা তোমাদের উৎসাহ যুগিয়েছি, তোমাদের আশ্বাস দিয়েছি এবং ঈশ্বরের জন্য যোগ্য জীবনযাপন করতে অনুপ্রাণিত করেছি যে ঈশ্বর তোমাদের তাঁর রাজ্যে ও মহিমায় প্রবেশ করতে আহ্বান করেছেন।
13 আমরা সব সময় ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিই, কারণ তোমরা ঈশ্বরের যে বার্তা আমাদের কাছ থেকে পেয়েছিলে তা মানুষের বার্তা বলে নয় বরং ঈশ্বরের বাক্য বলে গ্রহণ করেছিলে। সেই বাক্য সত্য-সত্যই ঈশ্বরের বাক্য ছিল এবং ঐ বার্তায় যারা বিশ্বাসী তাদের সবার মধ্যে তা কাজ করছে। 14 প্রিয় ভাই ও বোনেরা, যিহূদিয়ায় খ্রীষ্ট যীশুতে বিশ্বাসী ঈশ্বরের যে সমস্ত মণ্ডলী আছে, তোমাদের অবস্থা তাদেরই মতো। যিহূদিয়ার সেই ঈশ্বরের লোকরা অন্য ইহুদীদের কাছ থেকে যে রকম নির্যাতন ভোগ করেছে, তোমরাও তোমাদের নিজেদের দেশের লোকের কাছ থেকে সেই ধরণের নির্যাতন ভোগ করেছ। 15 ইহুদীরা প্রভু যীশুকে এবং ভাববাদীদের হত্যা করেছিল। সেই ইহুদীরা আমাদেরও নির্যাতন করেছে। ঈশ্বর তাদের প্রতি খুশী নন, তারা সবারই বিপক্ষে। 16 আমরা অইহুদীদের শিক্ষা দিই যেন তারা উদ্ধার পেতে পারে; কিন্তু তারা আমাদের অইহুদীদের সত্য শিক্ষা দিতে বারণ করেছে। সেই ইহুদীরা পূর্বে যে পাপ করেছে, তার ওপর আরও পাপ যোগ করছে; আর তাই ঈশ্বরের ক্রোধ পরিপূর্ণরূপে এবং চূড়ান্তভাবে তাদের ওপর নেমে এসেছে।
পৌল পুনরায় বিশ্বাসীদের দেখতে ইচ্ছা করলেন
17 ভাই ও বোনেরা, যদিও অল্প কিছুদিন হল আমরা তোমাদের থেকে আলাদা হয়েছি তবুও আমাদের মন তোমাদের দিকে পড়েছিল। তোমাদের আর একবার দেখার জন্য আমরা খুব উৎসুক ছিলাম। তাই তোমাদের কাছে আসার জন্য কঠোরভাবে চেষ্টা করেছি। 18 তোমাদের কাছে যেতে আমরা সত্যিই অনেকবার চেষ্টা করেছি, কিন্তু শয়তান আমাদের বাধা দিল। 19 তোমরাই আমাদের প্রত্যাশা, আনন্দ ও গৌরবের মুকুট। আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের আগমনের দিনে এই হবে আমাদের গর্ব। 20 সত্য সত্য তোমরাই আমাদের মহিমা ও আনন্দ।
দানিয়েলকে বাবিলে নিয়ে যাওয়া হল
1 যিহূদার রাজা যিহোয়াকীমের রাজত্বের তৃতীয় বছরে বাবিলের রাজা নবূখদ্নিৎসর জেরুশালেমে এসেছিলেন এবং তাঁর সৈন্যসমূহ দিয়ে শহরটি ঘিরে ফেলেছিলেন। 2 প্রভু নবূখদ্নিৎসরকে যিহূদার রাজা যিহোয়াকীমকে পরাস্ত করতে দিয়েছিলেন। নবূখদ্নিৎসর মন্দির থেকে কয়েকটি বাসন-কোষন ও অন্যান্য জিনিস বাবিলে নিয়ে গিয়েছিলেন। তিনি সেইগুলি তাঁর আরাধ্য দেবতার মন্দিরে রাখলেন।
3 তারপর রাজা নবূখদ্নিৎসর তাঁর নপুংসকদের প্রধান অস্পনসকে ইস্রায়েলের রাজবংশীয় কয়েকজনকে এবং ইস্রায়েলের গুরুত্বপূর্ণ পরিবারসমূহের কয়েক জনকে আনতে আদেশ জারি করলেন। 4 তিনি এমন কয়েক জন যুবককে চেয়েছিলেন, যারা নিষ্কলঙ্ক সুপুরুষ, বুদ্ধিমান, শিক্ষিত, উপলব্ধি করতে সক্ষম এবং যারা তাঁর কাজ করতে পারবে। রাজা অস্পনসকে বললেন ওই যুবকদের কল্দীয় লোকদের ভাষা ও রচনা শিখিয়ে দিতে।
5 রাজার বিশেষ সুখাদ্য থেকে নবূখদ্নিৎসর একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ খাদ্য ও পানীয় ঐ যুবকদের দিয়েছিলেন। তিন বছরের শিক্ষানবিশীর শেষে তারা যাতে রাজাকে সেবা করতে পারে তিনি সেই ব্যবস্থা করতে চেয়েছিলেন। 6 যিহূদার পরিবারবর্গের এই যুবকদের মধ্যে ছিলেন দানিয়েল, হনানিয়, মীশায়েল ও অসরিয়। 7 অস্পনস এদের প্রত্যেকের বাবিলের ভাষায় নামকরণ করলেন। দানিয়েল হল বেল্টশত্সর, হনানিয় হল শদ্রক, মীশায়েল হল মৈশক ও অসরিয় হল অবেদ্-নগো।
8 কিন্তু দানিয়েল স্থির করলেন যে রাজার শৌখীন খাদ্য ও পানীয় গ্রহণ করে নিজেকে অশুচি করবেন না এবং এ ব্যাপারে তিনি অস্পনসের অনুমতি চাইলেন।
9 ঈশ্বর দানিয়েলকে অস্পনসের কৃপা ও করুণার পাত্র করলেন। 10 কিন্তু অস্পনস বললেন, “আমি আমার মনিব, রাজাকে ভয় করি। রাজার আদেশ অনুসারে আমি যদি তোমাকে খাদ্য ও পানীয় না দিই তাহলে তোমাকে হয়ত অন্যান্য যুবকদের তুলনায় দুর্বল দেখাবে। এতে তিনি আমার ওপর ক্রুদ্ধ হতে পারেন এবং আমার মাথা কেটে ফেলতে পারেন। এবং এটা হবে তোমার এবং তোমার বন্ধুদের দোষে।”
11 এরপর দানিয়েল, হনানিয়, মীশায়েল ও অসরিয়ের ওপর লক্ষ্য রাখার জন্য অস্পনস রক্ষী নিয়োগ করলেন। 12 দানিয়েল রক্ষীকে বললেন, “দয়া করে আমাদের শুধু শস্য ও জল দাও। 13 দশ দিন পর যে সব যুবকরা রাজকীয় খাবার খাচ্ছে তাদের সঙ্গে আমাদের তুলনা করো। দেখ কাদের বেশী স্বাস্থ্যবান দেখায় এবং তারপর যেমন দেখবে তেমন ভাবে তোমার এই ভৃত্যদের সঙ্গে ব্যবহার করবে।”
14 তাই দানিয়েল, হনানিয়, মীশায়েল ও অসরিয়র ওপর রক্ষী দশ দিন ধরে এটি পরীক্ষা করতে রাজী হল। 15 দশ দিন পর, যে সমস্ত যুবক রাজার বিশেষ সুখাদ্য খাচ্ছিল তাদের থেকে দানিয়েল ও তাঁর বন্ধুদের বেশী স্বাস্থ্যবান দেখাচ্ছিল। 16 তাই রক্ষী দানিয়েল, হনানিয়, মীশায়েল ও অসরিয়কে রাজার দেওয়া খাবার না দিয়ে শস্য খাদ্য দিতে লাগলো।
17 ঈশ্বর দানিয়েল ও তাঁর তিন বন্ধুদের জ্ঞান এবং সমস্ত রকমের সাহিত্য ও শিক্ষিত লোকদের লেখা বোঝবার মত ক্ষমতা দিলেন। দানিয়েল সমস্ত রকমের স্বপ্ন ও দর্শন বুঝতে সমর্থ হয়েছিলেন।
18 তিন বছর শিক্ষানবিশীর শেষে অস্পনস সমস্ত যুবককে নবূখদ্নিৎসরের সামনে উপস্থিত করলেন। 19 রাজা তাদের সবার সাথে কথা বলার পর দেখলেন যে সমস্ত যুবকদের মধ্যে দানিয়েল, হনানিয়, মীশায়েল ও অসরিয় সবচেয়ে ভাল। তাই এই চার জন যুবককে রাজার বিশেষ ভৃত্য করা হল। 20 যখনই রাজার বুদ্ধিমান উপদেশের প্রয়োজন হত, তখনই উনি দেখতেন তারা তাঁর রাজ্যের যাদুকরগণ এবং বিচক্ষণ ব্যক্তি সমূহের চেয়ে দশগুন ভাল। 21 তাই দানিয়েল কোরস রাজার রাজত্বের প্রথম বছর পর্যন্ত রাজভৃত্য হয়ে রইলেন।
105 প্রভুকে ধন্যবাদ দাও এবং তাঁর নাম উপাসনা কর।
তাঁর সমস্ত বিস্ময়কর কাজকর্ম সম্বন্ধে জাতিগণকে বল।
2 প্রভুর উদ্দেশ্যে গান গাও; তাঁর প্রশংসা গান কর।
তিনি যে সব আশ্চর্য কার্য করেন সে সম্পর্কে বল।
3 প্রভুর পবিত্র নামে গর্ববোধ কর।
যারা প্রভুর খোঁজে এসেছে তারা যেন সুখী হয়!
4 শক্তির জন্য তোমরা প্রভুর কাছে যাও।
সর্বদাই তাঁর কাছে সাহায্যের জন্য যাও।
5 তিনি যে সব আশ্চর্য কার্য করেন তা স্মরণ কর।
তিনি যে সমস্ত চমৎকার কাজ করেছেন এবং তাঁর বিচক্ষণ প্রজ্ঞা সিদ্ধান্তগুলি স্মরণে রেখো।
6 তোমরা তাঁর দাস অব্রাহামের উত্তরপুরুষ।
তোমরা যাকোবের উত্তরপুরুষ যাদের ঈশ্বর বেছে নিয়েছিলেন।
7 প্রভুই আমাদের ঈশ্বর।
প্রভু সারা বিশ্বকে শাসন করেন।
8 ঈশ্বর তাঁর চুক্তি চিরদিন স্মরণে রাখেন এবং 1000 প্রজন্ম ধরে,
যে আজ্ঞাগুলি তিনি দিয়েছেন তা স্মরণে রাখেন।
9 অব্রাহামের সঙ্গে ঈশ্বর একটা চুক্তি করেছিলেন।
ইস্হাককে ঈশ্বর একটি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।
10 তারপর সেটি তিনি যাকোবকে বিধিরূপে দিলেন।
ইস্রায়েলের সঙ্গে ঈশ্বর চুক্তি করেছিলেন, এই চুক্তি চিরদিন ধরে চলবে!
11 ঈশ্বর বললেন, “আমি তোমাদের কনানের ভূখণ্ড দেব।
সেই দেশটি তোমাদের হবে।”
12 যখন অব্রাহামের পরিবার ছোট ছিল, তখন ঈশ্বর এই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।
সেই সময়, সেই দেশে তারা বিদেশী ছিল।
13 তারা এক জাতি থেকে অন্য জাতিতে,
এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছিলো।
14 কিন্তু ঈশ্বর লোকদের ওদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করতে দেন নি।
ঈশ্বর রাজাদের সাবধান করে দিয়েছিলেন যে ওদের কোন ক্ষতি করা চলবে না।
15 ঈশ্বর বলেছিলেন, “আমার মনোনীত লোকদের আঘাত করো না।
আমার ভাববাদীদের প্রতি অন্যায় করো না।”
16 ঈশ্বর সেই দেশে এক দুর্ভিক্ষ ঘটালেন।
লোকজন আহারের জন্য খাবার পেল না।
17 কিন্তু, ঈশ্বর যোষেফ নামে একজনকে ওদের সামনে পাঠালেন।
যোষেফকে একজন ক্রীতদাস হিসাবে বিক্রি করা হয়েছিল।
18 ওরা একটি দড়ি যোষেফের পায়ে জড়িয়ে বেঁধে দিল।
ওরা তার গলায় একটা লোহার রিং পরিয়ে দিল।
19 ঈশ্বর যা বলেছিলেন তা যতদিন পর্যন্ত না প্রকৃতপক্ষে ঘটল, ততদিন যোষেফ ক্রীতদাসই ছিল।
প্রভুর বার্তা প্রমাণ করেছিল যে যোষেফ নির্দোষ ছিল।
20 তাই মিশরের রাজা তাকে মুক্ত করে দিল।
সেই জাতির নেতা তাকে কারাগারের বাইরে বার করে দিল।
21 সে তাকে নিজের বাড়ির রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব দিল।
যোষেফও তার প্রভুর সমস্ত সম্পত্তির রক্ষণাবেক্ষণ করত।
22 যোষেফ অন্যান্য নেতাদের নির্দেশ দিয়েছিল।
বৃদ্ধ লোকদেরও যোষেফ শেখাতো।
23 পরে ইস্রায়েল মিশরে এলো।
যাকোব হামের দেশে থাকলো।
24 যাকোবের পরিবার বেশ বড় হয়ে গেল।
ওদের শত্রুদের থেকে ওরা অনেক শক্তিশালী হয়ে গেল।
25 এই মিশরীয়রা যাকোবের পরিবারকে ঘৃণা করতে লাগল।
ওরা ওদের ক্রীতদাসদের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করেছিল।
26 তাই ঈশ্বর তাঁর দাস মোশি
এবং তাঁর নির্বাচিত যাজক হারোণকে পাঠিয়েছিলেন।
27 ঈশ্বর মোশি ও হারোণকে ব্যবহার করে
হামের দেশে বহু অভাবনীয় কাজ করিয়েছিলেন।
28 ঈশ্বর নীরন্ধ্র অন্ধকার পাঠিয়েছিলেন,
কিন্তু মিশরীয়রা তবুও তাঁর কথা শুনতে অস্বীকার করল।
29 তাই ঈশ্বর জলকে রক্তে পরিণত করলেন
এবং ওদের সব মাছ মারা গেল।
30 ওদের দেশ ব্যাঙে ভরে গিয়েছিল।
রাজার শোবার ঘরে পর্যন্ত ব্যাঙ ঢুকে পড়েছিলো।
31 ঈশ্বর আজ্ঞা দিলেন,
উকুন ও মাছিরা উড়ে এলো।
তারা দেশের সর্বত্রই ছড়িয়ে পড়ল!
32 ঈশ্বর বৃষ্টিকে শিলাবৃষ্টিতে পরিণত করলেন।
সারা দেশে বিদ্যুৎপাত হল।
33 ঈশ্বর ওদের দ্রাক্ষালতা ও ডুমুর গাছ ধ্বংস করে দিলেন।
ঈশ্বর ওদের দেশের সব গাছ ধ্বংস করে দিলেন।
34 ঈশ্বর আজ্ঞা দিলেন এবং গঙ্গাফড়িং ও পঙ্গপালরা এলো।
ওদের সংখ্যা গণনারও অতীত।
35 ঝাঁকে ঝাঁকে গঙ্গাফড়িং ও পঙ্গপালরা দেশের সব গাছপালা ও দ্রাক্ষালতা,
ডুমুর গাছগুলো খেয়ে শেষ করে দিল।
36 এরপর ঈশ্বর, দেশের প্রত্যেকটি প্রথমজাতকে হত্যা করলেন।
ঈশ্বর সমস্ত জোষ্ঠ সন্তানদের হত্যা করলেন।
37 তারপর ঈশ্বর মিশর থেকে তাঁর লোকদের বার নিয়ে এলেন।
আসার সময় ওরা সঙ্গে করে সোনা রূপো নিয়ে এলো।
ঈশ্বরের কোন লোকই হোঁচট খায় নি বা পড়ে যায় নি।
38 ঈশ্বরের লোকদের চলে যেতে দেখে মিশর ভীষণ খুশী হয়েছিলো,
কেননা ওরা ঈশ্বরের লোকদের ভয় পেতো।
39 ঈশ্বর তাদের ওপর কম্বলের মত একটি মেঘ বিস্তৃত করে দিলেন।
রাত্রে তাঁর লোকদের আলো দেখানোর জন্য, ঈশ্বর তাঁর অগ্নিস্তম্ভ ব্যবহার করলেন।
40 লোকরা খাদ্য চাইল এবং ঈশ্বর তাদের কাছে কোয়েল এনে দিলেন
এবং তাদের ক্ষুধা নিবৃত্তির জন্য ঈশ্বর আকাশ থেকে তাদের রুটি দিলেন।
41 ঈশ্বর শিলাটিকে অর্ধেক করে ভাঙলেন এবং সেখান থেকে জল বেরিয়ে এলো।
মরুভূমিতে একটা নদী বইতে শুরু করলো!
42 ঈশ্বর তাঁর পবিত্র প্রতিশ্রুতির কথা স্মরণ করলেন।
তাঁর দাস অব্রাহামের কাছে তিনি যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তা তিনি স্মরণ করলেন।
43 ঈশ্বর মিশর থেকে তাঁর নির্বাচিত লোকদের বার করে আনলেন।
লোকজন মহা উল্লাস করতে করতে, আনন্দ গান গাইতে গাইতে বেরিয়ে এলো!
44 তারপর ঈশ্বর তাদের সেই দেশ দিলেন যেখানে অন্যান্য লোকরা বাস করেছিলো,
অন্যান্য লোকরা যার জন্য পরিশ্রম করেছিলো, ঈশ্বরের লোকরা সেই সব জিনিস পেলো।
45 কেন ঈশ্বর এইসব করলেন? যাতে তাঁর লোকরা তাঁর বিধি মান্য করে।
যাতে তারা তাঁর শিক্ষামালাসমূহ সতর্কতার সঙ্গে পালন করে।
প্রভুর প্রশংসা কর!
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International