Print Page Options
Previous Prev Day Next DayNext

M’Cheyne Bible Reading Plan

The classic M'Cheyne plan--read the Old Testament, New Testament, and Psalms or Gospels every day.
Duration: 365 days
Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)
Version
1 রাজাবলি 18

এলিয় ও বালের ভাববাদী

18 একটানা তিন বছর অনাবৃষ্টির পর প্রভু এলিয়কে বললেন, “আমি আবার শীগ্গিরই বৃষ্টি পাঠাবো। যাও গিয়ে রাজা আহাবের সঙ্গে দেখা করো।” এলিয় তখন আহাবের সঙ্গে দেখা করতে গেলেন।

সে সময়ে শমরিয় শহরে দুর্ভিক্ষ চলছিল। রাজা আহাব তাই ওবদিয়, যে প্রাসাদ রক্ষনাবেক্ষণ করত তাকে ডেকে পাঠিয়েছিলেন। ওবদিয় প্রকৃত অর্থেই প্রভুর অনুগামী ছিলেন। এক সময়ে ঈষেবল প্রভুর সমস্ত ভাববাদীদের হত্যা করতে শুরু করেছিলেন। ওবদিয় 100 জন ভাববাদীকে দুটি গুহার মধ্যে 50 ভাগের দুটি দলে লুকিয়ে রেখে ছিলেন এবং নিয়মিত তাদের খাবার ও জল এনে দিতেন। রাজা আহাব ওবদিয়কে বললেন, “চলো, আমরা বেরিয়ে সমস্ত ঝর্ণা আর নদীগুলোতে গিয়ে দেখি আমাদের ঘোড়া আর খচ্চরগুলোকে বাঁচিয়ে রাখার মতো ঘাস পাওয়া যায় কি না।” দুজনে দুটি অঞ্চল ভাগ করে নিয়ে সারা দেশে জলের খোঁজে বেরিয়ে পড়ল। আহাব গেলেন এক দিকে আর ওবদিয় গেল আরেক দিকে। ওবদিয়র সঙ্গে পথে এলিয়র দেখা হল। এলিয়কে দেখেই ওবদিয় চিনতে পারল এবং তাঁর সামনে নতজানু হয়ে জিজ্ঞেস করল, “এলিয়! সত্যিই কি আপনি আমার সেই মনিব?”

এলিয় বললেন, “হ্যাঁ, আমি এসেছি। যাও তোমার রাজাকে এ খবর জানাও।”

তখন ওবদিয় বলল, “আমি যদি আহাবকে বলি যে আপনি কোথায় আছেন আমি জানি তাহলে আহাব আমাকে মেরে ফেলবেন। প্রভু আমি তো আপনার কাছে কোনো অপরাধ করি নি, তাহলে আপনি কেন আমাকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিচ্ছেন? 10 রাজা পাগলের মতো উন্মত্ত হয়ে প্রভু, আপনার ঈশ্বরকে খুঁজে বেড়াচ্ছেন, চতুর্দিকে আপনার খোঁজে লোক পাঠিয়েছেন। প্রত্যেকটা দেশে তিনি আপনাকে খুঁজতে লোক পাঠিয়ে ছিলেন এবং সেখানে আপনাকে পাওয়া না গেলে আহাব সেখানকার শাসকদের কাছ থেকে প্রতিশ্রুতি আদায় করেছেন, যে সত্যি সত্যিই আপনি সেই সব দেশে নেই। 11 আর এখন আপনি আমাকে বলছেন, রাজার কাছে গিয়ে আপনার এখানে থাকার খবর দিতে। 12 আমি গিয়ে রাজা আহাবকে একথা বলার পর, রাজা যখন আপনাকে খুঁজতে আসবেন তখন হয়তো প্রভু আপনাকে অন্য কোন জায়গায় নিয়ে গিয়ে লুকিয়ে রাখবেন আর আপনাকে খুঁজে না পেয়ে রাজা আমাকেই তখন হত্যা করবেন। আমি সেই ছোটবেলা থেকে প্রভুকে অনুসরণ করে চলেছি। 13 আপনি নিশ্চয়ই জানেন, আমি কি করেছিলাম। ঈষেবল যখন প্রভুর ভাববাদীদের হত্যা করছিলেন, আমি তখন তাদের 50 জন করে দুভাগে মোট 100 জন ভাববাদীকে দুটো গুহায় লুকিয়ে রেখে নিয়মিত খাবার ও জল দিয়েছিলাম। 14 আর এখন আপনি আমাকে রাজার কাছে গিয়ে বলতে বলছেন, যে আপনি এখানে আছেন। রাজা সঙ্গে সঙ্গেই আমাকে হত্যা করবেন।”

15 এলিয় তখন বললেন, “সর্বশক্তিমান প্রভুর উপস্থিতি যেরকম সত্য, আমিও সেই রকমই প্রতিশ্রুতি করছি যে আমি রাজার সামনে আজ দাঁড়াব।”

16 ওবদিয় তখন রাজা আহাবকে গিয়ে এলিয় কোথায় আছে তা জানাল। রাজা আহাব এলিয়র সঙ্গে দেখা করতে গেলেন।

17 আহাব এলিয়কে দেখে প্রশ্ন করল, “তুমিই কি সেই লোক যার জন্য ইস্রায়েলের এই দুরবস্থা?”

18 এলিয় উত্তর দিলেন, “আমার জন্য ইস্রায়েলের কোনো দুর্দশাই হয় নি। তুমি ও তোমার পিতৃপুরুষরাই এজন্য দায়ী। তোমরা প্রভুর আদেশ অমান্য করে মূর্ত্তির পূজা শুরু করেছ। 19 এখন ইস্রায়েলের সবাইকে কর্ম্মিল পর্বতে আমার সঙ্গে দেখা করতে বলো। বালদেবের 450 জন ভাববাদী ও রানী ইষেবল সমর্থক আশেরার মূর্ত্তির 400 জন ভাববাদীকেও যেন ওখানে আনা হয়।”

20 আহাব তখন সমস্ত ইস্রায়েলীয় ও ঐসব ভাববাদীদের কর্ম্মিল পর্বতে ডাকলেন। 21 এলিয় তখন সবাইকে বললেন, “তোমরা কবে স্থির করবে কোন দেবতাকে তোমরা অনুসরণ করবে? শোনো, প্রভুই যদি সত্য ঈশ্বর হন তাহলে তাঁকে অনুসরণ করো। আর বাল মূর্ত্তিকে যদি তোমাদের প্রকৃত দেবতা বলে মনে হয় তাহলে তাঁকে অনুসরণ করো।”

লোকরা কিছুই বলল না। 22 তখন এলিয় তাদের বললেন, “আমি এখানে প্রভুর একমাত্র ভাববাদী হিসেবে উপস্থিত আছি। আর বালদেবের অনুগামী 450 জন ভাববাদী আছেন। 23 এবার দুটো ষাঁড় নিয়ে আসা হোক্। বাল মূর্ত্তির ভাববাদীরা তার একটি কেটে টুকরো টুকরো করে কাঠের ওপর রাখুন। আমি অন্যটাকে কেটে টুকরো করে কেটে কাঠের ওপর রাখছি। আমরা কেউই নিজে থেকে কাঠে আগুন ধরাবো না। আমি আমার প্রভুর কাছে প্রার্থনা করছি। 24 বাল মূর্ত্তির অনুগামী ভাববাদীরাও তাঁদের দেবতার কাছে প্রার্থনা করুন। যার প্রার্থনায় সাড়া দিয়ে কাঠে আগুন জ্বলে উঠবে, তার দেবতাই আসল প্রমাণিত হবেন।”

সমস্ত লোক এই পরিকল্পনায় সায় দিল।

25 এলিয় তখন বাল মূর্ত্তির ভাববাদীদের ডেকে বললেন, “আপনারা সংখ্যায় অনেক। আপনারাই প্রথমে যান। যে ভাবে বললাম ষাঁড়টাকে কেটে ঠিক করুন। তবে আগুন জ্বালাবেন না।”

26 তখন বাল মূর্ত্তির অনুগামী ভাববাদীরা তাঁদের যে ষাঁড়টি দেওয়া হয়েছিল সেটাকে কথা মতো কেটে সাজালেন। তারপর তাঁরা বেলা দুপুর পর্যন্ত বাল মূর্ত্তির কাছে প্রার্থনা করলেন, তাঁদের বানানো যজ্ঞবেদী ঘিরে নাচানাচি করলেন কিন্তু কেউ তাঁদের প্রার্থনায় সাড়া দিল না, আগুন জ্বললো না।

27 দুপুর গড়িয়ে গেলে এলিয় এইসব ভাববাদীদের নিয়ে রসিকতা শুরু করলেন। এলিয় বললেন, “বাল যদি সত্যি সত্যিই দেবতা হন, তাহলে একটু জোরে প্রার্থনা করা উচিৎ‌! হয়তো উনি এখন ভাবনায় ডুবে আছেন! কিম্বা হয়তো ঘুম লাগিয়েছেন। না না! আপনাদের আরেকটু জোরে হাঁকডাক করে ওঁকে ঘুম থেকে তোলা দরকার।” 28 একথা শুনে এইসব ভাববাদীরা তারস্বরে প্রার্থনা করতে লাগলেন। ধারালো অস্ত্র দিয়ে নিজেদের ক্ষতবিক্ষত করে রক্ত বার করে ফেললেন। (বালদেবের আরাধনার এটিও একটি বিশেষ প্রক্রিয়া ছিল।) 29 কিন্তু দুপুর থেকে বিকেল গড়িয়ে গেল তখনও আগুন ধরার কোনো লক্ষণ দেখা গেল না। ক্রমে বিকেলের বলিদানের সময় ঘনিয়ে এলো, ভাববাদীরা উন্মত্তের মতো ডাকাডাকি করতে লাগলেন কিন্তু বালদেবের দিক থেকে কোনো সাড়াই পাওয়া গেল না।

30 এলিয় তখন সমস্ত লোকদের বললেন, “এবার আমার কাছে এসো।” সকলে এলিয়কে ঘিরে দাঁড়ালে, এলিয় প্রথমে প্রভুর ভেঙ্গে যাওয়া বেদীটিকে ঠিক করলেন। 31 তারপর ইস্রায়েলের 12টি পরিবারগোষ্ঠীর প্রত্যেকের নামে একটা করে মোট 12টি পাথর খুঁজে বার করলেন। যাকোবের 12 জন সন্তানের নামে এই 12টি পরিবারগোষ্ঠীর নামকরণ হয়েছিল। যাকোবকেই প্রভু ইস্রায়েল বলে ডেকেছিলেন। 32 এলিয় প্রভুকে সম্মান জানাতে এই পাথরগুলো দিয়ে যজ্ঞবেদীটি ঠিক করেছিলেন। তারপর তিনি বেদীর পাশে 7 গ্যালন জল ধরার মতো একটি ছোট ডোবা কাটলেন, 33 এবং সমস্ত জ্বালানি কাঠ বেদীতে রাখলেন। ষাঁড়টাকে টুকরো করে কাটার পর এলিয় সেইসব টুকরো কাঠের ওপর রাখলেন। 34 তারপর তিনি বললেন, “চারটে পাত্রে জল ভরে নিয়ে এসে সেই জল এই মাংসের টুকরো ও কাঠের ওপর ছড়িয়ে দাও।” 35 এলিয় এরপর তিন বার একাজ করলে, বেদী থেকে জল গড়িয়ে পড়ে ডোবাটা ভরিয়ে দিল।

36 তখন বৈকালিক বলিদানের সময়। ভাববাদী এলিয় বেদীর কাছে গিয়ে প্রার্থনা করলেন, “প্রভু অব্রাহাম, ইস‌্হাক ও যাকোবের ঈশ্বর, আমি আপনাকে আহ্বান করছি। আপনি এসে প্রমাণ করুন যে আপনিই ইস্রায়েলের প্রকৃত ঈশ্বর। এইসব লোককে দেখান যে আপনিই আমাকে এসব করবার জন্য আদেশ দিয়েছিলেন। 37 হে প্রভু, আপনি এসে আমার ডাকে সাড়া দিলে তবেই এইসব লোকরা বুঝতে পারবে আপনিই তাদের আপনার কাছে ফিরিয়ে নিলেন।”

38 তখন প্রভু আগুন পাঠালেন। সেই আগুনে সমস্ত বলি, কাঠ, পাথর বেদীর পাশের মাটি পর্যন্ত পুড়ে গেল। আগুন ডোবায় জমা জলকে ভক্ষণ করে নিল। 39 সমস্ত লোক এ ঘটনা দেখে মাটিতে হাঁটু গেড়ে বসে বলতে শুরু করলো, “প্রভুই ঈশ্বর। প্রভুই ঈশ্বর।”

40 এলিয় তখন বললেন, “বাল মূর্ত্তির সমস্ত ভাববাদীদের ধরে নিয়ে এসো। একটাও যেন পালাতে না পারে।” তখন সবাই মিলে ঐ সমস্ত ভাববাদীদের ধরে নিয়ে এল। এলিয় তাদের কীশোনের খাঁড়িতে নিয়ে গিয়ে হত্যা করলেন।

আবার বৃষ্টি নামলো

41 এলিয় তখন রাজা আহাবকে বললেন, “যাও এবার গিয়ে পানাহার করো। প্রবল বৃষ্টি আসছে।” 42 রাজা আহাব তখন খেতে গেলেন আর এলিয় কর্ম্মিল পর্বতের চূড়ায় গিয়ে নতজানু হয়ে হাঁটুতে মাথা ঠেকিয়ে 43 তাঁর ভৃত্যকে বললেন, “সমুদ্রের দিকে তাকাও।”

সেই ভৃত্য তখন যেখান থেকে সমুদ্র দেখা যায় সেখানে গেল। সে ফিরে এসে বলল, “কই কিছু তো দেখতে পেলাম না।” এলিয় তাকে আবার দেখতে পাঠালেন। 44 পরপর সাত বার একই ঘটনা ঘটার পর সাতবারের বার সেই ভৃত্য এসে বলল, “মানুষের হাতের মুঠোর মতো ছোট্ট এক টুকরো মেঘ দেখলাম সমুদ্রের দিক থেকে আসছে।”

এলিয় তাঁর ভৃত্যকে বললেন, “যাও রাজা আহাবকে তাঁর রথ প্রস্তুত করে বাড়িতে যেতে বলো কারণ এক্ষুনি রওনা না হলে ও বৃষ্টিতে আটকে যাবে।”

45 অল্প কিছু ক্ষণের মধ্যেই গোটা আকাশ কালো মেঘে ঢেকে গিয়ে বাতাস বইতে শুরু করলো এবং প্রবল বৃষ্টি শুরু হল। আহাব তাঁর রথে চড়ে যিষ্রিয়েলের দিকে রওনা হলেন। 46 প্রভুর শক্তি তখন এলিয়কে ভর করলো। এলিয় আঁট করে পোশাক বেঁধে আহাবের আগেই দৌড়ে যিষ্রিয়েলে পৌঁছে গেলেন।

1 থিষলনীকীয় 1

পিতা ঈশ্বর ও প্রভু যীশু খ্রীষ্টের সঙ্গে থিষলনীকীয়ার যে মণ্ডলী যুক্ত, তাদের কাছে পৌল, সীল ও তীমথিয় আমরা এই চিঠি লিখছি।

ঈশ্বরের অনুগ্রহ ও শান্তি তোমাদের ওপর বিরাজ করুক।

থিষলনীকীয়দের জীবন ও বিশ্বাস

আমরা সর্বদা প্রার্থনার সময় তোমাদের স্মরণ করে থাকি এবং তোমাদের সকলের জন্য ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিই। বিশ্বাসের দরুন ও প্রেমের বশবর্তী হয়ে যে সব কাজ তোমরা করেছ এবং খ্রীষ্ট যীশুতে যে প্রত্যাশা রয়েছে তাতে উৎসাহিত হয়ে তোমরা যে ধৈর্য্য ধরছ, সে সব কথা স্মরণ করে আমরা ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানাই।

ঈশ্বর প্রেমে আশ্রিত ভাই ও বোনেরা, আমরা জানি তিনি তোমাদের আপন করে নেবার জন্য মনোনীত করেছেন। আমাদের দ্বারা প্রচারিত সুসমাচার কেবলমাত্র কথার মাধ্যমে তোমাদের কাছে আসে নি, কিন্তু তা পরাক্রম, পবিত্র আত্মা ও গভীর বিশ্বাসের মাধ্যমে এসেছিল। তোমরা তো জান যে আমরা তোমাদের মধ্যে কি ধরণের জীবনযাপন করেছিলাম। তোমাদের মঙ্গলের জন্যই আমরা ঐভাবে চলেছিলাম; আর তোমরা আমাদের ও প্রভুর অনুকরণ করেছিলে। তোমরা অনেক নির্যাতন ভোগের মধ্যেও সেই শিক্ষা আনন্দের সঙ্গে গ্রহণ করেছিলে। পবিত্র আত্মাই সেই আনন্দ তোমাদের দিয়েছিলেন।

এর ফলস্বরূপ তোমরা মাকিদনিয়া ও আখায়ার সমস্ত বিশ্বাসী লোকের কাছে আদর্শ স্বরূপ হয়েছ। কেবলমাত্র মাকিদনিয়া ও আখায়াতে তোমাদের কাছ থেকে প্রভুর বাক্য ছড়িয়ে পড়েছে তা নয়, ঈশ্বরের প্রতি তোমাদের বিশ্বাসের কথা সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে। এই জন্য তোমাদের বিশ্বাসের সম্পর্কে আমাদের কিছু বলার প্রয়োজন নেই; কারণ সব জায়গার মানুষ আমাদের জানাচ্ছে কিভাবে তোমরা আমাদের অভ্যর্থনা জানিয়েছিলে এবং কিভাবে তোমরা মূর্তি পূজা ছেড়ে জীবন্ত সত্য ঈশ্বরের সেবার দিকে মন দিয়েছিলে, 10 আর ঈশ্বর তাঁর যে পুত্রকে মৃতদের মধ্য থেকে উত্থিত করেছেন তাঁর ফিরে আসার অপেক্ষায় আছ। যীশুই আমাদের ঈশ্বরের আসন্ন ক্রোধ থেকে রক্ষা করবেন।

যিহিষ্কেল 48

ইস্রায়েল পরিবারগোষ্ঠীর জমি

48 1-7 “উত্তর দিকের সীমা পূর্বদিকে ভূমধ্যসাগর হতে হিৎলোন ও হমাতের পথে এবং শেষে হৎসর ঐনন পর্যন্ত গেছে। এটা দম্মেশক ও হমাতের মধ্যবর্তী সীমাতে। এই দলের পরিবারগোষ্ঠীর জমি এই সীমার পূর্ব থেকে পশ্চিম পর্যন্ত যাবে। উত্তর থেকে দক্ষিণে এখানকার পরিবারগোষ্ঠীরা হল: দান, আশের, নপ্তালি, মনঃশি, ইফ্রয়িম, রূবেণ ও যিহূদা।

জমির বিশেষ অংশের কথা

“জমির পরবর্তী অংশ বিশেষ উদ্দেশ্যে ব্যবহারের জন্য রয়েছে। এই জমি যিহূদার দক্ষিণে অবস্থিত। এর ক্ষেত্র উত্তর থেকে দক্ষিণে লম্বায় 25,000 হাত এবং পূর্ব থেকে পশ্চিমে এর চওড়া ততটাই যতটা জমি অন্য পরিবারগোষ্ঠীর অধিকারে। এই জমির মধ্যভাগে মন্দিরটি রয়েছে। তোমরা এই জমি প্রভুর উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করবে। এর মাপ লম্বায় 25,000 হাত এবং চওড়ায় 20,000 হাত। 10 জমির এই বিশেষ অংশ যাজক গন ও লেবীয়দের মধ্যে বণ্ট্ন করে দেওয়া হবে।

“যাজকরা এই জমির এক অংশ পাবে। সেই জমি উত্তরে লম্বায় হবে 25,000 হাত, চওড়ায় পশ্চিমে 10,000 হাত, পূর্বদিকে চওড়ায় 10,000 হাত এবং দক্ষিণে লম্বায় 25,000 হাত। এই জমির মধ্যেই প্রভুর মন্দিরটি হবে। 11 এই জমি সাদোকের উত্তরপুরুষদের জন্য। এই লোকরা আমার পবিত্র যাজক হিসাবে মনোনীত কারণ তারা যেসময় ইস্রায়েলীয়রা আমায় পরিত্যাগ করে, সে সময়েও তারা আমার সেবায় রত ছিল। লেবী পরিবারগোষ্ঠীর লোকদের মত সাদোকের পরিবার আমায় পরিত্যাগ করে যায়নি। 12 জমির পবিত্র অংশের এই ভাগ বিশেষভাবে এই যাজকদের জন্য। এ জমির অবস্থান লেবীদের জমির পাশেই।

13 “যাজকদের পরেই লেবীদের জন্য জমির যে ভাগ থাকবে তা লম্বায় 25,000 হাত এবং চওড়ায় 10,000 হাত। তারা মাপে সবটাই পাবে—অর্থাৎ‌ দৈর্ঘ্যে 25,000 হাত ও প্রস্থে 20,000 হাত। 14 লেবীয়রা এই জমির কোন অংশ বিক্রি বা তা নিয়ে ব্যবসা করবে না। এই জমি তারা বিক্রি করতে পারবে না এবং দেশের এই অংশকে টুকরো করতে পারবে না। কারণ এই জমি প্রভুর—এটার বিশেষ মূল্য রয়েছে, তা দেশের উত্তর অংশে অবস্থিত।

শহরের সমৃদ্ধি ভাগ

15 “যাজক ও লেবীয়দের দেবার পর 25,000 হাত দৈর্ঘ্যের ও 5000 হাত প্রস্থের মাপের জমি অবশিষ্ট থাকবে। এই জমি শহরের জন্য বা পশুদের তৃণভূমি বা ঘরবাড়ি বানানোর জন্য থাকবে। সাধারণ লোকে এই জমি ব্যবহার করতে পারে। শহরটা এর মাঝখানে হবে। 16 শহরের মাপগুলি এই: উত্তরদিকে তা হবে 4500 হাত, দক্ষিণে 4500 হাত, পূর্বে 4500 হাত এবং পশ্চিমে 4500 হাত। 17 শহরে তৃণভূমি থাকবে আর তা হবে উত্তরে ও দক্ষিণে 250 হাত, পূর্ব ও পশ্চিমে 250 হাত। 18 পবিত্র স্থানের ধারে পূর্বে ও পশ্চিমে 10,000 হাত করে যে জায়গা পড়ে থাকবে তা শহরের কর্মীদের জন্য খাদ্যের যোগান দেবে। 19 শহরের কর্মীরা এই জমি চাষ করবে। কর্মীরা ইস্রায়েলের যে কোন পরিবারগোষ্ঠীরই হতে পারে।

20 “জমির এই বিশেষ অংশ হবে একটি বর্গক্ষেত্র যেটি লম্বায় ও চওড়ায় 25,000 হাত হবে। পবিত্র অংশটি এবং শহরের অন্য অংশটি এই জমির অন্তর্ভূক্ত হবে।

21-22 “সেই বিশেষ জমির কিছু অংশ শহরের শাসকের জন্য থাকবে। জমির বিশেষ অংশটি বর্গক্ষেত্র, লম্বায় ও চওড়ায় 25,000 হাত। জমির কিছু অংশ যাজকদের, কিছুটা লেবীয়দের এবং কিছুটা মন্দিরের জন্য। এই জমির মধ্যে মন্দির থাকবে। জমির বাকিটা দেশের শাসকের। বিন্যামীন ও যিহূদার জমির মধ্যে যে জায়গা তা শাসক পাবে।

23-27 “এই পূর্ব্বোল্লিখিত জাতিগুলির মতই অবশিষ্ট জাতিরা সেই একই পূর্ব ও পশ্চিমের সীমা পাবে। উত্তর থেকে দক্ষিণে এই পরিবারগোষ্ঠীগুলি হল: বিন্যামীন, শিমিয়োন, ইষাখর, সবূলূন ও গাদ।

28 “গাদের জমির দক্ষিণ সীমা তামোর থেকে মরীবা-কাদেশের জলাশয় এবং তারপর মিশরের স্রোত থেকে ভূমধ্যসাগর পর্যন্ত যাবে। 29 এবং এই জমিই তুমি ইস্রায়েল পরিবারগোষ্ঠীর মধ্যে ভাগ করে দেবে। সেটাই প্রত্যেক দল পাবে।” প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন।

শহরের দ্বারগুলি

30 “শহরের এই ফটকগুলির নাম ইস্রায়েল পরিবারগোষ্ঠীর নামানুসারে রাখা হবে। শহরের ফটকগুলি হবে এখানে বর্নিত ফটকগুলির মতই।

“শহর উত্তর দিকে লম্বায় হবে 4500 হাত। 31 ফটকের সংখ্যা হবে তিনটি: রূবেণের ফটক, যিহূদার ফটক ও লেবীর ফটক।

32 “শহরের পূর্ব দিক লম্বায় হবে 4500 হাত। সেখানকার তিনটি দ্বারের নাম হবে যোষেফের দ্বার, বিন্যামীনের দ্বার এবং দানের দ্বার।

33 “শহরের দক্ষিণ দিক লম্বায় হবে 4500 হাত এবং তার তিনটি দরজার নাম হবে: শিমিয়োনের দ্বার, ইষাখরের দ্বার এবং সবূলূনের দ্বার।

34 “শহরের পশ্চিম দিক লম্বায় হবে 4500 হাত। সেখানেও তিনটি দ্বার থাকবে। তাদের নাম হবে: গাদের দ্বার, আশেরের দ্বার ও নপ্তালির দ্বার।

35 “শহরের চারধারে দূরত্ব হবে 18,000 হাত আর এখন থেকে শহরের নাম হবে: প্রভু তত্র।”

গীতসংহিতা 104

104 হে আমার আত্মা প্রভুর প্রশংসা কর!
    হে প্রভু আমার ঈশ্বর, আপনি মহান!
মহিমা এবং সম্মান সহ সজ্জিত।
    যেমন করে মানুষ জামাকাপড় পরে, তেমন করে আপনি আলোক পরিধান করেন।
আপনিই আকাশকে পর্দার মত বিস্তৃত করেছেন।
    ঈশ্বর তার ওপরে আপনি আপনার গৃহ নির্মাণ করেছেন।
ঘন মেঘকে রথের মত ব্যবহার করে,
    বাতাসের ডানায় ভর করে আপনি সারা আকাশে ঘুরে বেড়ান।
ঈশ্বর, আপনার দূতদের আপনি বাতাসের মত
    এবং আপনার দাসদের আগুনের মত করে সৃষ্টি করেছেন।[a]
ঈশ্বর, পৃথিবীকে আপনি তার শক্ত ভিতের ওপর নির্মাণ করেছেন,
    তাই পৃথিবী কখনও পড়ে যাবে না।
কম্বলের মত আপনি তাকে জল দিয়ে ঢেকে দিয়েছেন।
    জলরাশি পর্বতকে ঢেকে দিয়েছে।
কিন্তু আপনি নির্দেশ দিয়েছিলেন তাই জলও সরে গিয়েছিলো।
    ঈশ্বর আপনি জলের দিকে চেয়ে উচ্চস্বরে নির্দেশ দিয়েছিলেন এবং জলরাশি সরে গিয়েছিলো।
সেই জলরাশি পর্বতসমূহ থেকে বয়ে গিয়ে পড়েছিলো উপত্যকার মধ্যে
    এবং তারপর তার জন্য যে নির্দিষ্ট জায়গা আপনি তৈরী করেছিলেন সেখানে ঝরে পড়েছিলো।
আপনিই সমুদ্রের সীমা নির্ধারণ করেছেন।
    অতএব, জলরাশি আর অত উঁচুতে উঠবে না যাতে পৃথিবী পুনরায় ঢেকে যেতে পারে।

10 ঈশ্বর, আপনিই প্রস্রবণের জলকে নদীর ধারায় প্রবাহিত করিয়েছেন।
    পার্বত্য ধারা বেয়ে তা নীচে নেমে আসে।
11 সেই জলধারা সব বন্য প্রাণীদের পানীয় জল দেয়।
    এমন কি বুনো গাধারাও এখানে জল পান করতে আসে।
12 জলের ধারে বুনো পাখিরা বাস করতে আসে,
    কাছাকাছি গাছের ডালে বসে তারা গান গায়।
13 ঈশ্বর পর্বত বেয়ে বৃষ্টি পাঠান।
    যে সব জিনিস ঈশ্বর সৃষ্টি করেছেন সেগুলি পৃথিবীর যা কিছু প্রয়োজন তার সবই জোগান দেয়।
14 পশুদের জন্য তিনি ঘাস দিয়েছেন।
আমরা আমাদের কঠিন পরিশ্রম দিয়ে যে উদ্ভিদগুলি রোপন করি তাও তিনিই দেন, ওই সব গাছ মাটি থেকে আমাদের খাদ্য দেয়।
15 যে দ্রাক্ষারস আমাদের সুখী করে,
    যে তেল আমাদের চামড়া নরম রাখে,
    যে খাদ্য আমাদের শক্তিশালী করে সে সবই ঈশ্বর আমাদের দেন।

16 লিবানোনের মস্ত বড় এরস গাছগুলো ঈশ্বরের।
    প্রভুই ওই গাছগুলো লাগিয়েছেন এবং ওদের প্রয়োজনীয় জল তিনিই দিয়েছিলেন।
17 ওই গাছগুলোতে চড়ুই থেকে শুরু করে
    সারস পর্যন্ত সব পাখি বাসা করেছে।
18 উঁচু পর্বতে বুনো ছাগলরা থাকে।
    বিশাল বিশাল পাথরের মধ্যে পাহাড়ী ভোঁদড় লুকিয়ে থাকে।

19 হে ঈশ্বর, কবে ছুটি শুরু হবে তা বলে দেওয়ার জন্য আপনি আমাদের চাঁদ দিয়েছেন।
    এবং কখন অস্ত যেতে হবে সূর্য তা সব সময়েই জানে।
20 রাত্রি হবার জন্য আপনি অন্ধকার সৃষ্টি করেছেন,
    সেই সময় হিংস্র পশুরা বেরিয়ে আসে এবং ঘুরে বেড়ায়।
21 আক্রমণের সময় সিংহ গর্জন করে ওঠে,
    ঈশ্বর যে খাদ্য তাদের দেন তা যেন তারা গর্জন করে চাইতে থাকে।
22 তারপর সূর্য ওঠে
    এবং পশুরা তাদের ঘরে গিয়ে বিশ্রাম করে।
23 তারপর লোকরা যে যার কাজে যায়
    এবং তারা সন্ধ্যা পর্যন্ত কাজ করে।

24 হে ঈশ্বর, আপনি অনেক বিস্ময়কর কাজ করেছেন।
    আপনার সৃষ্ট জিনিসে এই পৃথিবী পূর্ণ।
    আপনি যা কিছু করেন, তার মধ্যে আমরা আপনার প্রজ্ঞা দেখি।
25 সাগরের দিকে দেখ তা কত বড়!
    সাগরের মধ্যে কত রকম ছোট
    এবং বড় প্রাণীসমূহ আছে যা গোনা যায় না!
26 আপনার সৃষ্ট লিবিয়াথন যখন সমুদ্রে খেলা করে,
    তখন জাহাজসমূহ সমুদ্র পারাপার করে।

27 ঈশ্বর, ওই সব জিনিসই আপনার ওপর নির্ভর করে।
    যথাসময়ে আপনি ওদের খাদ্য দেন।
28 সব জীবন্ত প্রাণীকেই আপনি তাদের আহারের খাদ্য দেন।
    ভালো ভালো খাবারে ভর্ত্তি করে আপনি আপনার করযুগল উন্মুক্ত করেন এবং তারা সন্তুষ্ট না হওয়া পর্যন্ত আহার করে যায়।
29 কিন্তু যখন আপনি ওদের থেকে বিমুখ হন ওরা ভয় পেয়ে যায়।
    ওদের আত্মা ওদের ছেড়ে যায়, ওরা দুর্বল হয়ে পড়ে এবং মারা যায় এবং ওদের দেহ আবার ধূলোয় পরিণত হয়!
30 কিন্তু যখন আপনি আপনার আত্মাকে পাঠালেন, প্রভু, তখন ওরা আবার স্বাস্থ্যবান হল।
    দেশটিকে আপনি আবার নতুন করে তোলেন!

31 প্রভুর মহিমা চিরদিন বিরাজ করুক!
    ঈশ্বর যা সৃষ্টি করেছেন তা তিনি উপভোগ করুন।
32 প্রভু যদি একবার পৃথিবীর দিকে তাকান
    পৃথিবী কেঁপে যাবে।
পর্বতকে তিনি স্পর্শ করলে
    সেখান থেকে ধোঁয়া বেরোতে থাকবে।

33 আমার সারা জীবন আমি ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে গান গাইব।
    যতক্ষণ আমি বেঁচে থাকবো, আমি প্রভুর প্রশংসা গীত গাইব।
34 আমি যা বলেছি, তা যেন ঈশ্বরকে সন্তুষ্ট করে।
    প্রভুর সঙ্গ লাভ করে আমি খুশী।
35 পাপ যেন পৃথিবী থেকে অদৃশ্য হয়ে যায়।
    দুষ্ট লোকদের অস্তিত্ব যেন আর না থাকে।
হে আমার আত্মা, প্রভুর প্রশংসা কর!

প্রভুর প্রশংসা কর!

Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)

Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International