M’Cheyne Bible Reading Plan
শিবার রাণী শলোমনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন
10 শিবার রাণী লোকমুখে শলোমনের খ্যাতি ও প্রজ্ঞার কথা শুনতে পেয়ে তাঁকে কঠিন প্রশ্ন দিয়ে পরীক্ষা করতে এলেন। 2 তিনি বহু দাস দাসীদের নিয়ে জেরুশালেমে উপস্থিত হলেন। তিনি অজস্র উটে করে নানাধরণের মশলাপাতি, অলঙ্কার ও সোনা নিয়ে এলেন এবং শলোমনের সঙ্গে দেখা করলেন। তারপর শলোমনকে সম্ভাব্য বহুবিধ কঠিন প্রশ্ন করলেন। 3 শলোমনের কাছে সেই সব প্রশ্ন খুব একটা কঠিন ছিল না। তিনি তাঁর সব প্রশ্নেরই উত্তর দিলেন। 4 তখন শিবার রাণী উপলব্ধি করলেন যে সত্যিই শলোমন খুবই জ্ঞানী। 5 তিনি তাঁর সুন্দর রাজপ্রাসাদটিও দেখলেন, তাঁর ভোজসভার বিলাসবহুল আয়োজন, সেনাপতিদের বৈঠক, প্রাসাদের ভৃত্য ও তাদের বহুমূল্য পোশাক, মন্দিরের অনুষ্ঠান ও বলিদানের রকম সকম দেখে বিস্ময়ে বাকরহিত হয়ে গেলেন।
6 তিনি তখন রাজা শলোমনকে বললেন, “আমি আমার নিজের দেশে বসে আপনার বুদ্ধিমত্তা ও কীর্তিকলাপের বহু খ্যাতি শুনেছিলাম। এখন দেখছি তার এক কণাও মিথ্যা নয়। 7 আমি নিজের চোখে না দেখা পর্যন্ত এসব কথা বিশ্বাস করি নি কিন্তু এখন দেখতে পাচ্ছি, লোক-মুখে যা শুনেছিলাম আপনার বুদ্ধিমত্তা ও সম্পদ তার চেয়েও অনেক বেশী। 8 সত্যিই আপনার লোকরা ও ভৃত্যরা খুবই ভাগ্যবান কারণ তারা প্রতিদিন আপনার সেবা করতে পায় ও আপনার সান্নিধ্যে থেকে আপনার জ্ঞানগর্ভ কথা শুনতে পায়। 9 প্রভু, আপনার ঈশ্বরকে প্রশংসা করুন। তিনি নিশ্চয়ই আপনার প্রতি সন্তুষ্ট, তাই আপনাকে ইস্রায়েলের রাজপদে অধিষ্ঠিত করেছেন। প্রভু ঈশ্বর ইস্রায়েলকে ভালোবাসেন বলেই আপনাকে এদেশের রাজা করেছেন। আপনি বিধি মেনে নিরপেক্ষ ভাবে প্রজাদের শাসন করেন।”
10 এরপর শিবার রাণী রাজা শলোমনকে প্রায় 9000 পাউণ্ড সোনা, বহু মশলাপাতি ও অলঙ্কার উপহার দিলেন। তিনি রাজাকে যে পরিমাণ মশলাপাতি দিয়েছিলেন তার পরিমাণ এতদিন পর্যন্ত ইস্রায়েলে যে মশলাপাতি প্রবেশ করেছিল তার চেয়েও বেশী।
11 এদিকে হীরমের নৌবহর ওফীর থেকে সোনা ছাড়াও বহু পরিমাণ কাঠ ও অলঙ্কার নিয়ে এসেছিল। 12 শলোমন সেই সব কাঠ দিয়ে রাজপ্রাসাদ ও মন্দিরের ঠেকা দেওয়া ছাড়াও মন্দিরের গায়কদের জন্য বীণা ও বাদ্যযন্ত্র বানিয়ে দিয়েছিলেন। তখনও পর্যন্ত ইস্রায়েলের কোনো লোকই সেই ধরণের কাঠ চোখে দেখেনি এবং সেই সময়ের পরও আর কেউ সে ধরণের কাঠ দেখেনি।
13 প্রথামতো রাজা শলোমন এক শাসক হিসেবে আরেক শাসক শিবার রাণীকে বহু উপহার দিলেন। এছাড়াও তিনি শিবার রাণীকে তিনি যা যা চেয়েছিলেন সবই দিয়েছিলেন। এরপর শিবার রাণী ও তাঁর দাসদাসীরা নিজের দেশে ফিরে গেলেন।
শলোমনের বিশাল ঐশ্বর্য্য
14 প্রতি বছর রাজা শলোমন প্রায় 79,920 পাউণ্ড সোনা পেতেন। 15 এছাড়াও তিনি তাঁর নৌ-বহরের ব্যবসায়ী ও বণিকদের কাছ থেকে আরবের শাসক ও প্রাদেশিক শাসনকর্তাদের কাছে থেকে বহু পরিমাণে সোনা পেতেন।
16 রাজা শলোমন পেটানো সোনা দিয়ে 200টি বড় ঢাল বানিয়েছিলেন। প্রতি ঢালে প্রায় 15 পাউণ্ড করে সোনা ছিল। 17 তিনি পেটানো সোনা দিয়ে আরো 300টি ঢাল বানিয়েছিলেন; তার প্রত্যেক ঢালে 4 পাউণ্ড করে সোনা ছিল। এই ঢালগুলোকে তিনি “লিবানোনের জঙ্গল” নামের বাড়ীতে রেখেছিলেন।
18 রাজা শলোমন খাঁটি সোনায় মোড়া হাতির দাঁতের একটা বিশাল সিংহাসন বানিয়েছিলেন। 19 সেই সিংহাসনটায় দুটো ধাপ বেয়ে উঠতে হতো। সিংহাসনের পেছনের দিকটা ওপরে গোলাকার ছিল। বসার জায়গার দুধারেই ছিল হাতল লাগানো। আর দুদিকের হাতলের তলায় আঁকা ছিল সিংহের ছবি। 20 ওঠার সিঁড়ির ছটি ধাপের প্রত্যেকটার শেষেও একটা করে সিংহের মূর্ত্তি ছিল। আর কোনো দেশেই এধরণের রাজসিংহাসন ছিল না।
21 রাজা শলোমনের ব্যবহার্য্য সমস্ত পেয়ালা ও গ্লাস ছিল সোনায় বানানো। “লিবানোনের জঙ্গল” বাড়ির সমস্ত পাত্রও ছিল খাঁটি সোনার। রাজপ্রাসাদের কোন কিছুই রূপোর ছিল না। শলোমনের সময়ে চতুর্দিকে এতো বেশী সোনা ছিল যে লোকরা রূপোকে কোনো মূল্যবান ধাতু বলে মনেই করত না।
22 অন্যান্য দেশের সঙ্গে বাণিজ্য করার জন্য রাজা শলোমনের বাণিজ্য তরী ছিল। এগুলো আসলে ছিল হীরমেরই জাহাজ। তিন বছর অন্তর এই সমস্ত জাহাজ সোনা, রূপা, হাতির দাঁত ও পশু পাখিতে ভর্ত্তি হয়ে ফিরে আসত।
23 শলোমন ছিলেন পৃথিবীর সব চেয়ে বড় রাজা। তিনি ছিলেন সব চেয়ে বেশী ধনী ও পণ্ডিত। 24 সব জায়গার লোকরাই শলোমনের দর্শন পেতে চাইতো, তারা শলোমনের ঈশ্বর প্রদত্ত বুদ্ধিমত্তার পরিচয় পেতে চাইতো এবং তাঁর কথা শুনতে চাইতো। 25 প্রতি বছর দূর দূরান্তের দেশ থেকে বহু লোক সোনা এবং রূপোর জিনিসপত্র, পোশাক পরিচ্ছদ, অস্ত্রশস্ত্র, মশলাপাতি, ঘোড়া এবং খচ্চর উপহার নিয়ে রাজা শলোমনের সঙ্গে দেখা করতে আসতো।
26 সে জন্য শলোমনের অনেক রথ ও ঘোড়া ছিল। তাঁর কাছে 1400 রথ ও 12,000 ঘোড়া ছিল। আলাদা শহর বানিয়ে সেই সব শহরে এই রথগুলো রাখা থাকত আর জেরুশালেমে তাঁর নিজের কাছে শলোমন অল্প কিছু রথ রেখে দিয়েছিলেন। 27 ইস্রায়েলকে তিনি সম্পদে ও ঐশ্বর্য্যে ভরে দিয়েছিলেন। জেরুশালেম শহরে রূপো ছিল পাথরের মতোই সাধারণ। এরস গাছও ছিল পাহাড়ি গাছগাছালির মতো সহজলভ্য। 28 শলোমন মিশর ও কূ থেকে ঘোড়া এনেছিলেন। তাঁর বণিকরা কূ থেকে কিনে এই সমস্ত ঘোড়া ইস্রায়েলে নিয়ে আসতো। 29 মিশর থেকে আনা একটা রথের দাম পড়ত 15 পাউণ্ড রূপোর সমান। আর ঘোড়ার দাম পড়ত 3 3/4 পাউণ্ড রূপোর সমান। শলোমন হিত্তীয় ও অরামীয় রাজাদের কাছে ঘোড়া ও রথ বিক্রি করতেন।
1 আমরা খ্রীষ্ট যীশুর দাস পৌল ও তীমথিয়, ফিলিপীতে খ্রীষ্ট যীশুতে যত ঈশ্বরের পবিত্র লোকরা আছেন তাঁদের কাছে এবং পালকবৃন্দ ও পরিচারকদের কাছে আমরা এই পত্র লিখছি।
2 আমাদের পিতা ঈশ্বর ও প্রভু যীশু খ্রীষ্ট তোমাদের অনুগ্রহ ও শান্তি দান করুন।
পৌলের প্রার্থনা
3 আমি যখনই তোমাদের কথা স্মরণ করি, তখনই ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিই। 4 আমি তোমাদের সকলের জন্য সব সময় আনন্দের সঙ্গে প্রার্থনা করে থাকি। 5 কারণ সুসমাচার প্রচারের কাজে তোমরা প্রথম দিন থেকে এ পর্যন্ত আমাকে সাহায্য করে আসছ। 6 আমি এবিষয়ে নিশ্চিত যে ঈশ্বর তোমাদের অন্তরে শুদ্ধকাজ শুরু করেছেন। সেই শুদ্ধকাজ ঈশ্বর এখনও করে চলেছেন এবং খ্রীষ্টের আগমনের দিনে তা সম্পন্ন করবেন।
7 তোমাদের সকলের বিষয়ে আমার এমন চিন্তা করাই উপযুক্ত, কারণ তোমরা সর্বদা আমার অন্তরে আছ। তোমাদের কাছে থাকার এই অনুভূতি আমার জাগে কারণ আমি কারাগারে থাকি, বা সুসমাচারের পক্ষে কথা বলে তা দৃঢ়তার সঙ্গে প্রমাণ করি, তার দ্বারা তোমরা সকলে আমার সেই অনুগ্রহের ভাগী হও। 8 ঈশ্বর জানেন যে তোমাদের দেখতে আমার কত আকাঙ্খা। খ্রীষ্ট যীশুর ভালবাসায় আমি তোমাদের সকলকে ভালবাসি।
9 তোমাদের জন্য আমার প্রার্থনা এই:
যেন তোমাদের ভালবাসা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পায় এবং তোমরা সেই ভালবাসার সঙ্গে জ্ঞান ও বিচার বুদ্ধি লাভ কর। 10 তোমরা যেন ভাল ও মন্দের মধ্যে পার্থক্য বুঝতে পার আর যা ভাল তা বেছে নাও। এইভাবে চল যেন যীশু খ্রীষ্টের আগমনের দিন পর্যন্ত তোমরা শুদ্ধ ও নির্দোষ থাক। 11 খ্রীষ্টের মাধ্যমে তোমরা বিবিধ সৎ গুণাবলীতে পূর্ণ হও, যার দ্বারা ঈশ্বরের প্রশংসা ও মহিমা হয়।
প্রভুর কাজের জন্য পৌলের দুঃখভোগ
12 ভাই ও বোনেরা, আমি তোমাদের একথা জানাতে চাই যে, আমার প্রতি যা ঘটেছে, তা বরং সুসমাচার প্রচারে সাহায্য করেছে। 13 এর ফলে সকল রক্ষীবাহিনী ও প্রত্যেকের কাছে এটি পরিষ্কার হয়ে গেছে যে আমি খ্রীষ্টে বিশ্বাসী বলে কারাগারে রয়েছি। 14 এছাড়াও প্রভুতে বিশ্বাসী আমার অনেক ভাই ভয় না পেয়ে অপরকে আরো বেশী খ্রীষ্টের বার্তা বলতে সাহসী হয়েছে।
15 তাদের মধ্যে কেউ কেউ ঈর্ষা ও বিবাদের মনোভাব নিয়ে সুসমাচার প্রচার করে, আবার অন্যরা যথার্থ সৎ ইচ্ছায় তা প্রচার করে। 16 শেষের দলটি ভালবেসেই একাজ করছে, কারণ এরা জানে যে সুসমাচারের পক্ষ সমর্থন করার জন্যই ঈশ্বর আমাকে এখানে নিযুক্ত করেছেন। 17 কিন্তু অন্যরা সৎ উদ্দেশ্য নয়, বরং নিজ নিজ স্বার্থ সিদ্ধির উদ্দেশ্যে খ্রীষ্টকে প্রচার করছে। এখানে আমার বন্দী অবস্থায় তারা তাদের প্রচার দেখিয়ে আমার মনে দুঃখ দিতে চায়। 18 কিন্তু তাতে আমার কি এসে যায়? আসল বিষয়টি হল সৎ বা অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে যে ভাবেই হোক্ না কেন তারা লোকদের কাছে খ্রীষ্টেরই কথা বলছে। আমি চাই যে তারা লোকদের কাছে খ্রীষ্টের কথা বলে। ঠিক উদ্দেশ্য সামনে রেখেই তাদের একাজ করা উচিত। যদিও তারা একটা মিথ্যা ও ভুল উদ্দেশ্য নিয়ে তা করছে তবুও আমি খুশী কারণ তারা লোকদের কাছে খ্রীষ্টের কথা বলছে, আর আমি খুশীই থাকব।
19 তোমরা আমার জন্য প্রার্থনা করছ আর যীশু খ্রীষ্টের আত্মা আমায় সাহায্য করছেন, তাই আমি জানি যে এই সঙ্কট আমায় পরিত্রাণ এনে দেবে। 20 আমার আশা আকাঙ্খা এই যে আমি কোন বিষয়ে হতাশ হব না; কিন্তু সব সময়ের মত এখনও সেই সাহস করি যে আমি বেঁচে থাকি বা মরে যাই খ্রীষ্ট আমার দেহে মহিমান্বিত হবেন।
21 কারণ আমার কাছে আমার জীবন মানেই খ্রীষ্ট; আর মরণ হল লাভ। 22 এই দেহ নিয়ে যদি আমায় বেঁচে থাকতে হয় তবে আমি প্রভুর জন্য একাজ করার সুযোগ পাব। আমি কোনটা বেছে নেব, জীবন না মরণ? আমি জানি না। 23 আমি এই দোটানায় পড়েছি। আমি তো এখনই এ দেহ ত্যাগ করে খ্রীষ্টের সঙ্গে থাকতে চাই, কারণ এই তো শ্রেয়। 24 কিন্তু এই মরদেহে বেঁচে থাকা তোমাদের জন্য খুবই প্রয়োজন। 25 আমি জানি যে আমাকে তোমাদের প্রয়োজন আছে; তাই আমি জানি যে আমি বেঁচে থাকব, তোমাদের সকলের কাছেই থাকব। আমি তোমাদের বৃদ্ধি পেতে ও তোমাদের বিশ্বাসে আনন্দ পেতে সাহায্য করব; 26 এর ফলে যখন আমি আবার তোমাদের কাছে যাব তখন খ্রীষ্ট যীশুতে আমার সম্বন্ধে তোমাদের গর্ব করার আরো কারণ থাকবে।
27 কিন্তু যাইহোক্ না কেন, তোমরা খ্রীষ্টের সুসমাচারের যোগ্যরূপে আচরণ কর। আমি এসে তোমাদের দেখি বা তোমাদের থেকে দূরে থাকি, আমি যেন তোমাদের বিষয়ে শুনতে পাই যে, তোমরা এক আত্মার সুসমাচারের মধ্যে যে বিশ্বাস আছে তার পক্ষে কঠোর সংগ্রাম করছ, 28 আর যারা তোমাদের বিরোধিতা করছে তাদের ভয় পাচ্ছ না! এর দ্বারাই প্রমাণ হবে যে তাদের বিনাশ হচ্ছে; কিন্তু পরিত্রাণ দ্বারা তোমরা উদ্ধার লাভ করছ, আর এই উদ্ধার ঈশ্বরের কাছ থেকেই আসে। 29 তোমরা যে খ্রীষ্ট যীশুর ওপর বিশ্বাস স্থাপন করতে পেরেছ, এই সম্মান ও সুযোগ ঈশ্বর তোমাদের দিয়েছেন। শুধু তাই নয়, কিন্তু খ্রীষ্টের জন্য দুঃখভোগ করার সম্মানও তোমাদের দিয়েছেন। 30 আমি যখন তোমাদের ওখানে ছিলাম তখন সুসমাচার বিরোধী লোকদের সঙ্গে আমাকে কি রকম সংগ্রাম করতে হয়েছিল তা তোমরা জান এবং এখনও কঠোর সংগ্রাম চলছে আর তোমরাও সেই একই রকম সংগ্রামের মধ্য দিয়ে যাচ্ছ।
নতুন মন্দির
40 নির্বাসনে যাবার পঁচিশতম বছরের শুরুতে অর্থাৎ মাসের দশম দিনে প্রভুর শক্তি আমার উপর এল। এ হল বাবিলীয়রা জেরুশালেম অধিকার করার চৌদ্দ বছর পরের কথা। সেই দিন প্রভু দর্শনে আমাকে সেখানে নিয়ে গেলেন।
2 একটি দর্শনে, ঈশ্বর আমাকে ইস্রায়েল দেশে বহন করে নিয়ে গিয়ে এক উঁচু পর্বতের কাছে নামিয়ে দিলেন। সেই পর্বতের ওপর আমার চোখের সামনে শহরের মত দেখতে একটি অট্টালিকা ছিল। 3 প্রভু আমাকে সেখানে নিয়ে গেলেন। সেখানে, ঘসা মাজা পিতলের মত চক্চক্ করছে এমন একজন পুরুষকে দেখলাম। সেই লোকটির হাতে মাপার জন্য ফিতে ও লাঠি ছিল। তিনি ফটকের ধারেই দাঁড়িয়ে ছিলেন। 4 সেই পুরুষ আমায় বললেন, “হে মনুষ্যসন্তান, তোমার চোখ ও কান ব্যবহার কর। ঐসব জিনিসের দিকে দেখ ও আমার কথা শোন। আমি তোমায় যা দেখাই তাতে মন দাও কারণ তোমাকে ঐসব দেখাবার জন্যই এখানে আনা হয়েছে। তুমি যা দেখবে তা অবশ্যই ইস্রায়েল পরিবারকে জানিও।”
5 আমি একটা দেওয়াল দেখলাম যা মন্দিরের বাইরে মন্দিরকে চারধারে ঘিরে ছিল। সেই পুরুষটির হাতে ছিল মাপার মাপকাঠি। লম্বা হাতের মাপ অনুসারে তা ছিল 6 হাত লম্বা। পুরুষটি যখন দেওয়ালের প্রস্থ মাপলো তা এক মাপকাঠির সমান হল আর প্রাচীরের উচ্চতাও এক মাপকাঠির সমান হল।
6 তারপর সেই পুরুষটি পূর্ব দিকের দরজার কাছে গিয়ে সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠে সেই দরজার মুখের চওড়াটা মাপল, তা মাপে এক মাপকাঠি হল। 7 রক্ষীদের ঘরগুলি ছিল মাপে লম্বায় এক মাপকাঠি ও চওড়ায় এক মাপকাঠি। ঘরগুলির মধ্যের দেওয়াল চওড়ায় 5 হাত ছিল। প্রবেশ পথের বারান্দার দিকের মুখটি যেটি মন্দিরের দিকে মুখ করে ছিল তাও প্রস্থে এক মাপ কাঠি। 8 তারপর সেই পুরুষটি বারান্দাটি মাপলেন। 9 তা লম্বায় 8 হাত হল। পুরুষটি দরজার দুধারের দেওয়ালও মাপল। প্রত্যেক পাশের দেওয়াল চওড়ায় 2 হাত হল। বারান্দাটি মন্দিরের দিকে মুখ করে প্রবেশ পথের শেষে ছিল। 10 প্রবেশ পথের দুইধারে তিনটি করে ছোট ছোট ঘর ছিল। প্রত্যেকটা ঘরের মাপ এক এবং তাদের পাশের দেওয়ালগুলোও মাপে এক ছিল। 11 পুরুষটি প্রবেশ পথের মুখটি মাপল। সেটা ছিল প্রস্থে 10 হাত এবং লম্বায় 13 হাত। 12 প্রত্যেকটি ঘরের সামনে একটি নীচু প্রাচীর ছিল; সেই প্রাচীর দৈর্ঘ্যে ও প্রস্থে ছিল 1 হাত। ঘরগুলো ছিল বর্গাকৃতি। প্রতিটি দেওয়াল ছিল 6 হাত।
13 পুরুষটি একটি ঘরের ছাদের কোণ থেকে অপর ঘরের ছাদের কোণ পর্যন্ত প্রবেশপথটি মাপলে তা মাপে 25 হাত হল। প্রত্যেকটি দরজা অপর দরজার বিপরীত ছিল। 14 পুরুষটি পাশের দেওয়ালগুলির প্রত্যেকটি পাশ, এমনকি গাড়ী-বারান্দার দুই ধারের দেওয়ালগুলিও মাপল। সর্বসমেত মাপ ছিল 60 হাত।[a] 15 বাইরের দরজার ভিতরের ধার থেকে দূরের বারান্দার প্রান্তটি ছিল 50 হাত। 16 সব কটি রক্ষীদের ঘরের ওপরে পাশের দিকে দেওয়ালে ও অলিন্দে ছোট ছোট জানালা ছিল। জানালাগুলির চওড়া দিকটা রাস্তার দিকে মুখ করে ছিল। পাশের দিকের দেওয়ালগুলোতে এবং ঝুল বারান্দায় খেজুর গাছের ছবি খোদাই করে আঁকা ছিল।
প্রাঙ্গণের বাইরের দিক
17 তারপর পুরুষটি আমাকে বাইরের প্রাঙ্গণে নিয়ে গেল। আমি সেই প্রাঙ্গণের চারধারে ত্রিশটি ঘর ও পাথরে বাঁধানো ভূমি দেখতে পেলাম। ঘরগুলি দেওয়ালের ধারে ও প্রস্তরে বাঁধানো ভূমির দিকে মুখ করে ছিল। 18 দরজাটি লম্বায় যতখানি, প্রস্তরে বাঁধানো ভূমিটি প্রস্থে ততখানিই ছিল। পাথরে বাঁধা ভূমিটি প্রবেশ পথের ভেতরের দিকের শেষ পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। এটা ছিল নীচের শান বাঁধানো জায়গা। 19 পুরুষটি নীচের প্রবেশ পথের ভেতরের দিক থেকে ভেতরের প্রাঙ্গনের বাইরেটা পর্যন্ত মাপলে তা মাপে পূর্বদিকে ও উত্তরে 100 হাত হল।
20 তারপর, সেই পুরুষটি বাইরের প্রাঙ্গন ঘিরে যে দেওয়াল, সেই দেওয়ালের উত্তর দিকে যে ফটক ছিল তা দৈর্ঘ্যে ও প্রস্থে মাপল। 21 এই প্রবেশ পথ তার দুপাশের তিনটে করে ঘর এবং তার বারান্দা সবই মেপে প্রথম দরজাটার মত হল। প্রবেশ পথটি দৈর্ঘ্যে 50 হাত ও প্রস্থে 25 হাত হল। 22 এর জানালাগুলি, বারান্দা এবং খোদিত খেজুর গাছের চিত্রের মাপজোক সব আগের দরজার মতই ছিল। বাইরের দিক থেকে সাতটি ধাপ সেই দরজার কাছে পৌঁছে দিত এবং এর বারান্দা ছিল প্রবেশ পথের ভিতরের দিকটার শেষ পর্যন্ত। 23 প্রাঙ্গণের উত্তর দিকের দরজা বরাবর ভিতরের প্রাঙ্গণে খাবার জন্য একটি দরজা ছিল। এ দরজা পূর্বের দিকের দরজার মতই ছিল। পুরুষটি ভেতরের দিকের দেওয়ালের দরজা থেকে বাইরের দিকের দেওয়ালের দরজা মাপল। দরজা থেকে দরজার মাপ ছিল 100 হাত।
24 তারপর পুরুষটি আমাকে দক্ষিণের দিকের দেওয়ালে নিয়ে গেল। সেখানে আর একটি ফটক ছিল। পুরুষটি সেটার পাশের দেওয়ালগুলির ও বারান্দার মাপ নিল। এদের মাপ অন্য দরজাগুলির মাপের সমান হল। 25 প্রবেশ পথে ও তার বারান্দায় অন্য প্রবেশ দ্বারগুলির মত জানালা ছিল। প্রবেশ পথটির মাপ দৈর্ঘ্যে 50 হাত ও প্রস্থে 25 হাত। 26 এই প্রবেশ দ্বারটির সামনে সাতটি ধাপ ছিল। এর বারান্দাটি ছিল প্রবেশ পথের ভেতরের দিক থেকে শেষ পর্যন্ত। দরজার পথের দুই ধারের দেওয়ালে খেজুর গাছের আকৃতি খোদাই করা ছিল। 27 ভেতরের প্রাঙ্গণের দক্ষিণ দিকে একটি প্রবেশদ্বার ছিল। সেই পুরুষটি ভেতরের দিকের দেওয়ালের দরজা থেকে বাইরের দিকের দেওয়ালের দরজা পর্যন্ত মাপলে তা দরজা থেকে দরজা পর্যন্ত 100 হাত হল।
ভিতরের প্রাঙ্গণ
28 তারপর সেই পুরুষটি দক্ষিণ দিকের প্রবেশদ্বার দিয়ে আমায় ভিতরের প্রাঙ্গণে আনল। সে এই প্রবেশ পথটি মাপলে তা ভিতরের প্রাঙ্গণের আসার অন্য প্রবেশ দ্বারগুলির সমান হল। 29 এর লাগোয়া ঘরগুলি, পাশের দেওয়াল এবং বারান্দার মাপ ও অন্য দরজাগুলির সমান হল। প্রবেশ পথের ও বারান্দার চারদিকেই জানালা ছিল। প্রবেশ পথটি দৈর্ঘ্যে 50 হাত ও প্রস্থে 25 হাত ছিল। 30 বারান্দাটি প্রস্থে 25 হাত ও দৈর্ঘ্যে 5 হাত ছিল। 31 এবং এর বারান্দা ছিল দরজার পথের শেষে বাইরের প্রাঙ্গণের গায়ে। প্রবেশ পথের দুই পাশের দেওয়ালে খেজুর গাছের চিত্র খোদাই করা ছিল। আটটা সিঁড়ির ধাপ পার হলেই সেই দরজা।
32 তখন সেই পুরুষটি আমাকে পূর্ব দিকের ভিতরের প্রাঙ্গণে নিয়ে চলল। সে প্রবেশ দ্বারটি মাপলে তা অন্য প্রবেশ দ্বারগুলির সমান হল। 33 এর ঘরগুলি, পাশের প্রাচীর ও বারান্দার মাপগুলি অন্য প্রবেশ দ্বারের সমান ছিল। প্রবেশ পথের ও বারান্দার চারদিকে অনেক জানালা ছিল। প্রবেশ পথটি লম্বায় 50 হাত ও চওড়ায় 25 হাত ছিল। 34 এবং প্রবেশ পথের শেষে ভিতরের প্রাঙ্গণেই ছিল এর বারান্দা। প্রবেশ পথের দুই পাশেই ছিল খোদাই করা খেজুর গাছের আকৃতি। আটটি ধাপ পার হলেই সেই দরজায় পৌঁছানো যেত।
35 তখন সেই পুরুষটি আমায় উত্তর দিকের প্রবেশদ্বারের দিকে নিয়ে চলল। সেটা মাপা হলে তার মাপ অন্য দ্বারগুলির সমান হল। 36 এর ঘরগুলি, পাশের দেওয়াল ও বারান্দার মাপগুলিও অন্য দ্বারগুলির সমান হল। প্রবেশ পথের ও তার বারান্দার চারধারে অনেক জানালা ছিল। প্রবেশ পথটি মাপে দৈর্ঘ্যে 50 হাত ও প্রস্থে 25 হাত। 37 এবং এর বারান্দাটি ছিল প্রবেশ পথের শেষে বাইরের প্রাঙ্গণের গায়ে। প্রবেশ পথের দুই পাশের দেওয়ালে খেজুর গাছের আকৃতি খোদাই করা ছিল। আটটি ধাপ পার হলেই সেই ফটক।
বলি প্রস্তুত করার ঘরগুলি
38 সেখানে একটি ঘর ছিল যার দরজা খুললে এই ফটকের বারান্দায় এসে পড়ে। এই হল সেই জায়গা যেখানে যাজকরা হোমবলির জন্য পশু ধোয়। 39 এই বারান্দার দুই দিকে দরজার দুইধারে দুটি টেবিল ছিল। হোমবলি, পাপমোচন নৈবেদ্য, এবং অপরাধ মোচন নৈবেদ্যের জন্য পশুদের এই টেবিলেই হত্যা করা হত। 40 এই বারান্দার বাইরে দরজার প্রতি পাশে দুটি করে টেবিল ছিল। 41 সুতরাং ভিতরের দেওয়ালের দিকে চারটি টেবিল এবং বাইরের দেওয়ালের দিকে চারটে টেবিল—মোট আটটি টেবিল যাজকরা নৈবেদ্যের নিমিত্তে পশু বলি দেবার জন্য ব্যবহার করত। 42 হোমবলির জন্যও পাথর কেটে তৈরী করা চারটি টেবিল ছিল। এই টেবিলগুলি মাপে 1.5 হাত লম্বা, 1.5 হাত চওড়া ও 1 হাত উঁচু। এই টেবিলের উপরে হোমবলি ও অন্যান্য নৈবেদ্য নিমিত্ত পশু বলি দেবার যন্ত্রপাতিও রাখা হত। 43 এই জায়গায় দেওয়ালের গায়ে মাংস ঝোলাবার জন্য তিন ইঞ্চি লম্বা আংটাসমূহ ছিল। উৎসর্গের মাংস টেবিলগুলির ওপর রাখা হত।
যাজকদের ঘরগুলি
44 ভিতরের প্রাঙ্গণে যাজকদের জন্য দুটি ঘর ছিল।[b] একটি উত্তর দিকের ফটকের পাশে দক্ষিণ দিকে মুখ করে। অন্যটি দক্ষিণ দিকে ফটকের পাশে উত্তর দিকে মুখ করে। 45 সেই পুরুষটি আমায় বলল, “দক্ষিণ দিকে মুখ করে যে ঘরটি সেটি মন্দিরের চত্বরে সেবায় রত যাজকদের জন্য। 46 কিন্তু উত্তর দিকে মুখ করা ঘরটি সেই সব যাজকদের জন্য যারা বেদীতে পরিচর্যার কাজ করে। যাজকরা লেবী পরিবারগোষ্ঠীর কিন্তু যাজকদের এই দ্বিতীয় দল সদোকের উত্তরপুরুষ। তারাই একমাত্র যারা প্রভুর সেবার্থে বলি বেদীতে বয়ে নিয়ে যেতে পারে।”
47 পুরুষটি ভিতরের প্রাঙ্গণটি মাপলে দেখা গেল তা এক প্রকৃত বর্গক্ষেত্র। দৈর্ঘ্যে তা 100 হাত এবং প্রস্থেও তা 100 হাত ছিল। বেদীটি মন্দিরের সামনে অবস্থিত ছিল।
মন্দিরের বারান্দা
48 তারপর সেই ব্যক্তিটি আমায় মন্দিরের দক্ষিণ গাড়ী বারান্দায় নিয়ে গিয়ে দুই ধারের দেওয়াল মাপল। প্রতি পাশের দেওয়াল ছিল 5 হাত পুরু ও 3 হাত চওড়া। এবং তাদের মধ্যকার ব্যবধানের মাপ ছিল 14 হাত। 49 বারান্দাটি প্রস্থে 20 হাত ও দৈর্ঘ্যে 12 হাত, দশ ধাপ সিঁড়ি উঠে গিয়েছিল বারান্দা পর্যন্ত। বারান্দার দুই পাশের দেওয়ালগুলির জন্য প্রতি দেওয়ালে একটি করে, মোট দুটি থাম ছিল।
91 গুপ্ত আশ্রয় লাভের জন্য তুমি পরাৎপরের কাছে যেতে পারো।
সুরক্ষার জন্য তুমি সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের কাছে যেতে পারো।
2 আমি প্রভুকে বলেছি, “আপনিই আমার নিরাপদ আশ্রয়স্থল, আপনিই আমার দুর্গ।
হে আমার ঈশ্বর, আমি আপনাকে বিশ্বাস করি।”
3 ভয়ঙ্কর ব্যাধি এবং গুপ্ত বিপদ থেকে
ঈশ্বর তোমায় রক্ষা করবেন।
4 নিরাপত্তার জন্য তুমি ঈশ্বরের কাছে যেতে পারো।
যেমন করে পাখি তার ডানা মেলে তার শাবকদের আগলে রাখে, তেমন করে, ঈশ্বর তোমায় রক্ষা করবেন।
তোমায় রক্ষা করার জন্য ঈশ্বর হবেন একটি ঢাল ও প্রাচীরের মত।
5 রাতে তোমার ভয় পাওয়ার মতো কিছু থাকবে না।
দিনের বেলাতেও শত্রুর তীরকে তুমি ভয় পাবে না।
6 নিশাকালে যে অসুখ আসে তাকে তুমি ভয় পাবে না,
কিংবা দিনের বেলায় যে ভয়ঙ্কর অসুস্থতা আসে তাকেও তুমি ভয় পাবে না।
7 তুমি 1000 হাজার শত্রুকে পরাজিত করতে পারবে।
তোমার নিজের ডান হাত 10,000 শত্রু সৈন্যকে পরাজিত করবে।
শত্রুরা তোমায় স্পর্শ পর্যন্ত করতে পারবে না!
8 লক্ষ্য করে দেখ, দেখবে যে
ওই দুষ্ট লোকদের শাস্তি হয়েছে!
9 কেন? কারণ তুমি ঈশ্বরে আস্থা রাখ।
কারণ পরাৎপরকে তুমি তোমার নিরাপদ আশ্রয়স্থলরূপে গ্রহণ করেছ।
10 তোমার কোন অমঙ্গল হবে না।
তোমার বাড়ীতে কোন অসুখ থাকবে না।
11 ঈশ্বর তাঁর দূতদের আজ্ঞা দেবেন
এবং তুমি যেখানেই যাবে তারা তোমায় রক্ষা করবে।
12 তোমার পা যাতে পাথরে হোঁচট না খায়,
সেই জন্য ওদের হাত তোমায় ধরে থাকবে।
13 বিষধর সাপ, এমন কি সিংহের মধ্যে দিয়েও
তুমি হেঁটে যেতে পারবে।
14 প্রভু বলেন, “যদি কোন ব্যক্তি আমাকে ভালবাসে এবং বিশ্বাস করে, আমি তাকে রক্ষা করবো।
আমার অনুগামীরা যারা আমার নাম উপাসনা করে, তাদের আমি রক্ষা করবো।
15 আমার অনুগামীরা সাহায্যের জন্য আমায় ডাকবে এবং আমি তাদের সাড়া দেবো।
যখন তারা সমস্যায় পড়বে তখন আমি ওদের সঙ্গে থাকবো।
আমি ওদের রক্ষা করবো এবং সম্মান দেবো।
16 আমার অনুগামীদের আমি দীর্ঘ জীবন দেবো।
আমি ওদের রক্ষা করবো।”
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International