M’Cheyne Bible Reading Plan
প্রভুর উদ্দেশ্যে দায়ূদের প্রশংসা গীত
22 প্রভু যখন দায়ূদকে শৌল এবং অন্যান্য শত্রুদের হাত থেকে রক্ষা করলেন তখন দায়ূদ এই গীত গাইলেন:
2 প্রভু আমার শিলা, আমার দুর্গ, আমার নিরাপদ আশ্রয়।
3 আমার ঈশ্বর হচ্ছেন আমার শিলা যার কাছে আমি নিরাপত্তার জন্য ছুটে যাই।
ঈশ্বর আমার ঢাল, তাঁর ক্ষমতা আমায় রক্ষা করে।
প্রভু আমার লুকিয়ে থাকার জায়গা।
উঁচু পাহাড়ে, তিনি আমার নিরাপদ স্থান।
নৃশংস শত্রুর থেকে তিনি আমায় রক্ষা করেন।
4 প্রভু প্রশংসার যোগ্য।
আমি প্রভুর কাছে সাহায্য চেয়েছি
এবং তিনি আমাকে আমার শত্রুর কাছ থেকে রক্ষা করেছেন।
5 আমার শত্রুরা আমায় হত্যা করতে চাইছিল।
আমার চারপাশে মৃত্যুর তরঙ্গ মালার উচ্ছসিত কোলাহল অদম্য স্রোতে আমি মৃত্যুর দিকে ভেসে যাচ্ছিলাম।
6 আমার সামনে মৃত্যুর ফাঁদ,
আমার চারপাশে কবরের দড়ি।
7 বদ্ধ আমি, আমার প্রভুর কাছে সাহায্যের জন্য প্রার্থনা করলাম,
হ্যাঁ, আমার ঈশ্বরকে ডাকলাম।
ঈশ্বর তাঁর মন্দিরে ছিলেন। তিনি আমার ডাক শুনলেন।
আমার সাহায্যের জন্য প্রার্থনা তাঁর কানে গেল।
8 তখন মাটি কেঁপে উঠল।
অন্তরীক্ষের ভিত নড়ে উঠল।
কেন? কারণ, প্রভু ক্রোধান্বিত হলেন।
9 ঈশ্বরের নাক থেকে ধোঁয়া বেরিয়ে এল।
তাঁর মুখ থেকে অগ্নিশিখা
এবং স্ফুলিঙ্গ বিচ্ছুরিত হতে লাগল।
10 প্রভু গগনমণ্ডল বিদীর্ণ করে নীচে নেমে এলেন।
একটি গাঢ় কৃষ্ণবর্ণ মেঘের ওপর তিনি দাঁড়ালেন।
11 তিনি করূব দূতগণের পিঠে চড়ে
এবং বাতাসে ভর দিয়ে উড়ে বেড়াচ্ছিলেন।
12 তাঁর চারপাশে, একটা তাঁবুর মত গাঢ় কাল মেঘ দিয়ে প্রভু নিজেকে ঘিরে রেখেছিলেন।
সেই বজ্র বিদ্যুৎময় মেঘে, তিনি জলরাশি জমা করেছিলেন।
13 তাঁর চারপাশ থেকে জ্বলন্ত কয়লার মত
আলোকমালা বিকীর্ণ হতে লাগল।
14 প্রভু আকাশ থেকে বজ্রপাত করলেন।
পরাৎপর তাঁর কন্ঠস্বর শ্রুতিগোচর করলেন।
15 প্রভু শত্রুদের ছিন্ন ভিন্ন করবার জন্য তাঁর শর নিক্ষেপ করলেন।
প্রভু বিদ্যুৎ প্রেরণ করলেন এবং লোকরা বিভ্রান্ত হয়ে ছড়িয়ে পড়লো।
16 হে প্রভু, আপনি দৃঢ়কণ্ঠে কথা বলেছিলেন।
তাঁর মুখ থেকে তীব্রগতি বাতাস বয়ে গিয়েছিল এবং জলকে পিছনে ঠেলে দিয়েছিলেন।
সেদিন আমরা সমুদ্রের তলদেশ দেখেছিলাম।
আমরা সেদিন পৃথিবীর ভিত্তিভূমিও দেখেছিলাম।
17 সেইভাবে প্রভু আমাকেও সাহায্য করেছিলেন। প্রভু ওপর থেকে আমার কাছে নেমে এসেছিলেন।
প্রভু তাঁর দুটি হাত দিয়ে আমায় জড়িয়ে ধরে বিপদ থেকে টেনে উদ্ধার করেছিলেন।
18 আমার শত্রুরা আমার চেয়ে শক্তিশালী ছিল। সেই লোকরা আমায় ঘৃণা করত।
আমার শত্রুরা আমার পক্ষে একটু বেশী শক্তিশালীই ছিল, তাই ঈশ্বর আমায় রক্ষা করলেন।
19 যখন আমি সমস্যায় জর্জরিত তখন শত্রুরা আমায় আক্রমণ করে।
কিন্তু, একমাত্র প্রভুই আমার পাশে ছিলেন।
20 প্রভু আমায় ভালোবাসেন, তিনি আমায় উদ্ধার করেছেন।
তিনি আমায় নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে গেছেন।
21 প্রভু আমাকে আমার পুরস্কার দেবেন, কারণ যা সত্য আমি তাই করেছি।
তাই তিনি আমার ভাল করবেন।
22 কেন? কারণ আমি প্রভুকে মান্য করে চলেছি।
আমার প্রভুর বিরুদ্ধে আমি কোন পাপ করি নি।
23 আমি সর্বদাই প্রভুর সিদ্ধান্তসকল স্মরণে রাখি
ও তাঁর বিধিগুলি অনুসরণ করি।
24 তাঁর সামনে আমি নিজেকে সর্বদাই
শুচি এবং নির্দোষ রাখি।
25 এই জন্য প্রভু আমাকে আমার পুরস্কার দেবেন। কেন? কারণ যা সত্য আমি তাই করেছি।
আমি কোন অন্যায় করি নি, তাই তিনি আমার মঙ্গল করবেন।
26 যদি কোন ব্যক্তি আপনাকে প্রকৃতই ভালবাসে, তাহলে তার প্রতি আপনি প্রকৃত ভালোবাসা দেখাবেন।
যদি কোন ব্যক্তি আপনার প্রতি নিষ্ঠাবান হন তাহলে তার প্রতি আপনিও নিষ্ঠাবান হন।
27 হে প্রভু, যারা শুচি এবং ভাল আপনিও তাদের প্রতি শুচি ও ভাল।
কিন্তু আপনি চতুর ও কুচক্রী ব্যক্তিকে পরাস্ত করতে সক্ষম।
28 হে প্রভু, সরল সৎ লোকদের আপনি সাহায্য করেন।
কিন্তু অহঙ্কারীদের আপনি লজ্জিত করেন।
29 হে প্রভু, আপনি আমার জ্বলন্ত দ্বীপ,
প্রভু আমার চারপাশের অন্ধকারকে আলোকিত করেন।
30 হে প্রভু, আপনার সহায়তায় আমি সৈন্যদের সঙ্গে দৌড়তে পারি।
ঈশ্বরের সহায়তায় আমি শত্রু পক্ষের দেওয়াল অতিক্রম করতে পারি।
31 ঈশ্বরের পথই পরিপূর্ণ।
প্রভুর বাক্য পরীক্ষিত সত্য।
যারা তাঁকে বিশ্বাস করে, তিনি তাদের রক্ষা করেন।
32 প্রভু ছাড়া দ্বিতীয় কোন ঈশ্বর নেই।
আমাদের ঈশ্বর ব্যতীত অন্য কোন শিলা নেই।
33 ঈশ্বরই আমার দূর্গ।
তিনি সৎ মানুষকে জীবনের সঠিক পথ দেখান।
34 প্রভু আমাকে হরিণের মত দ্রুত দৌড়াতে সাহায্য করেন।
উচ্চস্থানে তিনি আমায় অবিচল রাখেন।
35 প্রভু আমাকে যুদ্ধ বিদ্যা শিখিয়েছিলেন।
সেই কারণে আমার বাহু একটি শক্তিশালী শর নিক্ষেপ করতে পারে।
36 হে প্রভু! আপনি আমায় রক্ষা করেছেন। আপনি আমাকে জয়ী হতে সাহায্য করেছেন।
আপনি আমার শত্রুকে পরাজিত করতে সাহায্য করেছেন।
37 আমার হাঁটু এবং পা দুটিকে সবল করে দিন
যেন না খুঁড়িয়ে দ্রুত দৌড়াতে পারি।
38 আমার শত্রুদের নিধন না করা পর্যন্ত আমি তাদের তাড়া করতে চাই।
তারা ধ্বংস প্রাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত আমি ফিরে আসতে চাই না।
39 আমি আমার শত্রুদের ধ্বংস করেছি
আমি তাদের পরাজিত করেছি।
তারা আর উঠে দাঁড়াবে না।
হ্যাঁ, আমার শত্রুরা আমার পায়ের কাছে লুটিয়ে পড়েছে।
40 হে ঈশ্বর, আপনিই আমায় যুদ্ধে শক্তিশালী করেছেন,
আপনিই আমার শত্রুদের আমার পায়ের কাছে লুটিয়ে দিয়েছেন।
41 আমার শত্রুর গলা কেটে তাদের লুটিয়ে ফেলার সুযোগ
আপনিই আমাকে দিয়েছেন।
42 আমার শত্রুরা সাহায্য চেয়েছিল কিন্তু তাদের সাহায্য করার কেউ ছিল না।
এমনকি তারা প্রভুর কাছেও সাহায্য চেয়েছিল কিন্তু প্রভু তার কোন উত্তর দেন নি।
43 আমি শত্রুদের ছিন্ন ভিন্ন করে
তাদের ধূলোয় পরিণত করেছি।
তাদের আমি চূর্ণবিচূর্ণ করেছি।
রাস্তার কাদার মত আমি তাদের মাড়িয়ে গিয়েছি।
44 আমার বিরুদ্ধে আমার নিজের লোক যারা লড়াই করেছে, হে প্রভু, আপনি তাদের হাত থেকে আমায় রক্ষা করেছেন।
আপনি আমাকে জাতির শাসক করেছেন।
যে লোকদের আমি জানতাম না, তারা এখন আমার সেবা করে।
45 অন্য দেশের লোকরাও আমায় মান্য করেছে। যখন তারা আমার নির্দেশ শুনেছে, তৎক্ষনাৎ তারা তা পালন করেছে।
সেই সব বিদেশীরা আমাকে ভয় করেছে।
46 সেই সব বিদেশীরা ভয়ে শুকিয়ে গেছে।
ভয়ে ভীত হয়ে তারা গোপন আস্তানা থেকে বেরিয়ে এসেছে।
47 প্রভু জীবিত!
আমি আমার শিলাকে প্রশংসা করি!
ঈশ্বর মহান! তিনিই সেই শিলা যিনি আমাকে রক্ষা করেন।
48 তিনি সেই ঈশ্বর যিনি আমার জন্য আমার শত্রুদের শাস্তি দিয়েছেন।
লোকদের তিনি আমার শাসনের অন্তর্ভুক্ত করেছেন।
49 হে ঈশ্বর, আপনি আমায় শত্রুদের থেকে রক্ষা করেছেন।
যারা আমার বিরোধিতা করেছিল তাদের পরাজিত করতে আপনি আমায় সাহায্য করেছেন।
শত্রুদের হাত থেকে আপনি আমায় রক্ষা করেছেন।
50 তাই হে প্রভু, আমি জাতিগুলির মধ্যে আপনার প্রশংসা করি!
এই কারণে আমি আপনার নামে গান গাই।
51 প্রভু তাঁর মনোনীত রাজাকে যে কোন যুদ্ধে জয়ী হতে সাহায্য করেন।
তাঁর মনোনীত রাজার জন্য প্রভু তাঁর করুণা বর্ষণ করেন।
তিনি দায়ূদের প্রতি এবং তাঁর উত্তরসূরীদের প্রতি সর্বদা বিশ্বস্ত থাকবেন।
অন্য প্রেরিতরা পৌলকে গ্রহণ করলেন
2 তারপর চৌদ্দ বছর পর আমি আবার জেরুশালেমে গেলাম। আমি বার্ণবার সঙ্গে গেলাম আর তীতকেও সঙ্গে নিলাম। 2 ঈশ্বরের কাছ থেকে প্রাপ্ত আদেশ অনুসারে আমি সেখানে গেলাম। সেখানকার বিশ্বাসীদের নেতৃবর্গের কাছে এক গোপন সভায় অইহুদীদের কাছে যে সুসমাচার প্রচার করে থাকি তার ব্যাখ্যা করলাম। আমি চেয়েছিলাম যে তারা যেন বুঝতে পারে আমি কি কাজ করছি, যেন অতীতে যে কাজ করেছিলাম ও বর্তমানে আমি যা করছি তা বৃথা না হয়ে থাকে।
3 এর ফলস্বরূপ তীত, যিনি আমার সঙ্গে ছিলেন, তিনি একজন গ্রীক হওয়া সত্ত্বেও এই নেতৃবর্গ তীতকে সুন্নত করার জন্য জোর করলেন না। 4 এইসব সমস্যা নিয়ে কথা বলার দরকার ছিল, কারণ কিছু ভণ্ড বিশ্বাসী গোপনে গুপ্তচরের মতো আমাদের দলে ঢুকে পড়েছিল এবং খ্রীষ্ট যীশুতে আমাদের কতটা স্বাধীনতা আছে তা জানবার চেষ্টা করছিল, যাতে আমাদের তাদের দাস করতে পারে। 5 সেই ভণ্ড বিশ্বাসী ভাইরা যা চেয়েছিল তার কোন কিছুতেই আমরা মত দিই নি, যাতে সুসমাচার দ্বারা যে সত্য প্রকাশিত হয়েছিল তা তোমাদের সাথে থাকে।
6 মণ্ডলীতে যাদের খুব গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে হচ্ছিল তাদের কাছ থেকেও আমি নতুন কোন কিছু জানতে পারি নি। তাঁরা যেই হোন না কেন তাতে আমার কিছু এসে যায় না। ঈশ্বরের কাছে সবাই সমান আর তিনি কারও মুখাপেক্ষী নন। 7 কিন্তু এই গুরুত্বপূর্ণ নেতারা দেখলেন যে ঈশ্বর আমাকে একটি বিশেষ কাজের ভার দিয়েছিলেন, যেমনটি পিতরকে দিয়েছিলেন। ঈশ্বর পিতরকে ইহুদীদের কাছে সুসমাচার প্রচারের ভার দিয়েছিলেন। কিন্তু ঈশ্বর আমাকে অ-ইহুদীদের কাছে সুসমাচার প্রচার করার ভার দিয়েছিলেন। 8 ইহুদীদের জন্য প্রেরিতের কাজ করতে ঈশ্বর পিতরকে ক্ষমতা দিয়েছিলেন, তিনিই আবার আমাকেও প্রেরিতের কাজ করবার ক্ষমতা দিয়েছিলেন, কিন্তু যারা ইহুদী নয় তাদের জন্য। 9 যাকোব, পিতর এবং যোহন আপাতদৃষ্টিতে নেতা ছিলেন এবং তাঁরা যখন দেখলেন যে ঈশ্বর আমাকে প্রচারের একটি বিশেষ অনুগ্রহ দান করেছেন, তখন তাঁরা বার্ণবা এবং আমাকে তাদের সহভাগী হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন। তাঁরা আমাদের বললেন, “আমরা এই ব্যবস্থায় সম্মত যে, আমরা, অর্থাৎ পৌল এবং বার্ণবা অ-ইহুদীদের কাছে প্রচারে যাব; আর তাঁরা অর্থাৎ যাকোব, পিতর ও যোহন ইহুদীদের কাছে যাবেন।” 10 তাঁরা কেবলমাত্র একটি বিষয়ে আমাদের অনুরোধ করলেন, যেন যারা দরিদ্র তাদের মনে রাখি। এ কাজটি করতে আমিও খুব উদগ্রীব ছিলাম।
পৌল পিতরের ভুল দেখিয়ে দেন
11 কিন্তু যখন পিতর আন্তিয়খিয়ায় এলেন, আমি সরাসরি তাঁর বিরোধিতা করলাম, কারণ তিনি স্পষ্টতই ভুল দিকে ছিলেন। 12 আন্তিয়খিয়ায় আসার পর প্রথমে তিনি অইহুদীদের সঙ্গে পানাহার ও মেলামেশা করতেন কিন্তু যাকোবের কাছে থেকে কিছু ইহুদী সেখানে এলে পিতর অইহুদীদের সঙ্গে পানাহার বন্ধ করে দিলেন। তিনি অইহুদীদের সঙ্গে মেলামেশা বন্ধ করে নিজেকে পৃথক রাখলেন। তিনি সেই সমস্ত ইহুদীদের কথা মনে করে ভয় পাচ্ছিলেন, যারা মনে করত সব অইহুদী লোকদের সুন্নত হওয়া দরকার। 13 এরপর অন্যান্য অইহুদীরা পিতরের সঙ্গে এই ভণ্ডামিতে এমন মাত্রায় যোগ দিলেন যে বার্ণবাও এদের ভণ্ডামির দ্বারা প্রভাবিত হলেন। 14 আমি যখন দেখলাম যে তাঁরা সুসমাচারের সত্য অনুসারে সোজা পথে চলছেন না, তখন আমি পিতরকে সম্বোধন করে সবার সামনে বললাম: “আপনি একজন ইহুদী হয়ে যদি ইহুদীদের রীতিনীতি পালন না করেন, তবে যারা অইহুদী তাদের ইহুদীদের মতো সব কিছু পালন করতে জোর করছেন কেন?”
15 আমরা জন্মসূত্রে ইহুদী, অইহুদী পাপী নই। 16 তবু আমরা জানি যে মানুষ ঈশ্বরের সামনে বিধি-ব্যবস্থা পালনের দ্বারা নয় বরং যীশু খ্রীষ্টে বিশ্বাস দ্বারা ঈশ্বরের সাক্ষাতে নির্দোষ গণিত হয়, তাই আমরা যীশু খ্রীষ্টে বিশ্বাস করেছি, যাতে আমরা ঈশ্বরের সামনে বিধি-ব্যবস্থা পালনের দ্বারা নয় বরং খ্রীষ্টে বিশ্বাসী বলেই নির্দোষ গণিত হই। কারণ কেউই বিধি-ব্যবস্থা পালনের দ্বারা ঈশ্বরের সামনে নির্দোষ বলে বিবেচিত হয় না।
17 কিন্তু আমরা ইহুদীরা খ্রীষ্টে নির্দোষ বিবেচিত হতে গিয়ে যদি অইহুদীদের মত নিজেদের পাপী দেখাই, তবে তার অর্থ কি এই যে খ্রীষ্ট পাপকে উৎসাহিত করেন? কখনই না। 18 কারণ যা আমি ভেঙে ফেলেছি তা যদি আবার গঠন করি, তাহলে আমি নিজেকে নিয়ম ভঙ্গকারী হিসাবে প্রমাণ করি। 19 বিধি-ব্যবস্থার দিক থেকে আমি মৃত এবং বিধি-ব্যবস্থা হল আমার মৃত্যুর কারণ। এটা হয়েছে যাতে আমি ঈশ্বরের জন্য বাঁচি। আমি খ্রীষ্টের সঙ্গে ক্রুশবিদ্ধ হয়েছি। 20 সুতরাং আমি আর জীবিত নই, কিন্তু খ্রীষ্টই আমার মধ্যে জীবিত আছেন; আমার দেহের মধ্যে যে জীবন আমি এখন যাপন করি, এ কেবল ঈশ্বরের পুত্রের ওপর বিশ্বাসের দ্বারাই করি, যিনি আমাকে ভালবেসেছেন এবং আমার জন্য নিজেকে উৎসর্গ করেছেন। 21 ঈশ্বরের অনুগ্রহ আমি প্রত্যাখান করি না, কারণ যদি বিধি-ব্যবস্থার দ্বারা ঈশ্বরের সামনে নির্দোষ গণিত হওয়া যায়, তবে খ্রীষ্ট মিথ্যাই প্রাণ দিয়েছিলেন।
মিশরের বিরুদ্ধে বার্তা
29 নির্বাসনের দশম বছরের দশম মাসের (জানুযারী) দ্বাদশ দিনে প্রভুর, আমার সদাপ্রভুর এই বাক্য আমার কাছে এল। তিনি বললেন, 2 “মনুষ্যসন্তান, মিশরের রাজা ফরৌণের দিকে তাকিয়ে তার বিরুদ্ধে ও মিশরের বিরুদ্ধে আমার হয়ে এই কথা বল। 3 বল, ‘প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন:
“‘মিশরের রাজা ফরৌণ, আমি তোমার বিরুদ্ধে।
তুমি নীলনদের মাঝখানে শুয়ে থাকা সেই সামুদ্রিক দানব।
তুমি বলে থাক, “এটা আমার নদী!
আমিই এর সৃষ্টিকর্তা!”
4-5 “‘কিন্তু আমি তোমার চোয়ালে বঁড়শি দিয়ে বিঁধিয়ে দেব।
নীলনদের মাছরা তোমার আঁশে ধরা পড়বে।
আমি তোমাকে মাছশুদ্ধ নদী থেকে
ডাঙ্গায় তুলে আনব।
আমি তোমাকে সবেগে নির্জন প্রান্তরে ছুঁড়ে ফেলে দেব।
তুমি মাটিতে পড়ে থাকবে, কেউ তোমায় তুলে কবর দেবে না।
আমি তোমাকে খাদ্যস্বরূপ বন্য পশু
ও পাখিদের কাছে দেব।
6 তখন মিশরে বসবাসকারী সবাই
জানবে যে আমিই প্রভু।
“‘আমি কেন এসব করব?
কারণ ইস্রায়েলের লোকরা সাহায্যের জন্য মিশরের ওপর নির্ভর করেছিল।
কিন্তু মিশর হচ্ছে একটি পাতলা খাগের লাঠির মত।
7 যখন ইস্রায়েল তোমার সঙ্গে লেগে রইল,
তখন তুমি ভেঙে পড়লে এবং সে তোমার ঘাড় মটকে দিল।
যখন ইস্রায়েল তোমার ওপর হেলান দিল,
তুমি ভেঙে পড়লে আর ওদের ফেলে দিলে।
কিন্তু মিশর কেবল তাদের হাত ও কাঁধ বিদ্ধ করেছে।
তারা সাহায্যের জন্য তোমার ওপর ভার দিয়েছিল, কিন্তু তুমি তার কাঁধ মুচড়ে ভেঙে দিয়েছ।’”
8 তাই প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন:
“আমি তোমার বিরুদ্ধে তরবারি আনব,
এবং তোমার সমস্ত লোকজন ও পশুপাখি ধ্বংস করব।
9 মিশর শূন্য ও ধ্বংস হবে,
তখন তারা জানবে আমিই প্রভু।”
ঈশ্বর বললেন, “কেন আমি এসব কাজ করব? কারণ তুমি বলেছ, ‘এই নদী আমার, আমিই এর নির্মাতা।’ 10 তাই আমি (ঈশ্বর) তোমার বিরুদ্ধে। আমি তোমার নীলনদের বহু শাখা-প্রশাখাগুলিরও বিরুদ্ধে। আমি মিশরকে সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করব। মিগ্দোল থেকে আসওয়ান পর্যন্ত এমনকি কূশ দেশের সীমানা পর্যন্ত শহরগুলি শূন্য হবে। 11 কোন লোক এমনকি পশুও মিশরের মধ্যে দিয়ে যাতায়াত করবে না। 40 বছর ধরে কেউ তার মধ্যে দিয়ে যাবেও না, বসবাসও করবে না। 40 বছর ধরে শহরগুলি ধ্বংসস্তুপ হয়ে পড়ে থাকবে 12 আমি মিশর ধ্বংস করব। শহরগুলো 40 বছর ধরে ধ্বংসের মধ্যে পড়ে থাকবে। আমি জাতিগণের মধ্যে মিশরীয়দের ছড়িয়ে দেব, বিদেশে তাদের আগন্তুকের মত করব।”
13 প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন, “আমি মিশরের লোকদের বহু জাতির মধ্যে ছিন্ন ভিন্ন করব। কিন্তু 40 বছর পর আমি ঐ লোকদের আবার সংগ্রহ করব। 14 আমি মিশরীয়দের বন্দী দশা ফেরাব, তাদের জন্মভূমি পথ্রোষে ফিরিয়ে আনব কিন্তু তাদের রাজ্যও তার গুরুত্ব হারাবে। 15 অন্যান্য রাজ্যের থেকে সেই রাজ্য সব চেয়ে কম গুরুত্বপূর্ণ হবে। সেটা আর কখনও অন্যান্য জাতির উপরে নিজেকে উন্নত করবে না। আমি তাদের এমন ন্যূন করব যে তারা আর জাতিগণের উপরে কর্তৃত্ব করবে না। 16 ইস্রায়েল পরিবার আর কখনও মিশরের উপরে নির্ভর করবে না। ইস্রায়েলীয়রা তাদের পাপ স্মরণ করবে—তারা স্মরণ করবে যে তারা মিশরের দিকে সাহায্যের জন্য ফিরেছিল (ঈশ্বরের দিকে নয়)। আর তারা জানবে যে আমিই প্রভু এবং সদাপ্রভু।”
বাবিল মিশর লাভ করবে
17 নির্বাসনের সাতাশতম বছরের প্রথম মাসের প্রথম দিনে প্রভুর এই বাক্য আমার কাছে এল। তিনি বললেন, 18 “মনুষ্যসন্তান, নবূখদ্রিৎসর বাবিলের রাজা সোরের বিরুদ্ধে প্রবলভাবে তার সৈন্যদের দিয়ে যুদ্ধ করিয়েছিলেন। তারা প্রত্যেক সৈন্যের মাথা কামিয়েছিল। ভারী মাল বহন করা কালীন ঘর্ষন দ্বারা প্রত্যেক সৈন্য নগ্ন হয়েছিল। নবূখদ্রিৎসর ও তার সেনাদল সোরকে পরাজিত করতে কঠোর পরিশ্রম করেছিল কিন্তু তারা সেই সব কঠোর পরিশ্রম দ্বারা কিছুই লাভ করেনি।” 19 তাই প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন, “আমি মিশর দেশ বাবিলের রাজা নবূখদ্রিৎসরকে দেব আর সে মিশরের লোকদের বহন করে নিয়ে যাবে। সেটাই হবে নবূখদ্রিৎসরের সেনাদলের বেতন। 20 আমি নবূখদ্রিৎসরকে তার কঠোর পরিশ্রমের পুরস্কার হিসাবে মিশর দেশ দিয়েছি। কারণ তারা আমার জন্য কাজ করেছে।” প্রভু আমার সদাপ্রভুই এসব কথা বলেছেন!
21 “সেই দিন আমি ইস্রায়েল পরিবারকে শক্তিশালী করব, তখন হে যিহিষ্কেল আমি তোমাকে তাদের কাছে কথা বলতে দেব আর তারা জানবে যে আমিই প্রভু।”
আসফের একটি মস্কীল।
78 হে আমার লোকরা, আমার শিক্ষামালা শোন।
আমি যা বলছি তা শোন।
2 আমি তোমাদের এই গল্প বলবো।
আমি তোমাদের এই প্রাচীন গল্পটি বলবো।
3 এই গল্প আমরাও শুনেছি, এই গল্পটা আমরা খুব ভালোভাবে জানি।
আমাদের পিতা-পিতামহরা এই গল্প বলেছেন।
4 এই গল্প আমরাও ভুলে যাবো না।
আমাদের লোকরা শেষ প্রজন্মকে পর্যন্ত এই গল্প বলতে থাকবে।
আমরা সবাই প্রভুর প্রশংসা করবো
এবং প্রভু যে সব আশ্চর্য কার্য করেছেন তা বলবো।
5 প্রভু যাকোবের সঙ্গে একটা চুক্তি করেছিলেন।
ইস্রায়েলকে ঈশ্বর একটা বিধি দিয়েছিলেন।
আমাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর আজ্ঞা দিয়েছেন।
তিনি আমাদের পূর্বপুরুষদের বলেছেন তারা যেন তাদের উত্তরপুরুষদের সেই বিধি সম্পর্কে শিক্ষাদান করে।
6 নতুন শিশুরা জন্ম নেবে। তারা আস্তে আস্তে বড় হবে।
তারা তাদের ছেলেমেয়েদের এই গল্পগুলো বলবে।
এইভাবে শেষ প্রজন্মের মানুষ পর্যন্ত এই বিধি জানতে পারবে।
7 তাই ঐসব লোকরাই ঈশ্বরকে বিশ্বাস করবে।
ঈশ্বর কি করেছেন তা তারা ভুলবে না।
ওরা খুব যত্ন করে তাঁর আজ্ঞাগুলো পালন করবে।
8 যদি লোকরা তাদের শিশুদের ঈশ্বরের আজ্ঞাগুলো সম্পর্কে শিক্ষা দেয়
তাহলে ওই শিশুরা ওদের পূর্বপুরুষদের মত হবে না, ওদের পূর্বপুরুষরা ঈশ্বরের বিরুদ্ধে গিয়েছিলো।
তারা তাঁকে মানতে অস্বীকার করেছিলো, ঐসব লোক প্রচণ্ড একগুঁয়ে ছিলো।
ওরা ঈশ্বরের আত্মার প্রতি নিষ্ঠাবান ছিল না।
9 ইফ্রয়িমের লোকেরা অস্ত্রসস্ত্রে সজ্জিত ছিল
কিন্তু তারা যুদ্ধক্ষেত্র থেকে দৌড়ে পালিয়ে গেল।
10 তারা ঈশ্বরের সঙ্গে তাদের চুক্তি রক্ষা করে নি।
তারা তাঁর শিক্ষামালা মান্য করতে অস্বীকার করেছিলো।
11 ঈশ্বর যে সব আশ্চর্য কার্য করেছিলেন, ইফ্রয়িমের লোকরা তা ভুলে গিয়েছিলো।
তিনি যে সব আশ্চর্য কার্য ওদের দেখিয়েছিলেন, তা তারা ভুলে গিয়েছিলো।
12 ঈশ্বর ওদের পিতৃপুরুষদের মিশরের সোয়নে,
তাঁর পরাক্রম প্রদর্শন করে দেখিয়েছিলেন।
13 ঈশ্বর লোহিত সাগরকে দুভাগ করেছিলেন এবং লোকদের সাগর পার করিয়েছিলেন।
সেই জল দুধারে একটি শক্তি দেওয়ালের মত দাঁড়িয়েছিলো।
14 প্রতিদিন প্রলম্বিত মেঘের দ্বারা ঈশ্বর ওদের পথ দেখিয়েছিলেন।
প্রতিটি রাত্রে আগুনের আলো দিয়ে ঈশ্বর ওদের পথ দেখিয়ে ছিলেন।
15 ঈশ্বর মরুভূমির পাথরকে দ্বিধাবিভক্ত করেছেন।
মাটির গভীর অতল থেকে ওই সব লোকদের তিনি জলও দিয়েছেন।
16 পাথর থেকে আগত ঝর্ণার জলকে
ঈশ্বরই নদীর প্রবাহ দিয়েছেন!
17 কিন্তু লোকরা ঈশ্বরের বিরুদ্ধে পাপ কাজ অব্যাহত রেখেছিল।
পরাৎপরের বিরুদ্ধে তারা মরুভূমিতে পর্যন্ত বিদ্রোহ করেছে।
18 তারা যখন তাদের ইচ্ছা পূর্ণ করবার জন্য খাবার চাইল
তখন তারা তাদের মনে মনে ঈশ্বরকে পরীক্ষা করল।
19 ওরা ঈশ্বরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেছিলো,
“ঈশ্বর কি আমাদের এই মরুভূমিতে খাবার এনে দিতে পারবেন?
20 তিনি পাথরে আঘাত করলেন এবং বন্যার মতো জলধারা বেরিয়ে এলো।
কিন্তু তিনি কি আমাদের কিছু রুটি এবং মাংস দিতে পারেন?”
21 ওই লোকগুলো কি বলছে, প্রভু তা শুনলেন।
যাকোবের ওপর ঈশ্বর প্রচণ্ড ক্রুদ্ধ হলেন।
ইস্রায়েলের ওপর ঈশ্বর প্রচণ্ড ক্রুদ্ধ হলেন।
22 কেন? কারণ লোকরা তাঁকে বিশ্বাস করে নি।
ঈশ্বর যে ওদের রক্ষা করতে পারেন, তা ওরা বিশ্বাস করে নি।
23-24 এর পর ঈশ্বর মেঘকে উন্মুক্ত করে দিলেন
এবং খাদ্যের জন্য ওদের ওপরে মান্না বর্ষিত হল।
এ যেন আকাশের দ্বার খুলে গেল
এবং স্বর্গের ভাণ্ডার থেকে শস্যরাশি পড়তে লাগলো।
25 লোকরা দেবদূতদের[a] সেই খাবার খেয়েছিলো।
ওদের সন্তুষ্ট করার জন্য ঈশ্বর প্রচুর খাবার পাঠিয়েছিলেন।
26 ঈশ্বর পূর্বদিক থেকে একটা ঝোড়ো বাতাস প্রবাহিত করলেন
এবং ওদের কাছে একধরণের পাখি বৃষ্টির মত পড়তে লাগলো।
27 ঈশ্বর তেমানের দিক থেকে সেই বায়ুকে প্রবাহিত করালেন
এবং যে নীল আকাশের দিকটায় প্রচুর পাখি ছিল সেই দিকটা অন্ধকারময় হয়ে গেল।
28 ওদের তাঁবুর ঠিক মাঝখানে,
ওদের তাঁবুর চারপাশে পাখিগুলো পড়ে গিয়েছিল।
29 তাদের কাছে বিরাট খাদ্যের ভাণ্ডার ছিল।
কিন্তু তাদের ক্ষুধা তাদের পাপকার্যে প্ররোচিত করেছিল।
30 তারা তাদের ভোজন নিয়ন্ত্রিত করে নি।
তাই পাখীগুলোর দেহ থেকে রক্ত বেরিয়ে আসার আগেই তারা পাখীগুলোকে খেয়ে ফেলেছিল।
31 অতএব, খাবার যখন তাদের মুখের মধ্যে তখনও ছিল তখন ঈশ্বর ওইসব লোকের ওপর প্রচণ্ড ক্ষুদ্ধ হলেন
এবং ওদের অনেককে মেরে ফেললেন। ঈশ্বর বহু স্বাস্থ্যবান তরুণের মৃত্যুর কারণ হলেন।
32 ওইসব লোকরা আবার পাপ করলো!
ঈশ্বর যে সব আশ্চর্য কার্য করতে পারেন তার ওপর নির্ভর করলো না।
33 তাই ওদের মূল্যহীন জীবনগুলোতে
ঈশ্বর দুর্বিপাক এনে শেষ করে দিলেন।
34 যখনই ঈশ্বর ওদের কাউকে হত্যা করেছেন, অন্যরা তাঁর কাছে ফিরে এসেছেন।
ওরা ছুটে ছুটে ঈশ্বরের কাছে ফিরে এসেছে।
35 তখন এইসব লোকরা স্মরণ করবে যে ঈশ্বরই ছিলেন তাদের শিলা।
ওরা তখন মনে করবে যে পরাৎপরই একমাত্র ওদের মুক্তিদাতা।
36 ওরা বলেছিলো, ওরা তাঁকে ভালোবাসে কিন্তু ওরা মিথ্যা কথা বলেছিলো।
ওই সব লোক একেবারেই আন্তরিক ছিলো না।
37 প্রকৃতপক্ষে ওদের হৃদয় ঈশ্বরের সঙ্গে ছিলো না।
চুক্তির প্রতি ওরা একেবারেই বিশ্বস্ত ছিলো না।
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International