Print Page Options
Previous Prev Day Next DayNext

M’Cheyne Bible Reading Plan

The classic M'Cheyne plan--read the Old Testament, New Testament, and Psalms or Gospels every day.
Duration: 365 days
Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)
Version
2 শমূয়েল 18

দায়ূদ যুদ্ধের প্রস্তুতি করলেন

18 দায়ূদ তাঁর লোকদের একবার গুনে নিলেন। তিনি 1000 জন এবং 100 জন করে লোক ভাগ করে প্রতিটি দলের জন্য একজন অধিনায়ক নিযুক্ত করলেন। দায়ূদ তাঁর লোকদের তিনটে দলে ভাগ করে দিলেন এবং তারপর তাদের পাঠিয়ে দিলেন। যোয়াব এক তৃতীয়াংশ লোকের নেতৃত্বে ছিল। যোয়াবের ভাই সরূয়ার পুত্র অবীশয় অপর একভাগ লোককে নেতৃত্ব দিয়েছিল। এবং গাতের ইত্তয় বাকী অংশের নেতৃত্বে ছিল।

রাজা দায়ূদ তাঁদের বললেন, “আমিও তোমাদের সঙ্গে যাব।”

কিন্তু লোকরা বলে উঠল, “না! আপনি আমাদের সঙ্গে একদম আসবেন না। কেন? কারণ আমরা যদি যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পালিয়ে যাই, তাহলে অবশালোমের লোকরা ধর্তব্যের মধ্যেই আনবে না। এমনকি, আমাদের অর্ধেক লোক যদি মারাও যায় তাতেও অবশালোমের লোকদের কিছু এসে যাবে না, কিন্তু আপনি আমাদের 10,000 লোকর সমান। তাই আপনার পক্ষে শহরে থাকাই ভাল। তখন আমরা সাহায্য চাইলে আপনি আমাদের সাহায্য করতে পারবেন।”

রাজা তাদের বললেন, “তোমরা যা ভাল বোঝ আমি তাই করব।”

তখন রাজা ফটকের একদিকে দাঁড়ালেন। সৈন্যবাহিনী বেরিয়ে গেল। শ’য়ে শ’য়ে এবং হাজারে হাজারে সেনাবাহিনী বেরিয়ে এল।

যোয়াব, অবীশয় এবং ইত্তয়কে রাজা আদেশ দিলেন। তিনি বললেন, “আমার মুখ চেয়ে তোমরা এই কাজ কর। তরুণ অবশালোমের সঙ্গে সংযত ও ভাল আচরণ কর।” সব লোক দাঁড়িয়ে শুনল যে অধিনায়কের প্রতি অবশালোম সম্পর্কে রাজা আদেশ দিলেন।

দায়ূদের সৈন্য অবশালোমের সৈন্যদের হারিয়ে দিল

অবশালোমের পক্ষের ইস্রায়েলীয়দের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য দায়ূদের সৈন্যরা যুদ্ধক্ষেত্রে রওনা হল। তারা ইফ্রয়িমের অরণ্যে যুদ্ধ করল। দায়ূদের লোকরা ইস্রায়েলীয়দের পরাজিত করল। সেদিন 20,000 সৈন্যকে হত্যা করা হয়েছিল। সারা দেশে সেই যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়েছিল। কিন্তু সে দিন যুদ্ধক্ষেত্রের চেয়ে অরণ্যেই বেশী লোক মারা গিয়েছিল।

এমন হল যে অবশালোম দায়ূদের আধিকারিকদের মুখোমুখি হল। অবশালোম তার খচ্চরের ওপর লাফিয়ে পড়ে পালাতে চেষ্টা করল। খচ্চরটা একটা বড় ওক গাছের ডালের তলা দিয়ে যেতে চেষ্টা করল। অবশালোমের মাথাটা গাছের ডালে আটকে গেল। খচ্চরটা তলা দিয়ে পালিয়ে গেল। আবশালোম গাছের ডালে ঝুলে রইল।[a]

10 একজন ব্যক্তি এই ঘটনা ঘটতে দেখল। সে যোয়াবকে বলল, “আমি অবশালোমকে একটা ওক গাছে ঝুলতে দেখেছি।”

11 যোয়াব তাকে জিজ্ঞাসা করল: “কেন তুমি তাকে হত্যা করলে না এবং তাকে মাটিতে ফেলে দিলে না? তাহলে আমি তোমাকে একটা কোমরবন্ধ ও দশটা রৌপ্য মুদ্রা দিতাম।”

12 ব্যক্তিটি যোয়াবকে বলল, “তুমি আমাকে 1000 রজত মুদ্রা দিলেও আমি রাজার পুত্রকে আঘাত করার চেষ্টা করতাম না। কেন? কারণ তোমার প্রতি অবীশয় এবং ইত্তয়ের প্রতি রাজার আদেশ শুনেছি। রাজা বলেছেন, ‘দেখো, তরুণ অবশালোমকে আঘাত করো না।’ 13 যদি আমি অবশালোমকে হত্যা করতাম রাজা নিজেই আমাকে খুঁজে বের করতেন এবং তুমি আমাকে শাস্তি দিতে।”

14 যোয়াব বলল, “তোমার সঙ্গে এখানে আমি সময় নষ্ট করব না।”

অবশালোম তখনও দেবদারু গাছে ঝুলে ছিল এবং তখনও বেঁচেছিল। যোয়াব তিনটে বর্শা নিয়ে অবশালোমের দিকে ছুঁড়ে দিল। বর্শাগুলি অবশালোমের বুক বিদীর্ণ করে দিল। 15 দশজন তরুণ সৈন্য যোয়াবকে যুদ্ধে সাহায্য করত। তারা দশজনে মিলে অবশালোমকে ঘিরে দাঁড়াল ও তাকে হত্যা করল।

16 যোয়াব তূর্য বাজাল এবং তার লোকদের ইস্রায়েলীয়দের তাড়া না করতে আদেশ দিল। 17 তারপর যোয়াবের লোকরা অবশালোমের দেহটি জঙ্গলের খাদে ফেলে দিল। সেই খাদটি তারা বড় বড় পাথর দিয়ে বুজিয়ে দিল।

সব ইস্রায়েলীয় যারা অবশালোমকে অনুসরণ করছিল তারা পালিয়ে গিয়ে যে যার বাড়ী চলে গেল।

18 অবশালোমের জীবনকালে রাজার উপত্যকায় সে একটা স্তম্ভ তৈরী করেছিল এবং সেটা নিজের নামে নাম দিয়েছিল কারণ সে ভেবেছিল: “আমার নাম রক্ষা করার জন্য আমার কোন সন্তানাদি নেই।” আজও স্তম্ভটিকে “অবশালোমের স্তম্ভ” বলা হয়।

যোয়াব দায়ূদকে এই সংবাদ পাঠিয়ে দিল

19 সাদোকের পুত্র অহীমাস যোয়াবকে বলল, “আমাকে দৌড়ে গিয়ে রাজা দায়ূদকে এই খবর জানাতে দাও। আমি তাঁকে বলব আপনার জন্য প্রভু আপনার শত্রুকে হত্যা করেছেন।”

20 যোয়াব অহীমাসকে উত্তর দিল, “না, আজ এই খবর তুমি রাজা দায়ূদকে দেবে না। অন্যদিনে তুমি এই খবর দিতে পার কিন্তু আজ নয়। কেন? কারণ রাজার ছেলে মারা গেছে।”

21 তখন যোয়াব কূশীয়কে বলল, “যাও এবং তুমি যা যা দেখেছ তা রাজাকে বল।”

তখন সেই কূশীয় যোয়াবকে প্রণাম করে রাজা দায়ূদের উদ্দেশ্যে রওনা হল।

22 কিন্তু সাদোকের পুত্র অহীমাস আবার যোয়াবের কাছে অনুরোধ করল, “যা ঘটে গেছে তা নিয়ে চিন্তিত হয়ো না, আমাকেও ঐ কূশীয়র পিছনে ছুটে যেতে দাও!”

যোয়াব জিজ্ঞাসা করল, “পুত্র, কেন তুমি এই সংবাদ নিয়ে যেতে চাইছ? এই সংবাদের জন্য তুমি কোন পুরস্কার পাবে না।”

23 অহীমাস উত্তর দিল, “যাই ঘটুক না কেন তা নিয়ে চিন্তা করি না। আমি দায়ূদের কাছে দৌড়ে যাব।”

যোয়াব অহীমাসকে বলল, “ভাল, দায়ূদের কাছে দৌড়ে যাও।”

তখন অহীমাস যর্দন উপত্যকার মধ্যে দিয়ে দৌড়লো এবং কূশীয় বার্তাবাহককে অতিক্রম করে গেল।

দায়ূদ এই সংবাদ শুনলেন

24 শহরের দুই সিংহদ্বারের মাঝামাঝি দায়ূদ বসেছিলেন। একজন প্রহরী সিংহদ্বার সংলগ্ন প্রাচীরের ওপর উঠে দেখল একজন লোক একা দৌড়োচ্ছে। 25 প্রহরী চিৎকার করে দায়ূদকে সে কথা বলল।

রাজা দায়ূদ বললেন, “যদি লোকটা একা হয় তা হলে সে সংবাদ নিয়ে আসছে।”

লোকটা ক্রমে নগরের কাছে এসে গেল। 26 তখন প্রহরী দেখল আরও একজন দৌড়ে আসছে। প্রহরী দ্বাররক্ষীকে ডেকে বলল, “দেখ আরও একজন লোক একা ছুটে আসছে।”

রাজা বললেন, “ওই লোকটিও সংবাদ নিয়ে আসছে।”

27 প্রহরী বলল, “আমার মনে হয় প্রথম লোকটি সাদোকের পুত্র অহীমাসের মত দৌড়োয়।”

রাজা বলল, “সে একজন ভাল লোক। সে নিশ্চয়ই শুভ সংবাদ নিয়ে আসছে।”

28 অহীমাস রাজাকে বলল, “সবই কুশল!” অহীমাস রাজাকে প্রণাম করল এবং তাঁকে বলল, “আপনার প্রভু, ঈশ্বরের প্রশংসা করুন! হে আমার মনিব, যারা আপনার বিরোধী ছিল প্রভু তাদের পরাজিত করেছেন।”

29 রাজা জিজ্ঞাসা করলেন, “অবশালোম কেমন আছে?”

অহীমাস উত্তর দিল, “যোয়াব যখন আমাকে পাঠিয়েছিল, আমি একদল লোককে দেখেছিলাম এবং তারা বিভ্রান্ত ছিল। কিন্তু কি ব্যাপারে তারা উত্তেজিত তা আমি জানি না।”

30 তখন রাজা বললেন, “তুমি একটু সরে দাঁড়াও এবং অপেক্ষা কর।” অহীমাস সরে গেল এবং দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করল।

31 সেই কূশীয় এল। সে বলল, “হে আমার প্রভু এবং রাজা, আপনার জন্য সংবাদ আছে। যারা আপনার বিরুদ্ধে ছিল প্রভু তাদের আজ শাস্তি দিয়েছেন।”

32 রাজা সেই কূশীয়কে জিজ্ঞাসা করলেন, “অবশালোম ভালো আছে তো?”

কূশীয়টি উত্তর দিল, “আপনার শত্রুরা এবং সেইসব লোকরা যারা আপনাকে আঘাত করবার চেষ্টা করছে তাদের যেন শাস্তি হয় এবং তাদের ভাগ্য যেন অবশালোমের মত হয় আমি এই কামনা করি।”

33 তখন রাজা জানতে পারলেন অবশালোম মারা গেছে। রাজা ভীষণভাবে ভেঙ্গে পড়লেন। শহরে সিংহদ্বারের ওপর ঘরে গিয়ে কাঁদলেন। সেই সবচেয়ে ওপর তলায় যেতে যেতে তিনি বিলাপ করে কাঁদতে লাগলেন, “হায় অবশালোম! হায় আমার পুত্র অবশালোম! তোমার বদলে যদি আমি মরতাম! হায়রে অবশালোম! হায় আমার পুত্র!”

2 করিন্থীয় 11

পৌল এবং ভণ্ড প্রেরিতরা

11 যখন তোমরা আমার নির্বুদ্ধিতা দেখতে পাও তখন একটু ধৈর্য্য্ ধরে আমাকে সহ্য করবে এই আমি চাই। দয়া করে আমার প্রতি সহিষ্ণু হও। আমি অন্তরে তোমাদের জন্য জ্বালা অনুভব করছি। এই অন্তর্জ্বালা স্বয়ং ঈশ্বরের অন্তর থেকে আসে। আমি তোমাদের এক বরের সঙ্গে বিয়ে দিতে প্রতিজ্ঞা করেছি, যেন সতী কন্যা রূপে তোমাদের খ্রীষ্টের কাছে উপহার দিতে পারি। কিন্তু আমার ভয় হচ্ছে দুষ্ট সাপ যেমন নিজের চাতুরীতে হবাকে ভুলিয়েছিল, সেইরকম কেউ যেন তোমাদের মন কলুষিত না করে এবং খ্রীষ্টের প্রতি তোমাদের যে পূর্ণ ও বিশুদ্ধ অনুরাগ আছে তা থেকে তোমাদের যেন দূরে সরিয়ে নিয়ে না যায়। কোন আগন্তুক যদি এমন আর এক যীশুকে প্রচার করে, যাকে আমরা প্রচার করি নি, অথবা আগেই গ্রহণ করেছ এমন আত্মা ছাড়া যদি তোমরা অন্য কোন আত্মা পাও, বা আগে গ্রহণ কর নি এমন কোন অন্য রকমের সুসমাচার পাও তবে তা ভালভাবে সহ্য করো।

কারণ আমার মনে হয় না যে আমি তথাকথিত সেই “মহান প্রেরিতদের” থেকে কোন অংশে পিছিয়ে পড়ে আছি। কিন্তু যদিও আমি খুব ভাল বক্তা নই, তবুও আমার জ্ঞান সীমিত নয় এবং তা সবরকমেই পরিষ্কারভাবেই তোমাদের দেখিয়ে দিয়েছি।

তোমরা যেন উন্নত হতে পার তাই নিজেকে নত করে আমি কি পাপ করেছি? তোমাদের মধ্যে বিনা পারিশ্রমিকে ঈশ্বরের সুসমাচার প্রচার করে কি ভুল করেছি? তোমাদের মধ্যে সেবার জন্য অন্য মণ্ডলী থেকে টাকা নিয়ে আমি তাদের লুঠ করেছি; এবং যখন তোমাদের কাছে ছিলাম তখন আমার অভাব হলেও আমি কাউকে ভারগ্রস্ত করি নি, কারণ মাকিদনিয়া থেকে ভাইরা এসে আমার প্রয়োজন মেটালেন। হ্যাঁ, আমি যাতে কোন বিষয়ে তোমাদের কাছে হাত না পাতি, নিজেকে সেইভাবে রক্ষা করেছি এবং করব। 10 সত্যই খ্রীষ্টের সততা যখন নিশ্চিতভাবে আমার মধ্যে আছে, তখন আখায়ার কোন অঞ্চলে কেউ এই গর্ব করা থেকে আমায় বিরত করবে না। আমি তোমাদের বোঝা হতে চাই না। 11 তার মানে কি এই যে আমি তোমাদের ভালবাসি না? ঈশ্বর জানেন আমি তোমাদের ভালবাসি।

12 কিন্তু এখন আমি যা করছি, সেই কাজ আরও করব যাতে যারা গর্ব করার সুযোগ খোঁজে, তাদের বিরত করতে পারি। যারা গর্ব করে তাদের যেন তোমরা আমাদের সমান ভাব; 13 কারণ তারা ভণ্ড প্রেরিত, তারা মিথ্যা বলে। তারা প্রবঞ্চক কর্মী, তারা প্রেরিতের ছদ্মবেশ ধরেছে। তারা এমনভাব দেখায় যাতে লোকে মনে করে যে তারা খ্রীষ্টের প্রেরিত। 14 এটা আশ্চর্য নয়, কারণ শয়তান নিজেও নিজেকে দীপ্তিময় স্বর্গদূত হিসাবে দেখাবার জন্য বদলে ফেলে। 15 অতএব তার সেবকরাও যে ধার্মিকতার সেবকদের বেশ ধারণ করে, এতে আশ্চর্য হবার কিছুই নেই, পরিণামে তাদের কাজের জন্য তারা শাস্তিভোগ করবে।

পৌল নিজের দুঃখভোগের কথা বললেন

16 আমি আবার বলছি, কেউ আমাকে মূর্খ মনে না করুক, কিন্তু যদি তোমরা মনে কর, তবে আমাকে মূর্খ বলেই গ্রহণ কর; তাতে আমিও একটু গর্ব করতে পারব। 17 আমি নিজেকে জানি তাই আমি গর্ব করি। এখন আমি যা বলছি তা প্রভুর আদেশ মত বলছি না কিন্তু এক নির্বোধের মতোই এই গর্ব করছি। 18 যেহেতু অনেকেই জাগতিক বিষয়ে গর্ব করে, তাই আমিও গর্ব করব। 19 কারণ তোমরা যারা বুদ্ধিমান তারা নির্বোধ লোকদের প্রতি আনন্দের সাথে সহিষ্ণুতা দেখিয়ে থাক। 20 আমি জানি তোমরা সহিষ্ণু, এমন কি, তাদের প্রতিও যারা তোমাদের আদেশ করে, শোষণ করে, ফাঁদে ফেলে, নিজেদের তোমাদের থেকে ভাল বলে মনে করে অথবা তোমাদের গালে চড় মারে। 21 একথা বলতে আমার লজ্জা বোধ হয় যে আমরা তোমাদের প্রতি নিতান্ত “দুর্বল” বলেই দুরকম ব্যবহার করি নি!

কিন্তু গর্ব করার মতো যথেষ্ট সাহস যদি কারো থাকে, তবে আমি সাহসী হব ও গর্ব করব। আমি মূর্খের মতো কথা বলছি। 22 তারা কি ইব্রীয়? আমিও তাই। তারা কি ইস্রায়েলী? আমিও তাই। তারা কি অব্রাহামের বংশধর? আমিও তাই। 23 তারা কি খ্রীষ্টের সেবক? এমন গর্ব করা পাগলের মত শোনালেও আমি তাদের থেকে অনেক বেশী খ্রীষ্টের সেবা করছি। আমি তাদের থেকে অনেক বেশী কঠোর পরিশ্রম করেছি, তাদের থেকে বহুবার বেশী কারাদণ্ড ভোগ করেছি, অনেকবার চাবুকের মার সহ্য করেছি, অনেকবার মৃত্যুমুখে পড়েছি।

24 ইহুদীদের কাছ থেকে পাঁচবার উনচল্লিশটি করে চাবুকের মার খেতে হয়েছে। 25 তিনবার আমাকে লাঠিপেটা করেছে, একবার আমার ওপর পাথর ছোঁড়া হয়েছে, তিনবার ঝড়ে জাহাজ ডুবিতে আমি কষ্ট পেয়েছি এবং সারা দিনরাত অগাধ জলের মধ্যে কাটিয়েছি। 26 স্থলপথে যাত্রাকালে বহুবার বিপদে পড়েছি, নদী থেকে বিপদ এসেছে, কতবার ডাকাতের হাতে, কতবার আমার আপনজন, ইহুদী ও অইহুদীদের দ্বারা বিপদগ্রস্ত হয়েছি। শহরের মধ্যে মহা বিপদে পড়তে হয়েছে, কখনও গ্রামাঞ্চলে, কখনও বিপদ সঙ্কুল সমুদ্রের মধ্যে এবং ভণ্ড খ্রীষ্টীয়ানদের কাছ থেকে।

27 অনেকবার অনাহারে দিন কাটিয়েছি, যথেষ্ট পোশাকের অভাবে প্রচণ্ড শীতে কষ্ট পেয়েছি। 28 আর সব সমস্যা যাক, একটি সমস্যা প্রতিদিন আমার ওপরে চেপে রয়েছে, তা হল সমস্ত মণ্ডলীর চিন্তা। 29 কেউ দুর্বল হলে আমি কি সেই দুর্বলতার সহভাগী হই না? কেউ বাধা পেয়ে পাপের পথে নেমে গেলে আমি কি রাগে জ্বলে উঠি না?

30 যদি গর্ব করতে হয়, তবে আমার নানা দুর্বলতার বিষয়ে গর্ব করব। 31 প্রভু যীশু খ্রীষ্টের ঈশ্বর ও পিতা, যিনি যুগে যুগে প্রশংসিত তিনি জানেন যে আমি মিথ্যা বলছি না। 32 যখন আমি দম্মেশকে ছিলাম, তখন রাজা আরিতার অধীনস্থ রাজ্যপাল আমাকে বন্দী করার জন্য দম্মেশকীয়দের সেই শহরের চারপাশে পাহারা বসিয়েছিলেন। 33 কিন্তু আমার বন্ধুরা শহরের পাঁচিলের একটা ফাঁক দিয়ে একটা ঝুড়িতে করে আমাকে নামিয়ে দিয়েছিলেন। এইভাবে সেই রাজ্যপালের হাত থেকে পালিয়েছিলাম।

যিহিষ্কেল 25

অম্মোনের বিরুদ্ধে ভাববাণী

25 প্রভুর বাক্য আমার কাছে এল। তিনি বললেন, “মনুষ্যসন্তান, অম্মোন সন্তানদের দিকে দেখ আর আমার হয়ে তাদের বিরুদ্ধে কথা বল। অম্মোন লোকদের বল: আমার প্রভু, আমার সদাপ্রভুর বাক্য শোন! আমার প্রভু সদাপ্রভু এই কথা বলেন: যখন আমার পবিত্র স্থান ধ্বংস হয়েছিল তখন তোমরা আনন্দিত হয়েছিলে। ইস্রায়েলের ভূমি কলূষিত হলে তোমরা তার বিরুদ্ধে গেলে। যিহূদা পরিবারের লোকদের বন্দী করে নিয়ে যাবার সময়ে তোমরা তাদের বিরুদ্ধে গেলে। সেই জন্য আমি পূর্বের লোকদের হাতে তোমাদের সঁপে দেব আর তারা তোমাদের ভূমি অধিকার করবে। তাদের সৈন্যরা তোমাদের দেশে তাদের শিবির গড়বে। তারা তোমাদের মধ্যে বাস করবে, তোমাদের ফল খাবে ও তোমাদের দুধ পান করবে।

“‘আমি রব্বা শহরটিকে উটের চারণস্থান ও অম্মোন দেশকে মেষরা যেখানে বিশ্রাম নেয় সেইরকম একটা স্থানে পরিণত করব। তখন তারা জানবে যে আমিই প্রভু। প্রভু এই কথাও বলেন, জেরুশালেম ধ্বংস হলে পরে তোমরা আনন্দিত হয়েছিলে। তোমরা হাততালি দিয়েছিলে ও পা দাপিয়েছিলে। তোমরা ইস্রায়েলের ভূমিকে নিয়ে অবজ্ঞাসহ ঠাট্টা করেছিলে। সেই জন্য আমি তোমাদের শাস্তি দেব। তোমরা যুদ্ধে লুঠ করা মূল্যবান সামগ্রীর মত হবে। তোমরা তোমাদের অধিকার হারাবে। বহু দূর দেশে তোমাদের মৃত্যু হবে। আমি তোমাদের দেশ ধ্বংস করব! তখন তোমরা জানবে যে আমিই প্রভু।’”

মোয়াব ও সেয়ীরের বিরুদ্ধে ভাববাণী

প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন, “মোয়াব ও সেয়ীর বলে, ‘যিহূদা পরিবার অন্য জাতিদের মতই।’ আমি মোয়াবের কাঁধ কেটে নেব। তার সীমার শহরগুলি নিয়ে নেব, ভূমির গৌরব বৈৎ‌-যিশীমোত, বাল্-মিয়োন ও কিরিয়াথয়িম। 10 আর সেই শহরগুলো পূর্ব দেশের লোকদের দেব। তারা তোমাদের ভূমি অধিকার করবে আর আমি পূর্ব দেশের লোকদের দ্বারা অম্মোনের লোকদের ধ্বংস করব। তখন সবাই ভুলে যাবে এই কথা যে অম্মোন বলে এক জাতি ছিল। 11 তাই আমি মোয়াবকে বিচার অনুসারে শাস্তি দেব। তখন তারা জানবে যে আমিই প্রভু।”

ইদোমের বিরুদ্ধে ভাববাণী

12 প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন, “ইদোমের লোকরা যিহূদা পরিবারের বিরুদ্ধে উঠে প্রতিশোধ নিতে গিয়েছিল, তাই তারা দোষী।” 13 প্রভু আমার সদাপ্রভু আরও বলেন, “আমি ইদোমকে শাস্তি দেব, তাদের লোকজন ও পশুদের ধ্বংস করব। আমি তৈমন থেকে দদান পর্যন্ত সম্পূর্ণ ইদোম দেশটি ধ্বংস করব আর ইদোমীয়দের যুদ্ধে নিহত করব। 14 আমি ইদোমের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নিতে আমার প্রজা ইস্রায়েলীয়দের ব্যবহার করব। এইভাবে ইস্রায়েলের লোকেরা ইদোমের বিরুদ্ধে আমার ক্রোধ প্রকাশ করবে। তখন ইদোমের লোকরা জানবে যে আমিই তাদের শাস্তি দিয়েছিলাম।” প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথাগুলি বলেছেন।

পলেষ্টীয়দের বিরুদ্ধে ভাববাণী

15 প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথাগুলি বলেন, “পলেষ্টীয়রা প্রতিশোধ নেবার চেষ্টা করেছিল, তারা অত্যন্ত নিষ্ঠুর হয়েছিল এবং ক্রোধে বহু সময় জ্বলেছে!” 16 তাই প্রভু আমার সদাপ্রভু বলেন, “আমি পলেষ্টীয়দের শাস্তি দেব; হ্যাঁ, আমি ঐ করেথীয় লোকদের ধ্বংস করে দেব। সমুদ্রের উপকূলে বসবাসকারী ঐ লোকদের আমি সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করব। 17 আমি ঐ লোকদের শাস্তি দেব—প্রতিশোধ নেব। আমার ক্রোধ তাদের শিক্ষা দেবে আর তখন তারা জানবে যে আমিই প্রভু!”

গীতসংহিতা 73

তৃতীয় খণ্ড

(গীতসংহিতা 73–89)

আসফের একটি প্রশংসা গীত।

73 ঈশ্বর সত্যিই ইস্রায়েলের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করছেন।
    যাদের হৃদয় শুচি তাদের সঙ্গে ঈশ্বর ভালো ব্যবহার করেন।
আমার প্রায় পদস্খলন হয়েছিলো
    এবং আমি পাপ কাজ করতে শুরু করেছিলাম।
আমি দেখেছি ঐসব দুষ্ট লোকরা কৃতকার্য হয়েছে
    এবং তা দেখে ঐসব উদ্ধত লোকদের প্রতি আমি ঈর্ষা করেছিলাম।
ওরা সবাই বলবান লোক ছিলো।
    বেঁচে থাকবার জন্য ওদের কোন লড়াই করতে হত না।
ঐসব উদ্ধত লোককে আমাদের মত দুর্ভোগ পোহাতে হয় না।
    অন্যান্য লোকেদের মত ওদের কোন সংকট নেই।
তাই ওরা উদ্ধত এবং মানুষকে ঘৃণা করে।
    এই অহঙ্কারকে তারা গলার মালার মত এবং শৌখিন বস্ত্রের মত সহজেই ধারণ করে।
ঐসব লোক যদি ওদের পছন্দের কিছু দেখে, ওরা গিয়ে তা নিয়ে চলে আসে।
    ওরা যা মনে করে, ওরা তাই করতে পারে।
লোকের সম্পর্কে ওরা নির্মম ও অহিতকর কথাবার্তা বলে।
    অন্যদের কাছ থেকে ওরা কিভাবে সুবিধে নেয় সে সম্বন্ধে ওরা গর্বের সঙ্গে কথা বলে।
ঐসব অহঙ্কারী লোকরা নিজেদের দেবতা বলে ভাবে!
    ওরা ভাবে ওরাই পৃথিবীর শাসনকর্তা।
10 এমনকি ঈশ্বরের লোকরা পর্যন্ত সাহায্যের জন্য ওদের কাছে ছুটে যায়।
    ঐ উদ্ধত লোকরা যা বলে, ওরাও তাই করে।
11 ঐ মন্দ লোকরা বলে, “আমরা কি করছি ঈশ্বর তা জানেন না!
    ঈশ্বর, যিনি পরাৎ‌‌পর, তিনি জানেন না!”

12 ঐ অহঙ্কারী লোকরা প্রচণ্ড দুর্জন,
    কিন্তু ওরা ধনী এবং ওরা ক্রমশঃ আরো ধনী হয়ে উঠছে।
13 তাই আমার আত্মাকে কেন শুদ্ধ হতে হবে?
    আমি কেন আমার হাত নির্দোষ রাখব?
14 হে ঈশ্বর, সারাদিন ধরে আমি যন্ত্রণা ভোগ করি।
    প্রত্যেকদিন সকালে আপনি আমায় শাস্তি দেন।

15 ঈশ্বর, এইসব বিষয়ে আমি অন্য লোকদের সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছি।
    কিন্তু আমি জানি তাতে আপনার লোকদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করা হবে।
16 এইসব বিষয় বোঝার জন্য আমি আপ্রাণ চেষ্টা করেছি।
    কিন্তু এটা আমার পক্ষে ভীষণ কষ্টকর।
17 ততক্ষণ পর্যন্ত আমি আপনার মন্দিরে যাই নি,
    আমি ঈশ্বরের মন্দিরে গেলাম এবং তারপর বুঝতে পারলাম।
18 ঈশ্বর, সত্যিই ঐসব লোককে আপনি ভয়ানক পরিস্থিতির মধ্যে ফেলেছেন।
    ওদের পতন এবং বিনাশ এখন সহজ হবে।
19 হঠাৎ‌‌ই সমস্যা আসতে পারে
    এবং ঐ অহঙ্কারী লোকরা ধ্বংস হবে।
ওদের সাংঘাতিক কিছু ঘটতে পারে
    এবং ওরা শেষ হয়ে যাবে।
20 প্রভু, যেমন করে আমরা জেগে উঠে স্বপ্নকে ভুলে যাই,
    ঐসব লোকরা সেই স্বপ্নের মতই বিস্মৃত হবে।
আমাদের রাতের দুঃস্বপ্ন যেমন আপনি অদৃশ্য করে দেন,
    তেমনি করে আপনি ওই লোকগুলোকে অদৃশ্য করে দেবেন।

21-22 আমি অত্যন্ত নির্বোধ ছিলাম।
    আমি দুষ্ট ও ধনী লোকদের কথা ভাবতাম এবং ক্লেশগ্রস্ত হয়ে পড়তাম।
হে ঈশ্বর, আমি ক্লেশগ্রস্ত ছিলাম এবং আপনার ওপর রাগ করেছিলাম!
    আমি নির্বোধ ও অজ্ঞ পশুর মত ব্যবহার করেছিলাম।
23 আমার যা কিছু দরকার তা আমার আছে!
আমি সর্বদাই আপনার সঙ্গে আছি।
    হে ঈশ্বর আপনি আমার হাত ধরুন।
24 ঈশ্বর, আমায় সুপরামর্শ দিন ও পরিচালিত করুন।
    তাহলে আপনি আমায় গৌরবের পথে নিয়ে যাবেন।
25 হে স্বর্গের ঈশ্বর, আমি সর্বদা আপনার সঙ্গে রয়েছি
    এবং আমি যখন আপনার সঙ্গে রয়েছি তখন এই পৃথিবীতে আমি আর কী চাইতে পারি?
26 আমার এই দেহ মন একদিন ধ্বংস হয়ে যাবে,
    কিন্তু আমার শিলা, যাঁকে আমি ভালোবাসি তিনি থাকবেন।
    চিরকালের জন্য আমার কাছে ঈশ্বর আছেন!
27 ঈশ্বর যারা আপনাকে ত্যাগ করেছে তারা হারিয়ে যাবে।
    যারা আপনার প্রতি অবিশ্বস্ত তাদের আপনি ধ্বংস করে দেবেন।
28 আমি জানি, আমি ঈশ্বরের কাছে এসেছি এবং তাঁর কাছাকাছি থাকা আমার পক্ষে ভালো।
    আমি আমার প্রভু, সদাপ্রভুকে নিরাপদ আশ্রয়স্থল করে নিয়েছি।
    ঈশ্বর আপনি যা কিছু করেছেন তাঁর সব কিছু বলতে আমি এসেছি।

Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)

Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International