M’Cheyne Bible Reading Plan
দায়ূদ সম্পর্কে অহীথোফলের উপদেশ
17 অহীথোফল অবশালোমকে বলল, “আমাকে 12,000 লোক বেছে নিতে দাও। আজ রাতেই আমি দায়ূদকে তাড়া করব। 2 যখন সে ক্লান্ত ও দুর্বল হয়ে যাবে তখন আমি তাকে ধরব। আমি তাকে ভীত ও আতঙ্কিত করে তুলব। তার সব লোকরা দৌড়ে পালিয়ে যাবে। কিন্তু আমি শুধু রাজা দায়ূদকেই হত্যা করব। 3 তারপর আমি সব লোককে তোমার কাছে ফিরিয়ে নিয়ে আসব। যদি দায়ূদ মারা যায়, তাহলে সব লোকরা শান্তিতে ফিরে আসবে।”
4 অবশালোম এবং ইস্রায়েলের সব নেতার কাছেই এই প্রস্তাব ভাল বলে মনে হল। 5 কিন্তু অবশালোম বলল, “এখন আমি অর্কীয় হূশয়কে ডাকি। সে কি বলে তাও আমি শুনতে চাই।”
হূশয় অহীথোফলের প্রস্তাব পণ্ড করে দিল
6 হূশয় অবশালোমের কাছে এল। অবশালোম হূশয়কে বলল, “অহীথোফল এই পরামর্শ দিয়েছে। আমরা কি এটাই অনুসরণ করব? তা যদি না হয় তাহলে বল কি করা উচিৎ?”
7 হূশয় অবশালোমকে বলল, “অহীথোফলের উপদেশ এই সময়ে উপযোগী নয়।” 8 হূশয় আরও বলল, “তুমি জানো যে তোমার পিতা এবং তার লোকরা খুবই শক্তিশালী। বাচ্চা কেড়ে নিলে বুনো ভাল্লুক যেমন হিংস্র হয়ে ওঠে ওরাও তেমনিই ভয়ঙ্কর। তোমার পিতা একজন দক্ষ যোদ্ধা। তিনি কখনও সারারাত ওই লোকদের সঙ্গে থাকবেন না। 9 সম্ভবতঃ তিনি কোন গুহা বা অন্য কোথাও ইতিমধ্যে লুকিয়ে পড়েছেন। যদি তোমার পিতা তোমার লোকদের আগে আক্রমণ করে, লোক এই সংবাদ জানতে পারবে। এবং তারা ভাববে, ‘অবশালোমের লোকরা হেরে যাচ্ছে!’ 10 তখন সিংহের মত সাহসী যোদ্ধারাও ভীত ও আতঙ্কিত হবে। কেন? কারণ গোটা ইস্রায়েল এই কথা জানে যে তোমার পিতা শক্তিশালী যোদ্ধা এবং তাঁর লোকরা অত্যন্ত সাহসী।
11 “আমার প্রস্তাব হল এই: তুমি অবশ্যই দান থেকে বের্-শেবা পর্যন্ত সব ইস্রায়েলীয়দের একসঙ্গে জড়ো করবে। সমুদ্রে যেমন অগুনতি বালি থাকে সেরকমই সেখানে অনেক লোক হবে। তারপর, তুমি নিজে অবশ্যই যুদ্ধে যাবে। 12 দায়ূদ যেখানে লুকিয়ে আছে সেখানেই আমরা তাকে ধরব। অগণিত সৈন্যসহ আমরা দায়ূদকে আক্রমণ করব। ভূমিকে ঢেকে দেওয়া অসংখ্য শিশির কণার মত আমরা ওদের ঢেকে দেব। আমরা দায়ূদ এবং তাঁর লোকদের হত্যা করব। কাউকে জীবিত ছাড়া হবে না। 13 যদি দায়ূদ নগরের ভিতরে পালিয়ে যান সকল ইস্রায়েলীয় মিলে দড়ি দিয়ে আমরা নগরের প্রাচীর ভেঙ্গে দেব। তাদের সবাইকে আমরা উপত্যকায় টেনে নামাব। নগরের একটা ছোট্ট পাথর পর্যন্ত আমরা রাখতে দেব না।”
14 অবশালোম এবং সকল ইস্রায়েলীয় বলল, “অর্কীয় হূশয়ের উপদেশ অহীথোফলের উপদেশের চেয়ে ভাল।” তারা একথা বলল কারণ তা ছিল প্রভুর পরিকল্পনা। অবশালোমকে শাস্তি দেবার জন্য প্রভু অহীথোফলের সৎ উপদেশকে বিফল করার ফন্দি এঁটেছিলেন।
হূশয় দায়ূদকে একটি সাবধানবাণী পাঠাল
15 ঐ সব কথা হূশয় সাদোক এবং অবীয়াথর এই দুই যাজকদের বলল। অহীথোফল অবশালোম এবং ইস্রায়েলের নেতাদের যে পরামর্শ দিয়েছে হূশয় তাও বলল। হূশয় নিজে যা যা পরামর্শ দিয়েছিল তাও তাদের বলল। হূশয় বলেছিল, 16 “খুব শীঘ্র দায়ূদকে এই খবর দাও। তাঁকে বল, যেখান দিয়ে নদী পার হয়ে লোকে মরুভূমিতে ঢোকে তিনি যেন সেখানে আজ রাতে না থাকেন। তাঁকে এখুনি যর্দন নদী পার হয়ে যেতে বল। যদি তিনি নদী পার হয়ে চলে যান তবে রাজা এবং তাঁর লোকরা ধরা পড়বে না।”
17 যাজকের দুই পুত্র যোনাথন এবং অহীমাস ঐন্-রোগেলে অপেক্ষা করছিল। তারা চাইত না কেউ তাদের শহরে প্রবেশ করতে দেখুক। শুধুমাত্র এক দাসী এসে তাদের সব খবরাখবর দিয়ে যেত। তারপর যোনাথন এবং অহীমাস রাজা দায়ূদের কাছে গিয়ে সব কথা বলত।
18 কিন্তু এক বালক যোনাথন এবং অহীমাসকে দেখে ফেলল। এই ঘটনা অবশালোমকে বলার জন্য বালকটি ছুটে চলে গেল। যোনাথন এবং অহীমাসও তাড়াতাড়ি দৌড়ে পালাল এবং বহুরীমে এক লোকের বাড়ীতে এসে উপস্থিত হল। লোকটার বাড়ীর বাইরের প্রাঙ্গণে একটা কুয়ো ছিল। যোনাথন এবং অহীমাস সেই কুয়োতে নেমে গেল। 19 সেই লোকটির স্ত্রী কুয়োর ওপর একটা আচ্ছাদন রেখে দিল। তারপর সে সেই কুয়োর ওপর গমের বীজ বিছিয়ে দিল, তাই সেটি শস্যের স্তুপের মতই দেখতে লাগছিল। তাই লোকরা জানতে পারল না যে যোনাথন এবং অহীমাস তার মধ্যে লুকিয়ে রয়েছে। 20 অবশালোমের ভৃত্যরা সেই বাড়ীতে এসে সেই মহিলাকে জিজ্ঞাসা করল, “অহীমাস এবং যোনাথন কোথায়?”
মহিলা অবশালোমের ভৃত্যদের বলল, “ইতিমধ্যেই তারা নদী পার হয়ে গেছে।”
তখন অবশালোমের ভৃত্যরা যোনাথন ও অহীমাসের সন্ধানে চলে গেল। কিন্তু তারা তাকে খুঁজে পেল না। অতঃপর অবশালোমের ভৃত্যরা জেরুশালেমে ফিরে এল।
21 অবশালোমের ভৃত্যরা চলে যাওয়ার পর, যোনাথন ও অহীমাস কুয়ো থেকে বাইরে বেরিয়ে এল। তারা রাজা দায়ূদের কাছে গেল এবং দায়ূদকে বলল, “খুব তাড়াতাড়ি নদী পার হয়ে চলে যান। অহীথোফল আপনার বিরুদ্ধে এইসব ষড়যন্ত্র করেছে।”
22 তখন দায়ূদ এবং তাঁর লোকরা যর্দন নদী পার হয়ে গেল। সূর্যোদয়ের আগেই দায়ূদের সব লোকরা যর্দন নদী পার হয়ে গেল।
অহীথোফল আত্মহত্যা করল
23 অহীথোফল দেখল যে তার উপদেশ ইস্রায়েলীয়রা গ্রহণ করে নি। সে তার গাধার পিঠে জিন চড়িয়ে তার নিজের নগরে ফিরে এল। তার পরিবারের যথাবিহিত ব্যবস্থা করে সে গলায় দড়ি দিল। অহীথোফল মারা গেলে লোকরা তাকে তার পিতার কবরেই কবর দিল।
অবশালোম যর্দন নদী পার হল
24 দায়ূদ মহনয়িমে এলেন।
অবশালোম এবং তার সঙ্গে যে সব ইস্রায়েলীয়রা ছিল তারা যর্দন নদী পার হয়ে গেল। 25 অবশালোম অমাসাকে তার সৈন্যদলের অধিনায়করূপে নিযুক্ত করল। অমাসা যোয়াবের জায়গা নিল। অমাসা ছিল যিথ্র, একজন ইশ্মায়েলীয়[a] ছেলে। অমাসার মায়ের নাম অবীগল। সে সরূয়ার বোন নাহশের মেয়ে। সরূয়া ছিল যোয়াবের মা।
26 অবশালোম এবং ইস্রায়েলীয়রা গিলিয়দে তাঁবু ফেলে অবস্থান করল।
শোবি, মাখীর এবং বর্সিল্লয়
27 দায়ূদ মহনয়িমে এলেন। শোবি, মাখীর এবং বর্সিল্লয় সেইখানেই ছিল। শোবি অম্মোনদের রব্বা শহরের নাহশের পুত্র। মাখীর হল লোদবার নিবাসী অম্মীয়েলের পুত্র। আর বর্সিল্লয় গিলিয়দের, রোগলীমের থেকে এসেছিল। 28-29 সেই তিনজন লোক বলল, “মরুভূমিতে যে লোকরা রয়েছে তারা ক্লান্ত, ক্ষুধার্ত এবং তৃষ্ণার্ত।” তাই তারা দায়ূদের জন্য এবং তাঁর সঙ্গে যে লোকরা ছিল তাদের জন্য অনেক কিছু জিনিস এনেছিল। তারা বিছানা এবং অন্যান্য পাত্রাদি এনেছিল। এছাড়াও তারা গম, যব, ময়দা, ভাজা শস্য, বীন, শাক, শুকনো বীজ, মধু, মাখন, মেষ এবং পনীর এনেছিল।
নিজের কাজের পক্ষে পৌল
10 আমি পৌল নিজে খ্রীষ্টের বিনয় ও সৌজন্যের দোহাই দিয়ে তোমাদের অনুনয় করছি। আমি নাকি তোমাদের সামনে বিনম্র কিন্তু পেছনে চিঠিতে তোমাদের কড়া কড়া কথা বলি। 2 কিছু কিছু লোক মনে করে যে আমরা জাগতিক ভাবে চলি। আমি মিনতি করি যখন আমি আসব তখন যেন আমাকে সেই দৃঢ় সাহস দেখাতে না হয়, যে সাহস আমি সেইসব লোকদের কাছে দেখানো আবশ্যক মনে করি। 3 আমরা জগতেই বাস করি কিন্তু জগৎ যেভাবে যুদ্ধ করে আমরা সেইভাবে করি না। 4 জগৎ যে যুদ্ধের অস্ত্র ব্যবহার করে, আমরা তার থেকে স্বতন্ত্র যুদ্ধাস্ত্র ব্যবহার করি। আমাদের যুদ্ধের অস্ত্র ঈশ্বরের পরাক্রম; এই যুদ্ধাস্ত্র শত্রুর সুদৃঢ় ঘাঁটি ধ্বংস করতে পারে। লোকদের বাজে বিতর্ক আমরা বিফল করতে পারি। 5 যে সমস্ত গর্বজনক বিষয় ঈশ্বর বিষয়ক জ্ঞানের বিরুদ্ধে যায়, আমরা তাদের প্রত্যেককে ধ্বংস করি এবং সমস্ত চিন্তাকে বশীভূত করে খ্রীষ্টের অনুগত করি। 6 যখন তোমরা সম্পূর্ণভাবে আমাদের অনুগত হবে, তখনই আমরা অবাধ্যতার প্রতিটি কাজকে শাস্তি দিতে প্রস্তুত হব।
7 তোমাদের সামনের বিষয়গুলির দিকে দেখ, কেউ যদি নিজেদের ওপরে বিশ্বাস রেখে বলে, আমি খ্রীষ্টের লোক, তবে তার আবার একথাও বোঝা উচিত যে তার মত আমরাও খ্রীষ্টের লোক। 8 একথা ঠিক যে প্রভু যে কর্ত্তৃত্ব আমাদের দিয়েছেন তাই নিয়ে আমরা বেশ গর্ব করি। তোমাদের ব্যথা দিতে নয়, কিন্তু তোমাদের শক্তিশালী করে তুলতেই তিনি আমাদের এই অধিকার দিয়েছেন, আর তা নিয়ে আমরা লজ্জা পাচ্ছি না। 9 আমি চিঠিগুলি দিয়ে যে তোমাদের ভয় দেখাচ্ছি এরকম মনে করো না। 10 কেউ কেউ বলে, “তার চিঠিগুলো মনে রেখাপাত করে এবং শক্তিশালী, কিন্তু লোক হিসাবে তিনি দুর্বল এবং তাঁর কথা বলার ধরণ একেবারেই হৃদয়গ্রাহী নয়।” 11 এই ধরণের লোক বুঝুক যে অনুপস্থিত থাকাকালীন আমাদের চিঠির মধ্যে যে শক্তি প্রকাশ পেয়েছে, আমরা যখন তোমাদের সামনে উপস্থিত হব তখন আমাদের কাজেও সেই একই শক্তি দেখতে পাবে।
12 কারণ এমন কোন লোকের সাথে আমরা নিজেদের গণনা বা তুলনা করতে সাহস করি না, যাঁরা নিজেরাই নিজেদের উচ্চ প্রশংসা করে থাকে। তারা পরস্পরের মধ্যে নিজেদের পরিমাপ করে এবং নিজেদের সাথে নিজেদের তুলনা করে।
13 নিজেদের বিষয়ে যতটুকু গর্ব করার অধিকার আমাদের আছে, আমরা তার বেশী করব না, বরং ঈশ্বর আমাদের কর্মক্ষেত্রে যে সীমা নিরূপণ করেছেন সেই সীমার মধ্যে থাকব। সেই সীমার মধ্যে তোমরাও আছো। 14 তোমাদের কাছে গিয়েছিলাম বলে তোমাদের নিয়ে আমরা যখন গর্ব করি, তখন সীমার বাইরে কিছু বলি না, কারণ খ্রীষ্টের সুসমাচার নিয়ে আমরাই তোমাদের কাছে প্রথম পৌঁছেছিলাম। 15 আমাদের কাজ নিয়ে গর্ব করার যে সীমা তা আমরা ছাড়িয়ে যাব না। অন্যেরা কি করছে তা আমাদের গর্বের বিষয় নয়; পরিবর্তে আমরা আশা করি যে তোমাদের বিশ্বাস বাড়বার সাথে সাথে আমরা তোমাদের মধ্যে আরও কাজ করতে পারব। 16 তখন আমরা তোমাদের নগর ছাড়িয়েও জায়গায় জায়গায় সুসমাচার প্রচার করতে পারব। অপরের এলাকার করা কাজের জন্য আমরা গর্ব করব না। 17 তবে, “যে গর্ব করতে চায় সে প্রভুকে নিয়েই গর্ব করুক।”(A) 18 কারণ যে মানুষ নিজের সম্পর্কে উচ্চ ধারণা পোষন করে সে নয়, কিন্তু প্রভু যার সম্পর্কে উচ্চ ধারণা পোষন করেন সে-ই ভাল বলে প্রমাণিত হয়।
হাঁড়ি ও মাংস
24 প্রভুর কথাগুলি আমার কাছে এল। এটা ছিল নির্বাসনে থাকার নবম বছরের দশম মাসের দশম দিন। তিনি বললেন, 2 “মনুষ্যসন্তান, আজকের দিনের তারিখ ও এই কথাগুলি লেখ: ‘এই দিনে বাবিলের রাজার সৈন্যরা জেরুশালেম ঘিরে ফেলেছিল।’ 3 এই ঘটনা সেই পরিবারকে বল যারা বাধ্য হতে অস্বীকার করে। তাদের এই বিষয়গুলি বল, ‘প্রভু আমার সদাপ্রভু একথা বলেন:
“‘হাঁড়িটা আগুনে বসাও, হাঁড়িটা বসাও।
আর তাতে জল ঢালো।
4 মাংসের টুকরোগুলো তার মধ্যে দাও।
প্রত্যেকটা ভাল টুকরো তার মধ্যে দাও, উরু ও ঘাড়ের মাংসের টুকরোগুলি।
সব চেয়ে ভাল হাড়ের টুকরো দিয়ে হাঁড়িটি ভর্ত্তি কর।
5 পালের সেরা পশুগুলো নাও।
হাঁড়ির নীচে কাঠগুলো জড়ো কর।
মাংস সেদ্ধ কর,
এমন ভাবে সেদ্ধ কর
যেন হাড়গুলোও পরিপক্ক হয়!
6 “‘প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন:
“জেরুশালেমের পক্ষে এটা প্রাণনাশক হবে।
নিধনকারী শহরের পক্ষে এটা হবে অমঙ্গলজনক।
জেরুশালেম মরচে পড়া হাঁড়ির মত।
মরচের ঐ দাগগুলি মোছা যাবে না! সেই পাত্র পরিষ্কার নয়।
তাই তুমি অবশ্যই হাঁড়ির ভেতরের প্রত্যেকটা মাংসের টুকরো বার করে নেবে!
ঐ মাংস খেও না! আর যাজকদেরও সেই মন্দ মাংস বাছতে দিও না।
7 জেরুশালেম মরচে পড়া হাঁড়ির মত।
কারণ হত্যাকারীদের হত্যার রক্ত এখনও সেখানে রয়েছে।
সে ঐ রক্তখোলা পাথরের উপর রেখেছে,
মাটিতে ঢেলে তা মাটি চাপা দেয়নি!
8 আমি তার সেই রক্তখোলা পাথরের ওপরে রেখেছি
যেন তা ঢাকা না হয়।
আমি এমনটা করেছি যেন লোকে ক্রুদ্ধ হয়ে নির্দোষ লোককে হত্যা করার শাস্তি তাকে দেয়।”
9 “‘তাই প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন:
হত্যাকারীদের শহরের পক্ষে এ হবে অমঙ্গলজনক!
আমি আগুনের জন্য প্রচুর কাঠ জড়ো করব।
10 পাত্রের তলায় কাঠ বোঝাই করে রাখব।
আগুন জ্বালাও,
ভালো করে মাংস রান্না কর!
মশলা মেশাও
এমনকি হাঁড়িগুলোও পুড়ে যাক।
11 তারপর খালি পাত্রটিকে কয়লার ওপর রাখ।
ওটাকে এমন এমন ভাবে উত্তপ্ত হতে দাও যাতে তার দাগগুলোতেও আগুন ধরে যায়।
ঐ দাগগুলো গলে যাবে
ও মরচে পড়ে ধ্বংস হবে।
12 “‘ঐ দাগগুলো ধুয়ে ফেলতে
জেরুশালেমকে প্রচুর খাটতে হবে।
কিন্তু সেই “মরচে” যাবে না!
কেবল আগুনই (শাস্তি) সেই মরচে দূর করতে সক্ষম হবে।
13 “‘তুমি আমার বিরুদ্ধে পাপ করে
পাপের দাগে দাগযুক্ত হয়েছিলে।
আমি তোমায় পরিষ্কার করার জন্য ধুতে চাইলাম।
কিন্তু সেই দাগ উঠল না।
আমি আর ধোবার চেষ্টা করব না,
যতক্ষণ না আমার প্রচণ্ড ক্রোধ তোমার উপরে শেষ না করি!
14 “‘আমিই প্রভু, আমিই বলেছিলাম তোমার শাস্তি আসবে আর আমিই তা ঘটাব। আমি শাস্তি দেওয়া থেকে বিরত হব না। তোমার জন্য অনুশোচনাও বোধ করব না। তোমার মন্দ কাজের জন্য আমি তোমায় শাস্তি দেব। প্রভু আমার সদাপ্রভুই এই কথাগুলি বলেছেন।’”
যিহিষ্কেলের স্ত্রীর মৃত্যু
15 তারপর প্রভুর এই বাক্য আমার কাছে এল, তিনি বললেন, 16 “মনুষ্যসন্তান, তুমি তোমার স্ত্রীকে খুবই ভালবাস, কিন্তু আমি তোমার কাছ থেকে তাকে নিয়ে নেব। তোমার স্ত্রী হঠাৎ মারা যাবে কিন্তু তুমি তোমার দুঃখ প্রকাশ করবে না, জোরে জোরে কেঁদো না। 17 চোখের জল ফেলো কিন্তু নিঃশব্দে। মৃত স্ত্রীর জন্য উচ্চস্বরে কেঁদো না। সাধারণতঃ যে কাপড় পরে থাক তাই পর। তোমার পাগড়ী বাঁধ, জুতো পর। শোক প্রকাশ করতে তোমার গোঁফ ঢেকে রেখো না আর মানুষ মারা গেলে লোকে সাধারণতঃ যা খায় তাও খেয়ো না।”
18 পরের দিন সকালে ঈশ্বর যা বলেছিলেন তা আমি লোকদের বললাম। সেই বিকেলে আমার স্ত্রী মারা গেল। পরের দিন সকালে ঈশ্বর যা আদেশ করেছিলেন আমি সেই অনুসারে কাজ করলাম। 19 তখন লোকে আমায় জিজ্ঞেস করল, “তুমি কেন এসব করছ? এসবের অর্থ কি?”
20 তখন আমি তাদের বললাম, “প্রভুর বাক্য আমার কাছে এল; 21 ইস্রায়েলের পরিবারগুলিকে এই কথা বলো। প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন: ‘দেখ, আমি আমার পবিত্র স্থান ধ্বংস করব। তুমি এই স্থান সম্বন্ধে গর্বিত ও এর সম্বন্ধে প্রশস্তি গীত গেয়ে থাক। তোমরা সেই স্থান দেখতে ভালবাস ও সত্যই তাকে ভালোবাস। কিন্তু আমি সেই স্থান ধ্বংস করব আর যুদ্ধে যে শিশুদের তোমরা ছেড়ে এসেছিলে, তারা হত হবে। 22 কিন্তু তোমরা সেই একই কাজ করবে যেমনটি আমি আমার মৃত স্ত্রীর বিষয়ে করেছি। তোমরা তোমাদের শোক প্রকাশ করতে গোঁফ ঢাকবে না। মানুষ মারা গেলে লোকে সাধারণত যা খায় তা খাবে না। 23 তোমরা তোমাদের পাগড়ী বাঁধবে, জুতো পরবে কিন্তু শোক প্রকাশ করবার জন্য কেঁদো না। তোমরা তোমাদের পাপের কারণে ক্ষীণ ও দুর্বল হয়ে পড়বে। একে অন্যের কাছে গভীরভাবে আর্তনাদ করবে। 24 যিহিষ্কেল তোমাদের কাছে একটি চিহ্নস্বরূপ। সে যা যা করেছে তোমরাও তাই করবে। শাস্তির সেই সময় যখন আসবে তখন তোমরা জানবে যে আমিই প্রভু।’”
25-26 প্রভু বললেন, “মনুষ্যসন্তান, আমি লোকদের কাছ থেকে সেই নিরাপদ স্থান (জেরুশালেম) ছিনিয়ে নেব। সেই সুন্দর স্থান তাদের আনন্দ দেয়, তারা তা দেখতে চায় ও তাকে প্রকৃতই ভালবাসে। কিন্তু সেই সময়ে আমি ঐ লোকদের কাছ থেকে এই শহর ও তাদের সন্তান-সন্ততি ছিনিয়ে নেব। জেরুশালেমের জন্য দুঃসংবাদ নিয়ে অবশিষ্ট কেউ একজন তোমাদের কাছে আসবে। 27 সেই সময়, তোমরা ঐ লোকটির সঙ্গে কথা বলতে সক্ষম হবে এবং চুপ করে থাকবে না। এইভাবে, তুমি তাদের কাছে একটি চিহ্নস্বরূপ হবে। তখন তারা জানবে যে আমিই প্রভু।”
শলোমনের প্রতি।
72 ঈশ্বর রাজাকে আপনার মত সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করুন।
রাজার পুত্রকে আপনার ধার্মিকতা সম্পর্কে শিক্ষালাভ করতে সাহায্য করুন।
2 রাজাকে আপনার লোকদের প্রতি ন্যায্য বিচার করতে সাহায্য করুন।
আপনার দীন লোকদের প্রতি বিচক্ষণ সিদ্ধান্ত নিতে তাকে সাহায্য করুন।
3 সারা ভূখণ্ড জুড়ে শান্তি
ও ন্যায়বিচার থাকতে দিন।
4 রাজাকে দীন মানুষের প্রতি সুবিচার করতে দিন।
সহায় সম্বলহীনকে তিনি যেন সাহায্য করেন।
ওদের যারা আঘাত করে তাদের যেন উনি শাস্তি দেন।
5 যতদিন পর্যন্ত আকাশে চাঁদ থাকে এবং সূর্য প্রতিভাত হবে ততদিন যেন লোকেরা রাজাকে ভয় ও শ্রদ্ধা করে।
লোকরা যেন তাকে চিরদিন ভয় ও শ্রদ্ধা করে।
6 যে বৃষ্টি শস্যক্ষেতের ওপর ঝরে পড়ে, রাজাকে সেই বৃষ্টির মত হতে সাহায্য করুন।
যে জলধারা জমিতে পতিত হয়, তাকে সেই ধারার মত হতে সাহায্য করুন।
7 যতক্ষণ তিনি রাজা রয়েছেন ততদিন যেন সৎ লোকরা বিকশিত হয়।
যতদিন আকাশে চাঁদ রয়েছে ততদিন যেন শান্তি বজায় থাকে।
8 এক সমুদ্র থেকে আর এক সমুদ্র পর্যন্ত তার রাজত্বের বিস্তার হোক্।
ফরাৎ নদী থেকে পৃথিবীর দূর প্রান্ত পর্যন্ত যেন তাঁর রাজত্ব বজায় থাকে।
9 মরুভূমিতে যারা বাস করে তারা সবাই যেন তাঁর কাছে আনত হয়।
তাঁর সব শত্রুরা যেন মাটির ধূলোতে মুখ ঠেকিয়ে তাঁর কাছে অবনত হয়।
10 তর্শীশের রাজা এবং অন্যান্য দূরবর্তী রাজ্য যেন তাঁর জন্য উপহার বয়ে আনে।
শিবা ও সবার রাজারা যেন তার জন্য নৈবেদ্য বয়ে আনে।
11 সব রাজা যেন আমাদের রাজার কাছে নত হয়।
সব জাতি যেন তাঁর সেবা করেন।
12 আমাদের রাজা সহায় সম্বলহীনদের সাহায্য করেন।
আমাদের রাজা দরিদ্র অসহায় মানুষকে সাহায্য করেন।
13 দরিদ্র ও অসহায় মানুষ তাঁর ওপর নির্ভর করেন।
রাজা তাদের বেঁচে থাকতে সাহায্য করেন।
14 সেই সব নিষ্ঠুর লোকরা যারা ওদের ক্ষতি করতে চেষ্টা করে, তাদের হাত থেকে রাজা ওদের রক্ষা করেন।
ওই সব দীন-দরিদ্র মানুষের জীবন রাজার কাছে অত্যন্ত মূল্যবান।
15 রাজা দীর্ঘজীবী হোন!
তিনি যেন শিবার কাছ থেকে সোনা গ্রহণ করেন।
সর্বদা রাজার জন্য প্রার্থনা কর।
প্রতিদিন তাকে আশীর্বাদ কর।
16 জমিগুলিতে যেন প্রচুর পরিমানে ফসল হয়।
পাহাড়গুলো যেন শস্যে ভরে ওঠে।
জমিগুলো যেন লিবানোনের মত উর্বর হয়ে ওঠে।
যেমন করে মাঠগুলো ঘাসে ভরে যায় তেমন করে যেন শহরগুলো মানুষে ভরে ওঠে।
17 রাজা যেন চিরদিনের জন্য বিখ্যাত হয়ে যান।
যতদিন সূর্য প্রতিভাত হবে, ততদিন যেন লোকরা তাঁর নাম মনে রাখে।
লোকরা যেন তাঁর আশীর্বাদ পায়
এবং সকলে যেন তাঁকে আশীর্বাদ করে।
18 প্রভু ঈশ্বর, ইস্রায়েলের ঈশ্বরের প্রশংসা কর!
একমাত্র ঈশ্বরই এমন আশ্চর্য কার্য করতে পারেন।
19 চিরদিন তাঁর মহিমাময় নামের প্রশংসা কর!
তাঁর মহিমা যেন সারা পৃথিবীকে পরিপূর্ণ করে দেয়!
আমেন! আমেন!
20 (যিশয়ের পুত্র, দায়ূদের প্রার্থনাসমূহ এখানেই শেষ হলো।)
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International