M’Cheyne Bible Reading Plan
সীবঃ দায়ূদের সঙ্গে দেখা করল
16 দায়ূদ জৈতুন পর্বতের চূড়ার দিকে যখন কিছুটা উঠেছেন, তখন মফীবোশতের ভৃত্য সীবঃর সঙ্গে দায়ূদের দেখা হল। সীবঃর গাধা দুটি তাদের পিঠে বস্তাভরা জিনিস বয়ে নিয়ে যাচ্ছিল। তাতে 200টা রুটি, 100 থোকা কিস্মিস্, 100টা গ্রীষ্মের মরশুমী ফলসহ এক কূপা দ্রাক্ষারস ছিল। 2 রাজা দায়ূদ সীবঃকে জিজ্ঞাসা করলেন, “এই জিনিসগুলো কি কাজে লাগবে?”
সীবঃ উত্তর দিল, “গাধাগুলি রাজপরিবারের লোকদের চড়ার জন্য। রুটি এবং গ্রীষ্মের ফলগুলো রাজার আধিকারিকদের খাওয়ার জন্য। মরুভূমির পথে কেউ যদি দুর্বল হয়ে পড়ে সে এই দ্রাক্ষারস পান করতে পারে।”
3 তখন রাজা জিজ্ঞাসা করলেন, “মফীবোশৎ কোথায়?”
সীবঃ উত্তর দিল, “মফীবোশৎ এখন জেরুশালেমে রয়েছে। সে ভাবছে, ‘ইস্রায়েলীয়রা আজ আমার দাদুর রাজত্ব আমায় ফিরিয়ে দেবে।’”
4 তখন রাজা সীবঃকে বললেন, “সেই কারণে মফীবোশতের যা কিছু আছে তা আমি তোমাকে দিলাম।”
সীবঃ বলল, “আমি আপনাকে প্রণাম করি। আমার বিশ্বাস, আমি সর্বদাই আপনাকে সন্তুষ্ট রাখতে পারব।”
শিমিয়ি দায়ূদকে অভিশাপ দিল
5 দায়ূদ বহুরীমে এলেন। শৌলের পরিবারের একজন লোক বহুরীম থেকে এল। লোকটার নাম শিমিয়ি—সে গেরার পুত্র। শিমিয়ি দায়ূদের উদ্দেশ্যে অহিতকর কথা বলতে বলতে বেরিয়ে এল। এবং বার বার সে খারাপ কথাই বলতে থাকল।
6 শিমিয়ি দায়ূদ এবং তাঁর আধিকারিকদের দিকে পাথর ছুঁড়ছিল। কিন্তু সব লোক এবং সৈন্যরা দায়ূদকে ঘিরে দাঁড়াল এবং তাঁর চারদিকে জড়ো হল। 7 শিমিয়ি দায়ূদকে এই বলে অভিশাপ দিল: “বেরিয়ে যাও, বেরিয়ে যাও, তুমি একজন জঘন্য খুনী! 8 প্রভু তোমায় শাস্তি দিচ্ছেন। কেন? কারণ তুমি শৌলের পরিবারের লোকদের মেরে ফেলেছ। তুমি চুরি করে শৌলের জায়গায় রাজা হয়ে বসেছ। এখন সেরকমই খারাপ কিছু তোমার নিজের ক্ষেত্রে ঘটছে। প্রভু তোমার রাজত্ব তোমার পুত্র অবশালোমকে দিয়েছেন। কেন? কারণ তুমি একজন খুনী।”
9 সরূয়ার পুত্র অবীশয় রাজাকে বলল, “এই মরা কুকুরটা কেন আপনাকে অভিশাপ করবে? হে রাজা, প্রভু আমার, আমাকে যেতে দিন, আমি গিয়ে শিমিয়ির মুণ্ডু কেটে উড়িয়ে দিই।”
10 কিন্তু রাজা উত্তর দিলেন, “ওহে সরূয়ার পুত্র, এটা তোমার কোন ব্যাপার নয়। সে তো আমাকে অভিশাপ দিচ্ছে। প্রভু তাকে বলেছেন আমাকে অভিশাপ দিতে। প্রভু যা করেন সে বিষয়ে কে তাঁকে প্রশ্ন করতে পারে?”
11 দায়ূদ অবীশয় এবং তাঁর ভৃত্যদের আরও বললেন, “দেখ, আমার নিজের পুত্র অবশালোম আমাকে হত্যা করতে চাইছে। বিন্যামীন পরিবারগোষ্ঠীর এই ব্যক্তির (শিমিয়ি) আমাকে হত্যা করার অনেক বেশী অধিকার আছে। ওকে একা ছেড়ে দাও। ওকে আমায় অভিশাপ দিয়ে যেতে দাও। প্রভু ওকে এই কাজ করতে বলেছেন। 12 হয়তো আমার প্রতি যা কিছু ভুল করা হয়েছে প্রভু তা দেখবেন। তাহলে শিমিয়ি আজ আমার বিরুদ্ধে যা যা খারাপ কথা বলেছে, প্রভু হয়তো তার জন্য আমাকে ভাল কিছু দেবেন।”
13 অতএব দায়ূদ এবং তাঁর লোকরা রাস্তা দিয়ে পুনরায় চলতে লাগল। কিন্তু শিমিয়ি দায়ূদকে অনুসরণ করতে থাকলো। রাস্তার অন্যদিক দিয়ে সে পাহাড়ের ধারে ধারে চলতে থাকলো। পথে যেতে যেতে শিমিয়ি দায়ূদের উদ্দেশ্যে খারাপ খারাপ কথা বলতে থাকলো। শিমিয়ি দায়ূদের উদ্দেশ্যে পাথর এবং কাদা ছুঁড়তে লাগল।
14 রাজা দায়ূদ এবং তাঁর সব লোকরা যর্দন নদীর কাছে এসে পৌঁছলেন। রাজা এবং তাঁর লোকরা খুব ক্লান্ত ছিলেন। তাঁরা সেখানে বিশ্রাম নিয়ে নিজেদের খানিকটা চাঙ্গা করে নিলেন।
15 অবশালোম, অহীথোফল এবং ইস্রায়েলের সব লোক জেরুশালেমে এল। 16 দায়ূদের বন্ধু অর্কীয় হূশয় অবশালোমের কাছে এল। হূশয় অবশালোমকে বলল, “রাজা দীর্ঘজীবী হোক্! রাজা দীর্ঘজীবী হোক্!”
17 অবশালোম উত্তর দিল, “তুমি তোমার বন্ধু দায়ূদের প্রতি একনিষ্ঠ নও কেন? তুমি তোমার বন্ধুর সঙ্গে জেরুশালেম থেকে চলে গেলে না কেন?”
18 হূশয় বলল, “প্রভু যাকে বেছে নেন আমি তো তারই। লোকরা এবং ইস্রায়েলের সব লোকরা আপনাকে বেছে নিয়েছে। আমি আপনার সঙ্গে অবশ্যই থাকব। 19 অতীতে আমি আপনার পিতার সেবা করেছি। অতএব এখন আমি দায়ূদের পুত্রের সেবা করব। আমি আপনারই সেবা করব।”
অবশালোম অহীথোফলের কাছ থেকে উপদেশ চাইল
20 অবশালোম অহীথোফলকে জিজ্ঞাসা করল, “বল, এখন কি করা উচিৎ।”
21 অহীথোফল অবশালোমকে বলল, “তোমার পিতা এখানে ঘর-বাড়ী দেখাশোনা করার জন্য তাঁর কয়েকজন উপপত্নীদের রেখে গেছেন। যাও এবং তাদের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন কর। তখন সব ইস্রায়েলীয় জানবে তোমার পিতা তোমাকে ঘৃণা করে। তোমার সব লোকরা তোমাকে সমর্থন করতে উৎসাহিত হবে এবং তোমাকে তাদের পূর্ণ সমর্থন দেবে।”
22 তখন তারা বাড়ীর ছাদে অবশালোমের জন্য একটা তাঁবু ফেলল। অবশালোম তার পিতার উপপত্নীদের সঙ্গে যৌন সম্পর্ক করল। সব ইস্রায়েলীয়ই তা দেখল। 23 সেই সময় থেকে অহীথোফলের উপদেশ অবশালোম এবং দায়ূদ উভয়ের কাছে গুরুত্বপূর্ণ ছিল। তা ছিল মানুষের কাছে ঈশ্বরের বাক্যের মতই গুরুত্বপূর্ণ।
সাথী খ্রীষ্টীয়ানদের সাহায্য
9 এখন বুঝতে পারছি যে ঈশ্বরের লোকদের সাহায্যের ব্যাপারে তোমাদের কিছু লেখার প্রয়োজন নেই। 2 কারণ আমি তোমাদের আগ্রহ জানি এবং তোমাদের বিষয়ে মাকিদনিয়ানদের কাছে এই গর্ব করে থাকি যে গত বছর থেকে আখায়ার লোকরা অর্থাৎ তোমরা তৈরী হয়ে রয়েছ। আর এই ঘটনা তাদের বেশীর ভাগ লোককে দানের বিষয়ে উৎসাহিত করে তুলেছে, তারাও দিতে চাইছে। 3 কিন্তু আমি সেই ভাইদের পাঠাচ্ছি যাতে তোমাদের সম্বন্ধে আমাদের যে গর্ব তা বিফল না হয়, যেন আমি যেমন তাদের বলেছি সেইমতো তোমরা প্রস্তুত হয়ে থাকো। 4 তা না হলে মাকিদনিয়ার কিছু লোক যদি আমার সাথে আসে এবং তোমাদের প্রস্তুত না দেখে, তাহলে এই নিশ্চয়তা বোধ আমাদের ও তোমাদের উভয়ের পক্ষেই লজ্জার বিষয় হবে। 5 সেইজন্য আমি ভাইদের এই অনুরোধ করা প্রয়োজন মনে করলাম, যাতে তাঁরা আগে তোমাদের কাছে যান এবং দান হিসাবে যে অর্থ তোমরা দেবে বলেছিলে, সেই দান সংগ্রহ করে প্রস্তুত থাকতে পারেন। সেই দান যেন স্বেচ্ছাদান হয়, জোর করে আদায় করা চাঁদার টাকা না হয়।
6 মনে রেখো, যে অল্প পরিমাণে বীজ বোনে, সে অল্প পরিমাণ ফসল কাটবে এবং যে যথেষ্ট পরিমাণ বীজ বোনে সে প্রচুর ফসল কাটবে। 7 প্রত্যেকে নিজের নিজের অন্তরে যেমন স্থির করেছে, সেই মতোই দান করুক, মনে দুঃখ পেয়ে অথবা জোর করা হয়েছে বলে নয়, কারণ খুশী মনে যারা দেয়, ঈশ্বর তাদের ভালবাসেন। 8 ঈশ্বর তোমাদের সর্বপ্রকার আশীর্বাদ প্রচুর পরিমাণে দিয়ে থাকেন, যেন সব সময় তোমাদের সব কিছুই বেশী পরিমাণে থাকে এবং যেন সব রকম ভাল কাজ করার জন্য সর্ব সময়ে তোমাদের ইচ্ছা ও প্রয়োজনের অতিরিক্ত সবই থাকে। 9 যেমন শাস্ত্রে লেখা আছে:
“ধার্মিক দরিদ্রকে মুক্ত হস্তে দান করে;
তার সেই সত্কাজ চিরস্থায়ী।”(A)
10 যিনি কৃষককে বোনার জন্য বীজ ও আহারের জন্য খাদ্য জুগিয়ে থাকেন, তিনি তোমাদের বোনার জন্য আত্মিক বীজ জোগাবেন এবং তার বৃদ্ধিসাধন করবেন। তোমাদের দানশীলতা প্রচুর ফসল উৎপন্ন করবে। 11 ঈশ্বর তোমাদের সব বিষয়ে সমৃদ্ধ করবেন যেন তোমরা সব সময়ে মহত্ হও। আমাদের মাধ্যমে তোমাদের দান যখন অভাবীদের হাতে দেব, তখন তারা আনন্দে ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানাবে।
12 তোমাদের এই দানের ফলে ঈশ্বরের লোকদের শুধু যে অভাব মিটবে তা নয় বরং এই দান ঈশ্বরের প্রতি অনেক ধন্যবাদের দ্বারা উপচে পড়বে। 13 তোমাদের এই কাজ যে আনুগত্যের প্রমাণ দেয় তার জন্যে তারা ঈশ্বরের প্রশংসা করবে, এই আনুগত্য তোমাদের খ্রীষ্টের সুসমাচারের ওপর বিশ্বাস থেকে আসে। খোলা হাতে তোমরা যে দান তাদের ও অপরের সঙ্গে ভাগ করে নিয়েছ তার জন্য তারা ঈশ্বরের প্রশংসা করবে। 14 তারা যখন তোমাদের জন্য প্রার্থনা করে তখন তোমাদের সাথী হবার ইচ্ছা করবে। তোমাদের ওপরে যে মহা-অনুগ্রহ ঈশ্বর দিয়েছন, তার কথা মনে করেই তারা এমন ইচ্ছা করবে। 15 ঈশ্বরের অপূর্ব অবর্ণনীয় দানের জন্য তাঁকে ধন্যবাদ।
23 প্রভুর বাক্য আমার কাছে এল, তিনি বললেন, 2 “মনুষ্যসন্তান, শমরিয়া ও জেরুশালেমকে নিয়ে এই গল্পটা শোন। দুই বোন ছিল, তারা একই মায়ের মেয়ে। 3 তারা মিশরে যৌবন কালেই বেশ্যা হয়ে উঠল। মিশরেই প্রথম তারা প্রেম করল ও পুরুষদের দিয়ে তাদের চুচুক টেপাত ও স্তন ধরতে দিত। 4 বড় মেয়ের নাম ছিল অহলা[a] আর তার বোনের নাম ছিল অহলীবা।[b] তারা আমার স্ত্রী হল আর আমাদের সন্তান-সন্ততি হল। (অহলা প্রকৃতপক্ষে শমরিয়া আর অহলীবা প্রকৃতপক্ষে জেরুশালেমকে বোঝায়।)
5 “তারপর অহলা আমার প্রতি অবিশ্বস্তা হল। সেও একজন বেশ্যার মত জীবনযাপন করত। সে তার প্রেমিকদের চাইতে লাগল; নীল পোশাক পরা অশূরীয় সৈন্যদের প্রতি সে কামাসক্তা হল। 6 ঐ অশ্বারোহী যুবকরা সবাই তার আকাঙ্খিত বিষয় হল। তারা সবাই ছিল হয় নেতা নয়তো অধ্যক্ষ। 7 অহলা নিজেকে ঐসব যুবকদের কাছে দিয়ে দিল। ঐ অশূরীয় সৈন্যরা সবাই ছিল বাছা বাছা সৈন্য। সে তাদের সবাইকে চাইল এবং তাদের নোংরা প্রতিমাদের দ্বারা কলুষিত হল। 8 এছাড়াও মিশরের সাথে তার প্রেম থেকে সে পিছপা হল না। মিশরের জন্যই যৌবনকালে তার প্রেম এসেছিল, মিশরেই ছিল সেই প্রথম প্রেমিক যে তার যৌবনের স্তন স্পর্শ করেছিল। মিশর তার প্রতি তার মিথ্যা প্রেম ঢেলে দিয়েছিল। 9 তাই আমি তাকে তার প্রেমিকদের হাতে ছেড়ে দিলাম। সে অশূরীয়কে চেয়েছিল, আমি তাকে তা দিলাম। 10 তারা তাকে বলাৎকার করল, তার সন্তানদের নিয়ে গেল আর খড়্গ ব্যবহার করে তাকে হত্যা করল। তারা তাকে শাস্তি দিল যার বিষয়ে মহিলারা এখনও আলোচনা করে।
11 “তার ছোট বোন অহলীবা এসব ঘটতে দেখেও তার বোনের চাইতে বেশী পাপ করে চলল, অহলার চাইতেও সে আরও অবিশ্বস্ত হল। 12 সে অশূরীয় নেতাদের ও অধ্যক্ষদের চাইল; অশ্বারোহী নীল পোশাক পরা ঐ সৈন্যদেরও চাইল। এইসব যুবকরা সবাই ছিল তার ঈপ্সিত বস্তু। 13 আমি দেখলাম ঐ দুই মহিলাই এক ভুল দ্বারা তাদের জীবন ধ্বংস করতে চলেছে।
14 “অহলীবা আমার প্রতি অবিশ্বস্ত হয়েই চলল। বাবিলে সে দেওয়ালে খোদিত পুরুষের আকৃতি দেখল। এই আকৃতিগুলি ছিল লাল পোশাক পরা কল্দীয় পুরুষদের। 15 তাদের কোমরে ছিল কোমরবন্ধ, মাথায় ছিল পাগড়ী। ঐসব লোকদের দেখে মনে হত যেন অশ্বারোহীদের আধিকারিক; তারা ছিল কল্দীয়, বাবিলে তাদের জন্ম। 16 আর অহলীবা তাদের চাইল। সে বাবিলে তাদের কাছে দূত পাঠাল। 17 তাই ঐসব বাবিলের পুরুষরা তার প্রেম শয্যার পাশে এসে তার সাথে সহবাস করল। তারা তাকে ব্যবহার করে এত নোংরা করল যে সে তাদের প্রতি বিরক্ত হয়ে উঠল।
18 “প্রত্যেকেই দেখল যে অহলীবা অবিশ্বস্ত। তার নগ্ন দেহকে সে এত জনকে উপভোগ করতে দিল যে আমি তার প্রতি বিরক্ত হয়ে উঠলাম, যেমন তার বোনের প্রতি হয়েছিলাম। 19 বার বার অহলীবা আমার প্রতি অবিশ্বস্ত হল। তারপর সে মিশরে তার যৌবনকালের প্রেমের কথা স্মরণ করল। 20 সে গাধার মত শিশ্ন ও ঘোড়ার মত ভাসিয়ে দেওয়া বীর্য্য সম্পন্ন প্রেমিকদের কথা স্মরণ করল।
21 “অহলীবা, তুমি তোমার যৌবন কালের স্বপ্ন দেখলে, যে সময় তোমার প্রেমিকরা তোমার স্তনের বোঁটা স্পর্শ করত ও যৌবনের স্তন ধরত। 22 হে অহলীবা, প্রভু আমার সদাপ্রভু তাই এইসব কথা বলেছেন, ‘তুমি তোমার প্রেমিকদের প্রতি নিদারুণ বিরক্ত, কিন্তু আমি সেই প্রেমিকদের এখানে আনব আর তারা তোমায় ঘিরে ফেলবে। 23 আমি ঐ সমস্ত পুরুষদের বাবিল থেকে আনব, বিশেষ করে সেই কল্দীয়দের। আমি পেকোদ, শোয়া এবং কোয়া থেকেও লোকদের আনব। আর অশূরীয় থেকেও লোকদের অর্থাৎ সেই নেতাদের ও আধিকারিকদের আনব। অশ্বারোহী আধিকারিকরা ও বাছাই করা অশ্বারোহী সৈন্যরা সবাই ছিল তোমার আকাঙ্খিত যুবক। 24 ঐ জনতার ভীড় তোমার কাছে আসবে। তারা ঘোড়ায় ও রথে চেপে তোমার কাছে আসবে। বহু লোক তাদের ঢাল ও শিরস্ত্রাণ নিয়ে তোমার চারিদিকে জড়ো হবে। আমি তাদের বলব তুমি আমার প্রতি কি করেছ আর তারা তাদের ইচ্ছে মত তোমাকে শাস্তি দেবে। 25 আমি যে কত ঈর্ষাণ্বিত তা তোমায় দেখাব। তারা তোমার প্রতি অতি ক্রুদ্ধ হয়ে আঘাত করে তোমার নাক, কান কেটে ফেলবে। তারা তোমায় খড়্গ দ্বারা হত্যা করে, তোমার সন্তানদের ধরে নিয়ে যাবে এবং অবশিষ্ট যা থাকবে তাতে আগুন লাগিয়ে দেবে। 26 তারা তোমার ভাল ভাল কাপড় ও অলঙ্কারগুলো নিয়ে যাবে। 27 আর মিশরে বসবাসের সময় থেকে তুমি যে সমস্ত কুকর্ম ও ব্যভিচার করেছিলে আমি তার সমাপ্তি ঘটাব। তুমি আর কখনও তাদের খোঁজ করবে না, আর কখনও মিশরকে স্মরণ করবে না।’”
28 প্রভু আমার সদাপ্রভু এইসব কথা বলেন, “তুমি যাদের ঘৃণা কর আমি তাদের হাতেই তোমায় তুলে দিচ্ছি। যাদের নিয়ে তুমি অতীষ্ঠ, তাদের হাতেই তুলে দিচ্ছি। 29 আর তারা যে তোমায় কত ঘৃণা করে তা দেখাবে। তোমার পরিশ্রমের দ্বারা উপার্জিত সব কিছুই তারা নিয়ে যাবে আর উলঙ্গ ও বিবস্ত্র অবস্থায় তোমাকে পরিত্যাগ করবে। লোকে স্পষ্টই তোমার পাপ দেখতে পাবে। তোমার বেশ্যার মত ব্যবহার ও দুষ্ট স্বপ্ন দর্শনও তারা দেখবে। 30 আমায় ত্যাগ করে অন্য জাতির পেছনে পেছনে ছুটে যাবার সময় তুমি ঐসব মন্দ কাজ করতে। তাদের নোংরা মূর্ত্তি পূজো করতে আরম্ভ করার পরেই তুমি ঐসব বাজে কাজ করলে। 31 তুমি তোমার বোনের পথ অনুসরণ করে তার মতোই জীবনযাপন করেছ। তাই আমি, তার ভাগ্য যেমন হয়েছিল সেইরকম কষ্ট তোমাকে পাওয়াব।” 32 প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন:
“তুমিও তোমার বোনের পেয়ালা থেকে পান করবে।
সেই পেয়ালাটি মাপে বেশ বড় ও গভীর।
তোমার পান করা দেখে লোকে হাসবে
আর তোমাকে উপহাস করবে।
33 তুমি একজন মাতাল লোকের মত টলবে।
তোমার শরীর মুর্ছিত হয়ে পড়বে।
ঐ পেয়ালা ধ্বংসের ও উচ্ছেদের জন্য।
তোমার বোন শমরিয়া যাতে পান করেছিল এটা তারই মত।
34 সেই পেয়ালার বিষ তুমি পান করবে,
তার তলানি পর্যন্ত পান করবে।
তারপর সেই পাত্র ছুঁড়ে ফেলে ভেঙে টুকরো টুকরো করবে
আর কষ্টে তোমার স্তন ছিঁড়ে ফেলবে।
আমি প্রভু ও সদাপ্রভু বলছি এটা ঘটবে,
আর আমিই এসব বলেছি।”
35 “তাই প্রভু আমার সদাপ্রভু বলেন, ‘জেরুশালেম, তুমি আমায় ভুলে গেছ। তুমি আমায় দূর করে একাকী রেখে গেছ। আমাকে পরিত্যাগ করার জন্য ও বেশ্যার মত জীবন যাপন করার জন্য তোমায় তাই কষ্ট ভোগ করতে হবে। তোমার দেখা দুষ্ট স্বপ্নের জন্যও তোমায় কষ্টভোগ করতে হবে।’”
অহলা ও অহলীবার বিপক্ষে বিচার
36 প্রভু আমায় বললেন, “মনুষ্যসন্তান, তুমি কি অহলা ও অহলীবার বিচার করবে? তবে তারা যে ভয়ানক কাজগুলি করেছে তা তাদের বল। 37 তারা ব্যভিচারমূলক পাপ করেছে। তারা দণ্ডার্হ অপরাধে অপরাধী। তারা একজন বেশ্যার মত আচরণ করেছে। তাদের নোংরা মূর্ত্তিগুলোর সঙ্গে থাকবার জন্য আমাকে ত্যাগ করেছে। তাদের কাছে আমার যে সন্তানরা ছিল, তাদের তারা জোর করে আগুনের মধ্যে দিয়ে হাঁটতে বাধ্য করেছে যাতে তারা তাদের নোংরা মূর্ত্তিগুলোকে খাদ্য যোগাতে পারে। 38 তারা আমার বিশ্রামের বিশেষ দিন ও পবিত্র স্থানকে কোন গুরুত্ব দেয় নি। 39 তারা তাদের মূর্ত্তিগুলোর জন্য তাদের সন্তানদের হত্যা করেছে এবং সেই একই দিনে আমার সে জায়গাটাকে অশুচি করেছে। দেখ, তারা এসমস্তই আমার মন্দিরের মধ্যে করেছে!
40 “তারা দূরের পুরুষদের ডেকে এনেছে। তুমি ঐ লোকদের কাছে দূত পাঠিয়েছিলে আর তারা তোমাকে দেখবার জন্য এসেছিল। তুমি তাদের জন্য স্নান করলে, তোমার চোখে কাজল দিলে ও গয়না পরলে। 41 তুমি রাজকীয় বিছানায় বসে তার সামনের টেবিলে আমার দেওয়া সুগন্ধী ও তেল সাজিয়ে রাখলে।
42 “জেরুশালেমের শব্দ শুনে মনে হল যেন ভোজে আমন্ত্রিত জনতার ভীড়। সেই ভোজে অনেকে এল; লোকে মরুভূমি থেকে আসছিল বলে পান করতে করতেই আসছিল। তারা সেই স্ত্রীলোককে বাউটি ও সুন্দর মুকুট দিল। 43 তখন আমি ব্যভিচারে যে স্ত্রীলোকটি জীর্ণ হয়ে পড়েছে তার সাথে কথা বললাম। তাকে জিজ্ঞেস করলাম, ‘তারা কি তার সঙ্গে এই যৌন পাপ করেই চলবে আর সেও কি তাদের সঙ্গে করবে?’ 44 কিন্তু লোকে যেমন বেশ্যার কাছে যায় সেই ভাবেই তারা তার কাছে যেতে থাকল। হ্যাঁ, তারা বারবার ঐ দুষ্টা স্ত্রীলোক অহলা ও অহলীবার কাছে যেতে থাকল।
45 “কিন্তু ধার্মিক লোকরা তাদের দোষী করবে। তারা ঐ দুই স্ত্রীলোককে ব্যভিচার ও হত্যার পাপে দোষী করবে। কারণ অহলা ও অহলীবা ব্যভিচারমূলক পাপ করেছে এবং যে সব লোকদের তারা হত্যা করেছে তাদের রক্ত এখনও তাদের হাতে লেগে রয়েছে!”
46 প্রভু আমার সদাপ্রভুই এইসব কথা বলেছেন, “লোকদের এক জায়গায় জড়ো কর, তারা অহলা ও অহলীবার শাস্তি দিক। ঐ লোকরা ঐ দুই স্ত্রীলোককে শাস্তি দেবে ও তাদের নিয়ে ব্যঙ্গ করবে। 47 তারপর তারা পাথর ছুঁড়ে তাদের মেরে ফেলবে আর খড়্গ দিয়ে ঐ দুই স্ত্রীলোককে টুকরো টুকরো করে কাটবে। তারা ঐ স্ত্রীলোকদের সন্তানদের হত্যা করে তাদের ঘরবাড়ী জ্বালিয়ে দেবে। 48 এইভাবে আমি ঐ দেশের লজ্জা দূর করব আর তারা যে কাজ করেছে অন্য স্ত্রীলোকরা সেই লজ্জাজনক কাজ হতে সাবধান হবে। 49 তোমার কৃত মন্দ কাজের জন্য তারা তোমায় শাস্তি দেবে। তোমরা নোংরা মূর্ত্তি পূজো করার জন্যও শাস্তি ভোগ করবে। তখন তোমরা জানবে যে আমিই প্রভু ও সদাপ্রভু।”
সঙ্গীত পরিচালকের প্রতি: লোকেদের স্মরণ করিয়ে দেবার মানসে দায়ূদের একটি গীত।
70 ঈশ্বর আমায় রক্ষা করুন!
ঈশ্বর শীঘ্র আমায় সাহায্য করুন!
2 লোকে আমায় হত্যা করার চেষ্টা করছে।
ওদের নিরাশ করুন!
ওদের লজ্জিত বোধ করান!
যে সব লোক আমার খারাপ করতে চায়
তাদের যেন পতন হয় ও তারা যেন লজ্জা পায়।
3 লোকে আমায় নিয়ে হাসাহাসি করে।
আশা করি ওদের যা প্রাপ্য ওরা তাই পাবে এবং লজ্জাবোধ করবে।
4 আমি কামনা করি যারা আপনার উপাসনা করে তারা যেন সত্যিকারের সুখী হয়।
যারা আপনার সাহায্য চায় তারা যেন সর্বদাই আপনার প্রশংসা করে।
5 ঈশ্বর আমি দীন অসহায় মানুষ।
ঈশ্বর তাড়াতাড়ি করুন!
আপনি আসুন, আমায় রক্ষা করুন! ঈশ্বর একমাত্র আপনিই আমায় উদ্ধার করতে পারেন।
আর দেরী করবেন না!
71 হে প্রভু, আমি আপনাতে বিশ্বাস রাখি,
তাই আমি কখনও হতাশ হব না।
2 আপনার ধার্ম্মিকতা দিয়ে আপনি আমায় রক্ষা করবেন।
আপনিই আমায় উদ্ধার করবেন। আমার কথা শুনুন, আমায় রক্ষা করুন।
3 আপনি আমার দুর্গ হোন,
সেই গৃহ হোন যেখানে আমি নিরাপত্তার জন্য ছুটে যেতে পারি।
আপনিই আমার শিলা এবং আমার নিরাপদ আশ্রয়স্থল।
তাই আমাকে রক্ষার আজ্ঞা দিন।
4 হে আমার ঈশ্বর, আমায় দুষ্ট লোকের হাত থেকে রক্ষা করুন।
নৃশংস ও মন্দ লোকেদের হাত থেকে আমায় রক্ষা করুন।
5 আমার জন্মের সময় থেকে আমি আপনার যত্নে ছিলাম।
আমার জন্মের সময় থেকে আপনি আমার সঙ্গে ছিলেন।
6 এমনকি আমার জন্মের আগে থেকেই আমি আপনার ওপর নির্ভর করেছি।
আমি যখন মাতৃগর্ভে ছিলাম তখনও আমি আপনার ওপর আস্থা রেখেছি।
সর্বদাই আমি আপনার কাছে প্রার্থনা করেছি।
7 আপনিই আমার শক্তির উৎস।
তাই অন্য লোকদের কাছে আমি দৃষ্টান্তস্বরূপ ছিলাম।
8 যে সব বিস্ময়কর জিনিস আপনি করেন তার সম্বন্ধে সর্বদাই আমি গান গাই।
9 আমি বৃদ্ধ হয়েছি বলে আমায় ছুঁড়ে ফেলে দেবেন না।
হত-শক্তি হয়েছি বলে আমায় ত্যাগ করবেন না।
10 শত্রুরা আমার বিরুদ্ধে চক্রান্ত করছে।
ওরা একসঙ্গে মিলিত হয়েছিলো, এবং আমাকে হত্যা করার চক্রান্ত করেছিলো।
11 আমার শত্রুরা বলছে, “যাও ওকে তুলে নিয়ে এসো!
ঈশ্বর ওকে ত্যাগ করেছেন। আর কেউ ওকে সাহায্য করবে না।”
12 ঈশ্বর, আমায় পরিত্যাগ করবেন না!
ঈশ্বর তাড়াতাড়ি এসে আমায় রক্ষা করুন!
13 আমার শত্রুদের পরাজিত করুন!
ওদের সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করে দিন!
যারা আমার ক্ষতি করতে চাইছে,
তারা যেন লজ্জিত ও অপমানিত হয়।
14 তাহলে আমি সব সময়ই আপনার ওপর নির্ভর করবো
এবং আমি আরো বেশী করে আপনার প্রশংসা করবো।
15 আপনি যে কত ভালো, তা আমি লোকদের বলবো।
আমি লোকদের বলবো কিভাবে আপনি আমায় প্রতিবার রক্ষা করেছিলেন।
তা এত বার ঘটেছে যে গুনে শেষ করা যায় না।
16 আমি আপনার মহত্বের কথা বলবো, প্রভু আমার সদাপ্রভু।
আমি সেই সব ধার্ম্মিকতার কথা বলব, যা শুধুমাত্র আপনি করতে পারেন।
17 ঈশ্বর, আমি যখন একটি ছোট্ট বালক ছিলাম তখন থেকে আপনি আমায় শিক্ষা দিয়েছেন।
তখন থেকে আজ পর্যন্ত আপনি যে সব আশ্চর্য কার্য করেছেন তা আমি মানুষকে বলেছি!
18 এখন আমি বৃদ্ধ হয়েছি, আমার চুল পেকে গেছে।
কিন্তু হে ঈশ্বর, আমি জানি, আপনি আমায় ত্যাগ করবেন না।
প্রত্যেকটি নতুন প্রজন্মকে আমি আপনার ক্ষমতা ও মহত্বের কথা বলবো।
19 ঈশ্বর, আপনার ধার্ম্মিকতা আকাশের সীমা অতিক্রম করে যায়।
ঈশ্বর, কোন দেবতাই আপনার মত নয়।
আপনি বিস্ময়কর সব কাজ করেছেন।
20 আপনি আমাকে সমস্যা এবং দুঃসময় প্রত্যক্ষ করিয়েছেন।
কিন্তু তাদের সবকিছু থেকে রক্ষা করে আপনি আমায় বাঁচিয়ে রেখেছেন।
কত গভীরে আমি ডুবে গিয়েছিলাম সেটা কথা নয়, কিন্তু আপনি আমায় সমস্যা থেকে টেনে তুলেছেন।
21 অতীতে যা করেছি তার থেকেও মহৎ কাজসমূহ করতে আমায় সাহায্য করুন।
আমাকে আরাম দিতে থাকুন।
22 আমি বীণা বাজিয়ে আপনার প্রশংসা করবো।
হে ঈশ্বর আমি গাইবো ও বলবো যে, আপনার ওপর নির্ভর করা যেতে পারে।
ইস্রায়েলের পবিত্র এক এর জন্য বীণা বাজিয়ে আমি গান গাইবো।
23 আপনি আমার আত্মাকে রক্ষা করেছেন।
আমার আত্মা সুখী হবে। নিজের মুখে আমি আপনার প্রশংসা গান করবো।
24 আমার জিভ সর্বদাই আপনার ধর্মশীলতার গান গাইবে
এবং যারা আমাকে হত্যা করতে চেয়েছিলো তারা পরাজিত ও অসম্মানিত হবে।
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International