M’Cheyne Bible Reading Plan
নাথন দায়ূদের সঙ্গে কথা বললেন
12 প্রভু নাথনকে দায়ূদের কাছে পাঠালেন। নাথন দায়ূদের কাছে গেলেন। নাথন বললনে, “এক শহরে দু’জন লোক ছিল। একজন ছিল ধনী, অন্যজন দরিদ্র। 2 ধনী লোকটির অনেক মেষ ও গবাদি পশু ছিল। 3 দরিদ্র লোকটির একটা স্ত্রী মেষ ছাড়া আর কিছুই ছিল না। দরিদ্র লোকটি মেষটাকে খাওয়াতো। মেষটা ঐ দরিদ্র লোক ও তার সন্তান-সন্ততিদের সঙ্গেই বড় হল। মেষটা গরীব লোকটার থেকেই খাবার খেত এবং তার পেয়ালা থেকেই পান করত। মেষটা ঐ লোকটির বুকের ওপর ঘুমাতো। মেষটা লোকটির মেয়ের মতই ছিল।
4 “একদিন এক পথিক ধনী লোকটির সঙ্গে দেখা করতে এলো। ধনী লোকটি পথিককে কিছু খাবার দিতে চাইলো। কিন্তু পথিককে দেবার জন্য ধনী লোকটি তার মেষ বা গবাদি পশুর থেকে কিছুই নিতে চাইল না। ধনী লোকটি, দরিদ্র লোকটির মেষটা নিয়ে এলো এবং তাকে কেটে পথিকের জন্য রান্না করলো।”
5 দায়ূদ ধনী লোকটির ওপর ভীষণ রেগে গেলেন। তিনি নাথনকে বললেন, “এ কথা জীবন্ত প্রভুর মতই সত্য যে, যে লোক এ কাজ করেছে সে অবশ্যই মারা যাবে। 6 তাকে ঐ মেষের মূল্যের চারগুণ বেশী দিতে হবে কারণ সে এমন ভয়াবহ কাজ করেছে এবং তার কোন করুণা ছিল না।”
নাথন দায়ূদকে তার পাপকর্মের কথা বললেন
7 নাথন দায়ূদকে বললেন, “তুমিই সেই ধনী ব্যক্তি। প্রভু ইস্রায়েলের ঈশ্বর এই কথাই বলেন, ‘আমি তোমাকে ইস্রায়েলের রাজারূপে মনোনীত করেছি। আমি তোমাকে শৌলের হাত থেকে রক্ষা করেছি। 8 আমিই তোমাকে তার পরিবার এবং স্ত্রীগণকে দিয়েছি। এবং আমি তোমাকে ইস্রায়েল এবং যিহূদার রাজা করেছিলাম। তাও যেন যথেষ্ট ছিল না, আমি তোমাকে আরো আরো অনেক কিছু দিয়েছি। 9 কিন্তু কেন তুমি প্রভুর আদেশ অমান্য করলে? কেন তুমি সেই কাজ করলে যা তিনি (ঈশ্বর) গর্হিত বলে ঘোষণা করেছেন? তুমি হিত্তীয় ঊরিয়কে অম্মোনদের দ্বারা হত্যা করালে এবং তার স্ত্রীকে ছিনিয়ে নিলে। এইভাবে তুমি তরবারির দ্বারা ঊরিয়কে হত্যা করালে। 10 এই কারণে তোমার পরিবারও তরবারি থেকে রক্ষা পাবে না। তুমি ঊরিয় হিত্তীয়ের স্ত্রীকে তোমার স্ত্রী করার জন্য নিয়ে এসেছ। এইভাবে তুমি বুঝিয়ে দিয়েছ যে তুমি আমায় ঘৃণা করেছ।’
11 “প্রভু এ কথাই বলেন: ‘আমি তোমাকে সমস্যায় ফেলব। এই সমস্যা তোমার নিজের পরিবার থেকেই আসবে। আমি তোমার স্ত্রীদের তোমার কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে যাবো এবং তোমারই ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের একজনকে দিয়ে দেব। সে তাদের সঙ্গে শয়ন করবে এবং প্রত্যেকে তা দিনের আলোর মত জানতে পারবে। 12 তুমি বৎশেবার সঙ্গে গোপনে শয়ন করেছিলে। কিন্তু আমি তোমাকে এমন শাস্তি দেব যাতে সব ইস্রায়েলীয় তা জানতে পারে।’”[a]
13 তখন দায়ূদ নাথনকে বললেন, “আমি প্রভুর বিরুদ্ধে পাপ করেছি।”
নাথন দায়ূদকে বললেন, “এই পাপের জন্যও প্রভু তোমায় ক্ষমা করে দেবেন। তুমি মরবে না। 14 কিন্তু তুমি এমন কাজ করেছ যাতে প্রভুর বিরোধীরা তাঁর ওপর থেকে শ্রদ্ধা হারিয়েছে। তাই তোমার শিশু সন্তান মারা যাবে।”
দায়ূদ ও বৎশেবার সন্তান মারা গেল
15 তারপর নাথন বাড়ী চলে গেলেন। দায়ূদ এবং বৎশেবার যে শিশুপুত্র জন্মেছিল, প্রভু তাকে অসুস্থ করলেন। 16 শিশু সন্তানটির জন্য দায়ূদ ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করলেন। দায়ূদ খাওয়া দাওয়া ত্যাগ করলেন। তিনি ঘরের ভিতরে গিয়ে সারারাত সেখানে থাকলেন। সারারাত তিনি মেঝেতে শুয়ে কাটালেন।
17 দায়ূদের পরিবারের লোকরা এসে তাঁকে মেঝে থেকে ওঠানোর চেষ্টা করল। তিনি সেই সব নেতাদের সঙ্গে খাবার খেতে অস্বীকার করলেন। 18 সপ্তম দিনে, শিশুটি মারা গেল। শিশুটি যে মারা গেছে এ কথা দায়ূদের ভৃত্যরা দায়ূদকে বলতে ভয় পেল। তারা বলল, “দেখ, শিশুটি যখন বেঁচেছিল তখন আমরা দায়ূদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেছিলাম। তিনি কিন্তু আমাদের কথা শুনতে চান নি। যদি আমরা বলি যে শিশুটি মারা গেছে, হয়তো তিনি নিজের ক্ষতি করবেন।”
19 দায়ূদ তাঁর ভৃত্যদের ফিসফিস করে কথা বলতে দেখলেন। তখন তিনি বুঝতে পারলেন শিশুটি মারা গেছে। দায়ূদ তাঁর ভৃত্যদের জিজ্ঞাসা করলেন, “শিশুটি কি মারা গেছে?”
ভৃত্যরা উত্তর দিল, “হ্যাঁ, সে মারা গেছে।”
20 তখন দায়ূদ মেঝে থেকে উঠে পড়লেন। তিনি স্নান করলেন। জামাকাপড় বদল করে, অন্য কাপড় পরলেন। প্রভুর উপাসনার জন্য তিনি প্রভুর ঘরে গেলেন। তারপর তিনি বাড়ী গেলেন এবং কিছু খাবার চাইলেন। তাঁর ভৃত্যরা তাঁকে কিছু খাবার এনে দিল এবং তিনি খেলেন।
21 দায়ূদের দাসরা তাঁকে বলল, “কেন আপনি এইসব কাজ করছেন? শিশুটি যখন বেঁচেছিল তখন আপনি কিছু খেলেন না। আপনি কাঁদলেন। কিন্তু শিশুটি মারা যেতে আপনি উঠলেন এবং খাবার খেলেন।”
22 দায়ূদ বলল, “শিশুটি যখন বেঁচেছিল তখন আমি আহার ত্যাগ করেছিলাম এবং কেঁদেছিলাম কারণ আমি ভেবেছিলাম, ‘কে বলতে পারে? হয়তো প্রভু আমার প্রতি করুণা করবেন এবং শিশুটিকে বাঁচতে দেবেন।’ 23 কিন্তু এখন তো শিশুটি মৃত। তাই আমি কি আহার ত্যাগ করব? আমি কি শিশুটিকে আর ফিরে পাবো? না! একদিন আমি তার সঙ্গে মিলিত হব, কিন্তু সে আমার কাছে ফিরে আসতে পারে না।”
শলোমনের জন্ম হল
24 দায়ূদ তাঁর স্ত্রী বৎশেবাকে সান্ত্বনা দিলেন। তিনি তাঁর সঙ্গে শুলেন এবং মিলিত হলেন। বৎশেবা পুনর্বার গর্ভবতী হলেন। তাঁর আর একটি সন্তান হল। দায়ূদ তার নাম রাখলেন শলোমন। 25 প্রভু ভাববাদী নাথনের মারফৎ তাঁর বার্তা পাঠালেন। নাথন শলোমনের নাম রাখলেন যিদীদীয়। প্রভুর জন্যেই নাথন এই কাজ করলেন।
দায়ূদ রব্বা অধিকার করলেন
26 রব্বা অম্মোনদের রাজধানী শহর ছিল। যোয়াব রব্বার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে তা দখল করেন। 27 যোয়াব দায়ূদের কাছে বার্তাবাহক পাঠালেন এবং বললেন, “আমি রব্বার জলের শহরটি যুদ্ধ করে জয় করেছি। 28 এখন অন্যান্য লোকদের পাঠিয়ে এই শহর আক্রমণ করুন। আমি অধিকার করবার আগেই আপনাকে এই শহর দখল করতে হবে। যদি আমি এই শহর দখল করি তবে এই শহর আমার নামে পরিচিত হবে।”
29 তখন দায়ূদ সব লোকদের একসঙ্গে জড়ো করলেন এবং রব্বার উদ্দেশ্যে রওনা হলেন। তিনি রব্বার বিরুদ্ধে লড়াই করলেন এবং রব্বা শহর দখল করলেন। 30 দায়ূদ তাদের রাজার মাথা[b] থেকে মুকুট কেড়ে নিলেন। মুকুটটিতে প্রায় 75 পাউণ্ড সোনা ছিল। মুকুটটিতে অনেক মূল্যবান মনিমুক্তো ছিল। তারা সেই মুকুট দায়ূদের মাথায় পরিয়ে দিল। সেই শহর থেকে দায়ূদ অনেক মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে এসেছিলেন।
31 দায়ূদ রব্বার লোকদেরও বার করে আনেন এবং তাদের দিয়ে করাত, গাঁইতি ও কুড়ুল দিয়ে কাজ করিয়েছিলেন। তিনি তাদের ইঁট দিয়ে গাঁথুনির কাজ করতে বাধ্য করেছিলেন। অম্মোনদের শহরগুলোর সকলের সঙ্গে দায়ূদ এই একই রকম কাজ করেছিলেন। তারপর দায়ূদ এবং তাঁর সব সৈন্যসামন্ত জেরুশালেমে ফিরে গিয়েছিল।
5 আমরা জানি পৃথিবীতে আমরা তাঁবুর মত যে বাড়িতে বাস করি তা যদি নষ্ট হয়ে যায় তবে আমাদের একটি ঈশ্বরদত্ত বাড়ি আছে, যে বাড়ি মানুষের তৈরী নয়, স্বর্গে সে বাড়ি চিরকাল ধরেই আছে। 2 বাস্তবিক আমরা এই তাঁবুতে থাকতে থাকতে কাতরভাবে আর্তনাদ করছি। আমরা মনেপ্রাণে কামনা করছি যে আমাদের স্বর্গীয় আবাস দিয়ে আমাদের ঢেকে দেওয়া হোক্। 3 কারণ আমরা বিশ্বাস করি যে এই পোশাক পরবার পর দেখা যাবে যে আমরা উলঙ্গ নই। 4 বাস্তবে আমরা এই দেহের মধ্যে থেকে ভারাক্রান্ত হওয়াতে আর্তনাদ করছি। আমাদের বর্তমান (দেহরূপ) পোশাকটি ত্যাগ করার ইচ্ছা আমাদের নেই; বরং আমরা চাই যে নতুন (স্বর্গীয় দেহরূপ) পোশাকটি পুরাতনের ওপর পরি যাতে নশ্বর জীবন আবৃত হয়ে যায়। 5 আর এর জন্য ঈশ্বর আমাদের প্রস্তুত করেছেন। এইজন্য তিনি পবিত্র আত্মাকে আমাদের কাছে জামিনস্বরূপ পাঠিয়েছেন।
6 আমাদের মনে সর্বদা ভরসা আছে; আমরা জানি যতদিন এই দেহের ঘরে বাস করব ততদিন আমরা প্রভুর কাছ থেকে দূরে থাকব। 7 আমরা বিশ্বাসের দ্বারা চলি, বাইরের দৃশ্যের দ্বারা নয়। 8 তাই আমি বলি যে আমাদের নিশ্চিত ভরসা আছে এবং বাস্তবিক আমরা এই দেহ ত্যাগ করে, আমাদের প্রকৃত আবাস প্রভুর কাছে থাকাই ভাল মনে করি। 9 আমাদের লক্ষ্য এই যে আমরা এই দেহের ঘরে বাস করি বা না করি, আমরা যেন ঈশ্বরকে সন্তুষ্ট করে চলি। 10 কারণ আমাদের সকলকে খ্রীষ্টের বিচারাসনের সামনে দাঁড়াতে হবে; আর এই নশ্বর দেহে বাস করার সময় আমরা ভাল বা মন্দ যা কিছু করেছি তার উপযুক্ত প্রতিদান আমাদের প্রত্যেককে দেওয়া হবে।
ঈশ্বরের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন
11 তাই প্রভুর ভয় কি, তা জানাতে পেরে আমরা প্রত্যেক মানুষকে বোঝাচ্ছি যেন তারা আমাদের কথায় বিশ্বাস করে। ঈশ্বর আমাদের অন্তরের কথা সুস্পষ্টভাবে জানেন; আর আমি আশাকরি তোমরাও আমাদের অন্তরের কথা জান। 12 আমরা আবার তোমাদের কাছে নিজেদের যোগ্য পাত্র বলে প্রমাণ দিতে চাইছি না, কিন্তু আমাদের জন্য গর্ব করার সুযোগ তোমাদের দিচ্ছি; উদ্দেশ্য এই যারা কোন ব্যক্তির হৃদয়ের কথা বিবেচনা না করে দৃশ্যমান বিষয়গুলি নিয়ে গর্ব করে, এইসব লোকদের যেন তোমরা উচিত জবাব দিতে পার। 13 যদি আমরা হতবুদ্ধি হয়ে থাকি তবে তা ঈশ্বরের জন্য এবং যদি আমাদের বিচার বুদ্ধি ঠিক থাকে তবে তা তোমাদের জন্য। 14 খ্রীষ্টের ভালবাসা আমাদের নিয়ন্ত্রিত করে, কারণ আমরা নিশ্চিতভাবে বুঝেছি তিনি (খ্রীষ্ট) সকলের জন্য মৃত্যুবরণ করলেন, তাতে সকলেরই মৃত্যু হল। 15 খ্রীষ্ট সকলের জন্য মৃত্যুবরণ করলেন। তাই যারা জীবন পেল, তারা আর নিজেদের উদ্দেশ্যে নয়, বরং যিনি তাদের জন্য মৃত্যুবরণ করেছিলেন ও পুনরুত্থিত হয়েছেন, তাঁরই উদ্দেশ্যে যেন জীবনযাপন করে।
16 তাই এখন থেকে আমরা আর কাউকেই জাগতিক দৃষ্টিভঙ্গী দিয়ে বিচার করি না। যদিও আগে খ্রীষ্টকে আমরা জাগতিক দৃষ্টিভঙ্গী দিয়েই বিচার করেছি তবু এখন আর তা করি না। 17 সুতরাং কেউ যদি খ্রীষ্টের সঙ্গে মিলিত হয়, তবে সে এক নতুন সৃষ্টি হয়ে ওঠে, তার জীবনের পুরানো বিষয়গুলি অতীত হয়ে যায়; দেখ, তার সবই এখন নতুন হয়ে উঠেছে। 18 সমস্ত কিছুই ঈশ্বর থেকে এসেছে, যিনি খ্রীষ্টের মাধ্যমে নিজের সাথে আমাদের পুনর্মিলিত করেছেন এবং অন্যদের তাঁর সঙ্গে আবার মিলন করিয়ে দেওয়ার কাজ আমাদের দিয়েছেন। 19 যেমন বলা হয়ে থাকে: ঈশ্বর খ্রীষ্টের মাধ্যমে জগতকে পুনরায় তাঁর নিজের সঙ্গে মিলিত করার কাজ করছিলেন। তিনি খ্রীষ্টে মানুষের সকল পাপকে পাপ বলে গন্য না করে মিলনের বার্তা জানাবার ভার আমাদের দিয়েছেন। 20 খ্রীষ্টের হয়েই আমরা কথা বলেছি। খ্রীষ্টের হয়ে কথা বলতে আমাদের পাঠানো হয়েছে, এইভাবে আমাদের মাধ্যমে ঈশ্বর লোকদের ডাকছেন। আমরা খ্রীষ্টের হয়ে তোমাদের অনুরোধ করছি, তোমরা ঈশ্বরের সাথে মিলিত হও। 21 খ্রীষ্ট কোন পাপ করেন নি; কিন্তু ঈশ্বর খ্রীষ্টের ওপর আমাদের পাপের সব দোষ চাপিয়ে দিয়েছেন, যেন খ্রীষ্টের মধ্যে ঈশ্বরের সঙ্গে আমাদের সুসম্পর্ক স্থাপিত হয়।
19 ঈশ্বর আমায় বললেন, “ইস্রায়েলের নেতাদের সম্বন্ধে তুমি অবশ্যই এই শোকের গান গাইবে।
2 “‘তোমার মা যেন সিংহদের
মাঝে শুয়ে থাকা এক সিংহী।
সে যুব সিংহদের মাঝে শুতে গেল
আর অনেক শাবকের মা হল।
3 তার এক শাবক উঠে দাঁড়াল,
সে হয়ে উঠল এক শক্ত সমর্থ যুব সিংহ।
সে তার খাবার শিকার করতে শিখে গেল।
সে একটি লোককে মারল এবং তাকে খেল।
4 “‘লোকে তার গর্জন শুনল
এবং তাকে একটি খাঁচায় ভরল।
তারা যুব সিংহটির নাকে একটি আংটা পরাল
এবং তাকে মিশরে নিয়ে গেল।
5 “‘মা সিংহীর আশা ছিল যে তার শাবক নেতা হয়ে উঠবে।
কিন্তু এখন সে তার সব আশা হারিয়ে ফেলেছে।
তাই সে তার শাবকগুলি থেকে আরেকটি শাবককে নিল।
তাকে সিংহ হবার প্রশিক্ষণ দিল।
6 সে পূর্ণাঙ্গ সিংহদের সঙ্গে শিকারে গেল।
সে একটি শক্তিশালী যুব সিংহ হয়ে উঠল।
সে শিকার ধরতে শিখল
এবং একটি লোককে খেল।
7 তারপর রাজবাটীগুলো আক্রমণ করল।
সে শহরগুলি ধ্বংস করল।
ঐ দেশের প্রত্যেকে কথা বলতে ভয় পেত,
যখন তারা তার গর্জন শুনত।
8 তারপর তার চার ধারের লোকরা তার জন্য একটি ফাঁদ পাতল
এবং তারা তাদের ফাঁদে তাকে ধরল।
9 তাকে আংটা পরাল এবং তালা বন্ধ করে রাখল।
তারা তাকে তাদের ফাঁদে আটকাল।
তাই তারা তাকে বাবিল রাজার কাছে নিয়ে গেল
এবং তাকে সেখানে রেখে দিল যাতে ইস্রায়েলের কোন পর্বতে
তার গর্জন শুনতে না পাওয়া যায়।
10 “‘তোমার মা একটি দ্রাক্ষালতার মতো,
যা জলের কাছে রোপিত।
তার কাছে ছিল অনেক জল।
তাই সে অনেক সবল দ্রাক্ষালতা জন্মাতে পেরেছিল।
11 তারপর সে বড় বড় শাখাসমূহ জন্মালো।
তারা ছিল চলার ছড়ির মত শক্ত।
তারা ছিল রাজদণ্ডের মত।
দ্রাক্ষালতা ক্রমেই বেড়ে উঠতে লাগল।
তার অনেক শাখা-প্রশাখা ছিল এবং তারা মেঘ পর্যন্ত পৌঁছে গেল।
12 কিন্তু রাগে দ্রাক্ষা-লতাটিকে শিকড় সমেত উপড়ে ফেলা হল।
এবং মাটিতে ফেলে দেওয়া হল।
পূর্বীয় উষ্ণবায়ু তার ওপর বয়ে গেল এবং তার ফল শুকিয়ে গেল।
যখন সবল শাখাগুলো ভেঙে গেল তাদের আগুনে ফেলে দেওয়া হল।
13 “‘এখন সেই দ্রাক্ষালতা রোপিত হয়েছে মরুভূমিতে।
সেটি একটি অত্যন্ত শুষ্ক ও তৃষ্ণার্ত ভূমি।
14 বিরাট শাখাগুলিতে আগুন লাগল এবং তা ছড়িয়ে গেল
এবং অন্যান্য শাখাগুলিকে ও ফলগুলিকে ধ্বংস করল।
তাই সেখানে রইল না কোন শক্ত হাঁটার ছড়ি।
সেখানে রইল না কোন রাজদণ্ড।’
এটি ছিল মৃত্যু নিয়ে এক শোক গাথা আর তা শোকের মত করে গাওয়া হল।”
সঙ্গীত পরিচালকের প্রতি: দায়ূদের একটি গীত।
64 ঈশ্বর, আমার কথা শুনুন।
আমার শত্রু আমায় শাসাচ্ছে। আমাকে তার হাত থেকে রক্ষা করুন!
2 শত্রুর গোপন চক্রান্ত থেকে আমায় রক্ষা করুন।
ঐ মন্দ লোকেদের কাছ থেকে আমায় লুকিয়ে রাখুন।
3 ওরা আমার সম্পর্কে খারাপ ও মিথ্যা কথা বলেছে।
ওদের জিভ তীক্ষ্ণ তরবারির মত, ওদের তিক্ত কথা যেন বিভক্ত তীরের মত।
4 ওদের গোপন ডেরা থেকে ওরা নির্ভয়ে
এবং অতর্কিতে সরল ও সৎ মানুষদের দিকে তীর ছোঁড়ে।
5 মন্দ কাজে ওরা একে অন্যকে উৎসাহিত করে।
ওরা ওদের ফাঁদ পাতার কথাবার্তা বলে, ওরা একে অন্যকে বলে, “কেউ এই ফাঁদ দেখতে পাবে না!”
6 ওরা ওদের ফাঁদ লুকিয়ে রেখেছে।
ওরা জীবন্ত বলিসমূহের সন্ধানে আছে।
মানুষ খুব চতুর হতে পারে, তাই ওরা কি ফন্দি করছে তা জানা মুস্কিল।
7 কিন্তু ঈশ্বরও ওদের দিকে “তীর” নিক্ষেপ করতে পারেন!
এটা জানতে পারার আগেই দুষ্ট লোকরা জখম হয়ে যাবে।
8 মন্দ লোকরা অন্য লোকের খারাপ করারই চিন্তা করে।
কিন্তু ঈশ্বর ওদের দুষ্ট পরিকল্পনা ভেস্তে দিতে পারেন এবং ঐ কু-পরিকল্পনা ওদের ওপরেই ঘটাতে পারেন।
তখন যারাই ওদের দেখবে
তারা বিস্ময়ে অভিভূত হয়ে মাথা নাড়াবে।
9 লোকরা দেখবে ঈশ্বর কি করেছেন।
তাঁর সম্পর্কে তারা অন্য লোকদের বলবে।
তখন প্রত্যেকে ঈশ্বর সম্পর্কে আরও বেশী জানতে পারবে।
ওরা তাঁকে ভয় ও শ্রদ্ধা করতে শিখবে।
10 একজন ভালো লোক আনন্দের সঙ্গে প্রভুর সেবা করে
এবং তাঁর ওপর নির্ভর করে।
একজন ভাল ও সৎ লোক ঈশ্বরকে তার অন্তর থেকে প্রশংসা করে।
সঙ্গীত পরিচালকের প্রতি: দায়ূদের একটি প্রশংসা গীত।
65 সিয়োনে বিরাজমান হে ঈশ্বর, আমি আপনার প্রশংসা করি।
আপনাকে যা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম, তা আমি দিয়েছি।
2 আপনি যে সব কাজ করেছেন সে সম্পর্কে আমরা বলে থাকি।
আপনিও আমাদের প্রার্থনা শুনেছেন।
যারা আপনার কাছে আসে, তাদের প্রত্যেকের প্রার্থনা আপনি শোনেন।
3 যখন আমাদের পাপের ভার অতিরিক্ত বেড়ে যায়,
তখন আপনি সেই পাপ ভার লাঘব করেন।
4 ঈশ্বর, আপনিই আপনার লোকদের মনোনীত করেন।
আপনার মন্দিরে এসে আপনার উপাসনা করার জন্য আপনিই আমাদের মনোনীত করেছেন।
আপনার মন্দিরে, আপনার পবিত্র প্রাসাদে,
যে সব মনোরম জিনিস আছে, তাই দিয়ে আমরা সন্তুষ্ট হব!
5 ঈশ্বর আপনি আমাদের রক্ষা করেন।
ভালো লোকরা আপনার কাছে প্রার্থনা করে এবং আপনি তাদের প্রার্থনার উত্তর দেন।
তাদের জন্য আপনি আশ্চর্য কার্য করেন।
সারা পৃথিবীতে লোকরা আপনাতে আস্থা রাখে।
6 ঈশ্বর তাঁর শক্তি দিয়ে পর্বত সৃষ্টি করেছেন।
আমাদের চারপাশে আমরা তাঁর শক্তিকে দেখতে পাই।
7 উত্তাল সমুদ্রকে ঈশ্বর শান্ত করেছেন।
ঈশ্বরই পৃথিবীতে “জনসমুদ্রসমূহ” সৃষ্টি করেছেন।
8 আপনি যেসব বিস্ময়কর জিনিস করেন, তাতে সারা পৃথিবীর লোক বিস্ময়-বিহ্বল হয়েছে।
সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত আমাদের প্রচণ্ড সুখী করে!
9 আপনিই জমির যত্ন নেন।
আপনিই জমিতে সেচ দেন এবং তাতে ফসল ফলান।
হে ঈশ্বর, আপনিই সেই জন, যিনি নদী ও খালগুলি জলে ভরে দিয়েছেন
এবং ফসল ফলাতে সাহায্য করেছেন।
10 হাল দেওয়া জমিতে আপনিই বৃষ্টি ঝরান।
আপনিই জমিকে জল দিয়ে সিক্ত করেন।
আপনিই বৃষ্টির জল দিয়ে জমিকে নরম করেন
এবং আপনিই কচি চারা জন্মাতে দেন।
11 আপনি ভালো ফসল দিয়ে নতুন বছর শুরু করেন।
আপনি বিভিন্ন ফসল দিয়ে গাড়ীগুলি ভরে দেন।
12 পাহাড় ও মরুভূমি ঘাসে আচ্ছাদিত হয়ে আছে।
13 চারণ ভূমিগুলো মেষে ভরে রয়েছে।
উপত্যকাগুলো ফসলে পরিপূর্ণ হয়েছে।
প্রত্যেকটি মানুষ আনন্দে ধ্বনি দিচ্ছে এবং গান গাইছে।
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International