M’Cheyne Bible Reading Plan
দায়ূদ বৎশেবার সঙ্গে মিলিত হলেন
11 বসন্তের সময়, যখন রাজারা যুদ্ধে যান, তখন দায়ূদ যোয়াব, তাঁর আধিকারিকদের এবং সমস্ত ইস্রায়েলীয় সৈন্যদের অম্মোনীয়দের ধ্বংস করতে পাঠালেন। যোয়াবের সৈন্যরা অম্মোনদের রাজধানী শহর রব্বাও আক্রমণ করল।
কিন্তু দায়ূদ জেরুশালেমেই রইলেন। 2 সন্ধ্যায়, তিনি বিছানা ছেড়ে উঠলেন এবং রাজবাড়ীর ছাদে পায়চারি করতে লাগলেন। দায়ূদ যখন ছাদে পায়চারি করছিলেন, তখন তিনি এক মহিলাকে স্নান করতে দেখলেন। সেই মহিলা ছিল পরমা সুন্দরী। 3 দায়ূদ তাঁর আধিকারিককে ঐ মহিলাটির সম্বন্ধে খোঁজ নিতে পাঠালেন। এক আধিকারিক উত্তর দিল, “মেয়েটি ইলিয়ামের কন্যা বৎশেবা। সে হিত্তীয় ঊরিয়ের স্ত্রী।”
4 দায়ূদ লোক পাঠিয়ে বৎশেবাকে তাঁর কাছে আনলেন। যখন বৎশেবা দায়ূদের কাছে এল, দায়ূদ তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হলেন। বৎশেবা স্নান করে বাড়ী ফিরে গেল। 5 বৎশেবা গর্ভবতী হল। সে দায়ূদকে জানালো, “আমি গর্ভবতী।”
দায়ূদ তাঁর পাপ লুকোতে চাইলেন
6 দায়ূদ যোয়াবের কাছে খবর পাঠালেন, “হিত্তীয় ঊরিয়কে আমার কাছে পাঠিয়ে দাও।”
যোয়াব ঊরিয়কে দায়ূদের কাছে পাঠিয়ে দিল। 7 ঊরিয় দায়ূদের কাছে এল। দায়ূদ ঊরিয়কে জিজ্ঞাসা করলেন, “যোয়াব কেমন আছে।” সৈনিকরা কেমন আছে এবং যুদ্ধ কেমন হল ইত্যাদি। 8 তারপর দায়ূদ ঊরিয়কে বললেন, “বাড়ী গিয়ে বিশ্রাম কর।”
ঊরিয় রাজার বাড়ী থেকে চলে গেল। রাজা (দায়ূদ) ঊরিয়ের জন্য উপহার পাঠালেন। 9 কিন্তু ঊরিয় বাড়ী গেল না। ঊরিয় রাজবাড়ীর দরজার সামনে ঘুমিয়ে পড়লো। রাজার ভৃত্যের মতই সে সেখানে ঘুমালো। 10 এক দাস দায়ূদকে খবর দিল, “ঊরিয় বাড়ী যায় নি।”
দায়ূদ ঊরিয়কে বললেন, “তুমি দীর্ঘ সফর থেকে ফিরে এসেছ। কেন তুমি বাড়ীতে গেলে না?”
11 ঊরিয় দায়ূদকে বলল, “পবিত্র সিন্দুকটি এবং ইস্রায়েল ও যিহূদার সৈন্যরা তাঁবুগুলিতে রয়েছে। আমার মনিব যোয়াব এবং আমার মনিবের (রাজা দায়ূদ) আধিকারিকরা শিবির গেড়ে মাঠে তাঁবু ফেলেছেন। সুতরাং আমার পক্ষে বাড়ী গিয়ে পান আহার করে স্ত্রীর সঙ্গে শয়ন করা ঠিক নয়।”
12 দায়ূদ ঊরিয়কে বললেন, “আজকের দিনটা এখানে থেকে যাও। কাল আমি তোমাকে যুদ্ধে ফেরৎ পাঠাব।” সেই দিন ঊরিয় জেরুশালেমে থেকে গেল। পরদিন সকাল পর্যন্ত সে জেরুশালেমে থাকল। 13 দায়ূদ ঊরিয়কে তাঁর সঙ্গে দেখা করার জন্য ডেকে পাঠালেন। ঊরিয় দায়ূদের সঙ্গে পানাহার করল। দায়ূদ ঊরিয়কে দ্রাক্ষারস পান করালেন। তবুও ঊরিয় বাড়ী গেল না। সেই সন্ধ্যায়, ঊরিয় রাজার ফটকের বাইরে রাজার অন্য ভৃত্যদের সঙ্গে ঘুমিয়েছিল।
দায়ূদ ঊরিয়ের মৃত্যুর পরিকল্পনা করলেন
14 পরদিন সকালে দায়ূদ যোয়াবকে একখানা চিঠি লিখলেন। দায়ূদ চিঠিটাকে ঊরিয়কে দিয়ে পাঠাবার ব্যবস্থা করলেন। 15 চিঠিতে দায়ূদ লিখেছিলেন, “ঊরিয়কে প্রথম সারির ঠিক সেইখানে দাঁড় করাবে যেখানে লড়াইটা কঠিনতম। তারপর ওকে একা ফেলে পালিয়ে আসবে এবং ওকে যুদ্ধ ক্ষেত্রেই মরতে দেবে।”
16 পরদিন যোয়াব সারা শহর ঘুরে দেখলেন কোথায় সব থেকে সাহসী ও শক্তিশালী অম্মোনীয়রা রয়েছে। সেইখানে যাবার জন্য তিনি ঊরিয়কে নির্বাচন করলেন। 17 রব্বা শহরের লোকরা যোয়াবের বিরুদ্ধে লড়াই করতে এল। দায়ূদের কিছু লোক মারা গেল। হিত্তীয় ঊরিয় তাদেরই মধ্যে একজন।
18 তারপর যোয়াব, যুদ্ধে কি হয়েছে সেই বিষয়ে দায়ূদকে সংবাদ দিলেন। 19 যুদ্ধে যা যা ঘটেছে তা দায়ূদকে বলার জন্য যোয়াব এক বার্তাবাহককে আদেশ করলেন। 20 “হয়তো বা রাজা ক্রুদ্ধ হবেন এবং জিজ্ঞাসা করবেন, ‘লড়াইয়ের জন্য যোয়াবের সেনারা শহরের অত কাছে কেন গেল? তিনি নিশ্চয়ই জানেন যে শহরের প্রাচীরের ওপরে ধনুর্ধররা আছে যারা তার লোকদের শরাঘাতে শুইয়ে দিতে পারে? 21 তাঁর নিশ্চয়ই স্মরণে আছে যে এক মহিলা যিরূব্বেশতের পুত্র অবীমেলককে হত্যা করেছিল। ঘটনাটি তেবেষে ঘটেছিল। মহিলাটি নগরীর প্রাচীরের ওপর থেকে অবীমেলকের ওপর একটা চাকীর ওপরের পাথর ফেলে দিয়েছিল। তাই কেন তারা প্রাচীরের অত কাছে গেল?’ যদি রাজা দায়ূদ ওই ধরণের কিছু বলেন তুমি অবশ্যই তাঁকে এই খবর দেবে: ‘আপনার লোক হিত্তীয় ঊরিয় মারা গেছে।’”
22 বার্তাবাহক দায়ূদের কাছে গেল এবং যোয়াব বার্তাবাহককে যা যা বলতে বলেছিলেন সে সব কিছুই দায়ূদকে বলল। 23 বার্তাবাহক দায়ূদকে বলল, “অম্মোনদের লোকরা যুদ্ধক্ষেত্রে আমাদের আক্রমণ করে। আমরা লড়াই করে, তাদের শহরের প্রবেশ দ্বার পর্যন্ত তাড়া করি। 24 তখন নগর প্রাচীরের ওপর থেকে বিপক্ষের লোকরা আপনার লোকদের ওপর তীর চালায়। এতে আপনার কিছু লোক মারা যায়। আপনার আধিকারিক হিত্তীয় ঊরিয় তাদের মধ্যে একজন।”
25 দায়ূদ বার্তাবাহককে বললেন, “যোয়াবকে গিয়ে বল, ‘এ নিয়ে অতিরিক্ত বিমর্ষ হয়ো না। একটা তরবারি একজনের পর আর একজনকে হত্যা করতে পারে। রাজাদের বিরুদ্ধে আরও জোরদার আক্রমণ চালাও—তোমাদের জয় হবেই।’ এই কথাগুলি বলে যোয়াবকে উৎসাহিত কর।”
দায়ূদ বৎশেবাকে বিয়ে করলেন
26 বৎশেবা তাঁর স্বামীর মৃত্যুর খবর পেলেন এবং তাঁর জন্য কাঁদলেন। 27 তাঁর দুঃখের দিন অতিক্রান্ত হলে, দায়ূদ তাঁকে তাঁর বাড়ীতে নিয়ে যাবার জন্য ভৃত্য পাঠালেন। তিনি দায়ূদের পত্নী হলেন এবং দায়ূদের জন্য একটা সন্তানের জন্ম দিলেন। কিন্তু দায়ূদের এই পাপ প্রভু পছন্দ করলেন না।
মাটির পাত্রে আত্মিক সম্পদ
4 ঈশ্বরের দয়ায় আমরা এই কাজের ভার পেয়েছি, তাই আমরা কখনও নিরাশ হই না; 2 বরং আমরা লজ্জাজনক গোপন কাজ একেবারেই করি না। আমরা কোন চাতুরী করি না, ঈশ্বরের শিক্ষাকে বিকৃত করি না; বরং যা সত্য তা স্পষ্টভাবে বলে ঈশ্বরের সামনে ও প্রতিটি মানুষের বিবেকের কাছে আমাদের সততা প্রকাশ করি। 3 কিন্তু আমরা যে সুসমাচার প্রচার করি তা যদি ঢাকা থাকে, তবে যারা ধ্বংসের পথে চলেছে তাদের কাছেই ঢাকা থেকে যায়। 4 এই যুগের দেবতা অবিশ্বাসীদের মন অন্ধ করেছে, যাতে ঈশ্বরের প্রতিমূর্ত্তি যে খ্রীষ্ট, তাঁর মহিমার সুসমাচারের আলো তারা দেখতে না পায়। 5 আমরা নিজেদের কথা প্রচার করি না, বরং যীশু খ্রীষ্টকে প্রভু বলে প্রচার করছি এবং আমরা যীশুর অনুসারী বলেই নিজেদের যীশুর সেবক বলে দেখিয়ে থাকি। 6 কারণ যে ঈশ্বর বলেছিলেন, “অন্ধকারের মধ্যে থেকে আলোর উদয় হবে!” সেই তিনিই আমাদের অন্তরে ঈশ্বরের জ্ঞানের আলোর মহিমা প্রজ্জ্বলিত করেছিলেন, যে আলো খ্রীষ্টের মুখমণ্ডলেই প্রকাশিত রয়েছে।
7 কিন্তু এই সম্পদ আমরা মাটির পাত্রে অর্থাৎ এই মরণশীল দেহে ধারণ করছি, যাতে বুঝতে পারা যায় যে এই মহাপরাক্রম ঈশ্বরের কাছ থেকেই এসেছে, আমাদের নিজেদের কাছ থেকে আসে নি। 8 আমরা সবদিক দিয়েই নানা কষ্টদায়ক চাপের মধ্যে রয়েছি, কিন্তু ভেঙে পড়ি নি। আমরা জানি না কি করব, অথচ হাল ছেড়ে দিই না। 9 আমরা অত্যাচারিত হলেও ঈশ্বর কখনও আমাদের ছেড়ে দেন না। আমাদের মেরে ধরাশায়ী করে দিলেও আমরা ধ্বংস হচ্ছি না। 10 আমরা সবসময় যীশুর মতোই এই দেহে মৃত্যুর মুখোমুখি হচ্ছি, যাতে যীশুর জীবনও আমাদের মর্ত্য দেহে প্রকাশ পায়। 11 আমরা যারা বেঁচে আছি আমাদের সবসময় যীশুর জন্য মৃত্যুর হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে, যেন আমাদের মর্ত্য দেহে যীশুর জীবনও প্রকাশ পায়। 12 এইভাবে আমাদের মধ্যে মৃত্যু এবং তোমাদের মধ্যে জীবন কাজ করে চলেছে।
13 কিন্তু সেই বিশ্বাসের একই আত্মা আমাদের মধ্যে আছে। শাস্ত্রে যেমন লেখা আছে, “আমি বিশ্বাস করেছি বলেই কথা বলেছি।”(A) তেমনি আমরা বিশ্বাস করেছি বলেই কথা বলছি। 14 কারণ আমরা জানি, ঈশ্বর প্রভু, যিনি যীশুকে পুনরুত্থিত করেছেন, তিনি যীশুর সঙ্গে আমাদেরও জীবিত করে তুলবেন এবং তোমাদের সঙ্গে আমাদের (খ্রীষ্টের কাছে) উপস্থিত করবেন। 15 সব কিছুই তোমাদের জন্য ঘটেছে। এর ফলে অনেকে ঈশ্বরের অনুগ্রহ পাবে যাতে অনেকে ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দেয় যাতে তিনি গৌরবান্বিত হন।
বিশ্বাসে জীবন কাটানো
16 এইজন্য আমরা হতাশ হই না, কারণ যদিও আমাদের এই দেহ বিনাশপ্রাপ্ত হতে থাকছে তবু আমাদের অন্তরাত্মা দিনে দিনে নতুন হয়ে উঠছে। 17 বস্তুত আমাদের এই দুঃখ কষ্ট সাময়িক মাত্র। সাময়িক এই কষ্টভোগ আমাদের জীবনে নিয়ে আসবে শ্রেষ্ঠ শাশ্বত মহিমা যা আমাদের দুঃখ কষ্টের সঙ্গে তুলনার যোগ্য নয়। 18 তাই যা দেখা যায় তার দিকে লক্ষ্য না করে বরং যা যা দৃশ্যের অতীত তার ওপরই আমরা দৃষ্টি নিবদ্ধ করি। যা যা দৃশ্যমান তা তো অল্পকালস্থায়ী: কিন্তু যা যা দৃশ্যাতীত তা চিরস্থায়ী।
18 প্রভুর বাক্য আমার কাছে এল। তিনি বললেন: 2 “তোমরা কেন ইস্রায়েল দেশটি সম্বন্ধে এই প্রবাদ বাক্য বল? তোমরা বলে থাক:
‘পিতামাতারা টক দ্রাক্ষা ফল খেয়েছিল,
কিন্তু তার ফলে সন্তানদের দাঁত টকেছে।’”
3 কিন্তু প্রভু আমার সদাপ্রভু বলেন, “আমার জীবনের দিব্য যে ইস্রায়েলের লোকরা আর এই প্রবাদ বাক্যকে সত্য বলে মানবে না। 4 প্রত্যেক জনের সঙ্গে আমি একই রকম ব্যবহার করব। সে ব্যক্তি পিতা হোক্ অথবা পুত্রই হোক্ না কেন। যে ব্যক্তি পাপ করে সে মারা যাবে।
5 “যদি কেউ সৎ হয় তবে সে বাঁচবে। সেই ভাল লোক বলতে তাকেই বোঝাবে যে প্রত্যেক ব্যক্তির সঙ্গে ন্যায্য আচরণ করবে। 6 প্রতিমাদের উদ্দেশ্যে উৎসর্গীকৃত খাদ্যের ভাগ পাবার জন্য সে পর্বতে যায় না। ইস্রায়েলের নোংরা মূর্ত্তিগুলোর কাছে সে প্রার্থনা করে না। প্রতিবেশীর স্ত্রীর সঙ্গে সে ব্যভিচার করে না। মাসিকের সময় সে তার স্ত্রীর সঙ্গে যৌন কাজে লিপ্ত হয় না। 7 সেই লোক অপরের অবস্থার সুযোগ নেয় না। কেউ ধার চাইলে সে বন্ধক নিয়ে তাকে ধার দেয়। আর ধার শোধ করলে তাকে সেই বন্ধক ফিরিয়ে দেয়। সে ক্ষুধার্তকে খাদ্য দেয়। বস্ত্রহীনকে বস্ত্র দেয়। 8 সে কাউকে টাকা ধার দিলে সুদ নেয় না। সেই সৎ লোক খল হতে অস্বীকার করে। প্রতিটি ব্যক্তির সঙ্গে সে ন্যায্য আচরণ করে। ন্যায্যভাবে ঝগড়াঝাঁটি মিটিয়ে দেবার জন্য লোকে তার উপর নির্ভর করতে পারে। 9 সে আমার বিধিগুলি পালন করে। আমার সিদ্ধান্তগুলি সে চিন্তা করবে এবং ন্যায্য ও নির্ভরযোগ্য হতে শিক্ষা করবে। সে সৎ লোক, তাই সে বাঁচবে।” প্রভু, আমার সদাপ্রভু এইগুলো বলেছেন।
10 “কিন্তু সেই সৎ লোকের কোন পুত্র থাকতে পারে যে ঐ সৎ কাজের কোনটিই করেনি। সে চোর বা নরঘাতক হতে পারে। 11 অথবা সেই পুত্র এই মন্দ কাজগুলির কোন একটি করতে পারে যেমন মূর্ত্তিদের উদ্দেশ্যে উৎসর্গীকৃত খাদ্য খেতে পর্বতে যাওয়া, প্রতিবেশীর স্ত্রীর সঙ্গে ব্যভিচারে লিপ্ত হওয়া, 12 গরীব অসহায় লোকের সঙ্গে অন্যায় ব্যবহার, অপরের অবস্থার সুযোগ নেওয়া, কেউ ধার শোধ করলে তার বন্ধক ফিরিয়ে না দেওয়া। সে মন্দ সন্তান নোংরা মূর্ত্তির কাছে প্রার্থনা জানাতে ও জঘন্য কাজ করতে পারে। 13 সেই দুষ্ট সন্তান সুদের লোভে ঋণ দিয়ে সুদ দিতে বাধ্য করতে পারে। সে ক্ষেত্রে সেই দুষ্ট পুত্র বাঁচবে না। সে জঘন্য কাজ করেছে বলে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হবে। এবং তার মৃত্যুর জন্য সেই দায়ী হবে।
14 “এখন সেই দুষ্ট লোকের কোন সন্তান থাকতে পারে যে পিতার মন্দ কাজ দেখে সেইভাবে জীবনযাপন করতে অস্বীকার করছে। সেই ভাল সন্তান হয়তো ন্যায্য ব্যবহার করে। 15 সে হয়তো মূর্ত্তিদের উদ্দেশ্যে উৎসর্গীকৃত বলির অংশ খেতে পর্বতে যায় না। প্রতিবেশীর স্ত্রীর সঙ্গে ব্যভিচারে লিপ্ত হয় না। 16 সেই ভাল সন্তান হয়তো অপরের অবস্থার সুযোগ নেয় না। বন্ধক দিয়ে ধার দেয় আবার ধার শোধ করলে বন্ধক ফিরিয়ে দেয়। সে হয়তো ক্ষুধার্ত লোককে খাদ্য দেয় এবং বস্ত্রহীনদের বস্ত্র দেয়। 17 সে হয়তো গরীবদের সাহায্য করে, কেউ ধার চাইলে তাকে ধার দেয় এবং সুদ চায় না, সে হয়তো আমার বিধিসকল পালন ও তার অনুধাবন করে। সেই উত্তম সস্তান তার পিতার পাপের জন্য মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত হবে না, সে বাঁচবে। 18 তার পিতা লোকদের আঘাত ও চুরি করে থাকতে পারে, আমাদের প্রজাদের প্রতি কোন মঙ্গলজনক কাজ না করে থাকতে পারে। সেই পিতা তার নিজের পাপের জন্যই মারা যাবে।
19 “তোমরা প্রশ্ন করতে পার, ‘কেন পিতার পাপের জন্য পুত্র মারা যাবে না?’ এর কারণ, সেই পুত্র সৎ জীবনযাপন করেছিল ও ভাল কাজ করেছিল। খুব সাবধানতাসহ সে আমার বিধিগুলি পালন করেছে তাই সে বাঁচবে। 20 যে ব্যক্তি পাপ করে কেবল সেই মারা যাবে। পুত্রকে তার পিতার পাপের জন্য শাস্তি ভোগ করতে হবে না; আবার পিতাকেও তার পুত্রের পাপের শাস্তি ভোগ করতে হবে না। ভাল লোকের ধার্মিকতা তার নিজের হাতে; তেমনই মন্দ লোকের মন্দতাও কেবল তারই অধিকারগত।
21 “এখন যদি কোন মন্দ লোক তার জীবন পরিবর্তন করে, তবে সে মরবে না, বরং বাঁচবে। সেই ব্যক্তি মন্দ কাজ থেকে বিরত হয়ে যত্ন সহকারে আমার বিধি পালন করা শুরু করে ন্যায়বান ও ভাল হয়ে উঠতে পারে। 22 সে ক্ষেত্রে ঈশ্বর তার কৃত মন্দ কাজগুলি মনে রাখবেন না। কেবল তার উত্তমতা স্মরণে রাখবেন আর তাই সেই ব্যক্তি বাঁচবে!”
23 প্রভু আমার সদাপ্রভু বলেন, “দুষ্ট লোকের মরণ হোক্ এ আমি চাই না। আমি চাই তারা যেন জীবন পরিবর্তন করে এবং বাঁচে।
24 “কিন্তু যদি কোন ভাল লোক ভাল হওয়া থেকে বিরত হয়ে দুষ্টলোকের মত আচরণ করে, অন্যায় করে, নানা ঘৃণিত কাজ করে তাহলে সে কি বাঁচবে? সে ক্ষেত্রে ঈশ্বর তার পূর্বের সৎকাজগুলি স্মরণে আনবেন না। সে যে সত্য লঙ্ঘন ও পাপ করেছে তার জন্যেই মারা যাবে।”
25 ঈশ্বর বলেন, “তোমরা যে বলে থাক, ‘প্রভু আমার সদাপ্রভু ন্যায়বান নন!’ কিন্তু হে ইস্রায়েল পরিবার শোন: আমিই ন্যায়বান, তোমরাই তারা যারা ন্যায়বান নও। 26 যদি কোন ভাল লোক পরিবর্তিত হয়ে দুষ্ট হয়ে ওঠে, তবে সে তার মন্দ কাজের জন্য অবশ্যই মারা যাবে। 27 আর যদি কোন দুষ্ট ব্যক্তি পরিবর্তিত হয়ে ভাল ও ন্যায়বান হয় তবে সে তার জীবন বাঁচাবে। সে বাঁচবে! 28 সেই ব্যক্তি নিজের মন্দতা দেখে বুঝে আমার কাছে ফিরে এসেছিল। সে অতীতে যে সব মন্দ কাজ করত তা আর করে না, তাই সে বাঁচবে, মরবে না।”
29 ইস্রায়েলের লোকরা বলে, “এটা ঠিক নয়! প্রভু আমাদের সদাপ্রভু ন্যায়বিচার করছেন না।”
ঈশ্বর বলেন, “আমিই ন্যায়বান! তোমরাই ন্যায়বিচার করছ না! 30 কারণ ইস্রায়েল পরিবার, আমি প্রত্যেক ব্যক্তিকে তার কর্মানুসারে বিচার করব।” প্রভু আমার সদাপ্রভু বলেন, “তাই আমার কাছে ফিরে এস, মন্দ কাজ আর করো না! ঐসব ভয়ঙ্কর মূর্ত্তি যেন তোমাদের পাপে না ফেলে। 31 তোমরা যে সব মন্দ জিনিষ করেছ তা ছুঁড়ে ফেলে দাও। তোমাদের হৃদয় ও আত্মার পরিবর্তন কর। হে ইস্রায়েলবাসীরা, কেন তোমরা নিজেদের মৃত্যু ডেকে আনবে? 32 আমি তোমাদের হত্যা করতে চাইনা। তোমরা ফিরে এসো, বাঁচো।” প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন।
সঙ্গীত পরিচালকের প্রতি: যিদূথূনের উদ্দেশ্যে দায়ূদের একটি গীত।
62 যাই ঘটুক না কেন, ঈশ্বর আমায় উদ্ধার করবেন এই আশায় আমার আত্মা ধৈর্য্য ধরে অপেক্ষা করছে।
আমার পরিত্রাণ একমাত্র তাঁর কাছ থেকেই আসবে।
2 হয়তো আমার অনেক শত্রু আছে, কিন্তু ঈশ্বরই আমার দুর্গ।
ঈশ্বর আমায় রক্ষা করেন।
উঁচু পর্বতে ঈশ্বরই আমার নিরাপদ আশ্রয়স্থল।
আমার মস্ত বড় শত্রুও আমায় পরাজিত করতে পারবে না।
3 কতক্ষণ তোমরা আমায় আক্রমণ করবে?
আমি একটা ঝুঁকে পড়া দেওয়ালের মত।
আমি একটা ভগ্ন প্রায় বেড়ার মত।
4 আমার গুরুত্ব থাকা সত্ত্বেও
ঐসব লোক আমার বিনাশের পরিকল্পনা করছে।
আমার সম্পর্কে মিথ্যা বলে ওরা আনন্দ পায়।
জনসমক্ষে ওরা আমার সম্পর্কে ভাল কথা বলে
কিন্তু গোপনে আমায় অভিশাপ দেয়।
5 আমাকে রক্ষা করবার জন্য আমার আত্মা ধৈর্য্য ধরে শুধুমাত্র ঈশ্বরের অপেক্ষা করছে!
ঈশ্বর আমার একমাত্র আশা।
6 ঈশ্বরই আমার দুর্গ। ঈশ্বরই আমায় রক্ষা করেন।
উঁচু পর্বতে ঈশ্বরই আমার নিরাপদ আশ্রয়স্থল।
7 আমার মহিমা ও জয় ঈশ্বরের কাছ থেকে আসে।
তিনিই আমার দৃঢ় দুর্গ, তিনিই আমার নিরাপদ আশ্রয়স্থল।
8 হে লোক সকল, সর্বদাই ঈশ্বরের ওপর বিশ্বাস রাখো।
তোমাদের সব সমস্যা ঈশ্বরকে বল।
ঈশ্বরই আমাদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল।
9 প্রকৃতপক্ষে লোকজন কোন সাহায্য করতে পারে না।
প্রকৃত সাহায্যের জন্য তোমরা ওদের ওপর নির্ভর করতে পারবে না।
ঈশ্বরের সঙ্গে তুলনা করলে,
ওরা একটি বাতাসের ফুত্কার ছাড়া আর বেশী কিছু নয়।
10 জোর করে কেড়ে নেওয়ার ব্যাপারে তোমার ক্ষমতার ওপর বিশ্বাস কর না।
একদম ভেবো না যে চুরি করে কিছু নিয়ে লাভবান হবে।
যদি তুমি ধনী হও,
তবে মোটেই বিশ্বাস করো না সম্পদ তোমায় সাহায্য করবে।
11 ঈশ্বর বলেন, একটাই মাত্র জিনিস আছে যার ওপর তুমি নির্ভর করতে পারো এবং আমি তা বিশ্বাস করি।
“একমাত্র ঈশ্বরের কাছ থেকেই শক্তি আসে!”
12 হে আমার প্রভু, আপনার ভালোবাসাই প্রকৃত ভালোবাসা।
লোকে যে কাজ করে তার জন্যই আপনি তাকে পুরস্কার বা শাস্তি দেন।
দায়ূদের একটি গীত: যখন থেকে তিনি যিহূদার মরুভূমিতে ছিলেন।
63 ঈশ্বর, আপনিই আমার ঈশ্বর।
আমি আপনাকে ভীষণভাবে চাই।
রৌদ্রদগ্ধ শুকনো জমির মত,
আমার দেহ ও আত্মা আপনার জন্য তৃষ্ণার্ত হয়ে রয়েছে।
2 হ্যাঁ, আপনার মন্দিরে আমি আপনাকে দেখেছি।
আপনার শক্তি এবং মহিমাও আমি দেখেছি।
3 আপনার ভালোবাসা জীবনের চেয়েও উত্তম।
আমার ওষ্ঠদ্বয় আপনারই প্রশংসা করে।
4 হ্যাঁ, আমার এ জীবনে আমি আপনারই প্রশংসা করবো।
আপনার পবিত্র নামে আমি দু-হাত তুলে প্রার্থনা করবো।
5 আমি এমনই সন্তুষ্ট হব যেন আমি সব থেকে সেরা খাবার খেয়েছি।
এবং আমার আনন্দপ্লুত মুখ দিয়ে আমি আপনারই প্রশংসা করবো।
6 যখন আমি বিছানায় শুতে যাবো তখন আমি আপনাকে স্মরণ করবো।
মধ্যরাত্রে আমি আপনার ধ্যান করব।
7 আপনি সত্যিই আমাকে সাহায্য করেছেন!
আপনি যখন আমায় সুরক্ষা দেন তখন আমি আনন্দোল্লাস করি!
8 আমার আত্মা আপনাকে জড়িয়ে ধরে থাকে।
আপনার ডান হাত আমাকে সহায়তা দেয়।
9 যারা আমায় মেরে ফেলতে ইচ্ছা করে ওরা সবাই ধ্বংসপ্রাপ্ত হবে।
ওরা ওদের কবরে তলিয়ে যাবে।
10 তরবারির দ্বারা ওদের মৃত্যু হবে।
বুনো কুকুর ওদের মৃতদেহ ছিঁড়ে খাবে।
11 কিন্তু রাজা দায়ূদ তাঁর ঈশ্বরকে নিয়েই সুখী হবে
এবং যারা তাঁকে মান্য করে তারাই ঈশ্বরের প্রশংসা করবে কারণ তিনি সব মিথ্যাবাদীকে পরাজিত করেছেন।
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International