Print Page Options
Previous Prev Day Next DayNext

M’Cheyne Bible Reading Plan

The classic M'Cheyne plan--read the Old Testament, New Testament, and Psalms or Gospels every day.
Duration: 365 days
Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)
Version
2 শমূয়েল 2

দায়ূদ ও তাঁর সঙ্গীরা হিব্রোণে গেলেন

পরে দায়ূদ প্রভুর কাছ থেকে উপদেশ চাইলেন। দায়ূদ জিজ্ঞাসা করলেন, “আমি কি যিহূদার শহরগুলির কোন একটির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করব?”

প্রভু দায়ূদকে বললেন, “হ্যাঁ।”

দায়ূদ জিজ্ঞাসা করলেন, “আমি কোথায় যাব?”

প্রভু বললেন, “হিব্রোণে।”

তখন দায়ূদ এবং তাঁর দুই স্ত্রী হিব্রোণে রওনা হলেন। (তাঁর স্ত্রীরা ছিলেন যিষ্রিয়েলের অহীনোয়ম এবং কর্ম্মিলের নাবলের বিধবা পত্নী অবীগল।) দায়ূদ তাঁর সঙ্গীগণ এবং তাদের পরিবারকেও সঙ্গে নিলেন। তারা প্রত্যেকে হিব্রোণ এবং নিকটবর্তী শহরগুলিতে বসবাস করতে লাগল।

যিহূদার লোকরা হিব্রোণে এসে দায়ূদকে যিহূদার রাজারূপে অভিষিক্ত করল। তারপর তারা দায়ূদকে বলল, “যাবেশ গিলিয়দের লোকরা শৌলকে কবর দিয়েছে।”

দায়ূদ যাবেশ গিলিয়দের লোকদের কাছে বার্তাবাহক পাঠালেন। বার্তাবাহকরা যাবেশের লোকদের বলল, “প্রভু তোমাদের আশীর্বাদ করুন কেননা তোমরা তোমাদের গুরু শৌলের ছাই[a] কবর দিয়ে তাঁর প্রতি দয়া দেখিয়েছ। প্রভু তোমাদের প্রতি ন্যায়সঙ্গত আচরণ করবেন এবং সদয় হবেন। আমিও তোমাদের প্রতি সদয় হব। এখন তোমরা শক্তিশালী ও সাহসী হও। তোমাদের মনিব শৌল নিহত হয়েছেন। কিন্তু যিহূদার পরিবারগোষ্ঠী আমাকে তাদের রাজারূপে অভিষিক্ত করেছে।”

ঈশ্ বোশত্‌ রাজা হলেন

নেরের পুত্র অব্নের শৌলের সৈন্যবাহিনীর সেনাপতি ছিলেন। অব্নের শৌলের পুত্র ঈশ্ বোশত্‌কে মহনয়িমে নিয়ে গেলেন এবং তাকে গিলিয়দ, অশূরীয়, যিষিয়েল, ইফ্রয়িম, বিন্যামীন এবং সারা ইস্রায়েলের রাজা করে দিলেন।

10 ঈশ্ বোশত্‌ শৌলের পুত্র ছিলেন। যখন তিনি ইস্রায়েলের শাসনভার নেন, তখন তাঁর বয়স 40 বছর। তিনি ইস্রায়েলে দুবছর রাজত্ব করেছিলেন। কিন্তু যিহূদার পরিবারগোষ্ঠী দায়ূদকে অনুসরণ করল। 11 দায়ূদ ছিলেন হিব্রোণের রাজা। দায়ূদ যিহূদার পরিবারগোষ্ঠীর ওপর সাত বছর ছ’মাস শাসনকার্য চালিয়েছিলেন।

একটি মারাত্মক লড়াই

12 নেরের পুত্র অব্নের এবং শৌলের পুত্র ইশ্বোশতের কিছু আধিকারিকগণ মহনয়িম থেকে গিবিয়োনে গেল। 13 সরূয়ার পুত্র যোয়াব এবং দায়ূদের আধিকারিকরাও গিবিয়োনে গেল। গিবিয়োনের এক পুকুরের কাছে তাদের দেখা হল। পুকুরের একদিকে অব্নেরের দল এবং অন্যদিকে যোয়াবের দল বসল।

14 অব্নের যোয়াবকে বলল, “আমাদের তরুণ যোদ্ধারা উঠে দাঁড়াক এবং তাদের মধ্যে একটা লড়াই হয়ে যাক।”

যোয়াব বলল, “নিশ্চয়ই, লড়াই হোক্।”

15 তখন তরুণ যোদ্ধারা উঠে দাঁড়াল। দুই দেশই, লড়াইয়ের জন্য তাদের কত লোকজন আছে তা গুনে নিল। তারা বিন্যামীনের পরিবারগোষ্ঠী থেকে শৌলের পুত্র ঈশ্বোশতের পক্ষে লড়াইয়ের জন্য বারো জনকে বেছে নিলো। অন্যদিকে যোয়াবের দল দায়ূদের আধিকারিকদের মধ্যে থেকে বারো জনকে বেছে নিল। 16 তাদের প্রত্যেকে প্রত্যেকের প্রতি পক্ষের মাথা আঁকড়ে ধরে তাদের তরবারি দিয়ে পাশে ঢুকিয়ে দিল, তাই তারা একসঙ্গে মাটিতে পড়ে গেল। এই জন্য এই জায়গাকে বলা হয় “ছুরিকা ভূমি।” এটা গিবিয়োনের একটা জায়গা।

17 সেই লড়াই একটা ভয়ঙ্কর যুদ্ধের রূপ নিয়েছিল এবং দায়ূদের লোকজন সেদিন অব্নের এবং ইস্রায়েলীয়দের হারিয়ে দিয়েছিল।

অব্নের আসাহেলকে হত্যা করল

18 সরূয়ার তিন পুত্র ছিল: যোয়াব, অবীশয় এবং অসাহেল। অসাহেল খুব দ্রুত দৌড়াতে পারত। সে বন্য হরিণের মতই দ্রুতগামী ছিল। 19 অসাহেল সোজা অব্নেরের দিকে দৌড়ে গেল এবং তাকে তাড়া করল। 20 অব্নের পিছনে তাকিয়ে তাকে জিজ্ঞাসা করল, “তুমিই কি অসাহেল?”

অসাহেল বললেন, “হ্যাঁ, আমিই অসাহেল।”

21 অব্নের অসাহেলকে আঘাত করতে চায় নি। তাই, অব্নের অসাহেলকে বলল, “আমাকে তাড়া কর না। বরং একজন তরুণ সৈনিককে তাড়া কর। খুব সহজেই তুমি তার বর্মটি তোমার জন্য পেয়ে যেতে পারো।” কিন্তু অসাহেল অবনেরকে তাড়া করা থেকে ক্ষান্ত হল না।

22 অব্নের আবার অসাহেলকে বলল, “দাঁড়াও, না হলে আমি তোমাকে হত্যা করতে বাধ্য হব। তাহলে কেমন করে আমি আবার তোমার ভাই যোয়াবের মুখের দিকে তাকাবো?”

23 কিন্তু অসাহেল অব্নেরকে তাড়া করা থেকে ক্ষান্ত হল না। তখন অব্নের তার বর্শার গোড়ার দিকটা অসাহেলের পেটে ঢুকিয়ে দিল। বর্শা তার পেটে ঢুকে এফোঁড় ওফোঁড় হয়ে গেল এবং সেখানেই অসাহেলের মৃত্যু হল।

যোয়াব এবং অবীশয় অব্নেরকে তাড়া করলো

অসাহেলের দেহ মাটিতে পড়ে রইলো। সেই রাস্তা দিয়ে যারা ছুটে যাচ্ছিল তারা সবাই অসাহেলকে দেখার জন্য দাঁড়িয়ে পড়লো। 24 কিন্তু যোয়াব এবং অবীশয় অব্নেরকে তাড়া করতে লাগল। যখন তারা অম্মা পাহাড়ের কাছে এলো তখন সূর্য অস্ত যেতে বসেছে। (গিবিয়োন মরুভূমির দিকে যেতে গীহের সামনেই ছিল অম্মা পাহাড়।) 25 পর্বতের চূড়ায়, বিন্যামীনের পরিবারগোষ্ঠীর লোকরা অব্নেরের চারদিকে একত্রিত হল।

26 অব্নের চিৎকার করে যোয়াবকে বলল, “আমরা কি চিরদিন লড়াই করে একে অপরকে হত্যা করে যাবো? তুমি খুব ভালো করেই জানো যে এর পরিণাম হবে শুধুই দুঃখ। এইসব লোকদের বল তারা যেন তাদের নিজের ভাইকে তাড়া না করে।”

27 তখন যোয়াব বলল, “এ কথা বলে তুমি খুব ভালো করলে। যদি তুমি কিছু না বলতে, এইসব লোকরা সকাল পর্যন্ত তাদের ভাইকে তাড়া করতে থাকত। ঈশ্বর যেমন আছেন এ কথা যেমন সত্য তেমনি এটাও সত্য।” 28 তখন যোয়াব একটি শিঙা বাজাল এবং তার লোকরা ইস্রায়েলীয়দের পেছনে তাড়া করা বন্ধ করল। তারা ইস্রায়েলীয়দের বিরুদ্ধে আর লড়াই করার চেষ্টাও করল না।

29 অব্নের এবং তার অনুগামীরা সারারাত ধরে যর্দন উপত্যকায় হেঁটে যর্দন নদী পার হল এবং পরদিন সারা দিন হেঁটে মহানয়িমে উপস্থিত হল।

30 যোয়াব অব্নেরকে তাড়া করা থেকে বিরত হল ও ফিরে গেল। যোয়াব তার লোকদের জড়ো করল এবং জানতে পারল যে অসাহেল সহ দায়ূদের 19 জন আধিকারিকরা নিখোঁজ। 31 কিন্তু দায়ূদের আধিকারিকরা, অব্নেরের দল থেকে বিন্যামীনের পরিবারের 360 জনকে হত্যা করেছিল। 32 দায়ূদের আধিকারিকরা অসাহেলকে নিয়ে গিয়ে বৈৎ‌লেহেমে তার পিতার কবরে কবর দিলো।

যোয়াব এবং তার সঙ্গীরা সারারাত ধরে হেঁটে চলল। যখন তারা হিব্রোণে পৌঁছালো তখন সকালের সূর্য সবে উঠেছে।

1 করিন্থীয় 13

ভালবাসা শ্রেষ্ঠ বরদান

13 আর এখন আমি তোমাদের এসবের থেকে আরো উৎ‌কৃষ্ট একটা পথ দেখাব। আমি যদি বিভিন্ন মানুষের ভাষা, এমনকি স্বর্গদূতদের ভাষাও বলি কিন্তু আমার মধ্যে যদি ভালবাসা না থাকে, তবে আমি জোরে বাজানো ঘন্টা বা ঝনঝন করা করতালের আওয়াজের মতো। আমি যদি ভাববাণী বলার ক্ষমতা পাই, ঈশ্বরের সব নিগূঢ়তত্ত্ব ভালভাবে বুঝি এবং সব ঐশ্বরিক জ্ঞান লাভ করি, আমার যদি এমন বড় বিশ্বাস থাকে যার শক্তিতে আমি পাহাড় পর্যন্ত টলাতে পারি, অথচ আমার মধ্যে যদি ভালবাসা না থাকে তবে এসব থাকা সত্ত্বেও আমি কিছুই নয়। আমি যদি আমার যথা সর্বস্ব দিয়ে দরিদ্রদের মুখে অন্ন যোগাই, যদি আমার দেহকে আহুতি দেবার জন্য আগুনে সঁপে দিই,

কিন্তু যদি আমার মধ্যে ভালবাসা না থাকে, তাহলে আমার কিছুই লাভ নেই। ভালবাসা ধৈর্য্য ধরে, ভালবাসা দয়া করে, ভালবাসা ঈর্ষা করে না, অহঙ্কার বা গর্ব করে না। ভালবাসা কোন অভদ্র আচরণ করে না। ভালবাসা স্বার্থ-সিদ্ধির চেষ্টা করে না, কখনও রেগে ওঠে না, অপরের অন্যায় আচরণ মনে রাখে না। ভালবাসা কোন মন্দ বিষয় নিয়ে আনন্দ করে না, কিন্তু সত্যে আনন্দ করে। ভালবাসা সব কিছুই সহ্য করে, সব কিছু বিশ্বাস করে, সব কিছুতেই প্রত্যাশা রাখে, সবই ধৈর্য্যের সঙ্গে গ্রহণ করে।

ভালবাসার কোন শেষ নেই। কিন্তু ভাববাণী বলার ক্ষমতা যদি থাকে তো লোপ পাবে। যদি অপরের ভাষায় কথা বলার ক্ষমতা থাকে, তবে তাও একদিন শেষ হবে। যদি জ্ঞান থাকে, তবে তাও একদিন লোপ পাবে। এসব কিছুর পরিসমাপ্তি ঘটবে কারণ আমাদের যে জ্ঞান ও ভাববাণী বলার ক্ষমতা তা অসম্পূর্ণ। 10 কিন্তু যখন সম্পূর্ণ সিদ্ধ বিষয় আসবে, তখন যা অসম্পূর্ণ ও সীমিত সে সব লোপ পেয়ে যাবে।

11 আমি যখন শিশু ছিলাম, তখন শিশুর মতো কথা বলতাম, শিশুর মতোই চিন্তা করতাম, ও শিশুর মতোই বিচার করতাম। এখন আমি পরিণত মানুষ হয়েছি, তাই শৈশবের বিষয়গুলি ত্যাগ করেছি। 12 এখন আমরা আয়নায় আবছা দেখছি; কিন্তু সেই সময় সরাসরি পরিষ্কার দেখব। এখন আমার জ্ঞান সীমিত, কিন্তু তখন আমি সম্পূর্ণভাবে জানতে পারব, ঠিক যেমন ঈশ্বর এখন আমাকে সম্পূর্ণভাবে জানেন। 13 এখন এই তিনটি বিষয় আছে: বিশ্বাস, প্রত্যাশা ও ভালবাসা; আর এদের মধ্যে ভালবাসাই শ্রেষ্ঠ।

যিহিষ্কেল 11

11 তারপর আত্মা আমাকে প্রভুর মন্দিরের পূর্বদিকের দরজায় বয়ে নিয়ে গেল। এই দরজার মুখ পূর্বদিকে যেদিকে সূর্য ওঠে সেই দরজার মুখে আমি 25 জন পুরুষ দেখতে পেলাম। অসূরের পুত্র যাসনিয় এইসব লোকদের সঙ্গে ছিল। বনায়ের পুত্র প্লটিয় সেখানে ছিল। এই দুই জন ছিল লোকদের অধ্যক্ষ।

তখন ঈশ্বর আমায় বললেন, “মনুষ্যসন্তান, এরাই সেই লোক যারা এই শহরের মধ্যে মন্দ পরিকল্পনাগুলি করছে। তারা সব সময়েই লোকদের মন্দ কাজ করতে বলে। এই লোকরা বলে, ‘আমরা খুব শীঘ্রই আমাদের বাড়ীঘর বানাব। আমরা হলাম রান্নার হাঁড়ির ভেতর মাংসের মতন।’ তাই তুমি অবশ্যই আমার হয়ে লোকেদের কাছে বলবে। মনুষ্যসন্তান, যাও লোকেদের কাছে গিয়ে ভাববাণী কর।”

তখন প্রভুর আত্মা আমার কাছে এল। তিনি আমায় বললেন, “তাদের বল প্রভু এই কথাগুলি বলেছেন: ইস্রায়েলের গৃহ, তুমি বড় বড় পরিকল্পনা করছ। কিন্তু আমি জানি তুমি কি চিন্তা করছ। এই শহরে তুমি অনেক লোক হত্যা করেছ। শহরের রাস্তা মৃতদেহে ভরিয়ে দিয়েছ। এখন প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলছেন, ‘ঐ মৃতদেহরা মাংস আর শহরটা পাত্র। কিন্তু নবূখদ্‌নিৎ‌সর তোমাদের এর মধ্যে থেকে বার করে আনা হবে! তোমরা তরবারির ভয়ে ভীত। কিন্তু আমি আর কারো নয়, শুধু তোমার বিরুদ্ধেই তরবারিটি আনছি।’” প্রভু, আমাদের সদাপ্রভু এই কথাগুলি বলেছেন।

ঈশ্বর আরও বললেন, “আমি তোমাদের শহরের বাইরে নিয়ে যাব। আর বিদেশীদের হাতে তুলে দেব। আমি তোমাদের শাস্তি দেব! 10 তোমরা তরবারির ঘায়ে মারা যাবে। আমি এই ইস্রায়েলের সীমাতে তোমাদের শাস্তি দেব, যেন তোমরা জান যে আমিই তোমাদের শাস্তি দিচ্ছি, আমিই প্রভু। 11 হ্যাঁ, এই জায়গা রান্নার পাত্র হয়ে উঠবে না। আর তোমরা তার মধ্যে পাক করা মাংস হবে না। আমি এই ইস্রায়েলের সীমাতেই তোমাদের শাস্তি দেব। 12 তখন তোমরা জানবে যে আমিই প্রভু। আমার আজ্ঞা তোমরা লঙ্ঘন করেছিলে। তোমরা আমার পথ অনুসরণ করনি। পরিবর্ত্তে, তোমরা তোমাদের চার দিকের জাতিদের পথই অনুসরণ করেছিলে!”

13 আমি যেই ঈশ্বরের কথা বলা শেষ করলাম, বনায়ের পুত্র প্লটিয় মারা গেল। আমি মাটিতে পড়ে গেলাম। উপুড় হয়ে মাটিতে মুখ ঠেকিয়ে জোরে কেঁদে উঠে আমি বললাম, “হে প্রভু, আমার সদাপ্রভু, আপনি কি অবশিষ্ট ইস্রায়েলীয়দের সবাইকেই সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করবেন?”

14 কিন্তু তখন প্রভুর বাক্য আমার কাছে এল। তিনি বললেন, 15 “মনুষ্যসন্তান, ইস্রায়েলের পরিবারগুলি অর্থাৎ‌ তোমার ভাইদের, যারা ইস্রায়েল দেশটি ছাড়তে বাধ্য হয়েছিল তাদের স্মরণ কর। কিন্তু এখন জেরুশালেমের অধিবাসীরা বলছে, ‘প্রভুর কাছ থেকে তারা বহু দূরে চলে গিয়েছিল। এই দেশ আমাদের দেওয়া হয়েছিল—এটা আমাদেরই!’

16 “তাই ঐ লোকদের এই বিষয়গুলি বল: প্রভু আমার সদাপ্রভু বলেন, ‘এটা সত্য যে আমি আমার প্রজাদের দূরের দেশে যেতে বাধ্য করেছিলাম। আমিই তাদের বহু দেশে ছড়িয়ে দিয়েছিলাম। কিন্তু অল্প সময়ের জন্য ঐসব দেশে আমিই তাদের মন্দির হব। 17 কিন্তু তুমি ঐসব লোকদের অবশ্যই বলবে যে প্রভু আমার সদাপ্রভু তাদের ফিরিয়ে আনবেন। আমি তোমাদের বহু জাতির মধ্যে ছড়িয়ে দিয়েছি। কিন্তু আমি তোমাদের আবার এক জায়গায় সংগ্রহ করব এবং ঐসব জাতির মধ্যে থেকে ফিরিয়ে আনব। ইস্রায়েলের ভূমি আবার তোমাদের কাছে ফিরিয়ে দেব! 18 আর আমার প্রজারা ফিরে এলে তারা এখানে এখন যে সব ভয়ঙ্কর নোংরা মূর্ত্তি রয়েছে সে সব ধ্বংস করবে। 19 আমি তাদের একত্র করব। আমি তাদের নতুন আত্মা দেব। আমি তাদের পাথরের হৃদয় সরিয়ে সেখানে প্রকৃত হৃদয় স্থাপন করব। 20 তখন তারা আমার বিধিগুলি পালন করবে। তারা আমার আজ্ঞাগুলি পালন করবে। আমি তাদের যা বলব তারা তাই করবে। তারা প্রকৃতই আমার লোক হবে, আর আমি তাদের ঈশ্বর হব।’”

21 তখন ঈশ্বর বললেন, “কিন্তু এখন তাদের মন অধিকার করে আছে ঐসব ভয়ঙ্কর নোংরা মূর্ত্তিরা। আর ঐ লোকরা যে মন্দ কাজ করেছে তার জন্য অবশ্যই আমি তাদের শাস্তি দেব।” প্রভু আমার সদাপ্রভুই ঐসব কথা বলেছেন। 22 তারপর করূব দূতরা তাদের ডানা ওঠাল আর আকাশে উড়ে গেল। চাকাগুলিও তাদের সঙ্গে গেল। আর ইস্রায়েলের ঈশ্বরের মহিমা তাদের ওপরে ছিল। 23 পরে প্রভুর মহিমা নগরের মাঝখান থেকে উঠে গিয়ে নগরের পূর্বদিকে পাহাড়ের ওপরে গিয়ে থেমে গেল। 24 তারপর আত্মাটি আমায় তুলে নিয়ে আবার বাবিলনে সেই সব লোকদের কাছে, যারা ইস্রায়েল ছাড়তে বাধ্য হয়েছিল, সেখানে ফিরিয়ে আনল। আমি ঐসব ঈশ্বরীয় দর্শনে দেখলাম। তারপর যাকে আমি আমার দর্শনে দেখেছিলাম তিনি শূন্যে উঠে চলে গেলেন। 25 তখন আমি নির্বাসনে যারা ছিলেন তাদের কাছে প্রভু আমায় যা যা দেখিয়েছিলেন তা বললাম।

গীতসংহিতা 50

আসফের সঙ্গীতগুলির অন্যতম।

50 প্রভু, যিনি ঈশ্বরদেরও ঈশ্বর স্বয়ং তিনি কথা বলছেন।
    তিনি সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত, অর্থাৎ‌ এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত পর্যন্ত সমগ্র পৃথিবীর মানুষকে চিৎকার করে ডাক দিচ্ছেন।
সিয়োন থেকে দীপ্তিমান ঈশ্বর অসীম সুন্দর!
আমাদের ঈশ্বর আসছেন এবং তিনি নীরব থাকবেন না।
    তাঁর সামনে সর্বগ্রাসী আগুন জ্বলছে।
    তাঁর চারদিকে প্রচণ্ড ঝড় বইছে।
যখন তিনি তাঁর লোকদের বিচার করেন
    তখন তিনি আকাশ ও পৃথিবীকে সাক্ষী থাকতে ডাকেন।
ঈশ্বর বলেন, “হে আমার অনুগামীরা আমার চারিদিকে এস।
    হে আমার ভক্তসকল, আমরা একে অন্যের সঙ্গে চুক্তি করেছি।”

ঈশ্বর হলেন বিচারক,
    আকাশ তাঁর যথাযথ ধার্ম্মিকতার কথা ঘোষণা করে।

ঈশ্বর বলেন, “আমার লোকরা, আমার কথা শোন!
    হে ইস্রায়েলের লোকরা, আমি তোমাদের বিরুদ্ধে সাক্ষী দেব। আমিই ঈশ্বর, তোমাদের ঈশ্বর।
আমি তোমাদের বলি সম্পর্কে অভিযোগ করছি না।
    তোমরা ইস্রায়েলের লোকেরা সর্বদাই আমার কাছে হোমবলি দিয়েছ এবং প্রতিদিনই তোমরা তা আমায় দিয়েছ।
তোমাদের ঘর থেকে আমি ষাঁড় নেব না।
    তোমাদের খোঁয়াড় থেকে আমি ছাগলও নেব না।
10 ঐ পশুগুলো আমি চাই না, ইতিমধ্যেই জঙ্গলের সমস্ত পশুসমুহের আমি অধিকারী।
    হাজার হাজার পর্বতের ওপরের সমস্ত পশুগুলি ইতিমধ্যে আমার অধিকারে।
11 উচ্চতম পর্বতের প্রত্যেকটি পাখিকে আমি চিনি।
    পাহাড়ের প্রত্যেকটি চলমান বস্তুই আমার।
12 আমি ক্ষুধার্ত নই! যদি আমি ক্ষুধার্তও হতাম আমি তোমাদের কাছে আহার চাইতাম না।
    সারা পৃথিবী এবং তার মধ্যে যা যা আছে, আমিই পৃথিবীর এবং পৃথিবীর সমস্ত জিনিষের মালিক।
13 আমি ষাঁড়ের মাংস খাই না অথবা ছাগলের দেহ থেকে রক্ত পান করি না।”

14 অতএব, অন্যান্য ভক্তদের সঙ্গে ভাগ করে নেওয়ার জন্য তোমাদের ঈশ্বরের কাছে দেয় ধন্যবাদ নৈবেদ্য নিয়ে এস
    এবং ঈশ্বরের সান্নিধ্যে থাকার জন্য এসো এবং তোমাদের পরাৎ‌‌পরের কাছে যা প্রতিশ্রুতি করেছিলে তোমরা তাঁকে তাই দাও।
15 ঈশ্বর বলেন, “যখন তুমি সংকটে পড়বে তখন আমায় ডেকো!
    আমি তোমাকে সাহায্য করবো!
    তারপর তুমি আমাকে সম্মান করতে পারবে।”

16 কিন্তু দুষ্ট লোকেদের ঈশ্বর বলেন,
    “তোমরা আমার বিধির সম্বন্ধে কথা বল।
    তোমরা আমার চুক্তির সম্বন্ধে কথা বল।
17 আমি যখন তোমাদের ভুল সংশোধন করে দিই, তখন কেন তোমরা তা ঘৃণা কর?
    আমি যা বলি কেন তোমরা তা উপেক্ষা কর?
18 তোমরা একটা চোরকে দেখ এবং তার সঙ্গে যোগ দিতে ছুটে যাও।
    যারা ব্যভিচার করে তোমরা তাদের সঙ্গে বিছানায় ঝাঁপিয়ে পড়।
19 তোমরা মিথ্যা কথা বল এবং
    অশুভ ব্যাপারে কথা বল।
20 অন্য লোকদের সম্পর্কে তোমরা সব সময় খারাপ কথা বল।
    এমনকি তোমরা নিজের ভাইদের সম্পর্কেও খারাপ কথা বল।
21 তোমরা ঐসব বাজে কাজ করেছো এবং আমি কিছু বলি নি।
    তাই তোমরা ভেবেছো আমিও ঠিক তোমাদের মত।
তবে হ্যাঁ, আর বেশীদিন আমি চুপ করে থাকবো না!
    এটা আমি তোমার পরিষ্কার বুঝিয়ে দেবো এবং আমি সামনাসামনি তোমার সমালোচনা করবো!
22 তোমরা ঈশ্বরকে ভুলে গেছ।
    তাই আমি তোমাদের ছিন্নভিন্ন করার আগে যদি তোমরা উপলদ্ধি কর তো ভাল!
আর যদি না বোঝ
    কেউ তোমাদের বাঁচাতে পারবে না!
23 তাই যদি কোন লোক আমায় ধন্যবাদ বলি দেয় তবে সে আমার সম্মান করে।
    যদি সে সৎ‌ উপায়ে বাঁচে তাকে বাঁচানোর জন্য আমি আমার সমস্ত ক্ষমতা প্রদর্শন করবো।”

Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)

Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International