M’Cheyne Bible Reading Plan
“দায়ূদকে সঙ্গে নিতে আপত্তি”
29 পলেষ্টীয়রা অফেকে সৈন্য জড়ো করল। ইস্রায়েলীয়রা তাঁবু গাড়ল যিষ্রিয়েল ঝর্ণার পাশে। 2 পলেষ্টীয় শাসকরা 100 জন সৈন্য এবং 1000 জন সৈন্যের এক এক দল নিয়ে কুচকাওয়াজ করে অগ্রসর হলেন। পেছনে পেছনে আখীশের সঙ্গে রইল দায়ূদ ও তার লোকরা। 3 পলেষ্টীয় সেনাপতিরা জিজ্ঞাসা করল, “এই ইব্রীয়রা এখানে কি করছে?”
আখীশ বললেন, “এ হচ্ছে দায়ূদ, শৌলের একজন উচ্চপদস্থ আধিকারিক। আমার সঙ্গে ও অনেকদিন রয়েছে। শৌলকে ছেড়ে দেবার পর থেকে যতদিন দায়ূদ আমার কাছে রয়েছে ততদিন ওর মধ্যে খারাপ কিছু দেখি নি।”
4 তবুও পলেষ্টীয় সেনাপতিরা আখীশের ওপর রেগে গেল। তারা বলল, “দায়ূদকে ফেরত পাঠিয়ে দাও। ওকে যে শহরে তুমি থাকতে দিয়েছ, সেখানে ওকে ফিরে যেতেই হবে। আমাদের সঙ্গে সে যুদ্ধে যাবে না। ওকে রাখা মানে একজন শত্রুকেই রাখা। সে আমাদের সৈন্যদের মেরে তার রাজা শৌলকেই খুশী করবে। 5 দায়ূদকে নিয়ে ইস্রায়েলীয়রা এই গান গেয়ে নাচানাচি করে:
‘শৌল মেরেছে শত্রু হাজারে হাজারে।
দায়ূদ মেরেছে অযুতে অযুতে!’”
6 তাই দায়ূদকে ডেকে আখীশ বললেন, “প্রভুর অস্তিত্বের মতোই নিশ্চিত যে তুমি আমার অনুগত। তোমাকে আমার সৈন্যদের মধ্যে রাখলে আমি খুশি হতাম। যেদিন থেকে তুমি আমার কাছে, আমি তোমার কোন অন্যায় দেখি নি। কিন্তু পলেষ্টীয় শাসকরা তোমাকে সমর্থন করে নি। 7 তুমি ফিরে যাও। পলেষ্টীয় রাজাদের বিরুদ্ধে তুমি কিছু করো না।”
8 দায়ূদ বললেন, “আমি কি এমন অন্যায় করেছি? আজ পর্যন্ত যতদিন আপনার সামনে আছি, আপনি কি এই দাসের কোন দোষ পেয়েছেন? তবে কেন আমার মনিব মহারাজের শত্রুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে দেবেন না?”
9 আখীশ উত্তর দিলেন, “আমি তোমায় একজন ভালো মানুষ হিসাবে গণ্য করি। তুমি একজন ঈশ্বরের দূতের মতো। কিন্তু কি করব, পলেষ্টীয় সেনাপতিরা বলছে, ‘দায়ূদ আমাদের সঙ্গে যুদ্ধ করতে যাবে না।’ 10 খুব সকালে তুমি লোকদের নিয়ে যে শহর আমি তোমাকে দিয়েছি সেই শহরে ফিরে যাও। সেনাপতিরা তোমার নামে যেসব নিন্দা করেছে সেসবে কান দিও না। তুমি ভাল লোক। তাই সূর্য ওঠার সঙ্গে সঙ্গে তুমি চলে যাবে।”
11 অবশেষে দায়ূদ এবং তাঁর সঙ্গীরা খুব সকালে পলেষ্টীয়দের দেশে ফিরে গেল এবং পলেষ্টীয়রা যিষ্রিয়েল পর্যন্ত গেল।
অমালেকীয়রা সিক্লগ আক্রমণ করল
30 তৃতীয় দিনে দায়ূদ সিক্লগে উপস্থিত হলেন। সেখানে গিয়ে তারা দেখল অমালেকীয়রা সিক্লগ শহর আক্রমণ করেছে। তারা নেগেভ অঞ্চলে হানা দিয়েছিল। সিক্লগ শহর তারা পুড়িয়ে ছারখার করে দিয়েছিল। 2 সিক্লগের স্ত্রীলোকদের তারা বন্দী হিসাবে ধরে নিয়ে গিয়েছিল। যুবক বৃদ্ধ সকলকে ধরে নিয়ে গিয়েছিল, কিন্তু তাদের কাউকে হত্যা করে নি।
3 দায়ূদ লোকদের সঙ্গে নিয়ে সিক্লগে এসে দেখলেন শহরটা দাউ দাউ করে জ্বলছে। তাদের স্ত্রীদের, ছেলেমেয়ে সকলকেই অমালেকীয়রা ধরে নিয়ে গেছে। 4 দায়ূদ এবং তাঁর লোকরা চিৎকার করে কাঁদতে কাঁদতে একেবারে কাহিল হয়ে পড়ল। শেষে দুর্বলতায় আর চিৎকার করতে পারল না। 5 অমালেকীয়রা দায়ূদের দুই স্ত্রীকেই, যিষ্রিয়েলীয় অহীনোয়ম আর নাবলের বিধবা অবীগলকে, ধরে নিয়ে গিয়েছিল।
6 সব সৈন্যরা দুঃখে আর রাগে অধীর হয়ে পড়েছিল, কারণ তাদের ছেলে মেয়েদের যুদ্ধ বন্দী হিসাবে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তাই তারা দায়ূদকে আক্রমণ করবার ও পাথর ছুঁড়ে মেরে ফেলবার সিদ্ধান্ত নিল। দায়ূদ এসব শুনে মুষড়ে পড়লেন। কিন্তু প্রভু ঈশ্বরেই দায়ূদ তাঁর শক্তি খুঁজে পেলেন। 7 দায়ূদ যাজক অবিয়াথরকে বললেন, “এফোদটি এনে দাও” এবং অবিয়াথর দায়ূদকে সেটা এনে দিলেন।
8 তারপর দায়ূদ প্রভুর কাছে প্রার্থনা করলেন, “যারা আমাদের ছেলেমেয়েদের ধরে নিয়ে গেছে, আমি কি তাদের পিছু নেব? আমি কি তাদের ধরতে পারব?”
প্রভু বললেন, “যাও ওদের পিছু নাও। তুমি ওদের ধরতে পারবে। তুমি তোমার সকল পরিবারগুলিকে রক্ষা করতে পারবে।”
দায়ূদ একজন মিশরীয় ক্রীতদাসকে দেখতে পেলেন
9-10 দায়ূদ 600 জন লোক নিয়ে বিষোর স্রোতের কাছে পৌঁছলেন। সেখানে তাঁর লোকদের প্রায় 200 জন থাকল। তারা খুব দুর্বল আর ক্লান্ত হয়ে পড়েছিল। তারা আর চলতে পারছিল না। তাই 400 জন পুরুষ নিয়ে দায়ূদ অমালেকীয়দের তাড়া করলেন।
11 দায়ূদের লোকরা মাঠের মধ্যে একজন মিশরীয়কে দেখতে পেল। তারা তাকে দায়ূদের কাছে নিয়ে এসে জল আর কিছু খাবার দিল। 12 ডুমুরের পিঠে আর দুমুঠো কিস্মিস্ ওকে খেতে দিল। খাওয়া দাওয়ার পর সে একটু ভাল বোধ করল। তিনদিন তিনরাত সে কোন কিছু খেতে পায় নি বা পান করতে পায় নি।
13 মিশরীয় লোকটাকে দায়ূদ জিজ্ঞাসা করলেন, “কে তোমার মনিব? কোথা থেকে তুমি আসছ?”
লোকটি বলল, “আমি একজন মিশরীয়। অমালেকের ক্রীতদাস। তিনদিন আগে আমি অসুস্থ হওয়ায় আমার মনিব আমাকে ছেড়ে দিয়ে চলে যায়। 14 আমরা নেগেভ আক্রমণ করেছিলাম। ওখানে করেথীয়রা থাকে। আমরা যিহূদা আর নেগেভ অঞ্চল আক্রমণ করেছিলাম। নেগেভে কালেবের লোকরা থাকে। আমরা সিক্লগও পুড়িয়ে দিয়েছিলাম।”
15 দায়ূদ তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, “যারা আমাদের পরিবারগুলিকে নিয়ে নিয়েছে তুমি কি তাদের কাছে আমাদের নিয়ে যাবে?”
মিশরীয় লোকটি বলল, “যদি ঈশ্বরের কাছে প্রতিশ্রুতি করো যে তুমি আমায় হত্যা করবে না বা আমাকে আমার মনিবের কাছে ফিরিয়ে দেবে না, তাহলে আমি তোমাকে সাহায্য করবো।”
দায়ূদ অমালেকীয়দের হারিয়ে দিলেন
16 মিশরীয় লোকটি দায়ূদকে অমালেকীয়দের কাছে পৌঁছে দিল। সেই সময় তারা মাটিতে চারিদিকে ছড়িয়ে গড়াগড়ি দিচ্ছিল, খাওয়া দাওয়া ও পান করছিল। পলেষ্টীয়দের দেশ আর যিহূদা থেকে যা লুঠপাট করে এনেছিল সে সব নিয়ে ওরা ফূর্তি করছিল। 17 দায়ূদ তাদের আক্রমণ করে হত্যা করলেন। সূর্যোদয় থেকে পরদিন সন্ধ্যে পর্যন্ত তারা যুদ্ধ করলো। 400 জন অমালেক যুবক ঝাঁপ দিয়ে, উটে চড়ে পালিয়ে গেল। বাকীরা সকলে নিহত হল।
18 অমালেকীয়রা যা যা নিয়েছিল দায়ূদ তার সব ফিরে পেলেন। তিনি তাঁর দুই স্ত্রীও ফিরে গেলেন। 19 কিছুই খোয়া যায় নি। শিশু বৃদ্ধ সকলকেই ফিরে পাওয়া গেল। তারা তাদের সব ছেলে মেয়েদের এবং তাদের দামী জিনিসপত্র সব ফিরে পেল। দায়ূদ সব ফিরিয়ে নিয়ে এলেন। 20 দায়ূদ সমস্ত মেষপাল ও গো-পাল নিলেন। দায়ূদের লোকরা এইসব পশুকে আগে আগে চালাল। দায়ূদের লোকরা বলল, “এইসব হচ্ছে দায়ূদের পুরস্কার।”
সকলে সমানভাবে সব কিছু পাবে
21 বিষোর স্রোতের ধারে যে 200 জন থেকে গিয়েছিল তাদের কাছে দায়ূদ এলেন। এরা খুব ক্লান্ত আর দুর্বল বলে দায়ূদের সঙ্গে যেতে পারে নি। তারা দায়ূদ ও তাঁর সঙ্গীদের সঙ্গে দেখা করতে এল। তারা কাছে আসতেই বিষোর স্রোতের ধারের লোকরা অভিবাদন জানাল। 22 কিন্তু দায়ূদের লোকদের মধ্যে দুষ্ট লোকও ছিল। তারা ঝামেলা বাধাত। তারা বলল, “এই 200 জন লোক আমাদের সঙ্গে আসে নি। তাই এদের আমরা যা এনেছি তার ভাগ দেব না। এরা শুধু নিজেদের স্ত্রী ও ছেলেমেয়েদের ফেরত পাবে।”
23 দায়ূদ বললেন, “ভাইসব, এইরকম কাজ করা ঠিক নয়। প্রভু আমাদের কি দিয়েছেন একবার ভেবে দেখো। তিনি আমাদের বিরুদ্ধে আসা শত্রুদের হারিয়ে দিয়েছেন। 24 তোমাদের কথা কেউ শুনবে না। যারা দ্রব্যসামগ্রী আগলেছিল আর যারা যুদ্ধে যোগ দিয়েছিল সকলেই সমান দাবিদার। প্রত্যেকেই সমান ভাগ পাবে।” 25 দায়ূদ ইস্রায়েলের জন্য এই বিধি ও শাসন স্থির করলেন। এই বিধান আজও চালু আছে।
26 দায়ূদ সিক্লগে এসে পৌঁছালেন। অমালেকীয়দের কাছ থেকে পাওয়া কিছু জিনিসপত্র তাঁর বন্ধুদের কাছে পাঠিয়ে দিলেন। এরা সব যিহূদার দলপতি। দায়ূদ বললেন, “তোমাদের জন্য কিছু উপহার এনেছি। প্রভুর শত্রুদের কাছ থেকে এইসব আমরা পেয়েছি।”
27 দায়ূদ অমালেকীয়দের কাছ থেকে নেওয়া জিনিসপত্র থেকে কিছু বৈথেল, নেগেভের রামোৎ এবং যত্তীরের নেতাদের কাছে পাঠালেন। 28 অরোয়ের, শিফমোৎ, ইষ্টিমোয়, 29 রাখল, যিরহমেলীয়দের নগরগুলিতে, কেনীয়দের নগরগুলিতে 30 হর্ম্মা, কোর-আশন, অথাক, 31 এবং হিব্রোণ শহরের নেতাদের কাছে দায়ূদ উপহার পাঠালেন। তাছাড়া আর যে যে দেশে দায়ূদ ও তাঁর লোকরা ছিল, সেইসব দেশের নেতাদের কাছেও তিনি উপহার পাঠালেন।
ইহুদীদের মতো হোয়ো না
10 আমার ভাই ও বোনেরা, আমি চাই যে তোমরা একথা জান যে আমাদের পিতৃপুরুষরা যখন মোশিকে অনুসরণ করেছিলেন তখন তাঁদের কি হয়েছিল। তাঁরা সকলে মেঘের নীচে ছিলেন, সকলেই সাগর পার হয়েছিলেন। 2 তাঁরা সকলে মোশির অনুগামী হয়ে মেঘে ও সমুদ্রে বাপ্তাইজ হয়েছিলেন। 3 তাঁরা সকলে একই ধরণের আত্মিক খাদ্য খেয়েছিলেন; 4 আর একই আত্মিক পানীয় পান করেছিলেন। তাঁরা এক আত্মিক শৈল থেকে সেই পানীয় পান করতেন যা তাঁদের সঙ্গে সঙ্গে যাচ্ছিল, সেই শৈলই হচ্ছেন খ্রীষ্ট। 5 কিন্তু তাঁদের মধ্যে অধিকাংশ লোকের প্রতিই ঈশ্বর সন্তুষ্ট ছিলেন না, আর তাঁরা পথে প্রান্তরের মধ্যে মারা পড়েছিলেন।
6 এসব ঘটনা আমাদের জন্য দৃষ্টান্তস্বরূপ ঘটল, যাতে তারা যেমন মন্দ বিষয়ে অভিলাষ করেছিল আমরা তা না করি। 7 তাদের মধ্যে কিছু লোক যেমন প্রতিমা পূজা শুরু করেছিল তেমন তোমরা প্রতিমা পূজা শুরু করো না। কারণ শাস্ত্রে লেখা আছে: “লোকেরা ভোজন পান করতে বসল আর উঠে দাঁড়িয়ে নাচতে শুরু করল।”(A) 8 তাদের মধ্যে যেমন কতক লোক যৌন পাপে পাপী হয়েছিল আর একদিনে তেইশ হাজার লোক তাদের পাপের জন্য মারা পড়েছিল, আমরা যেন তেমনি যৌন পাপ না করি। 9 তাদের মধ্যে যেমন কিছু লোক প্রভুকে পরীক্ষা করে সাপের কামড়ে মারা পড়েছিল, আমরা যেন তেমন পরীক্ষা না করি। 10 আবার তাদের মধ্যে কিছু লোক যেমন অসন্তোষ প্রকাশ করেছিল আর ধ্বংসকারী স্বর্গদূতের কবলে পড়ে ধ্বংস হয়েছিল, তোমরা তেমনি অসন্তোষ প্রকাশ করো না।
11 তাদের প্রতি যা কিছু ঘটেছিল তা দৃষ্টান্তস্বরূপ রয়ে গেছে। আমাদের সাবধান করে দেবার জন্য এসব কথা লেখা হয়েছে, কারণ আমরা শেষ যুগে এসে পৌঁছেছি। 12 তাই যে মনে করে যেন শক্তভাবে দাঁড়িয়ে আছে, সে সাবধান হোক্, পাছে পড়ে মারা যায়। 13 যে প্রলোভনগুলি স্বাভাবিকভাবে লোকদের কাছে আসে তার থেকে বেশী কিছু তোমাদের কাছে আসেনি। তোমরা ঈশ্বরে বিশ্বস্ত থাক, যে সব প্রলোভন প্রতিরোধ করার ক্ষমতা তোমাদের নেই, তিনি তা তোমাদের জীবনে আসতে দেবেন না; কিন্তু প্রলোভনের সাথে সাথে তার থেকে উদ্ধারের পথ তিনিই করে দেবেন, যেন তোমরা সহ্য করতে পার।
14 আমার প্রিয় বন্ধুরা, সব রকম প্রতিমা পূজা থেকে দূরে থাক। 15 আমি তোমাদের বুদ্ধিমান জেনে একথা বলছি। আমি যা বলি তা তোমরা নিজেরাই বিচার করে দেখ। 16 আশীর্বাদের পানপাত্র, যা নিয়ে আমরা ধন্যবাদ দিই তা কি খ্রীষ্টের রক্তের সহভাগীতা নয়? যে রুটি ভেঙে টুকরো টুকরো করে খাওয়া হয়, তা কি খ্রীষ্টের দেহের সহভাগীতা নয়? 17 রুটি একটাই কিন্তু আমরা সকলেই সেই একটা রুটি থেকেই অংশ গ্রহণ করি। তাই আমরা অনেক হলেও আসলে আমরা এক দেহ।
18 ইস্রায়েল জাতির কথা চিন্তা কর। যারা বলির মাংস খায় তারা কি সেই যজ্ঞবেদীর নৈবেদ্যর সহভাগী হয় না? 19 তাহলে আমার কথার অর্থ কি হল? আমি কি এই কথা বলছি যে, প্রতিমার কাছে যেসব ভোগ উৎসর্গ করা হয় তার কোন তাৎপর্য আছে অথবা প্রতিমার কোন বাস্তবতা আছে? 20 কিন্তু আমার কথার অর্থ এই লোকেরা যা কিছু প্রতিমার উদ্দেশ্যে বলিদান করে, তারা তা ভূতদের উদ্দেশ্যেই করে, ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে নয়; আর আমি চাই না যে তোমাদের কোনভাবে ভুতদের সঙ্গে সংযোগ থাকে। 21 তোমরা প্রভুর পানপাত্র ও ভুতদের পানপাত্র, উভয় থেকে পান করতে পার না। আবার তোমরা প্রভুর টেবিল ও ভুতদের টেবিল উভয় টেবিলে অংশ নিতে পার না। 22 তোমরা কি প্রভুকে ঈর্ষান্বিত করতে চাইছ? আমরা কি তাঁর থেকে শক্তিশালী? কখনই না।
তোমাদের স্বাধীনতা ঈশ্বরের মহিমার জন্য ব্যবহার কর
23 “আমাদের সব কিছু করার স্বাধীনতা আছে।” তবে সব কিছুই যে মঙ্গলজনক তা নয়। “হ্যাঁ, যে কোন কিছু করার স্বাধীনতা আমাদের দেওয়া আছে।” তবে সব কিছুই যে গড়ে তোলে তা নয়। 24 কেউ যেন স্বার্থ সিদ্ধির চেষ্টা না করে; বরং প্রত্যেকে যেন অপরের মঙ্গল চায়।
25 বিবেকের প্রশ্ন না তুলে যে কোন মাংস বাজারে বিক্রি হয় তা খাও। 26 কারণ শাস্ত্রে যেমন লেখা আছে: “পৃথিবী ও তার মধ্যেকার সব কিছুই প্রভুর।”(B)
27 যদি কোন অবিশ্বাসী ভাই তোমাকে নিমন্ত্রণ করে আর যদি তুমি নিমন্ত্রণ রক্ষা করতে চাও, তবে নিজের বিবেকের কাছে কোন কিছু জিজ্ঞাসা না করে যে কোন খাদ্যদ্রব্য পরিবেশন করে সামনে রাখা হয়, তা খেও। 28 কিন্তু কেউ যদি বলে যে, “এ হল প্রতিমার প্রসাদ” তবে যে জানালো, তার কথা চিন্তা করে ও বিবেকের কথা মনে রেখে, তা খেও না। 29 আমি কোন ব্যক্তির নিজের বিবেকের নয়, কিন্তু অপর ব্যক্তির বিবেকের বিষয় বলছি। আমার স্বাধীনতা কেন অপরের বিবেক বিচার করবে? 30 যদি আমি ধন্যবাদ জানিয়ে খাই, তাহলে যে বিষয়ের জন্য ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিয়েছি সে বিষয়ে আমার সমালোচনা হবে এ আমি চাই না।
31 তাই তোমরা আহার কর, কি পান কর বা যা কিছু কর, সব কিছুই ঈশ্বরের মহিমার জন্য কর। 32 কি ইহুদী, কি গ্রীক, কি ঈশ্বরের মণ্ডলী, কারো বিঘ্নের কারণ হয়ো না। 33 যেমন আমি নিজের ভাল চাই না কিন্তু অপরের ভাল চাই, যেন তারা উদ্ধার লাভ করে।
8 একদিন আমি (যিহিষ্কেল) আমার বাড়িতে বসেছিলাম এবং যিহূদার প্রবীণরা আমার সামনে বসেছিল। এটা ছিল নির্বাসনের ষষ্ঠ বছরের ষষ্ঠ মাসের পঞ্চম দিনের কথা। হঠাৎ আমার প্রভু সদাপ্রভুর শক্তি আমার ওপর এল। 2 আমি আগুনের মত কিছু একটা দেখলাম। দেখে মনে হল যেন কোন মানুষের দেহ। কোমরের নীচ থেকে আগুনের মত। কোমরের উপর থেকে তিনি আগুনে রাখা উত্তপ্ত ধাতুর মত উজ্জ্ব্বলভাবে চমকাচ্ছিলেন। 3 তারপর আমি হাতের মত কিছু একটা দেখলাম। সেই হাত বেরিয়ে এসে আমার মাথার চুল টেনে আমায় ধরল। তারপর বাতাস আমায় শূন্যে তুলে নিল এবং তিনি আমাকে জেরুশালেমে ঈশ্বরীয় দর্শনে নিয়ে গেলেন। তিনি আমাকে অভ্যন্তরের ফটক, অর্থাৎ উত্তর দিকের ফটকের কাছে নিয়ে গেলেন। যে মূর্ত্তি ঈশ্বরকে ঈর্ষান্বিত করে তা সেই ফটকে রয়েছে। 4 কিন্তু ইস্রায়েলের ঈশ্বরের মহিমা সেখানে ছিল। সমস্থলীতে কবার নদীর ধারে দর্শনে আমি যেমন দেখেছিলাম, এই মহিমা সেই রকমই দেখতে ছিল।
5 ঈশ্বর আমায় বললেন, “মনুষ্যসন্তান, সোজা উত্তর দিকে দেখ!” তাই আমি উত্তর দিকে তাকালাম। আর সেখানে বেদীর উত্তর দিকের দরজায় সেই মূর্ত্তি ছিল যা ঈশ্বরকে ঈর্ষান্বিত করে।
6 তখন ঈশ্বর আমায় বললেন, “মনুষ্যসন্তান, ইস্রায়েলের লোকরা যে ভয়ানক কাজ করছে তা কি তুমি দেখছ? তারা আমার পবিত্র স্থানের ঠিক পাশেই[a] ঐ জিনিসটা গড়েছে। আর তুমি আমার সঙ্গে এলে এর থেকেও আরও ভয়ানক ঘৃণিত জিনিষ দেখতে পাবে।”
7 তাই আমি প্রাঙ্গণের মধ্যে প্রবেশ পথ দিয়ে গেলাম আর দেওয়ালে এক গর্ত দেখতে পেলাম। 8 ঈশ্বর আমায় বললেন, “মনুষ্যসন্তান, দেওয়ালে একটা গর্ত তৈরী কর।” তাই আমি দেওয়ালে একটা গর্ত তৈরী করলাম। আর সেখানে আমি একটা দরজা দেখতে পেলাম।
9 তখন ঈশ্বর আমায় বললেন, “যাও, লোকরা এখানে যেসব মন্দ ও ভয়ঙ্কর ঘৃণিত কাজ করছে তা দেখ।” 10 তাই আমি ভেতরে গিয়ে তাকালাম আর দেখলাম বিভিন্ন ধরণের সরীসৃপ ও জন্তুদের মূর্ত্তি যাদের কথা চিন্তা করতেও ঘৃণা জন্মায় সেই সবগুলো এবং ইস্রায়েলীয়দের সমস্ত মূর্ত্তিগুলি দেখলাম। সব দেওয়ালেই ঐসব পশুদের ছবি খোদাই করা ছিল।
11 তারপর আমি লক্ষ্য করে দেখলাম যে শাফনের পুত্র যাসনিয় ও ইস্রায়েলের আরো 70 জন প্রবীণ সে স্থানে লোকদের সঙ্গে পূজা করছিল। তারা লোকদের সামনেই দাঁড়িয়েছিল। আর প্রত্যেক নেতার কাছে ছিল তার নিজের ধূপদানী। জ্বলা ধূপের ধোঁয়ার সেই সুগন্ধ উপরে উঠছিল। 12 তখন ঈশ্বর আমায় বললেন, “মনুষ্যসন্তান, ইস্রায়েলের নেতারা অন্ধকারে কি করে তা কি তুমি দেখেছ? প্রত্যেক জনের তার নিজের মূর্ত্তি পূজার জন্য আলাদা কক্ষ রয়েছে। ঐ লোকরা নিজেদের মধ্যে বলাবলি করে, ‘প্রভু আমাদের দেখতে পাবেন না। প্রভু এই দেশ ত্যাগ করে গেছেন।’” 13 তখন ঈশ্বর আমায় বললেন, “এরপরও তুমি এইসব লোকদের আরও কত ঘৃণিত কাজ দেখতে পাবে!”
14 তখন ঈশ্বর আমাকে প্রভুর মন্দিরের প্রবেশ পথের দিকে নিয়ে চললেন। এই দরজাটি উত্তর দিকে অবস্থিত ছিল। সেখানে আমি মহিলাদের বসে বসে কাঁদতে দেখলাম। তারা তম্মুষের মূর্ত্তির জন্য শোক করছিল!
15 ঈশ্বর আমায় বললেন, “মনুষ্যসন্তান, তুমি কি এইসব ভয়ঙ্কর বিষয়গুলি দেখছ? আমার সঙ্গে এলে এর চেয়ে আরও খারাপ বিষয় দেখবে!” 16 তারপর তিনি আমাকে প্রভুর মন্দিরের ভিতরের প্রাঙ্গণে নিয়ে গেলেন। সেখানে, আমি 25 জন লোককে উপুড় হয়ে পূজা করতে দেখলাম। তারা ছিল মন্দিরে ঢোকবার জায়গাটাতে। কিন্তু তারা ভুল দিকে মুখ ফিরে ছিল! পূর্বদিকে উদিত সূর্যের উপাসনা করবার সময় তাদের পশ্চাদ্দেশ আমার মন্দিরের দিকে ফেরানো ছিল।
17 তখন ঈশ্বর বললেন, “মনুষ্যসন্তান, তুমি কি এসব দেখতে পাচ্ছো? তারা এই সমস্ত নোংরা জিনিষ এখানে করছে এটা কি ভালো? এই শহর হিংসাত্মক ঘটনায় পূর্ণ। আর আমাকে বিরক্ত করে তুলতে তারা সর্বদাই ব্যস্ত। দেখ, ওরা আমায় অশ্লীল ইঙ্গিত করছে। 18 আমি তাদের আমার ক্রোধ কি তা দেখাব। তাদের প্রতি দয়া করব না। তারা আমার কাছে আর্তনাদ করবে কিন্তু আমি শুনতে অস্বীকার করব!”
পরিচালকের প্রতি: কোরহ পরিবারের একটি গীত। অলামোতের দ্বারা একটি গীত।
46 ঈশ্বর আমাদের আশ্রয় এবং আমাদের শক্তির উৎস।
সমস্যার সময় তাঁর মধ্যেই আমরা সব সাহায্য খুঁজে পাবো।
2 তাই যখন ভূমিকম্প হয়, যখন পর্বত ভেঙে সমুদ্রে পড়ে যায়
তখন আমরা ভয় পাই না।
3 যখন সমুদ্র উত্তাল হয়ে ওঠে আর গর্জন করে
এবং পর্বত যখন কেঁপে ওঠে, তখন আমরা ভয় পাই না।
4 একটি নদী আছে যার স্রোত ঈশ্বরের শহরে
পরাৎপরের পবিত্র শহরে আনন্দ বয়ে আনে।
5 সেই শহরে ঈশ্বর আছেন, তাই কোনদিন তা ধ্বংস হবে না।
সূর্যোদয়ের আগেই ঈশ্বর সেখানে সাহায্যের জন্য উপস্থিত থাকবেন।
6 যখন প্রভু গর্জন করবেন, পৃথিবী ভেঙে পড়বে,
জাতিগুলি ভয়ে কাঁপবে এবং রাজত্বগুলি ভেঙে পড়বে।
7 সর্বশক্তিমান প্রভু আমাদের সঙ্গে আছেন।
যাকোবের ঈশ্বরই আমাদের নিরাপদ স্থান।
8 প্রভু যে সব ক্ষমতা সম্পন্ন কাজ করেন তা দেখ।
পৃথিবীতে তিনি যে সব বিস্ময়কর জিনিসগুলি করেছেন সেগুলো দেখ।
9 প্রভু এই পৃথিবীর যে কোন জায়গার যুদ্ধ থামিয়ে দিতে পারেন।
তিনি একজন সৈনিকের ধনু ভেঙে দিতে পারেন।
তিনি তাদের বল্লম চূর্ণবিচূর্ণ করে দিতে পারেন
এবং তিনি তাদের রথও পুড়িয়ে দিতে পারেন।
10 ঈশ্বর বলেন, “লড়াই বন্ধ কর এবং আমিই যে ঈশ্বর এই শিক্ষা গ্রহণ কর!
আমিই সেই জন, যে জাতিগণকে পরাজিত করি!
আমিই পৃথিবীকে নিয়ন্ত্রণ করি!”
11 সর্বশক্তিমান প্রভু আমাদের সঙ্গে আছেন।
যাকোবের ঈশ্বরই আমাদের নিরাপদ স্থান।
পরিচালকের প্রতি: কোরহ পরিবারের থেকে একটি গীত।
47 হে পৃথিবীর জনগণ, তোমরা হাততালি দাও!
মহানন্দে ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে ধ্বনি দাও!
2 পরাৎপর প্রভু বড় ভয়ঙ্কর।
তিনি সারা পৃথিবীর মহান রাজা।
3 তিনি আমাদের অন্য লোকদের পরাজিত করতে সাহায্য করেন।
ঐসব জাতিকে তিনি আমাদের অধীনস্থ করেছেন।
4 প্রভুই আমাদের জন্য নির্দিষ্ট ভূখণ্ড মনোনীত করেছেন।
যাকোব, যাকে তিনি ভালোবাসতেন, তাঁর জন্য তিনিই সুন্দর ভূখণ্ড মনোনীত করেছেন।
5 শিঙা ও ভেরীর শব্দের মাঝে প্রভু
তাঁর সিংহাসনে আরোহণ করেন।
6 ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে প্রশংসা কর, তাঁর প্রশংসা কর।
আমাদের রাজার প্রশংসাগীত গাও, তাঁর প্রশংসা কর।
7 ঈশ্বরই সারা পৃথিবীর রাজা।
তাঁরই প্রশংসা কর।
8 ঈশ্বর তাঁর পবিত্র সিংহাসনে বসেন।
তিনি সব জাতিকে শাসন করেন।
9 সব জাতির নেতারা অব্রাহামের ঈশ্বরের
লোকদের সঙ্গে একত্র হয়।
পৃথিবীর সব জাতির সকল নেতা ঈশ্বরের অধীন।
ঈশ্বর তাদের সবার ওপরে বিরাজ করেন!
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International