Print Page Options
Previous Prev Day Next DayNext

M’Cheyne Bible Reading Plan

The classic M'Cheyne plan--read the Old Testament, New Testament, and Psalms or Gospels every day.
Duration: 365 days
Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)
Version
1 শমূয়েল 19

যোনাথন দায়ূদকে সাহায্য করল

19 শৌল তাঁর পুত্র যোনাথনকে এবং আধিকারিকদের দায়ূদকে হত্যা করবার আদেশ দিলেন। কিন্তু যোনাথন দায়ূদকে ভালবাসত। 2-3 যোনাথন দায়ূদকে সাবধান করে বলল, “সাবধান! শৌল তোমাকে মারবার সুযোগ খুঁজছে। সকাল বেলা মাঠে গিয়ে লুকিয়ে থেকো। আমি পিতাকে নিয়ে সেই মাঠে আসব এবং তুমি যেখানে লুকিয়ে থাকবে তার কাছে গিয়ে দাঁড়াব। আমি তোমার ব্যাপারে পিতার সঙ্গে কথা বলব। তারপর আমি কি জানলাম তা তোমাকে জানাব।”

পিতার সঙ্গে যোনাথন কথা বলতে লাগল। সে দায়ূদের গুণগান করল। সে পিতাকে বলল, “তুমি হচ্ছ রাজা। দায়ূদ তোমার দাস। সে তোমার কোন ক্ষতি করে নি, সুতরাং তার প্রতি তুমি অন্যায় ব্যবহার করো না। সে তো সর্বদা তোমার ভালই করেছে। পলেষ্টীয়কে হত্যা করতে গিয়ে সে তার জীবন বিপন্ন করেছিল। আর প্রভু ইস্রায়েলীয়দের জন্য মহাবিজয় এনেছিলেন। তুমি স্বচক্ষে এসব দেখেছিলে, তুমি খুশিও হয়েছিলে। তাহলে কেন তুমি দায়ূদকে মারতে চাও? সে নির্দোষ। তাকে মেরে ফেলার কোন কারণই দেখছি না।”

শৌল যোনাথনের কথা শুনলেন। শুনে তিনি প্রতিজ্ঞা করে বললেন, “যেমন প্রভুর অস্তিত্ব নিশ্চিত তেমনই নিশ্চিত হও যে দায়ূদকে হত্যা করা হবে না।”

যোনাথন দায়ূদকে ডেকে সব বলল। সে দায়ূদকে শৌলের কাছে ডেকে আনল। তাই দায়ূদ আগের মতই শৌলের কাছে থেকে গেলেন।

শৌল আবার দায়ূদকে হত্যা করতে চাইলেন

আবার যুদ্ধ শুরু হল। দায়ূদ পলেষ্টীয়দের সঙ্গে লড়তে গেলেন। তিনি তাদের হারিয়ে দিলেন। তারা পালিয়ে গেল। কিন্তু প্রভুর কাছ থেকে এক দুষ্ট আত্মা শৌলের উপর এল। তিনি ঘরে বসেছিলেন। তাঁর হাতে ছিল বল্লম। দায়ূদ বীণা বাজাচ্ছিলেন। 10 শৌল বল্লম ছুঁড়ে দায়ূদকে দেওয়ালে গেঁথে দিতে গেলেন, কিন্তু দায়ূদ লাফ দিয়ে সরে গেলেন। বল্লম ফসকে গিয়ে দেওয়ালে বিঁধে গেল। সেই রাত্রে দায়ূদ পালিয়ে গেলেন।

11 দায়ূদের বাড়িতে শৌল লোক পাঠালেন। তারা সারারাত দায়ূদের বাড়ির কাছাকাছি পাহারা দিল। তারা সকালে দায়ূদকে হত্যা করবে বলে অপেক্ষা করছিল। কিন্তু দায়ূদের স্ত্রী মীখল দায়ূদকে সাবধান করে দিয়েছিল। সে বলল, “আজ রাত্রেই তুমি পালিয়ে গিয়ে নিজেকে বাঁচাও, না হলে ওরা কালই তোমাকে মেরে ফেলবে।” 12 মীখল দায়ূদকে জানালা দিয়ে নীচে নামতে সাহায্য করল। দায়ূদ পালিয়ে গিয়ে রক্ষা পেলেন। 13 মীখল গৃহদেবতাকে নিয়ে তাকে কাপড় পরাল। তারপর বিছানার ওপর মূর্ত্তিটাকে রাখল। মূর্ত্তির মাথায় কিছু ছাগলের চুলও ছড়িয়ে দিল।

14 শৌল দায়ূদকে ধরে আনার জন্য লোক পাঠালেন। কিন্তু মীখল বলল, “দায়ূদের অসুখ করেছে।”

15 লোকরা শৌলকে একথা বলতে শৌল আবার তাদের দায়ূদকে আনার জন্য পাঠালেন। শৌল তাদের বলে দিলেন, “দায়ূদকে শুয়ে থাকা অবস্থাতেই নিয়ে আসবে। আমি তাকে হত্যা করব।”

16 আবার তারা দায়ূদের বাড়ি গেল। বাড়ির ভেতর ঢুকে ঘরে গিয়ে দেখল বিছানার ওপর দেবতার মূর্ত্তি, মূর্ত্তির মাথায় ছাগলের চুল।

17 শৌল মীখলকে বললেন, “তুমি কেন আমার সঙ্গে এইভাবে চালাকি করলে? কেন তুমি আমার শত্রুকে পালাতে দিলে? দায়ূদ তো পালিয়ে গেছে!”

মীখল বলল, “দায়ূদ বলেছিলেন, আমি যদি ওকে পালাতে সাহায্য না করি তাহলে তিনি আমাকে হত্যা করবেন।”

দায়ূদ রামায় শিবিরে গেলেন

18 দায়ূদ পালিয়ে গিয়ে রামায় শমূয়েলের কাছে এলেন। শৌল তাঁর প্রতি কি করেছেন সে সব দায়ূদ শমূয়েলকে বললেন। তারপর তাঁরা দুজন তাঁবুগুলোর দিকে গেলেন। সেখানে ভাববাদীরা থাকত। সেখানেই দায়ূদ থেকে গেলেন।

19 শৌল জেনেছিলেন দায়ূদ রামার কাছাকাছি তাঁবুগুলোর মধ্যেই আছেন। 20 শৌল দায়ূদকে বন্দী করে আনার জন্য লোক পাঠালেন। কিন্তু তারা যখন সেখানে এলো, তখন একদল ভাববাদী ভাববাণী করছিল। তাদের নেতা শমূয়েল সেখানে দাঁড়িয়ে। শৌলের লোকদের ওপরও ঈশ্বরের আত্মা এলেন, তাই তারাও ভাববাণী করতে শুরু করল।

21 শৌলের কানে এ খবর পৌঁছল। তিনি তখন অন্য একদল লোক পাঠালেন। তারাও সেখানে গিয়ে ভাববাণী করতে শুরু করল। তারপর শৌল তৃতীয় একদল প্রতিনিধি পাঠালেন। তারাও ভাববাণী করতে শুরু করল। 22 অবশেষে শৌল নিজেই রামায় গেলেন। যেখানে ফসল ঝাড়াই হয় তার পাশে একটি বড় কুয়োর দিকে শৌল চলে এলেন। কুয়োটা ছিল সেখু নামে একটা জায়গায়। শৌল সেখানে গিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, “শমূয়েল আর দায়ূদ কোথায়?”

লোকরা বলল, “তারা রামার কাছে তাঁবুগুলোতে রয়েছে।”

23 শৌল তখন রামার কাছে তাঁবুগুলোর দিকে গেলেন। এবার শৌলের উপরও ঈশ্বরের আত্মা নেমে এলো। শৌল ভাববাণী করতে শুরু করলেন। রামার তাঁবুগুলোর দিকে রাস্তায় যতই এগোলেন ততই তিনি আরো বেশী করে ভাববাণী করতে লাগলেন। 24 তারপর শৌল তাঁর পোশাক খুলে ফেললেন এবং শমূয়েলের সামনেই ভাববাণী করতে লাগলেন। সমস্ত দিন সমস্ত রাত তিনি নগ্ন হয়ে পড়ে রইলেন।

সেই জন্য লোকে বলে, “শৌল কি তবে ভাববাদীদের মধ্যে একজন?”

1 করিন্থীয় 1

পৌল, যিনি ঈশ্বরের ইচ্ছা অনুযায়ী খ্রীষ্ট যীশুর প্রেরিতরূপে আহুত তাঁর কাছ থেকে ও আমাদের ভাই সোস্থিনির কাছ থেকে এই পত্র।

করিন্থের ঈশ্বরের মণ্ডলী ও যারা খ্রীষ্ট যীশুতে পবিত্র বলে গন্য হয়েছে, তাদের উদ্দেশ্যে এই পত্র। তোমরা ঈশ্বরের পবিত্র লোক হবার জন্য আহুত হয়েছ। সব জায়গায় যে সব লোকেরা প্রভু যীশু খ্রীষ্টের নামে ডাকে তাদের সঙ্গে তোমরাও আহুত। তিনি তাদেরও এবং আমাদেরও প্রভু।

আমাদের পিতা ঈশ্বর ও প্রভু যীশু খ্রীষ্টের কাছ থেকে অনুগ্রহ ও শান্তি যেন তোমাদের ওপর বর্ষিত হয়।

পৌল ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিলেন

খ্রীষ্ট যীশুর মাধ্যমে ঈশ্বর যে অনুগ্রহ তোমাদের দিয়েছেন, তার জন্য আমি সবসময় ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। খ্রীষ্ট যীশুর আশীর্বাদে তোমরা সব কিছুতে, সমস্ত রকম বলবার ক্ষমতায় ও জ্ঞানে উপচে পড়ছ। এইভাবে খ্রীষ্ট সম্পর্কে সত্য তোমাদের মধ্যে প্রমাণিত হয়েছে। এর ফলে ঈশ্বরের কাছ থেকে পাওয়া বরদানের কোন অভাব তোমাদের নেই। তোমরা প্রভু যীশু খ্রীষ্টের অপেক্ষায় আছ; তিনি তোমাদের শেষ পর্যন্ত স্থির রাখবেন, যেন আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের ফিরে আসার দিন পর্যন্ত তোমরা নির্দোষ থাক। ঈশ্বর বিশ্বস্ত; তিনিই সেইজন যাঁর দ্বারা তোমরা তাঁর পুত্র, আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের সহভাগীতা লাভের জন্য আহুত হয়েছ।

করিন্থে খ্রীষ্ট মণ্ডলীতে সঙ্কট

10 কিন্তু আমার ভাই ও বোনেরা, আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের নামে আমি তোমাদের কাছে অনুরোধ করছি, তোমাদের পরস্পরের মধ্যে যেন মতৈক্য থাকে, দলাদলি না থাকে। তোমরা সকলে যেন এক মন-প্রাণ হও ও সকলের উদ্দেশ্য একই হয়।

11 আমার ভাই ও বোনেরা, আমি ক্লোয়ীর বাড়ির লোকদের কাছে শুনেছি যে তোমাদের মধ্যে নানা বাক্-বিতণ্ডা লেগেই আছে। 12 আমি যা বলতে চাই তা হল এই: তোমাদের মধ্যে কেউ কেউ বলে, “আমি পৌলের অনুগামী,” আবার কেউ কেউ বলে, “আমি আপল্লোর,” আর কেউ কেউ বলে, “আমি কৈফার (পিতরের),” আবার কেউ কেউ বলে, “আমি খ্রীষ্টের অনুগামী।” 13 খ্রীষ্টকে কি ভাগ করা যায়? পৌল কি তোমাদের জন্য ক্রুশবিদ্ধ হয়েছিলেন? তোমরা কি পৌলের নামে বাপ্তিস্ম নিয়েছিলে? 14 আমি ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিই যে, আমি ক্রীষ্প ও গায়ঃ ছাড়া তোমাদের আর কাউকে বাপ্তিস্ম দিই নি। 15 যাতে কেউ বলতে না পারে যে তোমরা আমার নামে বাপ্তিস্ম নিয়েছ। 16 তবে হ্যাঁ, আমি স্তিফানের পরিবারকেও বাপ্তিস্ম দিয়েছি। এছাড়া আর কাউকে বাপ্তিস্ম দিয়েছি বলে আমার জানা নেই। 17 কারণ খ্রীষ্ট আমাকে বাপ্তিস্ম দেবার জন্য নয় কিন্তু সুসমাচার প্রচারের জন্য পাঠিয়েছেন। তিনি আমাকে সেই সুসমাচার জাগতিক জ্ঞানের ভাষায় প্রচার করতে পাঠান নি, যাতে খ্রীষ্টের ক্রুশের পরাক্রম বিফল না হয়।

খ্রীষ্টের মধ্যে ঈশ্বরের পরাক্রম ও প্রজ্ঞা

18 যারা ধ্বংসের পথে চলেছে তাদের কাছে ক্রুশের এই শিক্ষা মুর্খতা; কিন্তু আমরা যারা উদ্ধার লাভ করছি আমাদের কাছে এ ঈশ্বরের পরাক্রমস্বরূপ। 19 কারণ শাস্ত্রে লেখা আছে:

“আমি জ্ঞানীদের জ্ঞান নষ্ট করব
আর বুদ্ধিমানদের বুদ্ধি ব্যর্থ করব।” (A)

20 জ্ঞানী লোক কোথায়? শিক্ষিত লোকই বা কোথায়? এ যুগের দার্শনিকই বা কোথায়? ঈশ্বর কি জগতের এইসব জ্ঞানকে মূর্খতায় পরিণত করেন নি? 21 তাই ঈশ্বর তাঁর প্রজ্ঞায় যখন বুঝলেন যে জগত তার নিজের জ্ঞান অনুসারে ঈশ্বরকে পেল না, তখন ঈশ্বর স্থির করলেন যে প্রচারিত বার্তার মূর্খতায় যারা বিশ্বাস করে তাদের তিনি উদ্ধার করবেন।

22 কারণ ইহুদীরা অলৌকিক চিহ্ন চায়, আর গ্রীকরা প্রজ্ঞার অন্বেষণ করে। 23 কিন্তু আমরা সেই খ্রীষ্ট, যিনি ক্রুশে প্রাণ দিয়েছিলেন, তাঁর সম্বন্ধে প্রচার করি। ইহুদীদের কাছে তা প্রবল বাধাস্বরূপ আর অইহুদীদের কাছে তা মূর্খতাস্বরূপ। 24 কিন্তু ইহুদী ও অইহুদী, ঈশ্বর যাদের আহ্বান করেছেন তাদের সকলের কাছে খ্রীষ্টই ঈশ্বরের পরাক্রম ও প্রজ্ঞাস্বরূপ। 25 কারণ ঈশ্বরের যে মূর্খতা তা মানুষের জ্ঞানের থেকে অনেক বেশী জ্ঞানসম্পন্ন; আর ঈশ্বরের যে দুর্বলতা তা মানুষের শক্তি থেকে অনেক শক্তিশালী।

26 আমার ভাই ও বোনেরা, ঈশ্বর তোমাদের আহ্বান করেছেন। একটু ভেবে দেখো তো! জগতের বিচারে তোমরা অনেকে যে জ্ঞানী ছিলে তা নয়, ক্ষমতাসম্পন্ন ব্যক্তি ছিলে তাও নয় বা অনেকে যে অভিজাত বংশে জন্মেছিলে তাও নয়; 27 কিন্তু ঈশ্বর জগতের মূর্খ বিষয় সকল মনোনীত করলেন যাতে সেগুলি জ্ঞানীদের লজ্জা দেয়। ঈশ্বর জগতের দুর্বল বিষয় সকল মনোনীত করলেন যাতে ঐগুলি বলবানদের লজ্জা দেয়। 28 জগতের কাছে যা তুচ্ছ ও ঘৃণিত, যার কোন মূল্যই নেই, সেই সব ঈশ্বর মনোনীত করলেন, যাতে যা কিছু জগতের ধারণায় মূল্যবান সেই সমস্তকে তিনি ধ্বংস করতে পারেন। 29 ঈশ্বর এই কাজ করলেন যাতে কেউ তাঁর সামনে গর্ব করতে না পারে। 30 ঈশ্বরই তোমাদের খ্রীষ্ট যীশুর সাথে যুক্ত করেছেন। খ্রীষ্টই আমাদের কাছে ঈশ্বরের দেওয়া জ্ঞান, তিনিই আমাদের ধার্মিকতা, পবিত্রতা ও যুক্তি। 31 শাস্ত্রে যেমন লেখা আছে, “যে কেউ গর্ব করে সে প্রভুতেই গর্ব করুক।” (B)

বিলাপ 4

জেরুশালেম আক্রমণের ভয়াবহতা

দেখো, সোনা কিভাবে কৃষ্ণবর্ণ হয়েছে।
    দেখো, দামী সোনার কি পরিবর্তন।
চারিদিকেই মন্দিরের পাথরগুলো ইতস্ততঃ ছড়িয়ে আছে।
    তাদের রাস্তার প্রতিটি কোণে বিক্ষিপ্ত করা হয়েছে।
সিয়োনের লোকরা খুব মূল্যবান ছিল।
    তারা একসময় সোনার মতোই মূল্যবান ছিল।
শত্রুরা তাদের কুমোরদের তৈরী
    মাটির পাত্রের মত ব্যবহার করে।
এমনকি শিয়ালও তার শাবকদের স্তন পান করায়।
    কিন্তু আমার লোকরা খুব নিষ্ঠুর হয়ে উঠেছে।
    তারা মরুভূমিতে থাকা উট পাখীর মতো।
তৃষ্ণায় ছোট্ট শিশুর জিভটা মুখে আটকে পড়েছে।
    ছেলেমেয়েরা খাবার চাইছে।
    কিন্তু কেউই তাদের খাবার দেয় না।
এক সময় যারা খুব দামী দামী খাবার খেয়েছে,
    এখন তারাই খিদের জ্বালায় রাস্তায় মরছে।
সুন্দর লাল পোশাক পরে যারা এমশঃ বড় হয়েছে,
    তারাই এখন খাদ্যের সন্ধানে আবর্জনার স্তুপ ঘেঁটে ফিরছে।
তাদের পাপ কার্যের জন্য
    আমার লোকদের শাস্তি সদোমের পাপের
    কারণে শাস্তির চেয়েও বড় হয় গেছে।
সদোম ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছিল কারণ ঐ জায়গার লোকরা পাপী হয়ে উঠেছিল।
    সদোমকে হঠাৎ‌‌ ধ্বংস করা হয়েছিল।
    কোন মানুষ ঐ ধ্বংস কার্য ঘটায়নি।
সিয়োনের নেতারা বরফের চেয়েও পরিষ্কার ছিল।
    দুধের থেকেও সাদা।
প্রবালের মত ছিল তাদের গায়ের রঙ।
    তাদের দাড়ি ছিল নীলকান্ত মণির মতো।
কিন্তু এখন তাদের মুখ ঝুলের থেকেও কালো।
    রাস্তায় বার হলে কেউ তাদের চিনতে পর্যন্ত পারে না।
তাদের চামড়াগুলি হাড়ের ওপর ঝুলছে
    এবং কাঠের মত শুকিয়ে গেছে।
দুর্ভিক্ষে মরার চেয়ে তরবারির আঘাতে মরা ভাল।
    অনাহারে থাকা জনগণ ভীষণ অবসন্ন।
তারা আহত।
    শস্যক্ষেত্র থেকে তারা কোন ফসল পায় নি তাই খাদ্যের অভাবে তারা মারা গিয়েছে।
10 এমনকি, সমস্ত সুন্দরী মায়েরা
    তাদের সন্তানদেরই খাদ্যের মতো রান্না করেছে।
ওই শিশুগুলি তাদের মায়েদের খাদ্য হয়ে উঠেছিল।
    আমার লোকদের ধ্বংসের সময় এটা ঘটেছিল।
11 প্রভু, তাঁর সমস্ত ক্রোধ ব্যবহার করেছেন।
    তিনি ক্রোধের আগুন সিয়োনে নিক্ষেপ করেছেন।
ওই আগুন সিয়োনকে
    পুড়িয়ে ছারখার করে দিয়েছে।
12 পৃথিবীর রাজারা এই ঘটনার কথা
    বিশ্বাস করতে পারেন নি।
যা ঘটেছিল বিশ্বের মানুষরা
    তা বিশ্বাস করতে পারে নি।
তারা বিশ্বাস করতে পারেনি যে
    জেরুশালেম শহরের প্রধান ফটক দিয়ে শত্রুরা ঢুকতে সক্ষম হবে।
13 কিন্তু এটাই ঘটেছে
    কারণ জেরুশালেমের ভাববাদীরা পাপ কাজ করেছে।
এটা ঘটেছে কারণ জেরুশালেমের যাজকরা পাপ কাজ করেছে।
    ঐসব লোকরা জেরুশালেম শহরে ভাল মানুষদের হত্যা করেছে।
14 তারা অন্ধের মত শহরের রাস্তায় রাস্তায় ঘুরেছে।
    রক্তপাতে তারা নোংরা হয়েছে।
তারা এতো নোংরা ছিল যে
    তাদের জামাকাপড়ও কেউ স্পর্শ করে নি।
15 চলে যাও! তোমরা অশুচি।
    লোকরা চিৎকার করে বলছিল, “দূর হয়ে যাও!
দূর হয়ে যাও! আমাদের স্পর্শ কোরো না।”
ঐ লোকরা এদিক ওদিক ঘুরে বেড়িয়েছে কিন্তু কোন ঘরেই আশ্রয় পায়নি।
    অন্য দেশের লোকরা বলেছে, “আমরা ওদের বাঁচতে দিতে চাই না।”
16 প্রভু স্বয়ং ওদের ধ্বংস করেছেন।
    তিনি ওদের আর দেখাশোনা করতে পারছিলেন না।
তিনি যাজকদের শ্রদ্ধা করতে পারেন নি।
    তিনি যিহূদার বয়স্ক মানুষদের প্রতি বন্ধুভাবাপন্ন ছিলেন না।
17 সাহায্য চেয়ে চেয়ে আমরা চোখ নষ্ট করে ফেলেছি।
    কিন্তু কোন সাহায্য আসে নি।
আমরা একটা জাতির খোঁজ করেছিলাম যারা আমাদের রক্ষা করতে পারবে।
আমরা আমাদের পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র থেকে নজর রেখেছিলাম
    কিন্তু কোন জাতিই আমাদের রক্ষা করতে আসেনি।
18 শত্রুরা সবসময় আমাদের খুঁজে ফিরেছে।
    আমরা পথেঘাটে বেরোতে পর্যন্ত পারিনি।
আমাদের শেষ সময় ঘনিয়ে এসেছিল।
    আমাদের সময় ফুরিয়ে গিয়ে শেষ সময় ঘনিয়ে এল।
19 যে মানুষটা আমাদের তাড়া করেছিল
    তার গতিবেগ আকাশে উড়তে থাকা ঈগলের থেকেও বেশী।
ওই লোকগুলো আমাদের ধরবার জন্য পাহাড়ে তাড়া করেছিল
    এবং আমাদের হঠাৎ‌‌ আক্রমণ করবার জন্য মরুভূমিতে লুকিয়ে থেকেছিল।
20 রাজা আমাদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিলেন।
তিনি আমাদের শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়ার মতো গুরুত্বপূর্ণ ছিলেন।
    কিন্তু সেই প্রিয় রাজাকেও ওরা ফাঁদে ফেলল।
রাজাকে প্রভুই ফাঁদে অভিষিক্ত করেছিলেন।
    যে রাজার সম্বন্ধে বলতাম, “আমরা রাজার ছায়াতেই বাঁচব।
    তিনি অন্য জাতির হাত থেকে আমাদের রক্ষা করবেন।”
21 ইদোমের জনগণ, সুখী হও।
    ইদোমের লোকরা তোমরা যারা উসে থাকো, সুখী হও।
কিন্তু মনে রেখো প্রভুর পানপাত্র তোমারও চারিদিক ঘিরে আসবে।
যখন তুমি সেই পানপাত্রে চুমুক দেবে (শাস্তি পাবে), তখন তুমি মাতাল হবে।
    তুমি সেই সময় নিজেকে উলঙ্গ করে ফেলবে।
22 সিয়োন, তোমার শাস্তি সম্পূর্ণ।
    তোমাকে আর বন্দী করে রাখা হবে না।
কিন্তু ইদোমের জনগণ, প্রভু তোমাদের পাপের শাস্তি দেবেন।
    তিনি তোমাদের পাপের মুখোশ খুলে দেবেন।

গীতসংহিতা 35

দায়ূদের একটি গীত।

35 হে প্রভু, আমার বিরোধীপক্ষের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করুন!
    যারা আমার সঙ্গে যুদ্ধ করেছে তাদের সঙ্গে আপনি যুদ্ধ করুন!
প্রভু, ঢাল এবং বর্ম তুলে নিন।
    উঠুন এবং আমায় সাহায্য করুন।
বর্শা এবং বল্লম হাতে তুলে নিন
    এবং যারা আমার বিরুদ্ধে রয়েছে তাদের সঙ্গে যুদ্ধ করুন।
    হে প্রভু আমার আত্মাকে বলুন, “আমি তোমায় উদ্ধার করবো।”

কিছু লোক আমাকে হত্যা করতে চাইছে।
    ওদের পরাজিত এবং লজ্জিত করুন।
    এমন করুন যেন ওরা পিছন ফিরে পালিয়ে যায়।
ওরা আমায় আঘাত করার চক্রান্ত করছে।
    ওদের পরাজিত ও নাস্তানাবুদ করে ছাড়ুন।
ওদের তুষের মত বাতাসে উড়িয়ে দিন।
    প্রভুর দূত যেন ওদের ধাওয়া করে।
প্রভু ওদের পথ অন্ধকারময় এবং পিচ্ছিল করে দিন।
    প্রভুর দূত যেন ওদের তাড়া করে।
আমি ওদের কাছে কোন ভুল কাজ করিনি কিন্তু ঐসব লোক আমাকে ফাঁদে ফেলতে চাইছে।
    সম্পূর্ণ বিনা কারণে ওরা আমায় ফাঁদে ফেলতে চাইছে।
তাই প্রভু, ওদের নিজেদের ফাঁদেই ওদের ফেলুন।
    নিজেদের জালেই ওরা হোঁচট খাক্।
    কোন অজানা বিপদ যেন ওদের উপরে বর্তায়।
তখন আমি প্রভুতে আনন্দ করবো।
    তিনি যখন আমায় উদ্ধার করবেন তখন আমি সুখী হবো।
10 আমার সমস্ত সত্ত্বা দিয়ে আমি বলব, “প্রভু আপনার মত কেউই নেই।
    শক্তিশালী লোকেদের হাত থেকে আপনি একজন দুর্বল লোককে বাঁচিয়েছেন।
আপনি একজন দরিদ্র লোককে উদ্ধার করেন
    যার কাছ থেকে লোকে চুরি করতে চেষ্টা করে।”
11 একদল মিথ্যা সাক্ষী আমায় আঘাত করবার জন্য পরিকল্পনা করছে।
    ওরা আমায় নানা প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করবে। আমি কিন্তু জানি না ওরা কি বিষয়ে বলছে।
12 আমি কেবলমাত্র ভাল কাজই করেছি।
    কিন্তু ওরা আমার প্রতি খারাপ কাজই করবে।
    প্রভু, যে রকম ভালো জিনিস আমার প্রাপ্য তা আমায় দিন।
13 যখন ওরা অসুস্থ হয়েছিলো, আমি ওদের জন্য দুঃখ পেয়েছিলাম।
    উপবাসের মাধ্যমে আমি সেই দুঃখ প্রকাশ করেছি।
    ওদের জন্য প্রার্থনা করে এটাই কি আমার প্রাপ্য?
14 ঐসব লোকদের জন্য আমি দুঃখের পোশাক পরেছিলাম এবং ওদের আমি আমার বন্ধুর মত, এমন কি ভাইয়ের মত দেখেছিলাম।
    মায়ের মৃত্যুর পর যে লোকটা কাঁদে আমি তার মতই দুঃখিত ছিলাম।
    ওদের দুঃখের কারণে আমি কালো কাপড় পরেছিলাম এবং দুঃখে মাথা নত করে আমি হাঁটাচলা করতাম।
15 কিন্তু যখন আমি একটু ভুল করলাম, ওরা আমায় উপহাস করলো।
    ওরা আসলে প্রকৃত বন্ধু ছিল না।
আমি ওদের চিনতামও না, কিন্তু চারিদিক থেকে ওরা আমায় ঘিরেছিল এবং আক্রমণ করেছিল।
16 অত্যন্ত খারাপ ভাষায় ওরা আমায় বিদ্রূপ করেছে।
    ওরা আমার বিরুদ্ধে ক্রোধ দেখিয়ে দাঁত কিড়মিড় করে।

17 হে আমার প্রভু, আর কতদিন আপনি এইসব খারাপ ঘটনা ঘটতে শুধুই দেখে যাবেন?
    ওরা আমায় ধ্বংস করতে চাইছে।
হে প্রভু, আমার জীবন রক্ষা করুন।
    আমার প্রিয় জীবনকে ওদের থেকে রক্ষা করুন। ওরা সিংহের মত হিংস্র।

18 প্রভু মন্দিরের মহাসমাজে আমি আপনার প্রশংসা করবো।
    সেই বলবান জনতার সামনে আমি আপনার প্রশংসা করবো।
19 ঐসব শত্রুকে কোন কারণেই আমাকে ঘৃণা করতে অথবা পরাজিত করতে দেবেন না।
    আমাকে ওদের বিদ্রূপের পাত্র হতে দেবেন না।
    ওদের গোপন পরিকল্পনার জন্য ওরা অবশ্যই শাস্তি পাবে।
20 আমার শত্রুরা প্রকৃতপক্ষে শান্তির জন্য পরিকল্পনা করছে না।
    ওরা দেশের শান্তিপ্রিয় লোকদের বিরুদ্ধে অনিষ্টকর কাজ করার জন্য গোপনে পরিকল্পনা করছে।
21 শত্রুরা আমার সম্পর্কে বাজে কথা বলে চলেছে।
    ওরা মিথ্যা কথা বলে, ওরা বলে “হ্যাঁ হ্যাঁ জানি, তুমি কি করছো।”
22 হে প্রভু আপনি অবশ্যই দেখতে পাচ্ছেন প্রকৃতপক্ষে কি ঘটছে।
    তাই, চুপ করে থাকবেন না।
    আমায় ছেড়ে যাবেন না।
23 প্রভু, উঠুন! জাগুন!
    হে আমার প্রভু, আমার ঈশ্বর, আমার জন্য লড়াই করুন, আমাকে ন্যায় বিচার দিন।
24 প্রভু, আমার ঈশ্বর, আপনার নিরপেক্ষতা দিয়ে আমার বিচার করুন।
    ঐ লোকগুলোকে আমার প্রতি বিদ্রূপ করতে দেবেন না।
25 ওরা যেন বলতে না পারে, “হ্যাঁ! এইতো আমরা যা চেয়েছি, তাই পেয়েছি!”
    ওরা যেন বলতে না পারে, “আমরা ওকে ধ্বংস করেছি!”
26 আমি আশা করি, আমার সব শত্রু লজ্জিত ও অপমানিত হবে।
    যখন আমার কিছু খারাপ হয়েছিল, তখন ওরা খুব খুশী হয়েছিল।
ওরা ভেবেছিলো ওরা আমার থেকে বেশী ভালো!
    তাই, ওই সব লোক যেন লজ্জা ও অবমাননায় ঢেকে যায়।
27 কিছু লোক চায় আমার ভালো হোক্। আমি আশা করি, ওরা প্রচণ্ড সুখী হবে!
    ওরা সব সময় বলে, “প্রভু মহান!
    যা তাঁর দাসের পক্ষে মঙ্গলকর, তিনি তাই চান।”

28 তাই হে প্রভু, আমি লোকদের বলি, আপনি কত ভাল।
    প্রতিদিনই আমি আপনার প্রশংসা করি।

Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)

Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International