M’Cheyne Bible Reading Plan
দায়ূদ ও যোনাথনের মধ্যে ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্ব
18 1-2 শৌলের সঙ্গে দায়ূদের কথাবার্তার পর শৌল দায়ূদের বেশ অন্তরঙ্গ হয়ে উঠলেন। তিনি নিজেকে যতটা ভালবাসতেন, দায়ূদকেও ততটা ভালবেসেছিলেন। সে দিন থেকে, শৌল দায়ূদকে তাঁর কাছে রেখে দিলেন। তিনি দায়ূদকে তাঁর পিতার কাছে ফিরে যেতে দিলেন না। 3 যোনাথন দায়ূদকে খুব ভালবাসত। সে দায়ূদের সঙ্গে একটা চুক্তি করল। 4 যোনাথন নিজের গা থেকে কোট খুলে দায়ূদকে দিল। তার পোশাকও সে দায়ূদকে দিয়ে দিল। এমন কি সে তার ধনুক, তরবারি ও কোমরবন্ধও ওঁকে দিয়ে দিল।
শৌল দায়ূদের সাফল্য লক্ষ্য করলেন
5 শৌল দায়ূদকে নানা জায়গায় যুদ্ধ করতে পাঠালেন। প্রত্যেক ক্ষেত্রেই দায়ূদ ভালভাবেই সফল হলেন। তারপর শৌল তাঁকে সৈন্যদের অধিনায়ক করে দিলেন। এতে সকলেই খুশী হল, এমনকি শৌলের সৈন্যবাহিনীর পদস্থ কর্মীরাও। 6 দায়ূদ পলেষ্টীয়দের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে গিয়েছিলেন। যুদ্ধ থেকে ফেরার পথে ইস্রায়েলের প্রতিটি শহর থেকে মেয়েরা তাঁকে দেখবার জন্য বেরিয়ে এল। তারা তবলা ও বীণা বাজিয়ে আনন্দ উল্লাস করল এবং নাচল। তারা এসব শৌলের সামনেই করল। 7 স্ত্রীলোকরা গাইল,
“শৌল বধিলেন শত্রু হাজারে হাজারে,
আর দায়ূদ বধিলেন অযুতে অযুতে।”
8 তাদের এই গান শুনে শৌলের মন খারাপ হয়ে গেল। তিনি খুব রেগে গেলেন। তিনি ভাবলেন, “স্ত্রীলোকরা ভাবছে যে দায়ূদ লাখে লাখে শত্রু বধ করছে আর আমি মেরেছি কেবল হাজারে হাজারে। রাজত্ব ছাড়া আর কি সে পেতে পারে?” 9 এরপর সেই দিন থেকে শৌল দায়ূদকে খুব সতর্কভাবে লক্ষ্য করতে লাগলেন।
শৌল দায়ূদকে ভয় পেলেন
10 ঈশ্বরের কাছ থেকে এক দুষ্ট আত্মা এসে পরদিন শৌলের ওপর ভর করল। শৌল বাড়িতে প্রলাপ বকতে লাগলেন। দায়ূদ রোজকার মত বীণা বাজালেন। 11 কিন্তু শৌলের হাতে বর্শা ছিল। তিনি মনে মনে ভাবলেন, “আমি দায়ূদকে দেওয়ালের সঙ্গে গেঁথে দেব।” তিনি দু-দুবার দায়ূদের দিকে বর্শা ছুঁড়েও দিলেন। কিন্তু দুবারই দায়ূদ নিজেকে বাঁচিয়েছিলেন।
12 প্রভু দায়ূদের সহায় ছিলেন। তিনি শৌলকে ত্যাগ করেছিলেন। শৌল তাই দায়ূদকে ভয় করতেন। 13 তিনি দায়ূদকে তাঁর কাছ থেকে দূর করে দিলেন। শৌল তাঁকে 1000 সৈন্যের অধিনায়ক করেছিলেন। দায়ূদ যুদ্ধে তাঁদের নেতৃত্ব দিলেন। 14 প্রভু ছিলেন দায়ূদের সহায়। তাই দায়ূদ সব কাজেই সফল হতেন। 15 শৌল দায়ূদের সাফল্য দেখতে দেখতে দায়ূদকে আরও বেশী ভয় করতে লাগলেন। 16 কিন্তু ইস্রায়েল ও যিহূদার সমস্ত লোক দায়ূদকে ভালোবাসত। কারণ দায়ূদ তাদের যুদ্ধক্ষেত্রে নিয়ে যেতেন এবং তাদের হয়ে যুদ্ধ করতেন।
শৌল তাঁর কন্যার সঙ্গে দায়ূদের বিয়ে দিতে চাইলেন
17 এদিকে শৌল দায়ূদকে মারতে চান। তিনি একটা মতলব আঁটলেন। তিনি দায়ূদকে বললেন, “আমার বড় মেয়ের নাম মেরব। তুমি তাকে বিয়ে কর। তাহলে তুমি আরও শক্তিশালী সৈন্য হতে পারবে। তুমি আমার পুত্রের মতো হবে। প্রভুর জন্য সব যুদ্ধক্ষেত্রে তুমি যুদ্ধ করবে!” এসব ছিল শৌলের ছল চাতুরি। আসলে তিনি ভেবেছিলেন, “আমাকে আর দায়ূদকে মারতে হবে না। পলেষ্টীয়দেরই এগিয়ে দেব আমার হয়ে ওকে মারবার জন্য।”
18 দায়ূদ বললেন, “আমি খুব একটা গুরুত্বপূর্ণ পরিবার থেকে আসি নি। আমি কোন গণ্যমান্য ব্যক্তি নই। আমি রাজকন্যাকে বিয়ে করার যোগ্য নই।”
19 তাই দায়ূদের সঙ্গে শৌলের কন্যা মেরবের বিয়ের সময় হলে শৌল মহোলা দেশের অদ্রীয়েলের সঙ্গে তার বিয়ে দিলেন।
20 শৌলের আরেকটি কন্যা মীখল দায়ূদকে ভালবাসত। লোকরা শৌলকে জানাল, মীখল দায়ূদকে ভালবাসে। শৌল শুনে খুশী হলেন। 21 শৌল চিন্তা করলেন, “আমি এবার মীখলকে ফাঁদ হিসেবে ব্যবহার করব। আমি দায়ূদের সঙ্গে ওর বিয়ে দেব। তারপর পলেষ্টীয়রা ওকে মেরে ফেলবে।” এই ভেবে তিনি দায়ূদকে দ্বিতীয় বার বললেন, “আমার কন্যাকে তুমি আজই বিয়ে করো।”
22 শৌল তাঁর পদস্থ কর্মচারীদের দায়ূদের সঙ্গে আলাদা করে গোপনভাবে কথা বলতে আদেশ দিলেন। তাকে বলবে, “রাজার তোমাকে খুব পছন্দ হয়েছে। তাঁর উচ্চপদস্থ কর্মচারীরাও তোমাকে পছন্দ করে। রাজার কন্যাকে তুমি বিয়ে করো।”
23 আধিকারিকরা দায়ূদকে সেইমত সব কিছু বলল। দায়ূদ বললেন, “তুমি কি মনে কর রাজার জামাতা হওয়া সোজা কথা? রাজকন্যার উপযুক্ত টাকাপয়সা খরচ করার সাধ্য আমার নেই। আমি নেহাত একজন সামান্য গরীব ছেলে।”
24 তারা শৌলকে দায়ূদের উত্তর জানাল। 25 শৌল তাদের বললেন, “তোমরা দায়ূদকে বলবে, ‘দায়ূদ, রাজকন্যার বিয়েতে কোন টাকপয়সা নেবেন না। শৌল তাঁর শত্রুদের শায়েস্তা করতে চান। তাই কনের দাম হবে 100 পলেষ্টীয়ের লিঙ্গত্বক,’” এটাই ছিল শৌলের গোপন মতলব। সে ভেবেছিল এর ফলে পলেষ্টীয়রা তাকে হত্যা করবে।
26 শৌলের আধিকারিকরা দায়ূদকে এ সম্বন্ধে জানাল। দায়ূদ রাজার জামাতা হবার সুযোগ পেয়ে খুশী হলেন। সেই জন্যই তিনি সঙ্গে সঙ্গে কিছু করতে চাইলেন। 27 দায়ূদ তাঁর লোকদের নিয়ে পলেষ্টীয়দের সঙ্গে যুদ্ধ করতে গেলেন। তিনি 200 জন পলেষ্টীয়কে হত্যা করলেন। আর তাদের লিঙ্গত্বক শৌলকে উপহার দিলেন। তাঁকে রাজার জামাতা হবার জন্য, এই মূল্য দিতে হল।
শৌলের কন্যা মীখলের সঙ্গে দায়ূদের বিয়ে হয়ে গেল। 28 শৌল বুঝতে পারলেন, প্রভু দায়ূদের সহায়। তিনি বুঝতে পারলেন মীখল দায়ূদকে ভালবাসে। 29 তাই শৌল দায়ূদকে আরও বেশী ভয় পেয়ে গেলেন এবং সারাজীবন তাঁর শত্রু হিসেবে রয়ে গেলেন।
30 পলেষ্টীয় সেনাপতিরা ইস্রায়েলীয়দের সঙ্গে যুদ্ধ করতেই থাকল। কিন্তু প্রতিবারই দায়ূদ তাদের যুদ্ধে হারিয়ে দিলেন। এইভাবে তিনি শৌলের সবচেয়ে সেরা অধিকর্তা হয়ে উঠলেন। দায়ূদ বেশ বিখ্যাত হয়ে গেলেন।
পৌলের ব্যক্তিগত শুভেচ্ছাবার্তা
16 এখন আমি খ্রীষ্টেতে আমাদের বোন ফৈবীর জন্য বলছি। কিংক্রিয়াস্থ মণ্ডলীতে তিনি একজন বিশেষ সেবিকা। 2 আমি অনুরোধ করি তোমরা প্রভুতে তাঁকে গ্রহণ করো। ঈশ্বরের লোকরা যেভাবে অপরকে গ্রহণ করে সেইভাবেই তাঁকে গ্রহণ করো। কোন ব্যাপারে যদি তিনি তোমাদের সাহায্য চান তবে তাঁকে সাহায্য করো। তিনি অনেক লোককে, এমনকি আমাকেও খুব সাহায্য করেছেন।
3 যীশু খ্রীষ্টের সেবায় আমার সহকর্মী প্রিষ্কা ও আক্কিলাকে শুভেচ্ছা জানিও। 4 তারা তাদের জীবন বিপন্ন করে আমার জীবন বাঁচিয়েছিল। কেবল আমিই যে তাদের কাছে কৃতজ্ঞ তা নয়, সমগ্র অইহুদী মণ্ডলীও তাদের কৃতজ্ঞতা জানিয়েছে।
5 তাদের গৃহে যে মণ্ডলী সমবেত হন, তাদেরও শুভেচ্ছা জানিও।
আমার প্রিয় বন্ধু ইপেনিতকেও শুভেচ্ছা জানাও, এশিয়ার মধ্যে সেই প্রথম ধর্মান্তরিত হয়ে খ্রীষ্ট ধর্ম গ্রহণ করে।
6 মরিয়মকে শুভেচ্ছা জানিও কারণ সে তোমাদের সকলের জন্য কঠোর পরিশ্রম করেছে।
7 আন্দ্রনীক ও যূনিয়কে শুভেচ্ছা জানিও, তাঁরা আমার স্বজাতি, আমার সঙ্গে তাঁরা কারাগারে বন্দী ছিলেন। তাঁরা প্রেরিতদের মধ্যে বিশিষ্ট ব্যক্তি। আমার আগেই তাঁরা খ্রীষ্টে ছিলেন।
8 প্রভুতে আমার প্রিয় বন্ধু আমপ্লিয়াতকে শুভেচ্ছা জানিও। 9 উর্ব্বানকে শুভেচ্ছা জানিও, তিনি খ্রীষ্টতে আমাদের সহকর্মী।
আমার প্রিয় বন্ধু স্তাখুকে শুভেচ্ছা জানিও। 10 আপিল্লিকে শুভেচ্ছা জানিও, তিনি একজন পরীক্ষা সিদ্ধ খ্রীষ্টীয়ান।
আরিষ্টবুলের পরিবারের সকলকে আমার শুভেচ্ছা জানিও। 11 হেরোদিয়ান, যিনি আমার মতোই একজন ইহুদী, তাঁকে শুভেচ্ছা জানিও;
নার্কিসের পরিবারের মধ্যে যারা প্রভুর, তাদের সকলকে আমার শুভেচ্ছা জানিও। 12 ত্রুফেণা এবং ক্রুফোষাকে শুভেচ্ছা জানিও, এই মহিলারা প্রভুর জন্য খুবই পরিশ্রম করেন।
আমার সেই প্রিয় বান্ধবী পর্ষীকে শুভেচ্ছা জানিও, যিনি প্রভুর জন্য কঠোর পরিশ্রম করেছেন।
13 রূফকে শুভেচ্ছা জানিও। সে প্রভুতে এক বিশেষ ব্যক্তি, তার মাকে শুভেচ্ছা জানিও। তিনিও আমার মায়ের মতো;
14 আর অসুংক্রিত, ফ্রিগোন, হর্ম্মিপাত্রোবা, হর্ম্মা ও তাদের সঙ্গে সমবিশ্বাসী ভাইদেরও আমার শুভেচ্ছা জানিও।
15 ফিললগ, যুলিয়া, নীরিয় ও তার বোন ওলুম্প ও তাঁদের সঙ্গে যে সব ঈশ্বরের ভক্তরা আছেন তাঁদেরও আমার শুভেচ্ছা জানিও।
16 পবিত্র চুম্বন দিয়ে পরস্পরকে শুভেচ্ছা জানিও।
এখানকার সব খ্রীষ্টমণ্ডলী তোমাদের সবাইকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছে।
17 ভাই ও বোনেরা, আমি তোমাদের বিশেষভাবে অনুরোধ করছি, যারা দলাদলি সৃষ্টি করে ও পাপকে প্ররোচিত করে তাদের প্রতি লক্ষ্য রাখতে। তোমরা যে সত্য শিক্ষা পেয়েছ তারা তার বিরোধী। এমন লোকদের থেকে দূরে থেকো। 18 এমন লোকরা আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের সেবা করে না। তারা নিজেদের খুশী করতেই কাজ করে চলেছে। তারা মোলায়েম ও মিষ্টি-মিষ্টি কথা বলে সেই লোকদের ভুলিয়ে থাকে, যারা মন্দ জানে না। 19 তোমাদের বাধ্যতার কথা সবাই শুনেছে আর সেইজন্য আমি তোমাদের ওপরে খুশী হয়েছি। আমি চাই তোমরা সবাই যা ভাল তা চিনে গ্রহণ কর এবং মন্দ থেকে দূরে থাক।
20 শান্তির ঈশ্বর শীঘ্রই তোমাদের পায়ের নীচে শয়তানকে পিষে ফেলবেন।
আমাদের প্রভু যীশুর অনুগ্রহ তোমাদের সবার সঙ্গে থাকুক।
21 আমার সহকর্মী তীমথি তোমাদের শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন; আর আমার মত জাতিতে ইহুদী লুকিয়, যাসোন ও সোষিপাত্র তোমাদের শুভেচ্ছা জানাচ্ছে।
22 আমি তর্ত্তিয়, পৌলের হয়ে এই চিঠিটি লিখছি, আমিও প্রভুর নামে তোমাদের শুভেচ্ছা জানাই।
23 আমি যাঁর আতিথ্য গ্রহণ করেছি, যাঁর বাড়িতে গোটা মণ্ডলী সমবেত হয় সেই গাইয়াসও তোমাদের শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন। ইরাস্ত, যিনি এই শহরের কোষাধ্যক্ষ ও আমাদের ভাই কার্ত্ত তাঁরাও তোমাদের শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন। 24 [a]
25 যীশু খ্রীষ্টের বিষয়ে যে সুসমাচার আমি প্রচার করি, সেই সুসমাচারের মধ্য দিয়ে তোমাদের স্থির রাখবার ক্ষমতা ঈশ্বরের আছে। অনেক যুগ ধরে ঈশ্বর তাঁর গোপন উদ্দেশ্যের বিষয় কারোর কাছে জ্ঞাত করেন নি; কিন্তু এখন সুসমাচারের মাধ্যমে তা প্রকাশ পেয়েছে; আর আমি সেইমত তা প্রচার করেছি। 26 অনন্ত ঈশ্বরের আদেশ মতো ভাববাদীদের বাণীর মধ্য দিয়ে সব জাতির লোকদের কাছে তা জানানো হয়েছে যেন তারা খ্রীষ্টের ওপর বিশ্বাস করে ঈশ্বরের বাধ্য হতে পারে। 27 যীশু খ্রীষ্টের মাধ্যমে চিরকাল একমাত্র প্রজ্ঞাবান ঈশ্বরের মহিমা হোক্। আমেন।
যন্ত্রণার অর্থ
3 আমি সেই মানুষ যে অনেক দুঃখ কষ্ট দেখেছে।
আমি তাকে দেখেছি
যে আমাদের লাঠি দিয়ে মেরেছিল!
2 প্রভু আমাকে আলোয় নয়,
অন্ধকারে নিয়ে এলেন।
3 প্রভু আমাকে সারা দিন ধরে তাঁর হাত দিয়ে মারধোর করেছেন।
তিনি আমাকে বারবার মারলেন।
4 তিনি আমার চামড়া ও মাংস ছিঁড়ে ফেললেন।
তিনি হাড়গোড় ভেঙে দিলেন।
5 প্রভু আমার বিরুদ্ধে তিক্ততা ও সমস্যার পাহাড় তৈরী করলেন।
তিনি আমার চারি দিকে তিক্ততার সমস্যাকে আনলেন।
6 যারা দীর্ঘসময় থেকে মৃত তাদের মতো
তিনি আমাকে অন্ধকারে বসিয়ে রাখলেন।
7 তিনি আমাকে অবরুদ্ধ করে রাখলেন।
তাই আমি বেরোতে পারলাম না, ভারী চেন দিয়ে তিনি আমাকে বেঁধে রাখলেন।
8 এমনকি যখন আমি সাহায্যের জন্য চিৎকার করে কাঁদলাম
প্রভু আমার সেই প্রার্থনায় কর্ণপাত করেন নি।
9 তিনি ভাঙা পাথর দিয়ে আমার বেরোনোর পথ বন্ধ করে দিয়েছেন।
তিনি ঐ পথকে আঁকাবাঁকা করে দিয়েছেন।
10 প্রভু যেন আমাকে আক্রমণ করতে উদ্যত এক ভাল্লুক।
তিনি যেন গুহায় লুকিয়ে থাকা এক সিংহ।
11 প্রভু আমাকে আমার পথের বাইরে চালনা করলেন।
তিনি আমাকে খণ্ড খণ্ড করে ছিঁড়ে ধ্বংস করলেন।
12 তিনি তাঁর ধনুক প্রস্তুত করে রাখলেন।
আমি তাঁর তীরের লক্ষ্য বস্তু হলাম।
13 আমার পাকস্থলীতে তিনি আঘাত করলেন।
তিনি তাঁর তূনীর থেকে একটি তীর ব্যবহার করে আমাকে বিদ্ধ করলেন।
14 লোকের কাছে আজ আমি উপহাসের পাত্র।
সারাদিন ধরে আমার সম্পর্কে গান গেয়ে গেয়ে তারা আমায় উপহাস করে।
15 এই বিষ (শাস্তি) প্রভুই আমায় পান করতে দিয়েছেন।
তিনি এই তিক্ত পানীয় দিয়ে আমায় পূর্ণ করেছেন।
16 তিনি আমায় কাঁকর খেতে বাধ্য করলেন।
তিনি আমায় নোংরায় ফেলে দিলেন।
17 আমি ভাবলাম আর কখনও শান্তি পাবো না।
সমস্ত ভালো জিনিসের ভাবনা ভুললাম।
18 নিজে নিজে বললাম,
“প্রভুর সাহায্যের প্রত্যাশা আর নেই।”
19 আমার যন্ত্রণা এবং আমার উদ্দেশ্যহীন ভাবে
ঘুরে বেড়ানো মনে রাখবেন।
যে শাস্তি আপনি আমায় দিয়েছিলেন তা মনে রাখবেন।
20 সব দুঃখ কষ্টের কথা আমার ভালো ভাবেই মনে আছে
এবং আমি খুবই বিষন্ন।
21 কিন্তু ঠিক তক্ষুনি, আমি অন্য কিছু ভাবি।
যখন আমি এরকম করে ভাবি, আমি কিছু আশা দেখতে পাই এবং আমার ভাবনাগুলি হল এইরকম:
22 প্রভুর করুণা ও ভালোবাসা অসীম।
তাঁর দয়ার কোন শেষ নেই।
23 প্রতিটি প্রভাতে নতুন নতুন ভাবে আপনি এটা প্রদর্শন করেন!
আপনি খুব নির্ভরযোগ্য এবং বিশ্বস্ত!
24 আমি মনে মনে বললাম, “আমি যা চাই তা হল, প্রভু।
তাঁর ওপর আমার আস্থা আছে।”
25 যে সব লোকরা প্রভুর জন্য অপেক্ষা করে, প্রভু তাদের প্রতি সদয় হন।
প্রভুর কাছে যারা সাহায্য চায় তাদের প্রতি প্রভু সদয়।
26 নিজেকে রক্ষা করবার সব চেয়ে ভাল উপায় হল
শান্তভাবে প্রভুর অপেক্ষায় থাকা।
27 কোন ব্যক্তির পক্ষে ছোট বেলা থেকেই
যোয়াল বহন করা ভালো।
28 প্রভু যখন তাঁর যোয়াল বা বাঁক কোন ব্যক্তির ওপর রাখেন
তখন শান্তভাবে একাকী তার বসে থাকা উচিত।
29 উদ্ধার পাবার আশায়
তাকে তার মুখ আভূমি নত করতে হবে।
30 ওই লোকটির গাল বাড়িয়ে চড় খাওয়া উচিত।
ওই ব্যক্তির উচিত অন্যদের তাকে অপমান করতে দেওয়া।
31 ওই ব্যক্তির মনে রাখা উচিত
যে প্রভু কাউকেই চিরকালের জন্য পরিত্যাগ করেন না।
32 প্রভু যখন শাস্তি দেন তখন তিনি ক্ষমাও করেন।
এই ক্ষমা তাঁর গভীরে ভালবাসা আর করুণা থেকেই আসে।
33 প্রভু কাউকে শাস্তি দিতে চান না।
লোকরা অশান্তিতে থাকুক এটাও তিনি চান না।
34 প্রভু এইগুলি পছন্দ করেন না: তিনি দেশের সব বন্দীদের তাঁর পায়ের তলায় পিষে ফেলতে চান না।
তিনি কাউকে পেষণ করতে চান না।
35 একজন অন্যের প্রতি অন্যায় করুক এটা তিনি কখনও চান না।
কিন্তু কিছু মানুষ সব সময়ই পরাৎপরের সামনে এরকম কাজ করে।
36 একজন ব্যক্তি আর একজনকে আদালতে প্রতারণা করুক
এটা প্রভু একেবারে পছন্দ করেন না।
37 কোন লোকেরই কিছু বলা এবং সেটা ঘটানো উচিত নয়
যতক্ষণ না প্রভু তা ঘটানোর আদেশ দেন।
38 পরাৎপর ভালো ও মন্দ
দুইই ঘটাতে আজ্ঞা দেন।
39 যখন কাউকে পাপের জন্য প্রভু শাস্তি দেন,
তখন সে জীবিত অবস্থায় অভিযোগ জানাতে পারে না।
40 এসো, আমরা কি করেছি তা সতর্কভাবে পরীক্ষা করি।
তারপর আমরা প্রভুতে আশ্রয় নেব।
41 স্বর্গের ঈশ্বরের প্রতি হৃদয়
এবং আমাদের হাত উত্তোলন করা উচিৎ।
42 এসো তাঁর উদ্দেশ্যে বলি, “আমরা পাপ করেছি এবং আমরা অবাধ্য হয়েছিলাম।
আপনি আমাদের ক্ষমা করেননি।”
43 আপনি আমাদের ক্রোধ দিয়ে মুড়ে দিয়েছেন এবং আমাদের তাড়িয়ে দিয়েছেন।
কোন রকম ক্ষমা না করেই হত্যা করেছেন!
44 মেঘের আবরণে আপনি নিজেকে ঢেকেছেন।
এর কারণ, যাতে কোন প্রার্থনাই মেঘের মধ্যে দিয়ে যেতে না পারে।
45 অন্য জাতিদের কাছে আপনি আমাদের
আবর্জনা ও ময়লার মতো সৃষ্টি করেছেন।
46 আমাদের সমস্ত শত্রুরা
আমাদের ঠাট্টা করেছে।
47 আমরা ভয় পেয়েছি।
গভীর গর্তে পড়ে আমরা দারুণ আঘাত পেয়েছি।
আমাদের সব কিছু ভেঙেছে।
48 আমার চোখ বেয়ে জলের স্রোত নেমেছে!
আমি আমার লোকদের ধ্বংসের জন্য কেঁদেছি!
49 যতক্ষণ পর্যন্ত না
প্রভু স্বর্গ থেকে নীচে দেখেন
50 ততক্ষণ অবিশ্রান্ত ভাবে
আমার চোখের জল বয়ে যাবে!
51 আমার দুটি চোখ আমায় বিমর্ষ করে তোলে
যখন আমি আমার শহরের যুবতীদের দুর্দশা দেখি।
52 ওই মানুষগুলো অকারণে আমার শত্রু।
আমার শত্রুরা আমাকে বিনা কারণে পাখির মতো শিকার করেছে।
53 তারা আমায় গভীর গর্তে নিক্ষেপ করেছে।
আমি জীবিত আছি জেনেও তারা আমার দিকে পাথর ছুঁড়ছে।
54 জল আমার মাথা ছাপিয়ে গেল।
আমি মনে মনে বললাম, “আমি শেষ হয়ে গিয়েছি।”
55 প্রভু, আমি গর্তের তলা থেকে আপনাকে ডেকেছি।
আপনার নাম ধরে চিৎকার করে ডেকেছি।
56 আমার কণ্ঠস্বর শুনুন।
আপনার কান বন্ধ করে রাখবেন না।
আমাকে উদ্ধার করতে অস্বীকার করবেন না।
57 আমি যখন আপনার কাছে মিনতি করব তখন আমার কাছে আসবেন!
আমাকে বলবেন, “ভয় পেও না।”
58 প্রভু আমার আবেদনটা বিচার করুন।
আমাকে আমার জীবন ফিরিয়ে দিন।
59 প্রভু, আমার দুর্দশা দেখুন।
আমায় ন্যায় পেতে সাহায্য করুন।
60 আমার শত্রুরা কিভাবে
আমাকে আঘাত করেছে তা দেখুন।
আমার বিরুদ্ধে ওদের সমস্ত শয়তানি
পরিকল্পনাগুলি সম্পর্কে আপনি অবহিত।
61 প্রভু, ওরা কিভাবে আমাকে অপমান করেছে তা শুনুন।
আমার বিরুদ্ধে ওদের সমস্ত শয়তানি পরিকল্পনার কথা শুনুন।
62 শত্রুদের কথা এবং তাদের সমস্ত পরিকল্পনা
সব সময়ই আমার বিরুদ্ধে।
63 যখন ওরা বসে কিংবা দাঁড়ায় তখনও আমায় নিয়ে
ওরা কিভাবে মজা করে তাও দেখুন, প্রভু!
64 প্রভু, ওরা যা করেছে তার জন্য
ওদের প্রাপ্য শাস্তি দিন!
65 ওদের হৃদয়কে অনমনীয় করে দিন!
তারপর আপনার অভিশাপ ওদের উপর বর্ষণ করুন!
66 ক্রোধে তাদের তাড়া করুন!
আপনার আকাশের নীচে তাদের ধ্বংস করুন প্রভু!
দায়ূদের একটি গীত। যখন থেকে দায়ূদ পাগলের মত আচরণ করেছিলেন যাতে অবীমেলক তাঁকে দূর করে দেন। এইভাবে দায়ূদ তাঁকে ছেড়ে চলে যান।
34 সর্বদা আমি প্রভুকে ধন্যবাদ জানাই।
আমার মুখ সর্বদাই তাঁর প্রশংসা করে।
2 হে বিনীত লোকরা, যখন আমি প্রভুর সম্পর্কে বড়াই করি
তোমরা শোন এবং সুখী হও।
3 আমার সঙ্গে সঙ্গে ঈশ্বরের প্রশংসা কর।
এসো আমরা তাঁর নামের সম্মান করি।
4 আমি ঈশ্বরের কাছে সাহায্যের জন্য গিয়েছিলাম এবং তিনি শুনেছেন।
যা কিছু আমি ভয় করতাম, তা থেকে তিনি আমায় উদ্ধার করেছেন।
5 সাহায্যের জন্য ঈশ্বরের দিকে চাও,
তিনি তোমায় গ্রহণ করবেন।
লজ্জিত হয়ো না।[a]
6 এই দরিদ্র মানুষটি প্রভুকে ডেকে সাহায্য প্রার্থনা করে।
প্রভু আমার কথা শুনেছেন
এবং সব সমস্যা থেকে তিনি আমায় রক্ষা করেছেন।
7 যারা প্রভুকে অনুসরণ করে, প্রভুর দূত এসে তাদের চারিদিকে শিবির স্থাপন করেন।
প্রভুর দূত তাদের রক্ষা করেন।
8 প্রভু কতখানি ভালো তা দেখাবার জন্য প্রভুর স্বাদ গ্রহণ কর।
যে প্রভুর ওপর নির্ভর করে সে সত্যিই সুখী হয়।
9 তোমরা প্রভুর পবিত্র অনুগামীরা, প্রভুকে শ্রদ্ধা কর।
কারণ অনুগামীদের কাছে প্রত্যেকটি জিনিস আছে যা তাদের প্রয়োজন।
10 বলবান লোকরাও ক্ষুধার্ত এবং দুর্বল হয়ে পড়বে।
কিন্তু যারা ঈশ্বরের কাছে সাহায্যের জন্য যাবে, তারা সব ভালো জিনিসই পাবে।
11 শিশুরা, আমার কথা শোন,
আমি তোমাদের শিখিয়ে দেবো কেমন করে প্রভুকে শ্রদ্ধা করতে হয়।
12 যদি কেউ জীবনকে ভালোবাসে
এবং দীর্ঘ ও ভালো জীবনযাপন করতে চায়,
13 তাহলে, সেই ব্যক্তি যেন মন্দ কথা না বলে,
সে যেন মিথ্যা কথা না বলে।
14 খারাপ কাজ করা বন্ধ করে দাও! ভালো কাজ কর।
শান্তির জন্য কাজ কর। যতক্ষণ না শান্তি পাও, ততক্ষণ তার পেছনে ছুটে বেড়াও।
15 ভালো লোকদের প্রভু রক্ষা করেন।
তিনি তাদের প্রার্থনা শোনেন।
16 কিন্তু যারা খারাপ কাজ করে প্রভু তাদের বিরোধী।
তিনি তাদের সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করেন!
17 প্রভুর কাছে প্রার্থনা কর এবং তিনি তোমার কথা শুনবেন
এবং সব সংকট থেকে তিনি তোমায় উদ্ধার করবেন।
18 যখন সংকট আসে তখন কয়েকজন দম্ভ করা থেকে বিরত হয়।
প্রভু সেই সব ভগ্ন হৃদয় লোকের কাছাকাছি থাকেন এবং তাদের উদ্ধার করেন।
19 ভালো লোকদের অনেক সমস্যা হতে পারে,
কিন্তু প্রত্যেকটা সমস্যা থেকে প্রভু তাদের উদ্ধার করবেন।
20 তাদের প্রত্যেকটি হাড় প্রভু রক্ষা করবেন।
তাদের একটি হাড়ও ভাঙবে না।
21 দুষ্ট লোকদের শয়তানি
তাদের ক্রমশঃ ধ্বংস করবে।
22 প্রভু তাঁর দাসদের আত্মাকে রক্ষা করেন।
যারা তাঁর ওপর নির্ভর করে তিনি তাদের বিনষ্ট হতে দেবেন না।
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International