M’Cheyne Bible Reading Plan
গলিয়াৎ ইস্রায়েলকে যুদ্ধে আহ্বান করল
17 পলেষ্টীয়রা যুদ্ধের জন্যে সৈন্য জড়ো করতে লাগল। যিহূদার সোখোতে তারা জড়ো হল। সোখোর আর অসেকার মাঝখানে তাদের তাঁবু পড়লো। জায়গাটা ছিল এফস্দম্মীম নামে একটা শহরে।
2 শৌল এবং ইস্রায়েলের সৈন্যরা একত্র হল। এলা উপত্যকায় তাদের তাঁবু পড়ল। শৌলের সৈন্যরা পলেষ্টীয়দের সঙ্গে যুদ্ধের জন্যে তৈরী হল। 3 পলেষ্টীয়রা একটা পাহাড়ে, ইস্রায়েলীয়রা আর একটাতে। উপত্যকাটা এই দুটো পাহাড়ের মাঝখানে।
4 পলেষ্টীয়দের মধ্যে একজন বিজয়ী যোদ্ধা ছিল। তার নাম গলিয়াৎ। সে গাৎ থেকে এসেছিল। তার দেহ বিশাল লম্বা ছিল। 9 ফুটেরও বেশী। পলেষ্টীয় শিবির থেকে সে বেরিয়ে এলো। 5 তার মাথায় পিতলের শিরস্ত্রাণ। গায়ে মাছের আঁশের মতো দেখতে একটা বর্ম, সেটা ছিল পিতলের তৈরী, ওজন প্রায় 125 পাউণ্ড। 6 গলিয়াতের পায়েও ছিল পিতলের বর্ম। তার পিঠে ছিল পিতলের বর্শা। 7 তার বর্শার কাঠের দণ্ডটা ছিল তাঁতির লাঠির মতো লম্বা। বর্শার ফলকের ওজন 15 পাউণ্ড। গলিয়াতের ঢাল নিয়ে তার সহকারী আগে আগে হাঁটত।
8 প্রত্যেকদিন গলিয়াৎ বেরিয়ে এসে ইস্রায়েলীয় সৈন্যদের দিকে যুদ্ধের হুঙ্কার দিয়ে বলত, “কেন তোমরা যুদ্ধের জন্য সারবন্দি দাঁড়িয়ে? তোমরা শৌলের ভৃত্য। আমি একজন পলেষ্টীয়। একজনকে তোমরা বেছে নাও, তাকে আমার সঙ্গে লড়বার জন্য পাঠিয়ে দাও। 9 যদি সে আমাকে হত্যা করে তাহলে আমরা পলেষ্টীয়রা সকলেই তোমাদের ক্রীতদাস হব। কিন্তু আমি যদি তাকে হত্যা করি, তাহলে তোমাদের সবাইকে আমাদের ক্রীতদাস হতে হবে এবং আমাদের সেবা করতে হবে।”
10 পলেষ্টীয়রা আরো বলল, “এই আমি এখানে দাঁড়িয়ে ইস্রায়েলীয় সৈন্যদের নিয়ে ঠাট্টা তামাশা করছি। সাহস থাকে তো একজনকে পাঠিয়ে দাও। আমার সঙ্গে হয়ে যাক এক হাত লড়াই।”
11 শৌল এবং ইস্রায়েলীয় সৈন্যরা গলিয়াতের এইসব আস্ফালন শুনে বেশ ভয় পেয়ে গেল।
দায়ূদ যুদ্ধ ক্ষেত্রে গেলেন
12 দায়ূদ ছিলেন যিশয়ের পুত্র। যিশয় যিহূদার বৈৎলেহমে ইফ্রাথা বংশের লোক। তার আট জন পুত্র ছিল। শৌলের আমলে যিশয় বৃদ্ধ হয়ে গিয়েছিলেন। 13 যিশয়ের প্রথম তিনটি পুত্র শৌলের সঙ্গে যুদ্ধে গিয়েছিল। প্রথম পুত্রের নাম ইলীয়াব। দ্বিতীয় জনের নাম অমীনাদব, তৃতীয় জনের নাম শম্ম। 14 সবচেয়ে যে ছোট তার নাম দায়ূদ। ওঁর তিন দাদা শৌলের সৈন্যদলে যোগ দিয়েছিল। 15 কিন্তু দায়ূদ মাঝে মধ্যেই শৌলকে ছেড়ে বৈৎলেহমে তাঁর পিতার কাছে চলে যেতেন। সেখানে তিনি মেষগুলোর দেখাশুনা করতেন।
16 সেই পলেষ্টীয় (গলিয়াৎ) প্রতিদিন সকালে আর সন্ধ্যায় বেরিয়ে এসে ইস্রায়েলীয় সৈন্যদের সামনে দাঁড়িয়ে হাসি মস্করা করত। এইভাবে 40 দিন কেটে গেল।
17 একদিন যিশয় তাঁর পুত্র দায়ূদকে বললেন, “এক ঝুড়ি ভাজা শস্য আর দশটা গোটা পাঁউরুটি নিয়ে শিবিরে তোমার দাদাদের কাছে যাও। 18 তাছাড়া দশ টুকরো পনিরও নিয়ে যেও। তোমাদের দাদারা যার অধীনে যুদ্ধ করছে সেই সেনাপতিকে এটা দেবে। সে 1000 জন সৈন্যের সেনাপতি। তোমার ভাইদের কুশল সংবাদ নাও। ওরা যে ভাল আছে সে রকম কিছু চিহ্ন নিয়ে এসো। 19 তোমার ভাইরা এলা উপত্যকায় শৌল আর ইস্রায়েলীয় সৈন্যদের সঙ্গে রয়েছে। তারা সেখানে পলেষ্টীয়দের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য রয়েছে।”
20 যিশয়ের কথা মতো ভোরবেলায় দায়ূদ একজন রাখালের ওপর মেষগুলো দেখাশোনার দায়িত্ব দিয়ে খাবার দাবার নিয়ে চলে গেলেন। দায়ূদ শিবিরে ঠেলাগাড়ী চালিয়ে নিয়ে গেলেন। সেখানে পৌঁছে তিনি দেখলেন সৈন্যরা যুদ্ধের জন্য বেরিয়ে যাচ্ছে। ওরা সিংহনাদ দিতে থাকল। 21 ইস্রায়েলীয়রা ও পলেষ্টীয়রা সারিবদ্ধ হয়েছিল এবং যুদ্ধের জন্য তৈরী হয়েছিল।
22 যে খাবার-দাবার যোগান দেয় তার কাছে সব কিছু রেখে দিয়ে দায়ূদ বেরিয়ে পড়লেন। যেদিকে ইস্রায়েলীয় সৈন্যরা দাঁড়িয়েছিল, সেদিকে তিনি দ্রুত চলে গেলেন। সেখানে গিয়ে তিনি দাদাদের খোঁজ খবর নিলেন। 23 তারপর ওদের সঙ্গে দেখা করে দায়ূদ কথা বলতে লাগলেন। তারপর গাতের সেরা যোদ্ধা গলিয়াৎ তাঁবু থেকে বেরিয়ে এলো এবং যথারীতি ইস্রায়েলীয়দের বিরুদ্ধে গর্জাতে লাগল। তার কথাগুলো দায়ূদ সবই শুনলেন।
24 গলিয়াতকে দেখে ইস্রায়েলীয় সৈন্যরা ভয় পেয়ে পালিয়ে গেল। 25 একজন ইস্রায়েলীয় বলল, “লোকটাকে দেখেছ? একবার ওর দিকে দেখ। গলিয়াৎ বারবার বেরিয়ে আসছিল এবং ইস্রায়েলকে নিয়ে মজা করছিল। যে ওকে মেরে ফেলবে তাকে রাজা শৌল প্রচুর টাকা পয়সা দেবে। গলিয়াতকে যে হত্যা করবে, তার সঙ্গে শৌল তার কন্যার বিয়ে দেবে। শুধু তাই নয়, শৌল তার পরিবারকে ইস্রায়েলে স্বাধীন[a] হয়ে থাকতে দেবে।”
26 কাছে দাঁড়িয়ে থাকা লোকটিকে দায়ূদ জিজ্ঞাসা করলেন, “ও কি বলছে? পলেষ্টীয়কে হত্যা করলে, এবং ইস্রায়েলীয়দের লজ্জা মুছে দিতে পারলে কি পুরস্কার দেওয়া হবে? গলিয়াৎ লোকটা কে? সে তো একজন বিদেশী ছাড়া কেউ নয়। সে একজন পলেষ্টীয় এই যা। সে কি করে ভাবতে পারল যে জীবন্ত ঈশ্বরের সৈন্যদের বিরুদ্ধে গালমন্দ করতে পারে?”
27 একথা শুনে ইস্রায়েলীয়রা গলিয়াতকে মারলে কি পুরস্কার পাওয়া যাবে সেসব দায়ূদকে জানাল। 28 দায়ূদের বড়দা ইলীয়াব যখন শুনলো দায়ূদ সৈন্যদের সঙ্গে কথাবার্তা বলছে, তখন সে রেগে গেল। সে দায়ূদকে বলল, “তুমি এখানে কেন? কার হাতে তুমি মরুভূমি অঞ্চলে মেষগুলোর দেখাশুনার দায়িত্ব দিয়ে এলে? কেন এখানে এসেছ সেকি আমি জানি না ভেবেছ? তোমাকে যা বলা হয়েছিল সেগুলো তুমি করতে চাও না। তুমি শুধু যুদ্ধ দেখবার জন্যই এখানে আসতে চেয়েছ।”
29 দায়ূদ বললেন, “আমি কি করেছি? আমি তো কোন অন্যায় করি নি, শুধু কথা বলছিলাম মাত্র।” 30 এই কথা বলে দায়ূদ অন্যান্য লোকের দিকে ফিরে সেই একই কথা জিজ্ঞেস করলেন। তারা তাঁকে আগের মত ঐ একই উত্তর দিল।
31 কয়েক জন লোক দায়ূদকে কথা বলতে দেখল। তারা দায়ূদকে শৌলের কাছে নিয়ে গেলো। শৌলকে তারা বলল, দায়ূদ কি বলেছিল। 32 দায়ূদ শৌলকে বললেন, “লোকরা যেন গলিয়াতকে নিরুৎসাহিত করে না দেয়। আমি তোমার ভৃত্য। আমি এই পলেষ্টীয়ের সঙ্গে যুদ্ধ করতে চাই।”
33 শৌল বললেন, “তুমি তা করতে পারো না। তুমি তো একজন সৈনিকও নও।[b] আর গলিয়াৎ তো ছোটবেলা থেকেই যুদ্ধ করছে।”
34 তখন দায়ূদ শৌলকে বললেন, “আমি তোমার ভৃত্য, পিতার মেষগুলোর দেখাশুনা করছিলাম। একটা সিংহ আর একটা ভাল্লুক পাল থেকে একটা মেষ নিয়ে গেল। 35 আমি ঐ জন্তুটার পেছনে ধাওয়া করে ওটার মুখ থেকে মেষটাকে টেনে বার করে নিয়ে এলাম। জন্তুটা আমার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ল। তখন আমি ওর দাড়ি ধরে টেনে জোরে এমন আঘাত করলাম যে সেটা মরে গেল। 36 একটা সিংহ আর একটা ভাল্লুককে আমি শেষ করে দিয়েছি। এরপর আমি এই বিদেশী গলিয়াতকে ওদের মতোই হত্যা করব। গলিয়াৎ মরবেই কারণ সে জীবন্ত ঈশ্বরের সৈন্যবাহিনীকে নিয়ে ঠাট্টা তামাশা করেছে। 37 প্রভু আমাকে সিংহ আর ভাল্লুকের হাত থেকে বাঁচিয়েছেন। এই পলেষ্টীয়দের হাত থেকে তিনি আমায় রক্ষা করবেন।”
শৌল দায়ূদকে বললেন, “তবে যাও। প্রভু তোমার সহায় হোন।” 38 এই বলে শৌল তাঁর পোশাক দায়ূদকে পরিয়ে দিলেন। ওর মাথায় চড়িয়ে দিলেন পিতলের শিরস্ত্রাণ আর দেহে দিলেন পিতলের বর্ম। 39 দায়ূদ কোমরে তরবারি নিলেন। একটু ঘুরে ফিরে বেড়িয়ে দেখলেন সব ঠিক আছে কি না। তিনি শৌলের পোশাকটা পরার চেষ্টা করলেন কিন্তু তিনি এমন ভারী জিনিস পরতে অভ্যস্ত ছিলেন না।
তাই তিনি শৌলকে বললেন, “আমি এইসব জিনিস নিয়ে লড়াই করতে পারব না। আমি ওগুলোতে অভ্যস্ত নই।” তারপর তিনি ওগুলো সব খুলে ফেললেন। 40 তারপর তিনি তাঁর বেড়ানোর ছড়িটা হাতে নিয়ে নদীর ধারে গিয়ে পাঁচটা নিটোল নুড়ি পাথর তুলে নিলেন। সেগুলো তিনি মেষপালকের থলেতে রাখলেন। হাতে গুলতি নিয়ে গেলেন গলিয়াতের মুখোমুখি হতে।
দায়ূদ গলিয়াতকে হত্যা করলেন
41 পলেষ্টীয় ধীরে ধীরে দায়ূদের দিকে এগিয়ে এলো। গলিয়াতের অস্ত্রবাহক ঢাল নিয়ে ওর আগে-আগে চললো। 42 দায়ূদকে দেখে গলিয়াৎ হাসলো। সে দেখল দায়ূদ ঠিক সৈন্য নয়, কিন্তু লাল মুখো একজন সুদর্শন বালক। 43 গলিয়াৎ দায়ূদকে জিজ্ঞাসা করল, “এই লাঠিটা কিসের জন্য? তুমি কি এটা দিয়ে কুকুরের মতো আমায় তাড়াবে?” এই বলে সে তার দেবতাদের নাম নিয়ে দায়ূদকে গালমন্দ করতে লাগল। 44 গলিয়াৎ বলল, “আয় তোর দেহটাকে নিয়ে পাখি আর জানোয়ারদের খাওয়াই।”
45 দায়ূদ পলেষ্টীয়কে বললেন, “তুমি তো তরবারি, বর্শা, বল্লম নিয়ে আমার কাছে এসেছ। কিন্তু আমি এসেছি সর্বশক্তিমান প্রভুর নাম নিয়ে। এই প্রভুই ইস্রায়েলীয় সৈন্যদের ঈশ্বর। তুমি তাঁকে নিয়ে অনেক অকথা কুকথা বলেছ। 46 আজ প্রভুর দয়ায় আমি তোমাকে পরাজিত করব। তোমাকে আজ আমি হত্যা করব। তোমার মুণ্ড কেটে নিয়ে জন্তু জানোয়ারদের আর পাখীদের খাওয়াব। শুধু তুমি নয়, সব পলেষ্টীয়দের ঐ একই অবস্থা করব। তখন পৃথিবীর সমস্ত মানুষ জানবে, ইস্রায়েলে একজন ঈশ্বর আছেন। 47 এখানে যারা এসেছে তারা সবাই জানবে যে মানুষকে বাঁচাতে প্রভুর কোন তরবারি বা বল্লমের দরকার হয় না। এটাতো প্রভুরই যুদ্ধ। পলেষ্টীয়দের হারাতে প্রভুই আমাদের সহায়ক।”
48 গলিয়াৎ দায়ূদকে আক্রমণ করতে উদ্যত হল। সে একটু একটু করে দায়ূদের কাছে ঘেঁষে এল। তখন দায়ূদ ওর দিকে ছুটে গেলেন।
49 দায়ূদ থলে থেকে একটা পাথর বের করলেন। সেটাকে তাঁর গুলতির মধ্যে রেখে তিনি ছুঁড়লেন। গুলতি থেকে পাথরটি ছিটকে গিয়ে একেবারে গলিয়াতের দু চোখের মাঝখানে পড়ে ওর মাথার ভেতর অনেকখানি ঢুকে গেল। গলিয়াৎ মুখ থুবড়ে মাটিতে পড়ে গেল।
50 এইভাবে শুধু একটা গুলতি আর একটি পাথর দিয়েই দায়ূদ এই পলেষ্টীয়কে হারিয়ে দিলেন এবং আঘাত করে মেরে ফেললেন। দায়ূদের হাতে কোন তরবারি ছিল না। 51 তাই দায়ূদ গলিয়াতের শরীরের কাছে দৌড়ে গেলেন। তিনি গলিয়াতের তরবারির খাপ থেকে তরবারি বার করে গলিয়াতের মুণ্ড কেটে ফেললেন। এইভাবেই তিনি গলিয়াতকে হত্যা করলেন।
তাদের নায়ককে মৃত দেখে অন্যান্য পলেষ্টীয়রা দৌড় লাগাল। 52 ইস্রায়েলীয়রা আর যিহূদার সৈন্যরা হৈ-হৈ করতে করতে পলেষ্টীয়দের তাড়া করল। এইভাবে তারা ধাওয়া করল গাৎ শহরের সীমানা আর ইক্রোণের ফটক পর্যন্ত। তারা অনেক পলেষ্টীয়কে হত্যা করল। শারাইমের রাস্তা ধরে গাৎ আর ইক্রোণ পর্যন্ত তাদের মৃতদেহ ছড়িয়ে পড়েছিল। 53 পলেষ্টীয়দের তাড়িয়ে নিয়ে যাবার পর ইস্রায়েলীয়রা পলেষ্টীয়দের শিবিরে ফিরে এসে অনেক জিনিসপত্র লুঠ করল।
54 গলিয়াতের মুণ্ড নিয়ে দায়ূদ জেরুশালেমে চলে এলেন। তিনি গলিয়াতের অস্ত্রশস্ত্রগুলো নিজের তাঁবুতে রেখে দিলেন।
শৌল দায়ূদকে ভয় পেতে লাগলেন
55 শৌল দায়ূদকে গলিয়াতের বিরুদ্ধে যুদ্ধে যেতে দেখলেন। সেনাপতি অবনেরকে শৌল জিজ্ঞাসা করলেন, “অব্নের, এ বালকটির পিতা কে বলো তো?”
অব্নের বলল, “দিব্য করে বলছি, আমি জানি না।”
56 রাজা শৌল বললেন, “ওর পিতাকে খুঁজে বার করো।”
57 গলিয়াতকে হত্যা করে দায়ূদ যখন ফিরে এলেন তখন অবনের তাকে শৌলের কাছে নিয়ে এলো। দায়ূদের হাতে তখন গলিয়াতের কাটা মুণ্ড।
58 শৌল দায়ূদকে জিজ্ঞাসা করলেন, “যুবক তোমার পিতা কে?”
দায়ূদ উত্তর দিলেন, “আমি আপনার ভৃত্য বৈৎলেহমের যিশয়ের পুত্র।”
15 আমাদের মধ্যে যারা বিশ্বাসে বলিষ্ঠ হয়েছি তাদের কর্তব্য যেন যারা বিশ্বাসে সবল তাদের দুর্বলতায় সাহায্য করি, যেন নিজেদের খুশী করার চেষ্টা না করি। 2 আমরা প্রত্যেকে বরং অপরকে খুশী করার চেষ্টা করব, তা করলে তাদের সাহায্য করা হবে। তারা যেন বিশ্বাসে বলবান হয়ে উঠতে পারে, সে চেষ্টা আমাদের অবশ্যই করা উচিত। 3 খ্রীষ্টও নিজেকে সন্তুষ্ট করার কথা ভাবেন নি। বরং শাস্ত্র যেমন বলে: “যারা তোমাদের অপমান করেছে, সেই সব অপমান আমার ওপরই এসেছে।”(A) 4 শাস্ত্রে বহু আগেই যে সব কথা লেখা হয়েছে তা আমাদের শিক্ষা দেবার জন্যই লেখা হয়েছে। তা লেখা হয়েছে যেন তার থেকে ধৈর্য্য ও শক্তি আসে এবং অন্তরে প্রত্যাশা জন্মায়। 5 আমি প্রার্থনা করি ঈশ্বর, যিনি সকল ধৈর্য্য ও উৎসাহের উৎস, তিনি যেন তোমাদের খ্রীষ্টের দৃষ্টান্ত অনুসরণ করে একমনা হতে সাহায্য করেন। 6 এইভাবে তোমরা যেন সকলে মিলিত কন্ঠে যিনি আমাদের প্রভু, যীশুর পিতা, সেই ঈশ্বরের মহিমা কীর্তন করতে পার। 7 খ্রীষ্ট তোমাদের গ্রহণ করেছেন, তাই তোমরাও পরস্পরকে গ্রহণ করে কাছে টেনে নাও, এতে ঈশ্বর মহিমান্বিত হবেন। 8 মনে রেখো ঈশ্বর ইহুদীদের পিতৃপুরুষদের কাছে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তা পূর্ণ করার জন্যই খ্রীষ্ট ইহুদীদের দাস হয়েছিলেন, যেন ঈশ্বর যে বিশ্বস্ত তা প্রমাণ হয়। 9 খ্রীষ্ট এই কার্য্য সাধন করলেন যেন অইহুদীরা তাঁর দয়া পেয়েছে বলে তাঁর গৌরব করে। শাস্ত্রে যেমন লেখা আছে:
“এই জন্যই অইহুদীদের মধ্যে আমি তোমার গৌরব করব;
তোমার নামের প্রশংসা গান করব।”(B)
10 আবার শাস্ত্র বলে,
“অইহুদীরা, তোমরা ঈশ্বরের মনোনীত লোকদের সঙ্গে আনন্দ কর।”(C)
11 শাস্ত্র আরো বলে,
“সমস্ত অইহুদীরা প্রভুর প্রশংসা কর;
সমস্ত লোক তাঁর প্রশংসা করুক।”(D)
12 আবার যিশাইয় বলছেন,
“যিশয়ের একজন বংশধর আসবেন
যিনি সমস্ত অইহুদীদের উপর কর্ত্তৃত্ব করবেন;
আর অইহুদী জাতিবৃন্দ তাঁর উপরেই আশা রাখবে।”(E)
13 ঈশ্বর, যিনি তোমাদের মধ্যে আশার সঞ্চার করেন, তাঁর ওপর প্রত্যাশা তোমাদের সকলকে আনন্দ ও শান্তিতে ভরপুর করুক। তাহলে পবিত্র আত্মার শক্তিতে তোমাদের আশা আরো উপচে পড়বে।
পৌল তাঁর কাজ সম্বন্ধে বললেন
14 আমার ভাই ও বোনেরা, আমি সুনিশ্চিত যে তোমরা সবাই উত্তমতায় পূর্ণ। আমি জানি যে তোমরা সব রকম জ্ঞান সঞ্চয় করেছ, যাতে পরস্পরকে নির্দেশ দিতে পার। 15 কিন্তু আমি কতকগুলি ব্যাপার মনে করিয়ে দেবার জন্য সাহস ভরে তোমাদের সবাইকে লিখছি, কারণ ঈশ্বর আমাকে এই বিশেষ বরদান করেছেন। 16 আমি অইহুদীদের মধ্যে কাজ করার জন্য খ্রীষ্ট যীশুর সেবক হয়েছি। আমি যাজকের মত তাদের মাঝে ঈশ্বরের সুসমাচার প্রচার করি, যাতে পবিত্র আত্মা দ্বারা পবিত্রিকৃত অইহুদীরা ঈশ্বরের গ্রহণযোগ্য উপহার রূপে গ্রাহ্য হয়।
17 তাই যীশু খ্রীষ্টে আছে এমন একজন হিসাবে ঈশ্বরের কাজ করতে আমি গর্ববোধ করি। 18 আমি যে নিজে কিছু করেছি, এমন কথা বলি না। আমার বাক্য ও কার্য দ্বারা অইহুদীদের ঈশ্বরের বাধ্য করার জন্য খ্রীষ্ট আমার মাধ্যমে যা করেছেন শুধু তা বলার সাহস আমার আছে। 19 তিনি নানা অলৌকিক চিহ্ন ও আশ্চর্য কাজের দ্বারা এবং পবিত্র আত্মার পরাক্রমে আমার দ্বারা তা পূর্ণ করেছেন। তার ফলে আমি জেরুশালেম থেকে শুরু করে ইল্লুরিকা পর্যন্ত সমস্ত জায়গায় খ্রীষ্ট বিষয়ক সুসমাচার প্রচারের কাজ শেষ করেছি। 20 যেখানে খ্রীষ্টের নাম কখনও বলা হয় নি, সেখানে খ্রীষ্টের সুসমাচার প্রচার করাই আমার জীবনের লক্ষ্য। অন্যের গাঁথা ভিতের ওপর আমি গড়ে তুলতে চাই না। 21 এ ব্যাপারে শাস্ত্র বলে:
“যাদের কাছে তাঁর সম্বন্ধে কিছুই বলা হয় নি তারা দেখতে পাবে;
আর যারা শোনেনি তারা বুঝতে পারবে।”(F)
রোম পরিদর্শনে পৌলের পরিকল্পনা
22 এই জন্যই বহুবার তোমাদের কাছে যেতে চেয়েও বাধা পেয়েছি।
23 কিন্তু এখন এসব এলাকায় আমার কাজ শেষ হয়েছে। বহুবছর ধরে তোমাদের সকলের কাছে যাবার ইচ্ছা আমার ছিল। 24 তাই স্পেন দেশে যাবার পথে তোমাদের সঙ্গে দেখা করব; ঐ পথ দিয়ে যাবার সময় তোমাদের সঙ্গে দেখা করে কিছু সময় আনন্দে কাটাতে পারব; আশা করি সেই সফরে তোমরা আমায় সাহায্য করতে পারবে।
25 এখন আমি জেরুশালেমে যাচ্ছি যেন ঈশ্বরের লোকদের সাহায্য করতে পারি। 26 জেরুশালেমে ঈশ্বরের লোকদের মধ্যে যে গরীব মানুষরা আছেন তাঁদের হাতে দেবার জন্য মাকিদনিয়া ও আখায়ার খ্রীষ্ট বিশ্বাসীরা কিছু চাঁদা তুলেছেন। 27 ওঁদের সাহায্য করা উচিত মনে করেই মাকিদনিয়া ও আখায়া মণ্ডলীরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাদের সাহায্য করা উচিত, কারণ তারা অইহুদী হলেও ইহুদীদের কাছ থেকে আত্মিক আশীর্বাদের সহভাগীতা পেয়েছে। এ বিষয়ে তারা ইহুদীদের কাছে ঋণী। 28 আমার এই কাজ শেষ হলে আমি যখন জানব যে সেই চাঁদা ঠিকমতো পৌঁছেছে তখন তোমাদের কাছে কিছুক্ষণ থেকে আমি স্পেনে যাব। 29 আমি জানি যখন তোমাদের সবার কাছে যাব, তখন খ্রীষ্টের পূর্ণ আশীর্বাদ নিয়েই যাব।
30 ভাই ও বোনেরা, তোমাদের কাছে আমার একান্ত মিনতি তোমরা ঈশ্বরের কাছে আমার জন্য প্রার্থনা কর। আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের দোহাই দিয়ে বলছি, পবিত্র আত্মার ভালোবাসায় প্রণোদিত হয়ে তোমরা আমার জন্য ঈশ্বরের কাছে মিনতি কর। 31 প্রার্থনা কর, যেন যিহূদিয়ায় অবিশ্বাসীদের হাত থেকে আমি রক্ষা পাই। প্রার্থনা কর যেন জেরুশালেমের জন্য আমার সেবা সেখানকার পবিত্র ব্যক্তিরা গ্রহণ করেন। 32 তখন ঈশ্বরের ইচ্ছা হলে আমি খুশি মনেই তোমাদের কাছে যাব এবং তোমাদের সঙ্গে কিছুকাল থেকে বিশ্রাম পাব। 33 শান্তিদাতা ঈশ্বর তোমাদের সকলের সঙ্গে সঙ্গে থাকুন। আমেন।
প্রভু জেরুশালেম ধ্বংস করলেন
2 দেখ, প্রভু সিয়োনের লোকেদের কেমন করে বাতিল করেছেন।
তিনি ইস্রায়েলের মহিমাকে আকাশ থেকে মাটিতে নিক্ষেপ করেছেন।
তাঁর ক্রোধের দিনে প্রভু তাঁর পাদানি অর্থাৎ মন্দিরের কথা পর্যন্ত মনে রাখেননি।
2 প্রভু যাকোবের গোচারণ ভূমিগুলি ধ্বংস করেছেন।
তিনি সেগুলিকে নির্মম ভাবে ধ্বংস করেছেন।
ক্রোধের বশে তিনি যিহূদার দূর্গগুলি ধ্বংস করেছেন।
প্রভু যিহূদা রাজ্য এবং তার শাসকবর্গকে মাটিতে ছুঁড়ে ফেলেছেন।
তিনি যিহূদা রাজ্যকে ধ্বংসস্তুপে পরিণত করেছেন।
3 প্রভু ক্রুদ্ধ হয়েছিলেন এবং তিনি ইস্রায়েলের সব শক্তি চূর্ণ করেছিলেন।
ইস্রায়েলের ওপর থেকে তিনি তাঁর দক্ষিণ হস্ত সরিয়ে নিয়েছিলেন।
তিনি এটা করেছিলেন যখন শত্রুরা এসেছিল।
যাকোবে তিনি লেলিহান আগুনের মত জ্বলেছিলেন।
তিনি ছিলেন একটি আগুনের মত
যা চতুর্দিক পুড়িয়ে দেয়।
4 একজন শত্রুর মত প্রভু তাঁর ধনুক বেঁকিয়ে দিয়েছিলেন।
তিনি তাঁর দক্ষিণ হস্তে নিয়েছিলেন একটি তরবারি।
তিনি যিহূদার সমস্ত সুদর্শন লোকদের হত্যা করেছিলেন।
প্রভু তাদের হত্যা করলেন যেন তিনি তাদের শত্রু।
প্রভু তাঁর ক্রোধ অগ্নির মত
সিয়োনের গৃহগুলির উপর বর্ষণ করলেন।
5 প্রভু একজন শত্রুর মত হয়ে উঠেছেন।
তিনি ইস্রায়েলকে গিলে ফেলেছেন।
তিনি তার সব প্রাসাদগুলি গিলে ফেলেছেন।
তিনি তার সব দুর্গগুলি গ্রাস করেছেন।
যিহূদার কন্যাতে (ইস্রায়েলে)
তিনি প্রভুতঃ দুঃখ এবং মৃতের জন্য অশ্রুপাত ঘটিয়েছিলেন।
6 প্রভু নিজের তাঁবুটিকে
একটি বাগানের মতো উপড়ে ফেলেছিলেন।
তাঁকে উপাসনা করার জন্য লোকে যে স্থানে গিয়ে জড়ো হত
তিনি সেই স্থানটিও নষ্ট করে দিয়েছিলেন।
সিয়োনে প্রভু লোকদের বিশেষ সভাগুলির কথা
এবং বিশেষ বিশ্রামের দিনগুলি ভুলিয়ে দিয়েছিলেন।
প্রভু রাজা এবং যাজকদের বাতিল করে দিয়েছিলেন।
তিনি ক্রুদ্ধ হয়েছিলেন এবং তাদের বাতিল করেছিলেন।
7 প্রভু তাঁর বেদীটি বাতিল করেছিলেন।
তিনি তাঁর উপাসনার পবিত্র স্থানটি বাতিল করেছিলেন।
জেরুশালেমের প্রাসাদের দেওয়ালগুলি
তিনি শত্রুদের ভূমিস্যাৎ করতে দিয়েছিলেন।
প্রভুর মন্দিরে শত্রুরা আনন্দে চিৎকার করছিল
যেন সেটা ছিল কোন এক ছুটির দিন।
8 সিয়োনের লোকদের চারপাশে যে দেওয়াল ছিল
সেটা প্রভু ধ্বংস করবার পরিকল্পনা করেছিলেন।
দেওয়ালটি কোথা থেকে ভাঙতে হবে তা বোঝানোর জন্য
তিনি দেওয়ালে একটি মাপের দাগ কেটে ছিলেন।
তিনি নিজেকে ধ্বংসকার্য্য থেকে বিরত করেননি।
সব দেওয়ালগুলিকে তিনি দুঃখে কাঁদিয়ে ছিলেন।
সবগুলো একই সময় ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছিল।
9 জেরুশালেমের ফটকগুলি মাটিতে ডুবে গিয়েছিল।
তিনি ফটকের স্তম্ভগুলি ধ্বংস করে চূর্ণ করেছিলেন।
তার রাজা এবং রাজপুত্ররা অন্য জাতির মধ্যে রয়েছে
তাদের জন্য আর কোন শিক্ষা নেই।
জেরুশালেমের ভাববাদীরাও প্রভুর কাছ থেকে আর কোন দিব্য দৃষ্টি পায় নি।
10 সিয়োনের বয়োবৃদ্ধরা মাটিতে বসেন
তাঁরা শান্ত হয়ে মাটিতে বসে থাকেন।
তাঁরা তাঁদের মাথায় ধূলো ছড়ান
তাঁরা চটের বস্ত্র পরেন।
জেরুশালেমের যুবতী নারীরা দুঃখে
তাঁদের মাথা আভূমি নত করেন।
11 আমার চোখ কেঁদে কেঁদে ক্লান্ত,
আমার অন্তর বিচলিত।
মনে হচ্ছে যেন আমার হৃদয়কে মাটিতে ফেলে দেওয়া হয়েছে।
আমার লোকরা ধ্বংস হয়েছে বলেই আমার এমন মনে হচ্ছে।
ছেলেমেয়েরা এবং শিশুরা অজ্ঞান হয়ে যাচ্ছে।
শহরের প্রকাশ্য চৌপাটিতে তারা অজ্ঞান হয়ে যাচ্ছে।
12 সেই বালক-বালিকারা তাদের মায়েদের বলে,
“কোথায় আছে রুটি আর দ্রাক্ষারস?”
তারা মরে যেতে যেতে এই প্রশ্ন করে তারা তাদের মায়ের কোলে মারা যায়।
13 জেরুশালেমের জনগণ, আমি কাদের সঙ্গে তোমাদের তুলনা করব?
সিয়োনের জনগণ, আমি কিসের সঙ্গে তোমাদের তুলনা করব?
আমি কেমন করে তোমায় স্বাচ্ছন্দ্য দেব?
তোমার ধ্বংস সমুদ্রের মতো বিশাল
মনে হয় না কেউ তোমায় সারিয়ে তুলতে পারবে!
14 তোমার জন্য তোমার ভাববাদীদের দিব্যদর্শন হয়েছিল।
কিন্তু তাদের দিব্যদর্শনগুলি ছিল একেবারেই মূল্যহীন ও মিথ্যা।
তারা তোমার পাপের বিরুদ্ধে প্রচার করেনি,
তারা অবস্থার উন্নতি করার চেষ্টা করেনি,
তারা তোমার জন্য বার্তা প্রচার করেছিল
কিন্তু সেগুলি ছিল মিথ্যা বার্তা যা তোমাকে বোকা বানিয়েছিল।
15 যেসব লোকরা রাস্তা দিয়ে যায়
তারা তোমায় দেখে বিস্ময়ে অভিভূত
এবং জেরুশালেমের লোকদের প্রতি হাততালি দেয়।
জেরুশালেমের কন্যার প্রতি তারা শিস্ দেয় আর মাথা নাড়ে।
তারা প্রশ্ন করে, “এই কি সেই শহর
যাকে লোকে বলত ‘নিখুঁত সুন্দর শহর’
এবং ‘সারা পৃথিবীর আনন্দ’?”
16 তোমার সব শত্রুরা তোমায় পরিহাস করে
তারা তোমার প্রতি শিস্ দেয় ও দাঁত কিড়মিড় করে।
তারা বলে, “আমরা তাদের গিলে খেয়েছি!
আজ সত্যিই সেই দিন এসেছে যে দিনের জন্য আমরা অপেক্ষা করেছিলাম।
অবশেষে আমরা এটি ঘটতে দেখলাম।”
17 প্রভু যা পরিকল্পনা করেছিলেন তাই করেছেন।
তিনি যা করবেন বলেছিলেন তাই করেছেন।
বহু পূর্ব থেকে তিনি যা আদেশ দিয়েছিলেন তাই করেছেন।
তিনি ধ্বংস করেছিলেন এবং তাঁর কোন দয়া ছিল না।
তোমার প্রতি যা ঘটেছিল তার দ্বারা তিনি তোমার শত্রুদের সুখী করেছিলেন।
তিনি তোমার শত্রুদের শক্তিশালী করেছিলেন।
18 তুমি তোমার হৃদয় দিয়ে প্রভুর কাছে কেঁদে বল,
হে সিয়োন কন্যার দেওয়াল, নদীর মত অশ্রু গড়িয়ে পড়ুক!
দিনে এবং রাতে তোমার অশ্রু বয়ে যাক্।
তুমি থেমো না!
তোমার চোখকে স্থির থাকতে দিও না!
19 ওঠ! রাত্রে চিৎকার করে কাঁদ।
রাত্রের প্রতিটি প্রহরের শুরুতে চিৎকার করে কাঁদ!
তোমার হৃদয়কে জলের মত ঢেলে দাও!
প্রভুর সামনে তোমার হৃদয়কে ঢেলে দাও!
প্রভুর কাছে প্রার্থনায় তোমার হাত তুলে ধর।
তাঁকে বল তোমার ছেলেমেয়েদের যেন বাঁচিয়ে রাখেন।
তাঁকে বল তোমার যে ছেলেমেয়েরা উপবাসে মূর্ছা যাচ্ছে তাদের যেন তিনি বাঁচিয়ে রাখেন।
শহরের রাস্তায় রাস্তায় তারা উপবাসে মূর্ছা যাচ্ছে।
20 হে প্রভু, আমার দিকে তাকান!
আমার দিকে দেখুন যার সঙ্গে আপনি এভাবে আচরণ করেছেন!
আমাকে এই প্রশ্নটি করতে দিন: নারীদের কি সেই সন্তানদের খাওয়া উচিৎ যাদের তারা জন্ম দিয়েছে?
যাদের তারা আদর-যত্ন করেছে সেই ছেলেমেয়েদের কি নারীরা ভক্ষণ করবে?
প্রভুর মন্দিরে কি যাজক এবং ভাববাদীরা নিহত হবেন?
21 যুবকরা এবং বৃদ্ধরা শহরের রাস্তার মাটিতে পড়ে আছে।
আমার যুবতী নারীরা এবং যুবকরা তরবারির আঘাতে নিহত।
প্রভু, আপনার ক্রোধের দিনে আপনি তাদের হত্যা করেছিলেন,
আপনি তাদের ক্ষমাহীনভাবে হত্যা করেছিলেন!
22 আপনি চারদিক থেকে
সন্ত্রাসকে ডেকে এনেছিলেন।
আমার কাছে আসার জন্য আপনি সন্ত্রাসকে আমন্ত্রণ করেছিলেন
যেন সে একটি ছুটির দিন।
প্রভুর ক্রোধের সেই দিনে
কোন ব্যক্তিই রেহাই পায় নি।
যাদের আমি জন্ম দিয়েছি এবং লালন-পালন করেছি
তাদের আমার শত্রুরা হত্যা করেছে।
33 হে ভালো লোকরা, তোমরা প্রভুতে আনন্দ কর!
ভাল লোকদের পক্ষে তাঁর প্রশংসা করাই ভালো!
2 বীণা বাজাও এবং প্রভুর প্রশংসা কর!
দশতারা বাদ্যযন্ত্র সহযোগে প্রভুর গান গাও।
3 তাঁর জন্য একটা নতুন গান গাও।
অত্যন্ত সুন্দরভাবে বাজাও এবং আনন্দ ধ্বনি দাও!
4 প্রভুর বাক্য সত্য। তিনি যা কিছু করেন,
তাতে তোমরা নির্ভর করতে পারো।
5 ঈশ্বর ন্যায়পরায়ণ হতে ও ভাল কাজ করতে ভালবাসেন।
প্রভুর প্রকৃত ভালোবাসা পৃথিবীকে ভরিয়ে দেয়!
6 প্রভু নির্দেশবাক্য উচ্চারণ করেছিলেন এবং এই পৃথিবী সৃষ্টি হয়েছিল।
ঈশ্বরের মুখের নিঃশ্বাস থেকেই পৃথিবীর সবকিছু সৃষ্টি হয়েছে।
7 ঈশ্বর, সমুদ্রের জল এক জায়গায় জমা করেছেন।
তিনি সমুদ্রকে তার জায়গায় রাখেন।
8 সমগ্র পৃথিবীর সকলের উচিৎ ঈশ্বরকে ভয় এবং শ্রদ্ধা করা।
জগতের প্রত্যেকটি মানুষের তাঁকে ভয় করা উচিত।
9 কেন? কারণ ঈশ্বর একটি আজ্ঞা দেন এবং সেটি ঘটে।
যদি তিনি বলেন “থাম” তাহলেই সব কিছু বন্ধ হয়ে যায়।
10 প্রভু প্রত্যেকের উপদেশকেই অর্থহীন করে তুলতে পারেন।
তিনি জাতিদের পরিকল্পনাগুলি মূল্যহীন করে দিতে পারেন।
11 কিন্তু প্রভুর উপদেশ চিরন্তন সত্য।
তাঁর পরিকল্পনাগুলো বংশপরম্পরায় সত্য থাকে।
12 যারা প্রভুকে তাদের ঈশ্বররূপে পেয়েছে তারা সত্যিই ধন্য।
কেন? কারণ ঈশ্বরই তাদের তাঁর নিজের লোক হিসেবে মনোনীত করেছেন।
13 প্রভু স্বর্গ থেকে নীচের দিকে তাকিয়েছিলেন
এবং সমস্ত লোকদের দেখেছেন।
14 পৃথিবীতে যারা বসবাস করছে,
তাঁর উচ্চ সিংহাসন থেকে তিনি সকলকে দেখেন।
15 ঈশ্বর প্রত্যেকটি লোকের মন সৃষ্টি করেছেন।
প্রত্যেকটি লোক কি ভাবছে ঈশ্বর তাও জানেন।
16 একজন রাজা তার বৃহৎ শক্তিতে উদ্ধার পায় না।
একজন বলবান সৈনিক, তার নিজের শক্তিতে রক্ষা পায় না।
17 ঘোড়াগুলো যুদ্ধের বিজয় এনে দেয় না।
এমনকি তাদের শক্তিও সৈন্যদের পালাতে সাহায্য করতে পারে না।
18 তাঁর প্রকৃত ভালবাসায় আস্থা রেখে, যারা প্রভুকে অনুসরণ করে,
প্রভু তাদের ওপর লক্ষ্য রাখেন এবং তাদের প্রতি যত্ন নেন।
19 সেই সব লোককে ঈশ্বর মৃত্যু থেকে রক্ষা করেন।
ক্ষুধার্ত অবস্থায় তিনি তাদের শক্তি দেন।
20 তাই আমরা প্রভুর জন্য প্রতীক্ষা করবো।
তিনি আমাদের সাহায্য করেন, রক্ষা করেন।
21 ঈশ্বর আমাদের সুখী করেন,
আমরা তাঁর পবিত্র নামে প্রকৃতই আস্থা রাখি।
22 প্রভু, প্রকৃতই আমরা আপনার উপাসনা করি!
তাই আমাদের প্রতি আপনার মহান ভালোবাসা দেখান।
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International