M’Cheyne Bible Reading Plan
শমূয়েল বৈৎলেহমে গেল
16 প্রভু শমূয়েলকে বললেন, “শৌলের জন্য আর কতদিন তুমি দুঃখ বোধ করবে? শৌলকে আমি ইস্রায়েলের রাজা হিসাবে অস্বীকার করেছি একথা তোমাকে বলবার পরও তুমি ওর জন্য দুঃখ করছ। শিঙায় তেল ভর্ত্তি করে বৈৎলেহেমে যাও। তোমাকে আমি একজনের কাছে পাঠাচ্ছি। তার নাম যিশয়। ও বৈৎলেহমেই থাকে। তারই একজন পুত্রকে আমি নতুন রাজা হিসাবে মনোনীত করেছি।”
2 তখন শমূয়েল বলল, “আমি যদি যাই তবে শৌল জানতে পারবে। তখন সে আমায় হত্যা করতে চাইবে।”
প্রভু বললেন, “তুমি বৈৎলেহমে যাও। সঙ্গে একটা বাছুরকে নিও। তুমি বলবে, ‘আমি প্রভুর কাছে একে বলি দিতে এসেছি।’ 3 যিশয়কে এই বলি দেখতে আমন্ত্রণ জানাবে। তারপর কি করবে আমি বলে দেব। যাকে আমি দেখিয়ে দেব তার মাথায় জলপাই তেল ঢেলে দিও।”
4 প্রভুর কথামতো শমূয়েল যা যা করার করল। সে বৈৎলেহমে চলে গেল। সেখানকার প্রবীণরা ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে এল। শমূয়েলের সঙ্গে দেখা করে তারা বলল, “আপনি কি শান্তির ভাব নিয়ে এসেছেন?”
5 শমূয়েল জবাব দিল, “হ্যাঁ, আমি শান্তির ভাব নিয়েই এসেছি। আমি প্রভুর কাছে একটা বলি দিতে এসেছি। তোমরা তৈরী হও। আমার সঙ্গে বলিদানে এসো।” শমূয়েল যিশয় আর তার পুত্রদের প্রস্তুত করে বলিদানের অনুষ্ঠান দেখবার জন্য ডেকে আনল।
6 যিশয় তার পুত্রদের নিয়ে পৌঁছলে শমূয়েল ইলিয়াবকে দেখতে পেল। শমূয়েল ভাবল, “এই সেই যাকে প্রভু বিশেষভাবে পছন্দ করেছেন।”
7 কিন্তু প্রভু শমূয়েলকে বললেন, “ইলীয়াব লম্বা আর সুন্দর দেখতে হলেও এভাবে ব্যাপারটা দেখো না। লোকে যেভাবে কোন জিনিস দেখে বিচার করে ঈশ্বর সেভাবে করেন না। লোকরা মানুষের বাইরের রূপটাই দেখে, কিন্তু ঈশ্বর দেখেন তার অন্তরের রূপ। সেদিক থেকে ইলীয়াব উপযুক্ত লোক নয়।”
8 তখন যিশয় তার দ্বিতীয় পুত্র অবীনাদবকে ডাকলো। অবীনাদব শমূয়েলের পাশ দিয়ে হেঁটে গেল। শমূয়েল বলল, “না একেও প্রভু মনোনীত করেন নি।”
9 একথা শুনে যিশয় শম্মকে শমূয়েলের পাশে আসতে বলল। শমূয়েল বলল, “না এও চলবে না।”
10 যিশয় শমূয়েলকে তার সাত পুত্রকে দেখাল। শমূয়েল বলল, “প্রভু এদের একজনকেও মনোনীত করেন নি।”
11 শমূয়েল বলল, “তোমার পুত্র বলতে এরাই কি সব?”
যিশয় বলল, “না আমার আরেকটা পুত্র আছে। সে সবচেয়ে ছোট, কিন্তু সে এখন মেষ চরাচ্ছে।”
শমূয়েল বলল, “তাকে ডেকে নিয়ে এসো। সে না আসা পর্যন্ত আমরা কেউ খেতে বসব না।”
12 যিশয় একজনকে পাঠালো তার ছোট ছেলেটিকে ডেকে আনতে। তার ছোট ছেলেটি দেখতে ভাল, রক্ত বর্ণের যুবক।
প্রভু শমূয়েলকে বলল, “এই তো সেই ছেলে। ওঠো, একে অভিষেক করো।”
13 শমূয়েল তেল ভর্ত্তি শিঙাটা নিয়ে যিশয়ের সব চেয়ে ছোট ছেলেটার মাথায় ঢেলে দিল। তার ভাই়রা এই ঘটনা দেখল। সেদিন থেকেই প্রভুর আত্মা মহাশক্তিতে দায়ূদের ওপর এল। এরপর শমূয়েল রামায় ফিরে এল।
একটি দুষ্ট আত্মা শৌলকে বিরক্ত করল
14 প্রভুর আত্মা শৌলকে ছেড়ে চলে গেলেন। তখন শৌলের কাছে প্রভু এক দুষ্ট আত্মা পাঠালেন। এর ফলে তিনি বেশ মুশকিলে পড়লেন। 15 শৌলের ভৃত্যরা তাঁকে বলল, “ঈশ্বরের কাছ থেকে এক দুষ্ট আত্মা এসে আপনাকে উদ্বিগ্ন করছে। 16 যদি আপনি আদেশ করেন তাহলে একজন বীণা বাজিয়েকে খুঁজে আনি। প্রভুর কাছ থেকে দুষ্ট আত্মা এলে সে বীণা বাজাবে। তখন আপনি বেশ ভালো বোধ করবেন।”
17 শৌল বললেন, “তাহলে একজন ভালো বাজিয়েকে আমার কাছে নিয়ে এসো।”
18 একজন ভৃত্য বলল, “যিশয় নামে এক ব্যক্তি আছেন যিনি বৈৎলেহমে বাস করেন। আমি যিশয়ের পুত্রকে দেখেছি সে বীণা বাজাতে জানে। সে সাহসী এবং যুদ্ধ করতেও জানে। সে চতুর, দেখতেও সুন্দর। স্বয়ং প্রভু তার সহায়।”
19 তাই শৌল যিশয়ের কাছে কয়েকজন দূত পাঠাল। তারা যিশয়কে বলল, “তোমার দায়ূদ নামে একজন পুত্র আছে, সে তোমার মেষদের দেখাশোনা করে। ওকে আমাদের কাছে ডেকে আনো।”
20 যিশয় শৌলের জন্য কিছু উপহার জোগাড় করলো। যিশয় একটা গাধা, কিছু রুটি, এক বোতল দ্রাক্ষারস আর একটা কচি ছাগল দায়ূদের হাতে করে শৌলের কাছে পাঠালো। 21 দায়ূদ শৌলের সামনে গিয়ে দাঁড়ালে শৌল দায়ূদকে খুব ভালবেসে ফেললেন। দায়ূদ শৌলের সহকারী হয়ে শৌলের অস্ত্র বইতে লাগল। 22 শৌল যিশয়ের কাছে খবর পাঠিয়ে জানিয়ে দিলেন, “দায়ূদ এখানেই থাকুক, আমার কাজকর্ম করুক। আমার ওকে খুব ভাল লেগেছে।”
23 যখনই ঈশ্বর হতে শৌলের ওপর দুষ্ট আত্মা আসত, তখন দায়ূদ বীণা তুলে নিয়ে বাজাতেন। সঙ্গে সঙ্গে দুষ্ট আত্মা শৌলকে ছেড়ে যেত, আর তিনি আরাম বোধ করতেন।
অপরের সমালোচনা করো না
14 বিশ্বাসে যে দুর্বল, এমন কোন ভাইকে তোমাদের মধ্যে গ্রহণ করতে অস্বীকার করো না। তার ভিন্ন ধারণা নিয়ে তার সঙ্গে তর্ক করো না। 2 এক একজন বিশ্বাস করে যে তার যা ইচ্ছা হয় এমন সব কিছুই সে খেতে পারে; কিন্তু যে বিশ্বাসে দুর্বল সে মনে করে যে সে কেবল শাকসব্জী খেতে পারে। 3 যে ব্যক্তি সব খাবারই খায় সে যেন যে কেবল সব্জীই খায়, তাকে হেয় জ্ঞান না করে। আর যে মানুষ কেবল সব্জী খায়, তারও উচিত সব খাবার খায় এমন লোককে ঘৃণা না করা, কারণ ঈশ্বর তাকেও গ্রহণ করেছেন। 4 তুমি অন্যের ভৃত্যের দোষ ধরবে না। সে ঠিক করছে না ভুল করছে তা তার মনিবই ঠিক করবেন; বরং প্রভুর দাস নির্দোষই হবে কারণ প্রভু তাকে ধার্মিক প্রতিপন্ন করতে পারেন।
5 কেউ হয়তো মনে করে এই দিনটি ঐ দিনটির থেকে ভাল, আবার কেউ মনে করে সব দিনই সমান ভাল। প্রত্যেক ব্যক্তি নিজ নিজ মনে তার বিশ্বাস সম্বন্ধে স্থির নিশ্চয় হোক। 6 যে কোন দিনকে বিশেষ মর্যাদা দিয়ে থাকে সে প্রভুর উদ্দেশ্যেই তা করে। তেমনি যে মানুষ সবরকম খাবারই খায়, সেও প্রভুর উদ্দেশ্যেই তা করে কারণ সে ওই খাবারের জন্য ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানায়। এদিকে যে ব্যক্তি কিছু খাদ্য গ্রহণে বিরত থাকে সেও তো প্রভুর উদ্দেশ্যেই তা করে।
7 হ্যাঁ, আমরা সকলেই প্রভুর জন্য বেঁচে থাকি। আমরা কেউ নিজের জন্য বেঁচে থাকি না, কেউ নিজের জন্য মরেও যাই না। 8 আমাদের বেঁচে থাকা তো প্রভুরই উদ্দেশ্যে বেঁচে থাকা, আমরা যদি মরি তবে তো প্রভুর জন্যই মরি। তাই আমরা বাঁচি বা মরি, যে ভাবেই থাকি না কেন, আমরা প্রভুরই। 9 এইজন্যই খ্রীষ্ট মৃত্যু বরণ করলেন ও পুনরায় বেঁচে উঠলেন, যাতে তিনি মৃত ও জীবিত সকলেরই প্রভু হতে পারেন।
10 তাহলে তোমরা কেন খ্রীষ্টেতে তোমার এক ভাইয়ের দোষ ধর? তোমার ভাইয়ের থেকে তুমি ভাল, এমন কথাই বা ভাব কি করে? আমাদের সকলকেই ঈশ্বরের বিচারাসনের সামনে দাঁড়াতে হবে। আর ঈশ্বর আমাদের বিচার করবেন। 11 হ্যাঁ, শাস্ত্রে লেখা আছে:
“‘প্রত্যেক ব্যক্তি আমার সামনে নতজানু হবে।
প্রত্যেক ওষ্ঠাধর স্বীকার করবে যে আমি ঈশ্বর,
প্রভু বলেন, আমার জীবনের দিব্য, এসব হবেই।’”(A)
12 আমাদের সকলকেই ঈশ্বরের কাছে আমাদের জীবনের হিসাব দিতে হবে।
অপরকে পাপে প্ররোচিত করো না
13 তাই এস, আমরা অন্যের বিচার করা থেকে বিরত হই, বরং আমরা সিদ্ধান্ত নেব যে আমরা এমন কিছু করব না যাতে আমাদের কোন ভাই বা বোন হোঁচট খায় ও প্রলোভনে পড়ে পাপ করে। 14 আমি প্রভু যীশুতে নিশ্চিতভাবে বুঝেছি যে কোন খাবার আসলে অশুচি নয়, তা খাওয়া অন্যায় নয়। তবে কেউ যদি সেই খাবার অশুচি ভাবে, তাহলে তার কাছে তা অশুচি।
15 তোমার খাদ্যে যদি তোমার ভাই আত্মিকভাবে আহত হয় তাহলে বুঝতে হবে যে তুমি আর ভালোবাসার পথে চলছ না। তুমি এমন কিছু খেও না যা অন্যের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। এতে তার বিশ্বাস আঘাত পেতে পারে, কারণ খ্রীষ্ট সেই ব্যক্তির জন্য প্রাণ দিয়েছিলেন। 16 তাহলে তোমার কাছে যা ভাল, তা যেন অপরের কাছে নিন্দিত না হয়। 17 ঈশ্বরের রাজ্য খাদ্য পানীয় নয়, কিন্তু তা ধার্মিকতা, শান্তি ও পবিত্র আত্মাতে আনন্দ। 18 যে এ বিষয়ে খ্রীষ্টের দাসত্ব করে, সে ঈশ্বরের প্রীতিপাত্র এবং মানুষের কাছেও পরীক্ষাসিদ্ধ।
19 তাই সেই সব কাজ যা শান্তির পথ প্রশস্ত করে এবং পরস্পরকে শক্তিশালী করে, এস, আমরা তাই করি। 20 নিছক খাদ্যবস্তু নিয়ে ঈশ্বরের কাজ পণ্ড করো না, কারণ সব খাদ্যই শুচি ও খাওয়া যায়, কিন্তু কারো কিছু খাওয়া নিয়ে যদি অন্যের পতন ঘটে তাহলে তেমন কিছু খাওয়া অবশ্যই অন্যায়। 21 তোমার ভাই যদি হোঁচট খায় ও পাপে পতিত হয়, তাহলে মাংস আহার বা দ্রাক্ষারস পান না করাই শ্রেয়। তেমন কোন কাজও না করা ভাল যার ফলে তোমার কোন ভাই বা বোনের পতন ঘটতে পারে ও সে পাপ করে।
22 তোমরা যা ভাল বলে বিশ্বাস কর তা তুমি ও তোমার ঈশ্বরের মধ্যেই রাখ; কারণ কেউ যখন ভাল মনে করে কোন কাজ করে এবং সে যা করছে সেই ব্যাপারে যদি তার বিবেক তাকে দোষী না করে, তবে সেই ব্যক্তি ধন্য। 23 কিন্তু কোন কিছু খাবার ব্যাপারে যার অন্তরে দ্বিধা থাকে সে যদি তবুও তা খায় তাহলে সে অবশ্যই দোষী, কারণ সে তো নিজের বিবেকের বিরুদ্ধে কাজ করল। কেউ যদি বিশ্বাস করতে না পারে যে এটা ঠিক তবে সেই কাজ করা পাপ।
সর্বনাশ দেখে জেরুশালেমের কান্না
1 হায় জেরুশালেম! এক কালে সে ছিল লোকে পরিপূর্ণ।
কিন্তু বর্তমানে শহরটি একেবারে জনশূন্য!
জেরুশালেম একদা বিশ্বের সেরা শহর ছিল।
কিন্তু এখন তার রূপ বিধবা মহিলার মতো।
একসময় সে[a] ছিল অনেক শহরের মধ্যে রাণীর মতো।
কিন্তু এখন সে দাসে পরিণত।
2 রাতে করুণ সুরে কাঁদে জেরুশালেম।
তার গাল বেয়ে অশ্রুধারা নামে।
সান্ত্বনা দেওয়ার মতো তার কেউ নেই।
অনেক প্রেমিক তার প্রতি বন্ধুভাবাপন্ন ছিল।
কিন্তু এখন তাকে সান্ত্বনা দেবার কেউ নেই।
তার সব বন্ধুরাই তাকে প্রতারণা করেছে।
বন্ধুরা এখন তার শত্রুতে পরিণত হয়েছে।
3 যিহূদা ভীষণ রকমের শাস্তি ও যন্ত্রনা পেয়েছিল
এবং তারপর যিহূদাকে বন্দী করা হয়।
যিহূদা অন্য দেশে বাস করছে।
কিন্তু সে বিশ্রাম পাচ্ছে না।
লোকরা তাকে তাড়া করছে।
তাকে তারা সঙ্কীর্ণ উপত্যকাগুলির ওপর তাড়া করছে এবং তাকে ধরে ফেলছে।
4 সিয়োনে যাবার পথঘাটগুলি শোকাহত।
কারণ উৎসব পালন করতে কেউ সিয়োনে আসছে না।
সিয়োনের প্রবেশ দ্বারগুলি ধ্বংস হয়ে গিয়েছে।
যাজকরা সেখানে গভীর দীর্ঘশ্বাস ফেলছে।
সিয়োনের যুবতী মেয়েরা হতবাক।
মোট কথা সে দুঃখে ভারাক্রান্ত।
5 জেরুশালেমের শত্রুরা জয়ী হয়েছে।
তার শত্রুরা এখন নিয়ন্ত্রনাধীন।
তার বিপক্ষীরা আরামে বাস করে।
এটা ঘটেছে কারণ বহু পাপের জন্যই প্রভু তাকে শাস্তি দিয়েছেন।
তাঁর সন্তানরা চলে গিয়েছেন,
শত্রুরা তাদের বন্দী করে নিয়ে গিয়েছেন।
6 সিয়োনের লোকদের সৌন্দর্য আর নেই।
তার নেতারা হরিণের মতো।
শক্তি না থাকলেও তারা ছুটে পালাচ্ছে।
কারণ অনেকেই তাদের ধরার জন্য তাড়া করছে।
7 পুরানো দিনের কথা জেরুশালেম ভাবছে।
ভাবছে সেই সময়ের কথা
যখন সে যন্ত্রণা ভোগ করছিল এবং ছড়িয়ে পড়েছিল।
তার সমস্ত মূল্যবান জিনিষ হারানোর কথা।
পুরানো দিনের উল্লেখযোগ্য মধুর ঘটনার কথা।
শত্রুদের হাতে নিজের লোকদের
বন্দী হওয়ার কথাও সে স্মরণ করছে।
ধ্বংসের সময় শত্রুরা
তাকে দেখে উপহাস করেছিল।
সে সময় তাকে
সাহায্য করার কেউ ছিল না।
8 জেরুশালেম দারুণ পাপ কাজ করেছে।
আর এই পাপের জন্যই সে এখন অশুদ্ধ।
অতীতে লোকরা তাকে সম্মান করত
কিন্তু এখন সেই সব লোকরাই তাকে ঘৃণা করে কারণ সে সম্মান হারিয়েছে।
এমন কি সে যন্ত্রণায় বিলাপ করে এবং দীর্ঘশ্বাস ফেলে
এবং নিজের দিক থেকেই মুখ ফিরিয়ে নেয়।
9 তার অপরিচ্ছন্নতা, তার পোষাককে নোংরা করেছে।
এমন যে হতে পারে তা সে কখনও ভাবতেও পারেনি।
তার পতন বিস্ময়কর।
তাকে সান্ত্বনা দেবার মতো কেউ নেই।
সে বলে, “হে প্রভু, দেখো আমি কিভাবে আঘাতপ্রাপ্ত!
দেখো আমার শত্রুরা নিজেদের কত বড় বলে মনে করে!”
10 শত্রুরা তার হাত ধরে টানছে।
শত্রুরা তার সুন্দর জিনিসগুলি ছিনিয়ে নিয়েছে।
বিদেশী জাতির লোকরা তার উপাসনালয়ে ঢুকে পড়েছে।
অথচ প্রভু আপনি বলেছিলেন, আমাদের সমাজে যোগ দিতে পারবেন না!
11 জেরুশালেমের সমস্ত জনগণ যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে।
প্রত্যেকেই খাদ্যের সন্ধানে লিপ্ত।
খাদ্যের জন্য তারা তাদের সমস্ত মূল্যবান বস্তু দিয়ে দিচ্ছে।
শুধুমাত্র বাঁচার জন্যই তারা এটা করছে।
জেরুশালেম বলছে, “হে প্রভু, আমার দিকে তাকান!
দেখুন লোকরা আমায় কত ঘৃণা করে!
12 তোমরা যারা পাশ দিয়ে যাচ্ছ মনে হচ্ছে,
তাদের কাছে কিছুই নয়।
কিন্তু আমার দিকে তাকিয়ে দেখ,
আমার যন্ত্রণার মতো কি কোন যন্ত্রণা আছে?
আমার যে দুর্দশা হয়েছে এমন দুর্দশা কি আর আছে?
প্রভু আমায় যে শাস্তি দিয়েছেন সেই শাস্তির যন্ত্রণার মতো কি কোন যন্ত্রণা আছে?
তিনি তাঁর ভয়ঙ্কর ক্রোধের দিনে
আমাকে শাস্তি দিয়েছেন।
13 প্রভু ওপর থেকে আগুন পাঠালেন।
ওই আগুন আমার হাড় ভেদ করে চলে গেল।
তিনি আমার চলার পথে একটি জাল বিছিয়ে দিয়ে
পথের চারিদিকে আমাকে ঘোরালেন।
তিনি আমাকে পরিত্যক্ত দেশে রূপান্তরিত করলেন।
আমি সারাদিন অসুস্থ।
14 “তিনি আমার পাপগুলো
একটা যোয়ালের মত তাঁর হাত দিয়ে বেঁধে দিয়েছেন।
তিনি আমাকে দুর্বল করে দিয়েছেন।
তিনি আমাকে এমন লোকের হাতে সমর্পন করেছেন,
যাদের বিরুদ্ধে আমি দাঁড়াতে পারি না।
15 প্রভু আমার অধীনস্থ সমস্ত শক্তিশালী সৈন্যদের সরিয়ে দিয়েছেন।
ঐসব সৈন্যরা শহরের মধ্যে ছিল।
তারপর প্রভু একটি উৎসব করলেন।
আমার যুবক সৈন্যদের হত্যা করার জন্য তিনি ঐসব তীর্থ যাত্রীদের পাঠালেন।
দ্রাক্ষারস তৈরীর জন্য যেমন একজন দ্রাক্ষা দলিত করে
তেমনিভাবে প্রভু তাঁর প্রিয়তম শহরকে[b] পিষে ফেলেছেন।
16 “আমি এ সবের জন্য কাঁদলাম।
আমার দুচোখ বেয়ে অঝোরে জল গড়াতে থাকলো।
আমাকে শান্তি দেওয়ার, সান্ত্বনা দেওয়ার কেউ ছিল না।
এমন কেউ ছিল না যে আমাকে একটু স্বস্তি দিতে পারত।
শত্রুরা জয়লাভ করায় আমার সন্তানগণ
পরিত্যক্ত ভূমির মতো হয়ে উঠলো।”
17 সিয়োন তার দুহাত বাড়িয়ে দিল
কিন্তু তাকে সান্ত্বনা দেবার কেউ ছিল না।
প্রভু যাকোবের শত্রুদের শহর
ঘিরে ফেলার আদেশ দিলেন।
জেরুশালেম শত্রুদের কাছে
একটি অশুদ্ধ স্ত্রীলোক হয়ে পড়েছে।
18 সে বলল, “আমি প্রভুর কথা শুনতে অস্বীকার করেছিলাম।
তাই প্রভুর অধিকার আছে আমাকে এমন শাস্তি দেওয়ার।
তাই জনগণ, তোমরা শোন!
আমার দুর্ভোগের দিকে তাকাও!
আমার যুবক যুবতীদের
নির্বাসনে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
19 আমাকে যারা ভালোবাসতো তাদের আমি ডাকলাম।
কিন্তু ওরা আমায় ঠকালো।
আমার যাজকগণ ও প্রবীণ ব্যক্তিরা
এই শহরে মারা গেছে।
আমার যাজকগণ ও নেতারা যখন বেঁচে থাকার জন্য খাদ্যের সন্ধান করছিল
তখন তারা এই শহরে মারা যায়।
20 “হে প্রভু, আমার দিকে তাকিয়ে দেখুন! আমি দুর্দশাগ্রস্ত!
আমি অন্তর থেকে বিপর্যস্ত, আমার মনে হচ্ছে যে আমার ভেতরে হৃদয়টা উল্টো হয়ে রয়েছে!
আমার এমন খারাপ লাগছে!
রাস্তায়, আমার ছেলেমেয়েদের তরবারি দিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
মৃত্যুর পচা গন্ধ সর্বত্র ছড়িয়ে আছে!
21 “আমার বিলাপ শুনুন!
আমাকে সান্তনা দেবার কেউ নেই।
আমার সমস্ত শত্রুরা আমার দুর্দশা সম্পর্কে শুনেছে।
তারা খুশী যে আপনি আমাকে এমন করেছেন।
আপনি বলেছিলেন যে শাস্তির একটা সময় থাকবে।
আপনি বলেছিলেন যে আপনি আমার শত্রুদের শাস্তি দেবেন।
এখন আপনি যে সবগুলো বলেছিলেন
সেগুলো করুন।
22 “আমার শত্রুদের নিষ্ঠুরতার দিকে তাকিয়ে দেখুন।
তাহলে আমার জন্য আমার সঙ্গে আপনি যে রকম ব্যবহার করেছেন
সে রকম ওদের সঙ্গেও করতে পারবেন।
এরকম করুন কারণ আমি ক্রমাগতই বিলাপ করে যাচ্ছি।
এটা করুন কারণ আমার হৃদয় অসুস্থ।”
দায়ূদের একটি মস্কীল।
32 একজন ব্যক্তি, যার পাপসমূহ ক্ষমা করা হয়েছে,
সে প্রকৃতই ধন্য।
যার পাপ মুছে দেওয়া হয়েছে, সেই লোকও সত্যিই ধন্য।
2 একজন ব্যক্তি সত্যিকারের সুখী
যখন প্রভু তাকে বলেন তার কোন দোষ নেই।
সেই ব্যক্তি ভাগ্যবান, সে তার গোপন পাপ লুকিয়ে রাখে নি।
3 ঈশ্বর, আমি বার বার আপনার কাছে প্রার্থনা করেছি,
কিন্তু আমার গোপন পাপের কথা আমি বলিনি।
তাই যতবার আমি প্রার্থনা করেছি, ততবারই আমি দুর্বল হয়ে পড়েছি।
4 দিন রাত আপনি আমার জীবনকে কঠিন থেকে কঠিনতর করে তুলেছেন।
গ্রীষ্মকালের শুকনো জমির মত আমি শুকিয়ে গিয়েছিলাম।
5 তখন আমি আমার সব পাপ প্রভুর কাছে স্বীকার করার সিদ্ধান্ত নিলাম।
প্রভু, আমি আপনাকে আমার পাপের কথা বলেছি।
আমার কোন অপরাধ আমি লুকিয়ে রাখিনি এবং আপনি আমার সব পাপ ক্ষমা করে দিয়েছেন!
6 এই কারণে, হে ঈশ্বর, সব অনুগামীদের আপনার প্রতি প্রার্থনা করা উচিৎ।
এমনকি, যখন প্লাবনের মত বিপর্যয়গুলি অন্যদের ওপর আসে, তখনও তারা আপনার অনুগামীদের কাছে আসবে না।
7 হে ঈশ্বর, আমার কাছে আপনিই লুকোনোর স্থান।
আমার সমস্যা থেকে আপনি আমায় রক্ষা করেছেন।
আপনি আমায় ঘিরে থাকেন এবং আমায় রক্ষা করেন।
তাই আপনি যে ভাবে আমায় উদ্ধার করেছেন আমি তারই গান গাই।
8 প্রভু বলেন, “যে পথে তুমি বাঁচবে আমি তোমাকে সেই পথের শিক্ষা দেবো।
আমি তোমায় সেই পথে পরিচালিত করবো।
আমি তোমায় রক্ষা করবো এবং তোমার পথ প্রদর্শক হবো।
9 একটা ঘোড়া বা গাধা, যাদের বোধশক্তি নেই, তাদের মত নির্বোধ হয়ো না।
এইসব জন্তুকে বশে আনতে গেলে, লোকদের বল্গা ও লাগাম ব্যবহার করা উচিত।
এইসব জিনিস ছাড়া ঐসব জন্তু আপনার কাছে আসবে না।”
10 মন্দ লোকদের কাছে অনেক যন্ত্রণা আসবে।
কিন্তু যারা প্রভুতে আস্থা রাখে, তাঁর প্রকৃত ভালোবাসা তাদের ঘিরে থাকবে।
11 ভালো লোকেরা, তোমরা আনন্দ কর এবং প্রভুতে আনন্দলাভ কর! তোমরা সৎ লোকেরা আনন্দ কর!
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International