Print Page Options
Previous Prev Day Next DayNext

M’Cheyne Bible Reading Plan

The classic M'Cheyne plan--read the Old Testament, New Testament, and Psalms or Gospels every day.
Duration: 365 days
Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)
Version
1 শমূয়েল 14

যোনাথন পলেষ্টীয়দের আক্রমণ করল

14 সেদিন শৌলের পুত্র যোনাথন তার অস্ত্রবাহকের সঙ্গে কথা বলছিল। যোনাথন বলল, “উপত্যকার অন্যদিকে পলেষ্টীয়রা তাঁবু গেড়েছে। চলো সেদিকে যাওয়া যাক।” পিতাকে সে এ বিষয়ে কোন কথা বলল না।

শৌল তখন পাহাড়ের ধারে মিগ্রোন নামে একটা জায়গায় একটা ডালিম গাছের নীচে বসেছিলেন। এটা ছিল যেখানে ফসল ঝাড়াই হয় তারই কাছে। শৌলের সঙ্গে ছিল প্রায় 600 জন লোক। একজনের নাম ছিল অহিয়। এলি শীলোয় প্রভুর যাজক ছিল। তার জায়গায় এখন অহিয় নামে এক ব্যক্তি যাজক হল। সে পরল যাজকের এফোদ নামক বিশেষ পোশাক। অহিয় ছিল ঈখাবোদের ভাই অহীটুবের পুত্র। ঈখাবোদের পিতার নাম পীনহস। পীনহসের পিতা ছিল এলি।

লোকরা জানত না যে যোনাথন চলে গিয়েছিল। গিরিপথের উভয় পাশে একটা বড় শিলা ছিল। যোনাথন ঠিক করল ঐ গিরিপথ দিয়ে সে পলেষ্টীয় শিবিরে পৌঁছবে, একটা শিলার নাম ছিল বোৎ‌সেস; অন্য শিলাটির নাম ছিল সেনি। একটি শিলা উত্তরে মিক্‌মস অভিমুখে ছিল এবং অন্যটি ছিল দক্ষিণে গেবার দিকে মুখ করা।

যোনাথন তার অস্ত্রবাহক যুবক সহকারীকে বলল, “চলো আমরা ঐ বিদেশীদের তাঁবুর দিকে যাই। হয়তো ওদের হারিয়ে দিতে প্রভু আমাদের সাহায্য করতে পারেন। প্রভুকে কেউই থামাতে পারে না। আমাদের সৈন্য কম হোক্ বা বেশী এতে কিছু যায় আসে না।”

অস্ত্রবাহক যুবকটি তাকে বলল, “যা ভাল বোঝ, করো। আমি তোমার সঙ্গে সমস্ত ব্যাপারে থাকব।”

যোনাথন বলল, “চলো এগোনো যাক! আমরা উপত্যকা পেরিয়ে পলেষ্টীয় প্রহরীদের দিকে যাব। এমন করব যেন তারা আমাদের দেখতে পায়। যদি তারা বলে, ‘আমরা না আসা পর্যন্ত ওখানে দাঁড়াও,’ তাহলে সেখানেই দাঁড়িয়ে থাকব। আমরা ওদের দিকে এগোব না। 10 কিন্তু যদি পলেষ্টীয় লোকরা বলে, ‘এদিকে চলে এসো,’ তাহলে আমরা পাহাড় ডিঙিয়ে তাদের দিকে চলে যাব। কেন? কারণ সেটাই হবে ঈশ্বরের দেওয়া চিহ্ন বিশেষ। এর অর্থ হচ্ছে, প্রভু আমাদের সহায় হলেন যাতে ওদের হারিয়ে দিতে পারি।”

11 সেই মতো যোনাথন ও তার অস্ত্রবহনকারী পলেষ্টীয়দের একটা সুযোগ করে দিল ওরা যাতে তাদের দেখতে পায়। পলেষ্টীয় প্রহরীরা বলল, “দেখ, গর্ত থেকে ইব্রীয়রা বেরিয়ে আসছে যেখানে তারা লুকিয়ে ছিল!” 12 দুর্গের ভেতর থেকে পলেষ্টীয়রা যোনাথন ও তার অস্ত্রবহনকারীকে চিৎকার করে বলল, “এগিয়ে এসো। আমরা তোমাদের উচিৎ‌ শিক্ষা দেব!”

যোনাথন তার অস্ত্রবহনকারীকে বলল, “আমি পাহাড়ে উঠছি। আমার পিছন পিছন এসো। প্রভু ইস্রায়েলীয়দের দিয়ে পলেষ্টীয়দের পরাজিত করতে দিচ্ছেন!”

13-14 তাই যোনাথন হামাগুড়ি দিয়ে পাহাড়ে উঠল। তার অস্ত্রবহনকারী ঠিক তার পিছনে। যোনাথন ও তার অস্ত্রবহনকারী সেখানে ছিল না। ওরা দুজনে পলেষ্টীয়দের আক্রমণ করল। প্রথম চোটেই তারা আধ একর জমি জুড়ে 20 জন পলেষ্টীয়কে হত্যা করল। সামনে থেকে যারা আক্রমণ করতে আসছিল যোনাথন তাদের সঙ্গে যুদ্ধ করল। আর তার অস্ত্রবহনকারী পিছন পিছন এসে যারা শুধু আহত হয়েছিল তাদের মেরে ফেলল।

15 পলেষ্টীয় সৈন্যরা সকলেই বেশ ভয় পেয়ে গেল। মাঠে, শিবিরে, দুর্গে যে সব সৈন্য ছিল সকলেই ভয় পেয়ে গেল, এমনকি সবচেয়ে সাহসী যারা তারাও। মাটি কাঁপতে লাগল এবং তাতে পলেষ্টীয় বাহিনী সত্যিই বেশ ভয় পেয়ে গেল।

16 শৌলের প্রহরীরা ছিল বিন্যামীনের গিবিয়ায়। তারা দেখল পলেষ্টীয়রা যেদিকে পারছে পালাচ্ছে। 17 শৌল সৈন্যদের বললেন, “লোকগুলোকে গোন। ক’জন শিবির ছেড়ে গেছে দেখতে চাই।”

ওরা লোক গুনতে শুরু করল। যোনাথন ও তার অস্ত্রবহনকারী সেখানে ছিল না।

18 শৌল অহিয়কে বললেন, “এবার ঈশ্বরের পবিত্র সিন্দুক আনো।” (সেই সময় ঈশ্বরের পবিত্র সিন্দুক ইস্রায়েলীয়দের সঙ্গে ছিল।) 19 শৌল যাজক অহিয়র সঙ্গে কথা বলছিলেন। ঈশ্বরের উপদেশের জন্য তিনি অপেক্ষা করছিলেন। কিন্তু পলেষ্টীয়দের শিবিরে গোলমাল আর চেঁচামেচি ক্রমশঃ বেড়েই চলেছিল। শৌল অধৈর্য্য হয়ে পড়লেন। অবশেষে তিনি যাজক অহিয়কে বললেন, “আর নয়, এবার হাত নামাও। প্রার্থনা শেষ করো।”

20 সৈন্যসামন্ত জড়ো করে নিয়ে শৌল যুদ্ধ করতে গেলেন। পলেষ্টীয় সৈন্যরা বিভ্রান্ত হয়ে গেল। এমনকি তারা তাদের তরবারি ব্যবহার করে একে অপরের সঙ্গে লড়াই করছিল। 21 কিছু ইব্রীয় আগে পলেষ্টীয়দের সেবা করত এবং তাদের শিবিরেই থাকত। কিন্তু এখন তারা শৌল আর যোনাথনের সঙ্গে মিশে গেল। তারা এখন ইস্রায়েলীয়দের দলে ভিড়ে গেল। 22 ইফ্রয়িমের পার্বত্য দেশে যেসব ইস্রায়েলীয় লুকিয়েছিল তারা পলেষ্টীয়দের পালিয়ে যাবার খবর শুনল। এখন এই ইস্রায়েলীয়রাও যুদ্ধে নেমে পলেষ্টীয়দের তাড়িয়ে দিতে শুরু করল।

23 এইভাবে প্রভু সেদিন ইস্রায়েলীয়দের রক্ষা করলেন। যুদ্ধ চললো বৈৎ‌-আবন ছাড়িয়ে। সমস্ত সৈন্য এখন শৌলের সঙ্গে। তারা সংখ্যায় প্রায় 10,000 জন পুরুষ। পাহাড়ী অঞ্চলে ইফ্রয়িমের সমস্ত শহরগুলিতে যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ল।

শৌলের আরেকটি ভুল

24 কিন্তু সেদিন শৌল একটা মস্ত ভুল করেছিলেন। ইস্রায়েলীয়রা ক্লান্ত ও ক্ষুধার্ত হয়ে পড়েছিল। এর কারণ শৌল। তিনি তাদের দিয়ে এই প্রতিশ্রুতি করিয়েছিলেন, “সন্ধ্যার আগে এবং আমি শত্রুদের হারিয়ে দেবার আগে যদি কেউ খায় তাহলে তাকে শাস্তি দেওয়া হবে।” তাই কোন ইস্রায়েলীয় সৈন্য কিছু খায় নি।

25-26 যুদ্ধ করতে গিয়ে তারা বেশ কিছু জঙ্গলের মধ্যে ঢুকে পড়েছিল। তারপর তারা এক জায়গায় মাটির ওপরে একটি মৌচাক দেখল, কিন্তু মৌচাকের কাছে গিয়েও খেল না। প্রতিশ্রুতি ভাঙ্গতে তাদের ভয় করছিল। 27 কিন্তু যোনাথন এই প্রতিশ্রুতির কথা জানত না। সে জানত না যে তার পিতা সৈন্যদের জোর করে এই প্রতিশ্রুতি করিয়েছেন। যোনাথনের হাতে ছিল একটি লাঠি। সে লাঠিটার একটা দিক মৌচাকের মধ্যে ঢুকিয়ে দিয়ে কিছু মধু বার করে আনলো। মধু খেয়ে সে কিছুটা ভাল বোধ করল।

28 সৈন্যদের একজন যোনাথনকে বলল, “তোমার পিতা সৈন্যদের এই বিশেষ প্রতিশ্রুতি করতে বাধ্য করেছিলেন। তোমার পিতা বলেছিলেন কেউ আজ খেলে শাস্তি পাবে। তাই কেউ কিছু খায় নি। সেই জন্য সকলে দুর্বল হয়ে পড়েছে।”

29 যোনাথন বলল, “আমার পিতা এই দেশে অনেক অশান্তি নিয়ে এসেছে। এই দেখ সামান্য একটু মধু খেয়েই আমি কেমন সুস্থ বোধ করছি। 30 শত্রুদের কাছ থেকে খাবার আদায় করে যদি লোকরা খেয়ে নিত তাহলে অনেক ভাল হতো। তাহলে আমরা আরো অনেক পলেষ্টীয়দের হত্যা কতে পারতাম!”

31 সেদিন ইস্রায়েলীয়রা পলেষ্টীয়দের হারিয়ে দিল। মিক্‌মস থেকে অয়ালোন পর্যন্ত সমস্ত জায়গায় ওরা পলেষ্টীয়দের সঙ্গে লড়াই চালিয়েছিল। ফলে তারা ক্লান্ত ও ক্ষুধার্ত হয়ে পড়েছিল। 32 পলেষ্টীয়দের মেষ, গরু, বাছুর সব তারা নিয়ে নিয়েছিল। এখন ইস্রায়েলের লোকরা প্রবল ক্ষুধায় সেগুলো মাটিতে ফেলে হত্যা করে রক্তশুদ্ধ খেতে লাগল।

33 শৌলকে একজন বলল, “এই দেখ। লোকগুলো আবার প্রভুর বিরুদ্ধে পাপ করছে। রক্ত লেগে থাকা মাংস ওরা খাচ্ছে!”

তখন শৌল বললেন, “তোমরা পাপ করেছ। এখানে একটা বড় পাথর গড়িয়ে দাও।” 34 তারপর শৌল বললেন, “যাও ওদের কাছে গিয়ে বলো, প্রত্যেকেই তার ষাঁড় আর মেষ যেন আমার কাছে নিয়ে আসে। তারপর ওরা এখানে এসে সে সব জন্তুকে যেন মারে। তোমরা প্রভুর বিরুদ্ধে পাপ কোরো না। কখনও রক্ত মাখানো মাংস খেও না।”

সেই রাত্রে প্রত্যেকেই নিজেদের পশু সেখানে নিয়ে এসে বলি দিল। 35 তারপর শৌল প্রভুর জন্য একটা বেদী তৈরী করলেন। শৌল নিজেই এই কাজটা করতে লাগলেন।

36 শৌল বললেন, “আজ রাত্রে চলো আমরা পলেষ্টীয়দের আক্রমণ করি। তাদের সবকিছু আমরা কেড়ে নিয়ে একেবারে শেষ করে দিই।”

সৈন্যরা বলল, “যা ভাল বোঝ করো।”

কিন্তু যাজক বলল, “ঈশ্বরকে জিজ্ঞেস করে দেখা যাক।”

37 তখন শৌল ঈশ্বরকে জিজ্ঞাসা করল, “আমি কি পলেষ্টীয়দের পিছু নিয়ে ওদের হটিয়ে দেব? আপনি কি ওদের পরাজয়ে আমাদের সাহায্য করবেন?” কিন্তু ঈশ্বর সেদিন কোন উত্তর দিলেন না।

38 তখন শৌল বললেন, “সমস্ত নেতাকে আমার কাছে ডেকে আনো। খুঁজে দেখা যাক আজ কে পাপ করেছে। 39 ইস্রায়েলকে যিনি রক্ষা করেন, সেই প্রভুর নামে আমি শপথ করে বলছি, পাপ যদি আমার পুত্র যোনাথনও করে থাকে তবে তাকেও মরতে হবে।” কেউ কোন কথা বলল না।

40 শৌল সমস্ত ইস্রায়েলীয়দের বললেন, “তোমরা এদিকটায় দাঁড়াও, আমি আর যোনাথন ওদিকে দাঁড়াচ্ছি।”

সৈন্যরা বলল, “যা বলবেন তাই হবে।”

41 তারপর শৌল প্রার্থনা শুরু করলেন। তিনি বললেন, “হে প্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর, কেন আজ তোমার ভৃত্যকে কোনো উত্তর দিলে না? যদি আমি বা আমার পুত্র কোন দোষ করে থাকি, তবে প্রভু ইস্রায়েলের ঈশ্বর আমাদের উরীম দাও। যদি তোমার ইস্রায়েলীয়রা কোন পাপ করে থাকে, তুমি তবে তুম্মীম দাও। উরীম আর তুম্মীম ছুঁড়ে দেওয়া হল।”

শৌল ও যোনাথন ধরা পড়ল এবং লোকরা বাদ পড়ল। 42 শৌল বললেন, “আবার ওগুলো ছুঁড়ে দেখো কে দোষী, আমি না আমার পুত্র যোনাথন?” এবার যোনাথন ধরা পড়ল।

43 শৌল যোনাথনকে বললেন, “কি করেছ বলো?”

যোনাথন বলল, “লাঠির মাথায় শুধু একটু মধু নিয়ে খেয়েছি। এর জন্য কি আমাকে মরতে হবে?”

44 শৌল বললেন, “আমি যে প্রতিশ্রুতি করেছি। প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করলে ঈশ্বর আমাকে শাস্তি দেবেন। সুতরাং যোনাথন মরবেই।”

45 তখন সৈন্যরা শৌলকে বলল, “যোনাথন আজ ইস্রায়েলের জয়ের নায়ক। তাকে কি মরতেই হবে? কখনোই না। আমরা জীবন্ত ঈশ্বরের নামে দিব্যি করে বলছি, কেউ যোনাথনের গায়ে হাত দেব না। তার একটি চুলও মাটিতে পড়বে না। স্বয়ং ঈশ্বর যোনাথনকে পলেষ্টীয়দের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে সাহায্য করেছেন।” এইভাবে তারা যোনাথনকে বাঁচাল। তাকে আর মরতে হল না।

46 শৌল পলেষ্টীয়দের পিছু নিলেন না। পলেষ্টীয়রা নিজেদের জায়গায় ফিরে এলো।

ইস্রায়েলের শত্রুদের সঙ্গে শৌলের যুদ্ধ

47 ইস্রায়েলের সম্পূর্ণ কর্ত্তৃত্ব শৌল নিজের হাতে নিলেন। ইস্রায়েলের চারিদিকে যত শত্রু ছিল, তাদের সঙ্গে তিনি যুদ্ধ চালালেন। তিনি মোয়াব, অম্মোনীয়, সোবার রাজা ইদোম এবং পলেষ্টীয়দের সঙ্গে যুদ্ধ করলেন। শৌল যেখানে গেলেন সেখানেই ইস্রায়েলের শত্রুদের হারিয়ে দিলেন। 48 শৌল খুব সাহসী ছিলেন। সমস্ত শত্রু, যারা ইস্রায়েলীয়দের লুঠ করতে চাইছিল, তাদের হাত থেকে শৌল ইস্রায়েলীয়দের রক্ষা করেছিলেন। এমনকি অমালেক গোষ্ঠীকেও তিনি হারিয়ে দিয়েছিলেন।

49 শৌলের পুত্রদের নাম যোনাথন, যিশবি এবং মল্কীশূয়। তাঁর বড় মেয়ের নাম মেরব, ছোট মেয়ে মীখল। 50 শৌলের স্ত্রীর নাম অহীনোয়ম। অহীনোয়মের পিতা হচ্ছে অহীমাস।

শৌলের সেনাপতি অবনের, সে ছিল নেরের পুত্র। নের শৌলের কাকা। 51 শৌলের পিতা কীশ এবং অবনেরের পিতা নেব এঁরা দুজনে অবীয়েলের পুত্র।

52 শৌল আজীবন সাহসী ছিলেন। তিনি পলেষ্টীয়দের বিরুদ্ধে প্রবলভাবে যুদ্ধ করেছিলেন। যখনই তিনি একটি শক্ত সমর্থ বা সাহসী লোক দেখতে পেতেন, তাকে তাঁর সৈন্যদলে যুক্ত করে নিতেন। এরা তাঁর দেহরক্ষী হিসেবে কাছাকাছি থাকত।

রোমীয় 12

ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে জীবন উৎসর্গ কর

12 ভাই ও বোনেরা, আমার মিনতি এই, ঈশ্বর আমাদের প্রতি দয়া করেছেন বলে তোমাদের জীবন ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে জীবিত বলিরূপে উৎসর্গ কর, তা তাঁর কাছে পবিত্র প্রীতিজনক হোক্। ঈশ্বরের উপাসনা করার জন্য তোমাদের কাছে এ এক আত্মিক উপায়। এই জগতের লোকদের মতো নিজেদের চলতে দিও না, বরং নতুন চিন্তাধারায় নিজেদের পরিবর্তন কর; যেন বুঝতে পার ঈশ্বর কি চান, কোনটা ভাল, কোনটা তাঁকে খুশী করে ও কোনটা সিদ্ধ।

ঈশ্বর আমাকে একটি বিশেষ বর দান করেছেন, তাই তোমাদের মধ্যে প্রত্যেককে আমার কিছু বলার আছে। নিজের সম্বন্ধে যেমন ধারণা থাকা উচিত তার থেকে উঁচু ধারণা পোষণ করো না; কিন্তু ঈশ্বর যাকে যে পরিমাণ বিশ্বাস দিয়েছেন তোমরা সেইমতো নিজেদের সম্বন্ধে ধারণা পোষণ কর। আমাদের সকলের দেহ আছে আর সেই দেহে অনেক অঙ্গ প্রত্যঙ্গ আছে। এই অঙ্গ প্রত্যঙ্গগুলি একই কাজ করে না। ঠিক তেমনই আমরা অনেকে মিলে খ্রীষ্টেতে দেহ গঠন করি। আমরা সেই দেহের অঙ্গ প্রত্যঙ্গ, একে অপরের সঙ্গে সংযুক্ত।

আর ঈশ্বরের অনুগ্রহ অনুসারেই আমরা ভিন্ন ভিন্ন বরদান পেয়েছি। কেউ যদি ভাববাণী বলার বরদান পেয়ে থাকে তবে সে তার বিশ্বাসের পরিমাণ অনুসারে ভাববাণী বলুক। যার সেবা করবার বরদান আছে সে তা সেবা কর্মেই প্রয়োগ করুক। যে শিক্ষক, সে শিক্ষার দ্বারা লোকদের উৎসাহ দিক। যে উপদেষ্টা, সে উপদেশ দানের কাজ করুক। যার অপরকে সাহায্যদানের ক্ষমতা আছে, সে উদারভাবেই সাহায্য করুক। কর্ত্তৃত্ব যার হাতে সে সযত্নেই কর্ত্তৃত্ব করুক। যে দয়া করে, সে আনন্দের সঙ্গেই তা করুক।

তোমার ভালবাসা অকৃত্রিম হোক। যা মন্দ তা ঘৃণা কর আর যা ভাল তাতে আসক্ত থাক। 10 ভাই বোনের মধ্যে যে পবিত্র ভালোবাসা থাকে সেই ভালোবাসায় তোমরা পরস্পরকে ভালবাস। অপর ভাই বোনেদের নিজের থেকেও বেশী সম্মানের যোগ্য বলে মনে কর। 11 প্রভুর কাজে শিথিল হয়ো না। আত্মায় উদ্দীপ্ত হয়েই তোমরা প্রভুর সেবা কর। 12 আনন্দ কর, কারণ তোমাদের প্রত্যাশা আছে। তোমরা দুঃখকষ্টে সহিষ্ণু হও; নিরন্তর প্রার্থনা কর। 13 তোমাদের যা আছে তা অভাবী ঈশ্বরের লোকদের সঙ্গে ভাগ করে নাও। তোমাদের গৃহে অতিথিদের স্বাগত জানাও।

14 তোমাদের যারা নির্যাতন করে তাদের জন্য প্রার্থনা করো, যেন ঈশ্বর তাদের আশীর্বাদ করেন। তাদের মঙ্গল কামনা কর, অভিশাপ দিও না। 15 তোমরা অপরের সুখে সুখী হও, যারা দুঃখে কাঁদছে তাদের সঙ্গে কাঁদো। 16 তোমরা পরস্পর একপ্রাণ হয়ে শান্তিতে থাক, অহঙ্কারী হয়ো না। যারা দীনহীন মানুষ তাদের সঙ্গে সম্পর্ক রেখে চল। নিজেকে জ্ঞানী মনে করে গর্ব করো না।

17 কেউ অপকার করলে অপকার করে তার প্রতিশোধ নিও না। সকলের চোখে যা ভাল তোমরা তা করতেই চেষ্টা কর। 18 যতদূর পার সকলের সঙ্গে শান্তিতে থাকার চেষ্টা করে যাও। 19 আমার বন্ধুরা, কেউ তোমাদের বিরুদ্ধে অন্যায় করলে তাকে শাস্তি দিতে যেও না, বরং ঈশ্বরকেই শাস্তি দিতে দাও। শাস্ত্রে প্রভু বলছেন, “প্রতিশোধ নেওয়া আমার কাজ, প্রতিদান যা দেবার আমিই দেব।”(A) 20 কিন্তু তোমরা এই কাজ কর,

“তোমাদের শত্রুরা ক্ষুধার্ত হলে
    তাদের খেতে দাও,
তোমাদের শত্রু তৃষ্ণার্ত হলে
    তাদের জল পান করাও।
এই রকম করলে তোমরা তাকে লজ্জায় ফেলে দেবে।”(B)

21 মন্দের কাছে পরাস্ত হয়ো না, বরং উত্তমের দ্বারা মন্দকে পরাস্ত করো।

যিরমিয় 51

51 প্রভু বললেন,
“আমি শক্তিশালী বাতাস প্রবাহিত করব।
    আমি এই শক্তিশালী বাতাসকে বাবিলের বিরুদ্ধে এবং ‘লেব-কামাই’ এর লোকদের বিরুদ্ধে বওয়াবো।
আমি বাবিলকে শস্য থেকে তুষ ঝেড়ে ফেলবার মত করবার জন্য লোক পাঠাবো
    এবং তারা বাবিলকে তুষের মত করে দেবে।
তারা বাবিল থেকে সবকিছু নিয়ে নেবে।
    সেনারা শহর ঘিরে রাখবে এবং ভয়ঙ্কর ধ্বংস ঘটবে।
বাবিলের সেনারা তাদের তীর ধনুক ব্যবহার করবে না।
    তারা এমন কি তাদের অস্ত্রশস্ত্রও তুলবে না।
বাবিলের যুবকদের জন্য দুঃখিত হয়ো না।
    তার সেনাদের পুরোপুরি ধ্বংস কর।
কল‌্দীয়দের দেশে বাবিলের সৈন্যদের হত্যা করা হবে।
    বাবিলের রাস্তায় তারা গুরুতরভাবে আহত হবে।”

প্রভু সর্বশক্তিমান ইস্রায়েল এবং যিহূদাকে বিধবা মহিলাদের মতো একাকী ফেলে চলে যান নি।
    ঈশ্বর ঐসব লোকদের ত্যাগ করেন নি।
    না! ঐ লোকরা দোষী।
তারা ইস্রায়েলের পবিত্র একজনকে ত্যাগ করেছিল।
    তারা ত্যাগ করলেও ঈশ্বর তাদের ত্যাগ করেন নি।

বাবিল থেকে পালিয়ে যাও।
    পালাও নিজেদের জীবন বাঁচাতে।
    বাবিলের পাপের জন্য সেখানে থেকে নিহত হয়ো না।
তাদের অপকর্মের জন্য ঈশ্বরের বাবিলীয়দের শাস্তি দেবার সময় এসেছে।
    বাবিল তার যোগ্য শাস্তি পাবেই।
বাবিল ছিল প্রভুর হাতের স্বর্ণ পেয়ালার মতো।
    বাবিল গোটা পৃথিবীকে মদ্যপ বানিয়েছে।
জাতিগুলি বাবিলের মদ পান করেছে।
    তাই তাদের মস্তিষ্কের এই বিকৃতি।
বাবিলের হঠাৎ‌‌ পতন হবে।
    ছিন্ন ভিন্ন হয়ে যাবে, তার জন্য কাঁদো।
তার যন্ত্রণা উপশমের জন্য ওষুধ দাও!
    সে সুস্থ হতেও পারে।

আমরা বাবিলকে সুস্থ করার চেষ্টা করেছি।
    কিন্তু সে সুস্থ হতে পারবে না।
তাই আমাদের প্রত্যেকের উচিৎ‌
    তাকে ত্যাগ করে নিজেদের দেশে ফিরে যাওয়া।
স্বর্গের ঈশ্বর ঠিক করবেন তার শাস্তি।
তিনিই ঠিক করবেন বাবিলে কি হবে।
10 প্রভু আমাদের জন্যও প্রতিরক্ষার ব্যবস্থা করেছেন।
    এসো, সিয়োন সেই সব কথা বলো।
এখন বলো, প্রভু আমাদের ঈশ্বরের কৃত কর্মের কথা।

11 তীরগুলি তীক্ষ্ণ করো।
    বর্ম তুলে নাও।
ঈশ্বর মাদীয় রাজাদের উত্তেজিত করে তুললেন।
    তিনি তাদের উত্তেজিত করে তুলবেন।
কারণ তিনি বাবিলকে ধ্বংস করতে চান।
    বাবিলের লোকদের প্রভু তাদের পাওনা শাস্তি দেবেন।
জেরুশালেমে প্রভুর উপাসনাগৃহগুলি ধ্বংস করেছিল বাবিল।
    এর জন্য যে শাস্তি তাদের পাওয়া উচিৎ‌ প্রভু তাই দেবেন।
12 বাবিলের প্রাচীরগুলির বিরুদ্ধে একটি ধ্বজা তোল।
    আরও রক্ষী আনো।
নজরদার নিয়োগ করো।
    তৈরী হও গোপন আক্রমণের জন্য।
প্রভু নিজের পরিকল্পনা মত কাজ করে যাবেন।
    বাবিলের লোকদের বিরুদ্ধে তিনি তাঁর কথা মত সবকিছুই করবেন।
13 বাবিল তুমি গভীর জলের কাছে বাস করো।
    কোষাধ্যক্ষদের সঙ্গে সঙ্গে তুমিও ধনী, কিন্তু তোমার সমাপ্তি সমাগত।
    এটাই তোমার ধ্বংসের সময়।
14 প্রভু সর্বশক্তিমান এই প্রতিশ্রুতির সময় তাঁর নাম ব্যবহার করেছিলেন:
“বাবিল আমি তোমাকে বহু শত্রু সৈন্য দিয়ে ভরে দেব।
    তারা দ্রুত শস্য বিনাশকারী কীটদের মতো হবে।
    তারা তোমার বিরুদ্ধে যুদ্ধ জয় করবে এবং তোমার ওপর দাঁড়িয়ে বিজয় উল্লাস করবে।”

15 প্রভু তাঁর মহান ক্ষমতাবলে পৃথিবীর সৃষ্টি করেছেন।
    এই বিশ্ব গড়তে তিনি তাঁর জ্ঞানকে ব্যবহার করেছিলেন।
    আকাশকে বিস্তৃত করতে তাঁর নিজের বুদ্ধি ব্যবহার করেছেন।
16 যখন তিনি বজ্র নির্ঘোষ করেন, আকাশের জল গর্জন করে ওঠে।
    তিনিই পৃথিবীর ওপরে মেঘ পাঠান।
তিনি বৃষ্টির সঙ্গে বিদ্যুতের ঝলকানি পাঠান।
    তিনিই তাঁর গুদাম থেকে এনে দেন বাতাস।
17 কিন্তু মানুষ এতই বোকা যে
    তারা বুঝতে পারে না ঈশ্বর কি করেছেন।
দক্ষ কারিগররা ভ্রান্ত দেবতার মূর্ত্তি বানায়।
    সেই মূর্ত্তি একমাত্র ভ্রান্ত দেবতারই।
সেগুলি যে করেছে সেই কারিগরের বোকামি তারা দেখিয়ে দেয়।
    সেই মূর্ত্তি জীবন্ত নয়।
18 সেই মূর্ত্তিগুলি মূল্যহীন।
    যারা বানিয়েছে তারা নিজেরাই হাসির খোরাক হয়েছে।
তাদের বিচারের সময় আসবে
    এবং মূর্ত্তিগুলি ধ্বংস হবে।
19 কিন্তু যাকোবের নিয়তি (ঈশ্বর) ঐ মূল্যহীন মূর্ত্তিগুলোর মত নয়।
মানুষ ঈশ্বর বানায় না,
    ঈশ্বরই মানুষ বানায়।
    সব কিছুর সৃষ্টিকর্তা ঈশ্বর।
তাঁর নাম প্রভু সর্বশক্তিমান।

20 প্রভু বললেন, “বাবিল, তুমি আমার গদা।
    জাতিগুলিকে ধ্বংস করতে আমি তোমাকে ব্যবহার করেছি।
    ব্যবহার করেছি তোমাকে রাজ্যগুলি ধ্বংসের কাজে।
21 অশ্ব ও অশ্বারোহীকে ধ্বংসের কাজে তোমাকে ব্যবহার করেছি।
    আমি তোমাকে রথসমূহ ও তাদের চালকদের ধ্বংস করবার জন্য ব্যবহার করেছি।
22 তুমি আমার দ্বারা ব্যবহৃত হয়েছো পুরুষ ও মহিলা ধ্বংসের কাজে,
    আমি তোমাকে ব্যবহার করেছি পুরুষ, বৃদ্ধ ও যুবকদের বিনাশের কাজে।
    তরুণ তরুণীদের বিনাশের কাজে তোমাকে ব্যবহার করেছি।
23 আমি তোমাকে মেষপালক ও তার পালকে সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করবার জন্য ব্যবহার করেছি।
    কৃষকদের ও গরুদের সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করবার জন্য তোমাকে ব্যবহার করেছি।
    রাজ্যপাল ও গুরুত্বপূর্ণ আধিকারিকদের চূর্ণ-বিচূর্ণ করতে তোমাকে ব্যবহার করেছি।
24 কিন্তু বাবিলকে তাদের উপযুক্ত শাস্তি দেব।
    সিয়োনের প্রতি যে সমস্ত কুকর্মগুলি তারা করেছিল তার জন্য আমি তাদের মূল্য দিতে বাধ্য করব।
    যিহূদা আমি তোমার সামনে ওদের শাস্তি দেব।”
এইসব প্রভু বলেছেন।

25 প্রভু বলেন,
“বাবিল, তুমি ধ্বংসকারী পাহাড়ের মতো
    এবং আমি তোমার বিরুদ্ধে।
বাবিল, তুমি গোটা দেশকে ধ্বংস করেছো, আমি তোমার বিরুদ্ধে।
    আমি তোমার বিরুদ্ধে হাত রাখব।
আমি তোমাকে দূরারোহ পাহাড়গুলির থেকে গড়িয়ে ফেলে দেব।
    আমি তোমাকে পুড়ে যাওয়া পাহাড়ে পরিণত করব।
26 মানুষ বাড়ি তৈরী করতে বাবিল থেকে পাথর নিতে পারবে না।
    ভিত্তি প্রস্তরসমূহের মত ব্যবহার করবার জন্য যথেষ্ট বড় পাথর সমূহও পাওয়া যাবে না।
কেন? কারণ তোমার শহর চিরকালের মত ভাঙা পাথরের কুচির মতো হবে।”
এইসব প্রভু বলেছেন।

27 “হাতে যুদ্ধ ধ্বজা তুলে নাও!
    সমস্ত জাতিগুলির মধ্যে ভেরী বাজাও।
বাবিলের বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য সব জাতিকে প্রস্তুত করো।
বাবিলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য
    অরারট, মিন্নি ও অস্কিনস রাজ্যকে ডাকো।
28 তার বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য সেনানায়ক বেছে নাও।
    এত বেশী ঘোড়া পাঠাও যাতে ওরা শস্য বিনাশকারী পতঙ্গ পালের মত হয়ে ওঠে।
জাতিগুলিকে তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবার জন্য প্রস্তুত করো।
    মাদীয় রাজাদের তৈরী করো।
তাদের রাজ্যপালদের ও গুরুত্বপূর্ণ আধিকারিকদের প্রস্তুত করো।
29 দেশটা যন্ত্রণায় কাতরানোর মতো কাঁপবে।
    বাবিলের জন্য প্রভুর যে পরিকল্পনা করছে সেগুলো পালনের সময় কেঁপে উঠবে।
বাবিলকে পরিত্যক্ত মরুতে পরিণত করার
    পরিকল্পনা রয়েছে প্রভুর।
30 বাবিলের সেনারা যুদ্ধ থামিয়ে দুর্গে থেকে যাবে।
    তাদের শক্তি চলে গিয়েছে।
তারা হল ভীত মহিলাদের মতো।
    বাবিলের বাড়িগুলি জ্বলছে।
তার ফটকগুলির
    আগলসমূহ ভেঙে গিয়েছে।
31 একজন বার্তাবাহককে অন্য জন অনুসরণ করছে।
    বার্তাবাহকরাই বার্তাবাহকদের অনুসরণ করছে।
তারা বাবিলের রাজাকে বলে যে
    তার সমগ্র শহর অধিকৃত হয়ে গিয়েছে।
32 যে জায়গা দিয়ে মানুষ নদী পার হয় সেই জায়গাও অধিকৃত।
নদীর ধার বরাবর ঘাসের জমি পুড়ছে।
    বাবিলের সব লোকরাই আতঙ্কিত।”

33 সর্বশক্তিমান প্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর বলেন,
“বাবিল হচ্ছে একটি মাড়ানো ভূমির মতো।
    ফসল কাটার সময় লোকরা শস্য ঝাড়ে তাকে তুষ থেকে আলাদা করবার জন্য।
    বাবিলকে মারবার সময় খুব শীঘ্রই আসছে।”

34 সিয়োনের লোকরা বলবে, “বাবিলের রাজা নবূখদ্‌রিৎসর অতীতে আমাদের ধ্বংস করেছে।
    অতীতে নবূখদ্‌রিৎসর আমাদের আঘাত করেছে।
আমাদের লোকদের দূরে নিয়ে গিয়ে
    আমাদের খালি পাত্রের মতো করে ছেড়েছে।
সে আমাদের সমস্ত ভালো জিনিষগুলি নিয়ে গিয়েছিল এবং আমাদের ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছিল।
    সে একজন দৈত্যাকার দানব যে ভরপেট না হওয়া পর্যন্ত সব কিছুকে খেয়ে নেয়।
সে আমাদের যা কিছু ভালো ছিল তা নিয়ে নিয়ে
    আমাদের দূরে ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছে।
35 বাবিল আমাদের আঘাত করতে ভয়ঙ্কর জিনিস ঘটিয়েছিল।
    এখন আমরা চাই যে বাবিলে ঐসব ঘটনা ঘটুক।”

সিয়োনের লোকরা ঐসব জিনিসগুলির কথা বলবে:
“আমাদের লোকদের হত্যা করার জন্য বাবিলের লোকরা দোষী।
    এখন অপকর্মের জন্য তাদের শাস্তি হচ্ছে।”
জেরুশালেম শহর ঐসব জিনিসগুলির কথা বলবে।
36 তাই প্রভু বলেন,
“যিহূদা, আমি তোমাকে রক্ষা করব।
    বাবিলের শাস্তি প্রদান আমি নিশ্চিত করব।
    আমি বাবিলের সমুদ্রের জল শুকিয়ে দেব
    এবং তার জলের প্রবাহ বন্ধ করে দেব।
37 বাবিল ধ্বংসস্তূপে পরিণত হবে।
    বাবিল বন্য কুকুরের বাসস্থান হবে।
ধ্বংসস্তূপ দেখে লোকরা অবাক হয়ে যাবে।
    বাবিলের কথা ভাবার সময় লোকরা তাদের মাথা নাড়বে।
বাবিল এমন একটা জায়গায় পরিণত হবে
    যেখানে কোন লোক বাস করবে না।

38 “বাবিলের লোকরা গর্জনরত সিংহের মত।
    তারা সিংহশাবকের মত গর্জন করছে।
39 ঐসব লোকরা শক্তিশালী সিংহের মতো আচরণ করছে।
    আমি তাদের জন্য একটি ভোজসভা দেব।
    আমি তাদের দ্রাক্ষারস পান করাব।
তারা সুসময়ের মতো হাসবে
    এবং তারপর তারা চিরদিনের জন্য ঘুমিয়ে পড়বে।
    তারা আর কখনও জেগে উঠবে না।”

প্রভু এই কথাগুলি বলেন।
40 “বাবিলের লোকরা বধ হওয়ার জন্য অপেক্ষারত মেষ এবং ছাগলের মত হবে।
আমি তাদের কসাই-খানায় নিয়ে যাব।

41 “শেশক পরাজিত হবে।
পৃথিবীর সব চেয়ে গর্বিত শহর বন্দী হবে।
অন্যান্য জাতির লোকরা বাবিলের দিকে তাকাবে।
    এবং তারা এমন সব জিনিস দেখবে যে ভয় পাবে।
42 সমুদ্র বাবিলের ওপর দিয়ে বয়ে যাবে।
    এর গর্জনরত ঢেউ তাকে আচ্ছাদিত করবে।
43 বাবিলের শহরগুলি ধ্বংস প্রাপ্ত হবে এবং শূন্য হয়ে যাবে।
বাবিল শুষ্ক মরুভূমিতে পরিণত হবে।
    এটা জনমানবহীন একটা দেশে পরিণত হবে।
    লোকরা বাবিলের ওপর দিয়ে চলাচলও করতে পারবে না।
44 আমি বাবিলে বেল মূর্ত্তিকে শাস্তি দেব।
    ঐ মূর্ত্তি যাদের গিলে খেয়েছে বমি করিয়ে তাদের বার করে আনব।
বাবিলের চারি দিকের প্রাচীর ভেঙে পড়বে।
    এবং অন্য জাতির লোকরা বাবিলে আসা বন্ধ করবে।
45 আমার লোকরা, তোমরা বাবিল ছেড়ে বেরিয়ে এস।
    নিজেদের জীবন বাঁচাতে দৌড়ে পালিয়ে এস।
    প্রভুর ভয়ঙ্কর ক্রোধ থেকে দূরে সরে এস।

46 “আমার লোকরা, আশা হারিয়ো না।
    গুজব ছড়াবে কিন্তু তোমরা ভীত হবে না।
একটা গুজব আসবে এবছরে।
    অন্য গুজব আসবে পরের বছরে।
দেশে ভয়ঙ্কর যুদ্ধের গুজব আসবে।
শাসকরা একে অপরের বিরুদ্ধে লড়াই করছে এই গুজবও আসবে।
47 বাবিলের মূর্ত্তিগুলোকে শাস্তি দেওয়ার সময়
    নিশ্চিত ভাবেই আসবে।
আমি তাদের নিশ্চয়ই শাস্তি দেব।
এবং গোটা বাবিল দেশ তাতে লজ্জিত হবে।
    রাস্তার ওপরে অনেক মৃতদেহ পড়ে থাকবে।
48 তখন স্বর্গ ও মর্ত এবং তার মধ্যে যত কিছু আছে
    বাবিলের ব্যাপারে আনন্দে উল্লাস করবে।
তারা উল্লাস করবে কারণ উত্তর থেকে একটি সেনাবাহিনী এসে
    বাবিলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে।”
প্রভু এই কথাগুলি বলেন।

49 “বাবিল ইস্রায়েলীয়দের হত্যা করেছিল।
    বাবিল পৃথিবীর প্রত্যেকটি জায়গার লোকদের হত্যা করেছিল।
তাই বাবিলের পতন অবশ্যই হবে।
50 তোমরা লোকরা, যারা তরবারির হাত থেকে পালিয়ে এসেছ,
    তোমরা যদি বাঁচতে চাও তবে তোমাদের বাবিল পরিত্যাগ করতে হবে।
    তাড়াতাড়ি কর, অপেক্ষা করো না।
তোমরা দূরবর্তী দেশে আছ।
    কিন্তু যেখানেই থাক না কেন প্রভুকে স্মরণ কর এবং সেই সঙ্গে জেরুশালেমকেও স্মরণ কর।”

51 “আমরা যিহূদার লোকরা লজ্জিত।
    আমাদের অপমান করা হয়েছে।
কেন? কারণ বিদেশীরা এসে
    পবিত্রস্থান প্রভুর উপাসনাগৃহে ঢুকে পড়েছে।”

52 প্রভু বলেন, “বাবিলের মূর্ত্তিদের
    আমার শাস্তি দেওয়ার সময় আসছে।
সে সময় ঐ দেশের সর্বত্র
    আহত লোকরা যন্ত্রণায় কাঁদবে।
53 বাবিল হয়তো আকাশ না ছোঁয়া পর্যন্ত উঠতে পারে।
বাবিল তার দুর্গগুলিকে হয়তো শক্তিশালী করতে পারে।
    কিন্তু আমি ঐ শহরের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য লোক পাঠাব।
    এবং ঐ সব লোকরা তাকে ধ্বংস করবে।”
প্রভু এই কথাগুলি বলেন।

54 “আমরা বাবিলের লোকদের কান্না শুনতে পাব।
    লোকরা বাবিলের সমস্ত জিনিসপত্র ধ্বংস করছে, সেই ধ্বংসের শব্দ আমরা শুনতে পাব।
55 প্রভু বাবিলকে খুব তাড়াতাড়ি ধ্বংস করবেন।
    তিনি শহরের উচ্চরব থামিয়ে দেবেন।
শত্রুরা সমুদ্র গর্জনের মতো চিৎকার করতে করতে আসবে।
    লোকরা চারদিক থেকে সে শব্দ শুনতে পাবে।
56 সেনারা আসবে এবং বাবিলকে ধ্বংস করবে।
    বাবিলের সৈন্যদের বন্দী করা হবে এবং তাদের ধনুক ভেঙ্গে দেওয়া হবে।
কেন? কারণ প্রভু এখানকার লোকদের তাদের অপকর্মের শাস্তি দিচ্ছেন।
    প্রভু তাদের যোগ্য শাস্তি পুরোপুরি দেবেন।
57 আমি বাবিলের সমস্ত জ্ঞানী মানুষ
    এবং গুরুত্বপূর্ণ পদাধিকারীদের মাতাল করব।
আমি রাজ্যপাল, আধিকারিক
    এবং সেনাদেরও মাতাল করব।
তারপর তারা চিরকালের জন্য ঘুমিয়ে পড়বে।
    তারা আর কখনও জেগে উঠবে না।”
রাজা এই কথাগুলি বললেন।
    তাঁর নাম প্রভু সর্বশক্তিমান।

58 প্রভু সর্বশক্তিমান বলেন,
“বাবিলের মোটা শক্তিশালী দেওয়াল ভেঙে ফেলা হবে।
    তার উঁচু ফটকগুলি পুড়িয়ে দেওয়া হবে।
বাবিলের লোকরা কঠোর পরিশ্রম করবে।
    কিন্তু এটা তাদের কোনও কাজেই আসবে না।
শহরকে রক্ষা করার চেষ্টা করতে গিয়ে
    তারা খুবই ক্লান্ত হয়ে পড়বে।
কিন্তু তারা শুধুমাত্র জ্বলন্ত শিখার জ্বালানী হবে।”

যিরমিয় বাবিলে একটি বার্তা পাঠাল

59 এটা হল সেই বার্তা যেটা যিরমিয় উচ্চপদস্থ কর্মচারী সরায়কে দিয়েছিলো। সরায় হল নেরিয়ের পুত্র। নেরিয় হল মহসেয়ের পুত্র। সরায় যিহূদার রাজা সিদিকিয়ের সঙ্গে বাবিলে গিয়েছিল। এটা সিদিকিয়ের রাজত্বকালের চতুর্থ বছরে ঘটেছিল। সে সময়ে যিরমিয় সরায়কে এই বার্তা দিয়েছিল। 60 বাবিলে যে সব ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটবে তা যিরমিয় একটা বিশেষ ধরণের খাতায় লিখেছিল। বাবিল সম্পর্কে যাবতীয় ঘটনার কথা সে লিখেছিল।

61 যিরমিয় সরায়কে বলল, “সরায় বাবিলে যাও। বার্তাগুলি সেখানে পাঠ করবে। সবাই যেন নিশ্চিত ভাবে এই বার্তাগুলি শুনতে পায়। 62 তারপর বলো: ‘প্রভু আপনি বলেছিলেন যে আপনি বাবিলকে ধ্বংস করবেন। আপনি বাবিলকে এমনভাবে ধ্বংস করবেন যে সেখানে কোন জনপ্রাণী বেঁচে থাকবে না। এই দেশটি চিরকালের ধ্বংসস্তূপে পরিণত হবে।’ 63 এই খাতাটি পাঠ করার শেষে, এর সঙ্গে একটি পাথর বাঁধবে। তারপর এই খাতাটি ফরাৎ নদীর জলে ছুঁড়ে ফেলে দেবে। 64 তারপর বলবে, ‘একইভাবে, বাবিলও ডুবে যাবে। বাবিল আর কখনও উঠে দাঁড়াবে না। বাবিল ডুবে যাবে কারণ ভয়ঙ্কর সব ঘটনা আমি এখানে ঘটাব।’”

যিরমিয়ের কথা এখানে শেষ হল।

গীতসংহিতা 30

দায়ূদের গানগুলির অন্যতম এই গানটি মন্দির উৎসর্গীকরণের উদ্দেশ্যে রচিত।

30 প্রভু, আপনি আমায় আমার সংকটগুলি থেকে টেনে তুলেছেন।
    আপনি আমাকে আমার শত্রুদের হাতে পরাজিত হতে এবং বিদ্রূপ করতেও দেন নি।
    তাই আপনার প্রতি আমি সম্মান দেখাবো।
প্রভু, আমার ঈশ্বর, আমি আপনার কাছে প্রার্থনা করেছিলাম।
    এবং আমার প্রার্থনা শুনে আপনি আমায় আরোগ্য করে তুলেছেন।
আপনি আমায় কবর থেকে টেনে তুলেছেন।
    আপনি আমায় বাঁচতে দিয়েছেন।
    মৃত্যু-লোকের মৃত মানুষদের সঙ্গে আমাকে থাকতে হয় নি।

ঈশ্বরের অনুগামীরা, প্রভুর প্রতি স্তবগান কর।
    তাঁর পবিত্র নামের প্রশংসা কর!
যখন ঈশ্বর ক্রুদ্ধ ছিলেন তখন মৃত্যু ছিল তাঁর সিদ্ধান্ত।
    কিন্তু তিনি আমার প্রতি ভালোবাসা দেখিয়ে আমাকে দিয়েছেন জীবন।
রাত্রে আমি লুটিয়ে পড়ে কাঁদি।
    পরদিন সকালে আমি আনন্দে গান গাই!

যখন নিশ্চিন্তে ও নিরাপদে ছিলাম
    আমি ভেবেছিলাম কিছুই আমাকে আঘাত করতে পারবে না!
হ্যাঁ, প্রভু যখন আপনি আমার প্রতি সদয় ছিলেন
    আমি অনুভব করেছিলাম কোন কিছুই আমাকে হারাতে পারবে না!
কিন্তু যখন আপনি মুখ ঘুরিয়ে নিলেন
    আমি ভয়ে কাঁপতে লাগলাম।
তাই, হে ঈশ্বর আমি ফিরে এসে আপনার কাছে প্রার্থনা করেছি।
    আমি আপনার কাছে করুণা প্রার্থনা করেছি।
আমি বলেছিলাম, “হে ঈশ্বর, যদি আমি মরে কবরে যাই,
    তাতে কি ভালো হবে?
মৃত লোকরা শুধুই ধূলোয় শুয়ে থাকে!
    তারা আপনার প্রশংসা করে না।
    আমরা যে আপনার ওপর কতখানি নির্ভর করতে পারি, তা তারা অন্যান্য লোকদের বলে না।
10 প্রভু আমার প্রার্থনা শুনুন এবং আমার প্রতি সদয় হোন!
    প্রভু আমায় সাহায্য করুন!”

11 আমি প্রার্থনা করেছিলাম এবং আপনি আমায় সাহায্য করেছেন!
আপনি আমার কান্নাকে নৃত্যে পরিণত করেছেন।
    আপনি আমায় চটের বস্ত্র সরিয়ে দিয়ে আনন্দ দিয়ে ঢেকে দিয়েছেন।
12 প্রভু আমার ঈশ্বর, আমি চিরদিন আপনার প্রশংসা করবো, তাই কখনই নীরবতা থাকবে না।
    সর্বদাই কোন একজন থাকবে, যে আপনার সম্মানের জন্য আপনার প্রশংসা গীত গাইবে।

Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)

Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International