M’Cheyne Bible Reading Plan
শমূয়েল রাজার সম্বন্ধে কথা বলল
12 শমূয়েল ইস্রায়েলীয়দের বলল, “তোমরা যা চেয়েছিলে আমি তার সবই করেছি। আমি তোমাদের জন্য একজন রাজা এনে দিয়েছি। 2 তোমাদের নেতৃত্ব দেবার জন্য এখন তোমরা একজন রাজা পেয়ে গেছ। আমি বৃদ্ধ হয়েছি; কিন্তু আমার পুত্ররা তোমাদের সঙ্গে থাকবে। আমি সেই ছোটবেলা থেকে তোমাদের নেতা হয়ে আছি। 3 আমাকে তো তোমরা জানো। যদি আমি কোন অন্যায় করে থাকি তাহলে নিশ্চয়ই তোমরা সে কথা প্রভুর সামনে এবং মনোনীত রাজার সামনে বলবে। আমি কি কারো গাধা বা গরু চুরি করেছি? আমি কি কাউকে আঘাত করেছি বা ঠকিয়েছি? আমি কি কারো দোষ ত্রুটি অবজ্ঞা করবার জন্য ঘুষ নিয়েছি? যদি তা করে থাকি তবে আমি নিশ্চয়ই সেই অন্যায়ের প্রায়শ্চিত্ত করব।”
4 ইস্রায়েলবাসীরা বলল, “না আপনি কখনোই কোন অন্যায় করেন নি। আপনি কখনই আমাদের ঠকান নি বা কোন কিছু নিয়ে যান নি!”
5 শমূয়েল বলল, “আজ প্রভু আর তাঁর মনোনীত রাজা সাক্ষী। তোমরা যা বললে তাঁরা সবই শুনেছেন। তাঁরা জানলেন তোমরা আমার কোন দোষ পাও নি।” সকলে বলল, “হ্যাঁ, প্রভুই সাক্ষী!”
6 শমূয়েল বলল, “যা যা হয়েছে প্রভু সবই দেখেছেন। তিনিই মোশি এবং হারোণকে মনোনীত করেছিলেন। তিনিই তোমাদের পূর্বপুরুষদের মিশর থেকে এনেছিলেন। 7 এবার এখানে দাঁড়াও এবং ঈশ্বর তোমাদের জন্য ও তোমাদের পূর্বপুরুষদের জন্য কি কি ভালো কাজ করেছিলেন সে সম্বন্ধে শোন।
8 “যাকোব মিশরে গিয়েছিল। পরবর্তীকালে মিশরীয়রা তার উত্তরপুরুষদের জীবন অতিষ্ঠ করে দিয়েছিল। তাই তারা প্রভুর কাছে সাহায্যের জন্য প্রার্থনা করেছিল। তখন প্রভু মোশি আর হারোণকে পাঠিয়েছিলেন। তারা তোমাদের পূর্বপুরুষদের মিশর থেকে নিয়ে এসেছিল এবং এই জায়গায় বাস করবার জন্য নেতৃত্ব দিয়েছিল।
9 “কিন্তু তোমাদের পূর্বপুরুষরা তাদের প্রভু ঈশ্বরের কথা ভুলে গেল। ফলে ঈশ্বর তাদের সীষরার ক্রীতদাস করে দিলেন। সীষরা ছিল হাৎসোরের সৈন্যদের অধিনায়ক। তারপর প্রভু তাদের পলেষ্টীয় আর মোয়াবের রাজার ক্রীতদাস করে দিলেন। তারা সবাই তোমাদের পূর্বপুরুষদের সঙ্গে যুদ্ধ করেছিল। 10 তখন পূর্বপুরুষরা প্রভুর কাছে সাহায্য চেয়েছিল। তারা বলেছিল, ‘আমরা পাপ করেছি। আমরা প্রভুকে ত্যাগ করে বাল এবং অষ্টারোতের মূর্ত্তির পূজা করেছি; কিন্তু আজ শত্রুদের হাত থেকে আমাদের বাঁচাও। আমরা তোমারই সেবা করব।’
11 “তখন প্রভু যিরুব্বাল (গিদিয়ন), বরাক, যিপ্তহ এবং শমূয়েলকে পাঠালেন। প্রভু, তোমাদের চারপাশের শত্রুদের হাত থেকে রক্ষা করলেন। তোমরা নিরাপদে বাস করছিলে। 12 কিন্তু তারপর তোমরা দেখলে অম্মোনদের রাজা নাহশ তোমাদের সঙ্গে যুদ্ধ করতে আসছে। অমনি বলে উঠলে, ‘না, আমরা একজন রাজা চাই যে আমাদের শাসন করবে!’ প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর ইতিমধ্যেই তোমাদের রাজা থাকা সত্ত্বেও তোমরা সেটা বলেছিলে। 13 এখন তোমরা তোমাদের ইচ্ছে ও পছন্দ অনুযায়ী একজন রাজা পেয়েছ। প্রভু তাকেই তোমাদের শাসন করার ভার দিয়েছেন। 14 তোমাদের প্রভুকে ভয় ও সম্মান করে চলা উচিৎ। তোমরা অবশ্যই তাঁর সেবা করবে ও তাঁর আজ্ঞা মেনে চলবে। তোমরা তাঁর বিরুদ্ধাচরণ করবে না। তোমরা সবাই আর তোমাদের রাজা অবশ্যই তোমাদের প্রভু ও ঈশ্বরের অনুগত থাকবে। তাহলেই তিনি তোমাদের রক্ষা করবেন। 15 কিন্তু তাঁর আদেশ অমান্য করলে অথবা তাঁর বিরুদ্ধাচরণ করলে তিনি তোমাদের বিরোধিতা করবেন, যেমন তিনি তোমাদের পূর্বপুরুষদের বিরুদ্ধে করেছিলেন।
16 “এখন স্থির হয়ে দাঁড়াও এবং প্রভু তোমাদের চোখের সামনে যে সব মহান জিনিসগুলি করবেন তা দেখো। 17 এখন গম তোলবার সময়। প্রভুর কাছে আমি প্রার্থনা করব বজ্র আর বৃষ্টির জন্য। তখনই বুঝতে পারবে রাজা চাইতে গিয়ে প্রভুর বিরুদ্ধে তোমরা কি অন্যায় করেছ।”
18 শমূয়েল তাই প্রভুর কাছে প্রার্থনা করল। ঠিক সেদিনই প্রভু বজ্র আর বৃষ্টি দিলেন। লোকরা প্রভু আর শমূয়েলকে ভয় পেল। 19 তারা সবাই শমূয়েলকে বলল, “তোমার প্রভু ঈশ্বরের কাছে তুমি আমাদের জন্য প্রার্থনা করো। আমরা তোমার ভৃত্য। আমরা যেন মারা না পড়ি। আমরা অনেকবার পাপ করেছি। এবার আবার আমরা রাজা চেয়ে পাপের বোঝা বাড়ালাম।”
20 শমূয়েল উত্তরে বলল, “ভয় পেও না। এটা সত্যি, তোমরা এসব অন্যায় করেছিলে। কিন্তু প্রভুর অনুসরণ করে চলো, থেমো না। মনপ্রাণ দিয়ে তোমরা তাঁর সেবা করবে। 21 মূর্ত্তি কখনও তোমাদের সাহায্য করতে পারে না। মূর্ত্তি মূর্ত্তিই, তাই ওগুলোর পূজো করো না। ওগুলো কোন কাজেরই নয়। মূর্ত্তিরা তোমাদের সাহায্য বা রক্ষা করতে পারে না।
22 “কিন্তু প্রভু কখনও তাঁর লোকদের ছেড়ে যান না। তোমাদের তাঁর আপনজন করে নিয়ে তিনি সন্তুষ্ট আছেন। তাই তাঁর মহানামের গুনে কখনই তিনি তোমাদের ছেড়ে যাবেন না। 23 আমার দিক থেকে বলতে পারি, আমি সবসময় তোমাদের হয়ে প্রার্থনা করব। প্রার্থনা বন্ধ করলে আমি প্রভুর বিরুদ্ধে পাপ করব। আমি তোমাদের সত্য পথের বিষয়ে শিক্ষা দিয়ে যাব যেন তোমরা সৎভাবে জীবনযাপন করতে পার। 24 তবে তোমরা অবশ্যই প্রভুকে সম্মান করবে। তোমাদের জন্য তিনি যে সব মহৎ কর্ম করেছেন সেগুলো মনে রাখবে। 25 কিন্তু তোমরা যদি মন্দ কাজ করতে থাকো তাহলে ঈশ্বর তোমাদের আর তোমাদের রাজাকে ধ্বংস করবেন।”
10 ভাই ও বোনেরা, আমার হৃদয়ের একান্ত কামনা এই, যেন সমস্ত ইহুদী উদ্ধার পায়। ঈশ্বরের কাছে এই আমার কাতর মিনতি। 2 আমি ইহুদীদের বিষয়ে একথা বলতে পারি যে ঈশ্বরের বিষয়ে তাদের উৎসাহ আছে; কিন্তু এটা তাদের জ্ঞানের ওপর ভিত্তি করে নেই। 3 যে পথে ঈশ্বর মানুষকে ধার্মিক প্রতিপন্ন করেন তারা সেই পথ জানে না। তারা নিজেদের প্রচেষ্টায় ঈশ্বরের সাক্ষাতে ধার্মিক প্রতিপন্ন হতে চায়। তাই যে পথে ঈশ্বর মানুষকে ধার্মিক প্রতিপন্ন করেন, তা তারা গ্রহণ করে নি। 4 খ্রীষ্টের আগমনে বিধি-ব্যবস্থার যুগ শেষ হয়েছে। এখন যাঁরা তাঁকে বিশ্বাস করে তারাই ঈশ্বরের সাক্ষাতে ধার্মিক প্রতিপন্ন হয়।
5 বিধি-ব্যবস্থা পালন করে ধার্মিক প্রতিপন্ন হওয়া সম্পর্কে মোশি বলে গেছেন, “যে ব্যক্তি এইসব বিধি-ব্যবস্থা পালন করবে সে তার মধ্য দিয়েই জীবন পাবে।”(A) 6 যে ধার্মিকতা ঈশ্বরে বিশ্বাস থেকে জন্মায় সে সম্বন্ধে শাস্ত্রে বলেছে: “মনে মনে কখনও বলো না, ‘ওপরে স্বর্গে কে যাবে?’” (এর অর্থ, “খ্রীষ্টকে কে পৃথিবীতে নামিয়ে আনবে?”) 7 “বা ‘নীচে পাতালে কে যাবে?’” (এর অর্থ, “মৃতদের মধ্য থেকে কে খ্রীষ্টকে উর্দ্ধে আনবে?”)
8 এ ব্যাপারে শাস্ত্র বলছে: “সেই শিক্ষা তোমার কাছেই তোমার মুখে ও হৃদয়ে আছে।”(B) সে শিক্ষা হল বিশ্বাসের শিক্ষা যা আমরা লোকদের কাছে বলি। 9 তুমি যদি নিজ মুখে যীশুকে প্রভু বলে স্বীকার কর, এবং অন্তরে বিশ্বাস কর যে ঈশ্বরই তাঁকে মৃতদের মধ্য থেকে জীবিত করেছেন তাহলে উদ্ধার পাবে। 10 কারণ মানুষ অন্তরে বিশ্বাস করে ধার্মিকতা লাভ করার জন্য আর মুখে বিশ্বাসের কথা স্বীকার করে উদ্ধার পাবার জন্য।
11 শাস্ত্র এই কথাই বলে যে: “যে খ্রীষ্টে বিশ্বাস করে সে কখনও লজ্জায় পড়বে না।”(C) 12 এক্ষেত্রে ইহুদী ও অইহুদীদের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই, একই প্রভু সকলের প্রভু। যত লোক তাঁকে ডাকে সেই সকলের ওপর তিনি প্রচুর আশীর্বাদ ঢেলে দেন। 13 হ্যাঁ, শাস্ত্র বলে, “যে কেউ তাঁকে বিশ্বাস করে ডাকবে সে উদ্ধার পাবে।”(D)
14 কিন্তু যাঁকে তারা বিশ্বাস করে না তাঁকে ডাকবে কি কবে? আর যারা তাঁর কথা শোনেনি তাঁকে বিশ্বাসই বা কি করে করবে? কেউ প্রচার না করলে তারা শুনবেই বা কি করে? 15 যারা প্রচার করতে যাবে তারা প্রেরিত না হলে কি করে প্রচার করবে? হ্যাঁ, শাস্ত্রে কিন্তু লেখা আছে: “সুসমাচার নিয়ে যাঁরা আসেন তাঁদের চরণযুগল কি সুন্দর।”(E)
16 কিন্তু ইহুদীদের মধ্যে সকলেই সেই সুসমাচার গ্রহণ করেনি। যিশাইয় ঠিকই বলেছেন, “প্রভু আমরা যা বলেছি তা ক’জনেই বিশ্বাস করেছে।”(F) 17 সুতরাং সুসমাচার শোনার ভেতর দিয়েই বিশ্বাস উৎপন্ন হয় আর কেউ খ্রীষ্টের সুসমাচার শোনালে তখনই লোকরা সুসমাচার শুনতে পায়।
18 তাহলে আমিই জিজ্ঞাসা করি, “লোকে কি তাঁর সুসমাচার শুনতে পায় নি?” হ্যাঁ, তারা নিশ্চয়ই শুনেছে। এবিষয়ে শাস্ত্র বলছে:
“তাদের রব পৃথিবীর কোণে কোণে পৌঁছেছে,
তাদের বাক্য পৃথিবীর সর্বত্র পৌঁছে গেছে।”(G)
19 আবার আমি বলি, “ইস্রায়েলীয়রা কি বুঝতে পারে নি?” হ্যাঁ, তারা বুঝতে পেরেছিল। ঈশ্বরের হয়ে প্রথমে মোশি এই কথা বলেছেন:
“যারা জাতি বলেই গন্য নয়, এমন লোকদের মাধ্যমে আমি তোমাদের ঈর্ষান্বিত করব।
অজ্ঞ জাতির দ্বারা তোমাদের ক্রুদ্ধ করব।”(H)
20 এরপর ঈশ্বরের মুখপাত্র হয়ে যিশাইয় যথেষ্ট সাহসের সঙ্গে বললেন:
“যারা আমায় খোঁজে নি
তারাই কিন্তু আমাকে পেয়েছে;
আর যারা আমাকে চায় নি তাদের কাছেই আমি নিজেকে প্রকাশ করেছি।”(I)
21 কিন্তু ইহুদীদের সম্বন্ধে ঈশ্বর বলেন,
“সমস্ত দিন ধরে দুহাত বাড়িয়ে আমি তাদের জন্য অপেক্ষা করছি।
কিন্তু তারা আমার অবাধ্য এবং তারা আমার বিরোধিতা করেই চলেছে।”(J)
অম্মোন সম্বন্ধে বার্তা
49 এই হল প্রভুর বার্তা অম্মোনের লোকদের জন্য। প্রভু বলেছেন:
“অম্মোনের লোকরা তোমরা কি ভাবো যে
ইস্রায়েলের লোকদের কোন সন্তান নেই?
তোমরা কি ভাবো সেখানে কোন উত্তরপুরুষ নেই
যারা তাদের পিতা মাতার মৃত্যুর পর দেশের ভার নিতে পারে?
হয়তো এই কারণেই কি মিল্কম গাদের দেশ নিয়ে নিয়েছিল?”
2 প্রভু বলেন, “সময় আসবে যখন রব্বা অম্মোন দেশের রাজধানী,
লোকরাও যুদ্ধের শব্দ শুনতে পাবে।
রব্বা শহরও ধ্বংস হবে।
শহরের শূন্য পাহাড়গুলির মাথায় পড়ে থাকবে ধ্বংসস্তূপের জঞ্জাল।
এই শহরের লোকরা ইস্রায়েলীয়দের দেশ ছাড়তে বাধ্য করেছিল
কিন্তু পরে ইস্রায়েল তাদের দেশ পুনরায় অধিকার করবে।”
প্রভু এই কথাগুলি বলেছেন।
3 “হিশ্বোনের মানুষ কাঁদো! কারণ অয় শহর ধ্বংস হয়ে গিয়েছে।
রব্বা এবং অম্মোনের কন্যারা কাঁদো!
শোক পোশাক পরে কাঁদো।
ছুটে যাও নিরাপদ শহরের খোঁজে।
কারণ শত্রুবাহিনী আসছে।
তারা দেবতা মিল্কমকে এবং তার যাজক ও কর্তাদের ধরে নিয়ে যাবে।
4 তোমরা তোমাদের শক্তি নিয়ে বড়াই করছো
কিন্তু তোমরা সেই শক্তি হারাবে।
তোমরা ভেবেছিলে তোমাদের অর্থ তোমাদের রক্ষা করবে।
তোমরা ভেবেছিলে তোমাদের আক্রমণের কথা কেউ কল্পনাও করতে পারে না।”
5 কিন্তু প্রভু সর্বশক্তিমান বলেছেন:
“তোমাদের আমি চারিদিক থেকে সমস্যায় জর্জরিত করে তুলব।
তোমরা দৌড়ে পালাবে
এবং কেউ তোমাদের আর ফিরিয়ে আনতে পারবে না।”
6 “অম্মোনের লোকদের বন্দী করে নির্বাসনে পাঠানো হলেও সময় আসবে যখন আমি আবার তাদের ফিরিয়ে আনব।” এই হল প্রভুর বার্তা।
ইদোম সম্বন্ধে বার্তা
7 এই বার্তা হল ইদোম সম্বন্ধে। প্রভু সর্বশক্তিমান বলেন:
“তৈমনে কি আর কোন জ্ঞান নেই?
ইদোমের জ্ঞানী ব্যক্তিরা কি উপদেশ দিতে সক্ষম নয়?
তারা কি তাদের জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছে?
8 দদানের লোকরা, দৌড়ে গিয়ে লুকিয়ে পড়ো।
কারণ এষৌকে তার পাপের জন্য আমি শাস্তি দেব।
9 “শ্রমিকরা, যারা দ্রাক্ষাক্ষেত থেকে দ্রাক্ষা সংগ্রহ করে,
তারা ক্ষেতে কিছু দ্রাক্ষা ছেড়ে রেখে যায়।
রাত্রে যদি চোর আসে তারা চুরি করে,
কিন্তু তারা সবকিছু চুরি করে না।
10 কিন্তু আমি এষৌয়ের সব কিছু নিয়ে যাবো।
যেখানেই সে লুকিয়ে থাকুক আমি তাকে খুঁজে বার করবই।
এষৌয়ের সন্তান, আত্মীয়স্বজন এবং প্রতিবেশীদের হত্যা করা হবে।
11 তার সন্তানদের দেখাশোনা করবার জন্য কেউ পড়ে থাকবে না।
তার স্ত্রীরা কাউকেই পাবে না যার ওপর নির্ভর করা যায়।”
12 প্রভু যা বলেন তা হল এই: “কিছু মানুষ শাস্তির যোগ্য না হলেও তাদের এই কষ্ট ভোগ করতে হবে। কিন্তু ইদোম, তুমি শাস্তির যোগ্য এবং তোমাকে সত্যিই শাস্তি পেতে হবে। তুমি শাস্তির হাত থেকে পালাতে পারবে না।” 13 প্রভু বলেছেন, “আমি আমার শক্তির দ্বারাই এই প্রতিশ্রুতি করছি: আমি প্রতিশ্রুতি করছি যে বস্রা শহর ধ্বংস হবে। ঐ শহর ধ্বংসস্তূপে পরিণত হবে। বস্রা শহরকে লোকরা ধ্বংসের উদাহরণ হিসাবে নেবে যখন তারা অন্য শহরগুলিতে খারাপ ঘটনা ঘটাবার ইচ্ছে করবে। অন্য দেশের মানুষ ঐ শহরকে অপমান করবে এবং বস্রা শহরের আশে-পাশের শহরগুলিও চিরদিনের জন্য ধ্বংসস্তূপে পরিণত হবে।”
14 প্রভুর কাছ থেকে এই বার্তা আমি শুনেছি।
এবং দেশগুলিতে তিনি একটি বার্তাসহ তাঁর দূত পাঠালেন:
“সৈন্যদের একত্রিত করে
যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হও!
সৈন্যবাহিনী সমেত ইদোমের দিকে এগিয়ে চলো।
15 ইদোম, আমি তোমাকে গুরুত্বহীন করে দেব।
মানুষ তোমাকে ঘৃণা করবে।
16 ইদোম, তুমি অন্য দেশগুলিকে ভয় দেখিয়েছিলে।
তুমি নিজেকে ভেবেছিলে গুরুত্বপূর্ণ কেউ একজন।
কিন্তু আসলে তুমি তোমার অহঙ্কার দ্বারা বোকা হয়ে গিয়েছিলে।
তোমার অহঙ্কারই তোমার কাল হল।
ইদোম, তুমি পাহাড়ের চূড়ায় একটি সুরক্ষিত বাড়ী তৈরী কর়েছিলে।
কিন্তু তুমি যদি ঈগল পাখীরা যেখানে তাদের বাসা বাঁধে সেই উচ্চতায় একটি বাড়ী তৈরী করতে
এবং সেখানে থাকতে, তাহলেও তোমাকে আমি টেনে নীচে নামাতাম।”
প্রভু এই কথাগুলি বলেছিলেন।
17 “ইদোম ধ্বংস হয়ে যাবে।
শহরের দুরবস্থা দেখে লোকেরা শোকাহত হবে।
ধ্বংসপ্রাপ্ত শহরগুলি দেখে লোকরা বিস্ময় বিহ্বল হয়ে যাবে।
তারা ধ্বংপ্রাপ্ত শহরগুলির দিকে বিস্ময় বিহ্বল হয়ে শিস্ দেবে।
18 সদোম ঘমোরা এবং তার আশপাশের শহরের মতো ইদোমও ধ্বংস হয়ে যাবে।
কোন মানুষ আর সেখানে জীবিত থাকবে না।”
প্রভু এই কথাগুলি বললেন।
19 “যর্দন নদীর তীরবর্তী ঝোপ থেকে কখনো কখনো একটি সিংহ বেরিয়ে আসবে। সেই সিংহ হানা দেবে মেষ ও বাছুরের আস্তানায়। আমিও সেই সিংহের মতো হানা দেব ইদোমে। ভয় দেখাব ঐ লোকদের। তারা দৌড়ে পালাবে। তাদের কোন যুবক আমাকে থামতে পারবে না। আমার মত কে আছে? কে আমার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে? তাদের কোন মেষপালক (নেতারা) আমার বিরুদ্ধে দাঁড়াতে পারে না।”
20 ইদোমের লোকদের নিয়ে প্রভু কি করবেন
তার পরিকল্পনা শোন।
শোন তৈমনের লোকদের নিয়ে
প্রভু কি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
শত্রুরা ইদোমের পালের (লোকরা) ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের জোর করে টেনে নিয়ে যাবে।
ইদোমের তৃণভূমি শুকিয়ে যাবে
তাদের কৃতকর্মের জন্য।
21 ইদোমদের পতনের শব্দে
পৃথিবী কেঁপে উঠবে।
তাদের কান্না
সেই সূফ সাগর পর্যন্ত শোনা যাবে।
22 প্রভু হবেন তার শিকারের ওপর উড়ন্ত একটি ঈগল পাখীর মত।
তিনি হবেন বস্রা শহরের ওপর তার ডানা ছড়ানো একটি ঈগল পাখীর মত।
সেই সময় ইদোমের সৈন্যরা ভয় পেয়ে যাবে
এবং শিশু প্রসবরত একটি মহিলার মত কাঁদবে।
দম্মেশক সম্বন্ধে বার্তা
23 এই বার্তাটি দম্মেশক সম্বন্ধে:
“হমাৎ এবং অর্পদ শহরগুলি আতঙ্কিত
কারণ তারা খারাপ খবরটি শুনতে পেয়েছে।
তারা নিরুৎসাহ হয়ে পড়েছে।
তারা অশান্ত সমুদ্রের মত অশান্ত হয়েছে।
24 দম্মেশক শহর দুর্বল হয়ে গিয়েছে।
শহরের মানুষ পালাতে চায়।
তারা আতঙ্কিত।
কারণ তারা অনুভব করছে যন্ত্রণার কষ্ট।
সে যন্ত্রণা যেন প্রসব বেদনায় কাতর মহিলার মতো।”
25 “দম্মেশক হল সুখের শহর।
এখনও সেখানকার মানুষ ঐ ‘মজার শহর’ ছেড়ে চলে যায়নি।
26 সুতরাং শহরের যুবকরা মারা যাবে চৌরাস্তার ওপর।
সৈনিকদেরও একই সময়ে হত্যা করা হবে।”
প্রভু সর্বশক্তিমান এই কথাগুলি বলেছেন।
27 “আমি দম্মেশক শহরের প্রাচীরে আগুন লাগিয়ে দেব।
ঐ আগুন বিন্হদদের শক্তিশালী দূর্গগুলোকে সম্পূর্ণরূপে পুড়িয়ে দেবে।”
কেদর এবং হাৎসোর সম্বন্ধে বার্তা
28 এই বার্তা হল কেদর পরিবারগোষ্ঠী এবং হাৎসোরের শাসকবৃন্দের সম্বন্ধে। বাবিলের রাজা নবূখদ্রিৎসর তাদের যুদ্ধে পরাজিত করেছিল। প্রভু বলেছেন:
“যাও কেদর পরিবারগোষ্ঠীকে আক্রমণ করো।
ধ্বংস করে দাও পূর্বের লোকদের।
29 তাদের তাঁবু এবং মেষের পালকে নিয়ে যাওয়া হবে।
তাদের ধনসম্পদ ও সমস্ত তল্পি-তল্পাও নিয়ে নেওয়া হবে।
শত্রুপক্ষ তাদের উটও নিয়ে যাবে।
লোকরা চিৎকার করে বলবে:
‘আমাদের চারিদিকে ভয়ঙ্কর সব ঘটনা ঘটছে।’
30 হাৎসোরের লোকরা, তাড়াতাড়ি পালাও
লুকোনোর গোপন জায়গা খুঁজে নাও।”
এই হল প্রভুর বার্তা।
“নবূখদ্রিৎসর তোমাদের পরাজিত করার জন্য
একটি বেদনাদায়ক পরিকল্পনা করেছে।”
31 “সেখানে একটি দেশ আছে যে নিজেকে নিরাপদ মনে করে।
ঐ দেশের কোন ফটক নেই, সীমানায় কোন কাঁটা তারের বেড়াজাল নেই।
সেই দেশের আশেপাশে কোন মানুষ থাকে না।
প্রভু বললেন, ‘ঐ দেশকে আক্রমণ করো।’”
32 “শত্রুবাহিনী তাদের বাছুর ও উট চুরি করে নিয়ে যাবে।
তারা তাদের রুটির কোণা কাটে।
বেশ, আমি তাদের দৌড় করিয়ে নিয়ে যাব পৃথিবীর আর এক প্রান্তে।
এবং প্রত্যেক জায়গাতেই তাদের জীবন সমস্যায় জর্জরিত করে তুলব।”
এই হল প্রভুর বার্তা।
33 “হাৎসোর নামের এই দেশটিতে শুধু কুকুর ঘুরে বেড়াবে।
এখানে কোন মানুষ থাকবে না।
চিরকালের জন্য এই দেশ শূন্য মরুভূমিতে পরিণত হবে।”
এলম সম্বন্ধে বার্তা
34 যিহূদার রাজা সিদিকিয়র রাজত্বের শুরুতে ভাববাদী যিরমিয় প্রভুর কাছ থেকে একটি বার্তা পেয়েছিল। বার্তাটি ছিল এলম সম্বন্ধে।
35 প্রভু সর্বশক্তিমান বলেছেন,
“এলমের সব থেকে শক্তিশালী অস্ত্র হল ধনুক।
আমি সেই ধনুক শীঘ্রই ভেঙে দেব।
36 আমি এলমের বিরুদ্ধে চারটি বায়ুসমূহকে পঠাব।
আমি ঐ লোকগুলিকে পৃথিবীর প্রত্যেকটি জায়গায় পাঠাব যেখানে চারটি বায়ুসমূহ বয়।
তারপর তাদের বন্দী করে বিভিন্ন দেশে নির্বাসনে পাঠানো হবে।
37 আমি তাদের শত্রুদের চোখের সামনে
এলমকে টুকরো টুকরো করে কাটব।
আমি এলমের ওপর মারাত্মক অশান্তি আনব।
আমি আমার ক্রোধ তাদের দেখাব।”
এই হল প্রভুর বার্তা।
“এলমকে তাড়া করার জন্য আমি আমার তরবারি পাঠাব।
এলমের লোকদের শেষ না করা পর্যন্ত আমার তরবারি ফিরে আসবে না।
38 আমি এলমকে দেখাব যে আমার দমন কর্ত্তৃত্ব আছে।
আমি এলমের রাজা ও তার সভাসদদের ধ্বংস করব।”
এই হল প্রভুর বার্তা।
39 “কিন্তু ভবিষ্যতে আবার আমি এলমের জন্য শুভ খবর বয়ে আনব।”
এই হল প্রভুর বার্তা।
দায়ূদের একটি গীত।
26 প্রভু, আমার বিচার করুন। আমি যে সৎ পথে জীবনযাপন করেছি তা প্রমাণ করে দিন।
আমি কখনও প্রভুতে আস্থা রাখা থেকে বিরত হই নি।
2 প্রভু আমায় পরীক্ষা করুন,
আমার হৃদয় ও মনকে খুব ভালোভাবে দেখুন।
3 আমি সর্বদাই আপনার কোমল ভালোবাসা দেখতে পাই।
আপনার সত্যে আমি বাঁচি।
4 আমি মিথ্যাবাদী ও কপটাচারীদের সঙ্গে নিজেকে যুক্ত করি না।
আমি ঐসব অকেজো লোকদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট হই না।
5 ঐসব অপরাধীদের দলগুলিকে আমি ঘৃণা করি।
ঐসব শয়তানদের দলে আমি যোগ দেবো না।
6 হে প্রভু আমি যে নিস্পাপ তা দেখাতে
এবং আপনার যজ্ঞবেদীতে যাওয়ার জন্য আমি আমার হাত ধুই।
7 প্রভু আমি আপনার প্রশংসা গান গাই।
আপনার সৃষ্টিকরা আশ্চর্য বিষয় সম্পর্কে আমি গান গাই।
8 প্রভু আমি আপনার মন্দিরকে ভালোবাসি।
আমি আপনার মহিমাময় তাঁবু ভালোবাসি।
9 প্রভু আমাকে ঐসব পাপীদের দলভুক্ত করবেন না।
ঐসব খুনীদের সঙ্গে আমার জীবন গ্রহণ করবেন না।
10 ঐ লোকগুলো সব সময় অন্যদের প্রতারিত করে।
খারাপ কাজ করার জন্য ওরা সর্বদাই উৎকোচ নিতে প্রস্তুত।
11 কিন্তু আমি নির্দোষ।
তাই হে ঈশ্বর, আমার প্রতি সদয় হোন এবং আমায় রক্ষা করুন।
12 সব বিপদ থেকে আমি সুরক্ষিত।
হে প্রভু, আমি আপনার মণ্ডলীগণের সামনে আপনার প্রশংসা করি।
দায়ূদের একটি গীত।
27 প্রভু, আপনিই আমার জ্যোতি এবং আমার পরিত্রাতা।
আমি কাউকেই ভয় পাবো না!
প্রভুই আমার জীবনের সুরক্ষা স্থান,
তাই কোন লোককেই আমি ভয় পাবো না।
2 মন্দ লোকেরা আমায় আক্রমণ করতে পারে
এবং আমার শত্রুরা আমায় ধ্বংস করবার চেষ্টা করতে পারে,
তখন তারা হোঁচট খেয়ে পড়ে যাবে।
3 যদি একদল সৈন্যও আমার চারদিকে ঘিরে থাকে, আমি ভয় করবো না।
এমনকি যুদ্ধে যদি লোকজন আমায় আক্রমণ করে, আমি ভয় করবো না। কেন? কারণ আমি প্রভুকে বিশ্বাস করি।
4 প্রভুর কাছ থেকে আমি কেবলমাত্র একটা জিনিসই চাইবো:
আমাকে সারাজীবন মন্দিরে তাঁর সৌন্দর্য্য দেখবার জন্য
এবং তাঁকে সাক্ষাৎ করবার জন্য
প্রভুর মন্দিরে বসে থাকতে দিন।
5 যখন আমি বিপদগ্রস্ত তখন প্রভুই আমায় রক্ষা করবেন।
তাঁর তাঁবুতেই তিনি আমায় লুকিয়ে রাখবেন।
তিনি আমাকে তাঁর নিরাপদ আশ্রয়ে তুলে নেবেন।
6 আমার শত্রুরা আমায় ঘিরে রয়েছে, কিন্তু ওদের পরাজিত করতে প্রভু আমায় সাহায্য করবেন!
তারপর আমি তাঁর তাঁবুতে বলি উৎসর্গ করবো।
আনন্দধ্বনি করে আমি উৎসর্গ নিবেদন করব।
প্রভুর সম্মানে আমি গান-বাজনা করবো।
7 প্রভু আমার কথা শুনুন।
আমায় উত্তর দিন এবং আমার প্রতি সদয় হোন।
8 প্রভু, আমি আপনার সঙ্গে কথা বলতে চাই।
আমার অন্তর থেকে আমি আপনার সঙ্গে কথা বলতে চাই।
আপনার সঙ্গে কথা বলার জন্য আমি আপনার সামনে এসেছি।
9 প্রভু, আপনার দাস আমি, আমার দিক থেকে আপনি মুখ ফিরিয়ে নেবেন না।
আমায় সাহায্য করুন এবং আমায় সরিয়ে দেবেন না!
আমায় ফেলে চলে যাবেন না! ঈশ্বর আমার, আপনিই আমার পরিত্রাতা।
10 আমার মা বাবা আমায় ছেড়ে চলে গেছেন।
কিন্তু প্রভু আমায় গ্রহণ করেছেন।
তিনি আমায় তাঁর আপনজন করে নিয়েছেন।
11 প্রভু আমার প্রচুর শত্রু আছে।
তাই আপনার পথ আমায় শেখান।
আমায় সঠিক কাজ করতে শেখান।
12 প্রভু, আমার বিরোধী পক্ষকে আমায় পরাজিত করতে দেবেন না।
কারণ মিথ্যে সাক্ষীরা আদালতে আমার বিরুদ্ধে কথা বলেছে।
আমার বিরুদ্ধে হিংসাত্মক কার্যকলাপ উদ্রেক করবার জন্য
তারা এটা করেছিল।
13 আমি প্রকৃতই বিশ্বাস করি যে, আমার মৃত্যুর পূর্বে[a] আমি প্রভুর ধার্মিকতা দেখে যাবো।
14 প্রভুর সাহায্যের জন্য অপেক্ষা কর।
শক্তিমান ও সাহসী হও
এবং প্রভুর সাহায্যের জন্য অপেক্ষা কর!
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International