M’Cheyne Bible Reading Plan
11 প্রায় একমাস পর অম্মোনদের রাজা নাহশ তার সৈন্যসামন্ত নিয়ে যাবেশ গিলিয়দ ঘিরে ফেলল। যাবেশের লোকেরা নাহশকে বলল, “যদি আমাদের সঙ্গে তুমি একটি শান্তি চুক্তি কর তাহলে আমরা তোমার সেবা করব।”
2 নাহশ বলল, “তোমাদের প্রত্যেকের ডান চোখ যদি উপড়ে নিয়ে নিতে পারি তাহলেই তোমাদের সঙ্গে চুক্তি করতে পারি। তবেই সমস্ত ইস্রায়েলীয়রা লজ্জা পাবে!”
3 যাবেশের নেতারা বলল, “সাতদিন সময় দাও। সমস্ত ইস্রায়েলে আমরা দূত পাঠাব। যদি কেউ সাহায্য করতে না আসে তাহলে আমরা তোমার কাছে এসে আত্মসমর্পণ করব।”
শৌল যাবেশ গিলিয়দকে বাঁচালেন
4 বার্তাবাহকরা গিবিয়ায় এল; সেখানেই শৌল থাকতেন। তারা লোকদের খবরটি জানালে লোকরা কেঁদে উঠল। 5 শৌল তখন মাঠে গরু চরাতে গিয়েছিলেন। মাঠ থেকে ফিরে তিনি তাদের কান্না শুনতে পেলেন। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, “তোমাদের কি হয়েছে? তোমরা কাঁদছ কেন?”
তারা শৌলকে যাবেশের বার্তাবাহকরা কি বলেছিল তা বলল। 6 শৌল সব শুনলেন। তারপর ঈশ্বরের আত্মা সবলে তাঁর ওপর এল। তিনি খুব রেগে গেলেন। 7 এক জোড়া বলদ নিয়ে তিনি তাদের কেটে টুকরো টুকরো করলেন। তারপর তিনি বার্তাবাহকদের হাতে সেই বলদের টুকরোগুলো দিয়ে তাদের সেই টুকরোগুলি নিয়ে সমস্ত ইস্রায়েলে ঘুরতে বললেন। ইস্রায়েলবাসীদের কাছে বার্তাবাহকরা কি বলবে তাও তিনি বলে দিলেন। এই ছিল তাঁর বাণী: “তোমরা সকলে শৌল এবং শমূয়েলকে অনুসরণ কর। যদি কেউ তাদের সাহায্য না করে তবে তাদের অবস্থা হবে বলদের এই টুকরোর মতো!”
লোকদের মনে প্রভুর প্রতি মহা ভয় এলো এবং তারা সবাই মিলে একটি মানুষের একতা নিয়ে বাইরে এল। 8 শৌল বেষকে সকলকে একত্র করল। ইস্রায়েল থেকে এসেছিল 300,000 লোক, যিহূদা থেকে 30,000 জন।
9 শৌল এবং তার সৈন্যরা যাবেশের বার্তাবাহকদের বলল, “গিলিয়দে যাবেশের যত লোক আছে তাদের গিয়ে বল, কাল দুপুরের মধ্যেই তোমাদের রক্ষা করা হবে।”
শৌলের বাণী বার্তাবাহকরা যাবেশের লোকদের শোনাল। শুনে তারা খুব খুশী হল। 10 তারপর তারা অম্মোনের রাজা নাহশকে বলল, “আমরা কাল তোমার কাছে আসব। তখন তুমি আমাদের নিয়ে যা চাও তাই করবে।”
11 পরদিন সকালে শৌল তার সৈন্যদের তিনটে দলে ভাগ করল। সূর্য উঠলে শৌল সসৈন্যে অম্মোনদের শিবির আক্রমণ করল। সেই সময় ওদের প্রহরীরা পালাবদল করছিল। দুপুরের আগেই শৌল অম্মোনদের পরাজিত করল। অম্মোন সৈন্যরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যে যেদিকে পারল পালিয়ে গেল। সবাই একা হয়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে গেল।
12 তারপর লোকরা শমূয়েলকে বলল, “কোথায় গেল সেইসব লোক যারা বলেছিল শৌলকে রাজা হিসেবে আমরা চাই না? তাদের ডেকে নিয়ে এসো, আমরা তাদের হত্যা করব!”
13 কিন্তু শৌল বলল, “না আজ কাউকে হত্যা কোরো না। প্রভু আজ ইস্রায়েলকে রক্ষা করেছেন!”
14 তারপর শমূয়েল লোকদের বলল, “চলো, আমরা গিল্গলে যাই। গিল্গলে গিয়ে আমরা আবার শৌলকে রাজা করব।”
15 সকলে গিল্গলে গেল। সেখানে প্রভুর সামনে তারা শৌলকে রাজা হিসেবে ঘোষণা করল। তারা প্রভুকে মঙ্গল নৈবেদ্য উৎসর্গ করল। শৌল ও ইস্রায়েলের সমস্ত লোক মহা আনন্দের সঙ্গে অনুষ্ঠান করল।
ঈশ্বর ও ইহুদী সমাজ
9 আমি খ্রীষ্টেতে আছি এবং সত্যি বলছি। পবিত্র আত্মা দ্বারা পরিচালিত আমার বিবেকও বলছে যে আমি মিথ্যা বলছি না। 2 আমি ইহুদী সমাজের জন্য অন্তরে সবসময় গভীর দুঃখ ও বেদনা অনুভব করছি। 3 তারা আমার ভাই ও বোন, আমার স্বজাতি। তাদের যদি সাহায্য করতে পারতাম! এমন কি আমার এমন ইচ্ছাও জাগে যে তাদের বদলে আমি যেন অভিশপ্ত এবং খ্রীষ্ট থেকে বিচ্ছিন্ন হই। 4 তারা ইস্রায়েল বংশেরই মানুষ। ঈশ্বর তাদের পুত্র হবার অধিকার দিয়েছেন, নিজের মহিমা দেখিয়েছেন, ধর্ম নিয়ম দিয়েছেন। ঈশ্বর তাদেরই মোশির দেওয়া বিধি-ব্যবস্থা, সঠিক উপাসনা পদ্ধতি এবং তাঁর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। 5 ঐ লোকেরাই আমাদের মহান পিতৃপুরুষদের বংশধর এবং খ্রীষ্ট এই জাতির মধ্য দিয়েই পার্থিব জগতে এসেছিলেন। ঈশ্বর, যিনি সবার ওপর কর্ত্তৃত্ব করেন, যুগে যুগে তিনি প্রশংসিত হোন্! আমেন!
6 আমি একথা বলছি না যে ঈশ্বরের যে প্রতিশ্রুতি তাদের জন্য ছিল তা তিনি পূর্ণ করেন নি। কিন্তু ইস্রায়েলের সমস্ত মানুষই সত্যিকার ইস্রায়েলের লোক নয়। 7 এমনও নয় যে অব্রাহামের বংশের বলেই তারা সত্যিকারের সন্তান; কিন্তু ঈশ্বর বলেছিলেন, “কেবল ইস্হাক্ই তোমার বৈধ পুত্র হবে।”(A) 8 এর অর্থ হল এই যে দৈহিকভাবে জন্মপ্রাপ্ত অব্রাহামের সন্তানরা সকলেই ঈশ্বরের সন্তান নয়। অব্রাহামের প্রকৃত বংশধর তারাই যারা অব্রাহামের কাছে ঈশ্বরের প্রতিশ্রুতি অনুসারে জন্মলাভ করেছে। 9 তিনি অব্রাহামকে এই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন: “নিরুপিত সময়ে আমি পুনর্বার আসব। তখন সারার এক পুত্র হবে।”(B)
10 শুধু তাই নয়, রিবিকাও একজন মানুষের কাছ থেকেই সন্তান পেয়েছিলেন, তিনি আমাদের পূর্বপুরুষ ইস্হাক। 11-12 সেই সন্তান দুটির জন্ম হবার পূর্বে ঈশ্বর রিবিকাকে বলেছিলেন: “তোমার সন্তানদের মধ্যে জ্যেষ্ঠ কনিষ্ঠের দাস হবে।”(C) তাদের জন্মের পূর্বেই ঈশ্বর এই কথা জানিয়েছিলেন কারণ ঈশ্বরের সংকল্প অনুসারে তারা মনোনীত হয়েছিল। সেই সন্তান মনোনীত হল তার কৃত কোন কর্মের জন্য নয় বরং এই জন্যে যে ঈশ্বর তাকেই আহ্বান করেছিলেন। 13 আর শাস্ত্রে যেমন বলে: “আমি যাকোবকে ভালোবেসেছি, কিন্তু এষৌকে ঘৃণা করেছি।”(D)
14 তাহলে আমরা কি বলব? ঈশ্বরে কি অন্যায় আছে? আমরা তা বলতে পারি না। 15 ঈশ্বর, মোশিকে বলেছিলেন, “আমি যাকে দয়া করতে চাই, তাকেই দয়া করব। যাকে করুণা করতে চাই, তাকেই করুণা করব।”(E) 16 তাই ঈশ্বর তাকেই মনোনীত করেন যাকে করুণা করবেন বলে ঠিক করেছেন। তাই মানুষের চেষ্টা বা তার ইচ্ছার ওপর তাঁর মনোনয়ন নির্ভর করে না। 17 শাস্ত্রে আছে ঈশ্বর ফরৌণকে উদ্দেশ্য করে বললেন, “তুমি আমার জন্য এই কাজ করবে, এই জন্যই আমি তোমাকে রাজা করেছি, যেন তোমার মধ্য দিয়ে আমি আমার ক্ষমতা প্রকাশ করতে পারি ও সারা জগতে আমার নাম ঘোষিত হয়।”(F)
18 সেজন্য ঈশ্বর যাকে দয়া করতে চান, তাকেই দয়া করেন আর যার অন্তর ঈশ্বর কঠোর করতে চান, তার অন্তর কঠোর করে তোলেন।
19 তাহলে তোমরা হয়তো আমাকে বলতে পার: “তবে ঈশ্বর কেন পাপের জন্য মানুষকে দোষী করেন?” কারণ ঈশ্বরের ইচ্ছা কে প্রতিরোধ করতে পারে? 20 তা সত্য, কিন্তু তুমি কে? ঈশ্বরকে প্রশ্ন করার কোন অধিকার তোমার নেই। মাটির পাত্র কি নির্মাণকর্তাকে প্রশ্ন করতে পারে? মাটির পাত্র কখনও নির্মাতাকে বলে না, “তুমি কেন আমাকে এমন করে গড়লে?” 21 কাদামাটির ওপরে কুমোরের কি কোন অধিকার নেই, সে কি একই মাটির তাল থেকে তার ইচ্ছামত দুরকম পাত্র তৈরী করতে পারে না? একটি বিশেষ ব্যবহারের জন্য আর অন্যটি সাধারণ ব্যবহারের জন্য?
22 ঈশ্বর যদিও চেয়েছিলেন, যে লোকেদের বিনাশের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে তাদের ওপর তিনি তাঁর ক্রোধ প্রকাশ করবেন ও তাঁর ক্ষমতার স্পষ্ট প্রমাণ দেবেন, তবু ঈশ্বর তাঁর ক্রোধের পাত্রদের প্রতি অসীম ধৈর্য্য দেখিয়েছেন। 23 যাতে সেই দয়ার পাত্রদের, যাদের তিনি মহিমা প্রাপ্তির যোগ্য করে তৈরী করেছিলেন, তাদের কাছে তাঁর মহিমার ঐশ্বর্য্য সম্বন্ধে পরিচয় করাতে পারেন। 24 আমরাই সেই লোক, ঈশ্বর যাদের আহ্বান করেছেন। ইহুদী বা অইহুদীর মধ্য থেকে ঈশ্বর আমাদের আহ্বান করেছেন। 25 এবিষয়ে হোশেয়ের পুস্তকে লেখা আছে:
“যারা আমার লোক নয়,
তাদের আমি নিজের লোক বলব,
যে প্রিয়তমা ছিল না
তাকে আমার প্রিয়তমা বলব।”(G)
26 “আর যেখানে ঈশ্বর বলেছিলেন
‘তোমরা আমার লোক নও’,
সেখানেই তাদের বলা যাবে জীবন্ত ঈশ্বরের সন্তান।”(H)
27 যিশাইয় ইস্রায়েল সম্বন্ধে উচ্চকণ্ঠে বলেছিলেন:
“যদিও ইস্রায়েলীদের সংখ্যা সমুদ্র তীরের বালুকণার মত অগনিত হয়,
তবুও তাদের মধ্য থেকে অবশিষ্ট কিছু মানুষ শেষ পর্যন্ত উদ্ধার পাবে।
28 বিচারের ব্যাপারে প্রভু এই পৃথিবীতে যা করবেন বলেছেন, তিনি তা পূর্ণ করবেন, শিগ্গিরই তা শেষ করবেন।”(I)
29 এই রকম কথা যিশাইয় আগেই বলেছিলেন:
“সর্বশক্তিমান প্রভু যদি আমাদের জন্য
কিছু বংশধর রেখে না দিতেন
তবে এতদিনে আমরা সদোমের তুল্য হতাম,
আমরা এতদিনে ঘমোরার তুল্য হতাম।”(J)
30 তাহলে এসবের অর্থ কি? অর্থ এই, যারা অইহুদী তারা ঈশ্বরের সাক্ষাতে ধার্মিক প্রতিপন্ন হবার কোন চেষ্টা করে নি; তাদেরই ঈশ্বর ধার্মিক প্রতিপন্ন করলেন। তাদের বিশ্বাসের জন্য তারা ধার্মিক প্রতিপন্ন হল। 31 আর ইস্রায়েলীয়রা বিধি-ব্যবস্থা পালন করার মধ্য দিয়ে ধার্মিক প্রতিপন্ন হবার চেষ্টা করেও কৃতকার্য হয় নি। 32 কারণ তারা তাদের কৃতকার্যের দ্বারা ধার্মিক প্রতিপন্ন হবার চেষ্টা করেছে। ধার্মিক প্রতিপন্ন হবার জন্য তারা ঈশ্বরের ওপর বিশ্বাস করে নি, তারা ব্যাঘাতজনক পাথরে ধাক্কা পেয়ে হোঁচট খেয়েছে। 33 শাস্ত্রে যেমন লেখা আছে:
“দেখ, আমি সিয়োনে একটি পাথর রাখছি
যাতে মানুষ হোঁচট খেয়ে পড়ে যাবে;
কিন্তু যারা তাঁর ওপর বিশ্বাস করবে তারা কখনও লজ্জায় পড়বে না।”(K)
মোয়াব সম্বন্ধে বার্তা
48 মোয়াব দেশ সম্বন্ধে হল এই বার্তা। প্রভু সর্বশক্তিমান, ইস্রায়েলের ঈশ্বর বলেন:
“নবো পর্বতের জন্য খুব খারাপ হবে।
নবো পর্বত ধ্বংস হয়ে যাবে।
কিরিয়াথয়িমকে অপদস্থ করা হবে
এবং তাকে দখল করা হবে।
ঐ শক্তিশালী জায়গাটিকে
অবদমিত ও ধ্বংস করা হবে।
2 মোয়াবের আর কখনো প্রশংসা করা হবে না।
হিশ্বোনের লোকরা মোয়াবের পরাজয়ের পরিকল্পনা করবে।
তারা বলবে, ‘এসো, আমরা ঐ দেশটি শেষ করে দিই।’
মদ্মেনা, তুমিও নিশ্চুপ হয়ে যাবে।
প্রভুর তরবারি তোমাকেও তাড়া করবে।
3 হোরোণয়িম থেকে কান্নার রোল উঠছে শোন।
তারা বিশৃঙ্খল অবস্থা ও ধ্বংস দেখে কাঁদছে।
4 মোয়াব ধ্বংস হবে।
তার সন্তানরা সাহায্যের জন্য চিৎকার করে কাঁদবে।
5 মোয়াবের লোকরা কাঁদতে কাঁদতে
লূহীতের ফুটপাত দিয়ে হাঁটবে।
তাদের সেই বেদনাবিধুর কান্নার আওয়াজ শোনা যাবে
হোরোণয়িম শহরের রাস্তা থেকে।
6 বাঁচার জন্য পালাও। দৌড়োও!
ঝোপের ছোট ছোট শেকড় যেমন মরুঝড়ে উড়ে যায় সেই ভাবে পালিয়ে যাও।
7 “তোমরা যা তৈরী করেছিলে তাতে তোমাদের বিশ্বাস আছে, বিশ্বাস আছে তোমাদের সম্পদে।
তাই তোমরা বন্দী হবে।
তোমাদের দেবতা কমোশ[a] কেও নির্বাসনে পাঠানো হবে বন্দী করে নিয়ে গিয়ে।
তার যাজক এবং আধিকারিকদেরও বন্দী করে নিয়ে যাওয়া হবে।
8 ধ্বংস আসবে প্রত্যেক শহরের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে।
কোন শহর পালাতে পারবে না।
এই উপত্যকা ধ্বংস হয়ে যাবে।
উচ্চ সমতলভূমিও ধ্বংস হবে।
প্রভু যেহেতু বলেছেন এইগুলি ঘটবে,
তাই এগুলি ঘটবেই।
9 মোয়াবের সমস্ত জমিতে নুন ছড়িয়ে দাও।
এই দেশ শূন্য মরুভূমিতে পরিণত হবে।
মোয়াবের শহরগুলি
শূন্য শহরসমূহে পরিণত হবে।
10 যদি কোন ব্যক্তি প্রভুর নির্দেশ মতো তার তরবারি ব্যবহার না করে
এবং হত্যা করে তাহলে সেই ব্যক্তির জীবনে বিপর্যয় আসবে।
11 “মোয়াব কখনও অশান্তি কি তা জানতে পারেনি।
মোয়াব ছিল নির্দিষ্ট স্থানে সঞ্চিত রাখা সুরার মতো স্থির।
তাকে কখনও এক পাত্র থেকে অন্য পাত্রে ঢালা হয়নি।
তাকে কখনও নির্বাসনের জন্য বন্দী করে নিয়ে যাওয়া হয়নি।
তাই তার স্বাদ আগের মতোই অভিন্ন
এবং তার গন্ধেরও পরিবর্তন হয়নি।”
12 প্রভু বলেছেন,
“কিন্তু শীঘ্রই আমি কিছু লোক পাঠাব যারা তোমাকে
সুরার মতো এক পাত্র থেকে অন্য পাত্রে ঢালবে।
তারপর তারা শূন্য পাত্রের মতো আছাড় মেরে
তোমাকে টুকরো টুকরো করবে।”
13 তখন মোয়াবের লোকরা তাদের মূর্ত্তি কমোশের জন্য লজ্জিত হবে। বৈথেলে ইস্রায়েলের লোকরাও মূর্ত্তিকে বিশ্বাস করেছিল এবং যখন ঐ মূর্ত্তি তাদের কোন ভাবেই সাহায্য করতে পারেনি তখন তারা হতবুদ্ধি হয়ে পড়েছিল। মোয়াবের সেই রকমই হবে।
14 “তুমি বলতে পারো না, ‘আমরা ভালো সৈন্য।
আমরা যুদ্ধক্ষেত্রে সাহসী।’
15 শত্রুপক্ষ মোয়াব আক্রমণ করবে।
তারা মোয়াব শহরগুলির ভেতরে ঢুকে সেগুলিকে ধ্বংস করে দেবে।
গণ হত্যার সময় মোয়াবের সবচেয়ে শক্তিশালী যুবকরা মারা যাবে।”
এই বার্তা হল রাজার।
রাজার নাম হল প্রভু সর্বশক্তিমান।
16 “মোয়াবের ধ্বংস হবে শীঘ্রই।
মোয়াবের পরিসমাপ্তি খুব কাছে এগিয়ে আসছে।
17 মোয়াবের প্রতিবেশী লোকরা, তোমরা ঐ দেশের জন্য চিৎকার করে কাঁদো!
লোকরা, তোমরা জানো যে মোয়াব কতখানি বিখ্যাত
তাই তার জন্য কাঁদো।
এই বিলাপ গীত গাও: ‘রাজার শাসন শেষ।
মোয়াবের শক্তি ও গৌরব শেষ হয়ে গেছে।’
18 “তোমরা দীবোনের লোকরা,
তোমাদের শ্রদ্ধার জায়গা থেকে নেমে এসো।
কারণ ধ্বংসকারী আসছে।
সে এসে তোমাদের সমস্ত শক্তিশালী শহরগুলোকে ভেঙ্গে গুঁড়িয়ে দেবে।
19 “অরোয়ের লোকরা, রাস্তায় দাঁড়িয়ে লক্ষ্য করে দেখো
একজন পুরুষ ও নারী দৌড়ে পালাচ্ছে।
ওদের জিজ্ঞাসা করো কি হয়েছে।
20 “মোয়াব ধ্বংস হবে এবং লজ্জায় ভরে যাবে।
মোয়াব শুধু কাঁদবে আর কাঁদবে।
অর্ণোন নদীতে ঘোষণা হচ্ছে
মোয়াব ধ্বংস হয়ে গিয়েছে।
21 উচ্চসমতল ভূমির লোকরাও শাস্তি পাবে।
হোলন, যহস, মেফাৎ শহরে
শাস্তির বিধান এসে গিয়েছে।
22 বিচার দণ্ড উপস্থিত হয়েছে
দীবোন, নবো এবং বৈৎ-দিব্লাথয়িম শহরে।
23 বিচার দণ্ড উপস্থিত হয়েছে
কিরিয়াথয়িম, বৈৎগামূল এবং বৈৎ-মিয়োন শহরে।
24 বিচার দণ্ড এসেছে করিয়োৎ এবং বস্রা শহরগুলিতে।
বিচার দণ্ড এসেছে মোয়াবের কাছের ও দূরের সমস্ত শহরগুলিতেও।
25 মোয়াবের সমস্ত শক্তি ছিন্ন করা হয়েছে।
মোয়াবের বাহু ভেঙে দেওয়া হয়েছে।”
প্রভু এই কথা বলেছিলেন।
26 “মোয়াব নিজেকে প্রভুর চেয়েও বেশী গুরুত্বপূর্ণ ভেবেছিল।
অতএব মোয়াবকে শাস্তি দাও যতক্ষণ না সে
মাতালের মতো টলতে টলতে হাঁটে, যতক্ষণ না সে বমি করে এবং তার ওপর নিজেই গড়াগড়ি খায়!
মানুষ মোয়াবকে নিয়ে উপহাস করবে।
27 “মোয়াব তুমি সব সময় ইস্রায়েলকে নিয়ে হাসাহাসি করেছ।
ইস্রায়েল যখন একদল চোরের হাতে ধরা পড়েছিল তখন তুমি তাকে নিয়ে উপহাস করেছো, মজা করেছো।
তুমি সব সময় নিজেকে ইস্রায়েলের থেকে শ্রেষ্ঠ বলে দাবি করে এসেছো।
যতবার তুমি ইস্রায়েলের সম্বন্ধে কথা বলেছ, তুমি সব সময় এমন ব্যবহার করেছ যেন তুমি তার চেয়ে ভালো।
28 তোমরা, মোয়াবের লোকরা, তোমদের শহরগুলি ত্যাগ কর
এবং পাথর সমূহের মাঝে বাস কর
যেমন করে একটি ঘুঘু পাখী একটি গুহার প্রবেশমুখে
তার বাসা তৈরী করে।”
29 “মোয়াবের আত্মম্ভরিতার কথা আমরা শুনেছি।
সে ছিল ভীষণ অহঙ্কারী।
হামবড়া ভাব দেখিয়ে
সে নিজেকে কেউ কেটা প্রমাণ করার চেষ্টা করতো।”
30 প্রভু বলেন, “আমি জানি যে মোয়াব খুব তাড়াতাড়ি রেগে যায় এবং সে নিজেই নিজের বড়াই করে বেড়ায়।
কিন্তু তার সব বড় বড় কথাই মিথ্যে।
সে যা বলে তার কিছুই করে দেখাতে পারে না।
31 তাই আমি মোয়াবের জন্য কাঁদি।
কাঁদি তার লোকদের জন্য।
আমি কাঁদলাম কীর-হেরেসের লোকদের জন্য।
32 যাসের লোকদের জন্য আমি যাসেরের সঙ্গে কাঁদলাম।
সিব্মা অতীতে তোমার দ্রাক্ষা ক্ষেত
সমুদ্র উপকূল ঘিরে বিস্তৃত ছিল যাসের পর্যন্ত।
কিন্তু ধ্বংসকারী তোমাদের ফসল ও দ্রাক্ষা নিয়ে গিয়েছে।
33 মোয়াবের বিশাল দ্রাক্ষাক্ষেতগুলির থেকে সমস্ত আনন্দ ও হাসি অদৃশ্য হয়ে গিয়েছে।
আমি দ্রাক্ষার থেকে রসের প্রবাহ বন্ধ করে দিয়েছি যাতে আর কখনও দ্রাক্ষারস না বানানো যায়।
কেউ আর ওগুলোর ওপর দিয়ে নাচতে নাচতে এবং গাইতে গাইতে না হাঁটে।
সেখানে কোন আনন্দের কোলাহল থাকবে না।
34 “হিশ্বোন ও ইলিয়ালী শহরের মানুষ কাঁদছে। সুদূর যহস শহর থেকেও তাদের কান্না শোনা যাচ্ছে। তাদের কান্না শোনা যাচ্ছে সোয়র, হোরেসুয়ম এবং ইগ্লত্-শলিশীয়া শহর থেকেও। এমন কি নিম্রীম নদীর জল শুকিয়ে গিয়েছে। 35 আমি মোয়াবকে সমস্ত উচ্চ স্থানগুলিতে হোমবলি উৎসর্গ করা থেকে বিরত করব। আমি মোয়াবকে তাদের দেবতাদের প্রতি নৈবেদ্য দেওয়া থেকে বিরত করব।” প্রভু এগুলি বললেন।
36 “মোয়াবের জন্য আমি খুবই দুঃখিত। শবযাত্রা কালে শোকসঙ্গীতের সুর তোলা বাঁশির মতো আমার হৃদয় কাঁদছে। আমি কীর হেরেসের লোকদের জন্যও দুঃখিত। তাদের সমস্ত ধনসম্পত্তি লুঠ হয়ে গিয়েছে। 37 প্রত্যেকেই শোক পালনের উদ্দেশ্যে মাথা ন্যাড়া করেছে, দাড়ি কেটেছে, হাত কেটে রক্তপাত ঘটিয়েছে। প্রত্যেকে শোকের পোশাক পরেছে। 38 মোয়াবে মৃতদের জন্য প্রত্যেক জায়গায় লোকেরা, প্রত্যেক বাড়ির মাথায় এবং সমস্ত জনসাধারণ্যে কাঁদছে। আমি মোয়াবকে শূন্য পাত্রের মতো আছাড় মেরে ভেঙ্গে টুকরো টুকরো করেছি বলেই চারিদিকে এত শোক।” প্রভু এই কথাগুলি বলেছিলেন।
39 “মোয়াব চুর্ণ বিচূর্ণ হয়ে গিয়েছে। মানুষ কাঁদছে। মোয়াব আত্মসমর্পণ করেছে এবং এখন লজ্জায় পড়ে গেছে বলে অন্য দেশের মানুষ তাকে নিয়ে উপহাস করছে। কিন্তু মোয়াবে যা ঘটেছে তাতে তারা আতঙ্কে পূর্ণ।”
40 প্রভু বলেন, “দেখ! একটি ঈগল পাখী আকাশ থেকে নীচের দিকে ধেয়ে আসছে
আর তার ডানার পরিধি বিস্তৃত হচ্ছে মোয়াবের ওপর।
41 মোয়াবের শহরগুলি অধিকৃত হবে।
দূর্গ দিয়ে ঘেরা জায়গাগুলিও পরাজিত হবে।
সেই সময় মোয়াবের সৈন্যরা প্রসব বেদনায় কাতর মহিলার মতো ভীত হয়ে পড়বে।
42 পুরো মোয়াব দেশটাই ধ্বংস হয়ে যাবে।
কেননা তারা ভেবেছিল যে তারা প্রভুর থেকেও বেশী গুরুত্বপূর্ণ।”
43 প্রভু এই কথাগুলি বলেন:
“মোয়াবের লোকরা, ভীত হও, গভীর খাদ এবং ফাঁদ তোমাদের জন্য অপেক্ষা করছে।
44 লোকরা ভয়ে দৌড়বে
এবং গভীর খাদগুলিতে পড়বে।
কেউ যদি সেই খাদ বেয়ে বাইরে উঠে আসে, সে মুক্ত হবে না
কারণ তাকে ধরবার জন্য ফাঁদ পাতা আছে।
আমি মোয়াবে শাস্তির বছর নিয়ে আসব।”
প্রভু এই কথাগুলি বললেন।
45 “শত্রুবাহিনীর ভয়ে মানুষ নিরাপত্তার জন্য হিশ্বোন শহরের দিকে ছুটবে
কিন্তু সেখানেও তারা নিরাপদ নয়।
হিশ্বোনে আগুন জ্বলতে শুরু করেছে।
সীহোনের শহর থেকে এই আগুনের উৎপত্তি।
ঐ আগুন মোয়াবের নেতাদের পুড়িয়ে মারবে,
পুড়িয়ে মারবে অহঙ্কারী লোকগুলোকে।
46 মোয়াব তোমার সত্যিই দুঃসময় ঘনিয়ে আসছে।
তোমার দেবতা কমোশ ও তার লোকরা ধ্বংস হয়ে গিয়েছে।
তোমার ছেলেমেয়েদের বন্দী করে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে নির্বাসনে।
47 মোয়াবের লোকদের নির্বাসনে পাঠানো হলেও
এমন একদিন আসবে যেদিন তাদের সবাইকে আবার আমি মোয়াবে ফিরিয়ে আনব।”
এই ছিল প্রভুর বার্তা।
মোয়াবের বিচারদণ্ড এখানেই শেষ।
দায়ূদের একটি গীত।
25 প্রভু, আমি নিজেকে আপনার হাতে সমর্পণ করেছি।
2 হে আমার ঈশ্বর, আমি আপনাতে আস্থা রাখি।
তাই আমাকে লজ্জিত করবেন না।
আমার শত্রুরা যেন আমার ওপর জয়লাভ না করে।
3 যদি কোন ব্যক্তি আপনার ওপর নির্ভর করে, সে কখনও হতাশাগ্রস্থ হবে না।
কিন্তু বিশ্বাসঘাতকরা হতাশ হবে।
তারা কিছুই পাবে না।
4 হে প্রভু, আপনার পথগুলি আমাকে দেখান।
আপনার পথ সম্পর্কে আমায় শিক্ষা দিন।
5 আমায় পরিচালিত করুন এবং আপনার সত্য সম্পর্কে আমায় শিক্ষা দিন।
আপনিই আমার ঈশ্বর, আমার পরিত্রাতা।
প্রতিদিন আমি আপনার ওপর নির্ভর করি।
6 হে প্রভু, আমার প্রতি দয়া করে আমায় স্মরণ করবেন।
যে কোমল ভালোবাসা আপনি আমায় চিরদিন দিয়ে এসেছেন সেই ভালোবাসা আমার প্রতি প্রদর্শন করুন।
7 আমার তরুণ বয়সের কৃত কুকর্ম ও পাপ আপনি স্মরণে রাখবেন না।
হে প্রভু, আপনার সুনামের জন্য, আমায় ভালোবেসে স্মরণ করবেন।
8 প্রভু প্রকৃতপক্ষেই ভাল এবং সৎ।
তিনি পাপীদের ঠিক পথে জীবনযাপন করবার শিক্ষা দেন।
9 যারা বিনীত, তাদেরই তিনি তাঁর পথগুলি শেখান।
তিনি ন্যায়পথে তাদের পরিচালিত করেন।
10 প্রভুই রাজা, যারা তাঁর চুক্তি এবং প্রতিশ্রুতি অনুসরণ করে
তিনি তাদের প্রতি সত্যনিষ্ঠ হন।
11 হে প্রভু, আমি অনেক পাপ কাজ করেছি।
কিন্তু আপনার মহত্ব দেখাবার জন্য, আমি যা যা করেছিলাম, সেগুলো সবই আপনি ক্ষমা করেছেন।
12 যদি কোন লোক প্রভুকেই অনুসরণ করবে বলে মনোনীত করে,
তাহলে ঈশ্বর তাকে বেঁচে থাকবার শ্রেষ্ঠ রাস্তা দেখাবেন।
13 সেই লোক ভাল জিনিস উপভোগ করতে পারবে,
এবং তাঁর সন্তানরা ঈশ্বরের প্রতিশ্রুত ভূখণ্ড পাবে।
14 প্রভু তাঁর গূঢ় কথা তাঁর অনুগামীদের বলেন।
তাঁর চুক্তি সম্পর্কে তিনি তাদের শিক্ষা দেন।
15 সাহায্যের জন্য আমি সর্বদাই প্রভুর দিকে চেয়ে থাকি।
তিনি সর্বদাই আমাকে সমস্যার জাল থেকে মুক্ত করেন।
16 হে প্রভু, আমি নিঃসহায় এবং নিঃসঙ্গ।
আমার দিকে মুখ ফেরান, আমায় কৃপা করুন।
17 আমাকে আমার সংকটসমূহ থেকে মুক্ত করুন।
আমার সমস্যাগুলির সমাধান করতে আমায় সাহায্য করুন।
18 আমার প্রচেষ্টা ও সমস্যার দিকে দৃষ্টিপাত করুন।
আমার সকল পাপ থেকে আমায় ক্ষমা করে দিন।
19 আমার যেসব শত্রু আছে তাদের দিকে দেখুন।
তারা আমায় ঘৃণা করে, আমায় আঘাত করতে চায়।
20 হে ঈশ্বর, আমায় রক্ষা করুন এবং আমায় উদ্ধার করুন।
আমি আপনার ওপর নির্ভর করি।
দয়া করে আমায় হতাশ করবেন না।
21 হে ঈশ্বর, আপনি প্রকৃতই ভাল।
আমি আপনাতে নির্ভর করি, তাই আমায় রক্ষা করুন।
22 হে ঈশ্বর, ইস্রায়েলের লোকদের,
তাদের শত্রুদের হাত থেকে রক্ষা করুন।
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International