Print Page Options
Previous Prev Day Next DayNext

M’Cheyne Bible Reading Plan

The classic M'Cheyne plan--read the Old Testament, New Testament, and Psalms or Gospels every day.
Duration: 365 days
Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)
Version
1 শমূয়েল 9

পিতার গাধাগুলোর খোঁজে শৌল

কীশ ছিলেন বিন্যামীন পরিবারগোষ্ঠীর একজন গণ্যমান্য ব্যক্তি। কীশের পিতার নাম অবীয়েল। অবীয়েলের পিতা সরোর। সরোরের পিতা বখোরত, বখোরতের পিতা অফীহ, তিনি বিন্যামীনের লোক। কীশের একজন পুত্র ছিল, তার নাম শৌল। সুদর্শন যুবক শৌলের মতো এত সুন্দর আর কেউ ছিল না। ইস্রায়েলের সকলের চেয়ে সে ছিল মাথায় লম্বা।

একদিন কীশের গাধা হারিয়ে গেলে তিনি তাঁর পুত্র শৌলকে বললেন, “একজন ভৃত্যকে নিয়ে গাধাগুলো খুঁজে আনো।” শৌল গাধাগুলো খুঁজতে বেরিয়ে গেল। সে ইফ্রয়িম পাহাড়ের মধ্যে এবং শালিশার আশেপাশের জায়গার মধ্যে দিয়ে গেল। কিন্তু শৌল আর তার ভৃত্য গাধাগুলো খুঁজে পেল না। এবার তারা শালীমের দিকে হাঁটা শুরু করল, সেদিকেও গাধাগুলোর খোঁজ পেল না। অগত্যা শৌল বিন্যামীনদের দেশের দিকে রওনা হল। এমনকি সেখানেও তারা গাধাগুলো খুঁজে পেল না।

অবশেষে শৌল ও তার ভৃত্য সূফ শহরে এল। শৌল ভৃত্যটিকে বলল, “চল আমরা বাড়ী ফিরি। আমার পিতা গাধাগুলোর জন্য চিন্তা থামিয়ে তার পরিবর্তে আমাদের নিয়ে দুশ্চিন্তা শুরু করবেন।”

ভৃত্যটি বলল, “এই শহরেই ঈশ্বরের একজন ভাববাদী রয়েছেন যাকে লোকরা খুবই ভক্তি করে। তিনি যা বলেন তাই সত্য হয়। চলুন আমরা শহরের ভেতরে যাই। তিনি হয়তো আমাদের বলে দিতে পারেন, এরপর আমাদের কোথায় যেতে হবে।”

শৌল তাকে বলল, “বেশ, আমরা নয় শহরের ভেতরে ঢুকলাম; কিন্তু তাকে আমরা কি দিতে পারি? তাকে দেবার মত কোন উপহার তো আমাদের হাতে নেই। এমন কি আমাদের ঝুলিতে খাদ্যদ্রব্যও শেষ। কি দেব তাকে?”

ভৃত্যটি শৌলকে বলল, “শোন, আমার কাছে যৎ‌সামান্য কিছু অর্থ আছে, সেটা আমি ঈশ্বরের লোককে দেব। তিনিই আমাদের রাস্তা বলে দেবেন।”

9-11 শৌল বলল, “ভাল কথা, তাহলে চলো।” তাই তারা সেই শহরে গেল, যেখানে ঈশ্বরের ভাববাদী থাকত।

শৌল ও তার ভৃত্যটি পর্বতের পথ দিয়ে শহরের দিকে যাচ্ছিল। সেই সময় যুবতীরা জল নিতে আসছে দেখে তারা জিজ্ঞাসা করল, “দর্শনকারী কি এই জায়গায় রয়েছেন?” (অতীতে ইস্রায়েলের লোকরা ভাববাদীকে “দর্শনকারী” বলেও ডাকত। তাই ঈশ্বরের কাছে কিছু বিষয়ে প্রশ্ন করতে চাইলে তারা বলত, “চলো দর্শনকারীর কাছে যাই।”)

12 যুবতীরা উত্তর দিলো, “হ্যাঁ, দর্শনকারী এখানেই আছেন। তিনি ওখানে আছেন, তোমাদের আগে। তিনি আজ এই শহরে এসেছেন। কিছু লোক মঙ্গল নৈবেদ্য উৎসর্গ করার জন্য আজ উপাসনা স্থানে সমবেত হচ্ছে। 13 তাই শহরে গেলে তোমরা তাঁর দেখা পাবে। যদি তোমরা দ্রুত পথ চল তবে তিনি উপাসনার স্থানে খেতে বসার আগেই তোমরা তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পারবে। দর্শনকারী নৈবেদ্য বলি আশীর্বাদ করেন। তাই তিনি সেখানে না পৌঁছানো পর্যন্ত লোকে খেতে বসবে না। তাড়াতাড়ি পথ চললে তোমরা দর্শনকারীর দেখা পাবে।”

14 শৌল ও তার ভৃত্য শহরে যাবার জন্যে পাহাড়ে উঠলে, শহরে ঢোকার সময়ই তারা দেখল শমূয়েল তাদের দিকেই আসছে। শমূয়েল তখন সবে উপাসনার স্থানে যাবার জন্যে বার হয়েছে।

15 এর আগের দিন প্রভু শমূয়েলকে বলেছিলেন, 16 “আগামীকাল ঠিক এই সময়েই আমি তোমার কাছে একজনকে পাঠাবো। সে বিন্যামীন পরিবারের লোক। তুমি তার অভিষেক করে তাকে ইস্রায়েলের নতুন নেতা করবে। এই লোকটিই পলেষ্টীয়দের হাত থেকে আমার লোকদের রক্ষা করবে। আমি তাদের দুঃখ দুর্দশা দেখেছি, আমি তাদের কান্না শুনেছি।”

17 শমূয়েল শৌলকে দেখতে পেল এবং প্রভু শমূয়েলকে বললেন, “আমি এই লোকটার কথাই তোমাকে বলেছিলাম। সে আমার লোকদের ওপর শাসন করবে।”

18 ফটকের কাছে শৌল একজন লোকের কাছে পথ নির্দেশ জিজ্ঞেস করতে গেল। ঘটনাচক্রে এই লোকটি ছিল শমূয়েল। শৌল তাকে জিজ্ঞাসা করল, “কোথায় সেই দর্শনকারীর বাড়ি আমায় দয়া করে বলে দিন।”

19 শমূয়েল বলল, “আমিই সেই দর্শক। আমার আগে আগে উপাসনার স্থানের দিকে এগিয়ে যাও। তুমি তোমার ভৃত্যকে নিয়ে আজ আমার সঙ্গে খাবে। কাল সকালে তোমার বাড়ি যেও। আমি তোমার সব প্রশ্নেরই উত্তর দেব। 20 তিন দিন আগে যে গাধাগুলো তুমি হারিয়েছ, তাদের নিয়ে আর মন খারাপ করো না; তাদের পাওয়া গেছে। এখন ইস্রায়েলের প্রত্যেকে একজনকে খুঁজছে। তুমিই সেই ব্যক্তি। তারা তোমাকে এবং তোমার পিতার পরিবারের সকলকে চায়।”

21 শৌল বলল, “কিন্তু আমি তো বিন্যামীন পরিবারের একজন। ইস্রায়েলের এটাই সবচেয়ে ছোট পরিবারগোষ্ঠী এবং এই পরিবারগোষ্ঠীর মধ্যে সবচেয়ে ছোট হচ্ছে আমার পরিবার। তবে আপনি কেন বলছেন ইস্রায়েলের আমাকে প্রয়োজন?”

22 তারপর শমূয়েল, শৌল ও তার ভৃত্যকে নিয়ে খাবার জায়গায় গেল। বলির নৈবেদ্য ভাগ করে খাবার জন্য প্রায় 30 জন লোককে পংক্তি ভোজনে নিমন্ত্রণ করা হয়েছিল। শৌল ও তার ভৃত্যটিকে শমূয়েল টেবিলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় বসালো। 23 শমূয়েল পাচককে বলল, “সরিয়ে রাখার জন্য যে মাংস আমি তোমাকে দিয়েছিলাম সেটা এবার আমায় দাও।”

24 পাচক ঊরু দেশের মাংসটা শৌলের টেবিলের সামনে রেখে দিলে শমূয়েল শৌলকে বলল, “তোমার সামনে রাখা মাংসটা খাও। আমি এটা তোমার জন্য রেখেছি। এই বিশেষ অনুষ্ঠানের জন্য আমি এটা রেখেছিলাম।” তাই সেদিন শৌল শমূয়েলের সঙ্গে খাওয়া-দাওয়া করল।

25 খাওয়ার পর তারা উপাসনার স্থান থেকে নেমে এসে শহরে ফিরে গেল। শমূয়েল শৌলের জন্য ছাদে বিছানা পেতেছিল। শৌল ঘুমোতে গেল। 26 পরদিন ভোরে শমূয়েল চেঁচিয়ে শৌলকে ডাকল। সে বলল, “উঠে পড়ো। আমি তোমায় রাস্তায় পৌঁছে দেব।” শৌল উঠে শমূয়েলের সঙ্গে বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়ল।

27 শমূয়েল, শৌল ও তার ভৃত্য সবাই মিলে শহরের সীমানা পর্যন্ত গেল। তখন শমূয়েল শৌলকে বলল, “তোমার ভৃত্যকে এগিয়ে যেতে বলো। তোমাকে একটা বাণী দেব। ঈশ্বরের কাছ থেকে এই বাণী এসেছে।” তাই ভৃত্যটি এগিয়ে গেল।

রোমীয় 7

বিবাহের দৃষ্টান্ত

ভাই ও বোনেরা, তোমরা যখন মোশির বিধি ব্যবস্থা জান, তখন তোমরা নিশ্চয়ই জান যে মানুষ যতদিন বেঁচে থাকে ততদিনই সে বিধি-ব্যবস্থার অধীনে থাকে। তোমাদের কাছে একটা দৃষ্টান্ত দিই। একজন স্ত্রীলোক নিয়ম মত, যতদিন তার স্বামী বেঁচে থাকে ততদিন তার প্রতি দায়বদ্ধ থাকে। স্বামী মারা গেলে সে বিয়ের বিধি-ব্যবস্থা থেকে মুক্তি পায়। কিন্তু সেই স্ত্রীলোক, তার স্বামী বেঁচে থাকতে যদি অপর পুরুষকে বিবাহ করে, সে ব্যভিচার করে। তার স্বামী যদি মারা যায়, তাহলে সে বিয়ের বিধি-ব্যবস্থা থেকে মুক্ত হয়ে যায়; আর তখন সে যদি অন্য পুরুষকে বিয়ে করে তাহলে সে ব্যভিচারের দোষে দোষী হয় না।

অতএব আমার ভাই ও বোনেরা, খ্রীষ্টের দেহের মাধ্যমে সেইভাবেই তোমাদের পুরানো সত্ত্বার মৃত্যু হয়েছে ও তোমরা বিধি-ব্যবস্থার বন্ধন থেকে মুক্ত হয়েছ। মৃত্যু থেকে যিনি বেঁচে উঠেছেন এখন তোমরা তাঁরই হয়েছ। আমরা খ্রীষ্টের হয়েছি, যেন ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে ফল উৎপন্ন করতে পারি। অতীতে আমরা মানবিক পাপ প্রকৃতি অনুসারে জীবনযাপন করছিলাম। বিধি-ব্যবস্থা পাপের যেসব প্রবৃত্তি জাগিয়ে তোলে সেগুলি আমাদের দেহে প্রবল ছিল। যার ফলে আমরা যা করতাম তা আমাদের কাছে আত্মিক মৃত্যু নিয়ে আসত। অতীতে বিধি-ব্যবস্থা আমাদের বন্দী করে রেখেছিল, কিন্তু এখন আমাদের পুরানো সত্ত্বার মৃত্যু হয়েছে এবং আমরা বিধি-ব্যবস্থার বন্ধন থেকে মুক্ত হয়েছি। এখন আমরা নুতন ধারায় ঈশ্বরের সেবা করি, পুরানো লিখিত বিধি-ব্যবস্থার নির্দেশ অনুসারে নয় কিন্তু পবিত্র আত্মার নির্দেশে।

পাপের বিরুদ্ধে আমাদের সংগ্রাম

তোমরা হয়তো ভাবছ যে আমি বলছি বিধি-ব্যবস্থা এবং পাপ একই বস্তু। না নিশ্চয়ই নয়। একমাত্র বিধি-ব্যবস্থার দ্বারাই পাপ কি তা আমি বুঝতে পারলাম। আমি কখনই বুঝতে পারতাম না যে লোভ করা অন্যায়। যদি বিধি-ব্যবস্থায় লেখা না থাকত, “অপরের জিনিসে লোভ করা পাপ।”(A) কারণ পাপ ঐ নিষেধাজ্ঞার সুযোগ নিয়ে আমার অন্তরে তখন লোভের আকর্ষণ জাগিয়ে তুলতে শুরু করল। তাই ঐ আদেশের সুযোগ নিয়ে আমার জীবনে পাপ প্রবেশ করল। ব্যবস্থা না থাকলে পাপের কোন শক্তি থাকে না। এক সময় আমি বিধি-ব্যবস্থা ছাড়াই বেঁচে ছিলাম; কিন্তু যখন বিধি-ব্যবস্থা এল তখন আমার মধ্যে পাপ বাস করতে শুরু করল। 10 তখন আমি আত্মিকভাবে মৃত্যু বরণ করলাম। যে আদেশের ফলে জীবন পাবার কথা সেই আদেশ আমাকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিল। 11 ঈশ্বরের সেই আজ্ঞা দিয়েই পাপ আমাকে ঠকাবার সুযোগ পেল এবং তাই দিয়েই আমাকে আত্মিকভাবে মেরে ফেলল।

12 তাহলে দেখা যাচ্ছে যে বিধি-ব্যবস্থা পবিত্র আর তাঁর আজ্ঞাও পবিত্র, ন্যায্য ও উত্তম। 13 তাহলে যা উত্তম, তাই কি আমার কাছে মৃত্যু নিয়ে এল? নিশ্চয়ই নয়। উত্তম বিষয়ের মধ্য দিয়ে পাপ আমার কাছে মৃত্যু নিয়ে এল যাতে পাপকে পাপ বলে চেনা যায়। আজ্ঞাকে ব্যবহার করে পাপকে অতীব পাপপূর্ণ বলে চেনা গেল।

মানুষের অন্তরের দ্বন্দ্ব

14 আমরা জানি যে বিধি-ব্যবস্থা আত্মিক; কিন্তু আমি আত্মিক নই। ক্রীতদাসের মতো পাপ আমার ওপর কর্ত্তৃত্ব করে। 15 কি করছি তাই আমি জানি না কারণ আমি যা করতে চাই তা করি না বরং যে মন্দ জিনিস আমি ঘৃণা করি তাই করি। 16 আর আমি যে সব মন্দ কাজ করতে চাই না যদি তাই করি তাহলে বুঝতে হবে বিধি-ব্যবস্থা যে উত্তম তা আমি মেনে নিয়েছি। 17 আমি যেসব মন্দ কাজ করছি তা আমি নিজে যে করছি তা নয়, করছে সেই পাপ যা আমার মধ্যে বাসা বেঁধে আছে। 18 হ্যাঁ, আমি জানি যা ভাল তা আমার মধ্যে বাস করে না, অর্থাৎ আমার অনাত্মিক মানবিক প্রকৃতির মধ্যে তা নেই। কারণ যা ভাল তা করবার ইচ্ছা আমার মধ্যে আছে কিন্তু তা আমি করতে পারি না। 19 কারণ যা ভাল আমি করতে চাই তা করি না; কিন্তু যে অন্যায় আমি করতে চাই না কাজে তাই তো করি। 20 যা আমি করতে চাই না যদি আমি তাই করি তাহলে যে পাপ আমার মধ্যে আছে তা এই মন্দ কাজ করায়।

21 কাজেই আমার মধ্যে এই নিয়মটি আমি লক্ষ্য করছি যে, যখন আমি সত্কার্য করতে ইচ্ছা করি তখনও মন্দ আমার মধ্যে থাকে। 22 আমার অন্তর ঈশ্বরের বিধি-ব্যবস্থা ভালবাসে। 23 কিন্তু আমি দেখছি যে আমার দেহের মধ্যে আর একটা বিধি-ব্যবস্থা কাজ করছে, যা সেই বিধি-ব্যবস্থার সঙ্গে লড়াই করে চলে, যা আমার মন গ্রহণ করেছে। আমার দেহে যে বিধি-ব্যবস্থা কাজ করছে তা হল পাপের বিধি-ব্যবস্থা এবং এর হাতে আমি বন্দী। 24 কি হতভাগ্য মানুষ আমি! কে আমাকে এই মরদেহ থেকে উদ্ধার করবে। 25 ঈশ্বর আমাকে উদ্ধার করবেন! আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের মাধ্যমে পরিত্রাণের দ্বারা ঈশ্বর আমাকে উদ্ধার করবেন।

এইজন্য আমি তাঁকে ধন্যবাদ জানাই। তাহলে দেখছি যে আমি মনে ঈশ্বরের বিধি-ব্যবস্থার দাস; কিন্তু আমার পাপ প্রকৃতির দিক থেকে আমি পাপ ব্যবস্থারই দাস।

যিরমিয় 46

অন্যান্য জাতিগুলি সম্পর্কে প্রভুর বার্তাসমূহ

46 অন্যান্য জাতিগুলি সম্বন্ধে ভাববাদী যিরমিয়র কাছে এই বার্তাগুলি এসেছিল।

মিশর সম্বন্ধে বার্তা

এই বার্তা হল মিশর ও মিশরের রাজা ফরৌণ-নখোর সৈন্যবাহিনীর জন্যে। নখোর সৈন্যরা ফরাৎ নদীর তীরে কর্কমীশ শহরে বাবিলের রাজা নবূখদ্‌রিৎসরের কাছে পরাজিত হয়েছিল। রাজা যোশিয়ের পুত্র রাজা যিহোয়াকীম যখন তার রাজত্বের চতুর্থ বছরে ছিল সেই সময় নবূখদ্‌রিৎসর ফরৌন-নখোর সৈন্যদের পরাজিত করেছিল। এই হল মিশর সম্পর্কিত প্রভুর বার্তা:

“তোমরা ছোট এবং বড় ঢাল নিয়ে
    যুদ্ধের জন্য এগিয়ে যাও।
সৈন্যরা, তোমরা তোমাদের অশ্বদের প্রস্তুত করবে
    এবং তাদের ওপর বসবে।
যুদ্ধক্ষেত্রের ভেতরে দুর্বারভাবে এগিয়ে যাও।
    তোমাদের শিরস্ত্রাণ পরে নাও;
তোমাদের বর্শাকে ঘষা-মাজা করে নাও
    এবং তোমাদের বর্ম পরে নাও।
আমি কি দেখতে পাচ্ছি?
    সৈন্যরা ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে ছুটে পালাচ্ছে।
তাদের সাহসী সৈন্যরা পরাজিত।
    তারা দ্রুত দৌড়চ্ছে, পিছন ফিরে তাকাচ্ছে না।
    সেখানে চতুর্দিকে বিপদ।”
প্রভু এই কথাগুলি বললেন।

“দ্রুতগামী লোকরা আর দৌড়তে পারছে না।
    শক্তিশালী সৈন্যরা পালাতে পারছে না।
তারা হোঁচট খেয়ে পড়ে যাচ্ছে।
    ফরাৎ নদীর তীরে, উত্তরদিকে এই ঘটনা ঘটবে।
নীল নদের মতো কে এগিয়ে আসছে?
    কে এগিয়ে আসছে দ্রুতগামী শক্তিশালী নদীর মতো?
মিশর নীল নদের মতো জেগে ওঠো,
    একটি বেগবান ও শক্তিশালী নদীর মত।
শক্তিশালী দ্রুতগামী নদীর মতো
    যে আসছে সে মিশর।
মিশর বলল, ‘আমি আসব এবং পৃথিবীকে গ্রাস করব।
    আমি ধ্বংস করব শহরগুলিকে এবং সেই শহরের মানুষকে।’
অশ্বারোহী সৈন্যরা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ো।
    রথচালকরা, দ্রুত ছোটাও রথের চাকা।
বীর যোদ্ধা এগিয়ে চলো।
    কূশ এবং পূটিয় সৈন্যগণ, তোমাদের বর্মগুলি বহন কর।
    লূদীয় সৈন্যগণ, তোমাদের ধনুকগুলো ব্যবহার কর।

10 “কিন্তু সে সময় আমাদের প্রভু সর্বশক্তিমান জয়ী হবেন।
    সেই সময় তিনি তাদের যোগ্য শাস্তি দেবেন।
প্রভুর তরবারি ততক্ষণ হত্যা করে যাবে
    যতক্ষণ না তাদের রক্তের জন্য তাঁর তৃষ্ণা নিবারন হয়।
এটা হবে কারণ আমাদের মালিক, প্রভু সর্বশক্তিমানের জন্য একটি উৎসর্গ আছে।
    ফরাৎ নদীর ধারে ঐ দেশের উত্তর দিকে মিশরের সৈন্যদল হল সেই উৎসর্গ।
তাই এগুলি ঘটবে।

11 “মিশর তুমি তোমার প্রয়োজনীয় ওষুধের জন্য গিলিয়দে যাবে।
    তুমি প্রচুর ওষুধ পাবে কিন্তু তাতে তোমার কাজ হবে না।
তুমি কখনও সুস্থ হয়ে উঠবে না।
    তোমার ক্ষত কোনদিন সারবে না।
12 অন্যান্য জাতিগুলি তোমার কান্না শুনতে পাবে।
    তোমার কান্না শোনা যাবে সমগ্র পৃথিবী জুড়ে।
কারণ একজন ‘বীরযোদ্ধা’ আর এক জনের ওপর হুমড়ি খেয়ে পড়বে।
    কিন্তু তারা দুজনেই এক সঙ্গে মাটিতে আছাড় খাবে।”

13 নবূখদ্‌রিৎসর আসছে মিশর আক্রমণ করতে। এই ব্যাপারে প্রভুর বার্তা এল ভাববাদী যিরমিয়র কাছে।

14 “মিশরে, মিগ্দোল শহরে,
    নোফে এবং তফন্হেষ শহরেও
    এই বার্তা ঘোষণা করে দাও।
‘যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হও।
    কেন? কারণ তোমাদের চারপাশের সমস্ত জাতিসমূহ তরবারি দ্বারা নিহত হচ্ছে।’
15 মিশর, তোমার শক্তিশালী সৈন্যরা নিহত হবে।
    তারা আর উঠে দাঁড়াতে পারবে না।
    কারণ তারা উঠে দাঁড়াতে গেলেই প্রভু তাদের ধাক্কা মেরে ফেলে দেবেন।
16 ঐ সৈন্যরা বার বার হোঁচট খেয়ে
    একে অন্যের ঘাড়ের ওপর পড়বে।
তারা বলবে, ‘চলো, ওঠো, আমরা ফিরে যাই নিজেদের দেশে,
    নিজেদের লোকের কাছে।
    শত্রুরা আমাদের পরাজিত করেছে
    সুতরাং আমাদের তো চলে যেতেই হবে।’
17 তাদের স্বদেশে ফিরে গিয়ে সৈন্যরা বলবে,
    ‘ফরৌণ শুধু মুখে বড় বড় কথা বলে।
    রাজার গৌরবের সময় ফুরিয়ে গেছে।’”
18 এ হল রাজার বাণী।
    রাজাই হলেন প্রভু সর্বশক্তিমান।
“আমি আছি এটা যেমন নিশ্চিত, আমি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি,
    এক ক্ষমতাশালী নেতা আসবে।
সে হবে সমুদ্রের সন্নিকটে স্থির ভাবে দাঁড়িয়ে থাকা তাবোর এবং কর্মিল পর্বতের মতো বিশাল।
19 মিশরের লোকরা, জিনিসপত্র গুছিয়ে নিয়ে নির্বাসনে যাবার জন্য প্রস্তুত হও।
    কারণ নোফে ও অন্যান্য শহরগুলি ধ্বংস হয়ে শূন্য মরুভূমিতে পরিণত হবে,
    কেউ সেখানে বাস করবে না।

20 “মিশর হল একটি রূপসী গাইয়ের মতো,
    কিন্তু তাকে বিরক্ত করতে উত্তর দিক থেকে ঘোড়া দংশক মাছি আসছে।
21 মিশর সেনাবাহিনীর ভাড়াটে সৈন্যরা হল তরুণী গাভীর মতো।
তারা কখনো শক্তিশালী আক্রমণের বিরুদ্ধে লড়তে পারবে না।
    তারা দৌড়ে পালাবে।
তাদেরও শেষ হবার সময় ঘনিয়ে আসছে।
    শীঘ্রই তারা শাস্তি পাবে।
22 মিশর শুধু সাপের মতো হিস্হিস্ শব্দ করে ফুঁসবে
    আর পালানোর চেষ্টা করবে।
শত্রুপক্ষ এমশঃ তার কাছে এগিয়ে আসবে।
    এবং মিশরের সৈন্যরা শুধু আপ্রাণ চেষ্টা করে যাবে কি করে পালিয়ে যাওয়া যায়।
শত্রুদল কুঠার নিয়ে মিশরকে আক্রমণ করবে।
    তারা যেন গাছ কেটে ফেলছে এমন লোকদের মত।”

23 প্রভু এই কথাগুলি বলেন,
“অরণ্যের গাছ কাটার মতো
    তারা মিশরের সৈন্যদের কেটে ফেলবে।
মিশরের সৈন্য সংখ্যা অসংখ্য হলেও তারা কেউ ছাড়া পাবে না।
    শত্রুপক্ষের সৈন্যরা হল পঙ্গপালের মতো অগুনতি।
24 মিশর লজ্জিত হবে।
    উত্তরের শত্রুপক্ষ তাকে পরাজিত করবে।”

25 প্রভু সর্বশক্তিমান, ইস্রায়েলের ঈশ্বর বলেন, “খুব শীঘ্রই আমি থীব্‌স্ দের দেবতা, অম্মোনকে শাস্তি দেব। এবং আমি ফরৌণকে, মিশরকে ও তার দেবতাদেরও শাস্তি দেব। ফরৌণের ওপর নির্ভরশীল লোকদেরও আমি শাস্তি দেব। 26 শত্রুপক্ষের কাছে আমি ঐ লোকদের পরাজিত করব। শত্রুসেনা তাদের হত্যা করতে চায়। আমি ঐ লোকদের বাবিলের রাজা নবূখদ্‌রিৎসর ও তার অনুচরদের হাতে তুলে দেব।

“অতীতে মিশরে শান্তি বিরাজ করতো। এবং এই সমস্ত সমস্যাগুলি কেটে যাবার পর মিশরে আবার শান্তি ফিরে আসবে।” প্রভু এই কথা বললেন।

উত্তর ইস্রায়েলের জন্য বার্তা

27 “যাকোব, আমার অনুচর, আমার সেবক, ভীত হয়ো না।
    ভয় পেও না ইস্রায়েল।
আমি তোমাকে ঐ সব দূর দেশের হাত থেকে রক্ষা করব।
    তোমার নির্বাসিত সন্তানদের আমি রক্ষা করব।
যাকোবে আবার নিরাপত্তা ও শান্তি ফিরে আসবে।
    কেউ আর তাকে ভয় দেখাতে পারবে না।”
28 প্রভু এই কথাগুলি বলেছিলেন,
“যাকোব আমার সেবক, ভয় পেও না।
    আমি তোমার সঙ্গে আছি।
আমি তোমাকে ভিন্ন জায়গায় পাঠিয়েছি
    কিন্তু তোমাকে পুরোপুরি ধ্বংস করিনি।
    অথচ আমি অন্যান্য দেশগুলোকে ধ্বংস করে দেব।
খারাপ কাজ করার ফলস্বরূপ তুমি আজ সাজা প্রাপ্ত।
আমি তোমাকে শাস্তি না দিয়ে ছেড়ে দিতে পারি না।
আমি তোমাকে শাস্তি দেব, কিন্তু আমি সেটি ন্যায়পরায়ণভাবে করব।”

গীতসংহিতা 22

পরিচালকের প্রতি: “ভোরের হরিণ” গানটির সুরে বসানো দায়ূদের একটি গীত।

22 হে আমার ঈশ্বর, হে আমার ঈশ্বর!
    কেন আপনি আমায় ছেড়ে চলে গেছেন?
আপনি এত দূরে যে, আমাকে রক্ষা করতে পারবেন না!
    আপনি এত দূরে যে, আমার সাহায্যের জন্য চিৎকারও শুনতে পাবেন না!
ঈশ্বর আমার, সারাদিন ধরে আমি আপনাকে ডেকেছি।
    কিন্তু আপনি সাড়া দেন নি।
সারারাত ধরে আমি আপনাকে ডেকেছি।

ঈশ্বর, আপনি হলেন সেই পবিত্র একজন।
    আপনি রাজার মত থেকে যান। ইস্রায়েলের প্রশংসাই আপনার সিংহাসন।
আমাদের পূর্বপুরুষরা আপনার ওপর বিশ্বাস করেছিলেন।
    হ্যাঁ, হে ঈশ্বর তাঁরা আপনার ওপর বিশ্বাস করেছিলেন এবং আপনি তাঁদের রক্ষা করেছেন।
ঈশ্বর, আমাদের পূর্বপুরুষরা আপনার কাছে সাহায্যের জন্য কেঁদে পড়েছিলেন
    এবং তাঁরা তাঁদের শত্রুর হাত থেকে রক্ষা পেয়েছিলেন।
    তাঁরা আপনার ওপর আস্থা রেখেছিলেন এবং তাই তাঁরা আশাহত হন নি!
সুতরাং, আমি কি কীট, মানুষ নই?
    লোকে আমার সম্পর্কে লজ্জা বোধ করে এবং আমাকে ঘৃণা করে।
প্রত্যেকে যারা আমাকে দেখে, আমায় নিয়ে ঠাট্টা করে।
    তারা তাদের মাথা নাড়ায় এবং আমায় জিভ ভেঙ্গায়।
তারা আমায় বলে: “প্রভুর কাছে সাহায্য চাও।
    হয়তো বা তিনি তোমার পরিত্রাণ করবেন।
    তিনি যদি সত্যিই তোমায় পছন্দ করেন, নিশ্চয়ই তিনি তোমায় উদ্ধার করবেন!”

হে ঈশ্বর, এটাই প্রকৃত সত্য যে, একমাত্র আপনার ওপরেই আমি নির্ভর করি।
    এমন কি আমি যখন আমার মায়ের বুকের দুধ খেতাম আপনি আমাকে আশ্বাস এবং স্বস্তি দিতেন।
10 যে দিন আমি জন্মেছি, সে দিন থেকেই আপনি আমার ঈশ্বর।
    মায়ের গর্ভ থেকে বেরিয়ে আসার পরেই আমি আপনার যত্নে লালিত হয়েছি।

11 তাই, হে আমার ঈশ্বর, আমাকে ছেড়ে যাবেন না!
    কারণ সংকট নিকটবর্ত্তী।
    আমাকে সাহায্য করার মত কেউই নেই।
12 আমার চারপাশে লোকজন রয়েছে, শক্তিশালী বলদের মত
    তারা আমার চারদিকে ঘিরে রয়েছে।
13 তাদের মুখগুলো একটা গর্জনকারী সিংহের মত হাঁ করে খোলা,
    যেন তার শিকারের দিকে সবেগে ছুটে যাচ্ছে।

14 মাটিতে ফেলে দেওয়া জলের মত আমার শক্তি চলে গেছে।
    আমার অস্থিগুলো আলাদা হয়ে গেছে।
    আমি আমার সাহস হারিয়ে ফেলেছি!
15 আমার শক্তি[a] ভাঙ্গা মৃত্‌ পাত্রের মতই শুকিয়ে গেছে।
    আমার জিভ তালুতে আটকে যাচ্ছে।
    আপনি আমাকে মৃত্যুর ধূলায় পৌঁছে দিয়েছেন।
16 আমার চারপাশে “কুকুর” ঘুরে বেড়াচ্ছে।
    সেই সব মন্দ লোকেদের দল আমাকে ফাঁদে ফেলেছে।
    সিংহের মত তারা আমার হাত ও পা বিদ্ধ করে দিয়েছে।
17 আমি আমার হাড়গুলো পর্যন্ত দেখতে পাচ্ছি।
    লোকজন আমার দিকে চেয়ে রয়েছে!
    তারা ক্রুর দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে আছে!
18 ঐ লোকগুলো ওদের মধ্যে আমার কাপড়গুলো ভাগাভাগি করে নিচ্ছে।
    তারা আমার কাপড়ের জন্য ঘুঁটি চালছে।

19 প্রভু, আমাকে ছেড়ে যাবেন না!
    আপনিই আমার শক্তি।
    শীঘ্রই আমাকে সাহায্য করুন!
20 প্রভু, শত্রুর তরবারি হতে আমায় রক্ষা করুন।
    ওই সব কুকুরদের হাত থেকে আমার মূল্যবান জীবন রক্ষা করুন।
21 আমাকে সিংহের মুখ থেকে রক্ষা করুন।
    বলদের শিং এর আঘাত থেকে আমায় রক্ষা করুন।

22 প্রভু, আপনার সম্পর্কে আমি আমার ভাইদের বলবো।
    মহাসমাজের সামনে আমি আপনার প্রশংসা করব।
23 তোমরা যারা প্রভুর উপাসনা কর, তারা প্রভুর প্রশংসা কর!
    হে ইস্রায়েলের উত্তরপুরুষগণ প্রভুর প্রতি সম্মান প্রদর্শন কর!
    হে ইস্রায়েলের মানুষ, প্রভুকে ভয় ও শ্রদ্ধা কর।
24 কেন? কারণ প্রভু দরিদ্র লোকদের তাদের সংকটে সাহায্য করেন।
    প্রভু তাদের জন্য লজ্জিত নন।
    যদি মানুষ তাঁর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করে
    তিনি তাদের কাছ থেকে লুকিয়ে থাকেন না।

25 প্রভু, মহাসমাজে আমার প্রশংসা আপনার কাছ থেকেই আসে।
    এইসব উপাসনাকারী ভক্তদের সামনে, আমার মানত করা বলি আমি আপনাকে উৎসর্গ করবো।
26 দরিদ্র লোকরা খেয়ে তৃপ্ত হবে।
    তোমরা যারা প্রভুকে খুঁজছ, তারা তাঁর প্রশংসা কর!
    তোমাদের অন্তঃকরণ চিরজীবি হউক!
27 তোমরা, সুদূর দেশগুলির জনগণ, প্রভুকে মনে রেখো
    এবং তাঁর কাছে ফিরে এস!
যে সব মানুষ বিদেশে থাকে তারাও যেন প্রভুরই উপাসনা করে।
28     কেন? কারণ প্রভুই রাজা।
    তিনি সব জাতিকে শাসন করেন।
29 বলিষ্ঠ এবং সুদেহী লোকেরা আহারান্তে ঈশ্বরের কাছে প্রণিপাত করবে।
    বস্তুতঃ সকলে যারা মারা যাবে
এবং যারা ইতিমধ্যেই মারা গেছে
    তারা সকলেই ঈশ্বরের কাছে অবনত হবে!
30 এবং ভবিষ্যতে আমাদের উত্তরপুরুষরা প্রভুর সেবা করবে।
    লোকে চিরদিন তাঁর কথা বলবে।
31 প্রত্যেকটি প্রজন্ম তাদের শিশুদের কাছে
    ঈশ্বর যে ভাল জিনিসগুলি করেছেন সে সম্পর্কে বলবে।

Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)

Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International