M’Cheyne Bible Reading Plan
হান্নার ধন্যবাদ জ্ঞাপন
2 হান্না বলল,
“প্রভুতেই আমার হৃদয় খুশী।
আমি আমার ঈশ্বরে শক্তিশালী!
তাই আমি আমার শত্রু দেখে হাসি।
আমি তোমার প্রদত্ত পরিত্রাণে খুবই আনন্দিত।
2 প্রভুর মত পবিত্র আর কোন ঈশ্বর নেই।
তুমি ছাড়া আর কোন ঈশ্বর নেই।
আমাদের ঈশ্বরের মত আর কোন শিলা নেই।
3 আর দম্ভ করো না।
গর্বের শব্দ যেন উচ্চারিত না হয়
কারণ প্রভু ঈশ্বর সবই জানেন।
ঈশ্বরই লোকদের চালনা ও বিচার করেন।
4 বলবান সৈন্যর ধনু ভেঙ্গে যায়
এবং দুর্বল লোক শক্তিশালী হয়।
5 অতীতে যাদের প্রচুর খাদ্য ছিল
এখন তাদের এক মুঠো খাদ্যের জন্য কঠিন সংগ্রাম করতে হবে।
কিন্তু অতীতে যারা ক্ষুধার্ত ছিল
তাদের এখন প্রচুর খাদ্য আছে।
যে নারী ছিল বন্ধ্যা তার
এখন সাতটি সন্তান।
কিন্তু যে নারীর বহু সন্তান ছিল এখন সে দুঃখী।
কারণ তার সন্তানরা চলে গেছে।
6 প্রভুই মারেন ও বাঁচান,
প্রভুই কবরে শায়িত করেন ও উর্দ্ধে তোলেন।
7 প্রভুই কাউকে গরীব করেন,
আবার কাউকে ধনে ভরে দেন।
কাউকে নম্র করেন,
আবার কাউকে সম্মান দেন।
8 প্রভু ধূলি থেকে দরিদ্রদের তোলেন
এবং তিনি দুঃখ হরণ করে নেন।
তিনি তাদের গুরুত্বপূর্ণ করে তোলেন
এবং তাদের রাজকুমারদের সঙ্গে বসান ও তাদের সম্মানীয় আসন দেন।
প্রভু হচ্ছেন সেই জন যিনি সমগ্র বিশ্ব সৃষ্টি করেছেন
এবং সমগ্র বিশ্ব যাঁর অধিকারভুক্ত।
9 প্রভু তাঁর পবিত্র লোকদের
হোঁচট খাওয়া থেকে রক্ষা করেন।
দুষ্ট লোকরা অন্ধকারে ধ্বংস হয়ে যাবে।
তাদের ক্ষমতা তাদের বিজয়ী করতে পারে না।
10 প্রভু তাঁর শত্রুদের ধ্বংস করেন।
তিনি তাদের বিরুদ্ধে স্বর্গে বজ্র নির্ঘোষ ঘটাবেন।
প্রভু দূরের দেশগুলিরও বিচার করবেন।
তিনি তাঁর রাজাকে ক্ষমতা দেবেন
এবং তাঁর অভিষিক্ত রাজাকে শক্তিশালী করবেন।”
11 ইল্কানা সপরিবারে তার নিজের দেশ রামায় ফিরে এলো। কিন্তু ছেলেটি শীলোয় থেকে গেল। সেখানে সে যাজক এলির তত্ত্বাবধানে প্রভুর সেবা করেছিল।
এলির দুষ্ট সন্তানগণ
12 এলির পুত্ররা ছিল খুব মন্দ, তারা প্রভুকে মানতো না। 13 এমনকি লোকদের সাথে যাজকদের কিরূপ আচার ব্যবহার করা উচিৎ সেই নিয়ে তারা বিন্দুমাত্র মাথা ঘামাতো না। যাজকদের এইসব কাজ করণীয় ছিল: লোক যখন কোন উৎসর্গ আনবে তখন যাজকদের সেই উৎসর্গের মাংস একটা গরম জলের পাত্রে রাখতে হবে। তারপর যাজকের ভৃত্য একটা বিশেষ ধরণের তিন মুখো কাঁটা চামচ আনবে। 14 যাজকের ভৃত্যকে সেই পাত্র থেকে কিছুটা মাংস তুলে নেবার জন্য কাঁটাটা ব্যবহার করতে হবে। সেই কাঁটায় যতটুকু মাংস উঠত যাজক শুধু সেই মাংসটুকুই পেত। যেসব ইস্রায়েলীয়রা শীলোতে বলি আনত তাদের সকলের প্রতি যাজকদের এই কাজটা করতে হত।
15 কিন্তু এলির পুত্ররা তা করত না। বেদীর ওপর চর্বির পোড়ানোর আগেই তাদের ভৃত্য ভক্তদের বলত, “যাজককে কিছু মাংস দাও, সেটা ঝলসানো হবে। সে সেদ্ধ মাংস নেবে না।”
16 যদি ভক্ত বলত, “আগে চর্বিটা পোড়াই, তারপর যা চাও দিচ্ছি।” তার উত্তরে ভৃত্য বলত, “না, এক্ষুনি মাংস দাও। না দিলে আমি তোমাদের কাছ থেকে কেড়ে নেবো!”
17 এভাবে হফ্নি ও পীনহস প্রভুর জন্য দেওয়া বলিকে অসম্মান করত। সন্দেহ নেই প্রভুর বিরুদ্ধে এটা ছিল খুবই মারাত্মক পাপ।
18 কিন্তু শমূয়েল প্রভুর সেবা করত। সেই তরুণ সহকারী, যাজকের বিশেষ ধরণের জামা এফোদ পরত। 19 প্রতি বছর শমূয়েলের মা একটা ছোট পোশাক তৈরী করত এবং সেটা তার জন্য শীলোয় নিয়ে যেত। সে স্বামীর সাথে সেখানে প্রতি বছর বলি দিতে যেত।
20 ইল্কানা আর তার স্ত্রীকে এলি আশীর্বাদ করে বলত, “প্রভু তোমাকে হান্নার মাধ্যমে আরও সন্তান দিক। এরাই হান্নার মানত করা ছেলের জায়গা নেবে।”
ইল্কানা তার স্ত্রীকে নিয়ে বাড়ী ফিরে গেল। 21 প্রভু হান্নার উপর সন্তুষ্ট হয়েছিলেন। হান্নার তিনটি ছেলে, দুটি মেয়ে হল। এদিকে শমূয়েল তো প্রভুর সেবা করতে করতেই পবিত্র স্থানে বড় হয়ে উঠছিল।
দুষ্ট সন্তানদের সামলাতে এলি ব্যর্থ হল
22 এলি বেশ বৃদ্ধ হয়ে গিয়েছিলো। শীলোতে সমস্ত ইস্রায়েলের সঙ্গে পুত্ররা কি করত সে সম্বন্ধে সে প্রায়ই শুনতে পেত। এলি এও শুনেছিল যে সমাগম তাঁবুর প্রবেশ দ্বারে যে সব স্ত্রী লোকরা সেবা করত তাদের সঙ্গে তার পুত্ররা শুয়ে রাত কাটাত।
23 এলি তার পুত্রদের বলল, “লোকরা তোমাদের সম্বন্ধে নানা কথা আমায় বলছে। কেন তোমরা এত বাজে কাজ করছ? 24 শোন বাছারা, এরকম অন্যায় কাজ কোরো না। প্রভুর লোকরা তোমাদের নিন্দে করছেন। 25 মানুষ যদি মানুষের কাছে পাপ করে ঈশ্বর তাকে ক্ষমা করতে পারেন, কিন্তু প্রভুর বিরুদ্ধে পাপ করলে কে তাকে রক্ষা করবে?”
কিন্তু পুত্ররা কেউ তাকে গ্রাহ্য করল না। তাই প্রভু তাদের শেষ করবেন বলে স্থির করলেন।
26 অন্যদিকে শমূয়েল বড় হতে লাগল। সে ঈশ্বর এবং লোকদের কাছে আনন্দদায়ক ছিল।
এলির পরিবার সম্পর্কে ভয়ঙ্কর ভবিষ্যৎবাণী
27 ঈশ্বর একজন লোককে এলির কাছে পাঠালেন। লোকটি এলিকে বলল, “প্রভু এই কথাগুলি বলেছেন, ‘তোমার পূর্বপুরুষরা ছিল ফরৌণ কুলের ক্রীতদাস কিন্তু তাদের কাছে আমি দেখা দিয়েছিলাম। 28 ইস্রায়েলের সমস্ত পরিবারগোষ্ঠীর ভেতর থেকে আমার যাজকসমূহ হবার জন্য আমি তোমার পরিবারকে নির্বাচিত করেছিলাম। আমার বেদীতে বলি উৎসর্গ দেবার জন্য তোমাদের মনোনীত করেছিলাম। তারাই ধূপ জ্বালাবে, তারাই পরবে এফোদ। আমি এই জন্যই তাদের নির্বাচন করেছিলাম। আমিই তোমাদের পরিবারগোষ্ঠীকে অধিকার দিয়েছি যেন তারাই ইস্রায়েলীয়দের দেওয়া বলির মাংস পায়। 29 তাহলে কেন তোমরা এইসব বলি এবং নৈবেদ্যকে সম্মান করবে না? তুমি আমার চেয়েও তোমার পুত্রদের বেশী সম্মান দিয়ে থাক। আমার লোক, ইস্রায়েলীয়রা আমাকে উৎসর্গীকৃত করবার জন্য যে মাংস নিয়ে আসে তার থেকে সব চেয়ে ভালো অংশগুলি খেয়ে তোমরা মোটা হয়ে যাচ্ছো।’
30 “ইস্রায়েলের প্রভু ঈশ্বর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে তোমার পিতার পরিবারের লোকরা তাঁকে চিরকাল সেবা করবে। কিন্তু আজ প্রভু এই কথা বলছেন, ‘না, তা আর কখনও হবে না। আমি তাদেরই সম্মান করব যারা আমাকে সম্মান করবে। আর যারা আমায় সম্মান করতে অস্বীকার করবে, তাদের অমঙ্গল হবে। 31 সেই সময় আসছে যেদিন আমি তোমাদের সমস্ত উত্তরপুরুষদের বিনাশ করব। তোমাদের ঘরে কেউই বৃদ্ধ বয়স পর্যন্ত বাঁচবে না। 32 ইস্রায়েলে ভাল জিনিস ঘটবে, কিন্তু খারাপ জিনিসগুলি তোমরা তোমাদের বাড়ীতে ঘটতে দেখবে। তোমার ঘরে কেউ বৃদ্ধ বয়স পর্যন্ত বাঁচবে না। 33 একজন মানুষকে আমি বাঁচাব। সেই আমার বেদীতে যাজকের কাজ করবে। সে দীর্ঘজীবী হবে। যতদিন পর্যন্ত তার দৃষ্টিশক্তি থাকবে, শরীরে শক্তি থাকবে ততদিন সে বেঁচে থাকবে। তোমার উত্তরপুরুষরা তরবারির কোপে মরবে। 34 আমি তোমাকে এমন একটি চিহ্ন দেখাব যাতে বুঝতে পারবে যে এইসব কথা সত্য। একই দিনে তোমার দুই পুত্র হফ্নি আর পীনহস মারা যাবে। 35 নিজের জন্য আমি একজন বিশ্বস্ত যাজক মনোনীত করব। সে আমার কথা শুনবে এবং আমি যা চাই তাই করবে। আমি তার পরিবারকে শক্তিশালী করব। আমার মনোনীত রাজার সামনে এই যাজক সর্বদা আমার সেবা করবে। 36 তারপর তোমার পরিবারের যারা বেঁচে থাকবে তারা এই যাজকের কাছে এসে মাথা নীচু করে দাঁড়াবে। তারা কয়েক টুকরো রূপো অথবা এক টুকরো রুটির জন্য ভিক্ষে চাইবে। তারা বলবে, “আমাকে দয়া করে একটা যাজকের কাজ দাও যাতে দু মুঠো খেতে পারি।”’”
তোমরা ইহুদীরাও পাপী
2 যদি মনে কর যে তুমি ঐ লোকদের বিচার করতে পার, তাহলে ভুল করছ, কারণ তুমিও দোষী। তুমি অপরের বিচার কর; কিন্তু তুমিও সেই একইরকম মন্দ কাজ কর। কাজেই তুমি যখন অন্যের বিচার কর তখন নিজেকেই দোষী সাব্যস্ত কর। 2 যারা মন্দ কাজ করে ঈশ্বর তাদের বিচার করেন; আর তাঁর বিচার ন্যায়সম্মত। 3 তুমি তাদের বিচার করে থাক; কিন্তু তুমি নিজেও তাদের মত সেই সব মন্দ কাজ কর। তাই এ কথা তুমি নিশ্চয়ই বুঝতে পারছ যে ঈশ্বর তোমার বিচার করবেন। তুমি তাঁর বিচার এড়াতে পারবে না। 4 ঈশ্বর তোমার প্রতি দয়া করেছেন ও সহিষ্ণু হয়েছেন। ঈশ্বর অপেক্ষা করছেন যেন তোমার পরিবর্তন হয়; কিন্তু তুমি তাঁর দয়াকে তুচ্ছ জ্ঞান করছ। তুমি হয়তো বুঝতে পারছ না যে তোমাদের প্রতি ঈশ্বরের এত দয়ার উদ্দেশ্য হল যাতে তোমরা পাপ থেকে মন-ফিরাও।
5 কিন্তু তুমি কঠিনমনা লোক ও অবাধ্য। তুমি পরিবর্তিত হতে চাও না, তাই তুমিই তোমার দণ্ডকে ঘোরতর করে তুলছ। ঈশ্বরের ক্রোধ প্রকাশের দিনে তুমি সেই দণ্ড পাবে, যে দিন লোকে ঈশ্বরের ন্যায়বিচার দেখতে পাবে।[a] 6 “ঈশ্বর প্রত্যেক মানুষকে তার কার্য অনুসারে ফল দেবেন।”(A) 7 যারা অবিরাম তাদের সৎ ক্রিয়া দ্বারা মহিমা, সম্মান এবং অমরত্বের অন্বেষণ করে, ঈশ্বর তাদের অনন্ত জীবনের অধিকারী করবেন। 8 কিন্তু যারা স্বার্থপর, সত্যের অবজ্ঞাকারী এবং মন্দ পথেই চলে, ঈশ্বর তাদের উপর তাঁর ক্রোধ ও শাস্তির প্রবাহ বইয়ে দেবেন। 9 যারা মন্দ কাজ করে তাদের প্রত্যেকের জীবনে ঈশ্বরের কাছ থেকে ক্লেশ ও পীড়া আসবে। প্রথমে ইহুদীদের ও পরে অইহুদীদের উপরে। 10 কিন্তু যারা সৎকাজ করে তাদের তিনি মহিমা, সম্মান ও শান্তি দেবেন, প্রথমে ইহুদীদের ও পরে অইহুদীদের। 11 ঈশ্বর সকল মানুষকে একইভাবে বিচার করেন।
12 যারা বিধি-ব্যবস্থা জানে আর যারা তা কখনই শোনে নি, পাপ করলে তারা সকলে একই পর্যায়ে পড়ে। বিধি-ব্যবস্থা না জেনে যত লোক পাপ করেছে, তারা সকলেই বিধি-ব্যবস্থা ছাড়াই বিনষ্ট হবে। একইভাবে যাদের কাছে বিধি-ব্যবস্থা আছে তবু পাপ করে, তাদের বিধি-ব্যবস্থা দ্বারাই বিচার হবে। 13 বিধি-ব্যবস্থার কথা শুধু শুনলে ঈশ্বরের সামনে ধার্মিক প্রতিপন্ন হওয়া যায় না বরং বিধি-ব্যবস্থা যা বলে তা সর্বদা পালন করলেই ঈশ্বরের কাছে ধার্মিক হওয়া যায়।
14 অইহুদীরা কোন বিধি-ব্যবস্থা পায় নি, অথচ তারা যখন স্বভাবতঃ বিধি-ব্যবস্থা অনুযায়ী কাজ করে তখন তারা নিজেরাই নিজেদের বিধি-ব্যবস্থা। যদিও তাদের অধিকারে কোন বিধি-ব্যবস্থা নেই তবুও এটাই সত্য। 15 তারা দেখায় যে, বিধি-ব্যবস্থার নির্দেশ কোনটা ভাল, কোনটা মন্দ, তা তারা তাদের হৃদয় দিয়েই জানে। তাদের বিবেকও এ ব্যাপারে সাক্ষ্য দেয়। অনেক সময় তাদের চিন্তাধারাই ব্যক্ত করে যে তারা অন্যায় কাজ করছে আর তাতে তারা দোষী হয়। কোন কোন সময় তাদের চিন্তাধারা ব্যক্ত করে যে তারা ঠিকই করছে, আর তাই তারা দোষী হয় না।
16 এসব তখনই ঘটবে যখন ঈশ্বর, যীশু খ্রীষ্টের মাধ্যমে মানুষের সকল গুপ্ত বিষয়ের বিচার করবেন। যে সুসমাচার আমি লোকদের কাছে প্রচার করি তা এই কথাই বলছে।
ইহুদীরা এবং বিধি-ব্যবস্থা
17 তোমার অবস্থা কেমন? তুমি নিজেকে ইহুদী বলে পরিচয় দাও এবং বিধি-ব্যবস্থার উপর নির্ভর কর ও গর্ব কর যে তুমি ঈশ্বরের কাছাকাছি রয়েছ। 18 তুমি জান যে ঈশ্বর তোমার কাছ থেকে কোন্ কাজ আশা করেন; আর কোন্টা গুরুত্বপূর্ণ তাও তুমি জান, কারণ তুমি বিধি-ব্যবস্থা শিক্ষা করেছ। 19 যারা ঠিক পথ চেনে না তুমি মনে কর এমন লোকদের তুমি একজন পথ প্রদর্শক। তুমি মনে কর যারা অন্ধকারে আছে তুমি তাদের কাছে জ্যোতিস্বরূপ। 20 তুমি মনে কর যে, যাদের মৌলিক শিক্ষার প্রয়োজন তুমি তাদের শিক্ষক হতে পার। তোমার কাছে বিধি-ব্যবস্থা আছে তাই তুমি মনে কর যে তুমি সবই জান ও সব সত্য তোমার কাছেই রয়েছে। 21 তুমি অপরকে শিক্ষা দিয়ে থাক; কিন্তু তুমি কি নিজেকেও শিক্ষা দাও? চুরি করো না বলে তুমি অপরকে শিক্ষা দাও। কিন্তু তুমি নিজে চুরি কর। 22 তুমি বল লোকে যেন যৌন পাপে লিপ্ত না হয়; কিন্তু তুমি নিজে সেই পাপে পাপী। তুমি প্রতিমা ঘৃণা কর কিন্তু মন্দির থেকে চুরি কর। 23 তুমি ঈশ্বরের বিধি-ব্যবস্থা নিয়ে গর্ব কর আবার সেই একই বিধি-ব্যবস্থা লঙ্ঘন করে ঈশ্বরেরই অবমাননা কর। 24 শাস্ত্রে যেমন লেখা আছে: “ইহুদীরা, তোমাদের জন্যই অইহুদীরা ঈশ্বরের নিন্দা করে।”(B)
25 সুন্নতের মূল্য আছে যদি তুমি বিধি-ব্যবস্থা মান; কিন্তু যদি বিধি-ব্যবস্থা লঙ্ঘন কর তাহলে তা সুন্নত না হওয়ার সমান। 26 অইহুদীরা সুন্নত করায় না; কিন্তু সুন্নত ছাড়াই যদি তারা বিধি-ব্যবস্থার নির্দেশ মেনে চলে তাহলে কি তারা সুন্নতের মতই হবে না? 27 ইহুদীরা, তোমাদের লিখিত বিধি-ব্যবস্থা ও সুন্নত প্রথা আছে; কিন্তু তোমরা বিধি-ব্যবস্থা লঙ্ঘন কর। তাই যাদের দৈহিকভাবে সুন্নত হয়নি অথচ বিধি-ব্যবস্থা মেনে চলে, তারা দেখিয়ে দেবে যে তোমরা ইহুদীরা দোষী।
28 বাহ্যিকভাবে ইহুদী হলেই প্রকৃত ইহুদী হওয়া যায় না, এবং পূর্ণ অর্থে বাহ্যিক সুন্নত প্রকৃত সুন্নত নয়। 29 যে অন্তরে ইহুদী সেই প্রকৃত ইহুদী। প্রকৃত সুন্নত সম্পন্ন হয় অন্তরে; বিধি-ব্যবস্থায় লিখিত অক্ষরের মাধ্যমে তা হয় না কিন্তু অন্তরে আত্মা দ্বারা সাধিত হয়। আত্মার দ্বারা যে ব্যক্তির হৃদয়ের সুন্নত হয় সে মানুষের প্রশংসা নয়, ঈশ্বরের প্রশংসা পায়।
যিরমিয় মুক্তি পেল
40 এটি হল প্রভুর একটি বার্তা যেটি যিরমিয়র কাছে এসেছিল যখন প্রধাণ দেহরক্ষী নবুষরদন তাকে রামা শহর থেকে বিতাড়িত করেছিল। এটা ঘটেছিল যখন নবূষরদন যিরমিয়কে শেকলে বাঁধা অবস্থায় জেরুশালেম এবং যিহূদা থেকে আসা অন্যান্য বন্দীদের সঙ্গে পেয়েছিল যাদের পরে বাবিলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। 2 নবূষরদন যিরমিয়কে খুঁজে পাওয়ার পর বলেছিল, “যিরমিয়, প্রভু, তোমার ঈশ্বর ঘোষণা করেছিলেন যে এই বিপর্যয় এই স্থানের ওপর আসবে। 3 এবং এখন তিনি যে ভাবে যেটা হবে বলেছিলেন সেই ভাবে প্রতিটি জিনিষ করলেন। যিহূদার লোকরা ঈশ্বরের ইচ্ছার বিরুদ্ধে বহু পাপ কাজ সংগঠিত করেছিল বলেই এই বিপর্যয় ঘটেছিল। তারা প্রভুকে অমান্য করেছিল। 4 যিরমিয় এখন তোমাকে আমি মুক্ত করে দিচ্ছি। আমি তোমার হাতকড়া খুলে দিচ্ছি। তুমি যদি আমার সঙ্গে বাবিলে আসতে চাও আসতে পারো। আমি তোমার সব রকম খেয়াল রাখব। আর যদি না যেতে চাও এসো না। এটা কোন ব্যাপার নয়। তোমার জন্য সব রাস্তা খোলা। যেখানে খুশি তুমি যেতে পারো। 5 অথবা তুমি গিয়ে শাফনের পৌত্র অহীকামের পুত্র গদলিয়র সঙ্গে থাকতে পারো। বাবিলের রাজা গদলিয়কে যিহূদার রাজ্যপাল হিসেবে নিযুক্ত করেছেন। সুতরাং যিহূদার লোকদের কাছেও ফিরে যেতে পার, গদলিয়র সঙ্গেও থাকতে পারো অথবা যেখানে খুশী তুমি যাও।”
এরপর নবূষরদন যিরমিয়কে কিছু খাবার এবং একটি উপহার দিয়ে মুক্ত করে দিয়েছিল। 6 সুতরাং যিরমিয় মিস্পাতে গিয়েছিল অহীকামের পুত্র গদলিয়র কাছে। যিহূদায় পড়ে থাকা লোকগুলো সহ যিরমিয় গদলিয়র সঙ্গে বাস করেছিল।
গদলিয়র সংক্ষিপ্ত শাসন
7 জেরুশালেম যখন ধ্বংস হয়েছিল তখন যিহূদার কিছু সেনা আধিকারিক এবং তাদের সৈন্যরা খোলা দেশটিতে রয়ে গিয়েছিল। তারা শুনলো যে বাবিলের রাজা অহীকামের পুত্র গদলিয়কে, যারা খুব গরীব ছিল এবং যাদের বন্দী হিসেবে বাবিলে নিয়ে যাওয়া হয়নি সেই সব পুরুষ, স্ত্রীলোক এবং শিশুদের রাজ্যপাল হিসেবে নিযুক্ত করেছেন। যিহূদার গরীব লোকদের বাবিলের সৈন্যরা বন্দী করে নিয়ে না গিয়ে নবূষরদনের নির্দেশে সেখানেই জমি-জমা দিয়ে তাদের প্রতিষ্ঠিত হবার সুযোগ দিয়েছিল। 8 সুতরাং যিহূদার সৈন্যরা মিস্পাতে এসে গদলিয়র সঙ্গে দেখা করতে সুযোগ দিয়েছিল। সৈন্যদের মধ্যে ছিল: নথনিয়ের পুত্র ইশ্মায়েল, কারেহের দুই পুত্র যোহানন ও যোনাথন, তন্হূমতের পুত্র সরায়, নটোফা থেকে এফ-এর পুত্ররা এবং মাখাথীয়ের পুত্র যাসনিয় এবং তাদের লোকরা।
9 গদলিয় ঐ সৈন্যদের নিরাপত্তা দেবার জন্য একটি শপথ নিয়ে বলেছিল: “সৈন্যগণ তোমাদের কোন ভয় নেই। তোমরা এখানে থেকে যাও, বসতি স্থাপন করো এবং বাবিলের রাজার সেবা কর। বাবিলেই তোমরা গিয়ে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করো। তোমাদের তাতে মঙ্গল হবে। 10 আমি স্বয়ং মিস্পাতে থাকব। আমি তোমাদের হয়ে কল্দীয় অধিবাসীদের কাছে বলব। ওটা তোমরা আমার ওপর ছেড়ে দাও। কিন্তু তোমাদের দ্রাক্ষা থেকে দ্রাক্ষারস তৈরী করতে হবে। গ্রীষ্মকালীন ফলের এবং তৈলবীজের চাষ করবে। চাষের ফসল মজুত করে রাখবে। তোমরা যে সমস্ত শহরের দায়িত্ব নিয়েছ সেখানেই থেকো।”
11 যিহূদার যে সব মানুষ মোয়াব, অম্মোন, ইদোম এবং অন্যান্য দেশে চলে গিয়েছিল তারা শুনতে পেলো যে বাবিলের রাজা যিহূদার কিছু গরীব লোককে বন্দী করে না নিয়ে গিয়ে যিহূদাতেই বাস করতে দিয়েছে এবং তারা জানতে পারল যে সে গদলিয়কে সেই লোকদের রাজ্যপাল নির্বাচিত করেছে। 12 যিহূদার লোকরা যখন এই খবর পেলো তখন তারা এই সমস্ত দেশগুলি থেকে যিহূদায় ফিরে এসেছিল। তারা ফিরে এসেছিল গদলিয়র কাছে মিস্পাতে, বসতি স্থাপন করেছিল, প্রচুর পরিমাণে দ্রাক্ষারস তৈরী করেছিল এবং গ্রীষ্মকালীন ফলের ফসল সংগ্রহ করেছিল।
13 কারেহের পুত্র যোহানন এবং যিহূদার সৈন্যদের আধিকারিকরা মিস্পাতে গদলিয়র কাছে আবার এসেছিল। 14 তারা গদলিয়কে বলেছিল, “আপনি কি জানেন যে, অম্মোনের লোকদের রাজা বালীস নথনিয়ের পুত্র ইশ্মায়েলকে পাঠিয়েছে আপনাকে হত্যা করার জন্য?” কিন্তু অহীকামের পুত্র গদলিয় তাদের কথা বিশ্বাস করেনি।
15 তখন যোহানন ব্যক্তিগত ভাবে কথা বলেছিল গদলিয়র সঙ্গে মিস্পাতে। যোহানন বলেছিল, আমরা আপনাকে হত্যা করতে দেব না। “আপনি যদি আমায় অনুমতি দেন, আমি ইশ্মায়েলকে হত্যা করব এবং ফিরে আসব। কেউ এ সম্বন্ধে জানতে পারবে না। ইশ্মায়েল এর হাতে আপনাকে হত্যা হতে দেওয়া আমাদের উচিৎ নয়। আমরা আপনাকে হারাতে চাই না কারণ আপনি যদি নিহত হন তাহলে যিহূদার লোক আবার বিভিন্ন দেশগুলিতে ছড়িয়ে পড়বে। এবং ফলস্বরূপ, যিহূদার পড়ে থাকা লোকগুলো প্রাণ হারাবে।”
16 কিন্তু গদলিয় যোহাননকে বলেছিল, “না ইশ্মায়েলকে হত্যা করো না। তোমরা ইশ্মায়েল সম্বন্ধে যা বলছো তা সত্যি নয়।”
দায়ূদের একটি গীত।
15 প্রভু, কে আপনার পবিত্র তাঁবুতে থাকতে পারে?
কে আপনার পবিত্র পর্বতে থাকতে পারে?
2 একমাত্র তারাই পারে যারা পবিত্রভাবে জীবনযাপন করে, সৎ কাজ করে,
এবং তাদের অন্তর থেকে সত্য কথা বলে,
তারাই আপনার পবিত্র পর্বতে বাস করতে পারে।
3 এই ধরণের লোক, অন্যান্য মানুষ সম্পর্কে খারাপ কথা বলে না।
তারা তাদের প্রতিবেশীদের আঘাত করবার জন্য কোন কাজ করে না।
তারা তাদের খুব কাছের মানুষ সম্পর্কে লজ্জাজনক কিছু বলে না।
4 ঈশ্বরকে যারা খুশী করে না, তারা তাদের সম্মান করে না।
কিন্তু যারা প্রভুর সেবা করে, তারা তাদের সম্মান প্রদর্শন করে।
যদি তারা প্রতিবেশীর কাছে কোন প্রতিশ্রুতি করে,
তবে তারা তাদের প্রতিশ্রুতি পালন করে।
5 যদি তারা কাউকে টাকা ধার দেয়,
তারা সেই ঋণের জন্য সুদ চায় না।
এমনকি, কেউ যদি তাদের নির্দোষ লোকের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেবার জন্য টাকা দিতে চায়
তবু তারা সে কাজ করতে অস্বীকার করে।
যে কেউ এইভাবে জীবনযাপন করে, সে সর্বদাই ঈশ্বরের কাছে থাকবে।[a]
দায়ূদের একটি মিকতাম।
16 হে ঈশ্বর, আমায় রক্ষা করুন।
কারণ আমি আপনার ওপর নির্ভর করি।
2 আমি প্রভুকে বলেছিলাম,
“প্রভু, আপনিই আমার সদাপ্রভু।
যা কিছু ভালো জিনিস এখন আমার আছে তা আপনার কাছ থেকেই এসেছে।”
3 পৃথিবীতে তাঁর অনুচরদের জন্য প্রভু বিস্ময়কর কাজ করেন।
প্রভু দেখিয়ে দেন যে প্রকৃতই তিনি ঐসব লোকেদের ভালোবাসেন।
4 কিন্তু যারা অন্যান্য দেবতার পূজা করতে ছুটে যায় তারা অনেক যন্ত্রণায় পড়বে।
যে রক্ত তারা ঐসব দেবমূর্ত্তিতে উৎসর্গ করে, আমি সেই উৎসর্গের সামিল হব না।
এমনকি আমি ঐসব দেবমূর্ত্তির নামও উচ্চারণ করবো না।
5 না, আমার ভাগের অংশ, আমার পানপাত্র প্রভুর কাছ থেকে আসে।
প্রভু আপনি আমায় সহায়তা দিয়েছেন।
আপনি আমায় আমার অংশ দিয়েছেন।
6 আমার অংশটুকু অবশ্যই চমৎকার।
আমার উত্তরাধিকার সত্যিই সুন্দর।
7 আমি প্রভুর প্রশংসা করি, কারণ তিনি আমায় উত্তমরূপে শিক্ষাদান করেছেন।
এমনকি নিশাকালে, তাঁর নির্দেশসমূহ তিনি আমার অন্তরের গভীরে রেখে যান।
8 আমি সর্বদাই প্রভুকে আমার সামনে রাখি।
আমি কখনই তাঁর দক্ষিণ পাশ ছেড়ে যাবো না।
9 তাই, আমার হৃদয় এবং আত্মা অত্যন্ত খুশী হবে।
আমার দেহও নিরাপদে বেঁচে থাকবে।
10 কেন? কারণ হে প্রভু পাতালে আপনি আমার আত্মা ছেড়ে চলে যাবেন না।
আপনার বিশ্বস্ত জনকে আপনি কবরে পচতে দেবেন না।
11 আপনি আমাকে বাঁচার প্রকৃত পথ সম্পর্কে শিক্ষা প্রদান করবেন।
হে প্রভু, শুধুমাত্র আপনার সঙ্গে থাকলেই জীবনের চরম শান্তি লাভ হবে।
আপনার ডানদিকে থাকতে পারলেই চিরন্তন সুখ আসবে।
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International