M’Cheyne Bible Reading Plan
বিন্যামীনদের পত্নী সংগ্রহের প্রস্তুতি
21 মিস্পায় ইস্রায়েলীয়রা প্রতিজ্ঞা করল: “বিন্যামীন পরিবারগোষ্ঠীর ঘরে আমরা কেউ আমাদের মেয়েদের বিবাহ দেব না।”
2 ইস্রায়েলীয়রা বৈথেল শহরে গেল। সেখানে সন্ধ্যা পর্যন্ত তারা ঈশ্বরের কাছে বসে রইল। আকুল হয়ে কেঁদে কেঁদে তারা বলল, “হে প্রভু, ইস্রায়েলবাসীদের তুমিই ঈশ্বর। 3 তাহলে এমন বিপদ হল কেন? কেন ইস্রায়েলীয়দের একটা পরিবারগোষ্ঠীকে পাওয়া যাচ্ছে না?”
4 পরদিন ভোরে ইস্রায়েলীয়রা একটা বেদী তৈরী করল। সেই বেদীতে তারা ঈশ্বরের কাছে হোমবলি ও মঙ্গল নৈবেদ্য উৎসর্গ করল। 5 তারপর ইস্রায়েলীয় লোকরা বলল, “ইস্রায়েলীয়দের মধ্যে এমন কোন পরিবার কি আছে যারা প্রভুর সামনে আমাদের এই প্রার্থনায় আসে নি?” এরকম জিজ্ঞাসার কারণ হচ্ছে তারা বেশ সাংঘাতিক ধরণের একটা প্রতিজ্ঞা করেছিল। তাদের প্রতিজ্ঞা ছিল অন্যান্য পরিবারগোষ্ঠীর সঙ্গে যদি কেউ মিস্পা শহরে যোগ না দেয় তবে তাকে হত্যা করা হবে।
6 ইস্রায়েলীয়রা তাদের আত্মীয় বিন্যামীনদের জন্য দুঃখ বোধ করল। তারা বলল, “আজ ইস্রায়েল থেকে একটি পরিবারগোষ্ঠী পৃথক করা হয়েছে। 7 আমরা প্রভুর কাছে একটি শপথ করেছি, কোন বিন্যামীন পুরুষের সঙ্গে আমরা আমাদের মেয়েদের বিবাহ দেব না। কি করে আমরা নিশ্চিত জানব যে বিন্যামীনদের বিয়ে হচ্ছে?”
8 ইস্রায়েলীয়রা জানতে চাইল, “ইস্রায়েলীয়দের কোন পরিবারগোষ্ঠী এখানে এই মিস্পায় আসে নি? আমরা এখানে প্রভুর সামনে সমবেত হয়েছি। নিশ্চয়ই একটা পরিবার এখানে আসে নি।” তারা দেখল, যাবেশ-গিলিয়দ থেকে কেউই সেখানে আসে নি। 9 ইস্রায়েলীয়রা গুনে দেখল কে কে এসেছে আর কে কে আসে নি। দেখল যাবেশ গিলিয়দ থেকে কেউই সেখানে আসে নি। 10 তারা যাবেশ গিলিয়দে 12,000 সৈন্য পাঠাল। সৈন্যদের তারা বলে দিল, “যাবেশ গিলিয়দে গিয়ে সেখানকার প্রতিটি লোককে তরবারি দিয়ে হত্যা করবে। মেয়েদের আর বাচ্চাদের তোমরা ছেড়ে দেবে না। 11 এ কাজ তোমাদের করতেই হবে। যাবেশ গিলিয়দের প্রত্যেককে তোমরা হত্যা করবে, তাছাড়া যে সব মেয়েদের কারো না কারো সাথে যৌন সম্পর্ক আছে তাদেরও হত্যা করবে। তবে যে সব মেয়ের কোন পুরুষের সঙ্গে এমন সম্পর্ক হয় নি তাদের হত্যা করবে না।” সৈন্যরা তাই করল। 12 ঐ 12,000 সৈন্য যাবেশ গিলিয়দে 400 জন এমন মেয়ের দেখা পেল যারা কোন পুরুষের সঙ্গে এরকম সম্পর্ক স্থাপন করে নি। সৈন্যরা তাদের শীলোর শিবিরে নিয়ে এলো। শীলো কনানদের দেশে অবস্থিত।
13 তারপর ইস্রায়েলীয়রা বিন্যামীন লোকদের কাছে খবর পাঠাল। তারা বিন্যামীনের লোকদের সঙ্গে শান্তি চুক্তি করতে চাইল। বিন্যামীনের লোকরা ছিল রিম্মোণ শিলায়। 14 বিন্যামীনরা তাই শুনে ইস্রায়েলে ফিলে এল। ইস্রায়েলীয়রা তাদের কাছে যাবেশ গিলিয়দের সেই সব মেয়ে দিল যাদের তারা মারে নি। কিন্তু বিন্যামীনদের সংখ্যার তুলনায় মেয়েদের সংখ্যা বেশ কম ছিল।
15 ইস্রায়েলীয়রা বিন্যামীনদের জন্য দুঃখ করল। তাদের দুঃখের কারণ ঈশ্বর বিন্যামীনদের অন্যান্য ইস্রায়েল পরিবারগোষ্ঠী থেকে আলাদা করে দিয়েছেন। 16 ইস্রায়েলীয়দের প্রবীণরা বলল, “বিন্যামীন পরিবারগোষ্ঠীর মেয়েদের সব হত্যা করা হয়েছে। সুতরাং যে সব বিন্যামীন সন্তান বেঁচে আছে তাদের জন্য কিভাবে পত্নীর ব্যবস্থা করা যায়? 17 যেসব বিন্যামীন সন্তান এখনও বেঁচে রয়েছে তাদের বংশ রক্ষা করার জন্য সন্তান-সন্ততির অবশ্য প্রয়োজন। এটা করতেই হবে, নাহলে ইস্রায়েলীয়দের একটা পরিবারগোষ্ঠী তো একেবারে লোপ পেয়ে যাবে। 18 কিন্তু আমাদের মেয়েদের সঙ্গে তো বিন্যামীন সন্তানদের বিয়ে হতে পারে না। আমরা এই নিয়ে প্রতিশ্রুতি নিয়েছি। আমরা প্রতিশ্রুতি নিয়েছি যে, ‘বিন্যামীনদের ঘরে যে মেয়ে দেবে সে শাপগ্রস্ত হবে।’ 19 তাই আমরা একটা পরিকল্পনা করেছি। শীলো শহরে প্রভুর জন্য এই সময় একটা উৎসব হয়। প্রতি বছরই সেখানে উৎসব পালিত হয়।” (শীলো হচ্ছে বৈথেলের উত্তরে, আর বৈথেল থেকে শিখিমের দিকে যে রাস্তা চলে গেছে তার পূর্বদিকে। তাছাড়া লবোনা শহরের দক্ষিণেও শীলো শহরটা পড়বে।)
20 প্রবীণরা তাদের পরিকল্পনাটি বিন্যামীন সন্তানদের বলল। তারা বলল, “যাও, দ্রাক্ষাক্ষেতে গিয়ে লুকিয়ে পড়। 21 উৎসবের সময় শীলোর যুবতীরা কখন নাচতে আসবে সেদিকে খেয়াল করবে। তারপর যখনই তারা আসবে তখন দ্রাক্ষা ক্ষেতের লুকানো জায়গা থেকে তোমরা বেরিয়ে আসবে। প্রত্যেকেই একটি করে যুবতী ধরে নেবে। তারপর ওদের নিয়ে বিন্যামীনদের দেশে গিয়ে বিয়ে করবে। 22 এবং যদি মেয়েদের পিতা কিংবা ভাইরা আমাদের কাছে নালিশ জানায়, তখন আমরা বলব, ‘বিন্যামীনদের ওপর তোমরা সদয় হও। তারা ঐ মেয়েদের বিয়ে করুক। তারা তোমাদের মেয়েদের নিয়েছে, তোমাদের সঙ্গে যুদ্ধ করে নি। তারা মেয়েদের গ্রহণ করেছে। সুতরাং ঈশ্বরের কাছে তোমরা যে প্রতিশ্রুতি করেছিলে তা ভঙ্গ করো নি। তোমরা প্রতিশ্রুতি করেছিলে যে ঐ মেয়েদের সঙ্গে ছেলেদের বিয়ে দেবে না। বিন্যামীনদের তোমরা মেয়ে দাও নি। বরং তারাই তোমাদের কাছ থেকে মেয়েদের নিয়ে গেছে। সুতরাং তোমরা প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ কর নি।’”
23 এইভাবেই বিন্যামীন পরিবারগোষ্ঠীরা কাজ করল। যুবতীরা যখন নাচছিল, প্রত্যেক পুরুষ তাদের একজন করে নিয়ে নিল। তাদের তুলে নিয়ে তারা বিয়ে করল। নিজেদের দেশে তারা ফিরে গেল। বিন্যামীনরা আবার সেই দেশে শহরগুলি গড়ল এবং সেই শহরগুলিতে বসবাস করতে লাগল। 24 তারপর ইস্রায়েলীয়রা ঘরে ফিরে গেল। তারা প্রত্যেকে নিজের নিজের দেশে ও পরিবারগোষ্ঠীর কাছে ফিরে গেল।
25 সেই সময় ইস্রায়েলীয়দের কোন রাজা ছিল না। তাই যে যা ঠিক মনে করত তাই করত।
পৌল কৈসরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চাইলেন
25 ফীষ্ট সেই প্রদেশে এলেন, এর তিনদিন পর তিনি কৈসরিয়া থেকে জেরুশালেমে গেলেন। 2 সেখানে প্রধান যাজকরা ও ইহুদী সমাজপতিরা তাঁর কাছে এসে পৌলের বিরুদ্ধে তাদের অভিযোগ জানাল। 3 ফীষ্টের কাছে তারা এই আবেদন জানাল যেন তিনি পৌলকে জেরুশালেমে পাঠাবার ব্যবস্থা করেন। তারা এই অনুগ্রহ দেখানোর অনুরোধ করেছিল কারণ তারা পথেই পৌলকে হত্যা করার পরিকল্পনা করেছিল। 4 কিন্তু ফীষ্ট বললেন, “না, পৌল কৈসরিয়ায় বন্দী হয়ে আছে এবং আমি শীঘ্রই কৈসরিয়ায় যাব। 5 তাই তোমাদের মধ্যে যারা ক্ষমতায় আছে, তারা আমার সঙ্গে সেখানে চলুক। এই লোকটি যদি কিছু ভুল করে থাকে তবে তা সেখানেই পেশ করুক।”
6 ফীষ্ট জেরুশালেমে প্রায় আট দশদিন থাকার পর কৈসরিয়ায় চলে গেলেন। পরের দিন তিনি বিচারালয়ে নিজের আসনে বসে পৌলকে সেখানে হাজির করতে হুকুম করলেন। 7 পৌল সেখানে এলে জেরুশালেম থেকে যেসব ইহুদীরা এসেছিল তারা চারপাশে ঘিরে দাঁড়িয়ে তাঁর বিরুদ্ধে এমন সব জঘন্য অপরাধের কথা বলতে লাগল, যার কোন প্রমাণ তারা নিজেরাই দিতে পারল না। 8 পৌল আত্মপক্ষ সমর্থন করে বললেন, “আমি ইহুদীদের বিধি-ব্যবস্থা বা মন্দির কিংবা কৈসরের বিরুদ্ধে কোন অপরাধ করি নি।”
9 কিন্তু ইহুদীদের কাছে সুনাম পাবার আশায় ফীষ্ট পৌলকে বললেন, “তুমি কি জেরুশালেমে গিয়ে সেখানে আমার সামনে এসব বিষয়ে তোমার বিচার হয় তা চাও?”
10 পৌল বললেন, “আমি কৈসরের বিচারালয়ে দাঁড়িয়ে আছি, এখানেই আমার বিচার হওয়া উচিত। আমি ইহুদীদের বিরুদ্ধে কিছুই করি নি, একথা আপনি ভালোভাবেই জানেন। 11 আমি যদি কোন অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হই ও মৃত্যুদণ্ড পাবার যোগ্য হই, তবে আমি মৃত্যু থেকে রক্ষা পাবার জন্য বলব না। কিন্তু এরা আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ করছে, এসব যদি সত্য না হয় তবে এদের হাতে কেউ আমাকে তুলে দিতে পারবে না, কারণ আমি কৈসরের কাছে আপীল করছি!”
12 তখন ফীষ্ট তাঁর পরামর্শদাতাদের সঙ্গে কথা বললেন, পরে ফীষ্ট পৌলকে বললেন, “তুমি কৈসরের কাছে আপীল করেছ, তোমাকে কৈসরের কাছে পাঠানো হবে।”
ফীষ্ট দ্বারা রাজা আগ্রিপ্পাকে পৌল সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ
13 এর কিছু দিন পর রাজা আগ্রিপ্প ও বর্ণীকী কৈসরিয়ায় এসে ফীষ্টের সঙ্গে দেখা করলেন। 14 তাঁরা সেখানে বেশ কিছু দিন থাকলেন। রাজার কাছে ফীষ্ট পৌলের বিষয় এইভাবে বললেন, “ফীলিক্স কোন একজন লোককে এখানে বন্দী করে রেখেছেন। 15 আমি যখন জেরুশালেমে ছিলাম, সেই সময় ইহুদীদের প্রধান যাজকরা ও সমাজপতিরা তার বিরুদ্ধে আবেদন করে বিচার ও শাস্তি চেয়েছিল। 16 আমি তাদের বলেছিলাম যে, যার নামে অভিযোগ দায়ের করা হচ্ছে, সে যতক্ষণ পর্যন্ত না অভিযোগকারীদের সামনে আত্মপক্ষ সমর্থন করতে পাচ্ছে, ততক্ষণ কোন লোককে তাদের হাতে তুলে দেওয়া রোমানদের নিয়ম নয়।
17 “আর তারা আমার সঙ্গে এখানে এলে, আমি আর দেরী না করে, পরদিনই সেই বন্দীকে বিচারের জন্য আমার বিচারালয়ে আনাই। 18 যখন তারা দাঁড়িয়ে তাকে দোষী সাব্যস্ত করতে গেল তখন তাঁর বিরুদ্ধে যে রকম দোষের কথা আমি অনুমান করেছিলাম, তার অভিযোগকারীরা সেই রকম কোন দোষই দেখাতে পারল না। 19 তার সাথে তাদের ধর্ম সম্বন্ধে এবং যীশু নামে এক ব্যক্তি যিনি মারা গিয়েছিলেন কিন্তু যাকে পৌল জীবিত বলে প্রচার করত সে সম্বন্ধে কিছু মতপার্থক্য ছিল। 20 আমি বুঝে উঠতে পারলাম না যে এই ধরণের প্রশ্নগুলির উত্তর কিভাবে অনুসন্ধান করা হবে, তাই তাকে জিজ্ঞেস করলাম, ‘তুমি কি জেরুশালেমে গিয়ে সেখানে এই বিষয়ের বিচার হোক্ তাই চাও?’ 21 কিন্তু পৌল কৈসরের কাছে বিচার চেয়ে কারাগারে থাকার জন্য আপীল করায়, যতদিন না আমি তাকে কৈসরের কাছে পাঠাতে পারছি ততদিন কারাগারে রাখার নির্দেশ দিয়েছি।”
22 আগ্রিপ্প বললেন, “হ্যাঁ, আমিও নিজে তার কথা শুনতে চেয়েছিলাম।”
ফীষ্ট বললেন, “বেশ, কালই শুনবেন।”
23 পরদিন রাজা আগ্রিপ্প ও বর্নীকী খুব জাঁকজমকের সাথে এসে সভা ঘরে ঢুকলেন, তাঁদের সঙ্গে সেনাপতিরা ও শহরের গন্যমান্য লোকরাও ছিলেন। ফীষ্টের হুকুমে পৌলকে সেখানে নিয়ে আসা হল।
24 তখন ফীষ্ট বললেন, “রাজা আগ্রিপ্প ও আমাদের সঙ্গে যাঁরা উপস্থিত আছেন তাঁরা এই লোককে দেখছেন, যার বিরুদ্ধে এখানকার ও জেরুশালেমের সমস্ত ইহুদী সমাজ আমার কাছে চিৎকার করছে যে এই লোকের আর বেঁচে থাকা উচিৎ নয়। 25 কিন্তু এর মৃত্যুদণ্ডের যোগ্য কোন অপরাধই আমি পাই নি। এ যখন নিজে সম্রাটের কাছে আপীল করেছে, তখন আমি সেখানে একে পাঠাব বলে স্থির করেছি। 26 কিন্তু সম্রাটের কাছে এর বিষয়ে নির্দিষ্ট করে কি বলব তা জানি না। সেইজন্য আমি আপনাদের সামনে, বিশেষ করে রাজা আগ্রিপ্পর সামনে একে হাজির করেছি যাতে একে জিজ্ঞাসাবাদ করার পর আমি কিছু পাই যে সম্বন্ধে লিখতে পারি। 27 কারণ বন্দীকে পাঠাবার সময় তার বিরুদ্ধে অভিযোগের বিবরণ না দেওয়া আমি যুক্তিযুক্ত বলে মনে করি না।”
রেখবীয় পরিবারের ভাল উদাহরণ
35 যিহূদার রাজা যখন যিহোয়াকীম তখন যিরমিয়র কাছে প্রভুর বার্তা এলো। যিহোয়াকীম ছিলেন যোসিয়ের পুত্র। এই হল প্রভুর বার্তা: 2 “যিরমিয়, যাও রেখবীয় পরিবারকে মন্দিরের পাশের ঘরগুলির কোন একটি ঘরে আসবার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়ে এসো। তাদের দ্রাক্ষারস পানের প্রস্তাব দাও।”
3 সুতরাং আমি (যিরমিয়) যাসিনিয়ের কাছে গিয়েছিলাম। যাসিনিয় ছিল যিরমিয়[a] নামক এক ব্যক্তির পুত্র এবং হবৎসিনিয়ের পৌত্র। আমি যাসিনিয়র অন্য ভাইদের এবং তার সব ছেলেদের রেখবীয় পরিবারের সকল সদস্যদের পেয়েছিলাম। 4 তারপর আমি রেখবীয় পরিবারকে প্রভুর মন্দিরে নিয়ে এলাম। আমরা হাননের পুত্রের ঘরে গেলাম। হানন ছিল ঈশ্বরের প্রিয় মানুষ। তার পিতার নাম ছিল যিগ্দলিয়। পাশের ঘরে থাকতেন যিহূদার যুবরাজগণ। নীচের ঘরে থাকতো শল্লুমের পুত্র মাসেয়। মাসেয় ছিল মন্দিরের প্রহরী। 5 তখন আমি (যিরমিয়) রেখবীয় পরিবারের আমন্ত্রিত সদস্যদের সামনে দ্রাক্ষারসের পাত্র রেখে বললাম, “সামান্য দ্রাক্ষারস পান করুন।”
6 কিন্তু তারা উত্তর দিল, “আমরা কখনও দ্রাক্ষারস পান করি না, কারণ আমাদের পূর্বপুরুষ রেখবীয় পুত্র যিহোনাদব আমাদের এই নির্দেশ দিয়েছিলেন: ‘তোমরা এবং তোমাদের উত্তরপুরুষ কেউ কখনো দ্রাক্ষারস পান করবে না। 7 তোমরা ঘরবাড়ি তৈরী করবে না, ফসল বুনবে না, দ্রাক্ষার চাষ করবে না। তোমরা কেবল তাঁবুতে থাকবে। তোমরা যদি এগুলি মেনে চলো তাহলে তোমরা যাযাবরের মতো স্থান পরিবর্তন করে দীর্ঘদিন জীবিত থাকবে।’ 8 তাই আমরা রেখবীয় পরিবারের সদস্যরা আমাদের পূর্বপুরুষ যিহোনাদবের নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলি। আমরা কেউ দ্রাক্ষারস পান করি না। আমাদের স্ত্রী, ছেলেমেয়ে কেউ দ্রাক্ষারস পান করে না। 9 আমরা কখনও বাস করার জন্য বাড়ি তৈরী করি না। দ্রাক্ষার চাষ করি না, ফসল ফলানোর জন্য বীজ বুনি না। 10 আমরা আমাদের পূর্বপুরুষ যিহোনাদবের নির্দেশ পালন করেছি এবং আমরা তাঁবুতেই বসবাস করেছি। 11 কিন্তু যখন নবূখদ্রিৎসর, বাবিলের রাজা যিহূদা আক্রমণ করেছিল, আমরা বলেছিলাম, ‘বাবিলীয় এবং আর্মেনীয় সৈন্যদের হাত থেকে রক্ষা পাবার জন্য আমাদের জেরুশালেম শহরে যাওয়া যাক।’ তাই আমরা জেরুশালেমে পালিয়ে গিয়েছিলাম এবং তারপর থেকে ওখানেই থেকেছি।”
12 তখন প্রভুর বার্তা এলো যিরমিয়র কাছে। 13 প্রভু সর্বশক্তিমান ইস্রায়েলের ঈশ্বর বললেন: “যিরমিয় যাও। যিহূদা ও জেরুশালেমের লোকদের গিয়ে বলো: তোমাদের শিক্ষা হওয়া উচিৎ এবং তোমরা আমার বার্তা পালন করবে।” 14 “রেখব তার উত্তরপুরুষদের নির্দেশ দিয়েছিল দ্রাক্ষারস পান না করতে। এবং সেই নির্দেশ আজও রেখবীয় পরিবারের সদস্যরা পালন করে আসছে। কিন্তু আমি প্রভু এবং আমি যিহূদার লোকরা, তোমাদের বারবার বার্তা পাঠানো সত্ত্বেও তোমরা আমাকে অগ্রাহ্য করেছ এবং অমান্য করেছ। 15 যিহূদা ও ইস্রায়েলের লোকদের কাছে বারবার আমার অনুচর এবং ভাববাদীদের পাঠিয়েছি। তারা তোমাদের বলেছে: ‘অসৎ হওয়া বন্ধ করো। ভালো কাজ কর। অন্য দেবতাদের অনুসরণ করো না ও তাদের সেবা করো না। তোমরা যদি আমাকে মেনে চলতে তাহলে তোমরা এই দেশে বসবাস করতে পারতে, যে দেশ তোমাদের পূর্বপুরুষকে আমি দিয়েছিলাম।’ কিন্তু তোমরা আমার বার্তাকে পাত্তাই দিলে না। 16 যিহোনাদবের নির্দেশ তার উত্তরপুরুষরা মেনে চলেছিল কিন্তু যিহূদার লোকরা আমাকে মান্য করেনি।”
17 “তাই প্রভু সর্বশক্তিমান, ইস্রায়েলের ঈশ্বর বললেন: ‘আমি বলেছিলাম যিহূদা ও জেরুশালেমে লোকেদের ওপর বহু মারাত্মক ঘটনা ঘটবে। শীঘ্রই আমি সেগুলি ঘটাবো কারণ আমি ওই লোকদের সঙ্গে কথা বলেছিলাম কিন্তু তারা আমার কথা শুনতে অস্বীকার করেছিল। আমি তাদের চিৎকার করে ডেকেছিলাম কিন্তু তারা সাড়া দেয়নি।’”
18 যিরমিয়, রেখবীয় পরিবারকে বলেছিল, “সর্বশক্তিমান প্রভু ইস্রায়েলের ঈশ্বর বলেছেন: ‘তোমরা তোমাদের পূর্বপুরুষ যিহোনাদবের সব নির্দেশ মেনে চলেছো। তোমরা যিহোনাদবের শিক্ষাকেই অনুসরণ করে গিয়েছো।’ 19 তাই সর্বশক্তিমান প্রভু ইস্রায়েলের ঈশ্বর বলেছেন সেখানে সর্বদাই রেখবের পুত্র যিহোনাদবের উত্তরপুরুষদের কোন একজন আমাকে সেবা করবার জন্য আমার সামনে থাকবে।”
প্রভুর উদ্দেশ্যে দায়ূদের একটি গীত। এই গানটি বিন্যামীন পরিবারগোষ্ঠীর কূশের পুত্র শৌল সম্পর্কিত।
7 প্রভু, আমার ঈশ্বর, আমি আপনার ওপর নির্ভর করি। যারা আমায় তাড়া করছে তাদের হাত থেকে আপনি আমায় রক্ষা করুন। আমায় উদ্ধার করুন!
2 যদি আপনি আমায় সাহায্য না করেন, আমি সিংহের হাতে ধরা পড়া পশুর মত অসহায় হয়ে পড়ব।
তারা আমাকে টেনে নিয়ে যাবে।
আমাকে রক্ষা করার কেউ থাকবে না!
3 প্রভু আমার ঈশ্বর, আমি কোন অন্যায় করি নি।
আমি শপথ করে বলছি আমি কোন অন্যায় করিনি!
4-6 প্রভু আমার ঈশ্বর, যদি আমার বাক্য কোন মন্দ কাজ করে থাকে
এবং যদি আমি আমার বন্ধুর প্রতি কোন অন্যায় কাজ করে থাকি
এবং যদি কোন কারণ ছাড়াই শত্রুর কাছ থেকে কোন জিনিস নিয়ে থাকি বা আক্রমণ করে থাকি
তাহলে আমার শত্রুরা যেন আমাকে খুঁজে ধরে ফেলে
এবং আমাকে হত্যা করে আমার জীবন ধূলোয় মিশিয়ে দেয়
এবং আমার আত্মাকে পাতালে পাঠিয়ে দেয়।
7 প্রভু, লোকদের বিচার করুন।
সকল জাতিদের আপনার সঙ্গে সঙ্ঘবদ্ধ করুন।
8 এবং লোকদের বিচার করুন।
হে প্রভু, আমারও বিচার করুন।
প্রমাণ করুন আমি সত্য পথে আছি।
প্রমাণ করুন আমি নিষ্পাপ।
9 মন্দ লোকদের শাস্তি দিন,
সৎ লোকদের সাহায্য করুন।
হে ঈশ্বর, আপনিই মঙ্গলময়।
আপনি লোকের হৃদয়ের ভেতরে কি আছে তা দেখতে পান।
10 যাদের হৃদয় সৎ তাদের ঈশ্বর সাহায্য করেন।
তাই ঈশ্বর আমাকে রক্ষা করবেন।
11 ঈশ্বর একজন সুবিচারক।
সব সময় তিনি মন্দের বিরুদ্ধে বলেন।
12 ঈশ্বর তাঁর আক্রমণ থামাবেন না।
তিনি তাঁর আক্রমণ থেকে পিছু হঠবেন না।[a]
তিনি তাঁর ধনুকে টান দিয়েছেন
এবং শত্রুদের প্রতি তাঁর লক্ষ্য স্থির রেখেছেন।
13 তিনি মারণাস্ত্র তৈরী করে রেখেছেন এবং তাঁর তীরগুলো ধারালো করেছেন।
14 কিছু লোক সর্বদাই মন্দ ফন্দি আঁটে।
তারা গোপনে ফন্দি করে
এবং মিথ্যা কথা বলে।
15 তারা অন্য লোকদের ফাঁদে ফেলতে চায় এবং আঘাত করতে চায়।
কিন্তু নিজেদের ফাঁদে পড়েই ওরা আহত হবে।
16 যা শাস্তি ওদের প্রাপ্য ওরা সেই শাস্তিই পাবে।
অপরের প্রতি ওরা নির্দয় ছিল।
ওদের যা প্রাপ্য ওরা তাই পাবে।
17 আমি প্রভুর প্রশংসা করি, কারণ তিনি ভালো।
আমি পরাৎপর প্রভুর নামের প্রশংসা করি।
পরিচালকের প্রতি: গিত্তীৎ সহযোগে দায়ূদের একটি গীত।
8 হে প্রভু, আমাদের সদাপ্রভু, সারা পৃথিবীতে আপনার নামই সব থেকে মহিমান্বিত!
আপনার নাম স্বর্গলোক জুড়ে আপনার প্রশংসা এনে দেয়।
2 শিশু ও দুগ্ধপোষ্যদের মুখ থেকে আপনার প্রশংসা গীত বেরিয়ে আসে।
আপনার শত্রুদের নীরব করে দেওয়ার জন্য আপনি ওদের মুখে এইসব শক্তিশালী গান দিয়েছেন।
3 আপনি নিজের হাত দিয়ে যে স্বর্গ সৃষ্টি করেছেন তার দিকে চেয়ে দেখি।
আপনার সৃষ্টি করা চাঁদ এবং তারা দেখি এবং আমি বিস্মিত হই।
4 “লোকরা আপনার কাছে এত গুরুত্বপূর্ণ কেন?
কেন আপনি তাদের কথা স্মরণ করেন?
কেন লোকরা আপনার কাছে এত গুরুত্বপূর্ণ?
আপনি তাদের দিকে তাকিয়েই বা দেখেন কেন?”
5 কিন্তু মানুষ আপনার কাছে গুরুত্বপূর্ণ!
আপনি মানুষকে প্রায় দেবতার মত করেই বানিয়েছেন।
এবং গৌরব ও সম্মান দিয়ে আপনি মানুষকে মহিমান্বিত করেছেন।
6 আপনি যা যা সৃষ্টি করেছেন তার দায়িত্ব আপনি মানুষের হাতেই দিয়েছেন।
সব কিছুই আপনি মানুষের নিয়ন্ত্রণে রেখেছেন।
7 মেষ, গবাদিপশু সহ অন্যান্য বন্য জন্তুদের ওপরে মানুষ কর্ত্তৃত্ব করেছে।
8 আকাশের পাখী
ও জলের মাছের ওপর কর্ত্তৃত্ব করেছে।
9 হে প্রভু, আমাদের সদাপ্রভু, সমগ্র বিশ্বে আপনার নামই সব থেকে মহিমান্বিত।
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International