M’Cheyne Bible Reading Plan
ইস্রায়েলের সঙ্গে বিন্যামীনের যুদ্ধ
20 সুতরাং ইস্রায়েলের সমস্ত লোকরা একত্র হল। তাদের উদ্দেশ্য হল মিস্পা শহরে প্রভুর সামনে দাঁড়ানো। তারা দান থেকে বের-শেবা পর্যন্ত ইস্রায়েলের সব জায়গা থেকেই এসেছিল। এমনকি ইস্রায়েলীয়রা গিলিয়দ শহর থেকেও এসেছিল। 2 ইস্রায়েল পরিবারগোষ্ঠীর সমস্ত প্রধানরা উপস্থিত ছিল। ঈশ্বরের ভক্তদের প্রকাশ্য জনসভায় তারা উপস্থিত ছিল। সেখানে 400,000 সৈন্য তরবারি হাতে সামিল হয়েছিল। 3 বিন্যামীন পরিবারগোষ্ঠীর লোকরা জানতে পারল ইস্রায়েলীয়রা মিস্পায় সব জড়ো হয়েছে। ইস্রায়েলীয়রা বলল, “কি করে এমন জঘন্য ঘটনা ঘটল আমাদের সব বল।”
4 নিহত মেয়েটির স্বামী কি হয়েছিল সব বলল। সে বলল, “আমার দাসীকে নিয়ে আমি বিন্যামীনদের গিবিয়া শহরে এসেছিলাম। সেখানে আমরা রাত কাটিয়েছিলাম। 5 রাতের বেলা গিবিয়া শহরের প্রধানরা আমি যে বাড়িতে ছিলাম সেখানে এল। তারা বাড়িটাকে ঘিরে ফেলে আমাকে হত্যা করতে চেয়েছিল। তারা আমার দাসীকে ধর্ষণ করেছিল। তাতে সে মারা গেল। 6 তারপর আমি আমার দাসীর দেহটাকে টুকরো টুকরো করলাম এবং ইস্রায়েল পরিবারগোষ্ঠীর প্রত্যেককে একটা করে টুকরো পাঠিয়ে দিলাম। যে সমস্ত প্রদেশ আমরা পেয়েছিলাম সেই সব জায়গাতেই আমার দাসীর 12টি দেহ খণ্ড পাঠিয়ে দিয়েছিলাম। পাঠিয়েছিলাম এই জন্যই, যে দেখাতে চেয়েছিলাম বিন্যামীনদের লোকরা ইস্রায়েলে এরকম কদর্য কাজ করেছে। 7 এখন তোমরা ইস্রায়েলীয়রা বলো আমাদের কি করা উচিৎ। এ বিষয়ে তোমাদের মতামত কি বলো।”
8 তখন সকলে একসঙ্গে দাঁড়িয়ে উঠে বলল, “আমরা কেউ বাড়ি যাব না। না, আমাদের মধ্যে একজনও বাড়ি ফিরে যাবে না। 9 এখন আমরা গিবিয়া শহরের প্রতি কি করব তা বলছি। আমরা ঘুঁটি চেলে জেনে নেব ঈশ্বর ঐ লোকদের জন্য আমাদের দিয়ে কি করাতে চান। 10 আমরা ইস্রায়েলের সমস্ত পরিবারগোষ্ঠী থেকে প্রতি 100 জনের মধ্যে 10 জন করে লোক বেছে নেব। এইভাবে প্রতি 1000 জনে 100 জন আর 10,000 জনে 1000 জন লোক বেছে নেব। এই বাছাই করা লোকরা সৈন্যদের যা যা দরকার সব পাবে। তারপরে তারা বিন্যামীন এলাকার গিবিয়া শহরে পৌঁছাবে। সেখানে যারা ইস্রায়েলীয়দের মধ্যে জঘন্য কাজ করেছিল ওরা তাদের শাস্তি দেবে।”
11 ইস্রায়েলের সমস্ত লোক গিবিয়া শহরে জড়ো হল। কি কি করবে সে বিষয়ে তারা সকলেই আগে একমত হয়ে ঠিক করে নিয়েছিল। 12 ইস্রায়েল পরিবারগোষ্ঠীর সমস্ত লোকরা বিন্যামীন পরিবারগোষ্ঠীর কাছে দূতের মাধ্যমে খবর পাঠিয়েছিল। খবরটা হচ্ছে: “তোমাদের মধ্যে কিছু লোক যে কদর্য কাজ করেছে সে বিষয়ে তোমাদের বক্তব্য কি? 13 তোমরা ঐ গিবিয়ার মন্দ লোকদের আমাদের কাছে পাঠিয়ে দাও। আমরা তাদের ধ্বংস করব। ইস্রায়েলীয়দের মধ্যে যত মন্দ আছে সব আমরা দূর করব।”
কিন্তু বিন্যামীন পরিবারগোষ্ঠীর লোকরা দূতদের কথায় কান দিল না। বার্তাবাহকেরা ছিল সম্পর্কে তাদেরই আত্মীয়। তারাও ছিল ইস্রায়েলীয়। 14 বিন্যামীন পরিবারগোষ্ঠীর লোকরা তাদের শহরগুলি ছেড়ে গিবিয়ায় চলে গেল। তারা ইস্রায়েলের অন্য পরিবারগোষ্ঠীর সঙ্গে যুদ্ধ করবে বলে গিবিয়ায় গেল। 15 বিন্যামীন পরিবারগোষ্ঠীর লোকরা মোট 26,000 জন সৈন্য পেল। যুদ্ধের জন্য বেশ দক্ষ সৈন্য তারা। তাছাড়া গিবিয়া থেকে পেল আরো 700 জন দক্ষ সৈন্য। 16 এছাড়াও তারা আরো 700 জন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সৈন্য পেয়েছিল। তারা ছিল সব বাঁ-হাতি সৈন্য। এমনকি তারা একটা চুল লক্ষ্য করে অব্যর্থভাবে পাথর ছুঁড়তে পারত এবং লক্ষ্যভ্রষ্ট হত না।
17 ইস্রায়েলের সমস্ত পরিবারগোষ্ঠী বিন্যামীনদের বাদ দিয়ে সংগ্রহ করল মোট 400,000 যোদ্ধা। তাদের সকলের হাতে তরবারি। সকলেই যুদ্ধ বিদ্যায় সুশিক্ষিত। 18 ইস্রায়েলীয়রা বৈথেল শহরে গিয়ে ঈশ্বরকে জিজ্ঞাসা করল, “কোন পরিবারগোষ্ঠী সবচেয়ে আগে বিন্যামীনদের আক্রমণ করবে?”
প্রভু বললেন, “যিহূদার পরিবারগোষ্ঠী প্রথমে যাবে।”
19 পরদিন সকালে ইস্রায়েলবাসীরা ঘুম থেকে উঠল। গিবিয়ার কাছে তারা তাঁবু গাড়ল। 20 তারপর ইস্রায়েলের সৈন্যবাহিনী বিন্যামীন সৈন্যবাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধ করার জন্য বেরিয়ে পড়লো। গিবিয়াতে ইস্রায়েল সেনাবাহিনী বিন্যামীন সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত ছিল। 21 গিবিয়া থেকে বিন্যামীনবাহিনী বার হয়ে এলো। সেদিন তারা ইস্রায়েলবাহিনীর 22,000 সৈন্যকে হত্যা করল।
22-23 ইস্রায়েলবাসীরা প্রভুর কাছে গেল। সন্ধ্যা পর্যন্ত তারা ক্রন্দন করল। প্রভুকে তারা জিজ্ঞাসা করল, “আমরা কি আবার বিন্যামীনদের সঙ্গে যুদ্ধ করব? ওরা তো আমাদের আত্মীয়স্বজন।”
প্রভু উত্তর দিলেন, “যাও, তাদের সঙ্গে যুদ্ধ কর।” ইস্রায়েলের লোকরা এ ওকে উৎসাহ দিতে লাগল। তারপর প্রথম দিনের মতো এবারও তারা যুদ্ধ করতে বেরিয়ে পড়ল।
24 এবার ইস্রায়েল বাহিনী বিন্যামীন বাহিনীর কাছাকাছি এসে পড়ল। এটা ছিল যুদ্ধের দ্বিতীয় দিন। 25 বিন্যামীন বাহিনী গিবিয়া থেকে বেরিয়ে এসে দ্বিতীয় দিনে ইস্রায়েল বাহিনীকে আক্রমণ করল। এবারে বিন্যামীন সৈন্যরা আরও 18,000 ইস্রায়েল সৈন্যকে হত্যা করল। এইসব ইস্রায়েলীয় সৈন্য ছিল প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত।
26 তখন সমস্ত ইস্রায়েলবাসীরা বৈথেল শহরে গেল। সেখানে তারা সবাই বসে পড়ে প্রভুর সামনে কাঁদতে লাগল। সারাদিন তারা কিছু খেল না। এইভাবে সন্ধ্যা পর্যন্ত কেটে গেল। তারা প্রভুকে হোমবলি ও মঙ্গল নৈবেদ্য উৎসর্গ করল। 27 ইস্রায়েলের লোকরা প্রভুকে একটা প্রশ্ন করল। (সেকালে ঈশ্বরের সাক্ষ্যসিন্দুক ছিল বৈথেলে। 28 পীনহস নামে একজন যাজক সেখানে ঈশ্বরের সেবা করত। পীনহস ইলিয়াসরের পুত্র। ইলিয়াসর হারোণের পুত্র।) ইস্রায়েলবাসীরা জিজ্ঞাসা করল, “বিন্যামীনের লোকরা আমাদের আত্মীয়। আমরা কি আবার তাদের সঙ্গে যুদ্ধ করব? নাকি যুদ্ধ থামিয়ে দেব?”
প্রভু বললেন, “যাও। আগামীকাল তাদের পরাজিত করতে আমি তোমাদের সাহায্য করব।”
29 তারপর ইস্রায়েলবাহিনী গিবিয়ার সবদিকে কিছু লোককে লুকিয়ে রাখলো। 30 ইস্রায়েল সৈন্যদল তৃতীয় দিন গিবিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করতে গেল। আগের মতো এবারেও তারা যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত। 31 বিন্যামীন সৈন্যবাহিনী গিবিয়া থেকে বেরিয়ে এল ইস্রায়েলীয়দের সঙ্গে যুদ্ধ করতে। ইস্রায়েলবাহিনী তাদের বাধা না দিয়ে সুযোগ দিতে থাকল যেন তারা ওদের পিছু পিছু তাড়া করে। এইভাবে তারা কৌশল করে বিন্যামীনদের শহর থেকে অনেক খানি দূরে বার করে আনল।
বিন্যামীন সৈন্যরা আগের মত এবারও কিছু ইস্রায়েল সৈন্য হত্যা করতে শুরু করল। তারা প্রায় 30 জন ইস্রায়েলীয়কে হত্যা করল। কয়েকজনকে হত্যা করল মাঠে আর কয়েকজনকে হত্যা করল রাস্তায়। একটা রাস্তা গেছে বৈথেলের দিকে। আর একটা গিবিয়ার দিকে। 32 বিন্যামীন সৈন্যরা বলে উঠল, “আগের মত এবারও আমরা জিতছি!”
ইস্রায়েলের লোকরা পালাচ্ছিল, কিন্তু এটা তাদের একটা চালাকি। তারা আসলে ওদের শহর থেকে বার করে রাস্তায় আনতে চাইছিল। 33 সেইমত সকলেই দৌড়াচ্ছিল। তারা বাল্তামর নামে একটা জায়গায় থামল। ইস্রায়েলের কয়েকজন লোক গিবিয়ার পশ্চিম দিকে লুকিয়ে ছিল। এবার তারা বেরিয়ে এসে গিবিয়া আক্রমণ করল। 34 সুশিক্ষিত 10,000 ইস্রায়েলীয় সৈন্য গিবিয়া আক্রমণ করল। জোর লড়াই হল কিন্তু বিন্যামীন সৈন্যরা বুঝতে পারল না তাদের কি হতে চলেছে।
35 প্রভু ইস্রায়েল সৈন্যবাহিনীকে ব্যবহার করে বিন্যামীন সৈন্যদের পরাজিত করলেন। সেদিন ইস্রায়েলের সৈন্যরা 25,100 জন বিন্যামীন সৈন্য হত্যা করেছিল। এই সৈন্যরা সকলেই যুদ্ধবিদ্যায় শিক্ষিত ছিল। 36 এইবার বিন্যামীনরা বুঝতে পারল যে তারা হেরে গেছে।
ইস্রায়েলীয় সৈন্যরা এবার পিছু হটলো। পিছু হটার কারণ হচ্ছে তারা এবার হঠাৎ আক্রমণ করার কৌশল নিয়েছে। গিবিয়ার কাছাকাছি একটা জায়গায় তারা লুকিয়ে রইল। 37 তারপর, যারা লুকিয়ে ছিল তারা গিবিয়া শহরে ঝাঁপিয়ে পড়লো। সেখানে তারা সবদিকে ছড়িয়ে গেল আর শহরে প্রত্যেককে তাদের তরবারি দিয়ে হত্যা করল। 38 আত্মগোপনকারীদের সঙ্গে ইস্রায়েলীয়রা একটা মতলব এঁটেছিল। লুকিয়ে থাকা লোকরা একটি বিশেষ ধরণের সংকেত পাঠাবে। তারা তৈরী করবে ধোঁয়ার মেঘ।
39-41 বিন্যামীন সৈন্যরা কমবেশী 30জন ইস্রায়েল সেনা হত্যা করেছিল। এতেই তারা বলতে লাগল, “আমরা আগের বারের মতো এবারও জিতছি।” কিন্তু তখনই শহর থেকে ধোঁয়ার মেঘ উঠতে লাগলো। বিন্যামীনের লোকরা সেদিকে ঘাড় ফিরিয়ে দেখলো সমস্ত শহরে আগুন লেগেছে। এবার ইস্রায়েলীয়রা আর পেছন ফিরল না, তারা ঘুরে দাঁড়িয়ে যুদ্ধ করতে লাগল। বিন্যামীনের লোকরা ভয় পেয়ে গেল। এবার তারা বুঝতে পারলো, কি তাদের অবস্থা।
42 বিন্যামীনের সৈন্যবাহিনী এবার পালাতে লাগলো। মরুভূমির দিকে তারা ছুটলো, কিন্তু তারা যুদ্ধ এড়াতে পারল না। ইস্রায়েলীয়রা শহর থেকে বেরিয়ে এসে তাদের হত্যা করল। 43 ইস্রায়েলীয়রা বিন্যামীনের লোকদের ঘেরাও করে তাদের তাড়িয়ে নিয়ে গেল। তারা তাদের বিশ্রাম নিতে দিল না। গিবিয়ার পূর্ব দিকে ইস্রায়েলীয়রা তাদের হারিয়ে দিল। 44 এই যুদ্ধে 18,000 সাহসী ও শক্তিশালী বিন্যামীন সৈন্য নিহত হল।
45 অবশিষ্ট সৈন্যরা মরুভূমির দিকে ছুটতে লাগলো এবং তারা পৌঁছোল রিম্মোণ শিলা নামক জায়গায়। কিন্তু তাদের মধ্যে 5000 জন বিন্যামীন সৈন্য ইস্রায়েলীয়দের হাতে রাস্তাতেই মারা গেল। তারা ওদের গিদোম পর্যন্ত তাড়া করেছিল। সেখানে ইস্রায়েল সৈন্যবাহিনী আরও 2000 বিন্যামীনের লোকদের হত্যা করল।
46 সেদিন 25,000 বিন্যামীন সৈন্য নিহত হল। তারা সকলেই তরবারি নিয়ে বীরের মতো লড়াই করেছিল। 47 অপরদিকে, 600 জন বিন্যামীনের লোক মরুভূমির দিকে গেল। রিম্মোণ শিলাতে গিয়ে তারা সেখানে চার মাস থেকে গেল। 48 ইস্রায়েলীয়রা বিন্যামীনদের দেশে ফিরে এল। প্রত্যেক শহরে গিয়ে তারা লোকদের হত্যা করল। জন্তু জানোয়ারদেরও তারা রেহাই দিল না। সামনে যা খুঁজে পেল সব তারা ভেঙ্গে চুরে দিল। যত শহর পেল তার সমস্তই তারা জ্বালিয়ে দিল।
পৌলের বিরুদ্ধে ইহুদীদের অভিযোগ
24 পাঁচদিন পর মহাযাজক অননিয় ইহুদী সমাজের কয়েকজন বৃদ্ধ নেতা ও উকিল তর্তুল্লকে সঙ্গে নিয়ে সেখানে গেলেন; আর তারা পৌলের বিরুদ্ধে রাজ্যপালের কাছে অভিযোগ দায়ের করলেন। 2-3 পৌলকে ডেকে পাঠানো হল, তখন ফীলিক্সের সামনে তর্তুল্ল সওয়াল শুরু করলেন, “মহামান্য ফীলিক্স! আপনার জন্যই আমরা মহাশান্তিতে আছি; আপনার দূরদৃষ্টির জন্য এই জাতির অনেক সংস্কার সাধন হয়েছে। একথা আমরা সকলে সর্বত্র সম্পূর্ণ কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্বীকার করছি। 4 কিন্তু বেশী কথা বলে আমি আপনার মূল্যবান সময় নষ্ট করতে চাই না। এইজন্য আপনাকে অনুরোধ করছি, আপনি অনুগ্রহ করে আমাদের এই সামান্য আবেদন শুনুন। দয়া করে ধৈর্য্য ধরুন। 5 কারণ আমরা দেখছি, ঐ লোকটাই হচ্ছে যত নষ্টের মূল। জগতে যেখানে যত ইহুদী আছে এ তাদের মধ্যে গণ্ডগোল পাকাচ্ছে, এ নাসরতীয় দলের একজন নেতা। 6-8 আর এ আমাদের মন্দিরও অশুচি করতে চেয়েছিল, তাই আমরা একে ধরে এনেছি।[a] আমরা কি বিষয়ে এর ওপর দোষারোপ করছি তা আপনি নিজে একে জিজ্ঞেস করলেই সব জানতে পারবেন।” 9 সমবেত ইহুদীরাও এতে সায় দিয়ে বলল, “এ সবই সত্য।”
ফীলিক্সের সামনে পৌল আত্ম প্রতিরোধ করলেন
10 রাজ্যপাল যখন পৌলকে বলার জন্য ইশারা করলেন, তখন পৌল বলতে শুরু করলেন, “রাজ্যপাল ফীলিক্স, আপনি অনেক বছর ধরে এই জাতির বিচার করছেন জেনে আমি আনন্দের সঙ্গে আত্মপক্ষ সমর্থন করছি। 11 আপনি অনুসন্ধান করলে দেখবেন, আজ বারো দিনের বেশী হয় নি আমি উপাসনা করার জন্য জেরুশালেমে গিয়েছিলাম। 12 আর এই ইহুদীরা মন্দিরের মধ্যে আমাকে কারোর সঙ্গে ঝগড়া করতে বা সমাজ-গৃহে জনতাকে উত্তেজিত করতে দেখে নি। 13 এরা আমার বিরুদ্ধে যে দোষারোপ করছে তার কোন প্রমাণ আপনাকে দিতে পারবে না।
14 “কিন্তু আপনার কাছে আমি একথা স্বীকার করছি, আমি যীশুর পথের অনুসারী হয়ে আমার পিতৃপুরুষদের ঈশ্বরের উপাসনা করি। আমার দোষারোপকারীরা বলছে যে সেই পথ ঠিক নয়। মোশির বিধি-ব্যবস্থায় যা কিছু লেখা আছে এবং ভাববাদীদের গ্রন্থে যা লেখা আছে আমি সে সবে বিশ্বাস করি। 15 এদের মতো আমারও ঈশ্বরের ওপর প্রত্যাশা আছে যে ধার্মিক ও অধার্মিক উভয়েরই পুনরুত্থান হবে। 16 এইজন্য আমিও সর্বদা সেইভাবে চলি যাতে ঈশ্বর ও মানুষের সামনে নিজের বিবেককে শুদ্ধ রাখতে পারি।
17-18 “অনেক বছর পর আমি আমার জাতির লোকদের জন্য ত্রাণসামগ্রী নিযে এসেছিলাম এবং মন্দিরে নৈবেদ্য উৎসর্গ করতে গিয়েছিলাম। সেই সময় তারা আমাকে মন্দিরের মধ্যে শুচিশুদ্ধ অবস্থাতেই দেখেছিল। সেখানে তখন কোন ভীড় ছিল না বা গণ্ডগোল হয় নি। 19 এশিয়া থেকে কিছু ইহুদী সেখানে এসেছিল। আমার বিরুদ্ধে তাদের কিছু বলার থাকলে আপনার কাছে এসে তারা আমার ওপর দোষারোপ করতে পারত। 20 অথবা যারা এখানে উপস্থিত আছে তারাই বলুক আমি যখন মহাসভার সামনে ছিলাম, তারা কি আমার কোন দোষ দেখতে পেয়েছে? 21 না কেবল তাদের মধ্যে দাঁড়িয়ে মৃতদের পুনরুত্থানের বিষয়ে আমার বিশ্বাস ঘোষণা করেছি বলে আজ আপনাদের সামনে আমার বিচার হচ্ছে।”
22 ফীলিক্স সেই পথের বিষয় ভালভাবেই জানতেন, তাই তিনি বিচার স্থগিত রাখলেন, আর বললেন, “প্রধান সেনাপতি লুষিয় এলে আমি এর বিচার নিষ্পত্তি করব।” 23 তিনি সেনাপতিকে হুকুম দিলেন, যেন পৌলকে প্রহরারত অবস্থায় রাখা হয়, কিন্তু কিছু স্বাধীনতাও তাকে দিলেন, “এর কোন বন্ধু যদি এর দেখাশোনা করতে আসে তবে বারণ করো না।”
ফীলিক্ম ও তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে পৌলের কথা
24 এর কয়েকদিন পর ফীলিক্স তাঁর ইহুদী স্ত্রী দ্রুষিল্লাকে নিয়ে সেখানে এলে পৌলকে ডেকে পাঠালেন। ফীলিক্স পৌলের মুখে খ্রীষ্ট যীশুতে বিশ্বাসের কথা শুনলেন। 25 কিন্তু পৌল যখন তাকে ন্যায়পরায়ণতা, আত্মসংযম ও ভবিষ্যতের মহাবিচারের কথা শোনাচ্ছিলেন, তখন ফীলিক্স বেশ ভয় পেয়ে গেলেন, আর বললেন, “তুমি এখন যাও আমার আবার সুযোগ হলে তোমায় ডেকে পাঠাবো।” 26 এই সময় তিনি আশা করছিলেন যে পৌল তাকে টাকা দেবেন, তাই তিনি বার বার পৌলকে ডেকে পাঠিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলছিলেন।
27 দুবছর কেটে যাবার পর পর্কিয় ফীষ্ট ফীলিক্সের পদে নিযুক্ত হলেন। আর ফীলিক্স ইহুদীদের সন্তুষ্ট রাখার জন্য পৌলকে বন্দী রেখে গেলেন।
যিহূদার রাজা সিদিকিয়ের প্রতি সতর্কবাণী
34 প্রভুর বার্তা এলো যিরমিয়র কাছে। বাবিলের রাজা নবূখদ্রিৎসর যখন জেরুশালেম এবং তার চারপাশের সমস্ত শহরগুলির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছিল তখন প্রভুর বার্তা যিরমিয়র কাছে এসেছিল। নবূখদ্রিৎসরের সঙ্গে ছিল তার সমস্ত সৈন্য এবং তার সাম্রাজ্য। তার শাসনাধীন সমস্ত রাজ্যের সৈন্যসমূহ এবং লোকরা।
2 এই হল বার্তা: “প্রভু ইস্রায়েলের ঈশ্বর বলেছেন: যিরমিয় যিহূদার রাজা সিদিকিয়কে গিয়ে তাকে এই বার্তা দাও: ‘সিদিকিয়, প্রভু যা বলেছেন তা হল: আমি খুব শীঘ্রই বাবিলের রাজাকে জেরুশালেম দিয়ে দেব। এবং সে জেরুশালেমকে পুড়িয়ে দেবে। 3 সিদিকিয়, তুমি পালাতে পারবে না, ধরা পড়বেই। তোমাকেও বাবিলের রাজার হাতে তুলে দেওয়া হবে। তুমি বাবিলের রাজাকে স্বচক্ষে দেখতে পাবে। রাজার সঙ্গে তোমার মুখোমুখি কথা হবে এবং তোমাকে বাবিলে নিয়ে যাওয়া হবে। 4 কিন্তু যিহূদার রাজা সিদিকিয়, প্রভুর প্রতিশ্রুতি শোন। প্রভু তোমার সম্বন্ধে এই কথা বলেছেন: তোমার মৃত্যু তরবারির আঘাতে হবে না। 5 তোমার মৃত্যু হবে শান্তিতে। অতীতে অন্ত্যেষ্টি ক্রিয়া যাত্রার সময় তোমার পূর্বপুরুষদের জন্য, তোমার পূর্বে যে রাজা শাসন করেছিল তাদের যে ভাবে লোকে সম্মান দেখিয়েছিল, একই ভাবে তারাও তোমার অন্ত্যেষ্টি ক্রিয়ায় তোমাকে সম্মান জানাবে। তারা তোমার জন্য চোখের জল ফেলবে এবং বিষন্নভাবে বলবে, “হে মনিব!” আমি নিজে আপনার কাছে প্রতিশ্রুতি করছি।’” এই হল প্রভুর বার্তা।
6 তাই যিরমিয় প্রভুর এই বার্তা পৌঁছে দিয়েছিল জেরুশালেমে সিদিকিয়ের কাছে। 7 তখন বাবিলের রাজা জেরুশালেমের বিরুদ্ধে সৈন্যসামন্ত নিয়ে যুদ্ধ করছে। যিহূদার যে সমস্ত শহরগুলি তখনও অধিকৃত হয়নি সেগুলি অধিকার করবার লক্ষ্য নিয়ে বাবিলের সৈন্যদল যুদ্ধ করছিল। ঐ শহরগুলি ছিল লাখীশ এবং অসেকা—দুটি শহর যেগুলি দুর্গদ্বারা রক্ষিত ছিল।
লোকরা তাদের চুক্তি ভঙ্গ করল
8 ইব্রীয় দাসদের মুক্তির জন্য রাজা সিদিকিয় জেরুশালেমের লোকেদের সঙ্গে একটি চুক্তি করেছিল। সিদিকিয় চুক্তি করবার পর যিরমিয়র কাছে ঈশ্বরের কাছ থেকে একটি বার্তা এসেছিল। 9 প্রত্যেকেই তার ইব্রীয় দাসকে মুক্তি দেবে। স্ত্রী ও পুরুষ ইব্রীয় দাস দাসীরা দাসত্ব থেকে মুক্তি পাবে। কেউ যিহূদা পরিবারগোষ্ঠীর কাউকে দাসত্বের শৃঙ্খল পরাতে পারেনি। 10 সুতরাং সমস্ত নেতৃবৃন্দ ও লোকরা এই চুক্তি গ্রহণ করেছিল। প্রত্যেকেই রাজী হয়েছিল তাদের দাসদের মুক্তি দেবার প্রশ্নে এবং তাই প্রত্যেক দাসই স্বাধীন হয়ে গিয়েছিল। 11 কিন্তু তারপর যাদের দাস ছিল তারা মত পরিবর্তন করে সেই সব দাসদের দাসত্বের জন্য ধরে এনেছিল।
12 তখন প্রভুর বার্তা এলো যিরমিয়র কাছে: 13 যিরমিয় প্রভু় ইস্রায়েলের ঈশ্বর যা বলেছেন তা হল: “মিশর থেকে আমি তোমাদের পূর্বপুরুষদের নিয়ে এসেছিলাম। তারাও সেখানে দাসত্ব করত। যখন আমি তাদের নিয়ে এসেছিলাম তখন আমি তাদের সঙ্গে একটি চুক্তি করেছিলাম। 14 আমি তোমাদের পূর্বপুরুষদের বলেছিলাম: ‘প্রতি 7 বছর পর প্রত্যেককে তার ইব্রীয় দাসকে মুক্তি দিতে হবে। কোন ইব্রীয় যদি নিজেকে তোমার কাছে বিক্রিও করে দেয় তাহলেও 6 বছর পর তাকে তুমি মুক্তি দিয়ে দেবে।’ কিন্তু তোমাদের পূর্বপুরুষরা আমার কথা শোনেনি। 15 কিছু দিন আগে তোমরা তোমাদের মন পরিবর্তন করেছিলে এবং আমার মতে, তোমরা ঠিক কাজ করেছিলে। তোমরা ইব্রীয় দাসদের মুক্ত করেছিলে। এমন কি তোমরা মন্দিরেও এসেছিলে যেটি আমার নামে নামাঙ্কিত এবং আমার সামনে একটি চুক্তি করেছিলে। 16 কিন্তু এখন আবার তোমরা তোমাদের মন পরিবর্তন করেছো এবং আমার নামকে অসম্মান করেছো। কি করে তোমরা এটা করলে? তোমরা আবার সেই সব ইব্রীয় নারী পুরুষদের জোর করে ধরে এনে তোমাদের দাস করলে অথচ এদেরই কিছু দিন আগে তোমরা মুক্ত করে দিয়েছিলে।
17 “তাই প্রভু যা বলেছেন তা হল: ‘তোমরা আমাকে অমান্য করেছিলে। তোমরা তোমাদের ইব্রীয় দাসদের মুক্তি দাও নি। তোমরা চুক্তি রক্ষা করো নি। কিন্তু আমি তোমাদের স্বাধীনতা দেব। এই হল প্রভুর বার্তা। তরবারিসমূহ, অনাহার এবং মারাত্মক রোগসমূহ দ্বারা মরবার জন্য আমি তোমাদের স্বাধীনতা দেব। সারা বিশ্ব জানবে তোমাদের দুরবস্থার কথা। 18 যারা চুক্তিটি ভঙ্গ করেছিল আমি তাদের শত্রুদের হাতে তুলে দেব। তারা যে বাছুরটি দু-খণ্ড করেছিল এবং সেই দু-খণ্ডের মধ্য দিয়ে হেঁটেছিল, আমি তাদের সেই রকম করে দেব। 19 চুক্তি ভঙ্গকারীরা আমার সামনে বাছুরকে দু-খণ্ড করে বলি দিয়েছিল। তবু ওরা সেই চুক্তি মানে নি। যিহূদা ও জেরুশালেমের নেতৃবৃন্দ, রাজসভার গুরুত্বপর্তৃ সভাপরিষদ, যাজকগণ এবং সাধারণ মানুষ, প্রত্যেকে আমার সামনে চুক্তি করবার সময় বাছুরটির দুই খণ্ডের মাঝখান দিয়ে হেঁটেছিল। 20 তাই আমি তাদের মৃত্যুদণ্ডের জন্য শত্রুবাহিনীর হাতে তুলে দেব। তাদের মৃতদেহ হবে পশু ও শকুনের খাদ্য। 21 যিহূদার রাজা সিদিকিয় ও তার নেতৃবৃন্দকে আমি শত্রুবাহিনীর হাতে তুলে দেব। যদিও বাবিলের সৈন্যদল জেরুশালেম শহরটি ছেড়ে গেছে, আমি সিদিকিয় এবং তার নেতাদের তাদের হাতে তুলে দেব। 22 কিন্তু আমি আদেশ দেব বাবিলের সেনাদের আবার জেরুশালেমে ফিরে এসে যুদ্ধ করার জন্য। তারা জেরুশালেমকে কব্জা করে আগুন জ্বালিয়ে দেবে। এবং আমি যিহূদার শহরগুলিকেও ধ্বংস করে দেব। ঐ শহরগুলি একটি শূন্য মরুভূমিতে পরিণত হবে।’” এই হল প্রভুর বার্তা।
পরিচালকের প্রতি: বাঁশীর সঙ্গে গাইবার জন্য দায়ূদের একটি গীত।
5 হে প্রভু, আমার কথা শুনুন।
আমি যা বলতে চাইছি তা বুঝে নিন।
2 হে আমার ঈশ্বর, হে রাজন,
আমার প্রার্থনা শুনুন।
3 হে প্রভু, প্রতিদিন সকালে আপনার সামনে আমার নৈবেদ্য রাখি এবং আপনার সাহায্য প্রার্থনা করি।
প্রতিদিন সকালে আপনি আমার প্রার্থনা শোনেন।
4 হে ঈশ্বর, মন্দ লোকরা আপনার কাছে থাকুক, এ আপনি চান না।
দুষ্ট লোকরা আপনার উপাসনা করে না।
5 বোকারা আপনার কাছে আসতে পারে না।
লোকদের মন্দ কাজ করাকে আপনি ঘৃণা করেন।
6 আপনি মিথ্যাবাদীদের বিনাশ করেন।
যারা অন্য লোকদের আঘাত করার জন্য গোপনে ফন্দি আঁটে সেইসব লোকদেরও আপনি ঘৃণা করেন।
7 কিন্তু প্রভু, আপনার বিশাল করুণাধন্য হয়ে, আমি আপনার মন্দিরে যাবো।
প্রভু আমার, আপনার প্রতি ভীতি এবং শ্রদ্ধাসহ আমি আপনার মন্দিরে মাথা নত করবো।
8 প্রভু আমার, আপনার সঠিক জীবনযাত্রা
আমার কাছে উদ্ঘাটন করুন।
লোকেরা আমার দুর্বলতা খুঁজছে।
তাই যেমনভাবে আমার বেঁচে থাকা উচিৎ তা আমায় দেখিয়ে দিন।
9 লোকজন সত্যি কথা বলে না।
তারা মিথ্যাবাদী, সত্যকে বিকৃত করে।
তাদের মুখ শূন্য কবরের মত।
তারা অন্য লোকদের ভালো ভালো কথা বলছে, তারা কেবল তাদের ফাঁদে ফেলতে চাইছে।
10 ঈশ্বর, ওদের শাস্তি দিন।
তাদের নিজেদের ফাঁদেই তাদের পড়তে দিন।
ঐসব লোকেরা আপনার বিরুদ্ধে গিয়েছে
অতএব ওদের বহু অন্যায়ের জন্য ওদের শাস্তি দিন।
11 কিন্তু সেই সব লোক যারা ঈশ্বরের ওপর নির্ভর করে, তাদের সুখী করুন।
চিরদিনের জন্য সুখী করুন!
ঈশ্বর আমার, যারা আপনাকে ভালোবাসে, আপনি তাদের রক্ষা করুন ও শক্তি দিন।
12 হে প্রভু, সৎ লোকের জন্য আপনি যখন ভালো কাজ করেন,
তখন আপনি বিরাট বড় ঢালের মত তাদের রক্ষা করেন।
পরিচালকের প্রতি: শমীনীৎসহ তারবাদ্যে গাইবার জন্য দায়ূদের একটি গীত।
6 হে প্রভু, ক্রুদ্ধ অবস্থায় আমাকে সংশোধন করবেন না।
মহাক্রোধে আমাকে শাস্তি দেবেন না।
2 প্রভু, আমার প্রতি সদয় হোন,
আমি দুর্বল এবং অসুস্থ।
আমায় সুস্থ করে দিন
কারণ আমার হাড়গুলো নড়বড় করছে।
3 প্রভু আমার সারা দেহ টল্মল্ করছে।
প্রভু সুস্থ হতে আমার আর কতদিন লাগবে?
4 প্রভু ফিরে আসুন এবং আবার আমাকে শক্তিশালী এবং সবল করে দিন।
আপনার দয়াগুনে আমাকে পরিত্রাণ করুন।
5 মৃত লোকরা তাদের কবরে আপনাকে স্মরণ করে না।
মানুষ মৃত্যুর মুখে এসেও আপনার প্রশংসা করে না।
তাই আমায় সুস্থ করে দিন!
6 হে প্রভু, সারা রাত ধরে প্রার্থনা করে
আমি নিজেকে ক্ষয় করেছি।
আমার চোখের জলে
আমার বিছানা ভিজে গেছে।
7 আমার শত্রুরা আমাকে যা দুঃখ দিয়েছে
তার দরুণ কেঁদে কেঁদে আমার চোখ দুর্বল হয়ে গেছে।
8 মন্দ লোকরা, তোমরা চলে যাও।
কেন? কারণ প্রভু আমার কান্না শুনেছেন।
9 প্রভু আমার মিনতি শুনেছেন।
প্রভু আমার প্রার্থনা গ্রহণ করেছেন এবং আমায় উত্তর দিয়েছেন।
10 আমার সকল শত্রু হতাশ এবং নিরাশ হবে।
হঠাৎ একটা কিছু ঘটবে এবং ঐসব শত্রুরা লজ্জায় চলে যাবে।
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International