Print Page Options
Previous Prev Day Next DayNext

M’Cheyne Bible Reading Plan

The classic M'Cheyne plan--read the Old Testament, New Testament, and Psalms or Gospels every day.
Duration: 365 days
Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)
Version
বিচারকর্ত্তৃগণের বিবরণ 19

একজন লেবীয় পুরুষ ও তার দাসী

19 সেই সময়, ইস্রায়েলীয়দের কোন রাজা ছিল না।

পাহাড়ী দেশ ইফ্রয়িমের সীমান্তে একজন লেবীয় থাকত। সেই লোকটার একজন দাসী ছিল, তাকে একরকম তার স্ত্রীও বলা যায়। সে ছিল যিহূদার বৈৎ‌লেহম শহরের। কিন্তু সে (দাসীটি) তার প্রতি অবিশ্বস্ত ছিল। সে বৈৎ‌লেহমে যিহূদায় তার পিতার বাড়ি চলে গেল। সে সেখানে চার মাস কাটালো। তারপর তার স্বামী তার কাছে গেলো। সে তার সঙ্গে বেশ ভালোভাবেই কথাবার্তা বলবে ঠিক করেছিল, এই আশায় যদি স্ত্রী তার কাছে ফিরে আসে। একজন ভৃত্য ও দুটো গাধা নিয়ে সে মেয়েটির পিতার বাড়ী গেল। তাকে দেখতে পেয়ে মেয়েটির পিতা বেরিয়ে এসে তাকে আদর করে ডাকল। পিতা তো বেশ খুশী হল। মেয়ের পিতা লেবীয়টিকে তার বাড়িতে নিয়ে এল। তাকে সেখানে থাকবার জন্য বলল। লেবীয় সেখানে তিনদিন থেকে গেল। শ্বশুরবাড়িতে সে খাওয়া-দাওয়া, পান ভোজন করে আর ঘুমিয়ে দিন কাটাল।

চতুর্থ দিনে তারা খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠল। লেবীয় লোকটি চলে যাবার জন্য প্রস্তুত হল। কিন্তু শ্বশুরমশাই জামাতাকে বলল, “আগে কিছু খেয়েদেয়ে নাও, তারপর যেও।” তাই লেবীয় লোকটি ও শ্বশুরমশাই একসঙ্গে খেতে বসল। খাওয়া হয়ে যাবার পর শ্বশুর বলল, “আজকের রাতটা থেকে যাও। আরাম করো, আনন্দ করো। তারপর বিকেল হলে চলে যেও।” সুতরাং তারা দুজন একসঙ্গে খাওয়া দাওয়া করল। লেবীয় তারপর যাবার উদ্যোগ করলে শ্বশুর তাকে আর একরাত্রি থাকতে অনুরোধ করল।

পঞ্চম দিনে ভোরবেলা লেবীয় ঘুম থেকে উঠে রওনা দেবার উদ্যোগ করল। কিন্তু শ্বশুর আবার জামাতাকে বলল, “আগে তো কিছু খাও। আজ বিকাল পর্যন্ত বিশ্রাম কর।” অতএব তারা দুজন একসঙ্গে খাওয়া-দাওয়া করল।

তারপর লেবীয় লোকটি তার দাসী আর ভৃত্যের যাবার উদ্যোগ করলে শ্বশুর বলল, “এখন অন্ধকার হয়ে গেছে। দিন তো একরকম শেষ হয়ে গেছে। তাই বলছি কি, আজকের রাতটা থেকেই যাও। ভালভাবে রাতটা কাটাও। কাল সকাল সকাল উঠে চলে যেও।”

10 এবারে লেবীয় লোকটি আর রাত কাটাতে চাইল না। গাধা দুটো আর দাসীটিকে সঙ্গে নিয়ে সে দূরে যিবূষ শহরের দিকে চলে গেল। (যিবূষ জেরুশালেমের আর একটি নাম।) 11 দিন প্রায় শেষ হয়ে গেল। তারা যিবূষ শহরের কাছাকাছি পৌঁছাল। তখন ভৃত্যটি তার মনিব লেবীয় লোকটিকে বলল, “এই যিবূষ শহরে আজ রাত কাটানো যাক।”

12 কিন্তু তার মনিব লেবীয় লোকটি বলল, “না, আমরা অপরিচিত শহরের ভেতরে যাব না। ওরা তো ইস্রায়েলের লোক নয়। আমরা গিবিয়া শহরে চলে যাব।” 13 সে আরও বলল, “চলো গিবিয়া কি রামা—এই দুটো শহরের যে কোন একটায় আমরা গিয়ে সেখানে রাত কাটিয়ে দিতে পারি।”

14 তাই লেবীয় লোকটি তার সঙ্গীকে নিয়ে এগিয়ে চলল। গিবিয়ায় পৌঁছবার সঙ্গে সঙ্গে সূর্য অস্ত গেল। গিবিয়া হল বিন্যামীন পরিবারগোষ্ঠীর দখলে। 15 তারা গিবিয়ায় থামল। সেই শহরেই তারা রাত কাটাবে ঠিক করল। শহরের একটা খোলা জায়গায় তারা বসে পড়ল। কিন্তু কেউই তাদের বাড়িতে ডেকে এনে রাত কাটাবার জন্য বলল না।

16 সেদিন সন্ধ্যায় ক্ষেত থেকে একজন বৃদ্ধ লোক শহরে এল। তার বাড়ী ইফ্রয়িমের পাহাড়ী অঞ্চলে হলেও গিবিয়াতেই সে বসবাস করে। (গিবিয়ার লোকরা সকলেই বিন্যামীন পরিবারগোষ্ঠীর।) 17 বৃদ্ধ লোকটি শহরের কেন্দ্রস্থলে ঐ পথিক লেবীয়কে দেখতে পেল। সে জিজ্ঞাসা করল, “তোমরা কোথায় যাবে? তোমরা কোথা থেকে আসছ?”

18 লেবীয় লোকটি বলল, “আমরা যিহূদার বৈৎ‌লেহম শহর থেকে আসছি। আমরা ইফ্রয়িমের পাহাড়ী দেশের সীমানায় বাড়ি যাচ্ছি। আমি যিহূদার বৈৎ‌লেহমে এবং প্রভুর গৃহে গিয়েছিলাম। এখন আমি বাড়ী ফিরে যাচ্ছি। কিন্তু আজ রাত্রে কেউই আমাকে তার বাড়িতে নিমন্ত্রণ করে নি। 19 গাধাগুলোর জন্য খড় আর খাদ্য আমাদের সঙ্গে আছে। ভৃত্য, যুবতী স্ত্রী আর আমার জন্য রুটি আর দ্রাক্ষারসও রয়েছে। আমাদের কোন কিছুর অভাব নেই।”

20 বৃদ্ধ লোকটি বলল, “তোমরা আমার বাড়িতে স্বচ্ছন্দে থাকতে পারো। তোমাদের যা দরকার সব দেবো। শুধু একটাই কথা, রাত্রে ঐ খোলা মাঠে যেন তোমরা থেকো না।” 21 এরপর বৃদ্ধলোকটা লেবীয় ও তার সঙ্গীসাথীদের তার বাড়ি নিয়ে গেল। সে তাদের গাধাগুলোকে খাওয়াল। তারা পা ধুয়ে পানাহার সেরে নিল।

22 এদিকে, সঙ্গীদের নিয়ে লেবীয় লোকটি যখন আমোদ-ফূর্তি করছিল, তখন শহরের কিছু বদলোক বাড়িটা ঘিরে ফেলল। তারা দরজায় ধাক্কা মারতে লাগল। তারা বাড়ির মালিক ঐ বৃদ্ধ লোকটার নাম ধরে চিৎকার করতে লাগল। তারা বলল, “তোমার বাড়ি থেকে ঐ লোকটাকে বার করে দাও। আমরা ওর সঙ্গে যৌন কার্য করবো।”

23 বৃদ্ধলোকটি বেরিয়ে এসে বদলোকগুলোকে বলল, “শোন বন্ধুরা, অমন মন্দ কাজ কোরো না। লোকটি আমার অতিথি। এরকম জঘন্য পাপ কাজ করো না। 24 এদিকে দেখ, এ হচ্ছে আমার মেয়ে। একটি কুমারী। একে আমি তোমাদের জন্য বার করে আনব। তোমরা যেভাবে খুশী একে ব্যবহার করো, আমি তার উপপত্নীকেও তোমাদের জন্য বার করে আনব। তার সঙ্গে এবং আমার মেয়ের সঙ্গে যা খুশী করো আপত্তি করব না। কিন্তু আমার অতিথির বিরুদ্ধে তোমরা এমন জঘন্য পাপ কাজ করো না।”

25 কিন্তু বদ লোকগুলো সেসব কথায় কান দিল না। শেষ পর্যন্ত লেবীয় লোকটি তার দাসী বা উপপত্নীকে বাড়ি থেকে বার করে তাদের কাছে এনে দিল। তারা তাকে আঘাত করল এবং সারারাত ধরে ধর্ষণ করল। ভোর বেলায় তাকে ছেড়ে দিল। 26 রাত পোয়ালে মেয়েটি বাড়িতে ফিরে এল। যেখানে তার স্বামী ছিল। তার দোরগোড়ায় সে অজ্ঞান হয়ে পড়ে গেল। দিনের বেলা পর্যন্ত সে সেখানে এইভাবে পড়ে রইল।

27 পরদিন খুব সকালে লেবীয় লোকটি ঘুম থেকে উঠল। বাড়ি যেতে হবে এবার। বেরবে বলে দরজা খুলল, আর সেখানে চৌকাঠের উপর একটা হাত এসে পড়ল। পড়ে রয়েছে তার দাসী। দরজার গোড়ায় সে পড়ে আছে। 28 লেবীয় লোকটি তাকে বলল, “ওঠো আমাদের যেতে হবে।” কিন্তু কোনো সাড়া মিলল না। সে মারা গিয়েছিল।

গাধার পিঠে তাকে শুইয়ে লেবীয় লোকটি বাড়ি চলে গেল। 29 বাড়ি ফিরে সে একটি ছুরি দিয়ে দাসীটির দেহকে কেটে 12টি টুকরো করল। তারপর ইস্রায়েলীয়রা যে সব জায়গায় বাস করত সে সব জায়গায় ঐ 12টি টুকরো পাঠিয়ে দিল। 30 যারা দেখল তারা প্রত্যেকেই বলল, “এরকম কাণ্ড ইস্রায়েলে আগে কখনও ঘটে নি। যেদিন আমরা মিশর থেকে চলে আসি সেদিন থেকে আজ পর্যন্ত এরকম কাজ কখনও হয় নি এবং দেখাও যায় নি। এ বিষয়ে আলোচনা করতে হবে। ঠিক করতে হবে আমাদের কি করা উচিৎ‌।”

প্রেরিত 23

23 পৌল মহাসভার দিকে স্থির দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলতে শুরু করলেন, “ভাইরা, ঈশ্বরের দৃষ্টিতে আমি আজ পর্যন্ত শুদ্ধ বিবেক অনুযায়ী জীবনযাপন করছি।” তখন মহাযাজক অননিয়, পৌলের কাছাকাছি যারা দাঁড়িয়েছিল তাদের হুকুম দিলেন পৌলের মুখে চড় মেরে তার মুখ বন্ধ করে দিতে। তখন পৌল অননিয়কে বললেন, “হে চুনকাম করা প্রাচীর! স্বয়ং ঈশ্বর তোমায় আঘাত করবেন। আইনসঙ্গত ভাবে আমার বিচার করার জন্য তুমি এখানে বসেছ; আর আমাকে আঘাত করার হুকুম দিয়ে তুমি মোশির বিধি-ব্যবস্থার বিরুদ্ধে যাচ্ছ।”

যারা পৌলের আশেপাশে দাঁড়িয়েছিল তারা তাঁকে বলল, “ঈশ্বরের মহাযাজকের সঙ্গে তুমি এইভাবে কথা বলতে পারো না। তুমি তাঁকে অপমান করছ!”

পৌল বললেন, “ভাইরা, আমি বুঝতে পারি নি যে উনি মহাযাজক; কারণ এরকম লেখা আছে, ‘তুমি সমাজের কোন নেতার বিরুদ্ধে কটু কথা বলো না।’”(A)

পৌল যখন বুঝতে পারলেন যে তাদের মধ্যে কিছু সভ্য সদ্দূকী ও কিছু সভ্য ফরীশী, তখন তিনি মহাসভার উদ্দেশ্যে চিৎকার করে বলে উঠলেন, “ভাইরা আমি একজন ফরীশী! আর ফরীশীদেরই সন্তান। মৃতদের পুনরুত্থান হবে বলে আমার যে প্রত্যাশা আছে, তার জন্যই আমার এই বিচার হচ্ছে!”

পৌলের কথা শুনে ফরীশী ও সদ্দূকীদের মধ্যে বিরোধ বেধে গেল। আর সভা দুটো দলে ভাগ হয়ে গেল। (কারণ সদ্দূকীরা বলত পুনরুত্থান বলে কিছু নেই, স্বর্গদূত বা আত্মা বলেও কিছু নেই; কিন্তু ফরীশীরা উভয়ই বিশ্বাস করত।) চারদিকে বিরাট কোলাহল শুরু হয়ে গেল। ফরীশীদের মধ্যে থেকে কয়েকজন ব্যবস্থার শিক্ষক উঠে দাঁড়িয়ে খুব জোরালো তর্ক জুড়ে দিল, তারা বলল, “আমরা এঁর কোন দোষই দেখতে পাচ্ছি না! হয়তো কোন আত্মা বা স্বর্গদূত দম্মেশকের পথে সত্যসত্যই তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন!”

10 এইভাবে গণ্ডগোল বাড়তে বাড়তে লড়াইয়ে পরিণত হল। সেনাপতি ভয় পেয়ে গেলেন, যে তারা হয়তো পৌলকে টেনে-হিঁচড়ে টুকরো টুকরো করে ফেলবে, তাই তিনি হুকুম দিলেন যেন সৈন্যরা নেমে গিয়ে ইহুদীদের মধ্য থেকে পৌলকে দূর্গে নিয়ে যায়।

11 পরদিন রাতে প্রভু যীশু পৌলের কাছে এসে দাঁড়ালেন। তিনি বললেন, “সাহস কর! কারণ তুমি আমার বিষয়ে যেমন জেরুশালেমে সাক্ষ্য দিয়েছ, তেমনি রোমেও আমার কথা তোমাকে বলতে হবে!”

কিছু ইহুদী পৌলকে হত্যা করার চক্রান্ত করল

12 পরের দিন সকালে ইহুদীরা জোট বেঁধে দিব্যি করে বলল, “পৌলকে হত্যা না করা পর্যন্ত তারা অন্ন জল মুখে তুলবে না।” 13 যারা এই চক্রান্ত করেছিল তারা সংখ্যায় প্রায় চল্লিশ জনের কিছু বেশী ছিল। 14 সেই ইহুদীরা প্রধান যাজক ও সমাজপতিদের কাছে গিয়ে বলল, “আমরা শপথ করেছি যে পৌলকে হত্যা না করা পর্যন্ত আমরা অন্ন জল মুখে তুলব না। 15 এখন আপনারা মহাসভার সভ্যদের সঙ্গে সেনাপতির কাছে আবেদন করুন, যেন তিনি আপনাদের কাছে পৌলকে নামিয়ে আনেন, বলুন যে আপনারা তার কাছে আরো কিছু প্রশ্ন করতে চান। সে এখানে আসার আগেই আমরা তাকে হত্যা করার জন্য তৈরী রইলাম।”

16 কিন্তু পৌলের এক ভাগ্নে এই চক্রান্তের কথা জানতে পেরে দুর্গের মধ্যে ঢুকে পৌলকে সব কথা জানিয়ে দিল। 17 পৌল তখন শতপতিদের একজনকে কাছে ডেকে বললেন, “আপনি এই যুবককে সেনাপতির কাছে নিয়ে যান, কারণ তাকে এর কিছু বলার আছে।” 18 তাতে তিনি সেই যুবককে সেনাপতির কাছে নিয়ে গিয়ে বললেন, “বন্দী পৌল আমার এই যুবককে আপনার কাছে নিয়ে আসতে বললেন, কারণ এ আপনাকে কিছু বলতে চায়।”

19 তখন সেনাপতি যুবকটির হাত ধরে এক পাশে নিয়ে গিয়ে একান্তে তাকে জিজ্ঞেস করলেন, “তুমি আমায় কি বলতে চাও বল।”

20 সেই যুবক বলল, “ইহুদীরা পরামর্শ করে ঠিক করেছে যে তারা পৌলকে আরও বিশদভাবে প্রশ্ন করার মিথ্যা অজুহাত নিয়ে আপনার কাছে এসে অনুরোধ করবে যেন আপনি পৌলকে কাল মহাসভার সামনে হাজির করেন। 21 কিন্তু আপনি তাদের কথায় বিশ্বাস করবেন না, কারণ তাদের মধ্যে চল্লিশ জনেরও বেশী লোক পৌলকে হত্যা করার জন্য লুকিয়ে অপেক্ষা করে আছে। তারা নিজেদের মধ্যে শপথ করেছে যে, পৌলকে না মারা পর্যন্ত তারা অন্ন জল মুখে তুলবে না। তারা কেবল আপনার সম্মতির অপেক্ষায় আছে।”

22 তখন সেনাপতি ঐ যুবককে এই বলে বিদায় দিলেন যে, “সে যে তার সঙ্গে দেখা করেছে তা যেন কেউ না জানতে পারে।”

পৌলকে কৈসরিয়ায় পাঠানো হল

23 পরে তিনি দুজন সেনাপতিকে কাছে ডেকে বললেন, “দুশো সৈনিককে রাত নটায় কৈসরিয়া যাবার জন্য প্রস্তুত থাকতে বলো আর এদের সঙ্গে দুশো বর্শাধারী ও সত্তর জন অশ্বারোহী সৈন্য দিও। 24 পৌলের জন্যও অশ্ব প্রস্তুত রেখো, তাতে করে তাকে রাজ্যপাল ফীলিক্সের কাছে পৌঁছে দিও।” 25 আর তিনি এরূপ একটি পত্র লিখে সঙ্গে দিলেন:

26 মহামহিম রাজ্যপাল ফীলিক্স সমীপেষু,

ক্লৌদিয় লুদিয়ের অভিবাদন গ্রহণ করুন।

27 পৌল নামের লৌকটিকে ইহুদীরা ধরে হত্যা করতে উদ্যত হয়েছিল; কিন্তু আমি যখন জানতে পারলাম যে সে রোমান নাগরিক তখন আমার সৈন্যদের নিয়ে এসে তাকে উদ্ধার করে আনলাম। 28 এর বিরুদ্ধে যে কি অভিযোগ আছে তা জানার জন্য আমি একে ইহুদীদের মহাসভার সামনে আনি। 29 সেখানে আমি বুঝতে পারলাম যে ইহুদীদের বিধি-ব্যবস্থা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে ওর ওপর দোষারোপ করা হচ্ছে, কিন্তু মৃত্যুদণ্ড দেওয়া বা কারাগারে দেওয়ার মত এর কোন দোষ আমি পাই নি। 30 এই লোকের বিরুদ্ধে হত্যার চক্রান্ত করা হচ্ছে, একথা যখন আমাকে জানানো হল, তখন তাড়াতাড়ি একে আমি আপনার কাছে পাঠালাম। যারা এর উপর দোষারোপ করছে তাদেরও বলেছি, তারা আপনার কাছে গিয়ে এর বিরুদ্ধে যা বলবার বলবে।

31 তখন সেনাপতির সেই আদেশ অনুসারে সেনারা পৌলকে নিয়ে সেই রাতেই আন্তিপাতিতে গেল। 32 পরদিন তাঁর সঙ্গে কেবল অশ্বারোহী সৈন্যদের যাবার ব্যবস্থা করে বাকী সৈন্যরা দুর্গে ফিরে এল। 33 তারা কৈসরিয়ায় পৌঁছে সেই পত্রখানি রাজ্যপালের হাতে দিয়ে পৌলকে তাঁর কাছে হাজির করল।

34 রাজ্যপাল পত্রখানি পড়ে জিজ্ঞেস করলেন, “তার নিজের প্রদেশ কোনটি।” তিনি জানতে পারলেন যে পৌল কিলিকিয়ার লোক, 35 তখন বললেন, “তোমার অভিযোগকারীরা এসে পৌঁছালে আমি তোমার কথা শুনব।” এই কথা বলে তিনি পৌলকে হেরোদের প্রাসাদে পাহারা দিয়ে রাখতে বললেন।

যিরমিয় 33

ঈশ্বরের প্রতিশ্রুতি

33 প্রভুর কাছ থেকে দ্বিতীয় বারের জন্য এই বার্তা এলো যিরমিয়র কাছে। যিরমিয় তখনও রক্ষীদের উঠোনে কারারুদ্ধ। “প্রভুই বিশ্বকে সৃষ্টি করেছিলেন এবং তিনিই বিশ্বকে রক্ষা করেছেন। প্রভু হল তাঁর নাম। প্রভু বলেছেন, ‘যিহূদা আমার কাছে প্রার্থনা করো, আমি তোমার প্রার্থনার উত্তর দেব। আমি তোমাকে গুরুত্বপূর্ণ গোপন কথা বলব যে কথা এর আগে তুমি শুনতে পাওনি।’ প্রভু হলেন ইস্রায়েলের ঈশ্বর। যিহূদার রাজপ্রাসাদ এবং জেরুশালেমের ঘরবাড়ি সম্বন্ধে প্রভু এই কথাগুলি বলেছেন: ‘শত্রুরা ঐ সমস্ত ঘরবাড়ি ভেঙে ফেলবে। শত্রুরা ঐ সমস্ত শহরে প্রাচীর ভেঙে ফেলে তরবারি হাতে শহরের অভ্যন্তরের বাসিন্দাদের সঙ্গে যুদ্ধ করবে।

“‘জেরুশালেমের লোকরা অসংখ্য খারাপ কাজ করেছে। আমি তাদের প্রতি ক্রুদ্ধ। আমি তাদের বিরুদ্ধে চলে গিয়েছি। তাই আমি অসংখ্য মানুষকে হত্যা করব। যখন বাবিলের সৈন্যদল জেরুশালেমের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে আসবে, তখন জেরুশালেমের বাড়ীগুলোতে মৃতদেহ পড়ে থাকবে।

“‘কিন্তু তখন আমি তাদের সারিয়ে দেব। ফিরিয়ে দেব তাদের আনন্দ ও শান্তিপূর্ণ জীবন। তারপর আমি যিহূদা ও ইস্রায়েলের লোকদের তাদের দেশে ফিরিয়ে আনব। অতীতের মতো আবার আমি তাদের শক্তিশালী করে তুলব। তারা আমার বিরুদ্ধে যে পাপ করেছিল সব পাপ আমি ধুয়ে দেব। তারা আমার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিল কিন্তু আমি তাদের ক্ষমা করে দেব। তখন জেরুশালেম আবার অপূর্ব হয়ে উঠবে। সেখানে লোকরা খুশীতে আনন্দ করবে। অন্য জাতির লোকেরা যখন ভালো কাজগুলির কথা, যেগুলো আমি জেরুশালেমের জন্য করছি শুনতে পাবে, তখন তারা আমার প্রশংসা করবে। আমি জেরুশালেমে যে সমৃদ্ধি ও শান্তি আনছি তার জন্য জাতিগুলি আমাকে ভয় ও শ্রদ্ধা করবে।’

10 “লোকরা, তোমরা বলছো, ‘আমাদের দেশতো এখন শূন্য মরুভূমি। এখানে প্রাণের কোন চিহ্ন নেই।’ জেরুশালেমের পথ সমূহে এবং যিহূদার শহরগুলিতে কোন শব্দ শোনা যাচ্ছে না। কিন্তু খুব শীঘ্রই তোমরা এই জায়গাগুলিতে শব্দ শুনতে পাবে। 11 গানের শব্দ এবং উৎসবের শব্দ শোনা যাবে। বর ও কনের আনন্দপূর্ণ কোলাহল শোনা যাবে। লোকরা তাদের উপহার সামগ্রী নিয়ে মন্দিরে আসবে। তারা বলবে, ‘সর্বশক্তিমান প্রভুর প্রশংসা করো কারণ তিনি ভালো। তাঁর সত্যকার ভালবাসা চিরকাল প্রবহমান।’ ওরা একথা বলবে কারণ আমি আবার যিহূদার ভালো করব। সে জায়গা আগের মত হয়ে যাবে।” প্রভু এই কথাগুলি বললেন।

12 প্রভু সর্বশক্তিমান বললেন, “এখন এই জায়গা শূন্য। এখানে এখন কোন প্রাণী যাবে না। কিন্তু যিহূদার প্রত্যেকটি শহরে লোক বাস করবে। সেখানে থাকবে মেষপালকরা। থাকবে পশুচারণের তৃণভূমি। সেখানে মেষপালকরা মেষের পালকে চরাবে। 13 মেষপালক যেমন তার মেষ গোনে, লোকরা তেমনি সর্বত্র তাদের মেষ গুনবে—পাহাড়ী দেশে, পশ্চিমের পাদদেশে, নেগেভে এবং যিহূদার অন্যান্য সব শহরগুলিতেও।”

সঠিক ধার্মিক

14 এই হল প্রভুর বার্তা: “আমি যিহূদা ও ইস্রায়েলের লোকদের কাছে একটি বিশেষ প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম। আমার সেই প্রতিশ্রুতি পালনের সময় আসছে। 15 আমি দায়ূদের পরিবার থেকে একটি ভালো ‘শাখাকে’ বৃদ্ধি করব। সেই ‘শাখা’ বেড়ে উঠবে এবং দেশের জন্য সঠিক এবং ভাল কাজসমূহ করবে। 16 এই ‘শাখার’ সময় যিহূদার লোকরা বেঁচে যাবে। জেরুশালেমের লোকেরা নিরাপদে বসবাস করতে পারবে। সেই ‘শাখার’ নাম হল: ‘প্রভু মঙ্গলময়।’”

17 প্রভু বলেছেন, “দায়ূদ পরিবারের একজন ইস্রায়েলের সিংহাসনে সর্বদা শাসন করবে। 18 এবং যাজকগণ হবে সর্বদা লেবীয় পরিবার থেকে। ঐ যাজকগণ সর্বদাই আমার সামনে দাঁড়িয়ে আমার উদ্দেশ্যে হোমবলি, শস্য নৈবেদ্য এবং বলি দেবে।”

19 প্রভুর এই বার্তা এলো যিরমিয়র কাছে। 20 প্রভু বললেন, “দিন ও রাত্রির সঙ্গে আমার একটি চুক্তি আছে। তারা একইভাবে বরাবর ঘুরে ফিরে আসবে। তোমরা এই চুক্তি বদল করতে পারবে না। দিন ও রাত্রি সঠিক সময়েই আসবে। 21 তোমরা যদি এই বন্দোবস্ত বদল করতে পারো তাহলে তোমরা দায়ূদ ও লেবীয় পরিবারের সঙ্গে আমার যে চুক্তি তাও বদলে দিতে পারবে। তখন আর দায়ূদ ও লেবীয় পরিবারের উত্তরপুরুষরা রাজা বা যাজক হবে না। 22 কিন্তু আমার সেবক দায়ূদ ও লেবীয় পরিবারগোষ্ঠীর অসংখ্য উত্তরপুরুষ দেব। তারা সংখ্যায় আকাশের তারাদের মতো অগণিত হবে, হবে সমুদ্রপৃষ্ঠের নীচের বালুকণার মতো যা কেউ কোনদিন গুনে শেষ করতে পারবে না।”

23 প্রভুর এই বার্তা যিরমিয় গ্রহণ করল: 24 “যিরমিয়, তুমি কি শুনতে পাচ্ছো লোকরা কি বলছে? ঐ লোকরা বলছে, ‘প্রভু ইস্রায়েল ও যিহূদার দুই পরিবারের কাছ থেকে দূরে সরে গিয়েছেন। প্রভু তাদের নির্বাচন করেছেন, কিন্তু এখন তিনি তাদের একটি জাতি বলে গ্রহণ করেন না।’”

25 প্রভু বলেছেন, “দিন ও রাত্রির সঙ্গে আমার বন্দোবস্ত যদি না স্থায়ী হয় এবং যদি আমি পৃথিবী ও আকাশের জন্য বিধি তৈরী না করতাম, তাহলে হয়তো আমি ঐ লোকদের ত্যাগ করতাম। 26 তাহলে যাকোবের উত্তরপুরুষদের কাছ থেকেও সরে যেতাম এবং তাহলে হয়তো আমি দায়ূদের উত্তরপুরুষদের অব্রাহাম, ইস‌্হাক এবং যাকোবের উত্তরপুরুষদের শাসন করতে দিতাম না। কিন্তু দায়ূদ হল আমার সেবক এবং আমি ঐ লোকদের প্রতি দয়া দেখাব। আমি ওদের জন্য ভালো কিছু ঘটিয়ে দেব।”

গীতসংহিতা 3-4

দায়ূদের একটি গীত যখন থেকে তিনি তাঁর পুত্র অবশালোমের কাছ থেকে পালিয়ে গিয়েছিলেন।

প্রভু, আমার অসংখ্য শত্রু।
    বহু লোক আমার বিরুদ্ধে চলে গেছে।
বহু লোক আমার বিরুদ্ধে মন্দ কথা বলছে।
    তারা বলছে, “ঈশ্বর ওকে রক্ষা করবেন না!”

কিন্তু হে প্রভু, আপনিই আমার ঢালস্বরূপ।
    আপনি আমার গৌরব।
    প্রভু আপনি আমাকে গুরুত্বপূর্ণ করেছেন![a]

আমি প্রভুর কাছে প্রার্থনা করবো।
    পবিত্র পর্বত থেকে তিনি আমার ডাকে সাড়া দেবেন!

আমি শুয়ে পড়ি এবং বিশ্রাম নিই এবং আমি জানি, আবার আমি জেগে উঠবো।
    কেন? কারণ প্রভু আমায় আবৃত করে থাকেন। প্রভু আমায় রক্ষা করেন!
যদি হাজার সৈন্যও আমায় ঘিরে ফেলে,
    আমি ঐ শত্রুদের ভয়ে ভীত হব না!

প্রভু, উঠে দাঁড়ান।[b]
    হে আমার ঈশ্বর, আপনি এসে আমায় উদ্ধার করুন!
আপনি অসীম শক্তির অধিকারী!
    আমার শত্রুদের চোয়ালে আপনি যদি আঘাত করেন
    আপনি তাদের সবকটা দাঁতই ভেঙে দেবেন।

হে প্রভু, আপনার জয়!
    এবং আপনার আশীর্বাদ রয়েছে আপনার লোকদের ওপর।

পরিচালকের প্রতি: তন্ত্রবাদ্যসহ গাইবার জন্য দায়ূদের একটি গীত।

হে আমার ধার্ম্মিকতার ঈশ্বর, যখন আমি আপনার কাছে প্রার্থনা করি,
    আমার ডাকে সাড়া দেবেন!
আমার প্রার্থনা শুনুন, আমার প্রতি সদয় হোন!
    সঙ্কট থেকে আমায় পরিত্রাণ দিন!

হে মানব সন্তানগণ, আর কতদিন তোমরা আমার বিরুদ্ধে মন্দ কথা বলতে থাকবে?
    আমার সম্পর্কে বলার জন্য তোমরা নতুন নতুন মিথ্যার সন্ধান করছো। তোমরা মিথ্যা কথা বলতে ভালোবাসো।

তোমরা জানো যে, ঈশ্বর তাঁর অনুগামী ভালো লোকদের কথাই শোনেন।
    সুতরাং যখন আমি তাঁর কাছে প্রার্থনা করি তখন তিনি আমার কথা শোনেন।

যদি কোন কিছু তোমায় বিব্রত করে, তুমি রেগে যেতে পারো, কিন্তু পাপ করো না।
    যখন তুমি বিছানায় ঘুমোতে যাও, তখন তুমি অবশ্যই ঐ সব বিষয়ে চিন্তা করবে না এবং শান্ত থাকবে।
ঈশ্বরকে ধার্ম্মিকতার বলি উৎসর্গ কর
    এবং প্রভুর ওপর আস্থা রাখ।

অনেকে বলে, “কে আমাদের ঈশ্বরের ধার্ম্মিকতা দেখাবে?
    প্রভু, আপনার দীপ্তিময় মুখখানি আমাদের দেখতে দিন!”
প্রভু, আপনি আমায় প্রচণ্ড সুখী করেছেন!
    ফসলের সময়, যখন আমাদের কাছে প্রচুর শস্য এবং দ্রাক্ষারস ছিল তখনকার চেয়েও আমি এখন বেশী খুশী।
আমি বিছানায় গিয়ে নির্বিঘ্নে ঘুমিয়ে পড়ি। কেন?
    কারণ, হে প্রভু, নিরাপদে ঘুমোবার জন্য আপনি আমাকে শুইয়ে দেন।

Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)

Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International