Print Page Options
Previous Prev Day Next DayNext

M’Cheyne Bible Reading Plan

The classic M'Cheyne plan--read the Old Testament, New Testament, and Psalms or Gospels every day.
Duration: 365 days
Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)
Version
বিচারকর্ত্তৃগণের বিবরণ 17

মীখার মূর্ত্তিসমূহ

17 পাহাড়ের দেশ ইফ্রয়িমে মীখা নামে একজন লোক ছিল। মীখা তার মাকে বলল, “মা তোমার কি মনে পড়ে কেউ একজন তোমার 28 পাউণ্ড রূপো চুরি করেছিল? আমি শুনলাম তুমি এই নিয়ে অভিশাপ দিয়েছিলে। দেখ, আমার কাছেই সেই রূপো আছে। আমিই তো চুরি করেছিলাম।”

তার মা বলল, “বৎস, প্রভু তোমার মঙ্গল করুন।”

মায়ের কাছে মীখা 28 পাউণ্ড রূপো ফেরত দিয়ে দিল। মা বলল, “প্রভুর কাছে আমার এই রূপো হবে বিশেষ একটা উপহার। আমার পুত্রকে এটা দেব। সে একটা মূর্ত্তি গড়ে সেটা রূপো দিয়ে মুড়ে দেবে। তাই বলছি বাছা, এখন এই রূপো তোমার হাতেই ফিরিয়ে দিচ্ছি।”

কিন্তু মীখা সেটা মায়ের কাছে দিয়ে দিল। মা তখন তা থেকে প্রায় 5 পাউণ্ড রূপো নিয়ে একজন স্বর্ণকারকে দিল। স্বর্ণকার সেই রূপো দিয়ে একটা মূর্ত্তি গড়ল। মূর্ত্তিটা রাখা হল মীখার বাড়িতে। মীখার একটা মন্দির ছিল। সেখানে বিভিন্ন মূর্ত্তির পূজা হত। মীখা একটা এফোদ তৈরী করেছিল। সে আরও কয়েকটা পারিবারিক মূর্ত্তি তৈরী করেছিল। তারপর মীখা তার একজন পুত্রকে তার যাজক হিসেবে নির্বাচন করল। (সেই সময় ইস্রায়েলীয়দের কোন রাজা ছিল না। তাই প্রত্যেকেই খেয়াল খুশি মতো যা ভাল মনে করত তাই করত।)

যিহূদার বৈৎ‌লেহম শহরে একজন লেবীয় ছিল। সে যিহূদার পরিবারগোষ্ঠীতে থাকত। সে বৈৎ‌লেহম ছেড়ে অন্য একটি জায়গায় থাকবে বলে চলে গেল। যেতে যেতে সে এসে পড়ল মীখার বাড়িতে। ওর বাড়ি পাহাড়ি দেশ ইফ্রয়িমে। মীখা তাকে জিজ্ঞাসা করল, “তুমি কোথা থেকে আসছ?”

যুবকটি বলল, “আমি একজন লেবীয়, বৈৎ‌লেহম যিহূদা থেকে আসছি। বসবাসের জন্য জায়গা খুঁজছি।”

10 মীখা বলল, “তুমি আমার কাছেই থাকো। তুমি আমার পিতা হয়ে, যাজক হয়ে এখানে থাকো। প্রতি বছর আমি তোমাকে 4 পাউণ্ড রূপো দেবো। তাছাড়া খাওয়া-পরা তো দেবই।”

লেবীয় যুবকটি মীখার কথামত কাজ করল। 11 সে মীখার সঙ্গে থাকতে রাজি হল। মীখার নিজের পুত্রদের মতই সে থেকে গেল। 12 সে হল মীখার যাজক। সে মীখার বাড়ীতেই থেকে গেল। 13 মীখা বলল, “আজ বুঝলাম প্রভু আমার ওপর প্রসন্ন হয়েছেন; কারণ আমরা যাজক হিসেবে এমন একজনকে পেয়েছি যে লেবী পরিবারগোষ্ঠী থেকে এসেছে।”

প্রেরিত 21

পৌলের জেরুশালেম যাত্রা

21 ইফিষের মণ্ডলীর প্রাচীনদের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে আমরা সমুদ্র পথে সোজা কো দ্বীপে এলাম। পরদিন আমরা রোদঃ দ্বীপে গেলাম। রোদঃ থেকে পাতারায় চলে গেলাম। পাতারায় এমন একটি জাহাজ পেলাম যা পার হয়ে ফৈনীকিয়া অঞ্চলে যাবে। আমরা সেই জাহাজে চড়ে যাত্রা করলাম।

পরে আমরা যাবার পথে কুপ্র দ্বীপের কাছে এলাম। আমাদের উত্তরদিকে দ্বীপটিকে দেখতে পাচ্ছিলাম; কিন্তু সেখানে আমরা জাহাজ ভেড়ালাম না। আমরা সুরিয়ার দিকে এগিয়ে গেলাম, সোর শহরে জাহাজ থামানো হল, কারণ সেখানে জাহাজ থেকে কিছু মাল নামানোর ছিল। আমরা সেখানে কিছু খ্রীষ্টানুসারীর দেখা পেয়ে তাঁদের সঙ্গে সাতদিন কাটালাম। পবিত্র আত্মার মাধ্যমে তাঁরা পৌলকে জেরুশালেম যেতে নিষেধ করলেন। কিন্তু সেখানে থাকার সময় শেষ হলে আমরা রওনা দিলাম এবং যাত্রাপথে এগিয়ে চললাম। সেখানকার খ্রীষ্টানুসারীরা সকলে নিজেদের পরিবার ও ছেলে-মেয়েদের সঙ্গে নিয়ে এসে আমাদের বিদায় জানাতে শহরের বাইরে এলেন। সেখানে সমুদ্রতীরে আমরা হাঁটু গেড়ে বসে প্রার্থনা করে পরস্পরের কাছ থেকে বিদায় নিলাম। এরপর আমরা জাহাজে উঠলাম আর তাঁরা বাড়ি ফিরে গেলেন।

সোর থেকে যাত্রা করে আমরা তলিমায়িতে পৌঁছালাম। আর সেখানকার খ্রীষ্ট বিশ্বাসী ভাইদের শুভেচ্ছা জানিয়ে তাদের সঙ্গে একদিন থাকলাম। পরের দিন আমরা তলিমায়ি থেকে রওনা হয়ে কৈসরিয়ায় এলাম। সেখানে সুসমাচার প্রচারক ফিলিপের বাড়িতে উঠলাম। ইনি সেই সাতজন মনোনীত লোকদের মধ্যে একজন। আমরা সেখানে তাঁর সঙ্গে থাকলাম। এই ফিলিপের চারটি কুমারী কন্যা ছিলেন, এরা ভাববাণী বলতে পারতেন।

10 সেখানে বেশ কিছুদিন থাকার পর যিহূদিয়া থেকে আগাব নামে একজন ভাববাদী এসে আমাদের সঙ্গে দেখা করলেন। 11 তিনি আমাদের কাছে এসে পৌলের কোমর বন্ধনীটি নিয়ে নিজের হাত পা বেঁধে বললেন, “পবিত্র আত্মা এই কথা বলছেন, ‘এই কোমর বন্ধনীটি যার তাকে জেরুশালেমের ইহুদীরা এইভাবে বেঁধে অইহুদীদের হাতে তুলে দেবে।’”

12 সেই কথা শুনে আমরা ও যীশুর অন্য অনুগামীরা পৌলকে অনুরোধ করলাম যেন তিনি জেরুশালেমে না যান। 13 পৌল এর জবাবে বললেন, “তোমরা এ কি করছ? তোমরা এভাবে কান্নাকাটি করে আমার হৃদয় কি ভেঙে দিচ্ছ না? খ্রীষ্টের নামের জন্য আমি জেরুশালেমে কেবল শৃঙ্খলাবদ্ধ হবার জন্য যাব তাই নয়, আমি সেখানে মরতেও প্রস্তুত!”

14 তাঁকে যখন আমরা জেরুশালেমে যাওয়া থেকে বিরত করতে পারলাম না, তখন আর অনুরোধ না করে চুপ করে গেলাম আর বললাম, “প্রভুর ইচ্ছাই পূর্ণ হোক্।”

15 এরপর আমরা প্রস্তুত হয়ে জেরুশালেমে রওনা হলাম। 16 কৈসরিয়া থেকে কয়েকজন অনুগামী (খ্রীষ্টানুসারী) আমাদের সঙ্গে চললেন। তারা ম্লাসোন নামে একজন লোকের বাড়িতে আমাদের তুললেন। ইনি ছিলেন কুপ্রের লোক, গোড়ায় যাঁরা খ্রীষ্টানুসারী হয়েছিলেন, ইনি তাঁদের অন্যতম। তাঁর বাড়ীতে আমাদের নিয়ে যাওয়া হল যাতে আমরা সেখানে থাকতে পারি।

যাকোবের সঙ্গে পৌলের সাক্ষাৎকার

17 জেরুশালেমের বিশ্বাসীরা আমাদের দেখে বড়ই খুশী হলেন। 18 পরদিন পৌল আমাদের নিয়ে যাকোবের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলেন। মণ্ডলীর প্রাচীনরা সেখানে ছিলেন। 19 সেখানে পরস্পর শুভেচ্ছা বিনিময়ের পর পৌল তাঁর কাজের মাধ্যমে অইহুদীদের মধ্যে ঈশ্বর যেসব কাজ করেছেন তা বিস্তারিতভাবে জানালেন।

20 এই কথা শুনে তাঁরা ঈশ্বরের প্রশংসা করতে লাগলেন। তাঁরা পৌলকে বললেন, “ভাই, আপনি তো জানেন, হাজার হাজার ইহুদী আজ খ্রীষ্টবিশ্বাসী হয়েছে। কিন্তু তারা তাদের মোশির বিধি-ব্যবস্থা পালন করতে বড়ই উৎসাহী। 21 তারা আপনার বিষয়ে এই কথা শুনেছে যে অইহুদীদের মধ্যে বাসকারী প্রবাসী ইহুদীদের আপনি নাকি মোশির বিধি-ব্যবস্থা অনুসারে চলতে বারণ করেন। আপনি তাদের ছেলেদের সুন্নত করা বা ইহুদী রীতিনীতি মেনে চলা নাকি নিষেধ করেন!

22 “আমরা কি করব? তারা নিশ্চয় শুনবে যে আপনি এখানে আছেন। 23 তাই আমরা যা বলি আপনি তাই করুন। আমাদের মধ্যে চারজন লোকের একটা মানত আছে। 24 আপনি তাদের সঙ্গে নিয়ে শুচিকরণের অনুষ্ঠানে যোগ দিন, এজন্য তাদের যা খরচ পড়ে আপনি তা দিয়ে দিন। আর তারা যেন তাদের মাথা নেড়া করে। তাহলে সকলে জানবে যে আপনার বিষয়ে যে সব কথা ওরা শুনেছে সে সব সত্য নয়, বরং আপনি নিজে মোশির বিধি-ব্যবস্থা যথারীতি পালন করেন।

25 “অইহুদীদের মধ্য থেকে যারা খ্রীষ্টবিশ্বাসী হয়েছে, তাদের উদ্দেশ্যে আমরা লিখেছি যে:

‘তারা যেন প্রতিমার প্রসাদ,

রক্ত, গলাটিপে মারা প্রাণীর মাংস না খায়

ও যৌন পাপ থেকে দুরে থাকে।’”

পৌল বন্দী হলেন

26 তখন পৌল সেই কয়েকজনকে নিয়ে তাদের সঙ্গে নিজেকে শুচি করলেন। তারপর মন্দিরে গিয়ে শুচিকরণ অনুষ্ঠান কত দিনে সম্পূর্ণ হবে ও তাদের প্রত্যেকের জন্য কবে নৈবেদ্য উৎসর্গ করা হবে তাও জানালেন।

27 সাতদিন প্রায় শেষ হয়ে এসেছে, এমন সময় এশিয়া দেশের কয়েকজন ইহুদী মন্দিরের মধ্যে পৌলকে দেখতে পেয়ে তাঁর বিরুদ্ধে নানা কথা বলে লোকদের উত্তেজিত করে তুলল, আর পৌলকে ধরে চিৎকার করে বলতে লাগল, 28 “হে ইস্রায়েলীয়রা, এদিকে এগিয়ে এসে সাহায্য কর! এ সেই লোক, এই লোকই আমাদের জাতির বিরুদ্ধে বলে বেড়াচ্ছে, আমাদের বিধি-ব্যবস্থার বিপরীত শিক্ষা দিচ্ছে আর এই মন্দিরের বিরুদ্ধেও কথা বলছে। এই হল সেই লোক যে সর্বত্র এই শিক্ষা দিয়ে বেড়াচ্ছে। দেখ মন্দিরের চত্বরে সে গ্রীকদের ঢুকিয়ে এই মন্দির অপবিত্র করেছে!” 29 (কারণ তারা এর আগে পৌলের সঙ্গে ইফিষের ত্রফিমকে শহরের মধ্যে দেখেছিল, মনে করেছিল পৌল তাঁকে মন্দিরের মধ্যে এনেছেন। ত্রফিম ছিলেন জাতিতে গ্রীক এবং ইফিষের লোক।)

30 সমগ্র জেরুশালেমে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ল আর লোকেরা একসঙ্গে ছুটল। তারা পৌলকে ধরে টানতে টানতে মন্দির থেকে বার করে দিল। সঙ্গে সঙ্গে মন্দিরের দরজা বন্ধ হয়ে গেল। 31 লোকেরা পৌলকে হত্যা করার চেষ্টা করছিল। রোমান সেনাপতির কাছে খবর পৌঁছলো যে সারা জেরুশালেম শহরে প্রচণ্ড গোলমাল শুরু হয়েছে। 32 তিনি তখনই সৈন্যদের ও তাদের কর্মকর্তাদের নিয়ে সেখানে ছুটে এলেন। ইহুদীরা যখন সেনাপতিকে ও তার সঙ্গে সৈন্যদের দেখল, তখন পৌলকে প্রহার করা বন্ধ করল।

33 তখন সেনাপতি কাছে এসে পৌলকে গ্রেপ্তার করে তাঁকে দুটো শেকলে বাঁধতে হুকুম করলেন। এরপর সেনাপতি জিজ্ঞেস করলেন, “এ কে, এ কি দোষ করেছে?” 34 তখন সেই ভীড়ের মধ্যে কেউ কেউ একরকম কথা বলল, আবার কেউ কেউ অন্য রকম কথা বলল। এই চেঁচামেচিতে তিনি কিছুই ঠিক করতে না পেরে পৌলকে দুর্গের মধ্যে দিয়ে যাবার হুকুম করলেন। 35 সমস্ত লোকেরা তাদের অনুসরণ করছিল। পৌল যখন সিঁড়ির কাছে এসেছেন, তখন জনতা এতই হিংস্র হয়ে উঠল যে সেনারা পৌলকে কাঁধে করে বয়ে নিয়ে যেতে লাগল। 36 কারণ জনতা চিৎকার করে বলছিল, “ওকে শেষ করে ফেলো!”

37 তারা পৌলকে দুর্গের ভেতর দিয়ে নিয়ে যেতে চাইলে পৌল সেনাপতিকে বললেন, “আমি কি আপনাকে কিছু বলতে পারি?”

সেনাপতি বললেন, “তুমি দেখছি গ্রীক বলতে পার? 38 তাহলে তুমি সেই মিশরীয় নও যে কিছু সময় পূর্বে বিদ্রোহী হয়েছিল ও চার হাজার সন্ত্রাসবাদীকে নিয়ে মরুপ্রান্তরে পালিয়েছিল?”

39 তখন পৌল বললেন, “না, আমি একজন ইহুদী, কিলিকিয়ার তার্ষ নামে এক প্রসিদ্ধ শহরের বাসিন্দা। আমি আপনাকে অনুরোধ করছি, এই লোকদের কাছে আমায় কিছু বলতে দিন।”

40 সেনাপতি অনুমতি দিলে পৌল সিঁড়ির ওপর দাঁড়িয়ে লোকদের শান্ত হবার জন্য হাত নেড়ে ইঙ্গিত করলেন। সবাই যখন চুপ করল তখন তিনি ইব্রীয় ভাষায় বলতে শুরু করলেন।

যিরমিয় 30-31

প্রত্যাশার প্রতিশ্রুতি

30 ঈশ্বরের কাছ থেকে যিরমিয়র কাছে এই বার্তা এসেছিল। ইস্রায়েলের ঈশ্বর প্রভু বললেন, “আমি যা বলেছি, যিরমিয়, তুমি তা একটি খাতায় লিখে রাখো। তারপর তা দিয়ে তুমি নিজের জন্য এই বইটি লিখো। যা বলছি তা কর কারণ এমন দিন আসবে যেদিন আমি ইস্রায়েল এবং যিহূদার লোকদের নির্বাসন থেকে ফিরিয়ে আনব।” এই হল প্রভুর বার্তা। “আমি তাদের পূর্বপুরুষদের যে দেশ দিয়েছিলাম সেখানে তাদের ফিরিয়ে দেব। তখন আমার লোকরা আর এক বার সেই জমির মালিকানা পাবে।”

প্রভু ইস্রায়েলের এবং যিহূদার লোকদের সম্বন্ধে এই বার্তা উচ্চারণ করেছিলেন। প্রভু যা বলেছিলেন তা হল:

“আমরা শুনতে পাচ্ছি ভয় পেয়ে লোকরা কাঁদছে!
    লোকরা ভীত, সেখানে কোন শান্তি নেই!

“এই প্রশ্নটি করো এবং তার সম্বন্ধে ভাবো:
    একজন পুরুষ কি একটি শিশুকে জন্ম দিতে পারে? নিশ্চয়ই নয়!
তাহলে কেন আমি দেখতে পাচ্ছি প্রত্যেকটি শক্তিশালী পুরুষ
    প্রসব বেদনায় কাতর একজন মহিলার মতো পেটে হাত দিয়ে আছে?
কেন প্রত্যেকটি মানুষের মুখ মৃত ব্যক্তির মতো পাঁশুটে বর্ণ ধারণ করেছে?
    কারণ তারা প্রত্যেকে হঠাৎ‌‌ ভীষণ ভয় পেয়েছে।

“যাকোবের জন্য এটা একটা ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ সময়।
    এই সময়টা একটা খুব বড় অশান্তির সময়।
আর কখনও এরকম সমস্যা সঙ্কুল সময় আসবে না।
    কিন্তু যাকোব রক্ষা পাবে।”

এই হল সর্বশক্তিমান প্রভুর বার্তা: “সেই সময় আমি ইস্রায়েল ও যিহূদার লোকদের কাঁধে চাপানো জোয়াল সরিয়ে নেব। তোমাদের দড়ির বাঁধন খুলে দেব। অন্য জাতির লোকরা আর কখনও আমার লোকদের দাসত্ব করতে বাধ্য করবে না। তারা আর কোন বিদেশী রাজ্যের সেবা করবে না। তারা শুধু প্রভু তাদের ঈশ্বরের সেবা করবে এবং তারা তাদের রাজা দায়ূদের সেবা করবে। আমি রাজাকে তাদের কাছে পাঠাব।

10 “সুতরাং যাকোব, আমার ভৃত্যদের ভয় পেও না!”
    এই হল প্রভুর বার্তা।
“ইস্রায়েল ভয় পেও না।
    আমি তোমাকে রক্ষা করব।
রক্ষা করব বন্দীদের পরবর্তী উত্তরপুরুষদেরও।
    আমি তাদের নির্বাসন থেকে ফিরিয়ে আনব।
আবার যাকোব শান্তি ফিরে পাবে।
    লোকরা তাকে আর বিরক্ত করবে না।
সেখানে আর কোন শত্রু থাকবে না
    যাকে আমার লোকরা ভয় পাবে।
11 যিহূদা ও ইস্রায়েলের লোকরা আমি তোমাদের সঙ্গে আছি।”
    এই হল প্রভুর বার্তা।
“আমি তোমাদের রক্ষা করবো।
    একথা সত্যি যে আমি তোমাদের অন্য দেশে পাঠিয়েছিলাম।
    আমি ঐসব দেশগুলিকে ধ্বংস করব,
কিন্তু তোমাদের আমি ধ্বংস করব না।
    খারাপ কাজের শাস্তি তোমাদের পেতেই হবে।
আমি তোমাদের ন্যায্যভাবে শিক্ষা দেব।
    আমি তোমাদের শাস্তি না নিয়ে যেতে দেব না।”

12 প্রভু বললেন:
“এমন কোন আঘাত আছে কি যা সারে না?
    ইস্রায়েল এবং যিহূদার লোকেরা, তোমাদের ক্ষত এমন যে তা সারবে না।
13 এমন কোন ব্যক্তি নেই যে তোমাদের ক্ষতের যত্ন নিতে পারে।
    তাই তোমাদের আঘাত সারবে না।
14 তোমরা বহু দেশের সঙ্গে বন্ধুত্ব পাতিয়েছিলে
    কিন্তু তোমাদের দিকে তারা প্রয়োজনের সময় ফিরেও তাকায়নি।
    তোমাদের ‘বন্ধুরা’ তোমাদের ভুলে গিয়েছে।
আমি তোমাদের শত্রুর মতো কঠিন আঘাত করেছিলাম।
    আমি তোমাদের কঠোর শাস্তি দিয়েছিলাম।
তোমরা বহু মারাত্মক পাপ করেছিলে বলে
    তোমাদের সঙ্গে আমি ঐ ব্যবহার করেছি।
15 ইস্রায়েল ও যিহূদার লোকরা কেন তোমরা তোমাদের ক্ষত নিয়ে এতো চিৎকার করেছো?
    ক্ষতের যন্ত্রণা তো হবেই এবং কেউ তা সারাতে পারবে না।
আমি প্রভু, তোমাদের বহু ভয়ঙ্কর
    পাপের ফলস্বরূপ এই শাস্তি দিয়েছি।
16 আমি প্রভু, তোমাদের ধ্বংস করেছিলাম।
    কিন্তু এখন ওদের ধ্বংস হবার পালা।
ইস্রায়েল ও যিহূদা তোমাদের শত্রুরা এবার বন্দী হবে।
ওরা তোমাদের জিনিস চুরি করেছিল।
    এবার অন্যরা ওদের জিনিসপত্র চুরি করবে।
ওরা যুদ্ধের সময় তোমাদের জিনিস নিয়ে গিয়েছিল।
    এবার যুদ্ধের সময় ওদের জিনিস অন্যরা নিয়ে যাবে।
17 আমি তোমাদের আবার স্বাস্থ্যবান করে তুলব।
    আমি তোমাদের ক্ষত সারিয়ে দেব।” এই হল প্রভুর বার্তা।
“কেন? কারণ লোকরা তোমাদের জাতিচ্যূত বলে উল্লেখ করেছে।
    ওরা বলেছিল, ‘সিয়োনকে দেখাশোনা করবার কেউ নেই।’”

18 প্রভু বলেছেন:
“যাকোব পরিবারগোষ্ঠীর লোকরা বর্তমানে নির্বাসিত হলেও
    তারা ফিরে আসবে
    এবং আমি যাকোবের বাড়ীগুলির ওপর করুণা দেখাব।
এখন শহরটি ধ্বংসপ্রাপ্ত গৃহগুলি দ্বারা আবৃত একটি শূন্য পাহাড় মাত্র।
    কিন্তু এই শহর আবার পুনর্নিমিত হবে
    এবং আবার রাজপ্রাসাদ তৈরী হবে নির্দিষ্ট স্থানে।
19 আবার শহরটি গমগম করবে লোকদের গানে ও প্রশংসায়।
    কেউ তাদের উপহাস করবে না।
আমি যিহূদা ও ইস্রায়েলের লোকদের অনেক সন্তান দেব।
    আমি তাদের জন্য গৌরব আনব।
    কেউ তাদের নীচ নজরে দেখবে না।
20 অনেক আগে যেমন ইস্রায়েলের পরিবার ছিল তেমনই হবে যাকোবের পরিবার।
    যিহূদা ও ইস্রায়েলের যেমন পরিবার ছিল তেমনই হবে যাকোবের পরিবার।
যিহূদা ও ইস্রায়েলকে আমি শক্তিশালী করে তুলব।
    এবং যারা তাদের ক্ষতি করার চেষ্টা করবে আমি তাদের শাস্তি দেব।”
21 প্রভু বলেন,
“তাদের নিজেদের একজনই নেতৃত্ব দেবে।
    সেই শাসক আমারই লোকের থেকে আসবে।
তারা আমার কাছের লোক হবে।
    আমি তাদের নেতাকে আমার কাছে আসতে বলব
    এবং সে হবে আমার কাছের লোক।
22 তোমরা হবে আমার লোক
    আর আমি হব তোমাদের ঈশ্বর।”

23 প্রভু ভীষণ ক্রুদ্ধ ছিলেন!
    তিনি দুষ্ট ব্যক্তিদের শাস্তি দিয়েছিলেন।
তাঁর দেওয়া শাস্তি এসেছিল
    ঘূর্ণি ঝড়ের মতো।
24 প্রভুর ক্রোধ প্রশমিত হবে না
    যতক্ষণ না যেরকম পরিকল্পনা করেছেন সেই ভাবে শাস্তি দেন।
    শেষের দিনগুলিতে তোমরা এসব বুঝতে পারবে।

নতুন ইস্রায়েল

31 প্রভু এই কথাগুলি বলেছিলেন, “সে সময় আমি ইস্রায়েলের সমস্ত পরিবারবর্গের ঈশ্বর হব। এবং তারা হবে আমার লোক।”

প্রভু বলেছেন:
“যারা শত্রুর তরবারির আক্রমণ থেকে পালিয়ে বেঁচেছিল তারা মরুভূমিতেই আরাম খুঁজে পাবে।
    ইস্রায়েল সেখানে বিশ্রামের জন্য যাবে।”
বহুদূর থেকে প্রভু
    লোকদের দৃষ্টিগোচরে আসবেন।

প্রভু বলেছেন, “আমি তোমাদের একটি অফুরন্ত ভালবাসা দিয়ে ভালবেসে ছিলাম।
সেই জন্য আমি তোমাদের প্রতি
    দয়া দেখানো চালিয়ে গিয়েছিলাম।
ইস্রায়েল, আমার কনে, তোমাকে আবার নতুন করে তৈরী করব।
    তুমি আবার একটি দেশ হবে।
পুনরায় তুমি তোমার খঞ্জনীসমূহ তুলে নেবে।
    খুশীর জোয়ার ভাসা লোকদের সঙ্গে তালে তাল মিলিয়ে তুমিও নেচে উঠবে।
ইস্রায়েলের কৃষক, তোমরা আবার দ্রাক্ষা চাষ করবে।
শময়িয়র শহরের চারপাশের পাহাড় ঘিরে
    তোমরা দ্রাক্ষাক্ষেত তৈরী করবে।
কৃষকরা সেই দ্রাক্ষাক্ষেত থেকে উৎপন্ন হওয়া দ্রাক্ষার ফসল তুলবে
    এবং ঐ দ্রাক্ষা খেয়ে উপভোগ করবে।
একটা নির্দিষ্ট সময়ে পাহারাদার
    এই বাণী চিৎকার করে বলবে:
‘চলো, সিয়োনে গিয়ে আমাদের প্রভু,
    আমাদের ঈশ্বরের উপাসনা করি!’
এমন কি ইফ্রয়িম পার্বত্য প্রদেশে পাহারাদাররাও ঐ বাণী চিৎকার করে বলবে।”

প্রভু বললেন,
“সুখী হও এবং যাকোবের জন্য গান গাও!
    ইস্রায়েলের জন্য চিৎকার করো, ইস্রায়েল হল মহান রাষ্ট্র।
প্রশংসা কর এবং চিৎকার করে বলো:
    ‘প্রভু তাঁর লোকদের রক্ষা করেছেন!
    ইস্রায়েলের যারা বন্দী হয়েছিল তাদের সবাইকে প্রভু রক্ষা করেছেন।’
মনে রেখো, আমি ইস্রায়েলকে
    ঐ উত্তরের দেশ থেকে ফিরিয়ে নিয়ে আসব।
আমি উত্তরের বহু দূরের জায়গা থেকে
    ইস্রায়েলীয়দের একত্রিত করব।
তাদের মধ্যে কিছু লোক থাকবে অন্ধ ও পঙ্গু।
    কিছু মহিলা থাকবে গর্ভবতী।
    কিন্তু অনেক অনেক মানুষ ফিরে আসবে সেখানে।
তারা কাঁদতে কাঁদতে ফিরে আসবে
    কিন্তু আমি তাদের সমস্ত রকম সুযোগ সুবিধা দেব।
আমি তাদের জলপ্রবাহের পাশ দিয়ে নেতৃত্ব দেব।
    আমি তাদের মসৃণ রাস্তার ওপর নেতৃত্ব দেব
    যাতে তারা হোঁচট না খায়।
আমি এরকম করব যেহেতু আমি ইস্রায়েলের পিতা
    এবং ইফ্রয়িম আমার প্রথম সন্তান।

10 “জাতিসমূহ, প্রভুর কথাগুলি শোন!
সমুদ্রের ধারে দূর দেশগুলিতে এই বার্তা বল।
‘ঈশ্বর ইস্রায়েলের লোকদের ছড়িয়ে দিয়েছিলেন,
    কিন্তু তিনি তাদের একত্র করে ফিরিয়ে আনবেন।
এবং তিনি তাঁর মেষপালের (লোকেদের) ওপর
    নজর রাখবেন মেষপালকের মতো।’
11 প্রভু যাকোব পরিবারকে ফিরিয়ে আনবেন।
    তিনি তাঁর লোকদের তাদের চেয়ে শক্তিশালী লোকদের হাত থেকে রক্ষা করবেন।
12 সিয়োনের শিখরে উঠে আসবে ইস্রায়েলের মানুষ।
    তারা আনন্দে উল্লাস করবে।
তাদের মুখমণ্ডলের ওপর আনন্দ ও সুখের দীপ্তি দেখা দেবে।
    প্রভু যে সমস্ত ভালো জিনিষগুলি তাদের দেবেন সে সম্বন্ধে তারা খুশী হবে।
প্রভু তাদের শস্যসমূহ, নতুন দ্রাক্ষারস,
    জলপাইয়ের তেল, মেষ এবং গরুসমূহ দেবেন।
ইস্রায়েলের লোকের
    আর কোন সমস্যা থাকবে না।
তাদের জীবন হয়ে উঠবে একটি বাগানের মত
    যাতে অনেক জল আছে।
13 যুবতীরা আনন্দে নৃত্য করবে।
    যুবক ও বৃদ্ধরাও সেই নৃত্যে অংশ নেবে।
আমি তাদের শোককে আনন্দে পরিণত করব।
    আমি ইস্রায়েলের লোকদের আরাম দেব
    এবং দুঃখের বদলে তাদের আনন্দ দেব।
14 আমি তাদের যাজকদের প্রচুর খাদ্য দেব।
    আমার লোকরা, আমি তাদের যে ভালো জিনিষগুলি দেব তাতে সন্তুষ্ট হবে।”
এই হল প্রভুর বার্তা।

15 প্রভু বললেন,
    “রামা থেকে—কান্না ও দুঃখের শব্দ শোনা যাবে।
রাহেলা[a] তার সন্তানদের জন্য কাঁদবে।
    মৃত সন্তানদের জন্য
    রাহেল আরাম নিতে অস্বীকার করবে।”

16 কিন্তু প্রভু বললেন, “কান্না থামাও।
    চোখের জল মুছে নাও!
তুমি তোমার কৃতকার্যের জন্য পুরস্কৃত হবে।”
এই হল প্রভুর বার্তা।
“ইস্রায়েলের লোকরা তাদের শত্রুর দেশ থেকে ফিরে আসবে।
17 ইস্রায়েল, তোমার জন্য আশা আছে।”
এই হল প্রভুর বার্তা।
    “তোমার সন্তানরা তাদের স্বদেশে ফিরে আসবে।
18 ইফ্রয়িমের কান্না আমি শুনতে পেয়েছি।
    ইফ্রয়িম কাঁদতে কাঁদতে বলছে: ‘প্রভু আপনি আমাকে সত্যি শাস্তি দিয়েছেন এবং আমি আমার শিক্ষা পেয়ে গিয়েছি।
    আমি ছিলাম একটি বাছুরের মতো যাকে কখনও শিক্ষা দেওয়া হয়নি।
আপনিই আমার প্রভু ঈশ্বর।
    অনুগ্রহ করে আমার শাস্তি তুলে নিন।
    আমি আপনার কাছে ফিরে আসব।
19 প্রভু আমি আপনার কাছ থেকে দূরে সরে গিয়েছিলাম
    কিন্তু আমি আমার ভুল বুঝতে পেরেছি।
    তাই আমি আমার হৃদয় এবং আমার জীবন পরিবর্তন করেছি।
আমি আমার বোকামিতে নিজেই ভীষণ লজ্জিত।
    আমার যৌবনের খারাপ কাজগুলো আজ আমাকেই অস্বস্তিতে ফেলে দিচ্ছে।’”
20 প্রভু বললেন,
“তুমি জানো যে ইফ্রয়িম আমার প্রিয় পুত্র।
    আমি তাকে ভালোবাসি।
ভীষণ ভালোবাসি
    এবং আমি তাকে সত্য স্বাচ্ছন্দ্য দিতে চাই।”

21 “ইস্রায়েলবাসী, রাস্তার সংকেত চিহ্নগুলিকে স্থাপন কর।
    পথ চিহ্নগুলি তুলে ধরো যেগুলি বাড়ীর দিকে নির্দেশ করে।
যে রাস্তায় তুমি হেঁটে এসেছ
    তা লক্ষ্য করো এবং মনে রেখো।
ইস্রায়েল, আমার কনে, ঘরে ফিরে এসো।
    ফিরে এসো তোমার নিজের শহরগুলিতে।
22 অবিশ্বস্ত কন্যা, কতদিন তুমি এভাবে ঘুরে বেড়াবে?
    কবে তুমি ঘরে ফিরবে?

“প্রভু যখন দেশে কোন নতুন কিছু সৃষ্টি করেন
    (তখন) একজন পুরুষকে একজন মহিলা ঘিরে থাকে।”

23 ইস্রায়েলের ঈশ্বর প্রভু সর্বশক্তিমান বললেন: “যিহূদার লোকদের জন্য আমি আবার ভাল কিছু করব। যাদের বন্দী করে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল তাদের আমি ফিরিয়ে আনব। সেই সময়, যিহূদা শহরগুলির লোকরা আবার ঐ কথাগুলি বলবে: ‘ধার্মিক বাসস্থান ও পবিত্র পর্বত, প্রভু তোমাদের আশীর্বাদ করুন।’

24 “যিহূদার সমস্ত শহরে শান্তি বিরাজ করবে। কৃষক এবং মেষপালকরা উভয়েই শান্তিতে বসবাস করবে। 25 যারা ক্লান্ত এবং অসুস্থ তাদের আমি বিশ্রাম ও শক্তি যোগাব এবং যারা দুঃখিত ছিল তাদের ইচ্ছাসমূহ পূর্ণ করব।”

26 একথা শোনার পর আমি (যিরমিয়) জেগে উঠে চারি দিকে তাকালাম। আমার খুব ভাল ঘুম হয়েছিল।

27 এই হল প্রভুর বার্তা। “সেই দিন আসছে যখন আমি যিহূদা ও ইস্রায়েলের লোকদের তাদের সংখ্যায় বৃদ্ধি পেতে সাহায্য করব। আমি তাদের সন্তান ও গবাদি পশুদের সংখ্যায় বেড়ে উঠতে সাহায্য করব এটা হবে গাছ পোঁতা ও তার দেখাশোনা করবার মত। 28 অতীতে আমি ইস্রায়েল ও যিহূদার ওপর নজর রেখেছিলাম কিন্তু সেটা ছিল তাদের ভেঙে ফেলবার জন্য। আমি তাদের ধ্বংস করেছিলাম। আর এখন তাদের গড়ে তোলবার জন্য এবং তাদের শক্তিশালী করবার জন্য তাদের ওপর নজর রাখব।” এই হল প্রভুর বার্তা।

29 “লোকরা আর কখনও বলবে না:

‘পিতামাতা টক দ্রাক্ষা খেয়েছিল,
    কিন্তু তাদের সন্তানরা টক স্বাদ পেয়েছিল।’

30 না, প্রত্যেক ব্যক্তি তার নিজের পাপের জন্যই মারা যাবে। যে ব্যক্তি টক দ্রাক্ষা খাবে সে নিজেই টক স্বাদ পাবে।”

নতুন বন্দোবস্ত

31 প্রভু এই কথাগুলি বলেছেন: “সময় আসছে যখন আমি নতুন একটি চুক্তি করব যিহূদা ও ইস্রায়েলের পরিবারের সঙ্গে। 32 আমি তাদের পূর্বপুরুষদের সঙ্গে যে চুক্তি করেছিলাম এটা সেরকম নয়। তাদের মিশর থেকে বাইরে নিয়ে আসার সময় আমি ঐ চুক্তি করেছিলাম। আমি ছিলাম তাদের প্রভু, কিন্তু তারা সেই চুক্তি ভেঙে ফেলেছিল।” এই হল প্রভুর বার্তা।

33 “ভবিষ্যতে, আমি এই বন্দোবস্ত ইস্রায়েলীয়দের সঙ্গে করব।” এটি হল প্রভুর বার্তা। “আমি আমার শিক্ষামালা তাদের মনে গেঁথে দেব এবং তাদের হৃদয়ে লিখে দেব। আমি হব তাদের ঈশ্বর আর তারা হবে আমার লোক। 34 লোকদের তাদের প্রতিবেশীদের অথবা তাদের আত্মীয়দের প্রভুকে জানতে শেখাবার কোন প্রয়োজন পড়বে না। কারণ ক্ষুদ্রতম থেকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পর্যন্ত সব লোকরা আমায় জানবে।” এই হল প্রভুর বার্তা। “আমি তাদের দুষ্ট কাজগুলি ক্ষমা করে দেব এবং তাদের পাপসমূহ মনে রাখব না।”

প্রভু কখনও ইস্রায়েল ত্যাগ করবেন না

35 দিনের রৌদ্র কিরণ প্রভুর সৃষ্টি
    এবং তিনিই সৃষ্টি করেছেন চাঁদ, তারাদের ঔজ্জ্বল্য।
প্রভু সৃষ্টি করেছেন সমুদ্রতট যেখানে ঢেউ এসে আছড়ে পড়ে।
    তাঁর নাম হল সর্বশক্তিমান প্রভু।

36 প্রভু একথাগুলি বললেন, “ইস্রায়েলের উত্তরপুরুষ একটি জাতি হওয়া থেকে বিরত হবে।
    তারা একটি জাতি হওয়া থেকে বিরত হবে তখনই যদি আমি সূর্য, চন্দ্র, তারা এবং সমুদ্রের ওপর থেকে আমার নিয়ন্ত্রণ হারাই।”

37 প্রভু বললেন: “ইস্রায়েলের উত্তরপুরুষকে আমি কখনও অস্বীকার করব না।
    তাদের তখনই বাতিল করব যখন তারা আকাশের পরিমাপ করতে পারবে
    এবং পৃথিবীর নীচের সমস্ত গোপন তথ্য জানতে পারবে।
একমাত্র তখনই আমি তাদের অসৎ‌ কর্মসমূহের জন্য বাতিল করব।”
    এই হল প্রভুর বার্তা।

নতুন জেরুশালেম

38 এই হল প্রভুর বার্তা, “দিন আসছে যখন প্রভুর জন্য জেরুশালেম শহর পুর্ননির্মিত হবে। হননেলের দুর্গ থেকে কোণের ফটক পর্যন্ত শহরে প্রতিটি জিনিষকে আবার গড়ে তোলা হবে। 39 শহরের সীমান্তরেখা টানা হবে প্রান্তিক ফটক থেকে সোজাসুজি গারেব পাহাড় পর্যন্ত, তারপর সেই রেখা ঘুরে যাবে গোয়া পর্যন্ত। 40 উপত্যকাটি, যেখানে মৃতদেহগুলি ও ছাই ইতস্ততঃ ছড়ানো রয়েছে, প্রভুর কাছে পবিত্র হয়ে উঠবে। কিদ্রোণ উপত্যকার একেবারে নীচ পর্যন্ত সমস্ত ছাদগুলি, অশ্বফটকের কোণ পর্যন্ত সমস্ত রাস্তাগুলিও প্রভুর কাছে পবিত্র হয়ে উঠবে। জেরুশালেম শহরকে আর কখনো ধ্বংস করা হবে না অথবা বিচ্ছিন্ন করা হবে না।”

মার্ক 16

যীশুর পুনরুত্থানের খবর

(মথি 28:1-8; লূক 24:1-12; যোহন 20:1-10)

16 বিশ্রাম শেষ হলে মরিয়ম মগ্দলীনী, যাকোবের মা মরিয়ম সুগন্ধি মশলা কিনলেন যেন গিয়ে যীশুর দেহে মাখাতে পারেন। সপ্তাহের প্রথম দিন ভোরে, ঠিক সূর্য ওঠার পরই তাঁরা সমাধিগুহার কাছে গেলেন। তাঁরা নিজেদের মধ্যে বলাবলি করছিলেন, “কে আমাদের জন্য সমাধিগুহার মুখ থেকে পাথরটি সরিয়ে দেবে?”

তখন তাঁরা দেখতে পেলেন যে পাথরটা সরানো রয়েছে। সেই পাথরটা মস্ত বড় ছিল। পরে তাঁরা সমাধিগুহার ভিতরে গিয়ে দেখলেন, একজন যুবক ডানদিকে সাদা পোশাক পরে বসে আছেন; তাতে তারা ভয়ে চমকে উঠলেন।

তখন তিনি তাঁদের বললেন, “ভয় পেও না। তোমরা তো নাসরতীয় যীশুর খোঁজ করছ যাকে ক্রুশে বিদ্ধ করা হয়েছিল? তিনি বেঁচে উঠেছেন! তিনি এখানে নেই। দেখ, এখানে তাঁকে রাখা হয়েছিল। যাও, পিতর ও তাঁর অন্যান্য শিষ্যদের বল গিয়ে, দেখ তিনি তোমাদের আগেই গালীলে যাচ্ছেন। তিনি যেমন তোমাদের বলেছিলেন, ঠিক সেখানে তাঁকে দেখতে পাবে।”

তখন তাঁরা সমাধিগুহা থেকে বেরিয়ে দৌড়ালেন, কারণ তাঁরা ভীষণ ভয় পেয়েছিলেন এবং কিছুই বুঝে উঠতে পারলেন না। তাঁরা কাউকে কিছু বললেন না, কারণ তাঁরা ভয় পেয়েছিলেন।[a]

শিষ্যদের মধ্যে কেউ কেউ যীশুর দেখা পেলেন

(মথি 28:9-10; যোহন 20:11-18; লূক 24:13-35)

তাঁর পুনরুত্থানের পর সপ্তাহের প্রথম দিনে অর্থাৎ রবিবার ভোরে, তিনি প্রথমে মগ্দলীনী মরিয়মকে দেখা দিলেন, যার থেকে তিনি সাতটা ভূতকে তাড়িয়েছিলেন। 10 মরিয়ম গিয়ে যাঁরা যীশুর সঙ্গে থাকতেন তাঁদের এই কথা বললেন। তাঁরা তখনও শোকে কাঁদছিলেন; 11 কিন্তু যখন শুনলেন যে যীশু বেঁচে আছেন এবং তাঁকে দেখা দিয়েছেন, তাঁরা ঐ কথা বিশ্বাস করলেন না।

12 পরে তাদের মধ্যে দুজন যখন গ্রামের দিকে হেঁটে যাচ্ছিলেন এমন সময় তিনি তাঁদের দেখা দিলেন, আর তাঁকে অন্যরকম দেখাল। 13 তাঁরা গিয়ে অন্য বাকী সব শিষ্যদের এটা জানালেন, কিন্তু তাঁদের কথাতেও তাঁরা বিশ্বাস করলেন না।

প্রেরিতদের সঙ্গে যীশুর কথোপকথন

(মথি 28:16-20; লূক 24:36-49; যোহন 20:19-23; প্রেরিত 1:6-8)

14 পরে সেই এগারোজন শিষ্য যখন খেতে বসেছেন, তিনি তাঁদের কাছে দেখা দিলেন। তিনি তাঁদের অবিশ্বাস ও কঠোর মনোভাবের জন্য তিরস্কার করলেন, কারণ তিনি বেঁচে ওঠার পর যাঁরা তাঁকে দেখেছিলেন, তাঁদের কথায়ও তাঁরা বিশ্বাস করেন নি।

15 আর তিনি তাঁদের বললেন, “তোমরা সমস্ত পৃথিবীতে যাও, এবং সব লোকের কাছে সুসমাচার প্রচার কর। 16 যারা বিশ্বাস করে বাপ্তাইজ হবে, তারা রক্ষা পাবে, কিন্তু যারা বিশ্বাস করবে না, তাদের দোষী সাব্যস্ত করা হবে। 17 যারা বিশ্বাস করবে এই চিহ্নগুলি তাদের অনুবর্তী হবে। আমার নামে তারা ভূত তাড়াবে; নতুন নতুন ভাষায় কথা বলবে; 18 হাতে করে সাপ তুলবে এবং মারাত্মক কিছু খেলেও তাদের কোন ক্ষতি হবে না; আর তারা অসুস্থ লোকের ওপর হাত রাখলে তারা সুস্থ হবে।”

যীশুর পুনরায় স্বর্গারোহণ

(লূক 24:50-53; প্রেরিত 1:9-11)

19 তাঁদের সঙ্গে কথা বলার পর প্রভু যীশুকে স্বর্গে তুলে নেওয়া হল এবং তিনি ঈশ্বরের ডানদিকে বসলেন। 20 আর তাঁরা গিয়ে সব জায়গায় সুসমাচার প্রচার করতে লাগলেন, এবং প্রভু তাঁদের সঙ্গে কাজ করলেন, আর অলৌকিক কাজের মধ্য দিয়ে তাঁর সুসমাচারের সত্যতা প্রমাণ করলেন।

Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)

Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International