M’Cheyne Bible Reading Plan
বিচারক তোলয়
10 অবীমেলকের মৃত্যুর পর ইস্রায়েলীয়দের বাঁচানোর জন্য ঈশ্বর আর একজন বিচারককে পাঠালেন। তার নাম তোলয়। তার পিতার নাম পূয়া। পূয়ার পিতার নাম দোদয়। তোলয় ইষাখর পরিবারগোষ্ঠী থেকে এসেছিল। থাকত শামীর শহরে। শহরটা ইফ্রয়িমের পাহাড়ের দেশে অবস্থিত। 2 তোলয় 23 বছর ধরে ইস্রায়েলবাসীদের বিচারক ছিল। মৃত্যুর পর তাকে শামীর শহরে কবর দেওয়া হয়েছিল।
বিচারক যায়ীর
3 তোলয়ের মৃত্যুর পর ঈশ্বর যায়ীরকে বিচারক করে পাঠালেন। যায়ীর গিলিয়দে থাকতো। 22 বছর যায়ীর ইস্রায়েলীয়দের বিচারক ছিল। 4 তার 30 জন পুত্র ছিল। তারা 30টি গাধায় চড়ে বেড়াত। তারা গিলিয়দের 30টি শহরের দেখাশোনা করত। এমনকি আজও সবাই এই শহরগুলোকে যায়ীরের শহর বলেই জানে। 5 যায়ীর মারা গেলে তাকে কামোন শহরে কবর দেওয়া হল।
অম্মোনীয়রা ইস্রায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করল
6 প্রভুর দৃষ্টিতে যা মন্দ সেই পাপকর্মে আবার ইস্রায়েলবাসীরা রত হল। তারা বাল আর অষ্টারোতের মূর্ত্তির পূজা করতে লাগল। সেই সঙ্গে তারা অরাম, সীদোন, মোয়াব, অম্মোন এবং পলেষ্টীয় দেবতাদের পূজা করত। ইস্রায়েল তাদের প্রকৃত প্রভুকে ত্যাগ করল আর তাঁর সেবা বন্ধ করল।
7 তাই প্রভু ইস্রায়েলীয়দের ওপর ক্রুদ্ধ হলেন। তিনি পলেষ্টীয় ও অম্মোনদের ইস্রায়েলবাসীদের পরাজিত করবার জন্য অনুমতি দিলেন। 8 ঐ বছরেই যর্দন নদীর পূর্বদিকে গিলিয়দ অঞ্চলে যেসব ইস্রায়েলীয় থাকত তাদের ওরা হারিয়ে দিল। এই অঞ্চলেই ছিল ইমোরীয়দের বাস। এইসব ইস্রায়েলবাসীরা 18 বছর দুঃখ কষ্ট ভোগ করেছিল। 9 অম্মোনরা তারপর যর্দন পেরিয়ে যিহূদা, বিন্যামীন আর ইফ্রয়িমের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে গেল। অম্মোনদের উৎপীড়নের কারণে ইস্রায়েলীয়দের প্রভূত দুঃখ কষ্ট ভোগ করতে হয়েছিল।
10 এখন ইস্রায়েলীয়রা সাহায্যের জন্য প্রভুকে ডাকতে লাগল। তারা বলল, “হে ঈশ্বর, আমরা আপনার বিরুদ্ধে পাপ করেছি। আমরা আমাদের প্রভুকে ত্যাগ করে বালের মূর্ত্তি পূজা করেছি।”
11 প্রভু তাদের বললেন, “যখন মিশরীয়, ইমোরীয়, অম্মোনীয় এবং পলেষ্টীয় লোকরা তোমাদের মেরে ফেলছিল, তোমরা আমার কাছে এসে কেঁদেছিলে। আর আমি তোমাদের তাদের হাত থেকে রক্ষা করেছিলাম। 12 তারপর সীদোনীয়, অমালেকীয় আর মায়োনীয়রা যখন তোমাদের আক্রমণ করল, তখনও তোমাদের আমি বাঁচিয়েছি। 13 কিন্তু তারপর তোমরা আমাকে ছেড়ে অন্য দেবতাদের পূজায় মেতেছিলে। তাই এবার আর তোমাদের কথা শুনব না। 14 যাও তাদের কাছেই গিয়ে সাহায্য চাও। তোমাদের বিপদে ঐসব দেবতাই এবার তোমাদের রক্ষা করুক।”
15 কিন্তু ইস্রায়েলবাসীরা প্রভুকে বলল, “আমরা পাপ করেছি। আপনি আমাদের প্রতি যা ইচ্ছা হয় করুন। কিন্তু প্রভু দয়া করুন, শুধুমাত্র আজকের জন্য আমাদের রক্ষা করুন।” 16 এই বলে তারা সমস্ত মূর্ত্তি ছুঁড়ে ফেলে দিল। আবার তারা প্রভু ঈশ্বরের উপাসনা করতে শুরু করল। অগত্যা প্রভু তাদের কষ্ট দেখলেন ও বেদনাবোধ করলেন।
যিপ্তহ নেতা মনোনীত হল
17 অম্মোনরা যুদ্ধের জন্য তৈরী হল। তাদের শিবির ছিল গিলিয়দে। ইস্রায়েলবাসীরাও সব এক জায়গায় জড়ো হল। তাদের শিবির হল মিস্পা শহরে। 18 গিলিয়দের নেতারা বলল, “অম্মোনদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে যে আমাদের নেতৃত্ব দেবে সেই হবে গিলিয়দবাসীদের প্রধান নেতা।”
11 গিলিয়দ পরিবারগোষ্ঠীর একজন হচ্ছে যিপ্তহ। সে খুব শক্তিশালী যোদ্ধা। কিন্তু সে গণিকার পুত্র। তার পিতার নাম ছিল গিলিয়দ। 2 গিলিয়দের নিজের স্ত্রীর অনেকগুলো পুত্র। পুত্ররা বড় হয়ে যিপ্তহকে দেখতে পারত না। তারা তাকে শহর ছাড়া করল। তারা যিপ্তহকে বলল, “তুমি আমাদের পৈতৃক সম্পত্তির এক কানাকড়িও পাবে না, কারণ তুমি আমাদের মায়ের পেটের ভাই নও। তুমি অন্য নারীর সন্তান।” 3 ভাইদের কথায় যিপ্তহ শহর ছেড়ে চলে গেল। সে টোব দেশে বাস করত। টোবে কিছু শক্তিশালী লোক যিপ্তহকে অনুসরণ করতে লাগল।
4 কিছুদিন পরে অম্মোনরা ইস্রায়েলীয়দের সঙ্গে যুদ্ধ চালাতে লাগল। 5 গিলিয়দের নেতারা যিপ্তহের কাছে গেল তাকে ফিরে আসার জন্য অনুনয় করতে। তারা যিপ্তহকে টোব ছেড়ে গিলিয়দে ফিরে আসতে বলল।
6 নেতারা যিপ্তহকে বলল, “তুমি আমাদের কাছে এসে আমাদের নেতা হও। তোমার নেতৃত্বে আমরা অম্মোনদের সঙ্গে লড়াই করবো।”
7 যিপ্তহ তাদের বলল, “তোমরাই তো আমাকে ভিটেছাড়া করেছিলে। তোমরা তো আমায় ঘৃণা কর। তাহলে এখন কেন আবার বিপদে পড়েছো বলে আমার কাছে এসেছ?”
8 তারা বলল, “এই কারণেই আমরা তোমার কাছে এসেছি। দয়া করো। আমাদের মধ্যে তুমি এসো, অম্মোনদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালাও। তুমিই গিলিয়দের অধিবাসীদের সেনাপতি হবে।”
9 যিপ্তহ বলল, “বেশ, যদি তোমরা চাও যে আমি গিলিয়দে ফিরে আসি এবং অম্মোনীয়দের সঙ্গে যুদ্ধ করি ভালো কথা। প্রভুর সহায়তায় যদি আমি জিতি তাহলে আমিই হবো তোমাদের নতুন নেতা।”
10 গিলিয়দের নেতারা বলল, “আমরা যে সব কথা বলেছি প্রভু সবই শুনছেন। আমরা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, তুমি যা করতে বলবে আমরা তাই করব।”
11 অগত্যা যিপ্তহ তাদের সঙ্গে চলে গেল। তারা যিপ্তহকে তাদের নেতা ও সেনাপতি করে দিলে মিস্পা শহরে প্রভুর সামনে যিপ্তহ আর একবার তার কথাগুলো শুনিয়ে দিল।
ইকনিয়ে পৌল ও বার্ণবা
14 এরপর পৌল ও বার্ণবা ইকনিয়ে গেলেন। সেখানে তাঁরা তাঁদের কাজের পদ্ধতি অনুযায়ী সেই একইভাবে ইহুদীদের সমাজ-গৃহে প্রবেশ করলেন। সেখানকার লোকদের কাছে পৌল ও বার্ণবা এতো সুন্দরভাবে কথা বললেন, যে অনেক ইহুদী ও গ্রীক তাঁদের কথায় বিশ্বাস করল। 2 কিন্তু কিছু ইহুদীরা বিশ্বাস করল না এবং তারা ভাইদের বিরুদ্ধে অইহুদীদের ক্ষেপিয়ে তুলল।
3 পৌল ও বার্ণবা ইকনিয়ে অনেক দিন থেকে গেলেন, আর তাঁরা নির্ভীকভাবে প্রভুর কথা বলে যেতে লাগলেন। তাঁরা প্রভুর অনুগ্রহের কথা প্রচার করতেন; আর প্রভুও তাঁদের মাধ্যমে নানা অলৌকিক কাজ করে সেই প্রচারের পক্ষে সাক্ষ্য দিতেন। 4 সেই শহরের লোকরা দু’দলে ভাগ হয়ে গেল, একদল ইহুদীদের পক্ষে আর অন্য দল প্রেরিতদের পক্ষ নিল।
5 তখন অইহুদীরা ও ইহুদীরা তাদের সমাজপতিদের সঙ্গে এক হয়ে পৌল ও বার্ণবাকে অপমান করে পাথর মেরে হত্যা করার পরিকল্পনা করল। 6 শৌল ও বার্ণবা তা জানতে পেরে সেই শহর ছেড়ে গেলেন। তাঁরা লুকায়নিয়ার লুস্ত্রা ও দর্বী শহরে ও তার চারপাশের অঞ্চলে চলে গেলেন; 7 আর সেখানেও তাঁরা সুসমাচার প্রচারের কাজ চালিয়ে গেলেন।
লুস্ত্রা ও দর্বীতে পৌল
8 লুস্ত্রায় একজন লোক বসে থাকত, সে তার পা ব্যবহার করতে পারত না। সে জন্ম থেকেই খোঁড়া ছিল, কখনও হাঁটা চলা করে নি। 9 সেই লোকটি বসে বসে পৌলের কথা শুনছিল। পৌল তার দিকে চেয়ে দেখলেন। সুস্থ হবার জন্য লোকটির ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বাস আছে। 10 পৌল তখন তাকে ডেকে বললেন, “তোমার দু পায়ে ভর দিয়ে সোজা হয়ে দাঁড়াও!” আর সে লাফ দিয়ে উঠে হেঁটে বেড়াতে লাগল।
11 পৌল যা করলেন তা দেখে লোকেরা লুকায়নীয় ভাষায় বলে উঠল, “দেবতারা মানুষ রূপ ধারণ করে আমাদের মধ্যে অবতীর্ণ হয়েছেন!” 12 তারা বার্ণবাকে বলল, “দ্যুপিতর”[a] আর পৌলকে বলল, “মর্কুরিয়,”[b] কারণ পৌল ছিলেন প্রধান বক্তা। 13 শহরের ঠিক সামনেই দ্যুপিতের যে মন্দির ছিল, তার যাজক কয়েকটা ষাঁড় ও মালা নিয়ে শহরের ফটকে এল ও লোকদের সঙ্গে সেখানে তা বলিদান করে পৌল ও বার্ণবার কাছে উৎসর্গ করতে চাইল।
14 কিন্তু প্রেরিত বার্ণবা ও পৌল যখন একথা বুঝলেন, তখন তাঁরা নিজেদের পোশাক ছিঁড়ে দৌড়ে বাইরে গিয়ে লোকদের উদ্দেশ্যে চিৎকার করে বললেন, 15 “আহা, তোমরা এ করছ কি? আমরাও তোমাদের মতো সাধারণ মানুষ! আমরা তোমাদের সুসমাচার শোনাতে এসেছি। এইসব অসারতার মধ্য থেকে জীবন্ত ঈশ্বরের দিকে ফিরতে হবে। ঈশ্বরই আকাশ, পৃথিবী, সমুদ্র ও সেই সকলের মধ্যে যা কিছু আছে সে সমস্তই সৃষ্টি করেছেন।
16 “তিনিই অতীতে সমস্ত জাতিকে নিজেদের খুশী মতো পথে চলতে দিয়েছেন। 17 তথাপি ঈশ্বর যে আছেন এর প্রমাণের জন্য তিনি অনেক কিছু করেছিলেন। তিনি সকলের মঙ্গল করেছেন। আকাশ থেকে বৃষ্টি ও বিভিন্ন ঋতুতে শস্য দিচ্ছেন। তিনি তোমাদের খাদ্য যোগাচ্ছেন ও তোমাদের অন্তর আনন্দে পূর্ণ করছেন।”
18 এইসব কথা পৌল ও বার্ণবা অনেক করে বোঝালেও তাঁদের উদ্দেশ্যে বলিদান করা থেকে কোনভাবেই এই লোকদের রুখতে পারলেন না।
19 এই ঘটনার পর ইকনিয় ও আন্তিয়খিয়া থেকে কয়েকজন ইহুদী এসে লোকদের পৌলের বিরুদ্ধে প্ররোচিত করল। তারা পৌলের ওপর পাথর ছুঁড়ল, তাঁকে টেনে এনে শহরের বাইরে নিয়ে গেল। তারা মনে করল পৌল বুঝি মারাই গেছেন। 20 কিন্তু যীশুর অনুগামীরা এসে তাঁর চারপাশে দাঁড়ালে তিনি উঠে তাদের সঙ্গে শহরে গেলেন। পরদিন তিনি বার্ণবার সঙ্গে দর্বীতে চলে গেলেন।
সুরিয়ার আন্তিয়খিয়ায় প্রত্যাবর্তন
21 সেই শহরে তাঁরা সুসমাচার প্রচার করলেন, আর বহুলোক যীশুর অনুগামী হল। এরপর তাঁরা লুস্ত্রা হয়ে ইকনিয় ও পরে আন্তিয়খিয়ায় ফিরে এলেন। 22 তাঁরা ঐসব শহরে শিষ্যদের শক্তি জোগালেন। সমস্ত নির্যাতনের মধ্যেও বিশ্বাসে অটল থাকতে তাঁদের সাহস দিয়ে বললেন, “অনেক দুঃখভোগের মধ্য দিয়ে আমাদের ঈশ্বরের রাজ্যে প্রবেশ করতে হবে।” 23 তাঁরা প্রত্যেকটি বিশ্বাসী মণ্ডলীর জন্য প্রাচীনদের নিয়োগ করলেন। এই প্রাচীনরা, যারা প্রভুর ওপর বিশ্বাস স্থাপন করেছিলেন, প্রার্থনা ও উপবাসের সঙ্গে তাঁদের প্রত্যেককে তাঁরা প্রভুর হাতে সঁপে দিলেন।
24 এরপর তাঁরা পিষিদিয়ার মধ্য দিয়ে পাম্ফুলিয়ায় গেলেন। 25 তারপর পর্গায় আবার সুসমাচার প্রচার করলেন ও সেখান থেকে অত্তালিয়ায় চলে গেলেন। 26 সেখান থেকে তাঁরা জাহাজে করে আন্তিয়খিয়ায় গেলেন। যে কাজ তাঁরা এখন শেষ করলেন, সেই কাজের জন্যই এই শহর থেকে বিশ্বাসীরা পৌল ও বার্ণবাকে প্রভুর কাছে সমর্পণ করেছিলেন।
27 পৌল বার্ণবা ফিরে এসে মণ্ডলীর বিশ্বাসীদের একত্র করলেন; আর ঈশ্বর তাঁদের সঙ্গে থেকে যে সব কাজ করেছিলেন ও অইহুদীদের জন্য বিশ্বাসের যে দ্বার উন্মুক্ত করে দিয়েছিলেন, সে সব কথা তাঁদের জানালেন। 28 পরে তাঁরা অনুগামীদের সঙ্গে সেখানে দীর্ঘ সময় থাকলেন।
23 “যিহূদার মেষপালকদের[a] পক্ষে এটা খারাপ হবে। এই মেষপালকরা আমার মেষদের আহত করছে। তারা চারদিক থেকে এই মেষদের তাড়িয়ে আমার শস্যের কাছ থেকে দূরে নিয়ে যাচ্ছে।” এই হল প্রভুর বার্তা।
2 এই মেষপালকরা (নেতৃবৃন্দ) আমার মেষদের (লোকদের) জন্য দায়ী এবং প্রভু ইস্রায়েলের ঈশ্বর ঐ মেষপালকদের বললেন: “তোমরা মেষপালকরা আমার মেষদের চতুর্দিকে তাড়িয়ে নিয়ে গেছ। এবং তোমরা তার রক্ষণাবেক্ষণ করনি। কিন্তু আমি তোমাদের দেখে নেব। তোমাদের মন্দ কাজের জন্য আমি তোমাদের শাস্তি দেব।” এই হল প্রভুর বার্তা। 3 “আমি আমার মেষদের অন্য দেশে পাঠিয়ে দেব। তারপর ঐ বিদেশগুলোর থেকে আমি আমার বাকী মেষগুলিকে জড়ো করব এবং যে সমস্ত মেষরা পড়ে থাকবে, তাদের আমি একত্রিত করে তাদের স্বদেশে ফিরিয়ে আনব। তারা যখন স্বদেশে ফিরবে তখন তাদের সন্তানরা সংখ্যায় বৃদ্ধি পাবে। 4 আমি তাদের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য নতুন মেষপালক রাখব এবং তাহলে আমার কোন মেষই ভয় পাবে না বা হারিয়ে যাবে না।” এই হল প্রভুর বার্তা।
ন্যায়পরায়ণ “নবোদ্গম”
5 প্রভু এই বার্তা বলেন:
“সেই সময় আসছে
যখন আমি একটি ভালো ‘নবোদ্গম’[b] উত্তোলন করব।
সে বুদ্ধিমত্ত্বার সঙ্গে শাসন করবে এবং দেশে যা ন্যায্য এবং ঠিক তাই করবে।
সে সুষ্ঠুভাবে দেশ শাসন করবে এবং সঠিক সিদ্ধান্ত নেবে।
6 তার রাজত্বের সময়, যিহূদা রক্ষা পাবে
এবং ইস্রায়েল নিরাপদে থাকবে।
এই হবে তার নাম:
প্রভুই আমাদের ধার্মিকতা।”
7 “সেই সময় আসছে,” এই হল প্রভুর বার্তা, “যখন লোকরা আর প্রভুর পুরানো প্রতিশ্রুতির কথা বলবে না। পুরানো প্রতিশ্রুতি হল: ‘যেহেতু প্রভুর অস্তিত্ব নিশ্চিত, প্রভু তিনিই, যিনি সমস্ত ইস্রায়েলবাসীকে মিশর থেকে নিয়ে এসেছিলেন।’ 8 কিন্তু লোকরা এখন নতুন কথা বলবে। তারা বলবে, ‘প্রভুর অস্তিত্ব যেমন নিশ্চিত, তিনিই হলেন সেই একজন যিনি সমস্ত ইস্রায়েলের লোকদের উত্তরদেশ থেকে বার করে এনেছিলেন। তিনি তাদের যে সব দেশে পাঠিয়েছিলেন, সেখান থেকে উদ্ধার করে নিয়ে এসেছিলেন।’ তখন থেকে ইস্রায়েলবাসী তাদের নিজেদের দেশে বসবাস শুরু করল।”
ভ্রান্ত ভাববাদীদের বিরুদ্ধে বিধান
9 ভাববাদীদের উদ্দেশ্যে একটি বার্তা:
আমার হৃদয় ভেঙ্গে গেছে।
প্রভু যা বলেছেন তাতে ভয়ে আমার হাড়ে পর্যন্ত কাঁপুনি ধরেছে।
প্রভুর পবিত্র বার্তাটির দরুণ,
আমি একজন বদ্ধ মাতালের মত বলছি।
10 যিহূদার মাটি ব্যাভিচারীদের দ্বারা সম্পূর্ণরূপে ভরে গেছে।
তারা নানা বিষয়ে অবিশ্বস্ত।
প্রভুর অভিশাপে এই দেশের মাটি শুষ্ক হয়ে যাবে।
শুকিয়ে যাবে গাছের পাতা।
শুকিয়ে যাবে পশুচারণের তৃণভূমি।
শস্যভূমি শুকিয়ে মরুভূমি হয়ে যাবে।
ভাববাদীরা হল শয়তান।
তারা তাদের প্রভাব প্রতিপত্তি এবং ক্ষমতা ভুলভাবে ব্যবহার করেছিল।
11 “ভাববাদীরা তো বটেই,
এমন কি যাজকরাও শয়তান।
আমি তাদের আমার মন্দিরে খারাপ কাজ করতে দেখেছি।
এই হল প্রভুর বার্তা।
12 আমি যদি ভাববাদীদের এবং যাজকদের আমার বার্তা দেওয়া বন্ধ করি,
তাহলে তাদের পিচ্ছিল পথে, অন্ধকারের মধ্যে হাঁটতে হবে।
তারা ঐ অন্ধকারে পড়ে যাবে।
আমি তাদের ওপর দুর্বিপাক আনব।
আমি শাস্তি দেব ঐ সমস্ত ভাববাদী ও যাজকদের।”
এই হল প্রভুর বার্তা।
13 “শমরিয়ার ভাববাদীদের অন্যায় করতে দেখেছি।
আমি ঐ ভাববাদীদের বাল মূর্ত্তির নামে ভাববাণী করতে দেখেছি।
ঐ ভাববাদীরা মিথ্যা শিক্ষা দিয়ে ইস্রায়েলবাসীকে প্রভুর কাছ থেকে দূরে সরিয়ে নিয়ে গিয়েছিল।
14 এখন দেখছি যিহূদার ভাববাদীরা
সেই সব গর্হিত কাজগুলি জেরুশালেমে করছে।
এই ভাববাদীরা পাপ ও ব্যভিচার করে বেড়াচ্ছে।
তারা মিথ্যেকেই প্রশয় দিয়ে এসেছে এবং তারা ভুল শিক্ষাগুলিকে পালন করেছিল।
অসৎ লোকদের তারা একটা না একটা
গর্হিত কাজ করার ব্যাপারে উৎসাহ দিয়ে এসেছে।
তাই যিহূদার মানুষ সদোমের মানুষের মতো পাপ থেকে বিরত থাকেনি।
এখন জেরুশালেম আমার কাছে ঘমোরার মতো।”
15 সুতরাং প্রভু সর্বশক্তিমান ভাববাদীদের সম্বন্ধে যা বলেন তা হল এই:
“আমি ঐ ভাববাদীদের শাস্তি দেব।
বিষাক্ত খাদ্য ও জল পান করার মতো শাস্তি দেব।
ভাববাদীরা আত্মিক অসুখে ভুগতে শুরু করেছিল
এবং সেই অসুখ সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছিল।
তাই আমি ঐ ভাববাদীদের শাস্তি দেব।
ঐ অসুখ ভাববাদীদের মাধ্যমে জেরুশালেমে এসেছিল।”
16 সর্বশক্তিমান প্রভু এই কথাগুলি বলেন:
“ভাববাদীরা যা বলেছে তার দিকে তোমরা মন দিও না।
তারা তোমাদের বোকা বানাতে চাইছে।
ঐ ভাববাদীরা স্বপ্নদর্শন সম্বন্ধে কথা বলছে।
কিন্তু তারা আমার কাছ থেকে কোন স্বপ্নাদেশ পায় নি।
ঐ স্বপ্নদর্শনগুলো তাদের নিজেদের মনের স্বপ্নদর্শন।
17 কিছু লোক প্রভুর সত্য বার্তাকে ঘৃণা করে
তাই ভাববাদীরা ঐ লোকদের ভুল বার্তা দেয়।
তারা বলে, ‘তোমরা শান্তিতে বিরাজ করবে।’
কিছু মানুষ ভীষণ একগুঁয়ে, জেদী।
তারা নিজেদের ইচ্ছে মতো কাজ করে।
তাই সেই সুযোগ নিয়ে ভাববাদীরা ঐ জেদী লোকদের বলল,
‘তোমাদের সঙ্গে খারাপ কোন ঘটনা ঘটবে না!’
18 কিন্তু ঐ ভাববাদীদের কেউই স্বর্গীয় সভায় দাঁড়ায়নি।
তাদের কেউই প্রভুকে দেখেনি
বা প্রভুর বার্তা শোনেনি।
19 এখন প্রভুর কাছ থেকে ঝড়ের মতো শাস্তি আসবে।
প্রভুর ক্রোধ হল ঘূর্ণিঝড়।
সেই ঝড় অসৎ লোকেদের মাথার ওপর হুড়মুড় করে ভেঙে পড়বে।
20 পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ শেষ না করে
প্রভু তাঁর ক্রোধ প্রশমিত করবেন না।
সেই দিনটি যখন আসবে
তখন তোমরা পরিষ্কার ভাবে এটি বুঝতে পারবে।
21 আমি ঐ ভাববাদীদের পাঠাইনি।
অথচ তারা দৌড়ে বেড়ালো নিজেদের তৈরী বার্তা নিয়ে।
আমি তাদের সঙ্গে কথা বলিনি।
অথচ তারা আমার নাম করে প্রচার করেছিল তাদের ভ্রান্ত ধর্মোপদেশ।
22 তারা যদি আমার স্বর্গীয় সভায় দাঁড়াতো,
তাহলে তারা আমার বার্তা যিহূদার লোকদের কাছে প্রচার করতে পারত।
তারা মানুষকে খারাপ কাজ করা থেকে বিরত করতে পারত।
তারা মানুষকে অসৎ হওয়া থেকে বিরত করতে পারত।”
23 “আমিই ঈশ্বর।
আমি বহুদূরে নয়, খুব কাছেই আছি।
এই হল প্রভুর বার্তা।
24 কেউ গোপন জায়গায় লুকিয়ে থাকলেও
আমি কিন্তু সহজেই তাকে দেখতে পাই।
কেন? কারণ আমি স্বর্গ এবং মর্ত্য সর্বত্র বিরাজমান।”
প্রভু একথা বলেছেন: 25 “ঐ ভাববাদীরা আমার নাম দিয়ে মিথ্যে ধর্মোপদেশ প্রচার করেছে। তারা বলেছে, ‘আমি স্বপ্নাদেশ পেয়েছি! আমি স্বপ্নাদেশ পেয়েছি!’ আমি তাদের ঐ কথাগুলো বলতে শুনেছি। 26 আর কতদিন এভাবে চলবে? ঐ ভাববাদীরা মিথ্যা রচনা করে এবং লোকদের মিথ্যা শিক্ষা দেয়। 27 ঐ ভাববাদীরা চেষ্টা করল যাতে যিহূদার লোকরা আমার নাম ভুলে যায়। তারা তাদের মিথ্যে স্বপ্নাদেশের কথা বলে বেড়াতে লাগল। যে ভাবে তাদের পূর্বপুরুষরা আমাকে ভুলে গিয়েছিল, সেই ভাবে তারা আমার লোকদের আমাকে ভুলে যাওয়াতে চেষ্টা করছে। তাদের পূর্বপুরুষরা আমাকে ভুলে ভ্রান্ত দেবতার পূজা করেছিল। 28 খড় আর গম যেমন এক জিনিস নয়, তেমনি ভাববাদীদের স্বপ্নাদেশ আর আমার বার্তাও এক নয়। কেউ যদি নিজেদের দেখা স্বপ্নকে বলে বেড়াতে চায় তা সে বলুক। কিন্তু একজন লোক যদি আমার বার্তা শোনে, তাকে সে কথা সত্যি করে বলতে হবে।” এই হল প্রভুর বার্তা। 29 হ্যাঁ, প্রভু বলেন, “আমার বার্তা হল আগুনের মতো। আমার বার্তা হল পাথরে আছড়ে পড়া হাতুড়ি, যা পাথরকেও গুঁড়িয়ে দেয়।”
30 এই হল প্রভুর বার্তা: “সুতরাং আমি ঐ কপট ভাববাদীদের বিরুদ্ধে। ঐ ভাববাদীরা একে অন্যের কাছ থেকে আমার বাণীসমূহ চুরি করে চলেছে।” 31 হ্যাঁ প্রভু বলেন, “আমি মিথ্যা ভাববাদীদের বিরুদ্ধে। তাদের নিজেদের কথাগুলোকে আমার বার্তা বলে তারা লোক ঠকাচ্ছে। 32 আমি ঐ কপট ভাববাদী এবং তাদের মিথ্যে স্বপ্ন ও মিথ্যে ধর্মোপদেশ প্রচারের বিরুদ্ধে।” এই হল প্রভুর বার্তা। “তারা তাদের মিথ্যে ছলনা ও ভ্রান্ত শিক্ষা দিয়ে আমার লোকদের ভুল পথে নিয়ে যাচ্ছে। আমি ঐ ভাববাদীদের লোককে শিক্ষা দিতে পাঠাই নি। আমি তাদের আমার জন্য কিছু করার নির্দেশ দিইনি। তারা যিহূদার লোকদের কোন ভাবেই সাহায্য করতে পারবে না।” এই হল প্রভুর বার্তা।
প্রভুর শোকবার্তা
33 “যিহূদার লোকরা ভাববাদী অথবা কোন যাজক হয়তো তোমাকে জিজ্ঞেস করবে, ‘যিরমিয়, প্রভুর ঘোষণা কি?’ তুমি ওদের উত্তরে বলবে, ‘তোমরা হলে প্রভুর কাছে ভারী বোঝা এবং আমি ঐ ভারী বোঝা ছুঁড়ে ফেলব।’” এই হল প্রভুর বার্তা।
34 “কোন ভাববাদী, কোন যাজক অথবা কোন একজন সাধারণ লোক হয়তো বলতে পারে, ‘এই হল প্রভুর ঘোষণা।’ যে একথা বলবে সে মিথ্যেবাদী এবং আমি তাকে ও তার পরিবারকে শাস্তি দেব। 35 তোমরা একে অপরকে বলবে: ‘প্রভু কি উত্তর দিলেন?’ অথবা ‘প্রভু কি বললেন?’ 36 কিন্তু তোমরা আর কখনও এই অভিব্যক্তিটি ব্যবহার করবে না: ‘প্রভুর ঘোষণা।’ একথা খবরদার উচ্চারণ কোরো না কারণ প্রভুর ঘোষণা কখনও কারও ক্ষেত্রে ভারী বোঝা হয় না। কিন্তু তোমরা আমাদের ঈশ্বরের কথায় পরিবর্তন ঘটিয়েছ। তিনি জীবন্ত ঈশ্বর, তিনি প্রভু সর্বশক্তিমান।
37 “তোমরা যদি ঈশ্বরের বার্তা জানতে চাও তাহলে কোন ভাববাদীকে জিজ্ঞেস করো। ‘প্রভু আপনাকে কি উত্তর দিয়েছেন?’ অথবা ‘প্রভু কি বলেছেন?’ 38 কিন্তু একথা বলো না, ‘প্রভুর ঘোষণা কি ছিল?’ যদি তোমরা আবার এই কথার পুনরাবৃত্তি করো তাহলে প্রভু তোমাদের উদ্দেশ্যে এগুলি বলবেন: ‘তোমরা আমার বার্তাকে ভারী বোঝা বলে উল্লেখ করবে না।’ আমি তোমাদের এই শব্দ ব্যবহার করতে বারণ করছি। 39 কিন্তু তোমরা যদি আমার বার্তাকে ভারী বোঝা বলে উল্লেখ করো তাহলে আমিও তোমাদের এবং ঐ শহরটিকে ভারী বোঝা বলে মনে করে আমার কাছ থেকে দূরে ছুঁড়ে ফেলে দেব। আমি তোমাদের পূর্বপুরুষকে এই জেরুশালেম শহর দিয়েছিলাম। কিন্তু আমি তোমাদের এই শহর থেকে ছুঁড়ে ফেলে দেব। 40 আমি তোমাদের চিরকালের জন্য অপদস্থ করব এবং তোমরা কোন দিন তোমাদের বিব্রত অবস্থাকে ভুলতে পারবে না।”
9 তিনি তাঁর শিষ্যদের বললেন, “আমি তোমাদের সত্যি বলছি যারা এখানে দাঁড়িয়ে আছে, তদের মধ্যে কয়েকজন আছে, যারা কোনমতেই মৃত্যু দেখবে না; যতক্ষণ পর্যন্ত ঈশ্বরের রাজ্য মহাপরাক্রমের সঙ্গে আসতে না দেখে।”
মোশি ও এলিয়র সঙ্গে যীশু
(মথি 17:1-13; লূক 9:28-36)
2 ছদিন বাদে যীশু পিতর, যাকোব এবং যোহনকে সঙ্গে করে এক উঁচু পাহাড়ে উঠে গেলেন। তাঁদের সামনে তাঁর রূপ পরিবর্তিত হয়ে গেল। 3 তাঁর পোশাক এত উজ্জ্বল ও শুভ্র হল যে পৃথিবীর কোন রজক সেই রকম সাদা করতে পারে না। 4 তখন মোশি এবং এলিয় তাঁদের সামনে এসে যীশুর সাথে কথা বলতে শুরু করলেন।
5 তখন পিতর যীশুকে বললেন, “গুরুদেব, এখানে আমাদের থাকা ভাল। আমরা তিনটি তাঁবু তৈরী করি। একটা আপনার জন্য, একটা মোশির জন্য এবং একটা এলিয়র জন্য।” 6 কারণ কি বলতে হবে তা তিনি জানতেন না, তাঁরা অত্যন্ত ভয় পেয়ে গিয়েছিলেন।
7 পরে একখানা মেঘ এসে তাঁদের ছায়া দিয়ে ঢেকে ফেলল; আর সেই মেঘ থেকে এই রব শোনা গেল, “ইনি আমার প্রিয় পুত্র। তোমরা তাঁর কথা শোন।”
8 শিষ্যেরা তখনই চারদিকে তাকালেন; কিন্তু যীশু ছাড়া আর কাউকে সেখানে দেখতে পেলেন না।
9 পাহাড় থেকে নামার সময় তিনি তাঁর শিষ্যদের বললেন, “তোমরা যা যা দেখলে তা কাউকে বলো না যতক্ষণ না মৃত্যু থেকে মানবপুত্র বেঁচে উঠছেন।”
10 তারা সেই ঘটনার কথা নিজেদের মধ্যেই চেপে রাখলেন; কিন্তু ভাবতে লাগলেন, মৃত্যু থেকে বেঁচে ওঠা কথাটির অর্থ কি হতে পারে। 11 পরে শিষ্যরা তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, “কেন ব্যবস্থার শিক্ষকরা বলেন যে প্রথমে এলিয়কে আসতে হবে?”[a]
12 তিনি তাদের বললেন, “হ্যাঁ, এলিয় প্রথমে এসে সব কিছু পুনঃস্থাপন করবেন বটে, কিন্তু মানবপুত্রের বিষয়ে কেন এসব লেখা হয়েছে যে তাঁকে অনেক দুঃখ পেতে হবে আর লোকে তাঁকে প্রত্যাখ্যান করবে? 13 কিন্তু আমি তোমাদের বলছি, এলিয়ের বিষয়ে যেমন লেখা আছে, সেই অনুসারে তিনি এসে গেছেন এবং লোকরা তাঁর প্রতি যা ইচ্ছে তাই করেছে।”
অসুস্থ ছেলেকে যীশুর আরোগ্যদান
(মথি 17:14-20; লূক 9:37-43)
14 পরে তাঁরা অন্য শিষ্যদের কাছে এসে দেখলেন তাঁদের চারদিকে অনেক লোক আর ব্যবস্থার শিক্ষকরা তাদের সাথে তর্ক করছেন। 15 তাঁকে দেখামাত্র সমস্ত লোক অবাক হল এবং তাঁর কাছে দৌড়ে গিয়ে তাঁকে প্রণাম জানাতে লাগল।
16 তিনি তাঁদের জিজ্ঞাসা করলেন, “তোমরা এদের সঙ্গে কি নিয়ে তর্ক করছ?”
17 তাতে লোকেদের মধ্যে থেকে একজন বলে উঠল, “হে গুরু, আমার ছেলেটিকে আপনার কাছে এনেছিলাম। তাকে এক বোবা আত্মায় পেয়েছে, সে কথা বলতে পারে না। 18 সেই আত্মা তাকে যেখানে ধরে, সেইখানে আছাড় মারে; আর তার মুখে ফেনা ওঠে, সে দাঁত কিড়মিড় করে আর শক্ত হয়ে যায়। আমি আপনার শিষ্যদের এই আত্মাটাকে ছাড়াতে বললাম, কিন্তু তাঁরা পারলেন না।”
19 তখন যীশু তাঁদের বললেন, “হে অবিশ্বাসী বংশ, আমাকে আর কতকাল তোমাদের সঙ্গে থাকতে হবে? তোমাদের নিয়ে আর আমি কত ধৈর্য্য ধরব? তাকে আমার কাছে নিয়ে এস।”
20 তারা তাকে তাঁর কাছে নিয়ে এল। যীশুকে দেখামাত্র সেই আত্মা ছেলেটিকে মুচড়ে ধরল; আর সে মাটিতে পড়ে গড়াগড়ি দিতে লাগল, তার মুখ দিয়ে ফেনা বার হচ্ছিল।
21 তখন যীশু তার বাবাকে জিজ্ঞেস করলেন, “এর কতদিন এমন হয়েছে?”
ছেলেটির বাবা বলল, “ছেলেবেলা থেকে এরকম হয়েছে। 22 এই আত্মা একে মেরে ফেলার জন্য অনেকবার আগুনে ও জলে ফেলে দিয়েছে। আপনি যদি কিছু করতে পারেন, তবে দয়া করে আমাদের উপকার করুন।”
23 যীশু তাকে বললেন, “কি বললে, ‘যদি পারেন!’ যে বিশ্বাস করে তার পক্ষে সবই সম্ভব।”
24 সঙ্গে সঙ্গে ছেলেটির বাবা চিৎকার করে কেঁদে বলল, “আমি বিশ্বাস করি! আমার অবিশ্বাসের প্রতিকার করুন!”
25 অনেক লোক সেদিকে আসছে দেখে যীশু সেই অশুচি আত্মাকে ধমকে বললেন, “হে বোবা কালার আত্মা, আমি তোমাকে বলছি, এর মধ্যে আর কখনও ঢুকবে না!”
26 তখন সেই আত্মা চেঁচিয়ে তাকে ভয়ঙ্করভাবে মুচড়ে দিয়ে বাইরে বেরিয়ে গেল। তাতে ছেলেটি মড়ার মত হয়ে পড়ল, এমন কি অধিকাংশ লোক বলল, “সে মরে গেছে।” 27 কিন্তু যীশু তার হাত ধরে তুললে সে উঠে দাঁড়াল।
28 পরে যীশু বাড়ি ফিরে এলে শিষ্যরা তাঁকে একান্তে জিজ্ঞেস করলেন, “আমরা কেন ঐ অশুচি আত্মাকে তাড়াতে পারলাম না?”
29 যীশু তাঁদের বললেন, “প্রার্থনা[b] ছাড়া আর কোন কিছুতেই এ আত্মাকে তাড়ানো যায় না।”
যীশু নিজের মৃত্যুর বিষয়ে বললেন
(মথি 17:22-23; লূক 9:43-45)
30 পরে সেই স্থান ছেড়ে তাঁরা গালীলের মধ্য দিয়ে চললেন; আর তিনি চাইলেন না যে তাঁরা কোথায় আছে সেকথা অন্য কেউ জানুক। 31 কারণ তখন তিনি তাঁর শিষ্যদের শিক্ষা দিচ্ছিলেন। তিনি তাঁদের বললেন, “মানবপুত্রকে লোকদের হাতে তুলে দেওয়া হবে, এবং তারা তাঁকে হত্যা করবে আর মৃত্যুর তিনদিন পরে তিনি বেঁচে উঠবেন।” 32 কিন্তু তাঁরা সেই কথা বুঝলেন না এবং এই বিষয়ে তাঁকে জিজ্ঞেস করতেও ভয় পেলেন।
যীশু বললেন সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ কে
(মথি 18:1-5; লূক 9:46-48)
33 এরপর তাঁরা কফরনাহূমে ফিরে এলেন আর বাড়ির ভেতরে গিয়ে তিনি শিষ্যদের জিজ্ঞেস করলেন, “তোমরা রাস্তায় কি আলোচনা করছিলে?” 34 কিন্তু তাঁরা চুপচাপ থাকলেন কারণ তাঁদের মধ্যে কে সর্বাপেক্ষা শ্রেষ্ঠ এই নিয়ে তর্ক চলছিল।
35 তখন যীশু বসে সেই বারোজন প্রেরিতদের ডেকে বললেন, “কেউ যদি প্রথম হতে চায়, তবে সে সকলের শেষে থাকবে এবং সকলের পরিচারক হবে।”
36 পরে যীশু একটা শিশুকে নিয়ে তাঁদের মধ্যে দাঁড় করিয়ে দিলেন এবং তাকে কোলে করে তাঁদের বললেন, 37 “যে কেউ আমার নামে এর মতো কোন শিশুকে গ্রহণ করে, সে আমাকেই গ্রহণ করে। আর কেউ যদি আমাকে গ্রহণ করে, সে আমাকে নয়, কিন্তু যিনি (ঈশ্বর) আমাকে পাঠিয়েছেন তাঁকেই গ্রহণ করে।”
যে কেউ আমাদের বিপক্ষে নয় সে-ই আমাদের পক্ষে
(লূক 9:49-50)
38 যোহন তাঁকে বললেন, “গুরু, আমরা একটি লোককে আপনার নামে ভুত তাড়াতে দেখে তাকে বারণ করেছিলাম, কারণ সে আমাদের লোক নয়।”
39 কিন্তু যীশু বললেন, “তাকে বারণ করো না, কারণ এমন কেউ নেই যে আমার নামে অলৌকিক কাজ করে সহজে আমার নিন্দা করতে পরে। 40 যে কেউই আমাদের বিপক্ষে নয় সে আমাদের সপক্ষে। 41 কেউ যদি খ্রীষ্টের লোক বলে তোমাদেরকে এক ঘটি জল দেয়, আমি তোমাদের সত্যি বলছি, সে কোন মতেই নিজের পুরস্কার থেকে বঞ্চিত হবে না।
পাপের কারণ সম্পর্কে যীশু সাবধান করে দিলেন
(মথি 18:6-9; লূক 17:1-2)
42 “আর এই যে সাধারণ লোক যারা আমায় বিশ্বাস করে, যদি কেউ তাদের একজনকে পাপের পথে নিয়ে যায়, তবে সেই লোকের গলায় একটা বড় যাতাঁর পাট বেঁধে তাকে সমুদ্রে ফেলে দেওয়াই তার পক্ষে ভাল। 43 তোমার হাত যদি তোমার পাপের কারণ হয়, তবে তাকে কেটে ফেলো, কারণ দুই হাত নিয়ে নরকের অনন্ত আগুনে পোড়ার থেকে বরং নুলো হয়ে জীবনে প্রবেশ করা ভাল। 44 [c] 45 তোমার পা যদি তোমার পাপের কারণ হয় তবে তাকে কেটে ফেলো, কারণ দুই পা নিয়ে নরকে যাওয়ার থেকে বরং খোঁড়া হয়ে জীবনে প্রবেশ করা ভাল। 46 [d] 47 আর যদি তোমার চোখ তোমার পাপের কারণ হয়, তবে সে চোখকে উপড়ে ফেল। দুচোখ নিয়ে নরকে যাওয়ার থেকে এক চোখ নিয়ে ঈশ্বরের রাজ্যে প্রবেশ করা তোমার পক্ষে ভাল। 48 নরকে যে কীট মানুষকে খায় তারা কখনও মরে না এবং আগুন কখনও নেভে না।(A)
49 “লবণ দেওয়ার মত প্রত্যেকের ওপর আগুন দেওয়া হবে।
50 “লবণ ভাল, কিন্তু লবণ যদি লবণত্ব হারায়, তবে কেমন করে তাকে তোমরা আস্বাদযুক্ত করবে? তোমরা নিজের নিজের মনে লবণ রাখ এবং পরস্পর শান্তিতে থাক।”
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International