M’Cheyne Bible Reading Plan
মহিলা বিচারক দবোরা
4 এহূদের মৃত্যুর পর, লোকরা আবার যে সব কাজ প্রভুর বিবেচনায় মন্দ তাই করলো। 2 তাই প্রভু কনানের রাজা যাবীনের কাছে ইস্রায়েলীয়দের পরাজিত হতে দিলেন। যাবীন হরোশৎ শহরে রাজত্ব করত। তার সৈন্যবাহিনীর প্রধান ছিল সীষরা। সীষরা হরোশৎ হাগোয়িম শহরে বাস করত। 3 সীষরার 900 লোহার রথ ছিল। সীষরা 20 বছর ইস্রায়েলবাসীদের ওপর অত্যন্ত নিষ্ঠুর ছিল এবং সে তাদের উৎপীড়ন করেছিল। এর ফলে তারা সাহায্যের জন্য প্রভুর কাছে প্রার্থনা করল।
4 দবোরা নামের একজন ভাববাদিনী ছিলেন। তাঁর স্বামীর নাম ছিল লপ্পীদোত। সেই দবোরা ইস্রায়েলের বিচার করতেন। 5 একদিন দবোরা খেজুর গাছের নীচে বসে ছিলেন। এই খেজুর গাছের নাম দবোরার খেজুর গাছ। ইস্রায়েলের লোকরা তাঁর কাছে এল। সীষরাকে নিয়ে কি করা যায় সে বিষয়ে তারা তাঁর পরামর্শ চাইল। দবোবার খেজুর গাছটি ছিল ইফ্রয়িমের পাহাড়ি অঞ্চলে রামা আর বৈথেল শহরের মাঝখানে। 6 দবোরা বারক নামের একজন লোককে খবর পাঠালেন। তিনি তাকে দেখা করতে বললেন। বারক, অবীনোয়মের পুত্র থাকত নপ্তালির কেদশ শহরে। বারক দেখা করতে এলে দবোরা তাকে বললেন, “ইস্রায়েলের প্রভু ঈশ্বর তোমাকে আজ্ঞা দিচ্ছেন; ‘নপ্তালি এবং সবূলুন পরিবারগোষ্ঠীর 10,000 লোক জোগাড় কর এবং তাদের তাবোর পর্বতে নিয়ে যাও। 7 রাজা যাবীনের সেনাপতি সীষরা যাতে তোমার কাছে আসে আমি তার ব্যবস্থা করব। আমি তাকে তার রথ আর সৈন্যদল নিয়ে কীশোন নদীর ধারে পাঠিয়ে দেব। তারপর তোমাদের কাছে সে হেরে যাবে। এ ব্যাপারে আমি হব তোমাদের সহায়।’”
8 বারক দবোরাকে বলল, “আপনি আমার সঙ্গে গেলে যাব, যা বলবেন করব। কিন্তু আপনি না গেলে আমিও যাবো না।”
9 দবোরা বললেন, “আমি নিশ্চয়ই যাব। কিন্তু তোমার মনোভাবের জন্য সীষরাকে পরাজিত করবার সম্মান তোমার হবে না। প্রভু একজন মহিলাকেই সীষরাকে পরাজিত করবার জন্য পাঠাবেন।”
দবোরা বারকের সঙ্গে কেদশ শহরে গেলেন। 10 কেদশে বারক সবূলূন এবং নপ্তালি পরিবারগোষ্ঠীকে ডেকে 10,000 লোককে জড়ো করে তাঁর পেছন পেছন যেতে বললেন। দবোরাও বারকের সঙ্গে গেলেন।
11 এখন, হেবর নামে কেনীয় সম্প্রদায়ের একটি লোক ছিল। সে অন্য কেনীয়দের ত্যাগ করেছিল। কেনীয়রা ছিল মোশির শ্বশুর হোবরের উত্তরপুরুষ। হেবর ওক গাছের পাশে সানন্নীম নামে একটি জায়গায় বাস করত। সানন্নীম কেদশ শহরের খুব কাছেই অবস্থিত।
12 সীষরাকে একজন খবর দিল, অবীনোয়মের পুত্র বারক তাবোর পর্বতে রয়েছে। 13 খবর শুনে সীষরা 900 লোহার রথ আর সমস্ত লোকদের নিয়ে হরোশত্ হাগোয়িম শহর থেকে কীশোন নদীর দিকে রওনা হল।
14 দবোরা তখন বারককে বললেন, “আজ সীষরাকে পরাজিত করবার জন্য প্রভু তোমার সহায় হবেন। প্রভু যে ইতিমধ্যেই তোমার জন্য রাস্তা ফাঁকা করে দিয়েছেন তা তুমি নিশ্চয়ই জানো।” তাই বারক 10,000 লোক নিয়ে তাবোর পর্বত থেকে নেমে এল। 15 লোকজন নিয়ে বারক এবার সীষরাকে আক্রমণ করল। যুদ্ধের সময় প্রভু সীষরা আর তার রথ, লোকজন সবকিছুর মধ্যে একটা তালগোল পাকিয়ে দিলেন। লোকজন সব কি যে করবে বুঝতে পারছিল না। এই সুযোগে বারক ও তার সৈন্যবাহিনী সীষরার বাহিনীকে হারিয়ে দিল। কিন্তু সীষরা রথ ফেলে দিয়ে পায়ে হেঁটে পালিয়ে গেল। 16 বারক যুদ্ধ চালিয়ে গেল। সে আর তার সৈন্যরা রথ আর বাহিনীকে হরোশৎ হাগোয়িম পর্যন্ত তাড়িয়ে নিয়ে গেল। তারা সব লোককে তরবারি দিয়ে কেটে ফেলল। একজনও বেঁচে রইল না।
17 কিন্তু সীষরা পালিয়ে গেল। সে একটা তাঁবুতে এলো। সেই তাঁবুতে যায়েল নামে একজন স্ত্রীলোক বাস করত। তার স্বামীর নাম ছির হেবর। হেবর ছিল কেনীয় সম্প্রদায়ের লোক। তার পরিবার হাৎসোরের রাজা যাবীনের সঙ্গে শান্তিতে বসবাস করত। সীষরা যায়েলের তাঁবুর দিকে ছুটে যাচ্ছিল। 18 সীষরাকে ছুটে আসতে দেখে যায়েল তার তাঁবু থেকে বেরিয়ে তার সঙ্গে দেখা করলো। যায়েল সীষরাকে বলল, “আমার তাঁবুতে আসুন। কোন ভয় নেই।” সীষরা যায়েলের তাঁবুতে ঢুকলো। যায়েল একটা কম্বল দিয়ে তাকে ঢেকে দিলো।
19 সীষরা বলল, “আমি তৃষ্ণার্ত। দয়া করে আমায় এক গ্লাস জল দিন।” একটা চামড়ার বোতলে যায়েল দুধ রাখত। সীষরাকে দুধ খাইয়ে যায়েল আবার তাকে কম্বল দিয়ে ঢেকে দিল।
20 সীষরা যায়েলকে বলল, “তাঁবুর দরজার পাশে আপনি দাঁড়িয়ে থাকবেন। যদি কেউ জিজ্ঞাসা করে, ভেতরে কেউ আছে কি না, বলবেন ‘না কেউ নেই।’”
21 কিন্তু যায়েল তাঁবু খাটানোর একটা গোঁজ আর একটা হাতুড়ি পেয়ে গেল। তারপর চুপিচুপি সীষরার কাছে গেল। সীষরা খুবই ক্লান্ত ছিল, তাই সে ঘুমাচ্ছিল। যায়েল গোঁজটা সীষরার মাথায় হাতুড়ি দিয়ে ঠুকে দিল। গোঁজটা তার মাথার মধ্যে ঢুকে বেরিয়ে এসে মাটিতে ঢুকে গেল। সীষরা মারা গেল।
22 আর ঠিক তখনই বারক সীষরার খোঁজে যায়েলের তাঁবুর কাছে এলো। যায়েল তাঁবুর বাইরে বেরিয়ে বারককে বলল, “ভেতরে আসুন। যাকে খুঁজছেন তাকে দেখাচ্ছি।” বারক যায়েলের সঙ্গে ভেতরে এল। দেখল সীষরা মরে মাটিতে পড়ে আছে। তার মাথার ভেতর গোঁজ ঢুকে আছে।
23 সেদিন ঈশ্বর ইস্রায়েলের লোকদের হয়ে কনানদের রাজা যাবীনকে পরাজিত করলেন। 24 ইস্রায়েলবাসীরা ক্রমে আরো শক্তিশালী হয়ে উঠলো, যে পর্যন্ত না তারা কনানদের রাজা যাবীনকে পরাজিত করল। শেষে তারা যাবীনকে বিনষ্ট করল।
8 1-3 আর শৌল স্তিফানের হত্যার অনুমোদন করেছিলেন।
বিশ্বাসীদের কষ্ট
কয়েকজন ধার্মিক লোক এসে স্তিফানকে কবর দিলেন আর স্তিফানের জন্য গভীর শোক প্রকাশ করলেন। সেইদিন থেকে জেরুশালেমের মণ্ডলীর উপর ভীষণ নির্যাতন শুরু হল। প্রেরিতগণ ছাড়া সবাই যিহূদিয়া ও শমরিয়া প্রদেশের সব জায়গায় ছড়িয়ে পড়লেন। এদিকে শৌল বিশ্বাসী সমাবেশকে ধ্বংস করার জন্য উঠে পড়ে লাগলেন। বাড়ি বাড়ি ঢুকে তিনি স্ত্রী-পুরুষ নির্বিশেষে সকলকে টানতে টানতে নিয়ে এসে কারাগারে ভরলেন। 4 বিশ্বাসীরা চারিদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে গেল; আর তারা যেখানেই গেল সেখানেই সুসমাচার প্রচার করতে লাগল।
শমরিয়ায় ফিলিপের প্রচার
5 ফিলিপ শমরিয়া শহরে গিয়ে সেখানে তিনি খ্রীষ্টের সুসমাচার প্রচার করলেন। 6 লোকরা যখন ফিলিপের কথা শুনল এবং তিনি যে সব অলৌকিক কাজ করছিলেন তা দেখল, তখন তাঁর কথায় আরো মন দিল। 7 অশুচি আত্মায় পাওয়া লোকদের মধ্য থেকে চিৎকার করতে করতে সেইসব অশুচি আত্মা বাইরে বেরিয়ে এল। অনেক পক্ষাঘাতগ্রস্ত লোক ও খোঁড়া লোক সুস্থ হল। 8 এর ফলে সেই শহরে মহা আনন্দের সাড়া জাগল।
9 সেই শহরে শিমোন নামে একজন লোক ছিল। ফিলিপ সেই শহরে আসার আগে শিমোন বহুদিন ধরে সেই শহরে যাদুখেলা দেখাত। এইভাবে সে শমরিয়ার লোকদের অবাক করে দিত। সে নিজেকে একজন মহাপুরুষ বলে জাহির করত। 10 ছোট বড় সকলেই তার কথা মন দিয়ে শুনত। তারা বলত, “এই লোকের মধ্যে ঈশ্বরের সেই শক্তি আছে যাকে ‘মহাপরাক্রম’ ও বলা চলে।” 11 লোকরা তার কথা শুনত কারণ দীর্ঘ দিন ধরে সে লোকদের যাদুমন্ত্রের চমকে মুগ্ধ করে রেখেছিল। 12 কিন্তু ফিলিপ যখন তাদের ঈশ্বরের সুসমাচার, তাঁর রাজ্য ও যীশু খ্রীষ্টের নামের বিষয় জানালেন, তখন স্ত্রী-পুরুষ সকলে ফিলিপকে বিশ্বাস করে বাপ্তিস্ম নিল। 13 আর শিমোন নিজেও বিশ্বাস করল ও বাপ্তিস্ম নিল। বাপ্তাইজ হওয়ার পর সে ফিলিপের কাছে কাছে থাকতে লাগল, আর ফিলিপের দ্বারা অনেক অলৌকিক কাজ ও নানা পরাক্রম কাজ হচ্ছে দেখে আশ্চর্য হয়ে গেল।
14 প্রেরিতরা তখনও জেরুশালেমে ছিলেন। তাঁরা শুনতে পেলেন যে শমরিয়ায় লোকরা ঈশ্বরের বাক্য গ্রহণ করেছে, তখন তাঁরা পিতর ও যোহনকে সেখানে পাঠালেন। 15 পিতর ও যোহন এসে শমরিয়ায় খ্রীষ্ট বিশ্বাসীদের জন্য প্রার্থনা করলেন যেন তারা পবিত্র আত্মা লাভ করে; 16 কারণ এই লোকেরা প্রভু যীশু খ্রীষ্টের নামে বাপ্তাইজ হলেও তখনও পর্যন্ত তাদের কারোর ওপর পবিত্র আত্মা অবতরণ করেন নি। 17 এইজন্য পিতর ও যোহন প্রার্থনা করলেন; আর সেই দুই প্রেরিত, লোকদের মাথায় হাত রাখলে তারা পবিত্র আত্মা লাভ করল।
18 শিমোন যখন দেখল যে, প্রেরিতদের হাত রাখার মাধ্যমে পবিত্র আত্মা লাভ হচ্ছে, তখন সে টাকা এনে তাদের বলল, 19 “আমাকেও এই ক্ষমতা দিন যেন আমি যার ওপর আমার দুহাত রাখব, সে এই পবিত্র আত্মা পায়।”
20 পিতর শিমোনকে বললেন, “তুমি ও তোমার টাকা চিরকালের মত ধ্বংস হয়ে যাক্! ঈশ্বরের দান তুমি টাকা দিয়ে কিনবে বলে ভেবেছ? 21 এই বিষয়ে আমাদের সঙ্গে তোমার কোন অধিকার বা অংশ নেই, কারণ ঈশ্বরের দৃষ্টিতে তোমার অন্তর মোটেই সরল নয়। 22 তাই তুমি এই মন্দ চিন্তা থেকে তোমার মন-ফেরাও! আর প্রভুর কাছে প্রার্থনা কর, হয়তো তোমার মনের এই মন্দচিন্তার জন্য ক্ষমা পেলেও পেতে পার। 23 কারণ আমি দেখছি তোমার মধ্যে খুব ঈর্ষা আছে আর তুমি পাপের কাছে বন্দী।”
24 তখন শিমোন বলল, “আপনারাই আমার জন্য প্রভুর কাছে প্রার্থনা করুন, যেন আপনারা যা বললেন তার কিছুই আমার না হয়!”
25 প্রেরিতরা যীশুর বিষয়ে যা জানতেন, সে সম্বন্ধে সাক্ষ্য দিয়ে ও প্রভুর বার্তা প্রচার করে জেরুশালেমে ফিরে চললেন, যাবার পথে তাঁরা শমরিয়ার বিভিন্ন গ্রামে সুসমাচার প্রচার করলেন।
ফিলিপ ইথিওপিয়ার একজন লোককে শিক্ষা দিলেন
26 প্রভুর এক দূত ফিলিপকে বললেন, “প্রস্তুত হও, দক্ষিণে যে পথ জেরুশালেম থেকে ঘসার দিকে নেমে গেছে, সেই পথ ধরে নেমে যাও।”
27 তখন ফিলিপ প্রস্তুত হয়ে সেই পথ ধরে রওনা দিলেন এবং সেই পথে একজন ইথিওপিয়ানকে দেখতে পেলেন, তিনি নপুংসক। তিনি ইথিওপিয়ার কান্দাকি রাণীর কোষাধ্যক্ষ ছিলেন। ইনি জেরুশালেমে উপাসনা করতে গিয়েছিলেন। 28 ফেরার পথে তিনি তাঁর রথে বসে ভাববাদী যিশাইয়র পুস্তক থেকে পড়ছিলেন।
29 তখন পবিত্র আত্মা ফিলিপকে বললেন, “ঐ রথের কাছে যাও, তাঁর সঙ্গ ধর!” 30 ফিলিপ দৌড়ে রথের কাছে গিয়ে শুনলেন, সেই কোষাধ্যক্ষ ভাববাদী যিশাইয়র পুস্তক থেকে পড়ছেন। ফিলিপ জিজ্ঞেস করলেন, “আপনি যা পড়ছেন তা কি বুঝতে পারছেন?”
31 তিনি বললেন, “কি করে বুঝব যদি বুঝিয়ে দেওয়ার কেউ না থাকে?” আর তিনি ফিলিপকে রথে উঠে এসে তার কাছে বসতে বললেন। 32 শাস্ত্রের যে অংশটি তিনি পাঠ করছিলেন তা হল:
“হত হবার জন্য মেষের মতো তাঁকে নিয়ে যাওয়া হল।
লোম ছাঁটাইকারীদের সামনে ভেড়া যেমন মুখ বুজে থাকে,
তেমনি তিনি মুখ খোলেন নি।
33 তাঁর হীন অবস্থায়, তাঁর ন্যায় অধিকার থেকে তাঁকে বঞ্চিত করা হল।
কেউ আর কখনও তাঁর বংশধরদের কথা বলবে না,
কারণ পৃথিবীতে তাঁর জীবন সমাপ্ত হল।”(A)
34 সেই কোষাধ্যক্ষ ফিলিপকে বললেন, “অনুগ্রহ করে বলুন, ভাববাদী কার বিষয়ে এই কথা বলছেন? তিনি কি তাঁর নিজের বিষয়ে বলছেন, অথবা অন্য কারো বিষয়ে?” 35 তখন ফিলিপ শাস্ত্রের সেই অংশ থেকে শুরু করে যীশুর বিষয়ে সুসমাচার তাঁকে জানালেন।
36 তাঁরা রাস্তা দিয়ে যেতে যেতে জলাশয়ের কাছে এসে হাজির হলে সেই নপুংসক বললেন, “দেখুন! এখানে জল আছে! বাপ্তাইজ হতে আমার বাধা কোথায়?” 37 [a] 38 তিনি রথ থামাতে হুকুম করলেন, আর ফিলিপ ও নপুংসক উভয়ে জলে নামলেন। ফিলিপ তাঁকে বাপ্তিস্ম দিলেন। 39 তাঁরা যখন জলের মধ্য থেকে উঠলেন, তখন প্রভুর আত্মা ফিলিপকে সরিয়ে নিয়ে গেলেন, সেই কোষাধ্যক্ষ তাকে আর দেখতে পেলেন না; কিন্তু আনন্দ করতে করতে তাঁর পথে এগিয়ে চললেন। 40 ফিলিপ নিজেকে অসদোদে দেখতে পেলেন আর তিনি কৈসরিয়ার পথে রওনা হয়ে যাত্রা পথে সব নগরে সুসমাচার প্রচার করলেন।
হৃদয়ে লেখা দোষ
17 “যিহূদার লোকদের পাপ এক জায়গায় লেখা আছে
যেখানে সেইগুলো মোছা যায় না।
লোহার কলম দিয়ে এবং ডগায় হীরে[a] দেওয়া কলম দিয়ে
ঐ পাপগুলো পাথরের ওপর লেখা হয়েছে।
এবং ঐ সব পাথরগুলি হল তাদের হৃদয়।
ঐ সব পাপ লেখা হয়েছে তাদের উৎসর্গের বেদীর শৃঙ্গে।
2 তাদের সন্তানরা মনে রাখে সেই উৎসর্গের বেদীর কথা
যা মূর্ত্তিসমূহকে উৎসর্গ করা হয়েছিল।
তারা মনে রাখে সেই কাঠের খুঁটিগুলিকে
যেগুলো উৎসর্গ করা হয়েছিল আশেরাকে।
তারা সেই সব জিনিষ মনে রাখে
পাহাড় চূড়ায় এবং গাছের নীচে।
3 তারা মনে করবে উন্মুক্ত প্রান্তরে
পর্বতের ওপরে কি হয়েছিল।
যিহূদার লোকদের প্রচুর ধনসম্পত্তি।
আমি এইসব অন্য লোকদের বিলিয়ে দেব।
সেই লোকরা তোমাদের দেশে মূর্ত্তিসমূহের
সমস্ত উচ্চ স্থানগুলি ধ্বংস করে দেবে।
তোমরা সেই সমস্ত জায়গায় পূজা করেছো।
এবং সেটা একটা পাপ।
4 আমি তোমাদের যে দেশ দিয়েছিলাম তা তোমরা হারাবে।
তোমাদের শত্রুদের আমি তোমাদের দেশ নিয়ে নিতে দেব এবং তোমাদের তাদের দাস হতে দেব এমন এক দেশে যেটা তোমরা জানো না।
কারণ আমি ভীষণ ক্রুদ্ধ।
আমার ক্রোধ হল গনগনে আগুনের মতো এবং তোমরা সেই আগুনের লেলিহান শিখায় চিরদিনের জন্য পুড়ে ছাই হয়ে যাবে।”
লোকেদের বিশ্বাস এবং ঈশ্বরকে বিশ্বাস
5 প্রভু এগুলি বললেন,
“যারা অন্যদের বিশ্বাস করে,
তাদের জীবনে অমঙ্গল ঘটবে।
অন্যদের শক্তির ওপর যারা ভরসা করে থাকে
তাদের ক্ষেত্রেও অমঙ্গল ঘটবে।
কারণ ঐ লোকরা প্রভুর প্রতি বিশ্বাস হারিয়েছে।
6 ঐ সমস্ত লোকরা হল জনমানবহীন মরুভূমির কাঁটা ঝোপের মতো।
তপ্ত, শুষ্ক এবং অনুর্বর মাটিতেও তারা জন্মায়।
সেই সব ঝোপঝাড় জানে না
ঈশ্বর কত ভাল জিনিস দিতে পারেন।
7 কিন্তু যে ব্যক্তি প্রভুতে বিশ্বাস রাখবে, সে প্রভুর আশীর্বাদ থেকে বঞ্চিত হবে না।
কারণ প্রভু তাকে দেখাবেন যে তাঁকে বিশ্বাস করা যায়।
8 এই ব্যক্তি জলের ধারে রোপণ করা গাছের মতো শক্তিশালী হয়ে উঠবে।
যে গাছের লম্বা শিকড় জলের সন্ধান পাবে, গ্রীষ্মের সময় সেই গাছ ভীত হবে না।
সেই গাছের পাতা সর্বদা সবুজ থাকবে। খরার বছরেও সে নিশ্চিন্ত থাকবে।
ফলদান থেকে সে কখনও বিরত থাকবে না।
9 “মানুষের মন খুবই কৌশলপূর্ণ।
তার অসুস্থ অবস্থার কোন চিকিৎসা নেই।
10 কিন্তু আমিই প্রভু
এবং আমি মানুষের হৃদয়ও পরিষ্কার দেখতে পাই।
আমি একজন মানুষের মনকে পরীক্ষা করতে পারি।
আমি নির্ধারণ করতে পারি কার কি থাকা উচিৎ।
আমি একজন মানুষের কর্মের ফল নির্ধারণ করতে পারি।
11 কখনো কখনো একটা পাখী
অন্যের ডিমে তা দিয়ে তাকে ফোটায়।
ঠিক একই ভাবে একজন মানুষ ঠকায়
এবং অন্যের টাকা আত্মসাৎ করে।
সেই টাকা সে তার অর্ধেক জীবনে উড়িয়ে দেয়।
জীবনের শেষ পর্যায়ে সে বুঝতে পারে যে সে কত বড় নির্বোধ।”
12 একদম প্রথম থেকেই আমাদের উপাসনাগৃহে ছিল
ঈশ্বরের মহিমান্বিত সিংহাসন।
তা ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ স্থান।
13 প্রভু আপনিই ইস্রায়েলের আশা।
প্রভু আপনি জীবন্ত ঝর্ণার মত।
যদি একজন মানুষ আপনার কাছ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়,
তার জীবন হয়ে যাবে খুবই ছোট।
যিরমিয়র তৃতীয় অভিযোগ
14 প্রভু, আমাকে সারিয়ে তুলুন
এবং আমি সত্যি সত্যিই সেরে উঠব।
আমায় রক্ষা করুন,
তাহলে আমি সত্যিই রক্ষা পাব।
প্রভু, আমি আপনার প্রশংসা করি!
15 যিহূদার লোকরা আমাকে প্রশ্ন করেই চলেছে।
তারা বলছে, “যিরমিয়, প্রভুর বার্তার কি হল?
আমাদের দেখতে হবে ঐ বার্তা সত্যি হবে।”
16 প্রভু, আমি আপনার কাছ থেকে দৌড়ে পালাই নি
বরং আমি আপনাকেই অনুসরণ করে চলেছি।
আমি আপনারই ইচ্ছে মতো মেষপালক হয়েছি।
আমি কখনোই চাইনি ভয়ঙ্কর দিন আসুক।
প্রভু আমি যা বলেছিলাম, তা সব আপনি জানেন।
যা ঘটেছে তার সব কিছুই আপনি নিজের চোখে দেখেছেন।
17 প্রভু আমাকে ধ্বংস করবেন না।
আমি অশান্তির সময়গুলোতে আপনার ওপরে নির্ভর করে থাকি।
18 লোকরা আমাকে নির্যাতন করছে।
ওদের লজ্জিত করুন।
কিন্তু আমাকে নিরাশ করবেন না।
ঐ মানুষদের ভয় পেতে দিন।
কিন্তু আমাকে ভীত করে তুলবেন না।
প্রলয়ের সেই ভয়ঙ্কর দিনগুলো আমার শত্রুদের জীবনে আসুক।
তাদের চূর্ণ করুন এবং বারবার তাদের চূর্ণ করুন।
বিশ্রামের দিনকে পবিত্র রাখা হোক্
19 প্রভু, আমাকে এই কথাগুলি বললেন: “যিরমিয়, যাও লোকদের ফটকের কাছে গিয়ে দাঁড়াও যেটার মধ্যে দিয়ে যিহূদার রাজা ভেতরে ঢোকে এবং বাইরে যায়। লোকদের আমার বার্তা শোনাও এবং তারপর জেরুশালেমের প্রত্যেকটি ফটকে গিয়ে একই কাজ করো।”
20 ঐ লোকদের বলো: “প্রভুর বার্তা শোন। শোন যিহূদার রাজা এবং যিহূদার সাধারণ মানুষ। এই ফটক দিয়ে জেরুশালেমে যাতায়াত করা প্রত্যেকটি মানুষ আমার কথা শোন! 21 প্রভু এই কথাগুলি বলেছেন: ‘সতর্ক থেকো, তোমরা বিশ্রামের দিনে জেরুশালেমের ফটক দিয়ে কোন মালপত্র নিয়ে যাতায়াত করতে পারবে না। 22 বিশ্রামের দিনে ঘরের মালপত্রও নিয়ে যাতায়াত করতে পারবে না। সেদিন কাজেও যেতে পারবে না। বিশ্রামের দিন তোমরা পবিত্র দিন হিসেবে যাপন করবে। আমি তোমাদের পূর্বপুরুষদেরও এই আদেশ দিয়েছিলাম। 23 কিন্তু তারা আমার কথা শোনেনি। তোমাদের পূর্বপুরুষরা আমাকে অমান্য করেছিল। তোমাদের পূর্বপুরুষরা ছিল একগুঁয়ে ও জেদী। আমি তাদের শাস্তি দিয়েছিলাম কিন্তু তাতে কোন ফল হয়নি। তারা আমার কোন কথা শোনেনি। 24 কিন্তু তোমরা মন দিয়ে আমার কথা শোন। আমাকে মান্য করো। এই হল প্রভুর বার্তা: বিশ্রামের দিন জেরুশালেমের ফটক দিয়ে কোন মালপত্র বয়ে এনো না। বিশ্রামের দিন কাজ করা বন্ধ রেখো এবং ঐ দিনটি পবিত্র ভাবে কাটাও।
25 “‘যদি তোমরা আমার আদেশ মান্য করো, তাহলে দায়ূদের সিংহাসনে উপবিষ্ট রাজগণ জেরুশালেমের ফটক দিয়ে প্রবেশ করবে। রথে চড়ে, ঘোড়ায় চড়ে বিভিন্ন রাজারা আসবে। যিহূদা এবং জেরুশালেমের নেতারা হবে সেই রাজা এবং জেরুশালেম চিরকালের জন্য বসবাসকারী লোক পাবে। 26 যিহূদা শহর থেকে লোকরা আসবে জেরুশালেমে। জেরুশালেমের আশপাশের ছোট্ট গ্রাম থেকে, বিন্যামীন পরিবারগোষ্ঠীর দেশ থেকে, পশ্চিম পাহাড়ের পাদদেশ থেকে এবং নেগেভ থেকে লোকরা আসবে জেরুশালেমে। ওরা সবাই সঙ্গে নিয়ে আসবে ধুপধূনা, হোমবলি, শস্য নৈবেদ্য। তারা সেই সমস্ত উপহার এবং নৈবেদ্য আনবে প্রভুর উপাসনা গৃহের জন্য।
27 “‘কিন্তু যদি তোমরা আমাকে অমান্য করো এবং আমার কথা না শোন তাহলে অমঙ্গল ঘনিয়ে আসবে। যদি তোমরা বিশ্রামের দিন জেরুশালেমের ফটক দিয়ে বোঝা বহন করো এবং তাকে অপবিত্র করো, তাহলে আমি জেরুশালেমের ফটকগুলোতে আগুন জ্বালিয়ে দেব, সেই আগুন যা নেভানো যায় না। সেই আগুন জেরুশালেমের ফটক থেকে শুরু করে সব কিছু পুড়িয়ে ছাই করে ফেলবে।’”
এক পঙ্গু লোকের আরোগ্যলাভ
(মথি 12:9-14; লূক 6:6-11)
3 আবার তিনি সমাজ-গৃহে গেলেন। সেখানে একটা লোক ছিল, যার একটা হাত পঙ্গু হয়ে গিয়েছিল। 2 তিনি লোকটিকে সুস্থ করেন কি না, তা দেখার জন্য কিছু লোক তাঁর দিকে নজর রাখল, যাতে তাঁর দোষ ধরতে পারে। 3 যীশু সেই লোকটিকে, যার হাত পঙ্গু হয়ে গেছে তাকে বললেন, “সকলের সামনে এসে দাঁড়াও।”
4 পরে তিনি তাদের বললেন, “বিশ্রামবারে লোকের উপকার, না ক্ষতি করা, কোনটি বিধিসম্মত? জীবন রক্ষা করা না জীবন নষ্ট করা, কোনটি বিধিসম্মত?” কিন্তু তারা চুপ করে থাকল।
5 তখন তিনি ক্রুদ্ধ দৃষ্টিতে তাদের চারিদিকে তাকালেন এবং তাদের কঠোর মনের জন্য দুঃখ প্রকাশ করে সেই লোকটিকে বললেন, “তোমার হাত বাড়াও।” সে তার হাত বাড়িয়ে দিলে তার হাত ভাল হয়ে গেল। 6 ফরীশীরা বেরিয়ে গিয়ে সঙ্গে সঙ্গে হেরোদীয়দের সাথে যীশুর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করতে লাগল, যে কেমন করে তাঁকে হত্যা করতে পারে।
বহু মানুষ যীশুর অনুগামী হলেন
7 যীশু তাঁর শিষ্যদের নিয়ে গালীল হ্রদের দিকে গেলেন। গালীল, যিহূদিয়া, জেরুশালেম, ইদোম এমন কি যর্দন নদীর অপর পারে সোর ও সীদোন থেকে বহুলোক তাঁদের পিছনে পিছনে এল। 8 তিনি যে সমস্ত অলৌকিক কাজ করেছিলেন তা শুনে এই বিশাল জনতা তাঁর কাছে এসেছিল।
9 যাতে ভীড়ের চাপ তাঁর ওপরে না পড়ে, তাই তিনি শিষ্যদের তাঁর জন্য একটা ছোট নৌকা প্রস্তুত রাখতে বললেন। 10 তিনি বহু লোককে সুস্থ করেছিলেন, তাই সমস্ত রোগী তাঁকে স্পর্শ করার জন্য ঠেলাঠেলি করছিল। 11 অশুচি আত্মায় পাওয়া রোগীরা তাঁকে দেখতে পেলেই তাঁর পায়ের সামনে পড়ে চেঁচিয়ে বলত, “আপনি ঈশ্বরের পুত্র!” 12 কিন্তু তিনি তাদের কঠোরভাবে তিরস্কার করতেন যাতে তারা তাঁর পরিচয় না দেয়।
যীশু বারোজন প্রেরিতকে মনোনীত করলেন
(মথি 10:1-4; লূক 6:12-16)
13 তারপর তিনি পাহাড়ের ওপরে উঠে নিজের ইচ্ছামতো কিছু লোককে কাছে ডাকলে তাঁরা তাঁর কাছে এলেন। 14 আর তিনি বারোজনকে প্রেরিত পদে নিয়োগ করলেন যেন তাঁরা তাঁর সাথে সাথে থাকে এবং বাক্য প্রচারের জন্য যেন তিনি তাঁদের পাঠাতে পারেন। 15 তাঁদের তিনি ভূত ছাড়াবার ক্ষমতাও দিলেন। 16 তিনি যে বারোজনকে মনোনীত করেন তাঁদের নাম
শিমোন যাকে তিনি নাম দিলেন পিতর;
17 যাকোব যিনি সিবদিয়ের ছেলে এবং যাকোবের ভাই যোহন; (যাদের তিনি নাম দিয়েছিলেন, বোনেরগশ যার অর্থ “মেঘধ্বনির পুত্র।”)
18 আন্দ্রিয়,
ফিলিপ,
বর্থলময়,
মথি,
থোমা,
আলফেয়ের ছেলে যাকোব,
থদ্দেয়,
দেশ-ভক্ত,[a] দলের শিমোন
19 এবং যিহূদা ঈষ্করিয়োতীয় (যে যীশুকে শত্রুর হাতে ধরিয়ে দিয়েছিল।)
কেউ কেউ বলল যীশুর মধ্যে দিয়াবল আছে
(মথি 12:22-32; লূক 11:14-23; 12:10)
20 তিনি ঘরে ফিরে এলে সেখানে আবার এত লোকের ভীড় হল, যে তাঁরা খেতেও সময় পেলেন না। 21 যীশুর বাড়ির লোকরা এইসব বিষয় জানতে পেরে তাঁকে বাড়ি নিয়ে যাবার জন্য এলেন, কারণ লোকরা বলছিল যে তিনি পাগল হয়ে গেছেন।
22 জেরুশালেম থেকে যে ব্যবস্থার শিক্ষকরা এসেছিলেন তাঁরা বললেন, “যীশুকে বেলসবুবে পেয়েছে, ভুতদের রাজার সাহায্যে যীশু ভূত ছাড়ায়।”
23 তখন তিনি তাদের কাছে ডেকে দৃষ্টান্ত দিয়ে বলতে শুরু করলেন, “কেমন করে শয়তান নিজে শয়তানকে ছাড়াতে পারে? 24 কোন রাজ্য যদি নিজের বিপক্ষে নিজে ভাগ হয়ে যায়, তবে সেই রাজ্য টিকতে পারে না। 25 আবার কোন পরিবারে যদি পারিবারিক কলহ শুরু হয়, তবে সেই পরিবার এক থাকতে পারে না। 26 আবার শয়তান যদি নিজের বিরুদ্ধেই নিজে দাঁড়ায় তবে সেও টিকতে পারে না, তার শেষ হবেই।
27 “কেউই একজন শক্তিশালী মানুষের বাড়িতে ঢুকে তার দ্রব্য লুঠ করতে পারে না, যদি না সে সেই শক্তিশালী লোকটিকে আগে বাঁধে। আর বাঁধার পরই সে তার ঘর লুঠ করতে পারে।
28 “আমি তোমাদের সত্যি বলছি, মানুষ যে সমস্ত পাপ এবং ঈশ্বরের নিন্দা করে সেই সমস্ত পাপের ক্ষমা হতে পারে; 29 কিন্তু যদি কেউ পবিত্র আত্মার নিন্দা করে তবে তার ক্ষমা নেই, তার পাপ চিরস্থায়ী।”
30 তিনি এইসব কথা ব্যবস্থার শিক্ষকদের বললেন, কারণ তারা বলেছিল, তাঁকে অশুচি আত্মায় পেয়েছে।
যীশুর অনুগামীরাই তাঁর যথার্থ পরিবার
(মথি 12:46-50; লূক 8:19-21)
31 সেই সময় তাঁর মা ও ভাইরা তাঁর কাছে এলেন এবং বাইরে দাঁড়িয়ে তাঁরা যীশুকে লোক মারফৎ ডেকে পাঠালেন। 32 তখন তাঁর চারদিকে ভীড় করে যে লোকরা বসেছিল, তারা তাঁকে বলল, “দেখুন, আপনার মা, ভাই ও বোনেরা[b] আপনার জন্য বাইরে অপেক্ষা করছেন।”
33 তার উত্তরে তিনি তাদের বললেন, “কে আমার মা? আমার ভাইরা বা কারা?” 34 যারা তাঁকে ঘিরে বসেছিল তাদের দিকে তাকিয়ে তিনি বললেন, “এরাই আমার মা ও ভাই। 35 যে কেউ ঈশ্বরের ইচ্ছা পালন করে, সেই আমার মা, ভাই ও বোন।”
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International