Print Page Options
Previous Prev Day Next DayNext

M’Cheyne Bible Reading Plan

The classic M'Cheyne plan--read the Old Testament, New Testament, and Psalms or Gospels every day.
Duration: 365 days
Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)
Version
যিহোশূয় 20-21

নিরাপত্তার শহরসমূহ

20 তারপর প্রভু যিহোশূয়কে বললেন, “আমি তোমাকে আদেশ দেবার জন্য মোশিকে ব্যবহার করেছিলাম। মোশি তোমাকে কয়েকটি শহর বাছতে বলেছিলেন যেগুলো আশ্রয় দেবার জন্য বিশেষ শহর হিসেবে অভিহিত হবে। যদি কোন ব্যক্তি অন্য কাউকে অকস্মাত্‌ অনিচ্ছাকৃতভাবে হত্যা করে তাহলে সে ঐ নিরাপদ শহরগুলির একটিতে গিয়ে লুকিয়ে থাকতে পারবে, যেন প্রতিশোধ দাতা খুঁজে না পায়।

“লোকটিকে যা করতে হবে তা এই: যখন সে ঐ ধরণের কোন শহরে ছুটে পালিয়ে যাবে তখন সেই শহরের প্রবেশ দ্বারে তাকে থামতে হবে। থেমে সেখানকার দলপতিদের কাছে জানাতে হবে ঘটনাটা কি হয়েছিল। সেই সব শুনে তারা তাকে শহরে ঢুকতে দিতে পারে। সেখানে থাকার জন্য তারা তাকে জায়গা দেবে। কিন্তু যে ঐ ব্যক্তিটির পেছনে ধাওয়া করবে সে হয়তো শহরে এসে তার পিছু নিতে পারে। এরকম ঘটলে নেতারা যেন তাকে তাড়া করা ব্যক্তিটির হাতে ধরিয়ে না দেয়। তারা আশ্রয় প্রার্থীকে নিশ্চয়ই রক্ষা করবে। তারা এই কারণেই তাকে রক্ষা করবে যে, সে ইচ্ছা করে কাউকে হত্যা করে নি। সেটা নিছকই একটা দুর্ঘটনা। সে রেগে গিয়ে কাউকে হত্যা করবে বলে হত্যা করে নি। এটা হঠাৎ‌‌ই ঘটে গেছে। যতদিন না শহরের বিচার সভায় তার বিচার হয় ততদিন সেই ব্যক্তি সেখানে থাকবে। মহাযাজক যতদিন বেঁচে থাকবেন ততদিন সে সেখানে থাকতে পারবে। তারপর সে তার নিজের শহরে অর্থাৎ‌ যেখান থেকে সে পালিয়ে গিয়েছিল সেখানে নিজের বাড়ীতে ফিরে যাবে।”

তাই ইস্রায়েলবাসীরা কয়েকটা শহর ঠিক করে নিয়েছিল। তারা এগুলোর নাম দিল, “নিরাপত্তার শহর।” শহরগুলো হচ্ছে:

নপ্তালি পার্বত্য অঞ্চলের গালীলের অন্তর্গত কেদশ; ইফ্রয়িমের পার্বত্য অঞ্চলের শিখিম; যিহূদা পার্বত্য অঞ্চলের কিরিয়ৎ-অর্ব (হিব্রোণ);

রূবেণের মরু অঞ্চলের অন্তর্গত যিরীহোর কাছে যর্দন নদীর পূর্বদিকে বেৎ‌সর; গাদ দেশে গিলিয়দের অন্তর্গত রামোৎ; মনঃশির দেখে বাশনের অন্তর্গত গোলন।

যে কোন ইস্রায়েলবাসী বা তাদের সঙ্গে বসবাসকারী যে কোন বিদেশী হঠাৎ‌‌ যদি কাউকে হত্যা করে, ঐসব শহরে নিরাপত্তার জন্য পালিয়ে যেতে পারবে। সেখানে সে নিরাপদে থাকতে পারবে। যে তাকে ধরবার জন্য ছুটে আসছে সে তাকে হত্যা করতে পারবে না। আশ্রয়প্রার্থীর বিচার হবে সেই শহরের বিচারসভায়।

যাজক ও লেবীয়দের জন্য নগরসমূহ

21 লেবীয় পরিবারগোষ্ঠীর প্রধানরা যাজক ইলিয়াসর নূনের পুত্র যিহোশূয় এবং ইস্রায়েলের অন্যান্য পরিবারগোষ্ঠীর প্রধানদের কাছে কথা বলতে গেল। কনান দেশের শীলো শহরে এই আলোচনা বৈঠক হল। লেবীয় শাসকরা তাদের বলল, “প্রভু মোশিকে আদেশ দিয়েছিলেন যে তিনি যেন আমাদের থাকার জন্যে কিছু শহরের ব্যবস্থা করেন। প্রভু তাকে আরও বলেছিলেন আমাদের পশুরা যাতে চরে খেতে পারে সে রকম কিছু মাঠও যেন তিনি আমাদের দেন।” সুতরাং ইস্রায়েলবাসীরা প্রভুর এই নির্দেশ পালন করলো। তারা লেবীয়দের এইসব শহর ও পশুদের জন্য মাঠঘাট দিল।

লেবি পরিবারগোষ্ঠীর যাজক হারোণের উত্তরপুরুষরা হল এই কহাৎ‌ পরিবার। কহাৎ‌ পরিবারের একটা অংশকে দেওয়া হল 13টি শহর। সেই 13টি শহর ছিল যিহূদা, শিমিয়োন আর বিন্যামীনদের।

বাকী কহাত পরিবারের দশটি শহর দেওয়া হল, সেই অঞ্চলে যেখানে ইফ্রয়িম, দান এবং মনঃশি পরিবারগোষ্ঠীর অর্ধেকের অধীনে ছিল।

গের্শোন পরিবারের লোকদের দেওয়া হল 13টি শহর। এই শহরগুলি ছিল সেই অঞ্চল, যেগুলি বাশনে বসবাসকারী ইষাখর, আশের, নপ্তালি এবং অর্ধেক মনঃশি পরিবারগোষ্ঠীর অধীনে ছিল।

মরারি পরিবারের লোকরা পেল 12টি শহর। রূবেণ, গাদ এবং সবূলূনদের অঞ্চলে ছিল এইসব শহর।

ইস্রায়েলের অধিবাসীরা তাদের চারপাশের এইসব শহর ও মাঠঘাট লেবীয়দের দিয়েছিল। প্রভু যে ভাবে মোশিকে আদেশ দিয়েছিলেন, তা পালন করতেই তারা তাদের এইসব মাঠঘাট ও শহর দিয়েছিল।

যিহূদা এবং শিমিয়োনের অঞ্চলে যে সব শহর ছিল এই হল সেগুলোর নাম। 10 কহাত পরিবারভুক্ত লেবীয়দের প্রথম শ্রেনীর শহরগুলি দেওয়া হল। 11 তারা ওদের দিয়েছিল কিরিয়ৎ-অর্ব (এটা হচ্ছে হিব্রোণ। অনাকের পিতা অর্বের নামেই এর নামকরণ হয়েছিল।) পশুদের জন্য তারা শহরের কাছাকাছি কিছু মাঠও দিয়েছিল। 12 কিন্তু কিরিয়ৎ-অর্বর চারপাশের ছোটছোট শহর আর মাঠগুলো ছিল যিফূন্নির পুত্র কালেবের। 13 সেই জন্য তারা হারোণের উত্তরপুরুষদের হিব্রোণ শহরটা দিয়ে দিয়েছিল। (হিব্রোণ ছিল নিরাপদে বাস করার শহর।) এছাড়াও তারা হারোণের উত্তরপুরুষদের দিয়েছিল লিব‌্নার অন্তর্গত শহরগুলো, 14 য়ত্তীর, ইষ্টমোয, 15 হোলোন, দবীর, 16 ঐন, যুটা এবং বৈৎ‌-শেমশ। তারা তাদের পশুদের জন্য এইসব শহরগুলোর আশেপাশের কিছু মাঠও দিয়েছিল। এই দুটি সম্প্রদায়ের জন্য 9টি শহর দিয়েছিল।

17 বিন্যামীন পরিবারগোষ্ঠীর শহরগুলোও তারা হারোণের উত্তরপুরুষদের দিয়েছিল। শহরগুলি হচ্ছে: গিবিয়োন, গেবা, 18 অনাথোৎ‌ এবং অল্মোন। তারা তাদের এই চারটি শহর এবং তাদের পশুদের জন্য শহরের আশপাশের মাঠঘাট দিল। 19 মোট 13টি শহর তারা যাজকদের দান করেছিল। (যাজকরা সকলেই হারোণের উত্তরপুরুষ।) তারা পশুদের জন্যে প্রত্যেক শহরের লাগোয়া মাঠও দিয়েছিল।

20 কহাৎ‌ গোষ্ঠীর অন্যান্যদের দেওয়া হয়েছিল ইফ্রয়িম পরিবারগোষ্ঠীর এলাকার শহরগুলো। তারা পেয়েছিল এইসব শহর: 21 পাহাড়ী দেশ ইফ্রয়িমের শিখিম শহর (একটি আশ্রয় দেবার শহর)। তারা গেষরও পেল। 22 কিবসয়িম এবং বৈৎ‌-হোরোণও পেল। ইফ্রয়িমরা তাদের দিয়েছিল চারটে শহর এবং পশুদের জন্য চারপাশের কিছু মাঠ।

23 দান পরিবারগোষ্ঠী দিয়েছিল ইল্তকী, গিব্বথোন, 24 অয়ালোন এবং গাৎ‌-রিম্মোণ। মোট চারটে শহর এবং শহরের লাগোয়া মাঠ দানগোষ্ঠী তাদের দিয়েছিল।

25 অর্ধেক মনঃশি পরিবারগোষ্ঠী তাদের দিয়েছিল তানক এবং গাৎ‌-রিম্মোণ। এই অর্ধেক মনঃশি পরিবারগোষ্ঠী তাদের মোট দুটি শহর এবং পশুদের জন্য শহরের চারপাশের মাঠঘাট দিয়েছিল।

26 তারপর কহাত পরিবারের বাকী লোকরা পেয়েছিল মোট দশটি শহর এবং পশুদের জন্য শহরের লাগোয়া মাঠগুলো।

27 গের্শোন পরিবারও লেবি পরিবারগোষ্ঠী থেকে এসেছে। তারা পেয়েছিল এইসব শহর:

অর্ধেক মনঃশি পরিবারগোষ্ঠী থেকে বাশনের অন্তর্গত গোলন। (গোলন ছিল নিরাপত্তার শহর) তারা তাদের বীষ্টরা শহরও দিয়েছিল। সব মিলিয়ে মনঃশির এই অর্ধেক পরিবারগোষ্ঠী তাদের মোট দুটি শহর এবং পশুদের জন্য কিছু মাঠ দিয়েছিল।

28 ইষাখর পরিবারগোষ্ঠী দিয়েছিল কিশিয়োন, দাবরত্‌, 29 যর্মুৎ‌ এবং ঐন্-গন্নীম। মোট চারটি শহর এবং পশুদের জন্য মাঠ।

30 আশের পরিবারগোষ্ঠী থেকে পেয়েছিল মিশাল, আব্দোন, হিল্কত্‌ এবং 31 রহোব। মোট চারটি শহর এবং পশুদের জন্য শহরের লাগোয়া মাঠ।

32 নপ্তালি পরিবারগোষ্ঠী থেকে পেয়েছিল গালীলের অন্তর্গত কেদশ। (কেদশ ছিল নিরাপত্তার শহর।) তাছাড়া হম্মেৎ‌-দোর, কর্ত্তন, মোট তিনটি শহর এবং পশুদের জন্য মাঠ।

33 গের্শোন পরিবার পেয়েছিল মোট 13টি শহর এবং পশুদের জন্য শহরগুলোর লাগোয়া মাঠগুলো।

34-39 লেবীয় গোষ্ঠীর অন্য শাখা হচ্ছে মরারি পরিবার। তারা পেয়েছিল এইসব শহর:

সবূলূন পরিবারগোষ্ঠী থেকে পেয়েছিল যক্লিয়াম, কার্ত্তা, দিম্না এবং নহলোল। সবূলূন মোট চারটি শহর এবং পশুদের জন্য মাঠ দিয়েছিল। রূবেণ পরিবারগোষ্ঠী থেকে পেয়েছিল বেৎ‌সর, যহস, কদেমোৎ, মেফাৎ। রূবেণ মোট চারটি শহর এবং পশুদের জন্য মাঠ দিয়েছিল। গাদ পরিবারগোষ্ঠীর কাছ থেকে পাওয়া গেল গিলিয়দের অন্তর্গত রামোৎ। (রামোৎ ছিল নিরাপত্তার শহর।) তাছাড়া মহনয়িম, হিষ্বোণ এবং যাসের। গাদ মোট চারটি শহর আর পশুদের জন্য শহরের লাগোয়া মাঠ দিয়েছিল।

40 লেবীয়দের শেষ পরিবার, মরারি পরিবার মোট 12 টি শহর পেয়েছিল।

41 সুতরাং লেবীয় গোষ্ঠী পেয়েছিল মোট 48 টি শহর এবং প্রতিটি শহরের লাগোয়া পশুদের জন্য মাঠ। এইসব ছিল অন্যান্য পরিবারগোষ্ঠীর। 42 প্রত্যেক শহরেই পশুদের জন্য কিছু মাঠ ছিল।

43 ইস্রায়েলবাসীদের কাছে প্রভু যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তা তিনি পালন করলেন। তিনি তাঁর প্রতিশ্রুতি মতোই সব জমি জায়গা দিয়েছিলেন এবং লোকরা সেসব জায়গায় বসবাস করতে লাগল। 44 প্রভু তাদের আশেপাশের সমস্ত দেশগুলিতে তাদের পূর্বপুরুষদের কাছে দেওয়া প্রতিশ্রুতি অনুসারে শান্তি বজায় রাখলেন। কোন শত্রুই তাদের পরাজিত করতে পারে নি। প্রত্যেক শত্রুকে হারাবার মতো ক্ষমতা প্রভু তাদের দিয়েছিলেন। 45 ইস্রায়েলবাসীদের কাছে প্রভু যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তার সবই তিনি রেখেছিলেন। কোনো প্রতিশ্রুতিই ব্যর্থ হয় নি। প্রত্যেক প্রতিশ্রুতিই বাস্তবে পরিণত হয়েছিল।

প্রেরিত 1

লূকের লেখা অন্য পুস্তক

প্রিয় থিয়ফিল,

আমার প্রথম বইটিতে যীশু যে সব কাজ করেছিলেন ও শিক্ষা দিয়েছিলেন তার বিবরণ ছিল। আমি যা লিখেছি, তাতে শুরু থেকে তাঁর স্বর্গারোহণের দিন পর্যন্ত তিনি যা করেছিলেন এবং শিখিয়েছিলেন তার সব বিবরণ আছে। স্বর্গারোহণের পূর্বে যীশু তাঁর মনোনীত প্রেরিতদের, পবিত্র আত্মার সাহায্যে তাদের কি করণীয় তা জানিয়েছিলেন। মৃত্যুর পর যীশু, তাঁর প্রেরিতদের কাছে দেখালেন যে তিনি জীবিত এবং অনেক পরাক্রমী কার্য সাধন করে তিনি এর প্রমাণ দিলেন। মৃতদের মধ্য থেকে যীশুর পুনরুত্থানের পর 40 দিনের মধ্যে প্রেরিতরা যীশুকে বহুবার দেখেছিলেন। এই সময়ে যীশু তাঁদের ঈশ্বরের রাজ্যের বিষয়ে নানা কথা বলেছিলেন। আর এক সময় যখন তিনি তাঁদের সঙ্গে আহার করছিলেন, তখন আদেশ দিয়েছিলেন, যেন তাঁরা জেরুশালেম ছেড়ে না যান। যীশু বলেছিলেন, “পিতা তোমাদের যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, যে বিষয়ে এর আগেও আমি তোমাদের জানিয়েছিলাম, তোমরা সেই প্রতিশ্রুত বিষয় পাবার অপেক্ষায় জেরুশালেমে থেকো। কারণ যোহন জলে বাপ্তাইজ করতেন, কিন্তু কিছু দিনের মধ্যেই তোমরা পবিত্র আত্মায় বাপ্তাইজিত হবে।”

যীশুকে স্বর্গে নিয়ে যাওয়া হল

এরপর প্রেরিতরা একত্র হয়ে যীশুকে জিজ্ঞেস করলেন, “প্রভু, এই সময় আপনি কি ইস্রায়েলকে তাঁদের রাজ্য ফিরিয়ে দেবেন?”

তিনি তাঁদের বললেন, “পিতা নিজেই কেবল সময় ও তারিখগুলি নির্ধারণ করেন, এসব বিষয় তোমরা জানতে পারবে না; কিন্তু যখন পবিত্র আত্মা তোমাদের কাছে আসবেন, তখন তোমরা শক্তি পাবে আর তোমরা আমার সাক্ষী হবে। লোকদের কাছে তোমরা আমার কথা বলবে। প্রথমে তোমরা জেরুশালেমের লোকদের কাছে সাক্ষ্য দেবে, তারপর সমগ্র যিহূদিয়া ও শমরিয়ায়, এমনকি জগতের শেষ সীমানা পর্যন্ত তোমরা আমার কথা বলবে।”

এই কথা বলার পর প্রেরিতদের চোখের সামনে তাঁকে আকাশে তুলে নেওয়া হল। আর এক খানা মেঘ তাঁকে তাঁদের দৃষ্টির আড়াল করে দিল। 10 যীশু যখন যাচ্ছেন, আর প্রেরিতরা আকাশের দিকে তাকিয়ে আছেন, ঠিক সেই সময় সাদা ধবধবে পোশাক পরা দুই ব্যক্তি তাঁদের পাশে এসে দাঁড়ালেন। 11 সেই দুই ব্যক্তি প্রেরিতদের বললেন, “হে গালীলের লোকেরা, তোমরা আকাশের দিকে তাকিয়ে রয়েছ কেন? এই যে যীশু, যাকে তোমাদের সামনে থেকে স্বর্গে তুলে নেওয়া হল, তাঁকে যে ভাবে তোমরা স্বর্গে যেতে দেখলে, ঠিক সেই ভাবেই তিনি ফিরে আসবেন।”

এক নতুন প্রেরিতের মনোনয়ন

12 এরপর তাঁরা জৈতুন পর্বতমালা থেকে নেমে জেরুশালেমে ফিরে গেলেন। জেরুশালেম থেকে পাহাড়টির দূরত্ব ছিল এক বিশ্রামবারের পথ অর্থাৎ প্রায় আধ মাইল। 13 এরপর প্রেরিতরা শহরে প্রবেশ করে তাঁরা যে বাড়িতে থাকতেন, তার উপরের তলার কামরায় গেলেন। এই প্রেরিতদের নাম ছিল; পিতর, যোহন, যাকোব, আন্দ্রিয়, ফিলিপ, থোমা, বর্থলময়, মথি, (আলফেয়ের ছেলে) যাকোব, শিমোন, যাকে দেশভক্ত বলা হত এবং (যাকোবের ছেলে) যিহূদা।

14 প্রেরিতরা সকলেই একসঙ্গে সেখানে একই উদ্দেশ্যে সর্বদা প্রার্থনা করছিলেন। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন কয়েকজন স্ত্রীলোক, যীশুর মা মরিয়ম ও তাঁর ভাইরা।

15 ঐ দিনগুলিতে যখন খ্রীষ্ট বিশ্বাসীরা একত্রিত হয়ে প্রার্থনা করছিলেন, সেখানে প্রায় 120 জন উপস্থিত ছিলেন। সেই সময় পিতর উঠে দাঁড়িয়ে বললেন, 16-17 “ভাইরা যিহূদা সম্পর্কে পবিত্র আত্মা দায়ূদের মুখ দিয়ে যে কথা বহুপূর্বেই বলেছিলেন, শাস্ত্রের সেই কথা পূর্ণ হওয়ার প্রয়োজন ছিল। যিহূদাই সেই ব্যক্তি যে যীশুর গ্রেপ্তারকারীদের পরিচালনা দিয়েছিল। যিহূদা ছিল আমাদেরই একজন, যে আমাদের পরিচর্য্যা কাজের সহভাগীও ছিল।”

18 (এই লোক তার এই অন্যায় কাজের দ্বারা অর্থ রোজগার করে তাই দিয়ে এক টুকরো জমি কিনেছিল; কিন্তু সে মাথাটা নীচু করে মাটিতে পড়ল, আর তার পেট ফেটে ভেতরের নাড়ী-ভুঁড়ি সব বেরিয়ে পড়ল। 19 যারা জেরুশালেমে বাস করে, তারা সকলেই একথা জানে। তাই সেই জমিটিকে তাদের ভাষায় বলে হকলদামা, যার অর্থ, “রক্তের ভূমি।”)

20 বাস্তবিক, “গীতসংহিতায় লেখা আছে:

‘তার গৃহ যেন পরিত্যক্ত হয়;
    কেউ যেন তার মধ্যে বাস না করে।’(A)

আরও লেখা আছে:

‘আর অন্য কেউ তার স্থান দখল করুক।’(B)

21-22 “তাই যোহন যখন বাপ্তাইজ করতে শুরু করেন, সেই সময় থেকে প্রভু যীশুর স্বর্গারোহণের সময় পর্যন্ত যতদিন প্রভু যীশু আমাদের সঙ্গে ছিলেন, সেই দিনগুলিতে যাঁরা সব সময় আমাদের সঙ্গে থাকতেন, তাঁদের মধ্যে একজনকে আমাদের মনোনীত করা প্রয়োজন। যিনি আমাদের দলে যোগদান করবেন, তাঁকে অবশ্যই আমাদের সঙ্গে যীশুর পুনরুত্থানের সাক্ষী হতে হবে।”

23 তখন প্রেরিতরা দুজন লোককে উপস্থিত করলেন, যোষেফ, যাকে বার্শব্বা বলে ডাকে, যার অপর নাম যুষ্ট, আর মত্তথিয়কে। 24-25 এরপর তাঁরা প্রার্থনা সহকারে বললেন, “প্রভু, তুমি সকলের অন্তঃকরণ জান। এই দুজনের মধ্যে কাকে তুমি মনোনীত করেছ তা আমাদের দেখিয়ে দাও। যিহূদা তার নিজের জায়গায় যাবার জন্য প্রেরিতরূপে এই সেবার কাজ ত্যাগ করে গেছে। তার জায়গায় কাকে তুমি মনোনীত করেছ তা আমাদের দেখাও।” 26 এরপর তাঁরা ঐ দুজনের জন্য ঘুঁটি চাললেন আর মত্তথিয়ের নাম উঠল। এইভাবে তিনি এগারো জন প্রেরিতের সঙ্গে প্রেরিত বলে গন্য হলেন।

যিরমিয় 10

প্রভু এবং মূর্ত্তিরা

10 ইস্রায়েলীয়রা, প্রভুর কথা শোন! প্রভু যা বলেছেন তা হল:

“ভিন দেশীয়দের মতো বাস কোরো না।
    আকাশে বিশেষ চিহ্ন দেখে ভীত হয়ো না।
অন্য দেশের লোকেরা এই চিহ্ন দেখে ভীত।
    কিন্তু তোমরা এসব দেখে ভয় পেয়ো না।
অন্য দেশের রীতি কোন কিছুর যোগ্য নয়।
    কারণ তাদের দেবতা কিছু নয়, শুধু মূর্ত্তি মাত্র।
তাদের মূর্ত্তি প্রতিমা ছোট্ট কাঠের তৈরী।
    শ্রমিকরা জঙ্গলে কাঠ কেটেছিল, তারপর তারা তা এনেছিল এবং তাকে মূর্ত্তিসমূহের রূপ দিয়েছিল।
সেই মূর্ত্তিকে সুন্দর করে তোলার জন্য কাঠের মূর্ত্তিতে সোনা রূপো লাগিয়েছে।
তারপর সেই মূর্ত্তিরা যাতে পড়ে না যায় তার জন্য
    তারা হাতুড়ি ও পেরেকের সাহায্যে তাদের মাটিতে আবদ্ধ করেছে।
অন্যান্য জাতিসমূহের মূর্ত্তিগুলো তরমুজ ক্ষেতে কাকতাড়ুয়ার মত।
    ঐ মূর্ত্তিরা কথা বলতে পারে না।
তারা নিজের পায়ে হাঁটতে পারে না।
    তাই লোকরা তাদের কাঁধে করে বয়ে নিয়ে বেড়ায়।
সুতরাং ঐ মূর্ত্তিদের ভয় পেও না।
    তারা তোমাদের যেমন সাহায্য করতে পারবে না,
    তেমন কোন ক্ষতিও করতে পারবে না।”

প্রভু আপনি মহান!
    আপনার মতো আর কেউ নেই।
    আপনার নাম হল মহান এবং শক্তিমান!
হে ঈশ্বর, প্রত্যেকের আপনাকে সম্মান জানানো উচিৎ‌।
    আপনি হলেন সমস্ত দেশের রাজা।
আপনি তাদের সম্মান পাওয়ার যোগ্য।
    জাতিগুলির মধ্যে অনেক বিজ্ঞ ব্যক্তি আছেন, কিন্তু কেউ আপনার মতো বিজ্ঞ নয়।

অন্য দেশের সমস্ত লোকরা হল নির্বোধ।
তাদের শিক্ষামালা আসে মূল্যহীন কাঠের মূর্ত্তিসমূহ থেকে।
    তাদের দেবতারা হল শুধুমাত্র কাঠের মূর্ত্তি।
তারা সেই মূর্ত্তি তৈরী করতে তর্শীশের রূপো
    এবং ঊফসের সোনা ব্যবহার করেছে।
ছুতোর মিস্ত্রী এবং স্বর্ণকার শ্রমিকরা তাদের সেই মূর্ত্তিদের তৈরী করেছে।
তারা সেই মূর্ত্তিদের বেগুনী ও নীল রঙের পোশাক পরিয়েছে।
    “দক্ষ কারিগররা” ঐ “দেবতাদের” তৈরী করেছে।
10 কিন্তু প্রভুই হলেন সত্যিকারের ঈশ্বর।
    তিনিই একমাত্র ঈশ্বর যিনি জীবিত।
    তিনি হলেন সর্বকালের রাজা।
ঈশ্বর ক্রুদ্ধ হলে পৃথিবী কেঁপে ওঠে
    এবং সেই ক্রোধ থামানোর ক্ষমতা ঐ ভিনদেশীদের নেই।

11 প্রভু বললেন, “এই বার্তা ঐ লোকদের জানিয়ে দাও।
    ‘ঐ ভ্রান্ত দেবতা পৃথিবী ও স্বর্গকে তৈরী করেনি।
    তারা ধ্বংস হবে এবং তাদের স্বর্গ ও মর্ত্য থেকে অদৃশ্য করে ফেলা হবে।’”

12 ঈশ্বর হলেন সেই একজন যিনি এই পৃথিবী তৈরী করতে
    তাঁর শক্তি ব্যবহার করেছিলেন।
ঈশ্বর তাঁর জ্ঞান দিয়ে এই পৃথিবীকে তৈরী করেছেন।
    তাঁর জ্ঞান ও বোধশক্তি দিয়ে পৃথিবীর ওপরে আকাশের আচ্ছাদন তৈরী করেছেন।
13 ঈশ্বরই উচ্চ বজ্রনির্ঘোষ, বন্যা ও বৃষ্টির কারণ।
    তিনিই পৃথিবীর সর্বত্র মেঘের সৃষ্টি করেছেন।
তিনিই বৃষ্টির সঙ্গে বিদ্যুৎ পাঠান।
    তিনিই হাওয়ার সৃষ্টি করেন।

14 মানুষ এতো বোকা!
    নিজের হাতে তৈরী মূর্ত্তিদের কাছেই স্বর্ণকার শ্রমিকরা বোকা বনে গেল।
ঐ মূর্ত্তিরা মিথ্যে ছাড়া আর কিছু নয়,
    ওরা বোধ-বুদ্ধিহীন।
15 ঐ মূর্ত্তিরা কোন কিছুর যোগ্য নয়।
    ওদের নিয়ে কৌতুক করা যায়।
    বিচারের সময় ঐ মূর্ত্তিদের ধ্বংস করা হবে।
16 কিন্তু যাকোবের ঈশ্বর ঐ মূর্ত্তিদের মতো নয়।
    ঈশ্বর সব কিছু সৃষ্টি করেছেন।
ইস্রায়েলের পরিবারবর্গকে তিনি তাঁর নিজের লোক বলে নির্বাচন করেছিলেন।
    ঈশ্বরের নাম হল “প্রভু সর্বশক্তিমান।”

ধ্বংস আসছে

17 তোমাদের যথাসর্বস্ব নিয়ে চলে যাবার জন্য তৈরী হও।
যিহূদার লোকরা তোমরা শহরের মধ্যে বন্দী হয়ে আছো
    এবং তোমাদের চারিদিকে শত্রুরা ঘিরে রয়েছে।
18 প্রভু বললেন,
“এই বার আমি যিহূদার লোকদের এই দেশের বাইরে বার করে দেব।
    আমি তাদের কাছে যন্ত্রণা ও অশান্তি আনব।
    তারা যাতে উচিৎ‌ শিক্ষা পায় তার জন্য আমি এগুলি করব।”

19 হায় আমি (যিরমিয়) খুব বাজেভাবে আঘাত পেয়েছি।
    এই আঘাতে আমি আহত এবং সেরে উঠতে পারব না।
তবুও আমি নিজেকে বললাম, “এটা আমার অসুখ
    এবং এর মধ্যে দিয়েই আমাকে কষ্ট পেতে হবে।”
20 আমার তাঁবু ধ্বংস হয়ে গিয়েছে।
    তাঁবুর সমস্ত দড়ি ছিন্ন ভিন্ন হয়ে গিয়েছে।
আমার সন্তানরা আমায় ত্যাগ করে চলে গিয়েছে।
    আমার তাঁবু খাটিয়ে দেবার জন্য কোন লোক নেই।
আমাকে স্থায়ী একটা আস্তানা
    গড়ে দেবার জন্যও কেউ নেই।
21 মেষপালকরা হল নির্বোধ।
    তারা প্রভুকে খোঁজার চেষ্টা করেনি।
তারা জ্ঞানী নয়, তাই তাদের মেষের পাল
    বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে এবং হারিয়ে গিয়েছে।
22 শোন! উত্তর দিকে প্রচণ্ড শোরগোল উঠেছে।
    একটি সৈন্যবাহিনী যিহূদার শহরগুলিকে ধ্বংস করে দেবে।
যিহূদা শূন্য এক মরুভূমিতে পরিণত হবে।
    সেখানে শুধু শেয়াল চরে বেড়াবে।

23 প্রভু, আমি জানি যে লোকরা সত্যি সত্যি জানে না কি করে তাদের ভাগ্য নিয়ন্ত্রণ করতে হয়।
    লোকরা সত্যি সত্যি জানে না কিভাবে সঠিক পথে জীবনযাপন করতে হয়।
24 প্রভু, আমাদের শোধন করুন!
    কিন্তু ন্যায়নিষ্ঠ হোন।
ক্রোধে আমাদের আর শাস্তি দেবেন না!
    অথবা আপনি আমাদের ধ্বংস করে দেবেন!
25 যদি আপনি ক্রুদ্ধ হন তাহলে অন্য দেশগুলিকে শাস্তি দিন।
    তারা আপনাকে চেনে না, সম্মান করে না।
    তারা আপনার উপাসনাও করে না।
ওই দেশগুলি যাকোবের পরিবারকে ধ্বংস করেছিল।
    ধ্বংস করেছিল ইস্রায়েলকে।
    তারা ধ্বংস করেছিল ইস্রায়েলের স্বদেশকে।

মথি 24

ভবিষ্যতে মন্দিরের বিনাশ

(মার্ক 13:1-31; লূক 21:5-33)

24 যীশু মন্দির থেকে যখন বাইরে যাচ্ছিলেন, সেই সময় তাঁর শিষ্যরা তাঁর কাছে এসে মন্দিরের বড় বড় দালানের দিকে তাঁর দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাইলেন। এর জবাবে যীশু তাঁদের বললেন, “তোমরা এখন এখানে এসব দেখছ, কিন্তু আমি তোমাদের সত্যি বলছি, এখানে একটা পাথর আর একটা পাথরের ওপর থাকবে না, এসবই ভুমিস্যাত হবে।”

যীশু যখন জৈতুন পর্বতমালার ওপর বসেছিলেন, তখন তাঁর শিষ্যরা একান্তে তাঁর কাছে এসে তাঁকে বললেন, “আমাদের বলুন, কখন এসব ঘটবে, আর আপনার আসার এবং এযুগের শেষ পরিণতির সময় জানার চিহ্নই বা কি হবে?”

এর উত্তরে যীশু তাদের বললেন, “দেখো, কেউ যেন তোমাদের না ঠকায়। আমি তোমাদের একথা বলছি কারণ অনেকে আমার নামে আসবে আর তারা বলবে, ‘আমি খ্রীষ্ট।’ আর তারা অনেক লোককে ঠকাবে। তোমরা নানা যুদ্ধের কথা শুনবে এবং তোমাদের কানে যুদ্ধের গুজব আসেব। কিন্তু দেখো, তোমরা ভয় পেও না, কারণ ঐ সব ঘটনা অবশ্যই ঘটবে কিন্তু তখনও শেষ নয়। হ্যাঁ, এক জাতি অন্য জাতির বিরুদ্ধে লড়াই করবে; আর এক রাজ্য অন্য রাজ্যের বিরুদ্ধে যাবে। সর্বত্র দুর্ভিক্ষ ও ভূমিকম্প হবে। কিন্তু এসব কেবল যন্ত্রণার আরম্ভ মাত্র।

“সেই সময় শাস্তি দেবার জন্য তারা তোমাদের ধরিয়ে দেবে ও হত্যা করবে। আমার শিষ্য হয়েছ বলে জগতের সকল জাতির লোকেরা তোমাদের ঘৃণা করবে। 10 সেই সময় অনেক লোক বিশ্বাস থেকে সরে যাবে। তারা একে অপরকে শাসনকর্তাদের হাতে ধরিয়ে দেবে আর তারা পরস্পরকে ঘৃণা করবে। 11 অনেক ভণ্ড ভাববাদীর আবির্ভাব হবে, যাঁরা বহু লোককে ঠকাবে। 12 অধর্ম বেড়ে যাওয়ার ফলে অধিকাংশ লোকদের মধ্য থেকে ভালবাসা কমে যাবে। 13 কিন্তু শেষ পর্যন্ত যে নিজেকে স্থির রাখবে, সে রক্ষা পাবে। 14 আর রাজ্যের (স্বর্গ) এই সুসমাচার জগতের সর্বত্র প্রচার করা হবে। সমস্ত জাতির কাছে তা সাক্ষ্যরূপে প্রচারিত হবে, আর তারপরই উপস্থিত হবে সেই সময়।

15 “তোমরা তখন দেখবে যে, ভাববাদী দানিয়েলের মধ্য দিয়ে যে ‘সর্বনাশা ঘৃণার বস্তুর’[a] কথা বলা হয়েছিল তা পবিত্র স্থানে দাঁড়িয়ে আছে।” (যে একথা পড়ছে সে বুঝুক এর অর্থ কি।) 16 “সেই সময় যারা যিহূদিয়াতে থাকবে, তারা পাহাড় অঞ্চলে পালিয়ে যাক্। 17 যে ছাদে থাকবে, সে যেন ঘর থেকে তার জিনিস নেবার জন্য নীচে না নামে। 18 ক্ষেতের মধ্যে যে কাজ করবে, সে তার জামা নেবার জন্য ফিরে না আসুক।

19 “হায়! সেই মহিলারা, যারা সেই দিনগুলিতে গর্ভবতী থাকবে, বা যাদের কোলে থাকবে দুধের শিশু। 20 তাই প্রার্থনা কর যেন শীতকালে বা বিশ্রামবারে তোমাদের পালাতে না হয়। 21 সেই দিনগুলিতে এমন মহাকষ্ট হবে যা জগতের শুরু থেকে এই সময় পর্যন্ত আর কখনও হয় নি এবং হবে ও না।

22 “আরো বলছি, সেই দিনগুলির সংখ্যা ঈশ্বর যদি কমিয়ে না দিতেন তবে কেউই অবশিষ্ট থাকত না। কিন্তু তাঁর মনোনীত লোকদের জন্য তিনি সেই দিনের সংখ্যা কমিয়ে রেখেছেন।

23 “সেই সময় কেউ যদি তোমাদের বলে, ‘দেখ, মশীহ (খ্রীষ্ট)’ এখানে, অথবা ‘দেখ, তিনি ওখানে,’ তাহলে সে কথায় বিশ্বাস করো না। 24 আমি একথা বলছি, কারণ অনেক ভণ্ড খ্রীষ্ট ও ভণ্ড ভাববাদীর উদয় হবে। তারা মহা আশ্চর্য কাজ করবে ও চিহ্ন দেখাবে, যেন লোকদের ঠকাতে পারে। যদি সম্ভব হয়, এমনকি ঈশ্বরের মনোনীত লোকদেরও ঠকাবে। 25 দেখ, আমি আগে থেকেই তোমাদের এসব কথা বলে রাখলাম।

26 “তাই তারা যদি তোমাদের বলে, ‘দেখ, খ্রীষ্ট প্রান্তরে আছেন!’ তবে তোমরা সেখানে যেও না, অথবা যদি বলে দেখ, ‘তিনি ভেতরের ঘরে লুকিয়ে আছেন,’ তাদের কথায় বিশ্বাস করো না। 27 আকাশে বিদ্যুত যেমন পূর্ব দিকে দেখা দিয়ে পশ্চিম দিক পর্যন্ত চমকে দেয়, তেমনি করেই মানবপুত্রের আবির্ভাব হবে। 28 যেখানে শব, সেখানেই শকুন এসে জড় হবে।

29 “মহাক্লেশের সেই দিনগুলির পরই,

‘সূর্য অন্ধকার হয়ে যাবে,
    চাঁদ আর আলো দেবে না।
তারাগুলো আকাশ থেকে খসে পড়বে
    আর আকাশমণ্ডলে মহা আলোড়নের সৃষ্টি হবে।’[b]

30 “সেই সময় আকাশে মানবপুত্রের চিহ্ন দেখা দেবে। তখন পৃথিবীর সকল গোষ্ঠী হা-হুতাশ করবে; আর তারা মানবপুত্রকে মহাপরাক্রম ও মহিমামণ্ডিত হয়ে আকাশের মেঘে করে আসতে দেখবে। 31 খুব জোরে তূরীধ্বনির সঙ্গে তিনি তাঁর স্বর্গদূতদের পাঠাবেন। তাঁরা আকাশের এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্ত পর্যন্ত, চার দিক থেকে তাঁর মনোনীত লোকদের জড়ো করবেন।

32 “ডুমুর গাছ দেখে শিক্ষা নাও, তার কচি ডালে পাতা এলে জানা যায় গ্রীষ্মকাল কাছে এসে গেছে। 33 ঠিক সেই রকম, যখন তোমরা দেখবে এসব ঘটছে, বুঝবে মানবপুত্রের পুনরুত্থানের সময় এসে গেছে, তা দরজার গোড়ায়় এসে পড়েছে। 34 আমি তোমাদের সত্যি বলছি, যতক্ষণ পর্যন্ত না এসব ঘটছে এই যুগের লোকদের শেষ হবে না। 35 আকাশ ও সমগ্র পৃথিবী বিলুপ্ত হয়ে যাবে, কিন্তু আমার কোন কথা বিলুপ্ত হবে না।

উপযুক্ত সময়ের কথা কেবল ঈশ্বরের জানা

(মার্ক 13:32-37; লূক 17:26-30, 34-36)

36 “সেই দিন ও মুহূর্ত্তের কথা কেউ জানে না, এমন কি স্বর্গদূতরা অথবা পুত্র নিজেও তা জানেন না, কেবলমাত্র পিতা (ঈশ্বর) তা জানেন।

37 “নোহের সময় যেমন হয়েছিল, মানবপুত্রের আগমনের সময় সেইরকম হবে। 38 নোহের সময়ে বন্যা আসার আগে, যে পর্যন্ত না নোহ সেই জাহাজে ঢুকলেন, লোকেরা সমানে ভোজন পান করেছে, বিয়ে করেছে ও ছেলেমেয়েদের বিয়ে দিয়েছে। 39 যে পর্যন্ত না বন্যা এসে তাদের সবাইকে ভাসিয়ে নিয়ে গেল, সে পর্যন্ত তারা কিছুই বুঝতে পারে নি যে কি ঘটতে যাচ্ছে।

“মানবপুত্রের আগমনও ঠিক সেইরকম ভাবেই হবে। 40 সেই সময় দুজন লোক মাঠে কাজ করবে। তাদের একজনকে নিয়ে যাওয়া হবে, অন্য জন পড়ে থাকবে। 41 দুজন স্ত্রীলোক যাঁতা পিষবে, তাদের একজনকে নিয়ে যাওয়া হবে, আর অন্যজন পড়ে থাকবে।

42 “তাই তোমরা সজাগ থাক, কারণ তোমাদের প্রভু কোন দিন আসবেন, তা তোমরা জানো না। 43 তবে একথা মনে রেখো, যদি গৃহস্থ জানত রাত্রে কোন সময় চোর আসবে, তবে সে জেগে থাকত। সে চোরকে নিজের ঘরের সিঁধ কাটতে দিত না। 44 তাই তোমরাও প্রস্তুত থাক, কারণ তোমরা যখন তাঁর আগমনের বিষয়ে ভাববেও না, মানবপুত্র সেই সময়ই আসবেন।

উপযুক্ত দাস ও দুষ্ট দাস

(লূক 12:41-48)

45 “সেই বিশ্বস্ত ও বুদ্ধিমান দাস তাহলে কে, যার ওপর তার প্রভু তাঁর বাড়ির অন্যান্য দাসদের ঠিক সময়ে খাবার দেবার দায়িত্ব দিয়েছেন? 46 সেই দাস ধন্য যার মনিব ফিরে এসে তাকে তার কর্তব্য করতে দেখবেন। 47 আমি তোমাদের সত্যি বলছি, তিনি সেই দাসকেই তাঁর সমস্ত সম্পত্তি দেখাশোনার ভার দেবেন।

48 “কিন্তু ধর, সেই দাস যদি দুষ্ট হয়, আর মনে মনে বলে, আমার মনিবের ফিরে আসতে অনেক দেরী আছে। 49 তাই সে তার সঙ্গী দাসদের মারধর করে এবং মাতালদের সঙ্গে খাওয়া-দাওয়া করতে শুরু করে। 50 তাহলে যে দিন ও যে সময়ের কথা সেই দাস ভাবতেও পারবে না বা জানবেও না, সেই দিন ও সেই মুহূর্ত্তেই তার মনিব এসে হাজির হবেন। 51 তখন তার মনিব তাকে কঠোর শাস্তি দেবেন, ভণ্ডদের মধ্যে তাকে স্থান দেবেন-যেখানে লোকেরা কান্নাকাটি করে ও যন্ত্রণায় দাঁতে দাঁত ঘসে।

Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)

Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International