Print Page Options
Previous Prev Day Next DayNext

M’Cheyne Bible Reading Plan

The classic M'Cheyne plan--read the Old Testament, New Testament, and Psalms or Gospels every day.
Duration: 365 days
Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)
Version
যিহোশূয় 14-15

14 যাজক ইলীয়াসর, নূনের পুত্র যিহোশূয় এবং ইস্রায়েলের পরিবারগোষ্ঠীর প্রধানরা লোকদের মধ্যে জমিটি ভাগ করে দিল। বহুকাল আগে প্রভু মোশিকে কিভাবে তাঁর ইচ্ছেমতো লোকরা নিজেদের জমি জায়গা বেছে নেবে সে বিষয়ে নির্দেশ দিয়েছিলেন। সাড়ে নটি পরিবারগোষ্ঠীর লোক ঘুঁটি চেলে[a] জমি পেয়েছিল। মোশি ইতিমধ্যেই আড়াইটি পরিবারগোষ্ঠীকে যর্দন নদীর পূর্বতীরের জমি দান করেছিলেন। কিন্তু অন্যান্যদের মতো লেবি পরিবারগোষ্ঠী কোনো জমি জায়গা পায় নি। বারোটি পরিবারগোষ্ঠীকে জমিজায়গা দেওয়া হয়েছিল। যোষেফের পুত্ররা মনঃশি ও ইফ্রয়িম এই দুটি পরিবারগোষ্ঠীতে ভাগ হয়ে গিয়েছিল। প্রত্যেক পরিবারগোষ্ঠীই কিছু জমি জায়গা পেয়েছিল। কিন্তু লেবি পরিবারগোষ্ঠীর লোকরা কোন জমিজায়গা পায়নি। তারা বসবাসের জন্য মাত্র কয়েকটি শহর পেয়েছিল। প্রত্যেক পরিবারগোষ্ঠীর জমি-জায়গার মধ্যেই এইসব শহরগুলি ছিল। পশুদের জন্য তারা মাঠও পেয়েছিল। ইস্রায়েলীয় পরিবারগোষ্ঠীর মধ্যে কি করে জমি ভাগ বাঁটোয়ারা করে দিতে হবে প্রভু মোশিকে তা বলে দিয়েছিলেন। প্রভু যেমন নির্দেশ দিয়েছিলেন সেই ভাবেই ইস্রায়েলবাসীরা জমি ভাগ করে নিয়েছিল।

কালেব তার জমি পেল

একদিন যিহূদার পরিবারগোষ্ঠীর কয়েকজন লোক গিল‌্গলে গিয়েছিল যিহোশূয়ের সঙ্গে দেখা করতে। এদের মধ্যে একজনের নাম কালেব। সে হচ্ছে কনিসীয় যিফুন্নির পুত্র। কালেব যিহোশূয়কে বলল, “আপনার মনে আছে প্রভু কাদেশ বর্ণেয়তে কি কি বলেছিলেন? প্রভু তাঁর দাস মোশিকে আমার এবং আপনার সম্বন্ধে বলেছিলেন। প্রভুর দাস মোশি আমরা যে দেশে যাচ্ছিলাম সেটা দেখবার জন্য আমাকে পাঠিয়েছিলেন। তখন আমার বয়স ছিল চল্লিশ। ফিরে এসে জায়গাটা সম্বন্ধে আমার মনোভাব আমি মোশিকে বলেছিলাম। আমার সঙ্গীরা লোকদের এমন সব কথা বলল যে তারা ভয় পেয়ে গেল। কিন্তু আমি সত্যিই বিশ্বাস করতাম যে প্রভু আমাদের সেই দেশ নেবার অনুমতি দেবেন। তাই মোশি আমার কাছে সেদিন প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। মোশি বললেন, ‘যে দেশে তোমরা গুপ্তচরবৃত্তি করতে গিয়েছিলে সে দেশ তোমাদেরই হবে। তোমার উত্তরপুরুষরা চিরকাল সে দেশ ভোগ করবে। আমি তোমাদের সে দেশ দেব, কারণ তুমি সত্যিই আমার প্রভু ঈশ্বরকে বিশ্বাস করেছিলে।’

10 “এখন প্রভু তাঁর প্রতিশ্রুতি অনুসারে আমাকে 45 বছর বাঁচিয়ে রেখেছেন। এতদিন আমরা সকলে মরুভূমিতে ঘুরে বেড়াচ্ছিলাম। এখন আমার বয়স 85 বছর। 11 আজও আমি সেদিনের মতোই শক্ত সমর্থ যেদিন মোশি আমাকে বাইরে পাঠিয়েছিলেন। সেই দিনের মতো আজও আমি যুদ্ধের জন্য তৈরী আছি। 12 তাই বলছি বহুকাল আগে প্রভু যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন সেই অনুসারে পাহাড়ী দেশটা আমাকে দিন। আপনি জানতেন তখন সেখানে শক্তিশালী অনাক বংশীয় লোকরা বসবাস করত। শহরগুলো ছিল বেশ বড় আর সুরক্ষিত। কিন্তু এখন প্রভু আমার সহায় এবং প্রভুর কথামতো সেই দেশের ভার আমি নেব।”

13 যিফুন্নির পুত্র কালেবকে যিহোশূয় আশীর্বাদ করলেন। তিনি তাকে দিলেন হিব্রোণ শহর। 14 সেই শহরে আজও কনিস বংশীয় যিফূন্নির পুত্র কালেবের পরিবারের লোকরা বাস করছে। সেই শহর আজও তার বংশধরদের জন্য থেকে গেছে, কারণ সে ইস্রায়েলের প্রভু ঈশ্বরকে বিশ্বাস করত। 15 আগে সেই শহরটার নাম ছিল কিরিয়ৎ-অর্ব। অনাক বংশীয় লোকেদের মধ্যে দানবীয় চেহারার বৃহত্তম মানুষ অর্বর নামেই সেই শহরের নাম রাখা হয়েছিল।

এরপর সে দেশে শান্তি বিরাজ করল।

যিহূদার জন্য জমিজমা

15 যিহূদাকে যে দেশ দেওয়া হয়েছিল তা তার পরিবারগোষ্ঠীর মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হল। দেশটি বিস্তৃত ছিল একদিকে ইদোমের সীমানা পর্যন্ত এবং অন্যদিকে দক্ষিণে তিম্নার ধার দিয়ে সিন মরুভূমি পর্যন্ত। যিহূদা দেশের দক্ষিণের সীমা লবণ সাগরের দক্ষিণ দিক থেকে শুরু। সেই সীমা দক্ষিণে অক্রব্বীম গিরিপথ হয়ে সিন পর্যন্ত গেছে। তারপর আবার দক্ষিণে কাদেশ-বর্ণেয় পর্যন্ত। এই সীমা হিষ্রোণ থেকে অদ্দর পর্যন্ত দেশ ছাড়িয়ে ঘুরে গিয়ে কর্ক্কা পর্যন্ত গেছে। মিশরের নদী অসমোন এবং ভূমধ্যসাগর পর্যন্ত এই সীমা প্রসারিত। ঐ সমস্ত ভূমি তাদের দক্ষিণ সীমানার ওপর ছিল।

তাদের পূর্বদিকে সীমানা ছিল লবণ নদীর তীর থেকে সেখান পর্যন্ত যেখানে যর্দন নদী সাগরে মিশেছে।

উত্তরের সীমানা শুরু হয়েছে যেখানে যর্দন নদী মৃত সাগরে মিশেছে। তারপর উত্তরের সীমা বৈৎ‌-হগ্লা হয়ে বৈৎ‌-অরাবা পর্যন্ত গেছে। সীমা আরও গেছে বোহনের পাথরের দিকে। (বোহন হচ্ছে রূবেণের পুত্র।) উত্তরের সীমা আখোর উপত্যকা হয়ে দবীর পর্যন্ত গেছে। তারপর উত্তরে বাঁক নিয়ে গিল‌্গল পর্যন্ত গেছে। গিল‌্গল হচ্ছে সেই রাস্তার ওপারে যে রাস্তাটি অদুম্মীম পর্বতের মাঝখান দিয়ে গেছে। সেটা নদীর দক্ষিণে। ঐন্-শেমশ নদী পর্যন্ত সীমানা প্রসারিত। সীমার শেষ হচ্ছে ঐন্-রোগেলে। তারপর সেই সীমানা আরো এগিয়ে গেছে যিবুষদের শহরের দক্ষিণ ঘেঁষে বেন হিন্নোম উপত্যকা পর্যন্ত। (ঐ শহরটি জেরুশালেম নামে পরিচিত ছিল।) সেখানে সীমানা গেছে হিন্নোম উপত্যকার পশ্চিমে পাহাড়ের চূড়া পর্যন্ত। সেটা রফায়ীম উপত্যকার উত্তর দিকে। সেখান থেকে সীমানা আবার গেছে নিপ্তোহের ঝর্ণা পর্যন্ত। তারপর ইফ্রোণ পাহাড় চূড়ার কাছাকাছি শহরগুলো পর্যন্ত। সেখান থেকে ওটা বাঁক নিয়েছে এবং বালায় গেছে। (বালার অপর নাম কিরিয়ৎ যিয়ারীম) 10 বালা থেকে সীমা পশ্চিমে বাঁক নিয়ে পাহাড়ী দেশ সেয়ীর পর্যন্ত গেছে। তারপর যিয়ারীম পাহাড় চূড়ার উত্তর দিক ঘেঁষে নীচে বৈৎ‌-শেমশে পর্যন্ত। সেখান থেকে সেটি তিম্নার পাশ দিয়ে গেছে। 11 তারপর ইক্রোণের উত্তর দিকের পাহাড়। পাহাড় থেকে শিক্করোণ আর বালা পর্বতের পাশ দিয়ে যব্নিয়েল হয়ে ভূমধ্যসাগরে শেষ হয়েছে। 12 ভূমধ্যসাগর যিহূদার দেশের পশ্চিম দিকে এই চৌহদ্দির মধ্যেই যিহূদার দেশ। যিহূদার পরিবারগোষ্ঠী এই অঞ্চলে বসবাস করত।

13 প্রভু যিহোশূয়কে বলেছিলেন, যিফুন্নির পুত্র কালেবকে যিহূদার দেশের একটা অংশ যেন তিনি দিয়ে দেন। তাই যিহোশূয় ঈশ্বরের আদেশমত তাকে সেই জায়গা দিয়ে দিলেন। যিহোশূয় তাকে কিরিয়ৎ-অর্ব (হিব্রোণ) শহর দান করলেন। (অর্ব হচ্ছে অনাকের পিতা।) 14 হিব্রোণে বসবাসকারী তিনটি অনাক পরিবারকে কালেব তাড়িয়ে দিলেন। ঐ তিনটি পরিবার হচ্ছে শেশয়, অহীমান আর তল্ময়। এরা সবাই অনাকীয় লোক। 15 তারপর কালেব দবীরে বসবাসকারী লোকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করল। (আগে দবীরকে কিরিয়ৎ-সেফরও বলা হত।) 16 কালেব বলল, “আমি কিরিয়ৎ-সেফর আক্রমণ করতে চাই। আমি আমার কন্যা অক্ষার বিয়ে তারই সঙ্গে দেব যে যুদ্ধে জয়লাভ করে আসবে।”

17 কালেবের ভাই কনষের পুত্র অৎনীয়েল শহর জয় করল। কালেব অৎনীয়েলের সঙ্গে কন্যা অক্ষার বিয়ে দিলেন। 18 অক্ষা অৎনীয়েলের সঙ্গে ঘর করতে লাগল। অৎনীয়েল অক্ষাকে বলল তার পিতা কালেবের কাছ থেকে আরও কিছু জায়গা চাইতে। অক্ষা পিতার কাছে গেল। গাধার পিঠ থেকে নেমে সে পিতার কাছে গেলে কালেব জিজ্ঞাসা করল, “তোমার কি চাই?”

19 অক্ষা বলল, “আমাকে আশীর্বাদ করো। তুমি আমাকে নেগেভের শুকনো মরুভূমি দিয়েছ। দয়া করে এমন কিছু জায়গা দাও যেখানে জল পাওয়া যায়।” সেই মতো কালেব সেরকম জায়গাই অর্থাৎ‌ সেই দেশের উপর ও নীচের দিকের জলাভূমিগুলি মেয়েকে দিল।

20 প্রভু যেমন কথা দিয়েছিলেন সেই মতো যিহূদার পরিবারগোষ্ঠী জমি-জায়গা পেয়েছিল।

21 এই শহরগুলি হচ্ছে যিহূদার সেই অংশে যেখানে যিহূদার দক্ষিণের সীমা বরাবর এদোমের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। সেগুলো হচ্ছে:

কব্‌সেল, এদর, যাগুর, 22 কীনা, দীমোনা, অদাদা, 23 কেদশ, হাৎসোর, যিত্‌নন, 24 সীফ, টেলম, বালোত্‌, 25 হাৎসোর, হদত্তা, কিরিয়োৎ হিষ্রোণ (হাৎসোর), 26 অমাম, শমা, মোলদা, 27 হৎসর-গদ্দা, হিষ্মোন, বৈৎ‌-পেলট, 28 হৎসয়-শূয়াল, বের্-শেবা, বিষিয়োথিয়া, 29 বালা, ইয়ীম, এৎ‌সম, 30 ইল্তোলদ, কসীল, হর্মা, 31 সিক্লগ, মদ্‌মন্ন, সন্‌সন্না, 32 লবায়োৎ, শিল‌্হীম, ঐন এবং রিম্মোণ। মোট 29টি শহর এবং সেখানকার সব মাঠঘাট।

33 যিহূদার পরিবারগোষ্ঠীরা পশ্চিমের পাহাড়ী অঞ্চলের শহরগুলি পেয়েছিল।

ইষ্টায়োল, সরা, অশ্না, 34 সানোহ, ঐন্-গন্নীম, তপূহ, ঐনম, 35 যর্মুৎ, অদুল্লম, সোখো, অসেকা, 36 শারয়িম, অদীথয়িম এবং গদেরা (গদেরোথয়িম)। মোট 14টি শহর এবং সেখানকার সব মাঠঘাট।

37 যিহূদার পরিবারগোষ্ঠী আবার এইসব শহরও পেয়েছিল:

সনান, হদাশা, মিগ্দল-গাদ, 38 দিলিয়ন, মিস‌্পী, যক্তেল, 39 লাখীশ, বস্কৎ‌, ইগ্লোন, 40 কব্বোন, লহমম, কিত্‌লীশ, 41 গদেরোৎ‌, বৈৎ‌-দাগোন, নয়মা এবং মক্কেদা। মোট 16টি শহর আর তার চারপাশের মাঠঘাট।

42 যিহূদার লোকরা এইসব শহরও পেয়েছিল:

লিব‌্না, এথর, আশন, 43 যিপ্তহ, অশ্না, নৎসীব, 44 কিয়িলা, অক্ষীব এবং মারেশা। মোট 9টি শহর এবং তাদের চারপাশের মাঠঘাট।

45 যিহূদার লোকরা ইক্রোণ এবং অন্যান্য ছোটখাট শহর এবং তাদের চারপাশের মাঠঘাটও পেয়েছিল। 46 তারা ইক্রোণের পশ্চিমদিকের জায়গা এবং অস্‌দোদের কাছাকাছি শহর আর মাঠঘাটও পেয়েছিল। 47 অস্‌দোদের চারদিকের সমস্ত জায়গা এবং ছোটখাট শহরগুলো যিহূদার অন্তর্গত ছিল। যিহূদার অধিবাসীরা ঘসার চারপাশের জায়গা, মাঠ ও কাছাকাছি সমস্ত শহরও পেয়েছিল। তাদের দেশ মিশরের নদী এবং ভূমধ্যসাগরের উপকূল পর্যন্ত ছড়ানো।

48 পাহাড়ি দেশের শহরগুলোও যিহূদার অধিবাসীরা পেয়েছিল, শহরগুলো হচ্ছে:

শামীর, যত্তীর সোখো, 49 দন্না, কিরিয়ৎ-সন্না (দবীর), 50 অনাব, ইষ্টিমোয়, আনীম, 51 গোশন, হোলোন এবং গীলো। মোট 11টি শহর ও তাদের চারিদিকের মাঠঘাট।

52 যিহূদার বাসিন্দারা এইসব শহরও পেয়েছিল:

অরাব, দূমা, ইশিয়ন, 53 যানীম, বৈৎ‌-তপূহ, অফেকা 54 হুমটা, কিরিয়ৎ-অর্ব (হিব্রোণ) এবং সীয়োর। 9টি শহর এবং চারপাশের মাঠসমূহ।

55 যিহূদার লোকরা এইসব শহরও পেয়েছিল:

মায়োন, কর্মিল, সীফ, যুটা 56 যিষ্রিয়েল, যক্দিযাম, সানোহ্, 57 কয়িন, গিবিয়া এবং তিম্না। মোট 10টি শহর এবং তাদের চারিদিকের মাঠগুলি।

58 যিহূদার অধিবাসীরা এই শহরগুলোও পেয়েছিল:

হলহূল, বৈৎ‌-সূর, গদোর, 59 মারৎ, বৈৎ‌-অনোত্‌ এবং ইল্তকোন, মোট 6টি শহর এবং তাদের চারিদিকের মাঠগুলো।

60 যিহূদার লোকদের রব্বা এবং কিরিয়ৎ-বাল (কিরিয়ৎ-যিয়ারীম) এই শহর দুটি দেওয়া হয়েছিল।

61 মরুভূমির শহরগুলোও যিহূদার বাসিন্দারা পেয়েছিল। সেগুলো হচ্ছে:

বৈৎ‌-অরাবা, মিদ্দীন, সকাখা, 62 নিব্শন, লবন শহর এবং ঐন্-গদী। মোট 6টি শহর এবং তাদের চারপাশের মাঠগুলো।

63 যিহূদার সৈন্যবাহিনী জেরুশালেমে বসবাসকারী যিবূষ লোকদের তাড়িয়ে দিতে সক্ষম হয় নি। তাই আজ জেরুশালেমে যিহূদাবাসীদের সঙ্গে যিবূষরাও বাস করছে।

গীতসংহিতা 146-147

146 প্রভুর প্রশংসা কর!
    হে আমার আত্মা, প্রভুর প্রশংসা কর!
আমার সারাজীবন ধরে আমি প্রভুর প্রশংসা করবো।
    সারা জীবন আমি তাঁর প্রশংসা করবো।
সাহায্যের জন্য তোমরা নেতাদের ওপর নির্ভর কর না।
    লোকেদের বিশ্বাস কর না। কেন? কারণ লোকে তোমাকে বাঁচাতে পারে না।
মানুষ মরে কবরে চলে যায়।
    তখন তাদের সাহায্যের সব পরিকল্পনা শেষ হয়ে যায়।
কিন্তু যারা ঈশ্বরের কাছ থেকে সাহায্য চায় তারা ভীষণ সুখী হয়।
    ওরা ওদের প্রভু ঈশ্বরের ওপর নির্ভর করে।
প্রভুই স্বর্গ এবং পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন।
    প্রভু সমুদ্র এবং তার ভেতরের সব জিনিস সৃষ্টি করেছেন।
প্রভু তাদের চিরদিন রক্ষা করবেন।
নিস্পেষিত লোকদের জন্য প্রভু ঠিক কাজ করেন।
    ঈশ্বর ক্ষুধার্ত মানুষকে আহার দেন।
কারাগারে বদ্ধ মানুষকে প্রভুই মুক্ত করেন।
    প্রভু অন্ধকে পুনরায় দৃষ্টি দেন।
যারা সমস্যায় পড়েছে, প্রভু তাদের সাহায্য করেন।
    যে সব লোকরা ভাল তাদের প্রভু ভালোবাসেন।
আমাদের দেশে যে সব বিদেশীরা বাস করে তাদের প্রভু রক্ষা করেন।
    প্রভুই বিধবা ও অনাথদের দেখাশোনা করেন
    কিন্তু মন্দ লোকদের প্রভু বিনাশ করেন।
10 প্রভু চিরদিনই শাসন করবেন!
    সিয়োন, তোমার ঈশ্বর চিরদিনই রাজত্ব করবেন!

প্রভুর প্রশংসা কর!

147 প্রভুর প্রশংসা কর কারণ তিনি মঙ্গলকর।
    আমাদের ঈশ্বরের কাছে প্রশংসার গান কর।
    তাঁর প্রশংসা করা ভালো এবং মনোরম।
প্রভু জেরুশালেম শহরটি বানিয়েছেন।
    যে সব ইস্রায়েলীয়কে বন্দী হিসেবে নিয়ে যাওয়া হয়েছিলো ঈশ্বর তাদের ফিরিয়ে এনেছিলেন।
ঈশ্বর তাদের ভগ্নহৃদয় সারিয়ে তুলেছিলেন
    এবং তাদের ক্ষতের শুশ্রূষা করেছিলেন।
ঈশ্বর তারা গণনা করেন
    এবং প্রত্যেকটিকে তাদের নাম ধরে ডাকেন।
আমাদের প্রভু মহান; তিনি প্রচণ্ড শক্তিশালী।
    তিনি যে কত জানেন তার কোন সীমা নেই।
বিনয়ী লোকদের ঈশ্বর সাহায্য করেন।
    কিন্তু মন্দ লোকদের তিনি হতবিহ্বল করে দেন।
প্রভুকে ধন্যবাদ দাও।
    বীণা বাজিয়ে তাঁর প্রশংসা কর।
ঈশ্বর আকাশকে মেঘে ঢেকে দেন।
    ঈশ্বরই বৃষ্টি আনেন।
ঈশ্বরই পাহাড়ে ঘাসের জন্ম দেন।
ঈশ্বর প্রাণীকে খাদ্য দেন।
    ঈশ্বর নবীন পাখীদের আহার দেন।
10 মানবিক ইচ্ছাসমূহ ঈশ্বরের মধ্যে থাকে না।
    যুদ্ধের শক্তিশালী ঘোড়াগুলো তিনি চান না।
11 যারা তাঁর উপাসনা করে তাদের নিয়েই প্রভু সুখী।
    যারা তাঁর প্রকৃত প্রেমে বিশ্বাস রাখে ঈশ্বর তাদের নিয়েই খুশী হন।
12 জেরুশালেম, প্রভুর প্রশংসা কর!
    সিয়োন, তোমার প্রভুর প্রশংসা কর!
13 জেরুশালেম, তোমার ফটকগুলিকে ঈশ্বর দৃঢ় করেছেন
    এবং তোমার শহরের লোকজনকে ঈশ্বর আশীর্বাদ করেন।
14 ঈশ্বর তোমাদের রাজ্যে শান্তি এনেছেন।
    সেজন্যই যুদ্ধের সময় শত্রুরা তোমাদের ফসল নিয়ে যায় নি এবং তোমাদের আহারের জন্য প্রচুর শস্য আছে।
15 ঈশ্বর পৃথিবীকে একটা আদেশ দিলে
    সে তৎ‌ক্ষণাৎ‌ তা পালন করে।
16 যতক্ষণ পর্যন্ত মাটি পশমের মত সাদা না হয়, ঈশ্বর ততক্ষণ তুষার পাত করেন।
    ঈশ্বরই শিলাবৃষ্টিকে বাতাসের মধ্যে ধূলোর মত উড়িয়ে নিয়ে যান।
17 ঈশ্বর আকাশ থেকে শিলাবৃষ্টি বর্ষণ করান।
    তাঁর পাঠানো ঠাণ্ডা কেউ সহ্য করতে পারে না।
    যে মেঘ তিনি পাঠান কোন লোকই তাকে দাঁড় করাতে পারে না।
18 তারপর ঈশ্বর আর একটা আদেশ দেন এবং আবার উষ্ণ বাতাস বইতে শুরু করে।
    বরফ গলতে শুরু করে এবং জল প্রবাহিত হয়।

19 ঈশ্বর যাকোবকে তাঁর নির্দেশ দিয়েছিলেন।
    ঈশ্বর তাঁর নিয়ম ও বিধিগুলো ইস্রায়েলকে দিয়েছিলেন।
20 অন্য কোন জাতির জন্য ঈশ্বর এসব করেন নি।
    তাঁর বিধিগুলো ঈশ্বর অন্য লোকদের শেখান নি।

প্রভুর প্রশংসা কর।

যিরমিয় 7

মন্দিরে যিরমিয়র ধর্মপোদেশ

এ হল যিরমিয়র প্রতি প্রভুর বার্তা: “যাও যিরমিয়, প্রভুর গৃহের দরজায় দাঁড়িয়ে এই ধর্মোপদেশ দাও:

“‘যিহূদার লোকরা, এই সেই প্রভুর বার্তা। তোমরা সবাই যারা এই ফটকগুলোর মধ্যে দিয়ে প্রভুকে উপাসনা করতে আসো, তারা এই বার্তা শোন। ইস্রায়েলের লোকদের কাছে প্রভুই হলেন ঈশ্বর। প্রভু সর্বশক্তিমান বললেন: তোমরা তোমাদের জীবনযাত্রা বদলে ফেল। সৎ‌ কাজ করো। যদি তোমরা তা করো তাহলে তোমাদের আমি এখানে বাস করতে দেব। মিথ্যেবাদীদের বিশ্বাস করো না। তারা বলে, “এই হল প্রভুর মন্দির স্থান।” তোমরা যদি সত্যিই তোমাদের জীবন ধারা বদলাও এবং ভালো কর্মসমূহ কর এবং তোমরা যদি পরস্পরের প্রতি সৎ‌ ও পক্ষপাতহীন থাকো, আমি তোমাদের এখানে থাকতে দেব। বিদেশী ব্যক্তিদের প্রতিও সৎ‌ থেকো। বিধবা এবং অনাথ শিশুদের উপকার করো। তাদের প্রতি সুবিচার করো। নিরীহ মানুষদের হত্যা করো না। আর অন্য কোন দেবতাদের অনুসরণ কোরো না। কারণ তারা তোমাদের জীবন ধ্বংস করে দেবে। যদি তোমরা আমাকে মেনে চলো তাহলে আমি তোমাদের এখানে বাস করতে দেব। আমি তোমাদের পূর্বপুরুষদের চিরকাল বসবাসের জন্য এই জমি দিয়েছিলাম।

“‘কিন্তু তোমরা মূল্যহীন মিথ্যায় তোমাদের আস্থা স্থাপন করো। তোমরা কি খুনী অথবা চোর হতে চাও? তোমরা কি ব্যভিচারের পাপ গায়ে মাখতে চাও? তোমরা কি মিথ্যে অভিযোগে অন্যদের ফাঁসাতে চাও? তোমরা কি বালের মূর্ত্তি এবং অন্য দেবতাদের যাদের তোমরা জানো না তাদের পূজা করতে চাও? 10 তোমরা যদি এ সব পাপগুলো করো, তাহলে কি তোমরা এই গৃহের ভেতর, যেটি আমার নামে অভিহিত সেখানে আসতে পারবে এবং আমার সামনে এসে দাঁড়াতে পারবে? তোমরা কি মনে করো আমার সামনে দাঁড়িয়ে তোমরা বলবে, “আমরা সুরক্ষিত” তাই আমরা এই ধরণের ভয়ঙ্কর কাজ করব? 11 আরাধনার এই জায়গাটি আমার নামে নামাঙ্কিত। এই মন্দির কি তোমাদের কাছে ডাকাতদের গোপন ডেরা ছাড়া আর বেশী কিছু নয়? আমি তোমাদের লক্ষ্য করে যাচ্ছি।’” এই ছিল প্রভুর বার্তা।

12 “‘যিহূদার লোকরা, তোমরা এখন শীলো শহরে চলে যাও। সেই স্থানে যাও যেখানে আমি আমার প্রথম নামাঙ্কিত বাড়িটি তৈরী করেছিলাম। যাও, গিয়ে দেখে এসো, আমার লোকদের, ইস্রায়েলের লোকদের মন্দ কাজের জন্য আমি ঐ জায়গার কি অবস্থা করেছি। 13 এবং আমি এগুলো করব কারণ তোমরা এগুলো সব করছিলে। এই হল প্রভুর বার্তা। আমি তোমাদের সঙ্গে বারে বারে কথা বলেছি। কিন্তু তোমরা আমার কথা শুনতে চাও নি। আমি তোমাদের ডেকেছিলাম কিন্তু তোমরা কোন উত্তর দাও নি। 14 তাই জেরুশালেমে অবস্থিত আমার নামাঙ্কিত গৃহ আমি নিজেই ধ্বংস করে দেব, ঠিক শীলো শহরের উপাসনালয়ের ক্ষেত্রে যেমন আমি করেছিলাম। জেরুশালেমের সেই মন্দিরকে, যেটি আমার নামে অভিহিত, সেটিকে তোমরা বিশ্বাস কর। আমি সেই জায়গা তোমাদের এবং তোমাদের পূর্বপুরুষদের দিয়েছিলাম। 15 ইফ্রয়িম থেকে তোমাদের সব ভাইদের যেমন ছুঁড়ে ফেলেছিলাম তেমনি তোমাদেরও আমার কাছ থেকে দূরে ছুঁড়ে ফেলে দেব।’

16 “যিরমিয়, কখনও তুমি যিহূদার লোকের হয়ে প্রার্থনা করবে না। ওদের সাহায্যের জন্য আমার কাছে প্রার্থনা করো না। আমি তাহলে ইচ্ছে করে তোমার সেই প্রার্থনা শুনব না। 17 আমি জানি তুমি লক্ষ্য রাখছো যিহূদার শহরগুলিতে এবং জেরুশালেমের রাস্তায় তারা কি করে। 18 যিহূদার লোকরা যা করেছে তা হল এই রকম: ছেলেমেয়েরা কাঠ জড়ো করছে। আর পিতারা সেই কাঠ দিয়ে আগুন জ্বালাচ্ছে। মহিলারা ময়দা মাখছে, পিঠা, রুটি বানাচ্ছে স্বর্গের রানীকে নৈবেদ্য উৎসর্গ করার জন্য। যিহূদার এইসব মানুষ অন্য মূর্ত্তিদের পূজার জন্য পেয় নৈবেদ্য ঢালছে। তারা এগুলি করছে আমাকে ক্রুদ্ধ করার জন্য। 19 কিন্তু আমি সত্যিই সে জন নই যাকে যিহূদার লোকরা দুঃখ দিচ্ছে।” এই হল প্রভুর বার্তা। “তারা প্রকৃতপক্ষে নিজেদেরই আঘাত করছে এবং নিজেদের লজ্জায় ফেলছে।”

20 তাই প্রভু বললেন, “আমি আমার ক্রোধ এই জায়গার বিরুদ্ধে দেখাবো। এখানকার প্রত্যেক মানুষ এবং পশুকে শাস্তি দেব। শাস্তি দেব গাছ এবং ক্ষেতের শস্যকে। আমার ক্রোধ হবে তপ্ত আগুনের মতো, যা নেভাবার ক্ষমতা কারো নেই।”

বলি নয়, প্রভু আরো বেশী আজ্ঞানুবর্তীতা চান

21 ইস্রায়েলের ঈশ্বর, প্রভু সর্বশক্তিমান বললেন: “যাও তোমরা যতখুশী চাও হোমবলি উৎসর্গ কর। যত খুশী ঐ উৎসর্গগুলোর মাংস খাও। 22 আমিই মিশর থেকে তোমাদের পূর্বপুরুষদের নিয়ে এসেছিলাম। আমি তাদের সঙ্গে কথা বলেছিলাম। কিন্তু তাদের হোমবলি বা উৎসর্গের আদেশ দিইনি। 23 আমি শুধু তাদের এই আদেশ দিয়েছিলাম যে, ‘আমাকে মান্য করো এবং আমিই তোমাদের ঈশ্বর হব এবং তোমরা হবে আমার লোক। আমার আদেশ পালন করো এবং তোমাদের ভালো হবে।’

24 “কিন্তু তোমাদের পূর্বপুরুষরা আমার কথা শোনেনি। তারা আমার প্রতি একেবারেই মনোযোগ দেয়নি। তারা ছিল একগুঁয়ে, জেদী। সুতরাং তারা যা খুশী তাই করেছিল। তারা কখনই ভাল হয়নি। তারা আরও শয়তান হয়ে সামনের দিকে না হেঁটে পিছনের দিকে হেঁটেছিল। 25 তোমাদের পূর্বপুরুষরা মিশর ছেড়ে যাবার দিন থেকে এখন পর্যন্ত আমি তোমাদের কাছে ভৃত্যদের পাঠিয়েছিলাম। আমার ভৃত্যরা হল ভাববাদী। আমি তাদের বার বার তোমাদের কাছে পাঠিয়েছি। 26 কিন্তু তোমাদের পূর্বপুরুষরা আমার কথা শোনেনি। আমার কথায় মনোযোগ দেবার জন্য তাদের কান পাতেনি। জেদের বশে তারা তাদের পিতাদের চেয়েও আরও বেশী করে অসৎ‌ কাজ করেছে।

27 “যিরমিয়, তুমি যিহূদার লোকদের এই কথাগুলি বলবে। কিন্তু তারা তোমার কথা শুনবে না। তুমি তাদের ডাকলে তারা উত্তর দেবে না। 28 সুতরাং তোমাকে বলতেই হবে: এই দেশ প্রভু ঈশ্বরের আদেশ মেনে চলেনি। এই জাতির লোকরা ঈশ্বরের শিক্ষামালা শোনেনি। সত্যিকারের শিক্ষা কাকে বলে এরা জানে না।”

গণহত্যার উপত্যকা

29 “যিরমিয়, তুমি তোমার চুল কেটে ফেল এবং তা ছুঁড়ে ফেলে দাও। তারপর অনাবৃত পাহাড়ের চূড়ায় ওঠ এবং আর্ত্তনাদ করে কাঁদো। কারণ, প্রভু এই প্রজন্মের লোকদের প্রত্যাখ্যান করেছেন এবং এদের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। প্রচণ্ড ক্রুদ্ধ হয়ে তিনি তাদের শাস্তি দেবেন। 30 তুমি এগুলো করো কারণ আমি দেখেছি যে যিহূদার লোকরা শয়তানি কাজ করে চলেছে।” এই হল প্রভুর বার্তা। “তারা তাদের মূর্ত্তি প্রতিষ্ঠা করেছে। এবং আমি সেই সব মূর্ত্তিদের ঘৃণা করি। তারা আমার নামাঙ্কিত মন্দিরে এই মূর্ত্তিগুলি প্রতিষ্ঠা করেছে। তারা আমার গৃহ ‘অপবিত্র’ করেছে। 31 তারা বেনহিন্নোম উপত্যকায় তোফত নামক সুউচ্চ স্থান নির্মাণ করেছে। এইসব জায়গার লোকেরা তাদের নিজেদের ছেলেমেয়েদের হত্যা করেছে। তারা তাদের হোমবলি হিসেবে উৎসর্গ করেছে। কিন্তু আমি তাদের এই দুষ্ট কাজ করতে আদেশ দিইনি। আমি এমন একটা জিনিষের কথা কখনও ভাবিইনি। 32 তাই আমি তোমাদের সতর্ক করে দিচ্ছি। এমন দিন আসছে যেদিন লোকে এই জায়গাকে তোফৎ বা বেনহিন্নোমের উপত্যকা বলে আর ডাকবে না। তারা একে গণহত্যার উপত্যকা বলে ডাকবে। তারা এরকম একটি নামকরণ করবে কারণ তারা তোফতে মৃতদেহ কবর দেবে যতক্ষণ পর্যন্ত আর কোন মৃতদেহ কবর দেওয়ার জায়গা না থাকে। 33 মৃতদেহগুলি খোলা আকাশের নীচে পড়ে থাকবে। আর সেই মৃতদেহগুলি ছিঁড়ে খাবে আকাশের শকুন ও বনের পশুরা। ঐ শকুন ও পশুদের তাড়া করার মতো কেউ বেঁচে থাকবে না। 34 আমি জেরুশালেমের রাস্তা থেকে এবং যিহূদার শহরগুলি থেকে সমস্ত সুখ এবং আনন্দ কেড়ে নেব। ঐ জায়গাগুলিতে আর কখনও বর ও কনের গলা শোনা যাবে না। দেশটি মরুভূমিতে পরিণত হবে।”

মথি 21

রাজার মতো যীশু জেরুশালেমে এলেন

(মার্ক 11:1-11; লূক 19:28-38; যোহন 12:12-19)

21 যীশু ও তাঁর শিষ্যরা জেরুশালেমের কাছাকাছি জৈতুন পর্বতমালার ধারে অবস্থিত বৈত্ফগী গ্রামের ধারে এসে পৌঁছালেন। তিনি তাঁর দুজন শিষ্যকে এই বলে পাঠালেন, “তোমরা ঐ সামনের গ্রামে যাও। সেখানে দেখবে একটা গাধা বাঁধা আছে আর একটা বাচ্চাও তার সাথে আছে। তাদের খুলে আমার কাছে নিয়ে এস। কেউ যদি তোমাদের কিছু জিজ্ঞেস করে, তবে তাকে বোলো, ‘প্রভু এদের চান। তিনি পরে তাদের ফেরত দেবেন।’”

এমনটি হল যেন এর দ্বারা ভাববাদীর ভাববাণী পূর্ণ হয়:

“সিয়োন নগরীকে বল,
    ‘দেখ তোমার রাজা তোমার কাছে আসছেন।
তিনি নম্র, তিনি গাধার ওপরে,
    একটি ভারবাহী গাধার বাচ্চার ওপরে চড়ে আসছেন।’”(A)

যীশু যেমন বলেছিলেন তাঁর শিষ্যেরা গিয়ে তেমনি করলেন। তারা সেই গাধা ও গাধার বাচ্চাটা এনে তাদের ওপর নিজেদের গায়ের কাপড় বিছিয়ে দিলে যীশু তাদের উপর বসলেন। লোকদের মধ্যে অনেকেই নিজেদের জামা খুলে পথে বিছিয়ে দিল, আবার অনেকে গাছের ডাল কেটে নিয়ে পথের ওপরে বিছিয়ে দিল। যারা যীশুর সামনে ও পিছনে ভীড় করে যাচ্ছিল, তারা চিৎকার করে বলতে লাগল,

“দায়ূদের পুত্রের প্রশংসা হোক্।
    ‘যিনি প্রভুর নামে আসছেন, তিনি ধন্য!’(B)

স্বর্গে ঈশ্বরের প্রশংসা হোক্।”

10 যীশু যখন জেরুশালেমে প্রবেশ করলেন, তখন সমস্ত শহরে খুব শোরগোল পড়ে গেল। লোকেরা বলাবলি করতে লাগল, “ইনি কে?”

11 জনতা বলে উঠল, “ইনি যীশু, গালীলের নাসরতীয় শহরের সেই ভাববাদী।”

যীশু মন্দিরে গেলেন

(মার্ক 11:15-19; লূক 19:45-48; যোহন 2:13-22)

12 এরপর যীশু মন্দির চত্বরে ঢুকলেন; আর যারা সেই মন্দির চত্বরের মধ্যে বেচাকেনা করছিল, তাদের তাড়িয়ে দিলেন। যারা টাকা বদল করে দেবার জন্য টেবিল সাজিয়ে বসেছিল ও যাঁরা ডালায় করে পায়রা বিক্রি করছিল তিনি তাদের টেবিল ও ডালা উল্টে দিলেন। 13 যীশু তাদের বললেন, “শাস্ত্রে লেখা আছে, ‘আমার গৃহ হবে প্রার্থনা গৃহ।’(C) কিন্তু তোমরা তা দস্যুদের আস্তানায় পরিণত করেছ।(D)

14 এরপর মন্দির চত্বরের মধ্যে অনেক অন্ধ ও খঞ্জ যীশুর কাছে এলে তিনি তাদের সুস্থ করলেন। 15 প্রধান যাজকরা ও ব্যবস্থার শিক্ষকরা দেখলেন যে, যীশু অনেক অলৌকিক কাজ করছেন, আর যখন দেখলেন মন্দির চত্বরের মধ্যে ছেলেমেয়েরা চিৎকার করে বলছে, “প্রশংসা, দায়ূদের পুত্রের প্রশংসা হোক্,” তখন তাঁরা রেগে গেলেন।

16 তাঁরা যীশুকে বললেন, “ওরা যা বলছে, তা কি তুমি শুনতে পাচ্ছ?”

যীশু তাদের জবাব দিলেন, “হ্যাঁ, পাচ্ছি, তোমরা কি শাস্ত্রে পড় নি, ‘তুমি ছোট ছোট ছেলেমেয়ে ও দুগ্ধপোষ্য শিশুদেরই প্রশংসা করতে শিখিয়েছ?’”(E)

17 এরপর যীশু তাদের ছেড়ে শহরের বাইরে বৈথনিয়ায় গিয়ে রাতে সেখানেই থাকলেন।

বিশ্বাসের শক্তি

(মার্ক 11:12-14, 20-24)

18 পরদিন সকালে তিনি যখন জেরুশালেমে ফিরছিলেন, সেই সময় যীশুর খিদে পেল। 19 তিনি পথের ধারে একটি ডুমুর গাছ দেখতে পেয়ে সেই গাছটার কাছে গেলেন। কিন্তু পাতা ছাড়া তাতে কিছু দেখতে পেলেন না। তখন তিনি সেই গাছটিকে বললেন, “তোমাতে আর কখনও ফল হবে না।” আর সেই ডুমুর গাছটি শুকিয়ে গেল।

20 এই ঘটনা দেখে শিষ্যরা আশ্চর্য হয়ে বললেন, “এই ডুমুর গাছটা এত তাড়াতাড়ি কেমন করে শুকিয়ে গেল?”

21 এর উত্তরে যীশু তাঁদের বললেন, “আমি তোমাদের সত্যি বলছি, তোমাদের যদি ঈশ্বরের প্রতি দৃঢ় বিশ্বাস থাকে, যদি সন্দেহ না কর, তবে ডুমুর গাছের প্রতি আমি যা করেছি, তোমরাও তা করতে পারবে। শুধু তাই নয়, তোমরা যদি ঐ পাহাড়কে বল, ‘ওঠ, ঐ সাগরে গিয়ে আছড়ে পড়’ দেখবে তাই হবে। 22 যদি বিশ্বাস থাকে, তবে প্রার্থনায় তোমরা যা চাইবে তা পাবে।”

যীশুর ক্ষমতার বিষয়ে ইহুদী নেতাদের সন্দেহ

(মার্ক 11:27-33; লূক 20:1-8)

23 যীশু যখন আবার মন্দির চত্বরে লোকদের শিক্ষা দিচ্ছিলেন, সেই সময় প্রধান যাজকরা ও সমাজপতিরা তাঁর কাছে এসে বললেন, “তুমি কোন অধিকারে এসব করছ? এই অধিকার তোমায় কে দিয়েছে?”

24 এর উত্তরে যীশু তাদের বললেন, “আমি তোমাদের একটা প্রশ্ন করতে চাই, আর তোমরা যদি তার উত্তর দাও তাহলে আমিও তোমাদের বলব আমি কোন অধিকারে এসব করছি। 25 আমার প্রশ্ন হচ্ছে, বাপ্তিস্ম দেবার অধিকার যোহন কোথা থেকে পেয়েছিলেন? তা কি ঈশ্বরের কাছ থেকে, না মানুষের কাছ থেকে এসেছিল?”

তখন তারা নিজেদের মধ্যে এই আলোচনা করে বলল, “আমরা যদি বলি, ঈশ্বরের কাছ থেকে, তাহলে ও আমাদের বলবে, ‘তবে তোমরা কেন তাকে বিশ্বাস কর নি?’ 26 কিন্তু আমরা যদি বলি, ‘মানুষের কাছ থেকে,’ তবে জনসাধারণের কাছ থেকে ভয় আছে, কারণ লোকেরা যোহনকে ভাববাদী বলে মানে।”

27 তাই এর উত্তরে তারা যীশুকে বললেন, “আমরা জানি না।”

তখন যীশু তাদের বললেন, “তবে আমিও তোমাদের বলব না, কোন্ অধিকারে আমি এসব করছি।”

দুই পুত্রের বিষয়ে দৃষ্টান্তমূলক কাহিনী

28 তারপর যীশু বললেন, “আচ্ছা, এ বিষয়ে তোমরা কি বলবে? একজন লোকের দুটি ছেলে ছিল। সে তার বড় ছেলের কাছে গিয়ে বলল, ‘বাছা, আজ তুমি আমার দ্রাক্ষা ক্ষেতে গিয়ে কাজ কর।’

29 “কিন্তু তার ছেলে বলল, ‘আমি যেতে চাই না।’ কিন্তু পরে সে তার মত বদলিয়ে কাজে গেল।

30 “এরপর লোকটি তার অপর ছেলের কাছে গিয়ে তাকেও সেই একই কথা বলল। এর উত্তরে অন্য ছেলেটি বলল, ‘হ্যাঁ, মহাশয় যাচ্ছি।’ কিন্তু সে গেল না।

31 “এই দুজনের মধ্যে কে তার বাবার ইচ্ছা পালন করল?”

তারা বললেন, “বড় ছেলে।”

যীশু তাদের বললেন, “আমি তোমাদের সত্যি বলছি, কর-আদায়কারীরা ও বেশ্যারা, তোমাদের আগে ঈশ্বরের রাজ্যে প্রবেশ করছে। 32 আমি একথা বলছি কারণ জীবনের সঠিক পথ দেখাবার জন্য যোহন তোমাদের কাছে এসেছিলেন আর তোমরা তাঁকে বিশ্বাস করনি। কিন্তু কর-আদায়কারী ও বেশ্যারা তাকে বিশ্বাস করেছে। এসব দেখেও তোমরা মন পরিবর্তন করনি ও তাঁর প্রতি বিশ্বাস করনি।

ঈশ্বর তাঁর পুত্রকে পাঠালেন

(মার্ক 12:1-12; লূক 20:9-19)

33 “আর একটি দৃষ্টান্ত শোন! এক জমিদার একটি দ্রাক্ষা ক্ষেত তৈরী করে তার চারদিকে বেড়া দিলেন। পরে সেই ক্ষেতের মধ্যে দ্রাক্ষা মাড়াবার জন্য গর্ত খুঁড়লেন। পাহারা দেবার জন্য একটা উঁচু পাহারা ঘর তৈরী করলেন। পরে কয়েকজন চাষীর কাছে সেই দ্রাক্ষা ক্ষেত ইজারা দিয়ে বিদেশে চলে গেলেন। 34 যখন দ্রাক্ষা তোলার সময় হল, তখন তিনি তাঁর ভাগ নিয়ে আসবার জন্য তাঁর ক্রীতদাসদের সেই চাষীদের কাছে পাঠালেন।

35 “কিন্তু চাষীরা তাঁর দাসদের একজনকে মারল, একজনকে খুন করল আর তৃতীয়জনকে পাথর ছুঁড়ে খুন করল। 36 এরপর তিনি প্রথম বারের চেয়ে আরো বেশী দাস সেখানে পাঠালেন, আর সেই চাষীরা ঐ দাসদের সঙ্গে একই রকম ব্যবহার করল। 37 পরে তিনি তাঁর নিজের ছেলেকে তাদের কাছে পাঠালেন; তিনি ভাবলেন, ‘ওরা নিশ্চয়ই ওঁর ছেলেকে মান্য করবে।’

38 “কিন্তু চাষীরা যখন দেখল যে মালিকের ছেলে আসছে, তখন তারা নিজেদের মধ্যে পরামর্শ করে বলল, ‘দেখ, এই হচ্ছে আইনসম্মত উত্তরাধিকারী, এস, একে আমরা খুন করি, তাহলে আমরাই তার সম্পত্তির মালিক হয়ে যাব।’ 39 তখন তারা সেই ছেলেকে ধরে দ্রাক্ষা ক্ষেতের বাইরে ছুঁড়ে ফেলে দিল ও তাকে হত্যা করল।

40 “এক্ষেত্রে দ্রাক্ষা ক্ষেতের মালিক যখন ফিরে আসবেন, তখন ঐ চাষীদের তিনি কি করবেন, তোমরা কি বল?”

41 ইহুদী যাজকরা যীশুকে বললেন, “তারা দুষ্ট লোক বলে তিনি তাদের নির্মমভাবে ধ্বংস করবেন ও সেই দ্রাক্ষা ক্ষেত অন্য চাষীদের হাতে দেবেন, যারা ফলের মরশুমে তাঁকে তাঁর প্রাপ্য অংশ দেবে।”

42 তখন যীশু তাদের বললেন, “তোমরা কি শাস্ত্রের এই অংশ পড় নি:

‘রাজমিস্ত্রিরা যে পাথরটা বাতিল করে দিয়েছিল,
    সেই পাথরটাই হয়ে উঠেছে কোণের প্রধান পাথর।
এটা প্রভুরই কাজ,
    এটা আমাদের চোখে আশ্চর্য লাগে।’(F)

43 “অতএব, আমি তোমাদের বলছি, ঈশ্বরের রাজ্য তোমাদের কাছ থেকে নিয়ে নেওয়া হবে, আর এমন লোকদের দেওয়া হবে, যারা ঈশ্বরের রাজ্যের পক্ষে উপযুক্ত ব্যবহার করবে। 44 আর ঐ যে পাথর তার ওপরে যে পড়বে সে ভেঙে চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে যাবে, আর সেই পাথর যার ওপরে পড়বে তাকে গুঁড়িয়ে ধূলিসাৎ করবে।”[a]

45 প্রধান যাজকরা ও ফরীশীরা যীশুর দেওয়া এই দৃষ্টান্তগুলি শুনে বুঝতে পারলেন যীশু তাঁদেরই বিষয়ে এই কথাগুলি বললেন। 46 তাই তাঁরা যীশুকে গ্রেপ্তার করাতে চাইলেন, কিন্তু জনসাধারণের ভয়ে তা করলেন না, কারণ সাধারণ লোকে তাঁকে ভাববাদী বলে মনে করত।

Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)

Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International