M’Cheyne Bible Reading Plan
উত্তরের শহরগুলির পরাজয়
11 হাৎসোরের রাজা যাবীন এইসব ঘটনা শুনল। সে কয়েকজন রাজার সৈন্যসামন্তদের একসঙ্গে জড়ো করার কথা চিন্তা করল। মাদোনের রাজা যোবব, অক্ষফের রাজা শিম্রোণের রাজার কাছে এবং 2 উত্তরাঞ্চলের সমস্ত রাজা, পাহাড় ও মরু অঞ্চলের সমস্ত রাজাকে যাবীন খবর পাঠাল। যাবীন কিন্নেরত, নেগেভ, পশ্চিম পাহাড়, পশ্চিমের নাপথ দোরের রাজাদের কাছে খবর পাঠাল। 3 যাবীন পূর্ব আর পশ্চিমের কনান সম্প্রদায়ের রাজাদের কাছে খবর পাঠাল। সে ইমোরীয়, হিত্তীয়, পরিষীয় এবং পাহাড়ী দেশের যিবুষীয়দের কাছেও খবর পাঠাল। সে মিস্পার কাছে হর্মোণ পর্বতের নীচে যে হিব্বীয়রা থাকে তাদের কাছেও খবর পাঠাল। 4 এইসব রাজার সৈন্যরা জড়ো হল। অসংখ্য যোদ্ধা, অসংখ্য ঘোড়া আর অসংখ্য রথ মিলে তৈরী হল এক বিশাল বাহিনী। এত লোক সেখানে জড়ো হয়েছিল যে মনে হল তারা যেন সমুদ্রের ধারের বালির দানার মতো অগনিত।
5 মেরোমের ছোট নদীর ধারে এই সমস্ত রাজা জড়ো হল। তারা তাদের সৈন্যবাহিনীকে একই শিবিরের মধ্যে সমবেত করল। আর কিভাবে ইস্রায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা যায় তার পরিকল্পনা করল।
6 তখন প্রভু যিহোশূয়কে বললেন, “এত সৈন্য দেখে ভয় পেও না। আমি তোমাদের জিতিয়ে দেব। আগামীকাল এই সময়ের মধ্যে তোমরা তাদের সকলকে মেরে ফেলবে। সমস্ত ঘোড়ার পায়ের শিরা কেটে ফেলবে, তাদের সমস্ত রথ পুড়িয়ে দেবে।”
7 যিহোশূয় এবং তার সমস্ত সৈন্য হঠাৎ শত্রুদের আক্রমণ করল। মেরোম নদীর কাছে তারা শত্রুদের আক্রমণ করল। 8 প্রভু ইস্রায়েলীয়দের জিতিয়ে দিলেন। ইস্রায়েল সৈন্যবাহিনী তাদের পরাজিত করে তাড়িয়ে নিয়ে গেল বৃহত্তর সীদোন, মিষ্রফোৎ-ময়িম আর পূর্বের মিস্পীর উপত্যকার দিকে। সবকটি শত্রুকে মেরে না ফেলা পর্যন্ত ইস্রায়েলীয় সৈন্যরা থামল না। 9 প্রভু যা বলেছিলেন যিহোশূয় তাই করলেন। ঘোড়াগুলোর পায়ের শিরা কেটে ফেললেন এবং রথগুলো পুড়িয়ে দিলেন।
10 তারপর যিহোশূয় ফিরে গিয়ে হাৎসোর শহর দখল করলেন। এবং হাৎসোরের রাজাকে হত্যা করলেন। (ইস্রায়েলের বিরুদ্ধে যেসব রাজ্যগুলি ছিল তাদের মধ্যে হাৎসোরই ছিল সর্বপ্রধান।) 11 ইস্রায়েলীয় সৈন্যবাহিনী সেই শহরের প্রত্যেককে হত্যা করল। তারা সমস্ত লোককে একেবারে শেষ করে দিল। একজন লোকও বেঁচে রইল না। তারপর তারা শহরটা জ্বালিয়ে দিল।
12 যিহোশূয় এইসব শহরের সবকটি দখল করেছিলেন। তিনি শহরের সমস্ত রাজাকে হত্যা করেছিলেন। শহরের সমস্ত কিছুকে তিনি ধ্বংস করে দিয়েছিলেন। প্রভুর দাস মোশি যেমন আজ্ঞা করেছিলেন সেই মতো তিনি এই কাজ করেছিলেন। 13 কিন্তু ইস্রায়েলীয় সেনাবাহিনী পাহাড়ের ওপরে স্থাপিত কোন শহর জ্বালিয়ে দেয় নি। হাৎসোরই ছিল একমাত্র শহর যেটি পাহাড়ের ওপরে নির্মিত ছিল এবং যিহোশূয়ের আদেশে যেটি তারা পুড়িয়ে দিয়েছিল। 14 শহরগুলো থেকে পাওয়া সমস্ত জিনিসপত্র ইস্রায়েলবাসীরা নিজেদের জন্য রেখে দিয়েছিল। শহরের সমস্ত জীবজন্তুকে তারা রেখে দিয়েছিল, যদিও সেখানকার সমস্ত লোককেই তারা মেরে ফেলেছিল। কোন লোককেই তারা বাঁচতে দেয় নি। 15 বহুকাল আগে প্রভু তাঁর দাস মোশিকে এই কাজ করবার জন্য আজ্ঞা করেছিলেন। তারপর মোশি এই কাজ করার জন্য যিহোশূয়কে আজ্ঞা করেছিলেন, যিহোশূয় ঈশ্বরের আদেশ পালন করেছিলেন। প্রভু মোশিকে যা আজ্ঞা করেছিলেন যিহোশূয় তার সমস্তই পালন করেছিলেন।
16 এইভাবে যিহোশূয় সমগ্র দেশের সমস্ত লোককে পরাজিত করেছিলেন। পাহাড়ি দেশ নেগেভ, সমগ্র গোশন অঞ্চল, পশ্চিমদিকের পাহাড়তলি, যর্দন উপত্যকা, ইস্রায়েলের সমস্ত পাহাড় পর্বত এবং সেগুলোর কাছাকাছি সমস্ত পাহাড় এই সবই তাঁর অধীনে এলো। 17 হালক পর্বতশৃঙ্গ থেকে সেয়ীরের কাছে লিবানোন উপত্যকার বাল্গাদ পর্যন্ত সমস্ত অঞ্চল যিহোশূয়র দখলে এল। লিবানোন উপত্যকাটি হার্মোণ পর্বতশৃঙ্গের নীচে অবস্থিত। সে দেশের সমস্ত রাজাকে তিনি পরাজিত ও নিহত করলেন। 18 বহু বছর ধরে এইসব রাজার বিরুদ্ধে যিহোশূয় যুদ্ধ করেছিলেন। 19 একমাত্র একটি শহরই ইস্রায়েলের সঙ্গে শান্তি চুক্তি করেছিল। সেটা হচ্ছে গিবিয়োন শহর, যেখানে হিব্বীয় জাতির লোকরা বাস করে। অন্য সমস্ত শহর পরাজিত হয়েছিল। 20 প্রভু চেয়েছিলেন যেন এসব দেশের লোকরা নিজেদের শক্তিশালী ভাবে। তাহলে তারা ইস্রায়েলীয়দের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে। এইভাবেই যেন তিনি তাদের প্রতি দয়া না করে বিনাশ করেন। যে ভাবে প্রভু মোশিকে আদেশ দিয়েছিলেন, সেই ভাবেই যেন তিনি তাদের বিনাশ করেন।
21 অনাক বংশীয় লোকরা হিব্রোণ, দবীর, অনাব এবং যিহূদা অঞ্চলের পাহাড়ি জায়গায় বাস করত। যিহোশূয় তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে তাদের এবং তাদের শহরগুলোকে শেষ করে দিলেন। 22 ইস্রায়েল ভূখণ্ডে কোন অনাক বংশীয় লোক বেঁচে রইল না। তারা শুধু বেঁচে রইল ঘসা, গাত এবং অস্দোদ অঞ্চলে। 23 যিহোশূয় সমগ্র ইস্রায়েল ভূখণ্ড নিজের আয়ত্ত্বাধীনে আনলেন, ঠিক যে ভাবে প্রভু বহুকাল আগে মোশিকে নির্দেশ দিয়েছিলেন। প্রভু সেই দেশ তাঁর প্রতিশ্রুতি মত ইস্রায়েলীয়দের দান করেছিলেন। এই দেশ যিহোশূয় ইস্রায়েলের বিভিন্ন পরিবারগোষ্ঠীর মধ্যে ভাগ করে দিয়েছিলেন। অবশেষে যুদ্ধ শেষ হল এবং দেশে শান্তি ফিরে এলো।
দায়ূদের একটি গীত।
144 প্রভু আমার শিলা,
আমার নিরাপদ স্থান; প্রভুর প্রশংসা কর!
প্রভু আমার হাতগুলোকে যুদ্ধের জন্য প্রশিক্ষণ দেন।
তিনি আমার আঙ্গুলগুলিকে সংগ্রামের জন্য প্রশিক্ষণ দেন।
2 প্রভু আমায় ভালোবাসেন এবং রক্ষা করেন।
উঁচু পাহাড়ে প্রভু আমার নিরাপদ আশ্রয়স্থল,
প্রভুই আমায় উদ্ধার করেন।
প্রভুই আমার ঢাল।
আমি তাঁকে বিশ্বাস করি।
আমার লোকদের তিনি আমার অধীনস্থ করেন।
3 প্রভু, লোকরা কেন আপনার কাছে এত গুরুত্বপূর্ণ?
কেন আপনি আমাদের সম্বন্ধে যত্ন নেন।
4 একজন লোকের জীবন বাতাসের ফুত্কারের মত।
একজন মানুষের জীবন চলমান ছায়ার মত।
5 প্রভু, আকাশ বিদীর্ণ করে নেমে আসুন।
পর্বত স্পর্শ করুন, পর্বত থেকে ধোঁয়া বেরিয়ে আসবে।
6 হে প্রভু, আপনি বিদ্যুতের চমক পাঠান এবং আমার শত্রুদের ছত্রভঙ্গ করুন।
আপনার “তীরগুলি” নিক্ষেপ করুন এবং তাদের পালাতে বাধ্য করুন।
7 প্রভু, স্বর্গ থেকে নেমে আসুন এবং আমায় রক্ষা করুন!
শত্রুর সাগরে আমাকে ডুবে যেতে দেবেন না।
এইসব বিদেশীদের হাত থেকে আমায় রক্ষা করুন।
8 এই শত্রুরা মিথ্যাবাদী।
ওরা এমন কথা বলে যা সত্য নয়।
9 প্রভু যে সব বিস্ময়কর কাজ আপনি করেন, সে সম্পর্কে আমি একটা নতুন গান গাইবো।
দশতারা বীণা বাজিয়ে আমি আপনার প্রশংসা করবো।
10 রাজাদের তাঁদের যুদ্ধসমূহে জয়ী হতে প্রভু সাহায্য করেন।
প্রভু তাঁর দাস দায়ূদকে শত্রুর তরবারি থেকে রক্ষা করেছেন।
11 এই বিদেশীর হাত থেকে আমায় রক্ষা করুন।
এইসব শত্রুরা মিথ্যাবাদী।
ওরা এমন কথা বলে যা সত্য নয়।
12 আমাদের তরুণ ছেলেরা শক্ত গাছের মত।
আমাদের কন্যারা প্রাসাদের অনুপম কারুকার্যের মত।
13 আমাদের গোলাগুলি
সব রকম ফসলে পূর্ণ।
আমাদের চারণক্ষেত্রে
হাজারে হাজারে মেষ রয়েছে।
14 আমাদের সৈন্যরা সুরক্ষিত।
কোন শত্রু জোর করে এখানে প্রবেশ করতে চাইছে না।
আমরাও যুদ্ধ করতে যাচ্ছি না।
রাস্তাগুলোতে লোকজন চিৎকার করছে না।
15 এই রকম সময় লোকজন ভীষণ খুশী।
প্রভু যদি স্বয়ং তাদের ঈশ্বর হন লোকজন ভীষণ খুশী হয়।
যিহূদাবাসীদের শয়তানি
5 প্রভু বললেন, “জেরুশালেমের রাস্তায় হাঁটো। শহরের সার্বজনীন প্রাঙ্গণগুলিতে খুঁজে দেখো। যদি একজনও সৎ ও ভাল মানুষের সন্ধান পাও যে অন্তত সত্যের খোঁজ করছে, যদি এরকম একজনও মানুষ থাকে তাহলে জেরুশালেমকে আমি ক্ষমা করে দেব। 2 লোকে শুধু এই বলে প্রতিশ্রুতি নেয়: ‘প্রভুর অস্তিত্ব যেমন নিশ্চিত তার দিব্য,’ কিন্তু তারা আসলে তা বলে না।”
3 প্রভু, আমি জানি আপনি চান
মানুষ আপনার অনুগত থাকুক।
আপনি যিহূদাবাসীকে আঘাত করলেন।
কিন্তু তারা কোন বেদনা অনুভব করে নি।
আপনি তাদের ধ্বংস করলেন।
কিন্তু তা থেকে তারা কোন শিক্ষা নেয়নি।
তারা ভীষণ একগুঁয়ে, জেদী।
খারাপ কাজ করেছিল বলে তারা কোন রকম দুঃখপ্রকাশ পর্যন্ত করে নি।
4 কিন্তু আমি (যিরমিয়) আমাকে মনে মনে বললাম,
“তারা এত দরিদ্র এবং নির্বোধ যে
তারা প্রভুর জীবনযাত্রা শেখে নি।
ঈশ্বরের শিক্ষা বিষয়েও তারা কিছু জানে না।
5 সুতরাং আমি যিহূদার নেতৃবৃন্দের কাছে যাব
এবং তাদের সঙ্গে কথা বলব।
নেতারা নিশ্চয়ই প্রভুর আচার বিধি জানবে।
আমি নিশ্চিত যে তারা তাদের ঈশ্বরের বিধিসমূহ জানে।”
কিন্তু নেতারা সব একত্র হল
এবং প্রভুর সেবার কাজ থেকে দূরে সরে গেল।
6 তারা ঈশ্বরের বিরুদ্ধে চলে গিয়েছে।
তাই বন থেকে এক সিংহ এসে তাদের আক্রমণ করবে।
মরুভূমি থেকে এক নেকড়ে বাঘ এসে সবাইকে মেরে ফেলবে।
তাদের শহরের কাছে এক চিতা লুকিয়ে আছে।
শহরের বাইরে কেউ বেরলেই তাকে টুকরো টুকরো করে ছিঁড়ে খাবে।
যিহূদার লোকরা বার বার পাপ করার ফলেই এগুলি ঘটবে।
প্রভু বার বার সতর্ক করে কোন ফল পান নি।
প্রভুর কাছ থেকে তারা বার বারই দূরে থেকেছে।
7 ঈশ্বর বললেন, “হে যিহূদা, আমাকে একটি সঠিক কারণ দেখাও
যার জন্য আমি তোমাদের ক্ষমা করব।
তোমার ছেলেমেয়েরা আমাকে ত্যাগ করে মূর্ত্তির কাছে প্রতিশ্রুতি নিয়েছে।
অথচ তোমার সন্তানদের আমি চাহিদা মতো সব কিছুই দিয়েছিলাম।
তবু ওরা আমার প্রতি বিশ্বস্ত থাকেনি।
ওরা ব্যভিচারিনীদের সঙ্গে অনেক বেশী সময় নষ্ট করেছে।
8 তারা ভালোভাবে খাওয়া-দাওয়া করা ঘোড়ার মতো, যারা কামাবেশের জন্য তৈরী।
ওরা সেই সমস্ত ঘোড়ার মতো যারা প্রতিবেশীদের স্ত্রীকে ঘরে ডেকে আনে।
9 তাহলে আমি কি ঐ সব কাজের জন্য যিহূদার লোকদের শাস্তি দেব না?”
এই হল প্রভুর বার্তা।
“হ্যাঁ, তুমি জানো যে দেশ এইভাবে বেঁচে থাকে তাকে আমার শাস্তি দিতে হবে।
আমি তাদের যোগ্য শাস্তিই দেব।
10 “যাও যিহূদার সমস্ত দ্রাক্ষা গাছ কেটে দাও।
(কিন্তু তাদের কখনও পুরোপুরি ধ্বংস করো না।)
কেটে দাও দ্রাক্ষা গাছগুলির শাখাপ্রশাখা, কারণ এই শাখাপ্রশাখা প্রভুর নয়।
11 যিহূদা এবং ইস্রায়েলের পরিবারগুলি
আমার সঙ্গে সবরকমভাবেই বিশ্বাসঘাতকতা করেছে।”
এই ছিল প্রভুর বার্তা।
12 “ঐ দেশবাসীরা প্রভুর বিরুদ্ধে মিথ্যে প্রচার করেছে।
তারা বলেছে, ‘প্রভু আমাদের কিছুই করতে পারবে না।
আমাদের আক্রমণ করতে আসছে
এমন কোন সৈন্য আমরা কখনও দেখব না।
কোনদিন অনাহারে মারাও যাব না।’
13 ভ্রান্ত ভাববাদীরা হল একটি ফাঁকা বাতাস।
ঈশ্বরের বাক্য তাদের মধ্যে নেই।
তাদেরও কপালে দুর্ভোগ ঘটবে।”
14 প্রভু ঈশ্বর সর্বশক্তিমান এই কথাগুলি বলেছেন:
“ওই লোকরা বলেছিল যে আমি তাদের শাস্তি দেব না।
সুতরাং যিরমিয়, আমি তোমাকে যে শাস্তি দেব তা আগুনের মতো হবে।
ঐ লোকগুলি হবে কাঠের মতো।
সেই আগুন ওদের পুড়িয়ে ছারখার করে দেবে।”
15 ইস্রায়েলের পরিবার, এই বার্তা হল প্রভুর,
“আমি শীঘ্রই তোমাদের আক্রমণ করবার জন্য
বহু দূর থেকে একটি প্রাচীন দেশকে নিয়ে আসব।
বহু প্রাচীন সেই দেশ।
সেই দেশের মানুষের ভাষা
তোমরা বুঝতে পারবে না।
16 তাদের তীরের থলিগুলি খোলা কবরের মতো।
তারা সবাই বলবান সৈন্য।
17 ঐ সব সৈন্যরা তোমাদের মজুত করা
সমস্ত খাদ্য খেয়ে ফেলবে।
ধ্বংস করবে তোমাদের সন্তানদের।
তোমাদের মেষ ও রাখাল বালকদের তারা খেয়ে ফেলবে।
দ্রাক্ষা আর ডুমুর ফল খাবে।
তারা তোমাদের সমস্ত বিশ্বস্ত
দুর্ভেদ্য শহরগুলিকে ধ্বংস করবে।”
18 এই হল প্রভুর বার্তা,
“কিন্তু যিহূদা, যখন এই ভয়ঙ্কর দিনগুলো তোমাদের জীবনে আসবে
তখন কিন্তু আমি পুরোপুরি তোমাকে ধ্বংস করব না।
19 যিরমিয়, তোমাকে যিহূদার লোকরা জিজ্ঞাসা করবে,
‘কেন প্রভু তোমার ঈশ্বর আমাদের প্রতি এমন খারাপ ব্যবহার করলেন?’
তখন তুমি (যিরমিয়) তাদের উত্তর দেবে:
‘তোমরা প্রভুর দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছ,
তোমাদের দেশে বিদেশী মূর্ত্তিসমূহ বানিয়েছ এবং তাদের সেবা করেছ।
সুতরাং তোমরা এখন বিদেশে বিদেশীদের সেবা করবে।’”
20 প্রভু বলেছেন, “এই বার্তা জানিয়ে দাও
যিহূদা এবং যাকোবের পরিবারগোষ্ঠীকে:
21 এই হল বার্তা:
হে নির্বোধ মানুষ তোমাদের কোন বুদ্ধি নেই।
তোমাদের চোখ আছে অথচ দেখতে পাও না!
কান আছে কিন্তু শুনতে পাও না।
22 নিশ্চয়ই তোমরা আমাকে ভয় পাও।”
এই ছিল প্রভুর বার্তা।
“আমার সামনে তোমাদের ভয়ে শিউরে উঠতে হবে।
আমিই সেই একজন যে তটভূমি দিয়ে সমুদ্রকে সীমায়িত করেছে, যাতে জল তার বাইরে না বইতে পারে।
জলের ঢেউ হয়তো বালুতটে আছড়ে পড়বে কিন্তু কোন কিছুকে ধ্বংস করতে পারবে না।
ঢেউ গর্জন করে বালুতটে আছড়ে পড়তে পারে কিন্তু কখনও বালুতটের সীমানা পেরোতে পারবে না।
23 কিন্তু যিহূদার লোকরা ভীষণ একগুঁয়ে এবং জেদী।
তারা সর্বদা আমার বিরুদ্ধে যাবার ছক কষে গিয়েছিল
এবং অবশেষে আমাকে ছেড়েও গিয়েছিল।
24 যিহূদার লোকরা কখনও বলেনি,
‘প্রভু আমাদের ঈশ্বরকে ভয় পাওয়া এবং সম্মান জানানো উচিৎ।
তিনিই আমাদের শরৎ এবং বসন্তকালে সঠিক সময় বৃষ্টি এনে দিয়েছেন।
তিনিই আমাদের ফসল তোলার সময় নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন।’
25 যিহূদার লোকরা, তোমরা অনেক ভুল কাজ করেছ।
তাই সময় মতো বৃষ্টির দেখা পাচ্ছো না।
তোমরা যথেষ্ট ফসল ফলাওনি।
তোমাদের পাপসমূহ প্রভুর কাছ থেকে ভালো জিনিষ পাওয়া থেকে তোমাদের বিরত করেছে।
26 আমার দেশবাসীর মধ্যে কিছু শয়তান লুকিয়ে আছে।
যারা পাখী ধরবার জন্য খাঁচা তৈরী করে, তারা তাদের মত।
পাখী ধরবার পরিবর্তে
তারা মানুষ ধরবার ফাঁদ পাতে।
27 এইসব দুষ্ট লোকদের, যারা মিথ্যায় ভরা,
তাদের বাড়ীগুলো হল পাখীতে ভরা খাঁচাসমূহের মতো।
তাদের মিথ্যাগুলি তাদের ধনী ও শক্তিশালী করেছে।
28 তারা তাদের অসৎ কর্ম দিয়ে মোটা এবং স্বাস্থ্যবান হয়ে উঠেছে।
অশুভ উপায়ে তারা হয়ে উঠেছে স্বাস্থ্যবান।
তাদের শয়তানির কোন শেষ নেই।
তারা অনাথ শিশুদের ব্যাপারে কোন মিনতি করে নি।
তাদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয় নি।
তারা গরীব লোকদের প্রতি কখনও সুবিচার করেনি।
29 ঐসব কাজের জন্য আমি কি যিহূদার লোকদের শাস্তি দেব না?”
এই ছিল প্রভুর বার্তা।
“তুমি জানো এই ধরণের দেশগুলোকে আমি উচিৎ শাস্তি দিয়ে থাকি।
আমাকে তাদের যোগ্য শাস্তিই দিতে হবে।”
30 প্রভু বললেন, “যিহূদা দেশে একটা সাংঘাতিক
এবং রোমাঞ্চকর ঘটনা ঘটে গিয়েছে।
31 ভাববাদীরা মিথ্যে কথা বলে
এবং যাজকদের যা করার কথা তা তারা করে না।
আমার লোকরা, ভাববাদীরা এবং যাজকরা যা করে তাই ভালোবাসে।
কিন্তু হে আমার লোকসমূহ, তোমাদের যখন শাস্তি পাবার সময় আসবে
তখন তোমরা কি করবে?
বিবাহ বিচ্ছেদ সম্পর্কে যীশুর শিক্ষা
(মার্ক 10:1-12)
19 এসব কথা বলা শেষ করে যীশু গালীল ছেড়ে যর্দন নদীর অন্য পারে যিহূদিয়া প্রদেশে এলেন। 2 বহুলোক তাঁর পিছু পিছু চলতে লাগল আর তিনি সেখানে তাদের সুস্থ করলেন।
3 সেই সময় কয়েকজন ফরীশী এসে পরীক্ষা করবার জন্য তাঁকে জিজ্ঞেস করল, “কোন লোকের পক্ষে তার খুশী মতো যে কোন কারণে স্ত্রীকে ত্যাগ করা কি বিধি-সম্মত?”
4 যীশু বললেন, “তোমরা কি শাস্ত্রে পড়নি, যে শুরুতেই ঈশ্বর তাদের ‘পুরুষ ও নারী করে সৃষ্টি করেছিলেন?’(A) 5 এরপর ঈশ্বর বলেছিলেন, ‘এজন্য মানুষ বাবা-মাকে ছেড়ে স্ত্রীর সঙ্গে যুক্ত হবে, আর সেই দুজন এক দেহ হবে।’(B) 6 তাই তারা আর দুজন নয় কিন্তু একজন। তাই ঈশ্বর যাদের যুক্ত করেছেন, মানুষ তাদের পৃথক না করুক।”
7 তখন ফরীশীরা তাঁকে বললেন, “তবে মোশির বিধানে শুধুমাত্র বিবাহ বিচ্ছেদ পত্র দিয়ে স্ত্রীকে ত্যাগ করার বিষয়ে লেখা আছে কেন?”[a]
8 তখন যীশু তাদের বললেন, “তোমাদের অন্তরের কঠোরতার জন্যই মোশি সেই বিধান দিয়েছিলেন, শুরুতে কিন্তু এরকম ছিল না। 9 তাই আমি তোমাদের বলছি, যদি কোন মানুষ ব্যভিচার দোষ ছাড়া অন্য কোন কারণে স্ত্রীকে ছেড়ে দিয়ে অন্য কোন স্ত্রীলোককে বিয়ে করে তবে সে ব্যভিচার করে।”[b]
10 তখন তাঁর শিষ্যরা তাঁকে বললেন, “স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে পরিস্থিতি যখন এমনই হয়, তখন বিয়ে না করাই ভাল।”
11 যীশু তাঁদের বললেন, “সবাই এই শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে না, কেবল যাদের সেই ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে, তারাই তা মেনে নিতে পারে। 12 কিছু লোক নপুংসক হয়েই মাতৃ গর্ভ থেকে ভূমিষ্ঠ হয়, যারা বিয়ে করেই না। আর কিছু লোককে মানুষে খোজা করে দেয়, সেজন্য তারা বিয়ে করে না। আবার এমন কিছু লোক আছে, যারা স্বর্গরাজ্যের জন্য বিয়ে করতে চায় না। যে কেউ এ শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে, সে গ্রহণ করুক।”
যীশু ছোট ছেলেমেয়েদের আশীর্বাদ করলেন
(মার্ক 10:13-16; লূক 18:15-17)
13 এরপর লোকেরা ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের যীশুর কাছে নিয়ে এল, যেন তিনি তাদের মাথায় হাত রেখে প্রার্থনা করেন। কিন্তু যীশুর শিষ্যরা তাদের ধমক দিলেন। 14 তখন যীশু তাদের বললেন, “ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের বাধা দিও না, ওদের আমার কাছে আসতে নিষেধ করো না; এদের মতো লোকদের জন্যই তো স্বর্গরাজ্য।” 15 এরপর যীশু সব ছেলেমেয়েদের মাথায় হাত রাখলেন, তারপর তিনি সেখান থেকে চলে গেলেন।
একজন ধনী লোক যীশুকে অনুসরণ করতে অস্বীকার করল
(মার্ক 10:17-31; লূক 18:18-30)
16 একজন লোক একদিন যীশুর কাছে এসে জিজ্ঞেস করল, “গুরু, অনন্ত জীবন পাবার জন্য আমাকে কোন্ ভাল কাজ করতে হবে?”
17 যীশু তাকে বললেন, “কোনটি ভাল একথা তুমি আমায় জিজ্ঞেস করছ কেন? ভাল তো কেবল একজনই, আর তিনি ঈশ্বর। যাই হোক্ তুমি যদি অনন্ত জীবন পেতে চাও, তবে তাঁর সব আজ্ঞা পালন কর।”
18 সে বলল, “কোন্ কোন্ আজ্ঞা পালন করব?”
যীশু তাকে বললেন, “‘তুমি অবশ্যই নরহত্যা করবে না, ব্যভিচার করবে না, চুরি করবে না, মিথ্যা সাক্ষ্য দেবে না, 19 তোমার বাবা-মাকে সম্মান করো’(C) ও ‘প্রতিবেশীকে নিজের মতো ভালবেসো।’”(D)
20 সেই যুবক তখন যীশুকে বলল, “আমি তো এর সবই পালন করে আসছি, তাহলে আমার আর কি করা বাকি আছে?”
21 যীশু তাঁকে বললেন, “যদি তুমি সম্পূর্ণ নিখুঁত হতে চাও, তবে যাও, তোমার সমস্ত সম্পত্তি বিক্রি করে গরীবদের মধ্যে বিলিয়ে দাও। তাতে তুমি স্বর্গে প্রচুর সম্পদ পাবে। তারপর এস, আমার অনুসারী হও।”
22 কিন্তু সেই যুবক এই কথা শুনে বিষন্ন হয়ে চলে গেল, কারণ তার প্রচুর সম্পত্তি ছিল।
23 যীশু তাঁর শিষ্যদের বললেন, “আমি তোমাদের সত্যি বলছি, ধনী ব্যক্তির পক্ষে স্বর্গরাজ্যে প্রবেশ করা কঠিন হবে। 24 হ্যাঁ, আমি তোমাদের বলছি, ধনীর পক্ষে স্বর্গরাজ্যে প্রবেশ করার চেয়ে বরং ছুঁচের ফুটো দিয়ে উটের গলে যাওয়া সহজ।”
25 একথা শুনে শিষ্যরা আশ্চর্য হয়ে গেলেন। তাঁরা তখন বললেন, “তাহলে উদ্ধার পাওয়া কার পক্ষে সম্ভব?”
26 যীশু তাঁদের দিকে তাকিয়ে বললেন, “মানুষের পক্ষে তা অসম্ভব বটে, কিন্তু ঈশ্বরের পক্ষে সবই সম্ভব।”
27 তখন পিতর বললেন, “দেখুন, আমরা সব কিছু ছেড়ে দিয়ে আপনার অনুসারী হয়েছি, তাহলে আমরা কি পাব?”
28 যীশু তাঁদের বললেন, “আমি তোমাদের সত্যি বলছি, সেই নতুন জগতে যখন মানবপুত্র তাঁর মহিমামণ্ডিত সিংহাসনে বসবেন, তখন তোমরা যাঁরা আমার অনুসারী হয়েছ, তোমরাও বারোটি সিংহাসনে বসবে আর ইস্রায়েলের বারো গোষ্ঠীর বিচার করবে। 29 আর যে কেউ আমার জন্য বাড়ি ঘর, ভাই বোন, বাবা-মা, ছেলেমেয়ে অথবা জায়গা জমি ছেড়েছে, সে তার শতগুন বেশী পাবে এবং অনন্ত জীবনেরও অধিকারী হবে। 30 কিন্তু এমন অনেকে যারা এখন প্রথমে আছে তারা শেষে যাবে, আর যারা এখন শেষে আছে তারা প্রথম হবে।
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International