M’Cheyne Bible Reading Plan
যেদিন সূর্য স্থির হয়ে দাঁড়াল
10 সেই সময় জেরুশালেমের রাজা ছিল অদোনীষেদক। রাজা জানতে পেরেছিল যে, যিহোশূয় অয় শহরকে পরাস্ত করেছিলেন এবং ধ্বংস করে দিয়েছেন। সে জানতে পারল যিরীহো আর সে দেশের রাজারও একই হাল করেছিলেন যিহোশূয়। সে এটাও জেনেছিল, গিবিয়োনের লোকরা ইস্রায়েলের সঙ্গে শান্তি চুক্তি করেছে। তারা জেরুশালেমের খুব কাছাকাছিই রয়েছে। 2 এসব জেনে অদোনীষেদক এবং তার প্রজারা বেশ ভয় পেয়ে গেল। অয়ের মতো গিবিয়োন তো ছোটখাট শহর নয়। গিবিয়োন খুব বড় শহর, একে মহানগরী বলা যায়। সেই নগরের সকলেই ছিল বেশ ভালো যোদ্ধা। সেই নগরেরও এরকম অবস্থা শুনে রাজা তো বেশ ঘাবড়ে গেল। 3 জেরুশালেমের রাজা অদোনীষেদক হিব্রোণের রাজা হোহমের সঙ্গে কথা বলল। তাছাড়া যর্মূতের রাজা পিরাম, লাখীশের রাজা যাফিয় এবং ইগ্লোনের রাজা দবীর এদের সঙ্গেও সে কথা বলল। জেরুশালেমের রাজা এদের কাছে অনুনয় করে বলল, 4 “তোমরা আমার সঙ্গে চলো। গিবিয়োনদের আক্রমণ করতে তোমরা আমাকে সাহায্য করো। গিবিয়োনের লোকরা যিহোশূয় ও ইস্রায়েলীয়দের সঙ্গে শান্তি চুক্তি করেছে।”
5 সেই জন্য পাঁচজন ইমোরীয় রাজার সৈন্যবাহিনী এক হলো। (এই পাঁচজন হলো জেরুশালেম, হিব্রোণ, যর্মূত, লাখীশ এবং ইগ্লোনের রাজা।) সৈন্যদল গিবিয়োনের দিকে যাত্রা করল। তারা শহর ঘিরে ফেলল এবং যুদ্ধ শুরু করল।
6 গিবিয়োনবাসীরা যিহোশূয়র কাছে খবর পাঠাল। সেই সময় যিহোশূয় গিল্গলে তাঁর শিবিরে ছিলেন। খবরটা এই: “আমরা আপনার ভৃত্য। আপনি আমাদের ছেড়ে চলে যাবেন না। আমাদের বাঁচান। তাড়াতাড়ি আসুন। পাহাড়ী দেশ থেকে সমস্ত ইমোরীয় জাতির রাজা সৈন্যসামন্ত নিয়ে আমাদের সঙ্গে যুদ্ধ করতে আসছে।”
7 খবর পেয়ে যিহোশূয় সসৈন্যে গিল্গল থেকে বেরিয়ে পড়লেন। তাঁর সঙ্গে ছিল সেরা সৈনিকের দল। 8 প্রভু যিহোশূয়কে বললেন, “ওদের সৈন্যসামন্ত দেখে ভয় পেও না। আমি তোমাদের জিতিয়ে দেব। ওরা কেউ তোমাদের পরাজিত করতে পারবে না।”
9 সৈন্যদল নিয়ে যিহোশূয় সারারাত গিবিয়োনে অভিযান চালালেন। শত্রুরা জানতে পারল না, যিহোশূয় আসছেন। তাই যিহোশূয় এবং তাঁর সৈন্যরা হঠাৎ তাদের আক্রমণ করল।
10 যখন ইস্রায়েল আক্রমণ করল তখন প্রভু সেই সৈন্যদের হতবাক করে দিলেন। তারা পরাজিত হল। ইস্রায়েলীয়দের কাছে এটা একটা মস্ত বড় জয়। তারা শত্রুদের গিবিয়োন থেকে বৈৎ-হোরোণের দিকে তাড়িয়ে নিয়ে গেল। ইস্রায়েলীয় সৈন্যরা অসেকা এবং মক্কেদা পর্যন্ত যাবার পথে যত লোকজন ছিল সবাইকে হত্যা করল। 11 তারপর তারা বৈৎ-হোরোণ থেকে অসেকা পর্যন্ত লম্বা রাস্তাটি বরাবর শত্রুদের পেছনে পেছনে ধাওয়া করতে করতে গেল। তাদের এভাবে তাড়া করার সময় প্রভু আকাশ থেকে শিলাবৃষ্টি ঝরালেন। বড় বড় শিলার ঘায়ে অনেক শত্রুই মারা গেল। ইস্রায়েলীয় সৈন্যদের তরবারির ঘায়ে যত না মারা পড়ল, তার চেয়ে ঢের বেশী মারা পড়ল শিলা বৃষ্টিতেই।
12 সেই দিন প্রভু ইস্রায়েলের কাছে ইমোরীয়দের পরাজয় ঘটালেন। সেই দিন যিহোশূয় প্রভুর কাছে প্রার্থনা করলেন এবং তারপর সমস্ত ইস্রায়েলবাসীদের সামনে আদেশ করলেন:
“হে সূর্য, তুমি গিবিয়োনের উপরে থামো।
আর হে চন্দ্র, তুমি অয়ালোন উপত্যকায় স্থির হয়ে থাকো।”
13 তাই সূর্য সরল না। চন্দ্রও নড়ল না যতক্ষণ না লোকরা শত্রুদের হারায়। এই কাহিনী যাশের গ্রন্থে লেখা আছে। সূর্য মধ্যগগনে স্থির হয়ে গিয়েছিল, গোটা দিনটা সে আর ঘুরল না। 14 এরকম আগে কখনও হয় নি। পরেও কখনও হয় নি। সেদিন প্রভু একটি লোকের বাধ্য হয়েছিলেন। সত্যিই, প্রভু সেদিন ইস্রায়েলের পক্ষে যুদ্ধ করেছিলেন।
15 এরপর যিহোশূয় সৈন্যদের নিয়ে গিল্গলের শিবিরে ফিরে এলেন। 16 কিন্তু যুদ্ধের সময় ঐ পাঁচ জন রাজা পালিয়ে গিয়েছিল। মক্কেদার কাছে একটা গুহার মধ্যে তারা লুকিয়েছিল। 17 তবে একজন তাদের গুহায় লুকোতে দেখতে পেয়ে গিয়েছিল। যিহোশূয় সব জানতে পারলেন। 18 যিহোশূয় বললেন, “বড় বড় পাথর দিয়ে গুহামুখ বন্ধ করে দাও। কিছু লোককে গুহা পাহারায় রেখে দাও। 19 কিন্তু তোমরা সেখানেই যেন থেমে থেকো না। শত্রুদের তাড়া করতেই থাকো। পেছন থেকে তাদের আক্রমণ করতেই থাকো। তোমরা শত্রুদের কিছুতেই তাদের শহরে ফিরে যেতে দেবে না। প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর তাদের উপর তোমাদের জয়ী হতে দিয়েছেন।”
20 তারপর যিহোশূয় আর ইস্রায়েলবাসীরা শত্রুদের হত্যা করলেন। কিন্তু কয়েকজন শত্রু উঁচু প্রাচীর ঘেরা কয়েকটি শহরে গেল এবং সেই খানেই নিজেদের লুকিয়ে রাখল। তাদের আর হত্যা করা গেল না। 21 যুদ্ধের পর যিহোশূয়ের লোকরা তাঁর কাছে মক্কেদায় ফিরে এল। সেই দেশের কোন লোকই ইস্রায়েলীয়দের বিরুদ্ধে একটা কথাও বলতে সাহস করে নি।
22 যিহোশূয় বললেন, “গুহামুখ থেকে পাথরগুলো সরিয়ে দাও। ঐ পাঁচ জন রাজাকে আমার কাছে আনো।” 23 তাই যিহোশূয়ের লোকরা পাঁচজন রাজাকে গুহার ভেতর থেকে বার করে আনল। তারা ছিল জেরুশালেম, হিব্রোণ, যর্মূত, লাখীশ এবং ইগ্লোনের রাজা। 24 তারা পাঁচজন রাজাকে যিহোশূয়ের সামনে হাজির করল। যিহোশূয় তাঁর লোকদের সেখানে আসতে বললেন। সৈন্য দলের প্রধানদের তিনি বললেন, “তোমরা এদিকে এসো। এই রাজাদের গলায় তোমাদের পা দাও।” তাই সৈন্যদলের প্রধানরা কাছে সরে এলো এবং তাদের পা এইসব রাজাদের গলায় রাখল।
25 তারপর যিহোশূয় তাঁর লোকদের বললেন, “তোমরা শত্রু হও, সাহসী হও। ভয় পেও না। ভবিষ্যতে শত্রুদের সঙ্গে যখন তোমরা যুদ্ধ করবে তখন তাদের প্রতি প্রভু কি করবেন তা আমি তোমাদের দেখাচ্ছি।”
26 তারপর যিহোশূয় পাঁচ জন রাজাকে হত্যা করলেন। পাঁচটা গাছে পাঁচ জনকে ঝুলিয়ে দিলেন। সন্ধ্যে পর্যন্ত এইভাবেই তিনি তাদের রেখে দিলেন। 27 সূর্যাস্তের সময় যিহোশূয় তাঁর লোকদের গাছ থেকে দেহগুলোকে নামাতে বললেন। তাই তারা সেইগুলো ঐ গুহার ভেতরেই ছুঁড়ে দিল। যে গুহাতে রাজারা লুকিয়েছিল তার মুখটা বড় বড় পাথরে ঢেকে দিল। সেই দেহগুলো আজ পর্যন্ত গুহার ভেতরে আছে।
28 সেদিন যিহোশূয় মক্কেদা শহর জয় করলেন। শহরের রাজা ও লোকদের যিহোশূয় বধ করলেন। একজনও বেঁচে রইল না। যিহোশূয় যিরীহোর রাজার যে দশা করেছিলেন, মক্কেদার রাজারও সে রকম দশা করলেন।
দক্ষিণের শহরগুলি দখল হল
29 তারপর লোকদের নিয়ে যিহোশূয় মক্কেদা থেকে বেরিয়ে পড়লেন। তারা লিব্নাতে গিয়ে সেই শহর আক্রমণ করল। 30 প্রভু ইস্রায়েলীয়দের সেই শহর ও শহরের রাজাকে পরাজিত করতে দিলেন। সেই শহরের প্রত্যেকটা লোককে ইস্রায়েলীয়রা হত্যা করেছিল। কোন লোকই বেঁচে রইল না। আর লোকরা যিরীহোর রাজার যে দশা করেছিল, সেই শহরের রাজারও সেই দশা করল।
31 তারপর ইস্রায়েলের লোকদের নিয়ে যিহোশূয় লিব্না ছেড়ে লাখীশের দিকে গেলেন। লিব্নার কাছে তাঁবু খাটিয়ে তারা শহর আক্রমণ করল। 32 প্রভু তাদের লাখীশ জয় করতে দিলেন। দ্বিতীয় দিনে তারা শহর অধিকার করল। ইস্রায়েলের লোকরা শহরের প্রত্যেকটা লোককে হত্যা করল। লিব্নার মতো এখানেও তারা একই কাজ করেছিল। 33 গেষরের রাজা হোরম লাখীশকে রক্ষার জন্য এসেছিল। কিন্তু যিহোশূয় তাকেও সৈন্যসামন্ত সমেত হারিয়ে দিলেন। তাদের একজনও বেঁচে রইল না।
34 তারপর যিহোশূয় ইস্রায়েলবাসীদের নিয়ে লাখীশ থেকে ইগ্লোনের দিকে যাত্রা করলেন। ইগ্লোনের কাছে তাঁবু গেড়ে তারা ইগ্লোন আক্রমণ করল। 35 সেদিন তারা শহর দখল করে সেখানকার সব লোককে মেরে ফেলল। ঠিক লাখীশের মতো এখানেও সেই একই ঘটনা ঘটল।
36 তারপর যিহোশূয় ইস্রায়েলবাসীদের নিয়ে ইগ্লোন থেকে হিব্রোণের দিকে চললেন। সকলে হিব্রোণ আক্রমণ করল। 37 এই শহরটা ছাড়াও হিব্রোণের লাগোয়া কয়েকটা ছোটখাটো শহরও তারা অধিকার করল। শহরের প্রত্যেকটা লোককে তারা হত্যা করল। কেউ সেখানে বেঁচে রইল না। ইগ্লোনের মতো এখানেও সেই একই ঘটনা ঘটল। তারা শহর ধ্বংস করে সেখানকার সব লোককে হত্যা করেছিল।
38 তারপর যিহোশূয় ও ইস্রায়েলবাসীরা দবীরে ফিরে এসে সেই শহরটি আক্রমণ করল। 39 তারা সেই শহর, শহরের রাজা আর দবীরের লাগোয়া সমস্ত ছোটখাটো শহর সব কিছু দখল করে নিল। শহরের সব লোককে তারা হত্যা করল। কেউ বেঁচে রইল না। হিব্রোণ আর তার রাজাকে নিয়ে তারা যা করেছিল দবীর ও তার রাজাকে নিয়েও তারা সেই একই কাণ্ড করল। লিব্না ও সে শহরের রাজার ব্যাপারেও তারা একই কাজ করেছিল।
40 এইভাবে যিহোশূয় পাহাড়ী দেশ নেগেভের এবং পশ্চিম ও পূর্ব পাহাড়তলীর সমস্ত শহরের সব রাজাদের পরাজিত করলেন। ইস্রায়েলের প্রভু ঈশ্বর যিহোশূয়কে নির্দেশ দিয়েছিলেন সমস্ত লোককে হত্যা করার জন্য। তাই যিহোশূয় ঐ সব অঞ্চলের কোনো লোককেই বাঁচতে দেন নি।
41 যিহোশূয় কাদেশ-বর্ণেয় থেকে ঘসা পর্যন্ত সমস্ত শহর অধিকার করেছিলেন। মিশরের গোশন থেকে গিবিয়োন পর্যন্ত সমস্ত শহর তিনি অধিকার করেছিলেন। 42 একবারের অভিযানেই যিহোশূয় ঐসব শহর ও তাদের রাজাদের অধিকার করতে পেরেছিলেন। যিহোশূয় এমনটি করতে পেরেছিলেন কারণ ইস্রায়েলের প্রভু ঈশ্বর স্বয়ং ইস্রায়েলের পক্ষে যুদ্ধ করেছিলেন। 43 এরপর যিহোশূয় ইস্রায়েলবাসীদের নিয়ে গিল্গলে তাদের শিবিরে ফিরে এলেন।
দায়ূদের একটি মস্কীল। যখন তিনি গুহায় ছিলেন সেই সময় থেকে একটি প্রার্থনা।
142 আমি সাহায্যের জন্য প্রভুকে ডাকবো।
আমি প্রভুর কাছে প্রার্থনা করবো।
2 আমি প্রভুকে আমার সব সংকটের কথা বলবো।
আমি প্রভুকে আমার অসুবিধার কথা বলবো।
3 আমার শত্রুরা আমার জন্য একটা ফাঁদ পেতেছে।
আমি সমর্পণ করতে প্রস্তুত।
কিন্তু প্রভু জানেন আমার মধ্যে কি হচ্ছে।
4 আমি চারদিকে দেখি,
কিন্তু আমি আমার কোন বন্ধু দেখি না।
আমার পালানোর কোন জায়গা নেই।
কেউ আমাকে রক্ষা করার চেষ্টা করে না।
5 তাই আমি প্রভুর কাছে উচ্চস্বরে সাহায্য প্রার্থনা করেছিলাম।
“প্রভু, আপনিই আমার নিরাপদ আশ্রয়স্থল।
প্রভু আপনিই আমায় বাঁচতে দিতে পারেন।”
6 হে প্রভু, আমার প্রার্থনা শুনুন
কারণ আমি অসহায়।
যারা আমায় তাড়া করে তাদের হাত থেকে আমায় রক্ষা করুন।
ওই লোকগুলো আমার পক্ষে প্রচণ্ড শক্তিশালী।
7 আমাকে এই ফাঁদ এড়িয়ে যেতে সাহায্য করুন
যাতে আমি আপনার নামের প্রশংসা করতে পারি।
এবং ভালো লোকরা এসে আমার সঙ্গে উদ্যাপন করবে,
কারণ আপনি আমায় প্রযত্নে রেখেছিলেন।
দায়ূদের প্রশংসা গীতের অন্যতম।
143 প্রভু, আমার প্রার্থনা শুনুন।
এবং তারপর আমার প্রার্থনার উত্তর দিন।
আমাকে দেখান যে সত্যিই আপনি কত মঙ্গলকর ও বিশ্বস্ত।
2 আমি আপনার দাস, আমাকে বিচার করবেন না।
কারণ কোন জীবিত ব্যক্তি আপনার সামনে কখনই নির্দোষ বলে বিবেচিত হতে পারে না।
সারা জীবন ধরে আমি কি কখনও নিষ্পাপ বলে বিবেচিত হব।
3 কিন্তু শত্রুরা আমায় তাড়া করেছে।
তারা আমার জীবনকে ভেঙে গুঁড়িয়ে মাটিতে মিশিয়ে দিয়েছে।
দীর্ঘদিন আগে মরে যাওয়া লোকের মত
ওরা আমাকে অন্ধকার কবরে ঠেলে দিচ্ছে।
4 আমি ত্যাগ করতে প্রস্তুত।
আমি আমার সাহস হারিয়ে ফেলেছি।
5 কিন্তু দীর্ঘকাল আগে কি ঘটেছিলো আমার তা মনে আছে।
বহু বিষয়, যেগুলো আপনি করেছিলেন তার সম্বন্ধে আমি ভাবি।
আপনার বিপুল ক্ষমতা দিয়ে আপনি যা করেছিলেন সে সম্পর্কে আমি বলে থাকি।
6 প্রভু, আমার দু হাত তুলে আপনার কাছে প্রার্থনা করি,
যেমন করে শুকনো জমি বৃষ্টির প্রতীক্ষা করে তেমন করে আমি আপনার সাহায্যের প্রতীক্ষা করি।
7 শীঘ্রই আমাকে উত্তর দিন প্রভু।
আমি সাহস হারিয়েছি।
আমার থেকে বিমুখ হবেন না।
কবরে শুয়ে থাকা মৃত লোকের মত আমাকে মৃত হতে দেবেন না।
8 প্রভু আজকের সকালে আমাকে আপনার প্রকৃত প্রেম প্রদর্শন করুন।
আমি আপনাতে বিশ্বাস রাখি।
আমার যা করণীয় তা আমায় দেখান।
আমি আমার জীবন আপনার হাতে সমর্পণ করছি!
9 প্রভু আমি নিরাপত্তার জন্য আপনার কাছে এসেছি।
শত্রুদের থেকে আমায় রক্ষা করুন।
10 আমাকে দিয়ে আপনি কি করাতে চান তা আমায় দেখান।
আপনি আমার ঈশ্বর।
আপনার মহৎ উদ্দীপনা দিয়ে
আমায় সঠিক পথে এগিয়ে দিন।
11 প্রভু আমাকে বাঁচতে দিন,
তাহলে লোকে আপনার নামের প্রশংসা করবে।
আপনি যে প্রকৃতই মঙ্গলকর তা আমায় দেখান
এবং শত্রুদের থেকে আমায় রক্ষা করুন।
12 হে প্রভু, আপনার প্রকৃত প্রেম প্রদর্শন করুন
এবং যারা আমায় মেরে ফেলতে চাইছে সেই শত্রুদের হাত থেকে আমায় রক্ষা করুন।
তাদের পরাজিত করুন
এবং তাদের ধ্বংস করুন।
4 এই বার্তা প্রভুর কাছ থেকে এলো।
“ইস্রায়েল, যদি তুমি ফিরতে চাও
তাহলে আমার কাছে ফিরে এসো।
ভ্রান্ত দেবতাদের মূর্ত্তিগুলো ছুঁড়ে ফেলে দাও।
আমার কাছ থেকে চ্যুত হয়ে বিপথগামী হয়ো না।
2 যদি কেবলমাত্র এগুলি কর
তাহলেই কোন প্রতিজ্ঞা করবার সময় তোমরা আমার নাম ব্যবহার করতে পারবে।
প্রতিশ্রুতি গ্রহণের সময় বলতে পারবে,
‘প্রভুর নিশ্চিত অস্তিত্বের দিব্য।’
এই কথাগুলো তোমরা সত্য, উচিৎ
এবং সঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারবে।
তাহলে জাতিসমূহ তাঁর আশীর্বাদ পাবে।
তারপর তারা তাঁকে প্রশংসা করতে পারবে।
তোমার দেশবাসী প্রভুর কার্যকলাপ ঘিরে
গর্ব অনুভব করবে।”
3 যিহূদা এবং জেরুশালেমের মানুষকে এই কথাগুলি প্রভু বলেছিলেন:
“তোমাদের জমিগুলি চষা হয়নি।
জমিতে লাঙল দাও, নিজেদের পতিত জমি চাষ করো।
বীজ বোনো সেই জমিতে, কাঁটাবনে বীজ বপন করো না।
4 প্রভুর লোক হয়ে যাও!
তোমাদের হৃদয়গুলোকে পরিবর্তন করো, আত্মাকে শুদ্ধ করো।
হে যিহূদা ও জেরুশালেমের মানুষ, তোমরা যদি নিজেদের না শোধরাও
তাহলে আমি ক্রুদ্ধ হয়ে যাবো।
আমার ক্রোধ আগুনের মতো দ্রুত গতিতে
তোমাদের সবাইকে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছাই করে দেবে।
সেই আগুন নেভানোর ক্ষমতা কারো হবে না।
তোমাদের অসৎ কার্যকলাপের জন্যই এইগুলো হবে।”
উত্তর দিক থেকে বিপর্যয়
5 “যিহূদার লোকদের এই খবর বল:
জেরুশালেম শহরের প্রত্যেকটি ব্যক্তিকে বল,
‘দেশের সর্বত্র শিঙা বাজাও।’
জোরে চিৎকার কর:
‘এস, আমরা একত্র হই
এবং প্রতিরক্ষার জন্য দূর্গবিশিষ্ট শহরগুলিতে যাই।’
6 সিয়োনের দিকে নিশান পতাকা ওড়াও।
বাঁচতে চাও তো তাড়াতাড়ি করো, অপেক্ষা কোরো না।
যা বলছি তাই কর কারণ আমি উত্তর দিক থেকে বিপর্যয় বয়ে আনছি।
আমি এক ভয়ঙ্কর ধ্বংস ঘটাবো।”
7 এক “সিংহ” তার গুহা থেকে বেরিয়ে এসেছে।
দেশসমূহের এক বিনাশকর্তা তার যাত্রা শুরু করেছে।
তোমাদের দেশকে ধ্বংস করতে সে বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে পড়েছে।
ভয়ঙ্কর বিপর্যয় ঘনিয়ে আসছে এই দেশের ওপর,
কোন মানুষ জীবিত থাকবে না, সব কটি শহর ধ্বংসস্তূপ হয়ে যাবে।
8 সুতরাং শোকের পোশাক পরে তোমরা চিৎকার করে কাঁদো!
কারণ প্রভু আমাদের ওপর ক্ষুব্ধ হয়েছেন।
9 প্রভু বললেন, “যখন এগুলি ঘটবে,
তখন রাজা এবং তাঁর পারিষদরা তাদের সাহস হারিয়ে ফেলবে,
যাজকরা দারুণ ভয় পেয়ে যাবেন
এবং ভাববাদীরা যৎপরোনাস্তি বিহ্বল হবেন।”
10 তখন আমি, যিরমিয় বললাম, “হে প্রভু আমার মনিব, আপনি অবশ্যই যিহূদা ও জেরুশালেমের লোকদের এই বলে প্রতারণা করেছেন: ‘তোমরা শান্তি পাবে।’ কিন্তু এখন তরবারিটি তাদের গলার দিকে লক্ষ্য করে রয়েছে।”
11 একই সঙ্গে সেই সময় যিহূদা এবং জেরুশালেমবাসীদের জন্য
এই বার্তা প্রেরিত হবে:
“হে আমার লোক, অনাবৃত পর্বতশৃঙ্গ থেকে তপ্ত বাতাস বয়ে আসবে।
এই ঝড় ছুটে আসবে মরুভূমি থেকে।
এ ঝড় কোন মৃদু বাতাস নয়
যার দ্বারা কৃষকরা তাদের শস্যকণা ভূমি থেকে ঝেড়ে আলাদা করে নেয়।
12 এই ঝড় অনেক বেশী শক্তিশালী
এবং এটা আমার কাছ থেকেই আসে।
এখন আমি আমার বিচারের রায় ঘোষণা করব যিহূদাবাসীদের বিরুদ্ধে।”
13 দেখো। মেঘের মতো শত্রু নড়ে উঠছে।
তার রথসমূহকে দেখাচ্ছে যেন ভয়াবহ ঝড়।
তার ঘোড়াগুলো ঈগলদের চাইতেও দ্রুতগামী।
এটি আমাদের পক্ষে খুবই ক্ষতিকারক।
আমরা নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবো।
14 হে জেরুশালেমবাসী, কু-মতলব ত্যাগ করো।
হৃদয় থেকে সমস্ত শয়তানি ধুয়ে মুছে পরিষ্কার করে দাও।
আত্মাকে শুদ্ধ করলে তবেই তোমরা রক্ষা পাবে।
15 ডান দেশের[a] সম্প্রদায়ের বার্তাবাহকের কথা শোন।
ইফ্রয়িমের পর্বতমালা থেকে কেউ দুর্ঘটনার খবর নিয়ে আসছে।
16 “সারা জেরুশালেমবাসীকে
সেই খবর জানিয়ে দাও।
বহুদূরের দেশ থেকে শত্রুরা যিহূদার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে আসছে।
ঐ শত্রুরা চিৎকার করে যিহূদার শহরগুলির বিরুদ্ধে
যুদ্ধের ধ্বনি দিচ্ছে।
17 জেরুশালেমকে তারা সম্পূর্ণরূপে ঘিরে ফেলেছে।
যেমন একটি মাঠে লোকরা লক্ষ্য রাখে।
যিহূদা তুমি আমার বিরুদ্ধে গিয়েছিলে
তাই শত্রু পক্ষ তোমার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে।”
এই ছিল প্রভুর বার্তা।
18 “তোমার জীবনযাত্রা এবং কার্যকলাপই
এই সমস্যা সৃষ্টি করেছে।
তোমার শয়তানি তোমার জীবনকে খুব কঠোর করেছে।
এই মূহুর্তে তোমার শয়তানিই তোমার যন্ত্রণার কারণ।
যেটা তোমার হৃদয়ের গভীরে আঘাত করছে।”
যিরমিয়ের কান্না
19 হায়! দুঃখ, যন্ত্রণা এবং চিন্তায়
আমি কুঁকড়ে যাচ্ছি, হায়! কি দুশ্চিন্তা!
কি ভয়। আমি অন্তরে ব্যথিত।
আমার হৃদয় ধুক্ ধুক্ করছে।
না, আমি আর চুপ করে থাকতে পারছি না কারণ আমি শত্রু পক্ষের শিঙা শুনেছি।
ঐ শিঙা ধ্বনি যুদ্ধের আহবান জানাচ্ছে।
20 বিপর্যয় বিপর্যয়কে অনুসরণ করে।
এই পুরো দেশটাই ধ্বংস হয়ে গেছে।
হঠাৎই আমার তাঁবু ধ্বংস হয়ে গেল।
আমার পর্দাগুলো ছিঁড়ে গেছে।
21 প্রভু, আর কতদিন এই যুদ্ধের পতাকা আমাকে দেখতে হবে?
কতদিন আমি আর এই যুদ্ধের দামামা শুনব?
22 ঈশ্বর বললেন, “আমার লোকরা হল মূর্খ।
তারা আমাকে জানে না।
তারা হল নির্বোধ বালক।
তারা বুঝতে পারছে না।
তাদের বিবেচনা শক্তি নেই।
তারা শয়তানিতে পটু কিন্তু তারা জানে না কি করে ভাল কিছু করতে হয়।”
প্রলয় আসছে
23 আমি পৃথিবীর দিকে তাকালাম।
কিন্তু দেখলাম পৃথিবী শূন্য।
পৃথিবীতে কিছুই ছিল না।
আমি আকাশের দিকে তাকালাম।
দেখলাম সমস্ত আলো নিভে গিয়েছে।
24 আমি পর্বতের দিকে তাকালাম।
দেখলাম পর্বত কাঁপছে।
সমস্ত পাহাড়গুলি ভয়ে কাঁপছে।
25 আমি দেখলাম কিন্তু কোন মানুষ খুঁজে পেলাম না।
আকাশের সমস্ত পাখি মূহুর্তে উধাও হয়ে গিয়েছে।
26 আমি ভালো দেশের দিকে তাকালাম এবং দেখলাম তা মরুভূমিতে পরিণত হয়েছে।
ঐ দেশে সমস্ত শহরগুলো ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। প্রভুর ভয়ঙ্কর ক্রোধেই এই দশা।
27 প্রভু এইগুলি বললেন:
“এই পুরো দেশটাই ধ্বংস হয়ে যাবে।
কিন্তু আমি সম্পূর্ণভাবে তা ধ্বংস করব না।
28 জীবিত লোকরা আর্তনাদ করে মৃত লোকেদের জন্য কাঁদবে।
আকাশ এমশঃ কালো হয়ে উঠবে।
আমি যা বলব তার নড়চড় হবে না।
আমি আমার সিদ্ধান্ত বদলাবো না।”
29 যিহূদার লোকরা শুনতে পাবে
অশ্বারোহী ও তীরন্দাজ সৈন্যবাহিনীর হুঙ্কার
এবং ভয়ে তারা দৌড়ে পালাবে।
কেউ লুকোবে গুহার ভেতরে,
কেউ ঝোপঝাড়ে,
কেউ বা পাথরের আড়ালে।
যিহূদার সমস্ত শহরগুলি জনমানবহীন হয়ে যাবে।
সেখানে কেউ বাঁচবে না।
30 যিহূদা তুমি ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছ।
তাহলে, এখন তুমি কি করছ?
ঐ সমস্ত প্রেমিকদের জন্য তুমি তোমার সব চেয়ে ভালো পোশাক পরেছো,
নিজেকে অলঙ্কারে সাজিয়েছো,
চোখে দিয়েছ কাজল,
সুন্দর দেখাবার জন্য নিজেকে সাজিয়েছো।
কিন্তু তাতে কোন লাভ নেই
কারণ তোমার প্রেমিকরা এখন তোমাকে ঘৃণা করে।
তারাই তোমাকে মারতে চেষ্টা করছে।
31 একজন মহিলা প্রসব বেদনায় যেমন করে
তেমনি একটি কান্না আমি শুনতে পাচ্ছি।
এই কান্না একজন মহিলার তার প্রথম সন্তান প্রসব করবার কান্নার মত।
এই মহিলা হল সিয়োন কন্যা।
সে হাত জড়ো করে প্রার্থনার ভঙ্গিতে বলছে,
“ওঃ, আমি অজ্ঞান হয়ে যাব!
ঘাতকরা আমাকে চারদিক থেকে ঘিরে ধরেছে!”
কে সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ
(মার্ক 9:33-37; লূক 9:46-48)
18 সেই সময় যীশুর শিষ্যরা তাঁর কাছে এসে বললেন, “প্রভু, স্বর্গরাজ্যের মধ্যে শ্রেষ্ঠ কে?”
2 তখন যীশু একটি শিশুকে ডেকে তাঁদের মধ্যে দাঁড় করিয়ে বললেন, 3 “আমি তোমাদের সত্যি বলছি, যতদিন পর্যন্ত না তোমাদের মনের পরিবর্তন ঘটিয়ে এই শিশুদের মতো হবে, ততদিন তোমরা কখনই স্বর্গরাজ্যে প্রবেশ করতে পারবে না। 4 তাই, যে কেউ নিজেকে নত-নম্র করে শিশুর মতো হয়ে ওঠে, সেই স্বর্গরাজ্যের মধ্যে শ্রেষ্ঠ।
5 “আর যে কেউ এরকম কোন সামান্য সেবককে আমার নামে গ্রহণ করে, সে আমাকেই গ্রহণ করে।
পাপের বিষয়ে যীশুর সতর্কতা
(মার্ক 9:42-48; লূক 17:1-2)
6 “এই রকম নম্র মানুষদের মধ্যে যারা আমাকে বিশ্বাস করে, তাদের কারও বিশ্বাসে যদি কেউ বিঘ্ন ঘটায়, তবে তার গলায় ভারী একটা যাঁতা বেঁধে সমুদ্রের অতল জলে তাকে ডুবিয়ে দেওয়াই তার পক্ষে ভাল হবে। 7 ধিক্ এই জগত সংসার! কারণ এখানে কত রকমেরই না প্রলোভনের জিনিস আছে। প্রলোভন জগতে থাকবে ঠিকই, কিন্তু ধিক্ সেই মানুষকে যার দ্বারা তা আসে।
8 “তাই তোমার হাত কিংবা পা যদি তোমার প্রলোভনে পড়ার কারণ স্বরূপ হয়, তবে তা কেটে ফেলো। দুহাত ও পা নিয়ে নরকের অনন্ত আগুনে পড়ার চেয়ে বরং নুলো বা খোঁড়া হয়ে অনন্ত জীবনে প্রবেশ করা ভাল। 9 তোমার চোখ যদি তোমাকে প্রলোভনের পথে টেনে নিয়ে যায়, তবে তা উপড়ে ফেলে দিও। দুচোখ নিয়ে নরকের আগুনে পড়ার চেয়ে বরং কানা হয়ে অনন্ত জীবনে প্রবেশ করা তোমার পক্ষে ভাল।
যীশু হারিয়ে যাওয়া ভেড়ার দৃষ্টান্ত দিলেন
(লূক 15:3-7)
10 “দেখো, তোমরা আমার এই নম্র মানুষদের মধ্যে একজনকেও তুচ্ছ করো না, কারণ আমি তোমাদের বলছি যে স্বর্গে তাদের স্বর্গদূতেরা সব সময় আমার স্বর্গীয় পিতার মুখের দিকে চেয়ে আছেন। 11 [a]
12 “তোমরা কি মনে কর? যদি কোন লোকের একশোটি ভেড়া থাকে, আর তার মধ্যে যদি একটা ভুল পথে চলে যায় তবে সে কি নিরানব্বইটাকে পাহাড়ের ধারে রেখে দিয়ে সেই হারানো ভেড়াটা খুঁজতে যাবে না? 13 আমি তোমাদের সত্যি বলছি, যখন সে সেই ভেড়াটা খুঁজে পায় তখন যে নিরানব্বইটা ভুল পথে যায় নি, তাদের চেয়ে যেটা হারিয়ে গিয়েছিল তাকে ফিরে পেয়ে সে বেশী আনন্দ করে। 14 ঠিক সেই ভাবে, তোমাদের পিতা যিনি স্বর্গে আছেন, তিনি চান না, যে এই ছোটদের মধ্যে একজনও হারিয়ে যায়।
যখন কেউ কোন অন্যায় করে
(লূক 17:3)
15 “তোমার ভাই যদি তোমার বিরুদ্ধে কোন অন্যায় করে, তবে তার কাছে একান্তে গিয়ে তার দোষ দেখিয়ে দাও। সে যদি তোমার কথা শোনে, তবে তুমি তাকে আবার তোমার ভাই বলে ফিরে পেলে। 16 কিন্তু সে যদি তোমার কথা না শোনে, তবে আরো দু-একজনকে সঙ্গে নিয়ে তার কাছে যাও, যেন ঐ দুজন কিংবা তিনজন সাক্ষীর কথায় প্রত্যেকটা বিষয় সত্য বলে প্রমাণিত হয়। 17 সে যদি তাদের কথা শুনতে না চায়, তবে মণ্ডলীতে তা জানাও। আর সে যদি মণ্ডলীর কথাও শুনতে না চায়, তবে সে তোমার কাছে বিধর্মী ও কর আদায়কারীর মত হোক্।
18 “আমি তোমাদের সত্যি বলছি, পৃথিবীতে তোমরা যা বেঁধে রাখবে, স্বর্গেও তা বাঁধা হবে। আর পৃথিবীতে তোমরা যা খুলে দেবে স্বর্গেও তা খুলে দেওয়া হবে। 19 আমি তোমাদের আবার বলছি, পৃথিবীতে তোমাদের মধ্যে দুজন যদি একমত হয়ে কোন বিষয় নিয়ে প্রার্থনা কর, তবে আমার স্বর্গের পিতা তাদের জন্য তা পূরণ করবেন। 20 একথা সত্য, কারণ আমার অনুসারীদের মধ্যে দুজন কিংবা তিনজন যেখানে আমার নামে সমবেত হয়, সেখানে তাদের মাঝে আমি আছি।”
ক্ষমার বিষয়ে দৃষ্টান্ত
21 তখন পিতর যীশুর কাছে এসে তাঁকে বললেন, “প্রভু, আমার ভাই আমার বিরুদ্ধে কতবার অন্যায় করলে আমি তাকে ক্ষমা করব? সাত বার পর্যন্ত করব কি?”
22 যীশু তাঁকে বললেন, “আমি তোমাকে বলছি, কেবল সাত বার নয়, কিন্তু সাতকে সত্তর দিয়ে গুণ করলে যতবার হয় ততবার।”
23 “স্বর্গরাজ্য এভাবে তুলনা করা যায়, যেমন একজন রাজা যিনি তাঁর দাসদের কাছে হিসাব মিটিয়ে দিতে বললেন। 24 তিনি যখন হিসাব নিতে শুরু করলেন, তখন তাদের মধ্যে একজন লোককে আনা হল যে রাজার কাছে দশ হাজার রৌপ্যমুদ্রা ধারত। 25 কিন্তু তার সেই ঋণ শোধ করার ক্ষমতা ছিল না। তখন সেই মনিব রাজা হুকুম করলেন যেন সেই লোকটাকে তার স্ত্রী ও ছেলেমেয়েকে আর তার যা কিছু আছে সমস্ত বিক্রি করে পাওনা আদায় করা হয়।
26 “তাতে সেই দাস মাটিতে উপুড় হয়ে পড়ে মনিবের পা ধরে বলল, ‘আমার ওপর ধৈর্য্য ধরুন, আমি আপনার সমস্ত ঋণই শোধ করে দেব’ 27 সেই কথা শুনে সেই দাসের প্রতি মনিবের অনুকম্পা হল, তিনি তার সব ঋণ মকুব করে দিয়ে তাকে মুক্ত করে দিলেন।
28 “কিন্তু সেই দাস ছাড়া পেয়ে বাইরে গিয়ে তার একজন সহকর্মীর দেখা পেল, যে তার কাছে প্রায় একশো মুদ্রা ধারত। সেই দাস তখন তার গলা টিপে ধরে বলল, ‘তুই যে টাকা ধার করেছিস তা শোধ কর।’
29 “তখন তার সহকর্মী তার সামনে উপুড় হয়ে অনুনয় করে বলল, ‘আমার প্রতি ধৈর্য্য ধর। আমি তোমার সব ঋণ শোধ করে দেব।’
30 “কিন্তু সে তাতে রাজী হল না, বরং ঋণ শোধ না করা পর্যন্ত তাকে কারাগারে আটকে রাখল। 31 তার অন্য সহকর্মীরা এই ঘটনা দেখে খুবই দুঃখ পেল, তাই তারা গিয়ে তাদের মনিবের কাছে যা যা ঘটেছে সব জানাল।
32 “তখন সেই মনিব তাকে ডেকে বললেন, ‘তুমি দুষ্ট দাস! তুমি আমায় অনুরোধ করলে আর আমি তোমার সব ঋণ মকুব করে দিলাম। 33 আমি যেমন তোমার প্রতি দয়া দেখিয়েছিলাম তেমনি তোমার সহকর্মীর প্রতিও কি তোমার দয়া করা উচিত ছিল না?’ 34 তখন তার মনিব ক্রুদ্ধ হয়ে সমস্ত ঋণ শোধ না করা পর্যন্ত তাকে শাস্তি দিতে কারাগারে দিয়ে দিলেন।
35 “তোমরা প্রত্যেকে যদি তোমাদের ভাইকে অন্তর দিয়ে ক্ষমা না কর, তবে আমার স্বর্গের পিতাও তোমাদের প্রতি ঠিক ঐভাবে ব্যবহার করবেন।”
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International