M’Cheyne Bible Reading Plan
অয়ের বিনাশ প্রাপ্তি
8 প্রভু যিহোশূয়কে বললেন, “ভয় পেও না। আশা ছেড়ো না। তোমার সমস্ত যোদ্ধাকে নিয়ে অয়ে চলে যাও। অয়ের রাজাকে পরাজিত করার জন্য আমি তোমাদের সাহায্য করব। আমি তোমাদের কাছে রাজা, রাজার লোকদের, তার শহর এবং তার দেশ সবকিছু দিচ্ছি। 2 তোমরা যিরীহো আর সে দেশের রাজার প্রতি যা করেছিলে ঠিক সেই রকমই তোমরা অয় এবং সেই শহরের রাজার প্রতি করবে। শুধু এইবার তোমরা সব ধনসম্পদ এবং পশুসমূহ নিয়ে যাবে এবং ওগুলো তোমাদের জন্যই রাখবে। এখন তোমাদের কয়েকজন সৈন্যকে শহরের পিছনে লুকিয়ে থাকতে বলো।”
3 তাই যিহোশূয় সমস্ত সৈন্যবাহিনীকে অয়ের দিকে নিয়ে গেলেন। তিনি তাঁর সেরা 30,000 যোদ্ধাকে বেছে নিলেন। রাত্রে তিনি তাদের পাঠালেন। 4 যিহোশূয় তাদের এই আদেশ দিলেন: “তোমাদের যা বলছি তা মন দিয়ে শোন। শহরের পেছন দিকে তোমরা লুকিয়ে থাকবে। আক্রমণের জন্য অপেক্ষা করবে। শহর থেকে বেশী দূরে যাবে না। সবসময় লক্ষ্য রাখবে আর তৈরী থাকবে। 5 আমি সকলকে নিয়ে শহরের দিকে যাত্রা করব। শহরের লোকরা আমাদের সঙ্গে যুদ্ধ করতে বেরিয়ে আসবে। ঠিক আগের মতো আমরা ছুটে পালিয়ে আসব। 6 তারা আমাদের শহর থেকে তাড়িয়ে দেবে। তারা ভাববে যে আমরা ঠিক আগের মতোই ওদের কাছ থেকে পালিয়ে যাচ্ছি। সেই ভাবে আমরা পালিয়ে যাব। 7 তারপর তোমরা গুপ্তস্থান থেকে বেরিয়ে আসবে আর শহর অধিকার করবে। প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর স্বয়ং তোমাদের জয় করার শক্তি দান করবেন।
8 “প্রভু যা যা বলেন সেই অনুসারে কাজ করবে। আমার দিকে লক্ষ্য রেখো। আমি তোমাদের শহর দখলের আদেশ দেব। শহরের দখল নিয়ে শহরকে তোমরা জ্বালিয়ে দেবে।”
9 তারপর যিহোশূয় তাদের লুকানোর জায়গায় পাঠিয়ে দিয়ে অপেক্ষা করতে লাগলেন। তারা বৈথেল এবং অয়ের মধ্যবর্তী একটি জায়গায় গেল। জায়গাটি অয়ের পশ্চিম দিকে। যিহোশূয় তাঁর লোকদের সঙ্গে রাত কাটালেন।
10 পরদিন খুব সকালে যিহোশূয় সব লোকদের এক সঙ্গে জড়ো করলেন। তারপর যিহোশূয় এবং ইস্রায়েলের দলপতিরা তাদের অয়ের দিকে নিয়ে গেলেন। 11 যিহোশূয়ের সঙ্গে যে সব সৈন্য ছিল, তারা অয় অভিযান করল। শহরের সামনে এসে তারা দাঁড়াল। সৈন্যরা শহরের উত্তরে তাঁবু খাটাল। অয় এবং সৈন্যবাহিনীর মধ্যে ছিল একটি উপত্যকা।
12 তারপর যিহোশূয় প্রায় 5000 সৈন্য বেছে নিলেন। তিনি তাদের শহরের পশ্চিমে বৈথেল এবং অয়ের মাঝখানে লুকিয়ে থাকার জন্য পাঠিয়ে দিলেন। 13 এইভাবে যিহোশূয় যুদ্ধের জন্য তাদের প্রস্তুত করলেন। শহরের উত্তরে তাদের প্রধান ঘাঁটি। অন্যান্যরা লুকোল পশ্চিম দিকে। সেই রাত্রে যিহোশূয় উপত্যকায় গেলেন।
14 পরে অয়ের রাজা ইস্রায়েলীয় সৈন্যবাহিনীকে দেখতে পেলেন। ইস্রায়েলীয় সৈন্যবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে রাজা এবং তাঁর লোকরা বেরিয়ে পড়ল। অয়ের রাজা যর্দন উপত্যকার কাছে শহরের পূর্বদিকে গেলেন। তাই তিনি শহরের পেছন দিকে লুকিয়ে থাকা ইস্রায়েলীয় সৈন্যদের দেখতে পেলেন না।
15 অয়ের সৈন্যবাহিনী যিহোশূয় এবং ইস্রায়েলের সমস্ত মানুষকে তাড়িয়ে দিল। তারা যেখানে মরুভূমি সেই পূর্বদিকে ছুট লাগাল। 16 শহরের সকলে হৈ-হৈ করে যিহোশূয় ও তাঁর সৈন্যবাহিনীকে তাড়া করতে লাগল। সব লোক শহর ছেড়ে চলে গেল। 17 অয় এবং বৈথেলের সব লোক ইস্রায়েলীয় সৈন্যবাহিনীকে তাড়িয়ে দিল। শহর ফাঁকা পড়ে রইল। শহর রক্ষা করার জন্য কেউ রইল না।
18 তারপর প্রভু যিহোশূয়কে বললেন, “অয় শহরের দিকে বর্শা উঁচিয়ে ধরো। এই শহর আমি তোমাদের হাতে তুলে দেব।” তাঁর কথা মতো যিহোশূয় অয় শহরের দিকে বর্শা উঁচিয়ে ধরলেন। 19 ইস্রায়েলের যে সব লোকরা লুকিয়েছিল তারা তা দেখল। তারা তাদের লুকোবার জায়গা থেকে দ্রুত বেরিয়ে শহরের দিকে ছুটে গেল, শহরে ঢুকে পড়ল আর শহরটা দখল করে নিল। তারপর সৈন্যরা শহর পুড়িয়ে দেবার জন্য আগুন লাগিয়ে দিল।
20 অয়ের লোকরা পেছনে তাকিয়ে দেখল তাদের শহর জ্বলছে। তারা দেখল শহর থেকে আকাশের দিকে ধোঁয়া উঠছে। এই দেখে তারা দুর্বল হয়ে পড়ল, সাহস হারিয়ে ফেলল। তারা ইস্রায়েলীয়দের তাড়াবার প্রচেষ্টা ছেড়ে দিল। ইস্রায়েলীয়রাও আর ছোটাছুটি না করে ফিরে দাঁড়াল আর অয়ের লোকদের সঙ্গে যুদ্ধ করতে লাগল। অয়ের লোকদের পালাবার মতো কোন নিরাপদ জায়গা ছিল না। 21 যিহোশূয় এবং তাঁর লোকরা দেখল যে ঐ সৈন্যরা শহর দখল করে নিয়েছে। তারা দেখল শহর থেকে ধোঁয়া ওপরে উঠছে। এই সময় তারা পালিয়ে না গিয়ে ঘুরে দাঁড়াল, অয়ের লোকদের দিকে ছুটে গিয়ে যুদ্ধ করল। 22 তারপর যারা লুকিয়েছিল তারাও ফিরে এসে যুদ্ধে সাহায্য করল। অয়ের লোকদের সামনে পিছনে সব দিকেই ইস্রায়েলীয় সৈন্যবাহিনী। তারা ফাঁদে আটকা পড়ল। ইস্রায়েলীয়রা তাদের পরাজিত করল। অয়ের সমস্ত লোক নিশ্চিহ্ন না হওয়া পর্যন্ত তারা যুদ্ধ করতে লাগল। শত্রু পক্ষের একটা লোকও পালাতে পারল না। 23 কিন্তু অয়ের রাজাকে বাঁচিয়ে রাখা হল। যিহোশূয়ের লোকরা তাকে যিহোশূয়ের কাছে নিয়ে এল।
যুদ্ধের সমীক্ষা
24 যুদ্ধের সময় ইস্রায়েলীয় সৈন্যবাহিনী অয়ের লোকদের মাঠে-ঘাটে মরুভূমির মধ্যে তাড়িয়ে নিয়ে গিয়েছিল। তারপর তারা সেই সব জায়গায় তাদের হত্যা করেছিল। তারপর তারা অয়ে ফিরে গিয়ে সেখানে যেসব লোক তখনও বেঁচে ছিল তাদের হত্যা করল। 25 সেদিন অয়ের সমস্ত লোক মারা গেল। 12,000 পুরুষ ও স্ত্রীলোক মারা গিয়েছিল। 26 যিহোশূয় তাঁর লোকদের শহর ধ্বংস করার সংকেত দিতেই অয় শহরের দিকে বল্লম উঁচু করে ধরেছিলেন। শহরের সমস্ত লোক বিনষ্ট না হওয়া পর্যন্ত যিহোশূয় এভাবেই দাঁড়িয়েছিলেন। 27 ইস্রায়েলের লোকরা শহরের সমস্ত জীবজন্তু এবং অন্যান্য জিনিসপত্র নিজেদের ব্যবহারের জন্য রেখে দিয়েছিল। প্রভু যিহোশূয়কে নির্দেশ দেবার সময় তাদের এইসব রেখে দিতেই বলেছিলেন।
28 যিহোশূয় অয় শহরকে জ্বালিয়ে দিলেন। শহরটা কতকগুলি পাথরের স্তূপে পরিণত হল। আর কিছুই সেখানে ছিল না। আজও শহরটা সেই রকমই পড়ে আছে। 29 যিহোশূয় অয়ের রাজাকে একটা গাছে ফাঁসি দিলেন। সন্ধ্যে পর্যন্ত তাকে ঝুলিয়ে রাখলেন। সূর্য অস্ত গেলে যিহোশূয় তাদের গাছ থেকে দেহটাকে নামাতে বললেন। শহরের ফটকের কাছে তারা দেহটাকে ছুঁড়ে দিল। তারপর প্রচুর পাথর দিয়ে তারা দেহটাকে চাপা দিল। সেই পাথরের স্তূপ আজও দেখা যাবে।
আশীর্বাদ আর অভিশাপ পঠন
30 তারপর যিহোশূয় ইস্রায়েলের প্রভু, ঈশ্বরের স্মরণে একটি বেদী নির্মাণ করলেন। এবল পর্বতের চূড়ায় তিনি এই বেদী তৈরী করেছিলেন। 31 প্রভুর দাস মোশি ইস্রায়েলের লোকদের জানিয়েছিলেন কিভাবে বেদী তৈরী করতে হবে। মোশির বিধিপুস্তকে পরিষ্কার করে লেখা ছিল বেদীর প্রস্তুত প্রণালী। সেই ভাবেই যিহোশূয় বেদী তৈরী করলেন। কাটা হয়নি এমন পাথর দিয়েই বেদী তৈরী হয়েছিল। ঐ পাথরগুলির ওপর কোন লৌহস্তম্ভ কখনও ব্যবহার করা হয় নি। সেই বেদীতে তারা প্রভুর উদ্দেশ্যে হোমবলি উৎসর্গ করল। তারা মঙ্গল নৈবেদ্য উৎসর্গ করল।
32 ঐখানে যিহোশূয় পাথরগুলোর ওপরে মোশির বিধিগুলো লিখে দিলেন। ইস্রায়েলের সমস্ত লোক যাতে সেগুলো পড়ে সেই জন্যই তিনি লিখে দিয়েছিলেন। 33 প্রবীণরা, উচ্চপদস্থ কর্মীরা, বিচারকরা এবং সমস্ত মানুষ পবিত্র সিন্দুকটিকে ঘিরে দাঁড়াল। প্রভুর পবিত্র সাক্ষ্যসিন্দুক বহনকারী লেবীয় যাজকদের সামনে তারা দাঁড়িয়েছিল। অর্ধেক লোক দাঁড়িয়েছিল এবল পর্বতের চূড়ার সামনে আর বাকী অর্ধেক দাঁড়িয়েছিল গরিষীম পর্বতের চূড়ার সামনে। প্রভুর দাস মোশি তাদের এভাবেই দাঁড়াতে বলেছিলেন। তারা যাতে প্রভুর আশীর্বাদ পায় সেই জন্য তিনি তাদের এই নির্দেশ দিয়েছিলেন।
34 তারপর যিহোশূয় বিধির প্রতিটি কথা পড়ে শোনালেন। তিনি সমস্ত আশীর্বাদ আর সমস্ত অভিশাপ বিধিপুস্তকে যে ভাবে লেখা আছে সেই ভাবেই পড়ে শোনালেন। 35 ইস্রায়েলের সমস্ত লোক সেখানে জড়ো হয়েছিল। সমস্ত স্ত্রীলোক, শিশু আর তাদের সঙ্গে বাস করত যেসব বিদেশী মানুষ তারাও সেখানে ছিল। মোশির প্রতিটি নির্দেশ যিহোশূয় পড়ে শোনালেন।
সঙ্গীত পরিচালকের প্রতি। দায়ূদের একটি প্রশংসা গীত।
139 প্রভু আপনি আমায় পরীক্ষা করেছেন।
আমার সম্পর্কে আপনি সবই জানেন।
2 আমি কখন বসি এবং উঠি আপনি তাও জানেন।
বহু দূর থেকেই আপনি আমার চিন্তা-ভাবনা জানতে পারেন।
3 প্রভু, আমি কোথায় যাই এবং আমি কোথায় শুই তাও আপনি জানেন।
আমি যা করি তার সবই আপনি জানেন।
4 প্রভু, আমি কিছু বলার আগেই
আপনি বুঝে যান আমি কি বলতে চাই।
5 প্রভু, আপনি আমার সামনে পিছনে আমার চারদিকে রয়েছেন।
নম্রভাবে আমার ওপর আপনার হাত রাখুন।
6 আপনি যা জানেন তাতে আমি বিস্ময়াভিভূত।
এটা আমার বোধের অতীত।
7 যেখানে যেখানে আমি যাই সর্বত্রই আপনার আত্মা বিরাজ করে।
হে প্রভু, আমি আপনার কাছ থেকে পালাতে পারি না।
8 হে প্রভু, যদি আমি স্বর্গলোকে যাই, আপনি সেখানে রয়েছেন।
যদি আমি পাতালে যাই, আপনি সেখানেও রয়েছেন।
9 প্রভু, যেখানে সূর্যের উদয় হয় সেই পূর্বদিকে যদি আমি যাই আপনি সেখানে রয়েছেন।
যদি আমি পশ্চিমের সমুদ্রে যাই সেখানেও আপনি রয়েছেন।
10 সেখানেও আপনার ডান হাত আমায় ধরে থাকে
এবং আমায় পরিচালিত করে।
11 প্রভু, আমি আপনার কাছ থেকে লুকিয়ে থাকতে চাইতে পারি এবং বলতে পারি,
“দিনের আলো এখন রাত্রিতে বদলে গেছে।
নিশ্চয়ই অন্ধকার আমাকে লুকিয়ে দেবে।”
12 কিন্তু অন্ধকার আপনার কাছে অন্ধকার নয়।
প্রভু, রাত আপনার কাছে দিনের মতই উজ্জ্বল।
13 প্রভু আপনি আমার সারা দেহ সৃষ্টি করেছেন।
যখন আমি মাতৃদেহে ছিলাম তখনও আপনি আমার সম্পর্কে সব জানতেন।
14 প্রভু, আমি আপনার প্রশংসা করি! আপনি অত্যন্ত বিস্ময়-বিহ্বলভাবে ও চমৎকার ভাবে আমাকে সৃষ্টি করেছেন।
আমি খুব ভালোভাবে জানি যে আপনি যা কিছু করেছেন সবই চমৎকার।
15 আপনি আমার সম্পর্কে সব কিছু জানেন।
মায়ের দেহে লুকিয়ে যখন আমার শরীর বড় হচ্ছিলো তখন আপনি আমার অস্থি মজ্জাকে পর্যন্ত লক্ষ্য করেছিলেন।
16 আমার প্রত্যেকটি অঙ্গ প্রত্যঙ্গকে আপনি বাড়তে দেখেছিলেন।
আপনার গ্রন্থে আপনি সে সম্বন্ধে লিখে রেখেছেন।
প্রত্যেকদিন আপনি আমার ওপর লক্ষ্য রেখেছেন।
তার মধ্যে একটাও হারিয়ে যায় নি।
17 আপনার চিন্তাগুলো আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ।
ঈশ্বর আপনি কত জানেন!
18 যদি আমি আপনার চিন্তাগুলোকে গুনতে পারতাম, তারা সংখ্যায় সমস্ত বালুকণার চেয়ে বেশী হতো
এবং যখন আমি শেষ করতাম, তখনও আমি আপনার সঙ্গে থাকতাম।
19 ঈশ্বর, দুষ্ট লোকদের শেষ করে দিন।
ওই ঘাতকদের আমার থেকে দূরে সরিয়ে নিন।
20 ওই মন্দ লোকরা আপনার সম্পর্কে মন্দ কথা বলে।
ওরা আপনার নাম সম্পর্কে বাজে কথা বলে।
21 প্রভু যারা আপনাকে ঘৃণা করে আমি তাদের ঘৃণা করি।
যারা আপনার বিরুদ্ধে যায় তাদের আমি ঘৃণা করি।
22 আমি তাদের পুরোপুরি ঘৃণা করি!
আপনার শত্রুরা আমারও শত্রু।
23 হে প্রভু, আমার দিকে দেখুন এবং আমার অন্তরকে জানুন।
আমায় পরীক্ষা করুন এবং আমার চিন্তাগুলো জানুন।
24 দেখুন কোন মন্দ চিন্তা আমার মনে আছে কিনা
এবং আমাকে সেই পথে পরিচালিত করুন যে পথ চির বিরাজমান থাকে।
যিহূদা বিশ্বস্ত ছিল না
2 প্রভুর বার্তা পৌঁছেছিল যিরমিয়র কাছে। প্রভুর বার্তা ছিল: 2 “যিরমিয় যাও এবং জেরুশালেমের লোকদের সঙ্গে কথা বল। তাদের বলো:
“‘যখন তোমরা একটি নবীন জাতি ছিলে, তখন তোমরা আমার প্রতি খুব বিশ্বস্ত ছিলে।
আমাকে অনুসরণ করতে নতুন কনের (প্রেমের) মতো।
মরুভূমির মাঝেও তোমরা আমাকে অনুসরণ করেছ।
অনুসরণ করে গিয়েছো মৃত্তিকার মধ্যে দিয়ে—অথচ যে মৃত্তিকায় কখনও চাষ করা হয়নি।
3 ইস্রায়েলের লোকরা ছিল প্রভুর পবিত্র উপহার।
তারা ছিল প্রথম ফল যেগুলি ঈশ্বরের দ্বারা ফলাবার কথা ছিল।
যারা তাদের ক্ষতি করতে চাইত, তারা দোষী সাব্যস্ত হত।
এইসব দুষ্ট লোকদের জীবনে খারাপ ঘটনাসমূহ ঘটেছিল।’”
এই ছিল প্রভুর বার্তা।
4 হে যাকোবের পরিবার, ইস্রায়েল পরিবারের সকল গোষ্ঠী
প্রভুর বার্তা শোন।
5 প্রভু যা বললেন তা হল,
“তোমরা কি মনে করো যে আমি তোমাদের পূর্বপুরুষদের প্রতি সুবিচার করি নি?
সেই জন্যই কি তারা আমার কাছ থেকে দূরে সরে গিয়েছে?
তোমাদের পূর্বপুরুষরা মূল্যহীন মূর্ত্তিসমূহের পূজা করেছিল
এবং নিজেরাই মূল্যহীন হয়ে পড়েছিল।
6 তোমাদের পূর্বপুরুষরা বলেনি যে,
‘তিনি কোথায় যিনি আমাদের
শুষ্ক পাথুরে জমির মধ্য দিয়ে, অন্ধকার বন্ধ্যা জমির মধ্য দিয়ে
এবং বিপজ্জনক রাস্তার মধ্য দিয়ে
মরুভূমি পার করে এনেছিলেন?’”
7 প্রভু বললেন, “আমিই সেই
যে তোমাদের এই ভালো উর্বর দেশে নিয়ে এসেছিলাম
যাতে তোমরা এর ফল ও শস্যসমূহ খেতে পাও এবং খাদ্য জোগাতে পারো।
তোমরা আমার মাটিকে ‘নোংরা’ করে দিলে।
আমি তোমাদের একটি ভালো জমি দিয়েছিলাম,
কিন্তু তোমরা তাকে একটি খারাপ জায়গায় পরিণত করে দিলে।
8 “যাজকরা প্রশ্ন করেনি,
‘কোথায় সেই প্রভু?’
যারা বিধিটি জানত তারা আমাকে জানতে চায়নি।
ইস্রায়েলের নেতারা আমার বিরুদ্ধাচরণ করেছিল।
ভাববাদীগণ বাল মূর্ত্তির নাম নিয়ে ভাববাণী করেছিল।
তারা মূল্যহীন মূর্ত্তিগুলোর পূজা করেছিল।
তারা মূর্ত্তির অজুহাত দেখিয়ে ইস্রায়েলের লোকদের পূজায় বসিয়েছে।
ইস্রায়েলবাসী ভেবেছিল এই মূর্ত্তিই তাদের জন্য ফলনশীল জমি তৈরী করেছে।
তারা বিশ্বাস করেছিল,
মূর্ত্তিই বুঝি ঝড়, বৃষ্টি এনে দিয়েছে।”
9 প্রভু বললেন, “তাই আমি তোমাদের আবার অভিযুক্ত করছি।
অভিযুক্ত করব তোমাদের পুত্র পৌত্রগণদেরও।
10 যাও, সমুদ্রের ওপারে কিত্তীয়দের দ্বীপে।
কোন একজনকে কেদরের দেশে পাঠাও।
দেখ আর কেউ কখনও এরকম করেছে কিনা।
সেখানে দেখো কেউ তোমাদের মতো এই কাজ করছে কিনা।
11 কোনও দেশ কি তাদের পুরানো দেবতাকে ছুঁড়ে ফেলে
নতুন দেবতার উপাসনা করেছে?
কিন্তু তাদের সেই দেবতারা সত্যিকারের দেবতা নয়।
কিন্তু আমার লোকরা তাদের মহিমাময় ঈশ্বরের পরিবর্তে
মূল্যহীন মূর্ত্তিগুলোর পূজা শুরু করেছিল।
12 “হে আকাশমণ্ডল, যা সব ঘটেছিল তাতে আশ্চর্য হও!
প্রচণ্ড ভয়ে কাঁপতে থাকো!”
এই ছিল প্রভুর বার্তা।
13 “আমার দেশের লোকরা দুটি ভুল কাজ করেছে।
প্রথমতঃ যদিও আমি একটি জীবন্ত জলের ঝর্ণা
তবু তারা আমার কাছ থেকে দূরে সরে গিয়েছে।
আমিই জলের অস্তিত্ব।
দ্বিতীয়তঃ তারা নিজেদের জন্য কূপ খনন করেছে।
তারা ভিন্ন দেবতার উপর আস্থা রেখেছে।
কিন্তু সেগুলি ভাঙা কূপ।
জলাধার হতে পারে না।
14 “ইস্রায়েলবাসীরা কি দাস হয়ে গিয়েছে?
তারা কি সেই লোকের মত হয়ে গেছে যে দাস হয়েই জন্মেছিল?
লোকরা কেন ইস্রায়েলীয়দের ধনসম্পদ নিয়ে নিয়েছিল?
15 সিংহ শাবকরা (শত্রুরা) ইস্রায়েলের প্রতি গর্জন করে উঠেছিল।
তারা তার প্রতি হুংকার করেছে।
তারা ইস্রায়েল দেশটিকে ধ্বংস করেছে।
এমনকি শহরগুলিকে পোড়ানো হয়েছিল এবং সেখানে কোন মানুষ পড়ে ছিল না।
16 মিশরের দুটি শহর নোফের এবং তফনহেষের লোকরাও
তোমাদের মাথাকে গুঁড়িয়ে দিয়েছে।
17 এই ক্ষতির কারণ তোমরা নিজেরাই।
কেননা প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর যখন তোমাদের সঠিক পথে নিয়ে যাচ্ছিলেন
তখন তোমরা নিজেরাই তাঁকে ত্যাগ করে দূরে সরে গিয়েছ।
18 যিহূদার লোকরা, এবার ভাবো:
ওটি কি তোমাদের মিশরে যেতে সাহায্য করেছিল?
ওটি কি তোমাদের সাহায্য করেছিল নীল নদের জল পান করতে?
না! সেটি কি তোমাদের অশূরে যেতে সাহায্য করেছিল?
ওটি কি তোমাদের সাহায্য করেছিল ফরাৎ নদীর জল পান করতে? না!
19 না! তোমরা খারাপ কাজ করেছিলে
এবং সেই জন্য তোমাদের শাস্তি পেতে হবে।
তোমাদের বিঘ্নসমূহ আসবে
এবং সেই সংকট তোমাদের উচিৎ শিক্ষা দেবে।
তোমরা একবার ভেবে দেখো, তাহলেই বুঝতে পারবে ঈশ্বরের কাছ থেকে দূরে সরে যাওয়ার পরিণাম কি মারাত্মক।
আমাকে ভয় না পাওয়া এবং সম্মান না করা নিতান্তই মুর্খামি।”
এই ছিল প্রভু সর্বশক্তিমানের বার্তা।
20 “যিহূদা, অনেককাল আগে তুমি তোমার জোয়াল ভেঙেছিলে।
তুমি আমাকে তোমায় নিয়ন্ত্রণ করতে অস্বীকার করেছিলে।
তুমি আমাকে বলেছিলে, ‘আমি তোমার অনুগামী নই।’
সেই সময় থেকে, প্রতিটি পর্বতের চূড়ায়
এবং প্রতিটি গাছের নীচে তুমি বেশ্যা বৃত্তিতে লিপ্ত ছিলে।
21 যিহূদা, আমি তোমাকে বিশেষ দ্রাক্ষা গাছ হিসেবে বপন করেছিলাম।
তোমার বীজে তো কোন দোষ ছিল না।
তাহলে কি করে তুমি একটি ভিন্ন জাতের দ্রাক্ষা কুঞ্জে পরিণত হলে, যেটি শুধুই বাজে দ্রাক্ষা ধারণ করে?
22 তুমি যদি বার বার সাবান দিয়ে নিজেকে ধুয়ে ফেল,
তবুও আমি তোমার দোষ দেখতে সক্ষম হবো।”
এই ছিল প্রভু ঈশ্বরের বার্তা।
23 “যিহূদা, কি করে তুমি বলতে পারলে,
‘আমি অশুচি নই, কারণ আমি বাল মূর্ত্তির পেছনে ছুটে বেড়াই নি?’
একবার ভাবো এই উপত্যকায়
তুমি আর কি কি করেছিলে।
তুমি এক জায়গা থেকে আর এক জায়গায়
দৌড়ে বেড়ানো একটি স্ত্রী-উটের মত।
24 তুমি একটি বন্য গর্দ্দভীর মতো যে মরুভূমিতে বাস করে।
কামাবেশে সে যখন বাতাসের গন্ধ শোঁকে
তখন কে তাকে থামাতে পারে?
সমস্ত পুরুষ যারা তাকে চায়, তাদের নিজেদের ক্লান্ত করবার দরকার নেই
কারণ কামক্রিয়ার সময় তারা তাকে সহজেই খুঁজে পাবে।
25 যিহূদা মূর্ত্তির পিছনে ছোটা বন্ধ করো।
ঐ দেবতাদের জন্য পিপাসিত হওয়া বন্ধ করো।
কিন্তু তুমি বললে, ‘আমি ফিরতে পারব না।
আমি ঐ দেবতাদের ভালোবাসি।
আমি ওদেরই পূজা করতে চাই।’
26 “একজন চোর চুরি করবার সময়
মানুষের হাতে ধরা পড়লে যেমন লজ্জা পায়,
তেমনি ইস্রায়েলীয়রা লজ্জিত,
ইস্রায়েলের রাজারা, যাজকরা এবং ভাববাদীরাও লজ্জিত।
27 বস্তুত, তারা একটি কাঠের টুকরোকে বলে,
‘তুমি আমার পিতা!’
তারা একটি পাথরকে বলে,
‘তুমি আমাকে জন্ম দিয়েছ।’
তারা আমার দিকে তাকায় না।
তারা আমার দিকে তাদের পেছন ফিরিয়েছে।
কিন্তু বিপদে পড়লে
এই যিহূদার লোকরাই লজ্জিত হয়ে আমাকে বলবে,
‘এসো, আমাদের উদ্ধার করো।’
28 দেখা যাক, তোমাদের তৈরী করা মূর্ত্তিরা এসে বিপদ থেকে তোমাদের উদ্ধার করতে পারে কি না?
যিহূদা তোমাদের যত শহর, তত দেবতা।
দেখি তারা কিভাবে তোমাদের বিপদ থেকে উদ্ধার করে।
29 “কেন আমার সঙ্গে তর্ক করছো?
তোমরা সবাই আমার বিরুদ্ধে চলে গিয়েছো।”
এই ছিল প্রভুর বার্তা।
30 “আমি তোমাদের, যিহূদার লোকদের শাস্তি দিয়েছিলাম,
কিন্তু সেটা সাহায্য করেনি।
তোমরা কোন শিক্ষা পাও নি।
যে সব ভাববাদীরা তোমাদের কাছে এসেছিল তাদেরও তরবারি দিয়ে হত্যা করেছো।
তোমরা হিংস্র সিংহের মতো ভাববাদীদের হত্যা করেছো।”
31 ওহে, এই প্রজন্মের লোকরা, প্রভুর বার্তা মন দিয়ে শোন!
“আমি কি ইস্রায়েলীয়দের কাছে মরুভূমির মতো শুষ্ক ছিলাম?
আমি কি তাদের কাছে শুধুই অন্ধকার এবং বিপদের পূর্বাভাস ছিলাম?
আমার লোকরা বলেছে, ‘আমরা স্বাধীনভাবে নিজেদের মতো চলতে পারি।
আমরা আর তোমার কাছে ফিরে আসব না প্রভু!’
তারা একথাগুলো কি করে বলতে পারল?
32 কোন যুবতী তার গহনাকে ভুলতে পারে না।
কোন কনে তার বিয়ের পোশাকের কথা ভুলে যায় না।
কিন্তু আমার লোকরা আমাকে বহুবার ভুলে গিয়েছে।
33 “যিহূদা, তুমি খুব ভালো করেই জানো কিভাবে প্রেমিকদের (মূর্ত্তির) পেছনে দৌড়তে হয়।
তুমি কুকর্ম করতে শিখে গিয়েছিলে।
34 তাই তোমার হাতে নিরীহ গরীব মানুষের রক্তের দাগ।
সাধারণ মানুষের ওপর অত্যাচার করেও তোমার শান্তি হয় নি।
তুমি তাদের তোমার বাড়ীতে চুরি করতে দেখনি।
তুমি তাদের বিনা কারণে মেরে ফেলেছিলে।
35 (এত কিছুর পরও) তুমি কিন্তু বলছো, ‘আমি নির্দোষ।
ঈশ্বর আমার প্রতি ক্রুদ্ধ নন।’
তাই আমিও তোমাকে মিথ্যে বলার জন্য দোষী সাব্যস্ত করলাম।
কেননা তুমি বলছো, ‘আমি কোন অন্যায় করি নি।’
36 তুমি সহজেই নিজের মন বদলাও।
অশূর তোমায় হতাশ করেছিল বলে তুমি অশূরকে ত্যাগ করেছিলে।
এবং তুমি সাহায্যের জন্য মিশরের দিকে ঘুরেছিলে।
মিশরও তোমাকে নিরাশ করবে।
37 তাই তুমি মিশরও ত্যাগ করবে।
এবার তুমি লজ্জায় মুখ লুকোলে।
তুমি যে সমস্ত দেশগুলিকে বিশ্বাস করেছিলে তারা কেউই তোমাকে জেতার জন্য সাহায্য করতে পারেনি।
কারণ প্রভু সেই দেশগুলিকে বাতিল করেছিলেন।
ইহুদী নেতারা যীশুকে পরীক্ষা করলেন
(মার্ক 8:11-13; লূক 12:54-56)
16 ফরীশী ও সদ্দূকীরা যীশুর কাছে এসে তাঁকে পরীক্ষা করতে চাইলেন। তাই তারা ঐশ্বরিক শক্তির চিহ্নস্বরূপ কোন অলৌকিক কাজ করে দেখাতে বললেন।
2 এর উত্তরে যীশু তাদের বললেন, “সন্ধ্যা হলে তোমরা বলে থাকো দিনে আবহাওয়া ভাল থাকবে, কারণ আকাশের রঙ লাল হয়েছে। 3 আবার সকাল বেলা বলে থাকো, আজকে ঝোড়ো আবহাওয়া চলবে কারণ আজ আকাশ লাল ও অন্ধকার হয়েছে। তোমরা আকাশের অবস্থা ভালই বিচার করে বোঝ, অথচ কালের চিহ্ন বুঝতে পারো না। 4 এ যুগের দুষ্ট ও ভ্রষ্টাচারী লোকেরা চিহ্নের খোঁজ করে, কিন্তু যোনার চিহ্ন ছাড়া আর কোন চিহ্নই তাদের দেখানো হবে না।” এরপর যীশু তাদের ছেড়ে সেখান থেকে চলে গেলেন।
ইহুদী নেতাদের বিরুদ্ধে যীশুর সতর্কবাণী
(মার্ক 8:14-21)
5 যীশু ও তাঁর শিষ্যরা হ্রদের ওপারে যাবার সময় সঙ্গে রুটি নিয়ে যেতে ভুলে গিয়েছিলেন। 6 তখন যীশু তাদের বললেন, “তোমরা সাবধান! ফরীশী ও সদ্দূকীদের খামির থেকে সতর্ক থেকো।”
7 শিষ্যরা নিজেদের মধ্যে বলাবলি করতে লাগলেন, “আমরা রুটি আনিনি বলে সম্ভবতঃ উনি এই কথা বলছেন?”
8 তাঁরা কি বলাবলি করছেন, তা জানতে পেরে যীশু বললেন, “হে অল্প-বিশ্বাসী মানুষ, তোমরা নিজেদের মধ্যে কেন বলাবলি করছ যে তোমাদের রুটি নেই? 9 তোমরা কি বোঝ না অথবা তোমাদের কি মনে নেই সেই পাঁচ হাজার লোকের জন্য পাঁচ খানা রুটির কথা আর তারপরে কত টুকরি তোমরা ভর্ত্তি করেছিলে? 10 আবার সেই চার হাজার লোকের জন্য সাতখানা রুটির কথা, আর কত টুকরি তোমরা তুলে নিয়েছিলে? 11 তোমরা কেন বুঝতে পার না যে আমি তোমাদের রুটির বিষয় বলিনি? আমি তোমাদের ফরীশী ও সদ্দূকীদের খামির থেকে সতর্ক থাকতে বলেছি।”
12 তখন তাঁরা বুঝতে পারলেন যে রুটির খামির থেকে তিনি তাঁদের সতর্ক হতে বলেন নি, কিন্তু বলেছিলেন তাঁরা যেন ফরীশী ও সদ্দূকীদের শিক্ষা থেকে সাবধান হন।
পিতর বললেন যীশুই খ্রীষ্ট
(মার্ক 8:27-30; লূক 9:18-21)
13 এরপর যীশু কৈসরিয়া, ফিলিপী অঞ্চলে এলেন। তিনি তাঁর শিষ্যদের জিজ্ঞেস করলেন, “মানবপুত্র[a] কে? এ বিষয়ে লোকে কি বলে?”
14 তাঁরা বললেন, “কেউ কেউ বলে আপনি বাপ্তিস্মদাতা যোহন, কেউ বলে এলিয়,[b] আবার কেউ বলে আপনি যিরমিয়[c] বা ভাববাদীদের মধ্যে কেউ একজন হবেন।”
15 তিনি তাঁদের বললেন, “কিন্তু তোমরা কি বল, আমি কে?”
16 এর উত্তরে শিমোন পিতর বললেন, “আপনি সেই মশীহ (খ্রীষ্ট), জীবন্ত ঈশ্বরের পুত্র।”
17 এর উত্তরে যীশু তাঁকে বললেন, “যোনার ছেলে শিমোন, তুমি ধন্য, কোনো মানুষের কাছ থেকে একথা তুমি জাননি, কিন্তু আমার স্বর্গের পিতা একথা তোমায় জানিয়েছেন। 18 আর আমিও তোমাকে বলছি, তুমি পিতর[d] আর এই পাথরের ওপরেই আমি আমার মণ্ডলী গেঁথে তুলব। মৃত্যুর কোন শক্তি[e] তার ওপর জয়লাভ করতে পারবে না। 19 আমি তোমাকে স্বর্গরাজ্যের চাবিগুলি দেব, তাতে তুমি এই পৃথিবীতে যা বাঁধবে তা স্বর্গেও বেঁধে রাখা হবে। আর পৃথিবীতে যা হতে দেবে তা স্বর্গেও হতে দেওয়া হবে।”
20 এরপর যীশু তাঁর শিষ্যদের দৃঢ়ভাবে নিষেধ করে দিলেন, যেন তারা কাউকে না বলে তিনিই খ্রীষ্ট।
যীশুর নিজের মৃত্যুর বিষয়ে ভবিষ্যদ্বানী
(মার্ক 8:31–9:1; লূক 9:22-27)
21 সেই সময় থেকে যীশু তাঁর শিষ্যদের জানাতে লাগলেন যে তাঁকে অবশ্যই জেরুশালেমে যেতে হবে। আর সেখানে কিভাবে তাঁকে ইহুদী নেতা, প্রধান যাজক ও ব্যবস্থার শিক্ষকদের কাছ থেকে অনেক কষ্ট ভোগ করতে হবে। তাঁকে মেরে ফেলা হবে ও তিন দিনের মাথায় তিনি মৃত্যুলোক থেকে বেঁচে উঠবেন।
22 তখন পিতর তাঁকে একপাশে ডেকে নিয়ে ভর্ৎসনার সুরে বললেন, “প্রভু, এসবের হাত থেকে ঈশ্বর আপনাকে রক্ষা করুন। এর কোন কিছুই আপনার প্রতি ঘটবে না।”
23 যীশু পিতরের দিকে ফিরে বললেন, “আমার কাছ থেকে দূর হও শয়তান! তুমি আমার বাধা স্বরূপ! তুমি মানুষের দৃষ্টিভঙ্গী দিয়ে এ বিষয় চিন্তা করছ, ঈশ্বরের যা তা তুমি ভাবছ না।”
24 এরপর যীশু তাঁর শিষ্যদের বললেন, “কেউ যদি আমায় অনুসরণ করতে চায় তবে সে নিজেকে অস্বীকার করুক আর নিজের ক্রুশ তুলে নিয়ে আমার অনুসারী হোক্। 25 যে কেউ নিজের জীবন রক্ষা করতে চায়, সে তা হারাবে। কিন্তু যে আমার জন্য তার নিজের প্রাণ হারাতে চাইবে সে তা রক্ষা করবে। 26 কেউ যদি সমস্ত জগত লাভ করে তার প্রাণ হারায় তবে তার কি লাভ? প্রাণ ফিরে পাবার জন্য তার দেবার মতো কি-ই বা থাকতে পারে? 27 মানবপুত্র যখন তাঁর স্বর্গদূতদের সঙ্গে নিয়ে তাঁর পিতার মহিমায় আসবেন, তখন তিনি প্রত্যেক লোককে তার কাজ অনুসারে প্রতিদান দেবেন। 28 আমি তোমাদের সত্যি বলছি, যারা এখানে দাঁড়িয়ে আছে তাদের মধ্যে এমন কেউ কেউ আছে যারা কোনও মতে মৃত্যু দেখবে না, যে পর্যন্ত মানবপুত্রকে তাঁর রাজ্যে আসতে না দেখে।”
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International