M’Cheyne Bible Reading Plan
যিরীহো অধিকৃত
6 নূনের পুত্র যিহোশূয় সেই মত যাজকদের সকলকে একত্র ডেকে বললেন, “প্রভুর পবিত্র সিন্দুক আপনারা বহন করুন। আপনাদের মধ্যে সাত জনকে শিঙা নিয়ে সিন্দুকের সামনে দিয়ে এগিয়ে যেতে বলুন।”
7 তারপর যিহোশূয় লোকদের আদেশ দিলেন, “এবার যাও। শহরকে প্রদক্ষিণ করো। সশস্ত্র সৈন্যরা প্রভুর পবিত্র সিন্দুকের সামনে থেকে অভিযান করবে।”
8 যিহোশূয়র কথা শেষ হলে সাত জন যাজক প্রভুর সমক্ষে যাত্রা শুরু করলেন। তাঁরা সাতটি শিঙা বহন করলেন এবং চলতে চলতে বাজাতে লাগলেন। যাজকরা তাঁদের পিছনে পিছনে প্রভুর পবিত্র সিন্দুক বয়ে নিয়ে চললেন। 9 যে সমস্ত যাজকরা শিঙা বাজাচ্ছিলেন সশস্ত্র সৈন্যরা তাঁদের সামনে চলে গেল। বাকী লোকরা পবিত্র সিন্দুকের পিছনে হাঁটছিল। তারা শিঙা বাজাতে বাজাতে শহর পরিক্রমা করল। 10 যিহোশূয় তাদের যুদ্ধধ্বনি দিতে বারণ করলেন। তিনি বললেন, “এখন চিৎকার কোরো না। আমি তোমাদের না বলা পর্যন্ত একটা কথাও বলবে না। যেদিন বলব সেদিন চেঁচিয়ো।”
11 যিহোশূয়র কথা মত যাজকরা প্রভুর পবিত্র সিন্দুক নিয়ে একবার শহর প্রদক্ষিণ করলেন। তারপর তাঁরা তাঁবুতে ফিরে গিয়ে রাত্রি কাটালেন।
12 পরদিন খুব ভোরে যিহোশূয় ঘুম থেকে উঠলেন। যাজকরা আবার প্রভুর সিন্দুক কাঁধে তুলে নিলেন। 13 সাত জন যাজক সাতটি শিঙা নিয়ে বেরিয়ে পড়লেন। তাঁরা প্রভুর পবিত্র সিন্দুকের সামনে শিঙা বাজাতে বাজাতে এগিয়ে চললেন। তাঁদের আগে আগে চলেছে সশস্ত্র সৈন্যরা। বাকী লোকরা প্রভুর পবিত্র সিন্দুকের পেছনে পেছনে চলছিল এবং প্রতিবার প্রদক্ষিণের পর তাদের শিঙা বাজাচ্ছিল। 14 দ্বিতীয় দিন তারা সকলে একবার শহর পরিক্রমা করল। তারপর শিবিরে ফিরে এলো। দুদিন ধরে তারা প্রতিদিন এইভাবেই কাটাল।
15 সপ্তম দিনে উষাকালে তারা উঠে পড়ল। তারা সাতবার শহর প্রদক্ষিণ করল। এর আগে এভাবেই তারা শহর প্রদক্ষিণ করেছিল, কিন্তু সেদিন তারা সাতবার শহর প্রদক্ষিণ করল। 16 সপ্তম বার তারা শহর পরিক্রমা করলে যাজক শিঙা বাজালেন। তখন যিহোশূয় আদেশ দিলেন, “এবার চিৎকার করো। প্রভু তোমাদের এই শহর দান করেছেন। 17 এই শহর এবং শহরের সবকিছু প্রভুর। শুধু গণিকা রাহব এবং তার বাড়ীর লোকরা বেঁচে থাকবে। এদের তোমরা হত্যা কোরো না, কারণ সে আমাদের দুজন গুপ্তচরকে সাহায্য করেছিল। 18 আর একথাও মনে রেখো, আর যা সব আছে আমরা ধ্বংস তো করবই, কিন্তু তোমরা কোন কিছুই নিয়ে যেতে পারবে না। যদি তোমরা ঐসব জিনিস সঙ্গে নিয়ে আমাদের শিবিরে আসো, তবে তোমরাও ধ্বংস হয়ে যাবে। সেই সঙ্গে তোমরা ইস্রায়েলের লোকদেরও বিপদ ডেকে আনবে। 19 যত সোনা, রূপা, আর পিতল ও লোহার তৈরী জিনিসপত্র আছে সবই প্রভুর সম্পদ। সেই সব সম্পদ প্রভুর কোষাগারেই থাকবে।”
20 যাজকরা শিঙা বাজালেন। লোকরা শিঙার শব্দ শুনে চিৎকার করে উঠল। প্রাচীরগুলো ভেঙ্গে পড়ল। তারা সকলে দৌড়ে শহরের মধ্যে ঢুকে পড়ল। এইভাবে ইস্রায়েলের লোকরা শহর দখল করে নিল। 21 শহরে যা কিছু ছিল সব তারা ধ্বংস করে ফেলল। জীবিত সব কিছুকেই তারা মেরে ফেলল। যুবক যুবতী, বৃদ্ধ-বৃদ্ধা কাউকেই বাদ দিল না। গরু, মেষ, গাধা সকলকে তারা মেরে ফেলল।
22 যিহোশূয় গুপ্তচর দুজনের সঙ্গে কথা বললেন। তিনি বললেন, “সেই গণিকার গৃহে তোমরা যাও। তাকে এবং তার সঙ্গে যারা আছে তাদের বার করে নিয়ে এসো। তোমরা তাকে যেমন প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলে, সেই প্রতিশ্রুত কথা অনুসারে কাজ করো।”
23 সেই মত দুজন বাড়ীতে ঢুকে রাহবকে বার করে আনল। তারা তার মাতা, পিতা, ভাই পরিবারের সকলকেই বার করে আনল। তাছাড়া আর যারা রাহবের সঙ্গে ছিল তাদেরও উদ্ধার করল। এদের সবাইকে তারা ইস্রায়েলের শিবিরের বাইরে একটা নিরাপদ জায়গায় রেখে দিল।
24 তারপর ইস্রায়েলবাসীরা সমস্ত শহর জ্বালিয়ে দিল। সোনা, রূপো, পিতল আর লোহার তৈরী জিনিস ছাড়া আর সব কিছুই তারা জ্বালিয়ে দিল। তারা ঐ জিনিসগুলি প্রভুর কোষাগারে রাখল। 25 গণিকা রাহব, তার পরিবারের সকলকে এবং তার সঙ্গে আর যারা ছিল যিহোশূয় তাদের সবাইকে রক্ষা করেছিলেন। তিনি তাদের বাঁচিয়েছিলেন, কারণ রাহব যিহোশূয়র পাঠানো গুপ্তচরদের, যারা যিরীহোতে এসেছিল তাদের সাহায্য করেছিল। আজও ইস্রায়েলবাসীদের মধ্যে রাহব বাস করছে।
26 সেই সময় যিহোশূয় একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন:
“যে গড়িবে পুনরায় যিরীহো নগর,
প্রভুর রোষানল পড়িবে তাহার উপর।
নগরের ভিত্তি যে করিবে স্থাপন,
জ্যেষ্ঠতম সন্তান সে খোয়াবে আপন;
যে জন নির্মাণ করে নগরের দ্বার,
কনিষ্ঠ সন্তান তার হইবে সংহার।”[a]
27 প্রভু যিহোশূয়র সঙ্গে রইলেন। আর যিহোশূয় সারা দেশে বিখ্যাত হয়ে গেলেন।
135 প্রভুর প্রশংসা কর!
প্রভু নামের প্রশংসা কর!
হে প্রভুর দাসগণ, তাঁর প্রশংসা কর!
2 তোমরা যারা প্রভুর মন্দিরে দাঁড়িয়ে আছো,
আমাদের ঈশ্বরের মন্দিরের আঙিনায়, তারা তাঁর প্রশংসা কর।
3 প্রভুর প্রশংসা কর, কারণ তিনি ভালো।
তাঁর নামের প্রশংসা কর, কারণ তা অত্যন্ত মনোরম।
4 প্রভু যাকোবকে মনোনীত করেছেন।
ইস্রায়েল ঈশ্বরের অধিকারভুক্ত।
5 আমি জানি প্রভু মহান!
আমাদের প্রভু সব দেবতাদের চেয়ে মহান!
6 স্বর্গে এবং পৃথিবীতে, সমুদ্র বা গভীর মহাসাগরে
ঈশ্বর যা চান তাই করতে পারেন।
7 ঈশ্বরই, সারা পৃথিবীতে মেঘ সৃষ্টি করেন।
ঈশ্বরই বৃষ্টি এবং বিদ্যুৎ সৃষ্টি করেন
এবং ঈশ্বরই বাতাস সৃষ্টি করেন।
8 ঈশ্বর, মিশরবাসীদের প্রথম সন্তান এবং সেখানকার পশুদের প্রথম শাবককে ধ্বংস করেছিলেন।
9 ঈশ্বর, মিশরে অনেক চমৎকার ও অলৌকিক কাজ করেছিলেন।
এমনকি ফরৌণ এবং তার আধিকারিকদের জন্যও ঈশ্বর এইসব ঘটনা ঘটিয়েছিলেন।
10 ঈশ্বর অনেক জাতিকে পরাজিত করেছিলেন।
অনেক শক্তিশালী রাজাকে ঈশ্বর হত্যা করেছিলেন।
11 ইমোরীয়দের রাজা সীহোনকে ঈশ্বর পরাজিত করেছিলেন।
বাশনের রাজা ওগকে ঈশ্বর পরাজিত করেছিলেন।
কনানের সব রাজ্যগুলিকে ঈশ্বর পরাস্ত করেছিলেন।
12 এবং তাদের ভূখণ্ডগুলি প্রভু ইস্রায়েলকে দিয়েছেন।
তাদের ভূখণ্ড প্রভু তাঁর লোকদের দিয়েছেন।
13 প্রভু আপনার নাম চিরদিন ধরে বিখ্যাত থাকবে!
প্রভু মানুষ আপনাকে চিরকাল মনে রাখবে।
14 প্রভু জাতিগুলিকে শাস্তি দিয়েছিলেন।
কিন্তু প্রভু তাঁর সেবকদের প্রতি সদয় ছিলেন।
15 অন্যান্য লোকদের দেবতারা শুধুই সোনা ও রূপোর মূর্ত্তি।
ওদের দেবতারা নিছকই মানুষের হাতের তৈরী মূর্ত্তি মাত্র।
16 ওই মূর্ত্তিগুলোর মুখ ছিলো কিন্তু কথা বলতে পেতো না।
ওই মূর্ত্তিগুলোর চোখ ছিলো কিন্তু দেখতে পেতো না।
17 ওই মূর্ত্তিগুলোর কান ছিলো কিন্তু শুনতে পেতো না।
ওই মূর্ত্তিগূলোর নাক ছিলো কিন্তু ঘ্রাণ নিতে পারতো না।
18 যে লোকগুলো ওই মূর্ত্তিগুলো তৈরী করেছে তারাও ওই রকম হয়ে যাবে!
কেন? কারণ ওরা বিশ্বাস করে যে মূর্ত্তিগুলোই ওদের সাহায্য করবে।
19 হে ইস্রায়েলের পরিবারবর্গ, প্রভুর প্রশংসা কর!
হে হারোণের পরিবার, প্রভুর প্রশংসা কর!
20 হে লেবীয় পরিবার প্রভুর প্রশংসা কর!
হে প্রভুর অনুগামীরা, প্রভুর প্রশংসা কর!
21 সিয়োন থেকে, তাঁর গৃহ জেরুশালেম থেকে,
প্রভু প্রশংসা প্রাপ্ত হন।
প্রভুর প্রশংসা কর!
136 প্রভুর প্রশংসা কর কারণ তিনিই মঙ্গলকর।
তাঁর প্রকৃত প্রেম বিরাজমান থাকে।
2 যিনি সব দেবতাদের দেবতা, সেই ঈশ্বরের প্রশংসা কর!
তাঁর প্রকৃত প্রেম চির বিরাজমান থাকে।
3 সব প্রভুদের প্রভুকে প্রশংসা কর!
তাঁর প্রকৃত প্রেম চির বিরাজমান থাকে।
4 ঈশ্বরের প্রশংসা কর যিনি একাই বিস্ময়কর সব কাজ করেন!
তাঁর প্রকৃত প্রেম চির বিরাজমান থাকে।
5 ঈশ্বরের প্রশংসা কর যিনি প্রজ্ঞা দিয়ে আকাশ সৃষ্টি করেছেন!
তাঁর প্রকৃত প্রেম চির বিরাজমান থাকে।
6 শুষ্ক ভূখণ্ডকে তিনি সাগরে স্থাপন করেন।
তাঁর প্রকৃত প্রেম চির বিরাজমান থাকে।
7 ঈশ্বর মহান আলোগুলো সৃষ্টি করেছেন।
তাঁর প্রকৃত প্রেম চির বিরাজমান থাকে।
8 দিনকে শাসন করার জন্য ঈশ্বর সূর্য সৃষ্টি করেছেন।
তাঁর প্রকৃত প্রেম চির বিরাজমান থাকে।
9 রাত্রিকে শাসন করার জন্য ঈশ্বর চাঁদ এবং তারা সৃষ্টি করেছেন।
তাঁর প্রকৃত প্রেম চির বিরাজমান থাকে।
10 মিশরের প্রথম জাত মানুষ এবং প্রাণীকে ঈশ্বর হত্যা করেছিলেন।
তাঁর প্রকৃত প্রেম চির বিরাজমান থাকে।
11 ঈশ্বর ইস্রায়েলকে মিশর থেকে বার করে এনেছিলেন।
তাঁর প্রকৃত প্রেম চির বিরাজমান থাকে।
12 ঈশ্বর তাঁর বিপুল শক্তি ও ক্ষমতা প্রদর্শন করে ছিলেন।
তাঁর প্রকৃত প্রেম চির বিরাজমান থাকে।
13 ঈশ্বর লোহিত সাগরকে দুভাগে ভাগ করেছিলেন।
তাঁর প্রকৃত প্রেম চির বিরাজমান থাকে।
14 ঈশ্বর লোহিত সাগরের মধ্যে দিয়ে ইস্রায়েলকে পরিচালিত করেছিলেন।
তাঁর প্রকৃত প্রেম অনন্তকাল অব্যাহত থাকে।
15 ফরৌণ এবং সৈন্যবাহিনীকে ঈশ্বর লোহিত সাগরে ডুবিয়ে দিয়েছিলেন।
তাঁর প্রকৃত প্রেম চির বিরাজমান থাকে।
16 ঈশ্বর তাঁর লোকদের মরুভূমির মধ্যে দিয়ে পথ দেখিয়েছিলেন।
তাঁর প্রকৃত প্রেম চির বিরাজমান থাকে।
17 ঈশ্বর শক্তিশালী রাজাদের পরাজিত করেছিলেন।
তাঁর প্রকৃত প্রেম চির বিরাজমান থাকে।
18 ঈশ্বর বলবান রাজাদের পরাজিত করেছিলেন।
তাঁর প্রকৃত প্রেম চির বিরাজমান থাকে।
19 ঈশ্বর ইমোরীয়দের রাজা সীহোনকে পরাজিত করেছিলেন।
তাঁর প্রকৃত প্রেম চির বিরাজমান থাকে।
20 ঈশ্বর বাশনের রাজা ওগকে পরাজিত করেছিলেন।
তাঁর প্রকৃত প্রেম চির বিরাজমান থাকে।
21 ঈশ্বর তাদের ভূখণ্ড ইস্রায়েলকে দিয়েছিলেন।
তাঁর প্রকৃত প্রেম চির বিরাজমান থাকে।
22 ঈশ্বর সেই ভূখণ্ড ইস্রায়েলকে উপহারস্বরূপ দিয়েছেন।
তাঁর প্রকৃত প্রেম চির বিরাজমান থাকে।
23 যখন আমরা পরাজিত হয়েছিলাম, তখন ঈশ্বর আমাদের স্মরণে রেখেছিলেন।
তাঁর প্রকৃত প্রেম চির বিরাজমান থাকে।
24 ঈশ্বর আমাদের শত্রুর হাত থেকে বাঁচিয়েছিলেন।
তাঁর প্রকৃত প্রেম চির বিরাজমান থাকে।
25 ঈশ্বর প্রত্যেকটি লোককে আহার দেন।
তাঁর প্রকৃত প্রেম চির বিরাজমান থাকে।
26 স্বর্গের ঈশ্বরের প্রশংসা কর।
তাঁর প্রকৃত প্রেম চির বিরাজমান থাকে।
ঈশ্বর সব জাতির বিচার করবেন
66 প্রভু যা বলেছেন তা হল,
“আকাশ আমার সিংহাসন।
আর পৃথিবী হল আমার পাদানি।
তাই তোমরা কি মনে কর আমার জন্য একটা বাড়ি বানাতে পারবে?
না, পারবে না।
তোমরা কি আমার জন্য একটি বিশ্রামস্থল বানাতে পারবে?
না! পারবে না!
2 আমি নিজেই এইসব সৃষ্টি করেছি।
যা কিছু এখানে রয়েছে তা সবই আমার সৃষ্টি,” প্রভু নিজে থেকে বলেছেন এইসব কথা।
“আমাকে বল, আমি কোন ধরণের লোকদের জন্য চিন্তা করি?
আমি গরীবদের প্রতি যত্নবান।
যারা খুব দুঃখী আমি যত্ন নিই তাদের।
আর যারা আমার কথা মান্য করে আমি তাদেরও যত্ন করি।
3 কোন কোন লোক বলির জন্য ষাঁড় হত্যা করে
কিন্তু তারা মানুষকেও নির্যাতন করে।
তারা মেষবলি দিলেও
কুকুরের ঘাড় মটকে দেয়!
তারা শস্য নৈবেদ্য দিলেও
শুয়োরের রক্তও নৈবেদ্য দেয়।
সেই মানুষগুলি ধূপ জ্বালালেও
ভালবাসে মূল্যহীন মূর্ত্তিগুলোকে।
তারা নিজেদের পথে চলতে ভালবাসে
এবং ভালবাসে তাদের ভয়ঙ্কর মূর্ত্তিগুলিকে।
4 তাই আমি ঠিক করেছি ওদের নিজেদের কৌশলই ব্যবহার করব।
মানে আমি বলতে চাইছি ওরা যে সব জিনিসকে ভয় পায় সেই সব জিনিস ব্যবহার করেই ওদের শাস্তি দেব।
আমি ওদের ডেকেছিলাম।
কিন্তু ওরা শোনে নি।
আমি কথা বলেছিলাম।
ওরা শোনে নি।
তাই আমি তাদের প্রতি একই জিনিস করব।
আমি যাকে খারাপ বলি তারা সেই সব জিনিসই করেছিল।
আমার যা অপছন্দ ওরা সেই কাজই করতে মনস্থ করেছিল।”
5 তোমরা যারা প্রভুর আদেশ মান্য কর
তাদের উচিৎ প্রভুর কথা শোনা।
“তোমাদের ভাইরা তোমাদের ঘৃণা করেছিল।
তোমরা যেহেতু আমাকে অনুসরণ করেছিলে সেহেতু তারা তোমাদের বিরুদ্ধাচরণ করেছিল।
তোমাদের ভাইরা বলেছিল, ‘প্রভুকে সম্মান জানাবার সময় আমরা তোমাদের কাছে আসব।
তখন তোমাদের সঙ্গে আমরাও সুখী হব।’
ঐ বাজে লোকগুলি শাস্তি পাবে।”
শাস্তি ও একটি নতুন জাতি
6 শোন! শহর ও মন্দির থেকে একটা জোরালো শব্দ আসছে। সেই শব্দ শত্রুদের প্রভুর শাস্তি প্রদানের। প্রভু নিজের শত্রুদের প্রাপ্য শাস্তি দিচ্ছেন।
7-8 “যন্ত্রণা ভোগ করার আগে একজন মহিলা শিশুর জন্ম দিতে পারে না। যাকে জন্ম দিচ্ছে তাকে দেখার আগেই একজন মহিলা অবশ্যই যন্ত্রণা ভোগ করে। একই ভাবে কোন লোক কি এক দিনে নতুন পৃথিবী সৃষ্টি হতে দেখেছে? কোন লোক কি এক দিনে একটি নতুন জাতির সৃষ্টি হতে দেখেছে? প্রসব যন্ত্রণার মত ঐ দেশটিরও প্রথম যন্ত্রণা থাকবে। জন্ম যন্ত্রণার পরই দেশটি তার ছেলেমেয়েদের অর্থাৎ একটি নতুন জাতির জন্ম দেবে। 9 একইভাবে কোন নতুন জিনিসকে জন্মগ্রহণের অনুমতি না দিয়ে আমি কাউকে যন্ত্রণা দেব না।”
প্রভু বলেন, “আমি প্রতিজ্ঞা করছি, কোন নতুন জিনিষকে জন্ম দেওয়া ব্যতিরেকে আমি তোমাদের প্রসব যন্ত্রণা দেব না।” ঈশ্বর বলেন,
10 জেরুশালেম সুখী হও।
জেরুশালেমকে যারা ভালবাসে তারা সুখী হও।
দুঃখ জনক ঘটনা জেরুশালেমে ঘটেছে।
তাই তোমাদের কেউ কেউ বিষন্ণ।
কিন্তু এখন তোমাদের খুশি হওয়া উচিৎ।
11 কেন? কারণ তার স্তন থেকে দুধ বেরিয়ে আসার মতো তোমরা করুণা পাবে।
সেই “দুধ” সত্যি তোমাদের সন্তুষ্ট করবে।
তোমরা সেই দুধ পান করে তার সমৃদ্ধিতে নিজেদের সন্তুষ্ট করবে।
12 প্রভু বলেন, “দেখো!
আমি তোমাদের শান্তি দেব, শান্তি আসবে নদীর মতো।
পৃথিবীর সব জাতির কাছ থেকে আসবে ঐশ্বর্য।
ঐশ্বর্য আসবে বন্যার জলের মতো।
তোমরা শিশুর মতো সেই ‘দুধ’ পান করবে।
আমি তোমাদের কোলে তুলে নেব, হাঁটুতে বসিয়ে দোল খাওয়াব।
13 মা যেমন তার ছেলেকে আরাম দেয়, আমি তোমাদের সেই ভাবে আরাম দেব
এবং তোমরা জেরুশালেমে আরাম পাবে।”
14 তোমরা যা দেখবে তাতেই আনন্দ পাবে।
তোমরা ঘাসের মত মুক্ত এবং বড় হবে।
প্রভুর দাসরা দেখতে পাবে তাঁর ক্ষমতা
কিন্তু শত্রুরা দেখতে পাবে প্রভুর ক্রোধ।
15 তাকাও, প্রভু আগুন নিয়ে আসছেন।
ঝড়ের মতো প্রভুর রথ আসছে।
প্রভু সেই সব লোকের ওপর তাঁর শাস্তি প্রদান করবেন।
যখন তিনি ক্রুদ্ধ, তখন তিনি ওইসব লোকদের আগুনের শিখা দিয়ে শাস্তি দেবেন।
16 প্রভু লোকদের বিচার করবেন।
তারপর তিনি লোকদের আগুন আর তরবারি দিয়ে ধ্বংস করবেন।
বহু মানুষেরই তিনি বিনাশ ঘটাবেন।
17 সেই সব লোকরা তাদের বিশেষ বাগানগুলিতে পূজোর আগে নিজেদের শুদ্ধ করবার জন্য স্নান করে। নিজেদের বিশেষ বাগানে তারা একে অন্যকে অনুসরণ করে। যখন তারা তাদের মূর্ত্তির পূজা করবে তখন প্রভু ঐসব লোকদের ধ্বংস করবেন। ঐসব লোকরা শুয়োর ও ইঁদুরের মাংস এবং অন্যান্য নোংরা জিনিস খায়। তবে তারা সবাই একসঙ্গে ধ্বংস হবে। প্রভু স্বয়ং একথা বলেছেন।
18 “ঐসব লোকদের চিন্তায় ও কাজে রয়েছে অপকর্ম। তাই আমি আসছি ওদের শাস্তি দিতে। আমি সব জাতির সব মানুষকে একত্রিত করব। সব লোকরা একসঙ্গে এসে আমার ক্ষমতা দেখবে। আমি কাউকে কাউকে বিশেষ চিহ্ন দিয়ে রাখব এবং তাদের রক্ষা করব। 19 যারা রক্ষা পেয়েছে তাদের কয়েক জনকে আমি তর্শীশ, লিবিয়া, লূদ, তূবল, গ্রীস ও অন্যান্য দূরবর্তী দেশসমূহে পাঠাব। ঐসব লোকরা কখনও আমার সম্বন্ধে শোনেনি। তারা কখনও আমার মহিমা দেখেনি। তাই রক্ষা পাওয়া ওই সব লোকরা অন্যান্য জাতিগুলিকে আমার মহিমার কথা জানাবে। 20 তারাই তোমাদের ভাইবোনদের অন্যান্য সমস্ত জাতি থেকে নিয়ে আসবে। তারা তোমাদের ভাইবোনদের আনবে জেরুশালেমে, আমার পবিত্র পর্বত সিয়োনে। তোমাদের ভাইবোনরা আসবে ঘোড়া, গাধা, উট, যুদ্ধে ব্যবহৃত ছোট ছোট যান প্রভৃতিতে চেপে। প্রভুর মন্দিরে ইস্রায়েলের মানুষরা যেমন উপহার নিয়ে যায় তেমনি তোমাদের ভাই-বোনরা উপহার হয়ে আসবে। 21 আমি বেছে কাউকে যাজক এবং কাউকে যাজকদের সাহায্যকারী বানাবো।” প্রভু স্বয়ং একথাগুলি বলেছেন।
নতুন স্বর্গসমূহ এবং নতুন পৃথিবী
22 “আমি একটি নতুন পৃথিবী তৈরী করব এবং এই নতুন পৃথিবী ও নতুন স্বর্গ থাকবে অনন্তকাল। একই ভাবে তোমাদের নাম ও তোমাদের শিশুরা আমার সঙ্গে থাকবে সর্বক্ষণ। 23 সব লোকরা প্রার্থনার দিনে আমার উপাসনা করতে আসবে। তারা প্রতি মাসের প্রথম দিন এবং বিশ্রামের দিন আমার উপাসনা করতে আসবে।
24 “ঐসব লোকরা থাকবে আমার পবিত্র শহরে এবং তারা শহরের বাইরে গেলেই আমার বিরুদ্ধে পাপ কাজে লিপ্ত মানুষদের মৃতদেহ দেখতে পাবে। সেই দেহে কৃমি থাকবে এবং সেই কৃমিরা কখনও মরবে না। আগুন পুড়িয়ে দেবে দেহগুলিকে এবং ঐ আগুন কখনও নিভবে না।”
হেরোদ যীশুর সম্পর্কে শুনলেন
(মার্ক 6:14-29; লূক 9:7-9)
14 সেই সময় গালীলের শাসনকর্তা হেরোদ, যীশুর বিষয় শুনতে পেলেন। 2 তিনি তাঁর চাকরদের বললেন, “এই লোক নিশ্চয়ই বাপ্তিস্মদাতা যোহন। সে নিশ্চয়ই মৃত লোকদের মধ্য থেকে বেঁচে উঠেছে। আর সেইজন্যই এইসব অলৌকিক কাজ করতে পারছে।”
বাপ্তিস্মদাতা যোহন নিহত হলেন
3 এই হেরোদই যোহনকে গ্রেপ্তার করে কারাগারের মধ্যে শেকলে বেঁধে রেখেছিলেন। তাঁর ভাই ফিলিপের স্ত্রী হেরোদিয়ার অনুরোধেই তিনি একাজ করেছিলেন। 4 কারণ যোহন হেরোদকে বার-বার বলতেন, “হেরোদিয়াকে তোমার ঐভাবে রাখা বৈধ নয়।” 5 হেরোদ এই জন্য যোহনকে হত্যা করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু তিনি লোকদের ভয় করতেন, কারণ সাধারণ লোক যোহনকে ভাববাদী বলে মানত।
6 এরপর হেরোদের জন্মদিন এল, সেই উৎসবে হেরোদিয়ার মেয়ে, হেরোদ ও তাঁর অতিথিদের সামনে নেচে হেরোদকে খুব খুশী করল। 7 সেজন্য হেরোদ শপথ করে বললেন যে, সে যা চাইবে তিনি তাকে তাইদেবেন। 8 মেয়েটি তার মায়ের পরামর্শ অনুসারে বলল, “থালায়় করে বাপ্তিস্মদাতা যোহনের মাথাটা আমায় এনে দিন।”
9 যদিও রাজা হেরোদ এতে খুব দুঃখিত হলেন, তবু তিনি শপথ করেছিলেন বলে এবং যাঁরা তাঁর সঙ্গে খেতে বসেছিলেন তাঁরা সেই শপথের কথা শুনেছিলেন বলে সম্মানের কথা ভেবে তিনি তা দিতে হুকুম করলেন। 10 তিনি লোক পাঠিয়ে কারাগারের মধ্যে যোহনের শিরশ্ছেদ করালেন। 11 এরপর যোহনের মাথাটি থালায় করে নিয়ে এসে সেই মেয়েকে দেওয়া হলে, সে তা নিয়ে তার মায়ের কাছে গেল। 12 তারপর যোহনের অনুগামীরা এসে তাঁর দেহটি নিয়ে গিয়ে কবর দিলেন। আর তাঁরা যীশুর কাছে গিয়ে সব কথা জানালেন।
যীশু পাঁচ হাজারের বেশী লোককে খাওয়ালেন
(মার্ক 6:30-44; লূক 9:10-17; যোহন 6:1-14)
13 যীশু সব কথা শুনে একা একটা নৌকা করে সেখান থেকে রওনা হয়ে কোন এক নির্জন জায়গায় চলে গেলেন। কিন্তু লোকেরা তা জানতে পেরে বিভিন্ন নগর থেকে বেরিয়ে হাঁটা পথ ধরে তাঁর সঙ্গ ধরল। 14 তিনি নৌকা থেকে তীরে নেমে দেখলেন বহুলোক জড় হয়েছে, তাদের প্রতি তাঁর করুণা হল। তাদের মধ্যে যারা অসুস্থ ছিল, তাদের সকলকে তিনি সুস্থ করলেন।
15 সন্ধ্যা হলে শিষ্যরা তাঁর কাছে এসে বললেন, “এ জনহীন প্রান্তর আর এখন বেলাও শেষ হয়ে এল, এই লোকদের চলে যেতে বলুন, তারা যেন গ্রামে গ্রামে গিয়ে নিজেদের জন্য খাবার কিনে নিতে পারে।”
16 কিন্তু যীশু তাদের বললেন, “তাদের যাবার দরকার নেই, তোমরাই তাদের কিছু খেতে দাও।”
17 তখন তার শিষ্যরা তাঁকে বললেন, “এখানে আমাদের কাছে পাঁচখানা রুটি আর দুটো মাছ ছাড়া আর কিছুই নেই।”
18 তিনি তাঁদের বললেন, “ওগুলো আমার কাছে নিয়ে এস।” 19 এরপর তিনি সেই লোকদের ঘাসের ওপর বসে যেতে বললেন। পরে তিনি সেই পাঁচখানা রুটি ও দুটো মাছ নিয়ে স্বর্গের দিকে তাকিয়ে সেই খাবারের জন্য ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিলেন। তারপর সেই রুটি টুকরো টুকরো করে তাঁর শিষ্যদের হাতে পরিবেশন করার জন্য দিলেন। শিষ্যরা এক এক করে লোকদের তা দিলেন। 20 আর লোকেরা সকলে খেয়ে পরিতৃপ্ত হল। পরে শিষ্যরা পড়ে থাকা খাবারের টুকরো-টাকরা তুলে নিলে তাতে বারোটি টুকরি ভর্ত্তি হয়ে গেল; 21 যারা খেয়েছিল তাদের মধ্যে স্ত্রীলোক ও ছোট ছোট ছেলেমেয়ে ছাড়া পাঁচ হাজার পুরুষ মানুষ ছিল।
যীশু জলের উপর দিয়ে হাঁটেন
(মার্ক 6:45-52; যোহন 6:16-21)
22 এরপরই যীশু তাঁর শিষ্যদের নৌকায় করে হ্রদের অপর পারে তাঁর সেখানে যাবার আগে তাদের পৌঁছাতে বললেন। এরপর তিনি লোকদের বিদায় জানালেন। 23 লোকদের বিদায় দিয়ে, প্রার্থনা করবার জন্য তিনি একা পাহাড়ে উঠে গেলেন। অন্ধকার হয়ে গেলেও তিনি সেখানে একাই রইলেন। 24 নৌকাটি তীর থেকে দূরে গিয়ে পড়েছিল, উল্টো হাওয়া বইতে থাকায় ঢেউয়ের ধাক্কায় ভীষণভাবে দুলছিল।
25 সকাল তিনটে থেকে ছ’টার মধ্যে যীশুর শিষ্যরা নৌকায় ছিলেন। এমন সময় যীশু জলের উপর দিয়ে হেঁটে তাঁদের কাছে এলেন। 26 যীশুকে হ্রদের জলের ওপর দিয়ে হেঁটে আসতে দেখে শিষ্যরা ভয়ে আঁতকে উঠলেন, তারা “ভূত, ভূত” বলে ভয়ে চিৎকার করে উঠলেন।
27 সঙ্গে সঙ্গে যীশু তাঁদের বললেন, “এতো আমি! সাহস কর! ভয় করো না।”
28 এর উত্তরে পিতর তাঁকে বললেন, “প্রভু, এ যদি সত্যিই আপনি হন, তবে জলের ওপর দিয়ে আমাকেও আপনার কাছে আসতে আদেশ করুন।”
29 যীশু বললেন, “এস।”
পিতর তখন নৌকা থেকে নেমে জলের ওপর দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে যীশুর দিকে এগোতে লাগলেন। 30 কিন্তু যখন দেখলেন প্রচণ্ড ঝোড়ো বাতাস বইছে, তখন খুবই ভয় পেয়ে গেলেন। তিনি আস্তে আস্তে ডুবতে লাগলেন আর চিৎকার করে বললেন, “প্রভু, আমাকে বাঁচান।”
31 যীশু তখনই হাত বাড়িয়ে পিতরকে ধরে ফেলে বললেন, “হে অল্প-বিশ্বাসী! তুমি কেন সন্দেহ করলে?”
32 যীশু ও পিতর নৌকায় উঠলে পর ঝোড়ো বাতাস থেমে গেল।
33 যাঁরা নৌকায় ছিলেন তাঁরা যীশুকে প্রণাম করে বললেন, “আপনি সত্যিই ঈশ্বরের পুত্র।”
যীশু বহু অসুস্থ মানুষকে আরোগ্যদান করলেন
(মার্ক 6:53-56)
34 তাঁরা হ্রদ পার হয়ে গিনেষরৎ অঞ্চলে এলেন। 35 সেই অঞ্চলের লোকরা তাঁকে চিনতে পেরে সেই অঞ্চলের সব জায়গায় লোকদের কাছে তাঁর আসার খবর রটিয়ে দিল। তখন লোকেরা তাদের মধ্যে যারা অসুস্থ ছিল তাদের সকলকে যীশুর কাছে নিয়ে এল। 36 তারা যীশুকে অনুরোধ করল, যেন সেই রোগীরা কেবল তাঁর পোশাকের ঝালর স্পর্শ করতে পারে। আর যাঁরা স্পর্শ করল, তারাই সুস্থ হয়ে গেল।
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International