M’Cheyne Bible Reading Plan
5 তাই প্রভু যর্দন নদী শুকিয়ে দিলেন যতক্ষণ না সমস্ত লোক তা পেরিয়ে যায়। যর্দ্দনের পশ্চিমে বসবাসকারী ইমোরীয় এবং ভূমধ্যসাগর তীরবর্তী কনানীয়দের রাজারা এসব শুনে বেশ ভয় পেয়ে গেল। ইস্রায়েলের লোকদের সঙ্গে লড়াই করার মতো সাহস তাদের রইল না।
ইস্রায়েলীয়দের সুন্নৎকরণ
2 তখন যিহোশূয়কে প্রভু বললেন, “চক্মকি পাথর থেকে ক্ষুর বানিয়ে নাও, আর সেই ক্ষুর দিয়ে ইস্রায়েলের পুরুষদের সুন্নৎ করো।”
3 সেই মতো যিহোশূয় চকমকি পাথর থেকে ক্ষুর বানিয়ে নিয়ে জিবিথ হারালোথে ইস্রায়েলীয়দের সুন্নৎ করলেন।
4-7 ইস্রায়েলীয়দের সুন্নৎ করার পেছনে যিহোশূয়র একটা কারণ ছিল। ইস্রায়েলের লোকরা মিশর ছেড়ে চলে গেলে যারা সৈন্যবাহিনীতে ছিল তাদের সবাইকে সুন্নৎ করা হয়েছিল। মরুভূমিতে থাকার সময় অনেক যোদ্ধাই প্রভুর কথা শোনেনি। তখন প্রভু তাদের প্রতিশ্রুতি দিলেন যে তারা ঐ দেশটি সুজলা-সুফলা রূপে দেখতে পাবে না। তিনি তাদের পূর্বপুরুষদের কাছে সেই দেশই দিয়ে যাবেন বলে প্রতিশ্রুতি করেছিলেন, কিন্তু যারা তাঁর বাণী অগ্রাহ্য করেছিল তাদের ঈশ্বর 40 বছর মরুভূমিতে ঘুরিয়েছিলেন যে পর্যন্ত না ঐ সমস্ত যোদ্ধারা শেষ হয়। তারা মারা গেলে তাদের সন্তানরা তাদের স্থান নিল। মিশর থেকে চলে আসার পর তাদের সন্তানদের মরুভূমিতে জন্ম হয়েছিল। এদের কাউকে সুন্নৎ করা হয় নি। তাই যিহোশূয় তাদের সুন্নৎ করেছিলেন।
8 যিহোশূয় সকলের সুন্নৎকরণ শেষ করলেন। তারা সেখানেই তাঁবু খাটিয়ে থেকে গেল। যতদিন পর্যন্ত সবাই সেরে না উঠল ততদিন তারা তাঁবুতে বিশ্রাম নিল।
কনানে প্রথম নিস্তারপর্ব উৎসব
9 সেই সময় প্রভু যিহোশূয়কে বললেন, “মিশরে তোমরা সবাই ছিলে ক্রীতদাস। এই দাসত্ব তোমাদের লজ্জিত করে রেখেছিল। আজ তোমাদের সব লজ্জা সংকোচ আমি হরণ করলাম।” যিহোশূয় সেই জায়গাটির নাম দিলেন গিল্গল। আজও সে জায়গার নাম গিল্গল থেকে গেছে।
10 ইস্রায়েলের লোকরা নিস্তারপর্ব উৎসব পালন করল। যিরীহোর সমতলভূমিতে গিল্গলে যেখানে তাঁবু খাটিয়েছিল সেখানেই তারা উৎসব করল। সেই মাসের 14তম দিনে সন্ধ্যাবেলা সেই উৎসব হল। 11 নিস্তারপর্ব উৎসবের পরের দিন তারা সে দেশের উৎপন্ন খাদ্য দ্রব্যই খেয়েছিল। তারা খেয়েছিল খামিরবিহীন রুটি আর ভাজা দানাশস্য। 12 পরদিন সকালে আকাশ থেকে আর বিশেষ ধরণের খাদ্য বর্ষণ হল না। যেদিন থেকে ইস্রায়েলের লোকরা কনানে উৎপন্ন খাদ্য খেতে শুরু করল, সেদিন থেকে স্বর্গ থেকে খাদ্য আসা বন্ধ হল।
প্রভুর সৈন্যবাহিনীর সেনাধ্যক্ষ
13 যখন যিহোশূয় যিরীহোর কাছাকাছি গেলেন, তিনি তাকিয়ে দেখলেন একজন মানুষ তরবারি হাতে তাঁর সামনে দাঁড়িয়ে আছেন। যিহোশূয় তাঁর কাছে গিয়ে বললেন, “কে আপনি? আমাদের শত্রু না মিত্র?”
14 মানুষটি বললেন, “না, আমি শত্রু নই। আমি প্রভুর সৈন্যবাহিনীর সেনাধ্যক্ষ। আমি এইমাত্র তোমার কাছে এসেছি।”
তখন যিহোশূয় তাঁকে সম্মান জানাতে মাথা নীচু করে বললেন, “আমি আপনার ভৃত্য। প্রভু কি আমার জন্য কোন আদেশ দিয়েছেন?”
15 প্রভুর সেনাধ্যক্ষ বললেন, “জুতো খোলো। যেখানে তুমি দাঁড়িয়ে তা এখন পবিত্র স্থান।” তাই যিহোশূয় তাঁর আদেশ পালন করলেন।
6 যিরীহো শহরের সমস্ত প্রবেশ পথ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। শহরের লোকেরা ভয় পেয়ে গিয়েছিল কারণ ইস্রায়েলের লোকেরা কাছেই ছিল। শহর থেকে কেউ বেরোত না, শহরে কেউ আসতও না।
2 তখন প্রভু যিহোশূয়কে বললেন, “শোনো, আমি তোমাদের যিরীহো দখল করতে দিচ্ছি। তোমরা রাজা আর শহরের সমস্ত যোদ্ধাকে পরাজিত করবে। 3 দিনে একবার করে সমস্ত শহরের চারিদিকে সৈন্যদের টহল দেওয়াবে। এরকম ছয় দিন করবে। 4 পবিত্র সিন্দুকটি যাজকদের বহন করতে বলবে। সাতজন যাজককে মেষের তৈরী শিঙা নিতে বলবে। সেই সিন্দুকটির সামনে দিয়ে যাজকদের যেতে বলবে। সপ্তম দিনে শহরটিকে সাতবার প্রদক্ষিণ করবে। ঐ দিন যাজকদের যাবার সময় শিঙা বাজাতে বলবে। 5 তারা একবার খুব জোরে শিঙা বাজাবে। সেই শিঙার শব্দ শুনতে পেলেই লোকদের চিৎকার করতে বলবে। তোমরা এই কাজ করলে শহরের প্রাচীরগুলো ভেঙ্গে পড়বে, আর তোমার লোকরাও সোজা শহরে ঢুকে পড়তে পারবে।”
মন্দির পর্যন্ত আরোহণের একটি গীত।
132 প্রভু স্মরণে রাখবেন দায়ূদ কেমন কষ্ট পেয়েছিলেন।
2 দায়ূদ প্রভুর কাছে একটা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।
দায়ূদ যাকোবের শক্তিমান ঈশ্বরের কাছে একটি বিশেষ প্রতিশ্রুতি করেছিলেন।
3 দায়ূদ বলেছিলেন, “আমি আমার বাড়িতে যাবো না,
আমি আমার বিছানায় শোব না।
4 আমি ঘুমোতে যাব না।
আমি আমার চোখকে বিশ্রাম দেবো না।
5 যতক্ষণ পর্যন্ত না আমি যাকোবের শক্তিমান ‘একজনের’ জন্য একটি বাসস্থান খুঁজে পাই
ততক্ষণ পর্যন্ত আমি ওই সবের কোন কিছুই করবো না!”
6 আমরা ইফ্রাথায় সে সম্পর্কে শুনেছি।
কিরিয়ৎ যিয়ারিমে আমরা সাক্ষ্য সিন্দুক খুঁজে পেয়েছি।
7 চল আমরা পবিত্র তাঁবুতে যাই।
চল আমরা সেই চৌকিতে উপাসনা করি যেখানে প্রভু তাঁর পা রাখেন।[a]
8 হে প্রভু, আপনি এবং আপনার শক্তির সিন্দুক[b] উত্থান করুন
এবং বিশ্রাম স্থানে ফিরে আসুন।
9 হে প্রভু, আপনার যাজকরা ধার্ম্মিকতায় সজ্জিত।
আপনার নিষ্ঠাবান অনুগামীরা প্রচণ্ড সুখী।
10 আপনার সেবক দায়ূদের ভালোর জন্য,
আপনার মনোনীত রাজাকে বাতিল করবেন না।
11 প্রভু দায়ূদের কাছে একটা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন; প্রভু দায়ূদের প্রতি বিশ্বস্ত থাকবার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
প্রভু প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে, দায়ূদের পরিবার থেকেই রাজারা আসবে।
12 প্রভু বলেছেন, “দায়ূদ, যদি তোমার সন্তানরা আমার চুক্তি এবং যে বিধিসমূহ আমি তাদের শিখিয়েছি
তা মানে তাহলে সর্বদাই তোমার পরিবারের কোন একজন, তোমার নিজের বংশধর, রাজা হবে।”
13 তাঁর মন্দিরের স্থান হিসেবে প্রভু সিয়োনকে মনোনীত করেছেন।
তাঁর গৃহ (মন্দির) হিসেবে তিনি সেই স্থানই চেয়েছিলেন।
14 প্রভু বলেছিলেন, “চিরদিনের জন্য এটাই আমার স্থান হবে।
আমার থাকার স্থান হিসেবে আমি এই জায়গাকে মনোনীত করেছি।
15 প্রচুর খাদ্য দিয়ে আমি এই শহরকে আশীর্বাদ করবো।
এমনকি দরিদ্র মানুষরাও প্রচুর খাদ্য পাবে।
16 আমি যাজকদের পরিত্রাণ দিয়ে সজ্জিত করবো।
আমার অনুগামীরা সুখী হবে।
17 এই স্থানে আমি দায়ূদকে শক্তিশালী করবো।
আমার দ্বারা মনোনীত রাজার জন্য আমি একটি প্রদীপ দেব।
18 দায়ূদের শত্রুদের আমি লজ্জায় ঢেকে দেবো।
কিন্তু দায়ূদের রাজ্যকে আমি বাড়িয়ে তুলবো।”
মন্দির পর্যন্ত যাওয়ার জন্য দায়ূদের গানের অন্যতম।
133 যখন ভাইরা সঙ্ঘবদ্ধ হয়ে একত্রিত বসে
তখন সেটা কত সুন্দর ও মনোরম।
2 এটা যেন সেই সুগন্ধি তেলের মত যে তেল হারোণের মাথায় ঢালা হয়েছে
এবং তার মাথা থেকে মুখ ও দাড়ি বেয়ে তার বিশেষ বস্ত্রে গড়িয়ে পড়েছে।
3 এটা হর্ম্মোণ পর্বত থেকে আগত মৃদু বৃষ্টির মত যেটা সিয়োন পর্বতের ওপর ঝরে পড়ছে।
কারণ সিয়োনে প্রভু তাঁর আশীর্বাদ দিয়েছিলেন, অনন্তকালের জীবনের আশীর্বাদ।
মন্দির পর্যন্ত যাওয়ার একটি গীত।
134 তোমরা প্রভুর দাসরা
যারা সারা রাত ধরে মন্দিরে তাঁর সেবা কর!
2 সেবকগণ দুহাত তুলে
তোমরা প্রভুর প্রশংসা কর।
3 প্রভু সিয়োন থেকে তোমাদের আশীর্বাদ করুন।
প্রভু আকাশ ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন।
লোকরা ঈশ্বর সম্পর্কে জানবে
65 প্রভু বলেন, “যারা আমার কাছে উপদেশ নিতে আসেনি আমি তাদেরও সাহায্য করেছি। আমাকে যারা পেয়েছে তারা কেউ আমার দিকে তাকিয়ে ছিল না। আমি একটা জাতির সঙ্গে কথা বলেছিলাম যারা আমার নামে নামাঙ্কিত নয়। আমি বলেছিলাম, ‘আমি এখানে! আমি এখানে!’
2 “যারা আমার বিরুদ্ধে গিয়েছিল এমন লোকদের গ্রহণ করার জন্য আমি সারাদিন প্রস্তুত হয়ে দাঁড়িয়েছিলাম। তারা আমার কাছে আসুক—আমি তাদের অপেক্ষায় ছিলাম। কিন্তু তারা আমার কাছ থেকে দূরে ছিল। তারা অসৎ পথে জীবনযাপন চালিয়ে গিয়েছিল। তাদের হৃদয় যা করতে চেয়েছিল তারা তাই করেছিল। 3 তারা আমার সামনে আমাকে সর্বদা ক্রুদ্ধ করেছিল। তারা তাদের বিশেষ বাগানে পশুবলি দিত ও ধূনো জ্বালাত। 4 তারা কবরস্থানে বসে থাকত। তারা মৃত মানুষদের কাছ থেকে ভাল বার্তা পাবার জন্য প্রতীক্ষায় থাকত। মৃতদের সঙ্গেও তারা বসবাস করত। তারা শুয়োরের মাংস খেত। তাদের ছুরি ও কাঁটাচামচ বাজে মাংস খেয়ে নোংরা হয়ে গিয়েছিল। 5 কিন্তু তারা অন্যদের বলত, ‘আমার কাছে আসবে না! আমি যতক্ষণ না তোমাদের পরিষ্কার করছি ততক্ষণ তোমরা আমাকে স্পর্শ করবে না।’ এরা আমার চোখে ধোঁয়ার মত এবং এদের আগুন সর্বদাই জ্বলে।”
ইস্রায়েলকে শাস্তি পেতেই হবে
6 “দেখ, এখানে হিসাব আছে। মেটাতে হবে। হিসাব অনুযায়ী তুমি তোমার পাপের জন্য দোষী। এই হিসাব না মেটানো পর্যন্ত আমি শান্ত হব না এবং তোমাকে শাস্তি দিয়েই হিসাব পরিশোধ করব।” 7 তোমার ও তোমার পিতার পাপ সবই সমান। প্রভু বলেন, “পর্বতের ওপর ধূপ জ্বালাবার সময় তোমাদের পিতারা পাপ করেছে। তারা ঐ পর্বতগুলোর ওপর আমায় অবমাননা করেছে। এবং আমিই প্রথম যে তাদের শাস্তি দিয়েছিলাম। আমি তাদের উচিৎ প্রাপ্য শাস্তি দিয়েছিলাম।”
8 প্রভু বলেন, “দ্রাক্ষাতে যখন নতুন সুরা থাকে মানুষ তখন তা বার করে নেয়। কিন্তু তারা দ্রাক্ষাগুলিকে পুরোপুরি ধ্বংস করে না। তারা এইসব করে কারণ দ্রাক্ষা এরপরেও ব্যবহার করা যায়। আমি আমার দাসদের প্রতি ঠিক একই জিনিষ করব। তাদের আমি পুরোপুরি ধ্বংস করবো না। 9 যাকোবের (ইস্রায়েল) কিছু লোককে আমি রক্ষা করব। যিহূদার কিছু মানুষ আমার পাহাড় পাবে। আমার দাসরা সেখানে বাস করবে। আমি পছন্দ করে ঠিক করব কারা ওখানে বাস করবে। 10 তখন পলেষ্টীয় সংলগ্ন শারোণ উপত্যকা হবে মেষদের মাঠ। জেরুশালেমের উত্তরের দশ মাইল আখোর উপত্যকা হবে গরুর পালের বিশ্রামস্থল। এইসব হবে আমার লোকদের জন্য—যেসব লোকরা আমার খোঁজ করে।
11 “কিন্তু তোমরা প্রভুকে ত্যাগ করেছো, তাই তোমরা শাস্তি ভোগ করবে। তোমরা আমার পবিত্র সিয়োন পর্বতের কথা ভুলে গিয়েছো। তোমরা ‘ভাগ্য’ ও ‘অদৃষ্ট’ মূর্ত্তিগুলোকে পূজো করতে শুরু করেছিলে। তোমরা তাদের নৈবেদ্য দিয়েছিলে। 12 কিন্তু আমি তোমাদের ভবিষ্যৎ নির্ণয় করেছি। তোমরা তরবারির দ্বারা শেষ হবে। তোমরা সবাই খুন হবে। কেন? কারণ আমি তোমাদের ডাকলেও তোমরা উত্তর দিতে অস্বীকার করেছিলে! আমি কথা বললেও তোমরা শোন নি। আমি যে সব কাজকে অপকর্ম বলেছিলাম তোমরা সেগুলিই করেছো। আমি যা পছন্দ করি না তাই তোমরা করবে বলে ঠিক করেছিলে।”
13 তাই প্রভু, আমার সদাপ্রভু বলেন,
“যদিও আমার দাসরা খাবে,
তোমরা ক্ষুধার্ত থেকে যাবে।
আমার দাসরা পান করতে পারলেও
তোমরা তৃষ্ণার্ত থাকবে।
আমার দাসরা সুখী হলেও
তোমরা দুষ্ট লোকরা লজ্জিত হবে।
14 আমার দাসরা আনন্দে মাতোয়ারা হবে
কিন্তু তোমরা দুঃখে কেঁদে ভাসাবে।
তোমাদের হৃদয় ভেঙ্গে যাবে
এবং তোমরা খুবই দুঃখিত হবে।
15 তোমাদের নাম আমার দাসদের কাছে বাজে শব্দের মতো শোনাবে।”
আমার প্রভু ঈশ্বর তোমাদের হত্যা করবেন।
আর তাঁর দাসদের দেবেন নতুন নাম।
16 লোকে এখন পৃথিবীর কাছে আশীর্বাদ প্রার্থনা করছে।
কিন্তু ভবিষ্যতে তারা আশীর্বাদ চাইবে আস্থাবান ঈশ্বরের কাছে।
এখন যারা পৃথিবীর নাম নিয়ে কোন প্রতিশ্রুতি করেছে
তারা ভবিষ্যতে ঈশ্বরের নামে প্রতিশ্রুতি করবে।
কেন? কারণ, অতীতের সমস্যার কথা সবাই ভুলে যাবে।
তারা আমার চক্ষুর অন্তরালে আছে।
একটি নতুন সময় আসছে
17 “আমি নতুন পৃথিবী ও নতুন স্বর্গ তৈরী করব।
লোকরা অতীতের কথা মনে রাখবে না।
সেই সব কথা তারা মোটেই চিন্তা করবে না।
18 আমার লোকরা সুখী হবে এবং এখন থেকে চিরকাল তারা আনন্দ করবে।
কেন? আমি তাই করব, জেরুশালেমকে আমি তৈরী করব আনন্দ নগরী
এবং সেখানকার লোকদের আমি করব খুব সুখী।
19 “তারপর জেরুশালেমের জন্য আমিও সুখী হব।
আমি আমার নিজের লোকদের জন্য সুখী হব।
শহরে আর কোন কান্না অথবা কান্নার শব্দ
এবং দুঃখ থাকবে না।
20 দু-চারদিনের আয়ু নিয়ে কোন শিশু জন্মাবে না।
অল্প সময় বেঁচে থেকে কেউই মরবে না।
প্রতিটি শিশু ও বৃদ্ধ বহু বহু বছর বাঁচবে। 100 বছর বেঁচে থাকার পরও যে কোন ব্যক্তিকে যুবকদের মত লাগবে।
একজন লোক যদি 100 বছর বয়স পর্যন্ত না বাঁচে লোকে তাকে অভিশপ্ত মানুষ বলে বিবেচনা করবে।
21 “শহরে কেউ যদি বাড়ি বানায় সে সেই বাড়িতে বসবাস করতে পারবে।
কেউ যদি বাগানে দ্রাক্ষা চাষ করে তবে সে সেই দ্রাক্ষা ফল খেতে পারবে।
22 আর কখনও এমন হবে না যে একজন বাড়ী তৈরী করবে
আর অন্য জন তাতে বাস করবে।
আর কখনও এমন হবে না যে একজন বাগান তৈরী করবে
আর অন্য জন তার ফল খাবে।
আমার লোকরা গাছের মত দীর্ঘ জীবন পাবে।
আমার মনোনীত লোকরা যা কিছু করবে তা উপভোগ করবে।
23 একটি মৃত শিশুকে জন্ম দেবার জন্য
মহিলারা আর কখনও প্রসব যন্ত্রনা ভোগ করবে না।
শিশুর জন্ম দিতে গিয়ে মহিলারা প্রসব যন্ত্রণায় আর ভীত হবে না।
প্রভু আমার সব লোকদের ও তাদের শিশুদের আশীর্বাদ করবেন।
24 তারা চাইবার আগেই জানতে পারবে তাদের চাহিদা
এবং তারা চাইবার আগেই সাহায্য পাবে।
25 নেকড়ে বাঘ এবং মেষশাবক একসঙ্গে খাবে।
সিংহ ছোট্ট বলদের সঙ্গে একসঙ্গে বিচালি খাবে।
আমার পবিত্র পর্বতে সাপ থাকলেও সে কাউকে কামড়াবে না।
এমনকি কারও ভয়েরও কারণ হবে না।”
এইসব প্রভু বলেছেন।
যীশু বীজ বোনার দৃষ্টান্ত মূলক কাহিনী শোনালেন
(মার্ক 4:1-9; লূক 8:4-8)
13 সেই দিনই যীশু ঘর থেকে বার হয়ে হ্রদের ধারে এসে বসলেন। 2 তাঁর চারপাশে বহু লোক এসে জড় হল, তাই তিনি একটা নৌকায় উঠে বসলেন, আর সেই সমবেত জনতা তীরে দাঁড়িয়ে রইল। 3 তখন তিনি দৃষ্টান্তের মাধ্যমে তাদের অনেক বিষয়ে শিক্ষা দিতে লাগলেন।
তিনি বললেন, “একজন চাষী বীজ বুনতে গেল। 4 সে যখন বীজ বুনছিল, তখন কতকগুলি বীজ পথের ধারে পড়ল, আর পাখিরা এসে সেগুলি খেয়ে ফেলল। 5 আবার কতকগুলি বীজ পাথুরে জমিতে পড়ল, সেখানে মাটি বেশী ছিল না। মাটি বেশী না থাকাতে তাড়াতাড়ি অঙ্কুর বার হল। 6 কিন্তু সূর্য উঠলে পর অঙ্কুরগুলি ঝলসে গেল, আর শেকড় মাটির গভীরে যায়নি বলে তা শুকিয়ে গেল। 7 আবার কিছু বীজ কাঁটাঝোপের মধ্যে পড়ল। কাঁটাঝোপ বেড়ে উঠে চারাগুলোকে চেপে দিল। 8 কিছু বীজ ভাল জমিতে পড়ল, তাতে ফসল হতে লাগল। সে যা বুনেছিল, কোথাও তার ত্রিশগুণ, কোথাও ষাটগুণ, কোথাও শতগুণ ফসল হল। 9 যার শোনার মতো কান আছে সে শুনুক!”
শিক্ষার সময় যীশু কেন দৃষ্টান্ত দিতেন
(মার্ক 4:10-12; লূক 8:9-10)
10 যীশুর শিষ্যরা তাঁর কাছে এসে বললেন, “কেন আপনি দৃষ্টান্তের মাধ্যমে লোকদের সঙ্গে কথা বললেন?”
11 এর উত্তরে যীশু তাদের বললেন, “স্বর্গরাজ্যের বিষয়ে ঈশ্বরের গুপ্ত সত্য বোঝার ক্ষমতা কেবল মাত্র তোমাদেরই দেওয়া হয়েছে, কিন্তু সকলকে এ ক্ষমতা দেওয়া হয় নি। 12 কারণ যার কিছু আছে, তাকে আরও দেওয়া হবে, তাতে তার প্রচুর হবে; কিন্তু যার নেই, তার যা আছে তাও তার কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া হবে। 13 আমি তাদের সঙ্গে দৃষ্টান্তের মাধ্যমে কথা বলি, কারণ তারা দেখেও দেখে না, শুনেও শোনে না আর তারা বোঝেও না। 14 এদের এই অবস্থার মধ্য দিয়েই ভাববাদী যিশাইয়র ভাববাণী পূর্ণ হয়েছে:
‘তোমরা শুনবে আর শুনবে,
কিন্তু বুঝবে না।
তোমরা তাকিয়ে থাকবে,
কিন্তু কিছুই দেখবে না।
15 এইসব লোকদের অন্তর অসাড়,
এরা কানে শোনে না,
চোখ থাকতেও সত্য দেখতে অস্বীকার করে।
এরকমটাই ঘটেছে যেন এরা চোখে দেখে,
কানে শুনে
আর অন্তরে বুঝে
ভাল হবার জন্য আমার কাছে ফিরে না আসে।’(A)
16 কিন্তু ধন্য তোমাদের চোখ, কারণ তা দেখতে পায়; আর ধন্য তোমাদের কান, কারণ তা শুনতে পায়। 17 আমি তোমাদের সত্যি বলছি, তোমরা যা দেখছ অনেক ভাববাদী ও ধার্মিক লোকেরা দেখতে চেয়েও তা দেখতে পায় নি। আর তোমরা যা যা শুনছ, তা তারা শুনতে চেয়েও শুনতে পায় নি।
বীজ বোনার দৃষ্টান্ত
(মার্ক 4:13-20; লূক 8:11-15)
18 “এখন তবে সেই চাষী ও তার বীজ বোনার মর্মার্থ শোন।
19 “কেউ যখন স্বর্গরাজ্যের শিক্ষার বিষয় শুনেও তা বোঝে না, তখন দুষ্ট আত্মা এসে তার অন্তরে যা বোনা হয়েছিল তা সরিয়ে নেয়। এটা হল সেই পথের ধারে পড়া বীজের কথা।
20 “আর পাথুরে জমিতে যে বীজ পড়েছিল, তা সেই সব লোকদের কথাই বলে যারা স্বর্গরাজ্যের শিক্ষা শুনে সঙ্গে সঙ্গে আনন্দের সাথে তা গ্রহণ করে; 21 কিন্তু তাদের মধ্যে সেই শিক্ষার শেকড় ভাল করে গভীরে যেতে দেয় না বলে তারা অল্প সময়ের জন্য স্থির থাকে। যখন সেই শিক্ষার জন্য সমস্যা, দুঃখ কষ্ট ও তাড়না আসে, তখনই তারা পিছিয়ে যায়।
22 “কাঁটাঝোপে যে বীজ পড়েছিল, তা এমন লোকদের বিষয় বলে যারা সেই শিক্ষা শোনে, কিন্তু সংসারের চিন্তা ভাবনা ও ধনসম্পত্তির মায়া সেই শিক্ষাকে চেপে রাখে। সেজন্য তাদের জীবনে কোন ফল হয় না।
23 “যে বীজ উৎকৃষ্ট জমিতে বোনা হল, তা এমন লোকদের কথা প্রকাশ করে যারা শিক্ষা শোনে, তা বোঝে এবং ফল দেয়। কেউ একশ গুণ, কেউ ষাট গুণ আর কেউ বা তিরিশ গুণ ফল দেয়।”
গম এবং শ্যামা ঘাসের দৃষ্টান্ত
24 এবার যীশু তাদের কাছে আর একটি দৃষ্টান্ত রাখলেন। স্বর্গরাজ্য এমন একজন লোকের মতো যিনি তাঁর জমিতে ভাল বীজ বুনলেন। 25 কিন্তু লোকেরা যখন সবাই ঘুমিয়ে ছিল, তখন সেই মালিকের শত্রু এসে গমের মধ্যে শ্যামা ঘাসের বীজ বুনে দিয়ে চলে গেল। 26 শেষে গমের চারা যখন বেড়ে উঠে ফল ধরল, তখন তার মধ্যে শ্যামাঘাসও দেখা গেল। 27 সেই মালিকের মজুররা এসে তাঁকে বলল, “আপনি কি জমিতে ভাল বীজ বোনেন নি? তবে শ্যামাঘাস কোথা থেকে এল?”
28 “তিনি তাদের বললেন, ‘এটা নিশ্চয়ই কোন শত্রুর কাজ।’
“তাঁর চাকরেরা তখন তাঁকে বলল, ‘আপনি কি চান, আমরা গিয়ে কি শ্যামা ঘাসগুলি উপড়ে ফেলব?’
29 “তিনি বললেন, ‘না, কারণ তোমরা যখন শ্যামা ঘাস ওপড়াতে যাবে তখন হয়তো ঐগুলোর সাথে গমের গাছগুলোও উপড়ে ফেলবে। 30 ফসল কাটার সময় না হওয়া পর্যন্ত একসঙ্গে সব বাড়তে দাও। পরে ফসল কাটার সময় আমি মজুরদের বলব তারা যেন প্রথমে শ্যামা ঘাস সংগ্রহ করে আঁটি আঁটি করে বাঁধে ও তা পুড়িয়ে দেয় এবং গম সংগ্রহ করে গোলায় তোলে।’”
যীশু আরো দৃষ্টান্ত সহযোগে শিক্ষা দিলেন
(মার্ক 4:30-34; লূক 13:18-21)
31 যীশু তাদের সামনে আর একটি দৃষ্টান্ত রাখলেন, “স্বর্গরাজ্য এমন একটা সরষে দানার মতো যা নিয়ে কোন একজন লোক তার জমিতে লাগাল। 32 সমস্ত বীজের মধ্যে ওটা সত্যিই সবচেয়ে ছোট, কিন্ত গাছ হয়ে বেড়ে উঠলে পর তা সমস্ত শাক-সব্জীর থেকে বড় হয়ে একটা বড় গাছে পরিণত হয়, যাতে পাখিরা এসে তার ডালপালায় বাসা বাঁধে।”
33 তিনি তাদের আর একটা দৃষ্টান্ত বললেন, “স্বর্গরাজ্য যেন খামিরের মতো। একজন স্ত্রীলোক তা নিয়ে একতাল ময়দার সঙ্গে মেশাল ও তার ফলে সমস্ত ময়দা ফেঁপে উঠল।”
34 জনসাধারণের কাছে উপদেশ দেবার সময় যীশু প্রায়ই এই ধরণের দৃষ্টান্ত দিতেন। তিনি দৃষ্টান্ত ছাড়া কোন শিক্ষাই দিতেন না। 35 যাতে ভাববাদীর মাধ্যমে ঈশ্বর যা বলেছিলেন, তা পূর্ণ হয়:
“আমি দৃষ্টান্তের মাধ্যমে কথা বলব;
জগতের সৃষ্টি থেকে যে সমস্ত বিষয় এখনও গুপ্ত আছে সেগুলি প্রকাশ করব।”(B)
যীশু কঠিন গল্পের ব্যাখ্যা দিলেন
36 পরে যীশু লোকদের বিদায় দিয়ে ঘরে চলে গেলেন। তখন তাঁর শিষ্যরা এসে তাঁকে বললেন, “সেই ক্ষেতের ও শ্যামা ঘাসের দৃষ্টান্তটি আমাদের বুঝিয়ে দিন।”
37 এর উত্তরে যীশু তাদের বললেন, “যিনি ভাল বীজ বোনেন, তিনি মানবপুত্র। 38 জমি বা ক্ষেত হল এই জগত, স্বর্গরাজ্যের লোকরা হল ভাল বীজ। আর শ্যামাঘাস তাদেরই বোঝায়, যারা মন্দ লোক। 39 গমের মধ্যে যে শত্রু শ্যামা ঘাস বুনে দিয়েছিল, সে হল দিয়াবল। ফসল কাটার সময় হল জগতের শেষ সময় এবং মজুররা যারা সংগ্রহ করে, তারা ঈশ্বরের স্বর্গদূত।
40 “শ্যামা ঘাস জড় করে আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। এই পৃথিবীর শেষের সময়েও ঠিক তেমনি হবে। 41 মানবপুত্র তাঁর স্বর্গদূতদের পাঠিয়ে দেবেন, আর যারা পাপ করে ও অপরকে মন্দের পথে ঠেলে দেয়, তাদের সবাইকে সেই স্বর্গদূতরা মানবপুত্রের রাজ্যের মধ্য থেকে একসঙ্গে জড় করবেন। 42 তাদের জ্বলন্ত আগুনের মধ্যে ফেলে দেবেন। সেখানে লোকে কান্নাকাটি করবে ও দাঁতে দাঁত ঘষতে থাকবে। 43 তারপর যারা ধার্মিক প্রতিপন্ন হয়েছে, তারা পিতার রাজ্যে সূর্যের মতো উজ্জ্বল হয়ে দেখা দেবে। যার শোনার মতো কান আছে সে শুনুক!
গুপ্তধন ও মুক্তার দৃষ্টান্ত মূলক গল্প
44 “স্বর্গরাজ্য ক্ষেতের মধ্যে লুকিয়ে রাখা ধনের মতো। একজন লোক তা খুঁজে পেয়ে আবার সেই ক্ষেতের মধ্যে লুকিয়ে রাখল। সে এতে এত খুশী হল যে সেখান থেকে গিয়ে তার সর্বস্ব বিক্রি করে সেই ক্ষেতটি কিনল।
45 “আবার স্বর্গরাজ্য এমন একজন সওদাগরের মতো, যে ভাল মুক্তা খুঁজছিল। 46 যখন সে একটা খুব দামী মুক্তার খোঁজ পেল, তখন গিয়ে তার যা কিছু ছিল সব বিক্রি করে সেই মুক্তাটাই কিনল।
মাছ ধরা জালের দৃষ্টান্ত
47 “স্বর্গরাজ্য আবার এমন একটা বড় জালের মতো যা সমুদ্রে ফেলা হলে তাতে সব রকম মাছ ধরা পড়ল। 48 জাল পূর্ণ হলে লোকরা সেটা পাড়ে টেনে তুলল, পরে তারা বসে ভালো মাছগুলো বেছে ঝুড়িতে রাখল এবং খারাপগুলো ফেলে দিল। 49 জগতের শেষের দিনে এই রকমই হবে। স্বর্গদূতরা এসে ধার্মিক লোকদের মধ্য থেকে দুষ্ট লোকদের আলাদা করবেন। 50 স্বর্গদূতরা জ্বলন্ত আগুনের মধ্যে দুষ্ট লোকদের ফেলে দেবেন। সেখানে লোকে কান্নাকাটি করবে ও দাঁতে দাঁত ঘসবে।”
51 যীশু তাঁর শিষ্যদের জিজ্ঞাসা করলেন, “তোমরা কি এসব কথা বুঝলে?”
তারা তাঁকে বলল, “হ্যাঁ, আমরা বুঝেছি।”
52 তখন তিনি তাদের বললেন, “প্রত্যেক ব্যবস্থার শিক্ষক, যিনি স্বর্গরাজ্যের বিষয়ে শিক্ষা লাভ করেছেন তিনি এমন একজন গৃহস্থের মতো, যিনি তাঁর ভাঁড়ার থেকে নতুন ও পুরানো উভয় জিনিসই বার করেন।”
যীশু নিজের শহরে যাত্রা করলেন
(মার্ক 6:1-6; লূক 4:16-30)
53 যীশু এই দৃষ্টান্তগুলি বলার পর সেখান থেকে চলে গেলেন। 54 তারপর তিনি নিজের শহরে গিয়ে সেখানে সমাজ-গৃহে তাদের মধ্যে শিক্ষা দিতে লাগলেন। তাঁর কথা শুনে লোকেরা আশ্চর্য হয়ে গেল। তারা বলল, “এই জ্ঞান ও এইসব অলৌকিক কাজ করার ক্ষমতা এ কোথা থেকে পেল? 55 এ কি সেই ছূতোর মিস্ত্রির ছেলে নয়? এর মায়ের নাম কি মরিয়ম নয়? আর এর ভাইদের নাম কি যাকোব, যোষেফ, শিমোন ও যিহূদা নয়? 56 আর এর সব বোনেরা এখানে আমাদের মধ্যে কি থাকে না? তাহলে কোথা থেকে সে এসব পেল?” 57 এইভাবে তাঁকে মেনে নিতে তারা মহা সমস্যায় পড়ল।
কিন্তু যীশু তাদের বললেন, “নিজের গ্রাম ও বাড়ি ছাড়া আর সব জায়গাতেই ভাববাদী সম্মান পান।” 58 তাঁর প্রতি লোকদের অবিশ্বাস দেখে তিনি সেখানে বেশী অলৌকিক কাজ করলেন না।
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International