M’Cheyne Bible Reading Plan
লোকদের স্মরণের জন্য শিলাখণ্ডসমূহ
4 সকলে যর্দন নদী পেরিয়ে এলে প্রভু যিহোশূয়কে বললেন, 2 “বারো জনকে এবার বেছে নাও। প্রত্যেক পরিবারগোষ্ঠী থেকে একজন করে নেবে। 3 নদীর যেখানে যাজকরা দাঁড়িয়ে আছেন সেদিকে তাদের তাকাতে বলো। সেখানে বারোটি শিলা তাদের খুঁজে নিতে নির্দেশ দাও। ঐ বারোটি শিলা বহন করো। আজ রাত্রে যেখানে থাকবে সেখানে ঐগুলো রেখে দেবে।”
4 সেই মত যিহোশূয় প্রতি পরিবারগোষ্ঠী থেকে একজন করে লোক বেছে নিলেন। তিনি সেই বারো জনকে এক সঙ্গে ডাকলেন। 5 যিহোশূয় তাদের বললেন, “নদীর যেখানে তোমাদের প্রভু ঈশ্বরের পবিত্র সিন্দুক রয়েছে সেখানে যাও। তোমরা প্রত্যেকে একটি করে পাথর খুঁজে নেবে। ইস্রায়েলের বারোটি পরিবারগোষ্ঠীর প্রত্যেক জনের জন্য একটি করে পাথর। ঐ পাথর কাঁধে তুলে নাও। 6 এইসব পাথর তোমাদের কাছে এক একটা প্রতীকের মতো। ভবিষ্যতে তোমাদের সন্তান-সন্ততিরা জিজ্ঞাসা করবে, ‘এইসব পাথরের অর্থ কি?’ 7 তোমরা তাদের বলবে যে প্রভু যর্দন নদীর স্রোত বন্ধ করে দিয়েছিলেন। যখন সাক্ষ্যসিন্দুকটিকে যর্দন নদী পার করানো হচ্ছিল তখন জল তার প্রবাহ বন্ধ রেখেছিল। পাথরগুলো ইস্রায়েলের লোকদের কাছে এইসব ঘটনার চিরকালের স্মারক হয়ে থাকবে।”
8 ইস্রায়েলবাসীরা সেই মত যিহোশূয়র আদেশ পালন করল। তারা যর্দন নদীর মাঝখান থেকে বারো খানা পাথর তুলে নিল। বারোটি পরিবারবর্গের প্রত্যেকের জন্য একটি করে পাথর ছিল। যেমন ভাবে প্রভু যিহোশূয়কে বলেছিলেন ঠিক তেমনি ভাবেই লোকরা পাথর বয়ে নিয়ে চলল। তারপর যেখানে তারা তাঁবু গেড়েছিল সেখানে ঐগুলো রাখল। 9 (যিহোশূয় যর্দন নদীর মাঝখানেও বারোটি পাথর রেখেছিলেন, ঠিক সেই জায়গাতেই যেখানে যাজকরা পবিত্র সিন্দুক কাঁধে নিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। আজও ঐ জায়গায় পাথরগুলো দেখা যায়।)
10 প্রভু যিহোশূয়কে লোকদের কি করতে হবে তা জানাতে আদেশ দিলেন। সেগুলো মোশি যিহোশূয়কে পালন করার জন্য বলেছিলেন। তাই পবিত্র সিন্দুক বহনকারী যাজকরা মাঝনদীতে দাঁড়িয়ে রইলেন যতক্ষণ না যিহোশূয় লোকদের নির্দেশ দেওয়া শেষ করলেন। লোকরা দ্রুত নদী পেরোতে লাগল। 11 তারা নদী পেরোনোর পালা শেষ করল। তারপর যাজকরা তাদের সামনে দিয়ে প্রভুর সিন্দুক বহন করে চললেন।
12 রূবেণের লোকরা, গাদ পরিবারগোষ্ঠী এবং মনঃশির পরিবারগোষ্ঠীর অর্ধেক লোকরা মোশির নির্দেশ পালন করল। এরা অন্যান্য লোকদের চোখের সামনে নদী পেরোল। এরা যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত ছিল। ইস্রায়েলের বাকী লোকদের তারা সাহায্য করতে যাচ্ছিল যাতে তারা ঈশ্বরের প্রতিশ্রুত ভূখণ্ডের দখল নিতে পারে। 13 প্রায় 40,000 সৈন্য যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হয়ে প্রভুর সামনে দিয়ে চলে গেল। যিরীহোর সমতলভূমির দিকে তারা অভিযান করেছিল।
14 সেদিন থেকে প্রভু সমস্ত ইস্রায়েলবাসীদের জন্য যিহোশূয়কে একজন মহাপুরুষে পরিণত করলেন। সেদিন থেকে লোকরা তাঁকে সম্মান প্রদর্শন করতে শুরু করল। যেমন ভাবে তারা মোশিকে শ্রদ্ধা করত, সে ভাবেই তারা যিহোশূয়কে শ্রদ্ধা করতে লাগল।
15 সিন্দুকবাহী যাজকরা নদীতে দাঁড়িয়ে রয়েছেন। প্রভু যিহোশূয়কে বললেন, 16 “যাজকদের নদী থেকে চলে আসতে বলো।”
17 যিহোশূয় সেই মতো যাজকদের আদেশ দিলেন। তিনি বললেন, “যর্দন নদী থেকে আপনারা বেরিয়ে আসুন।”
18 যাজকরা যিহোশূয়র আদেশ পালন করলেন। সিন্দুক বহন করে তাঁরা নদী থেকে উঠে এলেন। নদীর এপারে যখন তাঁরা পা রাখলেন তখন আবার নদী বইতে শুরু করল। আবার নদী আগের মতোই কুলপ্লাবী হয়ে উঠল।
19 প্রথম মাসের দশম দিনে তাঁরা যর্দন নদী অতিক্রম করলেন। তাঁরা যিরীহোর পূর্ব দিকে গিল্গল নামক একটি জায়গায় তাঁবু খাটালেন। 20 তাঁরা যর্দন নদী থেকে পাওয়া বারোটি পাথর বয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন। গিল্গলে যিহোশূয় সেইসব পাথর স্থাপন করলেন। 21 যিহোশূয় তাঁদের বললেন, “ভবিষ্যতে তোমাদের সন্তানরা তাদের মাতা-পিতার কাছে জিজ্ঞাসা করবে, ‘এসব পাথরের অর্থ কি?’ 22 তোমরা তাদের বলবে, ‘এসব পাথর আমাদের মনে করিয়ে দেয়, কিভাবে শুকনো জমির ওপর দিয়ে ইস্রায়েলের লোকরা যর্দন নদী পেরিয়ে গিয়েছিল। 23 প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর, যর্দন নদীর প্রবাহ বন্ধ করে দিয়েছিলেন যাতে তোমরা ঐ শুকনো জমির ওপর দিয়ে পেরিয়ে যেতে পারো; ঠিক যেমনটি হয়েছিল, যখন প্রভু লোহিত সাগরের জলপ্রবাহ বন্ধ করে দিয়েছিলেন যাতে আমরা ঐ অংশটি শুকনো জমির ওপর দিয়ে পেরিয়ে যেতে পারি।’ 24 প্রভু এই কাজ করেছিলেন যাতে এই দেশের সমস্ত সম্প্রদায়ের মানুষ জানতে পারে তিনি কতটা শক্তিমান। তাহলে এই দেশের সমস্ত সম্প্রদায়ের মানুষ প্রভু, তোমাদের ঈশ্বরের মহাশক্তিকে চিরকাল ভয় করে চলবে।”
মন্দির পর্যন্ত আরোহণের একটি গীত।
129 সারা জীবন ধরে আমার অনেক শত্রু ছিলো।
হে ইস্রায়েল, আমাকে ঐ শত্রুদের সম্পর্কে বল।
2 সারা জীবন ধরে আমার অনেক শত্রু ছিলো।
কিন্তু তারা কখনই জয়ী হয় নি।
3 আমার পিঠে গভীর ক্ষত না হওয়া পর্যন্ত তারা আমায় মেরেছিল।
আমার দীর্ঘ গভীর ক্ষত হয়েছিল।
4 কিন্তু মঙ্গলময় প্রভু দড়ি কেটে দিয়েছিলেন।
আমাকে ঐ মন্দ লোকদের হাত থেকে মুক্ত করেছিলেন।
5 যারা সিয়োনকে ঘৃণা করতো তারা পরাজিত হয়েছে।
যুদ্ধ থামিয়ে দিয়ে ওরা দৌড়ে পালিয়ে গেছে।
6 ঐ লোকগুলো ছাদের ওপর জন্মানো ঘাসের মত।
সেই ঘাস বেড়ে ওঠার আগেই মারা যায়।
7 একজন শ্রমিক সেই ঘাস থেকে এক মুঠো দানাও পায় না।
এক গাদা দানার জন্য সেখানে যথেষ্ট ছিল না।
8 পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় কোনও লোকে বলবে না “প্রভু তোমায় আশীর্বাদ করুন।”
ওদের অভিনন্দন জানিয়ে লোকে বলবে না, “প্রভুর নামে আমরা তোমায় আশীর্বাদ করি।”
মন্দির পর্যন্ত আরোহণের একটি গীত।
130 হে প্রভু, আমি গভীর সংকটের মধ্যে পড়েছি,
তাই সাহায্যের জন্য আমি আপনাকে ডাকছি।
2 হে আমার প্রভু, আমার কথা শুনুন।
সাহায্যের জন্য আমার প্রার্থনা শুনুন।
3 হে প্রভু, আপনি যদি লোকদের তাদের পাপ সমূহের জন্য শাস্তি দেন
তাহলে কেউই আর জীবিত থাকবে না।
4 প্রভু আপনার লোকদের ক্ষমা করে দিন।
তাহলে আপনার উপাসনা করার মত লোক থাকবে।
5 প্রভু আমায় সাহায্য করবেন আমি এই প্রতীক্ষায় রয়েছি।
আমার আত্মা তাঁর জন্য প্রতীক্ষা করে।
প্রভু যা বলেন আমি তা বিশ্বাস করি।
6 আমি আমার প্রভুর প্রতীক্ষায় রয়েছি,
যেমন একজন প্রহরী সকাল হওয়ার প্রতীক্ষায় থাকে।
7 হে ইস্রায়েল, প্রভুকে বিশ্বাস কর।
প্রকৃত প্রেম একমাত্র প্রভুতেই খুঁজে পাওয়া যায়।
প্রভু আমাদের বারে বারে রক্ষা করেন
8 এবং প্রভু ইস্রায়েলকে তাদের সব পাপের জন্যই ক্ষমা করবেন।
মন্দির পর্যন্ত যাওয়ার একটি গীত।
131 হে প্রভু, আমি অহঙ্কারী নই।
আমি কোন গুরুত্বপূর্ণ একজন ব্যক্তি হবার ভান করি না।
এমন কি আমি বিরাট কিছু করবার চেষ্টাও করি না।
আমি নিজেকে এমন কোন ব্যাপারে জড়াই না, যা খুব বড় ও আমার অসাধ্য।
2 আমি শান্ত, আমার আত্মা শান্ত।
মায়ের কোলে পরিতৃপ্ত শিশুর মত
আমার আত্মা শান্তিতে মগ্ন।
3 ইস্রায়েল (তুমি) প্রভুকে বিশ্বাস কর।
তাঁকে এখন বিশ্বাস কর, তাঁকে চিরদিন বিশ্বাস কর!
64 আপনি যদি আকাশ ছিঁড়ে খুলে ফেলে পৃথিবীতে এসে পড়েন
তবে সব পরিবর্তন হয়ে যাবে।
পাহাড় আপনার সামনে গলে যাবে।
2 জ্বলন্ত গুল্মলতার মতো পাহাড় পুড়বে।
আগুনের ওপর জলের মতো পাহাড় সেদ্ধ হবে।
তখন আপনার শত্রুরা আপনার বিষয়ে জানতে পারবে।
তারা যখন আপনাকে দেখবে তখন প্রত্যেক জাতিই ভয় পাবে।
3 কিন্তু সত্যিই আমরা এসব চাই না।
আপনার সামনে পাহাড় গলে যাবে।
4 আপনার লোকরা সত্যিই আপনার কথা শোনেনি।
আপনার লোকরা কখনও আপনার কথা শোনেনি।
কেউ কখনও আপনার মতো একজন ঈশ্বর দেখেনি।
আপনিই একমাত্র, আর কোন ঈশ্বর নেই।
যদি লোকরা ধৈর্য্য সহকারে আপনার সাহায্যের জন্য অপেক্ষা করে
তবেই আপনি তাদের জন্য মহান কাজ করবেন।
5 যারা ভাল কাজ করে তাদের সঙ্গেই আপনি থাকেন।
যে পথে আপনি চান সেই পথেই তাঁরা জীবনযাপন করেন।
কিন্তু অতীতে আমরা পাপ করেছি
এবং তাই আপনি ক্রুদ্ধ ছিলেন।
কিন্তু এখন আমরা কিভাবে রক্ষা পাবো?
6 আমরা সবাই পাপের জন্য নোংরা হয়ে উঠেছি।
এমন কি আমাদের ভাল কাজও অশুদ্ধ।
আমাদের ভালো কাজগুলো রক্তে রঞ্জিত পোশাকের মত।
আমরা সবাই মরা পাতার মত।
আমাদের পাপ আমাদের বাতাসের মতো বয়ে নিয়ে চলেছে।
7 আমরা আপনার উপাসনা করি না।
আমরা আপনার নামে বিশ্বাস রাখি না।
আমরা আপনাকে অনুসরণ করতে উৎসাহিত নই।
তাই আপনি আপনার মুখ আমাদের কাছ থেকে লুকিয়ে রেখেছেন।
আপনি আমাদের পাপের জন্য আমাদের গলিয়ে দিয়েছেন।
8 কিন্তু প্রভু আপনি আমাদের পিতা।
আমরা মাটির পিণ্ডের মতো এবং আপনি মৃৎশিল্পী।
আপনার হাত আমাদের সৃষ্টি করেছে।
9 প্রভু, আমাদের ওপর ক্রোধ পুষে রাখবেন না।
আমাদের পাপ চিরকাল মনে রাখবেন না।
আমাদের দিকে দয়া করে তাকান!
আমরা আপনারই লোক।
10 আপনার পবিত্র শহরগুলি পরিত্যক্ত।
সেই শহরগুলি এখন মরুভূমির মতো।
সিয়োনও একটা মরুভূমি! জেরুশালেম ধ্বংসপ্রাপ্ত!
11 আমাদের পূর্বপুরুষরা আপনার পবিত্র মন্দিরে আপনার উপাসনা করেছে।
আমাদের মন্দির ছিল চমৎকার কিন্তু সেই মন্দির পুড়ে গিয়েছে।
আমাদের সমস্ত মূল্যবান বিষয় সম্পদগুলি ধ্বংস হয়ে গেছে।
12 এইসব জিনিস কি আপনাকে আমাদের প্রতি আপনার ভালবাসা দেখানো থেকে দূরে রাখবে?
আপনি কি নীরবতা চালিয়ে যাবেন?
আপনি কি আমাদের চিরকাল শাস্তি দেবেন?
কিছু ইহুদী যীশুর সমালোচনা করলেন
(মার্ক 2:23-28; লূক 6:1-5)
12 সেই সময় একদিন যীশু এক বিশ্রামবারে শস্য ক্ষেতের মধ্য দিয়ে যাচ্ছিলেন। শিষ্যদের খিদে পাওয়ায় তাঁরা গমের শীষ ছিঁড়ে ছিঁড়ে খেতে লাগলেন। 2 কিন্তু ফরীশীরা তা দেখে যীশুকে বললেন, “দেখ! বিশ্রামবারে যা করা নিয়ম বিরুদ্ধ, তোমার শিষ্যরা তাই করছে।”
3 তখন যীশু তাঁদের বললেন, “দায়ূদ ও তাঁর সঙ্গীদের যখন খিদে পেয়েছিল তখন তিনি কি করেছিলেন তা কি তোমরা পড় নি? 4 তিনি তো ঈশ্বরের মন্দিরে ঢুকে সেই পবিত্র রুটি খেয়েছিলেন। দায়ূদ ও তাঁর সঙ্গীদের অবশ্যই তা খাওয়া ন্যায়সঙ্গত ছিল না, কেবল যাজকরাই তা খেতে পারতেন। 5 এছাড়া তোমরা কি মোশির বিধি-ব্যবস্থা পড়নি যে বিশ্রামবারে মন্দিরের মধ্যে যে যাজকরা কাজ করেন তাঁরাও বিশ্রামবারের বিধি-ব্যবস্থা লঙ্ঘন করেন; আর তার জন্য তাদের কোন দোষ হয় না? 6 কিন্তু আমি তোমাদের বলছি, মন্দির থেকেও মহান কিছু এখানে আছে। 7 ‘বলিদান ও নৈবেদ্য থেকে আমি দয়াই চাই।’(A) শাস্ত্রের এই বাণীর অর্থ কি তা যদি তোমরা জানতে, তবে যারা দোষী নয় তাদের তোমরা দোষী করতে না।
8 “কারণ মানবপুত্র বিশ্রামবারেরও প্রভু।”
যীশু পঙ্গু রোগীকে সুস্থ করেন
(মার্ক 3:1-6; লূক 6:6-11)
9 এরপর যীশু সেখান থেকে তাদের সমাজ-গৃহে গেলেন। 10 সেখানে একজন লোক ছিল, যার একটা হাত শুকিয়ে পঙ্গু হয়ে গিয়েছিল। যীশুকে দোষী করবার উদ্দেশ্য নিয়ে লোকরা তাঁকে জিজ্ঞেস করল, “মোশির বিধি-ব্যবস্থা অনুসারে বিশ্রামবারে কি রোগীকে সুস্থ করা উচিত?”
11 কিন্তু তিনি তাদের বললেন, “ধর তোমাদের মধ্যে কারও একটা ভেড়া আছে, সেই ভেড়াটা যদি বিশ্রামবারে গর্তে পড়ে যায়, তবে তুমি কি তাকে ধরে তুলবে না? 12 আর ভেড়ার চেয়ে মানুষের মূল্য অনেক বেশী। তাই মোশির বিধি-ব্যবস্থা অনুসারে বিশ্রামবারে ভাল কাজ করা ন্যায়সঙ্গত।”
13 তারপর যীশু সেই লোকটিকে বললেন, “তোমার হাতটা বাড়িয়ে দাও।” সে তার হাতটা বাড়িয়ে দিলে পর সেটা ভাল হয়ে অন্য হাতটার মতো হয়ে গেল। 14 তখন ফরীশীরা বাইরে গিয়ে যীশুকে মেরে ফেলার জন্য চক্রান্ত করতে লাগল।
যীশু ঈশ্বরের মনোনীত দাস
15 কিন্তু যীশু সে কথা জানতে পেরে সেখান থেকে চলে গেলেন। অনেক লোক তাঁর পিছনে পিছনে চলতে লাগল। তাদের মধ্যে যারা রোগী ছিল, তিনি তাদের সকলকে সুস্থ করলেন। 16 কিন্তু তাঁর এই কাজের কথা সকলকে বলে বেড়াতে তিনি তাদের দৃঢ়ভাবে নিষেধ করে দিলেন। 17 আর এইভাবে তাঁর বিষয়ে ভাববাদী যিশাইয়র মাধ্যমে বলা ঈশ্বরের বাণী পূর্ণ হল:
18 “এই আমার দাস,
একে আমি মনোনীত করেছি।
আমার অতি প্রিয় জন,
যার উপর আমি সন্তুষ্ট।
আমি তাঁর উপরে আমার আত্মার প্রভাব রাখব,
তাতে তিনি অইহুদীদের কাছে ন্যায়নীতির বাণী প্রচার করবেন।
19 তিনি কলহ বিবাদ করবেন না,
লোকেরা পথে ঘাটে তাঁর গলার স্বর শুনবে না।
20 মচকানো বেতগাছ তিনি ভাঙবেন না,
মিট্-মিট্ করে জ্বলতে থাকা পলতেকে তিনি নিভিয়ে দেবেন না
যতদিন না ন্যায়নীতিকে জয়ী করেন ততদিন।
21 সর্বজাতির লোক তাঁর ওপর প্রত্যাশা রাখবে।”(B)
ঈশ্বর প্রদত্ত যীশুর পরাক্রম
(মার্ক 3:20-30; লূক 11:14-23; 12:10)
22 সেই সময় লোকেরা ভূতে পাওয়া একজন লোককে যীশুর কাছে নিয়ে এল। লোকটা অন্ধ ও বোবা ছিল। যীশু তাকে সুস্থ করলেন: তাতে সে দেখতে পেল ও কথা বলতে পারল। 23 এই দেখে লোকেরা বিস্মিত হয়ে বলল, “ইনিই কি দায়ূদের সন্তান?”
24 ফরীশীরা একথা শুনে বললেন, “এ তো ভূতদের শাসনকর্তা বেল্সবূলের[a] শক্তিতে ভূতদের তাড়ায়।”
25 যীশু ফরীশীদের মনের কথা বুঝতে পেরে তাদের বললেন, “বিবাদে বিভক্ত যে কোন রাজ্যই ধ্বংস হয়ে যায়। যে শহর বা পরিবার নিজেদের মধ্যে বিবাদে বিভক্ত তা টিকে থাকতে পারে না। 26 শয়তান যদি ভূতকে তাড়ায় তবে সে নিজেই নিজের বিরুদ্ধে ভাগ হয়ে গেলে তার রাজ্য কি করে টিকে থাকবে? 27 আমি যদি বেল্সবূলের শক্তিতে ভূত তাড়াই, তবে তোমাদের লোকেরা কার শক্তিতে তাদের তাড়ায়? সুতরাং তোমাদের নিজেদের অনুগামীরাই প্রমাণ করবে যে তোমরা ভুল বলছ। 28 কিন্তু আমি যদি ঈশ্বরের আত্মার শক্তিতে ভূতদের তাড়াই, তবে ঈশ্বরের রাজ্য তো তোমাদের কাছে এসে গেছে। 29 আবার বলছি, কোন শক্তিমান লোককে আগে না বেঁধে কেউ কি তার বাড়িতে ঢুকে তার সবকিছু লুট করতে পারে? তাকে বাঁধবার পর তবেই তো তার বাড়ির সবকিছু লুট করতে পারবে। 30 যে আমার পক্ষ নয়, সে আমার বিপক্ষে, যে আমার সঙ্গে কুড়ায়় না, সে তা ছড়াচ্ছে।
31 “তাই আমি তোমাদের বলছি, মানুষের সব পাপ এবং ঈশ্বর-নিন্দার ক্ষমা হবে, কিন্তু পবিত্র আত্মার বিরুদ্ধে কোন অসম্মানজনক কথাবার্তার ক্ষমা হবে না। 32 মানবপুত্রের বিরুদ্ধে কেউ যদি কোন কথা বলে, তাকে ক্ষমা করা হবে, কিন্তু পবিত্র আত্মার বিরুদ্ধে কথা বললে তার ক্ষমা নেই, এযুগে বা আগামী যুগে কখনই না।
কাজ দেখেই লোককে জানা যায়
(লূক 6:43-45)
33 “ভাল ফল পেতে হলে ভাল গাছ থাকা দরকার, কিন্তু খারাপ গাছ থাকলে তোমরা খারাপ ফলই পাবে, কারণ ফল দেখেই গাছ চেনা যায়। 34 তোমরা কালসাপ! তোমাদের মতো দুষ্ট লোকেরা কি করে ভাল কথা বলতে পারে? মানুষের অন্তরে যা আছে, মুখ দিয়ে তো সে কথাই বার হয়। 35 ভাল লোক তার অন্তরে ভাল কথাই সঞ্চিত রাখে, আর ভাল কথাই বলে; কিন্তু যার অন্তরে মন্দ বিষয় থাকে, সে তার মুখ দিয়ে মন্দ কথাই বলে। 36 আমি তোমাদের বলছি, লোকে যত বেহিসেবী কথা বলে, বিচারের দিনে তার প্রতিটি কথার হিসাব তাদের দিতে হবে। 37 তোমাদের কথার সুত্র ধরেই তোমাদের নির্দোষ বলা হবে, অথবা তোমাদের কথার ওপর ভিত্তি করেই তোমাদের দোষী সাব্যস্ত করা হবে।”
ইহুদীরা যীশুর কাছে প্রমাণ চাইলেন
(মার্ক 8:11-12; লূক 11:29-32)
38 এরপর কয়েকজন ফরীশী ও ব্যবস্থার শিক্ষক যীশুর কাছে এসে বললেন, “হে গুরু, আমরা আপনার কাছ থেকে কোন চিহ্ন বা অলৌকিক কাজ দেখতে চাই।”
39 যীশু তাদের বললেন, “এ যুগের দুষ্ট ও পাপী লোকেরা চিহ্নের খোঁজ করে; কিন্তু ভাববাদী যোনার চিহ্ন ছাড়া আর কোন চিহ্নই তাদের দেখান হবে না। 40 যোনা যেমন সেই বিরাট মাছের পেটে তিন দিন তিন রাত ছিলেন, তেমনই মানবপুত্র তিন দিন তিন রাত পৃথিবীর অন্তঃস্থলে কাটাবেন। 41 বিচারের দিনে নীনবীয় লোকেরা এই কালের লোকদের বিরুদ্ধে উঠে দাঁড়িয়ে তাদের দোষী করবে, কারণ নীনবীয় লোকেরা যোনার প্রচারের ফলে তাদের মন ফেরাল। আর দেখ, যোনার চেয়ে এখানে আরও একজন মহান আছেন।
42 “বিচারের দিনে দক্ষিণ দেশের রাণী উঠে এই যুগের লোকদের দোষী সাব্যস্ত করবে, কারণ রাজা শলোমনের জ্ঞানের কথা শোনবার জন্য তিনি পৃথিবীর প্রান্ত থেকে এসেছিলেন, আর দেখ শলোমনের চেয়ে মহান একজন এখানে আছেন।
এই যুগের লোকেরা মন্দে পরিপূর্ণ
(লূক 11:24-26)
43 “যখন কোন দুষ্ট আত্মা কোন মানুষের মধ্য থেকে বার হয়ে যায়, তখন সে জলবিহীন শুকনো অঞ্চলে বিশ্রাম পাবার জন্য ঘোরাঘুরি করতে থাকে কিন্তু তা পায় না। 44 তারপর সে বলে, ‘আমি যে ঘর ছেড়ে বেরিয়ে এসেছি, সেখানে ফিরে যাব।’ আর ফিরে এসে দেখে সেই ঘর খালি পড়ে আছে; পরিষ্কার ও সাজানো আছে। 45 পরে সে গিয়ে তার থেকে আরো খারাপ অন্য সাতটা দুষ্ট আত্মাকে সঙ্গে করে নিয়ে আসে। তারপর তারা সকলে সেখানে গিয়ে বাস করতে থাকে, তাতে সেই লোকটার প্রথম অবস্থা থেকে শেষ অবস্থা আরো খারাপ হয়ে ওঠে। এই যুগের মন্দ লোকদের অবস্থাও সেরকম হবে।”
যীশুর অনুগামীরাই তাঁর পরিবার
(মার্ক 3:31-35; লূক 8:19-21)
46 যীশু যখন সমবেত লোকদের সঙ্গে কথা বলছিলেন, তখন তাঁর মা ও ভাইরা এসে তাঁর সঙ্গে কথা বলার ইচ্ছায় বাইরে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছিলেন। 47 সেই সময় একজন লোক তাঁকে বলল, “দেখুন, আপনার মা ও ভাইরা বাইরে দাঁড়িয়ে আছেন, তাঁরা আপনার সঙ্গে কথা বলতে চান।”
48 যীশু তখন তাকে বললেন, “কে আমার মা? কারাই বা আমার ভাই?” 49 এরপর তিনি তাঁর অনুগামীদের দেখিয়ে বললেন, “দেখ! এরাই আমার মা, আমার ভাই। 50 হ্যাঁ, যে কেউ আমার স্বর্গের পিতার ইচ্ছা পালন করে, সেই আমার মা, ভাই ও বোন।”
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International