M’Cheyne Bible Reading Plan
মোশি লোকদের আশীর্বাদ করলেন
33 মৃত্যুর পূর্বে ঈশ্বরের লোক মোশি, ইস্রায়েলের লোকদের এইসব বলে আশীর্বাদ করলেন।
2 “প্রভু সীনয় পর্বত হতে এলেন,
সেয়ীরের গোধূলি বেলায় যেন আলো উদিত হল।
পারণ পর্বত হতে যেন আলো জ্বলে উঠলো।
প্রভু তাঁর 10,000 পবিত্র জনকে তাঁর সঙ্গে নিয়ে এলেন।
ঈশ্বরের পরাক্রমী সৈন্যরা তাঁর পাশে ছিল।
3 হ্যাঁ, প্রভু তাঁর লোকদের ভালবাসেন।
সমস্ত পবিত্র লোকরা তাঁর হাতে রয়েছে।
তারা তাঁর চরণতলে বসে তাঁর শিক্ষাসকল শেখে!
4 মোশি আমাদের বিধি দিলেন।
সেই সব শিক্ষা যাকোবের লোকদের জন্য।
5 সেই সময় ইস্রায়েলের লোকরা
ও তাদের নেতারা এক সাথে জড়ো হল,
আর প্রভু যিশুরূণের (ইস্রায়েলের) রাজা হলেন!
রূবেণের আশীর্বাদ
6 “রূবেণ বেঁচে থাকুক, মারা না যাক। কিন্তু তার পরিবারগোষ্ঠীর লোকসংখ্যা অল্প হোক্!”
যিহূদার আশীর্বাদ
7 যিহূদার বিষয়ে মোশি এই কথা বললেন:
“যিহূদার নেতা সাহায্যের জন্য প্রার্থনা জানালে প্রভু তার প্রার্থনা শুনুন।
তাঁর লোকদের কাছে তাকে নিয়ে আসুন।
তাকে শক্তিশালী করে তার শত্রুদের হারাতে সাহায্য করুন।”
লেবীর আশীর্বাদ
8 লেবীর সম্বন্ধে মোশি এই কথাগুলি বললেন:
“লেবি তোমার প্রকৃত অনুসরণকারী,
উরীম ও তূম্মীম তার সাথে রয়েছে।
মঃসাতে তুমি লেবীর পরীক্ষা করেছিলে।
মরীবার জলের ধারে তুমি তাদের পরীক্ষা করে প্রমাণ করেছিলে যে তারা তোমার।
9 তারা তোমার বিষয়েই বেশী যত্নশীল হে প্রভু, এমনকি নিজেদের পরিবারের থেকেও।
তারা তাদের মাতাপিতাকে উপেক্ষা করেছে,
নিজের ভাইদেরও স্বীকার করেনি।
এমন কি তারা তাদের শিশুদের বিষয়েও মনোযোগ করে নি।
কিন্তু তারা তোমার আদেশসকল পালন করেছে।
তারা তোমার বন্দোবস্ত অনুসরণ করেছে।
10 তারা যাকোবকে তোমার শাসন শিক্ষা দেবে।
তোমার ব্যবস্থা ও আজ্ঞা ইস্রায়েলকে বিধি দেবে।
তারা তোমার সামনে ধূপ জ্বালাবে।
তোমার বেদীতে তারা হোমবলি উৎসর্গ করবে।
11 “প্রভু, লেবীর শক্তিকে আশীর্বাদ কর।
তার হাতের কাজ গ্রহণ কর।
যারা তাদের আক্রমণ করে তাদের ধ্বংস কর।
তার শত্রুদের পরাজিত কর, যেন শত্রুরা আর কখনও ফিরে আক্রমণ করতে না পারে।”
বিন্যামীনের আশীর্বাদ
12 বিন্যামীনের সম্বন্ধে মোশি বললেন:
“প্রভু বিন্যামীনকে ভালবাসেন।
বিন্যামীন নিরাপদেই তাঁর কাছে থাকবে।
প্রভু সবসময় তাকে রক্ষা করেন
এবং প্রভু তার দেশে বাস করবেন।”[a]
যোষেফের আশীর্বাদ
13 যোষেফের সম্বন্ধে মোশি বললেন:
“প্রভু যোষেফের দেশকে আশীর্বাদ করুন।
প্রভু তাদের মাথার উপরের আকাশ থেকে বৃষ্টি আনুন
আর পায়ের তলার মাটি থেকে জল দিন।
14 সূর্য তাদের যেন ভাল ফল দেয়।
প্রত্যেক মাসেই যেন উত্তম ফল হয়।
15 পুরাতন পর্বত সকল ও গিরিমালাগুলি যেন
উত্তম ফল দেয়।
16 পৃথিবী যেন তার উৎকৃষ্ট বিষয়গুলি যোষেফকে দেয়।
যোষেফকে তার ভাইদের থেকে আলাদা করা হয়েছিল।
তাই জ্বলন্ত ঝোপের প্রভু তাঁর উৎকৃষ্ট বিষয় সকল যোষেফকে দিন।
17 যোষেফ শক্তিশালী ষাঁড়ের মত।
তার দুই পুত্র ষাঁড়ের দুই শিঙের মত।
তারা অন্য জাতির লোকদের তাই দিয়ে আক্রমণ করবে
এবং তাদের পৃথিবীর শেষ প্রান্ত পর্যন্ত ঠেলে নিয়ে যাবে।
হ্যাঁ, সেই শিং দুইটি ইফ্রয়িমের দশ হাজার লোক
এবং মনঃশির হাজার লোক।”
সবূলূনের ও ইষাখরের আশীর্বাদ
18 সবূলূন সম্বন্ধে মোশি বললেন:
“সবূলূন, আনন্দিত হও, যখন তুমি বাইরে যাও।
ইষাখর, আনন্দিত হও, তোমার বাসের তাঁবুতে।
19 তারা লোকদের পর্বতে ডেকে নিয়ে যাবে।
সেখানে তারা যথাযথ বলি উৎসর্গ করবে।
তারা সমুদ্র থেকে সম্পদ
এবং সমুদ্রতট থেকে গুপ্তধন আহরণ করবে।”
গাদের জন্য আশীর্বাদ
20 গাদ সম্বন্ধে মোশি বললেন:
“ঈশ্বরের প্রশংসা হোক্ যিনি গাদকে এক বিশাল ভূখণ্ড দিলেন!
গাদ সিংহের মত, সে শুয়ে পড়ে অপেক্ষা করে।
তারপর আক্রমণ করে পশুদের ছিন্ন ভিন্ন করে।
21 সে নিজের জন্য উত্তম অংশ মনোনীত করে
রাজার মত নিজের অংশ নেয়।
লোকদের নেতারা তার কাছে আসে।
প্রভু যা ভাল বলেন সে তাই করে।
সে ইস্রায়েলের লোকদের জন্য যা ন্যায্য তাই করে।”
দানের আশীর্বাদ
22 দান সম্বন্ধে মোশি বললেন:
“দান সিংহ শাবক, সে বাশন থেকে লাফ দেয়।”
নপ্তালির আশীর্বাদ
23 নপ্তালি সম্বন্ধে মোশি বললেন:
“নপ্তালি তুমি অনেক উত্তম বিষয় পাবে।
প্রভু সত্য সত্যই তোমায় আশীর্বাদ করবেন।
গালীল হ্রদের দেশ তুমিই পাবে।”
আশেরের আশীর্বাদ
24 আশের সম্বন্ধে মোশি বললেন:
“পুত্রদের মধ্যে আশেরই সবচেয়ে আশীর্বাদপ্রাপ্ত।
সে তার ভাইদের মধ্যে প্রিয় হোক্, সে তার পা তেলে ধুয়ে নিক।
25 তোমার দরজায় লোহার ও তামার তৈরী তালা ঝুলবে।
তোমার সমস্ত জীবনে তুমি হবে শক্তিমান।”
মোশি ঈশ্বরের প্রশংসা করলেন
26 “হে যিশুরূণ, ঈশ্বরের মত আর কেউ নেই!
ঈশ্বর তোমাকে সাহায্য করতে
তাঁর গৌরবের মেঘে আরোহণ করে আকাশের মধ্য দিয়ে আসেন!
27 ঈশ্বর চিরজীবি।
তিনিই তোমার নিরাপদ স্থান।
ঈশ্বরের পরাক্রম চিরকাল স্থায়ী!
তিনিই তোমাকে রক্ষা করেন।
ঈশ্বর তোমার শত্রুকে তোমার দেশ ত্যাগ করতে বাধ্য করবেন।
তিনি বললেন, ‘শত্রুকে ধ্বংস করো!’
28 সুতরাং ইস্রায়েল নিরাপদে বাস করবে,
যাকোবের কূপ তাদেরই অধিকারে।
তারা শস্যের ও দ্রাক্ষারসের দেশ পাবে।
আর সেই দেশ পাবে প্রচুর বৃষ্টি।
29 ইস্রায়েল, তুমি আশীর্বাদপ্রাপ্ত,
আর কোন জাতি তোমার মত নয়।
প্রভু তোমার পরিত্রাণ সাধন করলেন।
প্রভু ঢালের মত তোমাকে রক্ষা করেন।
প্রভু শক্তিশালী তরবারির মত।
তোমার শত্রুরা তোমায় ভয় পাবে
এবং তুমি তাদের পবিত্র স্থানগুলি দখল করবে!”
মোশি মারা গেলেন
34 মোশি নবো পর্বতে উঠলেন। তিনি মোয়াবের যর্দন উপত্যকা থেকে পিস্গার চূড়ায় উঠলেন। এটা ছিল যর্দ্দনের ধারে যিরীহোর অপর পারে। প্রভু মোশিকে গিলিয়দ থেকে দান পর্যন্ত সমস্ত দেশ দেখালেন।
2 প্রভু তাকে নপ্তালি, ইফ্রয়িম ও মনঃশির সমস্ত দেশ দেখালেন। তিনি ভূমধ্যসাগর পর্যন্ত যিহূদার সমস্ত দেশ দেখালেন। 3 প্রভু মোশিকে নেগেভ স্থানটি এবং সোর থেকে যে উপত্যকা খেজুর গাছের শহর যিরীহো চলে গেছে তাও দেখালেন। 4 প্রভু মোশিকে বললেন, “এই সেই দেশ, যার বিষয়ে আমি অব্রাহাম, ইস্হাক ও যাকোবের কাছে প্রতিজ্ঞা করেছিলাম। আমি বলেছিলাম, ‘এই দেশ আমি তোমার উত্তরপুরুষদের দেব। আমি তোমায় সেই দেশ দেখতে দিয়েছি, কিন্তু তুমি সেখানে যেতে পারবে না।’”
5 তারপর প্রভুর দাস মোশি মোয়াব দেশে মারা গেলেন। এই রকমই যে ঘটবে তা প্রভু মোশিকে জানিয়েছিলেন। 6 প্রভু মোশিকে মোয়াব দেশে কবর দিলেন। এটি ছিল বৈৎপিয়োরের সামনের উপত্যকা। কিন্তু আজও লোক জানে না মোশির কবরটা ঠিক কোথায় রয়েছে। 7 মারা যাবার সময় মোশির বয়স হয়েছিল 120 বছর। তিনি আগেকার মতই শক্ত সমর্থ ছিলেন এবং তার চোখও ক্ষীণ হয়ে যায় নি। 8 ইস্রায়েলের লোকরা 30 দিন ধরে মোশির জন্য শোক করেছিলেন। সেই শোকের সময় কেটে না যাওয়া পর্যন্ত তারা মোয়াব দেশের যর্দন উপত্যকায় কাটালেন।
যিহোশূয় নতুন নেতা হলেন
9 মোশি যিহোশূয়োর উপরে তাঁর হাত রেখে তাকে নতুন নেতা হিসাবে মনোনীত করেছিলেন। আর তখন নূনের পুত্র যিহোশূয় প্রজ্ঞার আত্মায পূর্ণ হয়েছিলেন। তাই ইস্রায়েলের লোকরা যিহোশূয়োর কথার বাধ্য হতে লাগল। প্রভু মোশিকে যা আজ্ঞা করেছিলেন তারা সেই মত কাজ করতে থাকল।
10 মোশির মত ইস্রায়েলে আর কোন ভাববাদী ছিল না। প্রভু মোশির সামনাসামনি আলাপ করতেন। 11 প্রভু মোশিকে মিশর দেশে মহা পরাক্রমের অলৌকিক কাজ করতে পাঠিয়েছিলেন। ফরৌণ, তার উচ্চপদস্থ কর্মচারী ও মিশরের সমস্ত লোক সেই সব অলৌকিক কাজ দেখেছিল। 12 আর কোন ভাববাদী মোশির মত এত পরাক্রমের ও আশ্চর্য কাজ করেন নি। ইস্রায়েলের সমস্ত লোক তাঁর মহান কাজগুলি দেখেছিল।
কুফ
145 হে প্রভু, আমার সর্বান্তঃকরণ দিয়ে আমি আপনাকে ডাকছি, আমায় উত্তর দিন!
আমি আপনার সমস্ত আজ্ঞাগুলি মান্য করব।
146 প্রভু, আমি আপনাকে ডাকছি।
আমায় রক্ষা করুন! আমি আপনার চুক্তি পালন করবো।
147 আপনার কাছে প্রার্থনা করার জন্য আমি খুব সকালে উঠি।
আপনি যা বলেন আমি তার ওপর নির্ভর করি।
148 আপনার কথা অধ্যয়নের জন্য
আমি অনেক রাত পর্যন্ত জেগে থাকি।
149 হে প্রভু, আপনি প্রেমময় এবং ন্যায়পরায়ণ।
দয়া করে আমার কথা শুনুন এবং আমাকে বাঁচতে দিন।
150 দুষ্ট লোকরা আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে।
ঐ লোকরা আপনার শিক্ষামালা অনুসরণ করে না।
151 প্রভু, আপনি আমার কাছেই আছেন
এবং আপনার সব আজ্ঞাই বিশ্বাস করা চলে।
152 দীর্ঘদিন আগে আমি আপনার চুক্তি থেকে জেনেছি
যে আপনার শিক্ষামালা হবে চিরন্তন।
রেশ
153 প্রভু, আমার দুর্দশা দেখুন এবং আমায় উদ্ধার করুন।
আমি আপনার শিক্ষামালাগুলো ভুলি নি।
154 হে প্রভু, আমার জন্য আপনি লড়াই করুন এবং আমায় রক্ষা করুন।
আপনার প্রতিশ্রুতি অনুসারে আমায় বাঁচতে দিন।
155 দুষ্ট লোকরা জয় করতে পারবে না,
কারণ তারা আপনার বিধি অনুসরণ করে না।
156 প্রভু, আপনি অত্যন্ত সদয়। যেগুলো আপনি যথাযথ বলেন সেই কাজই করুন এবং আমায় বেঁচে থাকতে দিন।
157 আমার অনেক শত্রু আছে যারা আমাকে আঘাত করতে চায়,
কিন্তু আমি আপনার চুক্তি অনুসরণ করা থেকে বিরত হই নি।
158 আমি ঐ বিশ্বাসঘাতকদের দেখি।
প্রভু, তারা আপনার বাক্য অনুসরণ করে না এবং আমি তা ঘৃণা করি।
159 দেখুন, আপনার আজ্ঞা পালনের জন্য আমি আপ্রাণ চেষ্টা করছি।
প্রভু আপনার সব ভালোবাসা দিয়ে আমায় বেঁচে থাকতে দিন।
160 একেবারে শুরু থেকে আপনার প্রত্যেকটি বাক্যকেই নির্ভর করা যাবে।
প্রভু, আপনার সমস্ত ভালো ও ন্যায্য বিধিগুলো চিরদিনই থাকবে।
শিন্
161 শক্তিশালী নেতারা বিনা কারণে আমায় আক্রমণ করেছিলো।
কিন্তু আমি একমাত্র আপনার বিধিকে ভয় ও শ্রদ্ধা করেছিলাম।
162 হে প্রভু, আপনার বাক্যসমুহ আমাকে খুশী করে,
একটি লোক প্রচুর সম্পদ খুঁজে পেলে যেমন সুখী হয় তেমন সুখী।
163 আমি মিথ্যাকে ঘৃণা করি! আমি ওসব সহ্য করতে পারি নি।
কিন্তু আমি আপনার শিক্ষামালাকে ভালোবাসি, প্রভু।
164 আপনার ভালো ও ন্যায্য বিধিগুলোর জন্য
আমি দিনে সাতবার আপনার প্রশংসা করি।
165 যারা আপনার শিক্ষাকে ভালোবাসে সেই লোকেরা প্রকৃত শান্তি খুঁজে পাবে।
কোন কিছুই ঐ লোকদের পতন ডেকে আনতে পারবে না।
166 প্রভু, আপনি আমায় রক্ষা করবেন আমি এই জন্য প্রতীক্ষা করছি।
আমি আপনার আজ্ঞাগুলি পালন করেছি।
167 আমি আপনার চুক্তি অনুসরণ করেছি।
প্রভু, আপনার বিধিগুলো আমি প্রচণ্ড ভালোবাসি।
168 আমি আপনার আজ্ঞা এবং আপনার চুক্তি অনুসরণ করেছি।
প্রভু, আমি কি করেছি তার সবই আপনি জানেন।
তৌ
169 প্রভু আমার আনন্দ গীত শুনুন।
আপনার প্রতিশ্রুতি মত আমায় জ্ঞানী করে দিন।
170 প্রভু, আমার প্রার্থনা শুনুন।
আপনার প্রতিশ্রুতি মত আমায় রক্ষা করুন।
171 আমায় আপনি আপনার বিধিগুলো শিখিয়েছেন।
আপনার প্রশংসা আমার ওষ্ঠ থেকে উপছে পড়ে।
172 আপনার বাক্যে আমাকে সাড়া দিতে দিন এবং আমাকে আমার গান গাইতে দিন।
হে প্রভু, আপনার সব বিধিই ভালো।
173 আমি স্থির করেছি আপনার আজ্ঞাই মান্য করবো।
তাই এগিয়ে আসুন এবং আমায় সাহায্য করুন।
174 হে প্রভু, আমি চাই আপনি আমায় রক্ষা করুন।
আপনার শিক্ষামালা আমাকে সুখী করে।
175 আমাকে বাঁচতে দিন এবং আপনার প্রশংসা করতে দিন প্রভু।
আপনার বিধি যেন আমায় সাহায্য করে।
176 হারিয়ে যাওয়া মেষের মত আমি ঘুরে বেড়াচ্ছিলাম অতি দূরে।
হে প্রভু, আমায় খুঁজতে আসুন।
আমি আপনার দাস
এবং আমি আপনার আজ্ঞাগুলি ভুলে যাই নি।
ঈশ্বর আসছেন
60 “জেরুশালেম, আমার আলো উঠে পড়!
তোমার আলো (ঈশ্বর) আসছেন।
তোমার উপর প্রভুর মহিমা প্রতিভাত হবে।
2 অন্ধকার পৃথিবীকে ঢেকে দিয়েছে।
লোকরা অন্ধকারাচ্ছন্ন।
কিন্তু প্রভু তোমার উপর তাঁর কিরণ বিকীরণ করবেন।
তাঁর মহিমা তোমার উপর দেখা যাবে।
3 সব জাতি তোমার আলোর কাছে আসবে।
রাজারাও তোমার উজ্জ্বল আলোর (ঈশ্বর) কাছে আসবেন।
4 তোমার চারপাশে দেখো!
দেখ, লোকরা তোমার চারপাশে জড়ো হচ্ছে
এবং তোমার কাছে আসছে।
তোমার পুত্রদের সঙ্গে দূর দূরান্ত থেকে কন্যারাও আসছে।
5 “ভবিষ্যতে এসব ঘটবে এবং সেই সময় তুমি তোমার লোকদের দেখতে পাবে।
তোমার মুখে সুখের বহিঃপ্রকাশ থাকবে।
প্রথম তুমি ভীত হলেও
পরে উচ্ছসিত হয়ে উঠবে।
সাগর পারের সমস্ত ধনসম্পদ তোমার সামনে রাখা হবে।
জাতিসমূহের ধনসম্পদও তোমার কাছে পৌঁছবে।
6 মিদিয়ন ও ঐফা থেকে উটের দল
তোমার জমি পার হবে।
শিবা থেকে দীর্ঘ উটের সারি আসবে তোমার কাছে।
তারা বয়ে আনবে সোনা ও ধূপ।
তারা প্রভুর প্রশংসা করে গান গাইবে।
7 লোকরা কেদরের সমস্ত মেষকে একত্রিত করে তোমাকে এনে দেবে।
নবায়োত থেকে তারা মেষও আনবে।
তুমি সেগুলি আমার বেদীতে নৈবেদ্য হিসাবে দেবে।
এবং আমি তা গ্রহণ করব।
আমি আমার মন্দির
আরও সুন্দর করে বানিয়ে তুলবো।
8 লোকের দিকে তাকাও।
আকাশে দ্রুত পার হয়ে যাওয়া মেঘের মতো তারা তোমার দিকে অগ্রসর হচ্ছে।
তারা হল খুব দ্রুত বাসায় উড়ে যাওয়া ঘুঘু পাখীদের মত।
9 দূরবর্তী এলাকায় লোকরা আমার জন্য অপেক্ষা করছে।
বিশাল যাত্রীবাহী জাহাজগুলি জলযাত্রার জন্য প্রস্তুত।
এই জাহাজগুলি তোমাদের ছেলেমেয়েদের দূরদেশ থেকে আনার প্রতিক্ষায় রয়েছে।
তারা তাদের ঈশ্বর ইস্রায়েলের পবিত্র একজনকে শ্রদ্ধা জানানোর জন্য
সোনা এবং রূপো নিয়ে আসবে।
প্রভু তোমাদের জন্য চমৎকার কাজ করবেন।
10 অন্য দেশের ছেলেমেয়েরা তোমাদের প্রাচীরগুলো আবার গড়ে তুলবে।
তাদের রাজারা তোমাদের সেবা করবে।
“আমি যখন তোমাদের উপর ক্রুদ্ধ ছিলাম, তখন আমি তোমাদের শাস্তি দিয়েছিলাম।
কিন্তু এখন তোমরা আমার স্বপক্ষে,
এবং আমি তোমাদের জন্য করুণাময় হব।
11 তোমার ফটক সব সময় খোলা থাকবে।
সেগুলি দিনরাত কখনই বন্ধ হবে না।
সব জাতি ও রাজারা তোমাকে তাদের সম্পদ দেবে।
12 কোন জাতি বা দেশ যদি তোমার সেবা না করে তবে তারা ধ্বংস হয়ে যাবে।
13 লিবানোনের সব মহৎ দ্রব্যই তুমি পাবে।
লোকরা তোমাকে পাইন, ফার ও সাইপ্রাসের মতো মূল্যবান গাছ দেবে।
এই গাছগুলি জেরুশালেমে আমার জেরুশালেমস্থিত উপাসনাগৃহকে
আরও সুন্দর করে তৈরি করতে ব্যবহৃত হবে।
এই জায়গাটা আমার সিংহাসনের সামনে চৌকির মতো হবে।
এবং আমি এই জায়গাটিকে যথেষ্ট সম্মান দেব।
14 অতীতে যারা তোমাকে কষ্ট দিয়েছে
তারা এখন তোমার সামনে মাথা নত করবে।
অতীতে যারা তোমাকে ঘৃণা করত
তারা এখন তোমার পায়ে মাথা নত করবে।
তারা তোমাকে ডাকবে, ‘প্রভুর নগরী,’ ‘ইস্রায়েলের পবিত্র একজনের সিয়োন।’
15 “তুমি আর কখনও পরিত্যক্ত হবে না।
তুমি পুনরায় ঘৃণার পাত্র হবে না, তুমি কখনও শূন্য হবে না।
আমি তোমাকে চিরকালের জন্য মহান করে দেব।
তুমি চিরকালের জন্য এখন থেকেই সুখী হবে।
16 জাতিগুলি তোমার প্রয়োজনীয় সব কিছুই দেবে।
তুমি হবে মাতৃদুগ্ধপায়ী শিশুর মতো।
কিন্তু তুমি রাজার ধন ‘পান’ করবে।
তখন তুমি বুঝবে যে তিনি আমি, প্রভু, যিনি তোমাকে রক্ষা করেন।
তুমি জানতে পারবে যাকোবের মহান ঈশ্বর তোমার পরিত্রাতা।
17 “এখন তোমার তামা রয়েছে।
আমি তোমাকে সোনা এনে দেব।
এখন তোমার লোহা রয়েছে।
আমি তোমাকে দেব রূপা।
আমি তোমার কাঠকে তামায় পরিণত করব।
আমি তোমার পাথরকে লোহাতে পরিণত করব।
আমি তোমার শাস্তিকে শান্তিতে রূপান্তরিত করব।
এখন তোমাকে লোকরা কষ্ট দিলেও
পরে তারাই তোমার জন্য ভাল ভাল কাজ করবে।
18 তোমার দেশে আর কখনও হিংসাত্মক ঘটনার খবর থাকবে না।
লোকে আর তোমাকে বা তোমার দেশকে
আক্রমণ করবে না।
তুমি তোমার প্রাচীর সমূহের নাম দেবে ‘পরিত্রাণ’
এবং তোমার ফটকগুলির নাম দেবে ‘প্রশংসা।’
19 “দিনের বেলায় সূর্য আর কখনও তোমার আলো হবে না।
রাত্রে আর কখনও চাঁদ তোমার আলো হবে না।
কারণ প্রভুই তোমার চিরকালের আলো।
তোমার ঈশ্বরই তোমার জ্যোতি।
20 তোমার সূর্য কখনও অস্তমিত হবে না।
তোমার চাঁদ আর কখনও অন্ধকার হবে না।
কারণ প্রভু চিরকালের জন্য তোমার আলো হবেন
এবং শোকের সময় শেষ হবে।
21 “তোমার সব লোক ভাল হবে।
তারা পৃথিবীকে চিরকালের জন্য পাবে।
তাদের আমি সৃষ্টি করেছি।
তারা আমার নিজের হাতে
গড়ে তোলা চমৎকার বৃক্ষ।
22 সব চাইতে ছোট্ট পরিবার হবে বড় পরিবারগোষ্ঠী।
ক্ষুদ্রতম পরিবার হবে শক্তিশালী জাতি।
সঠিক সময়ে,
আমি প্রভু দ্রুত চলে আসব।
আমি এইসব ঘটনাগুলো ঘটাব।”
কুষ্ঠ রোগীকে আরোগ্যদান
(মার্ক 1:40-45; লূক 5:12-16)
8 যীশু সেই পাহাড় থেকে নেমে এলে অনেক লোক তাঁর পিছনে পিছনে চলতে লাগল। 2 সেই সময় একজন কুষ্ঠ রোগী যীশুর কাছে এসে তাঁর সামনে নতজানু হয়ে বলল, “প্রভু, আপনি ইচ্ছে করলেই আমাকে ভাল করে দিতে পারেন।”
3 তখন যীশু সেই কুষ্ঠ রোগীর দিকে হাত বাড়িয়ে তাকে স্পর্শ করলেন। তিনি বললেন, “হ্যাঁ, আমি তাই-ই চাই। তুমি ভাল হয়ে যাও।” সঙ্গে সঙ্গে তার কুষ্ঠ রোগ ভাল হয়ে গেল। 4 তখন যীশু তাকে বললেন, “দেখ, তুমি কাউকে একথা বোলো না, বরং যাও যাজকের কাছে গিয়ে নিজেকে দেখাও; আর গিয়ে মোশির আদেশ অনুসারে নৈবেদ্য উৎসর্গ কর। তাতে তারা জানবে যে তুমি ভাল হয়ে গেছ।”
শতপতির দাসের আরোগ্যলাভ
(লূক 7:1-10; যোহন 4:43-54)
5 এরপর যীশু যখন কফরনাহূম শহরে গেলেন, তখন একজন শতপতি তাঁর কাছে এসে অনুনয় করে বললেন, 6 “প্রভু, আমার চাকরের পক্ষাঘাত হয়েছে, সে বিছানায় পড়ে আছে ও যন্ত্রণায় ছট্ফট্ করছে।”
7 যীশু তাঁকে বললেন, “হ্যাঁ, আমি যাব, এবং তাকে সুস্থ করব।”
8 সেই শতপতি তখন যীশুকে বললেন, “প্রভু, আমি এমন যোগ্য নই যে আমার বাড়ীতে আপনি আসবেন। আপনি কেবল মুখে বলে দিন, তাতেই আমার চাকর ভাল হয়ে যাবে। 9 আমি নিজে অপরের কর্তৃত্বের অধীন আর আমার সৈন্যদের উপরে আমি কর্তৃত্ব করি। আমি কাউকে ‘যাও’ বললে সে যায়, আবার কাউকে ‘এস’ বললে সে আসে; আর আমার চাকরকে ‘এটা কর’ বললে সে তা করে।”
10 যীশু একথা শুনে আশ্চর্য হলেন; যাঁরা তাঁর পিছনে পিছনে যাচ্ছিল তাদের বললেন, “আমি তোমাদের সত্যি বলছি, সমগ্র ইস্রায়েলে আমি এত বেশী বিশ্বাস কারও মধ্যে দেখতে পাইনি। 11 আমি তোমাদের আরো বলছি যে, পূর্ব ও পশ্চিম থেকে অনেকে আসবে আর অব্রাহাম, ইস্হাক ও যাকোবের সঙ্গে স্বর্গরাজ্যে ভোজে বসবে। 12 কিন্তু যাঁরা রাজ্যের উত্তরাধিকারী, তাদের বাইরে অন্ধকারে ফেলে দেওয়া হবে। সেখানে লোকেরা কান্নাকাটি করবে ও যন্ত্রণায় দাঁতে দাঁত ঘষবে।”
13 এরপর যীশু সেই শতপতিকে বললেন, “যাও, তুমি যেমন বিশ্বাস করেছ, তেমনি হোক্।” আর সেই মূহুর্তেই তার চাকর সুস্থ হয়ে গেল।
যীশু অনেক লোককে সুস্থ করলেন
(মার্ক 1:29-34; লূক 4:38-41)
14 যীশু পিতরের বাড়ীতে গিয়ে দেখলেন, পিতরের শাশুড়ীর ভীষণ জ্বর হয়েছে, আর তিনি বিছানায় শুয়ে আছেন। 15 যীশু তাঁর হাত স্পর্শ করা মাত্রই জ্বর ছেড়ে গেল। তখন তিনি বিছানা ছেড়ে উঠে যীশুর সেবা করতে লাগলেন।
16 সন্ধ্যা হলে লোকেরা ভূতে পাওয়া অনেক লোককে যীশুর কাছে নিয়ে এল। আর তিনি তাঁর হুকুমে সেই সব ভূতদের দূর করে দিলেন। এছাড়া তিনি রোগীদের সুস্থ করলেন। 17 এর দ্বারা ভাববাদী যিশাইয়র ভাববাণী পূর্ণ হল:
“তিনি আমাদের দুর্বলতা গ্রহণ করলেন, আমাদের ব্যাধিগুলি বহন করলেন।”(A)
যীশুকে অনুসরণ
(লূক 9:57-62)
18 যীশু যখন দেখলেন যে তাঁর চারপাশে অনেক লোক জড়ো হয়েছে, তখন হ্রদের ওপারে যাওয়ার জন্য অনুগামীদের আদেশ দিলেন। 19 একজন ব্যবস্থার শিক্ষক তাঁর কাছে এসে বললেন, “গুরু, আপনি যেখানে যাবেন আমিও সেখানে যাব।”
20 তখন যীশু তাকে বললেন, “শিয়ালের গর্ত আছে এবং আকাশের পাখীদের বাসা আছে; কিন্তু মানবপুত্রের মাথা গোঁজার ঠাঁই নেই।”
21 তাঁর অনুগামীদের মধ্যে আর একজন বললেন, “প্রভু আগে আমার বাবাকে কবর দিয়ে আসার অনুমতি দিন, তারপর আমি আপনাকে অনুসরণ করব।”
22 কিন্তু যীশু তাকে বললেন, “তুমি আমার সঙ্গে এস, যারা মৃত তারাই মৃতদের কবর দেবে।”
যীশু ঝড় থামালেন
(মার্ক 4:35-41; লূক 8:22-25)
23 এরপর যীশু একটা নৌকাতে উঠলেন আর তাঁর শিষ্যরা তাঁর সঙ্গে গেলেন। 24 সেই হ্রদের মধ্যে হঠাৎ ভীষণ ঝড় উঠল, তাতে নৌকার উপর ঢেউ আছড়ে পড়তে লাগল। যীশু তখন ঘুমোচ্ছিলেন। 25 তাই শিষ্যরা তাঁর কাছে গিয়ে তাঁর ঘুম ভাঙিয়ে বললেন, “প্রভু বাঁচান! আমরা যে ডুবে মরলাম।”
26 তখন যীশু তাঁদের বললেন, “হে অল্প বিশ্বাসীর দল! কেন তোমরা এত ভয় পাচ্ছ?” তারপর তিনি উঠে ঝোড়ো বাতাস ও হ্রদের ঢেউকে ধমক দিলেন, তখন সব কিছু শান্ত হল।
27 এতে শিষ্যরা আশ্চর্য হয়ে বললেন, “ইনি কিরকম লোক? এঁর কথা এমন কি বাতাস ও সাগরও শোনে!”
যীশু দুজন লোকের ভূত ছাড়ালেন
(মার্ক 5:1-20; লূক 8:26-39)
28 যীশু যখন হ্রদের অপর পারে গাদারীয়দের দেশে এলেন সেই সময় ভূতে পাওয়া দুজন লোক কবর থেকে বেরিয়ে তাঁর সামনে এল। তারা এমন ভয়ঙ্কর ছিল যে কোন মানুষ সেই পথ দিয়ে চলতে পারত না। 29 তারা চিৎকার করে বলল, “হে ঈশ্বরের পুত্র, আপনি আমাদের নিয়ে কি করতে চান? নির্দিষ্ট সময়ের আগেই কি আপনি আমাদের নির্যাতন করতে এসেছেন?”
30 সেখান থেকে কিছু দূরে এক পাল শুয়োর চরছিল। 31 তখন ভূতেরা যীশুকে অনুনয় করে বলল, “আপনি যদি আমাদের তাড়িয়েই দেবেন তবে ঐ শুয়োর পালের মধ্যে ঢুকতে হুকুম দিন।”
32 যীশু তাদের বললেন, “তাই যাও!” তখন তারা সেই লোকদের মধ্যে থেকে বার হয়ে এসে সেই শুয়োরগুলির মধ্যে গিয়ে ঢুকল; তাতে সেই শুয়োরের পাল ঢালু পাড় দিয়ে জোরে দৌড়াতে দৌড়াতে হ্রদের জলে গিয়ে ডূবে মরল। 33 যারা সেই পাল চরাচ্ছিল, তারা দৌড়ে পালাল। তারা নগরের মধ্যে গিয়ে সব খবর জানাল। বিশেষ করে সেই ভূতে পাওয়া লোকদের বিষয়ে বলল। 34 তখন নগরের সব লোক যীশুকে দেখার জন্য বার হয়ে এল। তারা যীশুর দেখা পেয়ে তাঁকে অনুনয় করে বলল তিনি যেন তাদের অঞ্চল ছেড়ে চলে যান।
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International