M’Cheyne Bible Reading Plan
যদি কোনো ব্যক্তিকে নিহত পাওয়া যায়
21 “প্রভু তোমাদের ঈশ্বর, তোমাদের যে দেশ দিচ্ছেন, সেখানকার ক্ষেতে যদি তোমরা কোনো মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখ, কিন্তু কে হত্যা করেছে তা যদি জানা না যায়, 2 তখন তোমাদের দলনেতারা এবং বিচারকরা সেখানে যাবে এবং নিহত ব্যক্তির চারদিকের শহরগুলোর দূরত্ব পরিমাপ করবে। 3 যখন তোমরা জানতে পারবে কোন শহরটি নিহত ব্যক্তির সব থেকে কাছে, তখন সেই শহরের দলনেতারা তাদের পশুশালা থেকে এমন একটি গোবৎস নিয়ে আসবে যাকে কখনই কোন কাজে ব্যবহার করা হয় নি এবং যে যোয়ালি বহন করে নি। 4 সেই শহরের দলনেতারা তখন গোবৎসটিকে এমন একটি উপত্যকায় নামিয়ে আনবে যেখানে সবসময় জলের স্রোত বয়। এটিকে অবশ্যই এমন একটি উপত্যকা হতে হবে যা কখনও চাষ করা হয়নি বা যেখানে কিছু রোপণ করা হয়নি। এরপর নেতারা সেই উপত্যকায় গোবৎসটির ঘাড় ভাঙ্গবে। 5 যাজকরা, লেবীর উত্তরপুরুষরা অবশ্যই সেখানে যাবে। (প্রভু তোমাদের ঈশ্বর তাঁর সেবার জন্য এবং তাঁর নামে লোকদের আশীর্বাদ করার জন্য এই যাজকদের নির্বাচিত করেছেন। এবং সমস্ত বিবাদ ও আঘাতের বিচার তাঁরাই করবেন।) 6 নিহত ব্যক্তির সব থেকে কাছের শহরের সমস্ত নেতারা উপত্যকায় যে গোবৎসের ঘাড় ভাঙ্গা হয়েছিল তার ওপরে অবশ্যই তাদের হাত ধোবে। 7 এই নেতারা বলবে, ‘আমরা এই ব্যক্তিকে হত্যা করিনি এবং আমরা এটি ঘটতেও দেখিনি। 8 হে প্রভু, তুমি যে ইস্রায়েলকে রক্ষা করেছিলে তাদেরই শুদ্ধ করো। একজন নিরপরাধ লোককে হত্যা করার দোষ আমাদের ওপর চাপিও না।’ এইভাবে একজন নিরপরাধ লোককে হত্যা করার জন্য ঐ সমস্ত লোকদের দোষ ক্ষমা করা হবে। 9 এইভাবে তোমরা প্রভুর চোখে যা যথার্থ তাই করবে এবং তোমাদের জাতি থেকে নিরপরাধের রক্তপাতের দোষ দূর করবে।
যুদ্ধে বন্দী স্ত্রীলোকরা
10 “তোমরা তোমাদের শত্রুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে গেলে প্রভু তোমাদের ঈশ্বর তাদের পরাজিত করতে তোমাদের সাহায্য করতে পারেন এবং তোমরা তোমাদের শত্রুদের বন্দী করে আনতে পারো। 11 বন্দীদের মধ্যে কোনো সুন্দরী স্ত্রীলোককে দেখে মুগ্ধ হয়ে তোমাদের স্ত্রী হিসেবে তোমরা চাইতে পারো। 12 তখন তাকে তোমার বাড়ীতে নিয়ে আসবে। সে অবশ্যই তার মাথা কামাবে এবং নখ কাটবে। 13 সে যে জামাকাপড়গুলি পরে আছে যার থেকে বোঝা যায় যে সে যুদ্ধে বন্দীনী ছিল, সেগুলি সে অবশ্যই খুলে ফেলবে। সে অবশ্যই পুরো এক মাস তোমার বাড়ীতে থাকবে এবং বাবা মাকে হারানোর জন্য বিলাপ করবে। এরপর তুমি তার কাছে যেতে পার এবং তার স্বামী হতে পার। সে তোমার স্ত্রী হবে। 14 যদি তুমি তার সঙ্গে সুখী না হও, তাহলে তুমি তাকে ত্যাগ করবে এবং তাকে স্বাধীনভাবে চলে যেতে দেবে। তুমি তাকে বিক্রি করতে পারবে না। তুমি কখনই তার সঙ্গে ক্রীতদাসের মতো আচরণ করবে না কারণ তার সঙ্গে তোমার যৌন সম্পর্ক ছিল।
জ্যেষ্ঠাধিকার
15 “কোন ব্যক্তির দু’জন স্ত্রী থাকতে পারে এবং সে একজন স্ত্রীকে আরেকজনের থেকে বেশী ভালোবাসতে পারে। কিন্তু যদি দু’জন স্ত্রীই তার জন্য সন্তান প্রসব করে এবং প্রথম সন্তানটি সে যে স্ত্রীকে ভালোবাসে না তার হয়, 16 তবে সেই ব্যক্তি তার সন্তানদের মধ্যে সম্পত্তির ভাগ করে দেবার সময় তার প্রথমজাত সন্তানের অংশ কখনোই সে যে স্ত্রীকে ভালোবাসে তার পুত্রকে দিতে পারবে না। 17 সেই ব্যক্তি যে স্ত্রীকে ভালোবাসে না তার থেকে জাত তার প্রথম পুত্রের সমস্ত অধিকারগুলি তাকে মেনে নিতে হবে এবং সে তার প্রথম পুত্রকে অবশ্যই তার সম্পত্তির দুই অংশ দেবে, কারণ সেই সন্তান তার প্রথম সন্তান। প্রথমজাত সন্তান হিসাবে সমস্ত অধিকার তার আছে।
অবাধ্য সন্তান
18 “কোন ব্যক্তির এমন এক পুত্র থাকতে পারে যে জেদী ও বিরোধী এবং তার পিতামাতাকে মানে না। তারা সেই পুত্রকে শাস্তি দেয় কিন্তু সে তবুও তাদের কথা শুনতে অস্বীকার করে। 19 তার পিতা এবং মাতা তখন তাকে শহরের সভাস্থলে শহরের নেতাদের কাছে নিয়ে আসবে। 20 তারা শহরের নেতাদের বলবে: ‘আমাদের পুত্র অবাধ্য এবং কোন কিছু মেনে চলতে অস্বীকার করে। আমরা তাকে যা করতে বলি তার কোনও কিছুই সে করে না। সে মদ্যপায়ী এবং পেটুক।’ 21 তখন শহরের লোকরা পাথরের আঘাতে সেই পুত্রকে হত্যা করবে। এইভাবে তোমরা তোমাদের মধ্য থেকে এই দুষ্টকে সরিয়ে দেবে। ইস্রায়েলের সমস্ত লোকরা এই ঘটনা সম্বন্ধে জানবে এবং ভীত হবে।
অপরাধীদের হত্যা করা এবং গাছে ঝোলানো সম্পর্কে
22 “মৃত্যুদণ্ডের উপযুক্ত পাপ করেছে যে ব্যক্তি তাকে হত্যা করে তার শরীরটিকে কোন গাছের ওপরে ঝুলিয়ে দেওয়া হবে। 23 তোমরা সারা রাত ধরে সেই মৃতদেহকে গাছে ঝুলিয়ে রেখো ন। বরং নিশ্চিতভাবে সেই একই দিনে সেই ব্যক্তিকে কবর দিও। কেন? কারণ গাছে ঝোলানো সেই লোকটি ঈশ্বরের দ্বারা অভিশপ্ত। প্রভু তোমাদের ঈশ্বর, তোমাদের যে দেশ দিচ্ছেন সেই দেশকে তোমরা কখনই অশুচি করবে না।
দায়ূদের প্রশংসা গীতগুলির অন্যতম।
108 ঈশ্বর, আমি প্রস্তুত, আমার সমস্ত হৃদয় ও আত্মা দিয়ে
আপনার প্রশংসা গান করার জন্য আমি প্রস্তুত।
2 হে বীণা এবং অন্যান্য তন্ত্রবাদ্য,
সূর্যকে জাগিয়ে দাও!
3 হে প্রভু, বিভিন্ন জাতির মধ্যে আমরা আপনার প্রশংসা করবো।
অন্যান্য লোকদের মাঝে আমরা আপনার প্রশংসা করবো।
4 হে প্রভু, আপনার প্রেম আকাশের চেয়ে উঁচু।
আপনার প্রেম উচ্চতম মেঘের চেয়েও উঁচুতে অবস্থিত।
5 হে ঈশ্বর, স্বর্গের ওপরে উঠুন!
সারা বিশ্বকে আপনার মহিমা দেখতে দিন।
6 হে ঈশ্বর, আপনার মিত্রদের রক্ষার জন্য এটা করুন।
আমার প্রার্থনার উত্তর দিন এবং আপনার পরাক্রমী শক্তি ব্যবহার করুন।
7 ঈশ্বর তাঁর মন্দিরে বলেছেন,
“আমি যুদ্ধে জয়ী হবো এবং জয় করে সুখী হবো!
আমার লোকজনদের মধ্যে আমি এই ভূখণ্ড ভাগ করে দেবো।
আমি ওদের শিখিম উপত্যকা দেবো।
আমি ওদের সুক্কোত উপত্যকা দেবো।
8 গিলিয়দ ও মনঃশিও আমার থাকবে।
ইফ্রয়িম আমার শিরস্ত্রাণ হবে।
যিহূদা হবে আমার বিচারদণ্ড।
9 মোয়াব আমার পা ধোয়ার পাত্র হবে।
ইদোম হবে আমার পাদূকাবাহক দাস।
আমি পলেষ্টীয়দের পরাজিত করবো এবং জয়ধ্বনি দেবো।”
10-11 কে আমাকে শত্রুর দূর্গে নেতৃত্ব দেবে?
কে আমাকে ইদোমের বিরুদ্ধে লড়াই করতে নেতৃত্ব দেবে?
ঈশ্বর একমাত্র আপনিই আমাদের সাহায্য করতে পারেন।
কিন্তু আপনি আমাদের ত্যাগ করেছেন, আপনি আমাদের সৈন্যদের সঙ্গে যান নি!
12 ঈশ্বর আমাদের শত্রুদের পরাজিত করতে আমাদের সাহায্য করুন!
লোকেরা আমাদের সাহায্য করতে পারবে না!
13 একমাত্র ঈশ্বরই আমাদের শক্তিশালী করে তুলতে পারেন।
ঈশ্বরই আমাদের শত্রুদের পরাজিত করতে পারেন!
সঙ্গীত পরিচালকের প্রতি: দায়ূদের একটি প্রশংসা গীত।
109 ঈশ্বর, আমার প্রার্থনা শোনা থেকে বিরত হবেন না!
2 দুষ্ট লোকরা আমার সম্পর্কে মিথ্যা কথা বলছে।
যা সত্য নয় ওরা তাই বলছে।
3 লোকেরা আমার সম্পর্কে অপ্রীতিকর কথাবার্তা বলছে।
অকারণে লোকরা আমায় আক্রমণ করছে।
4 আমি ওদের ভালোবেসেছিলাম, কিন্তু ওরা আমায় ঘৃণা করে।
তাই ঈশ্বর, এখন আমি আপনার কাছে শরণাগত।
5 আমি ওইসব লোকেদের জন্য ভাল কাজই করেছিলাম
কিন্তু ওরা আমার প্রতি মন্দই করেছে।
আমি ওদের ভালোবেসেছিলাম,
কিন্তু ওরা আমায় ঘৃণা করেছে।
6 আমার শত্রু যে মন্দ কাজ করেছে তার জন্য ওকে শাস্তি দিন।
একজন লোককে খুঁজে বার করুন যে প্রমাণ দেবে ও ভুল করেছে।
7 বিচারককে এই সিদ্ধান্ত নিতে দিন যে আমার শত্রু ভুল করেছে এবং সে দোষী।
আমার শত্রুরা যা যা বলে তা যেন ওর পক্ষে অহিতকরই হয়।
8 আমার শত্রুর শীঘ্রই মৃত্যু হোক্।
অন্য লোকরা তার স্থান নিক।
9 আমার শত্রুর সন্তানদের অনাথ
এবং তার স্ত্রীকে বিধবা করে দিন।
10 ওরা যেন ঘর বাড়ী হারিয়ে
ভিখারী হয়ে যায়।
11 আমার শত্রু যার কাছে ঋণী সে যেন ওর সব কিছু নিয়ে নেয়।
আমার শত্রু যে সব জিনিসের জন্য কঠিন পরিশ্রম করেছিল, সেগুলো কোন আগন্তুক এসে নিয়ে যাক।
12 কামনা করি, কোন লোক যেন আমার শত্রুর প্রতি সদয় না হয়।
কামনা করি, কোন লোক যেন ওর ছেলেদের প্রতি ক্ষমা না দেখায়।
13 আমার শত্রুকে সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করে দিন।
পরবর্তী প্রজন্ম যেন সব কিছু থেকে ওর নাম মুছে দেয়।
14 প্রভু যেন আমার শত্রুর পূর্বপুরুষদের পাপ সম্পর্কে অবগত হোন।
ওর মায়ের পাপও যেন কখনও ধুয়ে না যায়।
15 আমি আশা করি প্রভু চিরদিন ওই সব পাপগুলো স্মরণে রাখবেন।
এবং আমি আশা করি, আমার শত্রুকে সম্পূর্ণ ভুলে যেতে তিনি লোকদের বাধ্য করবেন।
16 কেন? কারণ ওই মন্দ লোকটা কোনদিন কোন ভালো কাজ করে নি।
সে কোনদিন কাউকে ভালোবাসে নি।
দরিদ্র ও অসহায় মানুষের জীবনকে সে কঠিন করে তুলেছিলো।
17 ওই লোকটা সর্বদাই অন্যদের অভিশাপ দিতে ভালবাসত।
তাই ওর ক্ষেত্রেই ওই সব মন্দ বিষয় ফলতে দিন।
ওই মন্দ লোকটা কোনদিন চায় নি, অন্য কারো ভালো হোক্।
তাই ওর ভালো হতে দেবেন না।
18 অভিশাপ যেন ওর বস্ত্র হয়।
অভিশাপ যেন ওর তৃষ্ণার জল হয়,
অভিশাপগুলো যেন ওর দেহে মাখা তেল হয়।
19 দুষ্ট লোকে যে পোশাক পরে অভিশাপগুলো যেন সেই পোশাকসমূহ হয়
এবং অভিশাপই যেন ওদের কোমরবন্ধ হয়।
20 আমার শত্রুর প্রতি প্রভু যেন এসব করেন। যারা আমায় খুন করতে চায় তাদের প্রতি প্রভু যেন এসব করেন।
21 প্রভু, আপনি আমার সদাপ্রভু। তাই আমার প্রতি এমন ব্যবহার করুন যা আপনার নামের মর্যাদা এনে দেবে।
আপনার প্রেম খুব মহান, তাই আমায় রক্ষা করুন।
22 আমি নিছক একজন অসহায় দরিদ্র মানুষ।
প্রকৃতই আমি ভগ্ন হৃদয়ের এক দুঃখী মানুষ।
23 আমি এমন অনুভব করি যেন, বেলা শেষের লম্বা ছায়ার মত আমার জীবন শেষ হয়ে গেছে।
আমি নিজেকে অগ্রাহ্য করা ছারপোকার মত মনে করি।
24 ক্ষুধার কারণে আমার হাঁটু দুটো দুর্বল।
ওজন কমে গিয়ে আমি ক্রমশঃই রোগা হয়ে যাচ্ছি।
25 মন্দ লোকরা আমায় অপমান করে।
আমার দিকে তাকিয়ে ওরা মাথা নাড়ায়।
26 প্রভু আমার ঈশ্বর, আমায় সাহায্য করুন।
আপনার প্রকৃত প্রেম প্রদর্শন করুন এবং আমায় উদ্ধার করুন!
27 তখন ওই লোকরা জানতে পারবে যে আপনি আমায় সাহায্য করেছিলেন।
ওরা জানতে পারবে যে আপনার শক্তিই আমাকে সাহায্য করেছিলো।
28 ওই মন্দ লোকরা আমায় অভিশাপ দেয়।
কিন্তু আপনি আমায় আশীর্বাদ করতে পারেন প্রভু।
ওরা আমায় আক্রমণ করেছে, তাই ওদের পরাজিত করুন।
তাহলে আপনার দাস, আমি সুখী হব।
29 আমার শত্রুদের বিব্রত করে দিন!
ওদের বস্ত্রাবরণ হিসেবে ওরা যেন ওদের লজ্জাই পরিধান করে।
30 আমি প্রভুকে ধন্যবাদ দিই।
বহু লোকদের সামনে আমি তাঁর প্রশংসা করি।
31 কেন? কারণ অসহায় লোকদের পাশে প্রভু দাঁড়ান।
ওদের যারা মৃত্যুদণ্ড দিতে চায়, তাদের থেকে ঈশ্বর ওদের রক্ষা করেন।
ঈশ্বর তাঁর পৃথিবী শাসন করেন
48 প্রভু বলেন, “যাকোবের পরিবার আমার কথা শোন!
তোমরা নিজেদের ‘ইস্রায়েল’ বল।
তোমরা এসেছো যিহূদার পরিবার থেকে।
প্রতিশ্রুতি করার জন্য তোমরা প্রভুর নাম করো, তোমরা ইস্রায়েলের ঈশ্বরের প্রশংসা কর।
কিন্তু এসব করার সময়ও তোমরা সৎ ও আন্তরিক নও।”
2 “হ্যাঁ, তারা পবিত্র শহরের নাগরিক।
তারা ইস্রায়েলের ঈশ্বরের ওপর নির্ভর করে।
সর্বশক্তিমান প্রভু হল তাঁর নাম।
3 “কি ঘটবে বহুদিন আগে
আমি তা বলে দিয়েছি।
এবং তারপর হঠাৎই আমি তা ঘটিয়েছি।
4 আমি সেটা করেছিলাম কারণ আমি জানি তোমরা একরোখা জেদী।
আমি যা বলেছিলাম তার কোন কিছুকেই তোমরা বিশ্বাস করনি।
তোমরা ছিলে বড় একরোখা লোহার মত যাকে বাঁকানো যায় না, একরোখা ছিলে ব্রোঞ্জের মতো।
5 তাই বহুদিন আগে আমি বলেছিলাম কি কি ঘটবে।
কোন কিছু ঘটার অনেকদিন আগেই আমি তোমাদের সেই সব জিনিসগুলি ঘটার কথা বলেছিলাম।
আমি এটা করেছিলাম যাতে তোমরা বলতে না পার,
‘আমরা যে সব দেবতাদের তৈরী করেছি তারা এসব করেছে।’
আমি এগুলি করেছি, যাতে তোমরা বলতে না পারো ‘আমাদের প্রতিমা, আমাদের মূর্ত্তি এইসব ঘটিয়েছেন।’”
তাঁদের শুদ্ধ করবার জন্য ঈশ্বর ইস্রায়েলকে শাস্তি দেন
6 “কি ঘটেছে তোমরা দেখেছো, শুনেছোও।
তাই এই খবরগুলি তোমাদের অন্যদেরও বলা উচিৎ।
এখন তোমাদের আমি নতুন জিনিসের কথা জানাব। যা
তোমরা এখনও শোন নি।
7 এইসব ঘটনা আগে কখনও ঘটেনি, এইসব ঘটনা এখনই ঘটে যাচ্ছে।
আজকের আগে এসব কথা তোমরা শোন নি।
তোমরা তাই বলতে পারবে না যে আমরা এইসব ইতিমধ্যেই জেনেছি।
8 তবুও তোমরা আমার কথা শোননি!
তোমরা কোন কিছুই শেখোনি!
আমি যা বলেছি তোমরা তা শুনতে অস্বীকার করেছ।
আমি জানি শুরু থেকেই তোমরা আমার বিরুদ্ধাচরণ করবে।
জন্মাবার সময় থেকেই তোমরা আমার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছ।
9 “কিন্তু আমি ধৈর্য্যশীল থাকব।
আমি এটা নিজের জন্যই করব।
ক্রুদ্ধ না হওয়া এবং তোমাদের ধ্বংস না করার জন্য
লোকে আমার প্রশংসা করবে।
10 “দেখো, আমি তোমাদের বিশুদ্ধ করব।
লোকে রূপোকে খাঁটি করে তুলতে আগুনের ব্যবহার করে।
কিন্তু আমি যন্ত্রণা দিয়ে তোমাদের খাঁটি করে তুলব।
11 আমি নিজের জন্য এইসব করব, নিজের জন্য!
কারণ আমি আমার নামের অসম্মান হতে দিতে পারি না।
আমি অন্য আর কোন কিছুকেই আমার প্রশংসা ও মহিমা নিতে দেব না!
12 “যাকোব আমি তোমাকে আমার লোক বলে ডেকেছি।
তাই আমার কথা শোন!
আমিই আদি!
আমিই অন্ত!
13 আমি নিজের হাতে পৃথিবীর সৃষ্টি করেছি,
আমার ডান হাত সৃষ্টি করেছে আকাশ।
ডাকলেই তারা এক সঙ্গে
আমার সামনে চলে আসবে।
14 “তোমরা সবাই এসো এখানে, আমার কথা শোন!
কোনো মূর্ত্তি কি বলেছে যে এগুলো ঘটবে? না!”
প্রভু যাকে ভালোবাসেন, পছন্দ করেন
বাবিল ও কল্দীয়দের প্রতি যা চাইবে তাই করবেন।
15 প্রভু বলেন, “আমি বলেছি তাকে আমি ডাকব।
আমি তাকে বয়ে আনব!
আমি তাকে সফল করে তুলব!
16 এখানে এস এবং আমার কথা শোন!
বাবিলের জাতি হিসেবে উত্থানের সময় আমি সেখানে ছিলাম।
এবং প্রথম থেকেই আমি স্পষ্ট কথা বলেছি,
যাতে লোকেরা বুঝতে পারে আমি কি বলেছি।”
তখন যিশাইয় বললেন, “এখন প্রভু, আমার সদাপ্রভু আমাকে পাঠিয়েছেন। তাঁর আত্মা তোমাদের এইসব কথা বলবে।” 17 প্রভু, পরিত্রাতা, ইস্রায়েলের পবিত্র একজন বলেন,
“আমিই প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর।
আমি তোমাদের সেই সব জিনিষ শেখাই যা সহায়ক।
তোমাদের যে পথে যাওয়া উচিৎ সেই পথের আমি নেতৃত্ব দেব।
18 তোমরা যদি আমাকে মেনে চলতে
তাহলে তোমাদের জীবনে ভরা নদীর মতো শান্তি আসবে।
সমুদ্রের তরঙ্গের মতো ভাল জিনিস
তোমাদের কাছে আসবে বার বার।
19 তোমরা যদি আমাকে মানতে,
তোমাদের অনেক শিশু সন্তান থাকত, তারা অসংখ্য বালু কণার মতো।
তোমরা যদি আমাকে মানতে, তোমরা ধ্বংস হতে পারতে না।
তোমরা আমার সঙ্গে চালিয়ে যেতে পারতে।”
20 আমার লোকরা বাবিল ত্যাগ করো!
আমার লোকরা কল্দীয়দের কাছ থেকে পালাও।
আনন্দের সঙ্গে লোকদের এই সংবাদ দাও।
পৃথিবীর দূর দূর স্থানে এই বার্তা পৌঁছে দাও!
লোককে বলো, “প্রভু তাঁর ভৃত্য যাকোবকে উদ্ধার করেছেন!”
21 প্রভু তাঁর লোকদের মরুভূমির ওপর দিয়ে নিয়ে গেলেন কিন্তু তারা কখনও তৃষ্ণার্ত হয়নি।
কেন? কারণ প্রভু তাঁর লোকদের জন্য পাথর থেকে জলপ্রবাহের সৃষ্টি করেছিলেন।
তিনি পাথরটি ভাঙলেন
এবং জল প্রবাহিত হতে লাগল!
22 প্রভু আরও বলেছেন,
“শয়তান লোকদের জন্য কোথাও শান্তি থাকবে না!”
বাবিল ধ্বংস হল
18 এইসব ঘটনার পর আমি আর একজন স্বর্গদূতকে স্বর্গ থেকে নেমে আসতে দেখলাম। তিনি মহাপরাক্রান্ত স্বর্গদূত, তাঁর জ্যোতি সমস্ত পৃথিবীকে আলোকিত করে তুলল। 2 তিনি প্রবল শব্দে চেঁচিয়ে উঠলেন:
“পতন হল!
মহানগরী বাবিলের পতন হল!
সে ভূতের আবাসে পরিণত হয়েছে।
সেই নগরী হয়েছে সব রকমের অশুচি আত্মার আবাস।
সে যতো অশুচি পাখীদের বাসা এবং যতো নোংরা
ও ঘৃন্য পশুদের নগরীতে পরিণত হয়েছে।
3 পৃথিবীর সমস্ত মানুষ তার অসৎ যৌন পাপের মদিরা
ও ঈশ্বরের রোষ মদিরা পান করেছে।
পৃথিবীর রাজারা তার সঙ্গে ব্যভিচার করেছে;
আর পৃথিবীর ব্যবসায়ীরা তার অসংযত বিলাসিতার সুবাদে ধনবান হয়ে উঠেছে।”
4 এরপর আমি স্বর্গ থেকে আর একটি কন্ঠস্বর শুনতে পেলাম, সে বলছে:
“হে আমার প্রজারা, ওখান থেকে বেরিয়ে এস,
তোমরা যেন ওর পাপের ভাগী না হও;
আর ওর প্রাপ্য আঘাত যেন তোমাদের ওপর না আসে।
5 কারণ ওর পাপ স্তূপীকৃত হয়ে গগণচুম্বী হয়েছে;
আর ঈশ্বর ওর সব অপরাধ স্মরণ করেছেন।
6 সে অপরের সঙ্গে যেমন ব্যবহার করেছে, তোমরাও তার প্রতি সেরূপ ব্যবহার কর।
সে যেমন কাজ করেছে, তোমরা তার দ্বিগুণ প্রতিফল তাকে দাও।
অপরের জন্য পানপাত্রে সে যে পরিমাণ মেশাতো
তোমরা তার জন্য সেই পাত্রে দ্বিগুণ মেশাও।
7 সে (বাবিল) যত অহঙ্কার ও বিলাসিতায় জীবন কাটাতো
তোমরা তাকে তত যন্ত্রণা ও মনোকষ্ট দাও।
কারণ সে নিজের বিষয়ে বলত, ‘আমি রাণী, রাণীর মতোই সিংহাসনে বসে আছি।
আমি বিধবা নই,
আর আমি কখনই দুঃখ পাব না।’
8 অতএব এক দিনের মধ্যেই তার ওপর এই আঘাত আসবে;
মৃত্যু, শোক ও দুর্ভিক্ষ আর আগুনে
পুড়িয়ে তাকে ধ্বংস করা হবে।
কারণ প্রভু ঈশ্বর যিনি তার বিচার করেছেন তিনি সর্বশক্তিমান।
9 “জগতের যে সব রাজারা তার সঙ্গে যৌন পাপে লিপ্ত হয়েছে ও বিলাসে কাটিয়েছে, তারা তাকে জ্বলতে দেখে ও তার থেকে ধোঁয়া উঠতে দেখে বিলাপ ও হাহাকার করবে।” 10 তার যন্ত্রণার ভয়াবহতা দেখে ভয়ে দূরে দাঁড়িয়ে বলবে:
‘হায়! হায়! হে মহান নগরী!
ও শক্তিশালী বাবিল নগরী!
এক ঘন্টার মধ্যেই তোমার ওপর শাস্তি নেমে এল!’
11 “আর পৃথিবীর ব্যবসায়ীরা তার (বাবিলের) জন্য কাঁদছে ও হাহাকার করছে, কারণ তাদের বাণিজ্য দ্রব্য আর কেউ কেনে না। 12 তাদের বাণিজ্যদ্রব্যগুলি ছিল: সোনা, রূপো, মণি, মুক্তা, মসীনার কাপড়, বেগুনী রঙের কাপড়, রেশমের কাপড়, লাল রঙের কাপড়, সব রকমের চন্দন কাঠ, হাতির দাঁতের তৈরী বিভিন্ন জিনিসপত্র, মূল্যবান কাঠ, পিতলের, কাঁসার, লোহার ও মার্বেল পাথরের সব রকমের পাত্র, 13 আর দারুচিনি, মশলা, ধূপ, সুগন্ধি নির্যাস, মস্তকি, গুগ্গুল, মদ ও জলপাইয়ের তেল, ময়দা, আটা, গরু, মেষ, ঘোড়ার গাড়ী আর মানুষের দেহ এবং প্রাণও। সেই ব্যবসায়ীরা কেঁদে কেঁদে বলবে:
14 ‘হে বাবিল, যে সব ভাল ভাল জিনিসের ওপর তোমার মন পড়ে ছিল তার সবই তোমার কাছ থেকে চলে গেছে।
তোমার সব রকমের বিলাসিতা ও শোভা প্রাচুর্য্য সবই ধ্বংস হয়ে গেছে।
তুমি তা আর কখনই দেখতে পাবে না।’
15 “ঐ সব জিনিসের ব্যবসায়ীরা তার ধনে ধনী হয়েছিল, তারা তার যন্ত্রণা দেখে ভয়ে দূরে দাঁড়িয়ে কাঁদবে, আর হাহাকার করে বলবে:
16 ‘হায়! হায়! হায় মহানগরী!
সে মসীনার কাপড়, বেগুনী রঙের কাপড়
ও লাল রঙের কাপড় পরত।
সে সোনা, মণি, মুক্তা খচিত গয়না পরত।
17 এক ঘন্টার মধ্যে তার সেই মহাসম্পদ ধ্বংস হল!’
“আর প্রত্যেক জাহাজের প্রধান কর্মচারীরা, জলপথের যাত্রীরা, নাবিকরা ও সমুদ্রেই জীবিকা যাদের, তারা সকলে বাবিল থেকে সরে দাঁড়ালো। 18 জ্বলন্ত বাবিলের ধোঁয়া দেখে তারা চিৎকার করে বলতে লাগল, ‘আর কোন নগর এই মহানগরীর মত ছিল না!’ 19 তারা সকলে নিজেদের মাথায় ধুলো ছিটিয়ে হাহাকার করে বলতে লাগল:
‘হায়! হায়! ঐ মহানগরীর কি দুর্দশাই না হল!
যার সম্পদে সমুদ্রগামী জাহাজের কর্তারা ধনবান হত,
এক ঘন্টার মধ্যে সে ধ্বংস হয়ে গেল।
20 এই জন্য হে স্বর্গ, উল্লসিত হও!
হে ঈশ্বরের পবিত্র লোকরা! হে প্রেরিতরা আর ভাববাদীরা, উল্লসিত হও!
কারণ সে তোমাদের প্রতি যে অন্যায় করেছে, ঈশ্বর তার শাস্তি তাকে দিয়েছেন।’”
21 পরে এক পরাক্রান্ত স্বর্গদূত খুব বড় যাঁতার মতো পাথর তুলে নিয়ে সমুদ্রে ফেলে দিয়ে বললেন:
“মহানগরী বাবিলকে এই পাথরটির মতো ছুঁড়ে ফেলা হবে;
আর চিরকালের মতো সে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে।
22 তোমার মধ্যে বীণাবাদক, বাঁশীবাদক, তূরীবাদক ও গায়কদের গান-বাজনা আর কখনও শোনা যাবে না।
তোমার মধ্যে আর কখনও কোন শিল্পকারকে পাওয়া যাবে না,
গম ভাঙার যাঁতার শব্দ আর কখনও শোনা যাবে না।
23 তোমার মধ্যে আর কখনও প্রদীপ জ্বলবে না,
বর-কণের কথাবার্তা আর কখনও শোনা যাবে না।
তোমার ব্যবসায়ীরা পৃথিবীর মধ্যে বিখ্যাত হয়েছিল।
তোমার তন্ত্র-মন্ত্রের জাদুতে সমস্ত জাতি ভ্রান্ত হয়েছিল।
24 বাবিল সমস্ত ভাববাদী, ঈশ্বরের পবিত্র লোক,
আর পৃথিবীতে যত লোককে হত্যা করা হয়েছে, তার রক্তপাতের দোষে দোষী।”
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International