M’Cheyne Bible Reading Plan
নিস্তারপর্ব
16 “তোমরা আবীব মাসকে মনে রাখবে। সেই সময় তোমরা অবশ্যই প্রভু তোমাদের ঈশ্বরকে সম্মান দেখানোর জন্যে নিস্তারপর্ব উদ্যাপন করবে, কারণ সেই মাসে প্রভু তোমাদের ঈশ্বর মিশর থেকে তোমাদের রাত্রে বার করে নিয়ে এসেছিলেন। 2 তাঁর নাম নিয়ে বাস করার জন্য যে জায়গা প্রভু পছন্দ করবেন তোমরা অবশ্যই সেই জায়গায় যাবে। সেখানে তোমাদের পশুপাল থেকে পশু নিয়ে তা তোমরা নিস্তারপর্বের বলি হিসাবে প্রভুকে উৎসর্গ করবে। 3 এই বলির সঙ্গে খামিরযুক্ত কোন রুটি খাবে না। তোমরা সাতদিন খামিরবিহীন রুটি খাবে। এই রুটিকে বলা হয় ‘দুঃখাবস্থার রুটি।’ মিশরে তোমাদের যে সব সমস্যা ছিল সেগুলো মনে করতে এটি সাহায্য করবে। মনে করে দেখ কতো তাড়াতাড়ি তোমাদের দেশ ত্যাগ করতে হয়েছিল। মিশর থেকে যেদিন তোমরা বেরিয়ে এসেছিলে সে দিনের কথা তোমরা যতদিন বেঁচে থাকবে ততদিন মনে রাখবে। 4 দেশের কোথাও কোনও বাড়িতে সাত দিন ধরে অবশ্যই খামির থাকবে না। এছাড়া প্রথম দিন সন্ধ্যাবেলায় তোমরা যত মাংস উৎসর্গ করবে সেগুলো অবশ্যই সকালের আগে খেয়ে নিতে হবে।
5 “প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর, তোমাদের যে শহরগুলো দিয়েছেন, সেখানে কোথাও তোমরা অবশ্যই নিস্তারপর্বের পশু উৎসর্গ করবে না। 6 তোমরা কেবলমাত্র সেই স্থানেই নিস্তারপর্বের পশু উৎসর্গ করবে যেটিকে প্রভু তোমাদের ঈশ্বর, তাঁর নামে বাস করার জন্য মনোনীত করবেন। যে সময় সূর্য অস্ত যায়, সেই সন্ধ্যাবেলায় তোমরা অবশ্যই নিস্তাপর্বের পশু উৎসর্গ করবে। ঈশ্বর যে ঋতুতে তোমাদের মিশর থেকে বার করে এনেছিলেন সেই ঋতুতেই এটা করবে। 7 প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর, যে জায়গা পছন্দ করবেন সেই জায়গায় তোমরা অবশ্যই নিস্তারপর্বের মাংস রান্না করবে এবং সেটি খাবে। এরপর সকালে তোমরা বাড়ীতে ফিরে যেতে পার। 8 এই দিন তোমরা নিশ্চয়ই খামিরবিহীন রুটি খাবে। সপ্তম দিনে তোমরা অবশ্যই কোনো কাজ করবে না। এই দিন প্রভু তোমাদের ঈশ্বরকে সম্মান দেখানোর জন্য লোকরা এক বিশেষ সভায় এসে একত্রিত হবে।
সপ্তাহের উৎসব (ফসল কাটার)
9 “যেদিন থেকে তোমরা শস্য কাটা শুরু করেছিলে সেই দিন থেকে তোমরা সাত সপ্তাহ গোনো। 10 তারপর প্রভু, তোমাদের ঈশ্বরের জন্য সপ্তাহের উৎসব উদ্যাপন করো। তোমরা যা নিয়ে আসতে চাও সেইরকম কোনো বিশেষ উপহার নিয়ে এসে এটি করো। প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর, তোমাদের কতখানি আশীর্বাদ করেছেন সেটা চিন্তা করে স্থির করবে তোমরা কতটা দেবে। 11 প্রভু তাঁর বিশেষ বাড়ীর জন্য যে জায়গা পছন্দ করবেন সেখানে যাও। সেখানে তোমাদের প্রভু ঈশ্বরের সঙ্গে তোমরা এবং তোমাদের লোকরা একত্রে আনন্দ উপভোগ করবে। তোমাদের সমস্ত লোককে তোমাদের সঙ্গে নাও—তোমাদের পুত্রদের, তোমাদের কন্যাদের এবং তোমাদের সমস্ত সেবকদের। এছাড়া তোমাদের শহরগুলোতে বসবাসকারী লেবীয়দের, বিদেশীদের, অনাথদের এবং বিধবাদেরও নিয়ে এসো। 12 মনে রাখবে তোমরা মিশরে ক্রীতদাস ছিলে। সুতরাং এই বিধিগুলো মেনে চলার ব্যাপারে সতর্ক থাকবে।
কুটির উৎসব
13 “শস্য মাড়ানোর জায়গা থেকে শস্য সংগ্রহ করার পর এবং দ্রাক্ষা মাড়ার জায়গা থেকে দ্রাক্ষারস সংগ্রহ করার সাতদিন পরে তোমরা অবশ্যই কুটির উৎসব উদ্যাপন করবে। 14 এই উৎসবে তোমরা সকলে আনন্দ উপভোগ করো—তোমরা, তোমাদের ছেলেরা, তোমাদের মেয়েরা, তোমাদের সমস্ত সেবকরা এবং তোমাদের শহরে বসবাসকারী লেবীয়রা, বিদেশীরা, অনাথরা এবং বিধবারা। 15 প্রভু যে স্থান পছন্দ করবেন সেই বিশেষ স্থানে তোমরা সাতদিন ধরে এই উৎসব উদ্যাপন করবে। তোমাদের প্রভু ঈশ্বরকে সম্মান প্রদর্শনের জন্য তোমরা এটি করবে। শস্য সংগ্রহ এবং সমস্ত কাজে যেহেতু প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর, তোমাদের আশীর্বাদ করবেন তাই তোমরা খুব আনন্দ করবে।
16 “প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর, যে স্থান পছন্দ করবেন সেই বিশেষ স্থানে তাঁর সঙ্গে সাক্ষাতে বছরে তিনবার তোমাদের পুরুষরা অবশ্যই আসবে। খামিরবিহীন রুটির তৈরীর উৎসব এবং কুটির উৎসবের জন্যও তারা আসবে। প্রভুর সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য আসা প্রত্যেক ব্যক্তি অবশ্যই উপহার নিয়ে আসবে, খালি হাতে আসবে না। 17 প্রত্যেক ব্যক্তি যতটা পারবে ততটা অবশ্যই দেবে। প্রভু তাকে কতটা দিয়েছেন সেই পরিপ্রেক্ষিতেই সে স্থির করবে সে ঈশ্বরকে কতটা দেবে।
লোকদের জন্য বিচারক এবং পদস্থ কর্মচারীগণ
18 “প্রভু তোমাদের ঈশ্বর, যে শহরগুলো তোমাদের দিতে চলেছেন তার প্রত্যেকটিতে তোমরা অবশ্যই বিচারকদের এবং উচ্চপদাধিকারী ব্যক্তিদের নিয়োগ করবে। প্রত্যেক পরিবারগোষ্ঠী অবশ্যই এটি করবে এবং লোকদের বিচারের সময় এরা অবশ্যই পক্ষপাতহীন হবে। 19 তোমরা অবশ্যই অন্যায় বিচার করবে না এবং সব সময় পক্ষপাতহীন হবে। রায় দেওয়ার সময় মন পরিবর্তনের জন্য কারও কাছ থেকে অর্থ গ্রহণ করবে না। অর্থ অনেক জ্ঞানী লোককেও অন্ধ করে দেয় এবং একজন ভালো লোক যা বলবে তাও পরিবর্তন করে দেয়। 20 সততা এবং পক্ষপাতহীনতা! সব সময় সৎ এবং পক্ষপাতহীন থাকার জন্য তোমাদের অবশ্যই খুব কঠোর চেষ্টা করতে হবে! তাহলেই প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর, তোমাদের যে দেশ দিচ্ছেন সেই দেশে তোমরা থাকতে পারবে এবং রাখতে পারবে।
ঈশ্বর মূর্ত্তি ঘৃণা করেন
21 “তোমরা প্রভু, তোমাদের ঈশ্বরের জন্য নির্মিত বেদীর পাশে দেবী আশেরাকে সম্মান করার জন্য কোনোও কাঠের স্তম্ভ স্থাপন করবে না। 22 এবং মূর্ত্তি পূজার জন্য তোমরা কোনোও বিশেষ পাথর স্থাপন করবে না। প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর, ঐ জিনিসগুলোকে ঘৃণা করেন।
দায়ূদের একটি গীত।
103 হে আমার আত্মা, প্রভুকে ধন্যবাদ দাও!
আমার প্রত্যেকটি অঙ্গ প্রত্যঙ্গ, তাঁর পবিত্র নামের প্রশংসা কর!
2 হে আমার আত্মা, প্রভুর প্রশংসা কর!
ভুলে যেও না যে তিনি সত্যিই দয়ালু।
3 ঈশ্বর আমাদের পাপসমূহ ক্ষমা করেন।
তিনি আমাদের সকল রোগ থেকে সারিয়ে তোলেন।
4 ঈশ্বর আমাদের জীবনকে কবর থেকে রক্ষা করেন।
তিনি আমাদের প্রেম ও সহানুভূতি দেন।
5 তিনি আমাদের রাশি রাশি ভালো জিনিস দেন।
তিনিই সেইজন যিনি পুরানো পালক ঘসে নতুন পালক গজানো
একটি ঈগলের মত তোমাদের যৌবন পুনরুজ্জীবিত করেন।
6 প্রভুই সৎ।
প্রভু অবদমিত লোকদের কাছে ন্যায় বিচার ও নিরপেক্ষতা আনেন।
7 ঈশ্বর মোশিকে তাঁর শিক্ষামালা দিয়েছিলেন।
যে সব ক্ষমতা সম্পন্ন কাজ ঈশ্বর করতে পারেন সে সব তিনি ইস্রায়েলকে দেখিয়েছিলেন।
8 প্রভু দয়ালু এবং ক্ষমতাশীল।
ঈশ্বর ধৈর্য্যশীল এবং প্রেমে পূর্ণ।
9 প্রভু সব সময় আমাদের সমালোচনা করেন না।
প্রভু সর্বদা আমাদের ওপর ক্রুদ্ধ থাকেন না।
10 আমরা ঈশ্বরের বিরুদ্ধে পাপ করেছিলাম
কিন্তু প্রাপ্য শাস্তি তিনি আমাদের দেন নি।
11 যেমন করে পৃথিবীর ওপরে আকাশ বিস্তৃত হয়ে আছে,
তেমনি ঈশ্বরের অনুগামীদের ওপরে ঈশ্বরের প্রেম পরিব্যপ্ত হয়ে আছে।
12 পূর্ব যেমন পশ্চিমের থেকে বিচ্ছিন্ন, তেমন করেই ঈশ্বর,
আমাদের কাছ থেকে আমাদের পাপকে বিচ্ছিন্ন করে নিয়ে গেছেন।
13 পিতা যেমন পুত্রের প্রতি দয়াময়
তেমনি প্রভুও তাঁর অনুগামীদের প্রতি দয়ালু।
14 ঈশ্বর আমাদের সম্পর্কে সব কিছুই জানেন।
ঈশ্বর জানেন যে আমরা ধূলো থেকে সৃষ্ট হয়েছি।
15 ঈশ্বর জানেন আমাদের জীবন
ঘাসের মত অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত।
ঈশ্বর জানেন আমরা ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বুনো ফুলের মত, সেই সব ফুল খুব তাড়াতাড়ি জন্মায়।
16 তারপর উত্তপ্ত বাতাস বইলেই সেই সব ফুল ঝরে পড়ে।
আবার তুমি বলতেও পারবে না সেই সব ফুল কোথায় জন্মেছিল।
17 কিন্তু প্রভু তাঁর অনুগামীদের প্রতি সবসময়ই স্নেহশীল।
তিনি চিরদিনই তাঁর অনুগামীদের ভালোবাসবেন।
ঈশ্বর তাঁর সন্তানদের প্রতি এবং সন্তানদের সন্তানের প্রতিও ভালো ব্যবহার করবেন।
18 যারা তাঁর চুক্তি অনুসরণ করে, তাদের প্রতি ঈশ্বর ভালো ব্যবহার করেন।
যারা তাঁর আজ্ঞা মেনে চলে তাদের প্রতিও ঈশ্বর ভালো ব্যবহার করেন।
19 স্বর্গে ঈশ্বরের সিংহাসন রয়েছে
এবং তিনিই সব কিছুর শাসন করছেন।
20 হে দূতগণ, প্রভুর প্রশংসা কর!
তোমরা দূতরা সেই শক্তিশালী সৈন্য যারা ঈশ্বরের আজ্ঞা পালন করো।
তোমরা ঈশ্বরের কথা শোন এবং তাঁর আজ্ঞা মান্য কর।
21 প্রভু এবং তাঁর সকল সৈন্যদের প্রশংসা কর।
তোমরা তাঁর দাস।
ঈশ্বর যা চান তোমরা তাই কর।
22 প্রভুর প্রশংসা কর।
তাঁর রাজ্যের প্রতিটি জায়গায় তাঁর সব কাজগুলিকে প্রশংসা কর।
হে আমার আত্মা, প্রভুর প্রশংসা কর!
ঈশ্বর সব সময় তার লোকদের সঙ্গে আছেন
43 আমি যাকোব, প্রভু, তোমার সৃষ্টিকর্তা! ইস্রায়েল, প্রভুই তোমার সৃষ্টিকর্তা। এখন প্রভু বলেন, “ভীত হয়ো না। আমি তোমাকে রক্ষা করেছি। আমি তোমার নাম ধরে ডেকেছি। তুমি আমারই। 2 তুমি যখনই সমস্যায় পড়বে আমি তোমার পাশে থাকব। নদী পার হতেও তোমার কষ্ট হবে না। আগুনের মধ্যে দিয়ে হাঁটার সময়ও তুমি দগ্ধ হবে না; অগ্নিশিখা তোমাকে আঘাত করবে না। 3 কারণ আমি, প্রভু তোমার ঈশ্বর। আমি ইস্রায়েলের পবিত্রতম তোমার রক্ষাকর্তা। আমি তোমার জন্য মূল্য দিতে মিশরকে দিয়েছিলাম। আমি তোমাকে আমার করতে কূশ ও সবা দিয়েছিলাম। 4 তুমি আমার কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ তাই আমি তোমাকে সম্মান করি। আমি তোমাকে ভালবাসি এবং আমি সব দেশসমূহ এবং জাতিগুলি তোমাকে দেব যাতে তুমি বাঁচতে পার।
5 “সুতরাং ভীত হবে না! আমি তোমার সঙ্গে আছি। আমি একত্রিত করব তোমাদের শিশুদের এবং ফিরিয়েও দেব। আমি তাদের প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য থেকে এনে দেব। 6 উত্তরকে আমি বলব: আমার লোকদের আমাকে দিয়ে দাও। দক্ষিণকে বলব: আমার লোকদের বন্দী করে রেখো না। দূরবর্তী স্থান থেকে আমার পুত্রকন্যাদের আমার কাছে ফেরৎ দিয়ে দাও। 7 আমার সব লোকদের যাদের কাছে আমার নাম আছে, আমার কাছে ফিরিয়ে দাও। আমি ঐসব লোকদের নিজের জন্যই সৃষ্টি করেছিলাম। আমি তাদের সৃষ্টিকর্তা, তারা আমারই।”
8 ঈশ্বর বলেন, “চোখ থাকা সত্ত্বেও যারা অন্ধ তাদের বাইরে বার কর। কান থাকা সত্ত্বেও যারা বধির তাদের বাইরে বার কর।[a] 9 প্রত্যেক মানুষের ও প্রত্যেক দেশের একত্রিত হওয়া উচিৎ। হতে পারে, তাদের কারো মূর্ত্তি বলতে চেয়েছিল প্রথমে কি ঘটেছিল। তাদের উচিৎ তাদের সাক্ষীদের নিয়ে আসা। সাক্ষীদের উচিৎ সত্য কথা বলা। এটা দেখাবে যে তারা সঠিক।”
10 প্রভু বলেন, “তোমরা লোকরা আমার সাক্ষী। তোমরা হচ্ছো সেই দাস, যাদের আমি বেছে নিয়েছিলাম। আমি তোমাদের বেছে নিয়েছিলাম যাতে তোমরা আমাকে জানতে পার এবং আমাকে বিশ্বাস করতে পার। আমি তোমাদের বেছে ছিলাম যাতে তোমরা উপলদ্ধি করতে পার যে ‘আমি হলাম ঈশ্বর।’ আমি সত্যিকারের ঈশ্বর। আমার আগে কোন দেবতা ছিল না এবং আমার পরে কোন দেবতা থাকবে না। 11 আমি নিজেই হলাম প্রভু। অন্য কোন পরিত্রাতা নেই, আমিই একমাত্র পরিত্রাতা। 12 আমিই একমাত্র ঈশ্বর যে তোমাদের সঙ্গে কথা বলেছিলাম। আমি তোমাদের রক্ষা করেছিলাম। এসব কথা আমি তোমাদের বলেছি। এমন নয় যে তোমাদের সঙ্গে কেউ ছিল যে একজন অপরিচিত লোক। তোমরা আমার সাক্ষী এবং আমি ঈশ্বর।” (প্রভু নিজেই এইসব কথা বলেছেন।) 13 “আমি সব সময়ই ঈশ্বর। যখন আমি কিছু করি তখন আমার কাজের কেউই পরিবর্তন ঘটাতে পারবে না। এমন কি আমার ক্ষমতা থেকে কেউ কোন লোককে রক্ষা করতে পারবে না।”
14 প্রভু, ইস্রায়েলের পবিত্রতম, তোমাদের ত্রাণকর্ত্তা বলেন, “আমি বাবিলে তোমাদের জন্য সেনা পাঠাব। সমস্ত তালাবন্ধ ফটক আমি ভেঙে ফেলব এবং কল্দীয়দের গানগুলি বিলাপে পর্যবসিত হবে। 15 আমিই তোমাদের প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর। আমি ইস্রায়েলের সৃষ্টিকর্তা। আমি তোমাদের রাজা।”
ঈশ্বর আবার তাঁর লোকদের বাঁচাবেন
16 প্রভু সমুদ্রের মধ্যে দিয়ে সড়ক বানাবেন। নিজের লোকদের জন্য এমনকি জলের মধ্যে দিয়ে তিনি রাস্তা গড়ে দেবেন। এবং প্রভু বলেন, 17 “যারা যুদ্ধযান, ঘোড়সওয়ার ও সেনাবলে বলীয়ান হয়ে আমার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে তারা পরাজিত হবে। তারা আর কখনও উঠতে পারবে না। তাদের বিনাশ ঘটবে। মোমবাতির শিখা যেমন করে নিভিয়ে দেওয়া হয় সেই ভাবে তাদের থামানো হবে। 18 তাই শুরুতে যেসব ঘটনা ঘটেছিল তা আর মনে কোরো না। যা বহুকাল আগে ঘটে গেছে তা আর স্মরণ কোরো না। 19 কেন না এখন আমি নতুন কিছু করব। এখন তোমরা নতুন গাছের মতো বেড়ে উঠবে। তোমরা নিশ্চিত ভাবেই জান এটা সত্য। সত্যিই আমি মরুভূমিতে রাস্তা বানাব। শুষ্ক জমিতে সত্যিই আমি নদী তৈরী করব। 20 মরুভূমিতে জল জোগানোর পর বন্য জন্তুরা, যেমন শিয়াল এবং উটপাখী আমাকে সম্মান জানাবে। আমার বেছে নেওয়া লোকেদের জন্য, আমার নিজের লোকদের জন্য আমি জলের ব্যবস্থা করব। 21 এই লোকদের তো আমিই সৃষ্টিকর্তা এবং এরা আমার প্রশংসা করে গান গাইবে।
22 “যাকোব, তুমি আমার কাছে প্রার্থনা করনি। কেন? কারণ তোমরা ইস্রায়েলের লোকরা আমার বিষয়ে ক্লান্ত হয়ে পড়েছ। 23 তোমরা তোমাদের মেষকে আমার জন্য উৎসর্গ করতে আন নি। তোমরা আমাকে সম্মান জানাও নি। তোমরা আমার জন্য বলি দাও নি। আমার উদ্দেশ্যে বলি দেবার জন্য আমি তোমাদের বাধ্য করিনি। আমি তোমাদের ধূপ জ্বালাতে বাধ্য করিনি। 24 তাই তোমরা আমাকে সম্মান জানাবার জন্য সামগ্রী ক্রয় করতে অর্থ ব্যয় করনি। হোমবলির চর্বি দিয়ে তোমরা আমাকে সন্তুষ্ট করনি। কিন্তু তোমরা তোমাদের পাপসমূহ দিয়ে আমাকে ভারাক্রান্ত করেছিলে। তোমাদের কুকর্মসমূহ আমাকে খুব পরিশ্রান্ত করে তুলেছে।
25 “আমি, আমিই একমাত্র যে তোমাদের সব পাপ ধুয়ে মুছে পরিষ্কার করে দিই। নিজেকে খুশি করতে এইসব আমি করি! তোমাদের পাপের কথা আমি মনে রাখব না। 26 আমাকে মনে করিয়ে দিও (তোমাদের প্রশংসনীয় গুনের কথা)। আমাদের এক সঙ্গে বসে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিৎ কোনটা ঠিক। তোমাদের কৃতকর্মের কথা আমাকে বলা উচিৎ এবং প্রমাণ কর যে তোমরা ঠিক। 27 তোমাদের প্রথম পিতা পাপী। তোমাদের আইনজীবিরা আমার বিরুদ্ধাচরণ করেছে। 28 আমি তোমাদের পবিত্র শাসকদের অপবিত্র করেছি। আমি যাকোবকে ধ্বংসের এবং ইস্রায়েলকে অভিশাপের শাস্তি দিয়েছি।”
দুটি পশু
13 এরপর আমি দেখলাম সমুদ্রের মধ্য থেকে একটা পশু উঠে আসছে, তার দশটা শিং ও সাতটা মাথা; আর তার সেই দশটা শিং-এর প্রত্যেকটাতে মুকুট পরানো আছে। তার প্রতিটি মাথার ওপর ঈশ্বরের নিন্দাসূচক বিভিন্ন নাম। 2 যে পশুটিকে আমি দেখলাম, তাকে দেখতে একটা চিতা বাঘের মতো। তার পা ভাল্লুকের মতো, তার মুখটা সিংহের মুখের মতো। সমুদ্র তীরের সেই নাগ তার নিজের ক্ষমতা, তার নিজের সিংহাসন ও মহাকর্তৃত্ত্ব এই পশুকে দিল।
3 আমি লক্ষ্য করলাম যে তার একটি মাথায় যেন এক মৃত্যুজনক ক্ষত রয়েছে; কিন্তু সেই মৃত্যুজনক ক্ষতটিকে সারিয়ে তোলা হল। এই দেখে সমস্ত জগতের লোক আশ্চর্য হয়ে গেল; আর তারা সেই পশুর অনুসরণ করল। 4 ঐ পশুকে এমন ক্ষমতা দেবার জন্য লোকেরা সেই নাগের আরাধনা করতে লাগল। তারা সেই পশুরও আরাধনা করে বলল, “এই পশুর মতো আর কে আছে, কেই বা এর সঙ্গে যুদ্ধ করতে সক্ষম?”
5 গর্ব করার ও ঈশ্বর নিন্দা করার জন্য সেই পশুটিকে অনুমতি দেওয়া হল। বিয়াল্লিশ মাস ধরে এই কাজ করার ক্ষমতা তাকে দেওয়া হল। 6 তাতে সে ঈশ্বরের অপমান করতে শুরু করল, ঈশ্বরের নামের, তাঁর বাসস্থানের আর স্বর্গবাসী সকলের নিন্দা করতে লাগল। 7 ঈশ্বরের পবিত্র লোকদের সঙ্গে যুদ্ধ করতে ও তাদের পরাস্ত করবার ক্ষমতা তাকে দেওয়া হল; আর জগতের সমস্ত বংশ, লোকসমাজ, ভাষা ও জাতির ওপর কর্তৃত্ত্ব করার ক্ষমতাও তাকে দেওয়া হল। 8 পৃথিবীর সমস্ত মানুষ, যাদের নাম জগত সৃষ্টির আগে থেকে সেই উৎসর্গীকৃত মেষশাবকের জীবন পুস্তকে লেখা হয় নি, তারা সকলে ঐ পশুর ভজনা করবে। ইনি সেই মেষশাবক যিনি হত হয়েছিলেন।
9 যার কান আছে সে শুনুক:
10 বন্দী হবার জন্য যে নিরুপিত
তাকে বন্দী হতে হবে,
যদি তরবারির আঘাতে হত হওয়া কারও জন্য
নির্ধারিত থাকে তবে তাকে তরবারির আঘাতে হত হতে হবে।
এর অর্থ ঈশ্বরের পবিত্র লোকদের ধৈর্য্য্য্য ও বিশ্বাস অবশ্যই থাকবে।
11 এরপর আমি পৃথিবীর মধ্য থেকে আর একটি পশুকে উঠে আসতে দেখলাম। মেষশাবকের মতো তার দুটি শিং ছিল, কিন্তু সে নাগের মত কথা বলত। 12 সে ঐ প্রথম পশুটির সমস্ত কর্তৃত্ত্ব প্রথম পশুর উপস্থিতিতে প্রয়োগ করল এবং সেই শক্তিবলে বিশ্বের সকল লোককে প্রথম পশুটির আরাধনা করতে বাধ্য করল, যার মাথার ক্ষত সেরে গিয়েছিল। 13 দ্বিতীয় পশুটি মহা অলৌকিক সব কাজ করতে লাগল, এমন কি সকলের চোখের সামনে আকাশ থেকে পৃথিবীতে আগুন নামাল।
14 এইভাবে সে প্রথম পশুর সেবার্থে তাকে প্রদত্ত শক্তির বলে অলৌকিক কাজ করে পৃথিবীবাসীদের ঠকাল। সে পৃথিবীর লোকদের বলল, “যে পশু তরবারির আঘাতে আহত হয়েও বেঁচে উঠেছে, তার সম্মানার্থে একঢি মূর্তি গড়।” 15 একে এমন ক্ষমতা দেওয়া হল যাতে সে প্রথম পশুর প্রতিমার মধ্যে প্রাণ সঞ্চার করতে পারে, যেন সেই প্রতিমা কথা বলতে পারে ও যে সেই পশুর প্রতিমার আরাধনা না করে তাকে হত্যা করার আদেশ দেয়। 16 এই পশু কি ক্ষুদ্র, কি মহান, ধনী ও দরিদ্র, স্বাধীন ও ক্রীতদাস, সকলকে তাদের ডানহাতে অথবা কপালে এক বিশেষ চিহ্নের ছাপ দিতে বাধ্য করাল। 17 কেউই এই বিশেষ চিহ্নের ছাপ ছাড়া কেনা-বেচা করতে পারবে না। (এই চিহ্ন পশুর নামের ছাপ অথবা সংখ্যাসূচক ছাপ।)
18 যে বুদ্ধিমান সে ঐ পশুর সংখ্যা গণনা করুক। এরজন্য বিজ্ঞতার প্রয়োজন। ঐ সংখ্যাটি একটি মানুষের নামের সংখ্যা আর সেই সংখ্যা হচ্ছে 666।
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International