Print Page Options
Previous Prev Day Next DayNext

M’Cheyne Bible Reading Plan

The classic M'Cheyne plan--read the Old Testament, New Testament, and Psalms or Gospels every day.
Duration: 365 days
Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)
Version
দ্বি. বি. 15

দেনা বাতিল করার বিশেষ বৎসর

15 “প্রতি সাত বছরের শেষে তোমরা অবশ্যই ঋণ ক্ষমা করবে। তোমরা এই প্রকারে তা করবে: কোন লোক যে অপর ইস্রায়েলীয়কে টাকা ধার দিয়েছে, সে অবশ্যই সেই ঋণ ক্ষমা করবে। সে তার প্রতিবেশীকে ঋণ শোধ করতে বাধ্য করবে না, কারণ ঈশ্বরের সম্মানার্থে সেই বছরে দেনা বাতিল করার বছর হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে। তোমরা কোন বিদেশীর কাছ থেকে ঋণ আদায় করতে পার। কিন্তু আরেকজন ইস্রায়েলীর তোমার কাছে যে দেনা আছে সেটা তোমরা অবশ্যই বাতিল করবে। তোমাদের দেশে কোনো গরীব লোক থাকা উচিৎ‌ নয়, কারণ প্রভু তোমাদের যে দেশ দিয়েছেন সেই দেশে তোমাদের মহৎ‌‌ভাবে আশীর্বাদ করবেন। কিন্তু এটা একমাত্র তখনই সম্ভব যদি তোমরা প্রভু তোমাদের ঈশ্বরকে মেনে চলো। আমি আজ তোমাদের যেগুলো বললাম সেই আজ্ঞাগুলো মেনে চলার ব্যাপারে তোমরা অবশ্যই সতর্ক থাকবে। তাহলে তিনি যেরকম প্রতিজ্ঞা করেছিলেন সেই মতো তোমাদের আশীর্বাদ করবেন। তখন তোমরা অন্যান্য জাতিকে ঋণ দেবে। কিন্তু অন্যদের কাছ থেকে ঋণ নেওয়ার প্রয়োজন তোমাদের হবে না। তোমরা বহু জাতিকে শাসন করতে পারবে, কিন্তু ঐ সমস্ত জাতির কেউই তোমাদের শাসন করবে না।

“প্রভু তোমাদের ঈশ্বর তোমাদের যে দেশ দিয়েছেন, সেখানকার কোন শহরে তোমার কেউ যদি দরিদ্র হয় তবে তুমি অবশ্যই স্বার্থপর হবে না, সেই দরিদ্র ব্যক্তিকে সাহায্য করবে, তাকে অবশ্যই সাহায্য করতে অস্বীকার করবে না। তার সাথে উদারভাবে ভাগ করে নিতে তোমরা অবশ্যই রাজি হবে এবং সেই লোকটির যা কিছু প্রয়োজন সব কিছু তোমরা তাকে ধার দেবে।

“সপ্তম বছর, দেনা বাতিল করার বছর এগিয়ে এসেছে বলে, শুধু মাত্র এই কারণেই কাউকে সাহায্য করতে অস্বীকার কোরো না। এই ধরণের কোন খারাপ চিন্তা তোমাদের মনে প্রবেশ করতে দিও না। যে ব্যক্তির সাহায্যের প্রয়োজন, তার সম্বন্ধে তোমরা অবশ্যই কোনো খারাপ মনোভাব পোষণ করবে না। তোমরা অবশ্যই তাকে সাহায্য করতে অস্বীকার করবে না। তোমরা যদি সেই গরীব লোকটিকে সাহায্য না করো, তাহলে সে প্রভুর কাছে তোমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করবে এবং প্রভু তোমাদের এই পাপের জন্য অভিযুক্ত করবেন।

10 “তোমরা তোমাদের যথাসাধ্য সেই গরীব লোকটিকে দেবে। তাকে দেওয়ার সময় মনে কোনো কুচিন্তা রেখো না। কেন? কারণ এই ভালো কাজ করার জন্য প্রভু তোমাদের ঈশ্বর তোমাদের আশীর্বাদ করবেন। তোমাদের সমস্ত কাজে এবং তোমরা যা করো তার প্রত্যেকটিতে তিনি তোমাদের আশীর্বাদ করবেন। 11 তোমাদের দেশে সবসময়ই গরীব লোক থাকবে; সেই কারণে আমি তোমাদের আদেশ করছি তোমরা অবশ্যই তোমাদের ভাইদের এবং তোমাদের দেশে যে দরিদ্র লোকদের সাহায্যের প্রয়োজন তাদের মুক্ত হস্তে সাহায্য করবে।

ক্রীতদাসদের মুক্ত করে দেওয়া

12 “ক্রীতদাস হিসেবে তোমাদের সেবা করার জন্য যদি কোনো হিব্রু পুরুষ অথবা স্ত্রীলোক তোমাদের কাছে নিজেকে বিক্রি করে তবে তোমরা তাকে ছ’বছর পর্যন্ত ক্রীতদাস হিসেবে রাখতে পার; কিন্তু সপ্তম বছরে তোমরা অবশ্যই তাকে ছেড়ে দেবে। 13 কিন্তু যখন তোমরা তোমাদের ক্রীতদাসকে স্বাধীন করছ, তখন তাকে খালি হাতে পাঠিও না। 14 তোমরা অবশ্যই সেই ব্যক্তিকে মুক্ত হস্তে তোমাদের পশু, দানাশস্য এবং দ্রাক্ষারস দেবে। প্রভু তোমাদের ঈশ্বর, তোমাদের যেভাবে আশীর্বাদ করেছেন সেই ভাবেই তোমরা তোমাদের ক্রীতদাসকে দেবে। 15 মনে রাখবে, তোমরা মিশরে ক্রীতদাস ছিলে এবং প্রভু তোমাদের ঈশ্বর তোমাদের মুক্ত করেছিলেন। সেই কারণেই আমি আজ তোমাদের এই আদেশ দিচ্ছি।

16 “কিন্তু সেই ক্রীতদাস যদি বলে, ‘আমি তোমাদের ছেড়ে যাবো না।’ সে তোমাকে এবং তোমাদের পরিবারকে ভালোবাসে এবং তোমাদের সঙ্গে সে ভালোভাবে আছে বলে এটা বলতে পারে। 17 এরকম হলে তোমরা সেই ক্রীতদাসকে তোমাদের দরজায় কান রাখতে বলো এবং একটি ধারালো যন্ত্রের সাহায্যে তার কানে ফুটো করো। এর থেকেই বোঝা যাবে যে সে চিরকালের জন্য তোমাদেরই ক্রীতদাস। যে ক্রীতদাসী তোমাদের সঙ্গে থাকতে চায় তার জন্যও এই ব্যবস্থা।

18 “ক্রীতদাসদের মুক্ত করে দেওয়ার ব্যাপারে মন কঠিন কোরো না। মনে রাখবে, কোনো ভাড়া করা লোককে তোমাদের যে টাকা দিতে হত তার অর্ধেক টাকায় সে ছ’বছর তোমাদের সেবা করেছে। আর তাহলে তোমাদের প্রত্যেক কাজে প্রভু ঈশ্বর তোমাদের আশীর্বাদ করবেন।

প্রথমজাত পশুদের সম্বন্ধে নিয়ম

19 “তোমাদের পশুপালের সমস্ত প্রথমজাত পুরুষ পশুদের তোমরা অবশ্যই প্রভুর উদ্দেশ্যে পৃথক করবে। তোমাদের কাজে ঐ পশুদের কাউকে ব্যবহার করবে না এবং ঐ সমস্ত মেষের থেকে কোনো পশম ছাঁটবে না। 20 প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর, যে স্থান পছন্দ করবেন প্রত্যেক বছর সেই জায়গায় তোমরা ঐ সমস্ত পশুদের নিয়ে আসবে। সেখানে প্রভুর উপস্থিতিতে তোমরা এবং তোমাদের পরিবারের লোকরা ঐ সমস্ত পশুদের খাবে।

21 “কিন্তু যদি কোনো পশুর কোনো খুঁত থাকে—যদি খোঁড়া হয় অথবা অন্ধ অথবা অন্য যে কোনরকম খুঁত যদি থাকে, তাহলে তোমরা অবশ্যই সেই পশুটিকে তোমাদের প্রভু ঈশ্বরের কাছে উৎসর্গ করবে না। 22 কিন্তু তোমরা বাড়ীতে সেই পশুর মাংস খেতে পারো। যে কোনোও লোকই এটি খেতে পারে—সে শুচিই হোক্ বা অশুচি হোক্। এই মাংস খাওয়ার নিয়ম কৃষ্ণসার এবং হরিণের মাংস খাওয়ার মতো। 23 কিন্তু তোমরা পশুর রক্ত অবশ্যই খাবে না। তোমরা জলের মতোই সেই রক্ত মাটিতে ঢেলে দেবে।

গীতসংহিতা 102

যন্ত্রণা কাতর একটি মানুষের প্রার্থনা। সে যখন দুর্বল বোধ করে ও প্রভুকে তার অভিযোগ জানাতে চায় তখনকার প্রার্থনা।

102 প্রভু, আমার প্রার্থনা শুনুন।
    সাহায্যের জন্য আমার ক্রন্দন শুনুন।
যখন আমি সমস্যার মধ্যে থাকি তখন আমার দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবেন না।
    আমার কথা শুনুন, যখন আমি সাহায্যের জন্য প্রার্থনা করি তখন আমায় উত্তর দিন।
ধোঁয়ার মত আমার জীবন কেটে যাচ্ছে।
    আমার জীবন একটি আগুনের মত যা ধীরে ধীরে পুড়ে যাচ্ছে।
আমার শক্তি চলে গেছে।
    আমি শুকনো মৃত প্রায় ঘাসের মত।
    আমি আমার খাবার পর্যন্ত খেতে ভুলে গেছি।
দুঃখের কারণে আমার ওজন কমে যাচ্ছে।[a]
আমি একটি ধ্বংসস্তূপের মধ্যে বাস করা পেঁচার মত নিঃসঙ্গ।
    ধ্বংসাবশিষ্ট অট্টালিকায় আমি একা পেঁচার মত বাস করছি।
আমি ঘুমোতে পারি না।
    আমি ছাদে বাস করা এক নিঃসঙ্গ পাখির মত।
শত্রুরা সব সময়ে আমাকে অপমান করে।
    ওরা আমাকে নিয়ে মজা করে ও ভৎ‌র্সনা করে।
আমার খাদ্যই এখন আমার বিরাট দুঃখ।
    আমার চোখের জল আমার পানীয়তে পড়ছে।
10 কেন? কারণ প্রভু আপনি আমার প্রতি ক্রুদ্ধ হয়েছেন।
    আপনিই আমাকে তুলে ধরেছেন এবং তারপর আপনিই আমায় ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছেন।

11 দিনের শেষের দীর্ঘ ছায়াগুলির মত আমার জীবন প্রায় শেষ হয়ে গেছে।
    আমি শুকনো এবং মৃত প্রায় ঘাসের মত।
12 কিন্তু প্রভু, আপনি চিরদিনই বিরাজিত থাকবেন।
    আপনার নাম চিরকাল এবং অনন্তকাল মনে রাখা হবে।
13 আপনাকে উত্থান করতে হবে এবং আপনি সিয়োনকে স্বস্তি দেবেন।
    কারণ তাকে সান্ত্বনা দেবার সময় হয়েছে।
14 আপনার দাসগণ সিয়োনের পাথরগুলিকে ভালোবাসে।
    এই শহরের ধূলোকে পর্যন্ত তারা ভালোবাসে।
15 লোকরা প্রভুর নামের উপাসনা করবে।
    হে ঈশ্বর, পৃথিবীর সমস্ত রাজারা আপনাকে মহিমান্বিত করবে।
16 প্রভু সিয়োনকে আবার নির্মাণ করবেন।
    লোকেরা আবার তাঁর মহিমা দেখবে।
17 যে সব লোককে ঈশ্বর বাঁচিয়ে রেখেছেন, তিনি আবার তাদের প্রার্থনার উত্তর দেবেন।
    ঈশ্বর তাদের প্রার্থনা শুনবেন।
18 ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য এইসব লিখে রাখো
    এবং ভবিষ্যতে ওরা প্রভুর প্রশংসা করবে।
19 প্রভু, তাঁর পবিত্র স্থান থেকে নীচের দিকে চেয়ে দেখবেন।
    স্বর্গ থেকে প্রভু পৃথিবীর দিকে চেয়ে দেখবেন।
20 তিনি বন্দীদের প্রার্থনা শুনবেন।
    যাদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে তাদের তিনি মুক্ত করবেন।
21 তারপর সিয়োনে লোকরা প্রভুর কথা বলবে।
জেরুশালেমে তারা প্রভুর নামের প্রশংসা করবে।
22     সব জাতিসমূহ একসঙ্গে জড় হবে।
    প্রভুর সেবার জন্য সব রাজ্য ছুটে আসবে।

23 আমার শক্তি কমে এসেছে।
    আমার জীবনও ছোট হয়ে এসেছে।
24 তাই আমি বলেছিলাম, “আমি যতক্ষণ যুবক আছি আমাকে মরতে দেবেন না।
    ঈশ্বর আপনি চিরদিন বিরাজিত থাকবেন!
25 সুদূর অতীতে আপনি এই বিশ্বসৃষ্টি করেছিলেন।
    নিজের হাতে আপনি আকাশ সৃষ্টি করেছিলেন!
26 এই বিশ্ব, এই আকাশ একদিন শেষ হয়ে যাবে কিন্তু আপনি চির বিরাজমান থাকবেন!
    ওদের বস্ত্রের মতই পরিধান করা হবে।
এবং জামাকাপড়ের মতই আপনি ওদের বদল করবেন।
    ওরা সবাই পরিবর্তিত হবে।
27 কিন্তু ঈশ্বর, আপনি পরিবর্তিত হবেন না।
    আপনি চিরদিন বিরাজ করবেন!
28 আজ আমরা আপনার দাস।
    আমাদের সন্তানরাও এখানে বসবাস করবে।
    এমনকি তাদের উত্তরপুরুষরাও আপনার উপাসনা করার জন্য এখানেই বসবাস করবে।”

যিশাইয় 42

প্রভুর বিশেষ দাস

42 “আমি আমার দাসের দিকে তাকাই!
    আমি তাকে সমর্থন করি।
    সে হচ্ছে সেই জন, যাকে আমি বেছে নিয়েছিলাম।
    আমি তাকে নিয়ে সন্তুষ্ট।
তার ওপর আমি আমার আত্মা রেখেছি।
    সে ন্যায়সঙ্গত ভাবে জাতিসমূহের বিচার করবে।
পথে-ঘাটে সে চিৎকার করবে না।
    সে তীব্র চিৎকার করবে না অথবা তার গলা লোকদের মধ্যে শোনা যাবে এমন করবে না।
সে ভদ্র হবে, জলাশয়ের ধারে গজিয়ে ওঠা আগাছা সে কখনও ভাঙবে না।
    দুর্বল আগুনকেও সে কখনও নিভিয়ে দেবে না।
    সে ন্যায়ভাবে বিচার করবে এবং সত্যকে প্রকাশ করবে।
পৃথিবীতে ন্যায় বিচার না আনা পর্যন্ত সে দুর্বল হবে না,
    অথবা নিষ্পেষিত হবে না।
দূরবর্তী স্থানের লোকরা তার শিক্ষামালায় আস্থাবান হবে।”

প্রভু শাসক, প্রভুই বিশ্বের সৃষ্টিকর্তা

প্রভু প্রকৃত ঈশ্বর, তিনিই এইসব বলেছেন। প্রভু আকাশ বানিয়েছেন। তিনি আকাশকে সারা বিশ্বের ওপর ছড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি পৃথিবীর সব কিছুর সৃষ্টিকর্তা। তিনি পৃথিবীর প্রতিটি মানুষকে শ্বাস-প্রশ্বাস দিয়ে বাঁচিয়ে রেখেছেন। পৃথিবীর ওপর যারা হেঁটে বেড়ায় তাদের প্রত্যেক লোককে তিনি একটি আত্মা দেন।

“আমি তোমাদের প্রভু, সঠিক কাজ করতে তোমাদের ডেকেছিলাম।
    আমি তোমাদের হাত ধরেছি।
আমি তোমাদের রক্ষা করেছি এবং তোমাদের মাধ্যমে আমি লোকদের সঙ্গে একটি চুক্তি করেছি।
    তুমি সমস্ত জাতিগুলির জন্য একটি আলোস্বরূপ হবে।
তুমি অন্ধ লোকের চোখ খুলে দেবে এবং তারা সব কিছু দেখতে পাবে।
    বহুলোক কয়েদখানায় বন্দী; তুমি তাদের মুক্ত করে দেবে।
    বহুলোক বাস করে অন্ধকারে, জেলের থেকে বাইরে আসবার জন্য তাদের তুমি নেতৃত্ব দেবে।

“আমিই প্রভু।
    আমার নাম যিহোবা।
আমার মহিমা আমি অপরকে দেব না।
    যে মহিমা আমার পাওয়া উচিৎ‌ সেই প্রশংসা মূর্ত্তিদের আমি নিতে দেব না।
শুরুতেই আমি বলেছিলাম, কিছু একটা ঘটবে।
    এবং ঐসব জিনিস ঘটেছিল।
এবং এখন অন্য কিছু ঘটার আগেই,
    তোমাদের আমি ভবিষ্যতে কি ঘটবে সে সম্বন্ধে জানাব।”

ঈশ্বরের প্রশংসা গীত

10 প্রভুর উদ্দেশ্যে গাও নতুন গান।
    তোমরা দূর দেশের লোকরা,
    তোমরা দূর দেশের নাবিকরা,
    তোমরা সমুদ্রের প্রাণীরা,
    তোমরা দূরবর্তী জায়গার লোকরা প্রভুর প্রশংসা কর!
11 মরুভূমি ও শহর, পূর্ব ইস্রায়েলের কেদরের গ্রামগুলি
    প্রভুর প্রশংসা কর।
শেলাবাসীরা আনন্দগীত গাও!
    পর্বতশৃঙ্গ থেকে তোমরা গেয়ে ওঠ।
12 তারা প্রভুকে মহিমাম্বিত করুক।
    দূর দেশের লোকরা প্রভুর প্রশংসা করুক।
13 প্রভু বলবান সৈন্যের মত চলে যাবেন!
    তিনি হবেন যুদ্ধ করতে প্রস্তুত মানুষের মত।
তিনি প্রচণ্ড উত্তেজিত হয়ে উঠবেন।
    তিনি কাঁদবেন, উচ্চস্বরে চিৎকার করবেন এবং তার শত্রুদের পরাজিত করবেন।

ঈশ্বর প্রচণ্ড ধৈর্য্যশীল

14 “দীর্ঘদিন ধরে আমি কিছুই বলিনি।
    আমি নিজেকে সংযত করে রেখেছিলাম, বলিনি কোন কিছুই।
কিন্তু এখন আমি প্রসব করতে যাচ্ছে এমন এক মহিলার মতো চিৎকার করে কাঁদব।
    আমি জোরে জোরে সশব্দে প্রশ্বাস নেব।
15 আমি পাহাড়-পর্বত ধ্বংস করব।
    আমি সেখানে জন্মানো সমস্ত গাছপালাকে শুকিয়ে দেব।
আমি নদীকে পরিণত করব শুকনো জমিতে।
    আমি জলাশয়কে শুকিয়ে দেব।
16 তারপর আমি অন্ধদের নেতৃত্ব দেব এক অজানা পথে
    যে সব স্থানে তারা কখনও যায়নি।
অন্ধদের নিয়ে যাব সেই সব স্থানে।
    তাদের জন্য অন্ধকারকে আলোময় করে দেব।
রুক্ষ জমিকে মসৃণ করে তুলব।
    আমি যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম তা সবই করব
    এবং আমার লোকদের ছেড়ে যাব না!
17 কিন্তু কেউ কেউ আমাকে মেনে চলা বন্ধ করেছে।
    ঐসব লোকদের সোনায় বাঁধানো মূর্ত্তি আছে।
তারা ঐসব মূর্ত্তিদের বলে, ‘তোমরাই আমাদের দেবতা।’
    যে লোকরা তাদের মূর্ত্তিগুলিতে আস্থা রাখে, তারা মুখ ফিরিয়ে নেবে এবং লজ্জা পাবে।

ঈশ্বরের কথা শুনতে নারাজ ইস্রায়েল

18 “তোমরা, বধির লোকরা আমার কথা তোমাদের শোনা উচিৎ‌।
    অন্ধ লোকরা, তোমাদের আমাকে দেখা এবং আমার দিকে তাকানো উচিৎ‌।
19 সারা পৃথিবীতে আমার সেবক (ইস্রায়েলের লোকজন) সবচেয়ে অন্ধ।
    যে বার্তাবাহককে আমি পৃথিবীতে পাঠিয়েছি সেই সবচেয়ে বধির।
যে লোকটির সঙ্গে আমি বন্দোবস্ত করেছিলাম, প্রভুর দাস সে-ই সবচেয়ে বেশী অন্ধ।
20 আমার দাস অনেক মহান জিনিষ দেখেছে,
    কিন্তু সে সেসবের প্রতি মনোযোগ দেয় না।
সে কানে শুনতে পায়
    কিন্তু সে মানতে চায় না।”
21 প্রভু চান তাঁর সেবকরা ভাল হোক্।
    প্রভু চান তাঁর আশ্চর্যজনক শিক্ষামালাকে তারা শ্রদ্ধা করুক।
22 কিন্তু লোকগুলিকে দেখো।
    অন্য লোকরা তাদের পরাজিত করেছে এবং তাদের জিনিস চুরি করে নিয়েছে।
প্রতিটি যুবক ভীত।
    তারা জেলে বন্দী।
লোকরা তাদের সব টাকা ছিনিয়ে নিয়েছে।
    তাদের রক্ষা করার কেউ নেই।
অন্যরা তাদের টাকা নিয়ে নিয়েছে।
    “এই টাকা ফিরিয়ে দিয়ে যাও,” একথা বলার মতোও কেউ নেই।

23 তোমাদের কেউ কি ঈশ্বরের বাক্য শুনেছিলে? না! কিন্তু তোমাদের উচিৎ‌ কাছ থেকে তাঁর কথা শোনা, এবং যা ঘটেছে সে সম্পর্কে মনোযোগ দেওয়া। 24 যাকোব ও ইস্রায়েল থেকে লোকদের ধনসম্পদ নিতে কে দিয়েছিল? প্রভুই তাদের এসব কাজ করার অনুমতি দিয়েছিলেন। আমরা প্রভুর বিরুদ্ধে পাপ কাজ করেছিলাম। তাই প্রভু আমাদের ধনসম্পদ নিয়ে নিতে লোকদের অনুমতি দিয়েছিলেন। ইস্রায়েলের লোকরা প্রভুর বিধির প্রতি মনোযোগ দেয় নি। প্রভু যে ভাবে চেয়ে ছিলেন সে ভাবে ইস্রায়েলের লোকরা জীবনযাপন করেনি। 25 তাই প্রভু তাদের ওপর ক্রুদ্ধ হন। তিনি তাদের বিরুদ্ধে শক্তিশালী যুদ্ধ ঘটিয়েছিলেন। এমন হয়েছিল ঠিক যেন ইস্রায়েলের লোকরা আগুন দিয়ে ঘেরা ছিল। কিন্তু তারা কি ঘটছিল তা জানত না। ঘটনাটা ছিল তাদের পুড়ে যাওয়ার মতোই। কিন্তু যা ঘটছিল তারা তা বোঝার চেষ্টা করেনি।

প্র.বা. 12

একটি স্ত্রীলোক এবং বিশাল নাগ

12 তারপর স্বর্গে এক মহৎ ও বিস্ময়কর সঙ্কেত দেখা গেল। একটি স্ত্রীলোককে দেখা গেল, সূর্য যার বসন, যার পায়ের নীচে ছিল চাঁদ, আর বারোটি নক্ষত্রের এক মুকুট তার মাথায়। স্ত্রীলোকটি গর্ভবতী, প্রসব বেদনায় সে চিৎকার করছিল।

এরপর স্বর্গে আর এক নিদর্শন দেখা দিল। এক প্রকাণ্ড নাগ দেখা গেল, যার রঙ ছিল লাল, তার সাতটি মাথা, দশটি শিং আর সাতটি মাথায় সাতটি মুকুট। সে তার লেজ দিয়ে আকাশের এক তৃতীয়াংশ নক্ষত্র টেনে নামিয়ে এনে পৃথিবীর ওপর ফেলল। যে স্ত্রীলোকটি সন্তান প্রসব করার অপেক্ষায় ছিল, সেই নাগটি তার সামনে দাঁড়াল, যেন স্ত্রীলোকটি সন্তান প্রসব করার সঙ্গে সঙ্গে সে তার সন্তানকে গ্রাস করতে পারে।

স্ত্রীলোকটি এক পুত্র সন্তান প্রসব করল, যিনি লৌহ দণ্ড দিয়ে সমস্ত জাতিকে শাসন করবেন। তার সন্তানকে ঈশ্বরের সিংহাসনের কাছে নিয়ে যাওয়া হল; আর সেই স্ত্রীলোকটি প্রান্তরে পালিয়ে গেল, সেখানে ঈশ্বর তার জন্য একটি স্থান প্রস্তুত করে রেখেছিলেন, সেখানে সে বারশো ষাট দিন পর্যন্ত প্রতিপালিতা হবে।

এরপর স্বর্গে এক যুদ্ধ বেধে গেল। মীখায়েল ও তার অধীনে অন্যান্য স্বর্গদূতরা সেই নাগের সঙ্গে যুদ্ধ করল। সেই নাগও তার অপদূতদের সঙ্গে নিয়ে যুদ্ধ করতে লাগল; কিন্তু সাপ যথেষ্ট শক্তিশালী ছিল না, তাই তারা স্বর্গের স্থান হারালো। সেই বিরাট নাগকে স্বর্গ থেকে পৃথিবীতে ছুঁড়ে ফেলা হল। এই বিরাট নাগ হল সেই পুরানো নাগ যাকে দিয়াবল বা শয়তান বলা হয়, সে সমগ্র জগতকে ভ্রান্ত পথে নিয়ে যায়। সেই নাগ ও তার সঙ্গী অপদূতদের পৃথিবীতে ছুঁড়ে ফেলা হল।

10 তখন আমি স্বর্গে এক উচ্চস্বর শুনতে পেলাম, “এখন আমাদের ঈশ্বরের জয়, পরাক্রম, রাজত্ব, ধ্বনি ও তাঁর খ্রীষ্টের কর্তৃত্ত্ব এসে পড়েছে। এসবই সম্ভব হয়েছে কারণ আমাদের ভাইদের বিরুদ্ধে যে দোষারোপকারী, তাকে নীচে ছুঁড়ে ফেলে দেওয়া হয়েছে। সে দিন রাত আমাদের ঈশ্বরের সামনে তাদের নামে দোষারোপ করত। 11 তারা মেষশাবকের রক্তে ও নিজের নিজের সাক্ষ্য দ্বারা সেই নাগকে পরাস্ত করেছে। তারা নিজের প্রাণ তুচ্ছ করে খ্রীষ্টের জন্য মৃত্যুবরণ করতে প্রস্তুত ছিল। 12 তাই স্বর্গ এবং সেখানে বসবাসকারী তোমরা সকলে আনন্দ কর! কিন্তু পৃথিবী ও সমুদ্রের কি দুর্দশাই না হবে, কারণ দিয়াবল তোমাদের কাছে নেমে এসেছে। সে রাগে ফুঁসছে, কারণ সে জানে যে তার আর বেশী সময় বাকী নেই।”

13 পরে ঐ নাগ যখন দেখল যে পৃথিবীতে তাকে ছুঁড়ে ফেলা হল, তখন যে স্ত্রীলোকটি পুত্র প্রসব করেছিল, সেই স্ত্রীলোকটির পেছনে সে তাড়া করতে ছুটল। 14 কিন্তু সেই স্ত্রীলোকটিকে খুব বড় ঈগলের দুটি ডানা দেওয়া হল, যেন যে প্রান্তর তার জন্য নির্দিষ্ট সেই স্থানে সে উড়ে যেতে পারে; সেখানে সে ঐ নাগের দৃষ্টি থেকে দূরে সাড়ে তিন বছর পর্যন্ত নিরাপদে প্রতিপালিতা হবে। 15 তখন সেই নাগ স্ত্রীলোকটিকে লক্ষ্য করে তার মুখ থেকে নদীর জলের মতো জলপ্রবাহ বইয়ে দিল। সেই জল বন্যার মতো এমনভাবে ধেয়ে এল যেন তাকে ভাসিয়ে নিয়ে যেতে পারে। 16 কিন্তু পৃথিবী সেই স্ত্রীলোকটিকে সাহায্য করল; পৃথিবী তার মুখ খুলে নাগের মুখ থেকে নির্গত জল টেনে নিল। 17 তখন সেই নাগ স্ত্রীলোকের ওপর রেগে গিয়ে ঈশ্বরের আদেশ পালনকারী ও যীশুর সত্য শিক্ষাসকল ধারণকারী তাঁর বাকি সব সন্তানের সঙ্গে যুদ্ধ করতে গেল;

18 আর সেই নাগ সমুদ্রের তীরে বালুকার ওপর গিয়ে দাঁড়াল।

Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)

Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International