M’Cheyne Bible Reading Plan
মিথ্যে ভাববাদীর দল
13 “কোন ভাববাদী বা স্বপ্নদর্শক, যে স্বপ্ন ব্যাখ্যা করে, তোমাদের কাছে এসে কোনো চিহ্ন বা অলৌকিক কিছু দেখাতে পারে। 2 আর সে তোমাদের যে চিহ্ন বা অলৌকিক কিছুর কথা বলেছিল তা সফল হলে সে হয়তো তোমাদের বলতে পারে, ‘এস আমরা অন্যান্য দেবতাদের (যে সব দেবতাদের তোমরা জান না।) অনুসরণ করি এবং সেবা করি।’ 3 সেই স্বপ্নদর্শকের কথা শুনো না। কেন? কারণ প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর, তোমাদের পরীক্ষা করছেন। প্রভু জানতে চাইছেন যে, তোমরা তাঁকে তোমাদের সমস্ত হৃদয় এবং তোমাদের সমস্ত প্রাণ দিয়ে ভালোবাস কিনা। 4 তোমরা অবশ্যই তোমাদের প্রভু, ঈশ্বরকে, অনুসরণ করবে! তাঁকে শ্রদ্ধা করবে। প্রভুর আজ্ঞাগুলো মেনে চলবে এবং তিনি তোমাদের যা বলেন সেগুলো করবে। প্রভুর সেবা করো এবং তাঁকে কখনও পরিত্যাগ করো না। 5 এছাড়াও তোমরা অবশ্যই সেই ভাববাদী অথবা স্বপ্নদর্শককে হত্যা করবে। কারণ সে তোমাদের সেই প্রভু ঈশ্বরের বিরুদ্ধাচারণ করতে বলেছিল যে প্রভু তোমাদের মিশর দেশ থেকে বার করে নিয়ে এসেছিলেন এবং দাসত্ব থেকে মুক্তি দিয়েছিলেন। প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর, তোমাদের যেভাবে জীবনযাপন করার জন্য আজ্ঞা করেছিলেন সেই লোকটি তোমাদের সেই জীবন থেকে সরিয়ে আনার চেষ্টা করেছিল। সুতরাং তোমাদের লোকদের মধ্য থেকে সেই মন্দকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য তোমরা অবশ্যই সেই ব্যক্তিকে হত্যা করবে।
6 “তোমাদের ঘনিষ্ঠ কেউ অন্য দেবতাদের পূজা করার জন্য তোমাদের গোপনে পরামর্শ দিতে পারে। সে তোমাদের ভাই হতে পারে, তোমাদের পুত্র হতে পারে, তোমাদের কন্যা হতে পারে, যাকে ভালোবাসো সেই স্ত্রী হতে পারে অথবা তোমাদের ঘনিষ্ঠতম বন্ধুও হতে পারে। সেই লোকটি বলতে পারে, ‘এবার আমরা যাই এবং অন্যান্য দেবতাদের সেবা করি।’ (এরাই হল সেই দেবতা যাদের তোমরা জানতে না এবং তোমাদের পূর্বপুরুষরাও কোন দিন জানত না। 7 এরাই হল তোমাদের চারপাশের অন্যান্য দেশের বসবাসকারী লোকদের কারোর কাছের বা কারোর দূরের দেবতা।) 8 তোমরা সেই ব্যক্তির সঙ্গে অবশ্যই একমত হবে না। তার কথা শুনবে না। তার জন্য দুঃখিত হবে না। তাকে ছেড়ে দিও না এবং তাকে রক্ষা করো না। 9-10 না! তোমরা অবশ্যই সেই ব্যক্তিকে হত্যা করবে। তোমরা অবশ্যই তাকে পাথর মেরে হত্যা করবে। তুমিই হবে প্রথম ব্যক্তি যে পাথর তুলবে এবং তার দিকে ছুঁড়ে মারবে। এরপর সমস্ত লোকরা তাকে হত্যা করার জন্য অবশ্যই পাথর ছুঁড়বে। কারণ সেই ব্যক্তি তোমাদের প্রভু, ঈশ্বরের, কাছ থেকে তোমাদের দূরে সরিয়ে নিয়ে আসার চেষ্টা করেছিল; অথচ সেই মিশর দেশ থেকে প্রভুই তোমাদের দাসত্ব থেকে বার করে নিয়ে এসেছিলেন। 11 তখন ইস্রায়েলের সমস্ত লোকরা শুনতে পাবে এবং ভয় পাবে এবং তারা আর কখনও ঐ সমস্ত খারাপ কাজ করবে না।
12 “প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর, তোমাদের বাস করার জন্য যে শহরগুলো দিয়েছেন, সেই শহরগুলোর মধ্যে কোনো একটির সম্পর্কে যদি এমন খবর পাও 13 যে তোমাদের মধ্যে থেকে কিছু পাষণ্ড লোক শহরের অন্যান্য লোকদের এই বলে ঈশ্বরবিমুখ করার জন্য প্ররোচিত করছে যে, ‘এবার এস আমরা এমন দেবতাদের সেবা করি যাদের তোমরা আগে কখনও জানতে না,’ 14 তখন এই ধরণের কোনো খবর সত্য কিনা তা জানার জন্য তোমরা অবশ্যই যথাসাধ্য চেষ্টা করবে। যদি তোমরা জানতে পারো যে এটি সত্য, যদি তোমরা প্রমাণ করতে পার যে সে রকম সাংঘাতিক ঘটনা সত্যই ঘটেছিল 15 তাহলে তোমরা অবশ্যই সেই শহরের লোকদের সকলকে তরবারি দ্বারা হত্যা করবে এবং তোমরা তাদের সমস্ত পশুদেরও হত্যা করবে। তোমরা অবশ্যই সেই শহরটিকে সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করবে। 16 এরপর তোমরা অবশ্যই সমস্ত মুল্যবান জিনিসপত্র এক জায়গায় জড়ো করবে এবং সেগুলোকে শহরের কেন্দ্রস্থলে নিয়ে যাবে। তারপর শহরটিকে ঐ সমস্ত জিনিসপত্র সমেত পুড়িয়ে ফেলবে। এটি হবে তোমাদের প্রভু, ঈশ্বরের, কাছে হোমবলির নৈবেদ্য। শহরটি যেন অবশ্যই চিরকালের মতো পাথরের স্তুপে পরিণত হয়। সেই শহরটিকে যেন অবশ্যই আবার তৈরী করা না হয়। 17 সেই শহরের প্রতিটি জিনিস ধ্বংস করার জন্য ঈশ্বরকে দান করতে হবে, সুতরাং তোমরা ঐ জিনিসগুলোর কোনটিই নিজেদের জন্য রাখবে না। তোমরা যদি এই আদেশ মেনে চলো, তাহলে প্রভু তোমাদের প্রতি আর এতো ক্রুদ্ধ হবেন না। প্রভু তোমাদের প্রতি কৃপা ও করুণা করবেন। তিনি তোমাদের পূর্বপুরুষদের কাছে যে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, সেই অনুযায়ী তিনি তোমাদের জাতিকে বৃহত্তর করবেন। 18 এই রকমটাই হবে যদি তোমরা প্রভু, তোমাদের ঈশ্বরের, কথা শোনো, তাঁর সমস্ত আজ্ঞাগুলো, যেগুলো আজ আমি তোমাদের দিলাম, সেগুলো সব যদি মেনে চলো এবং প্রভুর দৃষ্টিতে যথার্থ আচরণ করো।
ইস্রায়েলে ঈশ্বরের বিশেষ লোকরা
14 “তোমরা হলে প্রভু, তোমাদের ঈশ্বরের, সন্তান। যখন কেউ মারা যায় তখন তোমরা কোনোভাবেই তোমাদের নিজেদের কাটাছেঁড়া করবে না অথবা মাথা কামিয়ে তোমাদের দুঃখ প্রকাশ করবে না। 2 কেন? কারণ তোমরা অন্যান্য লোকদের থেকে আলাদা। তোমরা হলে প্রভুর বিশেষ লোকজন। পৃথিবীর সমস্ত লোকের মধ্য থেকে প্রভু তোমাদের ঈশ্বর তাঁর বিশেষ লোক হিসেবে তোমাদেরই নির্বাচিত করেছিলেন।
যে খাবার খাওয়ার জন্য ইস্রায়েলীয়রা অনুমতি পেয়েছিল
3 “প্রভু যেগুলো ঘৃণা করেন সেগুলো তোমরা খেও না। 4 তোমরা এই সমস্ত পশুদের খেতে পার—গরু, মেষ, ছাগল, 5 হরিণ, বারশিঙ্গা হরিণ, ছোট হরিণী, বুনো মেষ, বুনো ছাগল, কৃষ্ণসার হরিণ এবং পার্বত্য মেষ। 6 যে কোনোও পশু যাদের পায়ে দুভাগে বিভক্ত খুর আছে এবং যারা জাবর কাটে তাদের তোমরা খেতে পারো। 7 কিন্তু তোমরা উট, খরগোশ অথবা পাহাড়ী শ্বাফন পশুদের খেও না। এই সমস্ত পশুরা জাবর কাটে কিন্তু তাদের পায়ে বিভক্ত খুর নেই, সুতরাং ঐ সমস্ত পশুরা শুচি খাদ্য হিসেবে তোমাদের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। 8 তোমরা অবশ্যই শুয়োর খাবে না। তাদের পায়ের খুরগুলো বিভক্ত, কিন্তু তারা জাবর কাটে না। সুতরাং খাদ্য হিসেবে শুয়োরও তোমাদের গ্রহণযোগ্য নয়। শুয়োরের কোনো মাংস খাবে না। এমনকি শুয়োরের মৃত শরীর স্পর্শ করবে না।
9 “পাখনা এবং আঁশ আছে এরকম যে কোনো রকম মাছ তোমরা খেতে পারো। 10 কিন্তু জলে বসবাসকারী জীবন্ত কোনো কিছু, যাদের পাখনা অথবা আঁশ নেই সেগুলো তোমরা খেও না। এগুলো তোমাদের পক্ষে শুচি খাদ্য নয়।
11 “তোমরা যে কোনোও প্রকারের শুচি পাখী খেতে পারো। 12 কিন্তু এই পাখীগুলো খেও না: ঈগল, শকুন, বাজ, 13 লাল চিল, বাজ পাখি এবং যে কোনো প্রকার চিল, 14 যে কোন প্রকার কাক, 15 শিংওয়ালা পেঁচা, লক্ষী পেঁচা, শঙ্খ চিল, যে কোনোও রকম বাজপাখি, 16 ছোট পেঁচা, বড় পেঁচা, সাদা পেঁচা, 17 মরুভূমি অঞ্চলের পেঁচা, সামুদ্রিক ঈগল, লিপ্তপাদ সামুদ্রিক পাখী, 18 সারস, সারস জাতীয় অন্যান্য যে কোনোও পাখী, ঝুঁটিওয়ালা পাখী অথবা বাদুড়।
19 “ডানাওয়ালা সমস্ত পোকারাই অশুচি, সুতরাং তাদের খেও না। 20 কিন্তু তোমরা যে কোনও প্রকার শুচি পাখী খেতে পার।
21 “নিজের থেকে মারা গেছে এমন কোনোও পশু তোমরা খেও না। তোমরা মৃত পশু খাবার জন্য তোমাদের শহরের কোনো বিদেশীকে দিতে পারো। অথবা তোমরা তা তার কাছে বিক্রি করতে পারো। কিন্তু তোমরা নিজেরা অবশ্যই কোনো মৃত পশু খাবে না, কারণ তোমরা প্রভু তোমাদের ঈশ্বরের। তোমরা তাঁর বিশেষ লোক।
“একটি ছাগশিশুকে তারই মায়ের দুধে রান্না কোরো না।
দশভাগের এক ভাগ দেওয়া
22 “তোমাদের জমিতে যে ফসল হয়, প্রতি বছর তার দশ ভাগের এক ভাগ আলাদা করে রাখবে। 23 এরপর প্রভু যে জায়গাটিকে তাঁর বিশেষ বাসস্থান হিসেবে চিহ্নিত করেছেন, সেখানে তোমরা যাবে। সেই স্থানে তোমরা তোমাদের প্রভু ঈশ্বরের উপস্থিতিতে তোমাদের দানা শস্যের, তোমাদের নতুন দ্রাক্ষারসের, তোমাদের তেলের এবং তোমাদের পশুর দলের মধ্যে প্রথম জাত পশুদের এক দশমাংশ ভোজন করবে। এই প্রকারে তোমাদের প্রভু ঈশ্বরের সম্মান দেখানোর কথা সব সময় মনে রাখবে। 24 কিন্তু জায়গাটা যদি দূরে হয় তবে তোমাদের শস্যের দশ ভাগের এক ভাগ তোমাদের পক্ষে বহন করে নিয়ে যাওয়া সম্ভব নাও হতে পারে। সুতরাং প্রভু যখন তোমাকে আশীর্বাদ করেন তখন ঈশ্বর নিজের নাম স্থাপনের জন্য যে স্থান মনোনীত করেছেন তা দূরে হলে 25 তোমাদের শস্যের সেই অংশটুকু বিক্রি করে যে টাকা পাবে তা সঙ্গে নাও এবং ঈশ্বর যে জায়গা মনোনীত করেছেন সেই বিশেষ জায়গায় যাও। 26 সেই টাকা দিয়ে তোমরা যা চাও তা কেনো—গরু, মেষ, দ্রাক্ষারস অথবা সুরা অথবা যে কোনো রকম খাদ্য। এর পর সেই জায়গায় প্রভু তোমাদের ঈশ্বরের সঙ্গে তোমরা এবং তোমাদের পরিবারের লোকরা অবশ্যই খাবে এবং আনন্দ উপভোগ করবে। 27 কিন্তু তোমাদের শহরে বসবাসকারী লেবীয়দের ভুলো না। তোমরা তাদের সঙ্গে তোমাদের খাদ্য ভাগ করে নেবে, কারণ তোমাদের মতো তাদের জমির কোনো অংশ নেই।
28 “প্রতি তিন বছরের শেষে তোমরা অবশ্যই সেই বছরের সংগৃহীত ফসলের এক দশমাংশ সংগ্রহ করবে। তোমাদের শহরগুলোতে এই খাদ্য জমা করে রেখো। 29 এই খাদ্য লেবীয় লোকদের জন্য কারণ তাদের নিজেদের কোনো জমি নেই। এই খাদ্য তোমাদের শহরে যাদের খাদ্যের প্রয়োজন তাদেরও জন্য। সেই খাদ্য বিদেশীদের, বিধবাদের এবং অনাথদের জন্য। যদি তোমরা এটি করো তাহলে প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর, তোমাদের সমস্ত কাজে আশীর্বাদ করবেন।
99 প্রভুই রাজা।
তাই জাতিগুলোকে ভয়ে কাঁপতে দাও।
করূব দূতদের ওপরে ঈশ্বর একজন রাজার মত বসেন।
তাই পৃথিবীকে ভয়ে কেঁপে উঠতে দাও।
2 সিয়োনে প্রভু মহান!
সমগ্র জাতির ওপরে তিনি একজন মহান নেতা।
3 সমস্ত লোক আপনার প্রশংসা করুক।
ঈশ্বরের নাম ভীতিপ্রদ।
ঈশ্বরই পবিত্র।
4 শক্তিশালী রাজা ন্যায় বিচার পছন্দ করে।
ঈশ্বর, আপনিই ধার্ম্মিকতা সৃষ্টি করেছেন।
আপনিই যাকোবকে ধার্ম্মিকতা এবং ন্যায়নীতি দিয়েছিলেন।
5 আমাদের প্রভু ঈশ্বরের প্রশংসা কর
এবং তাঁর পবিত্র পাদপীঠে[a] উপাসনা কর।
6 মোশি ও হারোণ তাঁর বহু যাজকদের মধ্যে দু’জন
এবং শমূয়েলও তাঁর নাম উচ্চারণকারীদের একজন।
ওরা প্রভুর কাছে প্রার্থনা করেছিলো
এবং প্রভু ওদের উত্তর দিয়েছেন।
7 দীর্ঘ মেঘের ভেতর থেকে ঈশ্বর কথা বলেছেন।
ওরাও তাঁর আজ্ঞাগুলো পালন করেছিল।
ঈশ্বর ওদের বিধি প্রদান করেছিলেন।
8 প্রভু, আমাদের ঈশ্বর, আপনি ওদের প্রার্থনার উত্তর দিয়েছিলেন।
আপনি ওদের দেখিয়েছেন যে আপনিই ক্ষমাশীল ঈশ্বর
এবং মানুষ মন্দ কাজ করে বলে আপনি মানুষকে শাস্তি দেন।
9 আমাদের প্রভু ঈশ্বরের প্রশংসা কর।
তাঁর পবিত্র পর্বতের দিকে মাথা নত কর এবং তাঁর উপাসনা কর।
প্রভু আমাদের ঈশ্বর, সত্যিই পবিত্র!
একটি ধন্যবাদার্হ গীত।
100 হে পৃথিবী, প্রভুর উদ্দেশ্যে গান গাও!
2 যখন তুমি প্রভুর সেবা কর তখন আনন্দিত থেকো!
আনন্দ গীত গাইতে গাইতে প্রভুর সামনে এসো!
3 এটা জেনো যে প্রভুই ঈশ্বর।
তিনিই আমাদের সৃষ্টি করেছেন।
আমরা তাঁরই মেষের পাল।
4 ধন্যবাদের গীত গাইতে গাইতে তাঁর শহরে এসো।
প্রশংসা গীত গাইতে গাইতে তাঁর মন্দিরে এসো।
তাঁকে সম্মান কর, তাঁর নামকে ধন্য কর।
5 প্রভু ভালো!
তাঁর ভালোবাসা চিরন্তন।
আমরা সর্বদাই তাঁর ওপর আস্থা রাখতে পারি!
দায়ূদের একটি গীত।
101 আমি প্রেম এবং ন্যায়ের গান গাইবো।
প্রভু, আমি আপনার উদ্দেশ্যে গান গাইবো।
2 আমি একজন বিচক্ষণ লোকের মত শুদ্ধ হৃদয় নিয়ে
একটি শুদ্ধ জীবনযাপন করব।
আপনি আমার গৃহের একান্ত অভ্যন্তরভাগে কখন আসবেন?[b]
3 আমার সামনে কোন মূর্ত্তি আমি রাখবো না।
ওরকম ভাবে যারা আপনার বিরুদ্ধে যায় তাদের আমি ঘৃণা করি।
আমি তা করবো না!
4 আমি সৎ থাকবো।
আমি কোন মন্দ কাজ করবো না।
5 যদি কেউ গোপনে তার প্রতিবেশী সম্পর্কে মন্দ কথা বলে,
আমি তাকে চুপ করিয়ে দেবো।
আমি লোকেদের কখনই উদ্ধত হতে দেবো না
এবং তাদের ভাবতে দেবো না যে তারা অন্যান্যদের চেয়ে ভালো।
6 আমি সমস্ত দেশের মধ্যে সেই সব লোকেদের খুঁজবো যাদের ওপর নির্ভর করা যায়।
এবং একমাত্র তাদেরই আমার সেবা করতে দেবো।
যারা পবিত্র জীবনযাপন করে একমাত্র তারাই আমার সেবক হবে।
7 আমি মিথ্যেবাদীদের আমার গৃহের গোপন
অভ্যন্তরভাগে বাস করতে দেব না।
8 এই দেশে যে সব মন্দ লোক বাস করে, সব সময়েই আমি তাদের ধ্বংস করবো।
মন্দ লোকদের আমি প্রভুর শহর ছেড়ে যেতে বাধ্য করবো।
প্রভু সনাতন সৃষ্টিকর্তা
41 প্রভু বলেন,
“দূরবর্তী দেশগুলি শান্ত হও, আমার কাছে এসো।
জাতিগুলি পুনরায় শক্তিমান হয়ে উঠুক।
আমার কাছে এসে কথা বল।
আমরা একসঙ্গে বসে ঠিক করে নেব
কে ঠিক কেই বা বেঠিক।
2 আমাকে এইসব প্রশ্নগুলির উত্তর দাও: পূর্ব থেকে আসা লোকটিকে কে জাগিয়েছিল?
তিনি যেখানেই যান, ন্যায় তাঁর সঙ্গে আছে।
তিনি তাঁর তরবারি দিয়ে জাতিগুলিকে পরাস্ত করেন।
তারা ধূলো বালিতে পরিণত হয়।
তিনি তাঁর ধনুকের সাহায্যে রাজাদের পরাজিত করেন।
তারা বাতাসে উড়ে যাওয়া খড়কুটোর মতো পালিয়ে যায়।
3 তিনি সেনাদের ধাওয়া করেন, কিন্তু কখনও আঘাত পান না।
যেখানে তিনি কখনও যাননি সে সব স্থানে যাবেন।
4 এসব ঘটনার কারণ কে?
কে এইসব করেছেন?
কে প্রথম থেকেই সব মানুষকে ডাক দিয়েছিল?
আমি প্রভু, এসব করেছিলাম।
আমি প্রভু, আমিই প্রথম, আমিই শেষ।
5 তোমরা, দূরবর্তী স্থানের লোকরা তাকাও।
ভীত হও!
তোমরা পৃথিবীর দূরবর্তী স্থানের লোকেরা
ভয়ে কাঁপো।
এখানে এসে আমার কথা শোন
এবং তারা এসেছিল।
6 “শ্রমিকরা একে অন্যকে সাহায্য করে। শক্তিশালী হতে একে অন্যকে উৎসাহ দেয়। 7 একজন কর্মী মূর্ত্তি বানানোর জন্য কাঠ কাটে। সে স্বর্ণকারদের উৎসাহিত করে। অন্য শ্রমিক হাতুড়ি দিয়ে ধাতুকে মসৃণ করে তোলে। তারপর সেই কর্মীটি অন্য কর্মীকে ভারী ধাতব খোপের মধ্যে ধাতুটি ঢেলে তাকে পিটিয়ে বিভিন্ন রকমের জিনিস তৈরি করার জন্য উৎসাহিত করে। ঐ শেষ শ্রমিকটি ধাতব কাজের সম্বন্ধে বলে: ‘এইটি ভালো। এটি খুলে আসবে না।’ তারপর সে মূর্ত্তিটিকে পেরেক দিয়ে কোন একটি ভিত্তির ওপর এমন ভাবে বসিয়ে দেয় যাতে সেটা নড়তে বা পড়তে না পারে!”
একমাত্র প্রভুই আমাদের রক্ষা করতে পারেন
8 প্রভু বলেন, “ইস্রায়েল, তুমি আমার দাস।
যাকোব, তোমাকে আমি বেছে নিয়েছি।
তুমি অব্রাহামের পরিবার থেকে এসেছ যে আমাকে ভালবাসত।
9 তুমি বহু দূরের দেশে ছিলে,
কিন্তু আমি তোমার কাছে পৌঁছে যাই।
আমি তোমাকে দূরস্থান থেকে ডেকেছিলাম।
আমি তোমাকে বলেছিলাম যে তুমি আমার সেবক।
আমি তোমাকে বেছে নিয়েছি
এবং আমি তোমাকে বাতিল করিনি।
10 চিন্তিত হয়ো না, আমি তোমার সঙ্গে আছি।
ভীত হবে না, আমি তোমার ঈশ্বর।
আমি তোমাকে শক্তিশালী করব।
তোমাকে সাহায্য করব।
তোমাকে আমার ভাল দক্ষিণ হস্ত দিয়ে সমর্থন দেব।
11 দেখো, কিছু লোক তোমার ওপর ক্রুদ্ধ।
কিন্তু তারা লজ্জিত হবে।
যারা তোমার সঙ্গে তর্ক করে তারা হেরে যাবে এবং অদৃশ্য হবে।
12 যারা তোমার বিরুদ্ধাচরণ করে
তাদের তুমি খুঁজবে কিন্তু দেখতে পাবে না।
যে সব লোক তোমার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিল
তারা সকলেই পুরোপুরি ভাবে অদৃশ্য হয়ে যাবে।
13 আমি প্রভু তোমার ঈশ্বর,
তোমার ডান হাত ধরে আমি আছি।
এবং আমি তোমাকে বলি, ‘ভীত হবে না!
আমি তোমাকে সাহায্য করব।’
14 মূল্যবান যিহূদা ভীত হবে না!
আমার প্রিয় ইস্রায়েলের লোকরা ভয়চকিত হবে না!
আমি সত্যিই তোমাদের সাহায্য করব।”
প্রভু নিজেই ঐসব বলেন।
ইস্রায়েলের পবিত্রতম (ঈশ্বর)
যিনি রক্ষাকর্তা তিনিই এইসব বলেছেন:
15 “দেখ, আমি তোমাকে একটা নতুন শস্য মাড়া যন্ত্রের মতো বানিয়েছি।
সেই যন্ত্রের অনেকগুলো ধারালো ছুরি আছে।
কৃষকরা এইসব ব্যবহার করে খোসা ভাঙার কাজে, যাতে তারা শস্য থেকে আলাদা হতে পারে।
তুমি পর্বতগুলিকে ঐ শস্য মাড়ার মতো ভেঙে ফেলবে।
16 তুমি তাদের বাতাসে ছুঁড়ে ফেলবে।
বাতাস তাদের বয়ে নিয়ে দূরে চলে যাবে এবং বিক্ষিপ্ত করবে।
তখন তুমি খুশী হবে এবং প্রভুর মধ্যে স্থিত হয়ে আনন্দ করবে।
ইস্রায়েলের পবিত্রতম ঈশ্বরের জন্য তুমি গর্বিত হবে।”
17 “দরিদ্র ও অভাবী লোকরা জলের জন্য খোঁজ করবে।
কিন্তু তারা খুঁজে পাবে না।
তারা তৃষ্ণার্ত, তাদের জিহ্বা শুষ্ক।
আমি, ইস্রায়েলের ঈশ্বর, তাদের প্রার্থনার জবাব দেব।
আমি তাদের ত্যাগ করব না, মরতে দেব না।
18 আমি শুকনো পাহাড়ের ওপর দিয়ে নদীকে প্রবাহিত করাব।
উপত্যকায় উপত্যকায় বইয়ে দেব জলভরা নদী।
মরুকে করে তুলব জলে ভরা হ্রদ।
জলপ্রবাহ বয়ে যাবে শুকনো ভূমিতে।
19 মরুভূমিতে গাছ জন্মাবে।
সেখানে থাকবে এরস, বাবলা, জলপাই, তাশূর, দেবদারু ও পাইন গাছ।
20 লোকরা এই জিনিসগুলি দেখবে
এবং তারা জানতে পারবে প্রভুই এই কর্ম করেছেন।
মানুষ এইসব দেখতে পাবে,
তারা বুঝতে শুরু করবে যে
ইস্রায়েলের পবিত্রতম (ঈশ্বর) এগুলি সৃষ্টি করেছেন।”
মূর্ত্তিকে প্রভুর প্রত্যাখান
21 যাকোবের রাজা প্রভু বলেন, “এস। আমাকে তোমার যুক্তি বল। আমাকে তোমরা প্রমাণ দেখাও এবং আমরা ঠিক করে দেব কোনটা সঠিক। 22 তোমাদের মূর্ত্তিদের এসে আমাদের বলা উচিৎ কি ঘটেছে। শুরুতে কি কি ঘটেছিল? ভবিষ্যতে কি ঘটবে? বলুক আমাদের! আমরা তাদের কাছ থেকে শুনব। তখন আমরা জানতে পারব পরে কি ঘটবে। 23 পরে কি কি ঘটবে তা তোমরা আমাদের জানাও। তারপর আমরা তোমাদের সত্যিকারের দেবতা বলে বিশ্বাস করব। কিছু কর! ভাল না হয় মন্দ কিছু একটা করে দেখাও! তখন আমরা মেনে নেব তুমি জীবন্ত এবং তোমাকেই আমরা মেনে চলব।
24 “দেখো। তোমরা মূর্ত্তিরা আসলে কিছুই নও। তোমরা কিছুই করতে পারবে না! যে কোন অকর্মণ্য লোকই তোমার পূজা করতে চাইবে।”
প্রভু প্রমাণ করবেন তিনিই একমাত্র ঈশ্বর
25 “আমি উত্তর দিকে একটি লোককে জাগালাম।
সে পূর্বদিক থেকে, যেখানে সূর্যোদয় হয়, সেখান থেকে আসছে।
সে আমার নাম জপ করে।
যে মানুষ ঘট তৈরী করে সে ভিজে মাটির ওপর দিয়ে হাঁটে।
ঠিক একই রকম ভাবে এই বিশেষ লোকটি রাজাদের পদদলিত করে।
26 “কে আমাদের এইসব ঘটার আগেই বলেছিল?
তাকেই আমাদের ঈশ্বর বলা উচিৎ।
তোমাদের মধ্যে কোন মূর্ত্তি কি এইসব বলেছিল?
না! সেই সব মূর্ত্তিদের কেউই কিছু বলতে পারে নি।
সেই সব মূর্ত্তিরা কোন কথাই বলতে পারে নি।
তারা তোমাদের কোন কথা শুনতেও পায় নি।
27 আমি প্রভু, সর্বপ্রথম সিয়োনকে এইসব ঘটনার কথা বলি।
আমি জেরুশালেমে এই বার্তা নিয়ে একজন বার্তাবাহক পাঠিয়েছিলাম:
‘দেখ তোমাদের লোকরা ফিরে আসছে।’”
28 আমি ঐসব মূর্ত্তিদের দেখেছিলাম।
তারা কেউই কোন কিছু বলার মত
যথেষ্ট জ্ঞানী নয়।
আমি তাদের প্রশ্ন করেছিলাম
কিন্তু তারা কোন উত্তর দিতে পারেনি।
29 এইসব দেবতারা আসলে কিছু নয়।
তারা কিছুই করতে পারে না।
সেই সব মূর্ত্তিগুলি আসলে একেবারে মূল্যহীন।
দুই সাক্ষী
11 এরপর আমাকে বেড়ানোর লাঠির মতো একটি মাপকাঠি দেওয়া হল। একজন বললেন, “ওঠ, ঈশ্বরের মন্দির ও যজ্ঞবেদীর পরিমাপ কর আর তার মধ্যে যারা উপাসনা করছে তাদের সংখ্যা গণনা কর। 2 কিন্তু মন্দিরের বাইরের প্রাঙ্গণের কোন মাপ নিও না, কারণ তা অইহুদীদের দেওয়া হয়েছে। বিয়াল্লিশ মাস ধরে তারা সেই পবিত্র নগরটি পায়ে দলবে। 3 আমি আমার দুজন সাক্ষীকে ক্ষমতা দেব, তাঁরা বারশো ষাট দিন পর্যন্ত ভাববাণী বলবেন।”
4 সেই দুজন সাক্ষী হলেন দুটি জলপাই গাছ ও দুটি দীপাধার, যাঁরা পৃথিবীর প্রভুর সামনে দাঁড়িয়ে আছেন। 5 যদি কেউ তাঁদের ক্ষতি করতে চায়, তবে ঐ সাক্ষীদের মুখ থেকে আগুন বেরিয়ে এসে তাঁদের শত্রুদের গ্রাস করবে, যে কেউ তাঁদের ক্ষতি করতে চাইবে তাদেরও এইভাবে মরতে হবে। 6 আকাশ রুদ্ধ করে দেবার ক্ষমতা তাঁদের আছে, যেন ভাববাণী বলার সময় বৃষ্টি না হয়; আর জল রক্তে পরিণত করবার ও পৃথিবীর বুকে সব রকমের মহামারী যতবার ইচ্ছা ততবার পাঠাবার ক্ষমতা তাঁদের আছে।
7 তাঁদের সাক্ষ্যদান শেষ হলে, যে পশু পাতালের অতলস্পর্শী কূপ থেকে উঠে আসবে সে তাঁদের সঙ্গে যুদ্ধ করবে, আর যুদ্ধে তাঁদের হারিয়ে দিয়ে হত্যা করবে। 8 তাঁদের মৃত দেহগুলি সেই মহানগরের রাস্তার ওপরে পড়ে থাকবে, এ সেই নগর যাকে আত্মিক অর্থে সদোম ও মিশর বলে; আর এই নগরেই তাঁদের প্রভু ক্রুশে বিদ্ধ হয়েছিলেন। 9 লোকরা তাঁদের কবর দিতে অনুমতি দেবে না। সমস্ত উপজাতি, সম্প্রদায়, ভাষাভাষী ও জাতির লোকরা জড়ো হয়ে সাড়ে তিন দিন ধরে তাঁদের শব দেখতে থাকবে। 10 পৃথিবীর লোকরা আনন্দিত হবে, কারণ ঐ দুজনের মৃত্যু হয়েছে। তারা আমোদ-প্রমোদ করবে, পরস্পরকে উপহার পাঠাবে, কারণ এই দুজন ভাববাদী পৃথিবীর লোকদের অতিষ্ঠ করে তুলেছিলেন।
11 এরপর সেই সাড়ে তিন দিন শেষ হলে ঈশ্বরের কাছ থেকে জীবনের আত্মা তাঁদের মধ্যে প্রবেশ করল, আর তাঁরা উঠে দাঁড়ালেন। যারা তাদের দেখল তাদের মধ্যে প্রচণ্ড ভয়ের সঞ্চার হল। 12 সেই দুজন ভাববাদী স্বর্গ থেকে এক রব শুনলেন, “এখানে উঠে এস!” তখন তাঁরা মেঘের মধ্য দিয়ে স্বর্গে উঠে গেলেন; আর তাঁদের শত্রুরা তাদের যেতে দেখল।
13 সেই মুহূর্তে প্রচণ্ড ভূমিকম্প হল, তার ফলে শহরের দশভাগের একভাগ ধ্বংস হয়ে গেল এবং সাত হাজার লোক মারা পড়ল। যাঁরা বাকি রইল তারা সকলে প্রচণ্ড ভয় পেল ও স্বর্গের ঈশ্বরের মহিমা কীর্তন করল।
14 দ্বিতীয় সন্তাপ কাটল। দেখ, তৃতীয় সন্তাপ শীঘ্রই আসছে।
সপ্তম তূরী ধ্বনি
15 এরপর সপ্তম স্বর্গদূত তূরী বাজালেন, তখন স্বর্গে কারা যেন উদাত্ত কন্ঠে বলে উঠল:
“জগতের ওপর শাসন করবার ভার এখন আমাদের প্রভুর ও তাঁর খ্রীষ্টের হল,
আর তিনি যুগপর্যায়ে যুগে যুগে রাজত্ব করবেন।”
16 পরে সেই চব্বিশ জন প্রাচীন, যাঁরা ঈশ্বরের সামনে নিজেদের সিংহাসনে বসে থাকেন, তাঁরা উপুড় হয়ে ঈশ্বরের উপাসনা করলেন। 17 তাঁরা বললেন:
“প্রভু ঈশ্বর, সর্বশক্তিমান, যিনি আছেন ও ছিলেন,
আমরা তোমাকে ধন্যবাদ জানাই;
কারণ তুমি নিজ পরাক্রম ব্যবহার করেছ
এবং রাজত্ব করতে শুরু করেছ।
18 জগতের জাতিবৃন্দ তোমার ওপর ক্রুদ্ধ ছিল;
কিন্তু এখন তোমার ক্রোধের পালা।
মৃত লোকদের বিচারের সময় হয়েছে;
আর তোমার ভাববাদী, যারা তোমার দাস, যারা তোমার লোক,
ক্ষুদ্র এবং গুরুত্বপূর্ণ সব লোক যারা তোমাকে শ্রদ্ধা করে,
তাদের পুরস্কার দেওয়ার সময় হয়েছে।
যারা পৃথিবীকে ধ্বংস করছে তাদের ধ্বংস করবার সময় হয়েছে।”
19 পরে স্বর্গে ঈশ্বরের মন্দিরের দরজা উন্মুক্ত হলে মন্দিরের মধ্যে তাঁর চুক্তির সিন্দুকটি দেখা গেল, বিদ্যুত চমকালো, গুরু গুরু শব্দ, বজ্রপাত, ভূমিকম্প ও প্রচণ্ড শিলাবৃষ্টি হল।
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International