M’Cheyne Bible Reading Plan
প্রভুকে মনে রেখো
8 “তোমরা অবশ্যই সমস্ত আজ্ঞাগুলো মেনে চলবে যেগুলো আজ আমি তোমাদের দিলাম। কারণ তাহলে তোমরা বেঁচে থাকবে, বৃদ্ধি পাবে এবং প্রভু তোমাদের পূর্বপুরুষদের কাছে যে দেশ দেবেন বলে শপথ করেছিলেন সেই দেশে প্রবেশ করবে। 2 প্রভু তোমাদের ঈশ্বর, 40 বছর ধরে মরুভূমিতে যে ভ্রমণের নেতৃত্ব দিয়েছেন, সেটার কথা তোমরা অবশ্যই মনে রাখবে। প্রভু তোমাদের পরীক্ষা করছিলেন। তিনি তোমাদের বিনয়ী করতে চেয়েছিলেন। তিনি তোমাদের মনের ভেতরের জিনিস জানতে চেয়েছিলেন। তিনি জানতে চেয়েছিলেন যে তোমরা তাঁর আদেশ মানবে কিনা। 3 প্রভু তোমাদের নম্র করেছিলেন এবং তোমাদের ক্ষুধার্ত করেছিলেন। তিনি তোমাদের মান্না খাইয়েছিলেন—যা তোমরা আগে কখনও জানতে না, যা তোমাদের পূর্বপুরুষরা আগে কখনও দেখে নি। এই কাজগুলো প্রভু করেছিলেন যাতে তোমরা জানো যে কেবলমাত্র রুটিই মানুষকে বাঁচিয়ে রাখে না। মানুষের জীবন প্রভুর কথিত সমস্ত বাক্যের ওপর নির্ভর করে। 4 এই গত 40 বছরে তোমাদের জামাকাপড় পুরানো হয় নি এবং তোমাদের পাও ফোলে নি, কারণ প্রভু তোমাদের রক্ষা করেছিলেন। 5 তোমরা অবশ্যই মনে রাখবে যে প্রভু তোমাদের ঈশ্বর, তোমাদের শিক্ষা দিচ্ছিলেন ও সংশোধন করছিলেন যেমন একজন পিতা তার পুত্রকে শিক্ষা দেয় এবং সংশোধন করে।
6 “তোমরা অবশ্যই প্রভু, তোমাদের ঈশ্বরের আজ্ঞাগুলো মেনে চলে তাঁকে অনুসরণ এবং শ্রদ্ধা করবে। 7 প্রভু তোমাদের ঈশ্বর তোমাদের এক উত্তম দেশে নিয়ে যেতে চলেছেন—যে দেশে অনেক নদী এবং জলপ্রবাহ আছে। সেখানে উপত্যকা এবং পাহাড়গুলোতে ভূমির ভেতর থেকে জল বেরিয়ে এসে প্রবাহিত হয়। 8 সেই দেশে গম এবং বার্লি, দ্রাক্ষালতা, ডুমুর গাছ এবং ডালিম আছে। সেই দেশে জলপাই তেল এবং মধু আছে। 9 সেখানে তোমাদের খাদ্যের অভাব হবে না এবং তোমাদের প্রয়োজনীয় সমস্ত কিছুই তোমরা পাবে। সেই দেশের পাথরগুলো লোহা। সেখানকার পাহাড় খুঁড়লে তোমরা তামা পাবে। 10 তোমরা যা খেতে চাও তা পেয়ে তৃপ্ত হবে এবং সেই সুন্দর দেশটি তোমাদের দেবার জন্য তোমরা তোমাদের প্রভু ঈশ্বরের প্রশংসা করবে।
প্রভু যা করেছিলেন সেগুলো ভুলো না
11 “সতর্ক হও। তোমাদের প্রভু ঈশ্বরকে ভুলো না। আমি আজ তোমাদের যে আজ্ঞা, বিধি এবং নিয়মসমুহ দিলাম সেগুলো মেনে চলার ব্যাপারে সতর্ক হও। 12 তাহলে তোমাদের খাওয়ার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ খাবার থাকবে এবং তোমরা সুন্দর বাড়ী বানাবে এবং তাতে বাস করবে। 13 তোমাদের গরু, মেষ এবং ছাগলগুলো সংখ্যায় বাড়বে। তোমরা প্রচুর সোনা এবং রূপো পাবে। সমস্ত কিছুই তোমরা প্রচুর পরিমাণে পাবে। 14 যখন সেগুলো হয়, সেসময় যাতে তোমরা অহঙ্কারী না হও সে ব্যাপারে তোমরা অবশ্যই সতর্ক থাকবে। তোমরা অবশ্যই প্রভু তোমাদের ঈশ্বরকে ভুলবে না। তোমরা মিশরে ক্রীতদাস ছিলে; কিন্তু প্রভু তোমাদের মুক্ত করে সেই দেশ থেকে নিয়ে এসেছিলেন। 15 সেই বিশাল এবং সাংঘাতিক মরুভূমির মধ্য দিয়ে প্রভু তোমাদের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। সেই মরুভূমিতে বহু বিষাক্ত সাপ এবং কাঁকড়াবিছে ছিল। জমি ছিল শুকনো এবং সেখানে কোথাও জল ছিল না। কিন্তু ঈশ্বর পাথরের ভেতর থেকে তোমাদের জল দিয়েছিলেন। 16 মরুভূমিতে প্রভু তোমাদের মান্না খাইয়েছিলেন—যেটা তোমাদের পূর্বপুরুষরা কোনোদিন দেখে নি। প্রভু তোমাদের পরীক্ষা করেছিলেন, বিনয়ী করেছিলেন যাতে শেষে সমস্ত কিছু তোমাদের ভালো হয়। 17 তোমরা মনে মনেও বোলো না, ‘আমি আমার নিজের শক্তি এবং সামর্থ্যের দ্বারা এই সমস্ত সম্পদ পেয়েছিলাম।’ 18 প্রভু, তোমাদের ঈশ্বরকে, স্মরণ করো কারণ তিনিই তোমাদের ঐ সম্পদ লাভ করার জন্য শক্তি দিয়েছিলেন, যেন তোমাদের পূর্বপুরুষদের সঙ্গে তিনি যে চুক্তি করেছিলেন সেটিকে রক্ষা করতে পারেন, ঠিক যেমন তিনি আজও করছেন।
19 “প্রভু, তোমাদের ঈশ্বরকে কখনও ভুলো না। কখনও অন্য দেবতাদের অনুসরণ কোরো না! তাদের পূজা এবং সেবা কোরো না। যদি তোমরা সেটা করো, তাহলে আমি আজ তোমাদের সাবধান করলাম: তোমরা নিশ্চিত ধ্বংসপ্রাপ্ত হবে। 20 প্রভু তোমাদের জন্য অন্যান্য জাতিগুলোকে ধ্বংস করছেন; কিন্তু তাঁর কথা না শুনলে তোমরাও ঠিক তাদের মতোই ধ্বংস হবে!
91 গুপ্ত আশ্রয় লাভের জন্য তুমি পরাৎপরের কাছে যেতে পারো।
সুরক্ষার জন্য তুমি সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের কাছে যেতে পারো।
2 আমি প্রভুকে বলেছি, “আপনিই আমার নিরাপদ আশ্রয়স্থল, আপনিই আমার দুর্গ।
হে আমার ঈশ্বর, আমি আপনাকে বিশ্বাস করি।”
3 ভয়ঙ্কর ব্যাধি এবং গুপ্ত বিপদ থেকে
ঈশ্বর তোমায় রক্ষা করবেন।
4 নিরাপত্তার জন্য তুমি ঈশ্বরের কাছে যেতে পারো।
যেমন করে পাখি তার ডানা মেলে তার শাবকদের আগলে রাখে, তেমন করে, ঈশ্বর তোমায় রক্ষা করবেন।
তোমায় রক্ষা করার জন্য ঈশ্বর হবেন একটি ঢাল ও প্রাচীরের মত।
5 রাতে তোমার ভয় পাওয়ার মতো কিছু থাকবে না।
দিনের বেলাতেও শত্রুর তীরকে তুমি ভয় পাবে না।
6 নিশাকালে যে অসুখ আসে তাকে তুমি ভয় পাবে না,
কিংবা দিনের বেলায় যে ভয়ঙ্কর অসুস্থতা আসে তাকেও তুমি ভয় পাবে না।
7 তুমি 1000 হাজার শত্রুকে পরাজিত করতে পারবে।
তোমার নিজের ডান হাত 10,000 শত্রু সৈন্যকে পরাজিত করবে।
শত্রুরা তোমায় স্পর্শ পর্যন্ত করতে পারবে না!
8 লক্ষ্য করে দেখ, দেখবে যে
ওই দুষ্ট লোকদের শাস্তি হয়েছে!
9 কেন? কারণ তুমি ঈশ্বরে আস্থা রাখ।
কারণ পরাৎপরকে তুমি তোমার নিরাপদ আশ্রয়স্থলরূপে গ্রহণ করেছ।
10 তোমার কোন অমঙ্গল হবে না।
তোমার বাড়ীতে কোন অসুখ থাকবে না।
11 ঈশ্বর তাঁর দূতদের আজ্ঞা দেবেন
এবং তুমি যেখানেই যাবে তারা তোমায় রক্ষা করবে।
12 তোমার পা যাতে পাথরে হোঁচট না খায়,
সেই জন্য ওদের হাত তোমায় ধরে থাকবে।
13 বিষধর সাপ, এমন কি সিংহের মধ্যে দিয়েও
তুমি হেঁটে যেতে পারবে।
14 প্রভু বলেন, “যদি কোন ব্যক্তি আমাকে ভালবাসে এবং বিশ্বাস করে, আমি তাকে রক্ষা করবো।
আমার অনুগামীরা যারা আমার নাম উপাসনা করে, তাদের আমি রক্ষা করবো।
15 আমার অনুগামীরা সাহায্যের জন্য আমায় ডাকবে এবং আমি তাদের সাড়া দেবো।
যখন তারা সমস্যায় পড়বে তখন আমি ওদের সঙ্গে থাকবো।
আমি ওদের রক্ষা করবো এবং সম্মান দেবো।
16 আমার অনুগামীদের আমি দীর্ঘ জীবন দেবো।
আমি ওদের রক্ষা করবো।”
অশূরদের যিহূদা আক্রমণ
36 যিহূদার রাজা হিষ্কিয়ের 14 বছরের রাজত্বকালে অশূরের রাজা সন্হেরীব যিহূদার দুর্ভেদ্য নগরগুলিতে যুদ্ধ করতে গিয়েছিলেন। সন্হেরীব সেই শহরগুলিকে পরাস্ত করেন। 2 সন্হেরীব বিশাল সেনাদল সহ তাঁর সেনাপতিকে জেরুশালেমের রাজা হিষ্কিয়ের বিরুদ্ধে পাঠিয়েছিলেন। সেনাপতি ও তার সেনাদল লাখীশ ত্যাগ করে জেরুশালেমে যায়। তারা ধোপার মাঠে যাওয়ার পথে যে উচ্চতর পুষ্করিনীটি আছে তার জলের নলের কাছে থেমেছিল।
3 জেরুশালেম থেকে সেনাপতির সঙ্গে কথা বলতে তিনজন মানুষ যায়। এরা ছিলেন হিল্কিয়ের পুত্র ইলিয়াকীম, আসফের পুত্র যোয়াহ ও শিব্ন। ইলিয়াকীম ছিলেন প্রাসাদের পরিচালক। যোয়াহ ছিলেন নথীরক্ষক এবং শিব্ন ছিলেন রাজপরিবারের সচিব।
4 সেনাপতি তাদের বলল, “অশূরের মহান রাজা যা বলেন তা হিষ্কিয়কে গিয়ে বল। কথাটা হল:
“‘তোমরা কাদের কাছ থেকে সাহায্য পাবার আশা কর? 5 আমি বলি, তোমরা যদি ক্ষমতা ও সুপরামর্শের সাহায্যে যুদ্ধ করার ওপর আস্থাশীল হও—সেটা তখন হবে অপ্রয়োজনীয়। ওসব কিছুই নয়, নিছকই বুলি মাত্র। এখন আমি জানতে চাই যে কার ওপর তোমরা এত নির্ভর করছ যে আমার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করতে চাও? 6 তোমরা কি মনে কর মিশর তোমাদের সাহায্য করবে? মিশর ভাঙা লাঠির মতো। তোমরা যদি সমর্থনের জন্য সেই লাঠির ওপর ভর দাও, তবে এটা তোমাদের আঘাত করবে এবং তোমাদের হাতের মধ্যে গর্তের সৃষ্টি করবে। মিশরের রাজা ফরৌণের ওপর সাহায্যের বিষয়ে কেউই আস্থা রাখতে পারে না।
7 “‘কিন্তু তোমরা হয়তো বলতে পারো, “আমরা আমাদের প্রভু ঈশ্বরের ওপর সাহায্যের ব্যাপারে আস্থাশীল।” কিন্তু আমি জানি যেখানে লোকরা প্রভুর উপাসনা করত সেই সব বেদী এবং পবিত্র স্থানগুলিকে হিষ্কিয় ধ্বংস করেছে এবং হিষ্কিয় যিহূদা ও জেরুশালেমের লোকদের বলছে, “তোমাদের শুধুমাত্র জেরুশালেমের এই বেদীটিতে উপাসনা করা উচিৎ।”
8 “‘যদি তোমরা এখনও যুদ্ধ করতে চাও তবে আমার মনিব অশূরদের সম্রাট তোমাদের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হবেন। আমি প্রতিশ্রুতি করছি তোমরা যদি ঘোড়ায় চড়ার জন্য যথেষ্ট মানুষ জোগাড় করতে পার তবে আমি তোমাদের যুদ্ধের জন্য 2000 ঘোড়া দেব। 9 কিন্তু তবুও তোমরা আমার মনিবের নিম্নস্তরের কোন সেনানায়ককেও পরাস্ত করতে পারবে না। তবু কেন তোমরা মিশরের রথসমূহ ও অশ্বারোহী সেনাবাহিনীর ওপর নির্ভর কর?
10 “‘এখন তোমরা কি মনে কর আমি প্রভুর সাহায্য ছাড়াই এই দেশ ধ্বংস করতে এসেছি? প্রভু আমাকে বলেছেন, “এই দেশটি আক্রমণ কর এবং এটাকে ধ্বংস কর।”’”
11 তখন ইলিয়াকীম, শিব্ন ও যোয়াহ সেনাপতিকে বলেন, “অনুগ্রহ করে আমাদের সঙ্গে অরামীয় ভাষায় কথা বলুন। আমরা এই ভাষা বুঝি। যিহূদার ভাষায় আমাদের সঙ্গে কথা বলবেন না, কারণ শহরের দেওয়ালের ওপর যে লোকরা বসে আছে তারা আপনার কথা শুনতে পাবে এবং বুঝতে পারবে।”
12 কিন্তু সেনাপতি বলল, “আমার প্রভু শুধুমাত্র তোমাদের ও তোমাদের মনিবের সঙ্গে কথা বলতে পাঠান নি। আমার মনিব প্রাচীরে বসে থাকা লোকদের সঙ্গেও কথা বলতে নির্দেশ দিয়েছেন। ঐসব লোকদের জন্য যথেষ্ট খাদ্য ও জল থাকবে না। তোমাদের মতো, ওদেরও নিজেদের বর্জ্য পদার্থ ও নিজেদের প্রস্রাব খেতে হবে।”
13 তখন সেনাপতি ইহুদী ভাষায় জোরে চেঁচিয়ে উঠল,
14 মহান রাজা, অশূরের রাজার বার্তা শোন: “‘হিষ্কিয়কে তোমাদের ঠকাবার সুযোগ দিও না। আমার ক্ষমতা থেকে সে তোমাদের বাঁচাতে পারবে না। 15 হিষ্কিয়ের কথা বিশ্বাস করো না। সে বলবে, “প্রভুর প্রতি আস্থাশীল হও! প্রভু আমাদের রক্ষা করবেন। প্রভু অশূরদের রাজাকে এই শহরকে পরাস্ত করতে দেবেন না। এসব কথা বিশ্বাস করবে না।”
16 “‘তোমরা হিষ্কিয়ের ওসব কথা শুনো না। অশূর রাজার কথা শোন। অশূর রাজা বলেন, “আমাদের চুক্তি করা উচিৎ। তোমরা শহরের বাইরে আমার কাছে এসো। তখন সব মানুষই ঘরে ফেরার জন্য মুক্ত হবে। প্রত্যেক মানুষ তার বাগান থেকে দ্রাক্ষা খাওয়ার বিষয়ে মুক্ত হবে। এবং প্রত্যেক মানুষই তার ডুমুর গাছ থেকে ডুমুর খেতে পারবে। প্রত্যেক মানুষ তার নিজের কুয়ো থেকে জল পান করতে পারবে। 17 যতদিন পর্যন্ত আমি না আসব এবং তোমাদের প্রত্যেককে তোমাদের নিজেদের দেশের মতো একটি দেশে নিয়ে যেতে পারব, ততদিন পর্যন্ত তোমরা এটা করতে পারবে। সেই নতুন দেশে তোমরা ভাল শস্য ও নতুন দ্রাক্ষারস, রুটি ও দ্রাক্ষার বাগান পাবে।”
18 “‘হিষ্কিয়কে তোমাদের প্রতারণা করতে দিও না। সে বলে, “প্রভু আমাদের রক্ষা করবে।” কিন্তু আমি তোমাদের জিজ্ঞাসা করি, অন্য দেশ সমূহের কোন দেবতা কি অশূরদের রাজার হাত থেকে তাদের দেশসমূহ রক্ষা করতে সক্ষম হয়েছে? না! 19 হমাতের ও অর্পদের দেবতারা কোথায়? তারা পরাস্ত! সফর্বয়িমের দেবতারা কোথায়? তারা পরাজিত হয়েছে। তারা কি শমরিয়াকে আমার ক্ষমতা থেকে রক্ষা করেছিল? না! 20 অন্য দেশসমূহের কোন দেবতা কি আমার হাত থেকে তাদের দেশ রক্ষা করেছে? না! প্রভু কি জেরুশালেমকে আমার হাত থেকে রক্ষা করতে পারেন? না!’”
21 কিন্তু জেরুশালেমের লোকরা নীরব হয়ে থাকল যেহেতু রাজা হিষ্কিয় নির্দেশ দিয়েছেন সেহেতু তারা সেনাপতিকে কিছুই বলল না। কারণ রাজার আদেশ ছিল, “তাকে কিছু বোলো না।”
22 তারপর প্রাসাদের পরিচালক ইলিয়াকীম (হিল্কিয়ের পুত্র), রাজপরিবারের সচিব শিব্ন এবং নথীরক্ষক যোয়াহ (আসফের পুত্র) হিষ্কিয়ের কাছে গেলেন। তাঁরা নিজেদের দুঃখ প্রকাশ করবার জন্য তাঁদের জামাকাপড় ছিঁড়ে ফেললেন। তাঁরা হিষ্কিয়কে অশূরের যাবতীয় বক্তব্য শোনালেন।
মেষশাবকটি পুঁথি খুললেন
6 মেষশাবক যখন সেই সাতটির মধ্যে প্রথম সীলমোহরটি ভেঙে খুললেন, তখন আমি সেই চারজন প্রাণীর মধ্যে একজনকে দেখলাম ও তার মেঘ গর্জনের মতো কন্ঠস্বর শুনলাম। সে বলল, “এস!” 2 এরপর আমি দেখলাম, আমার সামনে একটি সাদা রঙের ঘোড়া। তার ওপর যিনি বসে আছেন তাঁর হাতে একটি ধনুক ছিল। তাঁকে একটা মুকুট পরিয়ে দেওয়া হলে তিনি যুদ্ধ জয় করতে বিজেতার মত বাইরে এলেন।
3 মেষশাবক যখন দ্বিতীয় সীলমোহরটি ভাঙলেন তখন আমি সেই প্রাণীদের মধ্যে দ্বিতীয় জনকে বলতে শুনলাম, “এস!” 4 তখন আর একটি আগুনের মতো লাল রঙের ঘোড়া বার হয়ে এল। সেই ঘোড়াটির ওপর যে বসে আছে তাকে পৃথিবী থেকে শান্তি কেড়ে নেবার ক্ষমতা দেওয়া হল; আর দেওয়া হল সেই ক্ষমতা, যার বলে মানুষ পরস্পরকে বধ করবে। তাকে একটা বড় তরবারি দেওয়া হল।
5 মেষশাবক যখন তৃতীয় সীলমোহরটি ভাঙ্গলেন, আমি শুনলাম, সেই প্রাণীদের মধ্যে তৃতীয় জন বললেন, “এস!” পরে আমি দেখলাম, একটা কালো ঘোড়া আমার সামনে দাঁড়িয়ে, তার ওপর যে বসে আছে, তার হাতে একটা দাঁড়িপাল্লা। 6 এরপর আমি সেই চারজন প্রাণীর মধ্য থেকে একটা স্বরের মত কোন একটা কিছু শুনতে পেলাম। সেই স্বর বলছে, “এক সের গম একজন মজুরের দৈনিক মজুরীর সমান; আর তিন সের যব, একজন মজুরের দৈনিক মজুরীর সমান। অলিভ তেল ও দ্রাক্ষারস নষ্ট করো না।”
7 মেষশাবক যখন চতুর্থ সীলমোহরটি ভাঙলেন, তখন আমি সেই প্রাণীদের মধ্যে চতুর্থ জনকে বলতে শুনলাম, “এস!” 8 পরে আমি দেখলাম, একটা পাণ্ডুবর্ণ ঘোড়া আমার সামনে। তার ওপর যে বসে আছে তার নাম “মৃত্যু” আর পাতাল তার ঠিক পেছনেই আছে। তাকে পৃথিবীর এক চতুর্থাংশ লোকের ওপরে কর্তৃত্ত্ব করবার ক্ষমতা দেওয়া হল, যেন সে যুদ্ধ, দুর্ভিক্ষ, মহামারী ও হিংস্র পশুদের দিয়ে সকলকে বধ করতে পারে।
9 মেষশাবক যখন পঞ্চম সীলমোহরটি ভাঙলেন, তখন আমি যজ্ঞবেদীর নীচে সেইসব আত্মাকে দেখলাম যাঁদের হত্যা করা হয়েছিল, কারণ তাঁরা ঈশ্বরের বার্তা বিশ্বস্তভাবে প্রচার করেছিলেন এবং তাঁদের সাক্ষ্য দিয়েছিলেন। 10 তাঁরা উচ্চকন্ঠে বললেন, “পবিত্র ও সত্য প্রভু, যাঁরা আমাদের হত্যা করেছে, পৃথিবীর সেই সমস্ত লোকদের বিচার করতে ও শাস্তি দিতে তুমি আর কতো দেরী করবে?” 11 তাঁদের প্রত্যেককে শুভ্র রাজ-পোশাক দেওয়া হল এবং আরও কিছুকাল অপেক্ষা করতে বলা হল, কারণ তাঁদের কিছু সহসেবক ভাই ও বোন তখনও ছিলেন যাঁরা তাঁদের মত নিহত হবেন। এই সমস্ত নিয়ম শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাঁদের অপেক্ষা করতে বলা হল।
12 পরে আমি যা দেখলাম, তিনি ষষ্ঠ সীলমোহরটি ভাঙলেন। তখন ভীষণ ভূমিকম্প হল। সূর্য কালো শোকবস্ত্রের মত হয়ে গেল আর চাঁদ রক্তের মতো লাল হয়ে গেল। 13 প্রবল বাতাসে নড়ে গাছ থেকে যেমন কাঁচা ডুমুর পড়ে যায়, তেমনি আকাশ থেকে নক্ষত্ররা পৃথিবীতে খসে পড়তে লাগল। 14 গোটানো পুঁথির মতো আকাশমণ্ডল অদৃশ্য হল। সমস্ত পাহাড় ও দ্বীপকে ঠেলে নিজের জায়গা থেকে সরিয়ে দেওয়া হল।
15 পৃথিবীর রাজাগণ, সমস্ত অধিপতি, সেনাবাহিনীর অধিনায়করা, ধনবানরা, শক্তিশালী লোকরা ও পৃথিবীর সব স্বাধীন লোক এবং সমস্ত দাস গুহার মধ্যেও পাহাড়গুলির পাথরের মধ্যে নিজেদের লুকিয়ে রাখলো। 16 তারা পর্বত এবং পাহাড়গুলোকে বলতে লাগল, “আমাদের ওপরে চেপে বসো এবং যিনি সিংহাসনে বসে আছেন তাঁর কাছ থেকে এবং মেষশাবকের ক্রোধের হাত থেকে আমাদের লুকিয়ে রাখো। 17 কারণ তাদের ক্রোধের মহাদিন এসে পড়ল। কার সাধ্য আছে তার সামনে দাঁড়াবার?”
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International