M’Cheyne Bible Reading Plan
মোশি ইস্রায়েলের লোকদের সঙ্গে কথা বললেন
1 মোশি ইস্রায়েলের লোকদের এই বার্তা দিয়েছিলেন। এই সময় তারা যর্দন নদীর পূর্বদিকের মরুভূমিতে যর্দন উপত্যকায় ছিল। এটি ছিল সূফের অপর পারে, যার একদিকে পারণ মরুভূমি আর অন্যদিকে তোফল, লাবন, হৎসেরোৎ এবং দীষাহর শহরগুলো।
2 সেয়ীর পর্বতমালার মধ্য দিয়ে হোরেব (সীনয়) পর্বত থেকে কাদেশ বর্ণেয় পর্যন্ত যেতে মাত্র এগারো দিন লাগে। 3 কিন্তু ইস্রায়েলের লোকদের মিশর ত্যাগ করার পর থেকে তাদের এই স্থানে আসা পর্যন্ত 40 বৎসর অতিক্রান্ত হয়েছে। 40তম বৎসরের একাদশ মাসের প্রথম দিনে মোশি লোকদের সঙ্গে কথা বললেন। প্রভু যা আজ্ঞা করেছিলেন, মোশি তার সমস্তটাই তাদের বললেন। 4 এ হল প্রভুর সীহোন এবং ওগকে পরাজিত করার পরের ঘটনা। (সীহোন ছিলেন ইমোরীয়দের রাজা, তিনি হিষ্বোনে বাস করতেন। ওগ ছিলেন বাশনের রাজা, তিনি অষ্টারোৎ এবং ইদ্রিয়ীতে বাস করতেন।) 5 ইস্রায়েলের লোকরা যর্দন নদীর পূর্বদিকে মোয়াবে থাকাকালীন মোশি ঈশ্বরের আদেশগুলির বিস্তারিত ব্যাখ্যা করতে শুরু করলেন। তিনি বললেন:
6 “হোরেব পর্বতে প্রভু, আমাদের ঈশ্বর আদেশ করে বলেছিলেন, ‘তোমরা যথেষ্ট সময় এই পর্বতে বাস করেছো। 7 ইমোরীয় লোকরা যেখানে বাস করে সেই পাহাড়ী দেশে যাও। সেখানে আশেপাশের সমস্ত জায়গাতেই যাও। যর্দন উপত্যকা, পাহাড়ী দেশ, পশ্চিমের ঢালু অঞ্চল, নেগেভ এবং সমুদ্রতীরে যাও। কনান এবং লিবানোনের মধ্য দিয়ে বৃহৎ নদী ফরাৎ পর্যন্ত যাও। 8 দেখো, আমি তোমাদের সেই দেশ দিচ্ছি। যাও এবং সেই দেশটি অধিকার কর। আমি শপথ করেছিলাম যে সেই জমি তোমাদের পূর্বপুরুষদের অব্রাহাম, ইস্হাক এবং যাকোবকে দেব। আমি শপথ করেছিলাম যে সেই জমি তাঁদের এবং তাঁদের উত্তরপুরুষদের দেবো।’”
মোশি নেতাদের বেছে নিলেন
9 মোশি বললেন, “সেই সময় আমি বলেছিলাম যে আমার একার পক্ষে তোমাদের ভার নেওয়া সম্ভব নয়। 10 প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর, লোকসংখ্যা আরও বৃদ্ধি করেছেন, আর তাই আজ তোমাদের সংখ্যা আকাশের অগণিত তারার মতো। 11 প্রভু, তোমাদের পূর্বপূরুষদের ঈশ্বর, তোমাদের সংখ্যা এখন যা রয়েছে তার থেকে 1000 গুণ বৃদ্ধি করুন। তিনি ঠিক যেমন শপথ করেছিলেন, সেভাবেই তোমাদের আশীর্বাদ করুন। 12 কিন্তু আমি একা তোমাদের দায়িত্ব নিতে পারবো না এবং তোমাদের সকল সমস্যার সমাধান করতে পারবো না। 13 সেই কারণে তোমরা প্রত্যেক পরিবারগোষ্ঠী থেকে কয়েকজন লোককে বেছে নাও, আমি তাদের তোমাদের নেতা হিসাবে মনোনীত করব। বিজ্ঞ লোকদের বেছে নাও যাদের বোধশক্তি এবং অভিজ্ঞতা আছে।”
14 “তোমরা বলেছিলে, ‘আপনি যা বলেছেন সেটা করাই ভালো হবে।’
15 “সুতরাং তোমাদের পরিবারগোষ্ঠী থেকে তোমাদের নির্বাচিত জ্ঞানী এবং সম্মানিত লোকদের নিয়ে আমি তাঁদের তোমাদের নেতা হবার জন্য নিযুক্ত করেছিলাম। এই প্রকারে, আমি তোমাদের 1000 জন লোকের জন্যে নেতা, 100 জন লোকের জন্য নেতা, 50 জন লোকের জন্য নেতা, 10 জন লোকের জন্য নেতার ব্যবস্থা করেছিলাম। এছাড়াও আমি তোমাদের প্রত্যেক পরিবারগোষ্ঠীর জন্য উচ্চপদাধিকারী ব্যক্তি নিয়োগ করেছিলাম।
16 “সেই সময়, আমি ঐ সকল বিচারকদের বলেছিলাম, ‘নিজের লোকদের মধ্যে যে সব যুক্তিতর্কের আদান প্রদান হবে সেগুলো ভালো করে শুনো। প্রত্যেকটি ঘটনা বিচার করার সময় নিরপেক্ষ হবে। সমস্যাটি দুজন ইস্রায়েলীয় লোকের মধ্যেই হোক্ অথবা একজন ইস্রায়েলীয় এবং একজন বিদেশীর মধ্যেই হোক্, তাতে অবস্থার কোনো প্রভেদ হবে না। তোমরা অবশ্যই প্রত্যেকটি ঘটনা নিরপেক্ষভাবে বিচার করবে। 17 বিচার করার সময় কখনই একজন ব্যক্তিকে অন্যের থেকে বেশী গুরুত্বপূর্ণ মনে করবে না। প্রত্যেক ব্যক্তির সমান বিচার করবে। কোনো ব্যক্তির সম্পর্কেই ভীত হবে না, কারণ তোমাদের সিদ্ধান্ত ঈশ্বরের কাছ থেকে আসা সিদ্ধান্ত। কিন্তু যদি কোনো ঘটনা বিচার করা তোমাদের পক্ষে খুবই কঠিন হয়, তাহলে সেটি আমার কাছে নিয়ে এসো; এবং আমি সেটির বিচার করবো।’ 18 সেই একই সময়, আমি তোমাদের অবশ্য করণীয় অন্যান্য কর্তব্য সম্পর্কেও বলেছিলাম।
চররা কনানে গেল
19 “তখন আমরা আমাদের প্রভু ঈশ্বরকে মান্য করেছিলাম। আমরা হোরেব পর্বত ত্যাগ করেছিলাম এবং ইমোরীয় লোকদের পার্বত্যদেশ অভিমুখে যাত্রা করেছিলাম। তোমরা যে বড় এবং সাংঘাতিক একটি মরুভূমি দেখেছিলে, তার মধ্য দিয়েই আমরা কাদেশ-বর্ণেয়ে এসেছিলাম। 20 তখন আমি তোমাদের বলেছিলাম, ‘তোমরা এখন ইমোরীয়দের পার্বত্য দেশে এসেছো। প্রভু, আমাদের ঈশ্বর, আমাদের এই দেশ প্রদান করবেন। 21 দেখো, ওটি ওখানেই আছে। ওপরে যাও এবং নিজেদের জন্য তোমরা ঐ দেশটিকে অধিকার করো! প্রভু তোমাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর, তোমাদের এটি করতে বলেছিলেন; সুতরাং ভয় পেও না, কোনো কিছুর সম্পর্কেই উদ্বিগ্ন হয়ো না!’
22 “কিন্তু তোমরা সকলে আমার কাছে এসে বলেছিলে, ‘প্রথমে দেশটিকে অনুসন্ধান করে দেখার জন্য কিছু লোককে আমরা পাঠাই। এরপর তারা ফিরে এসে আমাদের কোন্ পথে রওনা দিতে হবে এবং কোন্ কোন্ শহরে যেতে হবে তার সন্ধান দেবে।’
23 “আমার এই প্রস্তাব ভাল লেগেছিল। সেই কারণে আমি তোমাদের প্রত্যেক পরিবারগোষ্ঠী থেকে একজন করে মোট বারোজন লোককে বেছে নিয়েছিলাম। 24 এরপর তারা সেই জায়গা ত্যাগ করে পার্বত্য দেশের ওপরে উঠেছিল এবং তাঁরা ইষ্কোল উপত্যকায় এসে এটির অনুসন্ধান করেছিল। 25 তারা সেই দেশ থেকে কিছু ফল সংগ্রহ করে সেগুলো নিয়ে আমাদের কাছে ফিরে এসে এই সংবাদ দিয়ে বলল, ‘প্রভু, আমাদের ঈশ্বর, যে দেশ দিচ্ছেন, সে উত্তম দেশ!’
26 “কিন্তু তোমরা সেই দেশের অভ্যন্তরে যেতে অস্বীকার করেছিলে। তোমরা তোমাদের প্রভু ঈশ্বরের আজ্ঞার বিরুদ্ধাচরণ করেছিলে। 27 তোমরা তোমাদের তাঁবুতে অভিযোগ করে বলেছিলে, ‘প্রভু আমাদের ঘৃণা করেন! তিনি আমাদের মিশর থেকে বার করে নিয়ে এসেছিলেন যাতে ইমোরীয়রা আমাদের ধ্বংস করতে পারে! 28 আমরা এখন কোথায় যেতে পারি? আমাদের ভাইরা (বারোজন চর) তাদের তথ্যের দ্বারা আমাদের ভীত করেছে। তারা বলেছিল: সেখানকার অধিবাসীরা আমাদের তুলনায় অনেক বড় এবং লম্বা। শহরগুলো বড় এবং তাদের প্রাচীরগুলো আকাশের সমান উঁচু এবং আমরা সেখানে দৈত্যাকার লোকও দেখেছিলাম!’”
29 “তখন আমি তোমাদের বলেছিলাম, ‘তোমরা মনঃক্ষুন্ন হয়ো না! ঐ সকল লোকদের সম্পর্কে ভীত হয়ো না! 30 প্রভু তোমাদের ঈশ্বর, তোমাদের আগে আগে যাবেন এবং তোমাদের হয়ে যুদ্ধ করবেন। মিশরে তোমাদের চোখের সামনে তিনি যা করেছিলেন, এখানেও তিনি সেই একই কাজ করবেন। 31 তোমরা সেখানে এবং মরুভূমিতে তাঁকে তোমাদের সম্মুখে যেতে দেখেছিলে। তোমরা দেখেছিলে যেভাবে একজন পিতা তার পুত্রকে বহন করে নিয়ে যায়, ঠিক সেভাবে প্রভু তোমাদের ঈশ্বর, তোমাদের বহন করেছিলেন। এই স্থানে পৌঁছানো পর্যন্ত সমস্ত রাস্তাই প্রভু তোমাদের নিরাপদে নিয়ে এসেছিলেন।’
32 “কিন্তু তা সত্ত্বেও তোমরা তোমাদের প্রভু ঈশ্বরের ওপরে আস্থা রাখতে পারো নি! 33 অথচ তোমাদের ভ্রমণের সময় তোমাদের শিবির স্থাপনের উপযুক্ত জায়গা খুঁজে বার করার জন্য তিনিই তোমাদের আগে গিয়েছিলেন। যে রাস্তা দিয়ে তোমাদের যাওয়া উচিৎ সেটি প্রদর্শনের জন্য তিনিই রাত্রে আগুনের মধ্য দিয়ে এবং দিনের বেলায় মেঘের মধ্য দিয়ে তোমাদের সামনে গিয়েছিলেন।
লোকরা কনানে প্রবেশের অনুমতি পেল না
34 “তোমাদের অভিযোগ প্রভু শুনেছিলেন এবং তিনি এতে প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন। তিনি এক কঠিন প্রতিজ্ঞা করে বলেছিলেন, 35 ‘তোমাদের পূর্বপুরুষদের কাছে আমি যে প্রতিজ্ঞা করেছিলাম, সেই উত্তম দেশে তোমরা মন্দ লোকরা যারা এখন বেঁচে আছো, তারা কেউই প্রবেশ করবে না। 36 কেবলমাত্র যিফন্নির পুত্র কালেব সেই দেশ দেখতে পাবে। কালেব যে জায়গা দিয়ে হেঁটে গিয়েছিল সেই জায়গা আমি তাকে এবং তার উত্তরপুরুষদের দেবো। কারণ, আমার নির্দেশমতো কালেব সব কাজ করেছিলো।’
37 “তোমাদের জন্য প্রভু আমার ওপরও ক্রুদ্ধ হয়েছিলেন। তিনি আমাকে বলেছিলেন, ‘মোশি তুমিও এই দেশে প্রবেশ করতে পারবে না। 38 কিন্তু তোমার সহায়ক, নূনের পুত্র যিহোশূয় ঐ দেশে প্রবেশ করতে পারবে। যিহোশূয়কে উৎসাহিত করো, কারণ দেশটিকে অধিকার করার জন্য সে ইস্রায়েলের লোকদের নেতৃত্ব দিয়ে এগিয়ে নিয়ে যাবে।’ 39 এবং প্রভু আমাদের বলেছিলেন, ‘তোমরা বলেছিলে, তোমাদের সন্তানরা তোমাদের শত্রুদের দ্বারা অপহৃত হবে; কিন্তু ঐ সন্তানরা ঐ দেশে প্রবেশ করবে। তোমাদের ভুলের জন্য আমি তোমাদের সন্তানদের দোষারোপ করি না, কারণ কোনটা ঠিক এবং কোনটা ভুল সেটা বোঝার পক্ষে তারা এখনও অনেক শিশু। সেই কারণে আমি তাদের ঐ দেশ দেব এবং তারা তা অধিকার করবে। 40 কিন্তু তোমরা সূফ সাগরে যাওয়ার রাস্তা ধরে মরুভূমিতে ফিরে যাও।’
41 “তখন তোমরা বলেছিলে, ‘মোশি, আমরা প্রভুর বিরুদ্ধাচরণ করে পাপ করেছি; কিন্তু এখন আমরা যাব এবং যুদ্ধ করবো, ঠিক যেমনটি আমাদের প্রভু ঈশ্বর, আমাদের আগে আজ্ঞা করেছিলেন।’
“তখন তোমরা প্রত্যেকে তোমাদের অস্ত্র তুলে নিয়েছিলে। ভেবেছিলে যে সেই পার্বত্য দেশে গিয়ে সেটিকে অধিগ্রহণ করা খুবই সহজ কাজ হবে। 42 কিন্তু প্রভু আমাকে বলেছিলেন, ‘লোকদের ওপরে যেতে এবং সেখানে গিয়ে যুদ্ধ করতে বারণ করো, কারণ আমি তাদের সঙ্গে থাকবো না এবং তারা তাদের শত্রুদের কাছে পরাজিত হবে!’
43 “আমি তোমাদের সেই কথা বললাম, কিন্তু তোমরা শোন নি। তোমরা প্রভুর আজ্ঞা পালন করতে অস্বীকার করেছিলে। তোমরা যোগ্য না হয়ে সেই কাজে হাত দিয়েছিলে এবং ওপরের পার্বত্য দেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করেছিলে। 44 কিন্তু সেখানে বসবাসকারী ইমোরীয় লোকরা তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য বেরিয়ে এসেছিল। তারা তোমাদের পেছনে তাড়া করা এক ঝাঁক মৌমাছির মতো ছিল। সেয়ীর থেকে হর্মা পর্যন্ত সমস্ত রাস্তা তোমাদের তাড়া করেছিল। 45 তখন তোমরা ফিরে এসেছিলে এবং প্রভুর কাছে সাহায্যের জন্য কেঁদেছিলে। কিন্তু প্রভু তোমাদের কান্নায় মন দিলেন না, তোমাদের কোনো কথা শুনলেন না। 46 আর তোমরা কাদেশে দীর্ঘ সময় অতিবাহিত করেছিলে।
সঙ্গীত পরিচালকের প্রতি: গিত্তীৎ সহযোগে আসফের একটি গীত।
81 সুখী হও এবং আমাদের শক্তিদাতা ঈশ্বরের কাছে গান গাও।
ইস্রায়েলের ঈশ্বরের কাছে আনন্দ ধ্বনি দাও।
2 সঙ্গীত শুরু কর।
খঞ্জনীগুলি বাজাও।
সুশ্রাব্য বীণা এবং অন্যান্য তন্ত্রবাদ্য বাজাও।
3 অমাবস্যার সময় মেষের শিঙা বাজিও।
পূর্ণিমার দিনে যখন আমাদের ছুটির উৎসব হয় তখন শিঙা বাজিও।
4 ইস্রায়েলের লোকের জন্য এটাই বিধি।
ঈশ্বর যাকোবকে সেই আজ্ঞা দিয়েছিলেন।
5 ঈশ্বর যখন যোষেফকে[a] মিশর থেকে সরিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন,
সেই সময় তিনি তাঁর সঙ্গে এই চুক্তি করেছিলেন।
মিশরে আমরা একটা ভাষা শুনেছিলাম, যেটা আমরা বুঝতে পারি নি।
6 ঈশ্বর বলেন, “তোমার কাঁধ থেকে ভারী বোঝা আমি নিয়েছিলাম
এবং তোমার হাতের ভারী ঝাঁকাগুলিও আমি বিলি করেছিলাম।
7 তোমরা সমস্যার মধ্যে ছিলে। তোমরা সাহায্য চেয়েছিলে।
আমি তোমাদের মুক্ত করে দিলাম। ঝড়ের মেঘের মধ্যে আমি লুকিয়েছিলাম এবং আমি তোমাদের উত্তর দিয়েছিলাম।
মরীবার জলের ধারে আমি তোমাদের পরীক্ষা করেছিলাম।”
8 “হে আমার লোকজন, আমার কথা শোন।
তোমাদের আমি আমার চুক্তি দেব, হে ইস্রায়েল, আমার কথা শোন!
9 বিদেশীরা যে সব মূর্ত্তি পূজা করে,
তোমরা তাদের উপাসনা কর না।
10 আমিই প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর,
যে তোমাদের মিশর থেকে বার করে এনেছিলাম।
হে ইস্রায়েল, তোমার মুখ খোল,
আমি তোমাকে আহার দেবো।
11 “কিন্তু আমার লোকরা আমার দিকে মনোযোগ দেয় নি।
ইস্রায়েল আমায় মানে নি।
12 তাই ওরা যা করতে চেয়েছিলো, আমি ওদের তাই করতে দিয়েছি।
ইস্রায়েলীয়রা যা করতে চেয়েছিলো, তাই করেছে।
13 যদি আমার লোকরা আমার কথা শুনতো এবং আমি যে ভাবে চাই সেভাবে বাঁচতো,
14 তাহলে আমি ওদের শত্রুদের পরাজিত করতাম।
যারা ইস্রায়েলে সংকটসমূহ নিয়ে আসবে তাদের আমি শাস্তি দেব।
15 প্রভুর শত্রুরা ভয়ে কেঁপে যেতো।
চিরদিনের জন্য ওরা শাস্তি পেতো।
16 ঈশ্বর তাঁর লোকদের সবার সেরা গম দিতেন।
যতক্ষণ না তারা পরিতৃপ্ত হয়, ততক্ষণ তাঁর লোকদের ঈশ্বর মধু দেবেন।”
আসফের একটি প্রশংসা গীত।
82 ঈশ্বর দেবতাদের মণ্ডলীতে[b] দাঁড়ান।
দেবতাদের সেই সভায় তিনিই ছিলেন বিচারক।
2 ঈশ্বর বলেন, “কতদিন তোমরা অন্যায়ভাবে লোকের বিচার করবে?
আর কতদিন তোমরা দুষ্ট লোকদের শাস্তি না দিয়ে ছেড়ে দেবে?”
3 “দরিদ্র লোকদের এবং অনাথদের বিচার কর।
ওই সব দরিদ্র লোকদের অধিকারকে রক্ষা কর।
4 ওই সব অসহায় ও দরিদ্রদের সাহায্য কর।
দুষ্ট লোকদের থেকে ওদের রক্ষা কর।
5 “কে ঘটে চলেছে তা ওরা জানে না।
ওরা বোঝে না!
ওরা যে কি করছে তা ওরা জানে না,
ওদের চারপাশে ওদের পৃথিবী ভেঙে পড়েছে!”
6 আমি ঈশ্বর বলছি, “তোমরা দেবতা।
তোমরা পরাৎপরের সন্তানগণ।
7 যেমন ভাবে সাধারণ মানুষ অবশ্যই মরে, তোমরাও সেই ভাবেই মারা যাবে।
সব নেতারা যেভাবে মারা যায়, তোমরাও সেইভাবেই মারা যাবে।”
8 ঈশ্বর, আপনি উঠুন! আপনিই বিচারক হন!
ঈশ্বর, সব জাতির ওপরে আপনিই নেতা হন!
জেরুশালেমের প্রতি ঈশ্বরের ভালবাসা
29 ঈশ্বর বললেন, “অরীয়েলের দিকে তাকাও! অরীয়েল, সেই শহর যেখানে দায়ূদ তাঁবু ফেলেছিলেন। বছরের পর বছর তার ছুটি অব্যাহত ছিল। 2 আমি অরীয়েলকে শাস্তি দিয়েছি। দুঃখ আর কান্নায় শহরটা ভরে গিয়েছে। কিন্তু সে আমার চিরকালের অরীয়েল।
3 “অরীয়েল আমি তোমার চারিদিকে সৈন্য মোতায়েন করেছি। আমি তোমার বিরুদ্ধে যুদ্ধের দুর্গসমূহ তৈরী করেছি। 4 তুমি পরাজিত হলে এবং মাটিতে মিশে গেলে। এখন আমি মাটিতে ভূতের মতো তোমার কণ্ঠস্বর শুনতে পাই। তোমার কথাগুলো গোঙানির মত ধূলোর মধ্যে থেকে আসে।”
5 তোমার শত্রুরা সংখ্যায় ক্ষুদ্র ধূলিকণার মতো প্রচুর। যারা তোমার প্রতি নিষ্ঠুর তাদের সংখ্যা বাতাসে ভেসে যাওয়া ভূসির মত। 6 হঠাৎ এরকম ঘটবে: সর্বশক্তিমান প্রভু ভূমিকম্প, বজ্রপাত, হৈ-হল্লা দিয়ে তোমাকে শাস্তি দেবেন। ঝড়, তীব্র বাতাস আর আগুন সব কিছু পুড়িয়ে দেবে আর ধ্বংস করবে। 7 অনেক দেশ অরীয়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে। ওটা হবে রাতের এক দুঃস্বপ্নেরই মত। সৈন্যরা অরীয়েলকে শাস্তি দেবে। 8 কিন্তু ঐ সৈন্যদের কাছেও সেটা স্বপ্ন হবে। তারা যা চায় তা পাবে না। যেন এক ক্ষুধার্ত মানুষের আহারের স্বপ্ন দেখা। যখন মানুষটা জেগে ওঠে তখনও সে ক্ষুধার্ত। যেন এক তৃষ্ণার্ত মানুষের জলের স্বপ্ন দেখা। যখন মানুষটা জেগে ওঠে তখনও সে তৃষ্ণার্ত থাকে। সিয়োনের বিরুদ্ধে লড়া সমস্ত দেশের ক্ষেত্রে এসব ঘটনা সত্যি হবে। এই সমস্ত দেশ যা চায় তারা তা কিছুতেই পাবে না।
9 চমৎকৃত ও বিহ্বল হও।
তুমি মদ্যপ হয়ে উঠবে কিন্তু দ্রাক্ষারস থেকে নয়।
দেখ এবং বিহ্বল হও।
তুমি হোঁচট খেয়ে পড়ে যাবে কিন্তু সুরাপান করে নয়।
10 প্রভু তোমাকে ঘুম কাতুরে বানাবেন।
তিনি তোমার দুচোখ বন্ধ করে দেবেন। (ভাববাদীরা হবে তোমার দুচোখ।)
তিনি তোমাদের মাথা ঢেকে দেবেন। (ভাববাদীরা হবে তোমার মাথা।)
11 আমি তোমাকে বলছি যে এসব ঘটনাগুলি ঘটবে। কিন্তু তোমরা আমাকে বুঝবে না। আমার কথাগুলো তোমার কাছে বন্ধ ও সীলমোহর করা বই-এর মধ্যের কথাগুলোর মত মনে হবে। তুমি বইটি এমন কাউকে দিতে পার যে পড়তে পারে। কিন্তু তাকে যদি পড়তে বল সে বলবে, “আমি পড়তে পারব না। কারণ বইটি বন্ধ এবং তা আমি খুলতে পারব না।” 12 অথবা তুমি কাউকে বইটি দিতে পার, যে পড়তে পারে না। সেই লোকটিকে পড়তে বললে সে বলবে, “আমি এই বই পড়তে পারব না। কারণ কিভাবে বইটি পড়তে হয় তা আমার জানা নেই।”
13 আমার প্রভু বলেন, “ঐ মানুষরা আমার প্রতি ভালোবাসার কথা জানিয়েছে। তাদের মুখ নিঃসৃত শব্দ আমার প্রতি সম্মান জানায়। কিন্তু তাদের হৃদয় আমার থেকে অনেক দূরে। আমাকে যে সম্মান তারা জানায় তা তাদের মুখস্থ করা মানবিক বিধিসমূহ ছাড়া আর কিছুই নয়। 14 সুতরাং আমি আমার শক্তিশালী ও আশ্চর্যজনক ক্রিয়াকলাপ দিয়ে লোকেদের বিস্ময় বিহ্বল করা অব্যাহত রাখব। ওদের জ্ঞানী লোকরা তাদের জ্ঞান হারিয়ে ফেলবে। ওদের জ্ঞানী লোকরা উপলদ্ধি করবার ক্ষমতাও হারিয়ে ফেলবে।”
15 সেই সব মানুষ প্রভুর কাছ থেকে অনেক কিছুই লুকিয়ে রাখার চেষ্টা করে। তারা মনে করে যে প্রভু কিছুতেই বুঝতে পারবেন না। তারা অন্ধকারের মধ্যে পাপ কাজ করে। তারা নিজেদের মধ্যে বলাবলি করে, “আমাদের কেউ দেখতে পায় না, কেউ জানতেও পারবে না আমরা আসলে কে।”
16 তোমরা আসলে বিভ্রান্ত। তোমরা মনে কর যে মাটি আর কুমোর সমান। তোমরা ভাবো যে তৈরী জিনিষটি, যে তাকে তৈরী করেছে তাকে বলতে পারে, “তুমি আমাকে তৈরী করনি!” এটা আসলে একটা পাত্রের মত যে তার সৃষ্টিকর্তাকে বলছে, “তুমি বোঝ না।”
সুসময় আসছে
17 সত্যটি হল: কিছু সময় পরেই লিবানোন উত্তর ইস্রায়েলের সু-আবাদি কর্মিল পর্বতের মতো উর্বর চাষের জমি পেয়ে যাবে এবং কর্মিল পর্বত ঘন অরণ্যের মতো হবে। 18 বধির শুনতে পাবে, বই থেকে পড়ে শোনানো কথাগুলি; কুয়াশা ও অন্ধকারের মধ্যেও অন্ধ মানুষ দেখতে পাবে। 19 প্রভু গরীব মানুষদের সুখী করবেন। ইস্রায়েলে গরীব লোকরা ইস্রায়েলের সেই পবিত্র একজনের নামে আনন্দ করবে।
20 যখন নিষ্ঠুর ও উদ্ধত লোকরা আর থাকবে না তখন এটা ঘটবে। যারা মন্দ কাজ করার জন্য সুযোগ খুঁজে বেড়ায় সেই সব লোকদের পতনের পর এটা ঘটবে। 21 সেই সব লোক লোকদের বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ নিয়ে আসে। আদালতে তারা বিচারকদের জন্য ফাঁদ পাতার চেষ্টা করে। তারা আইন মেনে চলা লোকদের বিরুদ্ধে মিথ্যে বিচার আনার জন্য তাদের আইনি তর্কে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে।
22 সুতরাং, প্রভু যাকোবের পরিবারের সঙ্গে কথা বলবেন। (এই সেই প্রভু যিনি অব্রাহামকে উদ্ধার করেছিলেন।) প্রভু বলেন, “এখন যাকোব (ইস্রায়েলের লোক) বিব্রত ও লজ্জিত হবে না। 23 তিনি তাঁর সকল শিশুদের দেখবেন এবং বলবেন যে আমার নাম পবিত্র, আমি এইসব শিশুদের নিজের হাতে তৈরী করেছি এবং তারা বলবে যে যাকোবের সেই পবিত্র জনটি (ঈশ্বর) হলেন খুব বিশিষ্ট। এই সকল শিশুরাই ইস্রায়েলের ঈশ্বরকে শ্রদ্ধা করবে। 24 যাদের আত্মা বিপথে গিয়েছিল তারা বুঝতে পারবে এবং যারা নালিশ করেছিল তারা উচিৎ শিক্ষা পাবে।”
1 আমার প্রিয় বন্ধু গায়েরকে, যাকে আমি সত্যে ভালবাসি, তার প্রতি এই প্রাচীনের পত্র।
2 প্রিয় বন্ধু, আমি জানি তুমি আত্মিকভাবে ভাল আছ; আর তাই আমি প্রার্থনা করি যেন তোমার সবকিছু ভালভাবে চলে এবং তুমি সুস্থ থাক। 3 আমি খুব খুশী হলাম, কারণ আমাদের ভাইদের মধ্যে কয়েকজন এসে, তুমি যে সত্য ধরে রয়েছ ও যে সত্য পথে চলেছ সে বিষয়ে জানাল। 4 আমার সন্তানরা যে সত্যের পথে চলছে, এই খবর শুনে আমার যে আনন্দ হয়, এর থেকে বেশী আনন্দ আমার আর কিছুতে হয় না।
5 প্রিয় বন্ধু, আমাদের ভাইদের, এমন কি যারা অপরিচিত, তাদের সকলকে তুমি যে সাহায্য করে থাক এ অতি উত্তম। 6 তাঁদের প্রতি তোমার ভালবাসার কথা তাঁরা এখানকার মণ্ডলীর সকলকে বলেছেন। তাঁদের যাত্রা পথে সাহায্য করলে তুমি ভালোই করবে। এমনভাবে সাহায্য করো যেন ঈশ্বর খুশী হন, 7 কারণ তাঁরা খ্রীষ্টের পরিচর্যার উদ্দেশ্যেই যাত্রা শুরু করেছেন; আর তাঁরা এর জন্য যাঁরা খ্রীষ্ট বিশ্বাসী নয় তাদের কাছ থেকে কিছুই গ্রহণ করেন না। 8 তাই এই ধরণের লোকদের সাহায্য করতে আমরা বাধ্য, যেন আমরা সত্যের পক্ষে সহকর্মীরূপে কাজ করি।
9 আমি মণ্ডলীকে চিঠি লিখলাম; কিন্তু সেই দিয়ত্রিফি, যে তাদের নেতা হতে চায়, সে আমাদের কথা গ্রাহ্য করে না। 10 এই কারণে আমি ওখানে গেলে সে কি করছে তা প্রকাশ করব। সে আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যাভাবে মন্দ কথা বলে, কিন্তু এতেও সে খুশী নয়। এছাড়া ভাইদের সে স্বাগত জানাতে অস্বীকার করে। এমনকি যারা সেই ভাইদের সাহায্য করতে চায়, দিয়ত্রিফি তাদের সাহায্য করতে দেয় না, বরং তাদের মণ্ডলী থেকে বাইরে বার করে দেয়।
11 প্রিয় বন্ধু, যা কিছু মন্দ তার অনুকরণ করো না, কিন্তু যা কিছু ভাল তার অনুকরণ করো। যে ভাল কাজ করে সে ঈশ্বরের লোক, যে মন্দ কাজ করে সে ঈশ্বরকে দেখে নি।
12 সকলেই দীমীত্রিয়ের উচ্চ প্রশংসা করে, এমনকি সত্যও তার সাক্ষী, আমরাও সেই একই কথা বলব। তুমি জান যে আমরা যা বলি তা সত্য।
13 তোমাকে লেখবার অনেক কথাই আমার ছিল; কিন্তু কালি কলমে তা লিখতে ইচ্ছা করে না। 14 আশা করি শিগ্গিরই তোমাকে দেখব, তখন আমরা সামনা-সামনি কথাবার্তা বলব। 15 তোমার শান্তি হোক্। তোমার সব বন্ধুরা তোমায় শুভেচ্ছা জানাচ্ছে। আমাদের বন্ধুদের প্রত্যেককে শুভেচ্ছা জানিও।
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International