M’Cheyne Bible Reading Plan
মিশর থেকে ইস্রায়েলের যাত্রা
33 মোশি এবং হারোণ মিশর থেকে ইস্রায়েলের লোকদের নেতৃত্ব দিয়ে বিভিন্ন দলে ভাগ করে নিয়ে গিয়েছিলেন। 2 তারা যে জায়গাগুলোতে ভ্রমণ করেছিল, প্রভুর আজ্ঞা অনুযায়ী মোশি সে জায়গাগুলো সম্পর্কে লিখেছিলেন। তাদের যাত্রার পর্যায়গুলি এখানে দেওয়া হল:
3 প্রথম মাসের 15তম দিনে তারা রামিষেষ ত্যাগ করেছিল। সেই দিন সকালে নিস্তারপর্বের পরে ইস্রায়েলের লোকরা জয়ের ভঙ্গীতে তাদের হাত উঁচু করে মিশর থেকে বেরিয়ে এসেছিল। মিশরের সমস্ত লোক তাদের দেখেছিল। 4 প্রভু যাদের হত্যা করেছিলেন সেই প্রথমজাতদের মিশরীয়রা সেই সময় কবর দিচ্ছিল। মিশরের দেবগণের বিরুদ্ধেও প্রভু তাঁর বিচার দেখিয়েছিলেন।
5 ইস্রায়েলের লোকরা রামিষেষ ত্যাগ করে সুক্কোতের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছিল। 6 সুক্কোৎ থেকে তারা এথমের দিকে যাত্রা করেছিল। লোকরা সেখানে মরুভূমির প্রান্তে শিবির স্থাপন করেছিল। 7 তারা এথম ত্যাগ করে পী-হহীরোতের দিকে যাত্রা করেছিল। এই জায়গাটি বাল-সফোনের কাছে ছিল। লোকরা মিগ্দোলের কাছে শিবির স্থাপন করেছিল।
8 লোকরা পী-হহীরোত ত্যাগ করে সমুদ্রের মধ্য দিয়ে হেঁটেছিল। তারা মরুভূমির দিকে গিয়েছিল, এরপর তিন দিন ধরে এথম মরুভূমির মধ্য দিয়ে হেঁটেছিল। লোকরা মারা নামক স্থানে শিবির স্থাপন করেছিল।
9 লোকরা মারা ত্যাগ করে এলীমে গিয়েছিল এবং সেখানেই শিবির স্থাপন করেছিল। সেখানে 12টি ঝর্ণা এবং 70টি খেজুর গাছ ছিল।
10 লোকরা এলীম ত্যাগ করে সূফ সাগরের কাছে শিবির স্থাপন করেছিল।
11 সূফ সাগর ত্যাগ করার পরে লোকরা সীন মরুভূমিতে শিবির স্থাপন করেছিল।
12 এরপর সীন মরুভূমি ত্যাগ করে দপ্কাতে শিবির স্থাপন করেছিল।
13 দপকা ত্যাগ করে আলুশে শিবির স্থাপন করেছিল।
14 আলুশ ত্যাগ করে রফীদীমে শিবির স্থাপন করেছিল। সেই স্থানে লোকদের পান করার উপযোগী কোনো জল ছিল না।
15 লোকরা রফীদীম ত্যাগ করে সীনয় মরুভূমিতে শিবির স্থাপন করেছিল।
16 সীনয় মরুভূমি ত্যাগ করে কিব্রোৎ-হত্তাবাতে শিবির স্থাপন করেছিল।
17 লোকরা কিব্রোৎ-হত্তাবা ত্যাগ করে হৎসেরোতে শিবির স্থাপন করেছিল।
18 হৎসেরোত ত্যাগ করার পরে রিত্মাতে শিবির স্থাপন করেছিল।
19 রিৎমা ত্যাগ করে রিম্মোণ-পেরসে শিবির স্থাপন করেছিল।
20 রিম্মোণ-পেরস ত্যাগ করে লিব্নাতে শিবির স্থাপন করেছিল।
21 লিব্না ত্যাগ করে রিস্সাতে শিবির স্থাপন করেছিল।
22 রিস্সা ত্যাগ করে কহেলাথায় শিবির স্থাপন করেছিল।
23 কহেলাথা ত্যাগ করে শেফর পর্বতে শিবির স্থাপন করেছিল।
24 শেফর পর্বত ত্যাগ করে হরাদাতে শিবির স্থাপন করেছিল।
25 হরাদা ত্যাগ করে মখেলোতে শিবির স্থাপন করেছিল।
26 মখেলোৎ ত্যাগ করে তহতে শিবির স্থাপন করেছিল।
27 তহৎ ত্যাগ করে তেরহতে শিবির স্থাপন করেছিল।
28 তেরহ ত্যাগ করে মিত্কাতে শিবির স্থাপন করেছিল।
29 মিৎকা ত্যাগ করে হশ্মোনাতে শিবির স্থাপন করেছিল।
30 হশ্মোনা ত্যাগ করে মোষেরোতে শিবির স্থাপন করেছিল।
31 মোষেরোৎ ত্যাগ করে বনেয়াকনে শিবির স্থাপন করেছিল।
32 বনেয়াকন ত্যাগ করে হোর্-হগিদ্গদে শিবির স্থাপন করেছিল।
33 হোর্-হগিদ্গদ ত্যাগ করে যট্বাথাতে শিবির স্থাপন করেছিল।
34 যট্বাথা ত্যাগ করে অব্রোণাতে শিবির স্থাপন করেছিল।
35 অব্রোণা ত্যাগ করে ইৎসিয়োন-গেবরে শিবির স্থাপন করেছিল।
36 ইৎসিয়োন গেবর ত্যাগ করে সীন মরুভূমির কাদেশে শিবির স্থাপন করেছিল।
37 কাদেশ ত্যাগ করে হোরে শিবির স্থাপন করেছিল। ইদোম দেশের সীমান্তে এই পর্বতটি ছিল। 38 যাজক হারোণ প্রভুর কথা মান্য করে হোর পর্বতের ওপরে গিয়েছিলেন। সেই জায়গায় পঞ্চম মাসের প্রথম দিনে হারোণ মারা গিয়েছিলেন। ইস্রায়েলের লোকরা মিশর ত্যাগ করার পরে সেইটি ছিল 40তম বছর। 39 হোর পর্বতের ওপরে মারা যাওয়ার সময় হারোণের বয়স ছিল 123 বছর।
40 কনান দেশের নেগেভে অরাদ নামে একটি শহর ছিল। সেই শহরে কনানের রাজা শুনেছিলেন যে ইস্রায়েলের লোকরা আসছে। 41 লোকরা হোর পর্বত ত্যাগ করেছিল এবং সল্মোনাতে শিবির স্থাপন করেছিল।
42 লোকরা সল্মোনা ত্যাগ করে পূনোনে শিবির স্থাপন করেছিল।
43 পূনোন ত্যাগ করে ওবোতে শিবির স্থাপন করেছিল।
44 ওবোৎ ত্যাগ করে ইয়ী-অবারীমে শিবির স্থাপন করেছিল। এই জায়গাটি মোয়াব দেশের সীমান্তে অবস্থিত ছিল।
45 লোকরা ইয়ীম (ইয়ী-অবারীমে) ত্যাগ করে দীবোন-গাদে শিবির স্থাপন করেছিল।
46 দীবোন-গাদ ত্যাগ করে অল্মোন-দিব্লাথয়িমে শিবির স্থাপন করেছিল।
47 অল্মোন-দিব্লাথয়িম ত্যাগ করে নবোর কাছে অবারীম পর্বতের ওপরে শিবির স্থাপন করেছিল।
48 অবারীম পর্বত ত্যাগ করে মোয়াবের যর্দন উপত্যকায় শিবির স্থাপন করেছিল। যিরীহোর অপর পারে যর্দন নদীর কাছে এই জায়গাটি ছিল। 49 তারা মোয়াবের যর্দন উপত্যকায় যর্দন নদী বরাবর শিবির স্থাপন করেছিল। তাদের শিবির বৈৎ-যিশীমোৎ থেকে আবেল-শিটীম পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল।
50 সেই স্থানে প্রভু মোশিকে বললেন, 51 “ইস্রায়েলের লোকদের এই কথাগুলি বলো: তোমরা যর্দন নদী পার হয়ে কনানের অভ্যন্তরে প্রবেশ করবে। 52 সেখানকার অধিবাসীদের তোমরা দূর করে দেবে। তোমরা তাদের সমস্ত খোদাই করা মূর্ত্তি ও প্রতিমাদের ধ্বংস করবে এবং তাদের পূজার সমস্ত উচ্চস্থানগুলো ধ্বংস করবে। 53 তোমরা সেই জায়গা অধিকার করে সেখানেই স্থায়ীভাবে বসবাস করবে, কারণ আমিই সেই জায়গাটি তোমাদের দিচ্ছি। এই জায়গাটি কেবলমাত্র তোমাদের গোষ্ঠীগুলির হবে। 54 তোমাদের গোষ্ঠীর প্রত্যেকে এই দেশের অংশ পাবে। তোমরা ঘুঁটি চেলে সিদ্ধান্ত নেবে কোন্ পরিবার দেশের কোন্ অংশ পাবে। বড় পরিবার দেশের বড় অংশ পাবে। ছোটো পরিবার দেশের ছোট অংশ পাবে। চালা ঘুঁটি দেখিয়ে দেবে কোন পরিবার দেশের কোন অংশ পাবে। প্রত্যেক পরিবারগোষ্ঠী দেশে তার অংশ পাবে।
55 “তোমরা যদি ঐ দেশের অধিবাসীদের দেশ ছাড়তে বাধ্য না কর তবে যাদের তোমরা থাকতে দেবে, তারা তোমাদের সামনে প্রচুর সমস্যা নিয়ে আসবে। তারা হবে তোমাদের চোখে বালির মতো এবং তোমাদের পাশে কাঁটার মতো হবে। তোমরা যেখানে বাস করবে সেখানে তারা প্রচুর সমস্যা নিয়ে আসবে। 56 তোমরা যদি ঐ সমস্ত লোকদের তোমাদের দেশে থাকতে দাও, তাহলে আমি তাদের প্রতি যা করতে চেয়েছিলাম তা তোমাদের প্রতি করবো।”
আসফের একটি মস্কীল।
78 হে আমার লোকরা, আমার শিক্ষামালা শোন।
আমি যা বলছি তা শোন।
2 আমি তোমাদের এই গল্প বলবো।
আমি তোমাদের এই প্রাচীন গল্পটি বলবো।
3 এই গল্প আমরাও শুনেছি, এই গল্পটা আমরা খুব ভালোভাবে জানি।
আমাদের পিতা-পিতামহরা এই গল্প বলেছেন।
4 এই গল্প আমরাও ভুলে যাবো না।
আমাদের লোকরা শেষ প্রজন্মকে পর্যন্ত এই গল্প বলতে থাকবে।
আমরা সবাই প্রভুর প্রশংসা করবো
এবং প্রভু যে সব আশ্চর্য কার্য করেছেন তা বলবো।
5 প্রভু যাকোবের সঙ্গে একটা চুক্তি করেছিলেন।
ইস্রায়েলকে ঈশ্বর একটা বিধি দিয়েছিলেন।
আমাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর আজ্ঞা দিয়েছেন।
তিনি আমাদের পূর্বপুরুষদের বলেছেন তারা যেন তাদের উত্তরপুরুষদের সেই বিধি সম্পর্কে শিক্ষাদান করে।
6 নতুন শিশুরা জন্ম নেবে। তারা আস্তে আস্তে বড় হবে।
তারা তাদের ছেলেমেয়েদের এই গল্পগুলো বলবে।
এইভাবে শেষ প্রজন্মের মানুষ পর্যন্ত এই বিধি জানতে পারবে।
7 তাই ঐসব লোকরাই ঈশ্বরকে বিশ্বাস করবে।
ঈশ্বর কি করেছেন তা তারা ভুলবে না।
ওরা খুব যত্ন করে তাঁর আজ্ঞাগুলো পালন করবে।
8 যদি লোকরা তাদের শিশুদের ঈশ্বরের আজ্ঞাগুলো সম্পর্কে শিক্ষা দেয়
তাহলে ওই শিশুরা ওদের পূর্বপুরুষদের মত হবে না, ওদের পূর্বপুরুষরা ঈশ্বরের বিরুদ্ধে গিয়েছিলো।
তারা তাঁকে মানতে অস্বীকার করেছিলো, ঐসব লোক প্রচণ্ড একগুঁয়ে ছিলো।
ওরা ঈশ্বরের আত্মার প্রতি নিষ্ঠাবান ছিল না।
9 ইফ্রয়িমের লোকেরা অস্ত্রসস্ত্রে সজ্জিত ছিল
কিন্তু তারা যুদ্ধক্ষেত্র থেকে দৌড়ে পালিয়ে গেল।
10 তারা ঈশ্বরের সঙ্গে তাদের চুক্তি রক্ষা করে নি।
তারা তাঁর শিক্ষামালা মান্য করতে অস্বীকার করেছিলো।
11 ঈশ্বর যে সব আশ্চর্য কার্য করেছিলেন, ইফ্রয়িমের লোকরা তা ভুলে গিয়েছিলো।
তিনি যে সব আশ্চর্য কার্য ওদের দেখিয়েছিলেন, তা তারা ভুলে গিয়েছিলো।
12 ঈশ্বর ওদের পিতৃপুরুষদের মিশরের সোয়নে,
তাঁর পরাক্রম প্রদর্শন করে দেখিয়েছিলেন।
13 ঈশ্বর লোহিত সাগরকে দুভাগ করেছিলেন এবং লোকদের সাগর পার করিয়েছিলেন।
সেই জল দুধারে একটি শক্তি দেওয়ালের মত দাঁড়িয়েছিলো।
14 প্রতিদিন প্রলম্বিত মেঘের দ্বারা ঈশ্বর ওদের পথ দেখিয়েছিলেন।
প্রতিটি রাত্রে আগুনের আলো দিয়ে ঈশ্বর ওদের পথ দেখিয়ে ছিলেন।
15 ঈশ্বর মরুভূমির পাথরকে দ্বিধাবিভক্ত করেছেন।
মাটির গভীর অতল থেকে ওই সব লোকদের তিনি জলও দিয়েছেন।
16 পাথর থেকে আগত ঝর্ণার জলকে
ঈশ্বরই নদীর প্রবাহ দিয়েছেন!
17 কিন্তু লোকরা ঈশ্বরের বিরুদ্ধে পাপ কাজ অব্যাহত রেখেছিল।
পরাৎপরের বিরুদ্ধে তারা মরুভূমিতে পর্যন্ত বিদ্রোহ করেছে।
18 তারা যখন তাদের ইচ্ছা পূর্ণ করবার জন্য খাবার চাইল
তখন তারা তাদের মনে মনে ঈশ্বরকে পরীক্ষা করল।
19 ওরা ঈশ্বরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেছিলো,
“ঈশ্বর কি আমাদের এই মরুভূমিতে খাবার এনে দিতে পারবেন?
20 তিনি পাথরে আঘাত করলেন এবং বন্যার মতো জলধারা বেরিয়ে এলো।
কিন্তু তিনি কি আমাদের কিছু রুটি এবং মাংস দিতে পারেন?”
21 ওই লোকগুলো কি বলছে, প্রভু তা শুনলেন।
যাকোবের ওপর ঈশ্বর প্রচণ্ড ক্রুদ্ধ হলেন।
ইস্রায়েলের ওপর ঈশ্বর প্রচণ্ড ক্রুদ্ধ হলেন।
22 কেন? কারণ লোকরা তাঁকে বিশ্বাস করে নি।
ঈশ্বর যে ওদের রক্ষা করতে পারেন, তা ওরা বিশ্বাস করে নি।
23-24 এর পর ঈশ্বর মেঘকে উন্মুক্ত করে দিলেন
এবং খাদ্যের জন্য ওদের ওপরে মান্না বর্ষিত হল।
এ যেন আকাশের দ্বার খুলে গেল
এবং স্বর্গের ভাণ্ডার থেকে শস্যরাশি পড়তে লাগলো।
25 লোকরা দেবদূতদের[a] সেই খাবার খেয়েছিলো।
ওদের সন্তুষ্ট করার জন্য ঈশ্বর প্রচুর খাবার পাঠিয়েছিলেন।
26 ঈশ্বর পূর্বদিক থেকে একটা ঝোড়ো বাতাস প্রবাহিত করলেন
এবং ওদের কাছে একধরণের পাখি বৃষ্টির মত পড়তে লাগলো।
27 ঈশ্বর তেমানের দিক থেকে সেই বায়ুকে প্রবাহিত করালেন
এবং যে নীল আকাশের দিকটায় প্রচুর পাখি ছিল সেই দিকটা অন্ধকারময় হয়ে গেল।
28 ওদের তাঁবুর ঠিক মাঝখানে,
ওদের তাঁবুর চারপাশে পাখিগুলো পড়ে গিয়েছিল।
29 তাদের কাছে বিরাট খাদ্যের ভাণ্ডার ছিল।
কিন্তু তাদের ক্ষুধা তাদের পাপকার্যে প্ররোচিত করেছিল।
30 তারা তাদের ভোজন নিয়ন্ত্রিত করে নি।
তাই পাখীগুলোর দেহ থেকে রক্ত বেরিয়ে আসার আগেই তারা পাখীগুলোকে খেয়ে ফেলেছিল।
31 অতএব, খাবার যখন তাদের মুখের মধ্যে তখনও ছিল তখন ঈশ্বর ওইসব লোকের ওপর প্রচণ্ড ক্ষুদ্ধ হলেন
এবং ওদের অনেককে মেরে ফেললেন। ঈশ্বর বহু স্বাস্থ্যবান তরুণের মৃত্যুর কারণ হলেন।
32 ওইসব লোকরা আবার পাপ করলো!
ঈশ্বর যে সব আশ্চর্য কার্য করতে পারেন তার ওপর নির্ভর করলো না।
33 তাই ওদের মূল্যহীন জীবনগুলোতে
ঈশ্বর দুর্বিপাক এনে শেষ করে দিলেন।
34 যখনই ঈশ্বর ওদের কাউকে হত্যা করেছেন, অন্যরা তাঁর কাছে ফিরে এসেছেন।
ওরা ছুটে ছুটে ঈশ্বরের কাছে ফিরে এসেছে।
35 তখন এইসব লোকরা স্মরণ করবে যে ঈশ্বরই ছিলেন তাদের শিলা।
ওরা তখন মনে করবে যে পরাৎপরই একমাত্র ওদের মুক্তিদাতা।
36 ওরা বলেছিলো, ওরা তাঁকে ভালোবাসে কিন্তু ওরা মিথ্যা কথা বলেছিলো।
ওই সব লোক একেবারেই আন্তরিক ছিলো না।
37 প্রকৃতপক্ষে ওদের হৃদয় ঈশ্বরের সঙ্গে ছিলো না।
চুক্তির প্রতি ওরা একেবারেই বিশ্বস্ত ছিলো না।
ঈশ্বরের প্রতি প্রার্থনাগীত
25 প্রভু, আপনিই আমার ঈশ্বর।
আপনাকে আমি সম্মান করি এবং আপনার নামের প্রশংসা করি।
আপনি বিস্ময় সৃষ্টি করেছেন।
বহুদিন আগে আপনি যা যা বলেছিলেন তা বর্ণে বর্ণে সত্যে পরিণত হয়েছে।
আপনি যা যা ঘটার কথা বলেছিলেন ঠিক তাই তাই ঘটেছে।
2 আপনি শহর ধ্বংস করেছেন।
যে শহর ছিল শক্তিশালী প্রাচীর দিয়ে ঘেরা তা এখন ধ্বংসস্তূপ মাত্র।
বিদেশী প্রাসাদ সব ধ্বংস হয়ে গিয়েছে।
তা আর কোন দিনও নির্মাণ করা যাবে না।
3 শক্তিমান দেশগুলি আপনাকে শ্রদ্ধা করবে, সম্মান জানাবে।
শক্তিশালী শহরের ক্ষমতাবান লোকরা আপনাকে ভয় পাবে এবং সম্মান করবে।
4 প্রভু আপনিই দরিদ্রদের কাছে এক নিরাপদ আশ্রয়।
এদের পরাজিত করতে প্রভুত সমস্যা শুরু হবে।
কিন্তু আপনি তাদের রক্ষা করবেন।
প্রভু, আপনি লোকদের কাছে বন্যা ও দাবদাহ থেকে রক্ষা পাবার মতো সুরক্ষিত গৃহ।
ভয়ঙ্কর ঝড় বৃষ্টির মতো সংকটসমূহ আসবে এবং দেওয়ালে ধাক্কা মারবে, কিন্তু গৃহের ভেতরের লোকরা আঘাত পাবে না।
5 শত্রুরা এসে চিৎকার চেঁচামেচি গোলমাল শুরু করবে।
ভয়ঙ্কর শত্রুরা আরও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠে আহবান জানাবে।
কিন্তু ঈশ্বর আপনিই তাদের থামিয়ে দেবেন।
যদিও গ্রীষ্মে মরুভূমিতে কয়েকটি উদ্ভিদ জন্মায়, পরিশেষে তারা শুকিয়ে যাবে এবং ভূমিতে পতিত হবে।
একইভাবে, আপনিও আপনার শত্রুদের পরাজিত করবেন এবং তাদের হাঁটু গেড়ে বসতে বাধ্য করবেন।
ঘন মেঘ যেমন গ্রীষ্মের প্রখর উত্তাপকে আটকে দেয় ঠিক সেইভাবে আপনিও শত্রুদের ভয়ঙ্কর চিৎকার থামিয়ে দেবেন।
অনুগতদের জন্য ঈশ্বরের মহাভোজ
6 সেই সময়, প্রভু সর্বশক্তিমান এই পর্বতের সমস্ত জাতিকে এক ভুরিভোজে আপ্যায়িত করবেন। সেই ভোজে সেরা খাদ্য ও পানীয় থাকবে। মাংস হবে নরম ও সুস্বাদু।
7 কিন্তু এখন, সমস্ত জাতি ও লোকদের একটি ঘোমটা আচ্ছাদিত করছে। তিনি এই ঘোমটা নষ্ট করে দেবেন। 8 কিন্তু মৃত্যু চিরতরে ধ্বংসপ্রাপ্ত হবে। আমার সদাপ্রভু প্রত্যেকটি মুখ থেকে প্রতিটি অশ্রুকণা মুছিয়ে দেবেন। অতীতে তাঁর সমস্ত অনুরাগী ভক্তরা ছিল বিষণ্ন। কিন্তু ঈশ্বর পৃথিবী থেকে মুছে দেবেন বিষণ্নতা। এ সমস্তই ঘটবে কারণ প্রভু এসব ঘটনার কথাই বলেছেন।
9 সে সময় লোকরা বলবে,
“এই তো আমাদের ঈশ্বর।
তিনিই সেই যাঁর জন্য আমরা প্রতীক্ষারত।
তিনি আমাদের রক্ষা করতে এসেছেন।
আমরা আমাদের প্রভুর প্রতীক্ষায় আছি।
তাই তিনি আমাদের রক্ষা করার সময় আমরা সুখী এবং আনন্দিত হব।”
10 এই পর্বতে প্রভুর শক্তি বিরাজমান।
তাই মোয়াব পরাজিত হবে।
আবর্জনার স্তূপে খড়ের ওপর দিয়ে হেঁটে যাবার মতো
প্রভু শত্রুদের পদদলিত করবেন।
11 সাঁতার কাটা মানুষের মতো প্রভু তাঁর বাহু প্রসারিত করে
লোকে যেসব জিনিস নিয়ে গর্ব করে সেসব জিনিসকে একত্রিত করবেন।
তিনি মানুষের তৈরী সুন্দর সুন্দর জিনিসগুলোকে
দূরে ছুঁড়ে ফেলে দেবেন।
12 প্রভু মানুষের লম্বা প্রাচীর ও নিরাপদ জায়গাগুলিকে ধ্বংস করে
মাটির ধূলোয় মিশিয়ে দেবেন।
আমরা ঈশ্বরের সন্তান
3 ভেবে দেখ, পিতা ঈশ্বর আমাদের কত ভালোই না বেসেছেন যাতে আমরা ঈশ্বরের সন্তান বলে অভিহিত হই; বাস্তবিক আমরা তাই। জগতের লোক আমাদের চেনে না যে আমরা ঈশ্বরের সন্তান, কারণ তারা ঈশ্বরকে জানে না। 2 প্রিয় বন্ধুরা, এখন তো আমরা ঈশ্বরের সন্তান, আর ভবিষ্যতে আমরা আরো কি হব তা এখনও আমাদের কাছে প্রকাশ করা হয় নি। কিন্তু আমরা জানি যে যখন খ্রীষ্ট পুনরায় আসবেন তখন আমরা তাঁর সমরূপ হব, কারণ তিনি যেমন আছেন, তাঁকে তেমনি দেখতে পাব। 3 খ্রীষ্ট শুদ্ধ আর তাঁর ওপরে যে সমস্ত লোক এই আশা রাখে, তারা খ্রীষ্টের মত নিজেদের শুদ্ধ করে।
4 যে কেউ পাপ করে, সে বিধি-ব্যবস্থা লঙ্ঘন করে, আর ব্যবস্থা লঙ্ঘন করাই পাপ। 5 তোমরা জান, মানুষের পাপ তুলে নেবার জন্যই খ্রীষ্ট প্রকাশিত হলেন; আর খ্রীষ্টের নিজের কোন পাপ নেই। 6 যে কেউ খ্রীষ্টে থাকে, সে পাপের জীবন-যাপন করে না। কেউ যদি পাপে জীবন-যাপন করে তবে সে খ্রীষ্টকে কখনও প্রকৃতভাবে উপলদ্ধি করে নি, এমন কি তাঁকে জানেও নি।
7 প্রিয় সন্তানরা, সতর্ক থেকো। কেউ যেন তোমাদের বিপথে না নিয়ে যায়। যে কেউ যথার্থ কাজ করে সে নীতিপরায়ণ, ঠিক যেমন খ্রীষ্ট নীতিপরায়ণ। 8 দিয়াবল সেই শুরু থেকেই পাপ করে চলেছে। যে ব্যক্তি পাপ করেই চলে সে দিয়াবলের। দিয়াবলের কাজকে ধ্বংস করার জন্যই ঈশ্বরের পুত্র প্রকাশিত হয়েছিলেন।
9 যে কেউ ঈশ্বরের সন্তান হয়, সে ক্রমাগত পাপ করতে পারে না, কারণ নরজীবনদায়ী ঈশ্বরের শক্তি সেই ব্যক্তির মধ্যে থাকে। সে ঈশ্বরের সন্তানে পরিণত হয়েছে; তাই সে পাপে জীবন কাটাতে পারে না। 10 এভাবেই আমরা দেখতে পারি কারা ঈশ্বরের সন্তান আর কারাই বা দিয়াবলের সন্তান। যারা সত্কর্ম করে না তারা ঈশ্বরের সন্তান নয়, আর যে তার ভাইকে ভালবাসে না সে ঈশ্বরের সন্তান নয়।
পরস্পরকে ভালবাসতে হবে
11 তোমরা শুরু থেকে এই বার্তা শুনে আসছ, যে আমাদের পরস্পরকে ভালবাসা উচিত। 12 তোমরা কয়িনের[a] মতো হয়ো না। কয়িন দিয়াবলের ছিল এবং তার ভাই হেবলকে হত্যা করেছিল। কিসের জন্য সে তার ভাইকে হত্যা করেছিল? কারণ কয়িনের কাজগুলি ছিল মন্দ; কিন্তু তার ভাইয়ের কাজ ছিল ভাল।
13 ভাইরা, এই জগত যদি তোমাদের ঘৃণা করে তবে তাতে আশ্চর্য হয়ো না। 14 আমরা জানি যে আমরা মৃত্যু থেকে জীবনে উত্তীর্ণ হয়ে গেছি। আমরা এটা জানি কারণ আমরা আমাদের ভাইদের ও বোনদের ভালবাসি। যে কেউ ভালবাসে না সে মৃত্যুর মধ্যেই থাকে। 15 যে কেউ তার ভাইকে ঘৃণা করে সে তো একজন খুনী; আর তোমরা জান কোন খুনী অনন্ত জীবনের অধিকারী হয় না।
16 তিনি আমাদের জন্য নিজের প্রাণ দিলেন, এর থেকেই আমরা জানতে পারি প্রকৃত ভালবাসা কি। সেইজন্য আমাদেরও আমাদের ভাই বোনদের জন্য প্রাণ দেওয়া উচিত। 17 যার পার্থিব সম্পদ রয়েছে, সে যদি তার কোন ভাইকে অভাবে পড়তে দেখে তাকে সাহায্য না করে, তবে কি করে বলা যেতে পারে যে তার মধ্যে ঐশ্বরিক ভালবাসা আছে? 18 স্নেহের সন্তানরা, কেবল মুখে ভালবাসা না দেখিয়ে, এসো, আমরা কাজের মধ্য দিয়ে তাদের সত্যিকারের ভালবাসি।
19-20 এর দ্বারা আমরা জানব যে আমরা সত্যের। আমাদের অন্তর যদি আমাদের দোষী করে, তবুও ঈশ্বরের সামনে আমাদের বিবেক বিশ্বস্ত থাকবে। কারণ আমাদের বিবেকের থেকে ঈশ্বর মহান, ঈশ্বর তো সবই জানেন।
21 প্রিয় বন্ধুরা, যদি আমাদের বিবেকগুলি আমাদের দোষের অনুভূতি না দেয় তবে ঈশ্বরের সামনে আমরা নির্ভয়ে দাঁড়াতে পারব। 22 আর ঈশ্বরের কাছ থেকে যা কিছু চাই না কেন তা আমরা পাব, কারণ আমরা যা তাঁর সন্তোষজনক তাই করছি। 23 তাঁর আদেশ হল আমরা যেন তাঁর পুত্র যীশু খ্রীষ্টের নামে বিশ্বাস করি ও পরস্পরকে ভালবাসি। 24 যে ঈশ্বরের আদেশগুলি মান্য করে সে ঈশ্বরে থাকে; আর ঈশ্বর তার অন্তরে থাকেন। ঈশ্বর যে আমাদের অন্তরে আছেন তা আমরা কি করে জানব? যে আত্মাকে ঈশ্বর দিয়েছেন, সেই আত্মাই আমাদের বলছে যে ঈশ্বর আমাদের মধ্যে আছেন।
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International