M’Cheyne Bible Reading Plan
বিলিয়ম এবং মোয়াবের রাজা
22 এরপর ইস্রায়েলের লোকরা মোয়াবের যর্দন উপত্যকার দিকে এগোতে শুরু করল। যিরীহো থেকে অপরপারে যর্দন নদীর কাছে তারা শিবির স্থাপন করল।
2-3 ইমোরীয়দের লোকদের সঙ্গে ইস্রায়েলের লোকরা যা যা করেছিল, সিপ্পোরের পুত্র বালাক তার সমস্তটাই দেখেছিলেন। মোয়াবের রাজা খুবই ভয় পেয়েছিলেন, কারণ সেখানে ইস্রায়েলের লোকসংখ্যা ছিল প্রচুর। মোয়াব উদ্বিগ্ন হল।
4 মোয়াবের রাজা মিদিয়নের নেতাদের বললেন, “গরু যেভাবে মাঠের সমস্ত ঘাস খেয়ে ফেলে, ঠিক সেভাবেই এই বিশাল জনগোষ্ঠী আমাদের চারপাশের সমস্ত কিছুই ধ্বংস করে দেবে।”
এই সময় সিপ্পোরের পুত্র বালাক মোয়াবের রাজা ছিলেন। 5 বিয়োরের পুত্র বিলিয়মকে ডাকার জন্য তিনি কয়েকজন লোক পাঠালেন। ফরাৎ নদীর কাছে পথোর নামে একটি জায়গায় বিলিয়ম ছিলেন। এইখানেই বিলিয়মের স্বজাতীয়রা বাস করতো। এই ছিল বালাকের বার্তা:
“মিশর থেকে এক নতুন জাতির লোকরা এসেছে। সেখানে তাদের সংখ্যা এতো বেশী যে সমস্ত দেশটা ভরে যাবে। তারা আমাদের পরেই শিবির স্থাপন করেছে। 6 আপনি এসে আমাকে সাহায্য করুন। এই লোকদের অভিশাপ দিন কারণ এরা আমার চেয়ে শক্তিশালী। আমি জানি আপনি যদি কোনো ব্যক্তিকে আশীর্বাদ করেন তাহলে সে আশীর্বাদ পায় এবং আপনি যদি কোনো ব্যক্তিকে অভিশাপ দেন তবে সে শাপগ্রস্ত হয়। সুতরাং আপনি আসুন এবং এই সমস্ত লোকদের অভিশাপ দিন। হতে পারে, আমি হয়তো তাদের আঘাত করে আমার দেশ থেকে দূর করে দিতে পারবো।”
7 মোয়াব এবং মিদিয়নের নেতারা বিলিয়মের সঙ্গে কথা বলতে গেলেন। তার কাজের পারিশ্রমিক হিসেবে তাঁদের সঙ্গে টাকা নিয়ে গেলেন এবং তাকে বালাকের প্রেরিত বার্তাটি বললেন।
8 বিলিয়ম তাঁদের বললেন, “এখানে এক রাত্রির জন্য থাকো। আমি প্রভুর সঙ্গে কথা বলবো এবং তিনি আমাকে যে উত্তর দেবেন তা আমি তোমাদের বলবো।” সুতরাং সেই রাত্রে মোয়াবের নেতারা বিলিয়মের সঙ্গেই সেখানে থাকলেন।
9 ঈশ্বর বিলিয়মের কাছে এসে জিজ্ঞেস করলেন, “তোমার সঙ্গের এই সমস্ত লোকরা কারা?”
10 বিলিয়ম ঈশ্বরকে বললেন, “মোয়াবের রাজা, সিপ্পোরের পুত্র বালাক আমাকে একটি সংবাদ দেওয়ার জন্য এদের পাঠিয়েছেন। 11 এই সেই বার্তা: মিশর থেকে এক নতুন জাতি এসেছে। সেখানে তাদের সংখ্যা এতো বেশী যে তারা সমস্ত দেশটাকে ভরে দেবে। সুতরাং আপনি আসুন এবং এই সমস্ত লোকদের অভিশাপ দিন। তাহলে হয়তো আমি তাদের সঙ্গে যুদ্ধ করতে সক্ষম হবো এবং তাদের আমার দেশ ত্যাগ করতে বাধ্য করতে পারবো।”
12 কিন্তু ঈশ্বর বিলিয়মকে বললেন, “তুমি অবশ্যই এদের সঙ্গে যাবে না। ওসব লোকের বিরুদ্ধে তোমার কথা বলা উচিৎ হবে না কারণ তারা আমার আশীর্বাদ প্রাপ্ত লোক।”
13 পরদিন সকালে উঠে বিলিয়ম বালাকের প্রেরিত নেতাদের বললেন, “তোমরা তোমাদের নিজেদের দেশে ফিরে যাও। প্রভু আমাকে তোমাদের সঙ্গে যেতে দেবেন না।”
14 সুতরাং মোয়াবের নেতারা বালাকের কাছে ফিরে গিয়ে তাকে এইসব কথা জানালেন। তাঁরা বললেন, “বিলিয়ম, আমাদের সঙ্গে আসতে অস্বীকার করেছেন।”
15 সুতরাং বালাক বিলিয়মের কাছে প্রথমবারের থেকেও বেশী লোক পাঠালেন। প্রথমবার তিনি যাঁদের পাঠিয়েছিলেন তাঁদের থেকেও এবারের নেতারা ছিলেন অনেক বেশী গুরুত্বপূর্ণ। 16 তাঁরা বিলিয়মের কাছে গিয়ে বললেন: “সিপ্পোরের পুত্র বালাক আপনাকে এই কথা বলেছেন: দয়া করে এখানে আসুন এবং কোন কিছুই যেন আমার কাছে আপনার আসা থামিয়ে না দেয়। 17 আমি আপনাকে প্রচুর পারিশ্রমিক দেবো এবং আপনি যা বলবেন আমি তাই-ই করব। আমার জন্যে আপনি আসুন এবং এসে এই লোকদের বিরুদ্ধে কথা বলুন।”
18 বিলিয়ম বালাকের প্রেরিত দূতকে তাঁর উত্তর জানিয়ে দিয়ে বললেন, “আমি আমার প্রভু ঈশ্বরকে অবশ্যই মান্য করবো। আমি তাঁর আদেশের বিরুদ্ধে কোনো কাজ করতে পারি না। আমি বড় বা ছোট কোনো কাজই করবো না যদি না প্রভু আমাকে সেই কাজ করার অনুমতি দেন। রাজা বালাক যদি তাঁর রূপো এবং সোনা খচিত সুন্দর প্রাসাদটি আমাকে দিয়ে দেন তাহলেও আমি প্রভুর আদেশের বিরুদ্ধে কোনো কাজ করবো না। 19 কিন্তু তোমরা অন্যান্যদের মতোই আজকের রাত্রিটা এখানে থাকতে পারো। তাহলে এই রাত্রিকালের মধ্যেই প্রভু আমাকে যা বলতে চান তা জানতে পারবো।”
20 সেই রাত্রে ঈশ্বর বিলিয়মের কাছে এসে বললেন, “এই সমস্ত লোকরা তাদের সঙ্গে যাওয়ার কথা বলার জন্য পুনরায় এসেছে। সুতরাং তুমি তাদের সঙ্গে যেতে পারো। কিন্তু আমি তোমাকে যা করতে বলবো তুমি কেবলমাত্র সেই কাজই করবে।”
বিলিয়ম ও তাঁর গাধা
21 পরদিন সকালে বিলিয়ম উঠে তাঁর গাধা সাজিয়ে মোয়াবের নেতাদের সঙ্গে গেলেন। 22 বিলিয়ম তাঁর গাধায় চড়েই যাচ্ছিলেন। তাঁর সঙ্গে তাঁর দুজন ভৃত্য ছিল। কিন্তু বিলিয়মের গমনে ঈশ্বর ক্ষুব্ধ হলেন। তাই বিলিয়মের সামনে রাস্তার ওপরে প্রভুর দূত দাঁড়ালেন, যেন বিলিয়মের যাওয়া বন্ধ করা যায়।
23 বিলিয়মের গাধা প্রভুর দূতকে রাস্তায় তরবারি হাতে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখল। সেইজন্য গাধাটি রাস্তা থেকে সরে এসে মাঠের মধ্যে চলে গেল। বিলিয়ম কিন্তু দূতকে দেখতে পান নি। সেইজন্য তিনি তাঁর গাধাটার ওপরেই রেগে গিয়ে তাকে আঘাত করলেন এবং রাস্তার ওপরে ফিরে যেতে তাকে বাধ্য করলেন।
24 পরে প্রভুর দূত এমন এক জায়গায় গিয়ে দাঁড়ালেন যেখানে রাস্তাটি আরও সরু হয়ে এসেছে। জায়গাটি ছিল দুটি দ্রাক্ষা ক্ষেতের মাঝখানে। সেখানে রাস্তার দুই ধারেই দেওয়াল ছিল। 25 গাধাটি আবার প্রভুর দূতকে দেখতে পেয়ে দেওয়ালের গা ঘেঁষে হাঁটল। তাতে বিলিয়মের পা দেওয়ালে আঘাত লেগে ছড়ে গেল। সেই জন্যে বিলিয়ম আবার তাঁর গাধাটিকে আঘাত করলেন।
26 পরে প্রভুর দূত আরেকটি জায়গায় গিয়ে দাঁড়ালেন। এই খানে রাস্তাটি সরু হয়ে এসেছিল, ফলে এমন কোনো জায়গা ছিল না যেখান দিয়ে গাধাটি তাঁকে পাশ কাটিয়ে চলে যেতে পারে। গাধাটি বাঁদিক অথবা ডানদিক, কোনো দিক দিয়েই পাশ কাটাতে পারল না। 27 গাধাটি প্রভুর দূতকে দেখে বিলিয়মকে তার পিঠের ওপরে নিয়েই শুয়ে পড়ল। তাতে বিলিয়ম গাধাটির ওপরে প্রচণ্ড ক্রুদ্ধ হয়ে তার হাঁটার লাঠিটি দিয়ে গাধাটিকে আঘাত করলেন।
28 তখন প্রভু গাধাটিকে দিয়ে কথা বলালেন। গাধাটি বিলিয়মকে বলল, “আপনি আমার ওপরে রেগে গিয়েছেন কেন? আমি আপনার কি ক্ষতি করেছি যে এই নিয়ে আপনি আমাকে তিনবার আঘাত করলেন?”
29 বিলিয়ম গাধাটিকে বললেন, “তুমি আমাকে হাস্যস্পদ করে তুলেছ। যদি আমার হাতে একটি তরবারি থাকতো, তাহলে আমি এখনই তোমাকে হত্যা করতাম।”
30 কিন্তু গাধাটি বিলিয়মকে বলল, “আপনি সারা জীবন ধরে যার উপরে চড়ে ভ্রমণ করেছেন আমি কি আপনার সেই গাধা নই? আমি কি আপনার প্রতি এমন ব্যবহার করে থাকি?”
বিলিয়ম বললেন, “সেটা সত্য।”
31 তখন প্রভু বিলিয়মকে তাঁর দূতকে দেখতে দিলেন। প্রভুর দূত হাতে একটি তরবারি নিয়ে রাস্তার ওপরে দাঁড়িয়েছিলেন। বিলিয়ম মাটিতে নতজানু হয়ে অভিবাদন জানালেন।
32 তখন প্রভুর দূত বিলিয়মকে প্রশ্ন করল, “তুমি তোমার গাধাকে তিনবার আঘাত করেছো কেন? আমিই এসেছিলাম তোমাকে থামাতে। কিন্তু ঠিক সময়ে 33 তোমার গাধা আমাকে দেখতে পেয়ে তিনবার আমার কাছ থেকে সরে গিয়েছিল। যদি গাধাটি সরে না যেতো, তাহলে আমি হয়তো এতক্ষণে তোমাকে হত্যা করতাম, কিন্তু তোমার গাধাকে বাঁচিয়ে রাখতাম।”
34 তখন বিলিয়ম প্রভুর দূতকে বললেন, “আমি পাপ করেছি। আমি জানতাম না যে আপনি আমার গতিরোধ করার জন্য রাস্তার ওপরে দাঁড়িয়েছিলেন। আমার ওখানে যাওয়াতে আপনি যদি খুশী না হন, তাহলে আমি ঘরে ফিরে যাবো।”
35 তখন প্রভুর দূত বিলিয়মকে বললেন, “না! তুমি এই লোকদের সঙ্গে যেতে পারো। কিন্তু সাবধান, আমি তোমাকে যা বলতে বলবো তুমি কেবল তাই বলবে।” সুতরাং বালাকের প্রেরিত নেতাদের সঙ্গে বিলিয়ম চলে গেলেন।
36 বালাক শুনেছিলেন যে বিলিয়ম আসছেন। তাই অর্ণোন নদীর কাছে মোয়াবের শহরে তাঁর সঙ্গে দেখা করার জন্য বালাক চলে গেলেন। জায়গাটি ছিল তাঁর দেশের উত্তর সীমানায়। 37 বালাক বিলিয়মকে দেখতে পেয়ে বললেন, “আমি আগেই আপনাকে আসতে বলেছিলাম। বলেছিলাম, এটি খুবই জরুরী, কিন্তু আপনি আমার কাছে কেন আসেন নি? আপনাকে পারিশ্রমিক দেওয়ার সামর্থ্য কি আমার নেই?”
38 বিলিয়ম উত্তর দিলেন, “দেখুন আমি এখন এখানে। আমি এসেছি কিন্তু আপনি যা বলেছেন সেটা করতে আমি সক্ষম নাও হতে পারি। প্রভু ঈশ্বর আমাকে যা বলতে বলবেন, আমি কেবলমাত্র সে কথাই বলতে পারবো।”
39 তখন বিলিয়ম বালাকের সঙ্গে কিরিয়ৎ-হুষোতে গেলেন। 40 বালাক কিছু গবাদি পশু এবং মেষ বলিদান করে সেই মাংসের কিছুটা বিলিয়মকে এবং তার সঙ্গী নেতাদের দিলেন।
41 পরদিন সকালে বালাক বিলিয়মকে নিয়ে ব্যামোথ বালে গেলে সেখান থেকে তাঁরা ইস্রায়েলীয়দের শিবিরের কিছুটা দেখতে পেলেন।
সঙ্গীত পরিচালকের প্রতি: যিদূথূনের উদ্দেশ্যে দায়ূদের একটি গীত।
62 যাই ঘটুক না কেন, ঈশ্বর আমায় উদ্ধার করবেন এই আশায় আমার আত্মা ধৈর্য্য ধরে অপেক্ষা করছে।
আমার পরিত্রাণ একমাত্র তাঁর কাছ থেকেই আসবে।
2 হয়তো আমার অনেক শত্রু আছে, কিন্তু ঈশ্বরই আমার দুর্গ।
ঈশ্বর আমায় রক্ষা করেন।
উঁচু পর্বতে ঈশ্বরই আমার নিরাপদ আশ্রয়স্থল।
আমার মস্ত বড় শত্রুও আমায় পরাজিত করতে পারবে না।
3 কতক্ষণ তোমরা আমায় আক্রমণ করবে?
আমি একটা ঝুঁকে পড়া দেওয়ালের মত।
আমি একটা ভগ্ন প্রায় বেড়ার মত।
4 আমার গুরুত্ব থাকা সত্ত্বেও
ঐসব লোক আমার বিনাশের পরিকল্পনা করছে।
আমার সম্পর্কে মিথ্যা বলে ওরা আনন্দ পায়।
জনসমক্ষে ওরা আমার সম্পর্কে ভাল কথা বলে
কিন্তু গোপনে আমায় অভিশাপ দেয়।
5 আমাকে রক্ষা করবার জন্য আমার আত্মা ধৈর্য্য ধরে শুধুমাত্র ঈশ্বরের অপেক্ষা করছে!
ঈশ্বর আমার একমাত্র আশা।
6 ঈশ্বরই আমার দুর্গ। ঈশ্বরই আমায় রক্ষা করেন।
উঁচু পর্বতে ঈশ্বরই আমার নিরাপদ আশ্রয়স্থল।
7 আমার মহিমা ও জয় ঈশ্বরের কাছ থেকে আসে।
তিনিই আমার দৃঢ় দুর্গ, তিনিই আমার নিরাপদ আশ্রয়স্থল।
8 হে লোক সকল, সর্বদাই ঈশ্বরের ওপর বিশ্বাস রাখো।
তোমাদের সব সমস্যা ঈশ্বরকে বল।
ঈশ্বরই আমাদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল।
9 প্রকৃতপক্ষে লোকজন কোন সাহায্য করতে পারে না।
প্রকৃত সাহায্যের জন্য তোমরা ওদের ওপর নির্ভর করতে পারবে না।
ঈশ্বরের সঙ্গে তুলনা করলে,
ওরা একটি বাতাসের ফুত্কার ছাড়া আর বেশী কিছু নয়।
10 জোর করে কেড়ে নেওয়ার ব্যাপারে তোমার ক্ষমতার ওপর বিশ্বাস কর না।
একদম ভেবো না যে চুরি করে কিছু নিয়ে লাভবান হবে।
যদি তুমি ধনী হও,
তবে মোটেই বিশ্বাস করো না সম্পদ তোমায় সাহায্য করবে।
11 ঈশ্বর বলেন, একটাই মাত্র জিনিস আছে যার ওপর তুমি নির্ভর করতে পারো এবং আমি তা বিশ্বাস করি।
“একমাত্র ঈশ্বরের কাছ থেকেই শক্তি আসে!”
12 হে আমার প্রভু, আপনার ভালোবাসাই প্রকৃত ভালোবাসা।
লোকে যে কাজ করে তার জন্যই আপনি তাকে পুরস্কার বা শাস্তি দেন।
দায়ূদের একটি গীত: যখন থেকে তিনি যিহূদার মরুভূমিতে ছিলেন।
63 ঈশ্বর, আপনিই আমার ঈশ্বর।
আমি আপনাকে ভীষণভাবে চাই।
রৌদ্রদগ্ধ শুকনো জমির মত,
আমার দেহ ও আত্মা আপনার জন্য তৃষ্ণার্ত হয়ে রয়েছে।
2 হ্যাঁ, আপনার মন্দিরে আমি আপনাকে দেখেছি।
আপনার শক্তি এবং মহিমাও আমি দেখেছি।
3 আপনার ভালোবাসা জীবনের চেয়েও উত্তম।
আমার ওষ্ঠদ্বয় আপনারই প্রশংসা করে।
4 হ্যাঁ, আমার এ জীবনে আমি আপনারই প্রশংসা করবো।
আপনার পবিত্র নামে আমি দু-হাত তুলে প্রার্থনা করবো।
5 আমি এমনই সন্তুষ্ট হব যেন আমি সব থেকে সেরা খাবার খেয়েছি।
এবং আমার আনন্দপ্লুত মুখ দিয়ে আমি আপনারই প্রশংসা করবো।
6 যখন আমি বিছানায় শুতে যাবো তখন আমি আপনাকে স্মরণ করবো।
মধ্যরাত্রে আমি আপনার ধ্যান করব।
7 আপনি সত্যিই আমাকে সাহায্য করেছেন!
আপনি যখন আমায় সুরক্ষা দেন তখন আমি আনন্দোল্লাস করি!
8 আমার আত্মা আপনাকে জড়িয়ে ধরে থাকে।
আপনার ডান হাত আমাকে সহায়তা দেয়।
9 যারা আমায় মেরে ফেলতে ইচ্ছা করে ওরা সবাই ধ্বংসপ্রাপ্ত হবে।
ওরা ওদের কবরে তলিয়ে যাবে।
10 তরবারির দ্বারা ওদের মৃত্যু হবে।
বুনো কুকুর ওদের মৃতদেহ ছিঁড়ে খাবে।
11 কিন্তু রাজা দায়ূদ তাঁর ঈশ্বরকে নিয়েই সুখী হবে
এবং যারা তাঁকে মান্য করে তারাই ঈশ্বরের প্রশংসা করবে কারণ তিনি সব মিথ্যাবাদীকে পরাজিত করেছেন।
শান্তিরাজ আসছেন
11 একটি ছোট গাছ (শিশু) যিশয়ের গোড়া (পরিবার) থেকে বাড়বে। ঐ শাখাটি যিশয়ের শিকড়গুলি থেকে বাড়বে। 2 আর প্রভুর আত্মা এই বালকটির ওপরে ভর করবে। এই আত্মা বালকটিকে জ্ঞান, বুদ্ধি, পথনির্দেশ এবং শক্তি দেবে। এই আত্মা বালকটিকে প্রভুকে জানার এবং তাঁকে সম্মান করার শিক্ষা দেবে। 3 প্রভুর প্রতি সমীহ দ্বারা বালকটি অনুপ্রাণিত হবে।
সে বাইরের চেহারা দিয়ে কোন কিছু বিচার করবে না। কোন কিছু শোনার ভিত্তিতে সে রায় দেবে না। 4-5 সে সততা ও ধার্মিকতার সঙ্গে দীন-দরিদ্রদের বিচার করবে। সে ন্যায়ের সঙ্গে দেশের দীনহীনদের বিভিন্ন বিষয়ের নিষ্পত্তি করবে। যদি সে কোন লোককে শাস্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় তাহলে তার আদেশমতো ঐ লোকটিকে শাস্তি পেতেই হবে। যদি সে লোকদের মৃত্যুর আদেশ দেয় তাহলে তাদের হত্যা করা হবে। সুবিচার, ধার্মিকতাই এই শক্তির অন্যতম উৎস। এই গুণগুলি তাঁর কোমরের বন্ধনীর মতো হবে।
6 সে সময় নেকড়ে বাঘ এবং মেষশাবক এক সঙ্গে শান্তিতে বাস করবে। বাঘ এবং ছাগল ছানা এক সঙ্গে শান্তিতে শুয়ে থাকবে। বাছুর, সিংহ এবং ষাঁড় একসঙ্গে শান্তিতে বাস করবে। এবং একটা ছোট্ট শিশু তাদের চালনা করবে। 7 গরু এবং ভাল্লুক একসঙ্গে শান্তিতে বাস করবে। তাদের সমস্ত শাবকরাও একসঙ্গে বাস করবে। কেউ কারো অনিষ্ট করবে না। সিংহ গরুর মতো খড় খাবে। এমনকি সাপও মানুষকে দংশন করবে না। 8 একটা শিশুও নির্ভয়ে কেউটে সাপের গর্তের ওপর খেলা করতে পারবে। বিষাক্ত সাপের গর্তের মধ্যেও সে নির্দ্বিধায় হাত দিতে পারবে।
9 এইসব বিষয়গুলি আসলে প্রমাণ করে কেউ কারও কোন ক্ষতি না করে পরস্পর শান্তিতে বাস করবে। লোকরা আমার পবিত্র পর্বতের কোন অংশে হিংসা কিংবা ধ্বংসের আশ্রয় নেবে না। কারণ এইসব লোকরা যথার্থভাবে প্রভুকে চেনে ও জানে। ভরা সমুদ্রের জলের মতো প্রভু বিষয়ক অগাধ জ্ঞানে তারা পরিপূর্ণ থাকবে।
10 সে সময় যিশয়ের পরিবারবর্গ থেকে একজন বিশেষ ব্যক্তি থাকবেন। এই ব্যক্তি লোকের পতাকা স্বরূপ হবেন। এই “পতাকা” সকল দেশকে তাঁর চারপাশে আসার জন্য পথ দেখাবে। সব দেশ তাঁর কাছে তাঁদের করণীয় কর্তব্যের ব্যাপারে জানতে চাইবে এবং তাঁর বিশ্রামস্থল মহিমান্বিত হবে।
11 সেদিন প্রভু (ঈশ্বর) তাঁর লোকদের অবশিষ্ট অংশকে মুক্ত করে আনতে দ্বিতীয় বারের জন্য হস্তক্ষেপ করবেন। (অর্থাৎ তিনি অশূর, মিশর, পথ্রোষ, এলম, বাবিল, হমাৎ এবং সমুদ্রের চতুর্দিকের সমস্ত উপত্যকা থেকে অবশিষ্ট লোকদের আনবেন।) 12 আর তিনি সমস্ত লোকদের জন্য “পতাকা” তুলবেন। ইস্রায়েল ও যিহূদা থেকে বিতাড়িত লোক যারা পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষিপ্তভাবে ছিন্নমূলের মতো বাস করছিল তাদের তিনি একত্রিত করবেন।
13 এই সময় ইফ্রয়িমের (ইস্রায়েলের) ঈর্ষা দূর হবে। ইফ্রয়িম আর যিহূদাকে ঈর্ষা করবে না। যিহূদার আর কোন শত্রু থাকবে না। এবং যিহূদা ইফ্রয়িমের অসুবিধার কারণ হবে না। 14 কিন্তু ইফ্রয়িম এবং যিহূদা একসঙ্গে পলেষ্টীয়দের আক্রমণ করবে। কোন ছোট্ট প্রাণীর ওপর দুটি পাখি এক সঙ্গে ছোঁ মারলে যেমন হয় তাদের আক্রমণ অনেকটা সে রকম হবে। দুটি দেশ এক সঙ্গে পূর্বের দেশ থেকে ধনসম্পদ লুঠ করবে। ইফ্রয়িম এবং যিহূদা ইদোম, মোয়াব এবং অম্মোনের লোকদের নিয়ন্ত্রণ করবে।
15 প্রভু মিশরের উপসাগরকে শুকিয়ে ফেলবেন এবং ধ্বংস করে ফেলবেন। তিনি ফরাৎ নদীর ওপর তাঁর হাত আন্দোলিত করবেন এবং ফরাৎ সাতটা ছোট ছোট নদীতে বিভক্ত হবে। এই ছোট ছোট নদীগুলি গভীর হবে না। লোকরা অনায়াসেই জুতো পরে নদীগুলির ওপর দিয়ে হেঁটে পার হতে পারবে। 16 আর মিশর দেশ থেকে ইস্রায়েল বেরিয়ে আসার সময় যেমন তার জন্য পথের সৃষ্টি হয়েছিল তেমনি অশূরে জীবিত থাকা তাঁর লোকদের অশূর ত্যাগের জন্য ঈশ্বর একটি নতুন পথের সৃষ্টি করবেন।
ঈশ্বরের প্রশংসামুখর গান
12 আর সেদিন তুমি বলবে:
“হে প্রভু আমি তোমার প্রশংসা করি!
তুমি আমার প্রতি ক্রুদ্ধ ছিলে।
কিন্তু এখন আর আমার প্রতি ক্রুদ্ধ থেকো না!
আমার প্রতি তোমার ভালোবাসা প্রদর্শন কর।
2 ঈশ্বর আমাকে রক্ষা করেন।
আমি তাকে বিশ্বাস করি।
আমি ভয় পাই না, তিনি আমাকে রক্ষা করেন।
প্রভু যিহোবা আমার শক্তিও বটে।
তিনি আমাকে রক্ষা করেন এবং আমি তাঁর প্রশংসার গান গাই।”
3 পরিত্রাণের ঝর্ণা থেকে তোমরা জল তুলবে
এবং তারপর তোমরা আনন্দিত হবে।
4 তারপর তুমি বলবে, “প্রভুর প্রশংসা কর!
তাঁর নাম উপাসনা কর!
সমস্ত দেশে তাঁর কর্মের কথা বিদিত করে দাও।
ঘোষণা কর যে তাঁর নাম মহান!”
5 প্রভুর প্রশংসার গান গাও!
কেন না, তিনি মহান কাজ করেছেন।
এই খবর পৃথিবীময় ছড়িয়ে দাও।
পৃথিবীর সব মানুষ তা জানুক।
6 হে সিয়োনবাসীগণ, উচ্চস্বরে ঈশ্বরের স্তবগান কর।
ইস্রায়েলের পবিত্রতম ঈশ্বর অত্যন্ত সক্রিয়ভাবে তোমার সঙ্গে আছেন।
তাই সকলে খুশী হও।
স্বার্থপর ধনী লোকরা দণ্ডিত হবে
5 ধনী ব্যক্তিরা শোন, তোমাদের জীবনে যে ঘোর দুর্দশা আসছে, তার জন্য তোমরা কাঁদ ও হাহাকার কর। 2 তোমাদের ধন পচে যাবে, তার কোন মূল্যই থাকবে না। তোমাদের পোশাক পোকায় কাটবে, তোমাদের সোনা ও রূপোয় মরচে ধরবে। সেই মরচে প্রমাণ করবে যে তোমরা অন্যায় করেছ। 3 আর সেই মরচে আগুনের মতো তোমাদের দেহের মাংস খেয়ে ফেলবে। তোমরা শেষের দিনের জন্য সম্পদ জমা করেছ। 4 দেখ! যে মজুররা তোমাদের ক্ষেতে কাজ করেছিল তাদের তোমরা মজুরি দাও নি। তার জন্য তারা তোমাদের বিরুদ্ধে চিৎকার করছে। তারা তোমাদের ক্ষেতের ফসল কেটেছে, এখন তাদের সেই আর্তনাদ স্বর্গীয় বাহিনীর প্রভু ঈশ্বরের কানে পৌঁছেছে।
5 এই পৃথিবীতে তোমরা ভোগ বিলাসে দিন কাটিয়ে প্রাণের লালসা মিটিয়েছ। বলি হবার দিনের জন্য তোমরা নিজেদের পশুর মতো মোটা করছ। 6 ভাল লোকদের প্রতি তোমরা কোন দয়া দেখাও নি। তোমরা নির্দোষ লোকদের দোষী সাব্যস্ত করেছ এবং বধ করেছ, যদিও তারা তোমাদের বিরোধিতা করে নি।
ধৈর্য্য ধর
7 ভাই ও বোনেরা, ধৈর্য্য ধর। প্রভু যীশু খ্রীষ্ট ফিরে আসবেন, তাঁর না আসা পর্যন্ত ধৈর্য্য ধর। মনে রেখো, একজন চাযী তার ক্ষেতের মূল্যবান ফসলের জন্য অপেক্ষা করে, আর যতদিন তা প্রথম ও শেষ বর্ষণ না পায়, ততদিন সে ধৈর্য্য ধরে অপেক্ষা করে। 8 তোমাদের ধৈর্য্য ধরা দরকার, আশা ছেড়ে দিও না। প্রভু যীশু শীঘ্রই আসছেন। 9 ভাই ও বোনেরা, তোমরা একে অপরের বিরুদ্ধে নালিশ করো না। তোমরা যদি নালিশ করা থেকে বিরত না হও, তাহলে তোমরা দোষী সাব্যস্ত হবে। দেখ, বিচারক দোরগোড়ায়় দাঁড়িয়ে আছেন।
10 ভাই ও বোনেরা, দুঃখ ও কষ্টে কিভাবে ধৈর্য্য ধরতে হয় তার দৃষ্টান্তস্বরূপ সেই ভাববাদীদের অনুসরণ কর যাঁরা প্রভুর পক্ষে কথা বলেছিলেন। 11 আমরা বলি যাঁরা জীবনে দুঃখ কষ্ট সহিষ্ণুতার সঙ্গে মেনে নেয় তারা ধন্য। তোমরা ইয়োবের সহিষ্ণুতার কথা শুনেছ। তোমরা জান যে ইয়োবের সমস্ত দুঃখ কষ্টের পর প্রভু তাঁকে সাহায্য করেছিলেন। এতে জানা যায় যে প্রভু করুণা ও দয়ায় পরিপূর্ণ।
কথাবার্তায় সতর্ক হও
12 আমার ভাই ও বোনেরা, বিশেষ করে মনে রেখো, কোন প্রতিশ্রুতি করার সময়ে স্বর্গ, পৃথিবী বা অন্য কোন নাম ব্যবহার করে তোমার কথার সত্যতা প্রমাণ করতে দিব্যি করো না। তোমাদের “হাঁ,” যেন হাঁ-ই হয় আর “না” যেন “না” থাকে। এটা কর যাতে তোমাদের বিচারের দায়ে পড়তে না হয়।
প্রার্থনার শক্তি
13 তোমাদের মধ্যে কেউ কি কষ্ট পাচ্ছে? তবে সে প্রার্থনা করুক। কেউ কি সুখী? তবে সে ঈশ্বরের গুণকীর্তন করুক। 14 তোমাদের মধ্যে কেউ কি অসুস্থ হয়েছে? তবে সে মণ্ডলীর প্রাচীনদের ডাকুক। তারা প্রভুর নামে তার মাথায় একটু তেল দিয়ে তার জন্য প্রার্থনা করুক। 15 বিশ্বাসপূর্ণ প্রার্থনা সেই অসুস্থ ব্যক্তিকে সুস্থ করবে, প্রভুই তাকে সুস্থ করে তুলবেন; আর সে যদি পাপ করে থাকে তবে প্রভু তাকে ক্ষমা করবেন।
16 তাই তোমরা পরস্পরের কাছে পাপ স্বীকার কর, পরস্পরের জন্য প্রার্থনা কর, যেন সুস্থতা লাভ কর, কারণ ন্যায়পরায়ণ ব্যক্তির প্রার্থনা খুবই শক্তিশালী ও কার্যকরী। 17 এলিয় আমাদের মতোই সাধারণ মানুষ ছিলেন। তিনি প্রার্থনা করলেন যেন বৃষ্টি না হয়, আর সাড়ে তিন বছর ধরে দেশে বৃষ্টি হল না। 18 পরে তিনি আবার প্রার্থনা করলেন আর আকাশ থেকে বৃষ্টি নামল এবং ক্ষেতে ফসল হল।
আত্মার মুক্তি
19 আমার ভাই ও বোনেরা, তোমাদের মধ্যে কেউ যদি সত্য থেকে দূরে সরে যায় আর যদি কেউ তাকে সত্যে ফিরে আসতে সাহায্য করে তবে 20 একথা মনে রেখো, যে পাপীকে মন্দ থেকে ফিরিয়ে আনে সে সেই ব্যক্তিকে অনন্ত মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা করবে এবং এই কাজের দ্বারা তার অনেক পাপ ক্ষমা হয়ে যাবে।
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International