M’Cheyne Bible Reading Plan
ঈশ্বর প্রমাণ করলেন হারোণই মহাযাজক
17 প্রভু মোশিকে বললেন, 2 “ইস্রায়েলের লোকদের সঙ্গে কথা বলো। বারোটি পরিবারগোষ্ঠীর প্রত্যেকটির নেতার কাছ থেকে একটি করে মোট বারোটি হাঁটার লাঠি বা ছড়ি নিয়ে এসো। প্রত্যেক ব্যক্তির নাম তার লাঠির ওপরে লেখো। 3 লেবি গোষ্ঠীর লাঠির ওপরে হারোণের নাম লেখ। বারোটি পরিবারগোষ্ঠীর প্রত্যেকটির নেতার জন্য অবশ্যই একটি করে লাঠি থাকবে। 4 এই লাঠিগুলোকে সাক্ষ্যসিন্দুকের সামনে সমাগম তাঁবুতে রাখো। এটাই সেই জায়গা যেখানে আমি তোমার সঙ্গে দেখা করি। 5 সত্যিকারের যাজক হওয়ার জন্য আমি একজনকে মনোনীত করব। আমি যে ব্যক্তিকে মনোনীত করব তার হাঁটার লাঠিতে নতুন পাতা গজাতে শুরু করবে। এইভাবে আমি তোমার এবং আমার বিরুদ্ধে লোকদের অভিযোগ করা বন্ধ করে দেবো।”
6 সুতরাং মোশি ইস্রায়েলের লোকদের সঙ্গে কথা বলল। নেতারা প্রত্যেকেই তাকে লাঠি দিলেন। সেখানে মোট বারোটি লাঠি হল। প্রত্যেক পরিবারগোষ্ঠীর প্রত্যেক নেতার কাছ থেকে পাওয়া একটি করে লাঠি সেখানে ছিল। লাঠিগুলোর মধ্যে একটি ছিল হারোণের। 7 চুক্তির তাঁবুতে প্রভুর সামনে মোশি লাঠিগুলো রেখে দিল।
8 পরদিন মোশি তাঁবুতে প্রবেশ করে হারোণের লাঠিটি দেখল। লেবি পরিবারের কাছ থেকে পাওয়া এই লাঠিই ছিল একমাত্র লাঠি যাতে নতুন পাতা গজিয়েছিল। সেই লাঠিটিতে শাখা প্রশাখা গজিয়েছিল এবং বাদামও ফলেছিল। 9 সেই কারণে মোশি প্রভুর সেই স্থান থেকে সমস্ত লাঠিগুলো নিয়ে এল। মোশি ইস্রায়েলের লোকদের সেই লাঠিগুলো দেখাল। তারা সকলেই লাঠিগুলো দেখল এবং প্রত্যেক ব্যক্তি তাদের লাঠিগুলো ফিরিয়ে নিয়ে গেল।
10 তখন প্রভু মোশিকে বললেন, “চুক্তি সিন্দুকের সামনে পবিত্র তাঁবুর ভেতরে পেছনদিকে হারোণের লাঠিটিকে রাখো। এই যে সব লোক, যারা সব সময়েই আমার বিরোধিতা করে তাদের জন্য এটি একটি সতর্কীকরণ। এতে আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করা বন্ধ হয়ে যাবে যার ফলে আমি তাদের ধ্বংস করব না।” 11 সুতরাং মোশি প্রভুর আজ্ঞা অনুসারেই কাজ করল।
12 ইস্রায়েলের লোকরা মোশিকে বলল, “দেখ, আমরা মারা পড়তে বসেছি। আমরা শেষ হয়ে যাব। আমরা সকলেই ধ্বংস হয়ে যাব। 13 যে কোনো ব্যক্তি প্রভুর পবিত্র তাঁবুর কাছে আসে সে মারা যায়। তবে কি আমরা সকলেই মারা যাবো?”
যাজকদের এবং লেবীয়দের কাজ
18 প্রভু হারোণকে বললেন, “পবিত্র স্থানের বিরুদ্ধে যে কোনোরকম ভুল কাজের জন্য তুমি, তোমার পুত্ররা এবং তোমার পিতার পরিবারের সকল ব্যক্তি দায়ী থাকবে। যাজকগণের বিরুদ্ধে যে কোনোরকম ভুল কাজের জন্যে তুমি এবং তোমার পুত্ররা দায়ী থাকবে। 2 তুমি তোমার পরিবারগোষ্ঠী থেকে অন্যান্য লেবীয় লোকদেরও নিয়ে এসো যাতে তারা তোমার সাথে যোগ দিতে পারে। তুমি তোমার পুত্রদের সাথে যখন চুক্তির সিন্দুকের সাক্ষাতে উপস্থিত থাকবে তখন তারা তোমাদের সাহায্য করবে। 3 লেবি পরিবার থেকে আসা ঐসব লোকরা তোমার অধীনে থাকবে। পবিত্র তাঁবুতে প্রয়োজনীয় সব কাজই তারা করবে। কিন্তু তারা কোনো সময়েই পবিত্র স্থানের দ্রব্যসামগ্রীর কাছে অথবা বেদীর কাছে যাবে না। যদি তারা সেটা করে, তাহলে তারা মারা যাবে এবং তুমিও মারা যাবে। 4 তারা তোমাকে সঙ্গ দেবে এবং তোমার সঙ্গে কাজ করবে। সমাগম তাঁবুর তত্ত্বাবধানের জন্য তারা দায়ী থাকবে। পবিত্র তাঁবুতে অবশ্য করণীয় কাজগুলো তারা করবে। এ ছাড়া অন্য কেউই ঐ জায়গায় আসতে পারবে না যেখানে তুমি আছো।
5 “পবিত্র স্থান এবং বেদীর তত্ত্বাবধান করার জন্য তুমি দায়বদ্ধ কারণ আমি ইস্রায়েলের লোকদের ওপরে আর ক্রুদ্ধ হতে চাই না। 6 ইস্রায়েলের লোকদের মধ্য থেকে আমি নিজে একমাত্র লেবীয় গোষ্ঠীভুক্তদেরই বেছে নিয়েছি। তারা তোমাদের কাছে উপহারস্বরূপ প্রভুর সেবা করার জন্য এবং সমাগম তাঁবুতে কাজ করার জন্য আমি তোমাদের কাছে তাদের দিয়েছি। 7 কিন্তু হারোণ, কেবলমাত্র তুমি এবং তোমার পুত্ররাই যাজক হিসাবে সেবা করতে পারো। কেবলমাত্র তুমিই বেদীর কাছে যেতে পারো। পবিত্রতম স্থানের পর্দার অভ্যন্তরে একমাত্র তুমিই প্রবেশ করতে পারো। আমি দানরূপে যাজকত্ব পদ তোমাদের দিয়েছি। অন্য যে কেউই আমার পবিত্র স্থানের কাছে আসবে তাকে অবশ্যই হত্যা করা হবে।”
8 এরপর প্রভু হারোণকে বললেন, “দেখ ইস্রায়েলের লোকরা আমাকে যে বিশেষ উপহারগুলো দিয়েছে, তার রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব আমি নিজেই তোমাকে দিয়েছি। আমি তোমাকে সব পবিত্র উপহারসামগ্রী দেব যা ইস্রায়েলীয়রা আমাকে দেয়। তুমি এবং তোমার পুত্ররা এইসব উপহার সামগ্রী ভাগ করে নেবে। সেগুলো চিরকাল তোমাদেরই থাকবে। 9 লোকরা উৎসর্গের জন্য জিনিসপত্র, শস্য নৈবেদ্য, পাপার্থক বলি এবং দোষার্থক বলির নৈবেদ্য নিয়ে আসবে। ঐসব নৈবেদ্য সব থেকে পবিত্র। সব থেকে পবিত্র নৈবেদ্য যে অংশ পোড়ানো হয় নি, সেখান থেকেই তোমার অংশ আসবে। ঐসব দ্রব্যসামগ্রী তোমার এবং তোমার পুত্রদের জন্য। 10 কেবলমাত্র অতি পবিত্র স্থানে তোমরা ঐসব দ্রব্য সামগ্রী ভক্ষণ কোরো। তোমার পরিবারের প্রত্যেক পুরুষ ঐসব দ্রব্যসামগ্রী খেতে পারবে, কিন্তু তুমি অবশ্যই মনে রাখবে যে, ঐসব নৈবেদ্যগুলো পবিত্র।
11 “এবং ইস্রায়েলের লোকরা দোলনীয় নৈবেদ্য স্বরূপ যে সব উপহারসামগ্রী আমাকে দেয়, সেগুলোও তোমাদের। আমি তোমাকে, তোমার পুত্রদের এবং তোমার কন্যাদের এগুলো দিলাম। এটি তোমার অংশ। তোমার পরিবারের প্রত্যেক ব্যক্তি, যে শুচি সে এগুলো খেতে পারবে।
12 “তাদের ক্ষেতে উৎপন্ন প্রথম সবচেয়ে উৎকৃষ্ট অলিভ তেল, নতুন দ্রাক্ষারস, শস্য যা তারা আমার উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করে তা আমি তোমাদের দিলাম। 13 দেশের সমস্ত প্রথম ফসল যা তারা প্রভুর উদ্দেশ্যে নিয়ে আসে তা তোমাদের হবে। তোমার পরিবারের প্রত্যেক ব্যক্তি, যে শুচি সে এটি খেতে পারবে।
14 “ইস্রায়েলে যে সকল দ্রব্যসামগ্রী প্রভুকে দেওয়া হবে সেগুলো তোমারই।
15 “স্ত্রীলোকের প্রথম সন্তান এবং পশুর প্রথম সন্তান অবশ্যই প্রভুকে দান করতে হবে। সেই সন্তান তোমার হবে। যদি প্রথমজাত পশুটি অশুচি হয় তাহলে সেটিকে ফেরত নিয়ে যাওয়া হবে। যদি নৈবেদ্যটি শিশু হয়, তাহলে সেই শিশুটিকে অবশ্যই ফেরত নিয়ে আসতে হবে। 16 যখন শিশুটির বয়স এক মাস, তখন তারা অবশ্যই তার দাম দেবে। খরচ হবে 2 আউন্স রূপো। তুমি অবশ্যই সরকারী মাপকাঠি অনুযায়ী রূপো ওজন করবে। সরকারী মাপকাঠি অনুসারে এক শেকেল হল 20 জিরাহ।
17 “কিন্তু তুমি প্রথমজাত গোরু মেষ অথবা ছাগলের মুক্তির জন্য কোনো মূল্য দেবে না। ঐ পশুরা পবিত্র। বেদীর ওপরে তাদের রক্ত ছিটিয়ে দাও এবং তাদের চর্বি পোড়াও। এই নৈবেদ্য আগুনের সাহায্যে তৈরী। এর সুগন্ধ প্রভুকে খুশী করে। 18 কিন্তু ঐসব পশুর মাংস তোমার। যেমন দোলনীয় নৈবেদ্যর বক্ষঃস্থল এবং অন্যান্য নৈবেদ্যর দক্ষিণ উরু তোমার। 19 লোকরা পবিত্র উপহারস্বরূপ যে সব দ্রব্যসামগ্রী প্রদান করে, আমি প্রভু হিসাবে সে সবই তোমাকে দিলাম। এটি তোমার প্রাপ্য অংশ। আমি এইগুলো তোমাকে, তোমার পুত্রদের এবং তোমার কন্যাদের দিলাম। এই বিধি চিরকাল চলবে। এটি প্রভুর সঙ্গে একটি চুক্তি, যা কোনো সময়ই ভঙ্গ করা যাবে না। আমি তোমার কাছে এবং তোমার উত্তরপুরুষদের কাছে এই প্রতিশ্রুতি করলাম।”
20 প্রভু হারোণকে এও বললেন, “তুমি জমির কোনো অংশই পাবে না। অন্যান্য লোকরা যা অধিকারভুক্ত করে থাকে এমন কোনো কিছুই তুমি অধিকারভুক্ত করতে পারবে না। আমি, প্রভু তোমারই হবো। ইস্রায়েলের লোকরা সেই দেশ পাবে যা আমি তাদের কাছে প্রতিশ্রুতি করেছিলাম। কিন্তু আমিই তোমার অংশ ও অধিকার।
21 “ইস্রায়েলের লোকরা তাদের যা কিছু আছে তার এক দশমাংশ আমাকে দেবে। সুতরাং সেই এক দশমাংশ আমি লেবির সকল উত্তরপুরুষদের দিয়ে দিচ্ছি। সমাগম তাঁবুতে তারা যে সেবাকার্য করেছে তার জন্য এটি তাদের পারিশ্রমিক। 22 কিন্তু এখন থেকে সমাগম তাঁবুর কাছে ইস্রায়েলের অন্যান্য লোকরা অবশ্যই যাবে না। যদি তারা সেটা করে, তবে তাদের অবশ্যই মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হবে। 23 লেবীয় গোষ্ঠীভুক্ত লোকরা, যারা সমাগম তাঁবুতে কাজ করে তারা এর বিরুদ্ধে যে কোনোরকম পাপ কাজের জন্যে দায়ী। এটিই বিধি। এইটিই চিরকাল চলবে। আর এই লেবীয় গোষ্ঠীভুক্ত লোকরা ইস্রায়েলের লোকদের মধ্যে কোনো দেশই পাবে না। 24 কিন্তু ইস্রায়েলের লোকরা তাদের যা কিছু আছে তার সব কিছুর এক দশমাংশ আমাকে দেবে। এবং আমি সেই এক দশমাংশ লেবীয় গোষ্ঠীভুক্ত লোকদের দেবো। সেই কারণেই লেবীয় গোষ্ঠীভুক্ত লোকদের সম্পর্কে এই কথাগুলো আমি বলেছিলাম: ঐসব লোকরা কোনো দেশ পাবে না যা আমি ইস্রায়েলের অন্যান্য লোকদের কাছে প্রতিশ্রুতি করেছি।”
25 প্রভু মোশিকে বললেন, 26 “লেবীয় গোষ্ঠীভুক্ত লোকদের বলো, ইস্রায়েলের লোকরা, তাদের অধিকারে যা আছে, তার সবকিছুর এক দশমাংশ প্রভুকে দেবে। সেই এক দশমাংশ লেবীয় গোষ্ঠীভুক্ত লোকদের হবে। কিন্তু তোমরা অবশ্যই তার এক দশমাংশ প্রভুকে তাঁর নৈবেদ্য স্বরূপ প্রদান করবে। 27 ফসল কাটার পর যেমন শস্য এবং যন্ত্রের সাহায্যে দ্রাক্ষার রস বার করা হয় সেই রকমভাবে তোমার দাম তোমার পক্ষে গণনা করা হবে। 28 এইভাবে ইস্রায়েলের অন্যান্য লোকদের মতো, তোমরাও প্রভুকে তোমাদের নৈবেদ্য প্রদান করবে। ইস্রায়েলের লোকরা প্রভুকে যা দেন সেই এক দশমাংশ তুমি পাবে। এবং তারপর তুমি যাজক হারোণকে তার এক দশমাংশ দেবে। 29 যখন ইস্রায়েলের লোকরা তাদের অধিকারভুক্ত সবকিছুর এক দশমাংশ তোমাকে দেবে, তখন তুমি অবশ্যই তার মধ্য থেকে সর্বাপেক্ষা উৎকৃষ্ট এবং পবিত্রতম অংশটি বেছে নেবে। ঐটিই সেই এক দশমাংশ যা তুমি অবশ্যই প্রভুকে প্রদান করবে।
30 “সুতরাং লেবীয় গোষ্ঠীভুক্ত লোকদের বলো, ‘ইস্রায়েলের লোকরা ফসল কাটার পরে শস্যের এবং দ্রাক্ষারসের এক দশমাংশ তোমাদের দেবে। এরপর তোমরা তার থেকে সর্বাপেক্ষা উৎকৃষ্ট অংশটি প্রভুকে দেবে। 31 বাকী অংশটি তুমি এবং তোমার পরিবারের সদস্যরা খেতে পারবে। সমাগম তাঁবুতে তুমি যে কাজ করো তার জন্য এটি তোমার পারিশ্রমিক। 32 এবং যদি তুমি সব সময়ই সব থেকে উৎকৃষ্ট অংশটি প্রভুকে দিয়ে দাও, তাহলে তুমি কোনো সময়ই দোষী হবে না। তুমি ইস্রায়েলের লোকদের দেওয়া পবিত্র উপহারসামগ্রী কখনও অপবিত্র কোরো না, তাহলে তুমি মারা যাবে না।’”
পরিচালকের প্রতি: বাদ্যযন্ত্র সহ দায়ূদের একটি মস্কীল।
55 ঈশ্বর আমার প্রার্থনা শুনুন।
করুণার জন্য আমার যে প্রার্থনা তাকে উপেক্ষা করবেন না।
2 ঈশ্বর, দয়া করে আমার প্রার্থনা শুনুন এবং উত্তর দিন।
আমাকে কোন্ জিনিস মানসিকভাবে যন্ত্রণা দেয় তা আপনার কাছে বলতে দিন।
3 আমি যে সব জিনিষে ভয় পাই আমার শত্রু সেইগুলো বলছে।
ঐ দুষ্ট লোকটি আমাকে বলছে, আমার শত্রুরা যারা ক্রোধে উন্মত্ত তারা আমায় আক্রমণ করছে।
ওরা আমার মাথার ওপর হুড়মুড় করে সংকটসমূহ এনে ফেলেছে।
4 আমার হৃদয়ের ভিতরে ঘাত-প্রতিঘাত হয়ে যাচ্ছে।
মৃত্যু ভয়ে আমি ভীত হয়ে রয়েছি।
5 আতঙ্কে আমি কাঁপছি।
আমি সন্ত্রস্ত।
6 আহা, আমার যদি ঘুঘু পাখীর মত ডানা থাকত!
তাহলে আমি উড়ে গিয়ে একটা বিশ্রামের জায়গা খুঁজে নিতাম।
7 আমি মরুভূমির অনেক দূরের কোন জায়গায় চলে যেতাম।
8 আমি ছুট দিতাম। আমি পালিয়ে যেতাম।
এই সমস্যার ঝড় থেকে আমি পালিয়ে যেতাম।
9 প্রভু আমার, ওদের মিথ্যা বলা আপনি বন্ধ করুন।
আমি এই শহরে হিংসাত্মক ব্যাপার এবং লড়াই দেখছি।
10 এই শহরের প্রতিটি জায়গায় দিনরাত্রি জুড়ে
অপরাধ ও ধ্বংসাত্মক কাজ লেগেই রয়েছে।
11 রাস্তাগুলোতে অপরাধ বেড়ে গেছে।
লোকজন সর্বত্র মিথ্যা কথা বলছে এবং ঠকাচ্ছে।
12 এটা যদি আমার শত্রুরা আমাকে অপমান করতো,
আমি সহ্য করতে পারতাম।
এটা যদি আমার শত্রুরা আমায় আক্রমণ করতো
আমি লুকোতে পারতাম।
13 কিন্তু হে আমার সখা, বন্ধু,
আপনি স্বয়ং আমায় আক্রমণ করেছেন।
14 যখন আমরা একসঙ্গে ভীড়ের মধ্যে দিয়ে ঈশ্বরের মন্দিরে হেঁটে যেতাম,
তখন নিজেদের গোপন কথা একে অপরের সঙ্গে বিনিময় করে কত নিকটভাবে কথা বলেছি।
15 যেন অত্যন্ত বিস্ময়করভাবে মৃত্যু এসে আমার শত্রুদের গ্রাস করে!
পৃথিবী ফাঁক হয়ে যাক্ এবং ওদের জীবন্ত গিলে ফেলুক! কেন?
কারণ ওরা সবাই মিলে ভয়ঙ্কর সব কু-পরিকল্পনা করে।
16 সাহায্যের জন্য আমি ঈশ্বরকে ডাকবো,
প্রভু অবশ্যই আমাকে উদ্ধার করবেন।
17 সন্ধ্যায়, সকালে, দুপুরে আমি ঈশ্বরের সঙ্গে কথা বলি।
আমি তাঁকে বলব, কোন্ বিষয় আমাকে ক্লেশগ্রস্ত করে এবং তিনি আমার কথা শোনেন।
18 আমি অনেক যুদ্ধ করেছি।
সর্বদাই ঈশ্বর আমায় উদ্ধার করেছেন এবং নিরাপদে ফিরিয়ে এনেছেন।
19 ঈশ্বর, আমার কথা শোনেন।
সেই অনন্ত রাজা অবশ্যই আমায় সাহায্য করবেন।
কিন্তু আমার শত্রুরা ঈশ্বরকে ভয় করে না বা তাঁকে শ্রদ্ধাও করে না।
তারা তাদের হৃদয় এবং জীবন বদলাবে না।
20 ওরা প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে
এবং নিজের বন্ধুদের আক্রমণ করে।
21 আমার শত্রুরা খুব মসৃণভাবে কথা বলে,
শান্তির কথা বললেও ওরা যুদ্ধের পরিকল্পনা করে।
ওদের কথা মাখনের মত মসৃণ,
কিন্তু ঐসব কথা ছুরির মতই কাটে।
22 তোমার যোদ্ধাদের প্রভুর কাছে সমর্পণ কর
তিনি তোমাদের যত্ন নেবেন।
ঈশ্বর ভালো লোকদের পরাজিত হতে দেবেন না।
23 তোমার চুক্তির অঙ্গ অনুসারে, ঐসব খুনী ও মিথ্যাবাদীদের অর্ধেক জীবন শেষ হওয়ার আগেই
হে ঈশ্বর আপনি ওদের কবরে পাঠান
এবং আমার চুক্তির একটি অংশ হিসেবে আমি আপনাতে আস্থা রাখব।
অরামকে নিয়ে সঙ্কট
7 আহস ছিলেন যোথমের পুত্র। যোথম ছিলেন ঊষিয়ের পুত্র। রৎসীন ছিলেন অরামের রাজা। আহসের রাজত্ব কালে সিরিয়ার রাজা রৎসীন এবং ইস্রায়েলের রাজা, রমলিয়ের পুত্র পেকহ জেরুশালেমের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য এসেছিলেন। কিন্তু তাঁরা এর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে পারেন নি।
2 যিহূদার রাজবাড়ি দায়ূদের পরিবারকে জানানো হল যে, “অরাম এবং ইফ্রয়িমের (ইস্রায়েলের) সেনাদল জোটবদ্ধ হয়েছে। তারা একসঙ্গে ঘাঁটি গেড়েছে।” এই খবর শুনে রাজা আহস এবং তাঁর প্রজারা খুব ভয় পেয়ে গেলো। বনের গাছপালা যেমন বাতাসে নড়ে তেমনি তারাও ভয়ে কাঁপতে লাগল।
3 তখন প্রভু যিশাইয়কে বললেন, “তুমি এবং তোমার পুত্র শার-যাশূব যাবে এবং আহসের সঙ্গে কথা বলবার জন্য ধোপাদের মাঠের রাস্তার পাশে যেখানে জল উচ্চতর জলাশয়ের মধ্যে দিয়ে বইছে, সেখানে দেখা করবে।
4 “আহসকে বল, ‘সাবধানে থেকো, কিন্তু শান্ত থেকো! রৎসীন ও রমলিয়ের পুত্রকে ভয় পেয়ো না, কারণ তারা দুটি পোড়া কাঠির মত। অতীতে তারা খুব গরম ছিল। কিন্তু এখন তারা শুধুই ধোঁয়া। রৎসীন, অরাম এবং রমলিয়ের পুত্র ক্রুদ্ধ হয়ে রয়েছে। 5 তারা তোমার বিরুদ্ধে নানা ফন্দি এঁটেছে। তারা বলছে: 6 আমরা যিহূদার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করব। আমরা নিজেদের স্বার্থে যিহূদাকে ভাগ করে টাবেলের পুত্রকে যিহূদার নতুন রাজা বানাব।’”
7 প্রভু, আমার গুরু বললেন, “কিন্তু তাদের পরিকল্পনা সফল হবে না। 8 রৎসীন যতদিন দম্মেশকের শাসক থাকবে, ততদিন তাদের অভিসন্ধি খাটবে না। এখন ইফ্রয়িম (ইস্রায়েল) একটি দেশ, কিন্তু ভবিষ্যতে আজ থেকে 65 বছর পরে সেটি আর একটি দেশ থাকবে না। 9 যতদিন শমরিয়া ইফ্রয়িমের (ইস্রায়েল) রাজধানী থাকবে এবং যতদিন রমলিয়ের পুত্র শমরিয়ার শাসক থাকবে ততদিন তাদের ফন্দি সফল হবে না। তুমি যদি একথা বিশ্বাস না কর তাহলে লোকরা তোমাকে বিশ্বাস করবে না।”
ইম্মানূয়েল—ঈশ্বর আমাদের সহায়
10 তারপর প্রভু যিহূদার রাজা আহসকে আরও বললেন, 11 “প্রভু, তোমার ঈশ্বরের কাছ থেকে একটি সংকেত চিহ্ন চেয়ে নাও যাতে তুমি নিজের কাছে প্রমাণ করতে পারো যে এগুলি সব সত্য। তুমি তোমার ইচ্ছেমতো যে কোন সংকেত চিহ্ন চাইতে পারো। চিহ্নটি মৃতের আলযের মতো গভীর থেকে অথবা আকাশের মত উঁচু থেকে আসতে পারে।”
12 কিন্তু আহস বললেন, “আমি প্রমাণ স্বরূপ কোন নিদর্শন চাই না। আমি প্রভুকে পরীক্ষাও করতে চাই না।”
13 যিশাইয় বললেন, “দায়ূদের পুত্র, আহস মন দিয়ে শোন। লোকের ধৈর্য্যের পরীক্ষা কি তোমাদের কাছে যথেষ্ট নয়? তোমরা কি আমার ঈশ্বরেরও ধৈর্য্যের পরীক্ষা নিতে চাও? 14 ঈশ্বর, আমার প্রভু, তোমাদের একটা চিহ্ন দেখাবেন:
ঐ যুবতী মহিলাটি গর্ভবতী হবে
এবং দেখ সে একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দেবে।
তার নাম রাখা হবে ইম্মানূয়েল।
15 যতদিন না পর্যন্ত ইম্মানূয়েল খারাপ কাজ প্রত্যাখান করে ভালো কাজ বেছে নিতে শিখবে
ততদিন পর্যন্ত সে দই ও মধু খাবে।
16 কিন্তু ছেলেটি ভালো কাজ করবার মত এবং মন্দ কাজ প্রত্যাখান করবার মতো বোঝবার বয়সে এসে পৌঁছবার আগেই
ইফ্রয়িম এবং অরাম দেশ জনমানব বর্জিত হয়ে যাবে।
17 “তোমাদের প্রভুকে ভয় পাওয়া উচিৎ। কারণ তিনি তোমাদের জন্য দুঃসময় আনবেন। এই দুঃসময় তোমাদের কাছে, তোমাদের লোকদের কাছে এবং তোমাদের পিতৃকুলেও আসবে। ঈশ্বর কি করবেন? তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য তিনি অশূরের রাজাকে আমন্ত্রণ জানাবেন।
18 “সে সময় প্রভু ‘মাছি’ (এখন ‘মাছিটি’ মিশরের নদীর কাছে আছে।) এবং ‘মৌমাছিকে’ (‘মৌমাছিটি’ এখন অশূর দেশে আছে।) ডাক দেবেন। তারা তোমার দেশে এসে পৌঁছবে। 19 তারা মরুভূমির জলস্রোতের পাশে, পাথুরে গভীর খাদে, ঝোপঝাড়ে এবং জলময় গর্তের কাছে চাক বাঁধবে। 20 প্রভু যিহূদাকে শাস্তি দেবার জন্য অশূরকে ব্যবহার করবেন। প্রভু অশূরকে ভাড়া করবেন এবং সেটিকে একটি খুরের মতো ব্যবহার করা হবে। মনে হবে যেন প্রভু যিহূদার পা, মাথা এমনকি দাড়ি থেকেও চুল কামিয়ে নিচ্ছেন।
21 “এই সময় একজন লোক একটি যুবতী গাভী ও দুটি মেষকে বাঁচিয়ে রাখতে পারবে। 22 এরা সেই লোকটিকে যে দুধ দেবে তা মাখন খাওয়ার পক্ষে যথেষ্ট হবে। দেশে যারা রয়ে গেছে তারা দই এবং মধু খাবে। 23 দেশের মাঠে মাঠে যে 1000 দ্রাক্ষা গাছ আছে তার প্রত্যেকটির মূল্য হবে 1000 রূপোর টুকরোর সমান। কিন্তু এই দ্রাক্ষা ক্ষেতগুলি আগাছা এবং কাঁটায় ভরে যাবে। 24 দেশ বন্য হয়ে উঠবে এবং শিকার ক্ষেত্রে পরিণত হবে। 25 যেখানে এক সময় লোকে পরিশ্রম করে খাদ্য উৎপন্ন করত, সেই পাহাড়গুলি আগাছা এবং কাঁটায় ভরে যাবে এবং সেখানে আর কেউ কখনও যাবে না। শুধুমাত্র মেষ এবং ষাঁড় সেখানে অবাধে বিচরণ করতে পারবে।”
1 আমি যাকোব, ঈশ্বর ও প্রভু যীশু খ্রীষ্টের দাস, নানা দেশে ছড়িয়ে থাকা ঈশ্বরের বারো গোষ্ঠীর লোকদের শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।
বিশ্বাস ও প্রজ্ঞা
2 আমার ভাই ও বোনেরা, তোমরা যখন নানারকম প্রলোভনের মধ্যে পড়, তখন তা মহা আনন্দের বিষয় বলে মনে কর। 3 একথা জেনো, এই সকল বিষয় তোমাদের বিশ্বাসের পরীক্ষা করে ও তোমাদের ধৈর্য্য্যগুণ বাড়িয়ে দেয়। 4 সেই ধৈর্য্য্যগুণকে তোমাদের জীবনে পুরোপুরিভাবে কাজ করতে দাও। এর ফলে তোমরা নিখুঁত ও সম্পূর্ণ হয়ে উঠবে এবং কোন বিষয়ে তোমাদের কোন অভাব থাকবে না।
5 তোমাদের কারো যদি প্রজ্ঞার অভাব হয়, তবে সে তার জন্যে ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করুক। ঈশ্বর দয়াবান; তিনি সকলকে উদারভাবে এবং আনন্দের সঙ্গে দেন। অতএব ঈশ্বর তোমাদের প্রজ্ঞা প্রদান করবেন। 6 কিন্তু ঈশ্বরের কাছে চাইতে হলে কোনরকম সন্দেহ না রেখে সম্পূর্ণ বিশ্বাসের সঙ্গেই তা চাইতে হবে, কারণ যে সন্দেহ করে, সে ঝোড়ো হাওয়ায় আলোড়িত উত্তাল সমুদ্র তরঙ্গের মতো। 7-8 এই প্রকার লোক দুই মনের মানুষ, প্রত্যেকটি কাজেই চঞ্চল ও অস্থির। এমন লোকের মনে করা উচিত নয় যে প্রভুর কাছে সে কিছু পাবে।
প্রকৃত সম্পদ
9 যে বিশ্বাসী ভাই গরীব, সে গর্ব অনুভব করুক, কারণ ঈশ্বর তাকে আত্মিকভাবে উন্নত করেছেন। 10 যে বিশ্বাসী ভাই ধনী, সে গর্ব বোধ করুক, কারণ ঈশ্বর তাকে দেখিয়েছেন যে সে আত্মিকভাবে দরিদ্র। ধনী ব্যক্তি একদিন বুনো ফুলের মতো ঝরে যাবে। 11 সূর্য ওঠার পর তার তাপ ক্রমশঃ বেড়েই যায়, তাপে তৃণ ঝলসে যায় ও ফুল ঝরে যায়। ফুল সুন্দর হলেও তার রূপের বাহার বিলীন হয়ে যায়। তেমনি ঘটে ধনী ব্যক্তির জীবনে। তার কাজের পরিকল্পনাকালেই সে হঠাৎ মৃত্যুমুখে পড়ে।
ঈশ্বরের কাছ থেকে প্রলোভন আসে না
12 পরীক্ষার সময় যে ধৈর্য্য ধরে ও স্থির থাকে সে ধন্য, কারণ বিশ্বাসের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে ঈশ্বর তাকে পুরস্কার স্বরূপ অনন্ত জীবন দেবেন। ঈশ্বরকে যারা ভালবাসে তাদের তিনি এই জীবন দেবার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। 13 কেউ যখন প্রলুদ্ধ হয় তখন যেন সে না বলে, “ঈশ্বর আমাকে প্রলুদ্ধ করেছেন।” মন্দ ঈশ্বরকে কোন জিনিস প্রলোভিত করতে পারে না এবং ঈশ্বরও নিজে কাউকে প্রলোভনে ফেলেন না। 14 প্রত্যেক মানুষ তার নিজের মন্দ অভিলাষের দ্বারা প্রলুদ্ধ হয়। তার মন্দ ইচ্ছা তাকে পাপের দিকে টেনে নিয়ে যায় এবং ফাঁদে ফেলে। 15 এই মন্দ ইচ্ছা গর্ভবতী হয়ে পাপের জন্ম দেয় এবং পাপ পূর্ণতা লাভ করে মৃত্যুর জন্ম দেয়।
16 আমার প্রিয় ভাই ও বোনেরা, এ ব্যাপারে তোমরা প্রতারিত হয়ো না। 17 সমস্ত ভাল ও নিখুঁত দান স্বর্গ থেকে আসে, কারণ পিতা ঈশ্বর, যিনি স্বর্গীয় আলো সৃষ্টি করেছিলেন তিনি সর্বদা একই আছেন, তাঁর কোনও পরিবর্তন হয় না। 18 ঈশ্বর তাঁর নিজের ইচ্ছায় সত্য বাক্যের মধ্য দিয়ে আমাদের জীবন দিয়েছেন। তিনি চান যেন তাঁর সমস্ত সৃষ্টির মধ্যে আমরা অগ্রগন্য হই।
শ্রবণ কর ও সেই মতো কাজ কর
19 আমার প্রিয় ভাই ও বোনেরা, তোমরা শ্রবণে সত্বর কিন্তু কথনে ধীর হও। চট করে রেগে যেও না। 20 ক্রোধ কখনই ঈশ্বরের প্রত্যাশা অনুযায়ী সৎ জীবন যাপনের সহায়ক হতে পারে না। 21 তাই তোমাদের জীবন থেকে সব রকমের অপবিত্রতা ও যা কিছু মন্দ, যা তোমাদের চারপাশে রয়েছে তাকে দূরে সরিয়ে দাও; আর নম্রভাবে ঈশ্বরের শিক্ষা গ্রহণ কর যা তিনি তোমাদের হৃদয়ে বপন করেছেন।
22 ঈশ্বরের বাক্য অনুসারে কাজ কর। শুনে কিছু না করে বসে থাকলে চলবে না। শুধুমাত্র ঈশ্বরের বাক্যের শ্রোতা হয়ে নিজেকে ঠকিও না। 23 যদি কেউ শুধুমাত্র ঈশ্বরের বাক্যের শ্রোতাই হয় আর সেই মতো কাজ না করে, তবে সে এমন একজন লোকের মতো যে আয়নার দিকে তাকায়, 24 নিজেকে দেখে এবং চলে যাবার সঙ্গে সঙ্গে সে নিজে কেমন দেখতে তা ভুলে যায়। 25 কিন্তু সেই ব্যক্তি প্রকৃত সুখী যে ঈশ্বরের বিধি-ব্যবস্থা, যা মানুষের কাছে মুক্তি নিয়ে আসে তা ভালভাবে অধ্যয়ন করতে থাকে ও তা পালন করে এবং যা শ্রবন করে তা ভুলে যায় না, এই বাধ্যতা তাকে সুখী করে তোলে।
উপাসনার প্রকৃষ্ট পথ
26 যদি কোন ব্যক্তি নিজেকে ধার্মিক মনে করে, অথচ নিজের মুখ না সামলায়় তবে সে নিজেকে ঠকায়, তার “ধার্মিকতা” মূল্যহীন। 27 যে ধার্মিকতা ঈশ্বর বিশুদ্ধ ও খাঁটি হিসেবে অনুমোদন করেন তা হল অনাথ ও বিধবাদের দুঃখ কষ্টে দেখাশোনা করা এবং নিজেকে পৃথিবীর মন্দ প্রভাব থেকে দূরে রাখা।
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International