Print Page Options
Previous Prev Day Next DayNext

M’Cheyne Bible Reading Plan

The classic M'Cheyne plan--read the Old Testament, New Testament, and Psalms or Gospels every day.
Duration: 365 days
Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)
Version
গণনা 14

লোকেরা পুনরায় অভিযোগ করল

14 সেই রাত্রে সমস্ত লোকরা শিবিরের মধ্যে প্রবল চিৎকার শুরু করল এবং কান্নাকাটিও করল। ইস্রায়েলের লোকরা মোশি ও হারোণের বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে লাগল। সমস্ত মানুষ এক জায়গায় একত্রিত হয়ে মোশি ও হারোণকে বলল, “আমাদের মিশরে অথবা মরুভূমিতে মরে যাওয়া উচিৎ‌ ছিল। এই নতুন দেশে এসে নিহত হওয়ার থেকে সেটাই বরং ভালো ছিল। যুদ্ধে হত হওয়ার জন্যেই কি প্রভু আমাদের এই নতুন দেশে নিয়ে এলেন? শত্রুরা আমাদের হত্যা করবে এবং আমাদের স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে যাবে। মিশরে ফিরে যাওয়াই কি আমাদের পক্ষে ভালো নয়?”

তখন লোকরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে বলল, “এখন আমরা একজন নতুন নেতাকে নির্বাচন করবো এবং মিশরে ফিরে যাবো।”

মোশি এবং হারোণ সেখানে ইস্রায়েলের সমবেত সকলের সামনে মাটিতে উবুড় হয়ে পড়ল। নূনের পুত্র যিহোশূয় এবং যিফুন্নির পুত্র কালেব, যারা সেই দেশ অনুসন্ধান করে দেখতে গিয়েছিলেন, এই ঘটনায়় বিচলিত হয়ে নিজেদের কাপড় ছিঁড়ল। সেখানে ইস্রায়েলের সমস্ত লোকের সামনে ঐ দুইজন বলল, “আমরা যে দেশটি দেখেছি সেটি খুবই ভালো। প্রভু যদি আমাদের উপর খুশী হয়ে থাকেন, তাহলে তিনিই আমাদের নেতৃত্ব দিয়ে ঐ জায়গায় নিয়ে যাবেন। এবং প্রভু আমাদের সেই সমৃদ্ধ এবং উর্বর দেশটি দিয়ে দেবেন! সুতরাং প্রভুর বিরুদ্ধে যেও না। ঐ দেশের লোকদের ভয় পেও না। আমরা তাদের সহজেই পরাস্ত করব। তারা আর সুরক্ষিত নয়, তা তাদের থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আমাদের সঙ্গে প্রভু আছেন। সুতরাং ভয় পেও না!”

10 সকলেই যখন যিহোশূয় এবং কালেবকে পাথর দিয়ে হত্যা করার কথা বলছিল, সেই সময় সমাগম তাঁবুর ওপরে তখনই প্রভুর মহিমা প্রকাশিত হল এবং সকলেই সেটা দেখতে পেল। 11 প্রভু মোশিকে তখনই বললেন, “এইসব লোকরা আর কতদিন আমার বিরুদ্ধাচরণ করবে? তাদের মধ্যে আমি যে সব নানা অলৌকিক কাজ করেছি তা দেখা সত্ত্বেও এরা কতদিন আমাকে অবিশ্বাস করবে? 12 আমি তাদের ভয়ঙ্করভাবে অসুস্থ করে দিয়ে হত্যা করবো। আমি তাদের ধ্বংস করবো এবং তোমাকে এদের চেয়ে বড় এবং বলবান জাতিতে পরিণত করবো।”

13 তখন মোশি প্রভুকে বলল, “আপনি যদি তা করেন তবে, মিশরীয়রা সে সম্পর্কে জানতে পারবে। তারা জানে যে আপনার লোকদের মিশর থেকে বার করে আনার সময় আপনি আপনার ক্ষমতা প্রয়োগ করেছিলেন। 14 এবং মিশরের লোকরা এ সম্পর্কে কনানের লোকদের কাছেও বলবে। তারা এর মধ্যেই জেনে গেছে যে আপনিই প্রভু। তারা জানে যে আপনি আপনার লোকদের সঙ্গে আছেন। কারণ তারা আপনাকে দেখতে পায় এবং আপনার মেঘ তাদের উপর অবস্থিত। তারা এও জানে যে আপনি দিনের বেলায় মেঘস্তম্ভে থেকে এবং রাত্রিবেলা অগ্নিস্তম্ভে থেকে তাদের আগে আগে যান। 15 সুতরাং আপনি যদি এদের সকলকে একসাথে হত্যা করেন, তাহলে সেই সব জাতি, যারা আপনার ক্ষমতা সম্পর্কে শুনেছে, তারা বলবে, 16 ‘প্রভু এইসব লোকদের এই দেশে আনতে সক্ষম হন নি, যার সম্বন্ধে তিনি তাদের কাছে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন। এই কারণেই প্রভু তাদের মরুভূমিতে হত্যা করেছেন।’

17 “সুতরাং এখন হে প্রভু আপনি আপনার বাক্য অনুসারে আপনার শক্তি প্রদর্শন করুন। 18 আপনি বলেছিলেন, ‘প্রভু ধীরে ক্রুদ্ধ হন এবং প্রেমে মহান। পাপী এবং বিধি ভঙ্গকারীদের তিনি ক্ষমা করেন; কিন্তু তিনি অবশ্যই দোষীদের শাস্তি দেন। প্রভু ঐসব লোকদের শাস্তি দেন এবং এছাড়াও তাদের পুত্রদের, তাদের পৌত্র-পৌত্রীদের এমনকি তাদের প্রপৌত্র প্রপৌত্রীদেরও এই সকল খারাপ কাজের জন্য শাস্তি দেন!’ 19 তাই এখন আপনি এইসব লোকদের আপনার মহৎ‌‌ ভালোবাসা দেখান। তাদের পাপকে ক্ষমা করে দিন। মিশর ত্যাগ করার পর থেকে এখন পর্যন্ত আপনি তাদের যেভাবে ক্ষমা করে এসেছেন সেই ভাবেই এখনও আপনি তাদের ক্ষমা করে দিন।”

20 প্রভু উত্তর দিয়ে বললেন, “হ্যাঁ, তুমি যে ভাবে বলেছো, সেই ভাবেই আমি তাদের ক্ষমা করে দেবো। 21 কিন্তু আমি তোমাকে সত্য কথাই বলছি, আমি যেমন নিশ্চিতভাবেই বেঁচে আছি এবং আমার মহিমায় যেমন সারা পৃথিবী নিশ্চিতভাবেই পরিপূর্ণ, তেমনি নিশ্চয়তার সঙ্গেই আমি তোমার কাছে শপথ করছি। 22 মিশর থেকে আমি যাদের নিয়ে এসেছিলাম, তাদের কেউই কনান দেশ দেখতে পাবে না। কারণ ঐসব লোকই আমার মহিমা এবং মিশরে ও মরুভূমিতে আমি যে সব অলৌকিক কাজ করেছিলাম সেগুলো দেখেছিল। কিন্তু তাও তারা আমাকে অমান্য করেছে এবং আমাকে এই নিয়ে দশবার পরীক্ষা করেছে। 23 আমি তাদের পূর্বপুরুষদের কাছে প্রতিশ্রুতি করেছিলাম। আমি শপথ করেছিলাম যে আমি তাদের ঐ জায়গা দিয়ে দেব। কিন্তু যারা আমার বিরুদ্ধাচরণ করেছে, তাদের কেউই সেই জায়গায় কোনোদিন প্রবেশ করবে না। 24 তবে আমার সেবক কালেব একটু আলাদা রকমের, সে আমাকে পুরোপুরি অনুসরণ করেছে। সুতরাং সে যে জায়গা এর মধ্যেই দেখে নিয়েছে, আমি তাকে সেই জায়গাতেই নিয়ে আসব এবং তার বংশ সেই জায়গা অধিকার করবে। 25 অমালেকীয়রা এবং কনানীয়রা উপত্যকায় বাস করছে। সুতরাং আগামীকাল তুমি অবশ্যই এই জায়গা ত্যাগ করবে। সূফ সাগরে যাওয়ার পথ ধরে তুমি মরুভূমিতে ফিরে যাও।”

প্রভু লোকদের শাস্তি দিলেন

26 প্রভু মোশি এবং হারোণকে বললেন, 27 “এইসব দুষ্ট লোকরা আর কতদিন ধরে আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করবে? আমি তাদের অভিযোগ ও অসন্তোষ শুনেছি। 28 সুতরাং তাদের বলে দাও, ‘তোমরা যে সব ব্যাপারে অভিযোগ করেছিলে, প্রভু নিশ্চিতভাবেই তোমাদের সেই সব অভিযোগগুলোর ব্যাপারে ব্যবস্থা নেবেন। তোমাদের যা হবে তা হল এই: 29 মরুভূমিতেই তোমরা মারা যাবে। 20 বছর অথবা তার বেশী বয়স্ক প্রত্যেক ব্যক্তি, যারা প্রত্যেকে আমার লোকদের একজন বলে গণ্য ছিল, তারা মারা যাবে। কারণ তোমরা আমার বিরুদ্ধে অর্থাৎ‌ প্রভুর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিলে। 30 সুতরাং যে দেশ আমি তোমাদের দেবো বলে প্রতিজ্ঞা করেছিলাম সেখানে তোমাদের কেউই কোনোদিন প্রবেশ করতে এবং বাস করতে পারবে না। কেবলমাত্র যিফুন্নির পুত্র কালেব এবং নূনের পুত্র যিহোশূয় সে দেশে প্রবেশ করতে পারবে। 31 তোমরা ভয় পেয়েছিলে এবং অভিযোগ করেছিলে যে নতুন দেশে তোমাদের শত্রুরা তোমাদের কাছ থেকে তোমাদের সন্তানদের ছিনিয়ে নিয়ে যাবে; কিন্তু আমি বলছি, আমি ঐ সন্তানদের সেই দেশে নিয়ে আসবো। তোমরা যা গ্রহণ করতে অস্বীকার করেছো, তারা সেই জিনিসগুলোই উপভোগ করবে। 32 কিন্তু তোমরা এই মরুভূমিতেই মারা যাবে।

33 “‘তোমাদের সন্তানরা 40 বছর ধরে মরুভূমিতে মেষপালক হয়ে থাকবে। তোমাদের অবিশ্বস্ততার জন্য তারা শাস্তি ভোগ করবে। তারা অবশ্যই এই কষ্ট ভোগ করবে যতক্ষণ পর্যন্ত না তোমরা সবাই মরুভূমিতে মারা যাচ্ছো। 34 তোমরা 40 বছর ধরে তোমাদের পাপের জন্য শাস্তি ভোগ করবে। (অর্থাৎ‌ 40 দিন ধরে লোকরা যে জায়গাটি অনুসন্ধান করেছিলো তার প্রতিদিনের জন্য এক বছর করে।) তখন তোমরা বুঝতে পারবে আমি তোমাদের বিরুদ্ধে গেলে কি হতে পারে।’

35 “আমি প্রভু এবং আমিই শপথ করছি, এই মন্দ লোকরা যারা একত্রে আমার বিরুদ্ধাচরণ করেছে তাদের বিরুদ্ধে আমি এই কাজগুলো করবো। তারা সকলেই এই মরুভূমিতে মারা যাবে।”

36 মোশি যাদের নতুন দেশ অনুসন্ধান করতে পাঠিয়েছিল তারাই ফিরে এসে ইস্রায়েলের সমস্ত লোকদের মধ্যে অভিযোগ ছড়িয়ে দিয়েছিল। তারা বলেছিল যে লোকরা ঐ দেশে প্রবেশ করার পক্ষে যথেষ্ট শক্তিশালী নয়, 37 সেই দেশের অখ্যাতিকারী এই লোকরাই মহামারীতে মারা পড়ল—প্রভুর ইচ্ছা অনুসারেই তা হল। 38 কিন্তু যারা দেশ অনুসন্ধান করতে গিয়েছিল তাদের মধ্যে কেবল নূনের পুত্র যিহোশূয় এবং যিফুন্নির পুত্র কালেব জীবিত থাকল।

লোকরা কনানে প্রবেশ করার জন্য চেষ্টা করল

39 মোশি ইস্রায়েলের লোকদের এইসব কথা বললে ইস্রায়েলের সাধারণ লোকরা শোকে ভেঙে পড়ল। 40 পরদিন খুব সকালে উঠে লোকরা পর্বতের চূড়ার দিকে এগোল। তারা বলল, “এই আমরা, প্রভু যে দেশের কথা বলেছেন চলো আমরা সেখানে যাই কারণ আমরা পাপ করেছি।”

41 কিন্তু মোশি বলল, “তোমরা প্রভুর আদেশ পালন করছ না কেন? তোমরা সফল হবে না। 42 তোমরা ঐ দেশে যেও না। প্রভু তোমাদের সঙ্গে নেই, এই কারণে শত্রুরা সহজেই তোমাদের পরাস্ত করতে পারবে। 43 সেখানে তোমাদের বিরুদ্ধে অমালেকীয়রা এবং কনানীয়রা যুদ্ধ করবে। তোমরা প্রভুর পথ থেকে সরে এসেছো। সুতরাং তোমরা যখন তাদের সঙ্গে যুদ্ধ করবে তখন তিনি তোমাদের সঙ্গে থাকবেন না এবং তোমরা সকলেই যুদ্ধে মারা যাবে।”

44 কিন্তু লোকরা মোশিকে বিশ্বাস করে নি। তারা পর্বতের চূড়ার দিকে এগিয়ে গেল। কিন্তু প্রভুর সাক্ষ্যসিন্দুক এবং মোশি তাদের সঙ্গে যায় নি। 45 এরপর উঁচু পর্বতের ওপরে বসবাসকারী অমালেকীয়রা এবং কনানীয়েরা নীচে নেমে এসে তাদের উপর আঘাত হানল এবং খুব সহজেই তাদের পরাস্ত করে হর্মা পর্যন্ত সমস্ত রাস্তা তাড়া করল।

গীতসংহিতা 50

আসফের সঙ্গীতগুলির অন্যতম।

50 প্রভু, যিনি ঈশ্বরদেরও ঈশ্বর স্বয়ং তিনি কথা বলছেন।
    তিনি সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত, অর্থাৎ‌ এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত পর্যন্ত সমগ্র পৃথিবীর মানুষকে চিৎকার করে ডাক দিচ্ছেন।
সিয়োন থেকে দীপ্তিমান ঈশ্বর অসীম সুন্দর!
আমাদের ঈশ্বর আসছেন এবং তিনি নীরব থাকবেন না।
    তাঁর সামনে সর্বগ্রাসী আগুন জ্বলছে।
    তাঁর চারদিকে প্রচণ্ড ঝড় বইছে।
যখন তিনি তাঁর লোকদের বিচার করেন
    তখন তিনি আকাশ ও পৃথিবীকে সাক্ষী থাকতে ডাকেন।
ঈশ্বর বলেন, “হে আমার অনুগামীরা আমার চারিদিকে এস।
    হে আমার ভক্তসকল, আমরা একে অন্যের সঙ্গে চুক্তি করেছি।”

ঈশ্বর হলেন বিচারক,
    আকাশ তাঁর যথাযথ ধার্ম্মিকতার কথা ঘোষণা করে।

ঈশ্বর বলেন, “আমার লোকরা, আমার কথা শোন!
    হে ইস্রায়েলের লোকরা, আমি তোমাদের বিরুদ্ধে সাক্ষী দেব। আমিই ঈশ্বর, তোমাদের ঈশ্বর।
আমি তোমাদের বলি সম্পর্কে অভিযোগ করছি না।
    তোমরা ইস্রায়েলের লোকেরা সর্বদাই আমার কাছে হোমবলি দিয়েছ এবং প্রতিদিনই তোমরা তা আমায় দিয়েছ।
তোমাদের ঘর থেকে আমি ষাঁড় নেব না।
    তোমাদের খোঁয়াড় থেকে আমি ছাগলও নেব না।
10 ঐ পশুগুলো আমি চাই না, ইতিমধ্যেই জঙ্গলের সমস্ত পশুসমুহের আমি অধিকারী।
    হাজার হাজার পর্বতের ওপরের সমস্ত পশুগুলি ইতিমধ্যে আমার অধিকারে।
11 উচ্চতম পর্বতের প্রত্যেকটি পাখিকে আমি চিনি।
    পাহাড়ের প্রত্যেকটি চলমান বস্তুই আমার।
12 আমি ক্ষুধার্ত নই! যদি আমি ক্ষুধার্তও হতাম আমি তোমাদের কাছে আহার চাইতাম না।
    সারা পৃথিবী এবং তার মধ্যে যা যা আছে, আমিই পৃথিবীর এবং পৃথিবীর সমস্ত জিনিষের মালিক।
13 আমি ষাঁড়ের মাংস খাই না অথবা ছাগলের দেহ থেকে রক্ত পান করি না।”

14 অতএব, অন্যান্য ভক্তদের সঙ্গে ভাগ করে নেওয়ার জন্য তোমাদের ঈশ্বরের কাছে দেয় ধন্যবাদ নৈবেদ্য নিয়ে এস
    এবং ঈশ্বরের সান্নিধ্যে থাকার জন্য এসো এবং তোমাদের পরাৎ‌‌পরের কাছে যা প্রতিশ্রুতি করেছিলে তোমরা তাঁকে তাই দাও।
15 ঈশ্বর বলেন, “যখন তুমি সংকটে পড়বে তখন আমায় ডেকো!
    আমি তোমাকে সাহায্য করবো!
    তারপর তুমি আমাকে সম্মান করতে পারবে।”

16 কিন্তু দুষ্ট লোকেদের ঈশ্বর বলেন,
    “তোমরা আমার বিধির সম্বন্ধে কথা বল।
    তোমরা আমার চুক্তির সম্বন্ধে কথা বল।
17 আমি যখন তোমাদের ভুল সংশোধন করে দিই, তখন কেন তোমরা তা ঘৃণা কর?
    আমি যা বলি কেন তোমরা তা উপেক্ষা কর?
18 তোমরা একটা চোরকে দেখ এবং তার সঙ্গে যোগ দিতে ছুটে যাও।
    যারা ব্যভিচার করে তোমরা তাদের সঙ্গে বিছানায় ঝাঁপিয়ে পড়।
19 তোমরা মিথ্যা কথা বল এবং
    অশুভ ব্যাপারে কথা বল।
20 অন্য লোকদের সম্পর্কে তোমরা সব সময় খারাপ কথা বল।
    এমনকি তোমরা নিজের ভাইদের সম্পর্কেও খারাপ কথা বল।
21 তোমরা ঐসব বাজে কাজ করেছো এবং আমি কিছু বলি নি।
    তাই তোমরা ভেবেছো আমিও ঠিক তোমাদের মত।
তবে হ্যাঁ, আর বেশীদিন আমি চুপ করে থাকবো না!
    এটা আমি তোমার পরিষ্কার বুঝিয়ে দেবো এবং আমি সামনাসামনি তোমার সমালোচনা করবো!
22 তোমরা ঈশ্বরকে ভুলে গেছ।
    তাই আমি তোমাদের ছিন্নভিন্ন করার আগে যদি তোমরা উপলদ্ধি কর তো ভাল!
আর যদি না বোঝ
    কেউ তোমাদের বাঁচাতে পারবে না!
23 তাই যদি কোন লোক আমায় ধন্যবাদ বলি দেয় তবে সে আমার সম্মান করে।
    যদি সে সৎ‌ উপায়ে বাঁচে তাকে বাঁচানোর জন্য আমি আমার সমস্ত ক্ষমতা প্রদর্শন করবো।”

যিশাইয় 3-4

আমি যা বলছি তা অনুধাবন কর। যিহূদা এবং জেরুশালেম যে সমস্ত জিনিসের ওপর নির্ভরশীল, গুরু, প্রভু সর্বশক্তিমান সে সব জিনিসগুলির অবলুপ্তি ঘটাবেন। ঈশ্বর সমস্ত জল ও খাবার সরিয়ে নেবেন। ঈশ্বর সকল বীর ও মহান যোদ্ধা, সকল বিচারক, ভাববাদী, যাদুকরগণ, প্রবীণগণ, সামরিক নেতাসমূহ, সরকারি প্রধানগণ, দক্ষ উপদেষ্টাগণ, দক্ষ কারিগর এবং যারা তাবিজ ব্যবহার করতে জানে তাদের সবাইকে সরিয়ে দেবেন।

ঈশ্বর বলেন, “আমি বালকগণকে তোমাদের নেতা করব। প্রত্যেক লোক একে অপরের বিরুদ্ধাচরণ করবে। ছোটরা বড়দের শ্রদ্ধা করবে না। গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা সাধারণ লোকদের কাছ থেকে সম্মান পাবে না।”

সেই সময় কেউ একজন তারই পরিবারভুক্ত ভাইয়ের হাত ধরে বলবে, “তোমার কোটবস্ত্র আছে, তাই তুমি আমাদের নেতা হবে। এইসব বিনাশ তোমার আয়ত্ত্বে থাকবে।”

কিন্তু সে চিৎকার করে বলবে, “আমি তোমাদের নেতা হব না। কারণ আমার বাড়িতে যথেষ্ট অন্ন-বস্ত্র নেই। তুমি আমাকে দিয়ে লোকদের নেতৃত্ব দেওয়াবে না।”

এই সবই ঘটবে কারণ জেরুশালেম হোঁচট খেয়েছে এবং যিহূদার পতন হয়েছে। তাদের কাজকর্ম ও কথাবার্তা সবই প্রভুর বিরুদ্ধে যদিও তিনি সবই দেখেন।

লোকদের মুখই বলে দিচ্ছে যে তারা পাপ কাজের দোষে দুষ্ট। এবং তারা তাদের পাপের জন্য গর্বিত। তারা সদোমের লোকদের মতোই। কে তাদের পাপ দেখছে সেই ব্যাপারে তাদের কোন ভ্রূক্ষেপ নেই। এটা তাদের পক্ষে খুবই ক্ষতিকারক হবে। তারা নিজেদের ভয়ানক বিপদ নিজেরাই ডেকে আনছে।

10 ভালো লোকদের বলে দাও যে তাদের জন্য ভালো কিছু ঘটবে। ভালো কাজের পুরস্কার তারা পাবে। 11 কিন্তু শয়তান লোকদের জন্য কঠিন সময় আসছে। তাদের ভীষণ কষ্ট ও অসুবিধার সম্মুখীন হতে হবে। সমস্ত কুকর্মের শাস্তি তাদের পেতেই হবে। 12 বালকরা আমার লোকদের হারিয়ে দেবে। মেয়েরা তাদের শাসন করবে। তাদের ওপর কর্তৃত্ব করবে।

আমার লোকরা, তোমাদের পথ প্রদর্শকরাই তোমাদের ভুল পথে চালিত করছে। তারা তোমাদের সঠিক পথ থেকে বিচ্যুত করছে।

ঈশ্বরের তাঁর লোকদের সম্পর্কে সিদ্ধান্ত

13 প্রভু লোকদের বিচার করবার জন্য উত্থান করবেন। 14 নেতা এবং প্রাচীনদের কৃতকর্মের বিরুদ্ধে তিনি তাঁর মতামত দেবেন।

প্রভু বলেন, “হে আমার লোকরা, তোমরা দ্রাক্ষাক্ষেত (যিহূদা) পুড়িয়ে ছারখার করে দিয়েছ। তোমরা গরীব মানুষদের কাছ থেকে জিনিসপত্র কেড়ে নিয়েছ। এবং সেই সব জিনিসপত্র এখনও তোমাদের বাড়িতেই আছে। 15 আমার লোকদের আঘাত করার অধিকার কে তোমাদের দিয়েছে? গরীব, হতদরিদ্র মানুষদের নোংরা-আবর্জনার মধ্যে ঠেলে দেওয়ার অধিকার কে তোমাদের দিয়েছে?” আমার গুরু, প্রভু সর্বশক্তিমান এই কথাগুলি বললেন।

16 প্রভু আরও বললেন, “সিয়োনের মেয়েরা খুবই অহঙ্কারী হয়ে উঠেছে। তারা মাথা হেলিয়ে দুলিয়ে যত্রতত্র এমনভাবে ঘুরে বেড়ায় যেন তারা অন্য লোকদের চেয়ে যথেষ্ট ভাল। এইসব মেয়েরা হাসি-মস্করা, ছেনালিগিরি করে ঘুরে বেড়ায়। এবং তারা পায়ে নূপুরের রুনুঝুনু শব্দ করে, নেচে নেচে দিকবিদিক ঘুরে বেড়ায়।”

17 আমার গুরু সিয়োনের এই ধরণের মেয়েদের মাথায় দগদগে ক্ষতের সৃষ্টি করবেন। ফলে তাদের মাথায় টাক পড়বে। 18 সেই সময় তিনি তাদের গর্বের সমস্ত সম্পদ নিয়ে নেবেন। তাদের পায়ের নূপুর, তাদের সূর্য ও চাঁদের আকারের গলার হার, 19 ঝুমকো পাশা, চুড়ি, ঘোমটা, ললাটভূষণ, পায়ের মল, 20 ঘাঘরা, শাল, মসীনা বস্ত্র, 21 বিশেষ আংটি, নথ, 22 চিত্রবস্ত্র, গেঁজে, 23 আয়না, মসীনা বস্ত্র, উষ্ণীষ, লম্বা শালের মতো আবরক বস্ত্ররূপ বেশভূষা খুলে নেবেন।

24 এবং সুগন্ধির পরিবর্তে তাদের কাছে থাকবে দুর্গন্ধ তেল, কোমরবন্ধনীর বদলে থাকবে একটি ছেঁড়া পোশাক, সুবিন্যস্ত কেশ পরিচর্য্যার বদলে থাকবে মাথাজোড়া টাক, কেতাদুরস্ত কোমরবন্ধনীর পরিবর্তে থাকবে চটের তৈরী কোরমবন্ধনী কারণ সুন্দরী হওয়ার পরিবর্তে তারা হবে কুৎ‌সিত দর্শন।

25 সেই সময় তোমাদের পুরুষদের তরবারি দিয়ে হত্যা করা হবে। তোমাদের বীর যোদ্ধারা যুদ্ধে মারা যাবে। 26 এবং তার নগর দ্বারগুলি কষ্ট পাবে এবং বিলাপ করবে এবং সে বিপর্যস্ত হয়ে মাটিতে বসে থাকবে।

সেই সময় সাত জন মহিলা একজন পুরুষের হাত চেপে ধরে বলবে, “আমরা আমাদের রুটি-রুজি, বস্ত্র, বাসস্থান নিজেদের জন্য প্রয়োজনীয় সব কিছুর ব্যবস্থা নিজেরাই করব। তুমি শুধু আমাদের বিয়ে কর। তোমার নামে আমাদের সামাজিক প্রতিষ্ঠা দাও। আমাদের অবিবাহিত থাকার যন্ত্রণা, লজ্জা, অপমান দূর কর।”

সেই সময়, প্রভুর গাছ (যিহূদা) বড় হবে এবং সুন্দর হয়ে উঠবে। এমনকি তখনও ইস্রায়েলের উদ্বাস্তুরা তাদের দেশে উৎপন্ন শস্য নিয়ে গর্ব অনুভব করবে। এই সময় সিয়োন এবং জেরুশালেমে তখনও বসবাস করা লোকদের পবিত্র মানুষ বলে গণ্য করা হবে। যাদের নাম বিশেষ তালিকায় থাকবে তারাই ভাগ্যবান, পবিত্র মানুষ বলে বিবেচিত হবে। এবং এই তালিকাভুক্ত লোকদেরই বাস করে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হবে।

প্রভু সিয়োনের মহিলাদের থেকে নোংরা ধুয়ে মুছে ফেলবেন। তিনি জেরুশালেম থেকে রক্ত ধুয়ে ফেলবেন। প্রভু ন্যায়ের নীতিটি ব্যবহার করবেন এবং ন্যায় বিচার করবেন। তিনি প্রজ্জ্বলিত করবার নীতিটি ব্যবহার করে প্রতিটি জিনিষকে শুদ্ধ করে তুলবেন। তারপর প্রভু সিয়োন পর্বতের ভিত্তির ওপর আকাশে এবং তার সমাবেশ স্থানগুলিতে দিনে একটি ধোঁয়ার মেঘ ও রাত্রেও একটি জ্বলন্ত অগ্নিশিখা সৃষ্টি করবেন। সেখানে প্রতিটি সমাবেশের ওপর রক্ষার জন্য একটি আচ্ছাদন থাকবে। সমস্ত মানুষের জন্য এমন এক নিরাপদ স্থানের ব্যবস্থা করা হবে যেখানে সূর্যের প্রখর তাপ তাদের স্পর্শ করতে পারবে না। সব ধরণের ঝড় ঝঞ্ঝা এবং প্লাবন থেকে তারা রক্ষা পাবে।

ইব্রীয় 11

বিশ্বাস

11 বিশ্বাসের অর্থ হল আমরা যা প্রত্যাশা করি তা যে আমরা পাবই সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়ার ও বাস্তবে যা কিছু আমরা চোখে দেখতে পাই না তার অস্তিত্ব সম্বন্ধে প্রমাণ পাওয়া। অতীতে ঈশ্বরের লোকেরা তাঁদের বিশ্বাসের দরুণই সুখ্যাতি লাভ করেছিলেন।

বিশ্বাসে আমরা বুঝতে পারি যে বিশ্ব ভুমণ্ডল ঈশ্বরের মুখের কথাতেই সৃষ্ট হয়েছিল, তাই চোখে যা দেখা যায় সেই দৃশ্য কোন কিছু প্রত্যক্ষ বস্তু থেকে উৎপন্ন হয় নি।

কয়িন ও হেবল উভয়েই ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে বলিদান উৎসর্গ করেছিলেন; কিন্তু হেবল উত্তম বলে ঈশ্বরের কাছে গ্রাহ্য হয়েছিলেন কারণ হেবলের বলিদান বিশ্বাসযুক্ত ছিল। ঈশ্বর বলেছিলেন যে হেবল যা উপহার দিয়েছিল তাতে তিনি প্রীত হয়েছিলেন। ঈশ্বর হেবলকে একজন ধার্মিক লোক বললেন, কারণ তাঁর বিশ্বাস ছিল। যদিও হেবল মৃত কিন্তু তাঁর বিশ্বাসের মধ্য দিয়ে তিনি এখনও কথা বলছেন।

হনোককে পৃথিবী থেকে তুলে নেওয়া হয়েছিল, তিনি মরেন নি। এই পৃথিবী থেকে হনোককে তুলে নেবার পূর্বে হনোক এই সাক্ষী রেখে যান যে তিনি ঈশ্বরকে সন্তুষ্ট করেছিলেন। পরে লোকরা হনোকের খোঁজ আর পেলেন না, কারণ ঈশ্বর তাঁকে কাছে রাখার জন্য নিজেই হনোককে তুলে নিয়েছিলেন। হনোকের জীবনে বিশ্বাস ছিল বলেই এমনটি সম্ভব হয়েছিল। বিনা বিশ্বাসে ঈশ্বরকে সন্তুষ্ট করা যায় না। যে কেউ ঈশ্বরের কাছে আসে তাকে অবশ্যই বিশ্বাস করতে হবে যে ঈশ্বর আছেন; আর যাঁরা তাঁর অন্বেষণ করে, তাদের তিনি পুরস্কার দিয়ে থাকেন।

বিশ্বাসেই নোহ, যা যা কখনও দেখা যায় নি এমন সব বিষয়ে তাকে সতর্ক করে দেওয়া হলে তিনি তা গুরুত্ব সহকারে নিলেন এবং নোহ তাঁর পরিবারের রক্ষার জন্য এক জাহাজ নির্মাণ করলেন। এর দ্বারা তিনি (অবিশ্বাসী) জগতকে দোষী প্রতিপন্ন করলেন, আর বিশ্বাসের মাধ্যমে যে ধার্মিকতা লাভ হয় তার অধিকারী হলেন।

ঈশ্বরে বিশ্বাস ছিল বলেই ঈশ্বর যখন অব্রাহামকে আহ্বান করলেন, তিনি তাঁর বাধ্য হলেন, আর তাঁকে যে দেশ দেবেন বলে ঈশ্বর বলেছিলেন তা অধিকার করতে চললেন। তিনি কোথায় চলেছেন তা না জানলেও তিনি রওনা হলেন। তাঁর বিশ্বাসের বলেই তিনি ঈশ্বরের প্রতিশ্রুত সেই দেশে আগন্তুকের মতো জীবনযাপন করলেন। তাঁর বিশ্বাস ছিল বলেই তিনি তা করতে পেরেছিলেন। সেই প্রতিশ্রুত দেশে ইস‌্হাক ও যাকোবের সাথে তিনি তাঁবুতে বাস করেছিলেন, যাঁরা তাঁর মতোই (একই প্রতিশ্রুতির) উত্তরাধিকারী ছিলেন। 10 কারণ অব্রাহাম সেই দৃঢ় ভিত্তিযুক্ত নগরের প্রতীক্ষায় ছিলেন স্বয়ং ঈশ্বর যার স্থপতি ও নির্মাতা।

11 অব্রাহাম বয়োবৃদ্ধ হয়েছিলেন তাই তাঁর সন্তান হওয়ার সম্ভব ছিল না। তাঁর স্ত্রী সারা বন্ধ্যা ছিলেন। কিন্তু ঈশ্বরের ওপর অব্রাহামের বিশ্বাস ছিল, তাই ঈশ্বর শক্তি দিলেন যেন তাঁদের সন্তানলাভ হয়। ঈশ্বর যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তা যে তিনি পূর্ণ করতে পারেন এ বিশ্বাস অব্রাহামের ছিল। তিনি প্রায় মৃতকল্প ছিলেন; কিন্তু এই একটি লোকের মধ্য দিয়ে জন্ম নিয়েছিল আকাশের তারার মতো অজস্র বংশধর। 12 সেই এক ব্যক্তি থেকে সমুদ্র সৈকতে বালুকণার মতো অগনিত বংশধররা এলো।

13 এইসব মহান ব্যক্তিরা বিশ্বাস নিয়েই মারা গেলেন। ঈশ্বর যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তাঁরা কেউই বাস্তবে তা পান নি, কিন্তু দূর থেকে তা দেখেছিলেন ও তাকে স্বাগত জানিয়েছিলেন। তাঁরা খোলাখুলি স্বীকার করেছিলেন যে এই পৃথিবীতে তাঁরা প্রবাসী ও বিদেশী। 14 কারণ যে সব লোক এরকম কথা বলেন, তাঁরা যে নিজের দেশে ফেরার আশায় আছেন তা স্পষ্ট করেই ব্যক্ত করেন। 15 যে দেশ থেকে তাঁরা বাইরে বেরিয়ে এসেছিলেন, সেই দেশের কথা যদি মনে রাখতেন, তবে ইচ্ছা করলে সেখানে ফিরে যেতে পারতেন। 16 কিন্তু এখন তাঁরা তার থেকে আরো ভাল দেশে, সেই স্বর্গীয় দেশে, যাবার আকাঙ্খা করছিলেন। এইজন্য ঈশ্বর নিজেকে তাঁদের ঈশ্বর বলে পরিচয় দিতে লজ্জা পান না, কারণ তিনি তাঁদের জন্য এক নগর প্রস্তুত করেছেন।

17-18 ঈশ্বর যখন অব্রাহামের বিশ্বাসের পরীক্ষা করছিলেন, অব্রাহাম তার কিছু পূর্বেই ঈশ্বরের প্রতিশ্রুতি পান তবু তিনি তাঁর পুত্র ইস‌্হাককে ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করতে নিয়ে গিয়েছিলেন। অব্রাহাম ঈশ্বরের নির্দেশ পালন করেছিলেন কারণ তাঁর বিশ্বাস ছিল। ঈশ্বর অব্রাহামকে পূর্বেই বলে রেখেছিলেন, “ইস‌্হাকের মাধ্যমেই তোমার বংশধররা দেখা দেবে।”(A) 19 অব্রাহাম বিশ্বাস করলেন যে ঈশ্বর মৃত্যুর মধ্য হতেও মানুষকে উত্থিত করতে সমর্থ। বাস্তবে তাই হল, ঈশ্বর অব্রাহামকে তাঁর পুত্রকে বলি দেওয়া থেকে বিরত করলেন। ফলে অব্রাহাম ইস‌্হাককে যেন মৃত্যুর মধ্য থেকেই ফিরে পেলেন।

20 সেই বিশ্বাসের বলেই ইস‌্হাক ভবিষ্যতের বিষয় চিন্তা করে এষৌ ও যাকোবকে আশীর্বাদ করলেন কারণ তাঁর বিশ্বাস ছিল। 21 যাকোব বৃদ্ধ বয়সে মারা যাবার সময় বিশ্বাসের শক্তিতে যোষেফের ছেলেদের প্রত্যেককে আশীর্বাদ করেছিলেন। তিনি লাঠির উপর ভর দিয়ে উঠে ঈশ্বরের উপাসনা করেছিলেন। যাকোবের বিশ্বাস ছিল বলেই তিনি এইসব করেছিলেন।

22 বিশ্বাসের বলেই যোষেফ মৃত্যুশয্যায় বলেছিলেন যে ইস্রায়েলীয়রা মিশর দেশ ছেড়ে একদিন চলে যাবে। তাই তিনি তাঁর দেহাবশেষ নিয়ে কি করতে হবে তার নির্দেশ দিতে পেরেছিলেন। যোষেফের বিশ্বাস ছিল বলেই তিনি ঐ কথা বলে গিয়েছিলেন।

23 মোশির জন্মের পর তাঁর মা-বাবা তিন মাস পর্যন্ত তাঁকে লুকিয়ে রেখেছিলেন। তাঁদের বিশ্বাস ছিল বলেই তাঁরা তা করেছিলেন। তাঁরা দেখলেন মোশি খুব সুন্দর এক শিশু, আর তাঁরা রাজার আদেশ অমান্য করতে ভয় পেলেন না।

24 মোশি বড় হয়ে উঠলেন ও পূর্ণ বয়স্ক মানুষে পরিণত হলেন। মোশি ফরৌণের মেয়ের পুত্র বলে পরিচিত হতে চাইলেন না। মোশি পাপের সুখভোগ করতে চাইলেন না, কারণ সে সব সুখভোগ ছিল ক্ষণিকের। 25 কিন্তু মোশি ঈশ্বরের লোকদের সঙ্গে দুঃখভোগ করাকেই বেছে নিলেন। মোশি তা করতে পেরেছিলেন কারণ তাঁর বিশ্বাস ছিল। 26 মিশরের সমস্ত ঐশ্বর্য অপেক্ষা খ্রীষ্টের জন্য বিদ্রূপ সহ্য করাকেই শ্রেয় মনে করলেন। ঈশ্বরের কাছ থেকে পুরস্কার লাভের আশায় মোশি তা করতে পেরেছিলেন।

27 মোশির বিশ্বাস ছিল তাই তিনি মিশর ত্যাগ করলেন। তিনি রাজার ক্রোধকে ভয় করলেন না। মোশি সুস্থির থাকলেন কারণ তিনি সেই ঈশ্বরের দিকে দৃষ্টি রাখলেন যাঁকে কেউ দেখতে পায় না। 28 মোশি নিস্তারপর্ব পালন করে গৃহের দরজায় রক্ত লেপে দিলেন। দরজায় এইভাবে রক্ত লেপন করা হল যেন সংহারকর্তা ইস্রায়েলীয়দের প্রথম পুত্র সন্তানদের স্পর্শ করতে না পারে। মোশির বিশ্বাস ছিল তাই তিনি এসব করতে পেরেছিলেন।

29 যে লোকদের মোশি নিয়ে চলেছিলেন তারা শুকনো জমির ওপর দিয়ে যাওয়ার মতো লোহিত সাগর হেঁটে পার হয়ে গেল। তাদের বিশ্বাস ছিল বলেই তারা তা করতে পেরেছিল। মিশরীয়রাও লোহিত সাগরের মধ্যে দিয়ে হেঁটে যেতে চেষ্টা করেছিল, কিন্তু তারা সবাই মারা পড়ল।

30 ঈশ্বরের লোকদের বিশ্বাসের জন্যই যিরীহোর প্রাচীর ভেঙে পড়ল। লোকরা প্রাচীরের চারপাশে সাতদিন ধরে ঘুরলো আর তার পরেই সেই প্রাচীর ভেঙ্গে পড়ল।

31 বিশ্বাসে বেশ্যা রাহব, ইস্রায়েলীয় গুপ্তচরদের সাদরে গ্রহণ করে তাদের সঙ্গে বন্ধুর মতো ব্যবহার করায় নগর ধ্বংস হবার সময় ঈশ্বরের অবাধ্য লোকদের সঙ্গে সে বিনষ্ট হল না।

32 তোমাদের কাছে কি আমি আরো দৃষ্টান্ত তুলে ধরব? আমার যথেষ্ট সময় নেই যে আমি তোমাদের কাছে গিদিয়োন, বারক, শিম্‌শোন, যিপ্তহ, দায়ূদ, শমূয়েল ও ভাববাদীদের সব কথা বলি। ওঁদের প্রচণ্ড বিশ্বাস ছিল। 33 তাঁরা বিশ্বাসের দ্বারা রাজ্যসকল জয় করেছিলেন। তাঁরা যা ন্যায় তাই করলেন এবং ঈশ্বরের প্রতিশ্রুতিগুলি পেলেন। তাঁরা সিংহদের মুখ বন্ধ করেছিলেন। 34 কেউ কেউ আগুনের তেজ নিস্প্রভ করলেন, তরবারির আঘাতে মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা পেলেন। এঁদের বিশ্বাস ছিল তাই এঁরা এসব করতে পেরেছিলেন। বিশ্বাসের বলেই দুর্বল লোকেরা বলশালী লোকে রূপান্তরিত হয়েছিলেন; তাঁরা যুদ্ধের সময় মহাবিক্রমী হয়ে শত্রু সৈন্যদের পরাস্ত করেছিলেন। 35 কোন কোন লোক মৃতদের মধ্য থেকে পুনর্জীবিত হলেন আর পরিবারের নারীরা তাঁদের স্বামীদের ফিরে পেলেন। আবার অনেকে ভয়ঙ্কর পীড়ন সহ্য করলেন তবু তার থেকে নিষ্কৃতি চাইলেন না। তাঁরা বিশ্বাসে এসব সহ্য করলেন যেন মহত্তর পুনরুত্থানের ভাগী হন। 36 কেউ কেউ বিদ্রূপ ও চাবুকের মার সহ্য করলেন, আবার অনেকে বেড়ি বাঁধা অবস্থায় কারাবাস করলেন। 37 কেউ বা মরলেন পাথরের আঘাতে, কাউকে বা করাত দিয়ে দুখণ্ড করা হল, কাউকে তরবারির আঘাতে মেরে ফেলা হল। কেউ কেউ নিঃস্ব অবস্থায় মেষ ও ছাগের চামড়া পরে ঘুরে বেড়াতেন, নির্যাতিত হতেন এবং খারাপ ব্যবহার পেতেন। 38 জগতটা এই ধরণের লোকের যোগ্য ছিল না। এঁরা গুহায় ও মাটির গর্তে আশ্রয় নিয়ে মরুভূমি ও পর্বতে ঘুরে বেড়াতেন।

39 বিশ্বাসের জন্য এঁদের সুখ্যাতি করা হল, কিন্তু তাঁরা কেউ ঈশ্বরের সেই মহান প্রতিশ্রুতি পান নি। 40 ঈশ্বর আমাদের জন্য মহত্তর কিছু করতে চেয়েছিলেন, যাতে তাঁরা আমাদের সাথে মিলিত হয়ে পরিপূর্ণ হতে পারেন।

Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)

Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International