M’Cheyne Bible Reading Plan
শস্য নৈবেদ্যসমূহ
2 “যদি কেউ প্রভু ঈশ্বরকে শস্য নৈবেদ্য দান করে, তবে তার নৈবেদ্য যেন গুঁড়ো ময়দা থেকে তৈরী হয়। এই ময়দার ওপর লোকটি অবশ্যই তেল ঢালবে এবং তার ওপর কুন্দুরু রাখবে। 2 তারপর সে সেটা হারোণের পুত্রদের কাছে অর্থাৎ যাজকদের কাছে আনবে। সে তেল আর সুগন্ধি মেশানো এক মুঠো ময়দার গুঁড়ো নেবে। যাজক তখন বেদীর ওপরে এই স্মারক নৈবেদ্য পোড়াবে। এই নৈবেদ্য আগুনে প্রস্তুত। এর সুগন্ধ প্রভুকে খুশী করে। 3 হারোণ এবং তার পুত্রদের জন্য থাকবে বাকি পড়ে থাকা শস্য নৈবেদ্য। প্রভুকে দেওয়া আগুনে তৈরী এই নৈবেদ্য অত্যন্ত পবিত্র।
সেঁকা শস্য নৈবেদ্যসমূহ
4 “যখন কোন লোক উনুনে সেঁকা রুটি নৈবেদ্য উপহার দেয় তখন তা যেন অবশ্যই খামিরবিহীন রুটি হয় মিহি ময়দা ও তেল দিয়ে তৈরী, অথবা যেন তেল মেশানো সরুচাকলী হয়। 5 যদি তুমি সেঁকাপাত্রে সেঁকা শস্য নৈবেদ্য আনো, তা হলে তা যেন অবশ্যই তেল মেশানো খামিরবিহীন গুঁড়ো ময়দার তৈরী হয়। 6 তুমি অবশ্যই সেটা টুকরো টুকরো করবে এবং তার ওপর তেল ঢালবে। এটি হল শস্য নৈবেদ্য। 7 যদি তুমি কড়ায় ভাজা শস্য নৈবেদ্য নিয়ে আসো, তখন যেন তা তেল মেশানো গুঁড়ো ময়দা দিয়ে তৈরী হয়।
8 “তুমি অবশ্যই এইসব জিনিস থেকে তৈরী শস্য নৈবেদ্যগুলি প্রভুর কাছে আনবে। যাজকের কাছে সেগুলি নিয়ে যাবে এবং সে সেগুলিকে বেদীর ওপর রাখবে। 9 তারপর যাজক শস্য নৈবেদ্যর কিছু অংশ নেবে এবং এই স্মারক নৈবেদ্য, বেদীর ওপর পোড়াবে। এই নৈবেদ্য আগুনে তৈরী। এর সুগন্ধ প্রভুকে খুশী করে। 10 পড়ে থাকা শস্য নৈবেদ্য হারোণ ও তার পুত্রদের জন্য। প্রভুকে দেওয়া এই আগুনে তৈরী নৈবেদ্য অত্যন্ত পবিত্র।
11 “তোমরা অবশ্যই খামির মেশানো কোন শস্য নৈবেদ্য প্রভুকে দেবে না। তোমরা খামির বা মধু আগুনে ঝলসে প্রভুকে নৈবেদ্য হিসেবে দেবে না। 12 প্রথম ফসল থেকে আনা নৈবেদ্য হিসেবে তোমরা খামির ও মধু প্রভুর কাছে আনতে পারো, কিন্তু খামির ও মধু সুগন্ধ হয়ে উবে যাওয়ার জন্য বেদীর ওপর যেন পোড়ানো না হয়। 13 তোমাদের আনা প্রতিটি শস্য নৈবেদ্যে তোমরা অবশ্যই লবণ দেবে। ঈশ্বরের নিয়মের লবণ যেন তোমাদের শস্য নৈবেদ্য থেকে বাদ না পড়ে। তোমাদের সমস্ত নৈবেদ্যর সঙ্গে অবশ্যই লবণ আনবে।
প্রথম ফসল থেকে শস্য নৈবেদ্যসমূহ
14 “যখন তোমরা প্রথম ফসল থেকে শস্য নৈবেদ্য প্রভুর কাছে আনবে, তখন অবশ্যই আগুনে ঝলসানো শস্যের মাথা আনবে। এইগুলি অবশ্যই টাটকা শস্যের চূর্ণ করা মাথা হবে। এই হবে তোমাদের প্রথম ফসল থেকে আনা শস্য নৈবেদ্য। 15 তোমরা অবশ্যই তেল আর সুগন্ধি তার ওপর ঢালবে। এই হল শস্য নৈবেদ্য। 16 যাজক অবশ্যই গুঁড়ো শস্যের কিছু অংশ, তেল এবং সমস্ত ধূনা প্রভুর কাছে স্মারক নৈবেদ্য হিসেবে পোড়াবে।
মঙ্গল নৈবেদ্যসমূহ
3 “মঙ্গল নৈবেদ্য হিসেবে যখন কেউ ঈশ্বরের কাছে উৎসর্গ দেয় তখন প্রাণীটি একটি পুরুষ বা স্ত্রী গরু হতে পারে। কিন্তু প্রাণীটির অবশ্যই যেন কোন দোষ না থাকে। 2 লোকটি প্রাণীটির মাথায় হাত রাখবে এবং সমাগম তাঁবুতে ঢোকার মুখে প্রাণীটিকে হত্যা করবে, তারপর বেদীর ওপরে আর তার চারপাশে হারোণের পুত্ররা অর্থাৎ যাজকরা রক্ত ছিটিয়ে দেবে। 3 মঙ্গল নৈবেদ্য হল প্রভুর প্রতি আগুনে প্রস্তুত এক নৈবেদ্য। প্রাণীটির দেহের ভিতরে ও বাইরে যে চর্বি আছে, যাজকরা তা অবশ্যই উৎসর্গ করবে। 4 তারা দুটি বৃক্ক এবং যে চর্বি নিতম্বের নীচে তাদের ঢেকে রেখেছে সেগুলো উৎসর্গ করবে। যে চর্বি যকৃৎকে ঢেকে রেখেছে তারা সেটিও উৎসর্গ করবে এবং বৃক্কের সঙ্গে এটিকে সরিয়ে রাখবে। 5 তারপর হারোণের পুত্ররা বেদীর ওপর চর্বি পোড়াবে। আগুনের ওপরকার কাঠে রাখা জ্বলন্ত নৈবেদ্যর ওপর তা তারা রাখবে। এটা হল আগুনে প্রস্তুত নৈবেদ্য। এর সুগন্ধ প্রভুকে খুশী করে। 6 “যখন কোন লোক প্রভুর প্রতি মঙ্গল নৈবেদ্য হিসেবে একটি মেষ বা একটি ছাগল দান করে, তখন প্রাণীটি পুরুষ অথবা স্ত্রী জাতীয় হতে পারে; কিন্তু তাতে যেন অবশ্যই কোন দোষ না থাকে। 7 যদি সে তার নৈবেদ্য হিসেবে একটি মেষশাবক আনে তবে সে তা প্রভুর সামনে আনবে। 8 সে অবশ্যই তার হাত প্রাণীটির মাথার ওপর রাখবে আর সমাগম তাঁবুর সামনে প্রাণীটিকে হত্যা করবে। তারপর হারোণের পুত্ররা বেদীর চারপাশে প্রাণীটির রক্ত ছিটিয়ে দেবে। 9 আগুনে প্রস্তুত নৈবেদ্যর মত করে তারা মঙ্গল নৈবেদ্যর একটা অংশ প্রভুর প্রতি উৎসর্গ করবে। তারা অবশ্যই চর্বি, সমগ্র চর্বিযুক্ত লেজ এবং যে চর্বি প্রাণীটির ভিতরের অংশের সমস্ত অঙ্গগুলোকে ঢেকে রাখে তা উৎসর্গ করবে। (পিছনের হাড়ের একেবারে লাগোয়া অংশ থেকে লেজটা সে কেটে দেবে।) 10 কটির কাছের দুটি বৃক্ক ও তাদের ঢেকে রাখা চর্বিকে তারা যেন দান করে। তারা অবশ্যই যকৃতের চর্বি অংশটুকুও দান করবে। তারা অবশ্যই বৃক্ক সমেত সেটিকে সরিয়ে নেবে। 11 তারপর বেদীর ওপর যাজকরা সেগুলিকে পোড়াবে। প্রভুর প্রতি আগুনের নৈবেদ্যই হল মঙ্গল নৈবেদ্য কিন্তু এটা সাধারণ মানুষ খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করতে পারবে।
12 “যদি নৈবেদ্যটি একটি ছাগল হয় তা হলে লোকটি তাকে প্রভুর সামনে আনবে। 13 লোকটি ছাগলটির মাথায় তার হাত রাখবে এবং তাকে সমাগম তাঁবুর সামনে হত্যা করবে। তারপর হারোণের পুত্ররা বেদীর চারপাশে ছাগলের সেই রক্ত ছিটিয়ে দেবে। 14 প্রভুর প্রতি আগুনের নৈবেদ্য হিসেবে যাজকরা মঙ্গল নৈবেদ্যর কিছু অংশ অবশ্যই দান করবে। প্রাণীটির ভিতরের অংশগুলির ওপরের ও চারপাশের চর্বি তারা অবশ্যই উৎসর্গ করবে। 15 তারা নীচের পিছনের দিকের মাংসপেশীর কাছাকছি দুটি বৃক্ক ও তাদের চর্বির আচ্ছাদন অবশ্যই উৎসর্গ করবে। তারা যকৃতের চর্বির অংশও দেবে। তারা অবশ্যই এটাকে বৃক্কসহ সরিয়ে দেবে। 16 এরপর যাজকরা অবশ্যই এগুলি বেদীর ওপর পোড়াবে। মঙ্গল নৈবেদ্য হল আগুনে প্রস্তুত এক নৈবেদ্য। এর সুগন্ধ প্রভুকে খুশী করে। এটিও সাধারণ মানুষ খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করতে পারে; কিন্তু শ্রেষ্ঠ অংশগুলি অর্থাৎ চর্বি, প্রভুর জন্য নির্দিষ্ট। 17 বংশপরম্পরায় এই নিয়ম চিরকালের জন্য তোমাদের মধ্যে চলতে থাকবে। যেখানেই তোমরা থাক তোমরা অবশ্যই কখনও চর্বি বা রক্ত খাবে না।”
যীশু সাতজন প্রেরিতকে দেখা দিলেন
21 এরপর তিবিরিয়া হ্রদের ধারে যীশু আবার তাঁর শিষ্যদের দেখা দিলেন। এইভাবে তিনি দেখা দিয়েছিলেন: 2 শিমোন পিতর, থোমা যাঁর অপর নাম দিদুমঃ, গালীলের কান্নাবাসী নথনেল, সিবদিয়ের ছেলেরা ও অপর দুজন শিষ্য, এঁরা সকলে এক জায়গায় ছিলেন। 3 শিমোন পিতর তাঁদের বললেন, “আমি মাছ ধরতে যাচ্ছি।”
অপর শিষ্যরা তাঁকে বললেন, “আমরাও তোমার সঙ্গে যাব।” তাঁরা সকলে বেরিয়ে গেলেন এবং নৌকায় গিয়ে উঠলেন, কিন্তু সেই রাত্রে তাঁরা কিছুই ধরতে পারলেন না।
4 এইভাবে যখন ভোর হয়ে আসছে, এমন সময় যীশু তীরে এসে দাঁড়ালেন; কিন্তু শিষ্যরা তাঁকে চিনতে পারলেন না যে তিনি যীশু। 5 যীশু তাঁদের বললেন, “বাছারা, কিছু মাছ পেলে?”
শিষ্যরা বললেন, “না।”
6 তিনি তাঁদের বললেন, “নৌকার ডান দিকে জাল ফেল তাহলে তোমরা কিছু মাছ পাবে।” সেইভাবে তাঁরা জাল ফেললে জালে এত মাছ পড়ল যে তাঁরা তা টেনে তুলতে পারলেন না।
7 তখন যে শিষ্যকে যীশু বেশী ভালবাসতেন, তিনি পিতরকে বললেন, “উনি প্রভু!” তাই শিমোন যখন শুনলেন যে উনি প্রভু, তখন তিনি গায়ের ওপর একটা কাপড় জড়িয়ে নিলেন কারণ তিনি তখন কাজের সুবিধার জন্য খালি গায়ে ছিলেন ও হ্রদের জলে ঝাঁপিয়ে পড়লেন। 8 কিন্তু অন্যান্য শিষ্যরা নৌকাতে করে তীরে এলেন। তাঁরা মাছ ভর্ত্তি জালটা টেনে আনছিলেন। তাঁরা তীর থেকে বেশী দূরে ছিলেন না, প্রায় তিনশো ফুট দূরে ছিলেন। 9 ডাঙ্গায় উঠে তাঁরা দেখলেন সেখানে কাঠ কয়লার আগুন জ্বলছে, তার ওপর কিছু মাছ আর রুটিও আছে। 10 যীশু তাঁদের বললেন, “তোমরা এখন যে মাছ ধরলে তার থেকে কিছু নিয়ে এস।”
11 শিমোন পিতর উঠে নৌকায় গেলেন এবং জাল টেনে তীরে তুললেন, সেই জালে একশো তিপান্নটা বড় মাছ ছিল, আর এত মাছেতেও সেই জাল ছেঁড়েনি। 12 যীশু তাঁদের বললেন, “এখানে এসে সকালের জলখাবার খেয়ে নাও।” কিন্তু শিষ্যদের মধ্যে কারোর জিজ্ঞাসা করার সাহস হল না, “আপনি কে?” কারণ তাঁরা বুঝেছিলেন যে তিনিই প্রভু। 13 যীশু গিয়ে সেই রুটি নিয়ে তাঁদের দিলেন, আর সেই মাছ নিয়েও তাঁদের দিলেন।
14 মৃত্যু থেকে পুনরুত্থানের পর এই নিয়ে তৃতীয় বার যীশু তাঁর শিষ্যদের দেখা দিলেন।
যীশু পিতরের সঙ্গে কথা বললেন
15 তাঁরা খাওয়া শেষ করবার পর যীশু শিমোন পিতরকে বললেন, “যোহনের ছেলে শিমোন, এই লোকদের চেয়ে তুমি কি আমায় বেশী ভালবাসো?”
পিতর তাঁকে বললেন, “হ্যাঁ, প্রভু, আপনি জানেন যে আমি আপনাকে ভালবাসি।”
যীশু পিতরকে বললেন, “আমার মেষশাবকদের[a] তত্ত্বাবধান কর।”
16 তিনি তাঁকে দ্বিতীয়বার জিজ্ঞেস করলেন, “যোহনের ছেলে শিমোন, তুমি কি আমায় ভালবাসো?”
পিতর তাঁকে বললেন, “হ্যাঁ, প্রভু, আপনি জানেন যে আমি আপনাকে ভালবাসি।”
যীশু পিতরকে বললেন, “আমার মেষদের তত্ত্বাবধান কর।”
17 যীশু পিতরকে তৃতীয়বার বললেন, “যোহনের ছেলে শিমোন, তুমি কি আমায় ভালবাসো?”
একথা তিনবার শোনায় পিতর দুঃখ পেলেন। তাই তিনি যীশুকে বললেন, “প্রভু, আপনি সবই জানেন। আপনি জানেন যে আমি আপনাকে ভালবাসি।”
যীশু তাঁকে বললেন, “আমার মেষদের তত্ত্বাবধান কর। 18 আমি তোমাকে সত্যি বলছি, যখন তুমি যুবক ছিলে, তখন তুমি তোমার নিজের কোমর বন্ধনী বাঁধতে আর যেখানে মন চাইত যেতে; কিন্তু যখন বৃদ্ধ হবে, তখন তুমি তোমার হাত বাড়িয়ে দেবে আর অন্য কেউ তোমায় কোমর বন্ধনী পরিয়ে দেবে। আর যেখানে তুমি যেতে চাইবে না সেখানে নিয়ে যাবে।” 19 (এই কথা বলে যীশু ইঙ্গিত করলেন, পিতর কি প্রকার মৃত্যু দ্বারা ঈশ্বরেকে গৌরবান্বিত করবেন।) এসব কথা বলার পর তিনি পিতরকে বললেন, “আমায় অনুসরণ কর।”
20 পিতর ঘুরে দেখলেন, যাঁকে যীশু ভালোবাসতেন সেই শিষ্য তাঁদের পেছনে আসছেন। (এই শিষ্যই ভোজের সময় যীশুর বুকের ওপর হেলান দিয়েছিলেন, আর বলেছিলেন, “প্রভু, কে আপনাকে শত্রুর হাতে তুলে দেবে?”) 21 তাই পিতর তাঁকে দেখতে পেয়ে যীশুকে বললেন, “প্রভু, ওর কি হবে?”
22 যীশু পিতরকে বললেন, “আমি যদি চাই যে, আমি না আসা পর্যন্ত ও থাকবে, তাতে তোমার কি? তুমি আমায় অনুসরণ কর।”
23 তাই ভাইদের মধ্যে একথা ছড়িয়ে গেল যে, সেই শিষ্য মরবে না। কিন্তু যীশু তাকে বলেন নি যে তিনি মরবেন না। কেবল বলেছিলেন, “আমি যদি চাই যে আমি না আসা পর্যন্ত সে এখানে থাকবে, তাতে তোমার কি?”
24 ইনিই সেই শিষ্য যিনি এইসব বিষয়ে সাক্ষ্য দিয়েছেন, আর তিনিই এইসব লিপিবদ্ধ করেছেন। আমরা জানি তাঁর সাক্ষ্য সত্য।
25 যীশু আরো অনেক কাজ করেছিলেন। সেগুলি যদি এক এক করে লেখা যেত, তবে আমার ধারণা লিখতে লিখতে এত সংখ্যক বই হত যে জগতে তা ধরতো না।
18 যে লোকরা অন্য কারো সঙ্গে মিলে-মিশে থাকতে পারে না, তারা তাদের নিজেদের ইচ্ছেমত জিনিস চায়। তারা অন্য যে কোন উপদেশ বা পরামর্শে বিচলিত হয়।
2 একজন নির্বোধ অন্যদের কাছ থেকে কিছু শিখতে চায় না। সে শুধু নিজের মনের কথাই প্রকাশ করতে সচেষ্ট থাকে।
3 মানুষ এই ধরণের দুর্জনকে পছন্দ করে না। তারা বোকাদের নিয়ে উপহাস করে।
4 জ্ঞানী ব্যক্তির উচ্চারিত শব্দ হল গভীর কুয়ো থেকে উঠে আসা স্রোতবাহী জলের মতো যে কুয়ো হল জ্ঞানের আধার।
5 তোমাকে মানুষের সঠিক বিচার করতে হবে। যদি তুমি দোষী ব্যক্তিদের ছেড়ে দাও তাহলে তুমি সজ্জন ব্যক্তিদের সঙ্গে ন্যায় করলে না।
6 একজন নির্বোধ ব্যক্তি নিজের কথার দ্বারাই নিজের সংকট বাধিয়ে বসে। তার মুখের কথায় ঝগড়া শুরু হতে পারে।
7 তার মুখই তার ধ্বংসের কারণ হয়ে ওঠে। সে নিজেই নিজের কথার জালে জড়িয়ে পড়ে।
8 মানুষ সব সময় কেচ্ছা শুনতে ভালোবাসে। কেচ্ছাকাহিনীকে সুখাদ্যের মতো গিলতে থাকে।
9 কুকর্মে যে লিপ্ত থাকে তার সঙ্গে বিনাশকারীর কোন পার্থক্য নেই।
10 প্রভুর নাম হল একটি শক্তিশালী মিনারের মত। ভালো লোকরা প্রভুর কাছে আশ্রয়ের জন্য ছুটে যেতে পারে।
11 ধনীরা ভাবে তাদের অর্থই তাদের রক্ষা করবে। তারা ভাবে তাদের অর্থ হল দুর্ভেদ্য দুর্গের মতো অটুট।
12 অহঙ্কারী ব্যক্তির বিনাশ হবে কিন্তু বিনয়ী ব্যক্তি সম্মানিত হবে।
13 অন্যদের কথা শেষ করতে দেওয়ার পর তুমি উত্তর দিতে শুরু করবে। যদি তুমি এরকম কর তাহলে তুমি অপ্রস্তুত হবে না অথবা তোমাকে বোকার মত দেখতে লাগবে না।
14 অসুস্থতার সময়ে একজন মানুষের মস্তিষ্ক তাকে জীবিত রাখবে। কিন্তু সে যদি গভীর ভাবে উদাস হয়ে যায়, তার কোন আশা থাকে না।
15 জ্ঞানী ব্যক্তি আরো বেশী জানার ইচ্ছে প্রকাশ করে।
16 তুমি যদি গুরুত্বপূর্ণ লোকদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবার আগে তাদের উপহার দাও, তাহলে তাদের সঙ্গে দেখা করবার ব্যবস্থা সহজ হয়।
17 প্রথম ব্যক্তির মামলা ততক্ষণ পর্যন্ত ঠিক থাকে যতক্ষণ না তাকে দ্বিতীয় ব্যক্তি পাল্টা প্রশ্ন করে।
18 শক্তিশালী বিরোধী দলগুলির বিবাদ পাশার দান ফেলে মেটানো যায়।
19 তুমি যদি তোমার বন্ধুকে অপমান কর তাহলে পুনরায় তার মন জয় করা দুর্ভেদ্য প্রাচীর ঘেরা শহর জয় করার থেকেও কঠিন হবে। প্রাসাদের ফটকগুলির ওপর আড়াআড়ি ভাবে রাখা শক্তিশালী খিলগুলির মত তর্ক মানুষের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করে।
20 তুমি যা বলবে তাই তোমার জীবনের ওপর প্রভাব ফেলবে। তুমি যদি ভাল কথা বল তাহলে তোমার জীবনে ভালো ঘটনা ঘটবে। আর যদি তুমি খারাপ কথা বলো তাহলে তোমার জীবনে খারাপ ঘটনা ঘটবে।
21 জিহ্বা এমন কথা বলতে পারে যা জীবন অথবা মৃত্যু আনে। যারা কথা বলতে ভালোবাসে তাদের কথার দরুন যা পরিনাম হতে পারে সে সম্বন্ধে তাদের অবশ্যই প্রস্তুত থাকতে হবে।
22 যদি তুমি তোমার জীবনসঙ্গিনী খুঁজে পাও তাহলে মনে করবে তুমি কোন ভাল জিনিসই পেয়েছো। তোমার স্ত্রী তোমাকে দেখাবে যে প্রভু তোমাকে নিয়ে সুখী।
23 একজন গরীব ব্যক্তি সাহায্য ভিক্ষা করবে কিন্তু একজন ধনী ব্যক্তি খারাপ ভাবে তাকে উত্তর দেবে।
24 কয়েক জন বন্ধুর সঙ্গ আনন্দদায়ক। কিন্তু একজন সত্যিকারের বন্ধু ভাইয়ের চেয়েও বিশ্বস্ত হতে পারে।
1 আমি পৌল, ঈশ্বরের ইচ্ছানুসারে খ্রীষ্ট যীশুর প্রেরিত ও আমাদের ভাই তীমথিয়,
2 কলসীতে ঈশ্বরের যে সকল পবিত্র ও বিশ্বস্ত ভাই ও বোনেরা খ্রীষ্টেতে আছে, তাদের আমরা এই চিঠি লিখছি।
আমাদের পিতা ঈশ্বরের অনুগ্রহ ও শান্তি তোমাদের ওপরে যেন বর্তায়।
3 আমরা প্রার্থনা করার সময় সব সময়ই তোমাদের হয়ে প্রভু যীশু খ্রীষ্টের পিতা ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানাই। 4 আমরা ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানাই কারণ খ্রীষ্টের ওপর তোমাদের বিশ্বাস, আর ঈশ্বরের সমস্ত লোকদের জন্য তোমাদের ভালবাসার কথা আমরা শুনেছি। 5 এই বিশ্বাস ও ভালবাসার কারণ তোমাদের অন্তরের সেই প্রত্যাশা। তোমরা জান যে তোমরা যা কিছু প্রত্যাশা করছ, সে সব স্বর্গে তোমাদের জন্য সঞ্চিত রয়েছে। যখন সত্য শিক্ষা ও সুসমাচার তোমাদের কাছে বলা হয়েছিল, তখনই প্রথম সেই প্রত্যাশার বৃত্তান্ত তোমরা শুনেছিলে। 6 সেই সুসমাচার সমস্ত জগতে প্রচারিত হচ্ছে আর তা ফলদায়ী হচ্ছে ও বৃদ্ধি লাভ করছে। তোমরা যখন সুসমাচার শুনে ঈশ্বরের অনুগ্রহের কথা জেনেছিলে তখন থেকে তোমাদের মধ্যেও তা সেই একইভাবে কাজ করছে। 7 ইপাফ্রার কাছ থেকে তোমরা ঈশ্বরের অনুগ্রহের কথা জেনেছ, ইপাফ্রা আমাদের সহদাস, আমরা তাকে ভালবাসি। আমাদের কাছে তিনি খ্রীষ্টের এক বিশ্বস্ত সেবক। 8 পবিত্র আত্মা তোমাদের অন্তরে যে গভীর ভালবাসা দিয়েছেন সে কথাও তিনি আমাদের জানিয়েছেন।
9 এইজন্য যে দিন থেকে আমরা তোমাদের বিষয়ে এইসব কথা জানতে পেরেছি, সেইদিন থেকেই আমরা তোমাদের জন্য ঈশ্বরের কাছে অবিরত প্রার্থনা করছি।
যাতে ঈশ্বর তোমাদের জীবনে কি করতে চান তা পূর্ণরূপে জানতে পার; এবং যাতে তোমরা সকল আত্মিক বিষয়ে প্রজ্ঞা ও বোধশক্তি লাভ কর। 10 তার ফলে তোমরা এমন জীবনযাপন কর যাতে তাঁর গৌরব হয় ও প্রভু সমস্ত দিক দিয়ে খুশী হন। আমি প্রার্থনা করি যেন তোমরা সব রকমের সৎ কাজ করে ফলবান হও এবং ঈশ্বরের জ্ঞানে বৃদ্ধিলাভ কর। 11 যেন ঈশ্বর তাঁর মহাশক্তিতে তোমাদের শক্তিমান করেন ও তাঁর পরাক্রমে তোমাদের বলিষ্ঠ করেন; যেন দুঃখ কষ্ট এলে তোমরা সহ্য করতে ও ধৈর্য্য ধরতে পার।
12 তাহলে তোমরা আনন্দ সহকারে পিতাকে ধন্যবাদ দিতে পারবে, যিনি তাঁর আলোয় সন্তানদের উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত অংশ ভোগ করার যোগ্যতা তোমাদের দিয়েছেন। 13 তিনিই অন্ধকারের কর্তৃত্ত্ব থেকে আমাদের উদ্ধার করে তাঁর প্রিয় পুত্রের রাজত্বে স্থান দিয়েছেন। 14 তাঁর মাধ্যমেই আমরা মুক্ত হই ও আমাদের সব পাপের ক্ষমা হয়।
খ্রীষ্টের মাধ্যমে ঈশ্বরের দর্শন
15 কেউই ঈশ্বরকে দেখতে পায় না;
কিন্তু যীশুই অদৃশ্য ঈশ্বরের প্রতিমূর্তি
এবং সমস্ত সৃষ্টির প্রথমজাত।
16 তাঁর পরাক্রমে সবকিছুই সৃষ্টি হয়েছে।
স্বর্গে ও মর্ত্যে, দৃশ্য ও অদৃশ্য যা কিছু আছে,
সমস্ত আত্মিক শক্তি, প্রভুবৃন্দ, শাসনকারী কর্তৃত্ত্ব,
সকলই তাঁর দ্বারা ও তাঁর নিমিত্ত সৃষ্ট হয়েছে।
17 সবকিছুর পূর্বেই খ্রীষ্টের অস্তিত্ব ছিল;
তাঁর শক্তিতেই সব কিছু স্থিতিশীল আছে।
18 খ্রীষ্ট হলেন দেহের মস্তক আর সেই দেহ হচ্ছে মণ্ডলী।
সব কিছুর আদি তিনি,
মৃতদের মধ্য থেকে পুনরুত্থিতদের মধ্যে তিনি প্রথম,
তাই সব কিছুতেই তাঁর স্থান প্রথম।
19 তাই ঈশ্বর তাঁর সমস্ত পূর্ণতায় খ্রীষ্টে বাস করে খুশী হয়েছিলেন,
20 আর খ্রীষ্টের ক্রুশের ওপর পতিত রক্তের দ্বারা শান্তি স্থাপন করে কি স্বর্গের,
কি মর্ত্যের সব কিছু খ্রীষ্টের মাধ্যমে তাঁর কাছে পুনরায় ফিরিয়ে এনেছিলেন।
21 এক সময় তোমরা ঈশ্বর থেকে আলাদা ছিলে। তোমরা তোমাদের চিন্তায় ও তোমাদের কুকর্মের জন্য ঘোর ঈশ্বর বিরোধী ছিলে। 22 এখন খ্রীষ্টের পার্থিব দেহের দ্বারা ঈশ্বর তোমাদের তাঁর সঙ্গে পুনর্মিলিত করেছেন, যাতে তিনি তোমাদের ঈশ্বরের সাক্ষাতে পবিত্র, নির্দোষ ও নিষ্কলঙ্করূপে উপস্থিত করতে পারেন। 23 তোমরা যে সুসমাচার শুনেছ যদি তা বিশ্বাস করে স্থির থাক এবং সুসমাচার থেকে যে প্রত্যাশা তোমরা পেয়েছ তা থেকে যদি সরে না যাও তবে খ্রীষ্ট এসব সম্পন্ন করবেন। জগতের সর্বত্র সমস্ত লোকের কাছে সেই একই সুসমাচার প্রচারিত হয়েছে। আমি পৌল সেই সুসমাচারের দাস হয়েছি।
মণ্ডলীর জন্য পৌলের কাজ
24 এখন তোমাদের জন্য আমায় যে কষ্টভোগ করতে হয় তার জন্য আমি আনন্দিত। খ্রীষ্টের দুঃখভোগের যে অংশ অপূর্ণ রয়ে গেছে তা আমি তাঁর দেহরূপ মণ্ডলীর হয়ে আমার দেহে দুঃখভোগ করে পূর্ণ করছি। 25 আমি মণ্ডলীর সেবকরূপে কাজ করছি, কারণ ঈশ্বর আমাকে এই বিশেষ কাজের জন্য নিয়োগ করেছেন। এই প্রচারে তোমাদের উপকার হচ্ছে; আমার কাজ হল ঈশ্বরের সত্য বাক্য সম্পূর্ণরূপে প্রচার করা। 26 এই সত্য বাক্যের নিগূঢ়তত্ত্ব সৃষ্টির শুরু থেকে গুপ্ত ছিল এবং তা সমস্ত মানুষের কাছে গুপ্ত ছিল; কিন্তু এখন ঈশ্বরের পবিত্র লোকদের কাছে তা প্রকাশিত হয়েছে। 27 ঈশ্বর তাঁর আপন লোকদের কাছে তাঁর মূল্যবান মহিমাময় গুপ্ত সত্য প্রকাশ করতে মনস্থ করলেন; সেই মহান সত্য সব মানুষের জন্য। সেই গুপ্ত সত্য খ্রীষ্ট স্বয়ং যিনি তোমাদের মধ্যে আছেন এবং ঈশ্বরের গৌরবের ভাগী হবার জন্য তিনিই কেবল আমাদের ভরসা। 28 তাই সমস্ত প্রজ্ঞায় প্রত্যেককে বিশদভাবে উপদেশ দিয়ে এবং সতর্ক করে আমরা খ্রীষ্টকে প্রচার করি, যাতে প্রত্যেককে ঈশ্বরের কাছে খ্রীষ্টে পরিপক্ক মানুষ হিসেবে উপস্থিত করতে পারি। 29 এই উদ্দেশ্যে আমার মধ্যে মহাপরাক্রমে ক্রিয়াশীল খ্রীষ্টের শক্তি ব্যবহার করে আমি পরিশ্রম ও সংগ্রাম করছি।
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International