M’Cheyne Bible Reading Plan
মোশি পবিত্র তাঁবু স্থাপন করল
40 তখন প্রভু মোশিকে বললেন, 2 “প্রথম মাসের প্রথম দিনে তোমরা পবিত্র তাঁবু অর্থাৎ সমাগম তাঁবু স্থাপন করবে। 3 সাক্ষ্য সিন্দুকটি পবিত্র তাঁবুতে রাখো এবং আবরণ দিয়ে ঢেকে দাও। 4 টেবিলটি নিয়ে এসো এবং ওপরে যে সব জিনিস থাকার কথা সেগুলি রাখো। তারপর দীপদানটি তাঁবুতে নিয়ে এসে দীপগুলি ঠিক জায়গা মতো রাখো। 5 এরপর তাঁবুতে নৈবেদ্য দেওয়ার জন্য সোনার বেদীটি নিয়ে এসো। সাক্ষ্য সিন্দুকটির সামনে বেদীটি রাখো। পবিত্র তাঁবুর প্রবেশ দরজায় পর্দা টাঙিযে দাও।
6 “হোমবলি দেওয়ার জন্য বেদীটি পবিত্র তাঁবুর প্রবেশ দরজার সামনে রাখো। 7 হাতমুখ ধোওযার জন্য পাত্রটিতে জল রেখে সেটি সমাগম তাঁবু ও বেদীর মাঝখানে রাখো। 8 প্রাঙ্গণের চারিদিকে পর্দার দেওয়াল টাঙিযে দাও। তারপর প্রাঙ্গণের প্রবেশ দরজায় পর্দা লাগিয়ে দাও।
9 “অভিষেক তেল ব্যবহার করে পবিত্র তাঁবু ও তার ভেতরের সবকিছুর অভিষেক করো। তুমি যখন ঐসব জিনিসের ওপর তেল ছেটাবে তখন সবকিছু পবিত্র হয়ে যাবে। 10 হোমবলির জন্য বেদীটি অভিষেক করো এবং অভিষেকের তেল দিয়ে বেদীর সমস্ত জিনিস অভিষিক্ত করো। এতে বেদীটি খুব পবিত্র হয়ে উঠবে। 11 পাত্র ও পাত্র দানকে পবিত্র করবার জন্য তাদের অভিষেক করো।
12 “হারোণ ও তার পুত্রদের সমাগম তাঁবুর প্রবেশ দরজায় নিয়ে এসো। তাদের জল দিয়ে স্নান করাও। 13 তারপর হারোণকে বিশেষ পোশাক পরাও। তাকে তেল দিয়ে অভিষেক করে পবিত্র করো। তাহলে সে যাজকরূপে আমার সেবা করতে পারবে। 14 তার পুত্রদের পোশাক পরাও। 15 তার পুত্রদের ঠিক সেভাবে অভিষেক করাও যেভাবে তাদের পিতাকে করেছ। তাহলে তারাও যাজক হিসেবে আমার সেবা করতে পারবে। যখন তুমি তাদের অভিষেক করবে তখন তারা যাজক হয়ে যাবে। এবং এই পরিবার আগামী দিনেও চিরকালের মত যাজকের কাজ করবে।” 16 মোশি প্রভুর আদেশ মেনে তাঁর নির্দেশ মতো সবকিছু করল।
17 তাই ঠিক সময়ে পবিত্র তাঁবু স্থাপন করা হল। তারা মিশর ছেড়ে যাবার দ্বিতীয় বছরের প্রথম মাসের প্রথম দিন তাঁবু স্থাপন করা হয়েছিল। 18 মোশি তাঁবুর ভিত্তিগুলো জায়গামত স্থাপন করল। তারপর সে ভিত্তিগুলোর ওপর কাঠামোটি বসাল এবং আগল দিয়ে খুঁটিগুলো বসাল। 19 তারপর মোশি পবিত্র তাঁবুর ওপর বাইরের তাঁবু বসাল। এবং তার ওপর আচ্ছাদন দিল। সে সব কিছুই প্রভুর আদেশ মতো করল।
20 মোশি চুক্তিপত্র নিয়ে পবিত্র সিন্দুকে রাখল। খুঁটিগুলো সিন্দুকের ওপর রেখে সেটিকে আবরণ দিয়ে ঢেকে দিল। 21 তারপর মোশি পবিত্র সিন্দুকটি পবিত্র তাঁবুতে রাখল। সিন্দুকটির সুরক্ষার জন্য সে ঠিক জায়গায় পর্দা টাঙ্গালো এবং এভাবেই সে প্রভুর আদেশ মতো সাক্ষ্য সিন্দুকটির সুরক্ষার ব্যবস্থা করল। 22 তারপর সে পবিত্র তাঁবুর উত্তরদিকে পবিত্র স্থানের পর্দার সামনে টেবিলটি রাখলো। 23 প্রভুর আদেশ অনুসারে মোশি প্রভুর সামনে টেবিলের ওপর রুটি রাখল। 24 তারপর সে তাঁবুটির দক্ষিণ দিকে টেবিলের বিপরীত দিকে দীপদানটি রাখল। 25 প্রভু যেমনটি আদেশ করেছিলেন সেই মতো মোশি দীপগুলি স্থাপন করল এবং সেগুলো প্রভুর সামনে রাখল।
26 এরপর মোশি সমাগম তাঁবুর পর্দার সামনে সোনার বেদীটি রাখল। 27 প্রভুর আদেশ মতো মোশি তার ভেতরে সুগন্ধি ধূপ-ধূনো পোড়ালো। 28 তারপর মোশি পবিত্র তাঁবুর প্রবেশ দরজায় পর্দা টাঙালো।
29 মোশি হোমবলির বেদীটি সমাগম তাঁবুর প্রবেশ দরজার সামনে রাখল। তারপর মোশি সেই বেদীতে একটি হোমবলি দিল। সে প্রভুকে শস্য নৈবেদ্যও দিল। সে সবকিছুই প্রভুর আদেশ মতো করল।
30 মোশি এরপর সমাগম তাঁবু ও বেদীর মাঝখানে হাত মুখ ধোওযার জন্য জল ভর্ত্তি পাত্রটি রাখল। 31 হাত ও পা ধোয়ার জন্য মোশি, হারোণ ও তার পুত্ররা এই পাত্রের জল ব্যবহার করল। 32 তারা প্রত্যেকবার তাঁবুতে ঢোকার সময় এবং বেদীর কাছে যাওয়ার সময় তাদের হাত পা ধুয়ে নিল। এসব কিছুই করা হল প্রভুর আদেশ অনুসারে।
33 তারপর মোশি পবিত্র তাঁবুর প্রাঙ্গণের চারিদিকে পর্দা দিয়ে দিল। সে বেদীটি প্রাঙ্গণে রেখে প্রাঙ্গণের প্রবেশ দরজায় পর্দা লাগাল। এইভাবেই মোশি তার সব কাজ শেষ করল।
প্রভুর মহিমা
34 এরপরই মেঘ এসে পবিত্র সমাগম তাঁবু ঢেকে ফেলল। এবং প্রভুর মহিমায় পবিত্র তাঁবু পরিপূর্ণ হল। 35 মোশি সমাগম তাঁবুতে ঢুকতে পারল না। কারণ তা মেঘে ঢেকে ছিল এবং প্রভুর মহিমায় ছিল পরিপূর্ণ।
36 এই মেঘই ইস্রায়েলের লোকদের দেখিয়ে দিয়েছিল যে কখন যাত্রা শুরু করতে হবে। যখন পবিত্র তাঁবুর ওপর থেকে মেঘ সরে যাবে তখনই ইস্রায়েলের লোকরা যাত্রা শুরু করতে পারবে। 37 সুতরাং যখন মেঘ পবিত্র তাঁবুর ওপর ছিল তখন লোকরা তাদের যাত্রা শুরু করার চেষ্টা করেনি। যতক্ষণ না মেঘ ওপরে উঠেছিল ততক্ষণ তারা সেখানেই ছিল। 38 তাই প্রভুর মেঘ দিনের বেলায় ছিল সমাগম তাঁবুর ওপরে এবং রাতে আগুন ছিল মেঘের ভেতরে। তাই ইস্রায়েলের সমগ্র পরিবার তাদের পুরো যাত্রাপথে মেঘটি দেখতে পাচ্ছিল।
19 তখন পীলাত আদেশ দিলেন যে যীশুকে চাবুক মারার জন্য নিয়ে যাওয়া হোক্। 2 সেনারা কাঁটালতা দিয়ে একটা মুকুট তৈরী করে সেটা যীশুর মাথায় পরিয়ে দিল। তারা যীশুকে বেগুনে রঙের পোশাক পরাল, 3 এরপর তাঁর কাছে এগিয়ে এসে বলতে লাগল, “ইহুদীদের রাজা দীর্ঘজীবি হোক্!” এই বলে তারা তাঁর গালে চড় মারতে লাগল।
4 পীলাত আর একবার বাইরে বেরিয়ে এসে তাদের বললেন, “শোন, আমি যীশুকে তোমাদের সামনে নিয়ে আসছি। আমি চাই যে, তোমরা বুঝবে আমি এর কোনই দোষ খুঁজে পাচ্ছি না।” 5 এরপর যীশু বাইরে এলেন, তখন তাঁর মাথায় কাঁটার মুকুট ও পরণে বেগুনে পোশাক ছিল। পীলাত তাদের বললেন, “এই দেখ, সেই মানুষ!”
6 প্রধান যাজকরা ও মন্দিরের রক্ষীরা যীশুকে দেখে চিৎকার করে বলল, “ওকে ক্রুশে দাও, ক্রুশে দিয়ে ওকে মেরে ফেল!”
পীলাত তাদের বললেন, “তোমরা নিজেরাই একে নিয়ে গিয়ে ক্রুশে দাও, কারণ আমি এর কোন দোষ দেখতে পাচ্ছি না।”
7 ইহুদীরা তাঁকে বলল, “আমাদের যে বিধি-ব্যবস্থা আছে, সেই ব্যবস্থানুসারে ওর প্রাণদণ্ড হওয়া উচিত, কারণ ও নিজেকে ঈশ্বরের পুত্র বলে দাবী করে।”
8 এই কথা শুনে পীলাত ভীষণ ভয় পেয়ে গেলেন। 9 তিনি আবার প্রাসাদের মধ্যে গেলেন। পীলাত যীশুকে জিজ্ঞেস করলেন, “তুমি কোথা থেকে এসেছ?” কিন্তু যীশু এর কোন উত্তর দিলেন না। 10 তখন পীলাত যীশুকে বললেন, “তুমি কি আমার সঙ্গে কথা বলতে চাও না? তুমি কি জান না যে তোমাকে মুক্তি দেওয়ার বা ক্রুশে বিদ্ধ করে মারবার ক্ষমতা আমার আছে?”
11 এর উত্তরে যীশু তাঁকে বললেন, “ঈশ্বর না দিলে আমার ওপর আপনার কোন ক্ষমতা থাকত না। তাই যে লোক আমাকে আপনার হাতে তুলে দিয়েছে সে আরও বড় পাপে পাপী।”
12 একথা শুনে পীলাত তাঁকে ছেড়ে দেবার জন্য চেষ্টা করলেন, কিন্তু ইহুদীরা চিৎকার করল, “যদি তুমি ওকে ছেড়ে দাও, তাহলে তুমি কৈসরের বন্ধু নও। যে কেউ নিজেকে রাজা বলবে, বুঝতে হবে সে কৈসরের বিরোধিতা করছে।”
13 এই কথা শোনার পর পীলাত যীশুকে আবার বাইরে নিয়ে এলেন ও বিচারালয়ে বসলেন। এই বিচারাসন ছিল “পাথরে বাঁধানো” নামে জায়গাতে। (ইহুদীদের ভাষায় একে “গব্বথা” বলে।) 14 সেই দিনটা ছিল নিস্তারপর্ব আয়োজনের দিন।[a] তখন প্রায় বেলা বারোটা, পীলাত ইহুদীদের বললেন, “এই দেখ, তোমাদের রাজা।”
15 তখন তারা চিৎকার করতে লাগল, “ওকে দূর কর! দূর কর! ওকে ক্রুশে দিয়ে মার!”
পীলাত তাদের বললেন, “আমি কি তোমাদের রাজাকে ক্রুশে দেব?”
প্রধান যাজকরা জবাব দিলেন, “কৈসর ছাড়া আমাদের আর কোন রাজা নেই।”
16 তখন পীলাত যীশুকে ক্রুশে বিদ্ধ করে মারবার জন্য তাদের হাতে তুলে দিলেন।
যীশুর ক্রুশারোহণ
(মথি 27:32-44; মার্ক 15:21-32; লূক 23:26-39)
শেষ পর্যন্ত তারা যীশুকে হাতে পেল। 17 যীশু তাঁর নিজের ক্রুশ বইতে বইতে “মাথার খুলি” নামে এক জায়গায় গেলেন। (ইহুদীদের ভাষায় যাকে বলা হোত “গলগথা।”) 18 সেখানে তারা যীশুকে ক্রুশে বিদ্ধ করল। তাঁর সঙ্গে তাঁর দুপাশে আরও দুজনকে ক্রুশে দিল, যীশু ছিলেন তাদের মাঝখানে।
19 পীলাত যীশুর মাথার দিকে ক্রুশের ওপর একটি ফলক টাঙ্গিয়ে দিলেন। সেই ফলকে লেখা ছিল, “নাসরতীয় যীশু, ইহুদীদের রাজা।” 20 তখন অনেক ইহুদী সেই ফলকটি পড়ল, কারণ যীশুকে যেখানে ক্রুশে দেওয়া হয়েছিল তা নগরের কাছেই ছিল, আর সেই ফলকের লেখাটি ইহুদীদের ভাষা, গ্রীক ও রোমীয় ভাষায় ছিল।
21 ইহুদীদের প্রধান যাজকরা পীলাতকে বললেন, “‘ইহুদীদের রাজা’ লিখো না, তার পরিবর্তে লেখো, ‘এই লোক বলেছিল, আমি ইহুদীদের রাজা।’”
22 পীলাত বললেন, “আমি যা লিখেছি তা লিখেছি।”
23 যীশুকে ক্রুশে দিয়ে সেনারা যীশুর সমস্ত পোশাক নিয়ে চারভাগে ভাগ করে প্রত্যেকে এক এক ভাগ নিল। আর তাঁর উপরের লম্বা পোশাকটিও নিল, এটিতে কোন সেলাই ছিল না, ওপর থেকে নীচে পর্যন্ত সমস্তটাই বোনা। 24 তাই তারা নিজেদের মধ্যে বলাবলি করল, “এটাকে আর ছিঁড়ব না। আমরা বরং ঘুঁটি চেলে দেখি কে ওটা পায়।” শাস্ত্রের এই বাণী এইভাবে ফলে গেল:
“তারা নিজেদের মধ্যে আমার পোশাক ভাগ করে নিল,
আর আমার পোশাকের জন্য ঘুঁটি চালল।”(A)
সৈনিকরা তাই করল।
25 যীশুর ক্রুশের কাছে তাঁর মা, মাসীমা ক্লোপার স্ত্রী মরিয়ম ও মরিয়ম মগ্দলিনী দাঁড়িয়েছিলেন। 26 যীশু তাঁর মাকে সেখানে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখলেন আর যে শিষ্যকে তিনি ভালোবাসতেন, দেখলেন তিনিও সেখানে দাঁড়িয়ে আছেন। তখন তিনি তাঁর মাকে বললেন, “হে নারী, ঐ দেখ তোমার ছেলে।” 27 পরে তিনি তাঁর সেই শিষ্যকে বললেন, “ঐ দেখ, তোমার মা।” আর তখন থেকে তাঁর মাকে সেই শিষ্য নিজের বাড়িতে রাখার জন্য নিয়ে গেলেন।
যীশুর মৃত্যু
(মথি 27:45-56; মার্ক 15:33-41; লূক 23:44-49)
28 এরপর যীশু বুঝলেন যে সবকিছু এখন সম্পন্ন হয়েছে। শাস্ত্রের সকল বাণী যেন সফল হয় তাই তিনি বললেন, “আমার পিপাসা পেয়েছে।”[b] 29 সেখানে একটা পাত্রে সিরকা ছিল, তাই সৈন্যরা একটা স্পঞ্জ সেই সিরকায় ডুবিয়ে এসোব নলে করে তা যীশুর মুখের কাছে ধরল। 30 যীশু সেই সিরকার স্বাদ নেবার পর বললেন, “সমাপ্ত হল!” এরপর তিনি মাথা নীচু করে প্রাণ ত্যাগ করলেন।
31 ঐ দিনটা ছিল আয়োজনের দিন। যেহেতু বিশ্রামবার একটি বিশেষ দিন, ইহুদীরা চাইছিল না যে দেহগুলি ক্রুশের ওপরে থাকে। তাই ইহুদীরা পীলাতের কাছে গিয়ে তাঁকে আদেশ দিতে অনুরোধ করল, যেন ক্রুশবিদ্ধ লোকদের পা ভেঙ্গে দেওয়া হয় যাতে তাড়াতাড়ি তাদের মৃত্যু হয় এবং মৃতদেহগুলি ঐ দিনই ক্রুশ থেকে নামিয়ে ফেলা যায়। 32 সুতরাং সেনারা এসে প্রথম লোকটির পা ভাঙ্গল, আর তার সঙ্গে যাকে ক্রুশে দেওয়া হয়েছিল তারও পা ভাঙ্গল। 33 কিন্তু তারা যীশুর কাছে এসে দেখল যে তিনি মারা গেছেন, তখন তাঁর পা ভাঙ্গল না।
34 কিন্তু একজন সৈনিক যীশুর পাঁজরের নীচে বর্শা দিয়ে বিদ্ধ করল, আর সঙ্গে সঙ্গে সেখান দিয়ে রক্ত ও জল বেরিয়ে এল। 35 এই ঘটনা যে দেখল সে এবিষয়ে সাক্ষ্য দিল তা আপনারা সকলেই বিশ্বাস করতে পারেন, আর তার সাক্ষ্য সত্য। আর সে জানে যে সে যা বলছে তা সত্য। 36 এই সকল ঘটনা ঘটল যাতে শাস্ত্রের এই কথা পূর্ণ হয়: “তাঁর একটি অস্থিও ভাঙ্গবে না।”(B) 37 আবার শাস্ত্রে আর এক জায়গায় আছে, “তারা যাঁকে বিদ্ধ করেছে তাঁরই দিকে দৃষ্টিপাত করবে।”(C)
যীশুর সমাধি
(মথি 27:57-61; মার্ক 15:42-47; লূক 23:50-56)
38 এরপর অরিমাথিয়ার যোষেফ, যিনি যীশুর শিষ্য ছিলেন, কিন্তু ইহুদীদের ভয়ে তা গোপনে রাখতেন, তিনি যীশুর দেহটি নিয়ে যাবার জন্য পীলাতের কাছে অনুমতি চাইলেন। পীলাত তাঁকে অনুমতি দিলে তিনি এসে যীশুর দেহটি নামিয়ে নিয়ে গেলেন।
39 নীকদীমও এসেছিলেন (যোষেফের সঙ্গে)। এই সেই ব্যক্তি যিনি যীশুর কাছে আগে একরাতের অন্ধকারে দেখা করতে এসেছিলেন। নীকদীম আনুমানিক ত্রিশ কিলোগ্রাম গন্ধ-নির্যাস মেশানো অগুরুর প্রলেপ নিয়ে এলেন। 40 এরপর ইহুদীদের কবর দেওয়ার রীতি অনুসারে যীশুর দেহে সেই প্রলেপ মাখিয়ে তাঁরা তা মসীনার কাপড় দিয়ে জড়ালেন। 41 যীশু সেখানে ক্রুশ বিদ্ধ হয়েছিলেন, তার কাছে একটি বাগান ছিল, সেই বাগানে একটি নতুন কবর ছিল সেখানে আগে কাউকে কখনও কবর দেওয়া হয় নি। 42 এই কবরটি নিকটেই ছিল, যীশুর দেহ তাঁরা সেই কবরেব মধ্যে রাখলেন, কারণ ইহুদীদের বিশ্রামের দিনটি শুরু হতে চলেছিল।
16 মানুষ তার চিন্তা-ভাবনাকে ঠিকমত সাজিয়ে একটি পরিকল্পনা করতে পারে, কিন্তু প্রভুর হাতে জিহ্বাকে নিয়ন্ত্রণ করবার ক্ষমতা আছে।
2 লোকরা মনে করে তারা যা করে সেটাই ঠিক, কিন্তু প্রভু তাদের আত্মা পরীক্ষা করেন।
3 সব সময় প্রভুর সাহায্য নেবে তাহলেই তুমি সফল হবে।
4 সমস্ত বিষয়েই প্রভুর পরিকল্পনা আছে এবং সেই পরিকল্পনা অনুসারে মন্দ লোকের বিনাশ হবে।
5 যে সমস্ত লোক ভাবে তারা অন্য লোকের তুলনায় শ্রেয় প্রভু তাদের ঘৃণা করেন। প্রভু নিশ্চয়ই সেই সমস্ত অহঙ্কারী মানুষকে শাস্তি দেবেন।
6 সত্যিকারের ভালোবাসা ও বিশ্বস্ততা তোমাকে খাঁটি করে তুলবে। ঈশ্বরের প্রকৃত প্রেম এবং বিশ্বস্ততার দরুণ অপরাধ মুছে ফেলা যায় কিন্তু প্রভুর প্রতি শ্রদ্ধার মাধ্যমে আমরা মন্দকে এড়িয়ে চলি।
7 যদি কোন ব্যক্তি ভালো ভাবে জীবনযাপন করে সে প্রভুর কাছে মনোরম হয় এবং তার শত্রুরাও তার সঙ্গে শান্তি রক্ষা করে চলে।
8 ঠকিয়ে প্রচুর লাভ করা অপেক্ষা সঠিক পথে সামান্য লাভ করাও শ্রেয়।
9 একজন ব্যক্তি কি করতে চায় তা নিয়ে পরিকল্পনা করতে পারে কিন্তু বাস্তবে কি ঘটবে তা নির্ধারণ করবেন প্রভু।
10 একজন রাজা যা বলেন সেটাই হয় আইন। তাই তার সিদ্ধান্ত সর্বদা সঠিক হওয়া উচিৎ।
11 প্রভু চান সমস্ত মাপকাঠি এবং মাত্রা সঠিক হোক্ এবং ব্যবসায়িক চুক্তিগুলি নিয়মানুযায়ী হোক্।
12 যারা মন্দ কাজ করে রাজা তাদের ঘৃণা করেন। ধার্মিকতা তাঁর রাজ্যকে প্রতিষ্ঠা করবে।
13 রাজা সত্য ভাষণ শুনতে চান। যারা মিথ্যা বলে না রাজা তাদের পছন্দ করেন।
14 একজন রাজা রেগে গেলে যে কোন লোককে হত্যা করতে পারেন। যে জ্ঞানী সে রাজাকে খুশী রাখার চেষ্টা করবে।
15 যদি রাজা খুশী থাকেন তবে সবার জীবনই সুখের হবে। যদি রাজা তোমার প্রতি সন্তুষ্ট হন তাহলে তা হবে বসন্তকালে বৃষ্টি হওয়ার মতো।
16 জ্ঞানের মূল্য সোনার চেয়েও বেশী। বিচক্ষণতার মূল্য রূপোর চেয়েও বেশী।
17 ভালো লোকরা সারা জীবন খারাপ জিনিস থেকে দূরত্ব রেখে চলে। যে ব্যক্তি সাবধানী সে তার আত্মাকে রক্ষা করে চলে।
18 অহংকার ধ্বংসকে এগিয়ে আনে এবং ঔদ্ধত্য পরাজয় আনে।
19 উদ্ধত লোকদের সঙ্গে ধনসম্পদ ভাগ করে নেওয়ার চেয়ে বিনয়ী হওয়া এবং দরিদ্রদের মধ্যে থাকা শ্রেয়।
20 যে ব্যক্তি অপরের কাছ থেকে শিক্ষাগ্রহণ করে সে লাভবান হবে। যে প্রভুর ওপর বিশ্বাস রেখে চলে সে প্রভুর আশীর্বাদ পাবে।
21 জ্ঞানী লোকদের মানুষ চিনে নেবে। যে বিচক্ষণ ভাবে কথা বলে তার কথায় অনেক বেশী ফল হয়।
22 একজন জ্ঞানী মানুষ সব সময় চিন্তা করে কথা বলে। এবং সে যা বলে তা শোনার যোগ্য।
23 একজন বিজ্ঞ ব্যক্তি সব সময়ই চিন্তাপূর্ণ কথা বলে এবং সে যা কিছু বলে তা শোনার পক্ষে ভাল ও মূল্যবান।
24 দয়ালু কথাবার্তা সব সময়ই মধুর মত মিষ্টি। দয়ালু কথাবার্তা গ্রহণযোগ্য ও স্বাস্থ্যের পক্ষে ভালো।
25 এমন পথ আছে যা লোকের কাছে সঠিক বলে মনে হলেও তা শুধু মৃত্যুর দিকে নিয়ে যায়।
26 একজন শ্রমিকের ক্ষুধাই তাকে কাজ করায় যাতে সে খেতে পায়।
27 একজন অপদার্থ দুষ্ট লোক অন্যায় কাজের পরিকল্পনা করে। তার উপদেশ আগুনের মতই ধ্বংসকারী। 28 একজন সমস্যা সৃষ্টিকারী সব সময় সমস্যার সৃষ্টি করবে। সে গুজব ছড়িয়ে ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের মধ্যে অশান্তির কারণ ঘটাবে।
29 একজন হিংসাত্মক ব্যক্তি তার বন্ধুদের প্রতারণা করে। সে তাদের বিপথে চালিত করবে। 30 সে যখনই কোন ধ্বংসকারী পরিকল্পনা করে তখন তার চোখ মিটমিট করে। সে তার প্রতিবেশীকে আঘাত করার জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার সময় হাসিমুখে থাকে।
31 যারা সৎ জীবনযাপন করে সাদা চুল তাদের মহিমার মুকুট হয়।
32 একজন বলিষ্ঠ যোদ্ধা হওয়ার থেকে ধৈর্য্যশীল হওয়া ভাল। একটি সম্পূর্ণ শহরের দখল নেওয়ার চেয়ে নিজের রাগের ওপর নিয়ন্ত্রণ রাখা শ্রেয়।
33 মানুষ পাশার দান চেলে তাদের সিদ্ধান্ত স্থির করে। কিন্তু সিদ্ধান্ত সব সময় ঈশ্বরের কাছ থেকেই আসে।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলেন খ্রীষ্ট
3 আমার ভাই ও বোনেরা, তোমরা প্রভুতে আনন্দ কর। এই একই কথা আবার লিখতে আমার কোন কষ্ট হচ্ছে না; আর এটি তোমাদের নিরাপত্তার জন্য।
2 “কুকুরদের” থেকে সাবধান! যারা মন্দ কাজ করে ও যারা দেহকে ছিন্নভিন্ন করতে চায় তাদের থেকে সাবধান! 3 কারণ আমরাই তো প্রকৃত সুন্নত হওয়া লোক; আমরা ঈশ্বরের আত্মায় উপাসনা করি, আর খ্রীষ্ট যীশুতে গর্ব বোধ করি। আমরা নিজেদের ওপর বা বাহ্যিক কোন কিছু করার ওপর আস্থা রাখি না। 4 যদিও আমি নিজের ওপর আস্থা রাখতে পারতাম, তবুও আমি তা করি না। যদি কোন লোকের মনে হয় যে সে নিজের ওপর আস্থা রাখতে পারে তবে তার জানা ভাল যে নিজের ওপর আস্থা রাখার জন্য আরো বড় কারণ আমার আছে। 5 জন্মের পর যখন আমার বয়স আট দিন তখন আমার সুন্নত হয়েছে; আমি ইস্রায়েলীয়, বিন্যামীন গোষ্ঠীর লোক। আমি একজন ইব্রীয়, আমার বাবা-মা ইব্রীয়। মোশির বিধি-ব্যবস্থা পালনে গোঁড়া হওয়ায় আমি ফরীশী হয়েছিলাম। 6 আমার নিজের ইহুদী ধর্মের বিষয়ে আমি এতই উৎসাহী ছিলাম যে আমি খ্রীষ্ট মণ্ডলীর প্রতি নির্যাতন করতাম। আমি এমন নিখুঁতভাবে মোশির বিধি-ব্যবস্থা পালন করতাম যে তার মধ্যে কোন ত্রুটি ছিল না।
7 এক সময়ে ঐসব বিষয় আমার কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল; কিন্তু আমি খ্রীষ্টকে পেয়েছি, তাই ঐসব বিষয়ের মূল্য আর আমার কাছে রইল না। 8 কেবল ঐসব বিষয় নয়, বরং সমস্ত কিছুই আমার প্রভু যীশু খ্রীষ্টের জ্ঞানের শ্রেষ্ঠতার কাছে নিতান্তই নগন্য বলে মনে করলাম। তাঁর জন্য আমি সবই বর্জন করেছি। এখন আমি ঐ সবকিছু আবর্জনার মতোই মনে করি, আর খ্রীষ্টকে আরো বেশী করে পেতে এ আমায় সাহায্য করে, 9 এবং তাঁর সঙ্গে সংযুক্ত রাখে। খ্রীষ্টেতে আমি ধার্মিক প্রতিপন্ন হয়েছি। এই ধার্মিক প্রতিপন্ন হওয়া আমার বিধি-ব্যবস্থা পালনের মধ্য দিয়ে আসে নি। ঈশ্বরের কাছ থেকে দানরূপে এ আমি পেয়েছি। খ্রীষ্টে আমার সে বিশ্বাস আছে, এই বিশ্বাসের মাধ্যমে ঈশ্বর আমাকে ধার্মিক প্রতিপন্ন করেন। 10 আমি চাই খ্রীষ্টকে ও মৃতদের মধ্য থেকে তাঁর পুনরুত্থানের শক্তিকে জানতে। আমি খ্রীষ্টের দুঃখভোগের সহভাগীতা লাভ করতে চাই। এইভাবে যেন তাঁর মৃত্যুতে তাঁর সমরূপ হই। 11 আমি যদি এসবের সহভাগী হই, তবে আমি প্রত্যাশা করতে পারি যে আমিও মৃতদের মধ্য থেকে পুনরুত্থিত হতে পারব।
লক্ষ্যে পৌঁছানোর চেষ্টা কর
12 একথা বলছি না যে আমি লক্ষ্যে পৌঁছে গেছি বা পূর্ণতা পেয়েছি। আমি সেই লক্ষ্যে পৌঁছতে চেষ্টা করছি এবং যে উদ্দেশ্যে খ্রীষ্ট আমাকে ধরেছিলেন তাঁর সেই উদ্দেশ্য পর্যন্ত আমি পৌঁছতে চাই। 13 ভাই ও বোনেরা, আমি জানি যে আমি সেই লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারি নি। 14 কিন্তু একটি বিষয়ে আমি চেষ্টা করে চলেছি; অতীতের সবকিছু ভুলে সামনের লক্ষ্যে পৌঁছতে প্রাণপণ চেষ্টা করছি যাতে পুরস্কার লাভ করি। উর্ধস্থ জীবনের জন্য খ্রীষ্ট যীশুতে ঈশ্বরের আহ্বানস্বরূপ এই পুরস্কারের প্রতিশ্রুতি আমাকে দেওয়া হয়েছে।
15 আমরা যারা আত্মিকভাবে পরিপক্ক, আমাদের উচিত এইভাবে চিন্তা করা; আর যদি কোন বিষয়ে তোমাদের অন্যরকম মনোভাব থাকে তবে ঈশ্বর সে বিষয়ে তোমাদের কাছে পরিষ্কার করে দেবেন। 16 এস আমরা ইতিমধ্যে যে সত্যে পৌঁছেছি, সেই সত্য অনুসরণ করি।
17 ভাই ও বোনেরা, তোমরা আমার মতো জীবনযাপন করো। তোমাদের যেমন দেখানো হয়েছে সেইভাবে যারা চলে, তাদের অনুকরণ করো। 18 অনেকে আছে যারা খ্রীষ্টের ক্রুশের শত্রুর মত আচরণ করে। আগে বহুবার আমি তাদের কথা তোমাদের বলেছি, এখন চোখের জল ফেলতে ফেলতে আমি তাদের কথা আবার তোমাদের বলছি। 19 যেভাবে তারা চলছে তার পরিণাম বিনাশ। তারা ঈশ্বরের সেবা করে না, কেবল নিজেদের তুষ্টির জন্যই বাঁচে। তারা লজ্জাকর কাজ করে আর তাই নিয়ে তারা গর্ব বোধ করে। তারা কেবল পার্থিব বিষয়েই ভাবে। 20 আমাদের যথার্থ রাজ্য স্বর্গে। সেই স্বর্গ থেকে আমাদের ত্রাণকর্তার আগমণের জন্য আমরা অপেক্ষা করছি। আমাদের ত্রাণকর্তা হলেন প্রভু যীশু খ্রীষ্ট। 21 তিনি এসে আমাদের এই দীনতার দেহকে বদলে তাঁর নিজের মহিমান্বিত দেহের সমরূপ করবেন। খ্রীষ্ট তাঁর নিজ পরাক্রমে এই কাজ করতে পারেন এবং তাঁর সেই পরাক্রমে খ্রীষ্ট সমস্ত বিষয়ের উপরে কর্তৃত্ত্ব করতে সমর্থ।
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International