M’Cheyne Bible Reading Plan
36 “অতএব বৎসলেল, অহলীয়াব ও অন্যান্য সব দক্ষ কারিগরদের অবশ্যই প্রভুর আদেশ অনুসারে কাজটি করতে হবে। প্রভু এদের জ্ঞান ও বুদ্ধি দিয়েছেন যাতে এরা পারদর্শিতার সঙ্গে পবিত্র স্থান তৈরীর কাজ করতে পারে।”
2-3 তারপর মোশি বৎসলেল, অহলীয়াব এবং যেসব লোকদের প্রভু বিশেষ দক্ষতা দিয়েছিলেন তাদের ডেকে ইস্রায়েলবাসীদের আনা উপহার সামগ্রীগুলি তাদের হাতে তুলে দিল। এইসব লোকরা পবিত্র স্থান তৈরীর কাজে সাহায্য করার জন্যই এসেছিল এবং তারা এই উপহারগুলি ঈশ্বরের পবিত্র স্থান তৈরীর কাজে লাগাল। লোকরা প্রত্যেক দিন সকালেই উপহার নিয়ে আসত। 4 শেষকালে ঐসব কারিগররা পবিত্র স্থানের কাজ ছেড়ে মোশির কাছে এল। তারা বলল, 5 “আমাদের তাঁবুর কাজ শেষ করার জন্য যা প্রয়োজন তার চেয়ে লোকরা অনেক বেশী জিনিস এনেছে।”
6 তখন মোশি শিবিরের চারদিকে খবর পাঠাল: “কোনও নারী বা পুরুষ পবিত্র স্থানের জন্য আর কোনও উপহার তৈরী করবে না।” তাই লোকদের উপহার না দিতে বাধ্য করা হল। 7 তারা প্রয়োজনের চেয়ে অনেক বেশী জিনিস এনেছিল।
পবিত্র তাঁবু
8 তারপর দক্ষ কারিগররা পবিত্র তাঁবু তৈরী করবার কাজ আরম্ভ করল। তারা মিহি শনের কাপড়, বেগুনী, নীল ও লাল সুতো দিয়ে দশটি পর্দা তৈরী করল। তারা তার ওপর সূতো দিয়ে ঈশ্বরের বিশেষ ডানাযুক্ত করূব দূতের ছবি বসাল। 9 প্রত্যেকটি পর্দাই ছিল সমান মাপের – 28 হাত লম্বা এবং 4 হাত চওড়া। 10 তারপর কারিগররা সেই পর্দাগুলি জুড়ে দুভাগে ভাগ করল। পাঁচটি করে পর্দা নিয়ে একেকটি ভাগ হলো। 11 তারা নীল কাপড় দিয়ে প্রত্যেক ভাগের পর্দার কিনারায় একটি ফাঁস তৈরী করল। 12 প্রতিটি ভাগের পর্দার ধারে 50টি করে ফাঁস দিল। ফাঁসগুলি ছিল একে অপরের বিপরীতে। 13 তারা দুটি পর্দাকে জোড়া দেবার জন্য 50টি সোনার আংটা তৈরী করল। এইভাবে পবিত্র তাঁবুটিকে একসঙ্গে একটি খণ্ডে যুক্ত করা হল।
14 তারপর কারিগররা সেই পবিত্র তাঁবুর আচ্ছাদনের জন্য আরেকটি তাঁবু তৈরী করল। তারা ছাগলের লোম দিয়ে এগারোটি পর্দা বানাল। 15 সবগুলি পর্দাই ছিল সমান মাপের – 30 হাত লম্বা এবং 4 হাত চওড়া। 16 তারপর পাঁচটি পর্দা জুড়ে একটি ও ছয়টি পর্দা জুড়ে আরেকটি ভাগ করা হল। 17 দুই ভাগের পর্দার মাঝেই 50টি করে ফাঁস লাগানো হল। 18 দুই ভাগের পর্দাগুলি জুড়ে একটি তাঁবু বানানোর জন্য তারা 50টি পিতলের আংটা তৈরী করল। 19 তারপর তারা পবিত্র তাঁবুর জন্য আরো দুটি আচ্ছাদন তৈরী করল। একটি বানানো হলো লাল রঙ করা ভেড়ার চামড়া দিয়ে আর অন্যটি বানানো হল মসৃণ চামড়া দিয়ে।
20 তারপর কারিগররা পবিত্র তাঁবুকে দাঁড় করানোর জন্য বাবলা কাঠের কাঠামো বানালো। 21 প্রতিটি কাঠামো ছিল 10 হাত লম্বা ও 1.5 হাত চওড়া। 22 প্রতিটি কাঠামো পাশাপাশি দুটি তক্তা জোড়া দিয়ে তৈরী হয়েছিল। প্রতিটি কাঠামো ছিল একইরকম। 23 এইভাবে তারা পবিত্র তাঁবুর কাঠামোগুলো তৈরী করল। তারা পবিত্র তাঁবুর দক্ষিণ দিকের জন্য 20টি কাঠামো তৈরী করল। 24 তারপর ঐ কাঠামোর জন্য 40টি রূপোর পায়া তৈরী করল। প্রত্যেকটি কাঠামোতে দুটি করে পায়া ছিল। প্রতিটি তক্তার ধারে একটি করে পায়া। 25 তাঁবুর উত্তর দিকের জন্যও তারা 20টি কাঠামো তৈরী করল। 26 তারা 40টি রূপোর ভিত্তি তৈরী করল, প্রত্যেক কাঠামোর জন্য দুটি করে ভিত্তি। 27 তাঁবুর পিছনে পশ্চিম দিকের জন্য তারা আরো দুটি কাঠামো তৈরী করল। 28 পবিত্র তাঁবুর পিছনে কোনার দিকের জন্যও তারা দুটি কাঠামো তৈরী করল। 29 এই কাঠামোগুলিকে একত্র করে নীচের দিকে জোড়া দেওয়া হল এবং ওপর দিকে একটা আংটা দিয়ে দুদিকের কোনার কাঠামোগুলি জোড়া হল। 30 পবিত্র তাঁবুর পশ্চিম দিকের জন্য মোট আটটি কাঠামো ছিল। সেখানে 16টি রূপোর পায়াও ছিল যা প্রতিটি কাঠামোতে দুটি করে লাগানো হল।
31 তারপর কারিগররা বাবলা কাঠ দিয়ে কাঠামোর আগল তৈরী করল। তাঁবুর প্রথম পাশে পাঁচটি আগল, 32 অন্য দিকে পাঁচটি আগল লাগালো এবং পেছনদিকে অর্থাৎ পশ্চিম দিকে পাঁচটি আগল লাগালো। 33 মাঝের আগলটিকে রাখা হল কাঠামোর একপ্রান্ত থেকে আরেক প্রান্ত জুড়ে। 34 কাঠামোগুলিকে সোনায় মুড়ে দেওয়া হল। তারপর তারা সোনার আংটা তৈরী করল আগলগুলি ধরে রাখার জন্য এবং আগলগুলি সোনা দিয়ে মুড়ে দেওয়া হল।
35 তারা মিহি শনের কাপড় দিয়ে পর্দাসমূহ তৈরী করল এবং তারা বিশেষ পর্দাটি তৈরী করবার জন্য নীল, বেগুনী ও লাল সূতো তৈরী করল। তারা সেগুলোর ওপর করূব দূতদের চেহারা সেলাই করল। 36 চারটি বাবলা কাঠের খুঁটি বানিয়ে সোনা দিয়ে মুড়ে দেওয়া হল। তারা খুঁটির জন্য সোনার আংটা তৈরী করল এবং চারটি করে রূপোর পায়া তৈরী করল। 37 তারপর তারা তাঁবুতে ঢোকার জন্য মিহি শনের কাপড় এবং নীল, বেগুনী ও লাল সুতো ব্যবহার করে দরজার পর্দা তৈরী করল। এর ওপর তারা সুতোর কাজও করল। 38 তারপর তারা এই ঢোকার দরজার পর্দার জন্য পাঁচটি খুঁটি ও আংটা তৈরী করল। তারপর এই খুঁটির ও পর্দার আংটার মাথাগুলি সোনা দিয়ে মুড়ে দেওয়া হল। তারপর খুঁটির জন্য পাঁচটি করে পিতলের পায়া প্রস্তুত করা হল।
যীশু এক আঙ্গুরলতা স্বরূপ
15 যীশু বললেন, “আমিই প্রকৃত আঙ্গুর লতা, আর আমার পিতা আঙ্গুর ক্ষেতের প্রকৃত কৃষক। 2 আমার যে শাখাতে ফল ধরে না, তিনি তা কেটে ফেলেন। আর যে শাখাতে ফল ধরে তাতে আরও বেশী করে ফল ধরার জন্য তিনি তা ছেঁটে পরিষ্কার করে দেন। 3 আমি তোমাদের যে শিক্ষা দিয়েছি তার ফলে তোমরা এখন শুচি হয়েছ। 4 তোমরা আমার সঙ্গে সংযুক্ত থাক, আর আমিও তোমাদের সঙ্গে সংযুক্ত থাকব। শাখা যেমন আঙ্গুর লতার সঙ্গে সংযুক্ত না থাকলে ফল ধরতে পারে না, তেমনি তোমরাও আমার সঙ্গে সংযুক্ত না থাকলে ফলবন্ত হতে পারবে না।
5 “আমিই আঙ্গুরলতা, আর তোমরা শাখা। যে আমাতে সংযুক্ত থাকে সে প্রচুর ফলে ফলবান হয়, কারণ আমাকে ছাড়া তোমরা কিছুই করতে পার না। 6 যদি কেউ আমাতে না থাকে, তবে তাকে শুকিয়ে যাওয়া শাখার মতো ছুঁড়ে ফেলা হয়। তারপর সেই সব শুকনো শাখাকে জড়ো করে তা আগুনে ছুঁড়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। 7 যদি তোমরা আমাতে থাক, আর আমার শিক্ষা যদি তোমাদের মধ্যে থাকে, তাহলে তোমরা যা ইচ্ছা কর, তা পাবে। 8 তোমরা প্রচুর ফলে ফলবান হয়ে প্রমাণ কর যে, তোমরা আমার প্রকৃত শিষ্য; আর তাতেই আমার পিতা মহিমান্বিত হবেন।
9 “পিতা যেমন আমায় ভালবাসেন, আমিও তোমাদের তেমনি ভালবাসি। তোমরা আমার ভালবাসার মধ্যে থাকো। 10 আমি আমার পিতার আদেশ পালন করেছি ও তাঁর ভালবাসায় আছি। একইভাবে তোমরা যদি আমার আদেশ পালন কর তবে তোমরাও আমার ভালবাসায় থাকবে। 11 আমি এসব কথা তোমাদের বললাম, যেন আমার যে আনন্দ আছে তা তোমাদের মধ্যেও থাকে; আর এইভাবে তোমাদের আনন্দ যেন সম্পূর্ণ হয়। 12 আমার আদেশ এই, আমি যেমন তোমাদের ভালোবেসেছি, তোমরাও তেমনি একে অপরকে ভালবাস। 13 বন্ধুদের জন্য প্রাণ দেওয়ার থেকে একজনের পক্ষে শ্রেষ্ঠ ভালবাসা আর কিছু নেই। 14 আমি তোমাদের যা যা আদেশ করছি তোমরা যদি তা পালন কর তাহলে তোমরা আমার বন্ধু। 15 আমি তোমাদের আর দাস বলছি না, কারণ মনিব কি করে, তা দাস জানে না। কিন্তু আমি তোমাদের বন্ধু বলছি, কারণ আমি পিতার কাছ থেকে যা যা শুনেছি সে সবই তোমাদের জানিয়েছি।
16 “তোমরা আমায় মনোনীত করনি, বরং আমিই তোমাদের মনোনীত করেছি। আমি তোমাদের নিয়োগ করেছি যেন তোমরা যাও ও ফলবন্ত হও, আর তোমাদের ফল যেন স্থায়ী হয় এই আমার ইচ্ছা। তোমরা আমার নামে যা কিছু চাও, পিতা তা তোমাদের দেবেন। 17 আমি তোমাদের এই আদেশ দিচ্ছি যে তোমরা একে অপরকে ভালবাস।
শিষ্যদের প্রতি যীশুর সতর্কবাণী
18 “জগত সংসার যদি তোমাদের ঘৃণা করে, তবে একথা মনে রেখো যে, সে প্রথমে আমায় ঘৃণা করল। 19 তোমরা যদি এই জগতের হও, তবে জগত যেমন তার আপনজনদের ভালবাসে, তেমনি তোমাদেরও ভালবাসবে। কিন্তু তোমরা এ জগতের নও। আমি এই জগত থেকে তোমাদের মনোনীত করেছি, এই কারণেই জগত সংসার তোমাদের ঘৃণা করে।
20 “যে শিক্ষার কথা আমি তোমাদের বললাম তা স্মরণে রেখো, একজন দাস তার মনিবের থেকে বড় নয়। তারা যদি আমার ওপর নির্যাতন করে থাকে তবে তারা তোমাদেরও নির্যাতন করবে। যদি তারা আমার শিক্ষা পালন করে থাকে তবে তোমাদের ও শিক্ষা পালন করবে। 21 তারা আমার জন্যই তোমাদের প্রতি এগুলি করবে, কারণ যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন তাঁকে তারা জানে না। 22 আমি যদি না আসতাম ও তাদের সঙ্গে কথা না বলতাম, তাহলে তাদের পাপ হত না। কিন্তু আমি এসেছি, তাদের সঙ্গে কথা বলেছি তাই তাদের এখন পাপ ঢাকবার কোন উপায় নেই।
23 “যে আমায় ঘৃণা করে, সে আমার পিতাকেও ঘৃণা করে। 24 যে কাজ আর কেউ কখনও করে নি, সেরূপ কাজ যদি আমি তাদের মধ্যে না করতাম, তবে তাদের পাপের জন্য তারা দোষী হত না। কিন্তু এখন তারা আমার কাজ দেখেছে, আর তা সত্ত্বেও তারা আমাকে ও পিতাকে উভয়কেই ঘৃণা করেছে। 25 শাস্ত্রের এই বাক্য পূর্ণ হওয়ার জন্যই এসব ঘটল: ‘তারা অকারণে আমায় ঘৃণা করেছে।’[a]
26 “আমি পিতার কাছ থেকে একজন সাহায্যকারী পাঠাবো, তিনি সত্যের আত্মা। তিনি যখন পিতার কাছ থেকে আসবেন, তিনি আমার বিষয়ে সাক্ষ্য দেবেন। 27 তোমরাও লোকদের কাছে অবশ্যই আমার কথা বলবে, কারণ তোমরা শুরু থেকে আমার সঙ্গে সঙ্গে আছ।
12 যে ব্যক্তি জ্ঞানলাভ করতে উদগ্রীব, সে তার নিজের সমালোচনা শুনলে ক্রুদ্ধ হবে না। যে ব্যক্তি নিজের ত্রুটি বিচ্যুতি সম্পর্কে অন্যের অনুযোগ শুনতে অপছন্দ করে সে নির্বোধ।
2 প্রভু ধার্মিকদের ওপর সন্তুষ্ট। কিন্তু যারা কু-পরিকল্পনা করে প্রভু তাদের দোষী হিসেবে বিচার করেন।
3 পাপীরা কখনই নিরাপদ নয়। কিন্তু ধার্মিকরা সর্বদা সুরক্ষিত ও নিরাপদ।
4 গুণবতী স্ত্রী তার স্বামীর আনন্দ এবং অহঙ্কারের উৎস। কিন্তু যে স্ত্রী তার স্বামীকে লজ্জিত করে সে তার স্বামীর অস্থিতে একটি অসুখের মতই অসহ্য।
5 ধার্মিকরা যা পরিকল্পনা করে তা সর্বদাই সৎ এবং সঠিক। কিন্তু লোকদের কু-পরিকল্পনা প্রতারণাপূর্ণ।
6 পাপী লোকরা তাদের কথাবার্তার মাধ্যমে অন্যদের আঘাত করে। কিন্তু ধার্মিক লোকদের কথাবার্তা মানুষকে বিপদ থেকে রক্ষা করে।
7 পাপী লোকরা ধ্বংসপ্রাপ্ত হয় এবং তাদের কিছুই অবশিষ্ট থাকে না। কিন্তু কোনও ধার্মিক ব্যক্তির মৃত্যুর পরও মানুষ তাকে দীর্ঘকাল মনে রাখে।
8 লোকরা জ্ঞানী মানুষের প্রশংসা করে। কিন্তু লোক কোনও নির্বোধ ব্যক্তিকে সম্মান করে না।
9 খাবার সংস্থান নেই অথচ ধনী হবার ভান করবার চেয়ে বরং একজন ভৃত্যের মালিক হয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হওয়া ভালো।
10 ভালো লোকরা তাদের পালিত পশুদের যত্ন নেয়। কিন্তু দুষ্টদের হৃদয়ে সহানুভূতি থাকে না।
11 যে কৃষক তার জমিতে পরিশ্রম করে তার পর্যাপ্ত খাদ্য থাকবে। কিন্তু যে ব্যক্তি অসার চিন্তা ভাবনায় সময় নষ্ট করে সে নির্বোধ।
12 পাপী লোকরা যা আকাঙ্খা করে দুষ্ট লোকরা তাই চায়, কিন্তু সেটা ভালো লোকদের দেওয়া হবে।
13 দুষ্ট লোকরা নির্বোধের মত কথা বলে এবং প্রায়শঃই নিজেদের কথার ফাঁদে জড়িয়ে পড়ে। ধার্মিকরা এধরণের বিপদের সম্মুখীন হয় না।
14 লোকরা তাদের মুখ নিঃসৃত কথার জন্য এবং হাতের কাজের জন্যও পুরস্কৃত হয়।
15 নির্বোধরা ভাবে তাদের পথই শ্রেষ্ঠ পথ। কিন্তু বিবেচকরা অন্যের পরামর্শ খোলামনে গ্রহণ করে।
16 নির্বোধরা সহজেই হতাশ হয়ে পড়ে। বুদ্ধিমান লোকরা অপমানকে অগ্রাহ্য করে।
17 সত্যভাষীরা সর্বদাই বিশ্বাসযোগ্য। কিন্তু মিথ্যাবাদীরা অপরকে বিপদের দিকে ঠেলে দেয়।
18 যে ব্যক্তি চিন্তাভাবনা না করে কথাবার্তা বলে তার বাক্য তরবারির মত আঘাত করতে পারে। কিন্তু বিচক্ষণ ব্যক্তি কথা বলার সময় সজাগ থাকে। তাঁর বাক্য ঐ আঘাতের যন্ত্রণা মুছে দেয়।
19 যে ব্যক্তি মিথ্যা কথা বলে তার বাক্য ক্ষণস্থায়ী। কিন্তু সত্য চিরকালই অমর।
20 যারা অপরের বিরুদ্ধে কু-পরিকল্পনা করে তারা নিজেদেরই ঠকায়। যারা শান্তির জন্য কাজ করে তারা সুখী।
21 ঈশ্বর ধার্মিকদের সর্বদা রক্ষা করবেন। কিন্তু পাপীরা অসংখ্য সমস্যায় পড়বে।
22 প্রভু মিথ্যাবাদীদের ঘৃণা করেন। তিনি সত্যবাদীদের প্রতি সন্তুষ্ট।
23 বুদ্ধিমান লোকরা যা জানে কখনও তার সবটা বলে না। কিন্তু একজন নির্বোধ ব্যক্তি, সে যা জানে সবই বলে দিয়ে নিজেকে মূর্খ প্রতিপন্ন করে।
24 কঠোর পরিশ্রমীদের অন্যান্য শ্রমিকদের দায়িত্বে রাখা হবে। কিন্তু যে অলস তাকে চিরকাল অন্যের দাসত্ব করে যেতে হবে।
25 চিন্তা মানুষের সুখ ও আনন্দ কেড়ে নেয়। কিন্তু একটি দয়া বৎসল শব্দ মানুষকে আনন্দিত করে।
26 বন্ধু নির্বাচনে একজন ধার্মিক মানুষ বিচক্ষণতার পরিচয় দেয়। কিন্তু একজন দুষ্ট ব্যক্তি সর্বদা ভুল বন্ধু নির্বাচন করে।
27 একজন অলস ব্যক্তি কখনও তার যে জিনিস প্রয়োজন তার পেছনে ছোটে না। ধন আসে কঠিন পরিশ্রমীদের কাছে।
28 তুমি যদি সঠিক পথে জীবনযাপন কর তাহলে তুমি সত্য জীবন পাবে। ন্যায়পরায়ণতার পথ জীবনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যায়।
5 তোমরা ঈশ্বরের সন্তান, তিনি তোমাদের ভালবাসেন; তাই ঈশ্বরের মতো হও। 2 ভালবাসাপূর্ণ জীবনযাপন কর। খ্রীষ্ট আমাদের যেমন ভালবেসেছেন তেমনি করে অপরকে ভালবাস। খ্রীষ্ট আমাদের জন্য নিজেকে ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে সৌরভযুক্ত বলিরূপে উৎসর্গ করলেন।
3 তোমাদের মধ্যে যেন ব্যভিচার না থাকে। তোমাদের মধ্যে কোনরকম নৈতিক অশুদ্ধতা ও লোভ যেন না থাকে। কারণ ঈশ্বরের পবিত্র লোকদের মধ্যে এসব থাকা ঠিক নয়। 4 লজ্জাজনক কোন কথাবার্তা তোমাদের মধ্যে যেন না হয়। বোকার মতো কথা বলো না, নোংরা রসিকতা করো না। এইসব তোমাদের উপযুক্ত নয়। তোমাদের উচিত ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দেওয়া। 5 একথা তোমাদের নিশ্চিতরূপে জানা ভাল যে যারা যৌন পাপে লিপ্ত অথবা অপবিত্র জীবনযাপন করে অথবা লোভী, তারা খ্রীষ্টের ও ঈশ্বরের রাজ্যে কোন স্থান পাবে না, কারণ যে লোভী সে তো মূর্ত্তি পূজারী।
6 দেখো, কেউ যেন অসার কথাবার্তা বলে তোমাদের প্রতারিত না করে। যারা অবাধ্য তাদের ওপর ঈশ্বরের ক্রোধ নেমে আসবে। 7 তাই এইসব লোকদের সঙ্গে সম্পর্ক রেখো না। 8 আমি তোমাদের এসব কথা বলছি, কারণ এক সময় তোমরা অন্ধকারে জীবনযাপন করতে; কিন্তু এখন প্রভুর অনুসারী হয়ে তোমরা আলোয় এসেছ, তাই তোমরা এখন জ্যোতির সন্তানদের মতো জীবনযাপন করো। 9 সবরকমের মঙ্গলভাব, নীতিপরায়ণতা ও সততা জ্যোতির দ্বারা উৎপন্ন হয়। 10 প্রভু কিসে সন্তুষ্ট হন তোমাদের তা শেখা উচিত। 11 যারা অন্ধকারে চলে তাদের মন্দ কাজের অংশীদার হয়ো না। ঐসব কাজে কোন সুফল পাওয়া যায় না। সৎ কাজে লিপ্ত থাকো; অন্ধকারে যা করা হয় তা যে মন্দ তা দেখিয়ে দাও। 12 লোকরা অন্ধকারে গোপনে যেসব কাজ করে তা উচ্চারণ করাও লজ্জার বিষয়। 13 ঐসব বিষয় যে কত মন্দ যখন তা আমরা দেখিয়ে দিই তখন সেই আলোই সব কিছু প্রকাশ করে। 14 যখন সব কিছু সহজেই দেখা যায় তখন সে সব আলোর মতো স্পষ্ট হয়ে যায়। এই জন্যই বলা হয়েছে:
“হে নিদ্রিত লোক, জাগো!
আর মৃতদের মধ্যে থেকে ওঠ,
তাতে খ্রীষ্ট তোমার ওপর আলো বর্ষণ করবেন।”
15 তাই তোমরা কিরকম জীবনযাপন করছ, সেদিকে বিশেষ সতর্ক দৃষ্টি রেখো। র্নির্বোধ লোকদের মত চলো না, কিন্তু জ্ঞানবানের মতো চল। 16 সময় বড় খারাপ, এইজন্য ভাল কিছু করার সুযোগ পেলে তার সদ্বব্যবহার করো। 17 তাই নিজেদের জীবন নিয়ে অবোধের মতো চলো না। বুঝতে চেষ্টা কর যে প্রভু তোমাকে দিয়ে কি কাজ করাতে চান। 18 দ্রাক্ষারস পান করে মাতাল হয়ো না, তাতে আত্মিক জীবন ধ্বংস হয়ে যাবে; তার পরিবর্তে পবিত্র আত্মায় পূর্ণ হও। 19 গীতসংহিতার স্তোত্র ও আত্মিক সংকীর্তনে তোমরা একে অপরের সাথে আলাপ কর। গাও আর অন্তরে প্রভুর উদ্দেশ্যে সুরেলা সঙ্গীত রচনা কর। 20 আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের নামে সব সময় সব কিছুর জন্য আমাদের ঈশ্বর ও পিতাকে সর্বদা ধন্যবাদ দাও।
স্ত্রী এবং স্বামী
21 স্বেচ্ছায় তোমরা একে অপরের কাছে নত থাক। খ্রীষ্টের প্রতি তোমাদের শ্রদ্ধার জন্য তা কর।
22 বিবাহিতা নারীরা, তোমরা যেমন প্রভুর অনুগত তেমনি তোমাদের স্বামীদের অনুগত থাক। 23 কারণ স্বামী তার স্ত্রীর মস্তকস্বরূপ যেমন খ্রীষ্ট তাঁর মণ্ডলীর মস্তক, তিনি তো তাঁর দেহেরও ত্রাণকর্তা। 24 তাই মণ্ডলী যেমন খ্রীষ্টের অনুগত, তেমনি স্ত্রীরা, তোমরা সব বিষয়ে স্বামীর অনুগত থেকো।
25 স্বামীরা, তোমরাও তোমাদের স্ত্রীদের অনুরূপ ভালবাসো, যেমন খ্রীষ্ট তাঁর মণ্ডলীকে ভালবেসেছেন ও তার জন্য নিজের প্রাণ উৎসর্গ করেছেন। 26 মণ্ডলীকে পবিত্র করার জন্য খ্রীষ্ট মৃত্যুভোগ করলেন। সুসমাচারের বাক্যরূপ জলে ধুয়ে তাকে পরিষ্কার করলেন, যাতে তিনি তা নিজেকে উপহার দিতে পারেন। 27 খ্রীষ্ট তাকে পরিষ্কার করলেন যাতে সে নিজেকে একজন জ্যোতির্ময়ী বধূ হিসাবে পবিত্র ও অনিন্দনীয়ভাবে উপহার দিতে পারে, যাতে তার কোন কলঙ্ক বা কুজন বা কোন অসম্পূর্ণতা না থাকে।
28 স্বামীরা যেমন নিজেদের দেহকে ভালবাসে তেমনি তারা যেন তাদের স্ত্রীকে ভালবাসে। যে কেউ তার স্ত্রীকে ভালবাসে, সে নিজেকেই ভালবাসে। 29 কারণ কেউ তার নিজের দেহকে ঘৃণা করে না, বরং নিজের দেহকে খাদ্য ইত্যাদি দিয়ে পুষ্ট করে তোলে এবং ভাল করে তার যত্ন নেয়। অনুরূপভাবে খ্রীষ্ট মণ্ডলীকে আহার দেন ও তার যত্ন করেন, 30 কারণ আমরা তাঁর দেহেরই অঙ্গ প্রত্যঙ্গ। 31 শাস্ত্রে যেমন বলছে: “এইজন্য মানুষ তার বাবা-মাকে ছেড়ে তার স্ত্রীর সঙ্গে মিলিত হবে ও তারা উভয়ে এক দেহ হবে।”(A) 32 এই নিগূঢ় সত্য মহান; আর আমি বলি এটা খ্রীষ্ট ও তাঁর মণ্ডলীর উদ্দেশ্যে প্রযোজ্য। 33 যাইহোক্, তোমরা প্রত্যেকে নিজেদের স্ত্রীকে ভালবাসবে যেমন তোমরা নিজেদের ভালবাস; আর স্ত্রীরও উচিত তার স্বামীকে শ্রদ্ধা করা।
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International