M’Cheyne Bible Reading Plan
বিশ্রামের দিন সংক্রান্ত নিয়ম
35 মোশি সমস্ত ইস্রায়েলবাসীকে একত্র করল। সে তাদের বলল, “প্রভু তোমাদের যা আদেশ করেছেন তা আমি তোমাদের বলব:
2 “তোমরা ছয়দিন ধরে কাজ করবে কিন্তু সপ্তম দিনটি বিশেষভাবে বিশ্রামের জন্য থাকবে। তোমরা ঐদিন বিশ্রাম নেবে এবং এইভাবে প্রভুকে সম্মান জানাবে। যে ব্যক্তি সপ্তম দিনে কাজ করবে তাকে হত্যা করা হবে। 3 ঐ বিশ্রামের দিন তোমাদের বাড়ীর কোথাও তোমরা আগুন পর্যন্ত জ্বালাবে না।”
পবিত্র তাঁবুর জন্য জিনিসপত্র
4 মোশি ইস্রায়েলের সমস্ত মণ্ডলীকে বলল, “এইগুলি হল প্রভুর আদেশসমূহ: 5 প্রভুর জন্য বিশেষ উপহার সংগ্রহ কর। প্রত্যেকে মনে মনে ঠিক করে নেবে তোমরা কি দেবে। তারপর তোমরা প্রভুর কাছে উপহারসমূহ আনবে। সোনা, রূপো, পিতল; 6 নীল, বেগুনী ও লাল সুতো ও সূক্ষ্ম মসীনা বস্ত্র; ছাগলের লোম; 7 লাল রঙ করা মেষ চর্ম ও মসৃণ চর্ম; বাবলা কাঠ; 8 প্রদীপের জন্য তেল, অভিষেকের তেলের জন্য মশলাপাতি এবং সুগন্ধি ধূপকাঠির জন্য মশলা এনে তোমরা প্রভুকে দেবে। 9 এফোদ ও বক্ষাবরণের জন্য গোমেদ ও অন্যান্য মূল্যবান মণিমাণিক্যও সঙ্গে এনো।
10 “তোমাদের মধ্যে যারা দক্ষ কারিগর তারা এসে প্রভুর আদেশমতো জিনিস তৈরী করো: 11 পবিত্র তাঁবু, তার বাইরের তাঁবু, তার আস্তরণ, আংটাগুলি, তক্তাসমুহ, আগল, খুঁটি ও ভিত্তিসমূহ; 12 পবিত্র সিন্দুক, তার খুঁটিগুলি, আস্তরণ এবং পর্দা যা পবিত্র সিন্দুক যেখানে রাখা আছে সেই জায়গা ঢেকে দেয়; 13 সেই টেবিল ও তার পায়াগুলি, টেবিলের ওপরের সমস্ত জিনিস এবং টেবিলের ওপরের বিশেষ রুটি; 14 বাতির জন্য বাতিদানসমূহ, তার আনুষঙ্গিক অঙ্গ এবং বাতির জন্য তেল; 15 ধূপ বেদী এবং তার খুঁটিসমূহ; অভিষেকের তেল এবং সুগন্ধি ধূপ; যে পর্দা পবিত্র তাঁবুর প্রবেশদ্বার ঢেকে রাখবে; 16 হোমবলির জন্য বেদী এবং তার পিতলের জাল, খুঁটিগুলি এবং তার বাসনকোসন, পিতলের পাত্র ও তার দান; 17 প্রাঙ্গণের চারদিকের পর্দা, তাদের খুঁটি ও ভিত্তিসমূহ এবং প্রাঙ্গণের প্রবেশদ্বারের পর্দা 18 সমাগম তাঁবুর জন্য এবং প্রাঙ্গণের জন্য কীলকগুলি এবং তাদের দড়িগুলি; 19 পবিত্র স্থানে পরার জন্য যাজকের বিশেষ বস্ত্র—এসবই তোমরা আনবে। এই বিশেষ বস্ত্র যাজক হারোণ ও তার পুত্ররা পরবে। তারা যখন যাজক হবে তখন তারা এই বস্ত্র পরবে।”
লোকদের মহান নৈবেদ্য
20 তারপর ইস্রায়েলের সমগ্র মণ্ডলী মোশির কাছ থেকে চলে গেল। 21 প্রত্যেকে, যাদের হৃদয়ে প্রবৃত্তি ও মনে ইচ্ছা হল তারা প্রভুর জন্য উপহার নিয়ে এল। এই উপহার সামগ্রীগুলি সমাগম তাঁবুর জন্য, তাঁবুর ভেতরের প্রয়োজনীয় জিনিস এবং বিশেষ বস্ত্র তৈরীর কাজে লাগানো হল। 22 পুরুষ, স্ত্রী যারা ইচ্ছুক ছিল প্রভুর জন্য উপহার সামগ্রী নিয়ে এলো। তারা পিন, দুল, আংটি ও অন্যান্য গয়না নিয়ে এল এবং সমস্ত প্রভুকে দিয়ে দিল। এটা ছিল প্রভুর জন্য বিশেষ নৈবেদ্য।
23 যে সমস্ত লোকের কাছে মিহি শনের কাপড় ছিল এবং নীল, বেগুনী ও লাল সুতো ছিল তারা তা নিয়ে প্রভুর কাছে এলো। যাদের কাছে ছাগলের লোম বা লাল রঙ করা মেষের চামড়া বা মসৃণ চামড়া ছিল তারা সেগুলো নিয়ে এল এবং প্রভুকে দিল। 24 যারা প্রভুকে রূপো বা পিতল দিতে চাইল তারা সেটা নিয়ে এল। যাদের কাছে বাবলা কাঠ ছিল যা সমাগম তাঁবু নির্মাণের কাজে ব্যবহার করা যেতে পারে তারা সেটা আনল এবং তা প্রভুকে দিল। 25 প্রতিটি দক্ষ মহিলা তাদের হাত দিয়ে সুতো কেটে মিহি শনের কাপড় বুনল এবং লাল, নীল ও বেগুনী সুতো কাটল। 26 ঐ দক্ষ মহিলারা যারা সাহায্য করতে চাইল, তারা ছাগলের লোম থেকে কাপড় তৈরী করল।
27 ইস্রায়েলবাসীদের দলপতিরা গোমেদ ও অন্যান্য মণিমাণিক্য নিয়ে এলো যেগুলি এফোদ ও যাজকের বক্ষাবরণের উপর লাগানো হবে। 28 তারা মশলা ও জলপাই তেলও নিয়ে এল, এগুলি সুগন্ধি ধূপ, অভিষেকের তেল ও প্রদীপের তেল হিসেবে ব্যবহার করবার জন্য।
29 সমস্ত পুরুষ ও নারী, যারা সাহায্য করতে চাইছিল তারা প্রভুর জন্য উপহার সামগ্রী নিয়ে এল। তারা নিজেদের ইচ্ছায় স্বতঃস্ফূর্তভাবেই এই উপহারসামগ্রী প্রদান করল। প্রভু মোশি ও তার লোকদের যেসব জিনিস বানাতে আদেশ করেছিলেন সেইসব জিনিসই এই উপহার সামগ্রীর সাহায্যে তৈরী করা হল।
বৎসলেল ও অহলীয়াব
30 তারপর মোশি ইস্রায়েলবাসীদের বলল, “দেখ, প্রভু যিহূদা বংশের হূরের পৌত্র, উরির পুত্র বৎসলেলকে মনোনীত করেছেন। 31 তিনি তাকে ঐশ্বরিক ক্ষমতা দিয়েছেন। তিনি তাকে জ্ঞানে ও সর্বপ্রকার বিদ্যায় পারদর্শী করে তুলেছেন। 32 সে সোনা, রূপো ও পিতলের জিনিস তৈরী করে তার ওপর কারুকার্য করতে পারে। 33 সে মূল্যবান পাথর ও মণিমাণিক্য কেটে বসাতে পারে। সে কাঠ দিয়েও সর্বপ্রকার জিনিস তৈরী করতে পারে। 34 প্রভু বৎসলেল ও অহলীয়াবকে শিক্ষাদান করার বিশেষ ক্ষমতা দিয়েছেন। অহলীয়াব হল দান বংশীয় অহীষামকের পুত্র। 35 প্রভু এই দুজনকেই সর্বপ্রকার কাজ করার জন্য বিশেষ দক্ষতা দিয়েছেন। তারা ছুতোর এবং ধাতুর কাজে দক্ষ। তারা মিহি শনের কাপড়, নীল, বেগুনী এবং লাল সুতোর সাহায্যে কাপড়ে কারুকার্য করে ও কাপড় বোনে। তারা পশম দিয়েও কাপড় বুনতে পারে।
শিষ্যদের প্রতি যীশুর সান্ত্বনা
14 “তোমাদের হৃদয় বিচলিত না হোক্। ঈশ্বরের উপর বিশ্বাস রাখো, আর আমার প্রতিও আস্থা রাখো। 2 আমার পিতার বাড়িতে অনেক ঘর আছে, যদি না থাকতো আমি তোমাদের বলতাম। আমি তোমাদের থাকবার একটা জায়গা ঠিক করতে যাচ্ছি। 3 সেখানে গিয়ে জায়গা ঠিক করার পর আমি আবার আসব ও তোমাদের আমার কাছে নিয়ে যাব, যাতে আমি যেখানে থাকি তোমরাও সেখানে থাকতে পার। 4 আমি যেখানে যাচ্ছি তোমরা সকলেই সে জায়গার পথ চেন।”
5 থোমা তাঁকে বললেন, “প্রভু, আপনি কোথায় যাচ্ছেন তা আমরা জানি না। আমরা সেখানে যাবার পথ কিভাবে জানবো?”
6 যীশু তাঁকে বললেন, “আমিই পথ, আমিই সত্য ও জীবন। পিতার কাছে যাবার আমিই একমাত্র পথ। 7 তোমরা যদি সত্যি আমাকে জেনেছ, তবে পিতাকেও জানতে পেরেছ। আর এখন থেকে তোমরা তাঁকে জেনেছ ও তাঁকে দেখেছ।”
8 ফিলিপ যীশুকে বললেন, “প্রভু, আপনি পিতাকে আমাদের দেখান, তাহলেই যথেষ্ট হবে।”
9 যীশু তাঁকে বললেন, “আমি তোমাদের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে রয়েছি; আর ফিলিপ, তোমরা এখনও আমায় চিনলে না? যে কেউ আমায় দেখেছে সে পিতাকে দেখেছে। তোমরা কি করে বলছ, ‘পিতাকে আমাদের দেখান’? 10 তুমি কি বিশ্বাস কর না যে আমি পিতার মধ্যে আছি আর পিতাও আমার মধ্যে আছেন? আমি তোমাদের যে সকল কথা বলি তা নিজের থেকে বলি না। আমার মধ্যে যিনি আছেন সেই পিতা তাঁর নিজের কাজ করেন। 11 যখন আমি বলি যে আমি পিতার মধ্যে আছি আর পিতাও আমার মধ্যে আছেন, তখন আমাকে বিশ্বাস কর। যদি তা না কর, তবে আমার দ্বারা কৃত সব অলৌকিক কাজের কারণেই বিশ্বাস কর।
12 “আমি তোমাদের সত্যি বলছি, যে আমার ওপর বিশ্বাস রাখে, আমি যে কাজই করি না কেন, সেও তা করবে, বলতে কি সে এর থেকেও আরো মহান কাজ করবে, কারণ আমি পিতার কাছে যাচ্ছি। 13 আর তোমরা আমার নামে যা কিছু চাইবে, আমি তা পূর্ণ করব, যেন পিতা পুত্রের দ্বারা মহিমান্বিত হন। 14 তোমরা যদি আমার নামে আমার কাছে কিছু চাও, আমি তা পূর্ণ করব।
পবিত্র আত্মার প্রতিশ্রুতি
15 “তোমরা যদি আমায় ভালবাস তবে তোমরা আমার সমস্ত আদেশ পালন করবে। 16 আমি পিতার কাছে চাইব, আর তিনি তোমাদের আর একজন সাহায্যকারী[a] দেবেন, যেন তিনি চিরকাল তোমাদের সঙ্গে থাকেন। 17 তিনি সত্যের আত্মা,[b] যাঁকে এই জগত সংসার মেনে নিতে পারে না, কারণ জগত তাঁকে দেখে না বা তাঁকে জানে না। তোমরা তাঁকে জান, কারণ তিনি তোমাদের সঙ্গে সঙ্গেই থাকেন, আর তিনি তোমাদের মধ্যেই থাকবেন।
18 “আমি তোমাদের অনাথ রেখে যাবো না। আমি তোমাদের কাছে আসব। 19 আর কিছুক্ষণ পর এই জগত সংসার আর আমায় দেখতে পাবে না, কিন্তু তোমরা আমায় দেখতে পাবে। কারণ আমি বেঁচে আছি বলেই তোমরাও বেঁচে থাকবে। 20 সেই দিন তোমরা জানবে যে আমি পিতার মধ্যে আছি, তোমরা আমার মধ্যে আছ, আর আমি তোমাদের মধ্যে আছি। 21 যে আমার নির্দেশ জানে এবং সেগুলি সব পালন করে, সেই আমায় প্রকৃত ভালবাসে। যে আমায় ভালবাসে, পিতাও তাঁকে ভালবাসেন আর আমিও তাকে ভালবাসি। আমি নিজেকে তার কাছে প্রকাশ করব।”
22 যিহূদা (যিহূদা ঈষ্করিয়োত নয়) তাঁকে বলল, “প্রভু কেন আপনি জগতের কাছে নিজেকে প্রকাশ না করে আমাদের কাছেই নিজেকে প্রকাশ করবেন?”
23 এর উত্তরে যীশু তাঁকে বললেন, “যদি কেউ আমায় ভালবাসে তবে সে আমার শিক্ষা অনুসারে চলবে, আর আমার পিতা তাকে ভালবাসবেন, আর আমরা তার কাছে আসব ও তার সঙ্গে বাস করব। 24 যে আমায় ভালবাসে না, সে আমার শিক্ষা পালন করে না। আর তোমরা আমার যে শিক্ষা শুনছ তা আমার নয়, কিন্তু যিনি আমায় পাঠিয়েছেন এই শিক্ষা সেই পিতার।
25 “আমি তোমাদের সঙ্গে থাকতে থাকতেই এইসব কথা বললাম, 26 কিন্তু সেই সাহায্যকারী পবিত্র আত্মা, যাঁকে পিতা আমার নামে পাঠিয়ে দেবেন, তিনি তোমাদের সব কিছু শিক্ষা দেবেন, আর আমি তোমাদের যা যা বলেছি, সে সকল বিষয় তিনি তোমাদের স্মরণ করিয়ে দেবেন।
27 “আমি তোমাদের কাছে শান্তি রেখে যাচ্ছি। আমার নিজের শান্তি আমি তোমাদের দিচ্ছি। জগত সংসার যেভাবে শান্তি দেয় আমি সেইভাবে তা দিচ্ছি না। তোমাদের অন্তর উদ্বিগ্ন অথবা শঙ্কিত না হোক্। 28 তোমরা শুনেছ যে, ‘আমি তোমাদের বলেছি যে আমি যাচ্ছি আর আমি আবার তোমাদের কাছে আসব।’ তোমরা যদি আমায় ভালবাস তবে এটা জেনে খুশী হবে যে আমি পিতার কাছে যাচ্ছি, কারণ পিতা আমার থেকে মহান। 29 তাই এসকল ঘটার আগেই আমি এসব তোমাদের এখন বললাম, যাতে ঘটলে পর তোমরা বিশ্বাস কর।
30 “আমি তোমাদের সঙ্গে আর বেশীক্ষণ কথা বলব না, কারণ এই জগতের অধিপতি আসছে। আমার ওপর তার কোন দাবী নেই। 31 জগত সংসার যাতে জানতে পারে যে আমি পিতাকে ভালবাসি, তাই পিতা আমায় যেমন আদেশ করেন আমি সেরকমই করি।
“এখন এস! আমরা এখান থেকে যাই।”
11 কিছু মানুষ অপরকে প্রতারিত করতে ভুযো দাঁড়িপাল্লা ব্যবহার করে। তাদের দাঁড়িপাল্লা সঠিক ওজন দেখায় না। প্রভু ঐ ভুযো দাঁড়িপাল্লাকে ঘৃণা করেন। যথাযথ বাটখারা প্রভুকে তুষ্ট করে।
2 যারা অহঙ্কারী তাদের লজ্জায় ফেলা হবে। কিন্তু বিনয়ীরা জ্ঞান অর্জন করবে।
3 ভালো লোকরা সততা দ্বারা চালিত হয়। কিন্তু অপরকে প্রতারিত করতে গিয়ে পাপীরা নিজেদের ধ্বংস করে।
4 ঈশ্বর যে দিন লোকদের শাস্তি দেবেন, ধনসম্পদ কোন কাজে লাগবে না। কিন্তু ধার্মিকতা মানুষকে মৃত্যু থেকে রক্ষা করবে।
5 একজন সৎ ব্যক্তির সততাই তার জীবনকে মসৃণ করবে। কিন্তু পাপীরা তাদের দুষ্ট কর্মের জন্য ধ্বংস হবে।
6 ধার্মিকতা সৎ লোকদের রক্ষা করে। কিন্তু দুষ্ট লোকরা তাদের কামনার জালেই আবদ্ধ হয়।
7 একজন দুষ্ট ব্যক্তির মৃত্যুর পর তার আর কোনও আশা নেই। ধনসম্পত্তির জন্য তার সমস্ত আশাও নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়।
8 একজন ভালো ব্যক্তিকে সংকট থেকে মুক্ত করা হবে এবং ঐ সংকট আসবে একজন দুষ্ট লোকের কাছে।
9 দুষ্ট ব্যক্তি তার কথার দ্বারা অন্য লোকের ক্ষতি করতে পারে। কিন্তু ভালো লোকরা তাদের জ্ঞান দ্বারা সুরক্ষিত হয়।
10 ধার্মিকদের সাফল্যে সমগ্র নগর আনন্দে মেতে ওঠে। কিন্তু পাপীদের মৃত্যুতেও মানুষ উল্লসিত হয়।
11 ভালো লোকদের আশীর্বাদে একটি শহর মহান হয়ে ওঠে। কিন্তু দুষ্ট লোকদের কথা একটি শহরকে ধ্বংস করতে পারে।
12 সুবিবেচনাহীন লোকরা তাদের প্রতিবেশীদের সম্বন্ধে বিরাগ দেখায়। কখন নীরব থাকা উচিৎ বিচক্ষণ ব্যক্তি তা জানে।
13 যে ব্যক্তি অন্য লোকের গোপন কথা ফাঁস করে দেয় তাকে বিশ্বাস করা যায় না। যে ব্যক্তি গুজব ছড়ায়় না তাকে বিশ্বাস করা যায়।
14 যদি একটি জাতির নেতাদের বিজ্ঞ দিশাজ্ঞানের অভাব থাকে তাহলে সেই জাতির পতন অনিবার্য। কিন্তু অনেক সু-উপদেষ্টারা একটি জাতিকে নিরাপদ রাখতে পারে।
15 যে একজন অপরিচিত লোকের ঋণ শোধ করবার প্রতিশ্রুতি দেয় তাকে দুঃখ পেতে হবেই। অন্যের জামিনদার হতে যে অস্বীকার করে, সে নিরাপদ।
16 একজন রমণী তার সৌন্দর্য্যের জন্য অন্যদের শ্রদ্ধা অর্জন করে। দুরন্ত, দুঃসাহসী মানুষ কেবল টাকা লাভ করতে পারে।
17 দয়ালু ব্যক্তিরা সর্বদা লাভবান হবে। কিন্তু নিষ্ঠুর লোকরা তাদের নিজেদের অশান্তির কারণ হয়।
18 দুষ্ট লোক অপরকে প্রতারিত করে তাদের সম্পত্তি কেড়ে নেয়। কিন্তু যে সব লোকরা ধর্মসঙ্গত কাজকর্ম করে তারা অবশ্যই পুরস্কার লাভ করবে।
19 ধার্মিকতা জীবন নিয়ে আসে। দুষ্ট লোকরা পাপের পিছনে ছোটে এবং নিজেদের মৃত্যু ডেকে আনে।
20 যারা পাপ কাজ করতে ভালোবাসে প্রভু তাদের ঘৃণা করেন। কিন্তু যে সব লোক সৎ জীবনযাপন করে প্রভু তাদের ওপর সন্তুষ্ট।
21 একথা সত্যি যে দুষ্ট লোকরা উপযুক্ত শাস্তি পাবেই। কিন্তু ভালো লোকরা ও তাদের উত্তরপুরুষ শাস্তি থেকে মুক্তি পাবে।
22 একজন সুন্দরী কিন্তু মূঢ় নারী যেন শুয়োরের নাকে সোনার নথের মত।
23 যখন ভালো লোকদের ইচ্ছাপূর্ণ হয় তখন ভালোই হয়। কিন্তু দুষ্ট লোকদের কামনা সফল হলে তা শুধু শাস্তি নিয়ে আসে।
24 যে ব্যক্তি মুক্ত হস্তে দান করে সে আরও বেশী পাবে। যে ব্যক্তি বিতরণ করতে অস্বীকার করে সে অচিরেই গরীব হয়ে যাবে।
25 যে ব্যক্তি দরাজ ভাবে দান করে সে-ই উপকৃত হবে। যে অন্যদের সাহায্য করে সে সাহায্য পাবে।
26 যে ব্যক্তি তার শস্য বিক্রী করতে অস্বীকার করে, লোকে তাকে অভিশাপ দেয়। অন্য লোকের খিদে মেটাতে যে তার শস্য বিতরণ করে তাকে সকলেই ভালোবাসে।
27 যে অন্যদের ভালো চায়, ভালোত্ব তাকে অনুসরণ করে। কিন্তু যারা মন্দের পেছনে ছোটে তারা মন্দই পায়।
28 নিজের ধনসম্পত্তির ওপর যে আস্থা রাখে সে শুকনো পাতার মতই ঝরে যাবে। কিন্তু ভালো লোকরা সবুজ পাতার মত উন্নতি করবে।
29 যে ব্যক্তি নিজের পরিবারকে বিপন্ন করে সে কোন কিছুই লাভ করতে পারে না এবং পরিশেষে নির্বোধরা বুদ্ধিমানদের দাসত্ব করতে বাধ্য হয়।
30 ধার্মিকের কর্মফল জীবনবৃক্ষের মত। জ্ঞানবান ব্যক্তিগন অপরকে জীবনদান করে।
31 ভালো লোকরা যেমন তাদের পুরস্কার এই জীবনে পায়, তেমনি মন্দ লোকরাও তাদের যা প্রাপ্য তা পাবে।
দেহের একতা
4 আমি প্রভুর বলে কারাগারে বন্দী। ঈশ্বর তোমাদের মনোনীত করেছেন যেন তোমরা তাঁর লোক হতে পার। আমি তোমাদের সেইরকম জীবনযাপন করতে অনুরোধ করি, যেভাবে ঈশ্বরের লোকদের জীবনযাপন করা উচিত। 2 তোমরা সর্বদাই নতনম্র থাক, সহিষ্ণু হও, ভালবেসে একে অপরকে গ্রহণ কর। 3 পবিত্র আত্মা তোমাদের যুক্ত করেছিলেন। সেই একতা রক্ষা করার জন্য সর্বোত্তমভাবে চেষ্টা কর। শান্তি তোমাদের একসঙ্গে ধরে থাকুক। 4 দেহ এক ও আত্মা এক, ঠিক সেইরকমই ঈশ্বর তোমাদের সকলকে এক প্রত্যাশার জন্য আহ্বান করেছেন। 5 কেবল একই প্রভু, এক বিশ্বাস ও এক বাপ্তিস্ম রয়েছে; 6 আর আছেন এক ঈশ্বর যিনি সকলের পিতা। যিনি সকলের ওপরে কর্তৃত্ত্ব করেন। তিনি সর্বত্র আছেন ও সবকিছুতে আছেন।
7 খ্রীষ্ট আমাদের প্রত্যেককে বিশেষ বিশেষ বরদান দিয়েছেন। যাকে যা দিতে ইচ্ছা করেছেন তাকে তা দিয়েছেন। 8 তাই শাস্ত্র বলছে:
“তিনি উর্দ্ধে আকাশে গেলেন,
সঙ্গে বন্দীদের নিয়ে গেলেন,
আর মানুষের হাতে তুলে দিয়ে গেলেন নানা বরদান।”(A)
9 যখন বলা হয়েছে, “তিনি উর্দ্ধে উঠে গেলেন,” তার অর্থ কি? তার অর্থ এই যে প্রথমে তিনি নিম্নে পৃথিবীতে নেমেছিলেন। 10 সেই জন যিনি নেমে এসেছিলেন (খ্রীষ্ট) তিনি সেই একই ব্যক্তি যিনি আকাশের থেকেও উচ্চে উঠেছিলেন, যাতে সব কিছুই তাঁর দ্বারা পূর্ণ করতে পারেন। 11 সেই খ্রীষ্ট লোকদের বরদান করলেন, তাদের কয়েকজনকে প্রেরিত করলেন, আবার কয়েকজনকে ভাববাদী, কয়েকজনকে সুসমাচার প্রচারক, কয়েকজনকে শিক্ষক ও পালক হবার ক্ষমতা দিলেন। 12 ঈশ্বরের লোকদের প্রস্তুত করার জন্য ও সেবার কাজ সম্পন্ন করার উদ্দেশ্যে খ্রীষ্ট এইসব বরদান করেছেন। খ্রীষ্টের দেহরূপে মণ্ডলীকে গঠন করার জন্য তিনি সেইসব বর দিয়েছেন। 13 যে পর্যন্ত না আমরা ঈশ্বরের পুত্রের বিষয়ে একই বিশ্বাস ও তত্ত্বজ্ঞানে সুষ্ঠভাবে যুক্ত হব, সেই পর্যন্ত এই কাজ চলতে থাকবে। আমাদের পরিণত মানুষের মতো হতে হবে। আমরা ততদিন বৃদ্ধি পেতে থাকব যে পর্যন্ত না খ্রীষ্টের মত হই ও তাঁর মত সম্পূর্ণ সিদ্ধ হই।
14 তখন আমরা আর শিশুর মত থাকব না। জাহাজ যেমন তরঙ্গের দাপটে এদিক ওদিক চালিত হয়, তেমনি আমরা কোন নতুন শিক্ষা দ্বারা আর স্থানচ্যুত হব না; ঠগবাজ লোকের নতুন শিক্ষা দ্বারা আমরা প্রভাবিত হব না। এরা তাদের পরিকল্পনা ও চালবাজি দ্বারা মানুষকে ঠকিয়ে ভুল পথে নিয়ে যায়। 15 আমরা বরং প্রেমের সঙ্গে সত্য কথাই বলব, এইভাবে খ্রীষ্টের মতো সব বিষয়ে আমরা বৃদ্ধিলাভ করব। খ্রীষ্ট হলেন মস্তক, আমরা তাঁর দেহ। 16 সমস্ত দেহটা খ্রীষ্টের ওপর নির্ভরশীল। দেহের সমস্ত অঙ্গ প্রত্যঙ্গ পরস্পরের সঙ্গে একত্রে যুক্ত রয়েছে। দেহের বিভিন্ন অঙ্গ যখন তাদের করণীয় কাজ করে, তখন সমস্ত দেহ বৃদ্ধিলাভ করে প্রেমে শক্ত ও দৃঢ় হয়।
সঠিক জীবনযাপনের নির্দেশ
17 প্রভুর হয়ে আমি তোমাদের সতর্ক করে দিচ্ছি, যারা বিশ্বাস করে না এমন লোকদের মতো জীবনযাপন করো না। এমন লোকের চিন্তাধারা মূল্যহীন। 18 তাদের জ্ঞান বুদ্ধি নেই। তারা কিছুই জানে না কারণ শুনতে চায় না। তাই যে জীবন ঈশ্বর তাদের দিতে চান তা থেকে তারা বঞ্চিত থাকে। 19 তাদের মনে লজ্জা বলে কোন অনুভূতিই নেই, তারা মন্দ পথে নিজেদের গা ভাসিয়ে দিয়েছে। বিনা দ্বিধায় তারা সব রকম খারাপ কাজ করে চলে। 20 কিন্তু খ্রীষ্টের কাছ থেকে তোমরা তো এমন মন্দ শিক্ষা পাও নি। 21 আমি জানি তাঁর অনুগামী হিসাবে সেই সত্য অনুসারে তোমাদের শিক্ষা দেওয়া হয়েছিল, যে সত্য খ্রীষ্ট যীশুতে রয়েছে। 22 তোমাদের পুরানো প্রবৃত্তিকে ত্যাগ করতে শিক্ষা দেওয়া হয়েছে। আগে যেভাবে মন্দ জীবনযাপন করতে তা ছাড়তে বলা হয়েছে। সেই পুরানো সত্ত্বা দিন দিন মন্দ থেকে মন্দতর হয়, কারণ লোকরা তাদের মন্দ চিন্তা দ্বারা প্রবঞ্চিত হয়। 23 কিন্তু তোমাদের শেখানো শিক্ষা অনুসারে তোমরা আপন হৃদয়ে পুনরায় নতুন হয়ে ওঠ, 24 এবং সেই নতুন সত্ত্বাকে অবশ্যই পরিধান কর। সেই নতুন সত্ত্বা ঈশ্বরের মত হবার জন্য সৃষ্টি করা হয়েছে, যা সত্যই ভাল এবং পবিত্র।
25 তাই একে অপরের কাছে মিথ্যা বলা বন্ধ কর। “তোমরা অবশ্যই সর্বদা একে অপরের সঙ্গে সত্য কথা বলবে,”(B) কারণ আমরা পরস্পর এক দেহেরই অঙ্গ প্রত্যঙ্গ। 26 “রেগে গেলে তার প্রভাবে যেন পাপ করো না”(C) এবং সারাদিন রাগ করে থেকো না। 27 তোমাকে পরাস্ত করতে দিয়াবলকে কোন রকম সুযোগ নিতে দিও না। 28 যে এক সময় চুরি করত সে যেন আর কখনও চুরি না করে, বরং ভাল কিছু কাজ করতে নিজ হাতে পরিশ্রম করে। সে যেন সবরকম ভাল কাজ করে, তাহলে অভাবী লোকদের সঙ্গে ভাগ করে দেবার জন্যেও তার কিছু থাকবে।
29 অপরের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করার সময় কোন খারাপ কথা বলো না। লোকেদের প্রয়োজনীয় আত্মিক শক্তি দেবার জন্য যা ভাল কেবল তাই-ই বল। এমনভাবে কথা বল যেন তোমার কথায় অপরের উপকার হয়। 30 তোমরা ঈশ্বরের পবিত্র আত্মাকে বিষন্ন করো না। আত্মা ঈশ্বরের কাছে প্রমাণ করে যে তোমরা ঈশ্বরের অধিকারভুক্ত। ঈশ্বরের নিরূপিত সময়ে ঈশ্বর যে তোমাদের মুক্ত করবেন তার প্রমাণস্বরূপ ঈশ্বর সেই আত্মাকে তোমাদের মধ্যে দিয়েছেন। 31 সব রকমের তিক্ততা, রোষ, ক্রোধ, চেঁচামেচি, নিন্দা ও সব রকমের বিদ্বেষভাব তোমাদের থেকে দূরে রাখ। 32 পরস্পরের প্রতি স্নেহশীল হও, পরস্পরকে একইভাবে ক্ষমা কর, যেভাবে ঈশ্বরও খ্রীষ্টে তোমাদের ক্ষমা করেছেন।
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International