M’Cheyne Bible Reading Plan
নতুন প্রস্তর ফলক
34 তখন প্রভু মোশিকে বললেন, “পূর্ববর্তী দুটি প্রস্তর ফলক, যে দুটি তুমি ভেঙ্গেছিলে সেরকম আরো দুটি প্রস্তর ফলক তুমি তৈরী কর। প্রথম ফলক দুটিতে যেসব কথা লেখা হয়েছিল সেইসব কথা আমি আবার এই ফলক দুটিতে লিখব। 2 কাল সকালে প্রস্তুত হয়ে নিও এবং আমার সঙ্গে দেখা করবার জন্য সীনয় পর্বতের চূড়ায় এসো। 3 আর কেউ তোমার সঙ্গে আসবে না। অন্য কাউকে যেন পর্বতের কোথাও না দেখা যায়। এমনকি কোনও পশুর দল বা মেষের পালকেও পর্বতের নীচে চরতে দেওয়া যাবে না।”
4 তাই মোশি প্রথম পাথরের ফলকের মতো আরও দুটি ফলক তৈরী করল। তারপর পরদিন সকালে উঠে সীনয় পর্বতের চূড়ায় গেল। মোশি প্রভুর আদেশ অনুসারে সব কিছু করল। সে পাথরের ফলক দুটি সঙ্গে করে নিয়ে গেল। 5 অতঃপর প্রভু মেঘের মধ্যে মোশির কাছে নেমে এলেন এবং তার সঙ্গে দাঁড়ালেন এবং তাঁর নাম (প্রভুর) ঘোষণা করলেন।
6 প্রভু মোশির সামনে দিয়ে গেলেন এবং বললেন, “যিহোবা, প্রভু হলেন দয়ালু ও করুণাময়। তিনি ক্রোধের ব্যাপারে ধৈর্য্যশীল। তিনি পরমস্নেহে পরিপূর্ণ এবং বিশ্বস্ত। 7 হাজার হাজার পুরুষ ধরে প্রভু তাঁর করুণা দেখান। তিনি ভুল কাজ, অবাধ্যতা এবং পাপ ক্ষমা করে দেন। কিন্তু তবু তিনি দোষীদের শাস্তি দিতে ভোলেন না। তিনি কেবলমাত্র দোষীদেরই শাস্তি দেন না, তাদের দণ্ডনীয় অপরাধের জন্য তাদের তৃতীয় ও চতুর্থ পুরুষের উত্তরপুরুষদেরও শাস্তি দেন।”
8 তখন মোশি সঙ্গে সঙ্গে হাঁটু গেড়ে বসল ও আভুমি মাথা নত করে প্রভুর কাছে প্রার্থনা করল এবং বলল, 9 “প্রভু, আপনি যদি আমার প্রতি সন্তুষ্ট হন তাহলে আমাদের সঙ্গে চলুন। আমি জানি আমরা জেদী কিন্তু আমাদের অপরাধ ক্ষমা করে দিন। আমাদের ওপর আপনার নিজের পূর্ণ অধিকার আছে বলে মনে করুন এবং আমাদের গ্রহণ করুন।”
10 তখন প্রভু বললেন, “আমি তোমার লোকদের সঙ্গে এই চুক্তি করি যে আমি তোমার লোকদের সামনে এমন সব আশ্চর্য কার্য করব যা ইতিপূর্বে পৃথিবীর কোনও দেশে হয় নি। তখন তোমাদের চারপাশের সমস্ত জাতিসমূহ দেখতে পাবে আমি কত মহান। তারা এইসব আশ্চর্য জিনিস দেখবে যা আমি তোমাদের জন্য করব। 11 আমি যা আদেশ দিচ্ছি, আজ তা পালন কর তাহলে আমি তোমাদের শত্রুদের তোমাদের দেশ ত্যাগ করতে বাধ্য করব। আমি ইমোরীয়, কনানীয়, হিত্তীয়, পরিষীয়, হিব্বীয় ও যিবূষীয়দের বিতাড়ন করব। 12 সাবধান! তোমরা যেখানে যাচ্ছো সেখানকার লোকদের সঙ্গে কোনও চুক্তি কোরো না। তাহলে তোমরা বিপদে পড়বে। 13 তাদের বেদী ধ্বংস করে দিও। যে পাথরকে তারা পূজো করে তা ভেঙ্গে ফেলো। তাদের পবিত্র দণ্ডগুলি ধ্বংস করো। 14 অন্য কোনও দেবতাকে পূজা করো না কারণ আমার নাম ঈর্ষা। আমি হলাম ঈর্ষাপরায়ণ ঈশ্বর।
15 “ঐ দেশের লোকদের সঙ্গে কোনও চুক্তি না করার ব্যাপারে সাবধান থেকো। কারণ তোমরা তাদের দেবতাদের পূজো করে এবং তাদের নৈবেদ্য উৎসর্গ করে ব্যভিচার করবে। তারা তাদের নৈবেদ্য ভক্ষণ করতে তোমাদের নিমন্ত্রণ করবে। 16 তোমরা যদি তাদের কন্যাদের পুত্রবধূরূপে গ্রহণ করো তাহলে ঐ মহিলারা তোমাদের পুত্রদের তাদের ঐ দেবতাদের পূজো করাবে এবং তারা তোমাদের পুত্রদের প্রভুর প্রতি অবিশ্বস্ত করে তুলবে।
17 “কোনও মূর্ত্তি তৈরী করবে না।
18 “খামিরবিহীন রুটির উৎসব পালন করবে। আমি তোমাদের যেমন আদেশ দিয়েছিলাম সেই মতো সাতদিন ধরে খামিরবিহীন রুটি খাবে। তোমরা এটা আবীব মাসে করবে কারণ ঐ মাসে তোমরা মিশর ছেড়ে বেরিয়ে এসেছিলে।
19 “কোনও নারীর প্রথম গর্ভজাত পুত্র সন্তান হবে আমার। এমনকি গবাদি পশুর অথবা মেষের প্রথমজাত পুরুষশাবকও আমার অধিকারভুক্ত। 20 তোমরা যদি গাধার প্রথমজাত পুরুষশাবককে রাখতে চাও, তবে তোমরা একটি মেষশাবকের বিনিময়ে তা রাখতে পারো। কিন্তু তোমরা যদি ঐ গাধার শাবকটিকে একটি মেষের বিনিময়ে না কেনো তাহলে তোমাদের ঐ গাধার ঘাড় মটকাতে হবে। তোমাদের সমস্ত প্রথমজাত পুত্র সন্তানদের আমার কাছে থেকে ফেরৎ নিতে হবে। কিন্তু কোনও লোকই উপহার ছাড়া আমার কাছে আসবে না।
21 “তোমরা ছয়দিন যাবৎ পরিশ্রম করবে ও সপ্তম দিনে বিশ্রাম নেবে। চাষের বীজ রোপন ও ফসল কাটার সময় তোমরা অবশ্যই বিশ্রাম নেবে।
22 “সাত সপ্তাহের উৎসব পালন করবে। গম কাটার পর প্রথম কাটা ফসলের দানাগুলো এই উৎসবের জন্য ব্যবহার করবে এবং বছরের শেষে ফসল কাটার উৎসব পালন করবে।
23 “বছরে তিনবার তোমাদের সমস্ত লোক সর্বশক্তিমান প্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বরের সামনে উপস্থিত হবে।
24 “তোমরা যখন তোমাদের দেশে যাবে তখন আমি তোমাদের শত্রুদের সেখান থেকে বিতাড়িত করতে বাধ্য করব। আমি তোমাদের দেশের সীমা বিস্তার করে দেব যাতে তোমরা আরও বেশী জমি পাও। তোমাদের অবশ্যই প্রতি বছরে তিনবার প্রভু, তোমাদের ঈশ্বরের সামনে যেতে হবে। এবং তখন কেউ তোমাদের দেশ অধিকার করার চেষ্টা করবে না।
25 “যখন তোমরা আমাকে নৈবেদ্য হিসাবে রক্ত উৎসর্গ করবে তখন তার সঙ্গে খামির দেবে না।
“নিস্তারপর্বে উৎসর্গীকৃত মাংস পরদিন সকাল পর্যন্ত রাখা উচিৎ হবে না।
26 “তোমাদের ক্ষেতের প্রথম ফসল প্রভুকে দেবে। ঐ ফসল প্রভু, তোমাদের ঈশ্বরের গৃহে নিয়ে আসবে।
“কখনও কোনও ছাগশিশুকে তার মায়ের দুধ দিয়ে রান্না করবে না।”
27 তারপর প্রভু মোশিকে বললেন, “তোমাকে আমি যা বলেছি সব কিছু লিখে রাখো। এইগুলিই হল তোমার এবং ইস্রায়েলের লোকদের মধ্যে চুক্তির দলিল।”
28 মোশি সেখানে প্রভুর সঙ্গে 40 দিন ও 40 রাত বাস করেছিল। মোশি 40 দিন কোন কিছু ভোজন করল না বা জল পান করল না। মোশি দুটি পাথরের ফলকের ওপর চুক্তির কথাগুলি লিখেছিল।
মোশির উজ্জ্বল মুখ
29 তারপর মোশি সীনয় পর্বত থেকে নেমে এল। সে সেই চুক্তি লেখা পাথরের ফলক দুটি বয়ে নিয়ে এল। প্রভুর সঙ্গে কথা বলার পর মোশির মুখ জ্বলজ্বল করছিল। কিন্তু মোশি নিজে তা জানত না। 30 হারোণ ও ইস্রায়েলের অন্য সব লোকরা তার উজ্জ্বল মুখ দেখে তার কাছে যেতে ভয় পাচ্ছিল। 31 তখন মোশি তাদের ডেকে পাঠাল। মোশি হারোণ এবং দলপতির সঙ্গে কথা বলল। 32 তারপর সমস্ত ইস্রায়েলবাসী মোশির কাছে এল। সীনয় পর্বতে প্রভু যেসব আদেশ দিয়েছেন মোশি সেই আদেশের কথা তাদের শোনাল।
33 মোশি তার কথা শেষ করে নিজের মুখ আবরণ দিয়ে ঢেকে ফেলল। 34 কিন্তু মোশি যখনই প্রভুর সঙ্গে কথা বলতে যেত তখন সে যতক্ষণ না বাইরে আসত ততক্ষণ সেই আবরণ খুলে রাখত। মোশি যখন প্রভুর সান্নিধ্য থেকে বেরিয়ে আসত এবং ইস্রায়েলের লোকদের প্রভুর আদেশসমূহ বলত, 35 তখন তারা মোশির মুখমণ্ডলের ওপর একটি দীপ্তি দেখতে পেত। তাই সে আবার তার মুখ ঢেকে ফেলত। পরের বার প্রভুর সঙ্গে কথা বলতে না যাওয়া পর্যন্ত সে ঐভাবেই মুখ ঢেকে রাখত।
যীশু শিষ্যদের পা ধুইয়ে দিলেন
13 ইহুদীদের নিস্তারপর্বের ঠিক পূর্বে যীশু বুঝতে পারলেন, যে এই জগত ছেড়ে পিতার কাছে তাঁর যাবার সময় হয়ে এসেছে। যীশু পৃথিবীতে তাঁর আপনজনদের সব সময় ভালবেসেছেন। এবার তিনি তাদের প্রতি তাঁর ভালবাসার চূড়ান্ত প্রমাণ দিলেন।
2 যীশু ও তাঁর শিষ্যরা সান্ধ্য আহার করছিলেন। দিয়াবল ইতিমধ্যে শিমোন ঈষ্করিয়োতের ছেলে যিহূদাকে প্ররোচিত করেছে যীশুকে শত্রুর হাতে তুলে দেওয়ার জন্য। 3 যীশু বুঝলেন যে পিতা তাঁকে সব কিছুর ওপর ক্ষমতা দিয়েছেন, তিনি ঈশ্বরের কাছ থেকে এসেছেন, আর ঈশ্বরের কাছে ফিরে যাচ্ছেন। 4 তখন তিনি ভোজের আসর থেকে উঠে দাঁড়ালেন, তাঁর উপরের জামাটা খুলে রেখে একটি গামছা কোমরে জড়ালেন। 5 তারপর গামলায় জল ঢেলে শিষ্যদের পা ধুইয়ে দিতে লাগলেন, আর যে গামছাটি কোমরে জড়িয়ে ছিলেন সেটি দিয়ে তাঁদের পা মুছিয়ে দিতে লাগলেন।
6 এইভাবে তিনি শিমোন পিতরের কাছে এলে পিতর যীশুকে বললেন, “প্রভু, আপনি কেন আমার পা ধুইয়ে দেবেন?”
7 এর উত্তরে যীশু তাঁকে বললেন, “আমি যা করছি, তুমি এখন তা বুঝতে পারছ না, কিন্তু পরে বুঝবে।”
8 পিতর তাঁকে বললেন, “আপনি কখনও আমার পা ধুইয়ে দেবেন না।”
যীশু তাঁকে বললেন, “আমি যদি তোমার পা না ধুইয়ে দিই, তাহলে আমার সঙ্গে তোমার কোন সম্পর্ক থাকবে না।”
9 শিমোন পিতর তাঁকে বললেন, “প্রভু, আপনি কেবল আমার পা নয়, হাত ও মাথা ধুইয়ে দিন!”
10 যীশু তাঁকে বললেন, “যে স্নান করেছে তার পা ধোয়া ছাড়া আর কিছু দরকার নেই, আর তো সর্বাঙ্গ পরিষ্কার হয়েছে। তোমরাও পরিষ্কার হয়েছ, কিন্তু সকলে নও।” 11 যীশু জানতেন যে একজন তাঁকে ধরিয়ে দেবে, সেই কারণেই তিনি বললেন, “তোমরা সকলে পরিষ্কার নও।”
12 তাদের পা ধোয়ানো শেষ করে তিনি আবার তাঁর উপরের জামাটি পরলেন ও টেবিলে তাঁর জায়গায় ফিরে এসে তাদের বললেন, “আমি তোমাদের প্রতি কি করলাম তা বুঝতে পারলে? 13 তোমরা আমায় ‘গুরু’ ও ‘প্রভু’ বলে থাকো; আর তোমরা তা ঠিকই বল, কারণ আমি তা-ই। 14 তাই আমি প্রভু ও গুরু হয়ে যদি তোমাদের পা ধুইয়ে দিই, তাহলে তোমাদেরও উচিত পরস্পরের পা ধোয়ানো। 15 আমি তোমাদের কাছে এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করলাম, যেন আমি তোমাদের প্রতি যেমন করলাম, তোমরাও তেমনি কর। 16 আমি তোমাদের সত্যি বলছি, চাকর তার মনিবের থেকে বড় নয়, আর দূত তার প্রেরণকর্তার থেকে বড় নয়। 17 যেহেতু তোমরা এসব জান, এইগুলি পালন কর, তাহলে তোমরা সুখী হবে।
18 “আমি তোমাদের সকলের বিষয়ে বলছি না। আমি জানি, কাদের আমি মনোনীত করেছি। কিন্তু শাস্ত্রে যে কথা লেখা হয়েছে তা অবশ্যই পূর্ণ হবে, ‘যে আমার সঙ্গে আহার করল, সেই আমার বিরুদ্ধে গেল।’(A) 19 এসব ঘটবার আগেই আমি তোমাদের এসব বলছি, যাতে যখন এসব ঘটবে, তোমরা বিশ্বাস করবে যে আমিই তিনি। 20 আমি তোমাদের সত্যি বলছি, আমি যাকে পাঠাবো তাকে যে গ্রহণ করবে, সে আমাকেই গ্রহণ করবে। আর যে আমাকে গ্রহণ করে, আমায় যিনি পাঠিয়েছেন, সে তাঁকেও গ্রহণ করে।”
কে তাঁর বিপক্ষে যাবে যীশু তা জানালেন
(মথি 26:20-25; মার্ক 14:17-21; লূক 22:21-23)
21 এই কথা বলার পর যীশু খুবই উদ্বিগ্ন হলেন, আর খোলাখুলিই বললেন, “আমি তোমাদের সত্যি বলছি, তোমাদের মধ্যে একজন আমাকে ধরিয়ে দেবে।”
22 শিষ্যরা পরস্পরের দিকে তাকাতে লাগলেন, আদৌ বুঝতে পারলেন না কার বিষয়ে তিনি বলছেন। 23 যীশুর শিষ্যদের মধ্যে একজন ছিলেন যাকে যীশু খুবই ভালবাসতেন, তিনি যীশুর গায়ের ওপর হেলান দিয়ে ছিলেন। 24 শিমোন পিতর এই শিষ্যকে ইশারা করলেন এবং যীশুকে জিজ্ঞেস করতে বললেন যে উনি কার সম্পর্কে বলছেন।
25 তখন তিনি যীশুর বুকের উপর ঝুঁকে পড়ে তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন, “প্রভু, সে কে?”
26 যীশু বললেন, “আমি রুটির টুকরোটি বাটিতে ডুবিয়ে যাকে দেব সে-ই সেই লোক।” এরপর তিনি রুটির টুকরো ডুবিয়ে শিমোন ঈষ্করিয়োতের ছেলে যিহূদাকে দিলেন। 27 যিহূদা রুটির টুকরোটি নেওযার পর শয়তান তার মধ্যে ঢুকে পড়ল। এরপর যীশু তাকে বললেন, “তুমি যা করতে যাচ্ছ তা তাড়াতাড়ি করোগে যাও।” 28 কিন্তু যাঁরা তাঁর সঙ্গে খাবার টেবিলে খেতে বসেছিলেন, তাঁদের মধ্যে কেউই বুঝতে পারলেন না তিনি কেন তাকে একথা বললেন। 29 কেউ কেউ মনে করলেন, যিহূদার কাছে টাকার থলি আছে, তাই হয়তো যীশু তাকে বললেন, পর্বের জন্য যা যা প্রয়োজন তা কিনে আনতে যাও; অথবা হয়তো গরীবদের ওর থেকে কিছু দান করতে বলেছেন।
30 যিহূদা রুটির টুকরোটি গ্রহণ করে সঙ্গে সঙ্গে বাইরে চলে গেল। তখন রাত হয়ে গেছে।
যীশু তাঁর মৃত্যুর বিষয়ে বললেন
31 যিহূদা সেখান থেকে চলে যাবার পর যীশু বললেন, “মানবপুত্র এখন মহিমান্বিত হলেন, আর ঈশ্বরও তাঁর মাধ্যমে মহিমান্বিত হলেন। 32 ঈশ্বর যদি তাঁর মাধ্যমে মহিমান্বিত হন, তবে ঈশ্বরও মানবপুত্রকে নিজের মাধ্যমে মহিমান্বিত করবেন, তিনি খুব শিগ্গিরই তা করবেন।”
33 আমার প্রিয় সন্তানরা, আমি আর কিছু সময় তোমাদের সঙ্গে থাকব। তোমরা আমায় খুঁজবে, আর আমি যেমন ইহুদী নেতাদের বলেছিলাম, আমি যেখানে যাচ্ছি তোমরা সেখানে যেতে পার না, সেই কথাই এখন তোমাদেরও বলছি।
34 “আমি তোমাদের এক নতুন আদেশ দিচ্ছি, তোমরা পরস্পরকে ভালবেসো। আমি যেমন তোমাদের ভালবাসি, তোমরাও তেমনি পরস্পরকে ভালবেসো। 35 তোমাদের পরস্পরের মধ্যে যদি ভালবাসা থাকে তবে এর দ্বারাই সকলে জানবে যে তোমরা আমার শিষ্য।”
যীশু বললেন পিতর তাঁকে অস্বীকার করবেন
(মথি 26:31-35; মার্ক 14:27-31; লূক 22:31-34)
36 শিমোন পিতর যীশুকে বললেন, “প্রভু, আপনি কোথায় যাচ্ছেন?”
যীশু বললেন, “যেখানে এখন আমি যাচ্ছি, তুমি আমার পেছনে সেখানে আসতে পারবে না; কিন্তু পরে তুমি আমায় অনুসরণ করবে।”
37 পিতর তাঁকে বললেন, “প্রভু, এখন কেন আমি আপনার সঙ্গে যেতে পারি না? আমি আপনার জন্য নিজের জীবন পর্যন্ত দিয়ে দেব।”
38 যীশু তাকে বললেন, “তুমি কি সত্যি আমার জন্য প্রাণ দেবে? আমি তোমাকে সত্যি বলছি; কাল ভোরে মোরগ ডাকার আগেই তুমি আমাকে তিনবার অস্বীকার করবে।
শলোমনের হিতোপদেশ
10 এগুলি ছিল শলোমনের হিতোপদেশ:
একজন জ্ঞানী পুত্র তার পিতাকে সুখী করে। কিন্তু একজন নির্বোধ পুত্র তার মাকে খুবই দুঃখী করে।
2 যদি কোন লোক খারাপ কাজ করে টাকা লাভ করে তাহলে সেই টাকা কোন কাজেই আসে না। কিন্তু ভাল কাজ তোমাকে মৃত্যু থেকে রক্ষা করতে পারে।
3 প্রভু ভালো লোকদের প্রতি যত্নশীল হন। তিনি তাদের পর্যাপ্ত খাবার যোগান। কিন্তু প্রভু পাপীদের অভীষ্ট বস্তু কেড়ে নেন।
4 একজন অলস ব্যক্তি দরিদ্র হবে। কিন্তু একজন পরিশ্রমী মানুষ ধনী হবে।
5 একজন জ্ঞানী পুত্র সঠিক ঋতুতে শস্য কাটবে। কিন্তু কোন লোক যদি শস্য সংগ্রহের সময় ঘুমিয়ে থাকে, তাহলে সে লজ্জিত হবে।
6 সজ্জন ব্যক্তিদের আশীর্বাদ করার জন্য লোকরা ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা জানায। পাপীরাও ভালো ভালো কথা বলে কিন্তু তা শুধু নিজেদের যাবতীয় দুষ্ট ইচ্ছা লোকচক্ষু থেকে আড়ালে রাখার জন্য।
7 ধার্মিক লোকরা চিরকাল সকলের কাছে স্মরণীয হয়ে থাকে। কিন্তু দুষ্ট লোকদের নাম সকলে অচিরেই ভুলে যায়।
8 একজন জ্ঞানী লোক তার অগ্রজদের আদেশ পালন করে। কিন্তু একজন নির্বোধ তর্কবিতর্ক করে নিজের বিপদ ডেকে আনে।
9 একজন ভাল, সৎ লোক সর্বদা নিরাপদে থাকে। কিন্তু যে কুটিল ব্যক্তি অপরকে প্রতারিত করে সে অচিরেই ধরা পড়ে।
10 যে ব্যক্তি সত্যকে আড়াল করে, সে অশান্তির কারণ হয়। কিন্তু একজন সৎ লোক, যে খোলাখুলিভাবে কথা বলে সে শান্তি স্থাপন করে।[a]
11 একজন জ্ঞানী ব্যক্তির কথাবার্তা একটি ঝর্ণার মত যা জীবন দেয়। কিন্তু দুষ্ট লোকের কথাবার্তা কেবল তাদের পাপী মনেরই পরিচয় দেয়।
12 ঘৃণা বিবাদের সৃষ্টি করে। কিন্তু ভালোবাসা সমস্ত ভুলভ্রান্তি ক্ষমা করে দেয়।
13 বুদ্ধিমান লোকদের বক্তৃতা থেকে লোকরা জ্ঞান আহরণ করতে পারে। কিন্তু যে লোকরা বোকার মত কথা বলে তারা তাদের শাস্তি দেয়।
14 জ্ঞানী ব্যক্তিরা জ্ঞান সঞ্চয় করে এবং তাকে একটি নিরাপদ জায়গায় সংরক্ষিত করে। কিন্তু মুর্খ লোকরা তাদের ধ্বংসকে হাতের কাছে রাখে।
15 সম্পদ ধনীকে রক্ষা করে কিন্তু দারিদ্র্য গরীব মানুষকে ধ্বংস করে।
16 যে ব্যক্তি সৎ কাজ করে সেই পুরস্কৃত হয়। সে দীর্ঘ জীবন পায়। পাপ কেবল শাস্তিই বয়ে আনে।
17 যে ব্যক্তি তার শাস্তি থেকে শিক্ষা নেয় সে অন্যদের বাঁচতে সাহায্য করতে পারে। কিন্তু যে ব্যক্তি নিজের শাস্তি থেকে অন্য কোনো শিক্ষা নেয় না সে অন্যদের ভুল পথে পরিচালিত করে।
18 যে ব্যক্তি তার ঘৃণা লুকিয়ে রাখে সে হয়ত একজন মিথ্যেবাদী। কিন্তু যারা মিথ্যে অপবাদ রটায তারা বোকা।
19 যে ব্যক্তি খুব বেশী কথা বলে সেই মুস্কিলে পড়ে। কিন্তু একজন জ্ঞানী মানুষ তার কথা সংযত রাখতে শেখে।
20 একজন সজ্জন ব্যক্তির কথাবার্তা খাঁটি রূপোর মত। কিন্তু পাপীদের চিন্তাভাবনার কোন মূল্য নেই।
21 একজন ধার্মিক ব্যক্তির উপদেশ অনেক লোককে সাহায্য করবে। কিন্তু নির্বোধের বোকামি তার মৃত্যু ডেকে আনবে।
22 প্রভুর আশীর্বাদই তোমাকে ধনবান করবে। তিনি তার সঙ্গে সংকট আনবেন না।
23 নির্বোধ লোকরা কু-কাজ করতে ভালোবাসে। কিন্তু বিচক্ষণ ব্যক্তি প্রজ্ঞাতেই সন্তুষ্ট থাকেন।
24 দুষ্ট ব্যক্তি যা ভয় করে তার ভাগ্যে তাই ঘটবে। কিন্তু ধার্মিকদের বাসনা সফল হবে।
25 যখন সংকট আসবে দুষ্ট লোকরা ধ্বংস হবে। কিন্তু ধার্মিক লোকরা চিরকাল অটল থাকে।
26 কোন অলস ব্যক্তিকে তোমার জন্য কোন কিছু করতে পাঠিও না। মুখের মধ্যে অম্লরস কিংবা চোখের মধ্যে ধোঁয়া যেমন বিরক্তিকর—সেও ঠিক সে ভাবেই তোমার বিরক্তির কারণ হবে।
27 প্রভুকে সম্মান করলে তুমি দীর্ঘজীবি হবে। কিন্তু পাপীলোকদের আয়ু হ্রাস পাবে।
28 ধার্মিকদের প্রত্যাশা জীবনে আনন্দ বয়ে আনে। কিন্তু পাপীদের বাসনা কেবল ধ্বংসই ডেকে আনে।
29 প্রভু ধার্মিক লোকদের রক্ষা করেন। কিন্তু প্রভু অন্যায়কারীদের ধ্বংস করেন।
30 ধার্মিক লোকরা সব সময় নিরাপদে থাকবে। কিন্তু পাপীরা দেশ থেকে উৎখাত হবে।
31 ভালো লোকদের কথাগুলো জ্ঞানগর্ভ। কিন্তু যে ব্যক্তির উপদেশ বিপদ ডেকে আনে তার কথা কেউ শুনবে না।
32 ভালো লোকরা ঠিক জিনিসটি বলতে জানে। কিন্তু দুষ্ট লোকদের কথা অশান্তি ডেকে আনে।
অইহুদীদের জন্য পৌলের কাজ
3 এই জন্য আমি (পৌল) তোমাদের, অর্থাৎ অ-ইহুদীদের জন্য খ্রীষ্ট যীশুর বন্দী। 2 তোমরা নিশ্চয়ই জান যে, ঈশ্বর তোমাদের সাহায্য করার জন্য তাঁর নিজ অনুগ্রহে এই কাজ আমায় দিয়েছেন। 3 ঈশ্বর তাঁর নিগূঢ়তত্ত্ব আমায় জানতে দিয়েছেন। তিনি নিজে যেসব বিষয় আমায় দেখিয়েছেন, সে সকল বিষয়ের কিছু কিছু আমি ইতিমধ্যেই লিখেছি। 4 সেসব পাঠ করলে তোমরা বুঝতে পারবে যে আমি ঠিক ভাবেই খ্রীষ্ট সম্বন্ধে জেনেছি। 5 এর আগে যাঁরা পৃথিবীতে ছিলেন, তাঁদের কাছে এই নিগূঢ়তত্ত্ব জানানো হয় নি। কিন্তু এখন সেই নিগূঢ়তত্ত্ব তিনি তাঁর পবিত্র প্রেরিত ও ভাববাদীদের কাছে আত্মার মাধ্যমে ব্যক্ত করেছেন। 6 এই হল নিগূঢ়তত্ত্ব—যারা অ-ইহুদী তারা ইহুদীদের সঙ্গে সমানভাবে সব আশীর্বাদ পাবে। ইহুদী ও অইহুদী উভয়েই এক সঙ্গে একই দেহের সদস্য। খ্রীষ্টের মাধ্যমে ঈশ্বর যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তা তারা একসঙ্গে ভোগ করবে। অইহুদীরা সুসমাচারের মধ্য দিয়ে এইসব কিছু পাবে।
7 ঈশ্বরের বিশেষ অনুগ্রহ দানের ফলে সেই সুসমাচার প্রচার করার জন্য আমি দাস হলাম; ঈশ্বর তাঁর নিজ পরাক্রমে আমাকে সেই অনুগ্রহ দিয়েছেন। 8 ঈশ্বরের সমস্ত লোকের মধ্যে আমি নিতান্ত নগন্য; কিন্তু ঈশ্বর আমাকে এক বরদান করেছেন যেন আমি অইহুদীদের কাছে খ্রীষ্টেতে যে ধারণাতীত সম্পদ আছে তা সুসমাচারের মাধ্যমে তাদের জানাই। সেই সম্পদ এত অগাধ যে সম্পূর্ণভাবে তা বুঝতে পারা যায় না। 9 ঈশ্বরের নিগূঢ় পরিকল্পনার কথা সকলকে জানাবার ভার ঈশ্বর আমায় দিয়েছেন। 10 সৃষ্টির শুরু থেকে ঈশ্বরের এই নিগূঢ় পরিকল্পনা তাঁর মধ্যেই গুপ্ত ছিল। ঈশ্বর, স্বয়ং সমস্ত কিছুর সৃষ্টিকর্তা। ঈশ্বর চেয়েছিলেন যেন স্বর্গীয়স্থানে সমস্ত আধিপত্য ও কর্তৃত্ত্বের কাছে নানাবিধ উপায়ে তাঁর প্রজ্ঞা প্রতিফলিত করেন এবং মণ্ডলীর মাধ্যমেই তারা এসব জানতে পারে। 11 পূর্বকালে ঈশ্বর যে সব পরিকল্পনা ঠিক করে রেখেছিলেন, এ সবই তার সঙ্গে মিলে যায়। তিনি আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের মাধ্যমে তাঁর পরিকল্পনা অনুসারে কাজ করেছেন। 12 এখন খ্রীষ্টে বিশ্বাস নিয়ে আমরা ঈশ্বরের সম্মুখে সাহস ও আত্মবিশ্বাসের সাথে আসতে পারি। খ্রীষ্টে বিশ্বাসের মাধ্যমেই এটা করতে পারি। 13 আমি তোমাদের বলি, তোমাদের জন্য আমায় যে কষ্টভোগ করতে হয়েছিল তার জন্য তোমরা হতাশ ও নিরাশ হয়ো না। আমার কষ্ট তোমাদের সম্মানিত করুক।
খ্রীষ্টের ভালবাসা
14 এই কারণে আমি পিতার কাছে নতজানু হই। 15 তাঁর কাছ থেকেই স্বর্গের বা মর্ত্যের প্রত্যেক পরিবার প্রকৃত নাম পায়। 16 আমি পিতার কাছে প্রার্থনা করি যেন তাঁর মহান প্রতাপে তিনি তোমাদের সেই শক্তি দেন যার ফলে তোমাদের অন্তরাত্মা বলিষ্ঠ হয়ে ওঠে। তাঁর আত্মার দ্বারা তিনি তোমাদের সেই শক্তি দেবেন। 17 আমি প্রার্থনা করি যেন বিশ্বাসের মধ্য দিয়ে খ্রীষ্ট তোমাদের হৃদয়ের মধ্যে বাস করেন। যেন তোমাদের জীবন প্রেমে সুদৃঢ় হয় ও প্রেমরূপ ভিতের উপর গড়ে উঠতে পারে। 18 আমি প্রার্থনা করি, যেন তোমরা ও ঈশ্বরের সমস্ত পবিত্র লোকরা খ্রীষ্টের প্রেমের মহত্ব বুঝতে সক্ষম হও। তোমরা যেন সেই প্রেমের গভীরতা, উচ্চতা, দৈর্ঘ্য ও বিস্তার জানতে পার। 19 খ্রীষ্টের প্রেম এতো মহান যে কোন মানুষের পক্ষে সত্যি করে তা জানা সম্ভব নয়। আমি প্রার্থনা করছি যেন তোমরা সেই প্রেম উপলদ্ধি করতে পার আর তাতেই তোমরা সম্পূর্ণভাবে ঈশ্বরের প্রকৃতিতে পূর্ণ হবে।
20 ঈশ্বরের যে শক্তি আমাদের মধ্যে সক্রিয় রয়েছে, সেই শক্তির দ্বারা ঈশ্বর আমরা যা চাই বা চিন্তা করি তার থেকেও অনেক বেশী কাজ করতে পারেন। 21 মণ্ডলীতে ও খ্রীষ্ট যীশুতে যুগ যুগান্ত ধরে তাঁরই মহিমা হোক্। আমেন।
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International